02-11-2019, 08:29 PM
ভুমিকা (০২)
সমরের জন্ম বাংলাদেশের এত প্রত্যন্ত গ্রামে।
বছরের আট মাস ওদের বাড়ি জলে ঘেরা থাকে।
আপনারা যদি অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নীলকণ্ঠ
পাখির খোঁজে’ পড়ে থাকেন তবে বুঝতে
পারবেন কিরকম জায়গায় সমর থাকতো। একবার
দুর্ভিক্ষের সময় ওদের বাড়িতে কোন খাবার
নেই। সমরের মা, ভাই, বোন সবাই না খেতে
পেয়ে বিছানায় শুয়ে আছে। নড়াচড়াও প্রায়
করতে পারছে না। সমর আর ওর বাবা সাতদিন ধরে
কোন খাবার জোগাড় করতে পারেনি। সমরের
বাবা ওকে বললেন বিল শুকিয়ে গেলেও অনেক
জায়গাতে একটু জল জমে থাকে আর সেই
জলে হয়ত মাছ থাকবে। সমর মাছ খুঁজতে
বেরোয়। সারাদিন প্রখর রোদের মধ্যে ঘুরে
ঘুরে তিনটে জল জমা জায়গা থেকে ছ’টা ল্যাটা মাছ
সংগ্রহ করে বাড়ি ফেরে। কিন্তু বাড়ি ফিরে
দেখে ওর মা আর বোন মারা গিয়েছে। ভাইয়ের
আর বাবার অবস্থাও খুব খারাপ। সমরের নিজের
অবস্থাও ভাল না। সমর আগে ধরে আনা মাছ গুলো
আগুনে পুড়িয়ে নুন মাখিয়ে ভাই আর বাবাকে
খাওয়ায়। তারপর নিজেও খায়। তিনজনে খেয়ে
সুস্থ হলে মা আর বোনের মৃতদেহ নিয়ে
সৎকার করতে যায়। সমরের বাবা বলেন, "এই মাছ
যদি দুদিন আগে ধরতিস তবে তোর মা আর বোন
বেঁচে থাকতো।"
এখন দিন বদলেছে, সমর বাবুরা অনেক স্বচ্ছল
ভাবে আছে। কিন্তু উনি সবসময় বাঁচার জন্যে মাছ
ধরে রাখতে চান।
প্রতিটি পাগলের জীবনেই এই রকম একটা ঘটনা
আছে। পাগলের পাগলামি দেখে আমরা হাসি কিন্তু
আমি নিশ্চিত সেই পাগলামির কারন জানলে আমরা
কেউই হাসব না। পাগলদের রাখা হয় পাগলা গারদে।
এই জায়গাটাকে সবাই সব সময় হাসির খোরাক
হিসাবেই দেখে এসেছে। আমি রাঁচিতে অনেক
দিন ছিলাম। অনেক আত্মীয় বা বন্ধুরা কথা বলার
সময় এক বার না এক বার রাঁচির পাগলা গারদ নিয়ে ইয়ার্কি
করবেই। আমাদের পাগলা গারদ নিয়ে পরিচয় প্রধানত
সিনেমা থেকে। আর আজ পর্যন্ত যত সিনেমায়
পাগলা গারদ দেখানো হয়েছে তার ৯৫%-ই হাস্য
রসের জন্যে। আমরাও কোন মানসিক
ভারসাম্যহীন মানুষকে পাগল বলতেই ভালবাসি।
মনের কোন অসুখের জন্যেই মনস্তত্ববিদ বা
সাইকোলজিস্ট –এর কাছে গেলেই আমরা বলি
“জান তো ওই ছেলেটা না পাগল হয়ে গেছে।”
আমরা বুঝিনা বা অনেকেই জানিনা যে তথাকথিত
“পাগলামি” আসলে একটা অসুখ আর চিকিৎসা করলে
সেটা ভাল হয়ে যায়। মুন্নাভাই সিনেমায় ডাক্তাররা
এটাকেই ‘কেমিক্যাল লোচা’ বলেছিল। যেহেতু
আমি অনেক দিন রাঁচিতে ছিলাম আর কাজের জন্যে
অনেকবার রাঁচির পাগলা গারদে গিয়েছি আমি ওদের
অনেক কাছ থেকে দেখেছি। অনেক তথাকথিত
পাগলের সাথে কথা বলেছি। কিছু ঘটনা দেখে
প্রথমে হাসি এসেছে ঠিকই কিন্তু পরে ভেবে
দেখেছি সেটা কোন হাসির জিনিসই নয়। বরঞ্চ
অনেক দুঃখের ঘটনা। দুঃখ অনেক বেশীই
দেখেছি। নৃশংসতাও দেখেছি।
সমরের জন্ম বাংলাদেশের এত প্রত্যন্ত গ্রামে।
বছরের আট মাস ওদের বাড়ি জলে ঘেরা থাকে।
আপনারা যদি অতীন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নীলকণ্ঠ
পাখির খোঁজে’ পড়ে থাকেন তবে বুঝতে
পারবেন কিরকম জায়গায় সমর থাকতো। একবার
দুর্ভিক্ষের সময় ওদের বাড়িতে কোন খাবার
নেই। সমরের মা, ভাই, বোন সবাই না খেতে
পেয়ে বিছানায় শুয়ে আছে। নড়াচড়াও প্রায়
করতে পারছে না। সমর আর ওর বাবা সাতদিন ধরে
কোন খাবার জোগাড় করতে পারেনি। সমরের
বাবা ওকে বললেন বিল শুকিয়ে গেলেও অনেক
জায়গাতে একটু জল জমে থাকে আর সেই
জলে হয়ত মাছ থাকবে। সমর মাছ খুঁজতে
বেরোয়। সারাদিন প্রখর রোদের মধ্যে ঘুরে
ঘুরে তিনটে জল জমা জায়গা থেকে ছ’টা ল্যাটা মাছ
সংগ্রহ করে বাড়ি ফেরে। কিন্তু বাড়ি ফিরে
দেখে ওর মা আর বোন মারা গিয়েছে। ভাইয়ের
আর বাবার অবস্থাও খুব খারাপ। সমরের নিজের
অবস্থাও ভাল না। সমর আগে ধরে আনা মাছ গুলো
আগুনে পুড়িয়ে নুন মাখিয়ে ভাই আর বাবাকে
খাওয়ায়। তারপর নিজেও খায়। তিনজনে খেয়ে
সুস্থ হলে মা আর বোনের মৃতদেহ নিয়ে
সৎকার করতে যায়। সমরের বাবা বলেন, "এই মাছ
যদি দুদিন আগে ধরতিস তবে তোর মা আর বোন
বেঁচে থাকতো।"
এখন দিন বদলেছে, সমর বাবুরা অনেক স্বচ্ছল
ভাবে আছে। কিন্তু উনি সবসময় বাঁচার জন্যে মাছ
ধরে রাখতে চান।
প্রতিটি পাগলের জীবনেই এই রকম একটা ঘটনা
আছে। পাগলের পাগলামি দেখে আমরা হাসি কিন্তু
আমি নিশ্চিত সেই পাগলামির কারন জানলে আমরা
কেউই হাসব না। পাগলদের রাখা হয় পাগলা গারদে।
এই জায়গাটাকে সবাই সব সময় হাসির খোরাক
হিসাবেই দেখে এসেছে। আমি রাঁচিতে অনেক
দিন ছিলাম। অনেক আত্মীয় বা বন্ধুরা কথা বলার
সময় এক বার না এক বার রাঁচির পাগলা গারদ নিয়ে ইয়ার্কি
করবেই। আমাদের পাগলা গারদ নিয়ে পরিচয় প্রধানত
সিনেমা থেকে। আর আজ পর্যন্ত যত সিনেমায়
পাগলা গারদ দেখানো হয়েছে তার ৯৫%-ই হাস্য
রসের জন্যে। আমরাও কোন মানসিক
ভারসাম্যহীন মানুষকে পাগল বলতেই ভালবাসি।
মনের কোন অসুখের জন্যেই মনস্তত্ববিদ বা
সাইকোলজিস্ট –এর কাছে গেলেই আমরা বলি
“জান তো ওই ছেলেটা না পাগল হয়ে গেছে।”
আমরা বুঝিনা বা অনেকেই জানিনা যে তথাকথিত
“পাগলামি” আসলে একটা অসুখ আর চিকিৎসা করলে
সেটা ভাল হয়ে যায়। মুন্নাভাই সিনেমায় ডাক্তাররা
এটাকেই ‘কেমিক্যাল লোচা’ বলেছিল। যেহেতু
আমি অনেক দিন রাঁচিতে ছিলাম আর কাজের জন্যে
অনেকবার রাঁচির পাগলা গারদে গিয়েছি আমি ওদের
অনেক কাছ থেকে দেখেছি। অনেক তথাকথিত
পাগলের সাথে কথা বলেছি। কিছু ঘটনা দেখে
প্রথমে হাসি এসেছে ঠিকই কিন্তু পরে ভেবে
দেখেছি সেটা কোন হাসির জিনিসই নয়। বরঞ্চ
অনেক দুঃখের ঘটনা। দুঃখ অনেক বেশীই
দেখেছি। নৃশংসতাও দেখেছি।