Thread Rating:
  • 8 Vote(s) - 3.13 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance তুমি এলে তাই
#3
পার্ট -১


সল্টলেকের অফিস থেকে বেরিয়ে অফিসের গাড়ী করে উল্টোডাঙ্গা স্টশনে পৌঁছোতে প্রায় ন টা বাজলো অরিত্রর। চারিদিকে লোকে লোকারন্য, দেড় ঘন্টা হয়ে গেছে নাকি কোনো আপ ট্রেন আসেনি। ডাউন ট্রেনের ও একই অবস্থা…এখানেই যদি এই অবস্থা হয় তাহলে শিয়ালদা স্টেশনে কি হতে পারে আর এর পরে যে ট্রেন আসবে তাতে কোনো মতেই যে ওঠা যাবেনা সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কি করা যায় ভাবতে ভাবতে শিয়ালদা চলে যাওয়া ভালো, কয়েক টা ট্রেন ছেড়ে তার পর না হয় ওঠা যাবে ভেবে স্টেশনের বাইরে এসে বাস ধরে শিয়ালদা পৌঁছে দেখলো একই অবস্থা, স্টেশনে ঢোকার মতো অবস্থা নেই। বাড়ীতে একটা ফোন করে জানিয়ে দেওয়া ভালো মনে করে পকেটে হাত দিয়ে দেখে মোবাইল টা নেই…এই নিয়ে পাঁচবার হল…কখন যে তুলে নেয় বোঝাই যায় না। যাক খুব একটা দামী ছিল না, আর একটা কিনে নেওয়া যাবে ভেবে বুথে গিয়ে ফোন করল, দিদান ফোন টা রিসিভ করলে মোটামুটি বুঝিয়ে বলে দিল…ট্রেনের গন্ডগোল আছে… দেরী হবে ফিরতে…তোমরা খেয়ে শুয়ে পড়, যা অবস্থা তাতে কত রাতে পৌঁছব, বলতে পারছি না। দিদান শুনে বলল…খুব অসুবিধা দেখলে ও যেন ভবানীপুরের বাড়ী চলে যায়। অরিত্র…কোনো দরকার নেই…আমি ঠিক চলে যাবো বলাতে দিদান বলল…আমি তোর দাদু কে বলছি নারায়ন কে খবর দিয়ে রাখতে, যত রাত হোক ও তোকে স্টেশন থেকে নিয়ে আসবে।

কি দরকার আবার বুড়ো মানুষটাকে বিব্রত করে, সারাদিন রিকশা টেনে একটু তো বিশ্রাম নিতে দাও, দাদু বললে তো আবারনা করতে পারবে না।

দিদান বললো…তোকে ওসব নিয়ে চিন্তা করতে হবে না, তুই তো জানিস নারায়ন তোকে কত ভালোবাসে।

আরো ঘন্টা খানেক অপেক্ষা করার পর জানা গেল কিছুক্ষনের মধ্যেই রানাঘাট লোকাল ছাড়বে, আরো দু একটা ট্রেন না ছাড়লে গিয়ে লাভ নেই দেখে চা খেয়ে আরো কিছুক্ষন অপেক্ষা করার পর মনে হল ভীড়টা একটু হালকা হয়ে গেছে। গোটা তিনেক ট্রেন ছাড়ার পর, এবারে স্টেশনে ঢোকা যেতে পারে দেখে স্টেশনে ঢুকে প রের ট্রেন টাতে কোনো রকমে ধাক্কাধাক্কি করে একটা কামরায় উঠতে পারলেও ভেতরে যাবার কোনো উপায় নেই, অগত্যা একটু একটু করে দরজার পাশে যতটা যাওয়া যায় চেপে গিয়ে খুব কপাল ভালো পার্টিশান টায় পিঠ ঠেকিয়ে দাঁড়াতে পারলো। একে ওই রকম ভীড় তার উপরে আবার কামরা টার বেশ কয়েক টা আলো জ্বলছে না। যে কটা জ্বলছে তার আলো ভীড়ের মাঝে হারিয়ে গেছে, বেশ কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থাকার পর একটু একটু করে ট্রেন এগোতে শুরু করল, যত টা না এগোয়,তার থেকে বেশী দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে দমদম পৌঁছোল রাত প্রায় বারোটা, আধো আলো, আধো অন্ধকারে ঠিক মতো বোঝা না গেলেও খেয়াল করে দেখলো ওর বুকের উপরে মাথা রেখে একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে, কি করবে, কিছু করার তো নেই ভেবে ওদিকে আর মন দিলো না, ট্রেনে ভীড় থাকলে হতেই পারে।ট্রেন টা ব্যারাকপুর ছাড়লো, ভীড়টা একটুও কমেনি। ট্রেন টা যেভাবে এগোচ্ছে, দুটোর আগে মনে হয় না বাড়ী পৌছোতে পারবে ভাবতে ভাবতে মেয়েটার খেয়াল করে দেখতে গিয়ে মনে হল, ঘুমিয়ে গেছে। এ কি রে বাবা, এতো ভীড়ে ঘুমোচ্ছে কি করে? ওর স্টেশন পেরিয়ে যায়নি তো ভেবে কাঁধে হাত দিয়ে একটু ঝাঁকিয়ে ডাকলো…এই যে শুনছেন…কোনো সাড়া পাওয়া গেল না। পাশ থেকে একজন টিপুন্নি কাটলো…কি দরকার ডাকার, ঘুমোচ্ছে যখন ঘুমোতে দিন না, আর আপনার তো কোনো ক্ষতি দেখছি না।লোকটার কথা শুনে গা পিত্তি জ্বলে গেলেও জবাব না দিয়ে চুপ করে থাকলো।পরের স্টেশনে ট্রেনটা দাঁড়াতেই বেশ কিছু প্যাসেঞ্জার নামতে শুরু করল ধাক্কাধাক্কি করতে করতে, মেয়েটা প্রায় ছিটকে পড়ে যাচ্ছে দেখে কোনোরকমে হাত দিয়ে নিজের সাথে চেপে ধরে থেকে একটু একটু করে নিজের পাশে নিয়ে আসার চেষ্টা করে পার্টিশানের গায়ে নিয়ে এসে অনেকটা নিশ্চিন্ত হল। পাশ থেকে একজন বলল…এতো মনে হচ্ছে ঘুমোচ্ছে না, দেখুন আবার বেঁচে আছে কিনা…আজকাল কি যে হচ্ছেবোঝা খুব মুশকিল। লোকটার কথা শুনে একটা ঠান্ডা স্রোত শির দাঁড়া দিয়ে নেমে গেল, কোনোরকমে মেয়েটার একটা হাত ধরে বুঝলো…খুব আস্তে আস্তে পালস চলছে। যাক, বেঁচে আছে কিন্তুকি করা যায় ভাবছিল। দু এক জন বলল এক কাজ করুন স্টেশনে নেমে পুলিশের কাছে জমা করে দিয়ে আপনি আপনার মতো বাড়ী চলে যান। কোথাকার জল কোথায় গড়াবে কে জানে, কি দরকার বেশী ঝামেলায় যাবার।

পরের স্টেশনেই ওকে নামতে হবে, এই অবস্থায় অসহায় মেয়েটাকে এত রাতে এইভাবে ফেলে যাওয়া টা কেমন যেন অমানবিক মনে হল। আগে তো নামাই তারপরে দেখা যাবে ভেবে পাশের একজনকে অনুরোধ করল যদি একটু হেল্প করে নামাতে। হুড়োহুড়ি করে সবাই নেমে যাবার পর ধরাধরি করে কোনোরকমে নামিয়ে কপাল ভালো ছিল একটা বসার জায়গা পেয়ে ওখানে বসিয়ে দিয়ে একটু দম নিয়ে মেয়েটার দিকে তাকালো, ঘাড় কাত করে বসে আছে…মানে যেভাবে বসানো হয়েছিল সেই ভাবেই আছে। এদিক ওদিক তাকালো কাউকে যদি পাওয়া যায়, সবাই যেভাবে তাড়াতাড়ি করে চলে যাচ্ছে তাতে হেল্প করার কথা শুনলে হয়তো তেড়ে আসবে ভেবে আর সাহস হোল না। এতটা রাস্তা ওই ভীড়ে দাঁড়িয়ে আসতে হয়েছে, নিজের ই শরীরের অবস্থা খারাপ, ভীষন ক্লান্ত লাগছে…একটু বসে জিরিয়ে নি ভেবে মেয়েটার পাশে বসে পড়ল, এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখল একটা জলের কল আছে, উঠে গিয়ে জল খেয়ে মাথায় ঘাড়ে জল দিয়ে একটু সুস্থ বোধ হলে ফিরে এসে বসে ভাবছিল…কি করবে…মেয়েটাকে ডাক্তার দেখানো দরকার মনে হচ্ছে, পুলিশের কাছে দিলে তো ফেলে রেখে দেবে অথবা একলা মেয়ে পেয়ে হয়তো আরো কিছু করতে পারে। হসপিটালে নিয়ে গেলেই ভালো ভেবে উঠে পড়ল কিন্তু কি করে স্টেশনের বাইরে নিয়ে যাবে ভাবতে ভাবতে নারায়ন দার কথা মনে পড়ল। দিদান তো বলেছিল নারায়ন দা অপেক্ষা করবে, কিন্তু নারায়ণ দা তো আর জানে না কোন ট্রেনে ফিরবে…হয়তো ওকে দেখতে না পেয়ে ভেবেছে পরের কোনো ট্রেনে আসবে আর তাই ভেবে অন্য কোনো প্যাসেঞ্জার নিয়ে চলে গেছে। ধুস, কি যে ঝামেলায় পড়লাম ভালোমানুষী করতে গিয়ে ভেবে নিজের উপরই রাগ হয়ে গেল। আরো কিছুক্ষন চুপচাপ বসে থাকার পর মেয়েটার দিকে তাকালো… দেখে তো মনে হচ্ছে বেশ ভালো বাড়ীর মেয়ে, মুখটা বেশ মিষ্টি…চেহারাতে বেশ একটা মাধুর্য আছে…দেখে মনে হচ্ছে না কুড়ি বাইশের বেশী বয়স হবে… একটু ঝাঁকিয়ে ডাকলো…কিন্তু কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া গেল না দেখে কি করবে ভাবতে ভাবতে দেখা যাক একাই নিয়ে যাওয়া যায় কিনা... দু হাতে করে তুলে নিয়ে দেখলো … নাঃ, খুব একটা অসুবিধা হচ্ছে না, জোরে পা চালিয়ে স্টেশনের বাইরে এসে দেখলো একটাই রিকসা দাঁড়িয়ে আছে, যাক বাঁচা গেল, হসপিটালে নিয়ে যেতে পারবে ভেবে ওটার কাছে গিয়ে অনেক টা নিশ্চিন্ত বোধ করল… নারায়ন দার রিক্সা…বুড়ো মানুষটা পাদানিতে বসে ঢুলছে।

ও নারায়ন দা ওঠো…বলে জোরে ডাকতেই নারায়ন দা ধড়পড় করে উঠে পড়ে ওকে দেখে ভুত দেখার মতো চমকে উঠে বলল…আরে, এ আবারকে তোমার সাথে?

তুমি আগে একটু ধর, সিটে বসিয়ে দি…

দুজনে মিলে ধরাধরি করে কোনোরকমে সিটে বসিয়ে হুড টা উঠিয়ে দিয়ে ওতে হেলান দিয়ে বসিয়ে দিয়ে নিজে উঠে মেয়েটাকে ধরে বসে বলল…নারায়ন দা…হসপিটালের দিকে চলো।
আগে তুমি বলোতো…কি ব্যাপার,মেয়েটা কে আর তোমার সাথেই বা কেন।

নারায়ন দা কে ও কখোনোই রিক্সাওয়ালা হিসেবে দেখেনি, কিছুটা গুরুজনের চোখে দেখে বলে… কিছু মনে না করে…সংক্ষেপে সব টা বললে নারায়ন দা বললো হসপিটালে তো নিয়ে যাবে বলছো কিন্তু এখন কি আর ডাক্তার পাবে, সরকারী হাসপাতাল, ওদের আর কি কোনো দায়িত্ব আছে…সারারাত ফেলেই রেখে দেবে। কাল রাতেই তো আমাদের পাড়ার একটা বৌ কে নিয়ে গিয়েছিলাম…বরটা মদ খেয়ে এসে বেদম মার মেরে নাক মুখ ফাটিয়ে দিয়েছিল দেখে নিয়ে গেলাম…ভর্তি করা তো দুরের কথা কেউ একবার দেখলো না পর্যন্ত…নাইট ডিউটির ডাক্তার নাকি এসে বেরিয়ে গেছে… জোরজার করাতে বলল…অন্য কোথাও নিয়ে যেতে। তার থেকে চলো…বাড়ী নিয়ে যাই, বোস ডাক্তার তো তোমার দাদুর বন্ধু, ওনাকে ডাকলে নিশ্চয় না করবেন না। তুমি দাদাভাই একটা কাজ কর বাড়ীতে একটা ফোন করে বল ডাক্তার বাবুকে খবর দিয়ে রাখতে, আমি তোমাদের কে নামিয়ে দিয়ে ওনাকে তুলে নিয়ে আসবো।

ফোন কি আর আছে, ভীড়ের মাঝে তুলে নিয়েছে।

চলো তাহলে আগে বাড়ীর দিকে যাই তারপর দেখা যাবে… বলে নারায়ন দা রিকশায় উঠে বাড়ির দিকে রওনা দিল। নারায়ন দা খুব সাবধানে চালালেও…মাঝে মাঝে রাস্তা খারাপ, তার উপর মেয়েটার জ্ঞান নেই…ধরে বসে থাকতে খুব অসুবিধা হচ্ছিল দেখে কোলের উপরে ওর মাথা রেখে শুইয়ে নিতে হল। দিদান এত রাতে না ঘুমিয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিল, মাঝে মাঝেই দেরী হয়…কিন্তু আজ যেন খুব বেশী দেরি হচ্ছে ছেলেটার…তার উপরে আবার ফোনটাও হারিয়ে বসে আছে… ওদের কে আসতে দেখে তাড়াতাড়ি দরজা খুলে দিলে দুজনে মিলে ধরাধরি করে মেয়েটাকে বাড়ীর ভেতরে নিয়ে গিয়ে সোফাতে শুইয়ে দিল, ততক্ষনে দাদু ও উঠে এসেছে…ওদের কে ঘটনা টা বলতেই দাদু তাড়াতাড়ি করে বোস ডাক্তার কে ফোন করে মোটামুটিভাবে কি হয়েছে বুঝিয়ে দিয়ে আসার জন্য বলে দিলে নারায়ন বেরিয়ে গেল নিয়ে আসার জন্য।

অরিত্র একটু জল খেয়ে নিজেই কফি বানিয়ে নিয়ে এলো, একেই রাত হয়েছে… মেয়েটার জন্য খুব টেনশান হচ্ছে…খারাপ কিছু হয়ে না যায়। ওদিকে দাদু খুব অধৈর্য হয়ে ঘরের ভেতরে পায়চারি করছে মাঝে মাঝে বারান্দায় গিয়ে দেখে আসছে ডাক্তার এলো কিনা। দিদান আর শুক্লাদি দুজনে মিলে মেয়েটার চোখে মুখে জলের ছিটে দিয়ে মুছিয়ে দিয়ে ভালো করে শুইয়ে দিয়ে জল খাওয়াবার চেষ্টা করছিল। ততক্ষনে ডাক্তার দাদু পৌছে গিয়েছেন… বেশ কিছুক্ষন দেখে একটা ইঞ্জেকশান দিয়ে দিলেন প্রথমেই… প্রেশক্রিপসান লিখে দিয়ে নিজেই ব্যাগ থেকে কিছু ওষুধ বের করে বললেন…এখুনি কিছু আনার দরকার নেই…এই ওষুধ গুলো কাল পর্যন্ত চলে যাবে…খুব একটা ভয়ের কিছু নেই, কয়েকদিন হয়তো খাওয়া দাওয়া ঠিক মতো করেনি বা টেনশান করে এই অবস্থা হয়েছে। মনে হচ্ছে বাড়ী থেকে পালিয়ে যাবার মতো কিছু ঘটনা থাকতে পারে। এখন কিছুটা গরম দুধ খাইয়ে দাও, আমি আরো কিছুক্ষন দেখে তারপর যাবো বলাতে শুক্লাদি তাড়াতাড়ি করে দুধ গরম করে নিয়ে এসে চামচে করে একটু একটু করে খাওয়াবার চেষ্টা করল…খুব বেশী না হলেও কিছুটা খাওয়ানো গেল। প্রায় এক ঘন্টা পর বোস দাদু আর একবার সবকিছু দেখে বললেন নাঃ…ঠিক ই আছে, পেশেন্ট রেসপন্স করছে… ভয় পাবার কিছু নেই, আমি কাল সকালে একবার এসে দেখে যাবো। কাল সকালে বরং পুলিশে একটা খবর দেওয়া ভালো… বলা তো যায়না… কোথা থেকে কি হয়ে যায়।

অরিত্রর স্নান করে অল্পছু খেয়ে নিতে নিতে রাত প্রায় চারটে বাজলো। মেয়েটাকে গেস্ট রুমে শুইয়ে দিয়ে ওখানেই শুক্লাদি বিছানা করে শুয়ে পড়েছে। প্রায় সারা রাত অনেক ধকল গেছে বলে সকাল সকাল ওকে আর কেউ ডাকেনি, প্রায় ন টা নাগাদ ঘুম ভাঙ্গার পর উঠে… আগে গিয়ে মেয়েটা কেমন আছে দেখতে গেলো। পাশ ফিরে শুয়ে আছে…মিষ্টি মুখটাতে ভীষন ক্লান্তির ছাপ…শুক্লাদি জানালো ভোরের দিকে একবার চোখ খুলে তাকিয়ে ছিল কিন্তু আবার ঘুমিয়ে পড়েছে। একটু নিশ্চিন্ত বোধ করে হাত মুখ ধুয়ে চা এর কাপ টা নিয়ে দাদুর কাছে গিয়ে বসে বলল…কি করা যায় বলোতো? পুলিশ কেখবর দেওয়া উচিত মনে হচ্ছে?
[+] 1 user Likes sorbobhuk's post
Like Reply


Messages In This Thread
তুমি এলে তাই - by sorbobhuk - 21-01-2019, 11:09 AM
RE: তুমি এলে তাই পার্ট ১ - by sorbobhuk - 21-01-2019, 12:14 PM
RE: তুমি এলে তাই - by arn43 - 12-10-2020, 09:31 PM



Users browsing this thread: 5 Guest(s)