Posts: 50
Threads: 1
Likes Received: 6 in 6 posts
Likes Given: 0
Joined: Feb 2019
Reputation:
2
পার্টঃঃ২৬
তোর জন্য লাইট পাবো কোথায়।
অনাদিকে বল। ওতো পঞ্চায়েত।
শেষের কথাটা বাসুর কানে গেলো। বাসু ঘুরে একবার হাসলো। ম্যাডাম দেখছেন তো আমরা কিভাবে বেঁচে আছি।
দেখছি।
এই অন্ধকারে অনি কালকে একা শ্মশানে ছিলো।
ওরে বাবা।
কিহলো।
বাসু আবার থমকে দাঁড়ালো।
দেখ পায়ে কি ঢুকেছে।
আমি আবার ওর পায়ের কাছে বোসলাম। টর্চ জ্বালালাম। চোর কাঁটা। শাড়ির পারটা চোর কাঁটায় ভরে গেছে। ওকে কিছু বললাম না চল এসেগেছি মেলায় গিয়ে ব্যবস্থা করছি।
কি বলবিতো।
উঃ পা ঝারিস না। এগুলো বার করতে সময় লাগবে।
বলনা কি আছে।
চোর কাঁটা।
বাসু ফিক করে হাসলো। এই অন্ধকারেও মিত্রার মুখটা দেখতে পেলাম, পাকা আপেলের মতো রং।
মেলার মুখে ওরা সবাই দাঁড়িয়ে। আমরা যেতেই চিকনা বললো, নীপার হুকুম, ম্যাডামকে গ্রিনরুমে নিয়ে যেতে হবে।
আমি বললাম, তুই নিয়ে যা।
তুইও চল। মিত্রা বললো।
আমি ওই মহিলা মহলে গিয়ে কি করবো। তুই সেলিব্রিটি দেখনা ওখানে গিয়ে মালুম পাবি।
মিত্রা এমন ভাবে আমার দিকে তাকালো বাসু চিকনা পর্যন্ত হেসে ফেললো।
ঠিক আছে চল, হ্যাঁরে চিকনা আর কে কে আছে।
ওই সব মিউজিসিয়ান মেকআপ ম্যান আর পলা আছে।
ও কি করছে ওখানে।
ওইইতো সব।
বাবাঃ।
সাজানো-গোজানো ড্রেস পরানো।
কসটিউম ডিজাইনার। মিত্রা বললো।
ছাগল। দর্জি থেকে কসটিউম ডিজাইনার!
সবাই হেসে ফেললো। পলাকে একটু চাটতে হবে।
তুই পারবি অনি, আমরা বললে আজ সব্বনাশ। চিকনা বললো।
কেনো।
নীপা দিদিমনি।
মিত্রার ক্যামেরার ব্যাগ কোথায়।
ওখানে। নীপার জিম্মায়।
কয়েকটা পাঁপড় আর জিলিপি নিয়ে আয় না।
চল সব ব্যবস্থা আছে।
তুই কি রাক্ষস। মিত্রা বললো।
কেনো।
এইতো একপেট ভাত গিলে এলি।
ভাত নয় পান্তা। এতোটা যে হাঁটালি।
আমি হাঁটালাম কোথায়, তুইতো হাঁটালি।
তুই চিকনার বাইকের পেছনে বসলেই হাঁটতে হতো না। তার ওপর উপরি বোনাস, দুবার পা ধরালি।
বুবুন খুব খারপ হয়ে যাবে বলছি।
আমাদের দুজনের কথা-বার্তায় চিকনা বাসু হাঁসতে হাঁসতে প্রায় মাটিতে গড়িয়ে পরে।
স্টেজের পাশে গ্রিনরুম। চিকনা পর্দা সরিয়ে নীপা বলে চেঁচাতেই নীপা ছুটে এলো। মিত্রাকে হিড়হিড় করে টানতে টানতে ভেতরে নিয়ে গেলো। আরে থাম থাম, শাড়িতে পা জড়িয়ে উল্টে পরে যাবো। কে কার কথা শোনে। নীপা আজ হাতের চাঁদ পেয়েছে। আমি আমের আঁটি, আমে দুধে মিশে গেছে। আঁটি গড়াগড়ি খাচ্ছে। কি আর কোরবো। পকেট থেকে সিগারেট প্যাকেট বার করে চিকনাকে একটা দিলাম। বাসুকে একটা দিলাম। নিজে একটা ধরালাম। একটা ছেলে একটা স্প্রাইটের বোতল নিয়ে এসে হাজির। বাসুর দিকে তাকালাম, এটাকি।
ম্যাডামের জন্য।
তোরকি মাথাখারাপ।
কেনো।
ওকি একা খাবে নাকি।
তাহলে ।
এখুনি হুকুম করবে। আরনেই, ওদের জন্য নিয়ে আয়।
তাহলে।
আগে স্টক দেখ কত আছে। তারপর পাঠাবি।
ম্যাডাম বললো ঠান্ডা খাবে।
এমনি সাদা জল নিয়ে আয়।
তুই শালা একদম.......। বাসু বললো।
চিকনা খিল খিল করে হেসে ফেললো। বেশ জমেছে মাইরি।
বাসু অগত্যা ছেলেটিকে বললো, কটা বোতল আছে।
বড় বোতল গোটা কুড়ি হবে।
ঠান্ডা হবেতো।
বরফ দেওয়া আছে।
ছোটবোতল কি আছেরে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম।
থামস আপ, স্প্রাইট, পেপসি......।
একটা স্প্রাইটের ছোট বোতল নিয়ে আয়। খুলবি না।
ছেলেটি চলে গেলো।
এখান থেকেই বুঝতে পারছি মিত্রার প্রাণ ওষ্ঠাগত। সত্যি কথা বলতে গেলে আজ ও-ই এই মেলার সেলিব্রিটি। অনেক বড় বড় আর্টিস্ট আমাদের কাগজে স্থান পাওয়ার জন্য সম্পাদককে নিমন্ত্রণ করে নিয়ে যায়। আর আজ ও যেচে এই অজ পাড়াগাঁয়ের একটা মেলায় এসেছে। একটা ফোন করলেই কালকের কাগজের ফ্রন্ট পেজে একটা কলম লেখা হয়ে যাবে। কিন্ত কেউ জানেইনা ও এখন এখানে। আমি তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করছিলাম। ও বেশ সামলাচ্ছে, কেউ হাত মেলাচ্ছে ওর সঙ্গে, কেউ পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করছে। কেউ জড়িয়ে ধরছে। নীপা খুশিতে ডগমগ, ওর মাইলেজ আজ অনেক বেরেগেছে।
বাসুদা নিয়ে এসেছি। দেখলাম আর একটা ছেলে।
তুই।
ও গিয়ে বললো, অনেক লাগবে তাই জানতে এলাম।
ভাল করেছিস।
যা ওই ভদ্রমহিলাকে গিয়ে দিয়ে আয়। বাসু দেখিয়ে দিল।
ছেলেটি ভির ঠেলে ওর কাছে পৌঁছতেই মিত্রা গেটের দিকে তাকালো। বুঝলাম ও কিছু বলছে ওদের, তারপর এগিয়ে এলো।
বাসু, ঠেলাটা বোঝ এবার।
বাসু আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো।
মিত্রা এদিকেই এগিয়ে আসছে, আমি মিটি মিটি হাসছি। কেছে এসেই, ওর প্রথম কথা, তোর মতো বে-আক্কেলে ছেলে আর দেখি নি।
কেনো ? আমি কি দোষ করলাম!
আমি কি একাএকা খাবো।
এখানে তোর জন্য অনেক কষ্টে একটা বোতল জোগাড় করা হয়েছে।
সবার জন্য পারলে আন নাহলে আমার চাই না।
কি বাসুবাবু, পালস বিটটা দেখেছো।
মিত্রা আমার দিকে কটকট করে তাকিয়ে আছে।
ঠিক আছে তুইখা, ওদের জন্য আনছে।
না। সবার জন্য আনুক তারপর খাবো।
তাহলে আমি খাই। বলে ছেলেটির হাত থেক বোতলটা নিলাম, মিত্রা ছোঁ মেরে আমার কাছ থেকে বোতলটা ছিনিয়ে নিল, তুইও খাবি না। এটা চিকনাকে দে।
চিকনা তুইখা। তোর ভাগ্য ভালো। আমার কোমরে চিমটি পরলো, আমি উ করে উঠলাম।
ছেলেটিকে বললাম, কটা বোতল আছেরে।
গোটা পঞ্চাশ হবে।
সব গুলো নিয়ে আয়। ঠান্ডাতো।
বরফের পেটিতে আছে।
যা বাবা, বাঁচা।
চিকনা, বোতলটা শেষ করে আমাদের টিমটাকে একটু খবর দে।
চিকনা হাসছে।
পলাকে দেখতে পাচ্ছিনা।
ভেতরে আছে।
মিত্রাকে মনেহয় দেখে নি।
লাইটিং নিয়ে বিজি।
তারপর ম্যাডাম, বলুন কেমন বুঝছেন।
জানিস বুবুন সত্যি এখানে না এলে খুব মিশ করতাম।
একটা ছোট্ট থ্যাঙ্কস যদি পোরাকপালে জুটত।
একটি থাপ্পর। দেখছো বাসু তোমার বন্ধুকে, খালি টিজ করবে।
এটা টিজ হলো।
তাহলে কি হলো, প্রেমহলো।
চিকনা হাসতে গিয়ে বিষম খেলো। মিত্রা ওর দিকে এগিয়ে গেলো। বাসু হাসছে। চিকনা মিত্রাকে খক খক করে কাশতে কাশতে কাছে আসতে বাধা দিচ্ছে। ইশারায় বলছে কিছু হয় নি। মিত্রা আমার দিকে তাকালো। ব্যাপারটা এরকম, তোর জন্য দেখ কি হচ্ছে।
চিকনার বিষম থামলো। ছেলেটি একটা আইস্ক্রীমের গাড়ি নিয়ে এসে হাজির।
এটা কিরে।
এর মধ্যেই আছে।
ভাল করেছিস। আমি খাবো না, চিকনা আমার জন্য পাঁপড় আর জিলিপির ব্যবস্থা কর।
আমিও খাবো। মিত্রা বললো।
এটাও কি সবার জন্য।
হলে ভালো হয়।
ঠিক আছে আগে জলখা।
ওদের ডাকি।
ডাক।
মিত্রা নীপা বলে ডাকতেই নীপা ছুটে এলো।
মিত্রা বললো, ওদের ডাক কোলড্রিংকস খাবে।
নীপা আমার দিকে তাকালো, সেতো অনেক লোক।
তোরা যারা পার্টিসিপেন্ট তাদের ডাক।
সেওতো তিরিশ জনের ওপর।
তোমায় পাকামো করতে হবে না, মিত্রাদি স্পনসর করছেন, পারলে মেলার সবাইকে খাওয়াতে পারেন।
অনিদা খারাপ হয়ে যাবে বলে দিচ্ছি।
তুই ওর কথায় কান দিস না, ও ওই রকম।
নীপা ছুটে ভেতরে চলে গেলো।
মেয়েগুলোকে ছুটে আসতে দেখে পলা এদিকে তাকালো, আমাদের দেখতে পেয়েই পরি কি মরি করে ছুটে এলো। কি গুরু কতোক্ষণ।
বাসু বললো অনেকক্ষণ। তুই কাজে ব্যস্ত।
আরে বলিসনা মেয়ে গুলো জালিয়ে পুরিয়ে মারলো।
কি বললে পলাদা। নীপা চেঁচালো।
একবারে কথা বলবি না। দেবো মুখে কালো ডিমার মেরে বুঝতে পারবি। তারপর এই ম্যাডাম এসে সব গুবলেট করে দিলো।
বাসু হাসছে। মিত্রা হাসছে। নীপা হাসছে।
হাসছিস কেনো।
চিকনা একটা ঠান্ডার বোতল এনে পলাকে দিল।
তুই খাওয়াচ্ছিস। আমার দিকে তাকিয়ে।
না ম্যাডাম। চিকনা বললো। আয় এদিকে।
পলা গেলো। চিকনা পলার কানে কানে কি কথা বললো।
পলা ছুটে এসে মিত্রার কাছে হাতজোড় করে দাঁড়িয়ে গেলো। ম্যাডাম আমায় ক্ষমা করেন আমি বুঝতে পারি নি। এখুনি কি ভুল করছিলাম।
মিত্রা হাসছে।
নীপাটা কি ছাগল বলতো। আগে বলবে তো।
তুমি বলার সময় দিয়েছো।
ওরা ঠান্ডা খাচ্ছে আর কথা বলছে।
ফোনটা বেজে উঠলো।
পকেট থেকে বার করতেই দেখি সন্দীপের ফোন। মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললাম, আমি আসছি দাঁড়া। ওখান থেকে বেরিয়ে এলাম। বাসুও আমার পেছন পেছন বেরিয়ে এলো। তুই রাখ আমি তোকে রিংব্যাক করছি।
মেলা থেকে একটু দূরে চলে এলাম, একটা কলোরোল কানে ভেসে আসছে, আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ, চারিদিকে আলোর চাদর বিছিয়ে রেখেছে। কে বলে অন্ধকার। খেতের আল ধরে সোজা চলে এলাম টেস্ট রিলিফের ছোটো বাঁধে। বাসু আছে। জায়গাটা মেলা থেকে প্রায় তিনশো মিটার দূরে। এখানে মেলার আওয়াজ ম্রিয়মান। বাসুকে বললাম, দেখতো আমার ফোনে রেকর্ডিংটা কোথায় আছে। বাসু বুঝতে পারলো, কিছু একটা হয়েছে। বললো দে দেখিয়ে দিচ্ছি। আমি ভয়েস মুড আর রেকর্ডিং মুড দেখে নিলাম। সন্দীপকে ফোন করলাম।
হ্যাঁ বল ।
তুই এখন কোথায়।
আমার বাড়িতে।
মেলায় ঘুরে মজমা নিচ্ছ।
তুই জানলি কিকরে।
এখানে ব্রড কাস্টিং হচ্ছে।
তাই নাকি।
তাহলে বলছি কিকরে তোকে। ম্যাডাম তোর সঙ্গে আছে। তুই একটা প্লেবয় ওদের ফ্যামিলির দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছিস।
ওদের ফ্যামিলিতে প্রবলেম আছে এখবর জানাজানি হল কি করে।
সুনিতদা রটাচ্ছে।
বাঃ ইনফর্মারটা বেশ গুছিয়ে খবর পাঠাচ্ছে বল।
হ্যাঁ। করিতকর্মা ছেলে। ওকে নাকি চিফ রিফোর্টার বানাবে সুনিতদা।
তাই।
অফিসের খবর বল।
আজ সনাতন বাবুর ঘরে তুমুল হট্টোগোল হয়েছে।
কারা করেছে।
চম্পকদা লিড করেছে। সুনিতদা আর ওর চেলুয়া গুলো ছিল।
পুরনো কারা কারা আছে।
এখন বোঝা মুস্কিল। সমুদ্রের ঢেউ-এর মতো সকলে সুনিতদার শিবিরে ভিরে গেছে।
Posts: 34
Threads: 0
Likes Received: 4 in 4 posts
Likes Given: 0
Joined: May 2019
Reputation:
0
ভাই একটু তারাতারি আপডেট দেয়ার চেষ্টা কর
Posts: 50
Threads: 1
Likes Received: 6 in 6 posts
Likes Given: 0
Joined: Feb 2019
Reputation:
2
পার্টঃঃ২৭
তাই।
হ্যাঁ। তুই গেলি গেলি ম্যাডামকে সঙ্গে নিলি কেনো।
কি হয়েছে বলবিতো।
ম্যাডামের সঙ্গে তোকে জড়িয়ে হুইসপারিং ক্যাম্প চলছে। তোকে ফোটাবার ধান্দা। তুই হচ্ছিস চম্পকদা আর সুনিতদার পথের কাঁটা।
সেতো সেইদিন থেকে যেদিন মিত্রার ডাকা মিটিংয়ে ওদের ঝেরেছিলাম।
ম্যাডামের সঙ্গে তোর সম্পর্ক কিরে অনি।
জেনে লাভ।
বলনা। জানতে ইচ্ছে করছে।
কিহবে জেনে।
আমার চাকরি যায় যায়, কালকে আমাকে শোকজের নোটিস ধরাবে শুনতে পাচ্ছি।
কেনো ?
এখনো জানি না। তবে পর্শুদিনের এডিটোরিয়াল পেজে একটা ভুল খবর ছাপা হয়েছিল।
ওই পেজের দায়িত্বে এখন কে আছে ?
নিতাই হারামীর বাচ্চা।
তাহলে তোকে কেনো শোকজ করবে ?
নিউজটা আমি করেছিলাম।
ভুল নিউজ করলি কি করে ? কপি কোথায় ?
খুঁজে পাচ্ছি না। নিউজটা ভুল নয়, অনেক পুরনো।
ছাপা হলো কিকরে।
সেটাইতো আমি বুঝতে পারছি না।
ইনফর্মার ছেলেটি কে। নাম জানতে পেরেছিস।
আমাদের পরিচিত কেউ নয়।
থাকে কোথায়।
তোদের গ্রামেই থাকে মনে হচ্ছে।
কিকরে বুঝলি।
তোদের মেলা থেকে ভয়েজ অন করে কথা বলছে।
নাম বল।
তুই আমাদের প্রেসে চিফ মেসিনম্যান অতীশবাবুকে চিনিস।
না। কোনদিন প্রেসে আমাকে যেতে দেখেছিস।
অতীশবাবু ছেলেটির পিসেমশাই।
ও।
কি বলেছে।
সব কি জানতে পারছি। তবে তোরা ওখানে আছিস। হাত ধরাধরি করে ঘোরা ঘুরি করছিস সেই নিয়ে একটা কেচ্ছা।
ম্যাডামের খতি হচ্ছে এতে। আমি বললাম।
ছারতো। ওরা বড়লোক। তোর মতো দুচারটে ছেলেকে ওরা কেপ্ট হিসাবে রাখে। তারপর প্রয়োজন ফোরালে ছুঁড়ে ফেলে দেবে। কোটি কোটি টাকার মালিক ওরা।
ঠিক বলেছিস। আমি এতটা বুঝি নি। ম্যাডাম আস্তে চাইলো তাই নিয়ে এলাম।
শালা।
সত্যি আমি জি এ এন ডি ইউ।
আমরটা আমাকে ঝারলি।
আমার ভীষণ ভয় করছেরে সন্দীপ, চাকরি গেলে খাবো কি।
দূরশালা তুই ম্যাডামকে নিয়ে ঘুরছিস আবার বলছিস চাকরি গেলে খাব কি।
সত্যিরে।
দাঁড়া তুই ধরে রাখ। আমার একটা ফোন এসেছে। কিছু নতুন নিউজ পাবো।
ঠিক আছে।
আমি ধরে রইলাম। বাসু আমার মুখের দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। ও কিছুই বুঝতে পারছে না। তবে সামথিংস-রং এটা বুঝে নিতে ওর অসুবিধে হচ্ছে না। যতই হোক ও একজন ব্যবসায়ী। থট রিডিংটা ও জানে।
হ্যাঁ। শোন।
বল।
ছেলেটার নাম দিবাকার মন্ডল। ও অতীশবাবুর শালার ছেলে। পড়াশুনায় বেশ ভালো। রেজাল্টও ভাল। বিদ্যাসাগর ইউনিভার্সিটি থেকে বাংলায় এমএ করেছে।
তোর ইনফর্মার কে।
সুনিতদার ঘরেই কাজ করে।
ঠিক ঠিক দিচ্ছেতো না এডিটোরিয়াল পেজের মতো হবে।
তুই এভাবে বলিস না, তোর কথা আমি অক্ষরে অক্ষরে পালনা করছি।
বল।
সুনিতদা ওর বায়োডাটা নিয়ে আজ সনাতন বাবুর সঙ্গে ঝামেলা করেছে। ওকে আজই এ্যাপয়েন্টমেন্ট দিতে হবে।
সনাতনবাবু কি বলছে।
ম্যাডাম এলে সব হবে, বলে এড়িয়ে গেছেন।
কাগজ বেরোচ্ছে।
গত সাতদিনে এক লাখ সার্কুলেশন পরেছে।
কেনো।
ডিউটাইমে বেরোয় নি। বিটে কাগজ যাচ্ছে না।
সনাতনবাবু কি করছে।
সনাতনবাবুকে মানলেতো।
ও।
আর দুজন নতুন এসেছে কিংশুক আর অরিন্দম বলে। যেহেতু ম্যাডামের এ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার ওদের কাছে আছে, তাই কেউ কিছু বলে ওঠার সাহস পাচ্ছে না। তবে ওরা এক সাইড হয়ে গেছে।
পার্টিগত দিক থেকে কোনো ফর্মেসন।
একটা হয়েছে। তবে এখনো প্রকাশ্যে নয়।
তোকে যেখানে যেতে বলেছিলাম, গেছিলি।
গেছিলাম। কিছু কাজ হয়েছে। সেই জন্য তো এখনো পার্টি ইনভলভ হয় নি। ফর্মেসনও হয় নি। তুই এলে তোর সঙ্গে কথা বলে ব্যাপারটা ঠিক হবে।
তুই আজকের লেটেস্ট নিউজ আমায় দে যত রাতেই হোক। তোর আজ কি ডিউটি।
নাইট।
গুড। তুই এখন কোথায়।
ময়দানে। প্রেসক্লাবের লনে।
প্রেসক্লাবে ব্যাপারটা চাউর হয়েছে নাকি।
আমাদের হাউসের ছাগল গুলো আছে না। কম পয়সায় মাল খেয়ে বাওল করেছে।
ঠিক আছে। ছেলেটার নাম কি বললি, দিবাকর মন্ডল।
হ্যাঁ তুই মালটাকে খুঁজে বার কর। শুয়োরের বাচ্চা এক নম্বরের খান.... ছেলে।
খিস্তি করিস না।
খিস্তি করছি সাধে। একটা ছেলের জন্য হাউসটার আজ সর্ব্বনাশ হতে বসেছে।
ঠিক আছে ঠিক আছে। রাখি। রাত একটার পর তোকে ফোন করবো।
না। আজ কাগজ ছাড়তে ছাড়তে দেরি হবে।
ট্রেন ধরাবি কি করে।
এইকদিন ফার্স্ট ট্রেন ধরছে না।
ঠিক আছে।
রেকর্ডিংটা সেভ করলাম। বাঁধের ওপর ঘাসের ওপর থপকরে বসে পরলাম। মাথাটা ঝিম ঝিম করছে। বাসুর দিকে তাকালাম।
অনাদিকে খবর দেবো।
ওর দিকে হাত দেখিয়ে বললাম না।
ও আমার পাশে বসে আমার কাঁধে হাত রাখলো।
অফিসে কোনো গন্ডগোল।
মাথা নারলাম।
দিবাকরের ব্যাপারে কি বলছিলো।
আমিও ঠিক বুঝতে পারছি না। আমায় একটু একা থাকতে দে। তুই চলে যা। মিত্রা খুঁজলে বলবি আমি একটু ঘুরতে গেছি। আমি এখানেই থাকবো। না হলে অন্ধকারে ওই কলেজ ঘরে।
আচ্ছা।
বাসু হন হন করে চলে গেলো। আমি পকেট থেকে সিগারেট বার করে ধরালাম। অনেকক্ষণ ভাবলাম। একবার উঠে গিয়ে সামনের একটা চায়ের দোকান থেকে চা খেয়ে চলে এলাম। পাশ থেকে দু’চারজন হেঁটে চলে গেলো। এটুকু আমার দৃঢ় বিশ্বাস খাতা কলমে পাওয়ার আমার হাতে। কোম্পানীর সম্বন্ধে আমারও কিছু বলার থাকতে পারে। কিন্তু চাইলেই এখুনি বলতে পারবো না। সময় চাই।
মিত্রাকে জানাবো কি করে ? যেটুকু ও বলেছে তাতেই বুঝতে পেরেছি। ওর লাইফটা শেষ। হিমাংশুকে একটা ফোন করবো ? না থাক। আমারও পছন্দ অপছন্দ বলে কিছু থাকতে পারে। এইকদিনে যা ঘটলো তাহলে কি সব মিথ্যে। মিঃ ব্যানার্জী, অমিতাভদার বাড়িতে আমার ঘরে দাঁড়িয়ে যা যা বলেছেন, তা অভিনয়! হতে পারে। সেদিন মিত্রা মিঃ ব্যানার্জীকে বাস্টার্ড বলেছে। নিশ্চই এমন কিছু আছে যাতে একথা বলতে মিত্রার মতো মেয়ে বাধ্য হয়েছে। কথায় কথায় মিত্রা বলেছিল মিঃ ব্যানার্জীর যা কিছু প্রসার তা মিত্রার জন্য।
মিত্রা আমার শরীরে শরীর মিশিয়ে মিঃ ব্যানার্জীকে বাস্টার্ড বললো। সেটাও অভিনয়। না আমি মনে হচ্ছে মনে মনে দুর্বল হয়ে পরছি। এসব ফালতু চিন্তা করছি। মিত্রা জোর করে আমায় কোম্পানীর শেয়ার কিনিয়েছে। সত্যি যদি তাই হতো তাহলে আমার পেছনে মিত্রা ১৫০ কোটি টাকা খরচ করতো না। তাও আবার সাদা কালো মিশিয়ে।
আমি চেষ্টা করলেও সারা জীবনে এত টাকা ইনকাম করতে পারবো না। একটা গুডনিউজ আমার মালিকানার খবর এখনও ওরা জানতে পারে নি। আমি যদি কোন ড্রস্টিক স্টেপ নিই মিত্রা নিশ্চই বাধা দেবে না। তবু মন মানছে না। সন্দীপ ঠিক কথা বলেছে। ওদের পয়সা আছে। প্রোয়োজন ফোরালে ছুঁড়ে ফেলে দেবে। তবু জীবনে অনেক মানুষ দেখেছি। আমার কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না।
কাঁসর ঘন্টা বেজে উঠলো। রথ বের হচ্ছে। খুব ইচ্ছে করছিলো। কিন্তু ভালো লাগল না। বাজি ফাটছে। মিত্রার আনা বাজি পোরানো হচ্ছে। সত্যি ছোট সময়ে এই বাজি ফাটাবার জন্য কতো আগ্রহ ছিলো। উনামাস্টার এই মেলার প্রেসিডেন্ট ছিলো। কাকা সেক্রেটারি। একটা বাজি চেয়েছিলাম বলে একটা থাপ্পর জুটেছিল। তারপর থেকে আর কোনদিন বাজি ফাটাবার নাম মুখে আনিনি। লোকে ফাটিয়েছে। আমি দেখেছি। অনাদিরা বাজি ফাটাবার কথা বললে বলেছি আমার ভয় করে।
দিবাকর মন্ডল আর আমার বন্ধু দিবাকর মন্ডল কি একব্যক্তি। এটা আমাকে প্রথমে জানতে হবে। সন্দীপ যা বায়োডাটা দিচ্ছে তাতে দিবাকরের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। কাকে দিয়ে খবরটা নেবো। তিনটে ছায়া মূর্তি আমার পাশে এসে দাঁড়ালো। চমকে তাকালাম, অনাদি বাসু চিকনা। ওরা আমার পাশে এসে বসলো। ভাবলাম ওদের কিছু বুঝতে দেবো না। ক্যাজুয়েল থাকার চেষ্টা করলাম। ওদের দেখে হাসলাম।
কিরে তোরা এই সময়। ফাংসন আরম্ভ হয়েছে।
কোন কথার উত্তর নেই। চোখ গুলো সব চিতাবাঘের মতো জ্বলছে। আমি এই চাঁদনীরাতেও ওদের পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি।
কিরে কথা বলছিস না কেনো। মিত্রা কোথায় ?
পায়ের তলাটা দেখেছিস। অনাদি বললো।
আমি দেঁতো হাসি হেসে অনাদির দিকে তাকালাম। বিকেলের দেখা অনাদি আর এখনকার অনাদির মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য। নিচের দিকটা একবার দেখে নিয়ে অনাদির চোখে চোখ রাখলাম। গনগনে আগুনের কয়লার টুকরো।
কেনো।
এইটুকু সময় কটা সিগারেট খেয়েছিস।
হ্যাঁ শেষ হয়ে গেছে। চিকনা একটা সিগারেট দিবি।
তুইতো এতো সিগারেট খাস না।
খাই না, আজ খেতে ভালো লাগছে।
চিকনা প্যাকেটটা এগিয়ে দিলো। একটা সিগারেট বার করে নিলাম। তারপর আবার প্যাকেটটা ফেরত দিলাম।
চিকনা বললো, তোর কাছে রাখ। আমি পাশে রাখলাম।
ফোনটা বেজে উঠলো। সন্দীপ।
হ্যাঁ আমি তোকে পরে ফোন করছি। আমার কথা বলা শেষ হলো না, অনাদি ফোনটা ছোঁমেরে আমার হাত থেকে নিয়ে নিলো। কানে তুলে বললো, আপনি কে বলছেন। এরি মধ্যে ও ভয়েসমুড অন করে দিয়েছে, রেকর্ডিং বটম টিপে দিয়েছে।
আমি অনির বন্ধু সন্দীপ বলছি।
এখুনি অনির গলা পেলাম, আপনি কে ?
আমি অনাদি, অনির বন্ধু।
অনি নেই।
ধরুন।
অনাদি ইশারায় কথা বলতে বললো।
হ্যাঁ বল।
শোন পাক্কা খবর। দিবাকর মন্ডল তোর বন্ধু। তোর সঙ্গে ও এক সঙ্গে পরেছে। এমনকি তোর ডিটেলস পর্যন্ত এখানে দিয়ে দিয়েছে। আর কি বলবো তোকে, কথাটা বলতে তোকে খুব খারাপ লাগছে। সুনিতদার মন পেতে বলেছে, তোর বাপ-মার ঠিক নেই। এখন এখানে লাইভ রেকর্ডিং চলছে। ছেলেটি মনে হয় ম্যাডামের খুব কাছাকাছি আছে। এমন কি ম্যাডামের গলাও শুনতে পাচ্ছে এরা।
কোথায় চলছে রেকর্ডিং।
সুনিতদার ঘরে।
আর কে আছে।
যারা থাকার তারাই আছে। তুই এর একটা বিহিত কর অনি।
আমি অফিসে ঢুকছি। দেখি লাস্ট আপডেট কি হয়।
ঠিক আছে। তুই ফোন কর। আমার ফোন অন থাকবে।
লাইনটা কেটে গেলো।
অনাদি আমার দিকে তাকিয়ে। চিকনা চেঁচিয়ে উঠলো, অনাদি তুই একবার পারমিশন দে, আমি ওকে কাল সকালের মধ্যে গাইপ করে দেবো।
ঘাউরামি করিস না। আমি বললাম।
বাসু চুপচাপ, শুধু বললো, ওকে হাতে মেরে কিছু হবে না, ভাতে মারতে হবে।
ঠিক বলেছিস।
ও এখন কোথায়রে চিকনা।
উঃ তোরা থাম না। আমি বললাম।
থামার সময় এখন নেই অনি। মালটা আমি বুঝতে পেরেছি।
কিছুই বুঝিস নি।
তুই বোঝা।
কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকলাম। চোখ দুটো কেমন জ্বালা জ্বালা করছে। জীবনে বাবা-মাকে ঠিক মনে পরে না। কিন্তু জ্ঞানতঃ কোনদিন বাবা-মাকে আমি অশ্রদ্ধা করি নি। কিন্তু আজ প্রথম বাবা-মার সম্বন্ধে কোন খারাপ কথা শুনলাম। বুকের ভেতরটা ভীষণ যন্ত্রনা করছে। মনে হচ্ছে দম বন্ধ হয়ে আসবে। তিনজোড়া চোখ আমার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে। ওদের বুঝতে দেওয়া যাবে না। তাহলে একটা বিচ্ছিরি কান্ড ঘটে যাবে। আমি মাথা নীচু করে বসে আছি।
অনি শরীর খারাপ লাগছে। বাসু আমার পিঠে হাত দিলো।
আমি বাসুর মুখের দিকে তাকালাম। হয়তো চোখটা ছল ছল করে উঠেছিলো।
অনাদি আমার দিকে তাকিয়ে নিজেকে ধরে রাখতে পারল না। চিকনার দিকে তাকিয়ে বললো, আজ রাতেই কাজ হাসিল কর।
কথা বলতে গিয়ে আমার গলা ধরে এসেছে। আমি অনাদির হাত চেপে ধরে বুকে জড়িয়ে ধরলাম। না এরকম করিস না। প্লিজ।
তোকে যে অপমান করে সে আমাদেরও অপমান করেছে।
ঠিক আছে। তার জন্য....।
তুই জানিস না এই গ্রামটাকে ও জ্বালিয়ে দিচ্ছে। খালি বন্ধু বলে ও পার পেয়ে যাচ্ছে।
দূর বোকা। হিংসার রাজনীতি করতে নেই। ঠান্ডা মাথায় চিন্তা কর। সব ঠিক হয়ে যাবে।
অনাদি একটু ঠান্ডা হলো।
আমি চিকনার দিকে তাকিয়ে বললাম, একটু চা খাওয়াবি।
চিকনা ছুটে চলে গেলো।
অনাদি আমার হাত চেপে ধরলো। অনি তুই বল। তুই একা চাপ নিস না। আমি জানি তোর সমস্যা তুই একলাই সলভ করবি। আমরা যদি তোকে কিছুটা হেল্প করতে পারি। যেহেতু ব্যাপরটা আমাদের এখানকার সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। তুই এখান থেকে ১০ বছর ডিটাচ। এখানের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। তুই দিন চারেকে তার কিছুই জানতে পারবি না। ওপর ওপর সবাই ভালো। ভেতর থেকে ছুঁরি চালাবর লোক প্রচুর। তুই অনেক কষ্ট করে এখানে এসে দাঁড়িয়েছিস। আমরা তোকে হারাতে চাই না।
মিত্রা কোথায়।
ও সামনে বসে ফাংসন দেখছে।
ছবিটবি তুলছে না।
সব ব্যবস্থা করে দিয়েছি। উনি আমাদের গেস্ট, তুই আমাদের ওপর বিশ্বাস রাখ, ওনার কোন অসুবিধে হবে না।
দিবাকর কোথায়।
ওর ব্যবস্থা করছি।
এখন নয়।
ঠিক আছে তুই বল।
চিকনা চা নিয়ে চলে এলো।
আমি ওদের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত কথা বললাম। ওদের গায়ের লোম খাঁড়া হয়ে গেলো। অফিসিয়াল ব্যাপারটা এত জটিল ওরা কিছুতেই ধরতে পারছে না। আমি চিকনাকে বললাম, মেলার মজাটা আজ করতেই পারলাম না। তুই এক কাজ করবি।
বল।
এমন কোন বিশ্বস্ত লোক আছে, যে দিবাকরকে ফলো করবে।
এই কাজ, তোকে চিন্তা করতে হবে না। তোকে আধঘন্টার মধ্যে ডিটেলস দিয়ে দিচ্ছি।
না। ওকে মনিটরিং কর। যেন কিছু বুঝতে না পারে। ফাংসন কখন শেষ হবে।
১২টা বাজবে।
•
Posts: 50
Threads: 1
Likes Received: 6 in 6 posts
Likes Given: 0
Joined: Feb 2019
Reputation:
2
পার্টঃ২৮
মিত্রার আশে পাশে কারা আছে আমাকে একটু জানা। দিবাকরেরও কিছু লোকজন এখানে আছে। ওরা আমাকে খুঁজে বেরাচ্ছে নিশ্চই।
ঠিক আছে তোরা এখানে বোস। আমি যাচ্ছি। চিকনা চলে গেলো।
খুব সাবধান।
তোকে ভাবতে হবে না।
শোন মিত্রা যদি খোঁজ করে বলবি আমার সঙ্গে তোর দেখা হয় নি।
আচ্ছা।
অনাদি ভীষণ খিদে পেয়েছে।
কি খাবি বল।
একটু ছোলা সেদ্ধ আর মুড়ি।
পাটালি। অনাদি হেসে বললো।
এখন ভালো লাগছে না।
বুঁচিকে ফোন করে দিচ্ছি দাঁড়া।
কে বুঁচি।
তুই চিনবি না পার্টি করতে গিয়ে অনেক কিছু রাখতে হয়, শিখতে হয়।
থাম দাঁড়া। তুই একটা কাজ করতে পারবি।
বল ।
তুই নিজে যা। ওদের নাচ কি শুরু হয়েছে।
হ্যাঁ প্রায় একঘন্টা হয়ে গেছে।
তার মানে এবার শেষের পথে।
হ্যাঁ।
মিত্রা নিশ্চই মেলা ঘুরতে চাইবে। তুই নীপা ওদের বন্ধুদের সঙ্গে ওকে ভিরিয়ে দে।
সম্ভব হবে বলে মনে হচ্ছে না। বাসু বললো।
ঠিক আছে। শেষ হলে আমায় ফোন কর। আমি যাবো। আমার আর কিছু ভালো লাগছে না।
বুঁচিকে দিয়ে মুড়ি চা পাঠিয়ে দিচ্ছি। বাসু তুই কিন্তু অনিকে ছেড়ে যাস না।
আচ্ছা।
বাসুর ফোনটা বেজে উঠলো।
চিকনা ফোন করেছে, তুই কথা বলবি।
দে।
হ্যাঁ।
হ্যালো।
বাসু।
না আমি অনি বলছি।
শোন সব ব্যবস্থা পাকা, শুয়োরের বাচ্চা ম্যাডামের সঙ্গে বসে জমিয়ে গল্প করছে।
ঠিক আছে। তুই ডিস্টার্ব করিস না। ওদের গল্প করতে দে। পরলে শোনার চেষ্টা কর। আমার ফোনে রিং কর আমি রেকর্ডিং করবো। মাথায় রাখবি এই কাজ যে করে সে খুব শেয়ানা ছেলে।
আচ্ছা।
বাসু আমার দিকে তাকালো, তোর মাথায় কতো চাপ। তুই চলিস কি করে।
চলতে হয় বাসু। না হলে চালাবো কি করে।
আমার তোর মাথাটা মাঝে মাঝে দেখতে ইচ্ছে করে। আমরা হলে এতোক্ষণে কোন অঘটন ঘটিয়ে দিতাম।
এই যে তুই কিছুক্ষণ আগে বললি হাতে নয় ভাতে মারবো।
বাসু মাথা নীচু করে হাসলো।
অনাদির ছেলেটা মুরি চা দিয়ে গেলো। দুজনে বসে বসে খেলাম। ভেতরে ভেতরে তোলপাড় চলছে। আমাকে মিত্রাকে নিয়ে কেচ্ছা, অন্য হাউস রসালো গল্প করবে। একদিন হয়তো উপন্যাসেও স্থান পাবো। ভাবতেই গাটা শিউরে উঠছে।
চিকনার ফোন।
বাসুকে দিলাম, ও ভয়েস মুডে দিয়ে রেকর্ডিং করছে।
............আপনার সঙ্গে অনির অনেক মিল আছে। মিত্রার গলা।
না না কি বলছেন আপনি। অনি আপনার হাউসের একজন স্টার রিপোর্টার। ওর সঙ্গে আমার তুলনা।
আচ্ছা অনির সঙ্গে আপনার পরিচয় কি ভাবে কাগজে কাজ করতে করতে।
না আমরা কলেজ লাইফ থেকে একে অপরের সঙ্গে পরিচিত।
বাবা তার মানে প্রয় দশ বছর।
হবে।
অনিকি আপনার কাছে থাকে না অন্য কোথাও থেকে।
আমার কাছে থাকবে কেনো, ওর নিজস্ব ফ্ল্যাট আছে।
আমি তো শুনলাম কলকাতয় ওর থাকার জায়গা নেই বলে আপনার বাড়িতে থাকে।
আপনি ভুল শুনেছেন।
সত্যি আপনাদের নিগূঢ় বন্ধুত্ব দেখলে হিংসে হয়।
কি করে দেখলেন।
মেলায় আসার পথে আপনাদের পেছন থেকে দেখলাম।
কলেজ লাইফেও আমাদের অনেকে ঘনিষ্ঠ বন্ধু-বান্ধব আমাদের দেখে হিংসে করতো।
এখানকার সবাই কানা-ঘুসো করে আপনার সঙ্গে ওর একটা এ্যাফেয়ার আছে।
কারা বলে।
অনির বন্ধুরা।
আপনি বলছেন। না আর কেউ বলছে।
কেনো। অনাদি বাসু চিকনা কতজনের নাম বলবো।
হতেই পারে না। ওরা অনির খুব ভাল বন্ধু নার্সিংহোমে দেখলামতো।
আমি সেদিন ওর কাকার অপারেশনের দিন যেতে পারলাম না, খুব খারাপ লাগছে।
সেদিনতো আপনাকে দেখতে পাই নি।
আপনি নার্সিংহোমে এসেছিলেন।
আমি একা নয় অনির বড়মা ছোটমা......।
বাবা ওকানে গিয়ে এসব পাতিয়ে ফেলেছে।
পাতাবে কেনো। একজন আমার কাগজের এডিটরের স্ত্রী আরএকজন আমার কাগজের চিফ এডিটরের স্ত্রী।
অনি আসে নি ?
এসেছে। কোথায় ঘুরে বেরাচ্ছে। ও একটা ভবঘুরে।
পোষ মানাবার চেষ্টা করুন।
করছিতো পারছি কোথায়।
সত্যি ওর কোন রেসপনসিবিলিটি নেই। আপনার মতো একজন সেলিব্রিটিকে নিয়ে এরকম ছেলেখেলা করার।
কোথায় ও ছেলেখেলা করলো। আমিইতো এখানে আসতে চেয়েছি, ও না করেছিলো। তবু এলাম। সত্যি না এলে আমার অনেক কিছু অদেখা থেকে যেতো।
ফোনটা কেটে গেলো।
বাসু আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো।
আমার ফোনটা বেজে উঠলো, দেখলাম মিত্রার ফোন।
হ্যালো।
কিরে তুই কোথায়।
আমি শ্মশানে।
শ্মশানে মানে!
শ্মশানে।
আবার ওখানে গেছিস।
হ্যাঁ। জায়গাটা আমায় খুব টানেরে। তুই যেনো কাউকে বলিস না।
কি বলছিস তুই। এখুনি আসবি।
কেনো।
আমাকে একা একা ফেলে যেতে তোর লজ্জা করছে না।
কই তোকে একা ফেলে এলাম, নীপা আছে, ওর বন্ধুরা আছে, অনাদি বাসু চিকনা আর কতজনকে তোর চাই।
তোর গলাটা ভারি ভারি লাগছে কেন ?
ফাঁকে মাঠে বসে আছি কিনা একটু ঠান্ডা লেগেছে বোধ হয়।
তুই এখুনি আয়।
ফাংসন শেষ ?
আর একটু বাকি আছে।
ঠিক আছে আমি অনাদিকে বলে দিচ্ছি। তোকে সঙ্গ দেবে গিয়ে।
তোর এক বন্ধুর সঙ্গে আলাপ হলো।
কার সঙ্গে।
দিবাকর। দিবাকর মন্ডল।
কোথায় আলাপ হলো। এইতো আমার পাশে বসে আছে।
তাই।
দে ওকে।
দিচ্ছি।
হ্যালো।
বল।
তুই এখন কোথায়।
পুরীকুন্ডী শ্মশানে।
মিথ্যে কথা বলছিস।
তুই চলে আয়।
কোথায় ?
আমি যেখানকার কথা বললাম।
আমার এতো শখ নেই।
তাহলে আর সত্য মিথ্যার যাচাই করে লাভ।
আমি তোর মতো পাগল নই।
তুই পাগল নয়। শেয়ানা।
কেনো একথা বলছিস।
তুই সেদিন বললি তোর কাজ আছে তাই নার্সিং হোমে যেতে পারবি না।
সত্যি তুই বিশ্বাস কর অনি, একটা কাজ পরে গেছিল।
ইন্টারভিউ কেমন হলো।
তোকে কে বললো।
সাংবাদিকের কাজ খবর সংগ্রহ করা। আমি নিশ্চই মিথ্যে বলি নি।
না। এটা তুই সত্যি কথা বলেছিস।
কোন কাগজে ইন্টারভিউ দিলি।
এটাও কি জেনে ফেলেছিস।
না। জানতে পারি নি। দেখ সত্যি কথা বললাম।
মেলায় কখন আসছিস। তোর মিত্রাদেবিতো তোকে দেখার জন্য পাগল।
ওটা বড়লোকেদের খেয়াল।
কি বলছিস।
কেন বিশ্বাস হচ্ছে না।
একেবারে না।
তুইতো পাশে বসে আছিস, জিজ্ঞাসা কর।
এতটা ধৃষ্টতা দেখাতে পারবো না।
আমাদের কাগজে কার কাছে ইন্টারভিউ দিয়ে এলি।
কি পাগলের মতো বকছিস।
আরে আমিতো বদ্ধ পাগল।
সেটাই মনে হচ্ছে।
কেনো এটাও কি মিথ্যে বললাম।
পুরোটা।
মিত্রাকে ধর একটা হিল্লে হয়ে যাবে।
বলেছি।
বাঃ এইতো করিতকর্মা ছেলে। মেলায় থাক। আমি আসছি।
কতোক্ষণের মধ্যে আসবি।
এখান থেকে যেতে ঘন্টা খানেক তো লাগবে।
নারে আমি তাড়াতাড়ি ফিরে যাব। কাল সকালে একবার কলকাতা যেতে হবে।
হাসতে হাসতে বললাম, জয়েনিং।
বোকা বোকা কথা বলিস না।
ফোনটা কেটে দিলাম। বাসু আমার দিকে তাকিয়ে আছে। রেকর্ডিংটা সেভ করেই অনাদিকে ফোন করলাম। অনাদি ধরেই বললো কি হয়েছে বল।
তুই কোথায় ?
কাজ গোছাছি।
মানে ?
মেলার চারিদিকে নজরদারি বারালাম।
ঠিক আছে। চিকনা কোথায় ?
ও মেলার বাইরে আছে।
আচ্ছা। শোন তুই একবার মিত্রার কাছে যা, ওখানে দিবাকর আছে।
ওর পেছনে পাশে চার পাঁচজন আছে।
তুই গিয়ে মিত্রার সঙ্গে বোস ওর সঙ্গে খেজুরে গল্প কর। আমার সম্বন্ধে যাতা বল। কালকের শ্মশানের গল্প কর। আমি দিবাকরকে এইমাত্র শ্মশানের গল্প দিয়েছি। ওর মুখটা লক্ষ্য রাখবি তাহলে সব ধরতে পারবি। ও একঘন্টার মধ্যে মেলা থেকে বেরিয়ে যাবে বলছে। ওকে যে ভাবেই হোক তুলে আনবি আমার কাছে। মিত্রা যেন একটুও বুঝতে না পারে।
ঠিক আছে। তুই পাঁপড় ভাজা জিলিপি খাবি।
খাব। মিত্রার জন্য নিয়ে যা। চিকনা কোথায় এখন ?
বললাম তো মেলার বাইরেটা সামলাচ্ছে।
ওর ফোন বন্ধ, মনে হয় ব্যাটারি নেই।
ঠিক আছে দেখছি।
বাসু আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। তোকে কত চিন্তা করতে হয়। এখন মনে হচ্ছে তোর প্রেমকরা উচিত, বিয়ে করা উচিত নয়।
হেসে ফেললাম। কেনো।
বিয়ে করলে বউকে সময় দিবি কখন।
তোর বউ মেলায় এসেছে।
এসেছে।
দেখালি নাতো।
সময় পেলাম কোথায়। যা ঝড় চলছে।
মিত্রার সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিতে পারতিস এক ফাঁকে।
গেছিলাম তখন। আলাপ করিয়ে দিয়েছি।
ভাল করেছিস।
ফোনটা বেজে উঠলো। মিত্রার ফোন।
এখন এলি না।
আসছি। এতটা পথ হেঁটে যেতে হবেতো।
অনাদি পাঁপড় আর জিলিপি নিয়ে এসেছে।
খা।
তুই না এলে খাব না।
পাগলামো করিস না, ওরা মন খারাপ করবে।
কালকে তোর শ্মশানে যাবার গল্প শুনছি।
হাসলাম।
আচ্ছা এই মেলা ছেরে তোর শ্মশানে যেতে ভালো লাগলো।
মা-বাবার কথা ভেবে মনটা খুব খারাপ লাগলো। তাই চলে এলাম।
সরি আমি না জেনে তোকে হার্ট করলাম। তুই আয়।
ফোনটা কেটে দিলাম। কিছু ভাললাগছে না। চল কলেজ ঘরের বারান্দায় গিয়ে বসি। আমি বাসু ইকলেজ ঘরের বারান্দায় বসলাম। এখান থেকে মেলেটাকে দেখা যাচ্ছে কিন্তু কি হচ্ছে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। চিকনার ফোন। সরি গুরু। আমি ব্যবস্থা করেছি। তবে মনে হয় কাজ হবে না। নীপাদের নাচ শেষ হলো। ম্যাডাম গ্রীনরুমে যাচ্ছে। দিবাকর হেসে হেসে ম্যাডামের সঙ্গে কথা বলছে, শুয়োরের বাচ্চা আবার হাত মেলাচ্ছে। অনাদি ওর কাঁধে হাত রেখেছে। ঠিক আছে বস আর মিনিট দশেক। রাখি।
বাসু আমার দিকে তাকলো।
কিরে আমি কি বাইরে গিয়ে বসবো।
বোস। আমি এখানে আছি জানাবি না। তুই অনাদি আগে ফেস কর। তারপর ওকে এখানে নিয়ে আয়। আমি মোবাইল অফ করছি।
আচ্ছা।
সিগারেটের প্যাকেটটা দিয়ে যা।
বাসু সিগারেটের প্যাকেটটা দিয়ে বেরিয়ে গেলো। মাথা গরম করলে চলবে না। যা হবার তা হয়ে গেছে এখন কাজ উদ্ধার করতে হবে। হঠাত চেঁচামিচির শব্দ। বাইরে উঁকি দিয়ে দেখলাম। এই জ্যোতস্না রাতেও পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি। দিবাকরের কলার ধরে হির হির করে টেনে আনছে ওরা। হয়তো দু’চারঘা দিয়েও দিয়েছে। দিবাকারের সঙ্গে জোর ধস্তা-ধস্তি চলছে। চিকনার গলা শুনতে পেলাম। বেশি বাড়াবাড়ি করবি না। আমার পরিচয় তোকে নতুন করে দেবার নেই। কেটে টুকরো টুকরো করে মালঞ্চের জলে ভাসিয়ে দেবো। মাছের খাবার হয়ে যাবি।
আমার বুকটা দুরু দুরু করে উঠলো। একি বলছে চিকনা।
অনাদি ঠান্ডা মাথায় খালি বলছে। তোকে যেখানে নিয়ে যাচ্ছি সেখানে চল। সব বুঝতে পারবি।
কাছাকাছি এসে অনাদি বাসুকে জিজ্ঞাসা করলো অনি কোথায়। আমি দেখতে পাচ্ছি বাসু অনাদিকে আড়ালে ডেকে নিয়ে গিয়ে সব বলছে। অনাদি ঘাড় নারছে। অনাদি একবার ইকলেজ বাড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো। তারপর ঘাড় নাড়লো।
•
Posts: 439
Threads: 2
Likes Received: 309 in 202 posts
Likes Given: 348
Joined: Jan 2019
Reputation:
41
Yeh dil mange more
Why so serious!!!! :s
•
Posts: 5
Threads: 0
Likes Received: 0 in 0 posts
Likes Given: 0
Joined: May 2019
Reputation:
0
Ektu besi kore update deben bolechilen. Kotha rakhlen na. We're waiting
•
Posts: 50
Threads: 1
Likes Received: 6 in 6 posts
Likes Given: 0
Joined: Feb 2019
Reputation:
2
পার্টঃঃ২৮
টেস্ট রিলিফের বাঁধের ওপর ওরা বসেছে। প্রায় আধঘন্টা ধরে কি কথা হলো বুঝতে পারলাম না। কোন চেঁচামেচি নেই। দিবাকর অস্বীকার করছে মনে হয়। বাসু এগিয়ে আসছে কলেজ বাড়ির দিকে। বুঝতে পারলাম আমার সঙ্গে কথা বলবে। বাইরে বেরিয়ে এলাম। বাসু আমায় বললো বল তুই কি করবো।
ও সব অস্বীকার করছে।
হ্যাঁ।
এক কাজ কর। ওর মোবাইলটা রেখে দে। আর আজ ওকে বাড়ি যেতে দিবি না। ওকে এখানে কোথাও নজর বন্দি করে রাখ। কাল ৯ টায় আমার ঘরে নিয়ে আয়। তারপর দেখি কি করা যায়।
আচ্ছা।
আমার কথা মতো কাজ হলো। এক চোট চেঁচা মেচি হলো। তারপর কয়েকজন দিবাকরকে নিয়ে চলে গেলো। আমি তাদের চিনতে পারলাম না। চেহারা দেখে খুব ভাল লোক মনে হচ্ছে না।
অনাদি এলো।
তুই সত্যি মহান।
কেনো।
এই মোবাইলটা নিয়ে কি করবো।
আছে অনেক কাজ আছে। সঞ্জয় কোথায়।
বাসুর ফোন বেজে উঠলো। বাসু আমার দিকে তাকিয়ে বললো নীপা।
কথা বল।
কি হয়েছে নীপা।
চিকনাদাকে ফোন করলাম, ধরে ছেড়ে দিল। ওখানে কিসের চেঁচামিচি হচ্ছে বাসুদা।
চিকনা মোবাইল বার করে দেখে কল হয়ে পরে আছে। এক হাত জিভ বার করে ফোনটা কাটলো।
কই কিছু হয় নি তো।
হয়েছে। তুমি মিথ্যে বলছো।
সত্যি নীপা তুমি বিশ্বাস করো।
অনিদা কোথায়। ওর মোবাইল স্যুইচ অফ কেনো।
তাতো বলতে পারবো না, ওতো তোমাদের কাছে গেলো।
না। অনিদার কিছু হয়েছে। চিকনাদা কাকে মারছিলো।
চিকনা কাউকে মারে নিতো।
না। তুমি সত্যি কথা বলো। আমি প্রচন্ড চেঁচামিচির আওয়াজ শুনতে পাচ্ছিলাম। আমি এখানে তোমাদের কাউকে দেখতে পাচ্ছি না। তোমরা কোথায়।
তুমি বিশ্বাস করো।
দেখো মিত্রাদি মন খারাপ করছে। ও সব শুনেছে। আমার খুব খারাপ লাগছে।
তুমি পাঁচ মিনিট সময় দাও আমরা যাচ্ছি।
আচ্ছা। ঠিক পাঁচ মিনিট।
চিকনার দিকে ফিরে বললো, গা.... মোবাইলটা বন্ধ করতে পারিস না।
সত্যি বলছি তখন উদম কেলাচ্ছিলাম দিবাকে। অনেক দিন হাতের সুখ করি নি, খান.... ছেলের ওপর অনেক রাগ জমে ছিল। বিশ্বাস কর খেয়াল ছিল না, শুয়োরের বাচ্চার কি গরম, আমায় থানা দেখাচ্ছে।
আমি চিকনার কথায় কান দিলাম না সঞ্জুকে বললাম, তুই আমার একটা উপকার কর। ওর মোবাইল যা আছে আমার মোবাইলে কপি কর।
দাঁড়া কপি কর বললেই হবে, মালটা আগে দেখি।
অনাদি আমার দিকে তাকলো, বুঝলো দিবাকরের সেট নিয়ে আমি কি করবো। সেটটা ওর হাতে দিল।
আরে শালা এই সেট পেল কোথা থেকে! এতো ই সিরিজের মাল। ওর এলজির মাল ছিল। আমার দিকে ঘুরে তাকিয়ে বললো। তুই জানলি কি করে ওর সেট থেকে কপি করা যাবে।
কাল সব বলবো।
তুই কপি করে নিয়ে আয়। অনাদি বাসু আমি এগিয়ে যাচ্ছি তোরা পেছনে আয়।
আচ্ছা।
বাসুর দিকে তাকিয়ে বললাম, নীপাকে একবার ফোন কর, ওরা কোথায় আছে।
বাসু ফোন করলো। বললো স্টেজের সামনে আছে।
আমরা তিনজনে এলাম। মিত্রা নীপা ছাড়াও আরো দুচারজন মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমায় দেখে মিত্রা মুখটা ঘুরিয়ে নিলো। নীপা গম্ভীর। কথা বলছে না।
আমি লজ্জাসরমের মাথা খেয়ে কাছে গিয়ে মিত্রার কাঁধে হাত রাখলাম। রাগ করিস না তুইতো......।
একবারে কথা বলবিনা। মাথাটা নীচু করে নিল। তুই তোর মতো এনজয় করলি। আমি আমার মতো এনজয় করলাম। কত স্বপ্ন ছিল.....। গালাটা ধরে গেলো, মাথাটা নীচু করলো। দুজনে একসঙ্গে এনজয় করতে পারলাম না। ওর চোখের পাতা ভারি হয়ে এলো।
আমি ওর থুতনিটা ধরে তুললাম, এইতো আমি চলে এসেছি, চল। মিত্রা মাথা তুললো।
ওর ভাসা ভাসা চোখের ভাষা বদলে গেলো। তোর কি হয়েছে! মুখটা এরকম লাগছে কেনো!
কোথায় ?
না তোর কিছু একটা হয়েছে।
তুই বিশ্বাস কর।
না তোর মুখ বলছে কিছু একটা হয়েছে।
নীপা আমার দিকে তাকালো। তারপর চিকনার দিকে। চিকনাদা।
চিকনা ত ত করছে, বিশ্বাস কর কিছু হয় নি।
অনাদিদা।
অনাদি মুখ ঘুরিয়ে নিল।
ওখানে ভাকু নিয়ে একটা......। চিকনা বললো।
ভাকু মানে! মিত্রা নীপার দিকে তাকালো।
নীপা মিত্রার কানে কানে কি বললো, মিত্রা মুচকি হাসলো।
এখানে এসেও তোর গন্ডগোল করার ইচ্ছে জাগলো।
না মানে.....আমরা তিনজনে মুখ চাওয়া চাওয়ি করছি। চিকনার মালটা খেয়ে গেছে। যাক এই যাত্রায় রক্ষাপেয়ে গেলাম।
সবাই মিলে ঘন্টা খানেক মেলায় মজা করে ঘুরলাম। ছোলার পাটালি পাঁপড় ছোলাসেদ্ধ জিলিপি কখনো নীপা ব্যাগথেকে টাকা বার করে দাম মিটিয়েছে। কখনো মিত্রা দিয়েছে। আমার পারদপক্ষে কোনো খরচ হোলো না।
চিকনা নীপার পেছনে সব সময় টিক টিক করে গেলো। মাঝে মাঝে সঞ্জয় আর চিকনার দ্বৈরথ হলো। মাঝে তো চিকনা খিস্তিই দিয়ে দিল সঞ্জয়কে। মিত্রা ফিক করে হেসে ফেললো। তারপর মিত্রার অনুরোধে, চিকনা আর সঞ্জয় নীপা আর মিত্রাকে ভাকু কি জিনিষ দেখাতে নিয়ে গেলো। ডাবুর বোর্ড দেখিয়ে নিয়ে এলো।
বাড়ি ফিরলাম রাত প্রায় বারোটার সময়। অনাদিকে বললাম, কাল সকাল সাড়েনটায়, আসামিকে হাজির করিস। হ্যাঁরে ওরা আবার ছেলেটাকে মারধোর করবে নাতো ?
আরে না না, ওর বাড়িতেই নিয়ে গেছে। কাল নিয়ে আসবে। তোকে ওসব নিয়ে ভাবতে হবে না। মাঝখান দিয়ে কালকের পার্টিটা নষ্ট হয়ে গেলো।
কিচ্ছু নষ্ট হয় নি। কালকেই হবে। এবার পাওয়ার গেম খলবো। কালকে দেখতে পাবি।
সঞ্জুর দিকে তাকিয়ে বললাম, সব কপি করেছিস ঠিক ঠিক করে।
হ্যাঁ।
গুরু একটা ভুল কপি হয়ে গেছে।
কি বল।
শেলির সঙ্গে দিবাকরের একটা সেক্স সিন লোড হয়ে গেছে। কিছুতেই ডিলিট করতে পারলাম না।
অনাদি হেসে বললো, শালা এতোক্ষণ বলিসনি কেনো।
বলার সময় দিলি কোথায় ?
অনাদি মোবাইলটা তোর কাছে রেখে দে। অবশ্যই খোলা রাখবি। সব ফোন রিসিভ করবি। কোনো কথা বলবি না। এই ফোনের রেকর্ডিং থেকে আরো মশলা পাবো। আর কাল অতি অবশ্যই মোবাইলটা নিয়ে আসবি। অনাদি আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো। ওরা চলে গেলো।
নীপা আজ আমাদের ঘর ছেড়ে দিয়েছে। নীপা বলেছে, ওবাড়িতে শোবে। ঘড়টা টিপ টপ করে গোছানো। একটা নতুন চাদর পাতা হয়েছে। নীপা ওবাড়ি থেকে মিত্রাকে এবাড়িতে পৌঁছে দিয়ে গেলো।
অনিদা নিচটা বন্ধ করে দিয়ে যাও।
আমি নিচে গিয়ে খিল দিলাম।
নীপা চলে গেলো।
আমি ওপরে এলাম। মিত্রা চুল আঁচড়াচ্ছে। আমি খাটের ওপরে বসে লক্ষ্য করছি। সেই থেক মিত্রা গরম খেয়ে রয়েছে। মুখে হাসিখুশি থাকার একটা অভিনয় করে যাচ্ছে।
কিরে এবার নাইট গাউন পোরবো ? না কাপর পরেই থাকবো।
আমি কোন কথা বললাম না।
চুপ করে আছিস কেনো ?
কি বলবো বল।
এখানে তুই যা বলবি তাই হবে।
আমি উঠে গেলাম। জানি মান ভাঙাতে আমাকেই হবে। কাছে গিয়ে পেছন থেকে ওর কোমর জড়িয়ে ধরলাম। মিত্রার হাত থমকে গেলো। আমার মুখের দিকে কট কট করে ঘার ঘুরিয়ে তাকালো। আমার গায়ে হাত দিবি না।
ওকে আরো শক্ত করে কাছে টেনে নিলাম। কানের কাছে ঠোঁট রাখলাম।
এতো রাগ করলে চলে। কতো লোক আমাদের দিকে জুল জুল করে চেয়ে আছে দেখেছিস।
বুঝতে আর কার বাকি আছে শুনি।
কেনো। কারা কারা বুঝতে পেরেছে।
সবাই। এমনকি আজ তোর ওই বন্ধুটা কি যেন নাম, দিবাকর না কি সেও কথা প্রসঙ্গে তোর সঙ্গে আমার একটা এ্যাফেয়ার আছে সেটা বলে দিলো।
আমার চোয়াল শক্ত হলো। চোখের ভাসা বদলে গেলো। মিত্রা বুঝতে পেরেছে। হাত দুটো আস্তে আস্তে আলগা হয়ে ওর শরীর থেকে খসে পরলো।
কিরে বুবুন!
না কিছু না।
মিত্রা ঘুরে দাঁড়ালো।
কি হয়েছে বল। তুই ওর নামটা শুনে ওই রকম করলি কেনো।
বললামতো কিছু নয়।
মিত্রা আমার গলা জড়িয়ে ধরলো। তোর কিছু একটা হয়েছে। সেই কোলড্রিংকস খাওয়ার পর থেকেই তোর কোনো পাত্তা নেই। তোর মধ্যে যে একটা দিলখোলা হাসিখপশি মানুষ সব সময় লুকিয়ে থাকে তাকে আমি দেখতে পাচ্ছি না। আমাকে নিয়ে কোন ব্যাপার।
না।
তাহলে।
পরে বলছি।
বিছানায় ফিরে গেলাম। একটা সিগারেট খেতে ইচ্ছে করছিল। মিটসেফের কাছে এলাম। সিগারেটের প্যাকেটে হাত দিতেই, মিত্রা হাতটা চেপে ধরলো। চোখের ভাষায় বুঝিয়ে দিলো এখন খাবি না। প্যাকেটটা রেখে চলে এলাম। বিছানায় এসে জানলার পাল্লাটা পুরো হাট করে খুলে দিলাম। আজকে চাঁদের আলোর ঝাঁঝ অনেক বেশি। নিওন আলোকেও হার মানায়। গাছের মগ ডালের পাতা গুলোও পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি। চারিদিকে অবিশ্রান্ত ঝিঁ ঝিঁ পোকার তারস্বর ডাক। এক স্বপ্নিল পরিবেশ তৈরি করেছে।
বুবুন।
ফিরে তাকালাম।
মিত্রা ব্রা আর শায়া পরে আমার দিকে পেছন ফিরে দাঁড়িয়ে আছে।
একটু কাছে আয়।
বিছানা ছেড়ে উঠে ওর কাছে গেলাম।
হুকটা খুলে দে তো।
আমি নীচু হয়ে ওর ব্রার হুকটা খুলে দিলাম। বুক থেকে ব্রাটা খসে পরলো। ও ঘুরে দাঁড়িয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। ওর নরম বুক আমার বুকে। বকের মতো গলা উঁচু করে আমার ঠোঁটের কাছে ঠোঁট নিয়ে এলো। আমি ওর ঠোঁটে ঠোঁট রাখলাম। খোলা চুলে একটা ক্লিপ লাগিয়েছে। হাল্কা একটা পারফিউমের গন্ধ ওর শরীর থেকে ছড়িয়ে পরছে। চোখ আবেশে বন্ধ। আমি ওর মুখের দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছি। আজ ঠিক মন চাইছে না। তবু মিত্রাকে ফিরিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে না। ও বলাকার মতো নীল আকাশে ডানা মেলতে চায়। দেখতে গেলে জীবনে ও কিছু পায় নি। আবার সব পেয়েছে। ঠোঁট থেকে ঠোঁট সরিয়ে আমার দিকে তাকালো। ওর শরীরটা ইষদ উষ্ণ। চোখ দুটো সামান্য ঘোলাটে। আমার বুকে ও ঠোঁট ছোঁয়ালো। ইশারায় বললো। চল বিছানায় যাই।
আমি ওর কথা মতো বিছানায় এলাম। ও আমাকে বিছানায় ঠেলে ফেলে দিয়ে বুকের ওপর ঝাঁপিয়ে পরলো।
ফোনটা বেজে উঠলো।
আমি বিছানা ছেড়ে উঠে গেলাম মিটসেফের দিকে। ফোনটা তুলে নিলাম। সন্দীপ।
বল।
সব এই মুহূর্তে ঠিক ঠাক আছে। রাত দশটা পর্যন্ত সনাতনবাবুর ঘরে কেচাল হয়েছে। তারপর ওরা হালে পানি না পেয়ে দান ছেড়ে দিয়েছে। শুনলাম, ম্যাডাম নাকি সনাতনবাবুকে যে পাওয়ার দিয়েছেন সেটা সনাতনবাবু শো করাতেই ওরা চুপ চাপ হয়ে গেছে।
সব ঠিক ঠাক ছেড়েছিস তো।
হ্যাঁ। আজকে মনে হচ্ছে টাইমলি বেরোবে।
কাল এগারোটার পর একবার আসবি। লাস্ট আপডেট নেবো।
ঠিক আছে। গুড নাইট।
গুড নাইট।
ফোনটা রাখলাম। মিত্রা আমার দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে। ও বুঝতে পেরেছে কোনখান থেকে ফোন এসেছে। আফটার অল বিজনেসটা বোঝে। ডান হাতটা মাথায় দিয়ে বিছানায় হেলে পরেছে, উদ্দাম বুকটারদিকে চোখ পরতেই চোখ নামিয়ে নিলাম। আমি কাছে গিয়ে ওর পাশে বসলাম। ও একটু শোরেগেলো, আমি ওর পাসে শুলাম, ও আমার বুকে উঠে এলো।
ফোনটা অফিস থেকে এসেছিলো ?
মিথ্যে কথা বলতে পারতাম। বললাম না। ঘাড় দুলিয়ে বললাম হ্যাঁ।
কে।
আমার একজন ইনফর্মার।
সামথিংস রং মনে হচ্ছে। তুই খুব অফ মুডে আছিস।
ওকে কাছে টেনে নিলাম। কপালে একটা চুমু খেয়ে বললাম, সব বলবো তোকে। এখন একটু তোকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে থাকতে ইচ্ছে করছে।
না। তুই কষ্ট পাবি আরি আমি আনন্দ করবো তা হয় না। সেই আনন্দটা পরিপূর্ণ নয়।
ঠিক আছে সব বলার পরে আমাকে ফিরিয়ে দিবি না।
ও আমাকে চুমু খেয়ে বললো, তোকে কোনো দিন ফিরিয়ে দিয়েছি। সব কষ্টের মধ্যেও তুই যখনি ডেকেছিস আমি চলে এসেছি।
উঠে গিয়ে মোবাইলটা নিয়ে এলাম।
ওকে পঙ্খানু-পুঙ্খরূপে সব বললাম। মোবাইল থেকে রেকর্ডিং গুলো সব শোনালাম। এমনকি দিবাকরের মোবাইল থেকে যে রেকর্ডিং কপি করেছিলাম, তাও শোনালাম।
মিত্রার চোখর রং বদলে যাচ্ছে। ওর শরীরের ভাষা বদলে যাচ্ছে। সব শোনার পর মিত্রা রুদ্রমূর্তি ধরলো। চেঁচামেচি শুরু করে দিলো। এখুনি আমি কলকাতায় যাবো। রবীনকে ফোন কর। এতোবড়ো সাহস স্কাউন্ড্রেল গুলোর। ওরা সাপের পাঁচ পা দেখেছে। এক একটাকে লাথি মেরে দূর করে দেবো। ওরা ভাবে কি মিত্রা বাঁজা মেয়ে।
এই নিশুতি রাতে ওর গলা গাঁ গাঁ করে উঠলো। কাকারা জেগে উঠলে একটা কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে, আমি ওর মুখ চেপে ধরলাম। ওকে থামিয়ে রাখা যাচ্ছে না। তুই ছাড় বুবুন, সব কটাকে দূর করবো।
বাধ্য হয়ে বিছানায় জোড় করে শুইয়ে ওর ঠোঁটে ঠোঁট চেপে ধরলাম। রাগে ও ফুলে ফুলে উঠছে। তারপর ঝড় ঝড় করে কেঁদে ফেললো। আমার বুকে মুখ লুকিয়ে ফুলে ফুলে কেঁদে উঠছে। ওর ফোঁপানি কিছুতেই থামাতে পারছি না। আমার জন্য তোকে কতো অপমান সইতে হলো। তোর এই ছোট্ট বুকে কতো ব্যাথা তুই গোপন করে আজ সন্ধ্যায় আমাকে আনন্দে ভাসিয়ে দিলি। নিজে এক কোনে পরে থাকলি কাউকে কিচ্ছু বুঝতে দিলি না। কেনো তুই এরকম করলি বল। আমি কি তোর কেউ নয়। আমাকে তুই কেনো জানালি না।
মিত্রা কেঁদে চলেছে চোখ বুঁজিয়ে। আমি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি। ওর উদ্দাম শরীরটা আজ কোন নেশা জাগাচ্ছে না। পূব আকাশে ভোরের আলোর ক্ষীণ পরশ লেগেছে।
মিত্রা।
উঁ।
চল দীঘাআড়ি থেকে ঘুরে আসি।
ও আমার মুখের দিকে তাকালো। চোখ দুটো জবা ফুলের মতো লাল, চোখের কোল দুটো কেঁদে কেঁদে ফুলিয়ে ফেলেছে।
ওঠ। ঝপ করে কাপর পরে নে। ঘুরে আসি দেখবি মনটা ভালো লাগবে। খোলা আকাশের নীচে বসে অনেক কিছু সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
মিত্রা উঠে পরলো। কাপর পরে নিলো। দুজনে বাড়ির দরজা ভেজিয়ে বেরিয়ে এলাম।
তোর মোবাইলটা নিয়েছিস।
হ্যাঁ।
চল।
আমরা দুজনে বেরিয়ে এলাম। খামাকে এসে একবার পেছন ফিরে তাকালাম। না কেউ আমাদের দেখছে না। সবাই ঘুমোচ্ছে।
মিত্রা আমাকে জড়িয়ে ধরে হাঁটছে। খামার পেরিয়ে বড়মতলার কাছে এসে দাঁড়ালাম। এখনো আকাশে জ্যোতস্না আছে। কিন্তু সূর্যের আলোও ফুটে উঠছে। আমার কাছে সব চেনা দৃশ্য। মিত্রার কাছে নয়। ও যেন সব গোগ্রাসে গিলে খাচ্ছে। অনাদির বাড়ি ছাড়িয়ে যখন ফাঁকা মাঠটায় এসে পরলাম তখন পূব দিক লাল হয়েছে।
ইস ক্যামেরাটা আনলে ভাল হোতো।
মোবাইলে তোল।
দাঁড়া।
ও পূব আকাশের দিকে মোবাইলের ক্যামেরাটা ঘুরিয়ে ঠিক করলো। সবুজ ধান খেতে শিশিরের পরশ। কেউ কেউ এরি মধ্যে মাঠে নেমে পরেছে। ও প্রায় পাঁচ সাত মিনিট ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ছবি তুললো।
বুবুন এদিকে আয়।
আমি কাছে গেলাম। তুই এটা ধর। আমি ধরলাম। ও ছুটে ধান ক্ষেতে নেমে পরলো। আমি বললাম বেশি দূর যাস নি। সবে ধানগাছ গুলোর বুকে দুধ এসেছে নষ্ট হয়ে যাবে। ও আমার কথা মতো বেশি দূর গেলো না। মনের খেয়ালে নানা পোজ দিলো। আমি ধরে আছি। কাছে এসে আমার কাছ থেকে মোবাইলটা নিয়ে আমার গালে গাল ঘসে ক্যামেরা তাক করলো। একবার চকাত করে চুমুও খেলো। মোবাইল অফ করলো।
আবার হাঁটা। ধান ক্ষেতের মাঝখান দিয়ে শরু আইল পথে আমরা এসে পৌঁছলাম। মিত্রা দুচারবার হোঁচোট খেলো। আমাকে জাপ্টে ধরলো। কখনো খুনসুটি করলো। আমি আমার সেই চেনা জায়গায় এলাম।
ওআও। মিত্রার মুখ দিয়ে এক অদ্ভূত শব্দ বেরিয়ে এলো।
কিহলো।
এতো সুন্দর জায়গা আমি আগে কখনো দেখি নি। বিশ্বাস কর বুবুন। একবার ছুটে দীঘির পারে চলে গেলো তারপর ছুটে এসে আমার বুকে ঝাঁপিয়ে আদর করে নাচতে আরম্ভ করলো। যেন ময়ূরী আকাশে কালো মেঘ দেখে পেখম তুলে নাচতে শুরু করেছে।
তুই সেদিন এখানে বসে ছিলি!
হ্যাঁ।
তোর টেস্ট আছে।
বলছিস।
তুই পাখির ডাক শুনতে পাচ্ছিস।
দাঁড়া রেকর্ড করি।
আবার মোবাইল চালু। নীপা আস্তে আস্তে দূরে চলে যাচ্ছে। আমি নিমগাছের একটা নরম ডাল ভেঙে দুটো দাঁতন বানালাম। হঠাত বুবুন বুবুন চিৎকারে ফিরে তাকালাম। মিত্রা রুদ্ধশ্বাসে দৌড়চ্ছে। আমি দৌড়ে ওর কাছে গেলাম। ও আমার বুকে ঝাঁপিয়ে পরে জড়িয়ে ধরলো। কামার শালের হাপরের মতো ওর বুক ওঠা নামা করছে। আমার বুকে মুখ লুকিয়েছে। হাত দিয়ে খালি ওই দিকটা দেখাল। দেখলাম কয়েকটা শেয়াল লেজ নাড়তে নাড়তে চলে গেলো। আমি পাঁজা কোলা করে তুলে এনে ওকে ঘাসের বিছানায় শুইয়ে দিলাম। তখনো ওর বুক ওঠানামা করছে। আমি ওর বুকে কান পাতলাম। লাবডুব শব্দের তীব্রতা একটু কমে এসেছে।
আমি দীঘির বুকে ভেসে থাকা পদ্মপাতা ছিঁড়ে তাতে করে জল নিয়ে এলাম। ওর চোখে মুখে ছিটিয়ে দিলাম। জলের স্পর্শে ও চোখ মেলা তাকালো। মুচকি হেসে আমাকে জড়িয়ে ধরে একটা চুমু খেলো। আস্তে আস্তে কানে কানে বললো।
তোকে কেমন ভয় পাইয়ে দিয়েছিলাম বলতো। খুব আদর খেতে ইচ্ছে করছিলো।
হাসলাম। ওগুলো শেয়াল। ও আবার চোখ বন্ধ করলো।
কিরে দাঁত মাজবি না। আমি দাঁতন বানিয়ে রেখেছি।
ও চোখ খুললো, উঠতে ইচ্ছে করছে না। তুই আমাকে জড়িয়ে ধরে থাক।
শিশিরের জলে কাপর ভিঁজে গেলো যে।
যাক। এরকম ভেঁজা কজনের ভাগ্যে ঘটে।
দাঁত মেজে চল একজনের বাড়িতে গিয়ে একটা সারপ্রাইজ দিই। যাবি।
কার বাড়িতে।
সে বলবো না। গেলে দেখতে পাবি।
সেই শয়তানটার বাড়িতে।
উঃ ওই নামটা উচ্চারণ করে এই মুহূর্তটা নষ্ট করিস না।
ঠিক আছে। সরি।
দাঁতন নিয়ে দুজনে দাঁত মাজলাম। দীঘির টল টলে কাঁচের মতো স্বচ্ছ জলে মুখ ধুলাম, মিত্রার আঁচলে মুখ মুছলাম।
কটা বাজে বলতো ? মিত্রা জিজ্ঞাসা করলো।
আমি মোবাইলের ঘরিটা দেখে বললাম, ছটা দশ।
মাত্র!
আমরাতো এখানে অনেকক্ষণ এসেছি।
হুঁ।
কখন বেরিয়েছি বাড়ি থেকে।
চারটে হবে।
আজ দুজনে সারারাত ঘুমোলাম না। কি করবি কিছু ভাবলি।
সব ভেবে রেখেছি। ঘরে চল সব জানতে পারবি।
ঠিক আছে চল।
•
Posts: 50
Threads: 1
Likes Received: 6 in 6 posts
Likes Given: 0
Joined: Feb 2019
Reputation:
2
পার্টঃঃ২৯
বাঁধ থেকে নেমে এসে ধানখেতের মাঝখান দিয়ে শরু আইলপথ ধরলাম। ধানের শিষের বুকে সকালে যে বিন্দু বিন্দু শিশিরের ছোঁয়া দেখেছিলাম, নরম রোদের স্পর্শে এখন উধাও। দুজনে হেঁটে চলেছি। সামনের দিকে। টেস্টে রিলিফের ছোট্ট বাঁধটা পেরিয়ে, মেঠো রাস্তা ধরে অনাদির বাড়ির কাছে এলাম। সেই এক দৃশ্য আনাদির বাচ্চা দুটো খামারে ধুলো মেখে খেলা করছে। আজকেও ও দুটোকে দেখতে ভালো লাগছে। মিত্রা আমার হাত দুটো চেপে ধরে বললো, দেখ বাচ্চা দুটো কি কিউট।
আমি ওর দিকে তাকিয়ে হাসলাম।
আজ অনাদিকে ডাকতে হলো না। কাঞ্চন বেরিয়ে এসে এক মাথা ঘোমটা দিয়ে আমাকে আর মিত্রাকে একটা ঢিপ করে প্রণাম করলো। ভেতরে চলো ওকে ডেকে দিচ্ছি। এইতো ভোরে ঘুমলো কোথায় কি ঝামেলা হয়েছে।
মিত্রা অপ্রস্তুত হয়ে পরলো। ওর চোখের ভাষা বুঝতে পারলাম।
কাঞ্চন, অনাদির স্ত্রী।
আমার হাত ছেড়ে ও কাঞ্চনকে জড়িয়ে ধরলো।
ওই দুটো অনাদির বাচ্চা।
এইবার ওকে ধরে রাখা মুস্কিল হলো ও ছুটে গিয়ে বাচ্চা দুটোকে কোলে তুলে চটকাতে লাগলো। বাচ্চা দুটো প্রথমে একটু ভ্যাবাচাকা খেয়ে গেছে। তারপর ভ্যাঁ করে কেঁদে উঠলো।
মিত্রা ওদের ছেড়ে দিলো। ভেতর থেকে কাকার গলা পেলাম, কেগো বৌমা।
অনিদা।
কাকা চেঁচামিচি শুরু করে দিলেন। আমি খামর থেকেই চেঁচিয়ে উঠলাম, তোমায় ব্যস্ত হতে হবে না।
ভেতরে আয়।
যাচ্ছি।
কাকা পায়ে পায়ে খামারে বেরিয়ে এলো। এই মেয়েটা কে ? চিনতে পারলাম না।
এ হচ্ছে সেই।
কাকা এগিয়ে এসে মিত্রার গালে মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন।
বেশ মিষ্টিরে অনি।
তোমার পছন্দ ?
খুব ভালো।
মিত্রা এবার ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছে। আমাকে ইশারায় জিজ্ঞাসা করল প্রণাম করবো, আমি বললাম না।
কাঞ্চনের দিকে তাকিয়ে বললাম একটু চা বসাও, আর কত্তাকে ডাকো।
কাঞ্চন ভেতরে চলে গেলো। কিছুক্ষণের মধ্যে অনাদি বেরিয়ে এলো চোখ মুছতে মুছতে।
কিরে। নিশ্চই ম্যাডামকে তোর পাগলামোর সঙ্গী করেছিস।
মিত্রা হাসছে।
মাথা নীচু করে ওদের বাড়ির বারান্দায় এলাম।
মিত্রা দড়ির দোলনা দেখে অবাক। আমাকে বললো, একবার বসিয়েদে একটু দুলি।
আচ্ছা চল। ওকে বসিয়ে দিলাম। ও বাচ্চা মেয়ের মতো দুলছে। না দেখা জিনিষগুলো প্রাণ ভরে লুটে নিতে চাইছে।
বাইকের আওয়াজ পেলাম। বাইরে তাকালাম। চিকনা আর বাসু। আমি পায়ে পায়ে খামারে বেরিয়ে এলাম।
কিরে এতো সকালে!
চিকনা খিস্তি দিতে যাচ্ছিল, কিন্তু মিত্রার দিকে চোখ পরতে থেমে গেলো। সারারাত নিজেও ঘুমোবি না, কাউকে ঘুমোতেও দিবি না।
ওর দিকে তাকালাম। বোঝার চেষ্টা করলাম।
সকাল বেলা শ্মশানের হাওয়াও খাওয়ালি।
মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে আছি। বাসু হাসছে। অনাদি বেরিয়ে এলো। ওদের দুজনকে দেখে একটু অবাক হলো।
কিরে ?
কি আবার। সারা মহল্লা খুঁজে শেষে এখানে এসে পেলাম। তাও মেডামের শাড়িটা দীঘাআড়ি থেকে চোখে পরলো বলে। শালা সকালের শ্মশানটাও দেখা হয়ে গেলো ওর জন্য।
শ্মশানে গেছিলি কেনো ? আবার কে মারা গেলো ?
কেউ মরে নি নিজেই মরে গেছিলাম, সঙ্গে বাসুকেও প্রায় মেরে দিয়েছিলাম।
কেনো।
অনিকে জিজ্ঞাসা কর।
অনাদি আমার মুখের দিকে তাকলো। আমি মাথা নীচু করে আছি।
বাসু অনাদিকে বললো, কাল সারারাত ওরা দুজনে ঘুমোয় নি। মিত্রা ভীষণ চেঁচামিচি করেছে। নীপাও ঘুমোওনি। ওদের সব কথা শুনেছে। ও ভীষণ ভয় পেয়ে গেছে। ওরা বেরিয়ে আসতে, নীপা চিকনাকে ফোন করেছিলো। ভীষণ কান্নাকাটি করেছে। বাধ্য হয়ে চিকনা ওই রাতে আমার কাছে আসে। আমি প্রথমে গাড়িটা লক্ষ্য করি। না গাড়িটা ঠিক আছে। তখনি বুঝলাম ওরা চলে যায় নি। এখানেই কোথাও আছে। প্রথমে দুজনে মিলে হারুর কালায় যাই, ওখান থেকে শ্মশানে, তারপর দীঘাআড়ি। ওখানে এসে মিত্রার শাড়িটা লক্ষ্য করে চিকনা। আমায় দেখায়। আমি বলি হ্যাঁ। ওখান থেকে তোর বাড়িতে এলাম।
মিত্রা দোলায় দুলছে, বাচ্চাদুটোর সঙ্গে মনে হয় ভাব জমিয়ে নিয়েছে। দুটোই দেখছি ওর কোলে।
চল ভেতরে চল।
দাঁড়া নীপাকে একবার ফোন করি। যে মেয়েকে কোনদিন কাঁদতে দেখি নি, তাকে কাল কাঁদতে শুনে মাথা খারাপ হয়ে গেছিলো। চিকনা বললো।
মিত্রাকে কিছু বলিস না। ও খুব আপসেট আছে।
তোকে আর জ্ঞান দিতে হবে না। ওগুলো বুঝতে ঘটে বুদ্ধি লাগে না।
হেসেফেললাম।
হাসিস না।
চিকনা নীপাকে ফোন করে সব জনালো।
আমরা অনাদির বাড়ির দাওয়ায় বসলাম।
চা এলো। সঙ্গে নারকেলকোড়া ঘি দিয়ে মুড়ি মাখা। মিত্রা দোলনা ছেড়ে আমাদের পাশে এসে বসলো। চিকনা একবার তাকালো মিত্রার দিকে।
কাল খুব ভালো ঘুম হয়েছে মনে হচ্ছে, চোখের কোল দুটো ফোলা ফোলা।
মিত্রা মাথা নীচু করলো। আপনাদের খুব কষ্ট দিলাম।
আপনি নয়, তোমাদের খুব কষ্ট দিলাম। চিকনা বললো।
মিত্রা হেসে ফেললো, ফ্যাকাসে হাসি।
হাসলেন বটে কিন্তু কালকে পুকুর ঘাটে যখন পরে যাচ্ছিলেন, তারপর অনির দিকে তাকিয়ে যে হাসিটা ঝেড়েছিলেন সেরকম নয়। চিকনা এমন ভাবে কথা বললো মিত্রা খিল খিল করে হেসে ফেললো।
এইবার মিললো।
আমরা মরে যাই নি ম্যাডাম। অনি যেমন আপনার। আমাদেরও।
জানি। আমি কালকের সব ঘটনা শুনলাম ওর মুখ থেকে।
আমাদের খপ্পরে পরা খুব সহজ, বেরোনো খুব কঠিন। আপনি কিচ্ছু চিন্তা করবেন না। অনাদির দিকে ঘুরে তাকিয়ে, হ্যাঁরে মুড়ি কি বারন্ত।
অনাদি এমন ভাবে তাকালো, চিকনা হেসে ফেললো।
খিদে লেগেছে।
খা না, টিনটা বসিয়ে দেবো।
ম্যাডাম লজ্জা পাবে। গাঁয়ের ছেলে, খাওয়া তো দেখে নি, বিড়াল ডিঙোতে পারবে না।
মিত্রা হাসলো।
ওদিকের খবর।
রাতে সঞ্জয়ের জিম্মায় চলে গেছে। সব ঠিক আছে। ম্যাডাম যখন বলবে হাজির করে দেবো।
সঞ্জয়ের জিম্মায় মানে! অনাদি বললো।
কাল রাতে কিছু একটা হয়েছিল। সঞ্জু আমায় ফোন করলো। আমি বললাম চেলাকাঠ দিয়ে পিঠ গরম করে দে, তারপর তোর ওখানে নিয়ে গিয়ে রাখ।
মিত্রা চিকনার কথায় হেসে ফেললো।
হাসবেন না ম্যাডাম ওই শা...।
চিকনা একহাত জিভ বারকরে ফেললো। সরি।
কালকে মেলার মজাটাই নষ্ট হয়ে গেছে। ওকে এতো সহজে ছেড়ে দেবো না।
এখন কোথায়। অনাদি জিজ্ঞাসা করলো।
সঞ্জয়ের বাড়িতে।
ঠিক আছে।
তোরা কি চিন্তা করলি। অনাদি আমার দিকে তাকিয়ে বললো।
আমি ভেবে রেখেছি। মিত্রাকে বলিনি। বাড়িতে গিয়ে বলবো। মোবাইলটায় ফোন এসেছিলো ?
বহু। এইতো ভোর বেলা পর্যন্ত। কানের কাছে খালি টেঁ টেঁ।
নিয়ে আয়।
ওইটা দেখেছিস। চিকনা বললো।
হারামী। কথাটা বলেই অনাদি জিভ কাটলো। মিত্রা মাথা নীচু করে হাসছে।
হটকেক। চিকনা বললো।
অনাদি ভেতরে চলে গেলো। কিছুক্ষণের মধ্যে ফোনটা নিয়ে এলো। আমার হাতে ফোনটা দিলো। মিত্রা বাসুকে কি যেনো ইশারা করলো। বাসু উঠে পরলো। মিত্রাও উঠে পরলো। ওরা একটু দূরে চলে গেলো। আমি ফোনটা অন করে কল লিস্ট দেখলাম। চম্পকদা সুনীতদা অতীশবাবুর ফোন। এই তিনটে নাম দেখলাম সেভ করা আছে। বাকিগুলো বুঝতে পারলাম না। অনাদিকে বললাম, একটু কাগজ কলম নিয়ে আয়। অনাদি নিয়ে এলো আমি নাম্বার গুলো নোট করলাম টাইমগুলো নোট করলাম। আনাদিকে বললাম, ওকে সাড়েনটায় নিয়ে আয়। আমি দশটায় মিটিং কল করছি অফিসে।
কোন অফিসে ?
কলকাতায়। আমার অফিসে।
যাবি কি করে ?
যাব না এখান থেকেই টেলি-কনফারেন্সে করবো। ইচ্ছে ছিল সকলের সামনে ওর মুখোশ খুলবো। তা হবে না।
সে তোকে চিন্তা করতে হবে না। আমি সব ব্যবস্থা করে রেখেছি। ওকে এবার গ্রাম ছাড়া করবো। অনাদি বললো।
আমি ওকে না বলতে যাচ্ছিলাম, কিন্তু বললাম না।
মিত্রা ওখানে কি করছে বলতো বাসুর সঙ্গে।
তোর কি। চিকনা বললো।
কি করছে জানিস ?
কি।
নিশ্চই কোনো খেলনার দোকান খুঁজছে এই সাতসকালে। অথবা ক্যাটবেরি কিংবা চকলেট।
মনগড়া কথা বলিস না।
তুই ওদের কথা শুনে এসে আমায় বল।
যদি না হয় কি দিবি।
তোকে অনেক কিছু দেবো। ধরে রাখতে পারলে জীবনে আর কিছু করতে হবে না।
চিকনার চোখ চক চক করে উঠলো, ঠিক।
হ্যাঁ।
চিকনা উঠে গেলো, আমি অনাদিকে কাল রাতের সমস্ত ঘটনা সংক্ষেপে বললাম। অনাদির চোখ কঠিন হয়ে গেলো। তোর ধৈর্য আছে অনি। তোর কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। শালাকে এমন শাস্তি দেবোনা, এবার তুই দেখবি।
না অনাদি। ছোট থেকে আমরা একসঙ্গে বড় হয়ে উঠেছি। আমরা একে অপরের বন্ধু। ওকে শোধরাবার ব্যবস্থা করতে হবে। চেষ্টা করে দেখি না।
তুই মহান হতে চাইছিস।
না। জীবনে কিছু পায় নি। আমার থেকে তুই এটা ভাল জানিস। তোর বাড়িতে এসে পান্তা খেয়ে অনেক দিন দুজনে মিলে এক সঙ্গে কলেজে গেছি। কেনো ? কাকার পয়সা ছিল না! না আমার বাবার কিছু কম ছিলো! আজ আমার কাছে সবাই ভালো। আরে দিবাকরতো পরের ছেলে। কাকাকে আমিতো কোনদিন পর ভাবি নি। থাক ওসব কথা, চলে আয় ঠিক ওই সময়। আমি দিবাকরের সঙ্গে আগে একটু কথা বলে নেবো। অনাদি মাথা নীচু করে আছে।
আমায় ক্ষমা করিস। আমি না জেনে তোকে.....।
ছার ওসব কথা, একটা সিগারেট দে।
অনাদি উঠতে যাচ্ছিলো, চিকনা এলো। গুরু তুমি অন্তর্যামী।
সিগারেটের প্যাকেটটা আগে বার কর। অনাদি বললো।
দিলিতো মাঝখানে টুকে।
প্যাকেটটা আগে বার কর, অনি চাইছে।
অনি। আগে বললি না কেনো।
চিকনা সিগারেটের প্যাকেটটা বার করলো। একটা সিগারেট নিয়ে ধরালাম, বল।
তোমার কথাই ঠিক। তুমি কি করে জানলে একটু শেখাও।
মানুষকে ভালবাসতে হবে। নিঃস্বার্থ ভাবে।
বিদ্যেটা শিখতে হবে।
বাসু কি বলছে। বেলায় ব্যবস্থা করে দেবে। ম্যাডাম বলছে এখুনি। এই নিয়ে ক্যাচাল।
আমি মিত্রার দিকে তাকালাম, ওকে ডাকলাম, মিত্রা কাছে এলো। বাসু যা বলছে, ঠিক বলছে। চল অনেক কাজ। ও যখন সাড়ে নটার সময় আসবে, তখন নিয়ে আসবে।
ঠিক।
আমিতো বলছি।
বাসু হাসছে।
আমরা ফিরে এলাম। আমাদের দূর থেকে আসতে দেখে নীপা এগিয়ে এলো। খামারে এসে দাঁড়িয়েছে। চোখের কোলে কে যেন একপোঁচ কালি লেপে দিয়েছে। কয়েকঘন্টার ব্যবধানে মেয়েটার বয়স দশ বছর বেরে গেছে। মিত্রার বুকে মুখ গুঁজে ফুলে ফুলে কেঁদে উঠলো। আমি পাশে নীরবে দাঁড়িয়ে আছি। মেবাইলের ঘড়িটা দেখলাম, সকাল ৭.৩০ বাজে। নীপা কিছু একটা ঘটনা ঘটেছে বুঝতে পেরেছে। কি ঘটেছে বুঝে উঠতে পারছে না।
মিত্রা নীপার মুখটা তুলে বললো, আমার একটুতে মাথা গরম হয়ে যায়। তোর অনিদার মাথাটা বরফের মতো ঠান্ডা। তাইতো ওকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছি। তোর কোন চিন্তা নেই। দেখিস আর কয়েকঘন্টার মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে। মিত্রা নীপার চোখ মুছিয়ে দিলো। এখন আর ওবাড়িতে যাবো না। কাকারা কিছু জানে নাতো।
নীপা মাথা দুলিয়ে বললো না।
তুই একটু চা নিয়ে আয়।
আর কিছু খাবে না।
কি করেছিস।
আলু ভেজেছি। একটু মুড়ির সঙ্গে মেখে দেবো।
যা নিয়ে আয়।
ওপরে এলাম। মিত্রাকে আমার প্ল্যানের সমস্ত ব্যাপারটা বুঝিয়ে বললাম। ওর চোখ ঠিকরে বেরিয়ে আসতে চাইছে। তুই কি বলছিস।
আমি যা বলছি তাই কর। মিত্রা ফোন তুলে নিলো, ভয়েস অন করে রেকর্ডিং চালু করে দিলাম।
সনাতনবাবু হ্যালো করে উঠলেন।
অফিসের খবর কি।
ম্যাডাম আর বলবেন না। এই কদিনে আমার দফারফা করে দিচ্ছে এরা।
কারা।
চম্পকবাবু, সুনিতবাবু। আর্ট ডিপার্টমেন্টের কয়েকজন। কাকে বাদ দিয়ে কাকে বলি বলুনতো।
আপনি কি করছেন।
আমি কি করবো। কথা শুনলেতো। এরা কিছুই মানছে না। বিশেষকরে সুনিতবাবু। আমি কিছু বলতে পারছি না। উনি আপনার আত্মীয়।
ঠিক আছে। আমি টেলি কনফারেন্সে আজ এগারোটার সময় মিটিং করবো। সব ডিপার্টমেন্টের ম্যানেজারদের থাকতে বলবেন। সবাইকে সাড়ে দশটার মধ্যে অফিসে হাজির হতে বলুন। আমার ঘরে বসাবেন। আর শুনুন, সব রেকর্ডিং করবেন।
ঠিক আছে ম্যাডাম।
আমি ঠিক এগারোটার সময় ফোন করবো। আপনার মোবাইলে।
আচ্ছা ম্যাডাম।
নীপা আলুভাজা মেখে মুড়ি চা নিয়ে এলো। আমার দিকে কিছুতেই তাকাচ্ছে না। আমি খাটে পা ঝুলিয়ে হাতের ওপর হেলান দিয়ে একটু পেছনে হেলে বসে আছি। মিত্রা আমার পাশে খাটের ওপর। নীপা মুড়ির বাটিটা খাটের ওপর রেখে আমার পায়ের কাছে বসে। আমার কোলে মাথা রেখে হাউ হাউ করে কেঁদে উঠলো। প্রথমটায় ভীষণ অপ্রস্তুত হয়ে পরেছিলাম।
আমায় ক্ষমা করো অনিদা।
আমি ওর মাথায় হাত রাখলাম। কেনো।
আমি তোমাকে না জানিয়ে চিকনাদাকে ফোন করেছিলাম। তুমি বিশ্বাস করো আমার মাথাটা তখন কোনো কাজ করছিল না।
দূর এসব নিয়ে এতো কেউ ভাবে।
নাগো মিত্রাদি ওই রকম রেগে যেতে পারে, আমি ভাবতেই পারিনি।
রাগটাও মানুষের একটা ধর্ম।
কই তুমিতে কোনো দিন রেগে যাও নি।
আমিতো বোকা। বোকারা কখনো রাগতে পারে।
এমন ভাবো কথাটা বলে ফেললাম, এই সিচুয়েসনেও নীপা কাঁদতে কাঁদতে হেসে ফেললো। মিত্রা হো হো করে হেসে বিছানায় গড়িয়ে পরলো।
তুই হাসছিস না কাঁদছিস। মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললাম।
কেনো হাসছি।
আমি ভাবলাম তুইও কাঁদছিস।
নীপা উঠে গিয়ে মিত্রার ওপর ঝাঁপিয়ে পরলো।
হ্যাঁরে তোর বাথরুম পায় নি ?
পেয়েছে। তুই মুখ পাত।
উঃ মিত্রাদি তুমি না।
তোর অনিদা যেরকম, সেরকম উত্তর না দিলে বিপদ আছে।
না কালকের পর তোকে....।
বুবুন খারাপ হয়ে যাবে।
নীপা চোখ পিট পিট করছে, তার মানে।
কি, বলবো ?
প্লিজ বুবুন।
ঠিক আছে।
তাহলে ওটা করবি।
হ্যাঁ। না না না...।
ওরা দুজনেই হো হো করে হেসে উঠলো।
ওরা সবাই ঠিক সময়ে এসেছে। দিবাকরও এসেছে। আমার মুখে কোনো বিকার নেই। আমার এই ঘরে এখন লোক দাঁড়াবার জায়গা নেই। আরো দু’চারজন নতুন মুখ দেখতে পেলাম। আমি চিনতে পারলাম না। বুঝলাম অনাদির চাল। অনাদি কারুর সঙ্গেই আলাপ করালোনা।
দিবাকর এসেই কাঁদুনি গাইতে আরম্ভ করেছে।
আমি ওকে ভাল মুখে সবকথা স্বীকার করে নিতে বললাম, ও কিছুতেই স্বীকার করবে না। বার বার একি কথা অনাদি ওকে প্ল্যান করে ফাঁসিয়েছে।
আমি মিত্রার দিকে তাকালাম, মিত্রা মুচকি মুচকি হাসছে।
কিছু বুঝছিস।
হ্যাঁ।
ও কালকে তোর পাশেবসে তোর সঙ্গে রসিয়ে রসিয়ে সঙ্গে করেছে। কলকাতায় ওটা রেকর্ডিং হয়েছে। তাও বলছে ওকে ফাঁসানো হচ্ছে।
তুই বিশ্বাসকর অনি।
তুই কাল মিত্রার সঙ্গে কি কথা বলেছিস তার রেকর্ডিং শুনবি।
দিবাকর মাথা নীচু করলো।
এরপরও তুই বলবি তোকে ফাঁসানো হয়েছে। তুই কাল আরো অনেক কিছু বলেছিস। আমার জীবনের সবচেয়ে বড় আঘাতটা আমি তোর কাছথেকে পেয়েছি।
তুই একবার পারমিশন দে অনি, দেখ পাঁচমিনিটের মধ্যে কিমা করে দেবো। চিকনার চোখে মুখের চেহারা বদলে গেছে। সঞ্জু চিকনার পাশে দাঁড়িয়ে রাগে ফুঁসছে।
আমি তোর পায়ে ধরছি তুই আমাকে বাঁচা। দিবাকর আমার পা ধরে ফেললো।
দিবাকরের ফোনটা বেজে উঠলো। আমি চিকনার হাত থেকে মোবাইলটা নিলাম। দেখলাম সুনিতদার নম্বর। ভয়েস অন করে দিবাকরের হাতে দিলাম। তোর হবু বস ফোন করেছে। রেসপন্স কর। নাহলে চিকনার কথাটা মনে রাখিস। একবারে বেগড় বাই করবি না। খুব সাধারণ ভাবে। যেভাবে গত চারদিন কথা বলেছিস সেইভাবে বলবি। চিকনা রেকর্ডিংটা টিপে দে।
চিকনা রেকর্ডিংটা অন করে দিলো।
হ্যালো হ্যালো।
বলুন।
তোমার খবর কি ? কালকে সেই রাত দশটায় লাস্ট নিউজদিলে তারপরে কিহলো বলো।
কোনো খবর নেই তাই দিই নি।
গলাটা এত ভারী কেনো। কেউ জানতে পেরেছে নাকি।
আমি দিবাকরের দিকে তাকালাম, হাতের ইশারা করলাম।
না।
কালকে থেকে কতবার তোমায় ফোন করেছি, চম্পকবাবু করেছে অতীশবাবু করেছে। কি বলবো।
ফোনটা প্রবলেম করছিলো।
লেটেস্ট খবর কি বলো ?
ভালো নয়।
আমি দিবাকরের দিকে কটকট করে তাকালাম।
কেনো!
কাল রাতে এখান থেকে ওরা চলে গেছে।
তারমানে! কোথায় খোঁজ নাও।
কি করে নেবো। আমাকে বলে গেছে নাকি।
•
Posts: 50
Threads: 1
Likes Received: 6 in 6 posts
Likes Given: 0
Joined: Feb 2019
Reputation:
2
পার্টঃঃ৩০
কোথায় আবার যাবে আমার সঙ্গে কিছুক্ষণ আগে ম্যাডামের কথা হয়েছে। ওরা গাড়ি করে কোথায় যাচ্ছে মনে হয়।
কাছাকাছি দীঘা আছে ওরা হয়তো দীঘা গেছে।
দ্যাটস রাইট এটা ঠিক বলেছো। তুমি পাত্তা লাগাও। টাকার জন্য চিন্তা করোনা। যা লাগে আমি দেবো। যদি বোঝো এখুনি একটা গাড়ি ভাড়া করে চলে যাও।
ঠিক আছে।
রবিনকে পেলে।
না।
ওরা কিন্তু রবিনকে নিয়ে যায় নি। ম্যাডাম গাড়ি চালাচ্ছে।
ও।
রবিনের বাড়ি তোমাদের পাশের গ্রামে। একবার পাত্তা লাগাও। ওকে আমার খুব দরকার। অনিটা খুব ধুরন্ধর ছেলে, মিত্রাকে দিয়ে যদি কিছু সই সাবুদ করিয়ে নেয় সব কেঁচে যাবে।
মিত্রা ফিক করে হেসে ফেললো। আমি ওর মুখ টিপে ধরলাম।
শোনো তুমি কনফার্ম খবরগুলো নিয়ে আজ কোলকাতায় চলে এসো।
না। এখানে একটা কাজ পরে গেছে।
এমা, ম্যাডামের সঙ্গে আমার কথা হল আমি সব বললাম। উনিতো ভয়ে কাবু। আরে কিছু হোক ছাই না হোক সম্মানের একটা ব্যাপার আছেতো। ওই রকম একটা ফালতু ছেলের সঙ্গে ঢলানি। এই ফাঁকে আমি আমার কাজ গুছিয়ে নিলাম। বাধ্য হয়ে উনি সব মেনে নিলেন। আমি অনির জায়গায় তোমায় বসাবো। তুমিযে কি উপকার করলে। আরে হুঁ হাঁ করছো কেনো ?
দিবাকর আমার দিকে তাকালো। আমি ইশারা করলাম। কথা তাড়াতাড়ি শেষ করতে।
আপনার কথা শুনছি। ঠিক আছে কিছুক্ষণ পর আপনাকে ফোন করছি।
এনি নিউজ।
না। রাখছি।
সঞ্জয় ফোনটা ছিনিয়ে নিয়ে কেটে দিয়ে রেকর্ডিংটা সেভ করলো।
আমি বললাম লাস্ট রেকর্ডিংটা আমার মোবাইলে ট্রান্সফার কর।
মিত্রা মুখ নীচু করে বসে আছে।
এবার বল দিবাকর। তোর কিছু বলার আছে, দিবাকর হাঁউ মাউ করে কেঁদে উঠলো।
চিকনা ওকে প্রায় মেরেই দিচ্ছিলো, সঞ্জয় ধরে ফেললো।
বল। তোর যদি কিছু বলার থাকে।
দিবাকর আমার পা জড়িয়ে ধরলো, আমায় বাঁচা অনি।
যে বাসুকে আমি এইকদিনে রাগতে দেখিনি। সব সময় আমার পাশে ছায়ার মতো থেকেছে। হঠাত ও দিবাকরের গালে একটা থাপ্পর মেরে বসলো।
বাসুর এই ব্যাবহারে ঘর ভর্তিলোক অবাক হয়ে গেলো।
চিকনা চেঁচিয়ে উঠলো। তোর ওই স্যাকরার ঠুকঠাকে হবেনা। আজই ওর ব্যাবস্থা করে দিচ্ছি।
এতোক্ষণ তুই মিত্থ্যাকথা বলছিলি কেনো। তুই ম্যাডামকে কতটুকু চিনিস। বাসু বললো।
আমি ওদের দিকে তাকালাম। ঘরের সব হো হো করে হাঁসছে।
অনাদি একে একে সবার সঙ্গে আমার আলাপ করিয়ে দিলো।
ওদের লোকাল কমিটির ভদ্রলোক বললেন, আপনার কথা অনেক শুনেছি আজ চাক্ষুষ দেখলাম।
আমি হাতজোড় করে নমস্কার করলাম।
আমার দেখাদেখি মিত্রাও নমস্কার করলো।
সত্যি আপনার বুদ্ধির প্রশংসা করতে হয়। অনাদির কাছে আপনার সমস্ত ঘটনা শুনে আমি থ।
আমি হাসতে হাসতে বললাম, পাঁচ বছর পর নিজের গ্রামে এসেছি। রথেরমেলা গত দশবছর দেখিনি। ভেবেছিলাম কাল রথ টানবো। হল না।
এই মুহূর্তে আমি খুব ইমোশোন্য়াল হয়ে পরলাম। নানা চিন্তা মাথায় বাসা বাঁধছে। মিত্রার দিকে তাকালাম। ও আমার দিকে ফ্য়াল ফ্য়াল করে তাকিয়ে আছে। দিবাকার আমার মুখের দিকে তাকিয়ে চোখ মুছছে। ওকে দেখে মায়া হচ্ছে আবার রাগও হচ্ছে। না বুজে ও কি করলো। মানুষের লোভ মানুষকে কত নিচে নিয়ে য়েতে পারে দিবাকর তার একটা উজ্জ্বল প্রমাণ। মনে মনে ঠিক করলাম দিবাকরকে একটা সুযোগ দেবো। দেখিনা যদি শুধরে যায়।
স্বগোতোক্তির সুরে ভদ্রলোকের দিকে তাকিয়ে আস্তে করে বললাম, শুনেছি আপনি যেখানে দাঁড়িয়ে আছেন ওইখানে আমি ভূমিষ্ঠ হয়েছিলাম।
ভদ্রলোক অপ্রস্তুত হয়ে পরলেন, কোথায় দাঁড়াবেন ঠিক করতে পারছে না।
কটা বাজে।
এগারোটা পাঁচ।
দিবাকরের দিকে তাকালাম, তুই চুপচাপ থাকবি না মুখ-হাত-পা বেঁধে ওখানে ফেলে রাখবো।
দিবাকর কাঁদো কাঁদো মুখ করে বললো, আমি তোর পায়ের কাছে বসবো।
নীপা আমার পাশে এসে বসলো। ও আমার হাতটা চেপেধরে আছে। ও এই অনিদাকে দেখে নি। মুখ চোখ শুকিয়ে কাঠ। ও ঠিক ঠাহর করতে পারছে না, ব্যাপারটা কি ঘটছে।
মিত্রার দিকে তাকালাম, এবার তোর খেলা শুরু কর।
ঘরে পিন পরলে আওয়াজ হবে না। সবাইকে বললাম চুপ চাপ থাকবেন। কোন কথা বলবেন না। মিত্রা যা যা বলেছি খুব ঠান্ডা মাথায়, কখনই উত্তেজিত হবি না। মনে রাখবি এ্যাডমিনিস্ট্রেসনের কাছে মা-বাবা-ভাই-বোন-আত্মীয়স্বজন বলে কিছু নেই। ব্যাপারটা এইরকম, আই এম কোরাপ্ট বাট গুড এ্যাডমিনিস্ট্রেটর।
মিত্রার চোখে মুখের চেহারা বদলে গেলো। এটা সবাই লক্ষ করলো।
দিবাকর কোনো আওয়াজ করবি না, যদি বাঁচতে চাস। তোর মোবাইলটা কোথায় ?
চিকনা এগিয়ে দিলো। দিবাকরের দিকে তাকিয়ে বললাম, ইশারায় কাজ করবি।
তুই যা বলবি তাই করবো।
ঠিক আছে।
মিত্রা ডায়াল করতেই ও প্রান্ত থেকে সনাতনবাবুর গলা ভেসে এলো।
হ্যাঁ ম্যাডাম।
সবাই এসেছেন।
হ্যাঁ। ম্যাডাম।
নাম বলুন কে কে এসেছেন।
সনাতনবাবু ওপ্রান্ত থেকে সবার নাম বললেন।
সবার নাম নোটকরে সই করিয়ে নেবেন।
ঠিকআছে ম্যাডাম।
সুনিতবাবু।
হ্যাঁ ম্যাডাম।
কাগজের খবর কি ?
সব ঠিক আছে।
কিরকম।
আপনি যেভাবে ইনস্ট্রাকসন দিয়ে গেছিলেন সেই ভাবে চলছে।
তাই নাকি ? আমার কাছে যে অন্য খবর আছে।
না ম্যাডাম একটু ঝামেলা হয়েছিলো অমিতাভবাবু আর মল্লিকবাবুর সঙ্গে।
কি নিয়ে ?
আপনি আস্তে বারন করেছিলেন, আমি সেটা বলতেই বললো কাগজ দেখি।
আপনি কি বললেন ?
কাগজ দেখাতে পারি নি, আপনি মৌখিক ভাবে বলেছিলেন আমায়।
সনাতনবাবু কি বললেন ?
উনি বললেন আপনি যা ভাল বুঝবেন করবেন, তারপর ম্যাডাম এলে ডিসিসন হবে।
আমার কাছে সেরকম কোনো খবর নেই। বরং কাগজের বাইরের খবর নিয়ে আপনারা বেশি মাতামাতি করেছেন।
না ম্যাডাম।
সময় মতো কাগজ বেরোচ্ছে ?
হ্যাঁ ম্যাডাম।
গত কাল ছাড়া প্রতিদিন কাগজ সেকেন্ড ট্রেন ধরেছে।
কে বলেছে ম্যাডাম আপনি একবার তার নাম বলুন।
সনাতনবাবু।
হ্যাঁ ম্যাডাম, সুনিতবাবু যা বলছেন তা ঠিক নয় । গতকাল এক মাত্র ঠিক টাইমে কাগজ গেছে। আর যায় নি।
আপনি কি করছিলেন।
এ্যাকচুয়েলি ম্যাডাম...।
আপনাকে কাজের জন্য পয়সা দেওয়া হয়। মিত্রা ঝাঁঝিয়ে উঠলো।
হ্যাঁ ম্যাডাম।
আপনাকে যে পাওয়ার দিয়ে এসেছিলাম তা ইউটিলাইজ করেছেন।
এরা ঠিক....।
সুনিতবাবু।
হ্যাঁ ম্যাডাম।
কজনকে চাকরির লোভ দেখিয়েছেন ?
একজনকেও না।
আমি দিবাকরের ফোন থেকে রিং করলাম। সুনিতদার ফোন বেজে উঠেছে।
ম্যাডাম আমার একটা ফোন এসেছে।
মিত্রা নম্বরটা বললো, এই নাম্বার থেকে ?
চুপচাপ।
কি সুনিতবাবু চুপচাপ কেনো, নম্বরটা ঠিক বললাম না ভুল বললাম। কথা বলছেননা কেনো।
হ্যাঁ ম্যাডাম।
আপনার মামা ব্যাপারগুলো জানেন।
না।
ওকে ফোন করুন, আর বলুন আমাকে এখুনি ফোন করতে। শুনুন আপনি আমার টেলি-কনফারেন্স শেষ হলে অফিস থেকে বেরিয়ে যাবেন। আগামী শুক্রবার আমার ঘরে মিটিং। আপনি উপস্থিত থাকবেন। সেদিন যা বলার বলবো। এদের সামনে আর বললাম না।
ম্যাডাম, আমার কিছু কথা বলার ছিলো।
শুক্রবার বেলা এগারোটা। চম্পকবাবু।
হ্যাঁ ম্যাডাম।
এমাসের টার্গেট কতো ছিলো ?
১৫ কোটি।
কত ফুলফিল হয়েছে।
১ কোটি।
বাকিটা।
হয়ে যাবে।
গাছ থেকে পরবে ?
চুপচাপ।
কি হলো চুপ করে আছেন কেনো।
না ম্যাডাম, বাজারের অবস্থা....।
অন্য হাউস পাচ্ছে কি করে। আমার কাগজের হাল কি এতই খারাপ নাকি।
না ম্যাডাম, নিউজ কোয়ালিটি....।
সুনিতবাবু।
ম্যাডাম।
চম্পকবাবু কি বলছেন।
ম্যাডাম। মানে আমি.....।
চম্পকবাবু।
হ্যাঁ ম্যাডাম।
কত টাকা মাইনে পান।
চুপচাপ।
যদি কাল আপনাকে দুর করে দিই। ওই মাইনে কলকাতার কোনো হাউস আপনাকে দেবে। আপনিও শুক্রবার অফিসে এসে দেখা করবেন। সমস্ত ডকুমেন্টস নিয়ে।
আচ্ছা ম্যাডাম।
কিংশুকবাবু।
হ্যাঁ ম্যাডাম।
আপনাকে যা দায়িত্ব দিয়ে এসেছিলাম তা পালন করেছেন, না সনাতনবাবুর মত অবস্থা।
চুপচাপ।
বুঝেছি।
চম্পকবাবু আপনার দায়িত্ব গুলো কিংশুকবাবুকে বুঝিয়ে দিন।
ঠিক আছে ম্যাডাম।
সনাতানবাবু।
বলুন ম্যাডাম।
সার্কুলেশনের ভদ্রলোক এসেছেন।
হ্যাঁ ম্যাডাম আমি এসেছি।
গত ১০ দিনে কাগজের সার্কুলেসন ১ লাখ পরেগেছে কেনো।
না মানে।
দেরি করে বেরিয়েছে এই কারন দেখাবেন না, সব বিটে কাগজ ঠিক সময় পৌঁছই নি।
না ঠিক তা নয়। প্রেসে একটু প্রবলেম ছিলো।
আমি ১০ দিন অফিসে যাই নি। এতো দেখছি চারিদিকে খালি প্রবলেম আর প্রবলেম।
অতীশবাবু আছেন ওখানে।
হ্যাঁ ম্যাডাম।
কি অতিশবাবু সাপের পাঁচ পা দেখেছেন।
চুপচাপ।
সুনিতবাবু।
বলুন ম্যাডাম।
দিবাকর মন্ডলকে চেনেন।
দিবাকর মন্ডল.....!
অতিশবাবুর দিকে তাকাচ্ছেন তাইতো। চিনতে পারছেন না। একটু আগে আপনাকে ফোন করলো।
না ম্যাডাম ওতো ফোন করে নি।
এইতো এখুনি বললেন ওকে চিনিনা।
না মানে।
আপনার গলার রেকর্ডিং শুনবেন।
না মানে.....।
ত ত করছেন কেনো।
চুপচাপ।
পয়সা দিয়ে আমি গরু পুশবো ছাগল নয় এটা মনে রাখবেন। আমাকে নিয়ে হাউসে অনেক আলোচনা হচ্ছে। এটা আমার কানে এসেছে। একটা কথা মনে রাখবেন, আমার অনেক পয়সা আমার পক্ষে দু’দশটা কেপ্ট পোষা খুব একটা অস্বাভাবিক নয়। এটা বড়লোক মানুষদের খেয়াল। আপনার মামাকে আমাকে ফোন করতে বলুন।
সনাতনবাবু।
বলুন ম্যাডাম।
ওখানে আর যারা আছেন, তাদের শুক্রবার আসতে বলুন। আমার কথা বলতে ভাল লাগছে না। আপনারা এতটা নীচে নেমে গেছেন।
আর শুনুন, আমি ইসমাইলকে বলে দিচ্ছি, গাড়িটা অমিতাভদার বাড়িতে পাঠিয়ে দিন। আজ থেকে কাগজের দায়িত্ব অমিতাভদার হাতে থাকবে। আমি কলকাতা না যাওয়া পর্যন্ত।
ঠিক আছে।
আর আপনারা সবাই শুনে নিন, অনি আপনাদের অনেক ক্ষতি করেছে। তাই না।
ঠিক বলেছেন ম্যাডাম।
আমি ওকে পানিশমেন্ট দিয়েছি।
এটা ভাল কাজ করেছেন ম্যাডাম। আমরাই বা শুধু ভুগবো কেনো। ওর জন্য জুনিয়র ছেলেরাও আমাদের কথা শুনতে চাইছে না।
ঠিক বলেছেন। আপনারা না এক একজন দিকপাল সাংবাদিক। এ্যাডমেনেজার, সিইও, এ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ম্যানেজের, আরো কত কি। সব গালভরা নাম তাই না।
চুপচাপ।
আপনাদের জ্ঞাতার্থে একটা কথা জানিয়ে রাখি অনি বর্তমানে এই কাগজের ২০ পার্সেন্ট শেয়ার হোল্ড করছে। দু’এক দিনের মধ্যেই নোটিস বোর্ডে নোটিশ পরে যাবে। যাকে যা দায়িত্ব দিলাম সেই দায়িত্ব অনুযায়ী কাজ করুন। শুক্রবার ১১টার সময় দেখা হবে।
সবাই চুপচাপ।
আমি লাইনটা কেটে দিয়ে সেভ করলাম। মিত্রা মাথা নীচু করে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো। আমি সবাইকে ইশারায় বাইরে বেরিয়ে যেতে বললাম।
সবাই চলে গেলো। নীপা বসেছিলো। আমি বললাম তুমি একটু গরম দুধ নিয়ে এসো। আর ওদের একটু চা-এর ব্যাবস্থা করো।
নীপা ছুটে বেরিয়ে গেলো।
মিত্রা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে।
কাঁদিস না। এতো ইমোশন্যাল হলে ব্যাবসা চালাবি কি করে ?
আমি আর পারছিনা বুবুন।
তোকে পারতেই হবে।
ও আমার ঘাড় থেকে মাথা তুলছে না। এই দেখো। এখনো কত কাজ বাকি আছে, দাদাকে ফোন করতে হবে। কাগজটা বার করতে হবেতো।
তুই কর।
নীপা ঘরে ঢুকলো।
কি বোকা বোকা কথা বলছিস। চোখখোল, ওই দেখ নীপা তোকে দেখে হাসছে।
মিত্রা আমার ঘার থেকে মাথা তুললো। নীপার দিকে তাকালো। নীপা গরম দুধ নিয়ে এসেছে। নে এটা খেয়ে নে, দেখবি ভাল লাগবে।
তুইখা। ওরা সবাই কোথায় গেলো!
আমরা প্রেমকরবো, সবাই দেখবে, এটা হয়।
ধ্যাত। তুই না।
নীপা হাসছে।
মুখপুরী, তুই হাসছিস কেনো।
নীপা মিত্রার কোলে মাথা দিলো।
তোর আবার কি হলো।
আমাকে তোমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়ো না, আমি তোমার বাড়িতে রান্নার কাজ করবো।
কি পাগলের মতো কথা বলছিস।
ওঠ। তোকে তোর অনিদার মতো হতে হবে।
আমি পারবো না মিত্রাদি।
পারতেই হবে।
নে ফোন কর দাদাকে। আমি বললাম।
কি বলবো।
স্পিরিটটা মাঝে মাঝে হারিয়ে ফেলিস না।
দে ।
আমি আমার ফোন থেকে ডায়াল করেই ওর হাতে দিলাম।
হ্যালো।
কিরে তুই কেমন ছেলে একটা ফোন করলি না কালকে। বড়মাকে ভুলে গেছিস।
আমি মিত্রা বড়মা।
তোর গলাটা এরকম কেনো ! কিছু হয়েছে ?
না।
অনি তোকে কিছু বলেছে ?
না।
ওই মর্কটটা কোথায় রে। দেতো কানটা মুলে।
দেবো।
না থাক। ওর অনেক চাপ । বুঝি, কিন্তু মন মানে না।
সত্যি বড়মা, গিয়ে তোমাকে সব বলবো।
কেনোরে, আবার কি হলো।
সে অনেক কথা।
ওর কাকার শরীর ভাল আছেতো।
হ্যাঁ।
ওইনে তোর দাদা চেঁচাচ্ছে, কে ফোন করল ? সত্যি কি মিনষেরে বাবা, একটুও সহ্য হয় না।
মিত্রা হো হো করে হেসে ফেললো।
হাসিস না হাসিস না। তিরিশ বছর ঘর করা হয়ে গেলো, হারে হারে চিনেছি।
দাদাকে দাও।
ধর। ওকি আমার সঙ্গে কথা বলবেনা বলে প্রতিজ্ঞা করেছে।
আমার সামনে বসে আছে।
ওর গলাটা একটু শোনা না।
তোমাকে পরে দিচ্ছি।
আচ্ছা।
হ্যালো।
দাদা আমি মিত্রা।
হ্যাঁ বলো মা। তোমরা কেমন আছ।
ভালনেই।
কেনো।
সে অনেক কথা, আপনাকে যেজন্য ফোন করছি।
আগে বলো ওখানকার সবাই ভালোতো।
হ্যাঁ এখানকার সবাই ভালোআছে, আমরাও ভালোআছি।
বলো কি বলছিলে।
আজ থেকে আপনি অফিসে যান। আমি ইসমাইলকে বলে দিয়েছি। ও আপনাকে মল্লিকদাকে নিয়ে যাবে। আর যাদের যাদের আপনার দরকার তাদের তাদের আপনি ডেকেনিন। শুক্রবার সকালে আমি আর অনি কলকাতা যাবো।
কিছু একটা গন্ডগোল হয়েছে মনে হচ্ছে।
মিথ্যেকথা আপনাকে বলবোনা। হয়েছে।
কি হয়েছে বলো ?
আপনি অফিসে গেলেই সব বুঝতে পারবেন। বাকিটা পরে ফোন করে আপনাকে বলবো।
ঠিক আছে।
ওখানে কিছু হয়েছে ?
না।
সত্যি কথা বলছো।
হ্যাঁ।
নাও ছোটর সঙ্গে কথা বলো।
কিরে কোমন আছিস।
ভালো। তুমি কোমন আছ।
ভলো, ওই ছাগলটা কোথায় ?
আমার দিকে জুল জুল করে চেয়ে আছে।
দেতো ওকে।
ধরো।
মিত্রাকে ইশারা করে বলে দিলাম ইসমাইলকে ফোন কর।
মিত্রা ইসমাইলকে ফোন করছে।
বলো।
কিরে ছোটমা বড়মাকে ভুলে গেলি ?
কি করে ভুলবো।
তাহলে ফোন করিস নি কেনো ?
সব গিয়ে বলবো, ফোনে এতোকথা বলা যাবে না।
খারাপ না ভালো।
খারাপ ভালো মিশিয়ে।
কবে আসছিস।
শুক্রবার রাতে তোমাদের সঙ্গে দেখা হবে।
কেনোরে।
আজ রাতেই মল্লিকদার কাছ থেকে সব শুনতে পাবে।
ধর দিদির সঙ্গে কথা বল।
কিরে।
তুমি রাগ করোনা। তোমার অনি এখন একটা লিডিং কাগজ কোম্পানীর মালিক, এটা বোঝোতো।
সেই জন্য বড়মাকে ভুলেগেছিস।
তাহলে ওই বাড়ি যাওয়া বন্ধ করেদেবো।
Posts: 50
Threads: 1
Likes Received: 6 in 6 posts
Likes Given: 0
Joined: Feb 2019
Reputation:
2
সারাদিন দিন ব্যস্ততার মাঝে পার হয়। রাতের বেলা আপডেট দিতে গেলে হয়না। তাই আসলে ইচ্ছা থাকলেও হয়ে উঠে না।
•
Posts: 5
Threads: 0
Likes Received: 0 in 0 posts
Likes Given: 0
Joined: May 2019
Reputation:
0
Apnake osonkho dhonnobad. Eta ta update deben asha kori ni. Porer ta o erkom e asha rakchi. Take your time, but try to give early. Thank you.
•
Posts: 5
Threads: 0
Likes Received: 0 in 0 posts
Likes Given: 0
Joined: May 2019
Reputation:
0
15th August ekta boro update din
•
Posts: 439
Threads: 2
Likes Received: 309 in 202 posts
Likes Given: 348
Joined: Jan 2019
Reputation:
41
Waiting for more
Why so serious!!!! :s
•
Posts: 6
Threads: 0
Likes Received: 0 in 0 posts
Likes Given: 0
Joined: Apr 2019
Reputation:
0
কপি পেস্ট করতে এত সময় লাগার কথা না দাদাভাই
একটু আমাদের দিকে দেখুন
•
Posts: 34
Threads: 0
Likes Received: 4 in 4 posts
Likes Given: 0
Joined: May 2019
Reputation:
0
•
Posts: 50
Threads: 1
Likes Received: 6 in 6 posts
Likes Given: 0
Joined: Feb 2019
Reputation:
2
কস্ট করে সবাই PDF file গুলো ডাউনলোড করে নিবেন। অনেক চেস্টা করেও কপি পেস্ট করতে পারলাম না। সাথে থাকার জন্য সবাই কে ধন্যবাদ। pdf 1 # 162 page পেজ গেলে বাকি গল্প পাবেন।
link http://www.mediafire.com/file/lugihw70ta...C.pdf/file
•
Posts: 50
Threads: 1
Likes Received: 6 in 6 posts
Likes Given: 0
Joined: Feb 2019
Reputation:
2
•
Posts: 50
Threads: 1
Likes Received: 6 in 6 posts
Likes Given: 0
Joined: Feb 2019
Reputation:
2
•
Posts: 50
Threads: 1
Likes Received: 6 in 6 posts
Likes Given: 0
Joined: Feb 2019
Reputation:
2
•
Posts: 128
Threads: 7
Likes Received: 64 in 48 posts
Likes Given: 135
Joined: Feb 2019
Reputation:
3
গল্প টির সারমর্ম কেও বলবেন? আসলে এতো বড়ো গল্প যে শুরু করতে সাহস হচ্ছে না। গল্পটির মূল বিষয়টা কেও একটু বললে উপকৃত হই।।।।
•
|