07-11-2019, 07:28 AM
আমার নাম… থাক, ওসব ছোটোখাটো কথা পরে হবে। হঠাৎ করে শুরু করবার আগে, নিজের সম্পর্কে দু-একটা সামান্য কথা বলে নিই। আমি একজন বছর-ঊনত্রিশের সুস্থ-সবল, বাঙালী, ভদ্রঘরের যুবক। এম-এ পাশ দিয়ে জলপাইগুড়ির তরাই-ঘেঁষা মফস্বলের একটি অখ্যাত হায়ার-সেকেন্ডারি কলেজে ইতিহাসের শিক্ষকতা করি। ছেলেবেলাতেই বাবা মারা গিয়েছেন, চাকরিতে ঢোকার আগে মাও চলে গেলেন। তাই বসতবাটির অংশ কাকাদের লিখে দিয়ে, আমি এখন মুক্ত-বিহঙ্গ। কিন্তু আমার এই স্বাধীনতা, একাকীত্ব, বৈরাগ্যর পিছনেও একটা ছোট্টো ইতিহাস আছে। না-হলে তো অ্যাদ্দিনে বিয়ে-থা করে, শহরের দিকের কোনো কলেজে ট্রান্সফার নিয়ে, আর পাঁচজন সাধারণ ছেলের মতোই সংসার পাততুম। কিন্তু আমার জীবনটা সেই বাইশবছর বয়সেই তছনছ করে দিয়ে গেছে আমার ‘সোনাদি’। সেই ভাঙাচোরা মনের টুকরোগুলো আজও ঠিকমতো জোরা লাগাতে পারিনি আমি।…
আমাদের মফস্বল-কলেজে অনার্সে ভালো রেজাল্ট করায়, শহরের কলেজে এম-এ-তে আমি ডাইরেক্ট অ্যাডমিশন পাই। কিন্তু আমাদের বনগাঁ থেকে প্রতিদিন কলকাতায় যাতায়াত করে লেখাপড়া করাটা বেশ কঠিন ব্যাপার ছিল। মেস বা হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা চালাব, এমন রেস্ত-র জোরও আমাদের মা-ছেলের অভাবের সংসারে ছিল না। আমি এইচ-এস-এর পর থেকেই চুটিয়ে টিউশানি করতাম; বাবার জমিয়ে যাওয়া সামান্য ব্যাঙ্ক-ব্যালেন্স, আর আমার ওই ছেলে-পড়ানো টিউশানির ক’টা টাকা, ওতেই আমাদের মা-ছেলেকে রীতিমতো কষ্ট করে জীবনধারণ করতে হতো। কারণ কাকারা ষড়যন্ত্র আর ঝগড়া করা ছাড়া, অন্য ব্যাপারে আমাদের কোনো সাহায্যই করত না। তখন উপায়ন্ত না পেয়ে মা-র এক দূর-সম্পর্কের বোন, রাঙামাসির বাড়িতে আশ্রয় নিতে হল এম-এ পড়বার সময়। ওদের বাড়িটা ছিল মানিকতলায়, ওখান থেকে কলেজস্ট্রিটে প্রায়সই পয়সা বাঁচাতে হেঁটেই যাতায়াত করতাম আমি। শনিবারে-শনিবারে বাড়ি গিয়ে মা-র সঙ্গে দেখা করে আসতাম।…
আমাদের মফস্বল-কলেজে অনার্সে ভালো রেজাল্ট করায়, শহরের কলেজে এম-এ-তে আমি ডাইরেক্ট অ্যাডমিশন পাই। কিন্তু আমাদের বনগাঁ থেকে প্রতিদিন কলকাতায় যাতায়াত করে লেখাপড়া করাটা বেশ কঠিন ব্যাপার ছিল। মেস বা হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা চালাব, এমন রেস্ত-র জোরও আমাদের মা-ছেলের অভাবের সংসারে ছিল না। আমি এইচ-এস-এর পর থেকেই চুটিয়ে টিউশানি করতাম; বাবার জমিয়ে যাওয়া সামান্য ব্যাঙ্ক-ব্যালেন্স, আর আমার ওই ছেলে-পড়ানো টিউশানির ক’টা টাকা, ওতেই আমাদের মা-ছেলেকে রীতিমতো কষ্ট করে জীবনধারণ করতে হতো। কারণ কাকারা ষড়যন্ত্র আর ঝগড়া করা ছাড়া, অন্য ব্যাপারে আমাদের কোনো সাহায্যই করত না। তখন উপায়ন্ত না পেয়ে মা-র এক দূর-সম্পর্কের বোন, রাঙামাসির বাড়িতে আশ্রয় নিতে হল এম-এ পড়বার সময়। ওদের বাড়িটা ছিল মানিকতলায়, ওখান থেকে কলেজস্ট্রিটে প্রায়সই পয়সা বাঁচাতে হেঁটেই যাতায়াত করতাম আমি। শনিবারে-শনিবারে বাড়ি গিয়ে মা-র সঙ্গে দেখা করে আসতাম।…