Thread Rating:
  • 29 Vote(s) - 3.21 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
বিত্তবান by virginia_bulls
#9
যতক্ষণ না ওকে বিষয় টা বোঝাতে পারছি , ততক্ষন কিছুতেই শান্তি পাচ্ছি না । কিন্তু ওর বাড়িতে ওকে তো ব্যক্তিগত ভাবে পাওয়া অসম্ভব । তাছাড়া ওহ আমার সাথে সহযোগিতা করলে তবেই না আমার এই এই যন্ত্রণার অবসান হয় । ইতি উতি করে সামনে থাকা একটা ম্যাগাজিন নিয়ে আমিও বই এর পাতা উল্টাতে থাকলাম । এখানে সিন ক্রিয়েট করে কোনো লাভ নেই । আর ঘড়ির কাটা 11 টা ছুঁবে ছুঁবে করছে । চা ছাড়া অন্য কিছু মুখে দিতে ইচ্ছা করলো না । স্নেহের দিকে তাকানোর মতো সাহস পাচ্ছি না । স্নেহ আমার কালকের ব্যবহারের জন্য ঠিক কি প্রতিক্রিয়া দেবে সেটা না জেনে মন টা আনচান করছে । যদি একটু নিভৃতে স্নেহ কে পেতে পারতাম ।
 
স্নেহ কখন চলে গেছে খেয়াল করি নি । মিনিট 30 পার হয়ে গেছে । সিদ্ধার্থ পুরো দস্তুর সাহেব সেজে এসে আমায় হাত ধরে বললো " দাদা এবার আমায় বেরোতে হবে , যেহেতু সামনের সপ্তাহে শ্রী বৌদি নেই আগে থেকে আমার আমন্ত্রণ রইলো , জমিয়ে পোকার খেলবো , স্নেহ বলেছে আপনি কলেজে পোকার চ্যাম্পিয়ন ছিলেন ।"
আমি ভ্যাবলার মতো তাকিয়ে রইলাম । " আর হ্যাঁ আপনি কিন্তু খেয়ে দিয়ে বিকেলেই যাবেন , আমি এরকম টুর করলে স্নেহ ভীষণ রেগে যায় , মিমু মাসি আপনার স্নানের জল আর কাপড় তৈরী করে রেখেছে , ভৈরবদা আপনার মায়ের খাবার পৌঁছে দিয়েছেন , আর রীনাও সময়ে খাইয়ে দেবে আর আপনি না ফেরা পর্যন্ত মায়ের কাছেই থাকবে ।"
 
আমি নিজে রীনা কে ফোন করে দিয়েছি স্নেহের কাছ থেকে নম্বর নিয়ে । রীনা আমার ক্লাস মেট ছিল ভীষণ ভালো মেয়ে । বেশি কিছু বললে আবার স্নেহ জেলাস ফীল করবে বুঝলেন । আমায় আজ্ঞা দিন !"
ঘটনা প্রবাহ যে ভাবে চলছে , আমার বাকশক্তি হারিয়ে যাচ্ছে , এতো অনুনয় বিনয় খাতির , আজ তো স্নেহের বাড়িয়ে খাবার কথা ছিল না , মা আবার না জানি কি অবস্থায় রয়েছে । কিন্তু স্নেহ আমাকে অবাঞ্ছিতের মতো ঘর থেকে তাড়িয়ে দিলো না । তাহলে স্নেহ নিশ্চয়ই জানতে চায় রীনার সাথে আমার কিসের সম্পর্ক আর কেনই বা সম্পর্ক ! হয় তো সেটাই মুখ্য কারণ আমাকে তার বাড়িতে আমন্ত্রণ করার ।
 
স্নান করে খাবার টেবিলে বসে খেতে আরম্ভ করলাম । চাকর বাকর আর কাওকে দেখা যাচ্ছে না। সত্যি স্নেহ দের ডাইনিং টেবিল টা কি সুন্দর জয়পুরের পিঙ্ক মার্বেল দিয়ে তৈরী । সম্ভ্রান্ত বাড়িতে খাবার স্বাদ তাই আলাদা । সব খাবারেই একটু ঘিয়ের ছোয়া থাকে । আর মসলার ধিমি ধিমি গন্ধ । মাংস আমার বিশেষ পছন্দ নয় তবুও মাংস টা এতো ভালো হয়েছে যে না এড়িয়ে থাকা গেলো না । নিঃস্তব্ধ , শুধু সমানে স্নেহ নিজের ভূমিকা পালন করছে । পোশাক আশাক দেখে মনে হলো সকালেই স্নান সেরে নেয় স্নেহ ।
নিস্তব্ধতা আর খাবার আওয়াজ ভেঙে স্নেহ প্রশ্ন করলো , "খাওয়া শেষ হলে আমার শোবার ঘরে গিয়ে বস আমার বিশেষ কিছু কথা আছে !" আমিও বাধ্য ছাত্রের মতো মাথা নিচু করে সম্মতি জানালাম । আজ আমি বিচার প্রার্থী আর বিচারক স্নেহ নিজে । আমাকে নিশ্চয়ই মাফ করেছে। না হলে আমায় বা এভাবে বাড়িতে ডেকে খাওয়াবে কেন ।
হাত ধুয়ে বৈঠক খানার সেই জায়গায় গিয়ে বসলাম । এর আগে কখনো এই বাড়িতে আসিনি । মিমু মাসি হাথে কিছু নিয়ে এগিয়ে আসলো । দেখলাম পান । পান খেলে মন্দ হয় না । বেশ ভালো লাগছে । কাল রাতের মতো আমাশা পায়খানা আর নেই মনে ।
" দাদা বাবু আপনি দিদিমনির পুরনো বন্ধু তেই নে! দিদিমুনি পেতিক দিন আপনার কতা কয় ! আর কি লাগবে আমায় কয়ে দৌ বাপু , এর পর আমি আসতে পারবু নিকো!"
না না মাসি আমার আর কিছু লাগবে না । "আচ্ছা আমি কি উপরে যেতে পারি ? "
হে হে , হে হে দেখো দিকি দাদাবাবুর কান্ড দেকে চো ! আপনি বলে কিনা কুত্তুম, জেখানি ইচ্ছা যাবেন বৈকি !"
আপনার বাবাকে আমরা গেরামের লোক খুব মাননি কত্তুম গো দাদাবাবু , দ্যাবতা ছিল গো , হাতে জাদু ছিল , কত লোকএর জীবন ফিররে দেছে উনি ! আপনি তো তারি ছেলে ! গো "
যাও তুমি উপরে যাও গো দাদা যাও , আরেক গেলাস জল খাবে ?" না বলে মাথা নাড়লাম ।
বাবা ডাক্তার ছিলেন । সরকারি হাসপাতালেই কাজ করেছেন। কিন্তু আমরা তার ম্যালেরিয়া ধরতে পারিনি , ধরতে পারেন নি তিনি নিজেও , আসতে আসতে ব্রেন টা জ্বরে অকেজো হয়ে পরে । কোনো বিশেষ প্রজাতির ছিল রোগ টা , আমাকে অনেক অল্প বয়সেই বাবা কে হারাতে হয় । বাবার কথা ভাবতে ভাবতে আনমনা হয়ে উপরে উঠলাম । তিন তে বন্ধ ঘর ছেড়ে সাবেকি কালের শোবার ঘরটা চোখে পড়লো। আগা গোড়া ইমপোর্টেড মনে হচ্ছে , শুধু বাড়ির দেওয়াল টা পুরোনো । সেখানেও 3 জনের বাসর মতো সোফা । নির্দ্বিধায় সেখানে গিয়েই বসলাম । কখন তন্দ্রা এসেছে জানি না ।
স্নেহ আমায় টোকা দিয়ে তন্দ্রা ভাঙিয়ে আমার দিকে চোখ রেখে প্রশ্ন করলো " আমার কিছু প্রশ্নের উত্তর চাই।" একটু তফাতে সোফাতেই বসে পড়লো শাড়ী টা গুছিয়ে । ভেবেছিলাম তোমায় খুব কঠিন সাজা দেব , কিন্তু মন বললো বেয়াদপীর আরো কঠিন সাজা হওয়া দরকার ।"
 
স্নেহের দৃষ্টি আকর্ষণ করেই ওর সব কথা শোনা প্রয়োজন । কিছু বলার আগে আমি জিজ্ঞাসা করলাম "আচ্ছা এখানে কি মন খুলে সব কিছু বলা যাবে ? কেউ আসবে না তো ?" স্নেহ খুব গম্ভীর ভাবে বললো " আমার গায়ে হাত দেবার আরেকবার চেষ্টা করলে আমি কিন্তু পুলিশ ও ডাকতে পারি !"
আমি মাথা নাড়িয়ে বললাম " আরে না তা নয় , মানে ওই তোদের মিমু মাসি ভৈরব দা এসব লোক !" স্নেহ একটা বিধুদীপ্ত চোখের ভঙ্গিমা দিয়ে আমার মুখে তুফানের মতো প্রতিউত্তর দেয় "তাঁরা এ বাড়িতে থাকেন না । এতো বড়ো বাড়িতে সিদ্ধার্থ আর আমি ছাড়া কেউই থাকে না , পিছনে সার্ভেন্ট কোয়ার্টার আছে। দরকার পড়লে ডাকি নাহলে তাঁরা নিজেদের সংসার দেখে অবসর সময়ে ।"
"তবে আমার প্রশ্নের সব উত্তর ভেবে দিস , এই মুহূর্তে তোর প্রতি আমার কোনো মায়াদয়া নেই । আমি তোকে কি করবো সেটা এখনো ভেবে দেখি নি , তবে আমায় বাধ্য করিস না এমন কিছু করতে যাতে তোর শ্রীর সংসার ভেঙে যায় । "
আমি দেখলাম স্নেহ আমায় সুযোগ দিয়েছে কথা বলার তাই সেই বৃষ্টির রাত থেকে গত কাল অবধি যা হয়েছে তা স্নেহ কে এক নাগাড়ে বলে গেলাম । বলে গেলাম আমার মনের একান্ত অনুভূতি গুলো । আমার যৌন্য বিবর্তনের দু চারটে অনুভূতি , এক দম না লুকিয়ে ।
একটু থেকে বললাম স্নেহ কে " দেখ আমি মধ্যবিত্ত ছাপোষা মানুষ , যৌন্য ব্যাভিচার করার কোনো রুচি আমার মনে নেই , যা হয়েছে যেটা নিতান্তই একটা উৎশৃঙ্খল আবেগ মাত্র । রীনা জানে ওকে আমি জীবনে কোনো স্থান দিতে পারবো না ।" দুজনের নীরবতা এর পর ঘর টাকে গ্রাস করলো ।
আমিও একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেললাম ।স্নেহ খানিকটা থেমে বললো " শ্রীর কি হবে ?"
" আরে শ্রীর কি হবে আবার কি কথা , আমি কি কমিটেড না নাকি, তাছাড়া এখন আমার মনে হচ্ছে রীনার সাথে আমার সম্পর্ক টা আমাকে নিজে থেকেই ইতি টেনে দিতে হবে । আমি তো পরকীয়া করবো বলে ওর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করি নি । শুধু যৌন্য আবেশে ব্যাপারটা হয়ে গেছে !" আমি প্রতিবাদ করলাম ।
স্নেহ শান্ত হয়ে জিজ্ঞাসা করলো " ঠিক এই কথাটা রীনা কে তুই বলতে পারবি তো ?"
আমি আরেকটু বিচলিত হয়ে বললাম " আরে এই ব্যাপারটা তো আমি রীনা কে আগেই বুঝিয়ে দিয়েছি । ওহ নিরুপায় আমাকে ওহ ওর মন দিয়ে ফেলেছে । কিন্তু ওহ আমার কাছে কিছু চায় না শুধু বন্ধু হয়ে আমার পাশে থাকতে চায় । "
"আমি কিন্তু রীনা কে চিনি কাল রাতে আধ ঘন্টা ওর সাথে কথা বলেছি , তোকে না পেলে ওহ কি করবে সেটা কিন্তু রীনা নিজেই জানে না ! ওহ কিন্তু মা জিনিসটা চোখেই দেখে নি জীবনে " বলে স্নেহ অপলক তাকিয়ে রইলো আমার দিকে ।
আমি মাথা নামিয়ে রইলাম " জানি না আমার জীবনে এ কোন রাহুর গ্রাস !
স্নেহ বুঝলো কি বুঝলো না , চোয়াল শক্ত করে বাঁকা চোখের চাহনি দিয়ে একটা হাড় হীম করা প্রশ্ন করে বসলো " আর আমার সাথে এমন নচ্ছার জনক দুর্ব্যবহার কেন করলি ? জানিস এমন ব্যবহারে মেয়েরা সুইসাইড পর্যন্ত করতে পারে ? কি করে মুখ দেখাবো আমার স্বামী কে !"
" কাল রাত থেকে আমি ঘুমাতে পারি নি , মনে হচ্ছে ধারালো ছুরি তোর বুকে বসিয়ে দি , কেন করলি আমার এমন সর্বনাশ !"
" আমি এটা বলবে যে যাকে একসময় মনে মনে ভালোবাসতাম, সে আমাকে ছাদের ঘরে অন্য মেয়ে কে দিয়ে তার কাম চরিতার্থ না করতে না পেরে আমায় রেপ করেছে ?"
"না এটা বলবো , যাকে একমাত্র বন্ধু হিসাবে ভরসা করি সে শুধু নিজের কাম লালসা চরিতার্থ করতে আমার বন্ধুত্ব কে খুন করেছে !"
আমার মুখ থেকে কিছু বেরোলো না । কি ভাবে ওকে বলি যে ওটা আমার একটা চরম ভুল ।তবুও মনে সাহস নিয়ে ওকে বোঝাতে চাইলাম আমার সেই সময়ের অবস্থা ।
" আরে ওই সময় আমার নিজের মাথার ঠিক ছিল না , কেমন একটা আক্রোশ কাজ করছিলো, তুই তো দেখে সরে যেতে পারতিস, তুই বা এমন দাঁড়িয়ে রইলি কেন ?নিজেকে কি করে এই গিলটির জন্য সেফ জোনে আনবো , কি করবো কিছুই মাথায় ছিল না , তোর প্রতি একটা অদ্ভুত ভালোবাসা যেমন বন্ধুর মতো কাজ করছিলো ঠিক তেমন একটা আক্রোশ কাজ করছিলো । আমি জানি না আমার চরিত্রে কেন এমন পরিবর্তন এসেছে । তোকে আমি বিশ্বাস কর কোনো ক্ষতি করবার মানসিকতা নিয়ে তোকে কিছু করতে যাই নি , আমার মনের কোনো তাড়না আমায় তোর দিকে ঠেলে দিয়ে ছিল এমন অপ্রীতিকর পরিস্তিতির মধ্যে ! আমি অনুতপ্ত ।"
 
" শুধু অনুতপ্ত হয়েই একটা বিবাহিতা স্ত্রীর থেকে তার শাড়ীর আঁচল জোর করে কেড়ে নেওয়া যায় বুঝি !" স্নেহ এমন আরেকটা প্রশ্ন বানে জর্জরিত করলো আমার বুক ।
নিজে আমি খুব অনুতাপ এমন ভুলের জন্য । থাকতে পারলাম না আমি । দুটো হাত জড়ো করে ওর সামনে হাটু গেঁড়ে বললাম " বল কি শাস্তি চাস আমার ?" আমি সত্যি খুব হীন কাজ করেছি । কিন্তু কি ভাবে এটা হয়ে গেছে আমি জানি না । আমার পুরুষত্বের কাছেই যেন আমি হেরে গেছি । স্নেহ ঘৃনায় মুখ অন্য দিকে বেকিয়ে রেখেছে । চোখের কোনে জল টলমল করছে। " আর নিজেকে কি ভাবে সমর্পন করতে হয় জানি না , কিন্তু তোকে বন্ধু হয়ে পাশে পেয়ে আমার জীবন ধন্য । এ পাপের কোনো সাজা হয় না !"
স্নেহের হাত টা ধরে নিজের কপালে ঠেকিয়ে ঝুকে কয়েকটা নিঃশ্বাস ফেললাম।
বেশ গম্ভীর ভাবে স্নেহ প্রশ্ন করলো " তুই কি সত্যি অনুতপ্ত ? তোকে বিশ্বাস করতে আমার সন্দেহ হচ্ছে ! তোরা পুরুষ মানুষ , তোদের ক্ষমা করবো?"
মন টা ভেঙে গেলো " কি করে বোঝাই তোকে, তোকে আমি মনে প্রাণে শ্রদ্ধা করি , আর তুই আমার কোনো বন্ধু নয় আত্মীয় , মা তোকে নিজের মেয়ের মতো দেখে , আমি আমার জীবনের অঙ্গ হিসাবে বেছে নিয়েছি তোকে , বিশ্বাস কর তোকে কখনো আলাদা ভাবি নি । নিজের অজান্তে আমার এমন ভুল হয়ে গেছে । তুই যদি আমায় ক্ষমা না করিস আমি এক রত্তি শান্তি পাবো না !" স্নেহের দু হাত মুখে জড়ো করে নিয়ে কাকুতি করতে লাগলাম ।
মনের অসুর টা বলে উঠলো " রীনার ব্যাপারটা না জানলে আমায় হতো স্নেহের কাছে এ ভাবে কাকুতি মিনতি করতে হতো না ।"
এবার মনে খানিকটা সাহস আনলাম । স্নেহ তো কৈ এতো অনুনয়ের পরও ক্ষমা করছে না । করবেই বা কি করে । যা কান্ড আমি বাঁধিয়েছি , বন্ধু বলেই হয় তো এখনো লোক জানা জানি করে নি ।
কিন্তু প্রতি মুহুর্ত্বে ওর মনের সংঘাত ওর কথোপকথনে ধরা পড়ছিলো । দয়া করে মাফ হয়তো আমায় করে দিতে পারতো কিন্তু ওর মনে যে আঘাত আমি হেনেছি তার প্রতিকার চায় কোনও ভাবে । সেই এক আঘাত আমায় দিতে চায় আমার মনে , আমার শরীরে ।
" সব পাপের প্রায়শ্চিত্তই যদি হতো তাহলে মানুষ কে এতো শাপ অভিশাপ নিয়ে জীবনে বয়ে বেড়াতে হতো না বরুন , তুই আমার জীবন টা এক নিমেষে ভেঙে গুড়িয়ে দিয়েছিস " বলে ডুকরে উঠলো স্নেহ ।
আমি জানি এমন জীবনের জটিল অনেক সন্ধিক্ষণ আমায় পেরোতে হবে ।
তবুও সংযত হয়ে খুব বিশ্বাস নিয়ে বললাম " তুই বল কি করলে আমার এ পাপের প্রায়শ্চিত্ত হয়, আমি তো তোর কাছে নত মস্তকে ক্ষমা প্রার্থী , যে হীন কাজ আমি করেছি , আমার মতো কুলশীল একজন সচরিত্র পুরুষের কাছ থেকে কেউ কি করে আসা করতে পারে ! আমার নিয়ন্ত্রণ ছিল না আমার ইচ্ছার উপরে বিশ্বাস কর ! না হলে আমায় কোনো দিন দেখেছিস কোনো বেয়াদপি করতে ?"
"তাতে আমি যা হারিয়েছি তা কি ফিরে পাবো ?" ঝলসে ওঠে প্রতিশোধের রাগে , এমন মুখ স্নেহের আগে দেখি নি । এক হাটু মুড়ে সোফায় বসে হাতে মুখ রেখে তাকিয়ে আছে জানলার দিকে । আমার দিকে তাকিয়ে দয়া ভিক্ষা করার ইচ্ছা টুকুও নেই ।
নিরুপায় হয়ে বললাম " আমি জানি না আমার কি করা উচিত , তবে তুই ক্ষমা না করলে এ পশ্চাত্তাপ আমায় সারা জীবন কুরে কুরে খাবে !"
স্নেহ কোনো উত্তর দিলো না । অপেক্ষা করলাম যদি উত্তর দেয় । স্নায়বিক চাপ এ আর উৎকণ্ঠায় আমার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে উঠেছে । কোনো উত্তর দিলো না ।
মনে হলো চলে যাই , আমার কোনো ক্ষমা হয় না বাস্তবিক , এ শাস্তি অনেক বড়ো শাস্তি । দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বললাম " আসি রে !" দাঁড়িয়ে থেকে স্নেহ কে আর মানসিক নির্যাতন করার কোনো মানেই হয় না ।
দরজায় বাইরে পা রাখতে যাবো
কান্না ভেজা গলায় স্নেহ ডুকরে উঠলো :
" প্রায়শ্চিত্ত যদি করবি তাহলে হীন কাজ টা আরেক বার কর , বার বার কর ! "
ঠিক শুনলাম কি ভুল শুনলাম জানি না , বিশ্ব ব্রম্ভান্ড তারা নক্ষত্র স্নায়ু দিয়ে ঘুরে কোনো অজানা বেদ বাক্যের মতো কান ভেদ করে সুষুম্না দিয়ে গড়িয়ে পড়তে থাকলো ঘামের মতো ! দরজায় ঠেসে দিয়ে স্থাবর শরীরে পড়তে থাকলাম হাজার বছরের নারী মনের জটিল পাণ্ডুলিপি। শরীরের বিন্দু মাত্র স্থান পরিবর্তর করবার অভিলাষা টুকুও আসতে আসতে মিলিয়ে যাচ্ছে জালনার দূরের দৃষ্টিতে ।
 
বেশ খানিক ক্ষণ নিজেকে দূরে রেখে ঠায় বসে রইলো স্নেহ । আমার চোখের পাতায় পাতায় স্নেহের রাজ ঐশ্বর্য নব রূপে উন্মীলিত হচ্ছে । সত্যি সে ভাবে তো দেখিনি স্নেহ কে কখনো । কি সুন্দর তার চপল কটি দেশ , শাড়ীর বে আব্রু মহিমায় জল রঙা প্রজাপতির মতো ঢেউ খেলে যাচ্ছে তার কোমল তরঙ্গে । কি অদ্ভুত তার আকর্ষণ । চাবুক শরীরে কি মোহো , তার চেয়ে মোহময়ী তার হাত এর পেশি গুলো , নম্বর মসৃন হয়ে এলিয়ে পড়েছে শাড়ীর খাঁজে । এক দৃষ্টি নিয়ে সুখ সুধা পান করছি স্নেহের । মনের বন্ধ দরজা কতটা খুলেছে সে মাপ নিয়ে কি লাভ । শুক্রাচার্যের ভয়াল আশীর্বাদে কামদেব আমার উপর স্বয়ং প্রকাশ করেছেন নিজে গুনে পৃথিবী ধন্য করবেন বলে । চোখ আমার আবছা হয়ে রয়েছে । স্বপ্নের আবেশে দরজায় দাঁড়িয়ে কোথায় মন চলে গেছে তার ঠিকানা নেই ।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: বিত্তবান by virginia_bulls - by pcirma - 25-01-2019, 11:17 AM



Users browsing this thread: 3 Guest(s)