25-01-2019, 01:19 PM
সুখ
পর্ব - ৩(৪)
এর পর বেশ কয়েক বছর কেটে গিয়েছে... সুদেষ্ণা চাকরী জয়েন করেছে... বেশ চলছিল... তারপর তার সাথে দেখা হয় সৌভিকের... অফিসে... তাদের অফিসের কনসাল্টেন্ট হিসাবে জয়েন করে সৌভিক কয়েক মাসের জন্য... এবং সুদেষ্ণাদের গ্রুপটাকেই সাপোর্ট দেবার জন্য তার আসা... প্রথম দর্শনেই ভালো লেগে যায় সৌভিককে সুদেষ্ণার... ছয় ফিটের মত লম্বা, স্বাস্থবান চেহারা, যথেষ্ট সুদর্শন বলা যেতে পারে... কিন্তু এতটুকুও প্রগলভ নয় কোন অংশেই... কাজ ছাড়া অতিরিক্ত কোন কথাই বলে না কারুর সাথে... কিন্তু যতটুকু বলে, কেমন যেন একটা ভালো লাগার অনুভুতি মিশে যায়... কাজের কথাটাও ইচ্ছা করে মন দিয়ে সৌভিকের থেকে শুনতে... সৌভিকের সাথে কাজ করতে যথেষ্ট কমর্ফটিবিল ফিল করে সুদেষ্ণা... এতটুকুও কোন রকম জড়তা আসে না তাকে কোন কিছু প্রশ্ন করতে বা কিছু জেনে নিতে... সৌভিকও তার পুরোটা দিয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করে কাজের সুবিধার্থে... একটু একটু করে কখন যে একটা বিশ্বাসযোগ্য জায়গা অর্জন করে নিয়েছে সৌভিক তার মনের মধ্যে, হয়তো সেও জানতে পারে নি... এমন অনেক দিন গিয়েছে, রাত অবধি শুধু মাত্র সৌভিকের সাথেই থেকে কাজ সারতে হয়েছে সুদেষ্ণার, কিন্তু কখন অফিসে এই ভাবে একজন পুরুষের সাথে থাকবে, সেটা নিয়ে ভাবে নি... মনেও আসে নি কখনও...
তারপর সৌভিকের অ্যাসাইন্মেন্ট শেষ হয়ে যায়... সুদেষ্ণারা তাদের গ্রুপের তরফ থেকে ঠিক করে সৌভিককে একটা ফেয়ার ওয়েল পার্টি দেবার... প্রত্যেকেই খুশি সৌভিকের কাজে, ব্যবহারে... তাই ঠিক হয় শেষ দিন ওরা ডিনারে যাবে সবাই মিলে... একটা খুব ভালো রেস্তরায় ডিনার সারে সবাই... সৌভিক চলে যাবে, এটা যেন সকলের কাছেই ভিষন মনবেদনার ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে... সৌভিক ডিনারটার বিল পেমেন্ট করতে চাইলে সকলে মিলে হইহই করে বাধা দিয়ে ওঠে... পেমেন্ট করতে দেয় না তাকে...
পার্টি যখন শেষের পর্যায়ে, সৌভিক সুদেষ্ণাকে একান্তে সরিয়ে নিয়ে যায়... ‘সুদেষ্ণা, আই জাস্ট ওয়ান্টেড টু সে ইট ওয়াজ আ প্লেজার ওয়ার্কিং উইথ ইয়ু... আই মীন, ওয়ার্কিং ইয়ুথ দ্য হোল টিম অফ ইয়োর্স... অ্যান্ড ইট ওয়াজ আ প্লেজার টু বি অ্যারাউন্ড ইয়োর কম্পানী...’ গাঢ় কন্ঠে বলে সে...
লাল হয়ে ওঠে গাল দুটো সুদেষ্ণার অকারণেই... আবেগ ঢেউ খেলে বুকের মধ্যে... মাথা নামিয়ে অস্ফুট স্বরে উত্তর দেয়, ‘থ্যাঙ্কস সৌভিক... আমিও তোমার সাথে কাজ করে খুব এঞ্জয় করেছি... ইটস রিয়েলি আ প্লেজার টু ওয়ার্ক উইথ ইয়ু টু...’
চুপ করেই খানিক দাঁড়িয়ে থাকে দুজনে... যেন কি বলবে তা খুজে পায় না তারা... তারপর সৌভিকই ফের শুরু করে, ‘জানি না কি ভাবে বলবো, কিন্তু হয়তো ভবিষ্যতে আর সুযোগ পাবো না কখনও, কারণ পরে যে আবার আমাকেই তোমাদের এখানে পাঠাবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই, তাই...’ বলতে বলতে চুপ করে যায় সে...
‘কি?’ দৃষ্টিতে ঔৎসুক্য নিয়ে প্রশ্ন করে সুদেষ্ণা...
‘না, মানে, বলছিলাম... যে আই উড রিয়েলি লাইক টু নো মোর আব্যাউট ইয়ু... আমার মনে হয় আমার দেখা ইয়ু আর দ্য মোস্ট ওয়ান্ডারফুল ওম্যান... অ্যান্ড ইয়ু আর বিউটিফুল টু...’ বলতে বলতে অস্বস্থি বোধ করতে থাকে সৌভিক... হয়তো ভাবে এই ভাবে একটি মেয়েকে বলা সমুচিন হচ্ছে কি না... সুদেষ্ণার সেটা নজর এড়ায় না...
‘তাই? আমি বিউটিফুল? একটা একটু বেশিই হয়ে গেল না? আমার মত এই রকম কালো মেয়ে...’ মৃদু স্বরে প্রতিবাদ করতে যায় সুদেষ্ণা...
‘গায়ের রঙটাই কি সব সৌন্দর্যের মাপকাঠি? আর, ইয়ু মাইট নট বী ফেয়ার, বাট ইয়ু আর মাচ মোর বিউটিফুল দ্যান এনি আদার ওমান...’ গাঢ় স্বরে উত্তর দেয় সৌভিক...
‘না মানে, বলছিলাম যে এর পর কি কখনও আমরা বাইরে কোথাও দেখা করতে পারি... এই ধর ডিনারে বা সিনেমায়... যাবে তুমি আমার সাথে?’ আগের প্রসঙ্গ টেনে কোন রকমে কথাটা শেষ করে সৌভিক...
সুদেষ্ণার বুকের ভেতরটা কেমন কনকন করে ওঠে... কানগুলো যেন গরম হয়ে যায়... হাতের তালু ঘামে... তৎসত্তেও সৌভিকের সামনে সেটা প্রকাশ পেতে দেয় না সে, যথা সম্ভব নিজের স্বর শান্ত রাখার চেষ্টা করে সে উত্তর দেয়, ‘আই উড লাভ টু...’
অফিসের বাইরে তারা যখন প্রথম দেখা করে, সেটা খুবই সাধারণ ছিল, কিন্তু আবার খারাপও বলা যায় না... বরং যথেষ্ট আনন্দদায়ক, মনোরম তাদের দুজনের কাছেই সেদিনের সন্ধ্যেটা ধরা দিয়েছিল... সুন্দর একটা রেস্তরায় তারা ডিনারে দেখা করে... আর সেখানে খাবার সামনে রেখে ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলে যায় একে অপরে মুখোমুখি বসে... কোথা দিয়ে যেন সময় কেটে যায় তাদের... কেউ খবর রাখে না... বা বলা ভালো সন্ধ্যেটা শেষ হয়, সেটা যেন কারুই ইচ্ছা ছিল না... কাজের সময়ের সৌভিক আর পরবর্তী কালে দেখা সৌভিকের মধ্যে অনেক পার্থক্য দেখে সুদেষ্ণা... কাজের মধ্যে সৌভিক যতটা সিরিয়াস, গম্ভীর, ঠিক ততটাই উল্টো কাজের বাইরে তার কাছে... সৌভিকের সেন্স অফ হিউমার, তার চার্ম... মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছিল সুদেষ্ণাকে... তার জলদগম্ভীর কন্ঠস্বরে কেমন যেন মহিত হয়ে গিয়েছিল সে... মনে মনে সে চাইছিল আরো... আরো কিছু বলুক সৌভিক... সৌভিকের মধ্যে একটা পার্ফেক্ট জেন্টলম্যানশিপ খুঁজে পেয়েছিল সে, শুধু ভদ্রই বা বলে কেন, রিফাইন্ড... পোলিশড... সুদেষ্ণা কেমন যেন হারিয়ে গিয়েছিল সৌভিকের ওই মনমুগ্ধকর পার্সোনালিটির মধ্যে। সৌভিকের তাকে করা স্তুতিগুলো যেন এতটুকুও অত্যুক্তি লাগে নি সুদেষ্ণার কাছে... শুনতে শুনতে কেমন যেন একটা ভালো লাগা মিশে যাচ্ছিল তার... লাল হয়ে উঠেছে বারেবার কানগুলো... মনে মনে আরো শুনতে ইচ্ছা করেছে নিজের স্তুতি সৌভিকের মুখ থেকে... সৌভিক যখন প্রশ্ন করেছে তার কর্মক্ষেত্রের পরিকল্পনা নিয়ে, অক্লেশে জানিয়েছে তার নিজের নেওয়া কমিটমেন্ট, তার আরো সফল হওয়ার ইচ্ছাগুলোর কথা...
সেদিন সেই রেস্তরায় তারাই বোধহয় লাস্ট কাস্টমার ছিল... শেষে বাধ্য হয়েছিল উঠতে রেস্তরা বন্ধ হয়ে যাবার কারণে... সৌভিক নিজের গাড়িতে তাকে বাড়ি পৌছিয়ে দিয়েছিল সেই রাতে...
‘অসংখ্য ধন্যবাদ... আজকের সন্ধ্যেটার জন্য... খুব ভালো কাটলো সময়টা...’ বলে উঠেছিল সৌভিক, স্টিয়ারিংএ হাত রেখে সুদেষ্ণার দিকে তাকিয়ে...
‘আমারও খুব ভালো কেটেছে... থ্যাঙ্ক ইয়ু টু ফর দ্য ডিনার...’ উষ্ণ গলায় উত্তর দিতে দ্বিধা বোধ করেনি সুদেষ্ণা...
একটু ভেবে, গাঢ় গলায় সৌভিক প্রশ্ন করেছিল, ‘ক্যান উই ডু দিস এগেন?’
শুনে লাল হয়ে উঠেছিল সুদেষ্ণা ফের... মুখ নিচু করে ইতিবাচক মাথা নেড়ে সায় জানিয়েছিল...
গাড়ি থেকে তাড়াতাড়ি করে নেমে সুদেষ্ণার দরজা খুলে ধরে সৌভিক... তারপর সুদেষ্ণা বাড়ির মধ্যে ঢুকে যেতে যেন উড়তে উড়তে ফিরে যায় তার গন্তব্যস্থলের দিকে... সুদেষ্ণাও ঘরে ঢুকেই বন্ধ করে দেয় দরজাটা... দরজায় ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে একটা বড় করে নিঃশ্বাস টানে... ঠোঁটের ওপরে একটা প্রচ্ছন্ন ভালো লাগার হাসি লেগে থাকে তার...
‘দ্য নাইট ওয়াজ পার্ফেক্ট...’ হয়তো একসাথেই দুজনে একই সময় ভেবেছিল তারা...
।
।
।
এরপর থেকে প্রায় তাদেরকে দেখা যেতে থাকে কখনও ডিনারে, অথবা লাঞ্চএ... মাঝে মধ্যে সিনেমাতেও সময় কাটায় দুজনে একসাথে... এই ভাবেই হপ্তার পর সপ্তাহ কেটে যায়... একদিন সিনেমা হলের মধ্যে আলতো করে হাত রাখে সৌভিক সুদেষ্ণার হাতের ওপরে... তাতে হাত সরায় না সে... বাধা দেয় না হাতে হাত রাখার... তারও যে ভালো লাগা ভরে ওঠে সৌভিকের স্পর্শে... সেদিন আর সামনের পর্দায় কি ঘটেছিল প্রশ্ন করলে হয়তো কেউই বলতে পারতো না সঠিক করে... অবস্য তাতে যে তারা কেয়ার করে না তাও নয়... ওইটুকু স্পর্শই যেন মহোচ্ছন্ন করে রাখে দুজনকে সিনেমা হলের আধো অন্ধকারে...
সেদিন বাড়ি ফিরে সৌভিকে গাড়িতে চুপ করে দুজনে বসে ছিল বেশ খানিকক্ষন... যেন কারোরই ইচ্ছা করছিল না ওই রকম একটা মনোরম সন্ধ্যাটার ইতি টেনে দিতে... একে অপরে দিকে তাকিয়ে থাকে নির্নিমেশ বিনাবাক্য ব্যয়ে... চুপচাপ বসে থাকতে থাকতে সৌভিক সামান্য ঝোঁকে সুদেষ্ণার পানে... সুদেষ্ণাও যেন কেমন যন্ত্রচালিতের মত এগিয়ে যায় নিজের মুখটা তুলে ধরে... সৌভিক আর একটু সাহস করে ঝোঁকে খানিকটা... কিন্তু তারপর থমকে যায়... ইতস্থত করে সে... শেষে সৌভিকের অস্বস্থি বুঝে বাকিটা সুদেষ্ণাই যেন পুরণ করে দিয়েছিল স্বতঃস্ফুর্ততার সাথে... সৌভিকের পুরু পুরুষালী ঠোঁটের ওপরে রেখেছিল তার পাতলা ঠোঁটজোড়া... স্বাদ পেয়েছিল তাদের প্রথম চুম্বনের... সুদেষ্ণার ঠোঁটদুটোকে যেন ফুলের পাপড়ির মত মনে হয়েছিল সৌভিকের... কোমল, আদ্র... অবস্যই স্পর্শকাতর... যেন বেশিক্ষন সে ঠোঁটের ওপরে নিজের ঠোঁট চেপে ধরলে সেটা গলে মিশে যাবে তার মুখের মধ্যে... তুলে নিয়েছিল নিজের ঠোঁটটাকে সুদেষ্ণার ঠোঁটের ওপর থেকে...
সুদেষ্ণার মনে হচ্ছিল বুকের মধ্যে যেন হাজারটা দামামা এক সাথে বাজছে... পুরো শরীরটায় যেন আগুন লেগে গিয়েছিল তার... সৌভিকের ওই সুঠাম দেহের মধ্যে মিশে গলে যেতে ইচ্ছা করছিল... হারিয়ে যেতে ইচ্ছা করছিল চওড়া ছাতিটার মধ্যে... নিজেই তাই ফের উপযাজক হয়ে আপন ঠোঁটটাকে বাড়িয়ে দিয়েছিল সে... ছুয়েছিল সৌভিকের ঠোঁটটাকে নিজের ভেজা ঠোঁট দিয়ে... সৌভিকের শরীর থেকে উঠে আসা পুরুষালী গন্ধটায় কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছিল ঠোঁটের সাথে ঠোঁট মিলিয়ে... বুঝতে পারছিল একটু একটু করে জেগে উঠছে শরীরটা... হারিয়ে যেতে ইচ্ছা করছে নিজের দেহটাকে সৌভিকের হাতের মধ্যে তুলে দিয়ে... দুই উরুর ফাঁকে আদ্রতা বেড়ে উঠছিল ভিষন দ্রুততার সাথে...
শেষে অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে নেয় সুদেষ্ণা... প্রায় নিজের মনের সাথে যুদ্ধ করেই সরিয়ে নেয় নিজের ঠোঁট সৌভিকের ওপর থেকে... ‘নাহ!... এবার বোধহয় যাওয়া উচিত... অনেক দেরী হয়ে গেছে...’ মৃদু স্বরে বলে ওঠে সে... কারণ সে বুঝেছিল আর বেশিক্ষন এই ভাবে থাকলে আর নিজেকে সংযত রাখা যাবে না কিছুতেই...
শৌভিক একবার তার চোখের দিকে তাকিয়ে মাথা নেড়েছিল... ঘুরে গিয়ে দরজা খুলে ধরেছিল সুদেষ্ণার জন্য...
বাড়ি ঢুকেই সুদেষ্ণা বাথরুমে গিয়ে ঢুকেছিল... ঠান্ডা জলের ঝাপটা দিতে চোখেমুখে... শান্ত করার চেষ্টা করেছিল উত্তেজিত হয়ে ওঠা শরীরটাকে... রাতে শুয়ে শুয়ে ভাবে সে, সামান্য একটা চুম্বন যদি তার মধ্যে এই রকম একটা ফিলিংস তৈরী করে, তাহলে যদি সৌভিক তাকে ছুঁতো, কিম্বা তার শরীরের সংস্পর্শে আসতো... কিম্বা... আর ভাবতে পারে না সে... কল্পনা করতে করতে কেঁপে ওঠে সুদেষ্ণার তম্বী শরীরটা এক অজানা সুখের শিহরণে...
এই ঘটনার প্রায় দিন পাঁচেক পর তাদের দেখা হয় আবার... ডিনারে... সেদিন সৌভিককে সামনে দেখে কথা হারিয়ে ফেলেছিল সুদেষ্ণা... মাথার মধ্যে তাদের প্রথম চুম্বনের স্মৃতি ফিরে ফিরে আসছিল সৌভিকের সামনে বসে থাকতে থাকতে... যতবার মুখ তুলে তাকিয়েছে সে, কেন জানে না চোখ আটকে গিয়েছে সৌভিকের পুরুষ্টু ঠোঁট জোড়ার ওপরে... মনের মধ্যে প্রবল ইচ্ছাটা গুনগুনিয়ে উঠছিল ওই সামনে থাকা ঠোঁটদুটোকে ফের নিজের ঠোঁট দিয়ে স্পর্শ করার, ছোঁয়ার... ফের স্বাদ পাবার চুম্বনের... নিজের ঠোঁট দিয়ে চেপে ধরতে... হারিয়ে যেতে ঠোঁটজোড়ার স্পর্শে... বুকের মধ্যেটা কেমন ধকধক করে উঠছিল তার ভাবতে ভাবতে... শুকিয়ে উঠছিল গলা...
ডিনার থেকে ফেরার পর বাড়ির সামনে এসে গাড়ির মধ্যে কেউই সময় ব্যয় করে নি সেদিন আর... যন্ত্রচালিতের মত একে অপরের দিকে ঝুঁকে গিয়েছে... মিলে গিয়েছে তাদের চার জোড়া ঠোঁট কোন এক অদৃশ্য প্রবল আকর্ষণে... এক অবধ্য প্রয়োজনীয়তায় যেন... প্রচন্ড কামনার তাড়নায়...
সৌভিক হাত বাড়িয়ে টেনে নিয়েছে সুদেষ্ণাকে আরো নিজের পানে... বাধা দেয় নি তাতে সুদেষ্ণা... এগিয়ে গিয়ে ধরা দিয়েছে সে সসাগ্রহে সেই আলিঙ্গনে... আরো বেশি করে চেপে ধরেছে নিজের ঠোঁটটাকে সৌভিকের ঠোঁটের ওপরে... আবেশে চোখ বন্ধ হয়ে গিয়েছে দুজনেরই সেই মুহুর্তে...
আর শুধু আলতো চুম্বনের মধ্যেই সিমিত থাকে নি তারা... সুদেষ্ণা রীতিমত চুষতে শুরু করে দিয়েছিল সৌভিকের একটা ঠোঁট নিজের মুখের মধ্যে নিয়ে... আর সেই সাথে আলিঙ্গনের মধ্যে থেকে উপলব্ধি করছিল সৌভিকের দেহ থেকে নির্গত উষ্ণতাটাকে... কখন যে তাদের ঠোঁট জোড়া ফাঁক হয়ে গিয়ে জিভের সাথে জিভ মিলে গিয়েছে, কেউই খেয়াল করে নি... হারিয়ে গিয়েছিল এক নতুন কামনার খেলায় তারা একে অপরের সাথে... শুধু থেকে থেকে যেন বিদ্যুতের ঝটকা খেলে যাচ্ছিল সুদেষ্ণার শরীরের মধ্যে দিয়ে... শিহরীত হয়ে উঠছিল সে বারংবার... বুকের মধ্যে যেন আগুন ধরে গিয়েছিল তার কোন এক অজানা কারণে... শক্ত হয়ে উঠেছিল স্তনের ওই বড়বড় বোঁটাদুটো... যেন পরণের জামা ছিঁড়ে বেরিয়ে আসতে চাইছিল ওই গুলো... দুটো পায়ের ফাঁকে ভিজে উঠছিল সে অসম্ভব দ্রুততায়... বুকের আগুন তার জঙ্ঘায়ও ছড়িয়ে পড়ছিল দাবানলের মত... সেই কামনার আগুনের লকলকে শিখায় পুড়ে গলে যেতে শুরু করে দিয়েছিল তার যোনিটাও... প্যান্টিটা ভিজে জবজবে হয়ে উঠছে যে, সেটা বুঝতে কোন অসুবিধা হয় না তার...
যত সময় গড়িয়েছে, ততই যেন আরো বেশি করে কামার্ত হয়ে উঠেছে তাদের চুম্বন... পাগলের মত একে অপর কে জড়িয়ে ধরে খেলা করে গিয়েছে অন্যের জিভ নিয়ে... যেন আরো নতুন কিছুর অনুসন্ধানে উদ্গ্রীব হয়ে উঠেছিল দুটো তরুন হৃদয়... শেষে যখন তারা বিচ্যুত হয় একে অপরের থেকে, সুদেষ্ণা খেয়াল করে গাড়ির মধ্যে কাঁচের ওপরে বাষ্পের আস্তরণ ঢেকে গিয়েছে... জলের বিন্দু গড়িয়ে নামছে সেই বাষ্প থেকে... অনেক কষ্টে নিজেকে সংবরণ করে সে... সৌভিকও সামলে নেয় নিজেকে... গাড়ির থেকে নেমে দরজা খুলে ধরে বরাবরের মত সুদেষ্ণাকে নামতে সাহায্য করতে... এগিয়ে দেয় বাড়ির সদর দরজা অবধি সুদেষ্ণাকে সে...
সেদিন রাতে প্রথম সুদেষ্ণা সৌভিককে মনে করে স্বমৈথুন করে... আর স্বীকার করতে দ্বিধা বোধ করে না এতটুকুও যে সেদিন রাতে সে প্রচন্ড সুখ পেয়েছিল রাগমোচনের সময়... নিজের ঠোঁটের ওপরে তখনও সৌভিকের চুম্বনের স্পর্শ অনুভব করে...
এরপর থেকে দুজনে সবার কাছে আলোচ্য বিশয় হয়ে ওঠে... প্রায়ই তাদের একসাথে সব জায়গাতেই দেখা যেতে থাকে... রেস্তরায়, শপিং মলে, সিনেমা হলে... একটু একটু করে জমে ওঠে তাদের মধ্যেকার ভালোবাসা... চিনে নিতে থাকে তারা একে অপরকে... কিন্তু কেউই সীমা অতিক্রম করে না... শুধু মাত্র দিনের শেষে হয়তো প্রগাঢ় চুম্বন আর আলিঙ্গনের মধ্যেই সীমিত থাকে তাদের প্রেম পর্ব... থাকে ঠিকই... কিন্তু ভেতর ভেতর দুজনেই উৎসুক হয়ে ওঠে আরো খানিকটা গভীরে সম্পর্কটাকে নিয়ে যাবার অভিলাশায়... তবে মুখ ফুটে কারুরই বলা হয়ে ওঠে না তা নিয়ে অপর জনের কাছে...
এই ভাবেই আরো প্রায় মাস খানেক অতিবাহিত হয়ে যায়... বছর শেষের দিন এগিয়ে আসে... অফিস থেকে সুদেষ্ণাদের গ্রুপ ঠিক করে তারা বছরের শেষ দিনটা মন্দারমনিতে কাটাবে... একটা রিসট বুক করে হইহই করে রওনা দেয় সবাই মিলে... অফিসের গ্রুপ হলেও প্রত্যেকেই সাথে নেয় তাদের প্রিয়জনদের, সেই হেতু সৌভিকও অংশগ্রহন করে তাদের সাথে সুদেষ্ণার একান্ত প্রিয়মানুষ বলে... সৌভিকের সাথে যাওয়া সকলেই আনন্দের সাথে মেনে নেয়... সৌভিক তাদের কাছে পূর্বপরিচিত, তাই অসুবিধা হয় না কারুরই... তারা পৌছায় মন্দারমনি...
দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে সন্ধ্যে নামে... কোথা দিয়ে সময় কেটে যায় যেন তাদের... একটা সময় জড়ো হয় সবাই মিলে রিসটের ব্যাঙ্কোয়েট হলে... খানাপিনা চলতে থাকে শতস্ফুর্ত ভাবে... গান বাজনার আয়োজন ছিল রিসটের তরফ থেকে... ড্যান্স ফ্লোরে সবাই নাচতে থাকে জোড়ায় জোড়ায়... সুদেষ্ণা আর সৌভিকও অন্যদের সাথে হাজির হয় ড্যান্স ফ্লোরে... একে অপরের আলিঙ্গনে আবদ্ধ হয়ে নাচতে থাকে মৃদু সুরের তালে তাল মিলিয়ে... বাড়তে থাকে রাত... একটু একটু উদ্দাম হয়ে উঠতে থাকে রাতের নেশা... ছড়িয়ে পড়তে থাকে উপস্থিত প্রতিটা নরনারীর মনের মধ্যে...
সৌভিকের বলিষ্ঠ বাহুডোরে ধরা দেয় সুদেষ্ণা অক্লেশে... নির্ভয়ে... পরম ভালোবাসায়... নিজের দেহটাকে সম্পূর্ণ সৌভিকের বুকের মধ্যে ছেড়ে দিয়ে... সৌভিকে ওই দৃঢ় আলিঙ্গনের মধ্যে যেন পরম শান্তি আর নিরাপত্তায় ডুবে যায় সুদেষ্ণা... ড্যান্স ফ্লোরে ভেসে বেড়ানো সুরের মুর্ছনায় সৌভিকের বুকে মাথা রেখে দুলতে থাকে ছন্দের সাথে তাল মিলিয়ে...
এই ভাবেই প্রায় রাত গড়িয়ে যায়, গানে, আনন্দে, সুরা রসের প্লাবনে... তারপর প্রায় রাত তিনটে নাগাদ সুদেষ্ণাদের গ্রুপের সবাই ঠিক করে সমুদ্র সৈকতে যাবার... সকলে মিলে হাজির হয় রাতের সমুদ্রতীরে... সেখানেও তাদের হইহই চলতে থাকে... চলতে থাকে ঠাট্টা ইয়ার্কি... আর মদ্যপান...
সুদেষ্ণা আর সৌভিক গ্রুপের থেকে একটু তফাতে সরে যায়... তাতে কেউ বারন করে না... বাধ সাধে না ওদের প্রাইভেসিতে... সৌভিক আর সুদেষ্ণা দুজনে হাতে হাত রেখে চুপচাপ হাঁটতে থাকে জলের ধার ধরে পা ডুবিয়ে রেখে... রাতের সমুদ্র গড়িয়ে এসে পড়ে যেন দুজনের পায়ের সামনে... এক অন্য জগতে হারিয়ে যায় তারা... মুখে কিছু না বললেও যেন কত কথা বলা হয়ে যায় ওই মৌন অবস্থাতেও... শুধু মাত্র ওইটুকু হাতের ছোয়ার মধ্যে দিয়েই সমস্ত প্রাণের নিঃশ্বরণ যেন বেয়ে চলে দুজনার মধ্যে...
গ্রুপের থেকে বেশ খানিকটা সরে আসার পর হটাৎ করে সৌভিক দাঁড়িয়ে পড়ে... সুদেষ্ণার কাঁধ ধরে তাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করিয়ে দেয়... ভুরু তুলে প্রশ্ন ভরা চোখে তাকায় সুদেষ্ণা... অবাক হয় সৌভিকের এহেন আচরণে...
‘সুদেষ্ণা... তোমায় একটা কথা বলতে চাই...’ গাঢ় স্বরে বলে ওঠে সৌভিক...
‘কি?’ অস্ফুট স্বরে প্রশ্ন করে সুদেষ্ণা...
‘আমার জীবনে আজ যত খুশি, যত আনন্দ... তার সিংঘভাগটাই তোমার দেওয়া... আজ আমি এই মুহুর্তে জীবনের সব থেকে সুখি বলতে পারো... আর...’ বলতে বলতে ইতঃস্থত করে সৌভিক...
সৌভিকের কথায় কোন উত্তর দেয় না সুদেষ্ণা... বুকের মধ্যেটায় কেমন অকারণেই ঢিবঢিব করে তার... উদ্গ্রিব নয়নে সেই রাতের অন্ধকারের আলোয় তাকিয়ে থাকে সৌভিকের পানে...
‘...আর... আমি চাই এই সুখ, এই খুশি, সারা জীবন ধরে রাখার জন্য...’ বলতে বলতে হটাৎ করেই ওই বেলাভূমির ওপরে একটা পায়ের হাঁটু মুড়ে বসে পড়ে সৌভিক, তারপর সুদেষ্ণার একটা হাত নিজের হাতের মধ্যে ধরে গাঢ় স্বরে বলে ওঠে... ‘সুদেষ্ণা... আই লাভ ইয়ু... অ্যান্ড হোয়াট আই অ্যাম ট্রাইং টু সে... সুদেষ্ণা, উইল ইয়ু ম্যারি মী?’
সুদেষ্ণা বেশ খানিকক্ষন এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সৌভিকের দিকে... বুকের মধ্যে তখন যেন হাজারটা ঘোড়া এক সাথে দৌড়ে যাচ্ছে তার... অকারণেই কেন জানে না সে ভিজে ওঠে চোখের কোনটা... তারপর ধীরে ধীরে ঘাড় নাড়ায় সে... ‘হু... ইয়েস...’ অস্ফুট স্বরে উত্তর দেয় সুদেষ্ণা...
উঠে দাঁড়ায় সৌভিক... চুপচাপ এক দৃষ্টিতে খানিক তাকিয়ে থাকে তার প্রেয়সীর পানে... তারপর আলতো করে বাহুডোরে টেনে নেয় সুদেষ্ণাকে... সুদেষ্ণাও সৌভিকের বুকের ছাতির মধ্যে হারিয়ে যেতে এতটুকুও ইতঃস্থত করে না... দুহাত দিয়ে সৌভিকের পুরুষালী দেহটাকে জড়িয়ে ধরে মুখ তুলে তাকায় তার মুখের পানে... বছরের প্রথম দিনের তারা ভরা সমুদ্র সৈকতের খোলা আকাশের নীচে সমুদ্রের ঢেউএর গর্জনকে শাক্ষী রেখে ডুবে যায় দুই জোড়া ওষ্ঠ একে অপরের মধ্যে...
তাদের রিসর্টটা সৈকতের একেবারেই কাছে ছিল, তাই দুজনে হাতে হাত রেখে ফিরে আসে রুমে সকলের অজানতে... রুমে ঢুকে আলো জ্বালার প্রয়োজন বোধ করে না দুজনেই... ঘরের আধো অন্ধকারের নির্জনতায় ফের টেনে নেয় সুদেষ্ণাকে বুকের মধ্যে সৌভিক... ঠোঁট রাখে সুদেষ্ণার তিরতির করে কাঁপতে থাকা পাতলা ঠোঁটের ওপরে... চোখ বন্ধ করে ফেলে সুদেষ্ণা... আঁকড়ে ধরে সৌভিককে নিজের দেহের সাথে... উষ্ণ বুকদুটো নিষ্পেশিত হতে থাকে সৌভিকের ছাতির ওপরে...
চুম্বনরত অবস্থায় কখন বিছানার কিনারে এসে দাঁড়িয়েছে তারা, কেউই খেয়াল করে নি... আলতো করে সুদেষ্ণাকে শুইয়ে দেয় রুমের পরিপাটি করে পাতা বিছানার ঠান্ডা চাঁদরের ওপরে...
বিছানায় চিৎ হয়ে শুয়ে মুখ তুলে তাকায় সৌভিকের পানে সুদেষ্ণা... চোখের মধ্যে তখন তার একরাশ কামনা যেন ঘিরে ধরেছে... রুমের আবছায়া অন্ধকারেও বেশ বোঝা যায় চোখের মধ্যে লেগে থাকা লাল রঙ... নিঃশ্বাস দ্রুত থেকে দ্রুততর হয়ে উঠতে থাকে...
বিছানায় সুদেষ্ণার পাশে বসে সৌভিক, তারপর নিজের দেহটাকে নামিয়ে আনে সুদেষ্ণার মুখের ওপরে... হাত বাড়িয়ে সৌভিকের গলাটাকে জড়িয়ে ধরে টেনে নেয় নিজের পানে... মিলে যায় তাদের ওষ্ঠ ফের... দুটো শরীরের মধ্যে যেন আগুন জ্বলে ওঠে সাথে সাথে... গলা ছেড়ে সৌভিকের পীঠের ওপরে হাত রাখে সুদেষ্ণা... তার পুরো শরীরের ভারটা টেনে নেয় নিজের দেহের ওপরে... নরম বুকদুটো ফের নিষ্পেশিত হতে থাকে সৌভিকের চওড়া ছাতির চাপে... সৌভিকের মুখের মধ্যেই গুনগুনিয়ে ওঠে সুদেষ্ণা... নিজের জিভটাকে পুরে দেয় সৌভিকের মুখের মধ্যে... খেলা করতে থাকে সৌভিকের জিভটাকে নিয়ে... সেই মুহুর্তে তাদের কাছ থেকে পুরো পৃথিবীটাই যেন বিস্মৃত হয়ে যায় একেবারে... যেন সেই মুহুর্তে জগতে তারা শুধু মাত্র দুটিই জীবন্ত মানব মানবী একে অপরের শরীরের অনুসন্ধানে ব্যস্ত...
সৌভিক গড়িয়ে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়ে... সুদেষ্ণাকে নিজের ওপরে তুলে নেয়... কিন্তু মুখের জোড় খোলে না কারুরই ... সুদেষ্ণাকে নিজের বুকের ওপরে শুইয়ে রেখে হাত রাখে তার পীঠে... ঘুরে বেড়ায় পরিধেয় জামার ওপর দিয়েই পীঠ বেয়ে... আসতে আসতে তার হাত নেমে যায় সুদেষ্ণার কোমরের কাছটায়... সেখান থেকে জামার মধ্যে ঢুকিয়ে দেয় হাতটাকে... তারপর হাতটা ফের উঠে আসতে থাকে ওপরের পানে, সুদেষ্ণার নগ্ন শিড়দাঁড়া বেয়ে একটু একটু করে... হাতের আঙুলগুলো শুধু ছুঁয়ে থাকে সুদেষ্ণার কোমল মসৃণ চামড়ায়...
সুদেষ্ণা অনুভব করে সৌভিকের হাতের আঙুলের স্পর্শের একটু একটু করে উঠে আসা... অপেক্ষা করে যেন সে কতক্ষনে সেটা এসে পৌছাবে তার ব্রা অবধি... সারা শরীরটা শিরশির করে ওঠে তার...
‘ওহ! সৌভিক...’ সৌভিকের হাত ব্রায়ের ওপরে পৌছাতেই গুঙিয়ে ওঠে সুদেষ্ণা সৌভিকের মুখের মধ্যে মুখ রেখে...
আসতে করে ব্রায়ের হুক খুলে দেয় সৌভিক... সুদেষ্ণা অনুভব করে ব্রায়ের স্ট্র্যাপটার বাঁধনের আলগা হয়ে যাওয়া... কাঁটা দেয় শরীরে তার... নতুন উদ্যমে মুখ গুঁজে দেয় সৌভিকের মুখের মধ্যে... নিজের পুরো জিভটাকে পুরে দিয়ে চেপে ধরে শরীরটাকে সৌভিকের দেহের ওপরে... চোখ বন্ধ করে অনুভব করতে থাকে তার ব্রায়ের স্ট্র্যাপ খোলা নগ্ন পীঠের ওপরে ঘুরতে থাকা সৌভিকের হাতের ছোয়ার...
সৌভিক সুদেষ্ণাকে জড়িয়ে ধরে ফের চিৎ করে শুইয়ে দেয় বিছানায়, তার মুখের ওপর থেকে মুখ না সরিয়েই... তারপর তাদের দুইজনের দেহের ফাঁক গলিয়ে ডান হাতটাকে ঢুকিয়ে দেয় সে... ঢুকিয়ে দেয় সুদেষ্ণার শার্টের মধ্যে দিয়ে... নরম পেটের ওপরে হাত রাখে... একটা সম্ভাব্য সুখের উত্তেজনায় কেঁপে ওঠে সুদেষ্ণার শরীরটা... পায়ের নখ থেকে মাথা অবধি শিহরণ খেলে যায় নগ্ন পেটের চামড়ায় সৌভিকের হাতের ছোঁয়া পেয়েই... ‘আহহহ...’ মুখ থেকে একটা শিৎকার বেরিয়ে এসে হারিয়ে যায় সৌভিকের মুখের মধ্যে...
পেটের ওপরে, নাভীর চারপাশে খানিক হাত বুলিয়ে আস্তে আস্তে হাতটাকে তুলে নিয়ে আসে সৌভিক আরো ওপর দিকে... ছোঁয়া পায় হাতের আঙুলের ওপরে ব্রায়ের কাপের আচ্ছাদনের আড়ালে থাকা সুদেষ্ণার নরম মাংসল স্তনের... আরো ঠেলে তুলে দেয় হাতটাকে ওপরের পানে... হাতের চাপে সরে যায় স্ট্র্যাপের বাঁচন খোলা শিথিল হয়ে থাকা ব্রায়ের কাপটা সুদেষ্ণার পরিপক্ক স্তনের ওপর থেকে... ব্রায়ের কাপ সরে গিয়ে জায়গা করে দেয় সৌভিকের হাতের তেলোটাকে... একটা স্তন সৌভিকের হাতের তেলোর মধ্যে হারিয়ে যায়... আলতো করে চাপ দেয় সৌভিক স্তনটাকে হাতের মুঠোয় পুরে... ‘উমমফফফ...’ গুঙিয়ে ওঠে সুদেষ্ণা পরম আশ্লেষে... আঁকড়ে ধরে সৌভিকের পীঠটাকে নিজের হাতের মুঠোয়...
সুদেষ্ণার মনে হয় যেন সৌভিকের হাতের তালুর গরমে পুড়ে যাবে ধরে থাকা স্তনটা... মাথার মধ্যেটায় কেমন একটা অদ্ভুত শূণ্যতা গ্রাস করে তার... নিজের থেকেই বুকটাকে তুলে, মেলে ধরে সৌভিকের হাতের মুঠোর মধ্যে... সৌভিক সুদেষ্ণার ঠোঁট ছেড়ে মুখ গোঁজে সুদেষ্ণার ঘাড়ে... সংবেদনশীল ঘাড়ের নরম চামড়ায় সৌভিকের উষ্ণ ঠোঁটের স্পর্শে ফের কেঁপে ওঠে সুদেষ্ণা... শিথিল হয়ে যেতে থাকে তার সমস্ত শরীর... শুধু অনুভুত হয় সৌভিকের হাতের মুঠোয় ধরা স্তনের নিষ্পেশণ...
‘ওহহহহহ...’ শিৎকার বেরিয়ে আসে সুদেষ্ণার মুখ থেকে...
কুনুইয়ে ভর রেখে হেলে উঠে বসে সৌভিক... বুকের ওপর থেকে হাত সরিয়ে এনে কোমরের কাছ থেকে সুদেষ্ণার পরণের শার্টের হেম ধরে গুটিয়ে তুলে দেয় বুকের ওপরে... খোলা দেহে ঠান্ডা হাওয়া ঝাপটা মারে... চোখ বন্ধ করে ফেলে সুদেষ্ণা... ওই ভাবেই অর্ধনগ্ন শরীরে এলিয়ে পড়ে থাকে সৌভিকের চোখের সন্মুখে...
মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সৌভিক সুদেষ্ণার সুগঠিত বর্তুল স্তনদুটির দিকে... প্রচন্ড উত্তেজনায় তখন স্তনবৃন্তদুটো অস্বাভাবিক দৈর্ঘে বুকের ওপরে যেন সদর্পে দাঁড়িয়ে রয়েছে... যেন তাকেই আহবান করছে তার মুখের মধ্যে তুলে নেবার জন্য...
মাথা নামিয়ে আলতো করে চুম্বন করে একটা স্তনবৃন্তের ওপরে... ‘ওহহহহ... মাহহহহ...’ ফ্যাসফ্যাসে গলায় হিসিয়ে ওঠে সুদেষ্ণা... বুকদুটোকে আরো চিতিয়ে তুলে দেয় সৌভিকের পানে... হাত তুলে রাখে সৌভিকের মাথার চুলের মধ্যে...
মুখ খুলে টেনে নেয় শক্ত হয়ে থাকা স্তনবৃন্তটাকে প্রায় পুরোটাই মুখের মধ্যে সৌভিক... জিভ বোলায় সেটার চারধারে... অন্য হাত তুলে রাখে অপর স্তনটার ওপরে... চাপ দেয় সেটাতে... মুঠোয় রেখে চটকায়... হাতের তেলোয় অনুভব করে সেটার স্তনবৃন্তের উপস্থিতি... দুই আঙ্গুলের চাপে ধরে সেটাকে... আলতো করে চাপ দিতে দিতে চুষতে থাকে মুখের মধ্যে থাকা স্তনবৃন্তটাকে নিয়ে...
সুদেষ্ণার সারা শরীরে আগুন জ্বলতে থাকে দাউদাউ করে... সৌভিকের চুলটাকে খামচে ধরে টেনে আনে তার মাথাটাকে নিজের বুকের ওপরে... চেপে ধরে সেখানে... ‘ওহহহহ... চোষোওওও... খেয়ে ফেলোওওওও...’ হিসিয়ে ওঠে সে নিজের বুকটাকে ফের উঁচু করে তুলে ধরে চোখ বন্ধ রেখে... একটা অসহ্য সুখ তার তখন সারা শরীর জুড়ে দৌড়ে বেড়াচ্ছে যেন... পাগলের মত ছটফট করতে শুরু করে সে... অনুভব করে শুধু মাত্র শরীরেই নয়, আগুন লেগেছে যোনির মধ্যেও... পরনের জিন্সের সীমটা তার জঙ্ঘায় প্রচন্ড শক্ত হয়ে চেপে বসেছে... যেন তার যোনির মধ্যে ঢুকে গিয়েছে কাপড়টা... ঘসা খাচ্ছে তার যোনির ওষ্ঠে অবিরত... ঘসা খাচ্ছে তার ভগাঙ্কুরটাও জিন্সের আর প্যান্টির কাপড়টার সাথে... ভিজে যাচ্ছে সে... ভিষন দ্রুত সে ভিজে উঠছে... প্রচন্ড বেগে রসক্ষরণ হয়ে চলেছে তার শরীর থেকে... সব সময় চেয়েছে বিয়ে অবধি তার কুমারীত্ব বাঁচিয়ে রাখার... কিন্তু সেই মুহুর্তে যেন এক অসম লড়াই করে চলেছে সে নিজের সাথেই... আর বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না তার এতটুকুও যে সে হেরে যাচ্ছে একটু একটু করে সেই লড়াইয়ে... মন না চাইলেও তার শরীর চাইছে সবটুকু সৌভিকের হাতে তুলে দিয়ে উজাড় করে দিতে নিজেকে এই মুহুর্তে... উরুর ওপরে সৌভিকের ঋজু পৌরষের ছোয়ায় বুঝতে অসুবিধা হয় না সুদেষ্ণার যে সৌভিকও চাইছে তাকে তারই মত... চাইছে তার সাথে মিলিত হতে... আর তার ক্ষমতা যেন নিঃশেষিত হয়ে গিয়েছে সৌভিকে সে চাহিদাকে অস্বীকার করার... কারন সেও যে পরম আকাঙ্খায় তুলে দিতে চাইছে নিজের দেহটাকে সৌভিকের কাছে... হারিয়ে যেতে চাইছে তার সব টুকু উজাড় করে দিয়ে...
হটাৎ তাদের রুমের বন্ধ দরজার ওপারে কিছু কন্ঠস্বর কানে ভেসে আসে... কিছু লোকের উপস্থিতি... সাথে সাথে একটা ঝটকায় যেন বাস্তবের কঠিন মাটিতে ফিরে আসে সুদেষ্ণা...
‘সৌভিক... আমরা... আমাদের থামা উচিত...’ কোনরকমে কথাগুলো যেন উগড়ে দেয় সুদেষ্ণা বুকের মধ্যে থেকে...
‘কি?’ আশ্চর্য হয়ে যায় সুদেষ্ণার কথায়... নরম স্তনের ওপর থেকে মুখ তুলে ভুরু কুঁচকে প্রশ্ন করে সৌভিক...
‘আ...আমাদের... আমরা এটা করতে পারি না... উই কান্ট ডু দিস... আমাদের... আমাদের থামা উচিত...’ প্রায় হাঁফাতে হাঁফাতে বলে সুদেষ্ণা...
‘সত্যিই?’ অবাক গলায় ফের প্রশ্ন করে সৌভিক... তখন যেন সে বিশ্বাস করতে পারে না এইখান থেকে কেউ থামতে চায় বলে... ভাবে হয়তো ফের মেনে নেবে সুদেষ্ণা... হয়তো ফের চাইবে হারিয়ে যেতে খানিক আগের মত করে... টেনে নেবে তাকে নিজের ওপরে চরম সুখ পাবার প্রবল ইচ্ছায়...
‘হ্যা সৌভিক... আসলে... অ্যাকচুয়ালি আই ডোন্ট ওয়ান্ট টু... বাট উই হ্যাভ টু স্টপ...’ অনেক কষ্টে যেন কথাগুলো বলে সুদেষ্ণা...
সৌভিক খানিক চুপ করে তাকিয়ে থাকে সুদেষ্ণার চোখের দিকে... তারপর আসতে আসতে উঠে বসে সোজা হয়ে... ‘হুম... ঠিক... ইয়ু আর রাইট... ভালোই হলো... অন্তত একজন তো নিজের বোধবুদ্ধি হারায় নি... ওকে...’ বলে ম্লান হাসে সে...
সুদেষ্ণার বুঝতে অসুবিধা হয় না কতটা জোর করেই হাসিটা টেনে আনতে হয়েছে ঠোঁটের ওপরে সৌভিককে... আর তার এই কথায় এটাও বুঝতে অসুবিধা হয়না সুদেষ্ণার যে সত্যিই সৌভিক তাকে কতটা প্রাণ দিয়ে ভালোবাসে...
সৌভিক আর একবার মাথা নামিয়ে সুদেষ্ণার ঠোঁটের ওপরে একটা আলতো করে চুম্বন এঁকে দেয়... তারপর উঠে দাঁড়িয়ে বলে, ‘গুড নাইট...’ বলে আর দাঁড়ায় না... সোজা দরজা খুলে বেরিয়ে যায় রুম থেকে... সুদেষ্ণা চুপচাপ বিছানায় ওই ভাবেই শুয়ে তাকিয়ে থাকে সৌভিকের চলে যাওয়া শরীরটার দিকে...
সৌভিক চলে গেলেও যে আগুন লেগেছে শরীরে সুদেষ্ণার, সেটা নেভেনা তখনও... সারা শরীরে সেই কামনার আগুন তখনও যেন দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে তার... মোবাইল ফোনে কল করে অনন্যাকে, তার ওই হোটেলের রুমের পার্টনার... ‘এই অনন্যা... তুই কি আসছিস?’
‘কেন রে? তুই কি ফিরে গিয়েছিস নাকি হোটেলে?’ প্রশ্ন করে অনন্যা...
‘হ্যা... মানে খুব ঘুম পাচ্ছিলো, তাই ভাবলাম... তোর কাছে কি রুমের চাবি আছে?’ বলে সুদেষ্ণা...
‘রুমের চাবি তো আমার কাছে নেই রে? তা এক কাজ কর না... তোর ঘুম পাচ্ছে যখন, তুই শুয়ে পড় দরজা বন্ধ করে, আমরা ভাবছি আরো খানিকক্ষন বিচেই থাকবো, একেবারে সানরাইজ দেখে ফিরবো... তোকে চিন্তা করতে হবে না... জাস্ট চিল... ঘুমিয়ে পড় তুই...’ আস্বস্থ করে সুদেষ্ণাকে তার রুমের পার্টনার...
‘ওহ!... কুল... ঠিক আছে... তাহলে তোরা এঞ্জয় কর, আমি দরজা লক করে দিচ্ছি... কেমন?’ ফের একবার আস্বস্থ হতে চায় সুদেষ্ণা...
‘হ্যা... হ্যা... নো প্রবলেম... বাই... কাল দেখা হবে সকালে...’ বলে ফোন কেটে দেয় অনন্যা...
সুদেষ্ণা উঠে দরজা বন্ধ করে দেয় রুমের... রুমের জানলার পর্দাগুলো ভালো করে টেনে দিয়ে পরণের জিন্স, টি-শার্ট আর আধখোলা ব্রা ছেড়ে রেখে রাতের নাইটিটা পরে উঠে আসে বিছানায়... দেহের থেকে প্রায় ভিজে চপচপে হয়ে থাকা প্যান্টটা খুলে রেখে দেয় পাশে... তারপর দুই পা দুদিকে মেলে দিয়ে আঙুল গুঁজে দেয় নিজের যোনির মধ্যে... চোখ বন্ধ করে স্বমৈথুন করতে থাকে তীব্র কামনার আগুনে জ্বলতে থাকা শরীরটাকে ঠান্ডা করার চেষ্টায়... মুখ বিকৃত হয়ে যায় প্রচন্ড সুখের তাড়সে একবার নয়, প্রায় তিন চারবার উপুর্যুপরি রাগমোচনের প্রতিঘাতে... শেষে ক্লান্ত অবসন্ন শরীরে এলিয়ে পড়ে ঘুমের কোলে হারিয়ে যায় সে...
ক্রমশ...