Thread Rating:
  • 8 Vote(s) - 3.13 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance তুমি এলে তাই
#5
পার্ট - ৩

মৌ ফিরে গেছে নিজের ঘরে, রাত প্রায় দুটো বাজে, ঘুম আসছে না… মনের ভেতরে ভীষন ভালোলাগার একটা অনুভুতি… নিজের অজান্তে কবে যে ওর জন্য মনের ভেতরে একটা দুর্বলতা এসে গেছে বুঝতে পারেনি…এত দিনে হয়তো সত্যিকারের ভালোবাসা এলো জীবনে…ভালোলাগার সাথে সাথে কোথাও যেন একটা কিন্তুর ছোঁয়া…। বর্ষা চলে যাবার কথা থাকলেও…যাই যাই করেও মাঝে মাঝে থমকে গিয়ে ফিরে আসছে কয়েক দিন ধরে…খোলা জানলার পাশে দাঁড়িয়ে নদীর দিকে তাকিয়ে কিছু হয়তো ভাবছিল… এক ঝলক ঠান্ডা হাওয়া এসে ঘরের ভেতরে হুটোপুটি করে গেল… দুরে কোথাও বৃষ্টি হয়ে গেছে… জানলার পাশে হেলান দিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে অডিও সিস্টেমের দিকে চোখ পড়ল… S T A N D B Y… লেখাটা জ্বলছে নিভছে। মৌ হয়তো আজ গান শোনার পর বন্ধ করতে ভুলে গেছে, বন্ধ করে দি ভেবে এগিয়ে গিয়েও কি মনে করে রিমোটের পাওয়ার বাটন টা চাপলো… ডিসপ্লের উপর R E S U M E লেখাটা ভেসে উঠল…নিস্তব্ধ রাত… ঘরের মধ্যে 5:1 সিস্টেমে হাল্কা হলেও গমগমে আওয়াজ ভেসে এলো……

সখি ভাবনা কাহারে বলে… সখি যাতনা কাহারে বলে?
তোমরা যে বলো দিবস রজনী ভালোবাসা…ভালোবাসা
সখি ভালোবাসা কারে কয়? সেকি কেবলই যাতনাময়?
সে কি কেবলই চোখেরও জল?…সে কি কেবলই দুখেরও সাস?
লোকে তবে করে… কি সুখেরি তরে… এমন দুখেরও আস
আমার চোখে তো… সকলই শোভোন…সকলই নবীন… সকলই বিমল
সুনীল আকাশ, শ্যামল কানন…বিষদ জ্যোছনা কুসুম কোমল… সকলই আমারই মতো…
তারা কেবলই হাসে, কেবলই গায়, হাসিয়া, খেলিয়া মরিতে চায়
না জানে বেদন, না জানে রোদন, না জানে সাধের যাতনা যতন
ফুল সে হাসিতে হাসিতে ঝরে, জ্যোছনা হাসিয়া মিলায়ে যায়,
হাসিতে হাসিতে আলোক সাগরে আকাশের ও তারা তেয়াগে তায়…।
আমার মতো সুখি কে আছে? আয় সখি আয় আমার কাছে… সুখী হৃদয়ের সুখের গান… শুনিয়া তোদের জুড়াবে প্রান
প্রতিদিন যদি কান্দিবি কেবল
একদিন নয় হাসিবি তোরা
একদিন নয় বিষাদ ভুলিয়া
সকলে মিলিয়া গাহিবো মোরা…
ভাবনা কাহারে বলে? সখি যাতনা কাহারে বলে?
তোমরা যে বল দিবস রজনী ভালোবাসা…ভালোবাসা, সখি ভালোবাসা কারে কয়?... সেকি কেবলই যাতনাময়?

বারবার শুনেও যেন মন ভরছিলনা…ঘুরিয়ে ফিরিয়ে কতবার যে গানটা শুনলো নিজেই জানে না… বুকের ভেতরে ব্যাথা ভরা আনন্দ নিয়ে কোল বালিশটা বুকে জড়িয়ে ধরে কখন ঘুমিয়ে পড়েছে বুঝতেই পারেনি।

পরের দিনটা ছিল রবিবার, অনেক রাতে শোবার জন্য স্বাভাবিক ভাবেই অরিত্র ঘুম থেকে উঠতে পারেনি সকাল সকাল, রবিবার সকালটা সাধারনত ওর দেরীই হয় উঠতে আর শুক্লাদির হাত থেকে চায়ের কাপ টা নিয়ে দিন শুরু করে। আজ, কাঁধের উপরে অন্য কারুর হাতের ছোঁয়া, ওকে ঘুম থেকে ওঠাবার চেষ্টা করছে…আস্তে আস্তে চোখ মেলে দেখল…খুব প্রিয় একজনের মিষ্টি হাসি মাখা মুখ…যার কথা ভাবতে ভাবতে কাল রাতে স্বপ্নের দেশে চলে গিয়েছিল…দু চোখে অদ্ভুত এক ভালোলাগার আবেশ নিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে চায়ের কাপ হাতে নিয়ে। বিছানায় উঠে বসে ওর হাত থেকে চায়ের কাপ টা নিয়ে জিজ্ঞেস করল…তুমি খেয়েছো?
মাথা নেড়ে জানালো…না…
খাবে না?
উত্তর টা… হ্যাঁ…বোঝার পর ওর আর বুঝতে অসুবিধা হোলো না কেন ও আগে খায়নি…তোমার চা নিয়ে এসো…এক সাথে খাবো আজ…বলাতে ফিরে যাচ্ছিল…শুক্লাদি চায়ের কাপ টা নিয়ে ঘরে ঢুকে বলল…থাক আর যেতে হবে না…এই নে। অরিত্রর দিকে তাকিয়ে বলল…এবার থেকে আর দেরী করে উঠলে হবে না…তুই না ওঠা পর্যন্ত মেয়েটা কিছুতেই চা খেলো না আজ।

শুক্লাদির কথা টা শুনে ওর দিকে তাকালে লাজুক হাসি মুখে নিয়ে মুখ নামিয়ে নিল, যেন বলতে চাইছে…ইস… কি লজ্জা…সবাই বুঝে গেছে।

চা খেতে খেতে দুজনে দুজনের দিকে তাকাচ্ছিল অনেক টা চুরি করে, মাঝে মাঝে কেউ অন্যের কাছে ধরা পড়ে গিয়ে লাজুক হাসি হেসে বোঝাবার চেষ্টা করছিল শুধু আমি নই…তুমিও আমার দিকে তাকাচ্ছো চুরি করে। ওর দিকে তাকিয়ে মনে পড়ল…কয়েক দিন আগে দিদান বলেছিল…ছুটির দিন দেখে ওকে সাথে করে নিয়ে গিয়ে কিছু ভালো জামাকাপড় নিয়ে আসার ব্যাপারে…প্রথম দিনের তাড়াহুড়ো করে নিয়ে আসা সেই তিনটে আর ওর নিজের ওই দিনের পরে থাকা একটা…মোট চারটে সেট সালোয়ার কামিজ ছাড়া আর কিছু নেই…ওগুলোই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পরে যেতে হচ্ছে। আজ বিকেলে তোমাকে নিয়ে বেরোবো বলাতে চোখ মুখ উজ্বল হয়েউঠল…জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে অরিত্র হাসি মুখে বলল…উঁ হুঁ…এখন বলবো না…কোথায় যাবো…

মুখের ভাব পালটে যেন বলল…প্লিজ…বলোনা…

বলতেই হবে? জিজ্ঞেস করাতে হাসি মুখে ঘাড় নেড়ে হ্যাঁ বলল।

হুমম…আজ আমি তোমাকে নিয়ে কোথাও একটা যাবো…

নিজের দিকে আর অরিত্রর দিকেআঙ্গুল দেখিয়ে বোঝালো…শুধু তুমি আর আমি?

হ্যাঁ বলাতে…মিষ্টি হাসিতে মুখ ভরিয়ে নিয়ে ওর দিকে তাকিয়ে যেন বলতে চাইলো…আমার ভীষন আনন্দ হচ্ছে…আজ আমি তোমার সাথে একা একা বেড়াতে যাবো।

দুটো নাগাদ মৌকে নিয়ে বেরোল,ব্যারাকপুরে গিয়ে কেনাকাটা করে ইচ্ছে আছে গান্ধীঘাটে কিছুটা সময় কাটিয়ে সন্ধের দিকে বাড়ী ফেরার। রবিবারের দুপুর…রাস্তা বেশ ফাঁকা…তবুও বেশ ধীরে সুস্থে ড্রাইভ করতে করতে এগোচ্ছিল…বাইরের হাওয়া খোলা জানলার ভেতরে দিয়ে ভেতরে এসে ওর রেশম কোমল চুলের সাথে দুষ্টুমি করে এলোমেলো করে দিয়ে যাচ্ছে…অবাধ্য চুল চোখ মুখের উপর থেকে সরাতে সরাতে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে… সারা মুখে ভীষন খুশীর ছোঁয়া…ভাবখানা যেন…শুধু তুমি আর আমি…আর কেউ নেই কোথাও… মাঝে মাঝে ওর দিকে সকালের মতো চুরি করে তাকাতে গিয়ে ধরা পড়ে গেলে… চোখ পাকিয়ে যেন বলতে চাইছে…এই…এখন একদম আমার দিকে তাকাবে না… মন দিয়ে গাড়ী চালাও…কিছু হয়ে গেলে?

একটা মোটামুটি বড় দোকান দেখে ভেতরে গিয়ে দেখে যতটা খালি হবে ভেবেছিল এই দুপুরে ততটা নেই, বোধ হয় পূজো আর ঈদের কেনাকাটা শুরু হয়ে গেছে। দোকান টা অনেক টা শপিং মলের মতো…এক এক জায়গায় এক একরকমের জামাকাপড় সাজানো আছে…নিজেই পছন্দ করে নেওয়া যাবে। মেয়েদের জামাকাপড়ের জায়গায় যেন আরো বেশী ভীড়, মৌ দোকানে ঢোকার আগে থেকেই ওর হাত টা শক্ত করে চেপে ধরেছিল…ভাবখানা যেন হাত ছেড়ে দিলেই ও হারিয়ে যেতে পারে। ওকে চুপ করে থাকতে দেখে অরিত্র বললো…আমি কিন্তু মেয়েদের জামাকাপড়ের কিছুই বুঝি না…তোমাকেই দেখে নিতে হবে। ওর দিকে তাকিয়ে যেন বলতে চাইলো…তোমার যেটা ভালো লাগবে, সেটাই আমি নেবো। অরিত্র মনে মনে ভাবলো…জানি না কেন তুমি আমার উপরে এত নির্ভর করতে চাইছো…কেন এত কাছে আসতে চাইছো… এই কয়েকটা দিনের পরিচয়ে…জানিনা তুমি কে…তবুও তোমার কাছে আসতে মন চাইছে কিন্তু কি করে বোঝাই যে আমি ভীষন দুর্বল হয়ে পড়লেও এগোতে পারছি না… তোমার স্মৃতি ফিরে এলে তুমি কি আমাকে আর মনে রাখতে পারবে? বুকের ভেতরে নিজের কষ্ট চেপে রেখে হাসি মুখে বলল…আমাকে দেখে দিতে বলছো…তাই তো?

হাসি মুখে ঘাড় কাত করে জানালো…হ্যাঁ।

দুটো সালোয়ার সেট পছন্দ করার পর আর নিতে চাইছে না দেখে অনেক বোঝাতে হল যে…ইচ্ছে হলেই তো আর আসা যাবে না…তারপর পূজো আসছে…ওর কিছু ভালো জামাকাপড় লাগবেই…না হলে সাথে কি করে বেরোবে… বলাতে রাজী হল। বেশ কয়েক সেট দামী আর সব সময় বাড়ীতে পরার মতো জামা কাপড় নেওয়ার পর মনে পড়ল…আরে…ওর ভেতরে পরার যে কিছু নেওয়া হয়নি। জীবনে কোনোদিন ওসব কিনতে হয়নি…কি করা যায় ভাবতে ভাবতে ওকে নিয়ে এদিক ওদিক দেখে পেয়ে গেল কোথায় আছে। ভালোই হয়েছে সেলসগার্ল ও আছে…মৌকে নিয়ে এগিয়ে যেতে মেয়েটা জিজ্ঞেস করল… ম্যাডাম…কি লাগবে। অরিত্র একটু অস্বস্তির সাথে মেয়েটাকে বলল…ও কথা বলতে পারে না…আমিও ঠিক বলতে পারবো না কি সাইজ লাগবে…আপনি যদি একটু দেখে কয়েকটা ভালো দেখে ওর কি লাগবে দিয়ে দিতে পারেন খুব ভালো হয়। মেয়েটা ওর কথা শুনে যেন কিছুটা অবাক হয়ে গেল… ঈশ্বর কেন এত নিষ্টুর… এত সুন্দর …এত মিষ্টি…অথচ কথা বলতে পারে না… নিজেকে সামলে নিল… সেলসগার্লদের কে যে মুখে হাসি রাখতে হবেই…তা সে মনে যতই কষ্ট থাকুক…ওকে আস্বস্ত করে বলল…ঠিক আছে…আপনাকে চিন্তা করতে হবে না…আপনি শুধু বলে দিন কটা করে দেবো।মৌ লাজুক মুখে পাশে দাঁড়িয়ে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে রেখে বোঝাবার চেষ্টা করছিল…জানি আমার লাগবে কিন্তু তোমার সামনে কি করে নি বলোতো?

অরিত্র আস্তে করে ওকে বলল…তুমি দেখে নাও…আমি কাছেই আছি…তোমার হয়ে গেলে চলে আসবো।

মাথা নেড়ে হ্যাঁ বললেও হাত ছাড়ছিল না দেখে অরিত্র হাসি মুখে বলল…হাত না ছাড়লে কি করে যাবো?

জামা কাপড়ের দোকান থেকে বেরিয়ে মৌ এর জন্য কিছু কসমেটিকস, ডিজাইনার অর্নামেন্টসআর জুতো কিনতে কিনতে প্রায় সাড়ে পাঁচটা বেজে গেল। গান্ধীঘাটে গিয়ে কিছুটা সময় কাটিয়ে বাড়ী ফেরার পর ওর যেন আর দেরী সহ্য হচ্ছিল না দিদান আর শুক্লাদিকে কি কি কেনা হয়েছে দেখাতে। দিদান দের সব জিনিষ গুলোই খুব পছন্দ হয়েছে বলাতে ও ইশারা করে দেখালো যে ও নয়,সব কিছুই অরিত্র পছন্দ করেছে প্রথমে তারপর ও দেখেছে।

কয়েক দিন পর… অরিত্র অফিসের টেবিলে মোবাইল টা ভুল করে ফেলে রেখে দিয়ে লাঞ্চে চলে গিয়েছিল, ফিরে এসে দেখে দুটো মিসড কল। রুপসা মানে ওর জ়েঠুতুতো বোন বম্বে থেকে ফোন করেছিল। ছিঃ…আমি যে কি…নিজেই বুঝতে পারি না…কতদিন হয়ে গেছে একটা ফোনও করিনি…অনেক আগেই করা উচিত ছিল আমার…ভেবে কল ব্যাক করল। রুপসা রিং হতে না হতেই রিসিভ করে ওর স্বভাব মতো বকতে শুরু করল একনাগাড়ে…তোর ব্যাপারটা কিরে দাদাভাই…প্রেম ট্রেম করছিস নাকি আজকাল…কতদিন হয়ে গেল ফোন করিস না…ভুলে গেলি নাকি আমাদের…তোর অফিস কেমন চলছে… তুই কেমন আছিস…দাদু দিদান আর শুক্লা দি কেমন আছে…পুজোয় কি কলকাতায় থাকছিস নাকি কোথাও বেড়াতে যাচ্ছিস?...বুঝলি দাদাভাই…মায়ের সাথে আজ সকালে খুব ঝগড়া করেছি…ভালো লাগছিল না…ভাবলাম…দাদাভাই এর সাথে একটু কথা বলি…মনটা হালকা হবে…কিছু লাভ হোলো না…রিং হয়ে গেল…তুই ধরলিই না…

রুপসা যেই একবার থেমেছে অমনি সুযোগ পেয়ে অরিত্র বলল…তুই এবারে থামবি… নাকি ফোন টা কেটে দেবো? মিটিং আছে…আমার এখন মাথা খারাপ করার একেবারে ইচ্ছে নেই।

প্লি…জ দাদাভাই…কাটিস না…বিশ্বাস কর… তোর কথা খুব মনে পড়ছে আজ। প্লিজ আমার সাথে একটু কথা বল। মন টা খুব খারাপ রে…

আচ্ছা…ঠিক আছে…কাটছি না…আমি না হয় ব্যাস্ত ছিলাম কিছুদিন…ফোন করিনি…তুই ও তো করতে পারতিস…

দাদাভাই…কি বললি? তুই ব্যাস্ত ছিলিস? কি নিয়ে রে?

পরে শুনিস…বল…তোরা কেমন আছিস…

এই দাদাভাই…প্লিজ বল না…তুই তো কিছু লুকোস না আমার কাছে…কি এমন হয়েছে পরে বলতে চাইছিস?

মোটামুটি ছোটো করে মৌ এর ব্যাপারটা বলার পর কিছুক্ষন চুপ করে থেকে হৈ হৈ করে উঠল রুপসা…বলছিস কি রে দাদাভাই…এতবড় খবর টা তুই বেমালুম চেপে গেছিস আমার কাছে…তুই তো হিন্দি সিনেমা কে হার মানিয়ে দিয়েছিস রে একেবারে…তো…এবারে কি? I love u বলেছিস? নাকি…একেবারে সানাই বাজার পরে বলবি?

ধুস…তুই ও যেমন…সে রকম কিছু নয়…

এই দাদাভাই…কেমন দেখতে রে…আমার থেকেও ভালো নিশ্চয়?

কি করে বলবো…তোর থেকে ভালো কিনা…তুই ও কি কম কিছু নাকি? তবে ভালোই…

হুম…তুই যখন ভালো বলেছিস…তাহলে তো একঘর হবেই…

এই রুপসা…তুই তো ছোটো থেকে বম্বে তে বড় হয়েছিস…এসব কোলকাতাইয়া ভাষা কোত্থেকে শিখলি রে?

ওঃ দাদাভাই…তুই না কিছুই মনে রাখতে পারিস না…রায় আঙ্কল কে ভুলে গেছিস? খুব মজার মজার কথা বলে…

ও আচ্ছা…হ্যাঁ রে…একেবারে ভুলে গিয়েছিলাম। যাক গে… তোর কি খবর বল…

আমার আবার কি খবর থাকবে…চলছে…মাঝে মাঝে মায়ের সাথে লেগে যাচ্ছে…দুম দাম…ঢিস ঢাস…

কেন রে…কি হয়েছে?

আর বলিস না…মায়ের কোন বন্ধু নাকি দিল্লীর কে একটা ছেলের খোঁজ় দিয়েছে…very bright… passed fm IIM…Delhi…now in London…আমার সাথে বিয়ে দেবার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে…তুই বল দাদাভাই…আমি এখন বিয়ে করে কি করবো…সবে কেরিয়ার শুরু করতে যাচ্ছি…

হুম্…জেঠু কি বলছে?

বাবার কথা বলিস না…মায়ের কাছে মায়ের মতো…আর আমাকে বলছে…তুই তোর মতো থাক…ধুস আমার এক্কেবারে ভালো লাগছে না…ভাবছি…কদিন তোদের ওখান থেকে ঘুরে আসি…কতদিন দিদানের হাতের রান্না খাইনি…ছোড়দি ও বলছিল একবার যেতে…

খুব ভালো হবে রে…চলে আয়…

আমি তো না হয় যখন খুশী চলে যাবো…তুই ছুটি পাবি তো?

সে আমি ম্যানেজ করে নেবো…অনেকগুলো পিএল জমে আছে…অসুবিধা হবে না…
ঠিক আছে…বাবাকে ম্যানেজ করে তোকে জানিয়ে দেবো…খুব তাড়াতাড়িই যাবো…আমার কিন্তু খুব দেখতে ইচ্ছে করছে রে…

কাকে আবার দেখতে ইচ্ছে করছে?
ধ্যত তেরি কি…তুই একটা বুদ্ধির ঢেঁকি…কাকে আবার দেখতে ইচ্ছে করবে…তোর…ওকে…মানে আমার পেয়ারী পেয়ারী বৌদি কে…বুঝলি?
এই রুপসা…ভালো হচ্ছে না কিন্তু…আমার ও মানে কি রে? কি বললাম…আর কি মানে করে বসে আছিস…

আমি যাই একবার…তারপর দেখছি…তোর ও… নাকি অন্য কিছু।

ঠিক আছে…তুই আয়…গাট্টা না খেলে তুই বকতেই থাকবি…পাগলী কোথাকার। এই…রুপসা…শোন না…বড়দি কেমন আছে রে?

দিদির কথা আর বলিস না…কাজকাম কিসসু নাই…জাম্বুর পয়সায় এখান ওখান ঘুরছে…খাচ্ছে… আর দিনে দিনে ফুলছে।

তা ভালো…বাচ্চা টা কেমন হয়েছে…খুব দুষ্টু…তাই না?

দুষ্টু বলে দুষ্টূ…মায়ের কথায়…এক্কেবারে নাকি তোর ছোটোবেলার কার্বন কপি…এই দাদাভাই…এখন রাখছি রে…মনে হয় মা ফিরে এসেছে…হাসিখুশী দেখলেই আবার বিয়ের কথা শুরু করবে…চুপচাপ মুখ গোমড়া করে শুয়ে থাকলে এখন আর জ্বালাবে না…রাতে ফোন করবো…ধরিস কিন্তু…টা টা…
Like Reply


Messages In This Thread
তুমি এলে তাই - by sorbobhuk - 21-01-2019, 11:09 AM
RE: তুমি এলে তাই পার্ট ১ - by sorbobhuk - 21-01-2019, 12:19 PM
RE: তুমি এলে তাই - by arn43 - 12-10-2020, 09:31 PM



Users browsing this thread: 4 Guest(s)