01-11-2019, 02:21 PM
আজ কেন? তারমানে ও কি উত্তক্ত তনুর এই ব্যবহারে? পার্থ বলছিল, ‘আমার বড়দির সাথেও এই একি ব্যাপার। বড়দিরা হরিপুরে থাকে বলে ওই ব্যাপারে আমার খুব প্রব্লেম হয় না। কারন ছুটি এমনিতে তো গোনাগুনতি পাই। হরিপুর যাবো কখন বা কোলকাতা যাবো কখন। কিন্তু যেহেতু ছোড়দিরা কোলকাতাতে থাকে, ওই নিয়ে প্রব্লেম।‘ আমি ফুট কাটলাম, ‘কিন্তু ছোড়দি তো তনুকে ভালবাসে?’ পার্থ বলল, ‘ভালবাসে কি বলছিস? খুব ভালবাসে। হ্যাঁ, প্রথমে বিয়ে নিয়ে হয়েছিল একটু মন খোঁটাখুঁটি। কিন্তু ওটা আমার সাথে। ওর সাথে তো কিছু হয় নি?’ আমি বললাম, ‘দ্যাখ তুই হয়তো ওকে বলেছিলি সব ঘটনা।‘ পার্থ বলল, ‘হ্যাঁ, বলেছিলাম ঠিকই। কিন্তু এটাও বলেছিলাম যে আমরা ওদেরকে এতো ভালবাসব যে ওরা জানবে তনুর সম্বন্ধে ওরা যা ভেবেছিল সেটা ভুল।‘ আমি উৎসুক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ‘তনুর সম্বন্ধে ছোড়দি আবার কি ভেবেছিল?’ পার্থ কিছুক্ষন চুপ থেকে বলল, ‘ওটা যদি না বলতে বলিস ভালো হয়।‘ আমিও জোর করলাম না। ও যখন চাইছে না তখন জোর করে লাভ নেই। পার্থ বলল, ‘ইদানিং আবার ওর নতুন রোগ হয়েছে। ছোড়দির কোন খাবার আমাকে খেতে দেবে না। বলে ওর রান্নার থেকে ছোড়দির রান্না আমি ভালো খাই। কি সমস্যা বলতো?’ আমি মাথা নেড়ে সায় দিয়ে বললাম, ‘হুম, তোর খুবই সমস্যা।‘ পার্থ অস্ফুস্ট স্বরে বলল, ‘তনুটা এতো জেদি না।’ আমি ভাবছিলাম স্নেহার ব্যাপারে কিছু বলা উচিত হবে কিনা। ঠিক করলাম না। হয়তো ভাববে আমি খুব বেশি ইন্টারেস্ট দেখিয়ে ফেলছি। সেই মুহূর্তে ড্রাইভার এসে বলল, ‘স্যার, সময় হয়ে গেছে, বাড়ী যাবেন?’ আমি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম প্রায় নটা বাজে। উরি ব্বাস, কথায় কথায় এতো সময় হয়ে গেছে। আমি ল্যাপটপ বন্ধ করে সব গুছিয়ে উঠে পার্থকে বললাম, ‘যাবি নাকি?’ পার্থ বলল, ‘নাহ, তুই যা। একটু কংক্রিটটা দেখে যাই।‘ আমি বললাম, ‘ঠিক আছে, গাড়ী রইল। সময় করে চলে যাস।‘ আমি বাড়ী ফিরে এলাম। ফ্রেস হয়ে টিভি দেখতে বসলাম। কাজী ড্রিংকস দিয়ে গেল। সঙ্গে চাট। ছোলা ভাজা। আমি সিপ করতেই দেখি ফোন বাজছে। উফ বাবা, এই এক মোবাইল হয়েছে। শালা শান্তি বলে কিছু নেই। এই শালা সাইট থেকে ঘুরে এলাম, তখন কোন প্রব্লেম ছিল না। যেই একটু ঘরে আরাম করে ড্রিংক করছি ওমনি ফোন। ঠিক করলাম খিস্তি দেব। উঠে গিয়ে ফোন তুলতে দেখি স্নেহার ফোন। মনটা সঙ্গে সঙ্গে ভালো হয়ে গেল। কতদিন স্নেহা ফোন করে নি। আজ একটু প্রান খুলে কথা বলবো। ওর মা যে খেল দেখাল, তারপরে স্নেহাই পারে মন ভালো করতে। আমি হ্যালো বলতে অপার থেকে স্নেহা বলল, ‘কি হোল ডি, ভুলে গেলে নাকি আমাকে?’ আমি হেসে উত্তর দিলাম, ‘আমার ছোট্ট সোনাকে ভুলতে পারি?’ স্নেহা চট করে বলল, ‘উরি বাবা, আর পারিনা। ছোট্ট সোনা? তা এই ছোট্ট সোনার তো খেয়ালও ছিল না এই ক’দিন?’ আমি বললাম, ‘আরে আর বলিস না। যা কাজের চাপ। পেচ্ছাপ করার সময় নেই।‘ স্নেহা বলল, ‘উফফ, আবার বাজে কথা? তা তোমার বন্ধু তো এসে গেছে। তোমার আবার কি চাপ এখন?’ আমি মনে মনে ভাবলাম এখনি তো বেশি চাপ। কাকে কি বলতে কি বলবে, কি করতে কি করবে সেটাই তো দেখার। কিন্তু মুখে বললাম, ‘যদি তোর বাবাই আমার চাপ কমিয়ে দিতে পারতো তাহলে আমাকে এখানে রেখেছে কেন? কেউ থাকলেই চাপ কমে না, বুঝলি?’ স্নেহা ফাজলামি করে বলল, ‘তোমাকে রেখেছে তো হিরোগিরি করতে। সুন্দর সুন্দর ড্রেস করে যাও, সব মেয়ে লেবারগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকো। ও ছাড়া আর কি কাজ।‘ আমি হাসলাম, বললাম, ‘আরে সেটাও তো একটা কাজ। দেখতে হয় না কেউ কাউকে টিপে দিলো কিনা, বা কেউ জড়িয়ে ধরল কিনা।‘ স্নেহা বলল, ‘ছাড়ো তো, তোমাকে বলার সুযোগ দেওয়া মানে ব্যস হয়ে গেল।