Thread Rating:
  • 12 Vote(s) - 3.42 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery অভিশপ্ত ডায়েরী by subha chatterje completed
#34
পর্ব ৯- সত্যেন্দ্রের পরিকল্পনা-

সুবীর বাবুঃ তিনকড়ির মত আমিও কিছুই বুঝতে পারছিনা। এক ঢিলে ৩ পাখি মানে সত্যেন্দ্র ঠিক কি বোঝাতে চেয়েছেন?
সত্য বাবুঃ আরে মশাই, সেটা জেনে গেলে আর গল্পে বাকি কি থাকবে। সেটাই তো এবার বলব আপনাকে। আপনি মন দিয়ে গল্প তা শুনুন। পর দিন একদম ভোরে উঠে যান সত্যেন্দ্র, কিছুক্ষনের মধ্যে তিনকড়ি ও দেখা করতে চলে আসে।
সত্যেন্দ্রঃ কি ব্যাপার তিনকড়ি আজ সব হচ্ছে তো? আজ ই তো অমাবস্যা।
তিনকড়িঃ হাঁ ছোটবাবু আজ ই সব কিছু হবে, আপনি কোনও চিন্তা করবেন না। শধু আমায় এতটুকু বলুন ওই এক ঢিলে ৩ পাখি মারার মানে কি।
সত্যেন্দ্রঃ সেটা বলব বলেই তো তোমায় এতো ভোরে এখানে ডেকেছি। আচ্ছা তিনকড়ি একটা সত্যি কথা আমায় বল জমিদারির দায়িত্বে তুমি বড়বাবু না ছোটবাবু কাকে দেখতে চাও মানে কে থাকলে তোমার সুবিধা হয়।
তিনকড়িঃ আজ্ঞে ছোটবাবু ছোট মুখে বড় কথা হয়ে যাবে টাও এটা প্রচণ্ড সত্যি যে আমি আপ্নাকেই চাই ওই জায়গায়।
সত্যেন্দ্রঃ সেই সময় এসে গেছে তিনকড়ি। এটাই আমার এক ঢিলে ৩ পাখি মারার মত। অনুরাধা কে আমি স্পর্শ করবনা তিনকড়ি করবে দেবেন্দ্র মানে তোমাদের বড়বাবু। তোমার কাছে এই মুহূর্তে একটা গুরু দায়িত্ব রয়েছে। প্রথম হোল এমন একটা পরিকল্পনা বানাও যাতে মৃত্যুঞ্জয় কিছুক্ষনের জন্য গ্রামে যায়। সেই সময় দেবেন্দ্র কে অনুরাধার সামনে পাঠাও মানে আতর দেওয়ার পড়ে বলছি। আর সঙ্গমরত অবস্থায় দেখার জন্য আবার মৃত্যুঞ্জয় কে ফিরিয়ে আনও।
তিনকড়িঃ (প্রথমে তো হাঁ করে তাকিয়ে থাকে) ছোটবাবু সব ই বুঝলাম। কিন্তু যদি অনুরাধা দেবেন্দ্র কে বশ করতে না পারে? বড় বাবু দক্ষ প্রশাসক, সুপুরুষ। এতো সহজে কি ও কোনও নারীর কাছে নিজেকে সঁপে দেবে?
সত্যেন্দ্রঃ ভুলে জেওনা তিনকড়ি ওর ও শরীরে আমার ই রক্ত বইছে। আর ও এখনো অবিবাহিত। অনুরাধা কোনও পুরুষ কে নিজের জালে ফেলতে পারেনা এ আমি বিশ্বাস ই করিনা। তোমার হাতে সময় খুব কম, তুমি এই মুহূর্তে নিজের কাজ শুরু করে দাও।
তিনকড়িঃ আমার কিন্তু খুব ভয় করছে ছোট বাবু, যদি কোনও ভুল হয়ে যায় আমার, তাহলে তো আমার মৃত্যুদণ্ড একদম পাকা। আপনি রাজা আপনার কিছু হবেনা হয়ত।
সত্যেন্দ্রঃ কি বলছ তিনকড়ি সম্মান চলে যাওয়া কি রাজার কাছে মৃত্যুর চেয়ে কোনও অংশে কম নাকি। ধরে নাও একবার আমার মৃত্যু হয়ে গেছে। যাই হোক তুমি কোনও চিন্তা করোনা। আমি তোমার সাথেই আছি।
সত্যেন্দ্রের আশ্বাস পেয়ে তিনকড়ি বিদায় নেয়। তিনকড়ি ২ জন দাসির সাথে কথা বলে রাখে যারা অনুরাধার ঘরে সেবার দায়িত্বে আছে। ওরাও আশ্বস্ত করে তিনকড়িকে সব রকম সাহায্য করার জন্য। আর তিনকড়ি ভাবতে শুরু করে কি করে মৃত্যুঞ্জয় কে একটু দূরে পাঠানো যায়। তিনকড়ি শুনেছিল পাশের গ্রামের মুখুজ্জে বাবু কোনও এক দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত। মুহূর্তের মধ্যে তিনকড়ির মাথায় বুদ্ধি খেলে যায়। তিনকড়ি ঠিক করে যে মৃত্যুঞ্জয় কে ওখানেই পাঠাবে। গিয়ে রোগী দেখে আসতে আসতে ওনার প্রায় ঘণ্টা দুই লেগে যাবে। দাসী দের থেকে তিনকড়ি জানতে পেরেছে যে অনুরাধা সকাল ৮-৯ ঘটিকায় স্নান করেন। অর্থাৎ সাড়ে ৯ টার মধ্যে যেভাবে হোক মৃত্যুঞ্জয় কে জমিদারবাড়ি তে ফিরিয়ে আনতেই হবে। আর কিভাবে দেবেন্দ্র কে অনুরাধার কাছে পাঠানো হবে তা পরে ভেবে দেখা যাবে।
সুবীর বাবুঃ ধুর মশাই, এতো কিছু একসাথে করে দিয়ে আপনি কেমন সব কিছুকে গুলিয়ে দিলেন। এটা বাস্তবে সম্ভব নয়। এটা সত্যি ই গল্প। আপনি এক কাজ করুন তাড়াতাড়ি করে এই পর্ব তা শেষ করে যে ডায়েরির কথক মানে সুপ্রতীক রায় চৌধুরীর গল্প টা শুরু করুন। এই গল্প টা কেমন একটা লাগছে। আর এই পর্ব টা পুরো তাই লোকের মুখ থেকে শোনা তাই বাস্তবের চেয়ে কল্পনা তাই বেশি মনে হচ্ছে।
সত্য বাবুঃ আপনি প্রচণ্ড অধৈর্য লোক মশাই। আমার দায়িত্ব শুধু সত্যেন্দ্রের গল্প টা আপনাকে বলা। বাকি গল্পটা হয় আপনি নিজে পড়বেন বা অন্য কেউ এসে আপনাকে বলে যাবে। (একটু গম্ভীর হয়ে) আমায় বিশ্বাস করুন গল্পটা সত্যি।
সুবীর বাবুর কাছে আর কোনও অপশন ছিলনা, অগত্যা উনি গল্প টা শোনা শুরু করলেন। সত্য বাবু আবার গল্প টা বলতে শুরু করলেন।
সত্য বাবুঃ তিনকড়ির লোক মুখারজি বাড়ী তে খবর পাঠাল, ঠাকুর মশাই দেখতে রাজী। এদিকে তিনকড়ির ই এক লোক ঠাকুর মশাই অর্থাৎ মৃত্যুঞ্জয়ের কাছে এসে বলেন “ঠাকুর মশাই এক্ষুনি চলুন। মুখুজ্জে মশাই এর অবস্থা আশঙ্কাজনক। আপনি ছাড়া অন্য কেউ ওকে বাঁচাতে পারবেনা” রোগীর সেবা করা মৃত্যুঞ্জয়ের রাজধর্ম। মৃত্যুঞ্জয় জীবনে কখনও কোনও রোগীকে ফিরিয়ে দেন নি। তাই ঠিক হয় একদম ৯ ঘটিকায় মৃত্যুঞ্জয় বাবু যাত্রা করবেন। এতদুর অবধি তো সব ই ঠিক ছিল। দাসিরাও অনুরাধার পোশাকে তিনকড়ির ঔষধ প্রয়োগ করতে প্রস্তুত ছিল। কিন্তু মুস্কিল টা ছিল বড় বাবু অর্থাৎ দেবেন্দ্র কে কিভাবে অনুরাধার কাছে পাঠানো যায়। তিনকড়িও এই ব্যাপারে প্রচণ্ড চিন্তিত ছিল। তিনকড়ি ঠিক করে আরও একবার ছোট বাবুর কাছে যাবে ও তার থেকে এব্যাপারে কিছু পরামর্শ নেবে।
তিনকড়িঃ ছোট বাবু আমি প্রচণ্ড উদ্বিগ্ন। আমার মনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে, যদি ধরা পড়ে যাই তাহলে কি হবে সে ব্যাপারে। ছোট বাবু একটাই অনুরোধ ছিল। বড় বাবুকে অনুরাধার কাছে পাঠানোর কাজ টা যদি আপনি নিজে করতেন।
সত্যেন্দ্রঃ তোমায় দিয়ে কিছু হবেনা তিনকড়ি। এতো ভয় নিয়ে তুমি যুদ্ধ করতে নেমেছ তিনকড়ি। ঠিক আছে তুমি যখন বলছ তো এই কাজ টা আমি ই করব। আমায় একটু ভাবতে দাও।
তিনকড়িঃ আপনি আমায় বাঁচালেন ছোট বাবু। আপনি তো জানেন বড় বাবুকে দেখলেই আমার ভয়ে বুক টা কেঁপে ওঠে।
সত্যেন্দ্রঃ ঠিক আছে তুমি আর এসব চিন্তা করোনা। শোন তিনকড়ি একটা কথা মনে রেখ আমার আর দেবেন্দ্রর শরীরে একি রক্ত বইছে। সেদিন যখন দাদার আদেশ অমান্য করে মৃত্যুঞ্জয় গ্রামবাসীদের নিয়ে বাইজি বাড়ীতে গিয়েছিল এবং দাদার অনুমতি না নিয়েই আমার সাথে ওই মেয়েটার বিয়ের বিধান দিয়েছিল তুমি কি তখন একবার ও দাদার মুখ টা দেখেছিলে।
তিনকড়িঃ না ছোটবাবু আমি সেভাবে দেখিনি। তবে এতটুকু আমি জানি, বড়বাবু আপনার ওপর যতই অসন্তুষ্ট থাকুক না কেন কতগুলো গ্রামের সামান্য প্রজার সামনে আপনার এই অপমান কিছুতেই মেনে নিতে পারেন না।
সত্যেন্দ্রঃ একদম তাই। আমি জানি ও ঠিক কি পরিমান রেগে গিয়েছিল। শুধু প্রজাদের বিদ্রোহর কথা চিন্তা করে ও চুপ করে থেকেছিল। একটা কথা মনে রেখ তিনকড়ি, মৃত্যুঞ্জয় নিজেকে যাই ভাবুক না কেন ও আসলে আমাদের ভৃত্য। দাদার শরীরেও রাজার ই রক্ত বইছে। আমি এই দায়িত্ব টা নিলাম। আমি দাদার ঘরে যাচ্ছি, তুমি ভেতরে ঢুকবে না। বাইরে থেকে দাঁড়িয়ে সব কিছু শুনবে।
এরপর সত্যেন্দ্র ও তিনকড়ি দেবেন্দ্রর ঘরের দিকে যায়। তিনকড়ি বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে আর সত্যেন্দ্র ভেতরে প্রবেশ করে।
সত্যেন্দ্রঃ বড় বাবু আপনার কি এই মুহূর্তে কোনও কাজ রয়েছে? আমি আপনার সাথে কিছু কথা বলতে চাই। অনুগ্রহ করে আমায় কিছু সময় দিন। জানি আপনার সময় অতি মুল্যবান।
দেবেন্দ্রঃ আমি তোমায় আদেশ দিয়েছিলাম যে তুমি নিজের মুখ পর্যন্ত আমায় দেখাবে না। তুমি কেন এসেছ এখানে? তোমার জন্য আমি একজন সামান্য বদ্দির কাছে এমনকি প্রজাদের কাছে মাথা নিচু করতে বাধ্য হয়েছি। পুরো রাজবাড়ীর জৌলুস তুমি মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছ।
সত্যেন্দ্রঃ মহারাজ আমি তো নিজের ভুল বুঝতে পেরেছি। আপনি ভালো করে খবর নিয়ে দেখুন, বাইজি বাড়ী, সুরা, নারী আমি সব ই বর্জন করেছি। আমি তো জমিদারবাড়ির এই চার দেওয়ালের মধ্যেই নিজেকে বদ্ধ করে রাখি।
দেবেন্দ্রঃ তুমি অকাট মূর্খ সত্যেন্দ্র। নারী ও সুরা জমিদারি রক্তে রয়েছে। কিন্তু লজ্জার যা তা হোল তুমি এক সামান্য বদ্দির কাছে যুদ্ধে পরাজিত। সেই মুহূর্তে আমার ইচ্ছে হচ্ছিল এক কোপে তোমার গর্দান মাটিতে ফেলে দি। সমস্ত প্রজার সামনে তুমি ওই সামান্য বদ্দি কে ভগবান বানিয়ে দিয়েছ। এখন আমি না পারছি ওকে তাড়াতে না পারছি ওকে কোনও শাস্তি দিতে।
সত্যেন্দ্রঃ মহারাজ আপনি আমায় সত্যি কথা বলুন, আপনি কি প্রতিশোধ চান? আগে আপনি আমাকে উত্তর দিন তারপর আমি আপনাকে এক অতি গোপন খবর জানাব। অনুগ্রহ করে আগে আমার উত্তর দিন।
দেবেন্দ্রঃ প্রতিশোধের আগুন আমার প্রতিটি শিরায় শিরায় বইছে। আমি রাতে সঠিক ভাবে নিদ্রা গ্রহন করতে পারছি না। যেকোনো কিছুর বিনিময়েই আমি প্রতিশোধ চাই। এবার তুমি আমায় বল কি তোমার গোপন খবর।
সত্যেন্দ্রঃ মহারাজ আপনি মৃত্যুঞ্জয়ের তরবারি চালনা দেখেছেন, ওর মল্ল যুদ্ধ করার পারদর্শিতা দেখেছেন? আর তার চেয়েও অদ্ভুত যা তা হোল মৃত্যুঞ্জয় এই নাম কখনও ব্রাম্ভন কুলে বা কোনও বদ্দির হয় বলে কি আপনি শুনেছেন?
দেবেন্দ্রঃ তুমি কি বলতে চাও ঠিক করে বল সত্যেন্দ্র। এইরকম ভনিতা আমার একদম ই পছন্দ নয়।
সত্যেন্দ্রঃ মহারাজ ও হয়ত চিকিৎসাবিদ্যা কোনও জায়গা থেকে শিখে পারদর্শী হয়ে উঠেছে। কিন্তু ও বদ্যি বাড়ীর সন্তান নয়। ওর আসল পরিচয় বা কলকাতায় আসার আসল কারন আমি সব ই জানতে পেরেছি। কিন্তু তার আগে ও যে বদ্যি বাড়ীর সন্তান নয় তা আপনার কাছে প্রমান করতে চাই। তিনকড়ি ভেতরে আসো। তিনকড়ি তুমি তো নিজে বদ্যি, তোমার পূর্ব পুরুষ রা সবাই চিকিৎসার সাথে যুক্ত ছিল। তুমি ই বল।
তিনকড়িঃ বড় বাবু ছোটমুখে বড় কথা হয়ে যাবে কিন্তু এটা ভীষণ ভাবে সত্যি যে মৃত্যুঞ্জয় বদ্যি নয়। ও ক্ষত্রিয় বংশের। সেই কারনেই ক্ষত্রিয় কন্যাকে ও বিবাহ করেছে। বাকি আর কিছু আমি বলব না ছোট বাবুই সব বলবেন।
সত্যেন্দ্রঃ আপনার পুরঞ্জয় ডাকাতের কথা মনে আছে যাকে আপনি নিজের হাতে হত্যা করেছেন। মৃত্যুঞ্জয় হোল ওই পুরঞ্জয়ের ভাই। দাদার মৃত্যুর পর ও মেদিনিপুরে পালিয়ে গিয়ে চিকিৎসা বিদ্যা রপ্ত করে। ওর এখানে আসা পুরোটাই ওর পরিকল্পনা মাফিক। ও প্রতিশোধ নিতে এখানে এসেছে।
দেবেন্দ্রঃ তুমি এতো জোর দিয়ে কি করে বলছ?
সত্যেন্দ্রঃ মহারাজ আমি প্রমান তো দেবই কিন্তু তার আগে একটা তথ্য আপনাকে জানাতে চাই। মৃত্যুঞ্জয় মহাকালের উপাসক, এক বছর ও নিজের স্ত্রীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করবেনা বলে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। ও বিশাল ক্ষমতা সম্পন্ন। অলৌকিক ক্ষমতা রয়েছে ওর মধ্যে। ওকে শেষ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। ওর উপাসনা কে শেষ করতে হবে। আর তার উপায় আমার জানা আছে।
[+] 1 user Likes manas's post
Reply


Messages In This Thread
RE: অভিশপ্ত ডায়েরী by subha chatterje completed - by manas - 18-01-2019, 11:54 AM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)