Thread Rating:
  • 12 Vote(s) - 3.42 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery অভিশপ্ত ডায়েরী by subha chatterje completed
#98
শেষ পর্বঃ জীবন (সবচেয়ে বড় টুইস্ট) পার্ট ১

“the brain study of a serial killer” সত্যি নামটার মধ্যেই কেমন একটা টুইস্ট এর গন্ধ রয়েছে। সত্যি ই একটা টুইস্ট হয়েছিল, ঠিক আজ থেকে ১০ বছর আগে। কোনও এক পিএইচডি স্কলার তার গাইডের কাছে একটা পেপার ডাউনলোড করে নিয়ে যায় ও বলে “স্যার অসাধারন একটা কাজ ইউরোপে শুরু হয়েছে। আমি এর ওপরেই গবেষণা করতে চাই” প্রথমে তো গাইড প্রচণ্ড বকাবকি করেন নিজের সবচেয়ে প্রিয় ছাত্রটিকে, কিন্তু পরবর্তীকালে সেই ছাত্রের একগুঁয়েমির কাছে শিক্ষক হার মানেন। সব ই তো ঠিক ছিল, মুশকিল ছিল একটা জায়গায়। এতো নতুন একটা কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে গেলে তার যথাযোগ্য গিনিপিগ চাই। গিনিপিগ, অর্থাৎ যার ওপর এই পরীক্ষা চলবে। এতো কঠিন একটা কাজ তো আর ২-৩ বছরে হয়না। ধীরে ধীরে একটার পর একটা পদক্ষেপের মাধ্যমে নতুন কিছু তথ্য খুঁজে পাওয়া। সত্যব্রত দত্তই হোল সেই গিনিপিগ। আমেরিকায় সবকিছু খুইয়ে সেই এই পোড়াদেশেই ওকে ফিরে আসতে হত। কিন্তু ফিরে এসে যে এইভাবে গিনিপিগ হতে হবে তা হয়ত ওর জানা ছিলনা।
গবেষকের বয়স তখন এই ২৫। সেই বয়সেই সত্যব্রত বাবুর মত এক ঘোড়েল মালকে কিকরে যে কব্জা করে নিলেন তা সত্যি ই আশ্চর্যজনক। বিজ্ঞান এর আগে বহুবার বহু গিনিপিগ তৈরি করেছে। কিন্তু এভাবে বোধ হয় নিজের গিনিপিগকে কেউ ই ব্যাবহার করেনি। সত্যি ওনার থেকে এই জিনিষটা প্রতিটি গবেষকের ই শেখার আছে। কি সুবীর আর কিছু বলতে হবে?
সুবীর বাবুঃ সুব্রতকে তো আমি নিজের ভাইএর মত স্নেহ করতাম। এই মুহূর্তে ওর মত ব্রিলিয়ানট গবেষক আর একজন ও নেই। আর ওই কিনা...
মানব বাবুঃ কেন রে তুই কি মালতী দেবীকেও কম ভালবাসতিস নাকি? এগুলো হয়রে। সত্যি হয়। কেন হয় তার কোনও কারন নেই।
সুবীর বাবুঃ আমি সত্যি নিজেকে এখনো বিশ্বাস করাতে পারছিনা। সুব্রত... আমার কলেজের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সহকর্মী, যাকে আমি মেয়েদের কাছে গুরুর মর্যাদা দিলাম, সেই সুব্রত। আর মালতী কি করে এটা করল? সুব্রত যে আমার ছোট ভাইএর মত...
মানব বাবুঃ তোর সব প্রশ্নের উত্তর আমি হয়ত দিতে পারব না। কিন্তু বেশ কিছু রহস্য এবার আসতে আসতে সামনে আসবে। মনে কর সেইদিনের কথা, আমি তোদের বাড়ি থেকে অপমানিত হয়ে সবে মাত্র বেরিয়ে আসছি। আর ঠিক তার কয়েকঘণ্টা পর তোর একটা ফোন, “মানব ১৫ লাখ টাকা তোর বাড়ির...” সমস্ত রহস্য লুকিয়ে আছে এই কয়েকটা ঘণ্টার অন্তরালে।
সেদিনের তোর ওই অপমান আমি সত্যি ই ভালোভাবে নিইনি। তুই কি জানিস সত্যি ই বৌদি সেদিন আমার সাথে শুতে চেয়েছিল। আমি যখন লুকিয়ে বৌদির সাড়ি পড়া দেখছিলাম তখন পেছন ঘুরে বৌদি আমার দিকে তাকিয়েছিল। কয়েক সেকেন্ডের জন্য আমাদের নজর মেলে। আমি ওখান থেকে চলে আসি। তার কিছুক্ষন পর ই দেখি বৌদি হাঁসতে হাঁসতে আমার কাছে আসে। এমনকি রাতে শোয়ার সময় ও বৌদি খুব ভালো করেই বুঝেছিল তোর ঘরে আমি আর আমার ঘরে তুই। সেদিন কোনও কামনার বশে পড়ে বৌদি আসেনি। এটা ছিল একটা চক্রান্ত। আসতে আসতে সব ই বুঝবি।
সেদিন তুই আমায় ওভাবে অপমান করলি, আমার চোখের সামনে বর্ণালীর সেই মৃত্যু যন্ত্রণাটা ভেসে উঠেছিল। ওফ, কি কষ্ট পেয়ে মেয়েটা মরেছিল। বর্ণালী চলে যাওয়ার পর মদ ছাড়া আমার জীবনে আর কিছুই ছিলনা। কিন্তু সত্যি বলছি সুবীর, সেদিনের অপমানটার আগে অবধি আমি তোকে ক্ষমাই করে দিয়েছিলাম। কিন্তু পুরনো ক্ষতটায় আবার নতুন করে নুনের ছিটে দিয়ে তুই আমাকে আবার জাগিয়ে দিলি।
তোর বাড়ি থেকে বেরোনোর পর শরীরটা কিছুতেই সামনের দিকে এগচ্ছিল না। বারবার মনে হচ্ছিল ফিরে যাই, তোর গালে একটা চড় মারি আর বলি, “তুই ও বা কোন সাধুপুরুষ শুনি, তুই ও তো একটা নিষ্পাপ মেয়ের জীবন নষ্ট করেছিস। আর তোর বউ ও কম যায়না” হথাত পেছন থেকে আমার কাঁধে কেউ একটা হাত রাখে। আমি চমকে গিয়ে পেছন ফিরে দেখি সুব্রত বাবু।
সুব্রত বাবুঃ কি বন্ধু, খুব চিন্তায় লাগছে আপনাকে। বন্ধু বলছি কেন জানেন, আমি আড়াল থেকে সব ই শুনেছি। আমরা বন্ধু না হলে কারা বন্ধু হবে।
আমিঃ কেন হথাত আমরা কেন বন্ধু হতে যাবো? আর আপনার কথা আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা।
সুব্রত বাবুঃ পারবেন পারবেন সব পারবেন। আমি বর্ণালীর ব্যাপারেও জানি আবার কালরাতে আপনার আর মালতীর ব্যাপারেও জানি। আমি সব ই জানি আমার কাছে কিছুই লুকানোর নেই।
আমিঃ না এব্যাপারে আমি আপনার সাথে কেন আলোচনা করতে যাবো। আমি আপনাকে চিনিনা, জানিনা।
সুব্রত বাবুঃ আচ্ছা ৫টা মিনিট দাঁড়িয়ে কথা তো বলতে পারেন। একটা সিগারেট তো খেতে পারেন। এতে আর ক্ষতি কি। নিন একটা সিগারেট খান।
তখনও বুঝিনি আসলে গিনিপিগটা আমি, অন্য কেউ নয়। সিগারেট হাতে নিয়ে আমরা দুজনে একটু নিরিবিলি এক স্থানে গিয়ে দাঁড়াই। সুখটান দিতে দিতে সুব্রত বাবু বলেন
সুব্রত বাবুঃ আপনাকে একবার বন্ধু যখন বলে ফেলেছি, তখন আর কিছুই লুকাবনা। মালতী, উফ কি ফিগার। দু তিন বার স্নানরত অবস্থায় আমি দেখেছি। দাদা চলুন আমরা দুজনেই ভাগাভাগি করে নি।
আমি তো অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। এতো ভদ্র শিক্ষিত মার্জিত এক মানুষ হথাত আমার মত অচেনা এক লোককে কিকরে এই কথা বলে ফেলে। আমি কিছু বলার আগেই সুব্রত বাবু বলেন
সুব্রত বাবুঃ সুবীর সেনকে আপনি হয়ত এখনো ভালোই মনে করছেন। ও এক নম্বরের বিষমাল। কলেজে আমার রেপুটেশন খারাপ করার জন্য অনেক চেষ্টা ও করেছে। অনেক কিছু করেছে। প্রোমোশন আটকে দিয়েছে, আরও কতকিছু।
সত্যি বলছি সুবীর, রক্ত গরম ছিল তাই হয়ত আমার মত রাজনীতিক ও ক্লিন বোল্ড হয়ে গেলো। সত্যি বলতে সুব্রতর প্ল্যানটা যে কি ছিল তা আমি জানতাম না, আমায় শুধু এটাই বলা হয়েছিল যে কোনও এক রবিবার তোর জমিদারবাড়িতে গবেষণার জন্য যাওয়ার কথা। একটা ডায়েরী ওখানে রেখে দেওয়া হবে, সেই ডায়েরীটা দিয়ে তোকে এমনভাবে ভয় দেখানো হবে যে তুই মানসিক উন্মাদ হয়ে যাবি। এই কাজের দায়িত্বে থাকবে সত্য বাবু। আমি কিছু না বুঝলেও, একটা জিনিষ ই বুঝেছিলাম বৌদিকে ভোগ করার ও তোর ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার ইচ্ছেটা আমার মত সুব্রতর ও আছে। তাই ও হয়ে গেলো আমার সহজাত বন্ধু। এরপর শনিবার অর্থাৎ তোর জমিদার বাড়িতে যাওয়ার আগের দিন আমি আর সত্যবাবু ওখানে যাই, ভেতরে একটা ডায়েরী রেখে আসার জন্য। আমি ছিলাম সামনে, সত্য বাবু পেছনে। তখন আমরা মুল দরজা ঠেলে অনেকটাই প্রবেশ করেছি। পিঠের ওপর প্রচণ্ড জোরে একটা আঘাত, কিছু বোঝার আগেই দেখি পেট চিরে একটা ভোজালি সামনের দিকে বেরিয়ে আসছে। আমার শরীরের সমস্ত জোর আসতে আসতে শেষ হয়ে আসছিল। এভাবে যে কতবার ভোজালিটা ঢোকাল আর বার করল খেয়াল নেই। আসতে আসতে চোখ দুটো বুজে আসছিল, দেখি কিছুটা দূর থেকে সুব্রত বাবু এগিয়ে আসছে। মাটিতে লুটিয়ে পড়লাম আমি। সত্য বাবু কিছুক্ষন পর আমার বুকে হাত দিয়ে পরখ করে নিল আমি বেঁচে আছি কিনা। না ততক্ষনে আমার দেহটা মৃত। কিন্তু আত্মা তো আর মরেনা, ওটা বেঁচেই ছিল। আমি দেখতে পাচ্ছিলাম সুব্রত বাবু পকেট থেকে মোবাইলটা বার করলেন কাউকে ফোন করলেন। জায়গাটা জনশূন্য, তাই ফোনের ওপাশের আওয়াজটাও স্পষ্ট ভাবে আসছিল। সুব্রত বাবু বললেন “কাজ হয়ে গেছে” ওপাশ থেকে আমার অতি পরিচিত এক মহিলার কণ্ঠ ভেসে এলো “সুব্রত দেখো কোনও বিপদ হবেনা তো আমাদের” নিজের কানকে বিশ্বাস করাতে পারছিলাম না, গলাটা ছিল বৌদির। আমার প্রচণ্ড আফসোস হচ্ছিল, আমার একটা সামান্য ভুলে আমার সাথে সাথে তুই ও শেষ হয়ে গেলি। কিন্তু আমিও পন করেছিলাম তোকে বাঁচাবই। যদিও সুব্রতর কুকীর্তির এখানেই শেষ নয়। হথাত চেঁচিয়ে ওঠে “কে? কে ওখানে?”
ওরা দুজনেই প্রানপন দৌড়ায়। এক চাওয়ালা হয়ত কোনও বিশেষ কাজে জমিদারবাড়ির ভেতরে এসেছিল। কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওকে ধরে ফেলে। সামান্য ধ্বস্তাধস্তি ও গলায় জোরে কিছুক্ষন চাপ দেওয়া। ব্যাস আরেকটা জীবন ও শেষ। সুবীর, ওই চাওয়ালাই তোর জীবনে দেখা প্রথম ভূত। ও তোকে সত্যি জমিদারবাড়িতে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে চেয়েছিল। আমি জানতাম ডায়েরী একটা লেখা হয়েছে, এবং তার লেখক ৩ জন আমি, সত্য বাবু ও সুব্রত বাবু। কিন্তু ভুল, ডায়েরীর লেখক আসলে ৪ জন আমি, বৌদি, সত্য বাবু ও সুব্রত বাবু। সবচেয়ে মজার ব্যাপার ভূত হওয়ার পর কখনোই আমি বৌদিকে স্পর্শ করার চেষ্টা করিনি। ওই যে অশরীরীর কথা বৌদি তোকে বলেছিল ওটা শুধুই ডায়েরীর গল্পকে প্রমান করার জন্য। সুব্রত বাবু এরকম করতেই পারেন, কিন্তু বৌদি... আমি আজও মানতে পারিনা এটা। যাই হোক হাতে সময় খুব কম। তোকে আরও একটা গল্প শুনতে হবে তবেই তুই নিজেকে প্রমান করতে সক্ষম হবি। ধরে নে আমি আসিনি, সত্য বাবু গল্প বললেন ও বেরিয়ে চলে গেলেন তাহলে কি হত? একটু ভেবে দেখ কি হত?
সত্য বাবু বেরিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই পুলিশ এসে উপস্থিত হত। প্রথম প্রশ্ন হত “মানব বাবুকে কেন খুন করলেন?” তোর উত্তর হত “আমি তো খুন করিনি, খুন করেছে সত্য বাবু” “সত্য বাবু কে?” “সত্য বাবু হলেন সত্যেন্দ্র” “সত্যেন্দ্র কে?” “জমিদারবাড়ি, ডায়েরী এইসব থেকে আমি সত্য বাবুকে জেনেছি” হয়ত বা নিজের স্ত্রী, মেয়েদের বেশ্যা বলতিস সর্বসমক্ষে।
ব্যাস ওদের পরিকল্পনা সফল। তোকে আদালতে তোলা হত। মহামান্য আদালত রায় দিত “সুবীর বাবু, মানসিক উন্মাদ। শুধু নিজের স্ত্রীর সাথে পরকীয়া সম্পর্কের সন্দেহে নিজের ই প্রিয় বন্ধু মানবকে হত্যা করেছে” তুই হয় জেল নয় মানসিক হসপিটালে। প্রথমে রূপসা ও তিলোত্তমা কিছুতেই মেনে নিতে পারতো না কিন্তু তারপর ঠিক ই মনে করে নিত ওদের বাবা একজন উন্মাদ। তারপর মায়ের ই সুখের জন্য সুব্রত ও মালতীর নতুন করে ঘর বাঁধা- এটাও হয়ত মেনে নিত।
সুবীর বাবুঃ মালতী কেন এরকম করল? আমাকে ডিভোর্স চাইলে আমি ই স্বেচ্ছায় ওকে দিয়ে দিতাম। ও এতো বড় একটা অপরাধ কেন করল?
মানব বাবুঃ আমিও জানিনা রে। হয়ত এর উত্তর আমি কিছুটা ভেবে নিজের যুক্তি তক্ক দিয়ে বলতে পারতাম। কিন্তু সত্যি একটা টুইস্ট রয়েছে জানিস সেটা কি? সেটা হোল জীবন। জীবনের চেয়ে বড় টুইস্ট বোধ হয় আর কিছুই হয়না। সত্যি রে সুবীর বৌদির ঠিক কিসের অভাব ছিল? সুব্রতকে শুধু ভালো লেগে গেলো, তোকে আর ভালো লাগছিলনা, মেয়েদের কাছেও অপরাধী সাজা যায়না, অতএব এতো বড় একটা অপরাধ করা, এটাই কি। মনে হয় নয়, কারন জীবন সত্যি ই একটা টুইস্ট। এর উত্তর আমার ও জানা নেই।
[+] 1 user Likes manas's post
Reply


Messages In This Thread
RE: অভিশপ্ত ডায়েরী by subha chatterje completed - by manas - 24-01-2019, 02:51 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)