Thread Rating:
  • 12 Vote(s) - 3.42 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery অভিশপ্ত ডায়েরী by subha chatterje completed
#45
পর্ব ৩- রূপসার হৃদয়ঃ

সত্য বাবুঃ সুবীর বাবু গল্পটা শুরু হয়ে গেছে। আপনার জন্য আমার খুব ই খারাপ লাগছে সুবীর বাবু। এই গল্পটার সাথে আপনার ব্যাক্তিগত জীবন ও আপনার স্বজনরা জড়িয়ে আছে। কিন্তু কি করব বলুন গল্পটা বলা যে আমার দায়িত্ব। এতক্ষন মালতী দেবীর ব্যাপারেই আপনাকে বলছিলাম। কিন্তু আপনার দুই মেয়ে রূপসা ও তিলোত্তমা ও এই গল্পের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে। অর্থাৎ যৌন সঙ্গম যে শুধু মালতী দেবীর ই হয়েছে তা নয়, রূপসা ও তিলত্তমাও এই অভিশপ্ত ডায়েরীর শিকার। প্রথমেই আপনাকে রূপসার ব্যাপারে বলতে চাই। এই ঘটনা তা ঘটে আজ থেকে ঠিক ১০ দিন আগে। রূপসা তখন কলেজ থেকে বাড়ী ফিরেছিল। রূপসা নিজেকে যতই চালাক ও পটু মনে করুক না কেন ফাঁদে রূপসাও পড়েছিল।
সুবীর বাবুঃ সত্য বাবু প্লিজ চুপ করে যান। আমি আর শুনতে চাইনা।
সুবীর বাবু মাথায় হাত দিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে বসে থাকলেন। সত্য বাবু কিছুক্ষন চুপ করে থাকার পর আবার শুরু করলেন।
সত্য বাবুঃ বহুদিন ধরেই সাইদুলের নজর ছিল রূপসার ওপর। সাইদুল প্রায় ই রূপসার কলেজ এর সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতো। রূপসা ও বহুবার তা লক্ষ্য করেছিল। সাইদুল কখনো রূপসার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেনি, শুধুই দাঁড়িয়ে থাকতো আর রূপসা কে দেখত। রূপসার মধ্যে ধৈর্যের প্রচণ্ড অভাব। রূপসা একদিন অধৈর্য হয়ে পড়ে নিজের থেকেই সাইদুলের কাছে যায়, এবং কিছুটা ভয় দেখানোর ভঙ্গীতে বলে ওঠে।
রূপসাঃ সাইদুল দা তুমি এরকম ভাবে আমায় ফলো করা বন্ধ কর। নয়ত আমি সবকথা বাবাকে বলে দেবো। বাবা জানলে ঠিক কি হতে পারে তা তুমি খুব ভালো করেই জানো। আজকের পর থেকে তোমায় যেন আর কখনোই আমায় ফলো করতে না দেখি।
রূপসা ফিরে চলে যাচ্ছিল হথাত ই সাইদুল বলে ওঠে
সাইদুলঃ তোমার বাবা জানলে আমার তোমাদের বাড়ীতে দুধ দেওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। হয়ত আশেপাশের সমস্ত বাড়ীতেও উনি কথা বলে আমার দুধ দেওয়া বন্ধ করিয়ে দিতে পারেন। এরচেয়েও বেশি আমার অন্য কোনও ক্ষতি করতে পারেন। হয়ত আমার পরিবার টা ভেসে যাবে। হয়ত পাড়ায় আমার বাড়ীর কেউ মুখ দেখাতেও পারবেনা। কিন্তু তারমানে এটা নয় যে আমি আমার মনের কথা টা চেপে রাখব। আজ এতো বছর ধরে তো চেপেই রেখেছি।
রূপসা এটা হয়ত আশা করেনি। যতই নিজেকে আধুনিক ও স্মার্ট দেখানোর চেষ্টা ও করুক আসলে তো ও একজন নারী। সদ্য আঠেরো তে পা দেওয়া একটা তরুণীর মন যতটা আবেগপ্রবন হওয়া উচিত ওর ও তো ঠিক ততটাই। রূপসা পেছন ঘুরে আবার সাইদুলের দিকে দেখে। এদিকে সাইদুল ও বুঝে যায়, রাজুর সমস্ত প্ল্যান ই সাকসেসফুল হয়ে যাচ্ছে। রাজুও তাই ধীরে ধীরে নিজের সংলাপগুলো মনে করতে শুরু করে।
সাইদুলঃ তোমায় প্রথম দেখেছিলাম আজ থেকে প্রায় ৫ বছর আগে। সেদিন ই আমি প্রথম তোমাদের বাড়ী তে দুধ দিতে গেছিলাম। তার আগে আমার বাবা তোমাদের বাড়ীতে দুধ দিতেন। আগের দিন আমার বাবা মারা গেছিলেন। মন প্রচণ্ড খারাপ ছিল। যখন প্রথম ঢুকলাম, দেখি একটা লাল ফ্রক পড়ে তুমি ব্রাশ করছ। ব্যাস প্রথম দেখাতেই প্রেম। আমি সেদিন থেকেই তোমায় ভালোবাসি রূপসা। জানি আমরা দুজন সম্পূর্ণ আলাদা। আমাদের মানায় না। তোমায় পাওয়ার কোনও আশাই আমি করিনা। শুধু তোমায় ভালোবাসি।
রূপসা সাইদুলের ই দিকে তাকিয়ে থাকল। সাইদুল একটু হেসে, ওকে একটু হাত নেড়ে ওখান থেকে চলে এলো। রূপসার পুরো ব্যাপারটা কেমন যেন একটা ফেয়ারি টেল এর মত লাগলো। একজন ওকে ভালবাসে আর সহজ সরল ভাবে ওকে নিজের ভালোবাসা প্রকাশ করে চলে গেলো। এর আগে যে কেউ রূপসা কে নিজের ভালোবাসা প্রকাশ করেনি তা নয়, কিন্তু এতটা সহজ সরল ভাবে কেউই করেনি কখনো। রূপসা ধীরে ধীরে কলেজ এ ফিরে গেলো। কিন্তু ক্লাস এ কিছুতেই মন লাগলো না। কানের সামনে শুধু সাইদুলের ওই কথাগুলো ভাসতে লাগলো। কেউ যেন কানে কানে বলে গেলো আরে রূপসা এটাই তো সত্যিকারের ভালোবাসা, একে আর ঠোক্কর মারিস না। রূপসা একবার নিচের দিকে তাকিয়ে হেসে উঠল।
এদিকে সাইদুল বাড়ী গিয়ে সবকথা রাজুকে খুলে বলে। অভিজ্ঞ রাজু জানে যে সাইদুলের রূপসাকে ভোগ করা পৃথিবীর কোনও শক্তি ই আর রুখতে পারবে না। শুধু কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে।
রাজুঃ ভাই তোর জন্য এতটা করলাম, তুই আমার জন্য কিছু করবি তো।
সাইদুলঃ আরে ভাই তুই তো আমার জিগ্রি দোস্ত রে, তোকে না দিয়ে আমি কি একা কিছু খেতে পারি। যা খাব তোর সাথে ভাগ করেই খাব, কোনও চিন্তা করিস না।
রাজুঃ ঠিক আছে ভাই। কিন্তু একটা কথা মনে রাখবি সবসময় যে এখনো কিছুই হয়নি আরও অনেক অনেক চেষ্টা তোকে করতে হবে তবেই তুই রূপসা কে পাবি। তাড়াতাড়ি খাওয়া দাওয়া সেরে নিয়ে বেড়িয়ে যা। ওদের কলেজ তো ৫ টায় ছুটি হয়। কলেজ থেকে হোস্টেল অবধি রাস্তা তা খুব একটা কম নয়।
সাইদুল রাজুর ইশারা ভালই বুঝতে পারে। সাইদুল তাড়াতাড়ি খেয়ে নিয়ে বেড়িয়ে পড়ে। কলেজ এর সামনে পৌছাতে পৌছাতে পউনে ৫ টা হয়ে যায়। সাইদুল চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে। ঠিক ৫ তার সময় কলেজ থেকে এক এক করে সব ছেলে মেয়েরা বের হতে শুরু করে। রূপসা ও বেরোয় আর সোজা রাস্তা বরাবর হাঁটতে শুরু করে। সাইদুল জানে রূপসা যতদূর ই যাক, একটা বার তো পেছন ঘুরে দেখবেই, ও জানে সাইদুল ওর জন্য ওকে একবার দেখার জন্য দাঁড়িয়ে আছে। সাইদুলের কথাই ঠিক হয়, রূপসা কিছুদুর গিয়ে দাঁড়িয়ে যায় আর বন্ধুদের কিছু বলে। সম্ভবত বন্ধুদের এগিয়ে যেতে বলে, যা সাইদুল শুনতে পায়নি। বন্ধুরা কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার পর রূপসা একবার পেছন ঘুরে দেখে। দেখে বেশ কিছুটা দূরে গাছের নিচে সাইদুল দাঁড়িয়ে আছে। রূপসা দ্রুত মুখটা ঘুরিয়ে নেয়। কিন্তু ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকে। সাইদুল বুঝতে পারে, এটাই গ্রিন সিগন্যাল। রূপসা ওকে দাকছে। সাইদুল সাইকেল নিয়ে রূপসার দিকে এগিয়ে যায়।
রুপ্সাঃ তুমি তো খুব সাহসী। সকালে এতো কিছু বললাম তাও আমার পিছু করছ। আর একদম কলেজ এর মধ্যেই ঢুকে গেছো। জানো এটা হাই সিকিউরিটি এরিয়া, আমি চাইলে তোমায় পুলিসের কাছে ধরিয়ে দিতে পারি।
সাইদুল কিছুই বলল না। রূপসা খুব ধীরে ধীরে সামনের দিকে এগিয়ে চলল। রূপসা যে এতো ধীরে হাঁটে না তা সাইদুল খুব ভালো করেই জানে। ওর এই হাঁটার ভঙ্গী যেন এটাই বলছে আসো সাইদুল আমাকে হোস্টেল অবধি ছেড়ে দাও। সাইদুলের সাহস আরও বেড়ে যায়। সাইদুল সাইকেল তা নিয়ে একটু জোরেই হেঁটে রূপসা কে ধরে ফেলে। রূপসা একবার আড় চোখে দেখে ওর দিকে, একবার নিচের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে, কিন্তু কিছুই বলেনা।
সাইদুলঃ আসলে কলেজ থেকে হোস্টেল এতটা দুরত্ব, তুমি একা একা যাবে। তাই ভাবলাম তোমার সাথে যাই।
রূপসাঃ কই এমন কিছু তো দুরত্ব নয়। আর একা কোথায় আমার সাথে তো বন্ধুরা ছিল। আমি তো বেশ ভালোভাবেই যাচ্ছিলাম।
সাইদুল এবার কিছুটা চুপ করে যায়। সাইদুল ভাবতে থাকে কি বলা যায়।
সাইদুলঃ রূপসা তোমার একটা ফটো দেবে আমায়।
রূপসাঃ কেন তোমায় হথাত করে আমার ফটো কেন দিতে যাবো?
সাইদুলঃ তোমায় এক মুহূর্ত না দেখলে আমার ঠিক করে ঘুম আসেনা। তাইতো আমি তোমাকে দেখার জন্য সাইকেলে করে এতো দূর থেকে ছুটে আসি।
রূপসাঃ (রূপসার বেশ ভালই লাগছিল সহজ সরল একটা ছেলেকে এভাবে টিজ করতে) কেন আমায় না দেখলে ঘুম কেন আসেনা? আমি কি কোনও দেবী নাকি?
সাইদুল চুপ করে থাকে বেশ কিছুক্ষন।
সাইদুলঃ রূপসা আমি তোমায় আগেই বলেছি যে আমি তোমায় ভালোবাসি, কিন্তু রূপসা আমি এর চেয়ে বেশি কিছুই চাইনা। তুমি জানো যে আমাদের মধ্যে সামাজিকভাবে দুরত্ব অনেকটাই। আর তুমি অনেক অনেক বেশি ভালো ছেলে পেয়ে যাবে, তারসাথে তুমি সুখি ও হবে।
রূপসা কোনও উত্তর দেয়না। তবে এটা প্রচণ্ড সত্যি যে এই সহজ সরল কথাগুলো রূপসার হৃদয়কে প্রচণ্ড ভাবে বিদ্ধ করছিল। রূপসা তাও চুপ করে থাকে। রূপসা চাইছিল একবার সাইদুল কে বাজিয়ে দেখতে।
সাইদুলঃ রূপসা, আমাকে নিজের পরিবার তা চালাতে হয়। বাড়ীতে কাজ করার মত ছেলে আমি একাই। আমি যে এভাবে তোমায় দেখার জন্য পাগলের মত এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছি এতে সত্যি আমার পরিবারের খুব ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে।
রূপসাঃ তাতে আমার কি? আমি তো তোমায় বলিনি আমার পেছন পেছন ঘুরতে। তুমি আর আমার পেছন পেছন ঘুরনা। ব্যাস তাহলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।
রুপ্সা কথাগুলো একটু রাফ হয়েই বলেছিল। সাইদুল এতটাও এক্সপেক্ট করেনি। সাইদুল চুপ করে দাঁড়িয়ে পড়ে। আর রুপ্সা সামনের দিকে এগিয়ে চলে।
সাইদুলঃ আমি তোমাকে ভালোবাসি রূপসা। তাই আমি এরকম পাগলের মত তোমার পেছনে ঘুরে বেড়াই। তুমি প্লিজ আমার অবস্থাটা একবার বোঝার চেষ্টা কর।
রূপসা এবার দাঁড়িয়ে পড়ে। রূপসা ও সাইদুলের মধ্যে ৩-৪ হাতের দুরত্ব। রূপসা পেছন ঘুরে সাইদুলের দিকে ফিরে আসে। সাইদুলের সাইকেল এর হ্যান্দেল টা একহাতে ধরে বলে ওঠে
রূপসাঃ দেখো সাইদুল এভাবে কারুর ভালোবাসা পাওয়া যায়না। আর যদি তুমি ভাবো আমার পেছনে দিনরাত ঘুরলেই আমার মন দুর্বল হয়ে যাবে তাহলে তুমি ভুল করছ। আমি সেই মেয়েদের মধ্যে নয় যারা খালি একটা ছেলেকে খোঁজে। আমি সেরকম নই। তুমি যতই আমার পেছনে ঘোর তোমার তাতে কোনও লাভ ই নেই।
সাইদুল কিছুটা ঘাবড়ে গিয়ে ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকে। রূপসা সাইকেল থেকে হাত টা সরিয়ে নিয়ে এবার নিজের স্বাভাবিক ছন্দে, হনহন করে হেঁটে হোস্টেলের দিকে যেতে শুরু করে। সাইদুল নিচের দিকে হতাশায় তাকিয়ে থাকে। বেশ কিছুক্ষন পর “সাইদুল” বলে একটা শব্দ হয়। সাইদুল ওপর দিকে তাকিয়ে দেখে রূপসা আবার ওর কাছে এসেছে।
রূপসাঃ সাইদুল তুমি গরিবের ছেলে, আমার খুব খারাপ লাগলো তোমায় এরকম ভাবে বলে। আমাকে সবাই ভুল বোঝে। আমি এরকম ছেলেদের মত ড্রেস পড়ি, এতো রাফ তাই সবাই আমায় খারাপ ভাবে। কিন্তু তোমায় একটা সত্যি কথা বলি সাইদুল। আমার ও মধ্যে একটা মেয়ে লুকিয়ে আছে। সেই মেয়েটার মন জয় করার চেষ্টা কর। তুমি গরিব না বড়লোক সেটা আমি কখনোই দেখবনা। সত্যি ই দেখবনা। প্রমিস রইল।
রূপসা আবার গটগট করে হেঁটে চলে গেলো। সাইদুল ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকল।
[+] 1 user Likes manas's post
Reply


Messages In This Thread
RE: অভিশপ্ত ডায়েরী by subha chatterje completed - by manas - 19-01-2019, 09:22 AM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)