Thread Rating:
  • 27 Vote(s) - 3.44 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
কাশ্মীর ভ্রমন… ১৪ দিনের ট্যুর..... (Completed)
#22
রাত ১১.৩০ নাগাদ আমরা শ্রীনগর পৌছলম. ডাল লেকের পাড়েই একটা হোটেলে আমাদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছে. বেশ বড়ো হোটেল… আমরা সবাই গাড়ি থেকে নামলাম. সত্যাজিত রায়ের সোনার কেল্লা সিনেমার লাল মোহন বাবুর উটের পিঠে ভ্রমনের পর যে অবস্থা হয়েছিলো..
আমাদের বেশির ভাগ মানুষেরই সেই অবস্থা. সবাই বিভিন্ন হাস্যকর ভঙ্গীতে কসরত করে হাত পায়ের জট ছাড়িয়ে নিচ্ছে. গাড়ি থেকে নামার আগে উমা বৌদি আমার পাশে এসে চুপি চুপি বলল.. আজকের ঘটনা অঙ্কিতাকে এখনই বলার দরকার নেই. অল্প বয়সী মেয়ে.. জেলাস ফীল করতে পারে.
আমি ঘার নেড়ে সায় দিলাম.
মা আর গায়েত্রী মাসীমাকে একটা জায়গায় দাড় করিয়ে দিলাম. তরুদা গেছে হোটেলের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা করতে. মাল পত্র সব জড়ো করা হয়েছে… হোটেলের লোকেরই ঘরে পৌছে দেবে…
আমাদের দুশ্চিন্তার কিছু নেই. আমি ওলস ভাবে হটতে হটতে বাইরে এলাম. সামনেই ডাল লেক. অনেক নাম শুনেছি. অসংখ্য সিনেমায় ডাল লেকে শিকারা চড়তে দেখেছি নায়ক-নায়িকাকে.
আজ চোখের সামনে সেই ডাল লেক. রাতের বেলা তাই ঠিক বুঝতে পারছি না. কেমন একটা বড়ো খালের মতো লাগছে. সিনিমাতে যেমন দেখেছি… মতে ও সেরকম লাগছে না. আমার কেমন সেন্স বলছে এটা আসল ডাল লেক নয়… তারে কোনো একটা সাইড চ্যানেল.
কিন্তু দেখতে মন্দ লাগছে না. রাত অনেক হয়েছে… তবু আলো ঝলমল করছে চারিদিকে. চ্যানেলটার ওপর দিকে লাইন দিয়ে অগুন্তি হাউসবোট দাড়িয়ে আছে. তাদের গ্লো-সাইনবোর্ড গুলো আলোর মালা তৈরী করে একটা অদ্ভুত মায়াবি পরিবেশ সৃস্টি করেছে.
প্রচন্ড ঠান্ডা লাগছে এখন. চাদরে কাজ হচ্ছে না. বেসিকখন দাড়িয়ে থাকা যাবে না বুঝতে পারছি. একটা সিগার ধরিয়ে ফুটপাতে দাড়িয়ে অন্য-মনস্কো ভাবে টানছি… অঙ্কিতা আর রিয়া এলো. এই যে মসাই… কি করছেন ঠান্ডায় একা আকা? আমি ওদের দিকে ঘর ঘুরিয়ে হাসলাম. বললাম বিকখ্যাতো ডাল লেক দেখছি. হাউসবোট গুলো ও দেখতে দারুন লাগছে. কিন্তু ভীষণ ঠান্ডা লাগছে.. আর দাড়িয়ে থাকা যাচ্ছে না.
সরযন্ত্র করছে এমন ভাবে সামনে ঝুকে মাথা হেলিয়ে নিচু গলায় রিয়া বলল… খুব ঠান্ডা লাগছে বুঝি? আমার বান্ধবীকে রেখে যাবো নাকি কাছে? অবস্য এখানে কোনো বাথরূম নেই….! বলেই খিল খিল করে হেসে উঠলো রিয়া.
আমি চমকে উঠে অঙ্কিতার দিকে তাকালাম… অঙ্কিতা লজ্জা মাখা চোখে মুখ নিচু করে আছে. রিয়া বলল… ওর দিকে তাকিয়ে লাভ নেই… পেটের ভিতর থেকে সব কথা টেনে বের করে নিয়েছি মসাই… আমার নাম রিয়া ভট্টাচার্যা… ! আমি কোনো উত্তর না দিয়ে বললাম চলো ফেরা যাক…
ট্রেনের মতো এখানেও রূমের ব্যবস্থা পাশা-পাশিই হয়েছে. প্রথমে অঙ্কিতাদের রূম.. তার পাশে উমা বৌদিদের রূম… তারপর আমাদের রূম. আমাদের রূম গুলো গ্রাউংড-ফ্লোরে. রিয়া দের ব্যবস্থা হয়েছে ফাস্ট ফ্লোরে.
হোটেলের লোক এসে আমাদের যার যার রূমে পৌছে দিয়ে গেল. মাল পত্র আগেই এসে গেছে. একটু পরে তরুদা এসে বলে গেল… আপনারা ফ্রেশ হয়ে নিন… এক ঘন্টার ভিতর ডিনার এসে যাবে. তবে আজ বেশি কিছু করতে পারবো না.. মাফ করবেন সবাই.
তরুদা চলে যেতেই আমরা মাল পত্র খুলে গুচ্ছিয়ে ফেলতে লাগলাম. শ্রীনগরে আমাদের ৪ দিন থাকতে হবে… তাই ব্যাগ গুলো আনপ্যাক করতে কোনো অসুবিধা নেই. মা ওয়ার্ডরোবে সব কিছু সাজিয়ে রাখছে…
আমি বাথরূমে ঢুকে পড়লাম ফ্রেশ হতে. উমা বৌদির রস লেগে আছে মুখে আর নীচে.. সেগুলো ধুয়ে ফেলা দরকার. গীজার চালিয়ে সাবান মেখে স্নান করে নিলাম… সারাদিনের ক্লান্তি উধাও হয়ে গেল এক নিমেষে. ফ্রেশ হয়ে বাইরে বেরিয়ে এলাম.
মা বাথরূমে ঢুকলে আমি গেলাম উমা বৌদি আর অঙ্কিতা দের খোজ নিতে. অঙ্কিতা বাথরূমে ঢুকেচ্ছে. গায়েত্রী মাসীমা পান সাযচ্ছেন. আমি জিজ্ঞেস করলাম কোনো অসুবিধা নেই তো মাসীমা? মাল পত্র সব ঠিক মতো এসেছে তো?
মাসীমা বলল.. হ্যাঁ বাবা.. সব এসে গেছে. এরা ভালই খেয়াল রাখছে. কিন্তু তোমাকে যে কি বলে ধন্যবাদ দেবো বাবা… ট্রেনে ওঠার আগে থেকে তুমি যেমন খেয়াল রাখছ… একদম নিজের ছেলের মতো. আর তোমার মা তো আমার নিজের একটা দিদিই হয়ে গেছেন.
আমি বললাম ছিঃ চ্ছি মাসীমা… এটা কি বলছেন… বাঙ্গালী বাঙ্গালীর খেয়াল রাখবে না তো কাকে রাখবে বলুন? আমি এমন কিছুই করিনি. ওদের ঘর থেকে উমা বৌদির ঘরে এলাম… মৃণালদা কম্বলের নীচে আশ্রয় নিয়েছে… মাথায় বাঁদর টুপি… উমা বৌদি বোধ হয় এই মাত্র বাথরূম থেকে বের হলো… বললাম কোনো অসুবিধা নেই তো মৃণালদা?
মৃণালদা বলল… নাহ… সব ঠিক আছে… বড্ড ঠান্ডা ! উমা বৌদি কোনো কথা বলল না… একটু হেসে টুক টক কাজ করতে লাগলো… আমি ঘরে চলে এলাম.
ডিনারের জন্য অপেক্ষা করছি… খিদে ও লেগেছে খুব. দরজায় ন্যক হলো… ডিনার এলো ভেবে দরজা খুলে দেখি অঙ্কিতা. ঘরে ঢুকে আমাকে কোনো কথা না বলে মাকে বলল.. মাসীমা মা আপনাদের খাবার আমাদের রূমে নিয়ে নিয়েছে.

মা বলল আপনারা আমাদের সঙ্গে একসাথে খেলে ভালো হয়. মা বলল.. ভালই তো… চলো যাচ্ছি… অঙ্কিতা আমাকে ইসিরায় বলে গেল… এসো !
অঙ্কিতা আমাদের ডিনার সার্ভ করলো. সব ঘরেই ডাইনিংগ টেবল আছে. আমরা খেতে বসলাম… বললাম তুমি ও বসে পার.. নিজেরাই নিয়ে নিলেই হবে. অঙ্কিতা ও বসে গেল খেতে. ডিনার শেষ করে হাত ধুচ্ছি…
শুনলাম গায়েত্রী মাসীমা মাকে বলছে… দিদি আপনি এই ঘরেই থাকুন না? তমাল পুরুষ ছেলে.. একাই থাকতে পারবে. আমরা দুজন যে কয়দিন কাশ্মীর থাকবো এক সাথেই থাকি না হয়… কি বলেন?
মাও দেখলাম রাজী… বলল তমাল কি বলে দেখি.
আমি বাথরূম থেকে বেরিয়ে বললাম… অসুবিধা কিছু নেই… তবে মাসীমাদের অসুবিধা হবে… ৩ জন গাদাগাদি করে শুতে হবে.
মাসীমা বললেন… আরে এত বড়ো খাট… ৫ জন ঘুমনো যায়… আমরা বুড়ো হয়েছি বাবা… একটু গাদাগাদি করে শুলে শীত কম লাগে. আর তোমরা ছেলে মানুষ… তোমাদের সাথে আর কি কথা বলবো বলো? আমরা ২ বুড়ি একটু সুখ দুখের কথা বলে শান্তি পাই আর কী. তুমি আর আপত্তি করো না বাবা.
বললাম অঙ্কিতার কস্ট হতে পারে.
অঙ্কিতা বলল… না না… কিসের কস্ট? মাসীমা আমাদের ঘরেই থাকবেন. বাংলা সীরিয়ালের শ্বাশুড়ি বৌমার ঝগড়া নিয়ে চুল ছেড়া বিশ্লেষন তো আমাকে দিয়ে হয় না… তাই মা সুখ পায় না… মাসীমা থাকলে মায়ের সুবিধাই হয়.
আর যাকে নিয়েই কিছু বলো না কেন… বাঙ্গালী মা মাসীমা দের বাংলা সীরিয়াল নিয়ে কিছু বোলো না… তাহলে তারা কোনদিন ক্ষমা করবেন না… বলে গেছেন স্বামী টেলিভিসানন্দ.
দুজনেই ঝাঝিয়ে উঠলেন… বাজে কথা বলবি না… বেস করি সীরিয়াল দেখি… তোদের কী?
আমরা দুজনেই হেসে উঠলাম… বললাম ক্ষমা করো জননী… বেচে থাক তোমাদের বাংলা সীরিয়াল. তারপর দুজন পান সাজাতে বসলো…
আমি বললাম আচ্ছা আমি যাই তাহলে… তোমার ব্যাগ কি এই ঘরেই দিয়ে যাবো?
মা বললেন ব্যাগ দিতে হবে না… আমার হাত ব্যাগটা… ওসুধের বাক্স.. আর পানের বাটাটা দিয়ে যা.
অঙ্কিতা বলল… চলো আমি নিয়ে আসছি.
একটা কথা স্বীকার করতেই হয়…. ভাগ্য-দেবী আমার উপর সব সময় সদয় থাকেন… এটা আমি বহুবার দেখেছি. ট্যুর শুরু হতেই ২ দুজনকে জুটিয় দিয়েছেন. এখন আবার ফাঁকা রূমেরও ব্যবস্থা করে দিলেন. এটা সত্যিই আমি আশা করিনি.
একটা আস্ত রূম এখন আমার একার দখলে. আর আমার মা যেমন কুড়ে আর আদদবাজ় মানুষ.. এঘরের মুখো আর হবেন বলে মনে হয় না. সুতরাং এই ঘরে আমি যা খুশি করতে পারি… কেউ দেখার নেই.
অঙ্কিতা আমার পিছন পিছন আমার রূমে এলো. আমি মায়ের জিনিস পত্র গুছিয়ে নিচ্ছি… ও বেডের এক কোনায় হেলান দিয়ে বসলো. তারপর বলল… তাহলে উমা বৌদিকে সুখী করার কাজ আজ থেকেই শুরু করে দিলে?
আমি অবাক হয়ে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলাম.
ও বলল… বৌদির মুখ দেখলেই বোঝা যায়… বিষাদের ছাপটা আর নেই… খুশি খুশি লাগছে… সত্যি করে বলো… কিছু করেছ?
আমি হেঁসে ফেললাম… বললাম এই সব ব্যাপারে তোমাদের মেয়েদের মাথাটা কংপ্যূটারের চাইতে দ্রুত কাজ করে. কিছুতে লুকানো যায় না. হ্যাঁ একটু খুশি করে দিলাম.
অঙ্কিতা বলল… কতটা?
বললাম… অনেককককক টাআআআআ !
তারপর বললাম… বৌদি কিন্তু তুমি দুঃখ পাবে বলে তোমাকে এখনই বলতে নিষেধ করেছিল.
অঙ্কিতা বলল… ধুর… আমি সেরকম মেয়ে না. আমাকে কোনো ভাবেই হিংসুটি বলতে পারবে না. আর আমি ভীষণ ওপেন মাইংডেড… তুমি যা খুশি করতে পার… আমি একটুও রাগ করবো না.
আমি এগিয়ে এসে অঙ্কিতার মুখটা ২ হাতে ধরে কপালে একটা চুমু খেলাম. তারপর ওর ঠোটে গভীর চুমু দিলাম. অঙ্কিতা ছটফট করে উঠলো. আমি ওর নীচের ঠোটটা মুখে নিয়ে চুষতে শুরু করলাম. অঙ্কিতা আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার চুমুতে সারা দিতে শুরু করলো. ২/৩ মিনিট পরে অঙ্কিতা জোড় করে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলো. বলল… এই… মা আর মাসীমা অপেক্ষা করছে… ছাড়ো প্লীজ.
আমি বললাম চলো তোমাকে এগিয়ে দি. জিনিস গুলো নিয়ে দুজনে ওদের ঘরের দিকে চললাম. দরজা ভেজানো ছিল… ঠেলতেই খুলে গেল… দেখি মা আর মাসীমা পাশাপাশি কম্বল গায়ে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে. লম্বা জার্নীর ধকল… ২ জনেই মৃদু মৃদু নাক ডাকছে.
All the contents posted by me have been downloaded from the internet. Credit goes to the original uploaders. Anyone having any issues with pictures posted, please message for removal.
[+] 2 users Like stallionblack7's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: কাশ্মীর ভ্রমন… ১৪ দিনের ট্যুর..... - by stallionblack7 - 20-01-2019, 02:05 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)