Thread Rating:
  • 13 Vote(s) - 3.46 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery অভিশপ্ত ডায়েরী by subha chatterje completed
#46
পর্ব ৪- সাইদুলের দ্বন্দ্বঃ

রূপসা চলে যাওয়ার পর ও সাইদুল ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকে। সাইদুল একটা ধন্দের মধ্যে পড়ে যায়। সত্যি ই কি রূপসার মত একটা রাফ মেয়েকে বিছানায় শোয়ানো যায়। কি দরকার ওর এতো সময় নষ্ট করার। সাইদুল যেকোনো কঠিন পরিস্থিতি তে যা করে ঠিক তাই করল। সাইদুল রাজুকে ফোন করে।
সাইদুলঃ ভাই, মনে হয়না এই মাল টা পটবে। এর হেবি ঘ্যাম। এই বয়সে কি আর পাগলের মত মেয়েদের পেছন পেছন ঘোরা যায়। এতো দেখছি তাই চায়।
সাইদুল রাজুকে সবকথা খুলে বলে।
রাজুঃ তুই সত্যি ই মূর্খ রে সাইদুল। আরে এতো পুরো পটেই গেছে রে। এতো কেন ভাবছিস তুই। আজ এমন একটা কিছু কর যাতে ও পুরোপুরি তোর ওপর ফিদা হয়ে যায়। অন্য কিছু ভাবিস না।
রাজুর কথায় সাইদুলের মনে একটু সাহস আসে। সাইদুল ভাবতে থাকে কি করা উচিত সেব্যাপারে। আপাতত একটাই লক্ষ্য, গার্লস হোস্টেল। সাইদুল গার্লস হোস্টেল টা চেনে। সাইদুল সোজা চলে যায় গার্লস হোস্টেলের কাছে। উল্টো দিকেই একটা বিশাল বট গাছ আর তারপাশেই একটা চায়ের দোকান। সাধারনত কলেজ এর ই ছেলেমেয়েদের জন্য ওই দোকান টা। সাইদুল গিয়ে দোকান থেকে এক কাপ চা নেয় ও আবার গাছের তলায় এসে দাঁড়ায়। চায়ে একটা কি দুটো চুমুক দিয়েছে ওমনি দেখে ভেতর থেকে এক ঝাঁক মেয়ে বাইরে আসছে। সাইদুলের চোখ এটাও এড়িয়ে যায়নি যে ওদের মধ্যে রূপসা ও আছে। বট গাছ টা একদম হোস্টেলের গেটের সোজা। হথাত একটা মেয়ে চেঁচিয়ে বলে
“এই ছেলেটা কে রে? আগে তো দেখিনি। দেখে তো কলেজ এর স্টুডেন্ট বলে মনে হচ্ছেনা। ঠিক ঝাড়ি মারার জন্য বাইরে থেকে এসেছে। দাঁড়া সিকিউরিটি কে বলে এর মজা দেখাচ্ছি”
কথাটা সাইদুলের ও কানে এসেছে। সাইদুল এই মুহূর্তে একটা দ্বৈত সঙ্কটের মধ্যে। ভয় পেয়ে পালিয়ে যাবে নাকি দাঁড়িয়ে থাকবে। রূপসা ওর ই দিকে তাকিয়ে আছে। সম্ভবত রূপসা ও ওকে পরীক্ষা করতে চাইছে। সাইদুল একবার চোখ টা বন্ধ করে ভেবে নেয়। মনে মনে বলে না এতটা যখন এগিয়েই গেছি, তখন শেষ দেখেই ছাড়বো। ওদিকে একটা মেয়ে ততক্ষনে হোস্টেলের ভেতরে ঢুকে সিকিউরিটির কাছে চলে গেছে। ভেতরের সব আওয়াজ বাইরে আসছে।
“দাদা ওই গাছের তলায় দেখুন একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। আমাদের কলেজ এর নয়। এভাবে গার্লস হোস্টেলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা তো ঠিক নয়”
এতক্ষন রূপসা শুধুই সাইদুলকে পরীক্ষা করার ছলে পুরো ব্যাপারটা দেখে যাচ্ছিল। এবার রূপসার ও ভয় লাগতে শুরু করে। রূপসা একটু পিছিয়ে এসে সাইদুলের দিকে ইশারা করে ওকে ওখান থেকে চলে যেতে বলে। কিন্তু সাইদুল মুখ ঘুরিয়ে নেয়। ও জানে এটাই ওর ফাইনাল পরীক্ষা, এটায় উতরে যেতে পারলে আর কোনও চিন্তা থাকবেনা। ভেতর থেকে দুজন সিকিউরিটি সাইদুলের দিকে এগিয়ে আসে। সাইদুল মাথা তুলে ওদের দিকে তাকিয়ে থাকে।
সিকিউরিটিঃ তুমি কে ভাই? কোন ইয়ারের স্টুডেন্ট? আগে তো তোমায় কখনো কলেজ এ দেখিনি। এখানে কি করছ?
সাইদুলঃ না আমি কোনও স্টুডেন্ট নই। আমি এমনি ই দাঁড়িয়ে আছি। আমি এখানেই দাঁড়িয়ে থাকবো।
সাইদুলের স্পর্ধা দেখে সমস্ত মেয়েরা এমনকি রূপসা ও স্তম্ভিত হয়ে যায়।
সিকিউরিটিঃ দেখো ভাই, তোমার ভালোর জন্যই বলছি। এখানে বাইরের ছেলেদের দাঁড়িয়ে থাকার অনুমতি নেই। তুমি এখান থেকে এক্ষুনি চলে যাও।
সাইদুলঃ না আমি যাবনা।
এবার রূপসার ও ভয় করতে থাকে। ওরা সাইদুল কে মারবেনা তো। নিজেকে দোষী মনে হয়। ও চাইলেই ওই মেয়েটাকে সিকিউরিটির কাছে যাওয়ার থেকে আটকাতে পারতো। এইসব ভাবতে ভাবতেই হথাত এক সিকিউরিটি জোরে একটা চড় মারে সাইদুলের গালে। সাইদুল মাটিতে পড়ে যায়। আবার উঠে দাঁড়ায়।
সাইদুলঃ যত ইচ্ছে মারো। আমি এখান থেকে যাবনা।
সাইদুলের এই স্পর্ধা দেখে, সিকিউরিটি দের পক্ষে আর চুপ করে থাকা সম্ভব ছিলনা। দুজন সিকিউরিটি নিজের নিজের লাঠি দুটো দিয়ে সাইদুল কে বেধড়ক মার মারতে লাগলো। সাইদুল মাটিতে পড়ে যন্ত্রণায় ছটপট করতে লাগলো। এবার যে মেয়েরা ওখানে দাঁড়িয়ে ছিল তাদের ও খুব মায়া হতে লাগলো। রূপসার চোখ দিয়ে টপ টপ করে জল পড়তে লাগলো। রূপসা আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারলনা। রূপসা দৌড়ে ওখানে চলে গেলো।
রূপসাঃ প্লিজ ওকে মারবেন না। ও আমার পরিচিত, ও আমার ই কাছে এসেছিলো।
সিকিউরিটি রা সবাই দাঁড়িয়ে যায়। সাইদুল ও উঠে দাঁড়ায়। রুপ্সা সাইদুলের হাত ধরে ওকে কিছুটা দূরে নিয়ে যায়। একজন সিকিউরিটি বলে ওঠে
সিকিউরিটিঃ এই যে মিস, এটা রোমান্স করার জায়গা নয়। আপনি ওকে আগে থেকে যদি চিনে থাকেন তো আমাদের বলেন নি কেন?
রূপসা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে। যে মেয়েটা সিকিউরিটি কে নালিশ করেছিল সে এগিয়ে আসে
“রূপসা তুই যদি ছেলেটাকে চিনতিস তাহলে আমায় আটকালি না কেন? এ তুই ভীষণ বাজে কাজ করেছিস। এভাবে একজন কে মার খাওয়ালি”
রূপসা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে। রূপসার চোখ দিয়ে টপ টপ করে জল পড়তে থাকে। সাইদুল সেটা লক্ষ্য ও করে। সাইদুল এটা বুঝেও যায় যে এতো মার ও খেলো এর ওষুধ ও পেয়ে যাবে। আবার একজন সিকিউরিটি বলে ওঠে
“আপনার রোমান্স করার ইচ্ছে যদি হয়ে থাকে তাহলে আপনি কলেজ এর দিকে যান। গার্লস হোস্টেল এর সামনে ছেলেদের দাঁড়িয়ে থাকার অনুমতি নেই”
রূপসা বুঝতে পারে যে কথাটা ওর ই উদ্দেশে বলা হয়েছে। রূপসা সাইদুলের হাত টা ধরে ওখান থেকে কিছুটা জোর করেই ওকে নিয়ে যায়। গার্লস হোস্টেল ছাড়িয়ে ওরা অনেক টা দূর অবধি চলে যায়। না তো রূপসা না তো সাইদুল কারুর ই মুখে কোনও কথা নেই। বেশ কিছুটা যাওয়ার পর বাদিকে একটা ফাঁকা মাঠ আর ওখানে কিছু কমবয়সী ছেলে মেয়ে বসে আছে। রূপসা এবার বলে
রূপসাঃ চলো আমরা ভেতরে গিয়ে বসি।
সাইদুল কোনও উত্তর দেয়না, শুধু রূপসার সাথে যেতে শুরু করে। ওরা মাঠের মধ্যে একটা ফাঁকা জায়গা দেখে বসে পড়ে। এবার সাইদুল এতক্ষন পর কথা বলে
সাইদুলঃ কি রূপসা এতক্ষনে নিশ্চয়ই এই গরিবের ছেলেটার ওপর বিশ্বাস হচ্ছে তোমার। আমি চাইলেই কিন্তু পালিয়ে যেতে পারতাম কিন্তু আমি পালিয়ে যাইনি।
রূপসা কোনও উত্তর না দিয়ে শুধু নিচের দিকে তাকিয়ে থাকে আর রূপসার চোখ দিয়ে টপ টপ করে জল পড়তে থাকে। সাইদুল ও চুপ করে যায়। রূপসা, সাইদুলের হাত টা আলতো করে ধরে বলে ওঠে
রূপসাঃ সাইদুল, আমি অসহায়। আমার বাবা মা আমায় অনেক কষ্ট করে মানুষ করেছে। আজ আমাদের অবস্থা দেখে তুমি তা বুঝবেনা, কিন্তু আমার বাবা মার অনেক আত্মত্যাগ রয়েছে, আমার আর তিলোত্তমার জন্য।
সাইদুলঃ আমি তো তোমার থেকে কিছুই চাইনি। তুমি এতো কেন ভাবছ? আমি জানি আমার তোমার মধ্যে বিশাল দুরত্ব রয়েছে। আমি তো তোমায় একবারের ও জন্য বলিনি যে তুমি আমায় ভালোবাসো বা আমায় বিয়ে কর।
রুপ্সা আবার চুপ করে যায়। বেশ কিছুক্ষন দুজনেই চুপ করে থাকে।
রূপসাঃ তুমি হয়ত সত্যি ই বুঝবেনা। কিন্তু আমার সত্যি ই কিছু প্রবলেম আছে। আর যে সম্পর্ক টিকবেই না তাকে আগে বাড়িয়ে কি লাভ বলতো।
সাইদুলঃ লাভ ক্ষতি আমি খুব একটা বুঝিনা। আমি সামান্য একটা ছেলে। আমি তো আমার মনের ই কথা মেনে চলেছে ব্যাস এতটুকুই।
রূপসাঃ তুমি ই বলে দাও আমার কি করা উচিত?
সাইদুল কিছুক্ষন চুপ করে থাকে। তারপর কিছুটা অস্ফুট কণ্ঠে বলে ওঠে
সাইদুলঃ তোমায় কবে থেকে দেখি জানিনা। আমার জীবনে প্রচুর যন্ত্রণা দুঃখ কষ্ট আছে। তোমায় দেখলে সব মিলিয়ে যেত। মন তা ঠিক হয়ে যেত। তুমি বাড়ী তে থাকনা, তোমায় চোখের সামনে দেখতে পাইনা আমার তাই আর কিছুই ভালো লাগেনা।
রূপসা কোনও উত্তর দেয়না।
রূপসাঃ সাইদুল এর আগে আমায় কেউ এরকম ভাবে বলেনি। সাইদুল মেয়েদের হৃদয় প্রচণ্ড কমজোর হয়। একটা মেয়ে যখন নিজের মনের কথাগুলো অন্যের মুখ থেকে শুনে নেয় তখন আর তার নিজের হৃদয়ের ওপর কন্ট্রোল থাকেনা। আমি আমার বাবা মাকে ঠকাতে চাইনা।
সাইদুলঃ আমার দোষ তা কি, শুধু কি এটাই যে আমি গরিব। আমি তোমায় ভালোবাসি রূপসা। প্লিজ একটু আমার কথাগুলো বোঝো। আমি নিজেও জানিনা আমি কি করে তোমায় বোঝাবো।
রূপসাঃ তুমি এতটাও হতাশ কেন হয়ে যাচ্ছ। আমার তোমাকে খুব খুব খুব ভালো লাগে। কিন্তু এটাও তো সত্যি যে আমি একজন মেয়ে। প্লিজ একটু ধৈর্য ধর আর আমাকে একটু সময় দাও। আমরা আজ ফোন এ কথা বলব। তুমি আমার ফোন নাম্বার তা রেখে দাও।
সাইদুল রূপসার ফোন নাম্বার তা সেভ করে নেয়।
রূপসাঃ সাইদুল, আমার এবার লেট হচ্ছে। তুমি সাবধানে বাড়ী যাও। আমি তোমায় ১-২ ঘণ্টা পর ফোন করছি।
সাইদুল সাইকেল তা নিয়ে উঠে পড়ে। সাইদুল জানে ওর প্ল্যান সুপারহিট। সাইদুল আসতে আসতে সামনের দিকে এগোতে থাকে। রুপ্সা হোস্টেলের দিকে চলতে শুরু করে। সাইদুল দাঁড়িয়ে পড়ে, একবার পেছন ঘুরে দেখে, রুপ্সা ওর দিকে তাকিয়ে মিষ্টি একটা হাসির সাথে সুন্দর ভাবে হাত তা নাড়ছে। হথাত ই সাইদুলের বুক তা কেমন করে ওঠে। সাইদুল সামনের দিকে এগিয়ে চলে আর নিজেকে প্রশ্ন করে “আমি কি সত্যি ই ওকে ভালবেসে ফেললাম। সত্যি ই কি আমার জীবনে এরকম ই একজনকে চাই। আমিও কি মানুষের মত বাঁচতে পারি” সাইদুলের মন তা খুব খারাপ হয়ে গেলো। গাঁজা মদের জীবনে মরুদ্যানের মত করে ফিরে এলো রূপসা। সত্যি ই কি সাইদুল এতক্ষন রূপসার সাথে অভিনয় করছিল। সাইদুল কাকে বেছে নেবে রূপসা না রাজু।
[+] 1 user Likes manas's post
Reply


Messages In This Thread
RE: অভিশপ্ত ডায়েরী by subha chatterje completed - by manas - 19-01-2019, 09:22 AM



Users browsing this thread: 6 Guest(s)