Thread Rating:
  • 19 Vote(s) - 2.95 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
একান্ত গোপনীয়
আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, ‘কিন্তু তুই আসা বন্ধ করে দিলি? কেন? আমি বাজে?’ স্নেহা চিৎকার করে উঠে বলল, ‘একদম তুমি তোমাকে বাজে বলবে না। তুমি আমার জীবনের সবচেয়ে ভালো আর প্রিয় বন্ধু। তোমার জায়গায় আমি কাউকে বসাতে পারবো না। আমি আসি না এটাও মা বারন করেছে।‘ আমি আশ্চর্য হলাম তনুর এই চিন্তাধারায়। কেন? ওই তো পাঠিয়েছিল স্নেহাকে আমার কাছে। আবার ওই বন্ধ করে দিলো আসা? কিছুই মাথায় ঢুকছে না। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘কোন কারন কিছু বলেছে?’ স্নেহা জবাব দিলো, ‘ওটা তো আমিও জিজ্ঞেস করেছিলাম। মা বলল আমি নাকি বড় হচ্ছি, কে আবার কি বলবে তোমাকে আমাকে নিয়ে। তার থেকে না যাওয়ায়ই ভালো। আমি প্রতিবাদ করেছিলাম যে যাই বলুক আমার কিছু যায় আসে না। আমি যাই কাকুর কাছে শুতে। কিন্তু জেদ করে মা আমাকে আটকে দিয়েছে। ডি, প্লিস আমাকে তোমার কাছে নিয়ে যাও। এদের সাথে আমার একদম ভালো লাগছে না থাকতে।‘ আমি কপালে থাপ্পর মারলাম। তনুর একি ব্যবহার? ওকে পাত্তা দিই না বলে স্নেহাকে এইভাবে মানসিক অত্যাচার করবে? কিন্তু ও তো ওদের মেয়ে। ওদের সে ক্ষমতা আছে স্নেহার ব্যাপারে ভুল হোক ঠিক হোক বিচার নেবার। আমি মাথা গলাবার কে? স্নেহাকে আমি তাই বোঝালাম। বললাম, ‘বাবু, যদি তোর মা বারন করে থাকে আমার কাছে না আসার, তাহলে আমি কিন্তু কিছু বলবো না। কারন তুই ওদের মেয়ে। তোর সম্বন্ধে ওরা যা কিছু ভাবতেই পারে। আমি তো আর জোর করতে পারি না।‘ স্নেহা বলল, ‘আমার কিছুই ভালো লাগছে না ডি। মনে হচ্ছে সব ছেড়ে ছুঁড়ে চলে যাই কোথাও। এরা কেউ থাকবে না আমার কাছে। এই বিশাল পৃথিবীতে আমি একলা বাঁচতে চাই, একলা থাকতে চাই।‘ অন্য সময় হলে বলতাম তাই কর আর আমিও চলে যাই তোর কাছে। কিন্তু মামলা এতো গম্ভির আমি চুপ করে রইলাম। স্নেহা তবু বলল, ‘ডি, একটু বলে দেখ না মাকে। তোমার কথা হয়তো মা শুনবে।‘ আমি আমতা করে বললাম, ‘দেখি চেষ্টা করে। আমার মনে হয় না তোর মা শুনবে।‘ স্নেহা বলল, ‘আমি এখন রাখছি ফোন। মায়ের বোধহয় তোমার কাছে পৌঁছাবার সময় হয়ে এলো।‘ স্নেহা ফোন কেটে দিতেই আমি কল লগে গিয়ে তনুর নাম ডিলিট করে দিলাম। কে জানে সময় খারাপ। যদি কোনভাবে দেখে ফেলে তনু আবার। স্নেহা বেচারা মার খাবে। ফোনটা রেখে একটা পেগ নিয়ে বসলাম। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি তখনো প্রায় দেড় ঘণ্টা বাকি কাজীর ঘরে আসতে। সবে বারোটা। পেগে এক চুমুক দিতেই দরজার বেল বেজে উঠলো। আমি আমার মেকি বিরক্তিতা দেখিয়ে দরজায় যেতে যেতে বলতে লাগলাম, ‘উফফ, একটু যে আরাম করবো তার কোন উপায় নেই।‘ আমি জানি তনু এসেছে। তাই ওই নাটক করলাম। দরজা খুলতে দেখি একটা নাইটি পড়ে তনু দাঁড়িয়ে আছে দরজায়। আমি অবাক হবার ভান করে বললাম, ‘কিরে তুই? জানলি কি করে আমি আছি ঘরে?’ তনু আমাকে ঠেলে ঘরে ঢুকে গেল। তারপর বলল, ‘তুই কি রে? বাইরে থেকে এসেছি, কোথায় ঘরে ঢুকতে বলবি না গেট আটকে প্রশ্ন করছিস?’ আমি মুখে বললাম, ‘সরি। আমাকে তোকে ঢুকতে দেওয়া উচিত ছিল আগে। কিন্তু জবাব তো দিলি না।‘ তনু এধার ওধার দেখতে দেখতে বলল, ‘সেটা আবার অজানা থাকে নাকি? পার্থ বলল তোর নাকি শরীর খারাপ। যতই হোক সম্পর্ক তো একটা হয়েছে। সেই সুবাদে চলে আসা খবর নিতে।‘ আমি কিছু বললাম না। জানি বললে ওর কথা আরও বাড়বে তার থেকে চুপ থাকা ভালো। তনু জিজ্ঞেস করলো, ‘কাজীকে দেখছি না। ওকি সাইটে?’ আমি উত্তর দিলাম, ‘এই সময় তো ও সাইটেই থাকে।‘ তনু চট করে বলল, ‘না তোর শরীর খারাপ। হয়তো যায় নি। কি হোল তোর আবার?’ বললাম, ‘ওই সকাল থেকে মাথা ব্যাথা, গা ব্যাথা। তাই ভাবলাম না গিয়ে একটু রেস্ট নিই।‘ তনু বলল, ‘ভালো করেছিস। তুই তো ছুটি একদম নিতে চাস না। পার্থটাও তাই। বললেই বলে সাইটে অনেক কাজ। বুঝি না বাপু কিসের এতো কাজ। একদিন রেস্ট নিলে কি এমন মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে।‘ মনে মনে ভাবলাম সাইটের কথা তুই আর কি জানবি। তোর তো শুধু জানার কোথায় লাগানো যায় আর পয়সা কোথা থেকে আসে। এককালে আমার খুব ভালো বন্ধু সম্বন্ধে একথা ভাবতে আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল। কিন্তু তনুর ব্যবহার আর কাজকারবার আমাকে বাধ্য করছে এইসব ভাবতে। তনুর দিকে ভালো করে তাকালাম আমি। একটা কালো ওড়না ছাপা নাইটির উপর বুক অব্দি টেনে রাখা। নড়ার সাথে সাথে বিশাল ভরাট মাইগুলো থলথল করছে। ব্রা পরে নি স্বাভাবিকভাবে। নাইটির গায়ে হলুদ ছোপ লাগানো। রান্না করতে করতে লেগেছে আর কি। দেখে মোটেই ভদ্রস্থ মনে হচ্ছে না। না জিজ্ঞেস করে পারলাম না, ‘তুই এই অবস্থায় চলে এলি?’ নিজের দিকে একবার তাকিয়ে বলল, ‘কেন কি হয়েছে আসতে? তুই কি এক দাগগুলোর কোথা বলছিস? আরে সবাই জানে রান্না করতে গিয়ে লেগেছে। আমি কি এই পাড়ায় অপরিচিত নাকি?’ আমি জবাব দিলাম, ‘সেটাই ঘটনা। পরিচিত বলেই ব্যাপারটা দৃষ্টিকটু লাগছে। অপরিচিত হলে কোন ব্যাপার হতো না।‘ তনু তাচ্ছিল্য করে উড়িয়ে দিলো কথাটা, বলল, ‘ছাড় তো কে দেখল, কি ভাবল। বয়েই গেছে চিন্তা করতে।‘ আবার এধার ওধার তাকাতে থাকল। আমি ঘড়ি দেখলাম। প্রায় ঘণ্টা খানেক বাকি কাজীর আসতে। আমি তনুর দিকে তাকিয়ে বললাম, ‘কিরে কি খুঁজছিস তখন থেকে?’ তনু হেসে বলল, ‘একটু মদ দিবি না?’ শালীর খুশি দেখ। আমার শরীর খারাপের কথা শুনে এসেছে, আর এসে মদ চাইছে। চাওয়া ছাড়া ও আর কিছু জানে না। আমি উত্তর দিলাম, ‘আমি তো খাচ্ছি। দ্যাখ, ফ্রিজে বোতল আছে।‘ তারপর বললাম, ‘দাঁড়া আমি বার করছি। তুই গ্লাস আন।‘ আমি মদ বার করতে না করতে তনু গ্লাস নিয়ে হাজির। আমি মদ ঢেলে বললাম, ‘তোর স্নান হয়ে গেছে? না পরে করবি?’ তনু উত্তর দিলো, ‘তোর কাছ থেকে ঘুরে গিয়ে করবো। এই তো রান্না সারলাম।‘ আমি গ্লাস দুটো নিয়ে ঘরে এলাম। তনু আর আমি বিছানায় বসলাম। চিয়ার্স করে সিপ দিতে তনু বলল, ‘দীপ একটা কথা বলবি?’ আমি জানি ও কি জিজ্ঞেস করবে। তবু বললাম, ‘বল কি কথা?’ তনু আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘তুই কি আর আমার সাথে আগের সম্পর্ক রাখবি না?’ আমি মদ সিপ করে বললাম, ‘কেন, এইতো কথা বলছি। তুই যখন ফোন করিস তখনো তো বলি। সম্পর্ক তো আছে এখনো আমাদের।‘ তনু হাত তুলে আমাকে থামিয়ে বলল, ‘না আমি সেই সম্পর্কের কথা বলছি না। আগে যেমন আমরা ছিলাম। কোন দ্বিধা বোধ ছিল না। কোন বাঁধা ছিল না। সেই রকম। আজকাল তুই আসিস না বাড়ী। ফোন করলে দু চারটে কথা বলে ছেড়ে দিস ফোন। কি করলাম আমি? সেই রাতের ঘটনা কিছুতেই ভুলতে পারছিস না?’ সেই রাতের কথা বলতেই আমার চোখের সামনে সেই বিভীষিকাময় রাতের ছবি ভেসে উঠলো। আমি ভুলে যেতে চাই ওই রাত। কিন্তু থেকে থেকেই মনের মধ্যে ভেসে ওঠে সেই রাত। উফফ, কি ভয়ঙ্কর ছিল। কি অবস্থা ছিল আমার। স্নেহা যদি না থাকতো তাহলে আমার কি হতো কে জানে। আমি মাথা ঝাঁকি দিয়ে দূরে সরিয়ে দিলাম সেই ছবি। বললাম, ‘না না সেটা তো তোদের মধ্যে হয়েছিল। আমার কি তাতে?’ তনু একটু সরে এসে বলল, ‘তাহলে কেন আমাকে আর সেই আগের চোখে দেখিস না। স্নেহা তোর কাছে আসতো, কিন্তু কই একবারও তো বলিস নি তনু তুই আয়।‘
Like Reply


Messages In This Thread
RE: একান্ত গোপনীয় - by Raj1100 - 28-11-2019, 01:42 PM



Users browsing this thread: