Thread Rating:
  • 16 Vote(s) - 3.25 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
একজন মা, আর একটি ছেলে (সংগৃহীত)
#27
আমার এমন একটি পরিকল্পনা মন্ত্রের মতোই কাজ করলো। মা তাড়াহুড়া করেই, তার লাগেজটা গুছাতে থাকলো। তারপর, সাদা রং এর জর্জেটের পাতলা একটা কামিজ পরে, ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে, হালকা সাজ গোঁজ করে, আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে বললো, কেমন লাগছে?

সাদা পোষাকে বোধ হয়, যে কোন মেয়েকেই অতিরিক্ত সুন্দরীই মনে হয়। মাকেই এই পোষাকটিতে অদ্ভুত সুন্দর লাগছিলো। ভেতরে ব্রা পরেনি বলে, স্তন যুগলের সঠিক আকৃতি আর আয়তনটাই ব্রা এর কাজটা করছিলো। আমি ইচ্ছে করেই বললাম, তোমাকে তো এমনিতেই সব সময় সুন্দর লাগে, কামিজটা সুন্দর কিনা জিজ্ঞাসা করছো নাকি?
মা রাগ করার ভান করেই বললো, দুটুই!
আমি বললাম, খুবই চমৎকার লাগছে! মনে হচ্ছে ডানা কাটা কোন এক পরী এসে আমার সামনে দাঁড়িয়েছে!
মা আহলাদী গলাতেই বললো, তুই বাড়িয়ে বলছিস! চল! বেলা পরে গেলে আর বেশী দূর যাওয়া যাবে না।

ড্রাইভীং সীটের পাশে মাকে নিয়ে, পাহাড়ী পথেই গাড়ী চালাতে শুরু করলাম। মা যেনো, এমনি একটি দিনের আশাতেই দিন গুনে অপেক্ষা করছিলো, বছরের পর বছর! মা গুন গুন করেই গান ধরলো। এক পর্য্যায়ে মা বললো, বাবা ঠিক অমন করেই আমাকে নিয়ে গাড়ী চালাতো! দূর দূরান্তে চলে যেতো!
আমি বললাম, তোমার মাকে নিয়ে যেতো না?
মা বললো, কেনো নিয়ে যাবে না! মা সব সময় পেছনে বসতেই পছন্দ করতো। আর আমি বাবার পাশে, সামনের সীটে! জানালাটা খুলে দিতাম! ফুর ফুর করে আমার গায়ে বাতাস লেগে, চুল গুলো উড়িয়ে দিতো। পথে লোকজনদের ভ্যাংচি কাটতাম, চিৎকার করতাম!

মা হঠাৎই মন খারাপ করে বললো, হঠাৎই সব কিছু যেনো এলোমেলো হয়ে গেলো!
আমি বললাম, আতীতকে মনে রেখে কোন লাভ আছে? হতাশাই শুধু বাড়ে!
মা বললো, ঠিক বলেছিস! জানিস! বাবা মা মারা যাবার পর, জীবনটা খুব এলোমেলোই হয়ে গিয়েছিলো। কাঁদতে ইচ্ছে করছিলো, অথচ কাঁদতেও পারিনি! কেমন করে কাঁদবো, কার জন্যে কাঁদবো? কাকে নিয়ে কাঁদবো?

মা খানিকটা থেমে, আবারো বলতে থাকলো প্রাচুর্য্যের সংসার থেকে, মামার টানাটানির সংসারে গিয়ে আরো যেনো বদলে গেলাম আমি!
আমি বললাম, তোমার মামার গলপো অনেক শুনেছি! একবারও কি তার সাথে দেখা করতে ইচ্ছে করে না?
মা বললো, করে! মনে আনন্দ থাকলেই মানুষের সাথে দেখা সাক্ষাৎ, কথা বিনিময় করতে ভালো লাগে! আমার নিরানন্দ জীবন! দেখা সাক্ষাৎ হলে, দুঃখ গুলোই তো শুধু বাড়বে। আমি একা আছি, খুব ভালো আছি!
আমি বললাম, একা কোথায়? আমি আছি না!
মা আমার দিকেই মাথা ঘুরালো। আমি ড্রাইভিং এর ফাঁকেই এক পলক মায়ের দিকে তাঁকালাম।

চট্টগ্রাম শহরে আসতে আসতেই সন্ধ্যাটা হয়ে গিয়েছিলো। কথা ছিলো পথের যেখানে শেষ, সেখানেই থামবো। তবে, এক টানা ড্রাইভিং এ দেহটাও ক্লান্ত হয়ে পরেছিলো। টাইগারপাস আসতেই, নিজের অজান্তেই গাড়ী ঘুরালাম বামে। চট্টগ্রাম ষ্টেশন পেরিয়ে, নুপুর সিনেমা, অতঃপর রিয়াজুদ্দীন বাজারের ফলের দোকান গুলো। হঠাৎই রাস্তার পাশে গাড়ী থামালাম। মা অবাক হয়ে বললো, এখানে গাড়ী থামালি কেনো? খুব ক্ষিধে পেয়েছে। ভালো একটা রেষ্টুরেন্ট খোঁজ!
আমি বললাম, মা, জায়গাটার কথা মনে পরে?
আমার কথায় মা হঠাৎই কেমন যেনো উদাস হয়ে গেলো! বিড় বিড় করেই বললো, কত্ত ছোট ছিলি তুই!

আমি আবারো গাড়ী স্টার্ট দিলাম। নিউ মার্কেটের দিকে এগিয়ে, গাড়ী ঘুরিয়ে পুনরায় স্টেশন রোড! টাইগারপাস হয়ে, দেওয়ান হাট, অতঃপর চট্টগ্রাম বিশ্বরোড! যানজট পেরিয়ে ঝংকার সিনেমা, অতঃপর ফুল স্পীডে ড্রাইভ! মা বলতে থাকলো, শহর ছেড়ে তো বেড়িয়ে গেলাম! ভালো রেষ্টুরেন্ট তো পাবো না! আমার খুব ক্ষিধে!
আমি বললাম, এই তো, আরেকটু গেলেই চৌদ্দগ্রাম। ঘন্টা দুয়েকও লাগবে না। দুর পাল্লার বাস গুলো ওখানেই থামে। অনেক অত্যাধুনিক রেষ্টরেন্ট আছে!
মা বললো, তাই ভালো।

ক্লান্তিতে মা ও ঘুমিয়ে পরেছিলো। চৌদ্দগ্রাম পেরিয়ে, তখন কাঁচপুর ব্রীজটাই অতিক্রম করছিলাম। মা হঠাৎই ঘুম থেকে উঠে বললো, কিরে, তোর চৌদ্দগ্রাম কি এখনো আসেনি?
আমি বললাম, স্যরি মা! চৌদ্দগ্রাম তো অনেক আগেই পেরিয়ে এসেছি। তুমি ঘুমিয়েছিলে, তাই ডাকিনি!
মা বিস্মিত গলাতেই বললো, তো? এখন?
আমি বললাম, আর কিছুদূর পরই তো ঢাকা! ঢাকাতে গেলে অনেক ভালো রেষ্টুরেন্টই পাওয়া যাবে।
মা চোখ কপালে তুলেই বললো, তখন তো সকালই হয়ে যাবে! রাতে না খেয়ে থাকবো নাকি?
আমি বললাম, কিচ্ছু হবে না মা! এক রাত না খেয়ে থাকলে কিচ্ছু হয় না!
মা বললো, কি জানি বাবা! আমার মাথা কিন্তু ঘুরাচ্ছে!
এই বলে মা আবারো চোখ বন্ধ করলো।

আমি ঢিমে তেতালা গতিতেই গাড়ী চালাতে থাকলাম। চিটাগং রোড পেরিয়ে, শনির আখড়া, বিশাল যানজট! মায়ের ঘুমটা আবারো ভাঙলো। চারিদিক নজর বুলিয়ে বললো, এ কি! এই জট ছাড়বে কখন? একটু গাড়ী সাইড কর না! আশে পাশে যাই থাকে, কিছু কিনে আন না! ক্ষুধায় তো আমার জান গেলো!
আমি বললাম, মা, আশে পাশে রেষ্ট্যুরেন্ট গুলোর দিকে একবার তাঁকিয়ে দেখো! কি বিশ্রী পরিবেশ! ওসব তোমার মুখে রোচবে না।

যাত্রাবাড়ীর তোরণে ঢুকতেই ভোর ছটা বাঁজলো। ঢাকা শহরের বুকেই গাড়ী চালাতে থাকলাম খানিকটা স্বাধীন ভাবেই। মা জানালার বাইরে চোখ রেখে, অশান্তভাবেই একটা রেষ্ট্যুরেন্ট খোঁজছিলো। ছোট্ট একটা চায়ের দোকানে, পরটা ভাজতে দেখে চেঁচিয়েই বললো, ওখানে থামা না! কি মচমচে পরটা মনে হচ্ছে। দুটু কিনে আন না!
আমি বললাম, ছি মা, বলো কি? চারিদিক থেকে ধূলা এসে পরছে! ওসব খেলে পেট খারাপ করবে! আরেকটু এগুলে, ভালো রেষ্টুরেন্টই পাওয়া যাবে!
মা আবারো ক্লান্ত চোখ দুটি বুজে বললো, কি জানি? পেলেই ভালো।

ঢাকা শহরে আগে কখনো আসিনি। নাম শুনেছিলাম অনেক। শহরে ঢুকে চট্টগ্রাম শহরের তুলনায় অন্যরকমই মনে হলো। অলি গলিও বেশী। মালীবাগের পরিত্যক্ত বাড়ীটাই খোঁজছিলাম। যার ঠিকানা সেই ব্যাবসায়ী গোছের লোকটি থেকেই পেয়েছিলাম। বাড়ীটা কিনেও নাকি মালিকানা পাচ্ছিলোনা, এলাকার চাঁদাবাজদের জন্যে। বলেছিলো, যদি কখনো সুযোগ হয়, বাড়ীটা যেনো দখলে আনি। কেনো যেনো মাকে নিয়েই সেই বাড়ীটাতে যাবারই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম মনে মনে। 

বার বার মালিবাগ রেলক্রশিং ফিরে এসে, এ গলি, ও গলি দিয়ে ঢুকেও, বাড়ীটার সন্ধান মিল ছিলো না। মা বিরক্ত হয়েই বললো, কি খোঁজছিস? রাস্তার দু পাশে এত সব রেষ্ট্যুরেন্ট! একটাও তোর মনে ধরছে না?
আমি বললাম, না মানে, একটা বাড়ী খোঁজছি!
মা অবাক হয়েই বললো, বাড়ী খোঁজছিস! পরিচিত কেউ?
আমি শুধু শব্দ করলাম, হুম!

মালিবাগ রেল ক্রশিং নয়, আরেকটু ভেতরে ঢুকে যে গলিটা, সেই গলিতে ঢুকে কিছুদূর যেতেই বাড়ীটার খোঁজ পেলাম। পুরনো বাড়ী বলেই হয়তো, নম্বরের ধারাবাহিকতায় গোলমাল আছে। খাঁ খাঁ করে, নির্জন একটা বাড়ী। তখন বেলা দশটারও বেশী!
খুব সাহস করেই বাড়ীর সামনে গাড়ী থামালাম। 

অনেকেই আমাদের দিকে তাঁকিয়ে থাকলো, শকুনী চোখ মেলেই। চাঁদাবাজরা কিনা জানিনা। যা কপালে থাকে তাই হবে। আমি মায়ের লাগেজ আর আমার হ্যণ্ডব্যাগটা নিয়ে, মায়ের হাত ধরেই বাড়ীটার ভেতর ঢুকলাম। ভেতরে ঢুকে আপাততঃ, ভেতর থেকে দরজাটা বন্ধ করে দিলাম।
মা অবাক হয়েই বললো, কিরে, কার বাড়ী? কেউ থাকে না?
আমি কিছু বললাম না। বাড়ীটার ভেতরে ঘর, ও ঘর ঘুরে ফিরেই দেখতে থাকলাম। 

মা ধপাস করেই ময়লা জমা মেঝের উপর বসে বললো, ক্ষুধায় তো যান গেলো! এখানে কোথায় নিয়ে এলি?
আমি আমার হ্যাণ্ডব্যাগটাই খুলতে থাকলাম। এক প্যাকেট পারুটি। মাকে দেখিয়ে বললাম, আমিও তো কাল দুপুর থেকে কিছু খাইনি। তোমার যদি ক্ষুধা লাগে, তাহলে তো আমারও লাগার কথা!
আমার হাতে পারুটির প্যাকেটটা দেখে, মা খুব উজ্জল চোখেই বললো, তোর সাথে পারুটি ছিলো, আগে বলিসনি কেন? তাড়াতাড়ি দে!
আমি বললাম, আরেকটু অপেক্ষা করো মা! আরো আছে!
মা অবাক হয়েই বললো, আর কি আছে?

আমি অতঃপর, হ্যাণ্ডব্যাগ থেকে আরো একটা কাগজের প্যাকেট বেড় করলাম। এক ব্যাবসায়ীর হাত ধরেই হংকং থেকে কিনিয়ে আনা সেক্সী কস্টিউম। যা সাধারন সী থ্রো কষ্টিউম! পরলেও যা, না পরলেও তা! তারপরও বিদেশে নাকি অধিকাংশ সেক্সী মেয়েরা এমন পোষাকও পরে। আমি এক হাতে পারুটি আর অন্য হাতে সেক্সী কষ্টিউমটা নিয়ে বললাম, কোনটা তোমার পছন্দ মা?
মা রাগ করেই বললো, তুই কি আমার সাথে ফাজলামী করছিস?
আমি গম্ভীর হয়েই বললাম, না মা! মোটেও না! মানুষ ক্ষুধার কষ্টটাকেই বড় মনে করে। তুমি তো যৌবন জ্বালায় ভুগছো! তোমার পেটের ক্ষুধা লাগে বলে মনে হয় না!
মা আমার হাত থেকে সেক্সী কষ্টিউমটাই কেঁড়ে নিয়ে হুঁ হুঁ করেই কাঁদতে থাকলো!

মাকে কখনো কাঁদতে দেখিনি। আমি কাঁদতে চাইলেও, সব সময় বারণ করতো এই বলে, কাঁদবিনা, আমার সামনে একদম কাঁদবিনা। কাঁদতে মন চাইলে নাক টিপে ধর! দেখবি কান্না পাবে না। মায়ের সাথে থেকে থেকে, আমার চোখও শুকিয়ে গিয়েছিলো। কোন কিছুতেই কখনোই চোখের জল পরে না। মায়ের চোখে জল দেখে, আমি অবাক হয়েই বললাম, মা, তুমি কাঁদছো?

মা তাড়াহুড়া করেই চোখের জল মুছে বললো, নারে পথিক, কষ্টে কাঁদছিনা! কাঁদছি খুশীতে! জানিস, ছোটকাল থেকেই বাবা মা এর কাছ থেকে অনেক উপহার পেয়েছি! তারপরও খুব ইচ্ছে হতো, বাবা মায়ের বাইরেও যদি কেউ আমাকে কোন কিছু উপহার করতো! আমার ক্ষুধা নেই! কি এটা দেখি?
এই বলে মা, কালো নাইলনের নেটের মতো পোষাকটা নিজের চোখের সামনেই মেলে ধরলো। 

মা আনন্দে খিল খিল করেই হাসতে হাসতে বলতে থাকলো, ওমা, কি এটা? কোথায় পেলি?
আমি পারুটির প্যাকেটটা খুলে, এক টুকরো পারুটি মুখে দিয়ে বললাম, তোমার পছন্দ হয়েছে?
মা বললো, মেয়েদের জন্যে, পেটের ক্ষুধার চাইতে, মনের ক্ষুধাটাই বেশী! আর উপহার এমনই একটা ব্যাপার, কি উপহার সেটা বড় কথা নয়, কে উপহার করলো, সেটাই হলো বড় কথা!
এই বলে মা পুরুপুরি ন্যাংটু হয়েই, কালো নেটের সেই স্কীন টাইট সী থ্রো পোষাকটা পরে আমার কোনাকোনিই বসলো। তারপর বললো, এটা আবার কেমন পোষাক? সবই তো দেখা যাচ্ছে!

আমি বললাম, তুমি তো দেখাতেই পছন্দ করো! দোষ কি?
মা লাজুক চেহারা করে, ভ্যাংচি কেটেই বললো, তোকে বলেছে!
আমি বললাম, মা, এখানে বেশীক্ষণ থাকা যাবে না। তোমার তো মনেই ক্ষুধা! পেটে তো আর ক্ষুধা লাগে না! আর মাত্র এক পিস পারুটি! খেয়ে ফেলি!
মা আমার উপর ঝাপিয়ে পরে বললো, স্বার্থপর! বলেছি নাকি, আমার ক্ষুধা নেই! ক্ষুধায় পেট চোঁ চোঁ করছে!
এই বলে, মা আমার হাত থেকে পারুটির পিসটা কেড়ে নিয়ে গাপুস গুপুস করেই কামড়াতে থাকলো। 

পারুটিটা খেতে খেতেই বললো, আই লাভ ইউ পথিক! তুই আমার মনের ক্ষুধাটা যেমনি মিটিয়ে দিলি, পেটের ক্ষুধাটাও মিটিয়ে দিলি।
বলছিলি, এখানে বেশীক্ষণ থাকা যাবে না। কেনো বল তো? এমন একটা খোলা বাড়ীতে তো আমার ভালোই লাগছে!
আমি বললাম, কিছুক্ষণ বিশ্রামের জন্যে খুব ভালো জায়গা! এই বাড়ীর মালিকানা নিয়ে অনেক সমস্যা আছে। ভাবসাবটাই দেখতে এসেছিলাম। চাঁদাবাজরা আসার আগেই কেটে পরতে হবে!

মা আমাকে জড়িয়ে ধরে, আহলাদী গলাতেই বললো, আসুক চাঁদাবাজরা! তুই তোর বলিষ্ঠ হাতেই আমাকে রক্ষা করিস!
Like Reply


Messages In This Thread
RE: একজন মা আর একটি ছেলে (সংগৃহীত) Part: 01 - by Johnny Da - 14-11-2019, 09:34 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)