Thread Rating:
  • 13 Vote(s) - 3.46 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery অভিশপ্ত ডায়েরী by subha chatterje completed
#68
পর্ব ২৬- বিষ্ণু বহুরুপীঃ


জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই ভয় নামক শব্দটি বংশী নিজের অভিধান থেকে মুছে ফেলেছিল। মানুষের একটা হৃদয় থাকে, একটা মন থাকে, বংশী সেই মনটাকেই সযত্নে পাথর বানিয়ে ফেলেছিল। ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে স্বপ্ন অনেকেই দেখতে পারে, কিন্তু তাই বলে জীবনের শেষ দিন অবধি ক্ষমতার লোভঃ না এ বংশী ছাড়া অন্য কারুর পক্ষেই সম্ভব নয়। এই দুহাতে কত নিরপরাধ মানুষকে শেষ করেছে বংশী তার কোনও ইয়ত্তাই নেই। কিন্তু স্বপ্নেও ভুতের ভয় ও পাবে তা কখনো ভাবেনি। কিন্তু সময় বড়ই নিষ্ঠুর, বংশী জানে যে ভয়ঙ্কর জনশূন্য জঙ্গল ওকে জীবনে কখনো ভয় দেখাতে পারেনি আজ সেই জঙ্গল ই ওকে মৃত্যুভয়ে জর্জরিত করে তুলছে। পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা টমাসের আত্মাকে দেখার মত মানসিক জোর ওর মধ্যে নেই, দুহাতে শক্ত করে কলসিগুলোকে চেপে ধরে বংশী চেষ্টা করে স্বাভাবিক হতে। বংশীর হৃদয় বারবার ওকে একটাই কথা বলে চলেছে- না বংশী এই এতো আত্মত্যাগ, এতো কষ্ট এর ফল তুই পাবি ই পাবি। ভগবানের ক্ষমতা নেই তোকে রুখে দেওয়ার। পেছন থেকে ভেসে আসে আবার সেই তরুনের কণ্ঠ “হ্যালো বানসি এই তো হামার গুপ্তধন” কান খাড়া করে শোনে বংশী, কোথাও যেন কণ্ঠে একটা মেকিভাব রয়েছে। বংশীর শরীরের ৫ টি ইন্দ্রিয় সমানভাবে সজাগ ও সক্রিয়। বারবার ওর মন বলে না এ টমাস নয়, অন্য কেউ, টমাস হতে পারেনা। ইহজগতে ভুত বলে কোনও বস্তুর অস্তিত্ব নেই। এটা অন্য কেউ। কিন্তু পেছন ঘুরে একটি বার সেই অতৃপ্ত আত্মার দিকে তাকানোর মত ক্ষমতাও বংশীর শরীরে ছিলনা।
একটা হাত পেছন থেকে এসে বংশীর কাঁধ স্পর্শ করে। বংশীর শরীরের রোমকূপগুলো ফুলে ওঠে, শীতের রাতে স্নান করার মত বংশীর শরীরে কম্পন শুরু হয়। কিন্তু এই মানুষটার ও নাম তো বংশী। ওর ইন্দ্রিয়গ্রাহ্যতা বাকি ১০০টা মানুষের থেকে আলাদা। টমাসের সাথে বহুবার ও হাত মিলিয়েছে, ও এখনো অনুভব করে টমাসের স্পর্শ। এতক্ষনে বংশী সজাগ হয়। ওর মন দৃপ্ত কণ্ঠে বলে ওঠে না এ টমাস নয়। পেছন থেকে এগিয়ে আসা সেই অতৃপ্ত হাতটা ক্রমশ ওর কাঁধের ওপর জাঁকিয়ে বসে। বংশী বুঝতে পারে এ টমাস নয়, কোনও প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ। বংশীর শরীরের দ্রুত হৃৎস্পন্দন, থরথর কম্পন সব ই ক্রমশ শান্ত হয়। দ্রুত পেছন ঘুরে তাকায় বংশী।
মুখ ঘুরিয়ে পেছনে যা দেখে সেই দৃশ্য হয়ত ভুত দেখার চেয়েও ভয়ঙ্কর। কারন ভুতকে স্বপ্ন বলে অবজ্ঞা করা যায়, কিন্তু বাস্তবকে নয়। বংশীর ঠিক পেছনেই দাঁড়িয়ে নায়েবমশাই, মুখে সেই পরিচিত হাসি। তবে এবারের হাসিটা আর বুদ্ধিমত্তার পরিচয় নয় এই হাসির মধ্যে লুকিয়ে আছে চরম অবজ্ঞার লক্ষন। বংশী লক্ষ্য করে আরও কিছুটা পেছনে প্রায় জনা পঞ্চাশেক সৈন্য। বংশী বুঝে যায় ও ধরা পড়ে গেছে। নায়েবমশাই প্রচণ্ড জোরে অট্টহাস্য করে ওঠেন এবং আবার সেই কাঁপুনি ধরানো কথা “হ্যালো বানসি এই তো হামার গুপ্তধন” এবং আবার একটা প্রচণ্ড জোরে অট্টহাসি। অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে বংশী। এর আগে সিদ্ধান্তহীনতা যে কি জিনিস তা বংশী কখনোই বোঝেনি। এ এক এমন মুহূর্ত যে বংশীর ঠিক কি করা উচিত তা ও কিছুতেই বুঝতে পারছে না। বংশীর মুখের অবস্থা দেখে নায়েবমশাই আবার প্রচণ্ড জোরে একবার হেঁসে ওঠেন
নায়েবমশাইঃ হ্যালো বানসি এই তো হামার গুপ্তধন। ওহ বানসি এতো ভয় কেন পাচ্ছ তুমি? আমি ভুত নই আমি নায়েবমশাই। তোমাদের নায়েবমশাই বিষ্ণুপদ।
বংশী জানে কিছু একটা ওকে করতেই হবে নয়ত সম্পূর্ণভাবে ও শেষ। নিজের মনের প্রতিটা অংশ থেকে সাহস একত্রিত করে বংশী স্বাভাবিক হয়। নায়েবমশাই এর দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে
বংশীঃ আপনি আমার থেকে কি চান? আমি তো আপনার কোন ক্ষতি করিনি।
আবার প্রচণ্ড জোরে একবার হেঁসে ওঠে নায়েবমশাই। বংশীর দিকে তাকিয়ে কিছুটা অবজ্ঞার চোখে বলে ওঠেন
নায়েবমশাইঃ বংশী, প্রচণ্ড ছোটবেলার কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। সেই কোন ছোট থেকে বহুরূপী সাজতাম। কখনো বাঘ, কখনো সিংহ, কখনো রাম, কখনো সীতা, কি সাজিনি বলতো। দেখবে তুমি দেখবে।
নিজের কথা শেষ করার সাথে সাথেই নায়েবমশাই মুখ দিয়ে একটা বাঘের ডাক বার করলেন
নায়েবমশাইঃ কি বংশী, একবার ও মনে হচ্ছে যে এটা কোনও বাঘের নয় একটা মানুষের ই তৈরি। সব ই প্রতিভা, বংশী। সব ই প্রতিভা। এতো তথ্য জোগাড় করলে অথচ এই তথ্যটা তুমি জোগাড় করলেনা বংশী যে এই বিষ্ণুপদ কে আজও গ্রামের পুরনো মানুষেরা বিষ্ণু বহুরূপী বলে ডাকে। তোমায় কেমন ভয় দেখালাম বংশী?
বংশী এতক্ষনে নিজের সেই পুরনো ঠাণ্ডা মাথার মানুষটাকে উদ্ধার করে ফেলেছে। স্বাভাবিক হতে বংশীর ও বেশি একটা সময় লাগেনা। বংশীও নিজের মুখে দৃপ্ত একটা হাসি ফিরিয়ে এনে উত্তর দেয়
বংশীঃ সব ই বুঝলাম নায়েবমশাই। আপনি সত্যি ই আমায় ভয় দেখিয়েছেন আমি স্বীকার করে নিলাম। আমি এটাও স্বীকার করে নিলাম যে আপনি বিশাল বড় অভিনেতা।
বংশীর কথা শেষ হওয়ার আগেই, নায়েবমশাই প্রচণ্ড জোরে হেঁসে উঠলেন আর বললেন
নায়েবমশাইঃ অভিনেতা? বংশী এই ইহজগতে তোমার চেয়ে বড় অভিনেতা আর কেউ আছে নাকি। আমি তো শুধু জমিদারবাবুর আদেশ পালন করে গেছি। (প্রচণ্ড জোরে চিৎকার করে) বংশী, বেইমানের একটাই শাস্তি তা হোল মৃত্যু।
বংশী বুঝে যায়, নায়েবমশাই নয় আসলে সুপ্রতীক ই আসল খেলোয়াড় আর ওকে এরকম অবজ্ঞা করে বংশী নিজের ইতিহাস নিজেই বিকৃত করে ফেলেছে। কিন্তু বংশীও জানে এরকম প্রতিকুল অবস্থা থেকে কিভাবে নিজের প্রান বাঁচিয়ে ফিরতে হয়। নায়েবমশাই এর দিকে একবার তাকিয়ে বংশী বলে ওঠে
বংশীঃ মাত্র এই কটা সৈন্য দিয়ে আপনি বংশীকে আটক করবেন।
নায়েবমশাইঃ এই কটা কি বলছ, ৫০ জন...
মাথা ঘুরিয়ে নায়েবমশাই পেছনে তাকাতেই বংশী প্রচণ্ড জোরে নায়েবমশাইকে পেছন দিকে একটা ধাক্কা মারে। নায়েবমশাই হুমড়ি খেয়ে মাটিতে পড়ে যায়। নায়েবমশাই এর এই আকস্মিক পতনে সৈন্যরাও বিচলিত হয়ে যায়। আর ঠিক এই সুযোগটাই বংশীর দরকার ছিল। বংশী প্রানপনে দীঘির ধার বরাবর দৌড়াতে শুরু করে। বেশ কিছুদুর রুদ্ধশ্বাসে দৌড়ানোর পর বংশী হথাত দাঁড়িয়ে পড়ে, প্রচণ্ড জোর একটা গুলির আওয়াজ আর গুলিটা একদম ওর গা ঘেঁসে বেরিয়ে যায়। নিজের অজান্তেই বংশীর দুই হাত ওপরের দিকে উঠে যায়। পেছন থেকে নায়েবমশাই এর কর্কশ স্বর ভেসে আসে। “বংশী এটা তোমার লাঠিয়াল বাহিনী নয়, এরা সৈন্য। এদের নিশানা অভ্রান্ত। চাইলেই গুলিটা তোমার মগজে লাগতে পারতো। আমি জমিদারবাবুকে কথা দিয়েছি তোমার সমস্ত ষড়যন্ত্র প্রকাশ্যে নিয়ে আসব। তাই আজ তুমি প্রানে বাঁচলে” অসহায় অবস্থায় বংশী ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকে। দুজন সৈন্য ওর কাছে গিয়ে প্রায় পাঁজাকোলা করে ওকে ধরে নিয়ে আসে। অসহায় বংশীকে একদম নায়েবমশাই এর মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়। এই জঙ্গল ওর রাজ্য, আর নিজের ই রাজ্যে যে এতবড় এক অপমান ওকে সহ্য করতে হবে তা বংশী ভ্রুনাক্ষরেও কখনো ভাবেনি। শান্ত মাথার মানুষ বংশীর ও মাথা এই অপমানে গরম হয়ে যায়। নায়েবমশাই এর দিকে তাকিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে ও বলে ওঠে
বংশীঃ আমার নাম বংশী, নায়েবমশাই। আর আমার সাথে বেইমানির হিসেব আমি যেভাবে হোক চুকিয়ে নেবো।
প্রায় ঝড়ের বেগে দুপা এগিয়ে আসেন নায়েবমশাই। মুহূর্তের মধ্যে যে বংশীর গালে সপাটে একটা চড় কষিয়ে দেবেন নায়েবমশাই তা বংশী ভ্রুনাক্ষরেও ভাবতে পারেনি। অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে বংশী। এতক্ষনে নিজের পুরনো হাসিখুশি রূপটা ছেড়ে স্বমূর্তি ধারন করেন নায়েবমশাই। প্রচণ্ড জোরে চিৎকার করে বংশীকে বলেন
নায়েবমশাইঃ আমরা সাত পুরুষ ধরে জমিদারবাড়ির অনুগত দাস। আনুগত্য কি জিনিস তা স্বয়ং ভগবান ও আমাদের থেকে শিখতে পারেন। তোর মত একটা পাপিষ্ঠর মুখ থেকে বেইমান শব্দটা শুনতে হবে। যেদিন নিজের চোখে আমি দেখেছিলাম তুই টমাসকে হত্যা করলি সেদিন ই পারলে আমি তোকে মেরে ফেলতে পারতাম। কিন্তু না, আমরা জমিদারবাড়িকে রক্ষা করতে নিজের প্রান দিতেও প্রস্তুত। সর্বসমক্ষে তোকে দোষী প্রমান করলেই জমিদারবাবু নিজের পুরনো সম্মান ফিরে পাবেন। আর সেই কাজ শুরু ও হয়ে গেছে, গ্রামের মানুষ ধীরে ধীরে বিশ্বাস করতে শুরু করেছে যে তুই ই টমাস কে হত্যা করেছিস। তুই কি ভাবিস তুই একাই বুদ্ধিমান। এই একে নিয়ে চল সুরঙ্গের কাছে। ওখানেই রানীমা আছেন। আজ ই একে ফাঁসিকাঠে চড়াব।
মুহূর্তের মধ্যে প্রায় ধাক্কা দিতে দিতে সৈন্যরা ওকে সামনের দিকে নিয়ে যেতে শুরু করল। নায়েবমশাই বংশীর ই সাথে সাথে হাঁটতে থাকলেন। বারবার করে বংশীর মনে হতে লাগলো জঙ্গলের প্রতিটা পশু, প্রতিটা গাছ যেন ওর দিকে তাকিয়ে হাসছে। এই অপমানের থেকে মৃত্যুও অনেক সুখের। বংশীর দুচোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়তে লাগলো। বংশী নিজেও কখনো ভাবেনি যে ওর ও চোখ দিয়ে জল পড়বে। বংশীর এই করুন অবস্থা নায়েবমশাই এর ও চোখ এড়িয়ে যায়না। নায়েবমশাই ওর কানের কাছে এসে ফিসফিস করে বলে উঠলেন “ব্যাস এতটুকুতেই তোমার মনবল ভেঙে গেলো বংশী? আসল কথাটা শুনলে তাহলে তোমার কি অবস্থা হবে? মনে হয় হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাবে” নায়েবমশাই এর এই অপমানজনক কথাগুলো বংশীর একদম শুনতে ভালো লাগছিলনা, বংশী সোজা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। নায়েবমশাই সৈন্যদের দিকে ইশারা করে বলে ওঠেন “তোমরা একটু পেছনে থাকো, আমি ওর সাথে একান্তে কথা বলতে চাই” নায়েবমশাই এর আদেশমত সৈন্যরা কিছুটা পেছনে গিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে। বংশীর দিকে তাকিয়ে কিছুটা মুচকি হেঁসে নায়েবমশাই বলে ওঠেন
নায়েবমশাইঃ বংশী, সুপ্রতীককে সিলিং সাহেব ধরে নিয়ে যায়নি। সুপ্রতীক, গার্গী ও প্রিয়া জমিদারবাড়িতেই রয়েছেন। ওনারা যে জমিদারবাড়িতেই রয়েছেন তা আমি ছাড়া কেউ জানেনা। বলতে পারো অন্দরমহলের এক গোপনস্থানে গা ঢাকা দিয়ে আছেন। এইসব ই সুপ্রতীকের পরিকল্পনা।
বংশীর মাথা বনবন করে ঘুরতে শুরু করে, সমস্ত কিছু গুলিয়ে যেতে শুরু করে। প্রচণ্ড তেষ্টায় গলা শুকিয়ে আসে। কোনরকমে বংশী নায়েবমশাই এর দিকে করুনদৃষ্টিতে তাকায়, যেন এটাই বলতে চেয়েছিল “কিন্তু কেন?” কিন্তু ওর মুখ দিয়ে একটাও শব্দ বাইরে বেরোয় না।
নায়েবমশাইঃ মনে পড়ে বংশী, একটি ছেলে তার বোনেদের সিলিং সাহেব উঠিয়ে নিয়ে গেছে সেই ব্যাপারে নালিশ করতে জমিদারবাড়িতে এসেছিল। সেদিনের তোমার সেই অতিসক্রিয়তাই আমাদের সন্দেহ বদ্ধমূল করে দেয়। আসলে সমস্ত পরিকল্পনা শুরু হয় ২ বছর আগে। সিলিং সাহেবের সুতানুটিতে ডেরা বাঁধা ছিল নতুন এক শত্রুর আগমনি বার্তা। সুপ্রতীক জানত যে সিলিং সাহেব আর তুমি ওর এই দুই শত্রুর বন্ধুত্বই হোল সহজাত প্রবৃত্তি। কিন্তু সেই বন্ধুত্ব চোখের আড়ালে হওয়ার চেয়ে চোখের সামনে হলে খেলার রাশ নিজের হাতে ধরা অনেক সহজ। তুমি ঠিক কি কি করতে পারো কি কি ভাবতে পারো তা সব ই ওর জানা ছিল। কিন্তু তুমি যে টমাসের মত একটা নিরীহ ছেলের প্রান নেবে তা সুপ্রতীক আমি কেউ ই ভাবিনি। তুমি মানুষ নয় বংশী তুমি জানোয়ার।
নায়েবমশাই এর কথায় বংশীর মনের সমস্ত জোর ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে শুরু করে। ধীরে ধীরে সমস্ত ব্যাপারটাই ওর সামনে পরিস্কার হতে শুরু করে। যদিও বেশ কিছু প্রশ্ন রয়েছে কিন্তু নিজের মুখে তা নায়েবমশাইকে জিজ্ঞেস করার ধৃষ্টতা বংশী হারিয়ে ফেলেছে। বংশীর এই উদাসীনতা ভঙ্গ করার জন্য নায়েবমশাই আবার বলে ওঠেন
নায়েবমশাইঃ (আবার সেই মুচকি হাসিটার সাথে) কিন্তু বংশী, সমস্ত বাহবা একা সুপ্রতীককেও দেওয়া উচিত নয়। আজকের পুরোদিনের পরিকল্পনাটা আমার একার। কারন সুপ্রতীক তো লোকচক্ষুর অন্তরালে ছিল। আমি জমিদারবাবুকে কথা দিয়েছিলাম যে ওনার পুরনো সম্মান আমি ফিরিয়ে দেবই। আমি সুকৌশলে গ্রামের মধ্যে রটিয়ে দি, তুমি টমাসকে হত্যা করেছ। জমিদারবাবু তোমায় আদেশ দেয়নি। জমিদারবাড়ির প্রতি পুরনো আক্রোশ থেকেই তুমি এই কাজ করেছ।
মাথা নীচু করে বংশী, নায়েবমশাই এর সমস্ত কথা শুনতে থাকে।
নায়েবমশাইঃ আজ সকালে সিলিং সাহেবের সাথে তুমি দেখা করতে যাওয়ার আগে আমি জমিদারের বার্তা নিয়ে ওনার কাছে গিয়েছিলাম। আমি ওনাকে কথা দিয়েছিলাম ২-৩ দিনের মধ্যেই প্রকৃত খুনিকে আমরা খুঁজে বার করব। উনি আমাদের কথা শুনেছেন। এবার বুঝলে তো সিলিং সাহেব ও সুপ্রতীককে কত সমীহ করে চলে। আর তুমি একটা সামান্য ডাকাত হয়ে ওর সাথে লড়তে গেলে।
বংশী বুঝে যায় ওর আর বাঁচার কোনও রাস্তাই নেই। বংশী নায়েবমশাই এর দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে
বংশীঃ আর রানীমা? উনি কি সত্যি ই জমিদারের স্ত্রী। আর যদি সত্যি ই জমিদারের স্ত্রী হন তাহলে আমার মত এক সন্দেহভাজন লোকের সাথে উনি নিজের স্ত্রীকে ছেড়ে কেন দিলেন?
বংশীর এই সহজসরল প্রশ্ন শুনে নায়েবমশাই আবার প্রচণ্ড জোরে হেঁসে ওঠেন।
নায়েবমশাইঃ বংশী, এই ২টো বছরের অর্থাৎ তোমার জমিদারবাড়িতে আসার পর থেকে যা যা রহস্যময় ঘটনা ঘটেছে তার সমস্ত উত্তর লুকিয়ে আছে এই প্রশ্নে।
[+] 2 users Like manas's post
Reply


Messages In This Thread
RE: অভিশপ্ত ডায়েরী by subha chatterje completed - by manas - 19-01-2019, 09:44 AM



Users browsing this thread: 5 Guest(s)