26-10-2019, 04:18 PM
পার্থও চা নিয়ে ঢুকল। দুজনে মিলে চা খেয়ে একটা সিগারেট ধরিয়ে আমি বাথরুমে চলে গেলাম। দেখি স্নেহা দাঁড়িয়ে আছে একা বাথরুমের সামনে। ওকে দেখিয়ে আমি প্যান্ট খুলতে গেলাম মজা করে। তাই দেখে স্নেহা ‘ও মা ডি কি করছে দ্যাখো’ বলে দৌড়ে ওইখান থেকে পালিয়ে গেল। আমি হাসতে হাসতে বাথরুমে ঢুকে গেলাম। আমি বাথরুম থেকে শুনতে পেলাম তনু স্নেহাকে বলছে, ‘অ্যাই ডি কে রে? কাকে ডি বলে ডাকলি?’ স্নেহার কোন জবাব পেলাম না, তনুও আর কিছু জিজ্ঞেস করলো না দেখলাম। ফিরে এলাম আমি আবার ঘরে ওদের ওখান থেকেই খাওয়া দাওয়া সেরে। তারপরের দিন থেকে আবার সাইট। সেই দৌড়, ক্লায়েন্টের পিছনে, কনট্রাকটরের পিছনে, কাজের পিছনে। পার্থ যথাসাধ্য চেষ্টা করছিলো আমাকে হেল্প করার কিন্তু আমি তো ওর লিমিটেশন জানি। কারো সাথে মন খুলে কথা বলে না, চুপচাপ থাকে। তাই কাজের কোন প্রব্লেম হলে সব আমাকেই সল্ভ করতে হয়। তবু আমি মেনে নিয়েছি কারন তনু আর স্নেহার জন্য। অ্যাট লিস্ট ওদের তো একটু কাছে পাবো। একদিন জাস্ট লাঞ্চ হবে, তনুর ফোন এলো। জিজ্ঞেস করলো, ‘কি করছিস তুই?’ আমি উত্তর দিলাম, ‘কি আর করবো, এই লাঞ্চের জন্য বসে আছি। একটু পরে লাঞ্চ আসবে খাবো।‘ তনু বলল, ‘পার্থ?’ আমি ওকে দেখিনি সাইট থেকে অফিসে আসার পর। বললাম, ‘ও বোধহয় নিজের চেম্বারে আছে কিংবা সাইটে। ঠিক জানি না।‘ তনু অবাকের মত জিজ্ঞেস করলো, ‘আরে তোর সাইটে আছে আর তুই জানিস না কোথায় আছে?’ আমি একটু বিরক্ত হয়ে বললাম, ‘এই দ্যাখ কেমন বোকার মত কথা বললি। আমি যদি দেখে বেড়াই যে কে কোথায় আছে তাহলে তো বাকি কাজ শিকেয় উঠবে। আছে নিশ্চয় এখানে ওখানে।‘ তনু এরপরে বলল, ‘আমি অবশ্য তোকে এর জন্য ফোন করি নি। আমি বলছি কি তুই চলে আয় তোর ঘরে। আমার একটু কাজ আছে তোর সাথে।‘ ওর আবার আমার সাথে কি কাজ? আমি এড়াতে চাইলাম, ‘এই এখন? আমার আবার দুপুরে মিটিং আছে। পরে গেলে হয় না?’ তনু ওধার দিয়ে উত্তর দিল, ‘না হয় না। তুই আয়।‘ অগত্যা। তবু জিজ্ঞেস করলাম, ‘স্নেহাও আসছে সাথে?’ তনু বলল, ‘না, ও গেছে অজয়দের বাড়ী। ছোড়দি ডেকে পাঠিয়েছে। জয়া এসে নিয়ে গেছে। একা বলেই ডাকছি তোকে।‘ আমি পার্থকে ডেকে বললাম, ‘আমি একটু বেরচ্ছি। ফিরতে হয়তো একটু দেরি হতে পারে। ম্যানেজ করে নিস।‘ পার্থ জিজ্ঞেস করলো না কোথায় যাচ্ছি, কেন যাচ্ছি। যেতে তো আমাকে অনেকখানে হয়। তাই ও প্রয়োজন বোধ করে নি জিজ্ঞেস করায়। আর জিজ্ঞেস করলেও নিশ্চয়ই বলতাম না তোর বউয়ের সাথে দেখা করতে যাচ্ছি। বাড়ীর কাছে এসে ড্রাইভারকে ছেড়ে দিয়ে বললাম, ‘আমি ডাকলে চলে এসো। তুমি তো খেতে যাবে এখন?’ ড্রাইভার মাথা নেড়ে সায় দিল। আমাদের ড্রাইভারগুলো সব দুপুরে খেতে যায়। পরে মানে একঘণ্টা পরে ফিরে আসে। আর আমার নিজের গাড়ী তাই ওর যেতেই হবে এর কোন মানে নেই। ড্রাইভার চলে যাওয়ার পর পা বাড়ালাম বাড়ীর দিকে। একটা কথা এর মধ্যে বলতে ভুলে গেছি। বাড়ীর তিনটে চাবি ছিল আমার কাছে। একটা কাজীর কাছে থাকতো। একটা আমার কাছে। কারন কাজী রান্না করে চলে যাবার পর পুস্পা ঘরদোর কাপড় কেচে আবার কাজীর কাছে চাবি দিয়ে চলে যেত। আরেকটা যে চাবি এক্সট্রা ছিল ওটা তনু নিয়ে নিয়েছিল এই ধান্দায় যে যদি ওদের বাড়ীতে জলের অসুবিধে হয় তাহলে ও আমার ঘরে এসে চান করে যাবে। চলতে চলতে ভাবলাম পুস্পার তো চলে যাবার কথা নয় এখন। কারন ও যায় বিকেল চারটেয়। এখন মাত্র একটা বাজে। ও যদি আমাকে তনুর সাথে দেখে তাহলে আবার কি ভাবতে কি ভেবে বসে তার নাই ঠিক। এইসব চিন্তা করে ঘরের কাছে এসে দেখলাম দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। বেল বাজাতে কিছুক্ষন পর দরজা খুলে গেল, দেখলাম তনু একগাল হাসি নিয়ে দরজায় দাঁড়িয়ে আছে। আমি প্রথমে জিজ্ঞেস করলাম, ‘পুস্পা কোথায়?’ তনু বলল, ‘আমি ঘরে আসতেই ও আমাকে বলল ওর নাকি কি বাজারে কাজ আছে। আমি এসে যাওয়ায় ভালোই হয়েছে। ও যদি চলে যায় তো খুব ভালো হয়। আমি বলেছি ওকে যে ও যেতে পারে যতক্ষণ না কাজী আসছে ততক্ষন আমি থাকব। ওকে বলিনি যে তুই আসছিস। ও অবশ্য আমাকে বলেছে যে সাহেব যেন জানতে না পারে যে ও চলে গেছে।‘ আমি বললাম, ‘ভালো করেছিস ওকে বিদেয় করে। তোর সাথে আমাকে দেখলে আবার কি ছড়িয়ে বসবে কে জানে।‘ তনু বলল, ‘আমাকে তুই এতই বোকা ভাবিস নাকি যে ওকে রেখে তোকে ডাকবো?’ আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘এইবার বল, কেন ডেকেছিস?’ তনু বলল, ‘তোকে একা একা পাই না। একটু সময় কাটাবো বলে ডেকে পাঠালাম।‘ আমি উত্তর দিলাম, ‘তোর কি মাথা খারাপ হয়ে গেছে নাকি? আমাকে তো যখন ইচ্ছে ডাকলেই চলে যাবো। এইভাবে সাইট ফাঁকি দেওয়ার কোন মানে হয়?’ তনু আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল, ‘আরে গোপনে প্রেম আর স্বামির সামনে প্রেম দুটো আলাদা না। এই প্রেমের মজাই আলাদা রে। কি ভালো লাগছে এই এতো বড় বাড়ীতে তুই আর আমি একা একা। কেউ নেই কোথাও। মনের সুখে কথা বলবো বকম বকম করবো পায়রার মত। আমার সোনা কোথাকার।‘