Thread Rating:
  • 12 Vote(s) - 3.42 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery অভিশপ্ত ডায়েরী by subha chatterje completed
#92
পর্ব ১২- রাজুর হেঁয়ালিঃ

“কিরে সাইদুল ওঠ, বেলা হয়ে গেলো তো। ওঠ বাবা, অনেকদুর যেতে হবে তো আমাদের”
আম্মির ডাক শুনে ধড়ফড় করে উঠে পড়ে সাইদুল। পাশে রাখা মোবাইলটা তুলে দেখে সকাল ৭ টা ১০ বেজে গেছে। মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড় হয় সাইদুলের। রূপসার তো ৮ টায় হাওড়া পৌঁছে যাওয়ার কথা। মনে মনে ভাবে শালা কাল রাতে এমন হোল অ্যালার্ম দিতেই ভুলে গেছিলাম। ওদের দেশের বাড়ি বসিরহাটে। ঠিক ছিল সাড়ে ছটার বসিরহাট লোকালে আম্মিকে তুলে দিয়ে ও সোজা হাওড়া চলে যাবে। সমস্ত পরিকল্পনা ভেস্তে গেলো। আম্মির সামনে রূপসাকে আনাও সম্ভব নয়। তাড়াতাড়ি ব্রাশ করতে শুরু করে সাইদুল। হথাত ফোনটা বেজে ওঠে ওর। সাইদুল খুব ভালো করেই জানে যে এটা রূপসার ই ফোন।
রূপসাঃ কোথায় আছো সাইদুল? আমি কিন্তু বাসে উঠে গেছি আর আধ ঘণ্টার মধ্যেই হাওড়া পৌঁছে যাবো।
সাইদুলঃ আরে রূপসা একটা অসুবিধা হয়ে গেছে। মাকে শিয়ালদায় বসিরহাট লোকালে উঠিয়ে দিতে যাচ্ছি। হাওড়া পৌছাতে দেড় ঘণ্টা মত লাগবে। তুমি কি কোনও বন্ধুর বাড়িতে...
রূপসাঃ তোমার না কিচ্ছু ঠিক নেই। আম্মিকে শিয়ালদা ছাড়তে যেতে হবে তো আমায় জানালে না কেন কাল রাতে? আমি তোমায় জিজ্ঞেস করে বাড়ি থেকে বেরতাম। এখন আমি কোথায় যাবো?
চিন্তায় সাইদুল ও পড়ে যায়। আম্মিকে তো দেশের বাড়ি আজ যেতেই হবে, আবার রূপসাকেও দাঁড় করিয়ে রাখা যায়না। এইসব চিন্তার মধ্যেই সাইদুলের পিঠে কেউ একটা হাত রাখে। পেছন ফিরে সাইদুল দেখে রাজু দাঁড়িয়ে আছে। হাতের ইশারা করে বলছে “আমি নিয়ে আসব কোনও চিন্তা করিস না তুই” সাইদুলের কাছে অন্য কোনও উপায় ও ছিলনা। রূপসা তখন ও ফোনের অপর প্রান্তে ছিল।
সাইদুলঃ রূপসা, আমায় তো আম্মিকে স্টেশন এ ছাড়তে যেতেই হবে। এককাজ কর আমি রাজুকে পাঠাচ্ছি। রাজু তোমায় আমার বাড়িতে নিয়ে আসবে। কিছুক্ষন অপেক্ষা কর আমি চলে আসব।
রূপসাঃ(গলাটা কিছুটা উঁচু করে) কেন রাজু কি আম্মিকে স্টেশনে ছেড়ে আসতে পারেনা। তুমি আমায় নিয়ে আসবে তাহলে।
সাইদুলঃ তুমি বুঝছ না রূপসা, আমি সাথে না গেলে আম্মি বেরোবে না। বুঝতেই তো পারছ সেকেলে মানুষ একটু। কোনও চিন্তা নেই, আমি অল্প সময়ের মধ্যেই চলে আসব।
রূপসাঃ তুমি কি গো আমাকে একা রাজুর সাথে ছেড়ে দিচ্ছ? তোমার কি কোনও চিন্তাও হয়না।
কাল রাতের রূপসার হেঁয়ালিগুলো সাইদুলের মাথা থেকে এখনো নেমে যায়নি, রূপসার আবার এই কথায় সাইদুলের শরীরে রক্তপ্রবাহ বেড়ে যায়। পেছনঘুরে একবার রাজুর মুখের দিকে তাকায় সাইদুল। রাজুর মুখে একটা অচেনা হাঁসি, সেই হাঁসির মধ্যে যেন কত রহস্য লুকিয়ে আছে। নিজের মনেই বলে ওঠে সাইদুল “ধুস আবার উল্টো পাল্টা ভাবছি আমি”
সাইদুলঃ আরে কোনও চিন্তা নেই। তুমি রাজুর সাথে চলে আসো। আমি অল্প সময়ের মধ্যেই চলে আসব।
ফোন টা রেখে দেয় সাইদুল। রাজু হয়ত সব ই বুঝতে পেরেছে তাও ওকে আরও একবার বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য সাইদুল বলে
সাইদুলঃ ভাই রাজু খুব বিপদে পড়েছি রে। রূপসা কিছুক্ষনের মধ্যেই হাওড়াতে এসে যাবে। আমি আবার আম্মিকে নিয়ে যাবো শিয়ালদা। তুই যদি...
রাজুঃ কি যে বলিস ভাই। এতে এতো আমতা আমতা করছিস কেন। বাসস্টপের কাছে যেতে হবে তো? আমি এক্ষুনি চলে যাচ্ছি।
সাইদুলঃ আরে শোন! ঘরের চাবি আমিনা বৌদির কাছে থাকবে, নিয়ে নিস।
সাইদুল ভেতরে ঢোকে, আম্মি ততক্ষনে তৈরি হয়ে গিয়েছিল। দ্রুত জামাকাপড় পড়ে সাইদুল ও তৈরি হয়ে যায়। আম্মিকে নিয়ে বাইরে বেরোয়। রাজু ও ঠিক সেইসময় ই বেরতে যাচ্ছিল। রাজুকে বাইরে দেখে, সাইদুল ঘরের দরজা লক করে ওর হাতে চাবি দিয়ে দেয়। সাইদুল নিজের আম্মিকে নিয়ে বাস ধরতে রওনা দেয় আর এদিকে রাজুও হাওড়ার দিকে যেতে শুরু করে।
প্রায় ৪০ মিনিট বাদে সাইদুল আম্মিকে নিয়ে শিয়ালদা স্টেশনে পৌছায়। দ্রুত টিকিট কেটে ভেতরে ঢুকে দেখে ট্রেন আসতে আরও ৫ মিনিট দেরি। সাইদুলের আম্মি কিছুটা আমতা আমতা করে বলে ওঠে “বাবা সাইদুল আমাকে একটু বসিরহাট অবধি ছেড়ে দিয়ে আসবি? এই লাইনে যা ভিড়” সাইদুল পড়ে মহা ফাঁপরে, একে তো এতক্ষনে রূপসার ওর বাড়িতে পৌঁছে যাওয়ার কথা, বস্তির মধ্যে কি করে যে মেয়েটা রয়েছে একা এই ভেবে ওর অবস্থা খারাপ তার ওপর আম্মির নতুন বায়না। সাইদুল আম্মিকে বহুবার বোঝানোর চেষ্টা করে, কিন্তু আম্মি নিজের জেদেই অনড় থাকে। অবশেষে বাধ্য হয়ে সাইদুলকে আবার ফোন করতে হয়।
সাইদুলঃ রূপসা, একটা প্রবলেম হয়ে গেছে। আম্মি একা যেতে ভয় পাচ্ছে। তুমি প্লিস একটু অপেক্ষা কর। আমি রাজুকে বলে দিচ্ছি তোমার দেখাশুনা করতে। প্লিস ৩ টে ঘণ্টা আমায় সময় দাও।
রূপসাঃ তুমি কি পাগল। এক তো আমায় নিতে আসলে না, তার ওপর আবার বলছ...
রূপসার কথা শেষ হওয়ার আগেই ওপাশ থেকে কেউ একটা বলে ওঠে “ঠিক আছে কোনও ব্যাপার নয়। ও আম্মিকে ছেড়ে দিয়ে আসুক না, আমি তো আছি” সাইদুলের গায়ে কাঁটা দিতে শুরু করে। এটা তো রাজুর গলা। এই ৩ টে ঘণ্টায় রাজু কি ওর সাথে ওখানেই থাকবে। রাজু যদি কোনও অসভ্যতা করে ওর সাথে। তিলোত্তমাকে না পাওয়ার ঈর্ষা যে রাজুর প্রতিটি রন্ধ্রে বিদ্যমান তা সাইদুল খুব ভালো করেই জানে। কিছুটা অস্পষ্ট ভাবে আবার একটা কথা ভেসে আসে “না আমি কি একা থাকবো নাকি” সাইদুল জানে ফোনটা হাত দিয়ে চেপে রূপসাই রাজুকে এই কথাটা বলল। রূপসা তো রাজুর সাথে কখনো কথা বলেনি, তাহলে এই অল্প এতো সময়ের মধ্যে এতো আপন কি করে বানিয়ে নিল। “আরে কিচ্ছু হবেনা আমি আছি তো” “ধুস ভালো লাগেনা”
রূপসাঃ তোমার যখন ইচ্ছে তুমি তখন ই ফিরবে, আমার কথা ভাবতে হবেনা, আমি ফোন রাখলাম।
রূপসা ফোনটা রেখে দেয়। সাইদুলের মাথায় একের পর এক দুশ্চিন্তা আসতে শুরু করে। কাল রাতে প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে রূপসা কার সাথে কথা বলল। পেছন থেকে আম্মি বলে ওঠে “আয় বাবা, ট্রেনের সময় হয়ে গেছে” সাইদুল কোনরকমে নিজেকে সংবরন করে প্ল্যাটফর্ম এর দিকে এগিয়ে যায়।
জানলার ধারে বসে সাইদুল দেখতে থাকে একের পর এক স্টেশন পেছনদিকে চলে যাচ্ছে, মানুষের ভিড়ে প্রান ওষ্ঠাগত তার ওপর আম্মির একের পর কথা “আমিনার বাড়িতেই খেয়ে নিবি, নিজে রান্না করতে যাস না” “তাড়াতাড়ি বাড়ির সব কাজ সেরে নিবি” সাইদুলের মাথায় কিছু ঢোকে না। ও শুধু ভাবতে থাকে কখন বসিরহাট স্টেশন আসবে, আম্মিকে ছেড়ে দিয়ে ও রূপসাকে একটা ফোন করতে পারবে। এক একটা করে মিনিট অতিক্রান্ত হয় আর তারসাথে সাইদুলের ও দুশ্চিন্তা বাড়তে থাকে। রাজুকে যে ও ভীষণ ভালোভাবেই চেনে। ওর ভয় করতে থাকে রাজু রূপসার সাথে জোর করছে না তো। এইসব হাজারো দুশ্চিন্তার মধ্যে দিয়েই ওরা বসিরহাট স্টেশনে পৌছায়। দ্রুত স্টেশন থেকে বেরিয়ে আম্মিকে একটা রিক্সায় চড়িয়ে ও ফিরে আসে। শিয়ালদার দিকে যাওয়ার ট্রেন আরও আধ ঘণ্টা বাদে, তাই স্টেশন চত্তরটাও কয়েক মিনিটের মধ্যে একদম ফাঁকা হয়ে যায়। এতক্ষনে সাইদুলের রূপসাকে ফোন করার সুযোগ হয়। পকেট থেকে মোবাইলটা বার করে রূপসাকে ফোন লাগিয়ে দেয়। কিন্তু সুইচ অফ। মাথা খারাপ হয়ে যায় সাইদুলের। বারবার চেষ্টা করে চলে তাও একি- সুইচ অফ। সাইদুল ভাবে নিশ্চয়ই রূপসার কোনও বিপদ হয়েছে, এই মুহূর্তেই একবার রাজুকে ফোনটা করা দরকার।
সাইদুল দ্রুত রাজুর নাম্বারে ডায়াল করে কিন্তু দুবার রিং হওয়ার পর ই রাজু ফোনটা কেটে দেয়। সাইদুলের বিশ্বাস হয়না রাজু ওর ফোন কেটে দিলো বলে। মনে মনে ভাবে নিশ্চয়ই নেটওয়ার্কের প্রবলেম তাই হয়ত ফোনটা কেটে গেলো। আবার রাজুর নাম্বার ডায়াল করে, কিন্তু এবার ও সেই একি ফলাফল, দুবার রিং হওয়ার পর ই ফোনটা কেটে যায়। সাইদুলের মাথা এবার সত্যি ই খারাপ হতে শুরু করে, পাগলের মত বারবার করে রাজুকে ফোন করতে থাকে কিন্তু রাজু প্রতিবার ই ওর ফোনটা কেটে দেয়। সাইদুলের মাথায় একের পর প্রশ্ন ও তার উত্তর জমা হতে শুরু হয়। কাল রাতে রূপসা কার সাথে এতক্ষন ধরে কথা বলছিল? সন্ধ্যেবেলা রূপসা নিজেই বলল যে লাল সাড়ি পড়বে, সাইদুল সেইভেবে একটা লাল সাড়ি বাজার থেকে কিনেও নিয়ে এলো। হথাত কি হয়ে গেলো? কার সাথে কথা বলে ওর ওই হলুদ সাড়িটা পড়ার ইচ্ছে জাগল। রূপসা কি মালতী দেবী ও ওদের দুজনের উগ্র যৌনাচারের ব্যাপারে কিছু জানে? রূপসাও কি সেই কারনেই রাজুর এতো সুখ্যাতি করে। সাইদুলকে ছাড়াই তো বহুবার দুপুরের দিকে রাজু মালতী দেবীর বাড়ি গিয়ে ওনাকে ভোগ করে এসেছে, তাহলে কি রূপসা কিছু জেনে গেছে। কাল রাতে রূপসা যে কথাগুলো বলল তা কি তাহলে...? নিজের মনেই বলে ওঠে সাইদুল না না এ হতে পারেনা, রূপসা আমাকে এতো ভালোবাসে, আমরা দুজনে নতুন সংসার গড়ার স্বপ্ন দেখেছি, হথাত করেই তা ভেঙে যেতে পারেনা। সাইদুলের কানে কানে কে যেন বলে ওঠে “আরে বোকা, রূপসার মত একটা অতো শিক্ষিত উঁচু সমাজের মেয়ে কি সত্যি ই তোর প্রেমে পড়েছে? ও তো মায়ের মত তোর আর রাজুর একসাথে সহবাসের আনন্দ পেতে চায় তাই তো এতো আদিখ্যেতা। আরে ও তো মালতীর ই মেয়ে রে” পাগলে হয়ে যায় সাইদুল। বারবার নিজেকে বোঝাতে শুরু করে না রূপসা আমার সাথে কখনো এরকম করবেনা।
আবার পকেট থেকে মোবাইলটা বার করে সাইদুল। রাজুর নাম্বারে ফোন করে। এবার আর রাজু কেটে দেয়না, বারবার রিং হতে থাকে, কিন্তু রাজু ফোন ধরেনা। সাইদুল আবার ফোন করে অনেকক্ষণ রিং হওয়ার পর ফোনটা রিসিভ করে রাজু। সাইদুলের শরীরে যেন নতুন করে প্রানের সঞ্চার হয়। ঝড়ের গতিতে বলতে শুরু করে সাইদুল।
সাইদুলঃ আরে রাজু তুই কোথায়? রূপসার ফোনে চেষ্টা করে যাচ্ছি কিছুতেই পাচ্ছিনা। সুইচ অফ বলছে। এই মাকে ছাড়লাম। এখনো বসিরহাটেই রয়েছি। ট্রেন আসতে আরও ১০ মিনিট। একটু রূপসার কাছে গিয়ে ওকে ফোনটা দে তো। কিজানি কি মনে করছে এতক্ষন কথা বলিনি।
অপর প্রান্ত থেকে কোনও উত্তর আসেনা, শুধুই দীর্ঘ নিঃশ্বাসের কিছু শব্দ। এই নিঃশ্বাস যে কেবল একজনের নয় তা সাইদুল বুঝতে পারে। সাইদুলের হৃৎপিণ্ডটা যেন উত্তেজনায় বাইরে বেরিয়ে আসবে। “ তাহলে কি রূপসা? ওফ ভগবান আমার ই প্রেমিকা আমার প্রিয় বন্ধুর সাথে উলঙ্গ হয়ে... না হতে পারেনা এটা”
সাইদুলঃ রাজু তুই কোথায়? আমার কথার জবাব দে। কোথায় তুই?
রাজুঃ উম্ম ওহ উপচ আমচ প্লিস আরেকটু। “আহ আহ ওমা” সাইদুল, আর ফোন করার সময় পেলিনা। এতো রূপসা রূপসা করিস না। ও খুব ভালো আছে সুখে আছে। উম্মম্ম সোনা আরেকটু, উম।
ফোনটা কেটে দেয় রাজু। সাইদুলের হৃৎপিণ্ডের সাথেসাথে ওর নিম্নাঙ্গেও ঝড় উঠতে শুরু করে। প্ল্যাটফর্ম এর ওপর ধিম গতিতে শিয়ালদামুখী লোকাল ট্রেন এগিয়ে আসছে, কিন্তু ওর নজরে ট্রেন নয় রাজুর মসৃণ পিঠ আর তার তলায় চেপ্টে বসে যাওয়া রূপসার অপক্ক শক্ত দুধগুলো। রূপসা বলছে “ওহ রাজু, শুধু শুধু তোমার ই হাতে নিজেকে মেয়ে থেকে নারী বানাবো বলে এতদিন অপেক্ষা করেছি। মা, তিলোত্তমা সবার মুখ থেকে তোমার কত প্রশংসা শুনেছি। এই কারনেই তো সাইদুলের সাথে এই প্রেমের অভিনয়”
“আরে ও দাদা, ট্রেনে না উথলে সরে যান আমাদের উঠতে দিন। কোথা থেকে সব এসে যায় এগুলো”
হুঁশ ফেরে সাইদুলের। ট্রেনে উঠে পড়ে, একদম জানলার ধারে সীটে গিয়ে বসে। আশেপাশের নারকোল গাছ, ঘরবাড়ি একেক করে সব পেছন দিকে দৌড়াচ্ছে কিন্তু সাইদুলের চোখে একটা নীল রঙের সিনেমা, রূপসার উলঙ্গ দেহটা খুটে খুটে খাচ্ছে ওর ই প্রিয় বন্ধু রাজু। “আমি হেরে গেলাম, ঈশ্বর আমায় তুমি হারিয়ে দিলে” মনে মনে বলে ওঠে সাইদুল। দুচোখ বুজে দেয়, যে দুই নয়নে কয়েকটা মুহূর্ত আগেই নতুন ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখেছিল সেই দুই নয়ন বেয়ে চুইয়ে চুইয়ে জল ঝরতে থাকে, আর হৃদয়- সেখানে তো ইতিমধ্যেই রক্তক্ষরন শুরু হয়ে গেছে। শ্রান্ত শরীরে চোখ খুলে বাইরের দিকে তাকায় সাইদুল। না কোনও ঘরবাড়ি, গাছপালা কিছুই নয় শুধুই নোংরা একটা হাসিমাখা রাজুর মুখ, আর ওর কাঁধের ওপর মুখ দিয়ে রূপসার লাজুক দৃষ্টি এই ফিরে আসতে থাকে সাইদুলের নজরে।
ট্রেন যে কখন শিয়ালদায় পৌঁছে গেছে খেয়াল নেই সাইদুলের। প্রায় জাত মাতালের মত টলতে টলতে বাইরে বেরোয় সাইদুল। বাসে উঠে বসে, জানে বাসটা ওর ঘরের কাছেই যাবে, আর যদি নাই যায় কি বা যায় আসে। “একটা রাত, রূপসাকে আধ ঘণ্টা ফোনে কথা বলেই তুই আমার থেকে আলাদা করে নিলি রাজু। যে ভালোবাসা এতো কষ্টে আমার হৃদয়ে বিন্দুবিন্দু করে জমা করেছিলাম তা তুই মুহূর্তের মধ্যে ছুঁড়ে বাইরে ফেলে দিলি। তুই যোগ্যতম, মেনে নিলাম তুই যোগ্যতম। তোর কাছে হেরে গেলাম রাজু” বিড়বিড় করে বলে ওঠে সাইদুল।
“আরে ও ভাই, কি বকবক করছ। বড়বাজার এসে গেছে, নেমে যাও”
ক্লান্ত শরীরটাকে কোনরকমে টানতে টানতে বাস থেকে নেমে পড়ে সাইদুল। রাস্তা ওর অতি পরিচিত, লোকজন ও অতি পরিচিত, কিন্তু সাইদুলের বারবার করে ইচ্ছে হচ্ছে চলে যেতে এখান থেকে। কোনরকমে শ্রান্ত শরীরে বস্তির রাস্তায় হেঁটে যেতে থাকে পরাজিত বিধ্বস্ত সৈনিক। প্রায় মিনিট দশেক হাঁটার পর ই বস্তির একদম মাঝে গিয়ে ওঠে সাইদুল, চোখের সামনেই নিজের ই ঘরের ভেজানো দরজাটা। “মনে মনে বলে আমার শরীরে এতো জোর নেই যে ওর ভেতরে উলঙ্গ রাজু ও রূপসাকে আমি দেখতে পারব, কিন্ত কতক্ষন এভাবে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকবো। পরাজয়ের গ্লানি নিয়েই আমাকে ওদের সামনে দাঁড়াতে হবে” দরজাটা প্রচণ্ড জোরে ঠেলে দেয় সাইদুল। সামনেই বসার ঘর। হনহন করে বাইরে বেরিয়ে আসে রূপসা।
“আমি যাচ্ছি এখান থেকে। আমার আর ভালো লাগছে না। এখন বাজে ১ টা। মানে ৫ ঘণ্টা টানা আমি এখানে বসে আছি। তোমার মত একটা ছেলেকে ভালোবেসে আমি বিশাল ভুল করেছি। আমার পক্ষে আর...”
রূপসার কথাগুলো সাইদুলের কানে ঢুকল কিনা সেব্যাপারে সন্দেহ থাকবেই। প্রচণ্ড জোরে চিৎকার করে ওঠে সাইদুল “চুপ কর তুমি। কাল রাতে কার সাথে কথা বলছিলে? রাজু কই? কি করছিলে এতক্ষন ধরে?”
অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে রূপসা। কিছুটা আমতা আমতা করে বলে ওঠে রূপসা “আমি তো কাল আমার স্কুলের এক বান্ধবীর সাথে কথা বলছিলাম। আর রাজুদা তো সেই সকালে আমায় এখানে বসিয়ে দিয়ে আর আসেনি”
সাইদুল ঠিক এক মরা মানুষের ধরে প্রান ফিরে আসার মত উৎফুল্ল হয়ে ওঠে। “ঠিক বলছ তুমি, রাজু আসেনি এখানে! আমি তোমায় আর কখনো ভুল বুঝব না” প্রায় দৌড়ে গিয়ে রূপসাকে জড়িয়ে ধরে সাইদুল। “ছাড় আর ন্যাকামো করোনা, বিয়ের পর ও এমনি করেই আমায় কষ্ট দেবে তুমি। আমি জানি এরকম ই ভাবে আমায় কষ্ট দেবে তুমি। একবার ও বললে না এই হলুদ সাড়িতে আমায় কেমন লাগছে। জানো আমার এক বান্ধবী কাল ই বলল প্রথমবার ওর বাড়ি যাচ্ছিস হলুদ সাড়ি পড়ে যা, লাল তো বিয়ের দিন পড়ে। তাই লাল সাড়িটা আর পড়লাম না, আচ্ছা তুমি কি সত্যি ই লাল সাড়ি কিনেছ আমার জন্য” রূপসার মিষ্টি এই শব্দগুলো সাইদুলের হৃদয়ে যে ক্ষতটা সৃষ্টি হয়েছিল তাতে প্রায় সম্পূর্ণভাবেই প্রলেপ লাগিয়ে দেয়। দুহাতে রূপসার দুই গালকে জড়িয়ে ধরে নিজের ঠোঁটের ফাঁকে রূপসার নিচের ঠোঁটটা ঢুকিয়ে নেয় সাইদুল। কিন্তু কয়েক সেকেন্ডের জন্যই তা স্থায়িত্ব পায়। অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই রূপসা নিজের মুখটা সরিয়ে নেয় “ছাড় আমার এখন ভালো লাগছে না। আমি আগে স্নান করব” সাইদুল ইচ্ছে না হলেও রূপসাকে ছেড়ে দেয়।
সাইদুলঃ তোমার একটু অসুবিধা হবে কিন্তু। আসলে আমাদের বাথরুমটা ভাঙাচোরা আছে একটু।
রূপসাঃ (সাইদুলের গালে খুব জোরে খিমচে দিয়ে) না মশাই, শ্বশুরবাড়ি মেয়েদের কাছে সবসময় ই স্বর্গ হয়, বুঝলেন?
পাশেই দড়িতে একটা গামছা ঝোলানো ছিল, ওটাকে কাঁধের ওপর দিয়ে রূপসা ভেতরে যেতে শুরু করল আর সাইদুলের দিকে পেছন ফিরে তাকিয়ে বলে উঠল “ কোনও দুষ্টুমি করবে না কিন্তু, আমি তোমার বউ এখনো হইনি, যখন হব তখন, কেমন” মুচকি একটা হেঁসে রূপসা ভেতরের দিকে চলে গেলো। সাইদুল আর ওখানে না দাঁড়িয়ে বাইরে বেরিয়ে এলো। পকেটে হাত দিয়ে দেখে একটাও বিড়ি নেই। ওদের বাড়ির ঠিক পেছনেই বিড়ির দোকান। পাশের সরু গলিটা দিয়ে সাইদুল সামনের দিকে এগোতে লাগলো। কিন্তু সাইদুল পারলো না। কিছুটা যাওয়ার পর ই রাজু। বারমুন্দাটা টেনে হাঁটুর কাছে নামিয়ে দিয়েছে হাতে দীর্ঘকায় লিঙ্গটা মুঠি করে ধরা। সাইদুলের বাড়ির ভাঙা পাঁচিলটার কাছে উঁকি মেরে ভেতরে তাকিয়ে আছে। সাইদুলের শরীরে আবার রক্তক্ষরন শুরু হোল। রাজুর কিছুক্ষন আগে করা হেঁয়ালিটা ও প্রায় ভুলতেই বসেছিল। প্রচণ্ড জোরে জোরে রাজুর লিঙ্গ সঞ্চালন দেখে সাইদুলের আবার মাথা খারাপ হয়ে যায়। হয়ত কিছুটা ভয়ের ই বশে রাজু, পেছন থেকে কেউ আসছে কিনা দেখার জন্য তাকায়, আর সাইদুলের সাথে নজর মেলে। দ্রুত নিজের প্যান্টটা ঠিক করে নিয়ে একটা মুচকি হেঁসে সাইদুলের দিকে এগিয়ে আসে রাজু।
রাজুঃ কিরে সাইদুল। এই ফিরলি। ওহ এতো সুন্দরী একটা মেয়েকে বস্তির মধ্যে রাখা যে কি চাপ। কখনো ঝুঁকে পড়ছে তো ব্লাউজের খাঁজ দিয়ে দুধ বেরিয়ে যাচ্ছে কখনো কোমরের অনেকটা বাইরে বেরিয়ে আসছে। খুব চাপ রে, বস্তির ছেলেদের একপ্রকার চমকেই আমি দূরে সরিয়ে রেখেছি।
সাইদুল যে এতটা রুদ্রমূর্তি ধারন করতে পারে রাজু তা হয়ত ভ্রুনাক্ষরেও ভাবতে পারেনি। দুহাতে রাজুর কলারটা চেপে ধরে বলে ওঠে সাইদুল
সাইদুলঃ তুই ওখানে কি করছিলি তা কি আমি বুঝিনি ভাবছিস। আমি রূপসাকে ভালোবাসি। আর একটাও বাজে কথা শুনতে চাইনা।
রাজুঃ এমা এতো রাগ করছিস কেন। আমি তো কিছুই করিনি রে। তখন তো একটা বিএফ এর ভিডিও চালিয়ে তোকে শোনালাম তাতেই তোর যা অবস্থা হয়ে গেছিল। আচ্ছা ছাড় আমায় কথা দিলাম আমি আর বাজে বাজে কথা বলব না। যতই হোক রূপসা আমার বৌদি আর বৌদি হোল গিয়ে মায়ের মত।
সাইদুল ওকে ছেড়ে দিয়ে আবার বাড়ির দিকে যেতে শুরু করে, রাজুও ওর পিছু নেয়।
রাজুঃ যাই বল মা বা বোনকেও ছাড়িয়ে গেছে রূপসা। যা দেখলাম না এখন কি বলব।
সাইদুল আবার ঘুরে ওর দিকে দেখে। এবার রাজুও কিছুটা নিজের পরিচিত ভঙ্গীতে
রাজুঃ আমায় মেজাজ দেখাস না সাইদুল। কিছুই হয়নি এখনো। তোর প্রেমিকাও কিন্তু রাজুদা রাজুদা বলে কম আদিখ্যেতা দেখায়নি। আমি ভেতরে ছিলাম ১০ মিনিট, বেরিয়ে আসার আগে কিন্তু বারবার বলছিল “রাজুদা একটু বস একা একা আমার ভালো লাগবে না” (সেই নোংরা হাসিটার সাথে) ভেবে দেখ সাইদুল, মেয়ের মনে কিন্তু ইচ্ছে আছে। মালতী ছিল একদম বুড়ি একটা। একে কিন্তু...
রাজুকে কথা শেষ করতে দেয়না সাইদুল প্রচণ্ড জোরে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। হনহন করে নিজের ঘরের দিকে যেতে শুরু করে। প্রচণ্ড জোরে হেঁসে বলে ওঠে রাজু “সাইদুল মেয়েদের আমি তোর চেয়ে অনেক ভালো করে চিনি, ভেবে দেখ একবার। আমিও খুশ তোরা দুজন ও খুশ”
[+] 1 user Likes manas's post
Reply


Messages In This Thread
RE: অভিশপ্ত ডায়েরী by subha chatterje completed - by manas - 22-01-2019, 10:49 AM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)