25-10-2019, 04:09 PM
আমি বললাম, ‘ঠিক আছে। যেটা তৈরি করেছিস তুই খেয়ে বাকিটা ফ্রিজে রেখে দিস। কাল খেয়ে নেওয়া যাবে।‘ কাজী সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দিল, ‘আরে বাসিটা আপনি খাবেন কেন? ও সকালে পুস্পা খেয়ে নেবে।‘ হ্যাঁ, এর সাথে একটু পরিচয় না করালেই নয়। পুস্পা হচ্ছে একটা আদিবাসি মেয়ে। আমাদের সাইটে কাজ করত। মানে অফিসে। চা মা দিত আমাদেরকে। ওর স্বামি আমাদের স্টোরে কাজ করে। স্বাস্থ্য বেশ বলিস্ট। আদিবাসি বলে কথা। একদিন কেন জানি না আমার অফিসে ঢুকে বলল, ‘সাব, আউ অন্দর?’ আমি মুখ তুলে বললাম, ‘হ্যাঁ। আ যাও। কেয়া বাত হায়?’ পুস্পা শাড়ীর আঁচল আঙ্গুলে পেঁচাতে পেঁচাতে বলল, ‘সাব এক বাত বাতাউ৺?’ আমি বললাম, ‘বাতাও৺।‘ পুস্পা বলল মাটির দিকে তাকিয়ে, ‘সাব, মুঝে ইয়াহ কাম করনা পসন্দ নেহি হায়।‘ আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘কিউ৺?’ পুস্পা মুখ না তুলে বলল, ‘সব ঘুর ঘুরকে দেখতা হায়। কই কই বোলতা ভি হায়।‘ আমি বললাম, ‘কেয়া, কেয়া বোলতা হায়। কিসকি ইয়েহ মাজাল?’ পুস্পা বলল, ‘ছড়িয়ে না সাব। রহেনে দিজিয়ে। মুঝে ইধার সে উঠা লিজিয়ে।‘ আমি বললাম, ‘তো তু কাঁহা কাম করেগি?’ পুস্পা আমার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘কাজী এক রোজ বোল রহে থে কি ঘর মে কাপরা, ঝারু পোছা করনেকে লিয়ে কিসিকো চাহিয়ে। তো ম্যায় সচি কিউ নেহি সাহাবকো বাতায়ে আর উধার চলি যায়?’ আমি দেখলাম ঠিক আছে। ওখানে একজনকে দরকার বটে। একে তো কাজী সকালে চলে আসে। তারপরে আবার গিয়ে রান্না করা, কাপড় কাঁচা, ঝাঁট দেওয়া একটু শক্ত হয়ে যায় বইকি। তারপর থেকে পুস্পা আমার কাছে সকালে আসে আবার বিকেলে চলে যায়। সেদিন রাতে পৌঁছুলাম তনুদের কাছে। পার্থ আমারই সাথে এসেছিল। আমার বাড়ী থেকে ওদের বাড়ী খুব একটা দূরে নয়। হেঁটে যাওয়া যায়। তাই আমি গাড়ী ছেড়ে দিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি ওরা আমার জন্য ওয়েট করছে। যাওয়ার সাথে সাথে স্নেহা এসে বলল, ‘ল্যাপটপ কোথায়? এমা তুমি নিয়ে আস নি?’ আমি ওর গায়ে হাত দিয়ে বললাম, ‘আরে আমি কি জানি যে আসবো? তোর মা হঠাৎ করে ডেকে নিল। ল্যাপটপ অফিসে রাখা আছে। দেখবি রে বাবা, আছিস তো তোরা। একদিন তোকে দিয়ে দেব, প্রানভরে দেখিস।‘ স্নেহা পা ঝাঁপটিয়ে বলল, ‘দূর, কি বাজে। আমি বলে বসে আছি কখন ল্যাপটপ নিয়ে আসবে। আর উনি কিনা ড্যাং ড্যাং করে চলে এলেন খালি হাতে। যাও কথা বলবো না।‘ স্নেহা চলে গেল। তনু আমাকে ধরে ঘরের ভিতর নিয়ে যেতে যেতে বলল, ‘ আয়, তুই ওকে আদর দিয়ে বাঁদর করে দিয়েছিস। দেখলি তো কেমন কথা।‘ পার্থ ভিতরে বসে আছে। বলল, ‘আমি এখান থেকে শুনলাম। মনে হচ্ছিল ঠাস করে একটা থাপ্পর লাগাই।‘ আমি প্রতিবাদ করে বললাম, ‘কেন লাগাবি? আর সবার সাথে তো ও এমন করে না। আমি ওকে বলতে দিয়েছি তাই ও বলছে। একদম কিছু বলবি না ওকে।‘ পার্থ মদের বোতল টেনে নিয়ে বলল, ‘বুঝবি তুই। যখন তোর অসহ্য লাগবে।‘ আমি বিছানায় বসে বললাম, ‘ঠিক আছে আমার লাগবে। তোদের তো নয়।‘ তনু, পার্থ আর আমি তিনজনে গোল হয়ে মদ খাচ্ছি। ৭৫০এমএলের বোতল। দু পেগ শেষ হয়ে যাবার পর আমি আমার পুরনো ব্যাথা উগলে দিলাম ওদের কাছে। বললাম, ‘আচ্ছা, এখানে তোরা দুজনে আছিস। আমাকে একটা কথা বল, পার্থ যে আমার কোম্পানিতে জয়েন করেছিল সেটা চেপে গেলি কেন তোরা দুজনে আমার কাছে? আমি সব ইনিশিয়েটিভ নিয়েছিলাম অথচ আমাকেই বললি না তোরা?’