Thread Rating:
  • 43 Vote(s) - 3.26 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
মধ্যরাত্রে সূর্যোদয় (Dawn at Midnight) Written By pinuram
#3
তিস্তা একটি নদীর নাম (#02)

আমরা তিনজনে ট্যাক্সি চেপে তিস্তার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। আমি মাঝখানে বসে আর আমার দুপাশে তিস্তা আর ডেলিসা। তিস্তা সবসময়ে জিন্স আর টপ পড়তে ভালবাসত, মাঝে মাঝে স্কার্ট পড়ত বইকি কিন্তু কোনদিন সালোয়ার পড়তে দেখিনি ওকে। ওর স্কার্ট গুলো বেশ ছোটো হত, হাঁটু পর্যন্ত আর মসৃণ পা দেখে ছেলেদের অবস্থা খারাপ হয়ে যেত। ডেলিসা একদম অন্য স্বভাবের মেয়ে, সবসময়ে সালোয়ার পরে কলেজে আসতো। সেই প্রথম দিনের পরে আর কোনদিন ও * পরেনি। কিন্তু ওর সালোয়ার গুলি ভারী সুন্দর দেখতে হত।

সেই চিতকুলের ভ্রমণের পরে আমি আর কোনদিন জিন্স পড়িনি। একদিন ছোটমায়ের নজর লুকিয়ে আমি আমার জিন্স আর সেই তুঁতে রঙের লেহেঙ্গা একটা প্ল্যাস্টিকের প্যাকেটের মধ্যে মুড়ে মেডিকেল কলেজের ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছিলাম। কেন আর ওই সব কাপড় পড়া, কার জন্য পড়া।

আমার দুপাশে ওরা দুজনে বসে গল্প করে আর কুকুর বিড়ালের মতন মারামারি শুরু করে। ওদের বেশির ভাগ থাপ্পর আমার বুকে হাতেই লাগছিল। আমি ওদেরকে জোর গলায় বলি, “তোরা যদি মারামারি না থামাস তাহলে কিন্তু তোদের মাথা ঠুকে দেব এবারে।”

ডেলিসা আমার দিকে তাকিয়ে মজা করে বলে, “বাঃ বা, মিতা ম্যাডাম আবার রাগ করতে ও জানে। আচ্ছা মিতা তোমার বয়স কত?”

আমি জানাই যে আমার বয়স ছাব্বিশ। আমার বয়স শুনে ওরা আরও অবাক হয়ে গেল, আমি ওদের চেয়ে প্রায় বছর চারেকের বড় ছিলাম। তিস্তা মজা করে বলে, “ধ্যাত, মিথ্যে কথা। তোমার সামনে ত আমরা তাহলে কচি বাচ্চা।”

ডেলিসা, “তোমার ঠিক সময়ে বিয়ে হলে তিস্তার মতন মেয়ে হয়ে যেত...”

তিস্তা আমার দিকে মজা করে হাত জোর করে বলে ওঠে, “মিতা মাতা, প্রনাম নেবেন।”

আমি হেসে ফেলি ওর কার্যকলাপ দেখে।

তিস্তার বাড়ি তিনতলা। একতলায় ভাড়া থাকে। দুতলায় ওর দাদা বৌদি আর তিনতলায় বাবা মায়ের তিস্তা থাকে। আমরা বাড়ি পৌঁছতেই ওর বৌদি আমাদের জন্য দরজা খুলে দেন। তিস্তা বৌদিকে জড়িয়ে ধরে আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল, “আমার বৌদি, বনানিদি।”

তারপরে আমাদের দিকে তাকিয়ে আমাদের পরিচয় দেয়।

তিনতলায় ওর ঘরে নিয়ে যায় তিস্তা। ঘরে ঢুকে দেখি দেয়ালে একটা বিশাল সোয়ার্জেনেগারের পোস্টার টাঙ্গানো। মাংস পেশি ফুলিয়ে একটা পাহাড়ের ওপরে দাঁড়িয়ে আছে সেই লোক।

ডেলিসা পোস্টার দেখে তিস্তা কে মজা করে বলে, “কিরে সোয়ার্জেনেগার কি রাতে তোর স্বপ্নে আসে?”

তিস্তা ডেলিসার কথা শুনে বলে, “উম্মম্মম্ম... মাল কি বলব, যেদিন ও পোস্টার থেকে বেড়িয়ে আসবে সেদিন আমি ওর হাতে নিজেকে সমর্পণ করে দেব।”

আমার দিকে তাকিয়ে তিস্তা বলে, “দাঁড়িয়ে কেন? পোস্টার দেখে পায়ের ফাঁকে কিছু হয়ে গেল নাকি তোমার?”

বলেই আমার পেছনে আদর করে চাঁটি মারে।

আমি কাঁধের ব্যাগ বিছানায় ছুঁড়ে ফেলে ওর বিছানায় চেপে বসে পরি। আমি ওর দিকে দুষ্টুমি ভরা হাসি দিলে জিজ্ঞেস করি, “পোস্টারের সাথে প্রেম করে কি লাভ দেবে।”

ডেলিসা হেসে আমাকে জিজ্ঞেস করে, “হুম ... মিতার যেরকম দেখতে মেয়ে ঠিক সেই রকম নয়, ও অনেক ডুবে ডুবে জল খায়।”

আমি ওদের দিকে চেঁচিয়ে উঠি, “এই তোদের কি সেই সব কথা ছাড়া আর কোন কথা মুখে আসে না?”

তিস্তা আমার ওপরে ঝাঁপিয়ে পরে। আমি পেটের ওপরে শুয়ে ছিলাম, তিস্তা আমার পিঠের ওপরে শুয়ে পরে আমাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে। দেহের দুপাশ থেকে হাত নিচে করে বুকের কাছে এনে চাপ দেয়। তিস্তা চেপে ধরে মজা করে বলে, “সোনা মেয়ে, একদিনে ত মাল এত ফোলেনি তোমার, সত্যি কথা বলত।”

বুকের ওপরে তিস্তার নরম আঙ্গুলের পরশ আমার বুকের মাঝে সেই পুরানো আগুন ধুক করে জ্বলে ওঠে। শিরদাঁড়ার ওপর দিয়ে যেন এক বিদ্যুৎ খেলে চলে যায়। আমি ঘুরে যাই আর ওকে আমার পিঠ থেকে বিছানায় ফেলে দেই। ওর চাপের ফলে আমার শরীর অল্প গরম হয়ে গেছিল আর সারা মুখ লাল হয়ে উঠেছিল।

তিস্তা ডেলিসার দিকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে বলে, “দেক ওর বুক, দানিস টিপে টিপে কত বড় করে দিয়েছে।”

ডেলিসা তিস্তার ওপরে ঝাঁপিয়ে পরে ওর শার্ট খুলে ফেলে দেয়। তিস্তার নরম উন্নত বুক জোরা কালো অন্তর্বাসে ঢাকা আমাদের চোখের সামনে উন্মুক্ত হয়ে যায়।

তিস্তা চেঁচিয়ে ওঠে ডেলিসার দিকে, “হুম... গরম হয়ে গেছিস মনে হচ্ছে।”

বুক নাচিয়ে দেয় আমাদের চোখের সামনে, দুটি পীনোন্নত বুক জোরা কালো অন্তর্বাসের ভেতরে যে একে ওপরকে ঠেলে ধরে রাখে, এই যেন ফেটে বেড়িয়ে পড়বে এর একটু হলে।

ডেলিসা ওর ফোলা ফোলা বুকের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “কি রে, কয় জোরা হাতের চাপ খেয়েছিস তুই?”

তিস্তা ছাদের দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষণ ভেবে উত্তর দেয়, “উম্মম... চার জোরা হাত বে।”

আমি অবাক হয়ে বলি, “বাপ রে চার জোরা? তুই পারিস বটে।”

তিস্তার কথা শুনেই আমার মনের মধ্যে সেই পুরানো দিনের প্রেমের কথা মনে পরে যায় আর সারা শরীর কেঁপে ওঠে।

তিস্তা আমার চোখের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “হুম, তোমার ভেতরে কেমন যেন হচ্ছে তাই না।”

আমি চেঁচিয়ে উঠি, “না না না...”

প্রানপন চেষ্টা করি আমার মনের সেই উষ্ণ প্রানবন্ত দিন গুলির কথা ঢেকে রাখতে।

তিস্তা শুরু হয়ে যায় ওর গল্প বলতে, “একটা ছিল আমি যখন ক্লাস টেনে পড়তাম। খুব বাচ্চা বাচ্চা প্রেম ছিল সেই সময়ে, তাই কয়েকটা চুমু আর জড়াজড়ি ছাড়া কিছুই হয় নি। যা শালা, আমি ত ওর নাম টাও ভুলে গেছিরে। যাক, তার পরে হল, বিক্রমজিত, যখন আমি ক্লাস টুয়েল্ভে পড়ি। মাল, প্রথম ছোঁয়া ওর কাছ থেকে পেয়েছিলাম। সারা শরীরে একদিন চুমু খেয়েছিল, উম্মম, ভুলতে পারব না সেই ফিলিংস।”

ডেলিসাও কম যায়না, তিস্তার জিন্সের ওপর দিয়ে জানুসন্ধি চেপে ধরে বলে, “আর এটার ছিপি কে খুলেছে রে?”

ডেলিসা চাপ দেয় আর তিস্তা শীৎকার করে ওঠে আনন্দে, “না রে, এখন ত তুই আমার ওখানে ঝাঁট জ্বালিয়ে দিলি। বিক্রমজিত মাল বেল্টের নিচে নামেই নি।”

ওদের কথা শুনে আমার ত মাথা ঘুরতে শুরু করে দিয়েছিল, এই সহুরে মেয়েদের কার্যকলাপ বড় উদ্ভট মনে হয়েছিল। ডেলিসা আমার চকচক চোখের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “মিতা এত চুপ করে কেন ভাই, কিছু তুমি ও বল।”

আমি লজ্জায় লাল হয়ে বললাম, “ধ্যাত, তোরা দুজনে না একদম যাতা। তিস্তা তোর গল্প শুনি তাই বল।”

তিস্তা আমার দিকে তাকিয়ে উত্তর দেয়, “আমি ত আমারটা বলব, কিন্তু তোমার গল্প শুনি না।”

আমি, “না রে আমার কোন গল্প নেই।”

ডেলিসা আমার দিকে তাকিয়ে ম্লান হেসে উত্তর দেয়, “সতী মেয়েরে মিতা। একজনের কাছেই শেষ পর্যন্ত নিজেকে ধরা দেবে।”

আমি মনে মনে হেসে ফেলি ওর কথা শুনে, “হ্যাঁ একজনের কাছেই আমি আমার সব কিছু বিসর্জন দিয়েছি আর তাঁর জন্য আমার মনে কোন ক্ষোভ বা দুঃখ নেই।”

তিস্তা ডেলিসা কে জিজ্ঞেস করে, “তুই দানিসের কথা বল, খাটে কেমন ও?”

ডেলিসা, “কেন রে, তুই টেস্ট করতে চাস নাকি?”

তিস্তা, “দেখি না শুনে, তোরটা কেমন আর আমার টা কেমন।”

ডেলিসা ঠোঁট কুঁচকে মৃদু চিৎকার করে ওঠে, “উফফফ... আর সেই দিনের কথা মনে করাস না ভাই, জল চলে আসে।”

আমি ওর কথা শুনে উৎসুক হয়ে উঠি, পরে অবশ্য ভেবেছিলাম যে সেদিন কি হয়েছিল আমার মনের কোনে। আমি ওকে জিজ্ঞেস করি, “বল বল কি করেছিল সেদিন তোর সাথে।”

ডেলিসা মৃদু শীৎকার করে ওঠে ওর সেই রতিক্রিয়ার কথা মনে করে, “কি বলব তোদের, ছাল নামানো, শক্ত যেন লোহার মুগুর আর আগুনের মতন গরম। যখন ঢুকিয়েছিল আমার ভেতরে মনে হয়েছিল যেন মাথা ফুড়ে বেড়িয়ে আসবে, আমি ব্যাথায় ককিয়ে উঠেছিলাম, কিন্তু মাল সেই যে সুখ, উম্মম... ”

তিস্তা শয়তানি হাসি দিয়ে বলে, “তোদের এটাই বড় সুখের।”

ডেলিসা বড় বড় চোখ করে জিজ্ঞেস করে, “মানে?”

আরও একটা শয়তানি হাসি মাখিয়ে উত্তর দেয় তিস্তা, “কলেজে আমার ছিপি খোলে আহিল।”

আমি অবাক, “হ্যাঁ কি বলিস, তাহলে শুধু বুদ্ধিসিম আর ক্রিস্টিয়ান্স বেঁচে আছে তোর হাত থেকে নাকি ওদের খাওয়াও হয়ে গেছে?”

তিস্তা, “আরে না না, আহিল সাথে ত চুরান্ত খেলা চলেছিল। ওর সাথে কি আর প্রেম করেছিলাম নাকি?”

তিস্তা আমাদের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে, “তোরা জিন্স পরিস না?”

আমরা দুজনেই মাথা নাড়াই, “না জিন্স পড়িনি।”

তিস্তা, “উফ, তাহলে তোদের বুঝাই কিকরে সেই শিরশিরানি।”

আমি ওকে জিজ্ঞেস করি, “জিন্সে আবার কিসের শিরশিরানি?”

তিস্তার ঠোঁটে দুষ্টুমির হাসি, “তোরা নিচে সবসময়ে প্যান্টি পরিস তাই না।”

ডেলিসা কিছুই বুঝতে পারছেনা আমিও তথৈবচ।

তিস্তা চোখ বন্ধ করে নিজের জানু মাঝে আঙ্গুল চেপে ধরে বলে, “জিন্সের স্টিচ যখন ওখানে ঘষা খায়, কি যে শিরশিরানি হয় সেখানে সেটা কি আর আমি বলে বুঝাতে পারব তোদের? ভেতরে পান্টি না পরে শুধু জিন্স পড়লে ওখানে দারুন লাগে। হাঁটতে চলতে উঠতে বসতে পায়ের ফাঁকে ঘষা খায় আর আমি মাল একদম ভিজে যাই। সারা পেটের মধ্যে কেমন যেন করে ওঠে।”

বলতে বলতে হটাত তিস্তা আমার জামার কলার ধরে আমাকে চিত করে শুয়িয়ে দিল বিছানার ওপরে। আমার লাল নরম ঠোঁটের ওপরে নিজের ঠোঁট চেপে ধরে, আমার নরম বুকের ওপরে নিজের বুক চেপে ধরে তিস্তা। আমাদের দুজনের চাপের ফলে নরম সুগোল বক্ষ পিষে যায়, আমার বুক যেন অন্তর্বাসের ভেতর থেকে ফেটে বেড়িয়ে আসে। আমি নিজেকে ধরে রাখতে পারিনা, ওর মাথার পেছনে হাত দিয়ে ওর মুখ খানি আরও নিজের ঠোঁটের ওপরে চেপে ধরি। জীবনের সেই প্রথম বার একটা মেয়ের চুম্বনে আমার শরীর গরম হয়ে ওঠে। আমার বুকের নুড়ি পাথরের মতন শক্ত হয়ে যায়, তিস্তার নুড়ি আমার বুকের ওপরে যেন দাগ কেতে দেয় তপ্ত পেরেকের মতন। আমি সম্পূর্ণ পাগল হয়ে উঠেছিলাম কামনার আগুনে। তিস্তা আমার মুখের ভেতরে জিব ঢুকিয়ে দেইয়ে আমার জিব নিয়ে খেলা করতে শুরু করে দেয়। আমি ওর ঠোঁটের সিক্ত মধু খেতে শুরু করে দেই। তিস্তা আমার ঠোঁটে ঠোঁট চেপে আমার মুখের ভেতরের হাওয়া শুষে নেয়। আমি ওর মাথা আরও জোরে চেপে ধরি ঠোঁটের ওপরে। কিছু পরে তিস্তা আমার ঠোঁট ছেড়ে দেয়, দুজনেই উত্তপ্ত হয়ে গিয়েছিলাম সেদিনের খেলায়। দুজনেই আগুনে ঝলসে হাপাতে থাকলাম। তিস্তার কামনা ভরা চোখ দুটি যেন আমাকে ঝলসে দিয়েছিল। আমি ডেলিসার দিকে তাকিয়ে দেখি, দুষ্টুমি ভরা হাসি মেখে আমাদের দিকে তাকিয়ে ছিল সে।

ডেলিসা আমাদের কার্যকলাপ দেখে হেসে বলে, “তোরা তোদের প্রেমলিলা চালিয়ে যা আমাকে আবার পার্কসার্কাস ফিরতে হবে।”

আমি উঠে বসে জামা আর স্কার্ট ঠিক করে নেই। তিস্তা আমার হাত ধরে অনুনয় করে বলে ফেলে, “সরি মিতা, আমি জাস্ট বয়ে গেছিলাম একটু।”

আমি ওর দিকে চোখ টিপে হেসে বলে ফেলি, “নারে সরি কেন, আমার বেশ ভালো লেগেছে রে।”

তিস্তা আমাদের আরও কিছুক্ষণ থেকে যেতে বলে। কিন্তু বাড়িতে বাবু আমার পথ চেয়ে বসে থাকবে তাই আমাকে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে হয় সেদিন। বাড়ি ফেরার আগে তিস্তা নিজের বুকের দিকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে হেসে বলে, “এই মুরগি একটা নতুন মোরগ ধরেছে।” বাসস্টান্ড পর্যন্ত তিস্তা আমাদের এগিয়ে দিয়েছিল সেদিন।

পুজোর ছুটির কিছু দিন আগের ঘটনা। তিস্তা আর আমি কলেজের গেতে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তিস্তা আমাকে সেদিন কারুর সাথে দেখা করাবে বলেছিল। আমি ওকে জিজ্ঞেস করাতে উত্তর দেয় যে আগের দিন যার কথা বলেছিল তাঁর সাথে আমার দেখা করাতে চায়।

আমি, “তুই কবে তোর নতুন মোরগের কথা আমাকে বলেছিস?”

তিস্তা, “যা বাবা, মিতা। এই ত সেদিন তোমাকে বলেছিলাম না। অইজে যেদিন আমি আর তুমি বাসের অপেক্ষা করছিলাম।”

আমি মাথা নারলাম, হ্যাঁ মনে পড়েছে।

কিছু পরে একটা এই পঁচিশ ছাব্বিশ বছরের ছেলে আমাদের দিকে আগিয়ে এসে তিস্তাকে দেখে হাসল। তিস্তা ওর দিকে দৌড়ে গিয়ে হাত জড়িয়ে ধরে। ও আমার দিকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে আমার পরিচয় করিয়ে দিল। আমি হাত জোর করে অভিবাদন জানালাম। ছেলেটা আমার হাতজোর দেখে হেসে বলে, “আমি কাকুর মতন এখন বুড়ো হয়ে যাইনি যে হাতজোড় করে প্রনাম জানাতে হবে।”

তিস্তার চেয়ে ছেলেটা বেশ লম্বা। ছেলেটা দেখতে বেশ সুদর্শন, চওড়া কাঁধ পেটান চেহারা। নীল স্ট্রাইপ শার্ট আর ধুসর রঙের পান্টে বেশ দেখাচ্ছিল ছেলেটাকে। পাশাপাশি তিস্তা আর ছেলেটাকে দেখে আমার খুব ভালো লেগেছিল ওদের জুটি। ওদের দেখে আমার সেই পুরানো দিনের কথা মনে পরে যায়, আমি আর ও একসাথে এই রাস্তা দিয়ে হাত ধরে বেশ কয়বার হেঁটে গেছি।

তিস্তা আমাকে বলে, “এ, তির্থাঙ্কর সেনগুপ্ত। যাদবপুর উনিভারসিটি থেকে নিউক্লিয়ার ফিসিক্সে পিএইচডি করছে।”

আমি তিস্তার হাত ধরে একপাসে টেনে জিজ্ঞেস করি, “কিন্তু দেবব্রত সেদিন অন্য কোন ছেলের নাম বলেছিল যে?”

আমার কথা শুনে তিস্তা একটু বিরক্তি ভরা চাহনি দেয় আমার দিকে, “চুপ চুপ, একদম ওই কথা মুখে আনবে না।”

আমি তিস্তার কথায় সব কিছু বুঝে নিলাম।

তিস্তা তিরথাঙ্করকে জিজ্ঞেস করে, “তীর্থ, গাড়ি এনেছ?”

আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করি, “ওরে বাবা, গাড়ি ও আছে ওর কাছে?”

আমার কানেকানে বলে, “বাপ মায়ের একমাত্র ছেলে আর ওর বাবা খুব বড়োলোক।”

তিরথাঙ্কর আমাকে একবার পা থেকে মাথা পর্যন্ত চোখ বুলিয়ে নিল। তিস্তার দিকে কম আর আমার দিকে যেন বেশি করে চেয়ে দেখছিল তির্থাঙ্কর। ওর চোখের চাহনি আমার ঠিক ভালো লাগেনি, কেমন যেন লম্পট ছেলদের মতন হাঁ করে তাকিয়েছিল।

আমি তিস্তা কে বললাম, “এই আমি না বাড়ি যাচ্ছি। তোদের বেশি ডিস্টার্ব করব না।”

তির্থাঙ্কর আমাকে বলে, “আরে বাবা, বাড়ি যাবে খানে। অনেক দিন পরে তিস্তা এক সুন্দরী বান্ধবীর সাথে দেখা করাল। তুমি সাথে থাকলে বেশ ভালোই হবে।”

তিস্তা ওর হাতে চিমটি কেটে বলে, “তুমি কি মিতার সাথে ফ্লার্ট করছ? একদম নজর দেবে না ওর দিকে।”

আমি তিস্তাকে জানালাম, “বাবু আমার জন্য অপেক্ষা করে থাকবে রে। আমি না গেলে বাবু চা পাবেনা। তোদের সাথে না হয় অন্য কোনদিন ঘুরতে যাবো।”

অতি ভদ্রতার সাথে ওদের আমন্ত্রন উপেক্ষা করেছিলাম। তির্থাঙ্করের চোখের সেই লিপ্সা মাখা চাহনি আমার একটুও ভালো লাগেনি। মেয়েদের মাথার মধ্যে এক ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় কাজ করে, চোখের চাহনি দেখে বলে দিতে পারে কে কেমন ভাব নিয়ে ওদের দিকে তাকায়। আমি ওদের কে ওখানে ছেড়ে বাসস্টান্ডের দিকে হাটা দিয়েছিলাম। বাসে এল, আমি চরতে যাবো তার আগে দেখলাম যে তির্থাঙ্কর আমার দিকে তাকিয়ে হাত নাড়াল। ওর হাত নাড়ানো দেখে আমার কেমন বিরক্তি লেগেছিল।

আমি বাসে চরতে যাবো আর ঠিক সেই সময়ে কেউ পেছন থেকে আমার খোঁপায় গোঁজা পেন টেনে নেয় আর আমার চুল খুলে যায়। সেই লোকটার আচরনে আমি খুব রেগে যাই আর পেছন ফিরে তাকে বেশ ভালো ভাবে কথা শুনানর জন্য প্রস্তুত ছিলাম। পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখি দেবব্রত আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে। ওর হাসি মুখ দেখে আমার রাগ জল হয়ে যায়।

দেবব্রত আমাকে জিজ্ঞেস করে, “তিস্তার সাথে দাঁড়িয়ে কি করছিলে?”

আমি ওকে উলটো প্রশ্ন করি, “কেন তোমার নজর তিস্তার ওপরে ছিল নাকি?”

দেবব্রত আমার কাছে এসে কানে কানে বলে, “আরে জাননা, কলেজের দিন থেকে ওর ওপরে আমার নজর ছিল, কিন্তু ও তখন একটা '. ছেলের সাথে চুটিয়ে প্রেম করছিল তাই আর আমি ওর দিকে ঘেসিনি।”

আমি ওকে জিজ্ঞেস করি, “কিন্তু সেদিন যে তুমি বললে অন্য কেউ ছিল? কি যেন নাম।”

দেবব্রত, “ও আচ্ছা, তথাগত। আহিল ত ওকে শুধু বিছানায় নেবার জন্য প্রেমের ভান করেছিল, তথাগত ওকে সত্যি ভালবাসত।”

আমি, “এখন তথাগত কোথায়?”

দেবব্রত, “আরে মেয়েটা ডাম্প করে ওকে, বেশি বড়লোকের ছেলে ছিলনা তথাগত, তিস্তার মনের দাম মেটাতে পারেনি, তাই তিস্তা ডিচ করে। গ্রাজুয়েসান শেষ করে স্কলারসিপ নিয়ে বাইরে চলে যায়, কিন্তু ততদিনে অনেক দেরি হয়ে যায়। শালি কুত্তি চিজ, যতক্ষণ না জ্বালা মিটবে ততদিন ওর শান্তি হবে না”

এই বলে হিহি করে হেসে ফেলে।

এই ছিল আমার বান্ধবী তিস্তা, ঠিক যেন পাহাড়ি এক নদী, উচ্ছল উদ্দাম সবসময়ে যেন নেচে বেড়াচ্ছে, কারুর ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তিস্তা, আমার বান্ধবী, তিস্তা একটি নদী।
Like Reply


Messages In This Thread
RE: মধ্যরাত্রে সূর্যোদয় (Dawn at Midnight) Written By pinuram - by Nefertiti - 01-11-2019, 09:42 PM



Users browsing this thread: 8 Guest(s)