01-11-2019, 02:22 PM
আমি বললাম, ‘তা বল, ফোন করলি কেন?’ স্নেহা বলল, ‘আরে একা একা বোর হয়ে গেছি। কতক্ষন আর টিভি দেখব? তাই ভাবলাম বুড়োটার সাথে একটু কথা বলি। অনেকদিন কথা হয় নি।‘ আমি বুড়ো বলাতে কিছু মনে করি নি। এই ইয়ার্কি ওর কমন। মারবেই একবার। আমি বললাম, আচ্ছা, তুই একটা কথা বল স্নেহা। তুই জানিস আমি তোর সাথে বাজে বাজে কথা বলি। তবু কেন ফোন করিস?’ স্নেহা একটু থেমে বলল, ‘তোমাকে আমার ভালো লাগে বলে। তোমাকেই যেন সব কথা বলা যায়। আমি এমনি তোমার সাথে ইয়ার্কি মারি। তোমার কথা আমার ভালোই লাগে।‘আমি ওকে বললাম, ‘ও তাই। তাহলে তো আমি সবসময় বলবো তোকে এই ধরনের কথা। এবারে বল কেন ফোন করেছিলি?’ স্নেহা আমতা আমতা করতে লাগলো। আমি ওর মতিগতি দেখে বললাম, ‘কিরে, উ উ করছিস কেন? বল। কেন ফোন করেছিলি?’ স্নেহা মুখ খুলল, ‘কি করে বলি? আমার না কিচ্ছু ভালো লাগছে না জানো?’ আমি বললাম, ‘সারাদিন ঘরে বসে থাকলে আর ভালো কি লাগবে। বিকেলে তো সামনে একটা পার্ক আছে ওখানে তো একটু ঘুরে বেড়াতে পারিস। মনটাও ভালো হবে আবার ঘোরার ঘোরাও হয়ে যাবে।‘ স্নেহা বিরক্তির সাথে বলল, ‘ধুর পার্কে কে একা একা যাবে?’ আমি বললাম, ‘কেন মায়ের সাথে ঘুরবি।‘ স্নেহা যেন অবাক হোল এমনভাবে বলল, ‘মা? মায়ের সময় কোথায়? পাড়ার বউগুলোর সাথে কথা বলতেই তো মায়ের সময় চলে যায়। তাছাড়া মায়ের সাথে ঘুরতে ভালো লাগে না।‘ আমি আবার বললাম, ‘তাহলে জয়াকে নিয়ে ঘুরতে যা।‘ স্নেহা বলল, ‘আরে বাবা ওকে নিয়ে ঘুরতে যাবো কি। একে তো ওর সংসারের কাজ। তার উপর মা বারন করে দিয়েছে পিসি যতদিন আছে ততদিন যেন আমি একা একা ওই ঘরে না যাই। কি বলতো? কি যে করি।‘ আমি বললাম, ‘তাহলে কি তোর আমার সাথে ঘুরতে ভালো লাগতো?’ স্নেহা বলল, ‘তাতো লাগতই। কিন্তু তোমার সময় কোথায়? সারাদিন কাজ আর কাজ। কি যে এতো কাজ তোমার।‘ আমি ওকে পরামর্শ দিলাম, ‘তাহলে এবারে একটা কাজ করবি। আমি ফিরে এসে তোকে ফোন করে দেব। তুই চলে আসবি আমার কাছে। তুই আর আমি বসে বসে গল্প করবো।‘ স্নেহা বলল, ‘ওরে বাস্*, মা যেতে দেবে? একে তো তুমি রাতে ফের। তারপর তোমার ওখান থেকে আমাকে কে নিয়ে আসবে?’ আমি বললাম, ‘ছেড়ে দে বাপ। এতোগুলো অপশন দেবার পরও তোর যদি প্রব্লেম না মেটে তাহলে অ্যাই কান্ট হেল্প ইউ।‘ স্নেহা বলল, ‘আরে তাইতো আমি তোমার কাছে বলতে চাইছিলাম। তুমি বলতে দিলে কোথায়?’ আমি বললাম, ‘হ্যাঁ হ্যাঁ। কি যেন বলতে গিয়ে তুই আমতা আমতা করছিলি। বল, এবারে বল।‘ স্নেহা উত্তর দিল, ‘তাইতো, বুঝতে পারছি না কি করে বলবো। তুমি আবার ইয়ারকি মারা শুরু করে দেবে শুনলে পরে।‘ আমার মনে কেমন যেন খটকা লাগলো। কি বলতে ও এতো হোঁচট খাচ্ছে? তাহলে কি সেই ছেলেটা আবার ওকে বিরক্ত করছে? আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘আচ্ছা তোর মতিগতি দেখে মনে হচ্ছে আবার তোকে যেন কেউ এসএমএস পাঠাচ্ছে। তাই কি?’ স্নেহা ধৈর্য হারিয়ে বলল, ‘আরে দূর বাবা। লোকটা তো একটা যাতা।