Thread Rating:
  • 11 Vote(s) - 2.73 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
আমার নানা বাড়ি: মা যখন সবার থেকে আলোকবর্ষ দূরে।
#1
আজ কতদিন পরে যে নানু বাড়ি যাচ্ছি, প্রায় দুই বছরেরও বেশি সময়। একটা সময় ছিল কলেজের বার্ষিক পরীক্ষা দিয়েই নানু বাড়িতে ছুট দিতাম। সেখানে সারাদিন কাটতো, খালাত ভাই আর বন্ধুদের সাথে দস্যিপনা করে। ধানের ক্ষেতের মাঝে পিচ বানিয়ে ক্রিকেট, সন্ধ্যা হলে ফুল টোককা, রাতে লুকোচুরি, এর ওর গাছের ডাব চুরি, কি কি করিনি। আমার দস্যিপনায় সর্বক্ষনের সঙ্গী ছিল আমার খালাত ভাই শোভন, জাহিদ, রাজীব আরো অনেকে।শোভন আমার থেকে বয়সে আট মাসের বড়, খাটো-গোলগাল চেহারা, দেখতে খুবই ভোলাভালা, মনে হবে ভাজা মাছটাও উল্টে খেতে পারে না, কিন্তু বাস্তবে অসম্ভব কুটবুদ্ধির অধিকারী।রাজীবও শোভনের সমবয়সী, শুকনো, টিপিক্যাল ক্ষেতে-খামারে কাজ করার বডি-ফিগার, হাবা, কথা বললে তোতলে যায়। জাহিদ আমার থেকে দুই বছরের বড়, আমাদের মাঝে সবচেয়ে তাগরাই, একেবারে পেটানো শরীর। ক্রিকেট মাঠে বড় বড় ছক্কার কারণে আমরা আদর করে ডাকতাম কায়রন পোলার্ড। জাহিদের আরেকটা পরিচয় হল ওর পরিবার বংশানুক্রমে আমাদের নানা বাড়ির পরিবারের অধীনে কাজ করে গেছে। ওর বাবা ছিল নানার সর্বক্ষনের সঙ্গী, নানা বাহিরে গেলে ছাতা এগিয়ে দেওয়া, ফাইফরমাশ খাতা, ধান-চালের হিসাব রাখা।আর ওর মা ছিল নানুর সর্বক্ষণের সঙ্গী, রান্নায় সাহায্য করা, ঘর গুছিয়ে রাখা। 

জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হয়ে গেছে, কিন্তু আমাদের নানা বাড়িতে যে পরিমাণ সম্পত্তি তা কোনদিক থেকেই একজন জমিদারের থেকে কম নয়। সুজলা-সুফলা শস্য শ্যামলা গ্রামের মাঝের একটা বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স দালান। এই দালানের ছাদে উঠে যতদূর চোখ যায়, আশেপাশের তিন গ্রাম পর্যন্ত যত জমি, যত পুকুর,যত নদী (ইজারা বা লিজ) সবই আমার নানাভাই এর সম্পত্তি।নানাভাই এর বয়স হওয়ার পর থেকে আমার মাই এই সম্পত্তির দেখা-শুনো করে আসছে। চার বোন আর এক ভাই এর মধ্যে মা সেজো। কিন্ত সবার মাঝে মায়ের প্রভাবই সবচেয়ে বেশি ছিল। মামা ঢাকায় চাকুরী করে,মা প্রতি সপ্তাহে দুই-তিন দিনের জন্য এসে জমিদারী দেখে যায়। কখনো মা আসতে না পারলে, সেই সপ্তাহে মেজ খালা এসে মায়ের প্রক্সি দিয়ে যায়। মা  একদম বলিউডের জিরো ফিগারের মহিলা, পেটে বয়সের কারণে খুবই হালকা মেদ, ভরাট বক্ষ, লম্বা উচ্চতা। এত বড় জমিদারী দেখাশুনার কারণে মায়ের রাগটাও এত বেশি। বাড়ির চাকর-বাকর তো বটেই আমাদের সকল আত্মীয়-স্বজনও মায়ের ভয়ে সদা ততস্ত্র হয়ে থাকে। আর বংশানুক্রমে মায়ের সর্বক্ষণিক সঙ্গী এখন জাহিদ। 

মা-বাবার বিয়ে হয়েছিল প্রেমের বিয়ে। ওই যুগে খুব কম মানুষই প্রেম করে বিয়ে করেছে। কিন্তু মা তো মাই-সব সময় নিজের মর্জিমত চলেছে। আমার ফুপুর বিয়ে হয়েছিল আমাদের গ্রামেই, সেই বিয়েতে গেট ধরা নিয়ে বেয়াই-বেয়াইনের দুষ্টুমি, এরপর পরিণতি। প্রেমের বিয়ে হওয়াতে মা-বাবার মধ্যে ঠোকা-ঠুকিও ছিল অনেক বেশি। তাছাড়া মায়ের রাগ যদি উত্তপ্ত কয়লা হয়, বাবার রাগ হল মধ্যগগনের সূর্যের উত্তাপ। এই দুই রাগী মানুষের ঠোকা-ঠুকিতে প্রায়ই মা দুই-তিন সপ্তাহের জন্য নানা বাড়িতে থেকে যেত। কিন্তু দুই বছর আমাদের পরিবারে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। মা যে সেই গেল আর কখনোই ফিরে এল না। দুই মাসেও মাকে আসতে না দেখে, বাবা গেলে মাকে ফিরিয়ে আনার জন্য। কিন্তু বাবা ফেরত এল একা, এসে দুইদিন গুম হয়ে নাওয়া-খাওয়া বাদ দিয়ে ঘরে বসে ছিল।দুইদিন পর ঘর থেকে বের হয়ে আমাকে আর আমার বোনকে ডেকে বললো, আজ থেকে তোদের নানা বাড়ি যাওয়া বন্ধ, এই গরীব বাবার সংসারেই তোদের থাকতে হবে।বাবার অসহায় চেহারা দেখে আমি বা আমার বোন কেউই না কর‍তে পারলাম না। কিন্ত নানা বাড়িতে বাবা-মায়ের মধ্যে কি হয়েছিল তা আজও আমরা জানি না, শুধু এইটুকু জানি ছয় মাসের মধ্যেই বাবা-মায়ের মধ্যে আনুষ্ঠানিক ডিভোর্স হয়ে যায়। আজ এস.এস.সি পরীক্ষা শেষে যে নানাবাড়ি যাচ্ছি, তাও বাবাকে না জানিয়েই। পরীক্ষা শেষে বন্ধুদের সাথে ট্যুর দেওয়ার নাম করে রওনা দিলাম নানাবাড়ি, সাথে শোভনকেও ফোন করে বললাম চলে আসতে। যতটা না কলেজ জীবনের নস্টালজিয়া, তার থেকে বেশি মায়ের সাথে দেখা হওয়ার আনন্দ। মা নিশ্চয়ই অনেক সারপ্রাইজড হবে, খুশিতে চোখে জল চলে আসবে। আহ! কতদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে মা চুলে বিলি কেটে দেয় না! আবার সাথে সাথেই মনের মধ্যে একরাশ অভিমান ভর করল। আমি না হয় বাবার জন্য মায়ের সাথে যোগাযোগ রাখতে পারি না, মায়ের কি এই দুই বছরের একবারও আমার কথা মনে পড়ল না? 

হাড়িভাঙ্গা নদীর পরে ট্রলার যখন ভিড়ল তখন ভোড় হয় হয়। চারদিকে গ্রীষ্মের গুমট গরম। শোভন আসতে আরো ঘন্টা দেড়েক। ও আসলে দুইজন একসাথে ভ্যানে করে সোজা নানা বাড়ি। গ্রামে সকাল শুরু হয় ফজরের পর থেকেই। নদীর পারে একটা চায়ের দোকান মাত্র খুলেছে, তাতেও ভীড়ে গম গম করছে। দোকানে এক কাপ চা আর দুইটা বিস্কুট অর্ডার করে বসতেই একজন বলে উঠল, "তুমি ইভার ছেলে না?" আমি হ্যাঁ বলতেই উনি আবার বলে উঠলো,"এতদিন পরে মায়ের সংসার দেখতে আসার সময় হলো?" আর সঙ্গে সঙ্গেই দোকানের বাকিরা হো হো করে হেসে উঠল। কথাটার মানে তখন বুঝতে পারি নি, যখন বুঝলাম তখন এই ভোরবেলায় আমার জীবনে কালবৈশাখী নেমে এল। আধো আলো আধো অন্ধকারের মধ্য দিয়ে ভ্যান ছুটে চলেছে, দুই পাশে ঘন জঙ্গল। হঠাৎ শোভন বলে উঠল, "আন্টি যে আবার বিয়ে করেছে জানিস?"। আমি জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে বললাম,"আন্টি মানে??" 
-তোর মা। 
আমি এতক্ষণে চায়ের দোকানে মায়ের সংসার দেখতে আসা নিয়ে হাসি ঠাট্টার কারণ বুঝতে পারলাম। জিজ্ঞেস করলাম - কবে?
ভ্যানওয়ালা পিছনে ফিরে বললেন, সে কি বাবু। আপনি জানেন না? তা তো প্রায় একবছর হয়ে গেছে। সে কি অনুষ্ঠান, এত জাঁক-জমক আমার বাবার জন্মে দেখি নি। হলুদে ঢাকা থেকে অর্ণব না কোন শিল্পী এসে গান করল, সে কি গান বাবু এখনো কানে লেগে আছে। আর বিয়ের খাবারের মেন্যু.............
নাহ! আর কিছু কান দিয়ে ঢুকছে না। এ আমি কি শুনলাম। 
শোভন আমার দিকে তাকিয়ে বলল, "কিরে ফেরত যাবি? তাহলে ভ্যান ঘুরে বলি।"
আমি চোখ মুখ শক্ত করে বললাম-না।
সূর্যের আলো ফুটতে শুরু করেছে। পাখির কিচির মিচির, বনমোরগের ডাক, এরমধ্যে শোভন সুর দিয়ে শিষ দেওয়া শুরু করলো। উফ! ওর শিষ আমার কানে বিষের মত লাগছে। এত সুখ কেন ওর মনে!
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#2
সুন্দর শুরু
Like Reply
#3
next part dao
banana :
Never Give Up banana 
Like Reply
#4
Good start
[+] 1 user Likes Mustaq's post
Like Reply
#5
Druto update dilei golper rich bere jabe dada ..
Golpotar starting amazing
Like Reply
#6
Darun....suru...wait for update
Like Reply
#7
Update
Like Reply
#8
Congratulations new story ❤️
Nice update ❤️❤️
Next part jonno aopekha roilam
Like Reply
#9
গল্পের শুরুটা অসাধারণ, পড়ে বেশ ভালোই লাগলো। এর পরের আপডেটের জন্যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় রইলাম।
Like Reply
#10
সুন্দর শুরু হয়ে ছে
আশা করি আপডেট তাড়াতাড়ি পাবো
আপনি অন্য লেখকদের মতো হারিয়ে যাবেন না মাঝ পথে রেখে দিয়ে তাহলেই হবে
Lot's of love love
আর হা মা কে রাগী sovab এর রাখবেন
Like Reply
#11
কালকে আপডেট দেওয়ার চেষ্টা করব।
[+] 1 user Likes nontu's post
Like Reply
#12
(05-12-2025, 08:48 AM)nontu Wrote: কালকে আপডেট দেওয়ার চেষ্টা করব।

কোথায় তোমার আপডেট? আজতো দেবার কথা ছিলো।
banana :
Never Give Up banana 
Like Reply
#13
শুরু ভালো হচ্ছে এগিয়ে যেতে থাকুন।
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

Like Reply
#14
সকাল এ আপডেট করবেন কী?
Like Reply
#15
পর্ব ২
-----
নানু বাড়ি পৌঁছাতে পৌঁছাতে সকাল আটটা বেজে গেছে। বাড়িতে চাকর বাকরের দৌড়ো-দৌড়ি শুরু হয়ে গেছে। রান্না ঘরে নাস্তা বানানোর টুং-টাং আওয়াজ আর ঘরের মহিলাদের গলা পাওয়া যাচ্ছে।  মা তো এই সময়ে রান্না ঘরেই থাকার কথা। এক দৌড়ে রান্না ঘরের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে মা বলে ডাক দিলাম। নানা বাড়িতে দীর্ঘ দিন ধরে রান্নার কাজ করে যিনি-মৌসুমী আপু ফিরে তাকালেন। 
  • -আরে জীবন, কখন আসছো? একটা খবর দিয়ে আসবে না? প্রশ্নের জবাব না দিয়ে পাল্টা জিজ্ঞেস করলাম মা কোথায়?-খালাম্মা তো দশটা এগারটার আগে ঘুম থেকে উঠেন না। তুমি হাত মুখ ধুঁয়ে নাস্তা করো, এর মধ্যে উঠে যাবে।
কিছুটা অবাক হলাম। যে মাকে ছেলেবেলা থেকে দেখি আসছি ভোর ৬ টার সময় ঘুম থেকে উঠে সবার জন্য নিজ হাতে নাস্তা রেডি করতে, সেই মা এখন দশটা - এগারটায় ঘুম থেকে উঠে?? 
  • -মায়ের কি শরীর খারাপ নাকি? উত্তরে না বলে মুচকি হাসলো সুমি আপু। -আরে প্রথম প্রথম এরকম একটু দেরীই হয়, গতরের উপর দিয়ে তো কম ধকল যায় না।পাশ থেকে বলে উঠল আলেয়া নানী (আলেয়া নানীও বাসার একজন কাজের লোক)। নানী কি বলতে চাইছে বুঝতে বাকি রইল না।  আহ, নানি মুখে কিছু আটকায় না। সুমি আপু কপট রাগ দেখালো। 
আমার মধ্যে একরাশ অভিমান জমা হল। যাক, মায়ের নতুন সংসার ভালই চলছে। এজন্য গত দুই বছরে খোঁজ নেওয়ারও প্রয়োজন মনে করে নি। 

একটু পর একজন কাজের লোক এসে বাহিরের ঘরে নাস্তা দিয়ে গেল। রুটি, সবজি-ভাজি, ডাল। একটা রুটি শেষ করে আরেকটা রুটি মুখে দিবে, এমন সময় মায়ের ঘরে দরজা খোলার আওয়াজ পেলাম। উঠে দৌড় দিতে যাব এমন সময় শোভন হাত ধরল, খাওয়া শেষ করে উঠ। এমন সময় জাহিদ একটা সাদা স্যান্ডো গেঞ্জি পরে, লুঙ্গী ঠিক করতে করতে রুমে ঢুকল। বাহ, গত দুই বছরে আরো তাগড়াই হয়েছে। দেখলে আর আমাদের মত টিএনেজার মনে হয় না, একদম ব্যাটা মানুষ হয়ে গেছে। 
  • -এই আবুল, গোসলের পানি দে তো।-কিরে কেমন আছোস? (যদিও জাহিদ আমার থেকে বয়সে বছর দুয়েকের বড়, কিন্ত একেতো আমাদের বাসার কাজের লোক, তার উপর ছোটবেলার খেলার সাথী, তাও ওকে সবসময় তুই করেই বলতাম। যদিও জাহিদ আমাকে তুমি করে বলত। শত হলেও মনিব স্থানীয় লোককে তুই বলার সাহস গ্রামের লোকেদের থাকে না।)
জাহিদ চমকে উঠে মুখ গম্ভীর করে বললো, "তোমরা?" আমি বললাম, "আম্মুকে সারপ্রাইজ দিতে কিছু না বলেই চলে আসলাম।" জাহিদ শুধু বললো, "ও"। ওর মুখ থেকে মনে হচ্ছে আমরা আসাতে খুবই বিরক্ত হয়েছে। এমন সময় বাড়ির বৃদ্ধ কাজের লোক পরান একটা সাবান আর গামছা নিয়ে জাহিদকে এগিয়ে দিল। 
  • -সাব, বাথরুমে গোসলের পানি দেওয়া আছে। -আপনি কেন? আবুল কোথায়? -আবুল তো ওই ভোরে উঠেই মেকানিকের কাছে গেছে। এত দূরের রাস্তা যাবেন, গাড়িটা একবার চেক করিয়ে আনতে গেছে। -সে যাবে ফ্রি টাইমে।এখন এত কাজ। আপনি কি আর বয়সে সারাদিন আমার সাথে দৌড়াতে পারবেন?-পারবো সাব। সেই পনেরো বছর বয়স থেকে এই বাড়িতে কাজ করি।মাথায় কত বস্তা বস্তা ধান তুলছি, এখন তো ঝার পোছ ছাড়া কিছু করাই হয় না। বসে থাকতে থাকতে শরীরে জং ধরে গেছে। -হয়েছে থাক। এই বয়সে এত ছোটাছুটি করে আবার একবারে বিছানায় পরে যাইয়েন না। 
জাহিদকে আবার কবে থেকে বাড়ির চাকর বাকর এত খাতির করা শুরু করল। আর ওর বা এত ছোটাছুটির কি আছে? ওর কাজই তো মা এই বাড়িতে এলে মায়ের ফাই ফরমাশ খাঁটা। এছাড়া তো সারাবছর বসেই থাকে। হঠাৎ করে মাথা খারাপ চিন্তাটা চলে আসলো। তবে কি মা......... ছি ছি!  এ কি ভাবছি আমি। জাহিদ মাকে ফুফু ডাকে, এই হাঁটুর বয়সী ছেলেকে। ওর যখন ছয় বছর বয়স তখন মাকে বাসার কাছে সাহায্য করার জন্য আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসে।তবে জাহিদ বয়:সন্ধি থেকেই ছিল লুইচ্চা স্বভাবের। আমি যখন ক্লাশ সিক্সে  (জাহিদের বয়স তখন চৌদ্দ ) তখন আশেপাশের বাড়ির একাধিক উঠতি মেয়ের সাথে অনৈতিক সর্ম্পক  করে বেশ ভাল বদনাম কামিয়ে ফেলে। শেষে বদনামের ভয়ে নানাবাড়িতে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। তবে মা যখন এই বাড়ি আসত, ওই সব ফাইফরমায়েস খেঁটে দিত।  ছয় থেকে চৌদ্দ,  বাবা-মার রাগী স্বভাবের জন্য এই আট বছরে কম লাথি-গুঁতা খায় নি। বাড়িতে আমাদের সবার জন্য কাঁচের প্লেট-গ্লাস থাকলেও, ওর জন্য ছিল টিনের থালা আর পানির পাত্র। একদিন বাজার নিয়ে এসে তাড়াহুড়ো করে আম্মুর গ্লাসে পানি খেয়ে ফেলায় কি গাল-মন্দটাই না খেয়েছে। মা ওকে নিজের গ্লাসটাই ব্যবহার করতে দিত না, আর ওকে নাকি বিয়ে করে নিজের শরীরটাই ব্যবহার করতে দিবে। যাহ! কিসব ভাবছি আমি। তবে মা যে আবার বিয়ে করেছে এটা তো নিশ্চিত। কে মায়ের হাজবেন্ড? 
একটু ইতস্তত করে শোভনকে জিজ্ঞেস করলাম, মা কাকে বিয়ে করেছে জানিস? শোভন রহস্যময় হাসি দিয়ে বললো, "এখনো বুঝিস নি?" এখনো ও বুঝি নি মানে? জাহিদ? না না, এ হতে পারে না। ছোট বেলায় আমি জাহিদকে আমার খেলনা ধর‍তে দিতাম না, সেই জাহিদ এখন আমার মাকে নিয়ে খেলে? না, এটা আমি বিশ্বাস করি না। তবে জাহিদ যদি না হয় আর কে? মা বিয়ে করে থাকলে শ্বশুর বাড়িতে না থাকে এই বাড়িতে কি করে? আমার আকাশ ভেঙ্গে  কান্না পাচ্ছে। 
  • -বেশি ভনিতা না করে বলত।
শোভন হো হো করর হেসে উঠল। আরে এত অধৈর্য হচ্ছিস কেন? আমার তো এক্সাইটেড লাগছে। আমার প্রাণপ্রিয় খালা এখন নতুন বউ, লাজুক মুখে নিজের হাসবেন্ডকে আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিবে। আমার ইচ্ছা করছে এক ঘুষি মেরে শোভনের নাক ফাটিয়ে দিতে। শালা আমার পায়ের নিচের মাটি সরে যাচ্ছে, ও ইয়ার্কি করছে। আর কিসের নতুন বউ, বিয়ে তো নাকি সেই এক বছর আগে করেছে। শোভন আমার কাঁধে হাত রেখে বলল। রাগ করিস না। তোর মা সুখে আছে, এইটা কি যথেষ্ট না। তোর মা কি তোর সুখের জন্য কম কষ্ট করেছে? তোর বাবা কি তোর মাকে কম অত্যাচার করেছে? রাজবাড়ির রাজকন্যা, অথচ তোর বাবাকে ভালবেশে ওনাদের টিনের ঘরে বাইশ বছর সংসার করেছে? বিনিমতে তোর বাবা কি দিয়েছে? জীবনে কোথাও ঘুরতে নিয়ে গেছে? কথায় কথায় মা-বাবা তুলে গাল-মন্দ। আমি চুপ করে রইলাম। বাবা মার মধ্যে প্রচুর ঝগড়া হত ঠিক, কিন্তু উনি মাকে ভালও বাসত। সকাল থেকে রাত অবধি হাঁড়-ভাঙ্গা পরিশ্রম করত, তবুও মায়ের বাবার বাড়ির কাছে কিছু চেয়ে মাকে ছোট করত না। যাক গে, এসব কথা শোভনকে বলে লাভ নাই। চুপ করে থাকতে দেখে শোভন আবার বলতে শুরু করল, "তুই তোর মায়ের সংসারে কোন ঝামেলা করিস না, এতে অশান্তি বাড়বে।" আমি ক্ষীণস্বরে বললাম, "হুম।"
[+] 10 users Like nontu's post
Like Reply
#16
এই পর্বটা পড়ে খুব ভালো লাগলো। কিন্তু বড্ড ছোট পর্ব। পরবর্তী অংশ পড়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় রইলাম।
[+] 1 user Likes pradip lahiri's post
Like Reply
#17
Darun
Like Reply
#18
VAlo laglo
Like Reply
#19
তোমার লেখার হাত খুব সুন্দর
গল্প টা খুব সুন্দর ভাব এ এগিয়ে চলে চে
আপডেট টা অনেক ছোটো হয়ে চে
জানি অনেক কাজ এর মাঝে লেখা
একটা request প্লিজ আপডেট গুলো একটু বড়ো করে দাও
Lot's of love
[+] 1 user Likes Realbond's post
Like Reply
#20
বড় আপডেট দিবেন বস। রেগুলার আপডেট চাই।
[+] 1 user Likes toimur's post
Like Reply




Users browsing this thread: chotigolpo1000, ~Kona~, 5 Guest(s)