18-01-2019, 11:55 AM
পর্ব ১১- সত্যবাবু আসলে কে?
দাসিঃ দেবী আপনি অনুগ্রহ করে কিছুক্ষন অপেক্ষা করুন। আমরা আপনার শয্যা সাজিয়ে তুলছি। দেখবেন ওই সজ্জায় একবার শুলে আপনার সমস্ত যন্ত্রণা আপনার সমস্ত ইচ্ছা পুরন হয়ে যাবে।
অনুরাধাঃ না দাসি আমি শুতে নয় একটি বার তোমাদের ঠাকুর কে দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে উথছি। অনুগ্রহ করে তোমরা কেউ গিয়ে ওনাকে নিয়ে আসো।
দাসিঃ দেবী আপনিও জানেন, ঠাকুর নিজ ধর্ম পরিত্যাগ করে কখনই আপনার কাছে আসবেনা। আমরাই পারি আপনার যন্ত্রণা লাঘব করতে।
কিছুক্ষনের মধ্যেই অনুরাধার জন্যে ফুল দিয়ে বিছানো এক সুগন্ধি শয্যা প্রস্তুত হয়ে গেল। দেখে ঠিক মনে হচ্ছিল আজ অনুরাধার ফুলসজ্জা। এই সুরভী শয্যা অনুরাধার কামনা আরও শতাধিক পরিমান বাড়িয়ে দেয়। অনুরাধা আর কাউকে কিছু বলার সুযোগ টুকুও দেন না। সোজা গিয়ে সজ্জায় শুয়ে পড়েন। এটা দেখে দুই দাসি ও বিছানার ওপর যায়। ওরা জানে এই মুহূর্তে অনুরাধার শরীরে এতো শিহরন আনতে হবে যে ওনার কামনা মৃত্যুঞ্জয় নয় যেকোনো পুরুষের দিকে ধাবিত হয়। সে পুরুষ রাজমহলের যে কেউ হতে পারে, দেবেন্দ্র, সত্যেন্দ্র বা অন্য যেকেউ।
দুই দাসির একজন অতি কোমল ভাবে নিজের হাত অনুরাধার চাদরের ভেতরে ঢুকিয়ে ওপরের দিকে নিয়ে যায়। এদিকে জানলার বাইরে দাঁড়িয়ে দেবেন্দ্র সব কিছু পর্যবেক্ষণ করে ও কামনার আগুনে থরথর করে কাঁপতে শুরু করে। দেবেন্দ্র বুঝতে পারে দাসির হাত ধীরে ধীরে অনুরাধার স্তন যুগলকে ওলট পালট করছে। আর অনুরাধা প্রায় ক্রন্দন রত অবস্থায় বলে চলেছে “তোমরা পারবেনা, একটি বার শুধু তোমাদের ঠাকুর কে ডাকো উনি ই পারবেন। উনি ই এই শরীরের মালিক। উনি ই আমার প্রভু। তোমরা যা করছ তা অন্যায়” দাসিরা ওনার কথার সামান্য ভ্রুক্ষেপ করেন না। যে দাসি ক্রমাগত ওনার স্তন জুগল কে ওলট পালট করে চলেছে সে ধীরে ধীরে নিজের মুখ অনুরাধার নিকটে নিয়ে যায়। অনুরাধার মুখের কাছে নিজের মুখ স্থির রাখে। দাসির উষ্ণ নিশ্বাস অনুরাধার মুখের ওপর পড়তে থাকে। এই নিশ্বাস অনুরাধাকে আরও পাগল করে তোলে। অনুরাধার দুই চোখ ঘোলাটে হয়ে আসে, কণ্ঠ ও অনেক নিস্প্রভ হয়ে ওঠে। প্রায় ক্রন্দনরত আওয়াজ ধীরে ধীরে দুর্বল কাকুতি মিনতি তে রুপান্তরিত হয়। “দুই নারীর সম্ভোগ এতো অন্যায়, ঠাকুর কে ডাকো, উনি ই এই কাজের যোগ্য” ধীরে ধীরে দাসি নিজের ওষ্ঠ যুগল অনুরাধার ওষ্ঠর ওপর রাখেন। পাতলা দুই ওষ্ঠের আদ্র স্পর্শে অনুরাধার শরীরে বিদ্যুৎ ধাবিত হয়। অনুরাধার শরীর সাপের মত কিলবিল করে এদিক ওদিক হতে থাকে এবং মুখ দিয়ে উম্ম উম্ম করে শীৎকার নিঃসৃত হয়।
সুবীর বাবুঃ মশাই আপনি তো ফাটিয়ে দিচ্ছেন। আমার ই শরীরে কামনার আগুন জ্বলতে শুরু করেছে। সত্যি ডায়েরি তা পড়লে আমি এতো আনন্দ হয়ত পেতাম না। আপনাকে সালাম সত্যবাবু।
সত্য বাবুঃ আমি সামান্য গল্পকার মশাই। হাঁ এটা সত্যি যে গল্প টা আমি ভালই বলতে পারি। কিন্তু ধন্যবাদ কাউকে দিতে হলে এই ডায়েরি কে এবং অবশ্যই এই জমিদারবাড়ি কে দিন।
সুবীর বাবুঃ সে তো অবশ্যই। এখানে এসেছিলাম সিপাহী বিদ্রোহের ইতিহাস খুঁজতে। আমি বুঝে গেছি খালি হাতেই যেতে হবে।
সত্য বাবুঃ না খালি হাতে কেন যাবেন সাথে এই ডায়েরি টা যাবে। এতে আপনার গল্প লেখা হবে, এবং সেই গল্প শেষ হলে ডায়েরি আবার এই টেবিলেই ফেরত আসবে।
সুবীর বাবুঃ (প্রচণ্ড জোরে হেসে) আপনাকে নিয়ে আর পারবনা মশাই। আপনি বারবার এই ডায়েরি টাকে অভিশপ্ত প্রমান করার চেষ্টা করছেন, কি ব্যাপার বলুন তো গল্পের শেষে কি কোনও অলৌকিক ব্যাপার ট্যাপার আছে নাকি।
সত্য বাবুঃ সে কি অলৌকিক কিছু যে হতে চলেছে তা কি আপনি এখনো বুঝে উঠতে পারছেন না। ঠিক আছে একবার পেছন ঘুরে দেখুন দেখি।
সুবীর বাবু একবার পেছন ঘুরে দেখেন। উনি প্রায় আঁতকে ওঠেন। ঠিক দরজার বাইরে দুজন ষণ্ডামার্কা লোক হাতে দুটো বল্লম নিয়ে একটা এক্স বানিয়ে দরজার বাইরে পাহারা দিচ্ছে। (ঠিক যেমন সিনেমা তে দেখা যায়)। আর বাইরের বারান্দা তা ঝাড়বাতিতে খুব সুন্দর ভাবে সাজান হয়েছে। যে জায়গায় অন্তত ২-৩ ইঞ্চি ধুলো জমে ছিল এখন সেই জায়গা টাই এখন কাঁচের মত পরিস্কার। বারান্দার ওই পাশের দেওয়ালে কাদের যেন ছবি টাঙ্গানো আছে। সুবীর বাবু হাঁ করে তাকিয়েই থাকলেন।
সত্য বাবুঃ সুবীর বাবু আপনি কিন্তু জমিদার বাড়ীতে রয়েছেন ভুলে যাবেন না। যখন ই কেউ এই জমিদার বাড়ীতে আসেন এই ডায়েরি তা পড়তে আমরা তখন ই এই বাড়ী টাকে আগের মত করে সাজিয়ে তুলি। হয়ত খুব একটা ভালো করে পারিনা তাও চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখিনা।
সুবীর বাবু এখনো নিজের চোখ কে বিশ্বাস করাতে পারছিলেন না। উনি হাঁ করে সত্য বাবুর কথা শুনে চলছিলেন এবং তার সাথে আশেপাশের পরিবেশ তা ঘুরে ঘুরে দেখছিলেন।
সত্য বাবুঃ আরে মশাই এতো ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমরা বাঘ বা ভাল্লুক কিছুই নয়। তবে যেহেতু আপনি একবার ডায়েরি তা পড়তে শুরু করে দিয়েছেন তাই আপনাকে দুটো কথা বলা উচিত।
সুবীর বাবুঃ (এতক্ষনে সুবীর বাবুর মুখ দিয়ে কথা বেরল) কি কথা বলুন।
সত্য বাবুঃ একবার যখন ডায়েরি তা পড়া শুরু করেছেন তখন আপনাকে সম্পূর্ণ ডায়েরি তাই পড়তে হবে। এবং পড়া হয়ে গেলে এই ডায়েরি তা আপনার বাড়ীতে নিয়ে যেতে হবে। ওটায় রূপসা, তিলোত্তমা, মালতী আপনি ও আরও কিছু মানুষের গল্প লেখা হবে। তারপর ডায়েরি তা আবার এখানেই ফেরত আসবে।
সুবীর বাবু প্রায় ভুত দেখার মত চমকে উঠলেন।
সুবীর বাবুঃ আপনি কে সত্য বাবু। এগুলো কি সব সাজানো ঘটনা। আপনি আমার পরিচয়, আমার পরিবার সম্পর্কে জানলেন কি করে?
সত্য বাবুঃ (অত্যন্ত নম্রভাবে) সুবীর বাবু দয়া করে শান্ত হন। আমি অতি সামান্য এক লোক। আমি আপনার কোনও ক্ষতি করবনা আর করতে পারব ও না।
সুবীর বাবুঃ (প্রচণ্ড উত্তেজিত হয়ে) না, আমার প্রথম থেকেই আপনার ওপর সন্দেহ হচ্ছিল। আপনার পোশাক আজকের যুগে চলেনা। আমি জানি আপনি কোনও বদ মতলবে রয়েছেন। একটা কথা মনে রাখবেন আমি যে এখানে এসেছি তা কিন্তু অনেক বড় বড় মাপের মানুষ ই জানেন। রামকিঙ্কর বাবু কিন্তু পৃথিবী খ্যাত এক গবেষক। আপনি জানেন না আমার কিছু হয়ে গেলে আপনাদের সব মতলব ঘুচে যাবে।
সত্য বাবুঃ (আরও নম্র হয়ে) সুবীর বাবু আপনি পণ্ডিত মানুষ। আপনি না চাইলে আমি চলে যাচ্ছি, এরাও চলে যাবে। দয়া করে একটু বোঝার চেষ্টা করুন আমি অতি সামান্য কথাকার। আমি শুধু নিজের কর্তব্য পালন করে চলেছি আর কিছু নয়।
সুবীর বাবুঃ (এবার একটু নম্র হয়ে) না সত্য বাবু আপনার এই হেঁয়ালি গুলো আমার পছন্দ নয়, একেবারেই পছন্দ নয়। আপনি তো মশাই গল্প বলছিলেন হথাত করে আমার পরিবার কোথা থেকে এসে গেল, ওদের সাথে এই গল্পের কি সম্পর্ক?
সত্য বাবুঃ না ওদের সাথে এই গল্পের কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু এই ডায়েরির সাথে ওদের এক নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। আপনি আধুনিক মানুষ তাই আমার কথা গুলো আপনার হেঁয়ালি মনে হচ্ছে। দয়া করে একটু বুঝুন। আপনি যে এখানে এসেছেন এই ডায়েরি তা পড়েছেন তার একটা কারন আছে। আর সেই কারন তা বুঝিয়ে দেওয়াই আমার কর্তব্য। আপনি তো নিজেই ডায়েরি তা পড়তে পারতেন, কেন অযথা আমি আপনাকে গল্পের মত করে শোনাতে যাবো।
সুবীর বাবুঃ (প্রচণ্ড বিরক্তির সাথে) আপনি কেন এইসব বলছেন। আমি এসব বিশ্বাস করিনা।
সত্য বাবুঃ আপনি যে বিশ্বাস করেন না তা আমিও জানি। আপনি তো পণ্ডিত ব্যাক্তি, এটা তো মানেন প্রত্যেকের ই নিজ কর্মের প্রতি দায়বদ্ধ হওয়া উচিত। ধরে নিন আপনাকে এই অনুরাধা, সত্যেন্দ্র, দেবেন্দ্র ও তিনকড়ির পর্ব টুকু বলা ও এর সাথে আপনার জীবনের কি সম্পর্ক তা বুঝিয়ে দেওয়া এটা আমার কাজ। আমি শুধু আমার কাজটুকু করে চলেছি ব্যাস আর কিছু নয়।
সুবীর বাবু কোনও উত্তর দিলেন না শুধু নিজের বিরক্তি প্রকাশ করলেন।
সত্য বাবুঃ সুবীর বাবু, আপনি উচ্চশিক্ষিত। আপনার থেকে আমি এতটুকুই আশা কড়ি যে আপনি ধৈর্য ধরবেন ও আমার প্রতি সহনশীল হবেন। (সত্য বাবু আসতে করে সুবীর বাবুর দু হাত স্পর্শ করলেন)
এতক্ষনে সুবীর বাবুর মাথা একটু ঠাণ্ডা হয়েছে। উনি মনে মনে ভাবলেন, হয়ত সত্য বাবু ওনাকে চেনেন, ওনার সম্বন্ধে সত্য বাবুর কাছে যথেষ্ট তথ্য রয়েছে, হয়ত লোক তার মাথা খারাপ হয়ত গল্প টাকে আকর্ষণীয় করে তুলতে এই ফন্দি তা উনি নিচ্ছেন, ঠিক যেমন অ্যাডভেঞ্চার সিরিয়াল গুলোতে নেওয়া হয়। মনে মনে ভাবলেন লোক টা যা বলার বলুক, আমার কাজ এই ডায়েরি টা থেকে ইতিহাসের কোনও উপকরন খুঁজে বার করা অন্য কিছুই নয়। সত্য বাবু তখনও সুবীর বাবুর হাত দুটো ধরে আছেন। এতক্ষনে সুবীর বাবু বুঝতে পারলেন যে সত্য বাবুর হাত দুটো বরফের মত ঠাণ্ডা।
সুবীর বাবুঃ একি সত্য বাবু আপনার হাত দুটো এরকম বরফের মত ঠাণ্ডা কেন?
সত্য বাবুঃ আর বলবেন না। তিন দিন ধরে লাগাতার জ্বরে ভুগেছি। সকাল থেকে আপনাকে গল্প টা বলব বলে বসে আছি, কিছুই খাওয়া হয়নি। গল্প টা শেষ করে আমি উঠবো এখান থেকে। তারপর একটু খাওয়া দাওয়া করা যাবে। আর আপনি এতো শিক্ষিত মানুষ হয়ে যা রেগে জাচ্ছেন কি বলব বলুন তো। আমার ওপর আদেশ আছে যতক্ষণ না আমি আমার পর্ব টুকু বলা শেষ করছি এখান থেকে উঠতে পারবনা।
সুবীর বাবুঃ (প্রচণ্ড লজ্জার সাথে) আরে ছি ছি। আপনি প্লিজ আগে কিছু খেয়ে নিন। আমি বাকিটা পড়ে নিচ্ছি। প্লিজ আপনি যান কিছু খেয়ে আসুন।
সত্য বাবুঃ কি করব বলুন, আমার পর্ব টা শেষ না করে আমি যে কিছুতেই এখান থেকে উঠতে পারিনা। এবার দয়া করে আমায় বাকি অংশ টুকু বলার সুযোগ দিন।
সুবীর বাবু চুপ করে গেলেন আর সত্য বাবু নিজের গল্প আবার শুরু করলেন।
দাসিঃ দেবী আপনি অনুগ্রহ করে কিছুক্ষন অপেক্ষা করুন। আমরা আপনার শয্যা সাজিয়ে তুলছি। দেখবেন ওই সজ্জায় একবার শুলে আপনার সমস্ত যন্ত্রণা আপনার সমস্ত ইচ্ছা পুরন হয়ে যাবে।
অনুরাধাঃ না দাসি আমি শুতে নয় একটি বার তোমাদের ঠাকুর কে দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে উথছি। অনুগ্রহ করে তোমরা কেউ গিয়ে ওনাকে নিয়ে আসো।
দাসিঃ দেবী আপনিও জানেন, ঠাকুর নিজ ধর্ম পরিত্যাগ করে কখনই আপনার কাছে আসবেনা। আমরাই পারি আপনার যন্ত্রণা লাঘব করতে।
কিছুক্ষনের মধ্যেই অনুরাধার জন্যে ফুল দিয়ে বিছানো এক সুগন্ধি শয্যা প্রস্তুত হয়ে গেল। দেখে ঠিক মনে হচ্ছিল আজ অনুরাধার ফুলসজ্জা। এই সুরভী শয্যা অনুরাধার কামনা আরও শতাধিক পরিমান বাড়িয়ে দেয়। অনুরাধা আর কাউকে কিছু বলার সুযোগ টুকুও দেন না। সোজা গিয়ে সজ্জায় শুয়ে পড়েন। এটা দেখে দুই দাসি ও বিছানার ওপর যায়। ওরা জানে এই মুহূর্তে অনুরাধার শরীরে এতো শিহরন আনতে হবে যে ওনার কামনা মৃত্যুঞ্জয় নয় যেকোনো পুরুষের দিকে ধাবিত হয়। সে পুরুষ রাজমহলের যে কেউ হতে পারে, দেবেন্দ্র, সত্যেন্দ্র বা অন্য যেকেউ।
দুই দাসির একজন অতি কোমল ভাবে নিজের হাত অনুরাধার চাদরের ভেতরে ঢুকিয়ে ওপরের দিকে নিয়ে যায়। এদিকে জানলার বাইরে দাঁড়িয়ে দেবেন্দ্র সব কিছু পর্যবেক্ষণ করে ও কামনার আগুনে থরথর করে কাঁপতে শুরু করে। দেবেন্দ্র বুঝতে পারে দাসির হাত ধীরে ধীরে অনুরাধার স্তন যুগলকে ওলট পালট করছে। আর অনুরাধা প্রায় ক্রন্দন রত অবস্থায় বলে চলেছে “তোমরা পারবেনা, একটি বার শুধু তোমাদের ঠাকুর কে ডাকো উনি ই পারবেন। উনি ই এই শরীরের মালিক। উনি ই আমার প্রভু। তোমরা যা করছ তা অন্যায়” দাসিরা ওনার কথার সামান্য ভ্রুক্ষেপ করেন না। যে দাসি ক্রমাগত ওনার স্তন জুগল কে ওলট পালট করে চলেছে সে ধীরে ধীরে নিজের মুখ অনুরাধার নিকটে নিয়ে যায়। অনুরাধার মুখের কাছে নিজের মুখ স্থির রাখে। দাসির উষ্ণ নিশ্বাস অনুরাধার মুখের ওপর পড়তে থাকে। এই নিশ্বাস অনুরাধাকে আরও পাগল করে তোলে। অনুরাধার দুই চোখ ঘোলাটে হয়ে আসে, কণ্ঠ ও অনেক নিস্প্রভ হয়ে ওঠে। প্রায় ক্রন্দনরত আওয়াজ ধীরে ধীরে দুর্বল কাকুতি মিনতি তে রুপান্তরিত হয়। “দুই নারীর সম্ভোগ এতো অন্যায়, ঠাকুর কে ডাকো, উনি ই এই কাজের যোগ্য” ধীরে ধীরে দাসি নিজের ওষ্ঠ যুগল অনুরাধার ওষ্ঠর ওপর রাখেন। পাতলা দুই ওষ্ঠের আদ্র স্পর্শে অনুরাধার শরীরে বিদ্যুৎ ধাবিত হয়। অনুরাধার শরীর সাপের মত কিলবিল করে এদিক ওদিক হতে থাকে এবং মুখ দিয়ে উম্ম উম্ম করে শীৎকার নিঃসৃত হয়।
সুবীর বাবুঃ মশাই আপনি তো ফাটিয়ে দিচ্ছেন। আমার ই শরীরে কামনার আগুন জ্বলতে শুরু করেছে। সত্যি ডায়েরি তা পড়লে আমি এতো আনন্দ হয়ত পেতাম না। আপনাকে সালাম সত্যবাবু।
সত্য বাবুঃ আমি সামান্য গল্পকার মশাই। হাঁ এটা সত্যি যে গল্প টা আমি ভালই বলতে পারি। কিন্তু ধন্যবাদ কাউকে দিতে হলে এই ডায়েরি কে এবং অবশ্যই এই জমিদারবাড়ি কে দিন।
সুবীর বাবুঃ সে তো অবশ্যই। এখানে এসেছিলাম সিপাহী বিদ্রোহের ইতিহাস খুঁজতে। আমি বুঝে গেছি খালি হাতেই যেতে হবে।
সত্য বাবুঃ না খালি হাতে কেন যাবেন সাথে এই ডায়েরি টা যাবে। এতে আপনার গল্প লেখা হবে, এবং সেই গল্প শেষ হলে ডায়েরি আবার এই টেবিলেই ফেরত আসবে।
সুবীর বাবুঃ (প্রচণ্ড জোরে হেসে) আপনাকে নিয়ে আর পারবনা মশাই। আপনি বারবার এই ডায়েরি টাকে অভিশপ্ত প্রমান করার চেষ্টা করছেন, কি ব্যাপার বলুন তো গল্পের শেষে কি কোনও অলৌকিক ব্যাপার ট্যাপার আছে নাকি।
সত্য বাবুঃ সে কি অলৌকিক কিছু যে হতে চলেছে তা কি আপনি এখনো বুঝে উঠতে পারছেন না। ঠিক আছে একবার পেছন ঘুরে দেখুন দেখি।
সুবীর বাবু একবার পেছন ঘুরে দেখেন। উনি প্রায় আঁতকে ওঠেন। ঠিক দরজার বাইরে দুজন ষণ্ডামার্কা লোক হাতে দুটো বল্লম নিয়ে একটা এক্স বানিয়ে দরজার বাইরে পাহারা দিচ্ছে। (ঠিক যেমন সিনেমা তে দেখা যায়)। আর বাইরের বারান্দা তা ঝাড়বাতিতে খুব সুন্দর ভাবে সাজান হয়েছে। যে জায়গায় অন্তত ২-৩ ইঞ্চি ধুলো জমে ছিল এখন সেই জায়গা টাই এখন কাঁচের মত পরিস্কার। বারান্দার ওই পাশের দেওয়ালে কাদের যেন ছবি টাঙ্গানো আছে। সুবীর বাবু হাঁ করে তাকিয়েই থাকলেন।
সত্য বাবুঃ সুবীর বাবু আপনি কিন্তু জমিদার বাড়ীতে রয়েছেন ভুলে যাবেন না। যখন ই কেউ এই জমিদার বাড়ীতে আসেন এই ডায়েরি তা পড়তে আমরা তখন ই এই বাড়ী টাকে আগের মত করে সাজিয়ে তুলি। হয়ত খুব একটা ভালো করে পারিনা তাও চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখিনা।
সুবীর বাবু এখনো নিজের চোখ কে বিশ্বাস করাতে পারছিলেন না। উনি হাঁ করে সত্য বাবুর কথা শুনে চলছিলেন এবং তার সাথে আশেপাশের পরিবেশ তা ঘুরে ঘুরে দেখছিলেন।
সত্য বাবুঃ আরে মশাই এতো ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আমরা বাঘ বা ভাল্লুক কিছুই নয়। তবে যেহেতু আপনি একবার ডায়েরি তা পড়তে শুরু করে দিয়েছেন তাই আপনাকে দুটো কথা বলা উচিত।
সুবীর বাবুঃ (এতক্ষনে সুবীর বাবুর মুখ দিয়ে কথা বেরল) কি কথা বলুন।
সত্য বাবুঃ একবার যখন ডায়েরি তা পড়া শুরু করেছেন তখন আপনাকে সম্পূর্ণ ডায়েরি তাই পড়তে হবে। এবং পড়া হয়ে গেলে এই ডায়েরি তা আপনার বাড়ীতে নিয়ে যেতে হবে। ওটায় রূপসা, তিলোত্তমা, মালতী আপনি ও আরও কিছু মানুষের গল্প লেখা হবে। তারপর ডায়েরি তা আবার এখানেই ফেরত আসবে।
সুবীর বাবু প্রায় ভুত দেখার মত চমকে উঠলেন।
সুবীর বাবুঃ আপনি কে সত্য বাবু। এগুলো কি সব সাজানো ঘটনা। আপনি আমার পরিচয়, আমার পরিবার সম্পর্কে জানলেন কি করে?
সত্য বাবুঃ (অত্যন্ত নম্রভাবে) সুবীর বাবু দয়া করে শান্ত হন। আমি অতি সামান্য এক লোক। আমি আপনার কোনও ক্ষতি করবনা আর করতে পারব ও না।
সুবীর বাবুঃ (প্রচণ্ড উত্তেজিত হয়ে) না, আমার প্রথম থেকেই আপনার ওপর সন্দেহ হচ্ছিল। আপনার পোশাক আজকের যুগে চলেনা। আমি জানি আপনি কোনও বদ মতলবে রয়েছেন। একটা কথা মনে রাখবেন আমি যে এখানে এসেছি তা কিন্তু অনেক বড় বড় মাপের মানুষ ই জানেন। রামকিঙ্কর বাবু কিন্তু পৃথিবী খ্যাত এক গবেষক। আপনি জানেন না আমার কিছু হয়ে গেলে আপনাদের সব মতলব ঘুচে যাবে।
সত্য বাবুঃ (আরও নম্র হয়ে) সুবীর বাবু আপনি পণ্ডিত মানুষ। আপনি না চাইলে আমি চলে যাচ্ছি, এরাও চলে যাবে। দয়া করে একটু বোঝার চেষ্টা করুন আমি অতি সামান্য কথাকার। আমি শুধু নিজের কর্তব্য পালন করে চলেছি আর কিছু নয়।
সুবীর বাবুঃ (এবার একটু নম্র হয়ে) না সত্য বাবু আপনার এই হেঁয়ালি গুলো আমার পছন্দ নয়, একেবারেই পছন্দ নয়। আপনি তো মশাই গল্প বলছিলেন হথাত করে আমার পরিবার কোথা থেকে এসে গেল, ওদের সাথে এই গল্পের কি সম্পর্ক?
সত্য বাবুঃ না ওদের সাথে এই গল্পের কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু এই ডায়েরির সাথে ওদের এক নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। আপনি আধুনিক মানুষ তাই আমার কথা গুলো আপনার হেঁয়ালি মনে হচ্ছে। দয়া করে একটু বুঝুন। আপনি যে এখানে এসেছেন এই ডায়েরি তা পড়েছেন তার একটা কারন আছে। আর সেই কারন তা বুঝিয়ে দেওয়াই আমার কর্তব্য। আপনি তো নিজেই ডায়েরি তা পড়তে পারতেন, কেন অযথা আমি আপনাকে গল্পের মত করে শোনাতে যাবো।
সুবীর বাবুঃ (প্রচণ্ড বিরক্তির সাথে) আপনি কেন এইসব বলছেন। আমি এসব বিশ্বাস করিনা।
সত্য বাবুঃ আপনি যে বিশ্বাস করেন না তা আমিও জানি। আপনি তো পণ্ডিত ব্যাক্তি, এটা তো মানেন প্রত্যেকের ই নিজ কর্মের প্রতি দায়বদ্ধ হওয়া উচিত। ধরে নিন আপনাকে এই অনুরাধা, সত্যেন্দ্র, দেবেন্দ্র ও তিনকড়ির পর্ব টুকু বলা ও এর সাথে আপনার জীবনের কি সম্পর্ক তা বুঝিয়ে দেওয়া এটা আমার কাজ। আমি শুধু আমার কাজটুকু করে চলেছি ব্যাস আর কিছু নয়।
সুবীর বাবু কোনও উত্তর দিলেন না শুধু নিজের বিরক্তি প্রকাশ করলেন।
সত্য বাবুঃ সুবীর বাবু, আপনি উচ্চশিক্ষিত। আপনার থেকে আমি এতটুকুই আশা কড়ি যে আপনি ধৈর্য ধরবেন ও আমার প্রতি সহনশীল হবেন। (সত্য বাবু আসতে করে সুবীর বাবুর দু হাত স্পর্শ করলেন)
এতক্ষনে সুবীর বাবুর মাথা একটু ঠাণ্ডা হয়েছে। উনি মনে মনে ভাবলেন, হয়ত সত্য বাবু ওনাকে চেনেন, ওনার সম্বন্ধে সত্য বাবুর কাছে যথেষ্ট তথ্য রয়েছে, হয়ত লোক তার মাথা খারাপ হয়ত গল্প টাকে আকর্ষণীয় করে তুলতে এই ফন্দি তা উনি নিচ্ছেন, ঠিক যেমন অ্যাডভেঞ্চার সিরিয়াল গুলোতে নেওয়া হয়। মনে মনে ভাবলেন লোক টা যা বলার বলুক, আমার কাজ এই ডায়েরি টা থেকে ইতিহাসের কোনও উপকরন খুঁজে বার করা অন্য কিছুই নয়। সত্য বাবু তখনও সুবীর বাবুর হাত দুটো ধরে আছেন। এতক্ষনে সুবীর বাবু বুঝতে পারলেন যে সত্য বাবুর হাত দুটো বরফের মত ঠাণ্ডা।
সুবীর বাবুঃ একি সত্য বাবু আপনার হাত দুটো এরকম বরফের মত ঠাণ্ডা কেন?
সত্য বাবুঃ আর বলবেন না। তিন দিন ধরে লাগাতার জ্বরে ভুগেছি। সকাল থেকে আপনাকে গল্প টা বলব বলে বসে আছি, কিছুই খাওয়া হয়নি। গল্প টা শেষ করে আমি উঠবো এখান থেকে। তারপর একটু খাওয়া দাওয়া করা যাবে। আর আপনি এতো শিক্ষিত মানুষ হয়ে যা রেগে জাচ্ছেন কি বলব বলুন তো। আমার ওপর আদেশ আছে যতক্ষণ না আমি আমার পর্ব টুকু বলা শেষ করছি এখান থেকে উঠতে পারবনা।
সুবীর বাবুঃ (প্রচণ্ড লজ্জার সাথে) আরে ছি ছি। আপনি প্লিজ আগে কিছু খেয়ে নিন। আমি বাকিটা পড়ে নিচ্ছি। প্লিজ আপনি যান কিছু খেয়ে আসুন।
সত্য বাবুঃ কি করব বলুন, আমার পর্ব টা শেষ না করে আমি যে কিছুতেই এখান থেকে উঠতে পারিনা। এবার দয়া করে আমায় বাকি অংশ টুকু বলার সুযোগ দিন।
সুবীর বাবু চুপ করে গেলেন আর সত্য বাবু নিজের গল্প আবার শুরু করলেন।