Thread Rating:
  • 13 Vote(s) - 3.46 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery অভিশপ্ত ডায়েরী by subha chatterje completed
#99
শেষ পর্বঃ জীবন (সবচেয়ে বড় টুইস্ট) পার্ট ২


“এর উত্তর আমরা দেবো”
অবাক হয়ে পেছন ঘুরে দেখেন সুবীর বাবু। প্রায় লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বেশ কিছু মানুষ, না এদের পোশাক আর রুপ দেখে ততক্ষনে সুবীর বাবু বুঝে গেছেন এরা মানুষ নয়।
“নমস্কার সুবীর বাবু, আমি ই হলাম সেই বংশী। যাকে নিয়ে ডায়েরী তে এতো বিতর্ক। আর ইনি হলেন মালা”
হাঁসতে হাঁসতে এক সুন্দরী মহিলা সামনে এগিয়ে আসেন। “সুবীর বাবু, যে মানুষটা একদিন আমার শরীরটাকে ভোগ করার জন্য পাগল ছিল, জীবনযুদ্ধে সব খুইয়ে সত্যি ই সে আমায় মা বলেই ডেকেছিল”
“হ্যাঁ সুবীর বাবু, সেদিন আমার কি হয়েছিল জানিনা, তবে রানীমাই ছিলেন ওই সময়ের একমাত্র নিষ্পাপ চরিত্র। সত্যি ই আমি ওনার মধ্যে নিজের মাকে দেখতে পেয়েছিলাম। সত্যি ই এর উত্তর আমি জানিনা, কেন এটা হোল আমি জানিনা”
মানব বাবুঃ এর উত্তর আমি দিচ্ছি। সুবীর, আমাদের হৃদয়ে অনেকগুলো স্তর আছে। প্রত্যেকটা স্তরে আমরা একেক ধরনের। কখনো অন্যকে কাঁদাই, কখনো নিজেই কাঁদি, কখনো অন্যকে হাঁসাই, কখনো নিজেই হাঁসি। হয়ত বিজ্ঞানের পক্ষে মানুষের মনকে কোনোদিন বিশ্লেশন করা সম্ভব নয়। বৌদি কেন এরকম করল? হয়ত বৌদির মনে ঠিক বংশীর উল্টো কোনও স্তর থেকে সবকিছু হয়েছে। ছাড় সত্যি ই মন খুব জটিল। তাই তোর জীবনের এই টুইস্টটা আন্সল্ভড ই থাকুক। সব প্রশ্নের উত্তর খোঁজাও উচিত নয়।
এতক্ষন নিজেকে নিয়ন্ত্রনে রেখেছিলেন সুবীর বাবু। হথাত ওনার ভেতর থেকে চাপা একটা কান্না বাইরে বেরিয়ে আসে। “আমি কি করব রে মানব? কাকে নিজের মনের কথা বলব। আমি তো এই পৃথিবীতে একা হয়ে গেলাম রে। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে তো এক কাপ চাও পাবনা রে? আমি কি করব রে মানব। সমাজের কাছে কি মুখ দেখাবো। কি বলব আমার বউ আমায় বিপদে ফেলার জন্য খুনের ষড়যন্ত্র করেছে। প্রতিবেশীরা তো কথা শুনিয়ে শুনিয়েই আমায় শেষ করে দেবে। আমি আর বাঁচতে চাইনা মানব” দুহাতে নিজের মুখটা চাপা দিয়ে মাটিতেই বসে পড়েন সুবীর বাবু। মানব বাবু সত্যি ই ওনাকে স্বান্তনা দেওয়ার কোনও ভাষা খুঁজে পাননা। ভুতেদের মধ্যে থেকে একজন আবার সামনে এগিয়ে আসেন।
“নমস্কার সুবীর বাবু। আমি মৃত্যুঞ্জয় অর্থাৎ আমি ই সেই ঠাকুর ডাকাত। আপনি নিজের মন শক্ত করুন। আমরা কিছু কথা বলতে চাই। অভিশপ্ত ডায়েরী কেন? কিসের অভিশাপ? কোথাকার অভিশাপ সব আপনাকে শুনতে হবে। মাথা তুলুন সুবীর বাবু” কোনরকমে নিজের চোখের জল মুছে মাথা তুলে তাকান সুবীর বাবু।
মৃত্যুঞ্জয়ঃ মশাই, ভূত হয়ে যাওয়ার পর এক অদ্ভুত বিরক্তিকর জীবন বটে। প্রথম প্রথম অন্যদের ভয় দেখিয়ে ফিরতাম। কিন্তু কলকাতা শহরে যা দূষণ আর যা লোকের ভিড় আমাদের ই ভয় লেগে যেত। সারাদিন ওই পোড়োবাড়িতে বসে থেকে আমাদের অদৃশ্য শরীরে একদম মরচে ধরে গেছিল। আমরা ঠিক করলাম এমন একটা কিছু করা যাক যাতে আমাদের থেকে মানে এই ভুতেদের থেকে সমাজ কিছু শেখে। তো অনেক ভাবনা চিন্তা গবেষণার পর আমরা বুঝলাম, এই মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমস্যা হোল সম্পর্কে সঙ্কট। তো আমরা ঠিক করে ফেললাম যখন কোনও মানুষ তার সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে হারিয়ে ফেলেন তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াবো তাদের শেখাবো জীবন আর কিছুই নয় শুধুই একটা টুইস্ট। সবকিছুই মেনে নিতে হয়। আবার নতুন করে লড়াই করতে হয়। আসলে জীবন শুধুই একটা লড়াই আর কিছুই নয়।
মানব বাবুঃ একদম হক কথা! তুই কাল থেকে পাড়ার চা দোকানেই চা খাবি। কথা বলার ইচ্ছে হলে কোনও বন্ধুকে ফোন করবি। একা লাগলে রূপসা তিলোত্তমাদের কলেজে চলে যাবি। কিন্তু কখনো এই প্রশ্নটা মনেও আনবি না যে কেন মালতী আমায় ছেড়ে চলে গেলো? জীবনের এই টুইস্টটা তুই আন্সল্ভড ই রেখে দে। কারন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় টুইস্ট তো জীবন নিজেই। কক্ষনো আর মালতীকে চিন্তাও করবি না।
মৃত্যুঞ্জয়ঃ হ্যাঁ সুবীর বাবু, আপনি শক্ত হন। সেই কারনেই আমাদের এখানে আসা। আর এই ডায়েরী লেখা। না সত্য বাবুর ডায়েরিটা আসল নয়। আপনি বা মানব বাবুর আসার অনেক আগেই উনি এসেছিলেন ও ডায়েরী পড়া শুরু করেছিলেন। হয়ত যে স্থানে কুকর্মটা করবেন তা একটিবার দেখার জন্যই এসেছিলেন। কিছুই পাননি শুধু এই ডায়েরীটা ছাড়া। উনি জানতেন ও না যে এই ডায়েরীটা শুধুই কোনও ইতিহাসের গল্প নয়, এর নাম অভিশপ্ত ডায়েরী। তারপর উনি নিজের মত করে, মালতী দেবীর, মানব বাবুর ও সুব্রত বাবুর কথা মিলিয়ে একটা চক্রান্ত করে নিজে একটা ডায়েরী লিখে ফেললেন। এবার বলি কেন অভিশপ্ত? আরে মশাই, ডায়েরী তো ক্ষুদ্র জিনিষ, ভগবানের ও ক্ষমতা নেই কারুর জীবনকে অভিশপ্ত করে তোলার। এই ডায়েরী সেদিন থেকে লেখা শুরু হয়েছে যেদিন থেকে সুব্রতকে মালতীর মনে ধরে। কিছু ভুল আপনার ও আছে, আপনিও নিজের স্ত্রীকে যথেষ্ট সময় দেননি। আপনারাই নিজেদের জীবনে অভিশাপ নিয়ে এসেছেন ডায়েরীটা নয়। তবে মেয়েদের কথা ভেবে আপনাকে শক্ত হতে হবে।
মানব বাবুঃ সুবীর, টিম অভিশপ্ত ডায়েরীর কাজ তো সমাপ্ত। আর হ্যাঁ গুপ্তধন? সত্য বাবুই তোর গুপ্তধন, ওই তোকে বাঁচাবে ওই একমাত্র প্রমান। ভালো থাকিস সুবীর। ওই দেখ পুলিশের ভ্যানের শব্দ। আর তো আমরা এখানে থাকবো না। ডায়েরীর চতুর্থ খণ্ড শেষ, জানিনা আবার কোন অভাগা বা অভাগিনীর জীবন নিয়ে ডায়েরী লেখা শুরু হবে। তবে যাওয়ার আগে টিম অভিশপ্ত ডায়েরী একসাথে নিজেদের স্লোগান দিয়েই তবে ভ্যানিস হবে।
সবাই একসাথে “যতদিন সমাজে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক থাকবে ততদিন অভিশপ্ত ডায়েরী ও থাকবে”
ভ্যানিস! হ্যাঁ করে তাকিয়ে থাকে সুবীর বাবু। ওর চোখের সামনে সবাই হথাত ই অদৃশ্য হয়ে যায়। কিন্তু এতকিছুর পরেও সুবীর বাবুর মুখে দৃপ্ত একটা হাঁসি, ওকে যে লড়তে হবে, গবেষণা করতে হবে, নিজের মেয়েদের জন্য বাঁচতে হবে।
[+] 1 user Likes manas's post
Reply


Messages In This Thread
RE: অভিশপ্ত ডায়েরী by subha chatterje completed - by manas - 24-01-2019, 02:52 PM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)