Thread Rating:
  • 12 Vote(s) - 3.42 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery অভিশপ্ত ডায়েরী by subha chatterje completed
#52
পর্ব ১০- নতুন মোড়ঃ

সুবীর বাবুঃ এ আপনি কি বলছেন সত্য বাবু। আপনার কথা আমি বিশ্বাস করিনা। আমার দুই মেয়ে তিলোত্তমা ও রূপসা কমবয়সী। ওরা হয়ত কিছু ভুলভ্রান্তি করে ফেলেছে, মানুষ চিনতে ভুল করেছে। ওদের পিতা হিসেবে যা মেনে নেওয়া আমার কাছে প্রচণ্ড কঠিন। আমি জানি এই ডায়েরিতে লেখা সম্পূর্ণ অভিশপ্ত ইতিহাস না পড়া পর্যন্ত আমার নিস্তার নেই। কিন্তু সত্য বাবু আপনার ও একটি ব্যাপারে অবগত হওয়া দরকার। এই সংসারকে তিলেতিলে গড়ে তুলতে আমি যা কষ্ট করেছি যা আত্মত্যাগ করেছি তার সহস্রগুন আত্মত্যাগ মালতী করেছে। আপনি তো সামান্য অশরীরী আত্মা, স্বয়ং ভগবান এসেও আমায় বললে আমি কিছুতেই এটা বিশ্বাস করতাম না। আমি আপনার কথা বিশ্বাস করিনা, সত্যবাবু।
সত্যবাবু কোনও উত্তর দেন না, শুধুই শান্ত দৃষ্টিতে সুবীর বাবুর দিকে তাকিয়ে থাকেন।
সুবীর বাবুঃ ডায়েরি যতই অভিশপ্ত হোক তা কখনোই মালতীকে কলঙ্কিনী করতে পারেনা। রাবনের মত পণ্ডিত ও সাহসী যেমন পারেন নি সীতার গায়ে সামান্য কোনও কলঙ্কের দাগ লাগাতে সেরকম ই মালতীর গায়ে সামান্য কোনও কলঙ্ক লাগানো আপনাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আমি মানিনা ডায়েরীর এই গল্প।
সত্য বাবুঃ জানি আপনি বিশ্বাস করবেন না। এই অনুরুপ বিশ্বাস সুপ্রতীক এর ও ছিলনা। জানেন আপনি ঠিক যে চেয়ারে বসে ডায়েরি পড়া আরম্ভ করেছিলেন, ঠিক ওই ঘরটায় ওই জায়গায় বসেই সুপ্রতীক ডায়েরিটা পড়া শুরু করে।
সুবীর বাবুঃ কে সুপ্রতীক?
সত্য বাবুঃ একি সুবীর বাবু এতো দ্রুত আপনি সুপ্রতীক বাবুকে ভুলে গেলেন। ডায়েরীর প্রথম পাতায় ই তো সুপ্রতীক বাবুর লেখা ছিল। মনে করুন ডায়েরীর দ্বিতীয় খণ্ড পর্ব ৫- পোড়োবাড়ী ও ডায়েরী। কি লেখা ছিল ওখানে? “আমি সুপ্রতীক রায় চৌধুরী। সুতানুটি গ্রামের একচ্ছত্র জমিদার। ডায়েরী লেখার অভ্যাস বা অভিপ্রায় কোনকালেই আমার ছিলোনা। আমি বর্তমানে জীবন সঙ্কটে শঙ্কিত। আমার স্ত্রী মালা দুই বোন প্রিয়া ও গার্গী এবং অসংখ্য আত্মীয় পরিজন বেইমান দের ষড়যন্ত্রে আজ মৃত” আরও একটি কথা লেখা ছিল ওখানে যা আপনি কখনোই নিজের সাথে খেয়াল করেন নি। “প্রিয়া ও গার্গী জন্মসুত্রে যমজ”-- কিছু মিল খুঁজে পেলেন? সুবীর বাবু এই ডায়েরীটা অনেকবার হাত বদল হয়েছে কিন্তু ডায়েরীতে লেখা অন্য গল্প গুলো মুছে গেলেও দুটো গল্প মোছেনি, এক, দেবেন্দ্র, সত্যেন্দ্র, অনুরাধা, ঠাকুর ডাকাত এর গল্প, দুই সুপ্রতীকের গল্প। অন্য সময় ডায়েরী মোট ৩ টি খণ্ডে লেখা হয়ে থাকে। কিন্তু এইবার ডায়েরী ৪ টি খণ্ডে লেখা হচ্ছে। অর্থাৎ আপনার গল্প ও ডায়েরীতে লেখা হয়ে থাকবে। কেন জানেন?
সুবীর বাবু কোনকিছু বুঝতে না পেরে চুপ করে তাকিয়ে থাকেন।
সত্য বাবুঃ সুবীর বাবু আপনি দেবেন্দ্র, সত্যেন্দ্র ও সুপ্রতীকের ই বংশধর। যখন ব্রিটিশ ও বেইমান লাঠিয়ালদের আক্রমনে সমগ্র জমিদারবাড়ি শেষ হয়ে যায়, সকলে মনে করেছিলেন যে জমিদারবাড়ীর কোনও উত্তরাধিকারী নেই। কিন্তু একজন ছিলেন আর তিনি আর কেউ নয় আপনার ই এক পূর্বপুরুষ। আপনি আমার ই বংশের সুবীর বাবু। সুপ্রতীকের পিসতুতো ভাই একমাত্র জীবিত সদস্য ছিলেন, আপনি তার ই বংশধর।
সুবীর বাবু নতুন এক রহস্যের আবরণে সম্পূর্ণ ভাবে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছিলেন, উনি শুধু নিস্ফলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন সত্য বাবুর দিকে।
সত্য বাবুঃ সুপ্রতীক এর আত্মা আজও অভিশপ্ত। সুপ্রতীকের শরীর এখনো জমিদারবাড়ির বাইরের প্রাঙ্গনে মাটির নিচে প্রোথিত আছে কেউ জানেনা সেকথা। সুপ্রতীকের আত্মা চরম যন্ত্রণায় ছটপট করে চলেছে। জমিদার বংশে দীর্ঘ ১৭০ বছর পর আবার যমজ কন্যার জন্ম হয়েছে। সুপ্রতীকের আত্মার মুক্তির সময় এসে গেছে। নতুন গল্প প্রকাশ্যে এলেই সুপ্রতীক মুক্ত হবে। ডায়েরীটা মোট ৪ টি খণ্ডে লেখা হবে। এটা তৃতীয় খণ্ড। এখানে সুপ্রতীকের জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু অভিশপ্ত ইতিহাস ও তার সাথে আপনার সম্পর্ক এই সম্পর্কে আলোচনা হবে। চতুর্থ খণ্ডে মালতী দেবী ও আপনার দুই কন্যা রূপসা ও তিলোত্তমার যৌন ব্যাবিচার নিয়ে আলোচনা হবে। সুবীর বাবু ঠিক এই কারনেই আমি নিজে এসে আপনাকে গল্পটা বলতে চেয়েছিলাম। আপনার নিজের পক্ষে এটা বোঝা সম্ভবপর ছিলনা।
সুবীর বাবু এক নতুন রহস্যের ও ইতিহাসের দোরগোড়ায় এসে দাঁড়ালেন। সত্য বাবুও নিজের নতুন গল্প শুরু করে দিলেন।
সত্য বাবুঃ সালটা ছিল ১৮৫৭। সিপাহী বিদ্রোহের দামামা বেজে গেছে চারপাশে। ভারতবর্ষের সমস্ত রাজা, জমিদার ও মহাজনরা তখন দ্বিধাগ্রস্ত, হয় ব্রিটিশ নয় বিদ্রোহী যেকোনো একটি পক্ষকে সমর্থন করতে হবে। এছাড়া অন্য কোনও পথ ছিলনা। ব্রিটিশদের সমর্থন করলে বিদ্রোহীদের এবং বিদ্রোহীদের সমর্থন করলে ব্রিটিশদের রোষানলে পড়তে হবে। সমগ্র দেশবাসীর মতই দেশীয় রাজারাও তখন চরম সঙ্কটে। ইংরেজদের সমর্থন করলে যে জমিদারী রক্ষা পাবে তার কোনও নিশ্চয়তা ছিলনা। আর বিদ্রোহীদের সমর্থন করলেও যে জমিদারী রক্ষা পেয়ে যাবে তার ও কোনও নিশ্চয়তা ছিলনা। অনেক জমিদারের ই মনে ভয় ছিল এরা আসলে মুঘলদের ই নতুন করে ক্ষমতায় আনতে চায়, যদিও তা সত্য ছিলনা। এমন ই বিশ্বাস অবিশ্বাসের এক কঠিন ঐতিহাসিক সময়ে সুতানুটির জমিদার ছিলেন সুপ্রতীক রায় চৌধুরী। শোভাবাজার রাজবাড়ী ততদিনে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। তাই সুপ্রতীক কে জমিদার না বলে রাজা বলাই শ্রেয়। অন্য সমস্ত জমিদারের মতই উনিও ছিলেন এক গভীর সঙ্কটের মধ্যে। যদিও এই কথাটা আগে থেকে বলে রাখতেই হয় যে প্রশাসনিক ও সামরিক দক্ষতায় উনি আমার দাদা অর্থাৎ দেবেন্দ্রর থেকে অনেকটাই এগিয়ে ছিলেন। আড়ালে বিদ্রোহী ও ব্রিটিশ উভয়কেই উনি আশ্বস্ত করে রাখলেও আসলে উনি ছিলেন স্বতন্ত্র। এই দুই পক্ষের আক্রমন ই রক্ষা করতে উনি তিলে তিলে গড়ে তুলেছিলেন এক লাঠিয়াল বাহিনী। এই লাঠিয়াল বাহিনী আর অন্য কোনও দল নয় ঠাকুর ডাকাতের দল। মৃত্যুঞ্জয়ের মৃত্যুর ২০০ বছর পর ও কলকাতার জঙ্গলে ঠাকুর ডাকাতের অনুগামীরা বিদ্যমান ছিল। বংশপরম্পরায় তারা জমিদারবাড়িকে চরম শত্রু হিসেবে মেনে এসেছেন। কোনোএক অলৌকিক ক্ষমতায় সুপ্রতীক এই ডাকাত দলকে বশ করে ও তাদের নিজের ই জমিদারবাড়ির লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে নিযুক্ত করে। এইভাবে ঠাকুর ডাকাতের দলবলের সমাপ্তি ঘটে। লাঠিয়াল বাহিনীর প্রধান ছিল বংশিরাজ।
বংশিরাজের নামের শেষে রাজ শব্দটা ডাকাত দলে যোগ দেওয়ার পর ও নিজেই যোগ করে দেয়। অর্থাৎ বুঝতেই পারছেন রাজা হওয়ার প্রবল ইচ্ছা ও উদ্যম ছিল বংশীর মধ্যে। সামান্য গরীব চাষার ছেলে থেকে ৫ বছরের মধ্যেই ডাকাত সর্দার হয়ে যাওয়া, ইতিহাসটা যেন এককথায় ছিল রুপকথার ই মত। কিছুটা শ্যামবর্ণের এই মানুষটা শারীরিক ভাবে যথেষ্ট সবল হলেও উচ্চতার দিক থেকে ছিল যথেষ্ট খাটো। কিন্তু শরীরের চেয়েও যা বেশি লক্ষণীয় ছিল তা হোল ওর মস্তিষ্ক। ঠাকুর ডাকাতের দল ও জমিদারবাড়ির আপোষ এবং তারসাথে জমিদারবাড়ির লাঠিয়ালে পরিনত হওয়া এই গল্পটা বংশীর ডাকাত হওয়ার অনেক আগে থেকেই লেখা হয়ে গেছিল। সুপরিকল্পনা এই ছিল বংশীর ক্ষমতার চূড়ায় বসার প্রধান অস্ত্র। ক্ষমতা এই শব্দটা হয়ত পৃথিবীর সবচেয়ে ঘৃণ্য শব্দ। প্রথমে যে লোভ ছিল শুধুই রাজবাড়ীর নিকটে পৌঁছানোর লোভ তাই পরিনত হয় রাজ সিংহাসনে বসার লোভে। অবশেষে এর সাথে যোগ হয় মালা, প্রিয়া ও গার্গীকে ভোগ করার অদম্য কামনা।
বংশীর শেষ ইচ্ছেটার ব্যাপারে অবগত না থাকলেও প্রথম দুই ইচ্ছের ব্যাপারে সুপ্রতীক যথাযথভাবেই অবগত ছিলেন। সুতানুটি ছিল সেই সময়ে সমগ্র বাংলার ক্ষমতার প্রানবিন্দু। ঠাকুর ডাকাতের দল ছিল জমিদারবাড়ির সবচেয়ে বড় শত্রু। রাজনীতি যে কি অদ্ভুত তা হয়ত চাণক্যের অর্থশাস্ত্র থেকেই বোঝা যায়। দুই বিপদ অর্থাৎ ইংরেজ ও বিদ্রোহী এদের থেকে কিছুটা নিরাপদে থাকার জন্য পুরনো শত্রুর সাথে মিত্রতা অত্যন্ত আবশ্যক হয়ে পড়েছিল। যদিও এই সিদ্ধান্তে ঠিক কি পরিমান ঝুঁকি ছিল তা একমাত্র সুপ্রতীক ই জানতেন। ডাকাতদের মধ্যে জন্মগতভাবেই জমিদারবাড়ির প্রতি এক বিষ রন্ধ্রে রন্ধ্রে পরিপূর্ণ ছিল। সেই বিষাক্ত শত্রুতার স্থলে মিত্রতা ও আনুগত্যকে প্রতিষ্ঠা করাই ছিল সুপ্রতীকের একমাত্র লক্ষ্য। অদ্ভুতভাবেই কাজটা অত্যন্ত সহজ হয়ে যায়। আর তারপর থেকেই সুচারু সুপ্রতীকের মনে বংশীর প্রতি সন্দেহ দানা বাধে। সুপ্রতীক নিজের বিশ্বস্ত কর্মচারীদের এই ব্যাপারে সতর্ক ও করে দেন ও তাদের বংশীর ওপর কড়া নজর রাখার আর্জি ও জানান।
এইভাবে সুপ্রতীক সমগ্র খেলাটাকে প্রায় নিজের ই হাতের তালুতে নিয়ে আসেন। সমস্ত অবস্থার পরিবর্তন হথাত ই ঘটে যায়। জমিদারীর অন্তর্গত লক্ষিকান্তপুর অঞ্চলে হথাত ই বিদ্রোহীদের আবির্ভাব ঘটে। এই গ্রামের ই এক ছেলে সৈন্যদলে যোগ দেয় প্রায় ১ বছর আগে। তার ই সাহায্যে লক্ষিকান্তপুর হয়ে ওঠে বিদ্রোহীদের নয়া আঁতুড়ঘর। যা খুব দ্রুত প্রবলপরাক্রমি ব্রিটিশ রাজার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নির্দেশে সুতানুটি অঞ্চলে বিশাল ব্রিটিশ সৈন্যকে মোতায়েন করা হয়। আর এদের দেখভালের জন্য নিয়োগ করা হয় অত্যাচারী লর্ড সিলিং সাহেবকে। সিলিং সাহেবের জমিদারি অঞ্চলে প্রবেশ করার পর থেকেই সুপ্রতিকের সুতীক্ষ্ণ সমস্ত পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে শুরু করে।
প্রথম প্রথম সুপ্রতীক সিলিং সাহেবের সাথে অত্যন্ত সুব্যবহার নিয়ে চলেন এবং অপর দিকে জমিদারবাড়ির ই লোকেরা লক্ষিকান্তপুরে গিয়ে বিদ্রোহীদের আশ্বস্ত করে যে জমিদারবাবু তাদের ই সাথে আছেন। কিন্তু এই দ্বিমুখি রাজনীতি চিরস্থায়ী হওয়া সম্ভব ছিলনা। সিলিং সাহেব ছিলেন প্রচণ্ড আক্রমণাত্মক। উনি একটা ভ্রান্ত ধারনায় বিশ্বাস করতেন, তা হোল ভীতি ই হোল সুসাশনের ভিত্তি। দেশের অন্যস্থানের মত উনিও সুতানুটির সংলগ্ন সমস্ত গ্রামে জোর করে চাষিদের নীল চাষ করাতে বাধ্য করলেন। উর্বরা জমিতে নীলচাষ ছিল খানিকটা আত্মহননের মত। খুব অল্পসময়ের মধ্যেই চাষিরা বিদ্রোহ শুরু করে দিল। এতে সিলিং সাহেবের অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে দ্বিগুন হয়ে যায়। সিলিং সাহেব ব্যাক্তিগতভাবে ছিলেন অত্যন্ত কামাতুর এক ব্যাক্তি। নির্বিচারে সৈন্যরা নীলকুঠিতে গরিব চাষিদের মা বোন কে উঠিয়ে আনতে শুরু করে। মা বোনের ইজ্জত মানুষের কাছে প্রানের চেয়েও প্রিয় ছিল। বিদ্রোহী হয়ে ওঠে চাষিরা। জমিদারবাড়ি তে চাষিদের প্রতিনিধিদল আসে, ওদের বিদ্রোহে পাশে থাকার জন্য। লক্ষিকান্তপুরে যে বিদ্রোহী সেনারা ঘাঁটি গেড়ে বসেছিল তারাও নজর রাখে সুপ্রতীকের এই সিদ্ধান্তের ওপর।
সুপ্রতীক পড়ে যায় উভয়সঙ্কটের মধ্যে। সাহসী সুপ্রতীক চতুর হলেও অসৎ ছিলেন না। উনি জানতেন প্রজাকে রক্ষা করাই রাজা ও জমিদারের ধর্ম। মনে ভয় ও দ্বিধা থাকলেও উনি চাষিদের আশ্বস্ত করেন। মুহূর্তের মধ্যেই এই খবর পৌঁছে যায় লক্ষিকান্তপুরের বিদ্রোহী ও সিলিং সাহেব উভয়ের ই কাছে। বিদ্রোহীরা এতদিনে জমিদারের ওপর সম্পূর্ণভাবে নিজেদের বিশ্বাস রাখে একিসাথে সিলিং সাহেব ও জমিদারের এই স্পর্ধায় যথেষ্ট বিস্মিত হয়ে যান। সিলিং সাহেব ব্যাক্তিগত জীবনে যতই কামাতুর আর বিলাসী হন না কেন রাজনৈতিক ভাবে উনিও ছিলেন যথেষ্ট পারদর্শী। চালাক সিলিং সাহেব জানতেন যে এই মুহূর্তে ওনার হাতে চাষি, জমিদার ও বিদ্রোহীদের সম্মিলিত শক্তির সাথে লড়াই করার পর্যাপ্ত শক্তি নেই। তাই উনি কিছুটা ধীরে চলো নীতি নিয়েই এগোতে শুরু করলেন।
অপরদিকে সমগ্র ঘটনার ওপর বংশী ও পুঙ্খানুপুঙ্খ নজর রেখেই চলছিল। এতদিনে ও নিজের ইচ্ছেগুলো চরিতার্থ করার সুযোগ পায়। ইচ্ছে বাসনা তো ওর মনে অনেক ই ছিল। কিন্তু সেই ইচ্ছেগুলো চরিতার্থ করার জন্য বংশী কোনোরকম তাড়াহুড়ো করার পক্ষপাতী ছিলনা। আপাতত ওর একটাই লক্ষ্য ছিল তা হোল সুপ্রতীকের হৃদয়ের একমাত্র আশ্রয় মালার সামনে নিজের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমান করা। এই কয়েকটা দিনের মধ্যে সুযোগ বুঝে ও মালার সামনে রাজাবাবুকে নিয়ে নিজের মনের সমস্ত আশঙ্কা ও শ্রদ্ধা প্রকাশ করে ফেলেছিল। তাই রাজাবাবুর প্রানের মালার কাছে বংশী ছিল নেহাত ই ভালো মানুষ। সুপ্রতীক বাইরের জগতটায় ঠিক যে পরিমান সুচাগ্র ছিলেন অন্দরমহলে ছিলেন ততটাই উদাসীন। হয়ত ওনার দোষ ও সেরকম কিছু ছিলনা। অপরুপ সুন্দরী মালার প্রেমে যে উনি সম্পূর্ণ নিমগ্ন ছিলেন। সারাদিনের হতাশা ক্লান্তি ভুল গুলোকে ভুলে যেতে উনি কয়েকটা ঘণ্টার জন্য মালার কাজলহরিন দুই চোখে ডুব দিতে চাইতেন। হৃদয় বড়ই ঠুনকো, এই হৃদয় ই মানুষকে দুর্বল করে দেয়।
[+] 1 user Likes manas's post
Reply


Messages In This Thread
RE: অভিশপ্ত ডায়েরী by subha chatterje completed - by manas - 19-01-2019, 09:27 AM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)