Thread Rating:
  • 29 Vote(s) - 3.21 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
বিত্তবান by virginia_bulls
#21
বিকেলটা হোটেলেই কাটিয়ে দিলাম । বিকেলের মুন্নার যেন মনে আনন্দের বন্যা বইয়ে দেয়, কি হবে হিসেব নিকেশ করে , কি বা হারালাম , এ মহাবিশ্বে হাজার হাজার আমি জন্মে আবার মরে যাবো, কিন্তু এমন স্বর্গীয় অনুভূতি শুধু মুন্নারই দিতে পারে । সূর্যাস্ত মানুষ কে নতুন দিনের কথা ভাবতে শেখায় । সব নশ্বর, কোনো কিছুই
থাকবে না না এ পৃথিবী না এ মহাবিশ্ব , চরম অসীম শুন্যতায় একটা একটা করে এমন বিশ্ব মিলিয়ে যাবে , আর তারই আসিব অনাদি শক্তি নিয়ে আবার তৈরী হবে কোনো নতুন মহাবিশ্ব । এর ই নাম ব্রহ্মজ্ঞান । নিজের দেহ অনুভূতির বাইরে গেলে এই জ্ঞান এর অনুভূতি মানুষের আসে না।
 
অধ্যায় আমি শেষ পর্যন্ত ববিনের হাতেই সপে দিয়েছে , ঐটুকু মায়া না করাই ভালো । মাকে লুকিয়ে দুপুর থেকে এক নিঃশ্বাসে পড়ে চলেছে আমার ভালো মন্দ দোষ গুন্, আর বাবা হিসাবে এর চেয়ে বড়ো সাহস জীবনে আর হয় তো বোধি কে দেয়া হবে না । বিচার আমার যদি করতেই হয় , তাহলে আমার উপযুক্ত ছেলেই করুক । দোষ গুনে ভরা আমার জীবনের উপলব্ধি যাচাই করে নিক বোধি, যাতে ওকে আমার মতো ভুল করতে না হয় । কাল হয় তো ওর অধ্যায় পড়া শেষ হয়ে যাবে , তার পর আমিও আমার চোখ দিয়ে ওর চোখের গভীরে খুঁজবো , কোনো ক্ষমা অবশিষ্ট আছে কিনা ! যদি খুঁজে পাই তাহলে শ্রী কে প্রশ্ন করবো তার চোখে কোনো ক্ষমা কেন ছিল না সেদিন ।
 
কাল আমিও সাহস করে এগিয়ে যাবো , নতুন করে একলা হতে হবে বলে । এক দিন মার মতো আমায় ববিন কে ছেড়েও আমায় চলে যেতে হবে , তাই বদলের শেষ লড়াই টা লড়তে চাই একলা নিঃসঙ্গ হয়ে , নিজের সাহস আর ভুল স্বীকার করবার ক্ষমতা নিয়ে রুখে দাঁড়াবো আমার জীবনের এই প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে ববিন কে নিজের ঢাল বানিয়ে নয় । ভীরু কাপুরুষের মতো বাঁচতে চাই না , তাই তো নিজের জীবনের পাতা টাই ধরে দিয়েছি ববিনের হাতে যাতে ওহ আমার মতো লেখবার সাহস আর প্রেরণা পায়। সব গল্পে নায়ক থাকে , আর জীবন এমন অনেক নাম গোত্র হীন সাধারণ মানুষ কে দিয়ে বিত্তবানের স্তম্ভ রচনা হয় ।
 
আমি বিত্তবান নই, কিন্তু বিত্তহীন হয়ে মরার চেয়ে জীবনের শেষ লড়াই লড়বো বলেই শ্রীর সামনে আসা ।
চায়ের কাপ রেখে গেলো এক জোয়ান ছোকরা।
 
চায়ের কাপ নিয়ে ব্যালকনি তে বসে দেখতে থাকলাম দূরের নীল আকাশ, ওই আকাশের কোনো ঠিকানা হয় না ,না হয় দেশ দেশান্তরের সীমা রেখা ওই আকাশে , সেখানে আকাশ মানুষ কে নাম ধরে ডাকে না , চেনে না, জানেও না কোনো মানুষের জাত পাত বর্ণ গন্ধ আর ছোট খাটো মিথ্যে ঝগড়া। আকাশ শুধু তাদের জন্য যারা প্রায়শ্চিত্ত করতে চায়, আর সেই জন্য বুঝি চিতার ধোয়া গুলো আকাশেই মিলিয়ে যায় ।
 
অন্ধকার আমার সাহস কে ভেঙে ফেলতে পারে নি , হালকা পাহাড়ি হিমেল হওয়ায় দাঁতে দাঁত পিষে এখনো লড়ার প্রেরণা পাই । কাল মহাসংগ্রাম আর তারই প্রস্তুতি আমার শিহরণে শিহরণে । মানুষ ভুল করে ফিরেও আসতে পারে, সব শেষ হয়ে যায় না ভুলে , মা এমনটি করে আগলে তার কোলের শিশু কে মাটিতে আরেক বার ঠেলে দেয় , আর এক দিন সোজা হয়ে মানুষ হাটতে শেষে ।
শ্রী আমায় সেই সুযোগ দেয় নি ।
 
আর দেয় নি বলে রীনাকে মন থেকে মুছে ফেলা হয় নি , মুছে ফেললেও সুগন্ধি ধূপের মতো আমায় এতো দিন সুবাসিত করে রেখেছে আস্তাকুড়ে পড়ে থাকা আমার জীবন কে বেশ কিছু অন্তরঙ্গ ভালোলাগার মধ্যে দিয়ে ।
 
রাতে বিশেষ কিছু খাই না, তবুও ওয়েটার যা খাবার ঘরে দিয়ে গেলো , তার গন্ধে মন খেতেই চাইলো , রাজমা চাউল, রায়তা, নান আর একটা সুইট ডিশ । অনেক ক্ষণ ববিন আসে নি আমার কাছে । ওকেও হয় তো এই সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে যেতে হচ্ছে আমারি মতো , নিজের বাবা কে ক্ষমা করা যায় কিনা ! ওকেও মেপে নিতে হচ্ছে আমার এতো গুলো বছরের কেটে যাওয়া অন্তরঙ্গ মুহূর্ত গুলোর সাক্ষী হয়ে । মার্ রাজসাক্ষী হয়ে তাকেই আমার মৃত এ সম্পর্কের বৈতরণী বয়ে বেড়াতে হবে । একটা সোনার আর রুপোর কাঠি তার চাই, নাহলে আমার বাকি জীবনের পাথেয় বলে কিছুই থাকবে না ।
 
সকালে মুন্নার লেকে , অনেক মানুষের ভিড় , তারা ছোটো হাঁসি গুলো কুড়িয়ে নিয়ে একে ওপর কে উপহার দিচ্ছে , জীবনের পাথেয় ভেবে । তাদের যোবনের চলার পথ অনেক টাই বাকি রয়ে গেছে , আর আমি জীবনের অনেক টা পথ চলে জীবনের পাথেয় খুঁজতে বেড়িয়েছি ।
পা আমার লক্ষ্য ভ্রষ্ট হয়েছিল অনেক বছর আগে , আজ লক্ষ্য স্থির করা হয় নি । বেসামাল মন টা আজ ঠিক করে উঠতে পারে না , শ্রী বড়ো ছিল না রীনা বড়ো । সুতোর ডাক ধরে এগিয়ে গিয়ে নিজেকেই খুঁজে পেয়েছি , কিন্তু খুঁজে পাইনি আমার সংসারকে ।
 
খানিকটা এগিয়ে একটু ফাঁকা জায়গায় এসে বসলাম । এখন থেকে লেকের ধার ধরে প্রেমিক প্রেমিকা রা হাত ধরে হেটে বেড়ায় । হাঁটার তালে তালে উপচে পড়া স্বপ্ন গুলো মুক্তোর মতো রাস্তায় বিছিয়ে যায় । কখনো আবেগের রোমন্থনের মিষ্টি বাতাস জীবনের সব গ্লানি মুছিয়ে দেয় , কোথাও নতুন জীবন জেগে ওঠে । এমনি মায়া ভরা এ সংসার, আমার আমার বলে আঁকড়ে থাকে পৃথিবীর সব মানুষ শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত , আর মারা যাবার পরেও উপঢৌকন দিয়ে ভুলিয়ে দিতে হয় এমন আমার জিনিস পসরা করে শেষ কৃত্যে আমারই অস্তিত্বে ।
 
দূর পাহাড়ি গাছ গুলোর নাম জানা হয় নি কখনো , হালকা বেগুনি রঙের ফুলে ভরে উঠেছে রাস্তা , এখানে বোধ হয় কোনো ঋতু বা কাল কখনো আসে না , এতো মানুষের ভালোবাসায় তার আর আসবার দরকার পড়ে না মনের ভাব বদলে দিতে । শ্রীর সামনে দাঁড়াবো বলে চোখ টা চিলের মতো সাজিয়ে রেখেছি , আর হাজার দূরেই থাকুক না কেন সে , তার শরীরের একটা চলন আমার চোখ কে ফাঁকি দিয়ে যাবে না । একটা মেয়ের সামনে আমি হেরে গেছি । আর এ হার আমার নয় , এ হার রীনার ও । আমাকে সুখী দেখতে চায় বলেই মহাপ্রস্থান হয়েছে তার । জীবনে নাম গোত্রহীন হয়ে কোথাও নিজের জীবন কাটিয়ে দিয়েছে জীবন থেকে কিছু না পাবার পরোয়া করে । আমি রীনার মতো সাহসী হতে পারি নি ।
 
ঘন্টা খানেক এদিক ওদিক ঘুরে মনের সাহস টা মোমবাতির মতো গলে চুইয়ে চুইয়ে পড়ছে । দপ করে নিভে যাবে এমন নয় । কিন্তু আলোর ক্ষমতা তার মৃতপ্রায় । ঝিলেরই এক কোণে নিঃশব্দে বসে জলের তরঙ্গ দেখছে শ্রী । হাতের মুঠো গুলো শক্ত করে এক বার পিষে নিলাম । সামনে আজ আমায় দাঁড়াতেই হবে , যোগ্য উত্তর থাকে আর না থাকে । পা বাড়িয়ে এগিয়ে গেলাম শ্রীর কাছে ।
 
পাশে এসে বসলাম শ্রীর । আমার দিকে না তাকিয়েই মুখ শক্ত করে বললো শ্রী "জানতাম একদিন ববিন তোমায় আমার সামনে এনে দাঁড় করাবে ।
বোলো কি বলবে , এটাই যে তুমি নির্দোষ , নাকি ক্ষমা চাইবে , এদুটোর বাইরে আজ তুমি যা চাইবে আমি দেব !"
তোমার সব প্রশ্নের উত্তর দেব আজ"" ।
 
আমার বলার আগেই আমাকে বাক রুদ্ধ করে তাকিয়ে রইলো অপলক আমার দিকে ।
আমি হারতে চাই না এ বদলানোর খেলায় আমি হেরে গেলে আমার অস্তিত্ব আমায় কাপুরুষ বলে ঘৃণা করবে । "আমাকে আমার কথা বলার অধিকার টুকু কেন দিলে না ! কোন অপরাধে !"
"অপরাধ তো তোমার নয় বরুন , অপরাধ আমার , স্বপ্ন দেখার অপরাধ ! আর অধিকারের প্রশ্ন , তুমি কি আমায় নিষ্পাপ ভালোবাসা দিয়েছো ? প্রশ্ন করো নিজেকে !"
সত্যি তো আমার শ্রী কে নিষ্পাপ ভাবে ভালোবাসা হয় নি , আমিও তো আমার ভালোবাসাকে ভাগ করে ফেলেছি । তবুও লড়ে যাবো আর শ্রী কে আমার স্ত্রীর যোগ্য মর্যাদা দেব । হোক এতো বছর পর তবুও তো সময় এসেছে । আমার অস্তিত্ব , মেকি মূল্যবোধ সব কিছু দূরে সরিয়ে সমর্পন করবো শ্রীর কাছে !
"তোমার মনে হয় না তুমি প্রতারণা করেছো ? না তার সাথে না , তোমার নিজের স্ত্রী আর সন্তানের সাথে !" শ্রী তীক্ষ্ন ধারালো দৃষ্টি দিয়ে শানিত আঘাত করে ।
আমি প্রতিঘাত সামলে প্রশ্ন তুলি "কেউ যদি ভুল করে কোনো ভুল করে বসে সে ভুলের কি কোনো ক্ষমা নেই তোমার কাছে !"
"এটা ভুল হতে পারে না বরুন তুমি কি জানতে না * স্ত্রী সব কিছু সইতে পারে, পারে না শুধু স্বামীর ভাগ দিতে , আর তুমি সে ভাগ কি করে দিতে পারলে আরেকজন কে ?"
কোনো প্রতারণা তো আমি করিনি , আর স্বীকার করছি ভুল করেছি , কিন্তু তোমার আর ববিনের অধিকার ক্ষুন্ন করে , কাওকে মিথ্যে ছলনা করে প্রলোভন দেখিয়ে আমি তো তোমার সাথে প্রতারণা করি নি !"
"স্বীকার করছি ভুল কিন্তু সে ভুলের কি এতো বছর কোনো ক্ষমা ছিল না ?"
শ্রী তীক্ষ্ন দৃষ্টি দিয়ে আমার বুকের ভিতর পড়ে নিতে থাকলো আমার লুকোনো কথা ।তার পর শান্ত হয়ে বলে উঠলো " স্নেহের বেলায় কি তুমি একই কথা বলবে ! দিনের পর দিন আমি স্নেহের চোখে তোমার প্রতি তার অযাচিত ভালোবাসা খুঁজে পেয়েছি ! বোলো চুপ করে আছো কেন !"
" আমি নিরুপায় ছিলাম শ্রী । কিন্তু বিশ্বাস করো স্নেহের মেয়ে আমার সন্তান নয় , সে শুধু সিদ্ধার্থের , তুমি আবার ভুল করছো শ্রী !আমি অপরাধ করেছি আমি প্রায়শ্চিত্ত শুধু করতে চাই !"
এতো গুলো বছর আমি কাটিয়েছি রোজ এই মনে করে যে এটাই আমার প্রায়শ্চিত্ত !"
শ্রী আমার চোখের দিকে তাকায়, তার চোখ শান্ত , কোনো প্রতিশোধের লেশ মাত্র নেই !
"আর তোমার প্রায়শ্চিত্তের আগুনে আমি হারিয়েছি আমার সংসার , আমার স্বপ্ন আমার পরিচয় আর আমার সমাজ ! তার প্রায়শ্চিত্তের হিসাব যে বাকি রয়ে গেলো বরুন !"
থমকে দাঁড়িয়ে গেলাম , এভাবে সত্যি ভাবা হয় নি , কি দিয়েছি শ্রী কে স্বামী হয়ে , শুধু কর্তব্য পালনের তাগিদে যান্ত্রিক হয়ে দিনের পর দিন কাটিয়েছি , তার স্বপ্নের নূন্যতম সন্মান আমি রাখতে পারি নি। সে তো কিছু চাই নি তবুও বিশ্বাস ঘাতকতা কেন , কেন আমার এমন পদস্খলন । বুকের ভিতর মুচড়ে ওঠে আমার ।
জানি না কি বললে শ্রীর একটু কাছে আসতে পারবো তার জীবনের জমে থাকা কষ্টের আগুন একটু নিভিয়ে দিতে পারবো । "একান্ত নিরুপায় হয়ে " বলতে চাইলেও , শ্রী আমায় বলতে দিলো না ।
"বার বার নিরুপায় হয়ে তুমি আমার কাছে আস্তে পারো না বরুন , আমার সন্মান বোধ এখনো বেঁচে আছে !"
বুক বেদনায় কেঁপে ওঠে। চোখের রং গুলো কেমন বাস্প হয়ে নিংড়ে নিচ্ছে জল রং আস্তে আস্তে আবছা হয়ে, ভেসে ভেসে যাচ্ছে সামনের রং গুলোর দিকে ।
কি ভয়ঙ্কর মিথের মধ্যে কাটিয়েছি এতো গুলো বছর , আত্মসন্মান আর দাড়ি পাল্লায় শ্রী কে তুলে , কেমন করে মুখ দেখাবো ববিনকে । আমার এ ভুল দুটো জীবন কে নষ্ট করে দিয়েছে ।
গলা বুজে আসছে , কেউ যেন দম বন্ধ করে দিয়েছে শ্রীর সামনে আমায় । নিজের অজান্তেই হাত দুটো মেলে ধরেছি শ্রীর সামনে । "একটু দয়া ভিক্ষা হবে ?"
এক দু এক ফোটা করে জল গড়িয়ে পরে শ্রীর চোখ থেকে গালের চিবুক গড়িয়ে ।
"আমি প্রায়শ্চিত্ত করতে চাই শ্রী , আমায় বলে দাও কি করলে তোমায় একটু শান্তি দিতে পারবো আজ আমি বড় অপরাধী , এ অনুতাপের আগুনে আমি জ্বলে শেষ হতে পারবো না !"ভেঙে পড়ি নিজে কে সামলাতে সামলাতে ।
আমার ভুলেরকি কোনো ক্ষমা হয় না ?"
শ্রী ডুকরে ওঠে "ফিরিয়ে দিতে পারবে আমার হারিয়ে যাওয়া সংসার টাকে?
ফিরিয়ে দিতে পারবে আমার এতো গুলো বছর ? ফিরিয়ে নিতে পারবে তোমার এমন অগোছালো জীবন কে আগের মতো সাজিয়ে ? কি তুমি জীবনে পেলে বরুন ?
তোমার তো সব কিছু ছিল!আজ দেখো আমার সামনে দাঁড়িয়ে তোমায় আমার ক্ষমা ভিক্ষা চাইতে হচ্ছে !"
তুমি সব কিছু শেষ করে দিয়েছো বরুন তোমার ক্ষমা হয় না । চলে যাও বরুন আরো দূরে চলে যাও !"
শ্রী থাকতে না পেরে ফুঁপিয়ে ওঠে শাড়ীর খুট মুখে নিয়ে, মুখ টা ঘুরিয়ে নেয় আমার থেকে । এই প্রত্যাখানের যন্ত্রনা আর কেউ কোনো দিন বুঝবে না , কারণ এমন সমর্পন কেউ করে নি ।
শ্রীর প্রত্যাখ্যান আমার জীবনের আশীর্বাদ হোক ।
উঠে দাঁড়াবার আগে শ্রী কে খুব আদর করতে ইচ্ছা করছিলো । মনে পড়ছিলো প্রথম দিন যখন কাঁদতে কাঁদতে আমার বাড়িতে এসেছিলো , এক দিন কাঁদতে কাঁদতে আমার বাড়ি থেকে চলে গেছে , একেও আমার জীবনে কিছু দিতে পারি নি । জীবনে চলার ভরসা টুকুও আমি কেড়ে নিয়েছি শ্রী এর থেকে । কি হীন আমার মন , আর এমন মনে কে প্রশ্রয় দিয়ে চলে গেছি বছরের পর বছর । অনেক আগেই তো পারতাম শ্রীর পায়ে আছড়ে পড়তে ।
যাবার আগে ইচ্ছে হলো দুটো কথা আরো বলে যাই , জানি না জীবদ্বশায় আর এ কথা বলার সুযোগ হবে কিনা । "আসলে শ্রী আমিও লোভী , তুমি চলে যাবার পর থেকে ওই বিছানায় শুয়ে আমি একটাও রাত ঘুমাতে পারি নি , তোমার বলতেও পারি নি যে আমার ঘুম হচ্ছে না , আর বলতেও পারি নি যে আর আমার চোখে ঘুম আসে না ! তুমি চলে যাবার পর রান্না ঘরেও যাই নি তোমায় ডাকবো বলে ! বৃষ্টি হলে ছাদের দরজা খুলে ছুটে কাপড় নামাতে যাই নি । বছর বছর দূর্গা পুজোয় দরজা বন্ধ করে বসে ছিলাম দু হাটু এক করে , আর বছর শেষ হলে একটা করে ক্যালেন্ডার ছিড়ে ফেলে দিয়েছি কখন তুমি আসবে ।
তোমার আসা হয় নি আমিও ডাকতে পারি নি , এ বছর ডাকছি আমার বাড়ি আসবে ? পারলে এস এবছর আমি দরজা বন্ধ করে বসে থাকবো হাটু মুড়ে !
 
গলা টা বুজে এলো আর দাঁড়িয়ে থাকা হলো না , অচেনা রাস্তায় পা এগিয়ে যাচ্ছে গন্তব্য হীন !
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.


Messages In This Thread
RE: বিত্তবান by virginia_bulls - by pcirma - 25-01-2019, 11:23 AM



Users browsing this thread: 4 Guest(s)