24-01-2019, 02:54 PM
এবং অবশিষ্ট সমাজ-
১০ বছর পরঃ “আরে গুরু আজ একটু তাড়াতাড়ি চলে এলি মনে হয়। কি হয়েছে রাজু বলনা, প্লিস বলনা কি হয়েছে। মুখটা এতো শুকনো লাগছে কেন তোর?”
রাজুঃ (বেশ কিছুক্ষন চুপ করে থাকার পর) শালা আজ সত্যি সত্যি তিলোত্তমার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে রে। আমি মনে হয় সত্যি ই মেয়েটাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম। নয়ত এতো মুড অফ কেন হবে বলত।
সাইদুলঃ আরে ইয়ার একটা চেষ্টা তো করতে পারতিস। আমার ও মনে হত ওর ও না তোর ওপর কিছু একটা রয়েছে।
রাজুঃ নারে ভাই পারলাম না। যার মা এভাবে দুই মেয়ের সাথে বেইমানি করে, এতো কষ্ট দেয়... ভাবতো যখন ও ভাবে যে ওর মা জেলে আছে কেমন লাগে? আর ওর মত একটা ডাক্তার কি এই বস্তিতে থাকবে নাকি? ভালো হয়েছে চেষ্টা করিনি। দেখবি মেয়েটা খুব সুখী হবে।
সাইদুলঃ ঠিক বলেছিস রাজু, শালা ভালোবাসা হেব্বি ফালতু জিনিষ। শালা আমাদের জন্য নয় এগুলো। আরে শালা সুবীর বাবুর মত ভালো লোক ই সুখী হলনা আর আমরা কোন বাল। বলনা রাজু তোর কষ্ট হচ্ছে বলনা?
রাজুঃ বালের কষ্ট। শালা সকাল থেকে টিফিন করা হয়না। ১২ টায় দোকান বন্ধ করার সময় পেটে ছুঁচো দৌড়ায়। বারবার মনে হয় সেই তো আমাকেই আবার গিয়ে রান্নাটা করতে হবে। সময় কোথায় ভাই, পুরনো প্রেমের কথা ভেবে কষ্ট পাওয়ার।
সাইদুলঃ শোন না গুরু, জম্পেস একখান বৌদি এসেছে। উফ কি সাইজ মাইরি। আজ রিক্সা থেকে নাবছিল, শালা টান লেগে সাড়িটা হাঁটুর ওপরে উঠে যায়। উফ কি থাই রে, সসসসস আহ...
রাজুঃ শালা, কোথায় রে? কার বাড়িতে? বল শালা নয়ত আজ ফাটাবো তোর।
সাইদুলঃ আরে ওই মিত্ররা বাড়ি বিক্রি করল না। নতুন লোক কিনেছে। লোকটার নাম মৃন্ময় গুপ্ত। আর বৌদি হোল সুমনা, সুমনা বৌদি। উফ আমি তো বস আগেই ওদের বাড়িতে দুধ দেওয়ার কথা বলে চলে এসেছি।
রাজুঃ সাইদুল ওই সাইদুল, হবে নাকি আবার...
সেলিমতলা থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে সুতানুটি জমিদারবাড়িতেঃ
“নমস্কার মৃন্ময় বাবু। কতটা পড়লেন? ওরে বাবা আপনি তো একদম দেবেন্দ্রর পর্বে প্রবেশ করে গেছেন। না আর একা একা ডায়েরী পড়া নয়, এবার ডায়েরীর গল্প বলার দায়িত্ব আমি নিজেই নিলাম”
“আপনি? আপনি কে? আমি তো যখন এখানে এলাম কাউকে দেখিনি? পুরো ফাঁকা ছিল”
“আপনি তো মৃন্ময়, মৃন্ময় গুপ্ত। সেলিমতলায় নতুন এসেছেন। জানেন প্রায় ১০ বছর আগে আমিও ওখানে যেতাম। ওহ নিজের পরিচয় ই দেওয়া হয়নি। আমি মানব। এই জমিদারবাড়ির সর্ব কনিষ্ঠ সদস্য”
“নমস্কার মানব বাবু! আসলে বলতে লজ্জা লাগছে, তাও বলছি। আমার না আবার ওই একটু অ্যাডভেঞ্চারের রোগ আছে। বহুদিন আগে শুনেছিলাম এই জমিদারবাড়িতে নাকি গুপ্তধন আছে। আর লোভ সামলাতে না পেরে, রবিবার দেখে আজ ই চলে এলাম। (একটু ফিসফিস করে) আচ্ছা সত্যি ই কি গুপ্তধন আছে?
মানব বাবুঃ আছে বইকি। এই ডায়েরীটাই হোল আসল গুপ্তধন। এটা পড়লে আপনি এমন এক গুপ্তধনের সন্ধান পাবেন যা আপনি জীবনে কখনো ভুলবেন না।
মৃন্ময় বাবুঃ সত্যি তাই নাকি! তাহলে মশাই আপনার মুখ থেকে পুরো গল্পটা না শুনে আমি কোথাও জাচ্ছিনা।
মানব বাবুঃ মৃন্ময় বাবু, ডায়েরীতে মোট ৪টে খণ্ড রয়েছে। প্রথম খণ্ড জমিদারবাড়িতে আসার আগে আপনার ও সুমনা দেবীর গল্প(যথারীতি যথেষ্ট ঘাবড়ে যান মৃন্ময় বাবু) দ্বিতীয় খণ্ড এই ১৬০০ সালের সময়কার এই জমিদারবাড়ির কিছু চরিত্র যেমন দেবেন্দ্র, সত্যেন্দ্র, ম্রিত্তুঞ্জয়দের গল্প, তৃতীয় খণ্ড সিপাহী বিদ্রোহের সময়কালের জমিদারবাড়ির কিছু চরিত্র যেমন সুপ্রতীক, মালা, বংশী এদের গল্প আর চতুর্থ খণ্ড হোল ডায়েরী পড়ার পর আপনার অবশিষ্ট জীবন। তাহলে শুরু করা যাক আমাদের ডায়েরী পর্ব।
লেখকের অতিচর্চিত, অতিসমালোচিত ও অতিনিন্দিত তত্বকথা(বকবক)-
আসলে লড়াইটা একটা রুটির জন্য
একটা রুটি সমান করে মাঝ বরাবর
অর্ধেক তুমি আর অর্ধেক আমি
এই রুটির লড়াই দৈনিক আট ঘণ্টার মজুরি
আসলে ওটা রুটি নয়, আমার রক্তবমি
মজুরি তো তুমিও কর মানসী
কখনো রান্নাঘরে কখনো বা মাঝরাতে
নগ্ন শরীরের যৌনতায় আমায় শ্রান্ত করে
তুমিও মজুর আমিও মজুর
প্রিয়তমা তাহলে কিসের এতো লোভ
কি পেলে সোনার থালায় মুখ দিয়ে
জানিনা সত্যি কিছুই জানিনা।
প্রিয়তমা, আসলে প্রেম সত্যিই একখানা রুটি
একটা রুটি সমান করে মাঝ বরাবর
অর্ধেক তুমি আর অর্ধেক আমি।
আসলে জীবন সত্যি ই একখানা রুটি
অর্ধেক তুমি, আর অর্ধেক আমি।
অবৈধ সম্পর্ক বা adultery ;.,ের চেয়েও ঘৃণ্য। নিজের জীবন সঙ্গী বা সঙ্গিনীর মধ্যে ঠিক যতটাই খুঁত থাকুক না কেন, তাকে নিজের মত করে ভালবাসুন। কারন জীবন সত্যি ই একখানা রুটি/ অর্ধেক তুমি আর অর্ধেক আমি।
সমাপ্ত
১০ বছর পরঃ “আরে গুরু আজ একটু তাড়াতাড়ি চলে এলি মনে হয়। কি হয়েছে রাজু বলনা, প্লিস বলনা কি হয়েছে। মুখটা এতো শুকনো লাগছে কেন তোর?”
রাজুঃ (বেশ কিছুক্ষন চুপ করে থাকার পর) শালা আজ সত্যি সত্যি তিলোত্তমার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে রে। আমি মনে হয় সত্যি ই মেয়েটাকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম। নয়ত এতো মুড অফ কেন হবে বলত।
সাইদুলঃ আরে ইয়ার একটা চেষ্টা তো করতে পারতিস। আমার ও মনে হত ওর ও না তোর ওপর কিছু একটা রয়েছে।
রাজুঃ নারে ভাই পারলাম না। যার মা এভাবে দুই মেয়ের সাথে বেইমানি করে, এতো কষ্ট দেয়... ভাবতো যখন ও ভাবে যে ওর মা জেলে আছে কেমন লাগে? আর ওর মত একটা ডাক্তার কি এই বস্তিতে থাকবে নাকি? ভালো হয়েছে চেষ্টা করিনি। দেখবি মেয়েটা খুব সুখী হবে।
সাইদুলঃ ঠিক বলেছিস রাজু, শালা ভালোবাসা হেব্বি ফালতু জিনিষ। শালা আমাদের জন্য নয় এগুলো। আরে শালা সুবীর বাবুর মত ভালো লোক ই সুখী হলনা আর আমরা কোন বাল। বলনা রাজু তোর কষ্ট হচ্ছে বলনা?
রাজুঃ বালের কষ্ট। শালা সকাল থেকে টিফিন করা হয়না। ১২ টায় দোকান বন্ধ করার সময় পেটে ছুঁচো দৌড়ায়। বারবার মনে হয় সেই তো আমাকেই আবার গিয়ে রান্নাটা করতে হবে। সময় কোথায় ভাই, পুরনো প্রেমের কথা ভেবে কষ্ট পাওয়ার।
সাইদুলঃ শোন না গুরু, জম্পেস একখান বৌদি এসেছে। উফ কি সাইজ মাইরি। আজ রিক্সা থেকে নাবছিল, শালা টান লেগে সাড়িটা হাঁটুর ওপরে উঠে যায়। উফ কি থাই রে, সসসসস আহ...
রাজুঃ শালা, কোথায় রে? কার বাড়িতে? বল শালা নয়ত আজ ফাটাবো তোর।
সাইদুলঃ আরে ওই মিত্ররা বাড়ি বিক্রি করল না। নতুন লোক কিনেছে। লোকটার নাম মৃন্ময় গুপ্ত। আর বৌদি হোল সুমনা, সুমনা বৌদি। উফ আমি তো বস আগেই ওদের বাড়িতে দুধ দেওয়ার কথা বলে চলে এসেছি।
রাজুঃ সাইদুল ওই সাইদুল, হবে নাকি আবার...
সেলিমতলা থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে সুতানুটি জমিদারবাড়িতেঃ
“নমস্কার মৃন্ময় বাবু। কতটা পড়লেন? ওরে বাবা আপনি তো একদম দেবেন্দ্রর পর্বে প্রবেশ করে গেছেন। না আর একা একা ডায়েরী পড়া নয়, এবার ডায়েরীর গল্প বলার দায়িত্ব আমি নিজেই নিলাম”
“আপনি? আপনি কে? আমি তো যখন এখানে এলাম কাউকে দেখিনি? পুরো ফাঁকা ছিল”
“আপনি তো মৃন্ময়, মৃন্ময় গুপ্ত। সেলিমতলায় নতুন এসেছেন। জানেন প্রায় ১০ বছর আগে আমিও ওখানে যেতাম। ওহ নিজের পরিচয় ই দেওয়া হয়নি। আমি মানব। এই জমিদারবাড়ির সর্ব কনিষ্ঠ সদস্য”
“নমস্কার মানব বাবু! আসলে বলতে লজ্জা লাগছে, তাও বলছি। আমার না আবার ওই একটু অ্যাডভেঞ্চারের রোগ আছে। বহুদিন আগে শুনেছিলাম এই জমিদারবাড়িতে নাকি গুপ্তধন আছে। আর লোভ সামলাতে না পেরে, রবিবার দেখে আজ ই চলে এলাম। (একটু ফিসফিস করে) আচ্ছা সত্যি ই কি গুপ্তধন আছে?
মানব বাবুঃ আছে বইকি। এই ডায়েরীটাই হোল আসল গুপ্তধন। এটা পড়লে আপনি এমন এক গুপ্তধনের সন্ধান পাবেন যা আপনি জীবনে কখনো ভুলবেন না।
মৃন্ময় বাবুঃ সত্যি তাই নাকি! তাহলে মশাই আপনার মুখ থেকে পুরো গল্পটা না শুনে আমি কোথাও জাচ্ছিনা।
মানব বাবুঃ মৃন্ময় বাবু, ডায়েরীতে মোট ৪টে খণ্ড রয়েছে। প্রথম খণ্ড জমিদারবাড়িতে আসার আগে আপনার ও সুমনা দেবীর গল্প(যথারীতি যথেষ্ট ঘাবড়ে যান মৃন্ময় বাবু) দ্বিতীয় খণ্ড এই ১৬০০ সালের সময়কার এই জমিদারবাড়ির কিছু চরিত্র যেমন দেবেন্দ্র, সত্যেন্দ্র, ম্রিত্তুঞ্জয়দের গল্প, তৃতীয় খণ্ড সিপাহী বিদ্রোহের সময়কালের জমিদারবাড়ির কিছু চরিত্র যেমন সুপ্রতীক, মালা, বংশী এদের গল্প আর চতুর্থ খণ্ড হোল ডায়েরী পড়ার পর আপনার অবশিষ্ট জীবন। তাহলে শুরু করা যাক আমাদের ডায়েরী পর্ব।
লেখকের অতিচর্চিত, অতিসমালোচিত ও অতিনিন্দিত তত্বকথা(বকবক)-
আসলে লড়াইটা একটা রুটির জন্য
একটা রুটি সমান করে মাঝ বরাবর
অর্ধেক তুমি আর অর্ধেক আমি
এই রুটির লড়াই দৈনিক আট ঘণ্টার মজুরি
আসলে ওটা রুটি নয়, আমার রক্তবমি
মজুরি তো তুমিও কর মানসী
কখনো রান্নাঘরে কখনো বা মাঝরাতে
নগ্ন শরীরের যৌনতায় আমায় শ্রান্ত করে
তুমিও মজুর আমিও মজুর
প্রিয়তমা তাহলে কিসের এতো লোভ
কি পেলে সোনার থালায় মুখ দিয়ে
জানিনা সত্যি কিছুই জানিনা।
প্রিয়তমা, আসলে প্রেম সত্যিই একখানা রুটি
একটা রুটি সমান করে মাঝ বরাবর
অর্ধেক তুমি আর অর্ধেক আমি।
আসলে জীবন সত্যি ই একখানা রুটি
অর্ধেক তুমি, আর অর্ধেক আমি।
অবৈধ সম্পর্ক বা adultery ;.,ের চেয়েও ঘৃণ্য। নিজের জীবন সঙ্গী বা সঙ্গিনীর মধ্যে ঠিক যতটাই খুঁত থাকুক না কেন, তাকে নিজের মত করে ভালবাসুন। কারন জীবন সত্যি ই একখানা রুটি/ অর্ধেক তুমি আর অর্ধেক আমি।
সমাপ্ত