24-11-2019, 11:59 PM
cont.......
মালার সেদিন নিজের পায়ের তলা থেকে যেন পুরো পৃথিবীটাই সরে গেছিলো যেদিন বিমান ফুলশয্যার রাতে বলে আমরা সমাজের চোখেই শুধু স্বামীস্ত্রী এরপরন্তু আমরা অতিথি ,সে শুধু ছেলে রতনের রক্ষাকবজ এখানে কোনোকিছুর অভাবঅভিযোগ থাকবেনা শুধু থাকবে ছেলের প্রতি মায়ের কর্তব্য যেটা তাকে সারাজীবন পালন করে যেতে হবে। তারপর ধীরে ধীরে মালা সমস্ত কিছুই মেনে নিতে থাকলো নিজের তিনতিনটে মেয়ের মুখ চেয়ে। তারপর কি রতনকেও কি মালা কম মায়ামমতা আদর করেনা ,আস্তে আস্তে বুঝলো এই বিয়েটা হলো তার কাছে একটা কারবারিক সমঝোতা বা চুক্তি।কারণ বিমান খুব কমি মালার সাথে সাক্ষাৎ বা কথা বলতো। রাতে বেলা বিমান নিজের ঘরে ছেলেকে নিয়ে ঘুম দিতো।আর এদিকে অন্য ঘরে নিজেদের মেয়ের সাথে থাকতো মালা। তাই বলে তিনমেয়ের সাথে বিমানের কোনো বিরূপতা ছিলোনা,সে নিজের মেয়ের চোখেই তাদের দেখতো। আদর যত্নও করতো তাদের। কিন্তু ব্যাবসায়ী মানুষ হলে যা হয় খুব ব্যাস্ত সময় খুব একটা দিতে পারতোনা। এদিকে মালা রতনকে খুব আদর যত্নে বড়ো করতে শুরু করলো ,ছোট্ট রতন খুব আদোরে মেতে উঠতো ,এমনকি মালা রতনকে ল্যাংটো করে স্নান করিয়ে দিতো ,স্নান করিয়ে দেবার সময় একদিন মালা বললো-রত্ন তুই আমাকে বড়মা না মা বলে ডাকবি। আমি তোর নব মা বুঝলি বলে কান মুলে দেয় আদর করে। মালা যেমন করে আদর করতো তার চেয়েও বেশী আদর আর ভালোবাসা পেতো দিদিদের কাছ থেকে। আর মালা আদর মমতা দেবেই না কেন কি পাচ্ছেনা এই বাড়ী থেকে রাজবাড়ীর রানীর মতো খাতির পাচ্ছে মিনা যা অধিকার সব পেয়েছে শুধু শারীরিক ভোগবিলাস ছাড়া ,এতটাই সম্পত্তির জের তৈরী হতে শুরু করে যে নিজের মধ্যে দম্ভ আর অহংকার এনে ফেলে মালা যা মিনার মধ্যে কখনোই আসেনি। তার অহংকারের জেরেই সে বিমানকে বলেকয়ে নিজের গ্রামের একচালা বাড়ীটা দোতলায় পরিণত করিয়ে নেয় তার সাথেসাথে বাড়ির পাশে থাকা পুকুর আর আশেপাশের জমিও,সবমিলে তৈরী হলো দোতলা বাড়ির পেছনে পুকুর আর বিঘাকত জমিজমা সবকিছুই পাঁচিল দিয়ে ঘেরা প্রথমে বাড়ি তার পিছনে পুকুর আর জমি ,সবটি মালার নামে এতে কোনোরকমের আপত্তি নেই বিমানের ,ছেলের মুখের দিকে চেয়ে সবকিছুই করে দিয়েছে মালাকে।লোভী মনটাকে কেউ বদলাতে পারে এক্ষেত্রেওতো তাই হলো যত পায় তার চেয়েও বেশি নিতে চায় মন। সেটা আরও প্রকাশ পেলো যখন রতনের বারো বছর হলো সেই সময় মালার দূরসম্পর্কের এক কাকিমা মালার কাছে বেড়াতে আসে ,কাকিমা ছিল খুঁতখুঁতে স্বভাবের ,সবকিছুতেই খুঁটিনাটি করা ,রতনের প্রতি মালার মায়া মমতা দেখে মালাকে বলে-
কাকিমা-সতীনের ছেলেকে এতো আদর ,আ মরণ ,কবে বড়ো হয়ে তোকে ঘর থেকে তাড়িয়ে দিলে না হয় ,স্বামীটাও কিছু করবে নি। ও এর সাথেই সাথ দেবে।
প্রথম প্রথম কোনো কিছু মনে করেনি কাকিমার কথায়। কোনো পাত্তাই না দিয়ে হেসে উড়িয়ে দেয় মালা। কিন্তু কথায় বলে কেউ যদি একটা কথা বার বার মাথায় প্রবেশ করানোর চেষ্টা করে সেটা একবার না একবার মনে তীর কাটবেই ,মালার ক্ষেত্রেও সেটাই হলো ,মালা ভাবতে শুরু করে সত্যিতো এখানে কিপেলাম টাকা সম্পত্তি আর কোথায় কিছু শারীরিক সুখতো ছোট মেয়ে জন্মাবার পরই গেলো ,টিপু রাতে বাড়ি ফিরে উল্টো দিকে মুখ করে ঘুমিয়ে পড়তো ,টানা দশ বছর এরকমই কেটেছে তারপর বিয়ে চারবছর হলো স্বামীর বিছানা বঞ্চিত সে স্বামী কি আর আমায় দেখবে এই রতন বড়ো হলে , মালাদেবী এসব নিজের ঘরে শুয়েশুয়ে ভাবছে যখন তখন রতন দৌড়ে ছুটে আসে বড়মার দিকে মা মা করতে করতে। আর এদিকে মালার মাথাটায় খারাপ ছিল রাগের মাথায় বলে-এই হতচ্ছাড়া ছেলে আমি তোর মা হলাম কবে থেকে ,তোর বড়মা বুঝলি ফের যেন মা ডাক না শুনি। ঐটুকু ছেলে রতন কি আর বুঝবে সে শুধু অবাক মুখে চেয়ে থাকলো মালার দিকে। এরপর থেকে যেন মমতা রাগে পরিণত হলো বিরূপতা সৃষ্টি করলো রতনের দিকে ,শুধু মেয়েদের দিকে বেশি নজর। এরপর একদিন কাকিমা চলে গেলো নিজের দেশে তবে এই বিষ দিয়ে মালার মনের ভেতর ,যতদিন যেতে থাকে মনের মধ্যে বিষ বাড়তেই থাকে ,তার সাথে রতনের প্রতি রাগটাও ,এখন আর সেরকম রতনের খবর রাখেন না ,দেখতে দেখতে আরো চারটে বছর কেটে গেলো ,এরই মধ্যে দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছে ধুমধাম করে মালা ,মালার মনে ক্ষিপ্ত রাগানুরাগ থাকলেও রতনের মনে কখনোই আক্রোশ জন্মাইনি সে তার দিদিদের আগের মতো ভালোবাসে আর বড়মাকে আগের মতো স্নেহভক্তি করে।এদিকে বিমানের কাছ থেকে টাকা গয়নাগাটি বেশ আবদার করে চালাকি মেরে নিজের আয়ত্বে আনতে শুরু করে ,নিজের রুমে একটা বোরো আলমারি রয়েছে সেই গয়না সে সেখানে ভালোকরে গোছাতে শুরু করে.আর অহংকারের সীমানা তারতো শেষ নেই। রতনের তখন ষোলো বছর বয়েস দম্ভ আর রাগের নিশানায় রেখে একদিন মালা বোকাঝোকানি শুরু করেছে ,
মালা-আমার কাছে বার বার আসিস কেনোরে {কান দুটো জোরে মুলে},যা গিয়ে এতো চাকরবাকর রয়েছে তাদের কাছে যা খাবার দেবে ওরা এখানে কিকরছিস ,দূর হো সামনে থেকে {আর তাদের পেছনেই দাঁড়িয়ে বিমান সব দেখছে রাগী চোখে আর মালার এই রূপ দেখে হতবাক ,ভাবতে থাকে যে ছেলের জন্য তাকে আনা হয়েছে তার ওপর এরকম মনোবৃত্তি }
বিমান-কিহচ্ছে এসব {রাগের সুরে মালার দিকে তাকিয়ে।মালা হটাৎ করে বিমান দেখে বাকরুদ্ধ ,কিকরবে ভেবে পায়না},আঙ্গুল তুলে ঘরের বাইরের দরজার দিকে ইশারা করে বলে --বেরিয়ে যাও ঘর থেকে আর কোনোদিন এ বাড়ির আঙিনায় যেন না দেখি ,রাস্তার মেয়েছেলে রাস্তায় রাখতে হয় ভেতরে নিয়ে আসতে নেই ,কথাগুলোতে মালার খুব অপমান বোধ হয় সেও কোনোকিছু না ভেবে সেই কাপড়েই মেয়েটাকে নিয়ে বেরিয়ে গেলো ,আর বলে যায় শেষ হলেও এই বাড়ি আর আসবো না। খুব কান্নাকাটি করতে করতে মালাকে জড়িয়ে ধরে রতন যদি কোনোরকমে তার বড়োমাকে আটকানো যায় কিন্তু তার বড়মা বেরিয়ে গেলো আর রতন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সব দেখলো। মালা ছোটমেয়েকে নিয়ে চলে এলো নিজের সেই পুরোনো বাড়িতে ,এখন সেটা দোতলা বাড়ী পেছনে জমিপুকুর।সেটা হলেও দিন চলবে কিকরে হাতে টাকাপয়সা আসবে কিকরে। ,সেখানেও কিন্তু রতনের অমায়িক রূপ , মাসে মাসে লুকিয়ে লুকিয়ে এসে এসে দিদির কাছে কিছু টাকা দিয়ে যায় তাতে তাদের দিন চলে যায় কোনোরকমে। তারপরই হটাৎ বুসিনেস টুরে বিমান পাহাড়িয়া সিঁড়ি থেকে পা পিছলে পড়ে যায় তাতে মাথায় খুব জোর আঘাত লাগে কিছুদিন পর জানা গেলো বিমানের একদিক পুরো প্যারালাইস তারপর থেকে আর বিছানা থেকে উঠতে পারে না ,সারাক্ষন রয়েছে নার্স বাড়ির ভেতরেই ,এদিকে কাজের ভার চলে আসে রতনের উপর এই ১৭ বছর বয়সে দায়িত্বপূর্ণ ভালোই অর্জন করেছে নিজের পড়াশোনার সাথেসাথে বাবসাটাও ধরেছে। এতে বিমান খুব খুশি ছেলে নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখছে ,দুবছর কেটে গেলো এখন বিমান কিছুটা সুস্থ তবে প্যারালাইস শরীর বেশি নাড়াচাড়া বারন।তবে একটু একটু হাঁটাচলা হচ্ছে আর নার্স নেই ।দু মাস আগে জানতে পারে রতন যে তার ছোটদিদি ,টুম্পাদির জন্য বিয়ের প্রস্তাব এসেছে ,বিয়ে ঠিকঠাকও হয়ে গেছে ,কিন্তু নাকি টাকাপয়সার অভাবে বিয়েটা বারবার পিছিয়ে যাচ্চ্ছে। রতন জানতে পেরেই ছুটে গেলো বড়মার বাড়ী ,বড়মা রতনকে দেখে একটু রাগ প্রকাশ করে ,কিন্তু টুম্পার দিকে চেয়ে নিজেকে সামলে নেয়। টুম্পাদির বিয়ে পুরো ভার রতন নিজে গ্রহণ করে সমস্ত বিয়ে খাইখরোচ সব মিটিয়ে টুম্পার বিয়েটা ধুমাধুম করে রতন নিজের হাতে। রতনের এই কারুকার্য দেখে মালা কান্নায় ফেটে পড়ে রতনের কাছে আর কাঁদতে কাঁদতে বলে -রতন তুই আমাকে ক্ষমা কর ,অনেক কষ্ট দিয়েছে রে তোকে ,কি পাপ ,আমি আমাকে ক্ষমা কর। রতন কান্নায় ভেঙে বলে ,মানুষ মাত্রেই ভুল হয় ,আর তুমিতো আমার বড়মা তার উপর কখনো রাগতে পারি,বলে হালকা হাসি দিলো,মালা রতনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে তুই অনেক বড় হয়ে গেছিস রে রতন,তারপর মেয়ের বিদায় হলে রতন ফিরে আসে নিজের বাড়ি ,এরপর বর্তমান ঘটনা। ......................................
দুমাস পর যখন মালার কাছে রতন গেলো দেখা করতে ,মালা খুব খুশি আর স্নেহেশতকারেই আগমন জানায় সেই আগের মতোই । এসে এসেই রতন বললো -বড়মা আজ আমি দুপুরের খাবার খেয়ে যাবো।
মালা- শুধু দুপুরের কেন বলছিস রাতের খাবার খেয়ে কাল পরশু দুএকদিন থেকেই যানা কেউ বারণ করেছে কি ?.......................চলবে??
মালার সেদিন নিজের পায়ের তলা থেকে যেন পুরো পৃথিবীটাই সরে গেছিলো যেদিন বিমান ফুলশয্যার রাতে বলে আমরা সমাজের চোখেই শুধু স্বামীস্ত্রী এরপরন্তু আমরা অতিথি ,সে শুধু ছেলে রতনের রক্ষাকবজ এখানে কোনোকিছুর অভাবঅভিযোগ থাকবেনা শুধু থাকবে ছেলের প্রতি মায়ের কর্তব্য যেটা তাকে সারাজীবন পালন করে যেতে হবে। তারপর ধীরে ধীরে মালা সমস্ত কিছুই মেনে নিতে থাকলো নিজের তিনতিনটে মেয়ের মুখ চেয়ে। তারপর কি রতনকেও কি মালা কম মায়ামমতা আদর করেনা ,আস্তে আস্তে বুঝলো এই বিয়েটা হলো তার কাছে একটা কারবারিক সমঝোতা বা চুক্তি।কারণ বিমান খুব কমি মালার সাথে সাক্ষাৎ বা কথা বলতো। রাতে বেলা বিমান নিজের ঘরে ছেলেকে নিয়ে ঘুম দিতো।আর এদিকে অন্য ঘরে নিজেদের মেয়ের সাথে থাকতো মালা। তাই বলে তিনমেয়ের সাথে বিমানের কোনো বিরূপতা ছিলোনা,সে নিজের মেয়ের চোখেই তাদের দেখতো। আদর যত্নও করতো তাদের। কিন্তু ব্যাবসায়ী মানুষ হলে যা হয় খুব ব্যাস্ত সময় খুব একটা দিতে পারতোনা। এদিকে মালা রতনকে খুব আদর যত্নে বড়ো করতে শুরু করলো ,ছোট্ট রতন খুব আদোরে মেতে উঠতো ,এমনকি মালা রতনকে ল্যাংটো করে স্নান করিয়ে দিতো ,স্নান করিয়ে দেবার সময় একদিন মালা বললো-রত্ন তুই আমাকে বড়মা না মা বলে ডাকবি। আমি তোর নব মা বুঝলি বলে কান মুলে দেয় আদর করে। মালা যেমন করে আদর করতো তার চেয়েও বেশী আদর আর ভালোবাসা পেতো দিদিদের কাছ থেকে। আর মালা আদর মমতা দেবেই না কেন কি পাচ্ছেনা এই বাড়ী থেকে রাজবাড়ীর রানীর মতো খাতির পাচ্ছে মিনা যা অধিকার সব পেয়েছে শুধু শারীরিক ভোগবিলাস ছাড়া ,এতটাই সম্পত্তির জের তৈরী হতে শুরু করে যে নিজের মধ্যে দম্ভ আর অহংকার এনে ফেলে মালা যা মিনার মধ্যে কখনোই আসেনি। তার অহংকারের জেরেই সে বিমানকে বলেকয়ে নিজের গ্রামের একচালা বাড়ীটা দোতলায় পরিণত করিয়ে নেয় তার সাথেসাথে বাড়ির পাশে থাকা পুকুর আর আশেপাশের জমিও,সবমিলে তৈরী হলো দোতলা বাড়ির পেছনে পুকুর আর বিঘাকত জমিজমা সবকিছুই পাঁচিল দিয়ে ঘেরা প্রথমে বাড়ি তার পিছনে পুকুর আর জমি ,সবটি মালার নামে এতে কোনোরকমের আপত্তি নেই বিমানের ,ছেলের মুখের দিকে চেয়ে সবকিছুই করে দিয়েছে মালাকে।লোভী মনটাকে কেউ বদলাতে পারে এক্ষেত্রেওতো তাই হলো যত পায় তার চেয়েও বেশি নিতে চায় মন। সেটা আরও প্রকাশ পেলো যখন রতনের বারো বছর হলো সেই সময় মালার দূরসম্পর্কের এক কাকিমা মালার কাছে বেড়াতে আসে ,কাকিমা ছিল খুঁতখুঁতে স্বভাবের ,সবকিছুতেই খুঁটিনাটি করা ,রতনের প্রতি মালার মায়া মমতা দেখে মালাকে বলে-
কাকিমা-সতীনের ছেলেকে এতো আদর ,আ মরণ ,কবে বড়ো হয়ে তোকে ঘর থেকে তাড়িয়ে দিলে না হয় ,স্বামীটাও কিছু করবে নি। ও এর সাথেই সাথ দেবে।
প্রথম প্রথম কোনো কিছু মনে করেনি কাকিমার কথায়। কোনো পাত্তাই না দিয়ে হেসে উড়িয়ে দেয় মালা। কিন্তু কথায় বলে কেউ যদি একটা কথা বার বার মাথায় প্রবেশ করানোর চেষ্টা করে সেটা একবার না একবার মনে তীর কাটবেই ,মালার ক্ষেত্রেও সেটাই হলো ,মালা ভাবতে শুরু করে সত্যিতো এখানে কিপেলাম টাকা সম্পত্তি আর কোথায় কিছু শারীরিক সুখতো ছোট মেয়ে জন্মাবার পরই গেলো ,টিপু রাতে বাড়ি ফিরে উল্টো দিকে মুখ করে ঘুমিয়ে পড়তো ,টানা দশ বছর এরকমই কেটেছে তারপর বিয়ে চারবছর হলো স্বামীর বিছানা বঞ্চিত সে স্বামী কি আর আমায় দেখবে এই রতন বড়ো হলে , মালাদেবী এসব নিজের ঘরে শুয়েশুয়ে ভাবছে যখন তখন রতন দৌড়ে ছুটে আসে বড়মার দিকে মা মা করতে করতে। আর এদিকে মালার মাথাটায় খারাপ ছিল রাগের মাথায় বলে-এই হতচ্ছাড়া ছেলে আমি তোর মা হলাম কবে থেকে ,তোর বড়মা বুঝলি ফের যেন মা ডাক না শুনি। ঐটুকু ছেলে রতন কি আর বুঝবে সে শুধু অবাক মুখে চেয়ে থাকলো মালার দিকে। এরপর থেকে যেন মমতা রাগে পরিণত হলো বিরূপতা সৃষ্টি করলো রতনের দিকে ,শুধু মেয়েদের দিকে বেশি নজর। এরপর একদিন কাকিমা চলে গেলো নিজের দেশে তবে এই বিষ দিয়ে মালার মনের ভেতর ,যতদিন যেতে থাকে মনের মধ্যে বিষ বাড়তেই থাকে ,তার সাথে রতনের প্রতি রাগটাও ,এখন আর সেরকম রতনের খবর রাখেন না ,দেখতে দেখতে আরো চারটে বছর কেটে গেলো ,এরই মধ্যে দুই মেয়ের বিয়ে দিয়েছে ধুমধাম করে মালা ,মালার মনে ক্ষিপ্ত রাগানুরাগ থাকলেও রতনের মনে কখনোই আক্রোশ জন্মাইনি সে তার দিদিদের আগের মতো ভালোবাসে আর বড়মাকে আগের মতো স্নেহভক্তি করে।এদিকে বিমানের কাছ থেকে টাকা গয়নাগাটি বেশ আবদার করে চালাকি মেরে নিজের আয়ত্বে আনতে শুরু করে ,নিজের রুমে একটা বোরো আলমারি রয়েছে সেই গয়না সে সেখানে ভালোকরে গোছাতে শুরু করে.আর অহংকারের সীমানা তারতো শেষ নেই। রতনের তখন ষোলো বছর বয়েস দম্ভ আর রাগের নিশানায় রেখে একদিন মালা বোকাঝোকানি শুরু করেছে ,
মালা-আমার কাছে বার বার আসিস কেনোরে {কান দুটো জোরে মুলে},যা গিয়ে এতো চাকরবাকর রয়েছে তাদের কাছে যা খাবার দেবে ওরা এখানে কিকরছিস ,দূর হো সামনে থেকে {আর তাদের পেছনেই দাঁড়িয়ে বিমান সব দেখছে রাগী চোখে আর মালার এই রূপ দেখে হতবাক ,ভাবতে থাকে যে ছেলের জন্য তাকে আনা হয়েছে তার ওপর এরকম মনোবৃত্তি }
বিমান-কিহচ্ছে এসব {রাগের সুরে মালার দিকে তাকিয়ে।মালা হটাৎ করে বিমান দেখে বাকরুদ্ধ ,কিকরবে ভেবে পায়না},আঙ্গুল তুলে ঘরের বাইরের দরজার দিকে ইশারা করে বলে --বেরিয়ে যাও ঘর থেকে আর কোনোদিন এ বাড়ির আঙিনায় যেন না দেখি ,রাস্তার মেয়েছেলে রাস্তায় রাখতে হয় ভেতরে নিয়ে আসতে নেই ,কথাগুলোতে মালার খুব অপমান বোধ হয় সেও কোনোকিছু না ভেবে সেই কাপড়েই মেয়েটাকে নিয়ে বেরিয়ে গেলো ,আর বলে যায় শেষ হলেও এই বাড়ি আর আসবো না। খুব কান্নাকাটি করতে করতে মালাকে জড়িয়ে ধরে রতন যদি কোনোরকমে তার বড়োমাকে আটকানো যায় কিন্তু তার বড়মা বেরিয়ে গেলো আর রতন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সব দেখলো। মালা ছোটমেয়েকে নিয়ে চলে এলো নিজের সেই পুরোনো বাড়িতে ,এখন সেটা দোতলা বাড়ী পেছনে জমিপুকুর।সেটা হলেও দিন চলবে কিকরে হাতে টাকাপয়সা আসবে কিকরে। ,সেখানেও কিন্তু রতনের অমায়িক রূপ , মাসে মাসে লুকিয়ে লুকিয়ে এসে এসে দিদির কাছে কিছু টাকা দিয়ে যায় তাতে তাদের দিন চলে যায় কোনোরকমে। তারপরই হটাৎ বুসিনেস টুরে বিমান পাহাড়িয়া সিঁড়ি থেকে পা পিছলে পড়ে যায় তাতে মাথায় খুব জোর আঘাত লাগে কিছুদিন পর জানা গেলো বিমানের একদিক পুরো প্যারালাইস তারপর থেকে আর বিছানা থেকে উঠতে পারে না ,সারাক্ষন রয়েছে নার্স বাড়ির ভেতরেই ,এদিকে কাজের ভার চলে আসে রতনের উপর এই ১৭ বছর বয়সে দায়িত্বপূর্ণ ভালোই অর্জন করেছে নিজের পড়াশোনার সাথেসাথে বাবসাটাও ধরেছে। এতে বিমান খুব খুশি ছেলে নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখছে ,দুবছর কেটে গেলো এখন বিমান কিছুটা সুস্থ তবে প্যারালাইস শরীর বেশি নাড়াচাড়া বারন।তবে একটু একটু হাঁটাচলা হচ্ছে আর নার্স নেই ।দু মাস আগে জানতে পারে রতন যে তার ছোটদিদি ,টুম্পাদির জন্য বিয়ের প্রস্তাব এসেছে ,বিয়ে ঠিকঠাকও হয়ে গেছে ,কিন্তু নাকি টাকাপয়সার অভাবে বিয়েটা বারবার পিছিয়ে যাচ্চ্ছে। রতন জানতে পেরেই ছুটে গেলো বড়মার বাড়ী ,বড়মা রতনকে দেখে একটু রাগ প্রকাশ করে ,কিন্তু টুম্পার দিকে চেয়ে নিজেকে সামলে নেয়। টুম্পাদির বিয়ে পুরো ভার রতন নিজে গ্রহণ করে সমস্ত বিয়ে খাইখরোচ সব মিটিয়ে টুম্পার বিয়েটা ধুমাধুম করে রতন নিজের হাতে। রতনের এই কারুকার্য দেখে মালা কান্নায় ফেটে পড়ে রতনের কাছে আর কাঁদতে কাঁদতে বলে -রতন তুই আমাকে ক্ষমা কর ,অনেক কষ্ট দিয়েছে রে তোকে ,কি পাপ ,আমি আমাকে ক্ষমা কর। রতন কান্নায় ভেঙে বলে ,মানুষ মাত্রেই ভুল হয় ,আর তুমিতো আমার বড়মা তার উপর কখনো রাগতে পারি,বলে হালকা হাসি দিলো,মালা রতনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে তুই অনেক বড় হয়ে গেছিস রে রতন,তারপর মেয়ের বিদায় হলে রতন ফিরে আসে নিজের বাড়ি ,এরপর বর্তমান ঘটনা। ......................................
দুমাস পর যখন মালার কাছে রতন গেলো দেখা করতে ,মালা খুব খুশি আর স্নেহেশতকারেই আগমন জানায় সেই আগের মতোই । এসে এসেই রতন বললো -বড়মা আজ আমি দুপুরের খাবার খেয়ে যাবো।
মালা- শুধু দুপুরের কেন বলছিস রাতের খাবার খেয়ে কাল পরশু দুএকদিন থেকেই যানা কেউ বারণ করেছে কি ?.......................চলবে??