Thread Rating:
  • 13 Vote(s) - 3.46 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery অভিশপ্ত ডায়েরী by subha chatterje completed
#51
পর্ব ৯- ব্যাভিচারঃ

সাইদুল জানে যে তিলোত্তমার সাথে রাজু যা করেছে তা শুধুই ওর প্রতিহিংসাপরায়ন মানসিকতার জন্য। বন্ধু হিসেবে সাইদুলের কর্তব্য ছিল রাজুকে একটা ভ্রান্ত ধারনা থেকে মুক্ত করা। সুবীরবাবু যে মিথ্যেকথা বলে তিলোত্তমার মন ভেঙে দিয়েছেন তা শুধুই মেয়ের প্রতি নিজের স্নেহ থেকে। তিলোত্তমা হয়ত রাজুকে ভীষণভাবে ভুল বুঝেছিল কিন্তু তা কখনোই প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার মত নয়। তিলোত্তমার সাথে যা হয়েছে তা ঘোর অন্যায়। সাইদুল নিজেও জানে যে সে এই দায় কিছুতেই এড়িয়ে যেতে পারেনা। ঘটনার সুত্রপাত হয় যখন সুবীরবাবুরা আবার সেলিমতলার পুরনো বাড়ীতে ফিরে আসে তখন থেকে। এ প্রসঙ্গে একটি আরও ঘটনা উল্লেখ না করলে সম্পূর্ণ ঘটনাটি পরিস্ফুট হবেনা।
সুবীর বাবুরা বাড়ীটা ছেড়ে দেওয়ার পর, রাজু ও সাইদুলের দুজনের ই মন খুব খারাপ হয়ে যায়। মালতী দেবী ছিলেন রাজু ও সাইদুলের কামনা বাসনা পুরন করার একমাত্র সম্বল। হতাশ জীবনে যখন প্রায় সবগুলো দরজাই ওদের সামনে বন্ধ ছিল তখন মালতী দেবীর অপরুপ সুন্দর শরীর তা ওদের কাছে শুধুই যে বিনোদনের মুল উৎস ছিল তা নয়, তার সাথে সাথে ছিল এক আশ্রয়। নিজেদের জীবনের প্রতি মুহূর্তের ক্ষোভ হতাশা দারিদ্র কে ভুলে থাকার জন্য মালতী দেবীর লাস্যময়ী শরীরটা ছিল ওদের দুজনের কাছে মদ বা গাঁজার চেয়েও প্রিয় আশ্রয়। যাকে নিয়ে ভেবে কল্পনা করে ওরা সব ভুলে থাকতে পারতো।
ওরা জানত আগেরদিন ই মালতী দেবীরা বাড়ী ছেড়ে চলে গেছেন। তবুও প্রতিদিনের রুটিন মেনে ওরা বাড়ীর পেছনের সেই পাতলা গলিটায় নিজেদের পুরনো আড্ডা মারার জায়গায় আসে। ওখানে বসে একে অপরকে মালতী দেবী ও তার দুই মেয়ে না থাকার হতাশার কথা ব্যাক্ত করতে থাকে। ওরা খেয়াল ও করেনি যে ওদের ঠিক পেছনে কোনও এক মানুষ দাঁড়িয়ে ওদের সমস্ত কথা শুনে চলেছে। সেই মানুষের উপস্থিতি ওরা কিছুক্ষন পর টের পায়। সেই ভয়ঙ্কর দিনটার কথা সাইদুল আজ ও ভোলেনি।
রাজু আর সাইদুল নিজেদের আড্ডায় আর ওরা কি করে মালতী দেবীর শরীরটা প্রতিদিন ভোগ করত সেই আলোচনাতেই মশগুল ছিল। হথাত ই সাইদুলের মনে হয় কেউ একজন ওদের ঠিক পেছনেই দাঁড়িয়ে আছে। সাইদুল পেছন ঘুরে দেখে আঁতকে ওঠে। ওদের ঠিক পেছনেই মানব বাবু দাঁড়িয়ে ছিলেন। এবং সাইদুল নিশ্চিত যে এতদিন ধরে ওরা যে অপকর্ম করে এসেছে তাও মানব বাবু সম্পূর্ণভাবে বুঝে গেছেন। দেওয়ালের নিচের দিকে ইট সরিয়ে ওরা যে গর্তটা করেছিল, সেই গর্তেও ইট দিয়ে ঢেকে রাখার কথা ওদের মনে ছিলনা। রাজুও সাইদুলের দেখাদেখি পেছন ঘুরে তাকায়। মানব বাবু যে এরকম রুদ্রমূর্তি ধারন করতে পারেন তা ওরা ভ্রুনাক্ষরেও কখনো বোঝেনি। ওরা দুজনেই উঠে দাঁড়ায়। সাইদুল জানে রাজু ঠিক কতটা রগচটা ছেলে, তাই সাইদুল ঠিক করে নেয় যাই হয়ে যাক ও মানব বাবুর সাথে কথা বলবে, রাজুকে কিছুই বলতে দেবেনা। এক হাত দিয়ে রাজুকে কিছুটা পেছনের দিকে ঠেলে দিয়ে ও মানব বাবুর দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে
সাইদুলঃ দাদা কিছু বলবেন? আমরা এই বাড়ি ফিরছিলাম তাই ভাবলাম একটু আড্ডা মারি...
সাইদুলের কথা শেষ হওয়ার আগেই সপাটে এক চড়। সাইদুল প্রায় হুমড়ি খেয়ে মাটিতে গিয়ে পড়ে। সাইদুল উঠে দাঁড়ানোর আগেই রাজু সামনে এগিয়ে আসে। মানব বাবুর চোখে চোখ রেখে বলে ওঠে
রাজুঃ একি আপনি কোন অধিকারে ওর গায়ে হাত দিলেন? আমরা গরিব বলে কি মানুষ নই নাকি।
রাজুর এই উদ্ধত স্পর্ধা মানব বাবুর মেজাজটাকে আরও বেশি করে তাতিয়ে তোলে। মানব বাবুর চোখের কোঠর থেকে লাল রঙের দুটো বিস্ফোরিত চোখ বাইরে বেড়িয়ে আসে। সাইদুলের ক্ষমতা ছিলনা সেই চোখের দিকে তাকানোর। রাজু নির্ভীক, এইরকম বহু তথাকথিত ভদ্রলোকের সাথে রাজু বহু লড়াই করেছে। ভয় শব্দটা রাজুর অভিধানে নেই। রাজু আবার বলে ওঠে
রাজুঃ কি ব্যাপার বলুন, আপনি ওকে চড় মারলেন কেন? আপনি কি ওর অবিভাবক?
মানব বাবু এতক্ষন রাগে বিষধর সাপের মত ফোঁসফোঁস করছিলেন। এতক্ষনে উনি হুঙ্কার ছাড়লেন
মানব বাবুঃ (প্রচণ্ড জোরে চিৎকার করে) শুয়োরের বাচ্চা মুখে মুখে কথা বলছিস। চল তোকে কয়েক বছরের জন্য জেলের ঘানি টানাবো। (মানব বাবু এক হাত দিয়ে রাজুর জামার কলারটা চেপে ধরলেন)
সাইদুল বুঝতে পেরছিল যে এমনকিছু হয়ে যেতে পারে যাতে রাজু ও ওর দুজনের ই পরিবার বিশাল বিপদে পড়ে যাবে। সাইদুল দ্রুত উঠে দাঁড়ায়। গায়ের জোর দিয়ে রাজুকে ঠেলে পেছনে নিয়ে যায়। সাইদুল নিজে মানব বাবুর মুখোমুখি দাঁড়ায়। কিছুটা কাতর স্বরে বলে ওঠে
সাইদুলঃ দাদা আমাদের যদি কিছু ভুল হয়ে থাকে, তো ছোট ভাই ভেবে আমাদের ক্ষমা করে দিন। মানুষমাত্রেই ভুলভ্রান্তি হয়, আমাদের ও হয়েছে।
মানব বাবু এবার সাইদুলের ও কলার টা চেপে ধরেন। প্রচণ্ড জোরে চিৎকার করে বলে ওঠেন
মানব বাবুঃ ভুল, এটা ভুল! তোরা তো ক্রিমিনাল রে। পরের বাড়ীর পাঁচিলের ইট সরিয়ে বাড়ীর মেয়েদের স্নান করা দেখিস। তোদের দুজনকেই আমি আজ এক্ষুনি পুলিসে দেবো।
এতক্ষন রাজু পেছনে দাঁড়িয়ে ছিল। সাইদুল জানে রাজুর কলারে কেউ হাত দিলে রাজুর ও মাথায় রক্ত উঠে যায়।
রাজুঃ যান এক্ষুনি পুলিসে খবর দিন। আপনার কাছে প্রমান আছে কিছু যে আমরা এরকম করেছি বলে।
রাজুর কথা মানব বাবুর রাগকে শতগুন বাড়িয়ে দেয়। সাইদুল কোনরকমে মানব বাবু ও রাজুর মধ্যে থেকে দুজনকে বাধা দিয়ে দূরে রাখে।
মানব বাবুঃ (প্রচণ্ড চিৎকার করতে করতে) শালা, আমার এক কথায় তোর মত চুনোপুঁটির ফাসি হয়ে যাবে রে। তুই কি জানতে চাস আমার কত ক্ষমতা। দাঁড়া দেখাচ্ছি আমি।
মানব বাবু পকেট থেকে মোবাইলটা বার করে কারুর একটা নাম্বার খুঁজতে শুরু করেন। এতক্ষনে সাইদুল বোঝে ব্যাপারটা সত্যি ই খুব বাজে দিকে চলে যাচ্ছে। যা কিছু করার ওকেই করে ফেলতে হবে। সাইদুল মানব বাবুর হাঁটুর কাছে বসে দুহাত দিয়ে মানব বাবুর পা জড়িয়ে ধরে। প্রায় কেঁদে ফেলার মত করে মানব বাবুর পা জড়িয়ে সাইদুল কাকুতি মিনতি করতে থাকে
সাইদুলঃ দাদা আপনি তো সব ই জানেন। বেকার ছেলে আমরা। চাকরি বাকরি কিছুই নেই। বদসঙ্গে পরে এরকম ভুল কাজ করে ফেলেছি। আপনি তো আমাদের মাই বাপ। আমাদের এলাকার এতো নামকরা রাজনীতিক, আপনি যদি একটু দয়া না করেন কে করবে দাদা। দাদা আমরা দুজনেই গরিবের ছেলে দাদা। আমাদের দয়া করুন। আপনি কি পরিমান ক্ষমতাশালী তা আমরা খুব ভালো করেই জানি। প্লিজ ক্ষমা করে দিন দাদা।
কিছুদিন পড়েই মিউনিসিপ্যালিটি ভোট, হয়ত সেই কথা চিন্তা করেই মানব বাবু নিজেকে একটু শান্ত করেন।
মানব বাবুঃ গরিবের ছেলে তাই পুলিসে দিলাম না তোদের। এই বাড়ীর আশেপাশেও আর কোনোদিন তোদের দুজনকে দেখতে চাইনা। হারামি কোথাকার। পরের বাড়ীর মেয়েদের দিকে কুনজর দিস।
বলেই প্রায় লাথি মেরে সাইদুলকে পা থেকে সরিয়ে দেন মানব বাবু। রাজু দূরে দাঁড়িয়ে রাগে থরথর করে কাঁপতে থাকে। বেঁচে থাকতে বন্ধুর এই অপমান রাজুকে দেখতে হোল এ কথা রাজু নিজেকেই বিশ্বাস করাতে পারেনা। “ভাগ শুয়োরের বাচ্চা ভাগ এখান থেকে” আবার একটা গর্জন ভেসে আসে। সাইদুল উঠে দাঁড়ায়। রাজুকে প্রায় টানতে টানতে ওখান থেকে নিয়ে চলে যায়। বস্তিতে ঢোকার পর রাজু প্রথমবারের জন্য মুখ খোলে
রাজুঃ শালা নিজে পরের বউকে ভোগ করে তাতে কোনও অন্যায় নেই। আর আমরা যদি তা করতে যাই, তখন ই ভদ্রলোক সেজে যায়।
সাইদুল রাজুকে শান্ত করার জন্য বলে ওঠে
সাইদুলঃ ছাড় না ভাই। ওদের এতো পয়সা, এতো ক্ষমতা, আমরা কি ওদের সাথে পেরে উঠবো নাকি। ভুলে যা সবকিছু। আর ওরাও তো এখন এখানে থাকেনা। ছেড়ে চলে গেছে। আর তো কোনোদিন দেখা...
রাজুঃ দেখা হবেই রে। আমি তিলোত্তমার কোনও ক্ষতি করিনি। পারলে অনেককিছুই করতে পারতাম। বাবার এককথায় আমায় ভুল বুঝে গেলো। কত কত বাজে কথা আমায় বলল।
সাইদুলঃ ছাড় না, ভুলে যা সব। আমরা গরিব আমাদের কি আর এইসব ভাবা উচিত রে। ছেড়ে দে। তারচেয়ে চল আজ বিকেলে একটু ঘুরে আসি।
রাজুঃ তুই ঘুরতে যা সাইদুল। আমার মুড ভালো নেই।
বলেই রাজু হনহন করে নিজের ঘরের দিকে যেতে শুরু করে। সাইদুল জানে রাজুর মুড গরম থাকলে স্বয়ং ভগবান ও ওকে আটকাতে পারবে না। সাইদুল বাড়ীতে ঢুকে স্নান করে নেয়। আম্মি বাইরে কোথাও গিয়েছিল, আম্মি এসে খেতে দেবে তাই ও আম্মির জন্য অপেক্ষা করছিল। এমন ই সময় ঘরের দরজাটা প্রচণ্ড জোরে খুলে যাওয়ার আওয়াজ। সাইদুল বাইরে বেড়িয়ে দেখে রাজু এসেছে। প্রায় দূর থেকেই চেঁচাতে চেঁচাতে আসতে শুরু করে
“আম্মি কি বাড়ীতে আছে?”
সাইদুল জানে, রাজুর মাথা বিগড়ে গেছে। এইসময় ওকেই খুব শান্ত হয়ে থাকতে হবে। সাইদুল মাথা নেড়ে বুঝিয়ে দেয় যে আম্মি বাড়ীতে নেই। রাজু ভেতরে ঢুকে বসে। রাজুর ঘন ঘন শ্বাস নেওয়া আর লাল টকটকে দুই চোখ দেখে সাইদুল বেশ ভালো ভাবেই বুঝতে পারে যে অপমানটা রাজু ভালোভাবে নেয়নি।
রাজুঃ সাইদুল, আমি যদি ওই ৩ টে মেয়েমানুষের সাথে বিছানায় না শুতে পারি তাহলে আমি কিছুতেই শান্তিতে ঘুমাতে পারবোনা। আমাকে অনেকদিন পর কেউ এভাবে অপমান করার সাহস দেখাল। আমার কথাগুলো মন দিয়ে শোন। আমি জানি সুবীর বাবুই তিলোত্তমাকে ভুল বুঝিয়েছিলেন। তিলোত্তমা শেষ ম্যাসেজটায় আমাকে বলেছিল যে ও নিজের সিম চেঞ্জ করে নেবে। সাইদুল তিলোত্তমা কিন্তু নিজের সিম চেঞ্জ করেনি।
সাইদুলঃ ছেড়ে দে না ভাই। ওরা তো এখন অনেক দূরে থাকে। ছেড়ে দে এতো কেন চিন্তা করছিস।
রাজুঃ (প্রচণ্ড জোরে চিৎকার করে) আরে এই পৃথিবীতেই তো থাকে নাকি। পৃথিবীর বাইরে তো আর চলে যায়নি। তুই দেখে নিস ওরা ফিরে আসবে। ভাই তিলোত্তমার মনে এখনো রাজুর নাম লেখা আছে। আমি ওকে রোজ ম্যাসেজ পাঠাই। ও হয়ত উত্তর দেয়না। ফোন করলে ফোন ধরেনা। কিন্তু এটাও সত্যি যে ও নাম্বারটা কিন্তু চেঞ্জ করেনি। আমি নেবো তিলোত্তমাকে তুই রূপসাকে আর দুজন মিলে মালতীকে। মনের মধ্যে যত ভালোমানুষি লুকিয়ে আছে সেগুলো বাইরে ছুঁড়ে ফেলে দে।
সাইদুল সেদিন ওকে আটকায়নি। মালতী দেবীর সাথে যা হয়েছে সে ব্যাপারে ওর কোনও দুশ্চিন্তা নেই। তার কারন মালতী দেবীকে তার আগে এমন অবস্থায় ও আর রাজু দেখেছে যে সত্যি ই মালতী দেবীর ওপর থেকে ওর সব সম্মান চলে গেছে। ওর কাছে মালতী দেবী শুধুই একটা যৌনতায় ভরপুর শরীর, যে প্রতি মুহূর্তে একজন পুরুষ শরীরকে খুঁজে বেড়ায়। কিন্তু তিলোত্তমা সত্যি ই খুব ভালো। তিলোত্তমা রাজুকে আবার নতুন করে বিশ্বাস করেছিল। আর তার বদলে ওরা যা ফিরিয়ে দিল তা সত্যি ই ব্যাবিচার।
[+] 2 users Like manas's post
Reply


Messages In This Thread
RE: অভিশপ্ত ডায়েরী by subha chatterje completed - by manas - 19-01-2019, 09:25 AM



Users browsing this thread: 8 Guest(s)