01-11-2019, 02:21 PM
শালা কে কোথা থেকে দেখে নেবে। এটা ছিনতাই করতে হয়তো গলাতেই কোপ মেরে দেবে। ফুলটুসু করতে গিয়ে দেখব বাল গলাটাই চলে গেল ছিনতাইকারীর হাতে। না না এর দরকার নেই বাপ।‘ বর্ষা খুব হেসে বলেছিল, ‘আরে বাবা, তোমার তো খুব ভয় দেখছি। দেখছ না মায়ের লকেট লাগানো আছে। মা তোমায় রক্ষা করবে। পরো, ছেলেদের গলায় সোনার হার থাকলে পুরুষ পুরুষ মনে হয়। জানো না এটা?’ আমি ঠোঁট উল্টে বললাম, ‘কে জানে। ছেলেদের ব্যাপার তোমরাই ভালো জানো।‘ পরে যখন আয়নার সামনে দাঁড়িয়েছিলাম, মনে হচ্ছিল না কিছু পরে আছি। আমার চুলে ভরা প্রশস্ত বুকে সোনার চেন খুব চকচক করছিল। সেই থেকে এই চেন আমার গলায়, আর এখনও পর্যন্ত কেউ এর দিকে নজর পর্যন্ত দেয় নি। আজ তনুর এর উপর নজর পড়লো আর তাও কিনা ওকে গিফট দেব বলে বসল। আমি একদম স্তম্ভিত। ভেবেই উঠে পেলাম না কি করে এটা তনু চাইতে পারলো। তাহলে কি এটা চাইবার জন্যই আমাকে খুশি করা? আমার পেচ্ছাপ মুখে নেওয়া? আমার দেহকে সুখ দেওয়া? এটা কি তনুর অন্য চরিত্র? তনুর গলা শুনে আমার ভাবনার গতিরোধ হোল। তনু বলছে, ‘কিরে কি ভাবছিস? বললি না?’ আমি তনুর দিকে ফিরে তনুর মুখকে দেখলাম। যে মুখ এই মুহূর্তে আমার এক প্রিয় বন্ধুর মুখ ছিল, যে মুখে আমার জন্য এক সুন্দরতা বিরাজমান ছিল সে মুখ তো এটা নয়। কেমন একটা লোভীর মুখ মনে হচ্ছে আমার কাছে। এ মুখ তো আমার পরিচিত নয়। দেখে আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না। আমি মুখে কৃত্রিম হাসি এনে বললাম, ‘কারো পরা জিনিস নিতে নেই তনু। তুই তো ভালো করে জানিস। তোর যখন পছন্দ হয়েছে তখন তোকে আমি একটা বানিয়ে দেব। এটা একটা গিফটের। বর্ষার দেওয়া। গিফটের জিনিস কারোকে দিতে নেই।‘ তনু মেনে নিলো ব্যাপারটা কিন্তু এটা বলে, ‘তাহলে তুই প্রমিস করছিস যে আমাকে বানিয়ে দিবি? কবে দিবি বল?’ আমি বললাম, ‘আজ পর্যন্ত যা বলেছি তা তোকে দিই নি কি? তাহলে চাপ দিচ্ছিস কেন? বলেছি যখন তখন ঠিক বানিয়ে দেব।‘ এরপরে আর ওয়েট করিনি। মিটিঙের দোহাই দিয়ে বেড়িয়ে এসেছিলাম। বলেছিলাম, ‘যাবার সময় মনে করে দরজায় তালা দিতে ভুলিস না।‘ রাস্তা চলতে চলতে একটা বিরাট সত্যি চোখের সামনে ভেসে উঠলো। ওর দাদার কথা। বলেছিল ওর বোন খুব পয়সার লোভী। তাই যার কাছে পয়সা আছে তার সাথেই মেশে। আমি ওর জীবনে কি তাই? চক্রবর্তী ওর জীবনে কি তাই? ওই '. ছেলেটাও কি ওর জীবনে তাই? আরও কতজন ওদের বাড়ীতে আসতো, সবাই কি তাই? একি চেহারা দেখাল তনু? দ্বিতীয়বার আমাকে কাছে টেনে নেওয়া শুধু কি এর জন্য? ভাবতে ভাবতে এতোটাই বেখেয়াল হয়ে গেছিলাম যে শুনতেই পাই নি আমার ড্রাইভার ডাকছে, ‘ও স্যার, ও স্যার, এইখানে গাড়ী।‘ সম্বিত ফিরল আমার। মাথাটা ঝাকিয়ে গাড়ীতে উঠে বসলাম। ড্রাইভার একপল আমাকে দেখে বলল, ‘স্যার, আপনার কি শরীর খারাপ?’ ওকে কি করে বোঝাই আমার দুঃখটা কি। আমি মাথা নাড়লাম। ফিরে এলাম সাইটে। তনুর ওই ব্যবহারে মাথাটা ঝিমঝিম করছে। অফিসে কিছুক্ষন একলা বসে থাকলাম। এটা কি শুরু তনুর? এরপরে কি ওর চাহিদা আরও বেড়ে যাবে। সবকিছু কেমন দোদুল্যমান মনের ভিতর। দরজাটা ফাঁক হয়ে পার্থর মুখ দেখলাম। ভিতরে এসে জিজ্ঞেস করলো, ‘ও তুই ফিরে এসেছিস?’ আমি ওর দিকে তাকালাম। ও কি জানে তনুর এই চাহিদা? মুখে বললাম, ‘হ্যাঁ, কেমন চলছে সাইট? র মিলের একটা কঙ্ক্রিট হবার কথা ছিল হোল?’ পার্থ বলল, ‘হ্যাঁ, এই জাস্ট স্টার্ট করে এলাম।‘ ওকে বসতে বললাম। পার্থ সামনের চেয়ারে বসে একটা সিগারেট ধরিয়ে বলল, ‘তোর মুখ দেখে মনে হচ্ছে তুই কোন সমস্যায় আছিস। যেখানে গেছিলি সেখানে কিছু হয়েছে?’ আমি ওর মুখের দিকে তাকালাম। ধরতে পেরেছে ও যে আমি সমস্যায় আছি।