Thread Rating:
  • 8 Vote(s) - 3.13 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance তুমি এলে তাই
#4
পার্ট -২

দাদু একটু ভেবে বলল…এখন থাক,আগে সুস্থ হোক, নাম ঠিকানা নিয়ে তারপর যা করার করা যাবে। এই অবস্থায় পুলিশে টানা হেঁচড়া করবে…আমার ঠিক ভালো লাগছে না… আমি না হয় একবার তোর বিশ্বাস কাকুর সাথে কথা বলে রাখবো।

বিস্বাস কাকু আবার কে জিজ্ঞেস করাতে দাদু বলল… আরে তুই ভুলে গেলি…আমার বন্ধু সজল বিশ্বাসের ছেলে… বেঙ্গল পুলিশে কাজ করে, এখন কুচবিহারের কোথাও একটা পোস্টিং…খুব শিগরিই নাকি বিধাননগরে ট্রান্সফার হয়ে চলে আসছে। তোর পাসপোর্ট করানোর সময় অনেক হেল্প করেছিল।

ও আচ্ছা…হ্যাঁ…আমি আসলে খেয়াল করিনি…

তুই আজ অফিস যাবি নাকি?

নাঃ…ফোন করে জানিয়ে দিচ্ছি…যাবো না…

সেই ভালো…মেয়েটার যা অবস্থা…কিছু হলে…আমরা বুড়োবুড়ি সামলাতে পারবো না…

মনে হচ্ছে…আর বাড়াবাড়ি হবেনা…আর ডাক্তার দাদু তো বললোই ভয়ের কিছু নেই।

তা অবশ্য বলেছে… এক কাজ কর দাদুভাই…কিছু খেয়ে একবার গাড়ীটা নিয়ে ডাক্তার কে নিয়ে চলে আয়।

অরিত্র খেয়ে উঠে বেরোতে যাবে এমন সময় নারায়ন দা ডাক্তার বাবুকে নিয়ে এসে হাজির। শুধু নিজে আসেনি, সাথে করে আবার কিছু টাটকা ফল ও নিয়ে এসেছে। দিদান বকাবকি করাতে বলল…আরে নিয়ে এসেছি তো কি হয়েছে, মেয়েটাকে দেখে কেমন যেন মায়া পড়ে গেছে। আমার নাতনি টা তো প্রায় ওর ই বয়সী।

দুপুরের একটু আগে মেয়েটার ঘুম ভাঙ্গল… নড়াচড়া করার ক্ষমতা নেই… ভীষন দূর্বল…কিছুক্ষন শুন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকার পর আর না পেরে চোখ বুজে ফেলল। দিদান আর শুক্লাদি দুজনে মিলে হালকা গরম জল দিয়ে হাতমুখ স্পঞ্জ করে দিয়ে কিছুটা গরম সুপ খাইয়ে ওষুধ খাওয়ানোর পর আবার ঘুমিয়ে পড়েছে। পরেরদিন সকাল পর্যন্ত ওইভাবে মাঝে মাঝে চোখ মেলে তাকানো আর তারপরেই আবার ঘুমিয়ে পড়া চলল।দুপুরের পর থেকে মনে হচ্চিল যেন কিছুটা হলেও আগের থেকে ভালো… খুব সামান্য হলেও নড়াচড়া করতে পারছে… কিন্তু চোখের সেই শুন্য দৃষ্টির কোনো পরিবর্তন নেই।

পরের দিন বিকেল, মেয়েটি চোখ মেলে তাকালো… শরীরটা খুব ভারী লাগছে। বোঝার চেষ্টা করল… কোথায় আছে। কেমন যেন অচেনা লাগছে সবকিছু… কিছুই বুঝতে পারছে না… চিন্তা করতে গেলেই মাথার ভেতরে কেমন যেন একটা যন্ত্রনা শুরু হয়ে যাচ্ছে। চুপচাপ শুয়ে থাকলে বরং কষ্ট হচ্ছে না…মনে হল কেউ এসে যেন আদর মাখানো গলায় বলছে… এই তো ঘুম ভেঙ্গেছে…কেমন আছো? এখন একটু ভালো লাগছে?

মাথাটা আস্তে আস্তে কাত করে দেখলো… অচেনা কেউ এক মহিলা… সারা মুখে স্নেহ মাখানো…ওর দিকে তাকিয়ে আছে। জিজ্ঞেস করতে গেল…আমি কোথায়? ঠোঁট দুটো হয়তো একটু নড়ে উঠল কিন্তু গলা দিয়ে কোনো আওয়াজ বেরোল না…আবার বলার চেষ্টা করলো… একই অবস্থা। ও যে চেষ্টা করছে কিছু বলার কিন্তু পারছে না… বুঝতে পেরে ওই মহিলা পাশে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করতে করতে বলল… আচ্ছা…ঠিক আছে…থাক এখন কথা বলতে হবে না… শরীরটা এখোনো দূর্বল… আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে। ওর দু চোখের কোন দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা করে জল বেরিয়ে আসতে শুরু করল… আমি কেন কথা বলতে পারছি না? আমি কোথায়? তুমি ই বা কে? আর তাকিয়ে থাকতে পারলো না…চোখ দুটো ভীষন ক্লান্তিতে বুজে এলো।

তারপর দিন সাতেক কেটে গেছে। মেয়েটা অনেক টাই সুস্থ হয়ে উঠেছে কিন্তু দুর্বলতা বেশ কিছুটা কমলেও পুরোপুরি কাটেনি,শুক্লা দি ওকে নিয়েই থাকে, স্নান করানো থেকে শুরু করে খাইয়ে দেওয়া সব কিছু নিজের হাতে সামলাচ্ছে। মুশকিল হয়েছে আজ পর্যন্ত একটা কথা বলেনি কিন্তু কিছু বললে বুঝতে পারে। প্রথম প্রথম নিজেকে খুব গুটিয়ে রেখেছিল কিন্তু আস্তে আস্তে অনেক টা স্বাভাবিক হয়ে উঠছে, দিদান আর শুক্লাদি কে খুব পছন্দ করে, মাঝে সাঝে অল্প হাসিও দেখা যাছে মুখে কিন্তু বেশির ভাগ সময় কেমন যেন একটা বিষন্ন ভাব…কিছু জিজ্ঞেস করলে ভাবলেষহীন মুখে তাকিয়ে থাকে… ডাক্তারদাদু বলেছেন…হয়তো খুব বড় কিছু শক পেয়ে কথা বন্ধ হয়ে গেছে…আবার বোবাও হতে পারে… আরো কিছুদিন না গেলে বোঝা যাবে না। অরিত্র দুবেলাই ওকে একবার করে দেখে যাওয়া ছাড়াও সারাদিনে অন্তত এক দুবার অফিস থেকে ফোন করে খোঁজ নেয় কেমন আছে।

আরো কয়েক টা দিন কেটে গেছে, এখন আর সেই দুর্বলতা নেই, মাঝে মাঝে ঘরের এদিক ওদিক ঘুরে ফিরে বেড়ায়…কিছু যেন একটা বোঝার চেষ্টা করে। গেস্টরুম থেকে ওকে সরিয়ে এখন দোতলায় অরিত্রর পাশের ঘরটায় রাখা হয়েছে যতটা সম্ভব পাড়া প্রতিবেশীর চোখের আড়াল করতে, সাথে শুক্লাদিকেও ওর সাথে উপরের ঘরে থাকতে হচ্ছে । দিদান ওকে নিজের অনেক দুর সম্পর্কের নাতনী বলে পরিচয় দিয়ে পাড়া প্রতিবেশির কৌতুহল এড়িয়ে গেছে।

একটা সমস্যা তো ছিলই কথা না বলা, তার সাথে এখন যোগ হয়েছে…মাঝে মাঝে রাত্রে কিছু একটা হয়, ঘুমোতে ঘুমোতে হঠাত ভয় পেয়ে ভীষন ছটপট করে। শুক্লাদি উঠে গিয়ে জড়িয়ে ধরে গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে অনেক কষ্টে ওকে স্বাভাবিক করার পর শুক্লাদি কে জড়ীয়ে ধরে আবার ঘুমিয়ে পড়ে, এক সপ্তাহের ভেতরে দিন তিনেক এরকম হওয়ার পর থেকে এখন শুক্লাদি ওর সাথেই শোয়। ডাক্তার দাদু এখন অনেক টাই নিশ্চিত যে মেয়েটার জীবনে কোনো একটা খারাপ কিছু ঘটেছিল বা ঘটতে যাচ্ছিল যার জেরে মানসিক ধাক্কায় এই অবস্থা।মাঝে একদিন একজন ডাক্তার দাদুর চেনা শোনা একজন কে নিয়ে আসা হয়েছিল যিনি ডিফ এন্ড ডাম্ব স্কুলের শিক্ষক। ইশারায় ওর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে কোনো লাভ হয়নি, মাথা নেড়ে বুঝিয়েছিল ও কিছুই বুঝতে পারছে না, তার মানে ও বোবা নয়, আগে নিশ্চয় কথা বলতে পারতো, যদি তাই হোতো তাহলে ইশারায় কথা বলার ব্যাপার টা জানা থাকতো। মোটামুটি আরো কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠলে কলকাতার নাম করা একজন নিউরো আর সাইক্রিয়াটিস্ট দেখানো হয়েছে। নানা রকম পরীক্ষা নিরিক্ষা করার পর ওনারা বলেছেন… দেখা যাক…এই ওষুধ গুলো খাওয়ান। কি হবে… না হবে… বলা মুশকিল। তবে দেখবেন কোনো রকম মানসিক চাপ যেন না পড়ে।

এর মধ্যে অবশ্য বিশ্বাস কাকুর সাহায্য নিয়ে লালবাজার আর ভবানী ভবনের মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে কোলকাতা বা কোলকাতার বাইরে কোনো থানায় হারিয়ে যাবার ডায়েরী করা হয়েছে কিনা কিন্তু কোন লাভ হয়নি। এই পরিস্থিতিতে খবরের কাগজে বা টিভি তে বিজ্ঞাপন দিয়ে ওর পরিচিত জনের খোঁজ করার চিন্তাও বাতিল করতে হয়েছে কারন যদি এটা হয় যে ওর ক্ষতি করার চেষ্টা করা হয়েছিল আর তার জন্য ই ও কোনোরকমে পালিয়ে এসেছে…যারা ওর খোঁজ পেলে আবার ক্ষতি করতে পারে। এখন ওর থেকে কিছু জানার আগে আর কিছু করা উচিত হবে না ঠিক করে এটাও চেষ্টা করা হয়েছিল ওকে দিয়ে যদি লিখিয়ে জানা যায় ও কে। সে চেষ্টা ও বিফলে গেছে, কিছুই মনে করতে পারে নি…উলটে মনে করার চেষ্টা করতে গিয়ে যে কষ্ট পাচ্ছে সেটা পরিস্কার বোঝা যাচ্ছিল। ডাক্তার বাবুরা কোনো রকম মানসিক চাপ দিতে বারন করেছিলেন বলে খুব বেশী চেষ্টা ও করা যাচ্ছিল না। বিশ্বাস কাকুর ভরসায় পুলিশে খবর দেবার ব্যাপার টা নিয়ে এই মূর্হুতে তাই আর ভাবা হচ্ছিল না। তেমন কিছু যদি প্রয়োজন হয় তাহলে বলা যাবে যা কিছু করা হয়েছে তা নিতান্তই মানবিকতার কারনে…এর মধ্যে কোনো খারাপ উদ্দেশ্য নেই।

এক সাথেথাকতে থাকতে কবে যে মেয়েটা ওদের বাড়ীরই একজন হয়ে গেছে বোঝা যায়নি। কোন নাম নেই তাইদিদান ওর নাম রাখতে চেয়েছিল অনামিকা, যদি কোনোদিন ওর নিজের নাম জানা যায় সেদিন না হয়ওই নামে ডাকা যাবে কিন্তু এখন তো কিছু একটা বলে ডাকতে হবে। দাদু রাজী হয়নি, এত মিষ্টিমেয়ের নাম মধুমিতা ছাড়া আর কিছু নাকি হওয়া উচিত নয়…দুজনের কেউ কারুর কথা শুনতে রাজীনয়…শেষে অরিত্র র কথায় মৌ নাম রাখতে দুজনেই রাজী হয়েছে…কেউ ই নাতির কথা ফেলতে পারেনি।এখন মৌ বলে ডাকলে ও সাড়া দেয়, হয়তো বুঝেছে ওটাই ওর নাম।
কোনো এক রবিবার দুপুরে খাওয়ার পর অরিত্র ওর ঘরে প্রিয় কতগুলো রবীন্দ্র সংগীত চালিয়ে দিয়ে একটা গল্পের বই পড়ছিল। কি মনে করে দরজার দিকে তাকিয়ে মনে হল পর্দার ওদিকে কেউ দাঁড়িয়ে আছে। কে হতে পারে? দিদান বা শুক্লাদি হলে তো বাইরে দাঁড়িয়ে থাকবে না আর ওদের তো এখন বিশ্রাম করার সময় ভেবে উঠে এসে দেখে মৌ চুপ করে চোখ বুজে দাঁড়িয়ে, ঠোঁট দুটো অল্প অল্প নড়ছে, মনে হয় গানের কলি গুলো নিজেই গাওয়ার চেষ্টা করছে। অবাক হয়ে ওর এক মনে গান শোনা দেখে ভীষন ভালো লাগছিল ওর দিকে তাকিয়ে থাকতে। গান টা শেষ হলে মৌ তাকিয়ে সামনে অরিত্র কে দেখে একটু অপ্রস্তুত হয়ে লজ্জায় মুখ নিচু করে নিলে অরিত্র ওকে ঘরের ভেতরে আসতে বলে পর্দা টা সরিয়ে দিল।ভেতরে আসতে চাইছিল না দেখে অরিত্র ওর হাত ধরে ভেতরে গিয়ে সোফাতে বসতে বলে একটু দুরে নিজেও বসে জিজ্ঞেস করল… তোমার গান শুনতে ভালো লাগছে?…তাই না? প্রথম প্রথম আপনি দিয়ে কথা বলতো …কিন্তু ওর যেন পছন্দ হয়নি…মাথা নেড়ে আপত্তি জানানোয় তুমি করে বলতে খুব খুশি হয়েছিল দেখে তারপর থেকে তুমি টাই চলছিল।

মুখ নিচু করে মাথা নেড়ে জানালো…হ্যাঁ…

ঠিক আছে…তুমি এখানে বসে শোনো…আমি ছাদে যাচ্ছি… বেশ কয়েকদিন গাছ গুলো কেমন আছে দেখা হয়নি…

মাথা নেড়ে জানালো…না…

কেন? এখন ইচ্ছে করছে না শুনতে?

হ্যাঁ…

তাহলে?

মৌ উঠে গিয়ে বিছানা থেকে বই টা হাতে নিয়ে দেখালো…অরিত্রর বই পড়া ছেড়ে ছাদে যেতে হবে না।

ও আচ্ছা…আমি ছাদে যাবো না…তাইতো?

একটা মিষ্টি হাসি মুখে নিয়ে ঘাড় নেড়ে জানালো…হ্যাঁ…তাই…

ঠিক আছে আমি যাবো না…তুমি এখানে বোসো…আমিও বসছি…আমার পরে পড়লেও হবে।
মৌ প্রায় দিন দুপুরে অরিত্রর ঘরে বসে নিচু আওয়াজে গান শোনে…অবশ্য রবিবার টা বাদ দিয়ে কারন ওই দিন অরিত্র বাড়ীতে থাকে। ও আসার পর থেকে বাড়ীর সবার ছকে বাঁধা জীবন টা যেন এক ধাক্কায় একেবারে পালটে গেছে। শুধু শুক্লাদি নয়, দিদান আর দাদু দুজনেরই অনেক টা সময় ওর সাথে কাটে…অনেকটা বন্ধুর মতো সম্পর্ক তৈরী হয়ে উঠেছে। কথা না বলতে পারা বা বয়সের একটা বিশাল ফারাক কোনো বাধা হতে পারেনি সেই সম্পর্কে। সবারই যেন কেমন মায়া পড়ে গেছে ওর উপরে। অরিত্রর অফিস বেরোবার সময়ে ও দিদানের সাথে থাকে,দিদান যখন রোজকার মতো সাবধানে যাবি, দেরী হলে জানিয়ে দিবি বলে, পাশে দাঁড়িয়ে হাসি মুখে মৌ ওকে বিদায় জানায়। আজকাল অফিস বেরোবার সময়ে ওর ওই মিষ্টি হাসি টা দেখতে পাবে ভেবেই যেন অফিস বেরোতে ইচ্চে করে…অফিস থেকে ফিরতে কোনোদিন দেরী হলে খুব অস্থির হয়ে পড়ে, বারবার দিদানের কাছে গিয়ে জানার চেষ্টা করে কখন ফিরবে। বেশ কয়েকদিন দেরি করে ফেরার সময় রিকশা থেকে নেমে দেখেছে ওর ঘরের জানলা দিয়ে রাস্তার দিকে তাকিয়ে আছে, ওকে দেখতে পেলেই তাড়াতাড়ি নেমে আসে নিচে, সারা মুখে একটু যেন বকুনি দেবার ইচ্ছে…কেন তুমি দেরী করলে? এর মাঝে আবার একদিন ট্রেনের গন্ডগোলে অনেক রাত হয়েছিল ফিরতে, বাড়ীতে ফোন করে জানাতে জানাতে অনেক টা দেরী হয়ে গিয়েছিল। দিদানের কাছে শুনলো…ও নাকি অরিত্রর ফোন আসার আগে দিদান কে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করেছে…গলা দিয়ে আওয়াজ না বেরোলেও চোখের জল বুঝিয়ে দিয়েছে ও কতটা কষ্ট পেয়েছে। এই কিছুক্ষন আগে নাকি দিদান ওকে জোর করে শুতে পাঠিয়েছে না হলে সারাক্ষন নিচেই বসে ছিল। অরিত্র খেয়ে উপরে ওঠার সময় দেখলো মৌ ওর ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে,সামনে গিয়ে দেরী হয়ে গেল বলাতে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো…ওর যে ভীষন অভিমান হয়েছে বোঝাবার আর তো কোনো উপায় ছিল না। অরিত্র ওর হাত ধরে ঘরের ভেতরে গিয়ে বলল…সত্যি ভুল হয়ে গেছে…আর হবে না…এবার থেকে দেরী হলে আগেই জানিয়ে দেবো…কিছুতেই ওর দিকে তাকাচ্ছেনা দেখে অরিত্র ওর কাঁধে হাত রেখে নরম স্বরে বলল…এই…তাকাও আমার দিকে…। তাতেও তাকালো না দেখে ওর মুখ টা তুলে ধরে দেখলো…দু চোখে কান্নার আভাস। নিজের হাতে ওর চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে বলল…এই…তাকাবে না আমার দিকে? আস্তে আস্তে চোখ তুলে ওর দিকে তাকিয়ে থাকলো…খুব ইচ্ছে করছিলো ওকে বুকে টেনে নিয়ে জড়িয়ে ধরতে কিন্তু নিজেকে সামলে নিয়ে বলল…এই তো আমি এসে গেছি…এখোনো…অভিমান করে থাকবে? ছোট্ট একটা নিস্বাস ফেলে কান্না ভরা চোখে নরম একটা হাসি মুখে নিয়ে বোঝালো…নাঃ…আমি আর অভিমান করে নেই…কিন্তু তুমি আর কখোনো আমাকে কষ্ট দেবে না। দুজনে দুজনের দিকে তাকিয়ে থাকলো কিছু না বলে…চোখের ভাষাতে হয়তো দুজনেই বুঝে নেবার চেষ্টা করছিল অন্যের বুকের ভেতরে লুকিয়ে থাকা অজানা কথা গুলো।
Like Reply


Messages In This Thread
তুমি এলে তাই - by sorbobhuk - 21-01-2019, 11:09 AM
RE: তুমি এলে তাই পার্ট ১ - by sorbobhuk - 21-01-2019, 12:17 PM
RE: তুমি এলে তাই - by arn43 - 12-10-2020, 09:31 PM



Users browsing this thread: 12 Guest(s)