18-01-2019, 11:55 AM
পর্ব ১০-অনুরাধার মুক্তিঃ
সুবীর বাবুঃ আপনি তো জমিয়ে দিলেন মশাই। এবার গল্পটায় মজা আসছে। মৃত্যুঞ্জয়ের উপাসনা। বাহ কি দারুন পরিকল্পনা নিয়েছে সত্যেন্দ্র।
সত্য বাবুঃ তাহলে আপনি অজথাই তো অধৈর্য হয়ে উঠছিলেন। এবার দেখুন কেমন লাগে গল্পটা।
সত্য বাবু আবার নিজের গল্প শুরু করলেন।
দেবেন্দ্রঃ তোমার কোনও কথাই আমি বুঝতে পারছিনা। তুমি আমায় ঠিক করে বুঝিয়ে বল।
সত্যেন্দ্রঃ মহারাজ, মৃত্যুঞ্জয় মহাকালের উপাসক। ও এই মুহূর্তে এক গভীর তপস্যায় নিমগ্ন। কোনও এক ঋষির থেকে ও বর পেয়েছে, ঠিক বিবাহের ১ বৎসরের মাথায় ওর স্ত্রীর সাথে ওর সঙ্গম হবে আর সেই সঙ্গমে নিঃসৃত কুমারী যোনীর রক্ত ওকে মহাকালের পায়ে নিক্ষেপ করতে হবে। আর তারপরেই ও সেই বর লাভ করবে। এই বর লাভ করলে ওর মৃত্যু কোনও ক্ষত্রিয়ের হাতে হবেনা এবং ও রাজা হবে।
তিনকড়িঃ মহারাজ ও দুষ্ট। নিজের স্ত্রীকে মন্ত্রবলে বশ করে রেখেছে। ও এক অদ্ভুত ঔষধ প্রয়োগ করে ওর স্ত্রীর ওপর। স্নান করার পরের ২-৩ ঘণ্টা ওর স্ত্রী অনুরাধা চরম ভাবে যৌন কামনার বশবর্তী হয়। কিন্তু স্বামীর আদেশে অনুরাধা নিজের রিপুকে সম্বরন করেন। এটাই ওদের উপাসনা।
সত্যেন্দ্রঃ মহারাজ আমাদের জমিদারবাড়ির সামনে আসন্ন বিপদ। আর এই বিপদ হতে আপনি ই আমাদের রক্ষা করতে পারেন। মহারাজ যেকোনো উপায়ে হোক ওর উপাসনা ভঙ্গ করতে হবে।
দেবেন্দ্রঃ তুমি ঠিক কি বলছ সত্যেন্দ্র। আর এইসব অলৌকিক ব্যাপার কি সম্ভব।
সত্যেন্দ্রঃ মহারাজ জানি একদিনে এটা বিশ্বাস করা আপনার পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু ধীরে ধীরে সব আপনার বোধগম্য হবে। ওদের উপাসনা ভঙ্গ হওয়ার উপায় হোল কুমারী অনুরাধার কুমারিত্ব গ্রহন। আর আমি চাই একাজ টি আপনি করুন।
দেবেন্দ্রঃ তোমার এতো বড় স্পর্ধা কি করে হয় তা ভেবে আমি অবাক হচ্ছি। তুমি জাননা আমি শিবের উপাসক, আমি কোনও নারীকে জোর করতে পারিনা। আর ক্ষত্রিয় ব্যাতিক অন্য কোনও নারীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক আমাদের শোভা দেয়না।
সত্যেন্দ্রঃ ক্ষমা চাইছি মহারাজ। কিন্তু একবার ভেবে দেখুন, সে কেমন মহামারী যা আমাদের কলকাতার কোনও বদ্যি নিবারন করতে পারলো না। সুদুর মেদিনিপুরের এক বদ্যি এলেন দেখলেন আর চলে গেলেন।
দেবেন্দ্রঃ সত্যেন্দ্র, তুমি আমার ছোট ভাই। তোমার অপমান সে তো আমার ও অপমান। কিন্তু বিনা প্রমানে কাউকে দোষারোপ করা হোল রাজধর্মের বিরোধী। এখনো অবধি তুমি যা যা বললে তার সপক্ষে কোনও প্রমান দেখাতে পারনি। তুমি প্রমান জোগাড় কর আমি তারপর ই তোমার কথায় গুরুত্ব দেব।
সত্যেন্দ্রঃ মহারাজ, প্রমান জোগাড় করব বলেই তো এতদিন আপনার সাথে শলাপরামর্শ করিনি এব্যাপারে। কিন্তু মহারাজ বিশ্বাস করুন এই মুহূর্তে রাজপরিবার ও জমিদারবাড়ির সামনে সমুহ বিপদ। আশা করি আপনি নিজের ছোট ভাইএর এই কথাগুলো খুব গভীর ভাবে ভাববেন।
তিনকড়িঃ মহারাজ আমি সাক্ষী। অন্তত আমার কথায় বিশ্বাস করুন। আর আপনি যে আশঙ্কা করছেন তা সঠিক নয়। অনুরাধা রাজকন্যা। ও ব্রাহ্মনের পত্নী এখনো হয়ে অথেনি, কারন ওদের মধ্যে চিরাচরিত স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। ঠিক ১০ ঘটিকার পর অনুরাধার শরীরে যৌন কামনার মোহ উদ্রেককারী ঔষধ প্রয়োগ করা হয়। অনুরাধা এই সময় টুকু নিজের শরীরকে জাতনা দিয়ে আরাধনা করেন এবং ইহা মৃত্যুঞ্জয়ের নির্দেশে। মহারাজ আমিও বদ্যি ',, আমি আপনারে বলছি এটা পাপ নয়। রাজধর্ম পালনের জন্য সব ই সঠিক।
সত্যেন্দ্রঃ মহারাজ একটিবার ভাবুন, যদি আমাদের রাজকুলের ওপর চরম সর্বনাশ নেমে আসে আপনি কি পারবেন নিজেকে ক্ষমা করতে। যদি ম্রিত্তুঞ্জয় নিজের দাদার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে সক্ষম হয়ে যায় তাহলে আমিও নিজেকে ক্ষমা করবনা।
দেবেন্দ্রঃ (বেশ কিছুক্ষন ভাবার পর) ঠিক আছে আমি রাজধর্ম পালনে রাজি।
তিনকড়িঃ মহারাজের জয় হোক। মহারাজ আপনি দ্রুত স্নান করে পবিত্র হয়ে নিন। আপনার সামনে আজ বিরাট পরীক্ষা। ঠিক ১০ ঘটিকা হয়ার আগে আমি আপনাকে এখান থেকে ডেকে নিয়ে যাবো। এখন আমাদের বিদায়ের অনুমতি দিন।
সত্যেন্দ্র ও তিনকড়ি অত্যন্ত হাসিমুখে বাইরে আসে। এদিকে তিনকড়ি ও দাসি দের সাথে একবার কথা বলে নেয়। দাসি রা প্রস্তুত সমস্ত কাজকে সঠিক ভাবে সম্পূর্ণ করতে।
সুবীর বাবুঃ এতো মশাই, চরম ষড়যন্ত্র। সত্যি এই সত্যেন্দ্র লোকটি ভীষণ পরিমান বদ।
সত্য বাবুঃ বদ কি বলছেন মশাই, ওই তো নায়ক। আচ্ছা ভাবুন তো এরকম এক কামুক লোক শুধু জমিদারীর আনন্দে অনুরাধার মত এক অপ্সরাকে ভোগ করার ইচ্ছে কি বর্জন করতে পারে কখনো। একবার ভেবে দেখুন সত্যেন্দ্রের আত্মত্যাগের ব্যাপারে।
এবার সুবীর বাবু হা হা করে হেসে ফেলেন।
সুবীর বাবুঃ আপনার সাথে পারবনা। ঠিক আছে আপনি বাকি গল্প তা শুরু করুন।
দেবেন্দ্র মুখে যতই ধর্মের কথা বলে থাকুক, যেদিন ই প্রথমবার এর জন্য উনি অনুরাধাকে দেখেছিলেন সেদিন ই অন্তরের কাম রিপু ভীষণ ভাবে নাড়া দিয়েছিল এবং নিজেকে পরাজিত মনে হয়েছিল। আজ সত্যেন্দ্র ও তিনকড়ির কথা গুলো ওনার শরীরে নতুন করে সেই কাম বিষ কে উদ্রেগ করে দিল। দেবেন্দ্র প্রস্তুত। ওদিকে অনুরাধা স্নানাগারে প্রবেশ করা মাত্র দাসিদের কাছ থেকে তিনকড়ির কাছে খবর চলে যায়। স্নানের পর অনুরাধা সাধারনত কিছুক্ষন অন্তর্বাস এই থাকেন। পুজা শেষ করে তারপর নতুন কাপড় গায়ে চড়াতেন। সেই যুগে তো আজকের মত আধুনিক অন্তর্বাস ছিলনা, পরনে ঘাগরা ধরনের এক সায়া আর বুকের ওপর চাদর, ব্যাস এতটুকুই। কয়েক মিনিটের মধ্যেই তিনকড়ি দেবেন্দ্রর কাছে এসে উপস্থিত। সত্যেন্দ্র তখনও নিজের ই ঘরে। সত্যেন্দ্র শুধু অপেক্ষায় ছিল দেবেন্দ্রর অনুরাধার ঘরে প্রবেশ করার। তারপর নতুন কোনও পরিকল্পনা শুরু হয়ে যাবে।
তিনকড়িঃ মহারাজ চলুন। সেই শুভ লগ্ন এসে গেছে। আপনাকে সজাগ থাকতে হবে আর মনে রাখতে হবে ওই নারীর সতিত্ব গ্রহন করলেই এই জমিদার বাড়ী সুরক্ষিত থাকবে।
দেবেন্দ্র তিনকড়ির সাথে অনুরাধার ঘরের দিকে যেতে শুরু করে। অনুরাধার ঘরের বাইরেই এক বিস্বস্ত দাসি দাঁড়িয়ে ছিল।
দাসিঃ (দেবেন্দ্রর দিকে তাকিয়ে) মহারাজ, আমরা সব ই জানি। রাজ পরিবারের কলঙ্ক দূর করতে আমরা নিজের জান দিতেও প্রস্তুত।
দেবেন্দ্রঃ আমি তোমাদের আনুগত্যে প্রবল ভাবে বিগলিত। জমিদার বারীর মাথার ওপর থেকে কালো মেঘ সরে গেলে তোমাদের জন্য লোভনীয় পুরস্কার অপেক্ষা করে আছে।
দাসিঃ পুরস্কার চাই না মহারাজ। শুধু চাই জমিদার বাড়ী সুরক্ষিত থাক। আপনার জয় হোক মহারাজ। আপনি কোনও আশঙ্কা করবেন না। আমরা আপনার সাথেই থাকবো। আপনি দয়া করে এখানে অপেক্ষা করুন, আমরা সঠিক সময়ে আপনাকে ভেতরে ডেকে নেব।
দেবেন্দ্রর শরীরে তখন কামনার তীব্র আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে। বেশ কিছুক্ষন ওখানে দাঁড়ানোর পর দেবেন্দ্র লক্ষ্য করে যে এই ঘরে একটি জানালা আছে এবং তা একটু হলেও খোলা। দেবেন্দ্র আসতে আসতে জানালার দিকে এগিয়ে যায়। জানালাটা একটু ফাঁক করে এবং ভেতরে উঁকি মারে। ভেতরে তখন অনুরাধা স্নানাগার থেকে বেড়িয়ে এসেছে। পরনে তার ঘাগরার মত এক সায়া। আর দাসিরা লাল রঙের কারুকার্য করা এক চাদর ওনার শরীরে জড়িয়ে দিচ্ছে। অনুরাধা জানালার দিকে পেছন করে আছেন তাই সম্পূর্ণ শরীর দৃশ্যমান হচ্ছেনা, কিন্তু অনুরাধার খোলা পিঠ বেশ কয়েক সেকেন্ডের জন্য দেবেন্দ্রর দ্রিশ্যগোচর হয়। এই ত্বক যেন ঈশ্বর নিজের সমস্ত কাজ কে ফেলে রেখে অতি যত্নের সাথে অল্প অল্প করে বুনেছেন। কি মসৃণ কি নরম ওর ত্বক। দেবেন্দ্র নিজের হুঁশ হারিয়ে ফেলে, জানালা থেকে সরে আসে। দেবেন্দ্রের শরীরে কামনার তীব্র আগুন চরম শিখায় পৌছায় এখন এটাই দেখার যে এই আগুন কখন অনুরাধার শরীরকে দহন করে। এদিকে তিনকড়ি ও সত্যেন্দ্র ও দূর থেকে দেবেন্দ্রের এই উত্তেজিত অবস্থার সাক্ষী হতে থাকে। সত্যেন্দ্রের পরবর্তী পরিকল্পনা ও তৈরি রয়েছে। দেবেন্দ্র অনুরাধার ঘরে প্রবেশ করার ঠিক পরেই তিনকড়ি যাবে গ্রামে মৃত্যুঞ্জয়ের কাছে। এবং ম্রিত্তুঞ্জয় কে ঠিক কি গল্প বলা হবে তাও তৈরি রয়েছে।
সুবীর বাবুঃ আপনি বড্ড বেশি ভনিতা করেন সত্য বাবু। পরবর্তী পরিকল্পনার কথা না হয় পরেই বললেন। আপাতত অনুরাধার ঘরে ঠিক কি হতে চলেছে সে দিকেই মনোনিবেশ করাই শ্রেয়।
সত্য বাবুঃ (কিছুটা মুচকি হেসে) মশাই আপনি তো দেবেন্দ্রর থেকেও বেশি উত্তেজিত হয়ে পরেছেন দেখছি। আপনার শরীরি ভাষা অন্তত সে কথাই বলছে। যাই হোক আপনাকে আর বেশি কষ্ট আমি দেবনা। চলুন একদম অনুরাধার ঘরেই যাওয়া যাক।
দাসি দের দেওয়া অন্তর্বাস পরার পর থেকেই অনুরাধার শরীরে শিহরন শুরু হয়। অনুরাধা প্রথমে মনে করতে থাকেন তার শরীরে কোনও রোগ হয়েছে, কিন্তু ধীরে ধীরে উনি বুঝতে পারেন না ওনার মন এই সময় কাউকে চাইছে খুব সম্ভবত তিনি আর কেউ নয় মৃত্যুঞ্জয়।
অনুরাধাঃ (দাসিদের দিকে তাকিয়ে) তোমাদের বদ্যিঠাকুর কোথায় আছেন তোমরা কি জানো? ওনাকে কিছু সময়ের জন্য তোমরা ডেকে আনতে পারো, আমার ওনাকে ভীশন প্রয়োজন।
দাসিরা নিজেদের মধ্যে বেশ কিছুক্ষন হাসাহাসি করে এবং ওনারা বুঝতে পারে যে অনুরাধার শরীরে বিষক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। কোনও এক বিচক্ষন দাসি অনুরাধার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে
দাসিঃ দেবী ঠাকুর তো ভিন গাঁয়ে গেছেন, ওনার এখানে ফিরে আসতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে। আপনার কি দরকার আমাদের বলুন। আমরা আপনার সেবা করতে সর্বক্ষণ প্রস্তুত।
অনুরাধা ওদের কোথায় কোনও উত্তর দেয়না, শুধু চোখ দুটোকে বন্ধ করে পুজা স্থানে যাওয়ার চেষ্টা করেন। উনি মাটিতে বসে পুজা করতে শুরু করেন। তিনকড়ি ঠিক এই কথাটাই সত্যেন্দ্রকে বলেছিল, অনুরাধা প্রাজ্ঞী, ওনার মনের সাথে যুদ্ধ করা এতো সহজ নয়, সময় লাগবে। পুজাস্থানে বসে থাকলেও অনুরাধার মন সেদিকে ছিলনা। শরীরের মধ্যে যেন হাজার কীট ওনাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। অনুরাধা ওখান থেকে উঠে দাঁড়ান এবং দাসিদের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠেন
অনুরাধাঃ তোমরা কেউ বলতে পারো এরকম কেন হচ্ছে, পুজাকালে এর আগে কনদিন আমার মনে পাপ প্রবেশ করেনি, আজ আমার সাথে এরকম কেন হচ্ছে।
দাসিঃ দেবী আমার মনে হয় আজ আপনার দেবতার পুজা নয় অন্য কোনও পুজা করার দরকার।
অনুরাধাঃ (অনুরাধা ওখান থেকে উঠে যায়) তোমরাও তো নারী। নিশ্চয়ই আমার শরীরের এই আকুতি মিনতি তোমরা অনুধাবন করতে পারছ। অনুগ্রহ করে বল আমি কি করে মুক্তি পাবো।
সুবীর বাবুঃ আপনি তো জমিয়ে দিলেন মশাই। এবার গল্পটায় মজা আসছে। মৃত্যুঞ্জয়ের উপাসনা। বাহ কি দারুন পরিকল্পনা নিয়েছে সত্যেন্দ্র।
সত্য বাবুঃ তাহলে আপনি অজথাই তো অধৈর্য হয়ে উঠছিলেন। এবার দেখুন কেমন লাগে গল্পটা।
সত্য বাবু আবার নিজের গল্প শুরু করলেন।
দেবেন্দ্রঃ তোমার কোনও কথাই আমি বুঝতে পারছিনা। তুমি আমায় ঠিক করে বুঝিয়ে বল।
সত্যেন্দ্রঃ মহারাজ, মৃত্যুঞ্জয় মহাকালের উপাসক। ও এই মুহূর্তে এক গভীর তপস্যায় নিমগ্ন। কোনও এক ঋষির থেকে ও বর পেয়েছে, ঠিক বিবাহের ১ বৎসরের মাথায় ওর স্ত্রীর সাথে ওর সঙ্গম হবে আর সেই সঙ্গমে নিঃসৃত কুমারী যোনীর রক্ত ওকে মহাকালের পায়ে নিক্ষেপ করতে হবে। আর তারপরেই ও সেই বর লাভ করবে। এই বর লাভ করলে ওর মৃত্যু কোনও ক্ষত্রিয়ের হাতে হবেনা এবং ও রাজা হবে।
তিনকড়িঃ মহারাজ ও দুষ্ট। নিজের স্ত্রীকে মন্ত্রবলে বশ করে রেখেছে। ও এক অদ্ভুত ঔষধ প্রয়োগ করে ওর স্ত্রীর ওপর। স্নান করার পরের ২-৩ ঘণ্টা ওর স্ত্রী অনুরাধা চরম ভাবে যৌন কামনার বশবর্তী হয়। কিন্তু স্বামীর আদেশে অনুরাধা নিজের রিপুকে সম্বরন করেন। এটাই ওদের উপাসনা।
সত্যেন্দ্রঃ মহারাজ আমাদের জমিদারবাড়ির সামনে আসন্ন বিপদ। আর এই বিপদ হতে আপনি ই আমাদের রক্ষা করতে পারেন। মহারাজ যেকোনো উপায়ে হোক ওর উপাসনা ভঙ্গ করতে হবে।
দেবেন্দ্রঃ তুমি ঠিক কি বলছ সত্যেন্দ্র। আর এইসব অলৌকিক ব্যাপার কি সম্ভব।
সত্যেন্দ্রঃ মহারাজ জানি একদিনে এটা বিশ্বাস করা আপনার পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু ধীরে ধীরে সব আপনার বোধগম্য হবে। ওদের উপাসনা ভঙ্গ হওয়ার উপায় হোল কুমারী অনুরাধার কুমারিত্ব গ্রহন। আর আমি চাই একাজ টি আপনি করুন।
দেবেন্দ্রঃ তোমার এতো বড় স্পর্ধা কি করে হয় তা ভেবে আমি অবাক হচ্ছি। তুমি জাননা আমি শিবের উপাসক, আমি কোনও নারীকে জোর করতে পারিনা। আর ক্ষত্রিয় ব্যাতিক অন্য কোনও নারীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক আমাদের শোভা দেয়না।
সত্যেন্দ্রঃ ক্ষমা চাইছি মহারাজ। কিন্তু একবার ভেবে দেখুন, সে কেমন মহামারী যা আমাদের কলকাতার কোনও বদ্যি নিবারন করতে পারলো না। সুদুর মেদিনিপুরের এক বদ্যি এলেন দেখলেন আর চলে গেলেন।
দেবেন্দ্রঃ সত্যেন্দ্র, তুমি আমার ছোট ভাই। তোমার অপমান সে তো আমার ও অপমান। কিন্তু বিনা প্রমানে কাউকে দোষারোপ করা হোল রাজধর্মের বিরোধী। এখনো অবধি তুমি যা যা বললে তার সপক্ষে কোনও প্রমান দেখাতে পারনি। তুমি প্রমান জোগাড় কর আমি তারপর ই তোমার কথায় গুরুত্ব দেব।
সত্যেন্দ্রঃ মহারাজ, প্রমান জোগাড় করব বলেই তো এতদিন আপনার সাথে শলাপরামর্শ করিনি এব্যাপারে। কিন্তু মহারাজ বিশ্বাস করুন এই মুহূর্তে রাজপরিবার ও জমিদারবাড়ির সামনে সমুহ বিপদ। আশা করি আপনি নিজের ছোট ভাইএর এই কথাগুলো খুব গভীর ভাবে ভাববেন।
তিনকড়িঃ মহারাজ আমি সাক্ষী। অন্তত আমার কথায় বিশ্বাস করুন। আর আপনি যে আশঙ্কা করছেন তা সঠিক নয়। অনুরাধা রাজকন্যা। ও ব্রাহ্মনের পত্নী এখনো হয়ে অথেনি, কারন ওদের মধ্যে চিরাচরিত স্বামী স্ত্রীর সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। ঠিক ১০ ঘটিকার পর অনুরাধার শরীরে যৌন কামনার মোহ উদ্রেককারী ঔষধ প্রয়োগ করা হয়। অনুরাধা এই সময় টুকু নিজের শরীরকে জাতনা দিয়ে আরাধনা করেন এবং ইহা মৃত্যুঞ্জয়ের নির্দেশে। মহারাজ আমিও বদ্যি ',, আমি আপনারে বলছি এটা পাপ নয়। রাজধর্ম পালনের জন্য সব ই সঠিক।
সত্যেন্দ্রঃ মহারাজ একটিবার ভাবুন, যদি আমাদের রাজকুলের ওপর চরম সর্বনাশ নেমে আসে আপনি কি পারবেন নিজেকে ক্ষমা করতে। যদি ম্রিত্তুঞ্জয় নিজের দাদার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে সক্ষম হয়ে যায় তাহলে আমিও নিজেকে ক্ষমা করবনা।
দেবেন্দ্রঃ (বেশ কিছুক্ষন ভাবার পর) ঠিক আছে আমি রাজধর্ম পালনে রাজি।
তিনকড়িঃ মহারাজের জয় হোক। মহারাজ আপনি দ্রুত স্নান করে পবিত্র হয়ে নিন। আপনার সামনে আজ বিরাট পরীক্ষা। ঠিক ১০ ঘটিকা হয়ার আগে আমি আপনাকে এখান থেকে ডেকে নিয়ে যাবো। এখন আমাদের বিদায়ের অনুমতি দিন।
সত্যেন্দ্র ও তিনকড়ি অত্যন্ত হাসিমুখে বাইরে আসে। এদিকে তিনকড়ি ও দাসি দের সাথে একবার কথা বলে নেয়। দাসি রা প্রস্তুত সমস্ত কাজকে সঠিক ভাবে সম্পূর্ণ করতে।
সুবীর বাবুঃ এতো মশাই, চরম ষড়যন্ত্র। সত্যি এই সত্যেন্দ্র লোকটি ভীষণ পরিমান বদ।
সত্য বাবুঃ বদ কি বলছেন মশাই, ওই তো নায়ক। আচ্ছা ভাবুন তো এরকম এক কামুক লোক শুধু জমিদারীর আনন্দে অনুরাধার মত এক অপ্সরাকে ভোগ করার ইচ্ছে কি বর্জন করতে পারে কখনো। একবার ভেবে দেখুন সত্যেন্দ্রের আত্মত্যাগের ব্যাপারে।
এবার সুবীর বাবু হা হা করে হেসে ফেলেন।
সুবীর বাবুঃ আপনার সাথে পারবনা। ঠিক আছে আপনি বাকি গল্প তা শুরু করুন।
দেবেন্দ্র মুখে যতই ধর্মের কথা বলে থাকুক, যেদিন ই প্রথমবার এর জন্য উনি অনুরাধাকে দেখেছিলেন সেদিন ই অন্তরের কাম রিপু ভীষণ ভাবে নাড়া দিয়েছিল এবং নিজেকে পরাজিত মনে হয়েছিল। আজ সত্যেন্দ্র ও তিনকড়ির কথা গুলো ওনার শরীরে নতুন করে সেই কাম বিষ কে উদ্রেগ করে দিল। দেবেন্দ্র প্রস্তুত। ওদিকে অনুরাধা স্নানাগারে প্রবেশ করা মাত্র দাসিদের কাছ থেকে তিনকড়ির কাছে খবর চলে যায়। স্নানের পর অনুরাধা সাধারনত কিছুক্ষন অন্তর্বাস এই থাকেন। পুজা শেষ করে তারপর নতুন কাপড় গায়ে চড়াতেন। সেই যুগে তো আজকের মত আধুনিক অন্তর্বাস ছিলনা, পরনে ঘাগরা ধরনের এক সায়া আর বুকের ওপর চাদর, ব্যাস এতটুকুই। কয়েক মিনিটের মধ্যেই তিনকড়ি দেবেন্দ্রর কাছে এসে উপস্থিত। সত্যেন্দ্র তখনও নিজের ই ঘরে। সত্যেন্দ্র শুধু অপেক্ষায় ছিল দেবেন্দ্রর অনুরাধার ঘরে প্রবেশ করার। তারপর নতুন কোনও পরিকল্পনা শুরু হয়ে যাবে।
তিনকড়িঃ মহারাজ চলুন। সেই শুভ লগ্ন এসে গেছে। আপনাকে সজাগ থাকতে হবে আর মনে রাখতে হবে ওই নারীর সতিত্ব গ্রহন করলেই এই জমিদার বাড়ী সুরক্ষিত থাকবে।
দেবেন্দ্র তিনকড়ির সাথে অনুরাধার ঘরের দিকে যেতে শুরু করে। অনুরাধার ঘরের বাইরেই এক বিস্বস্ত দাসি দাঁড়িয়ে ছিল।
দাসিঃ (দেবেন্দ্রর দিকে তাকিয়ে) মহারাজ, আমরা সব ই জানি। রাজ পরিবারের কলঙ্ক দূর করতে আমরা নিজের জান দিতেও প্রস্তুত।
দেবেন্দ্রঃ আমি তোমাদের আনুগত্যে প্রবল ভাবে বিগলিত। জমিদার বারীর মাথার ওপর থেকে কালো মেঘ সরে গেলে তোমাদের জন্য লোভনীয় পুরস্কার অপেক্ষা করে আছে।
দাসিঃ পুরস্কার চাই না মহারাজ। শুধু চাই জমিদার বাড়ী সুরক্ষিত থাক। আপনার জয় হোক মহারাজ। আপনি কোনও আশঙ্কা করবেন না। আমরা আপনার সাথেই থাকবো। আপনি দয়া করে এখানে অপেক্ষা করুন, আমরা সঠিক সময়ে আপনাকে ভেতরে ডেকে নেব।
দেবেন্দ্রর শরীরে তখন কামনার তীব্র আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে। বেশ কিছুক্ষন ওখানে দাঁড়ানোর পর দেবেন্দ্র লক্ষ্য করে যে এই ঘরে একটি জানালা আছে এবং তা একটু হলেও খোলা। দেবেন্দ্র আসতে আসতে জানালার দিকে এগিয়ে যায়। জানালাটা একটু ফাঁক করে এবং ভেতরে উঁকি মারে। ভেতরে তখন অনুরাধা স্নানাগার থেকে বেড়িয়ে এসেছে। পরনে তার ঘাগরার মত এক সায়া। আর দাসিরা লাল রঙের কারুকার্য করা এক চাদর ওনার শরীরে জড়িয়ে দিচ্ছে। অনুরাধা জানালার দিকে পেছন করে আছেন তাই সম্পূর্ণ শরীর দৃশ্যমান হচ্ছেনা, কিন্তু অনুরাধার খোলা পিঠ বেশ কয়েক সেকেন্ডের জন্য দেবেন্দ্রর দ্রিশ্যগোচর হয়। এই ত্বক যেন ঈশ্বর নিজের সমস্ত কাজ কে ফেলে রেখে অতি যত্নের সাথে অল্প অল্প করে বুনেছেন। কি মসৃণ কি নরম ওর ত্বক। দেবেন্দ্র নিজের হুঁশ হারিয়ে ফেলে, জানালা থেকে সরে আসে। দেবেন্দ্রের শরীরে কামনার তীব্র আগুন চরম শিখায় পৌছায় এখন এটাই দেখার যে এই আগুন কখন অনুরাধার শরীরকে দহন করে। এদিকে তিনকড়ি ও সত্যেন্দ্র ও দূর থেকে দেবেন্দ্রের এই উত্তেজিত অবস্থার সাক্ষী হতে থাকে। সত্যেন্দ্রের পরবর্তী পরিকল্পনা ও তৈরি রয়েছে। দেবেন্দ্র অনুরাধার ঘরে প্রবেশ করার ঠিক পরেই তিনকড়ি যাবে গ্রামে মৃত্যুঞ্জয়ের কাছে। এবং ম্রিত্তুঞ্জয় কে ঠিক কি গল্প বলা হবে তাও তৈরি রয়েছে।
সুবীর বাবুঃ আপনি বড্ড বেশি ভনিতা করেন সত্য বাবু। পরবর্তী পরিকল্পনার কথা না হয় পরেই বললেন। আপাতত অনুরাধার ঘরে ঠিক কি হতে চলেছে সে দিকেই মনোনিবেশ করাই শ্রেয়।
সত্য বাবুঃ (কিছুটা মুচকি হেসে) মশাই আপনি তো দেবেন্দ্রর থেকেও বেশি উত্তেজিত হয়ে পরেছেন দেখছি। আপনার শরীরি ভাষা অন্তত সে কথাই বলছে। যাই হোক আপনাকে আর বেশি কষ্ট আমি দেবনা। চলুন একদম অনুরাধার ঘরেই যাওয়া যাক।
দাসি দের দেওয়া অন্তর্বাস পরার পর থেকেই অনুরাধার শরীরে শিহরন শুরু হয়। অনুরাধা প্রথমে মনে করতে থাকেন তার শরীরে কোনও রোগ হয়েছে, কিন্তু ধীরে ধীরে উনি বুঝতে পারেন না ওনার মন এই সময় কাউকে চাইছে খুব সম্ভবত তিনি আর কেউ নয় মৃত্যুঞ্জয়।
অনুরাধাঃ (দাসিদের দিকে তাকিয়ে) তোমাদের বদ্যিঠাকুর কোথায় আছেন তোমরা কি জানো? ওনাকে কিছু সময়ের জন্য তোমরা ডেকে আনতে পারো, আমার ওনাকে ভীশন প্রয়োজন।
দাসিরা নিজেদের মধ্যে বেশ কিছুক্ষন হাসাহাসি করে এবং ওনারা বুঝতে পারে যে অনুরাধার শরীরে বিষক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। কোনও এক বিচক্ষন দাসি অনুরাধার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে
দাসিঃ দেবী ঠাকুর তো ভিন গাঁয়ে গেছেন, ওনার এখানে ফিরে আসতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে। আপনার কি দরকার আমাদের বলুন। আমরা আপনার সেবা করতে সর্বক্ষণ প্রস্তুত।
অনুরাধা ওদের কোথায় কোনও উত্তর দেয়না, শুধু চোখ দুটোকে বন্ধ করে পুজা স্থানে যাওয়ার চেষ্টা করেন। উনি মাটিতে বসে পুজা করতে শুরু করেন। তিনকড়ি ঠিক এই কথাটাই সত্যেন্দ্রকে বলেছিল, অনুরাধা প্রাজ্ঞী, ওনার মনের সাথে যুদ্ধ করা এতো সহজ নয়, সময় লাগবে। পুজাস্থানে বসে থাকলেও অনুরাধার মন সেদিকে ছিলনা। শরীরের মধ্যে যেন হাজার কীট ওনাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। অনুরাধা ওখান থেকে উঠে দাঁড়ান এবং দাসিদের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠেন
অনুরাধাঃ তোমরা কেউ বলতে পারো এরকম কেন হচ্ছে, পুজাকালে এর আগে কনদিন আমার মনে পাপ প্রবেশ করেনি, আজ আমার সাথে এরকম কেন হচ্ছে।
দাসিঃ দেবী আমার মনে হয় আজ আপনার দেবতার পুজা নয় অন্য কোনও পুজা করার দরকার।
অনুরাধাঃ (অনুরাধা ওখান থেকে উঠে যায়) তোমরাও তো নারী। নিশ্চয়ই আমার শরীরের এই আকুতি মিনতি তোমরা অনুধাবন করতে পারছ। অনুগ্রহ করে বল আমি কি করে মুক্তি পাবো।