22-10-2019, 04:04 PM
উনি বললেন, ‘আরে আমি তোমাকে দোষ দিচ্ছি না। আমি বলছি এখন ওখানে কাউকে পাঠালে তোমার বন্ধুর ওখানে থাকার কোন দরকার নেই।‘ আমি একটু ঝাঁজালো গলায় বললাম, ‘কি তখন থেকে বন্ধু বন্ধু বলে যাচ্ছেন বলুন তো? আরে ও আমার বন্ধু, কিন্তু এখন তো ও আমার মত স্টাফ। আমার বন্ধু বলে সম্বোধন করার কি আছে এখন?’ উনি হেসে বললেন, ‘আরে তুমি রেগে যাচ্ছ কেন? আমি যেটা বলছি সেটা শোন। আমি বলছি ও তোমার সাইটে যাচ্ছে। ওকে তোমার সাইটে পাঠাবো যাতে ও সিমেন্ট প্ল্যান্ট সম্বন্ধে ভালোভাবে জানতে পারে।‘ এইরে, একি কথা। ওকে আমার এখানে পাঠাবে? আমার আর কোন স্টাফের যে দরকার নেই। তার উপর আবার ওই ধরনের সিনিয়ার স্টাফ। আমার ফিক্সড কসট্* বেড়ে যাবে। প্রফিট মার্জিন কমে যেতে পারে। একে আমি চিন্তা করছি কিভাবে খরচা কমানো যায় এতো খরচা বাড়াবার দিকে। এর মধ্যে পার্থর অনুরোধে পার্থর ছোড়দির ছেলেকে আমার সাইটে ঢুকিয়েছি ওই প্রেসিডেন্টের কথায়। ওকে আমাকে ঘর দিতে হয়েছে, আসবাব পত্র দিতে হয়েছে যা কোম্পানির নিয়ম। তবে হ্যাঁ, ছেলেটা ভালো। কাজের। কাজ জানে। আমি উত্তর দিলাম, ‘না স্যার, ওকে তো আমার এখানে এই মুহূর্তে দরকার নেই। আমার খরচা বেড়ে যাবে। আপনারাই পরে বলবেন এতো খরচা হোল কেন?’ উনি জবাব দিলেন, ‘সেগুলো ভাবা আমার উপর ছেড়ে দাও। ও তোমার কাছে যাচ্ছে। ওকে একটু শিখিয়ে পরিয়ে নিও।‘ উনি ফোন রেখে দিলেন আমাকে ভাবতে দিয়ে। শালা, বোকাচোদা ঠিক ডুবিয়েছে ওই সাইটে। নাহলে ওকে এখানে পাঠাবে কেন? প্রেসিডেন্ট দেখেছে দীপ ওর নাম সাজেস্ট করেছিল, সুতরাং দীপকেই ওর ভার বইতে দাও। কিন্তু এই শেখান পড়ানোর ব্যাপারটা তো ওর ওই সাইটেই হতে পারতো। নির্ঘাত নতুন যে ছেলেটা এসেছে সে নিতে চায় নি। যতই আমি অসন্তুষ্ট হই না কেন প্রেসিডেন্টের অর্ডার মানতেই হবে। আমাকেও মানতে হোল। যে ব্যাপারটা আমার মনে এলো সেটা হোল তনু বা পার্থ জানে কি যে ও আমার সাইটে আসবে? যেমন ভাবে চাকরির ব্যাপারটা চেপে গেছিল হয়তো এটাও চেপে গেল। পরে জানতে পারবো। তারপরে আমি তনুকে সাইট থেকে ফোন করেছিলাম, কিছু অন্য কথা বলার পর ওকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘কিরে তোদের তো পার্থর দারলাঘাটে নিয়ে যাবার কথা ছিল, কি হোল তার?’ তনু মুখে একটা শব্দ করে বলল, ‘সেইতো দ্যাখনা, বলেছিল তখন আর এখন বলছে যে বোধহয় ওর ট্র্যান্সফার হতে পারে। পরে জেনে ঠিক করবে কি হয়। এই সবে দেড় মাস হোল জয়েন করেছে এরই মধ্যে ট্র্যান্সফার। ভালো লাগে না।‘ আমি মনে মনে বললাম তোদের কোথায় ট্র্যান্সফার হচ্ছে সেটা তো আমি জানি। এটা তো আর লুকাতে পারবি না। শালা, তোরা যদি না বলিস আমিও চুপ করে দেখব কবে তোরা বলবি। সেই মহেন্দ্রক্ষন এসে গেল একদিন। পার্থ আমাকে ফোন করলো, ‘এই দীপ, একটা গুড নিউজ আছে জানিস?’ আমি জানি, তুই কি জানিস বল। আমি বললাম, ‘তোর কি প্রমোশন হয়েছে?’ পার্থ খুশিতে ডগমগ করে বলল, ‘আরে দূর শালা, এই তো জয়েন করেছি। এখন কি প্রমোশন হবে? আমি ট্র্যান্সফার হচ্ছি।‘ আমি ভাবলাম বোকাচোদার খুশি দেখ। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘তাই নাকি? কোথায় হচ্ছে ট্র্যান্সফার?’ পার্থ বলল, ‘তুই বললে বিশ্বাস করবি না। বলবো?’ আমি বললাম, ‘আরে বল। একদিন না একদিন তো জানতেই পারবো।‘ পার্থ বলল, ‘তোর ওখানে, কিরে অবাক হলি?’ আমি তো আগেই অবাক হয়েছিলাম যেদিন শুনেছিলাম প্রেসিডেন্টের মুখে। নতুন করে আর কি অবাক হবার আছে। মুখে বললাম, ‘তনু জানে?’ পার্থ উত্তর দিল, ‘না, ও জানে না। তোকে বলে ওকে বলবো।‘ আমি মনে মনে বললাম, গান্ডু এখন আমার কাছে আসতে হচ্ছে বলে আমাকে প্রথম বলা হোল।