Thread Rating:
  • 47 Vote(s) - 3.74 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery অতৃপ্ত যৌবনের গল্প: নতুন আপডেট
(03-10-2025, 12:55 PM)raikamol Wrote: চমৎকার রচনা। এত সুন্দর গল্প ও ভাষার বাঁধন, মন শুধু ভাল না, উতসুকও হয়ে ওঠে।

অনেক অনেক ধন্যবাদ ম্যাডাম...... ভালো হলে আপনাদের প্রশংশা আর খারাপ হলে ভুল ত্রুটি সংশোধন এটাই আমার লেখা চালিয়ে যাওয়ার রসদ....।
Deep's story
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
(29-09-2025, 08:36 PM)M¡Lf€@TeR Wrote: Update din dada

১ সপ্তাহ দেরী হবে,  তবে যখন দেবো বড় করেই দেবো.... কথা দিলাম।
Deep's story
Like Reply
(24-09-2025, 04:44 PM)sarkardibyendu Wrote:
অতৃপ্ত যৌবনের গল্প
(নতুন পর্ব) 



নুটু কাঁপা হাতে এগিয়ে এসে রমার ব্রা এর স্ট্রীপ আটকে দেয়। রমার খোলা চওড়া পিঠ.... মাঝে সিঁড়দাড়ার উপত্যকা ঢেউ খেলে নেমে গেছে অনেক নীচে..... সেখান থেকে শুরু হয়েছে উত্তল বাঁক,  মাঝে গভীর খাঁজের দুই পাশে নরম মাংসল অঙ্গ.... ভেজা শাড়ীর মধ্যে থেকে তার অস্তিত্ব স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। আয়নার মধ্যে দিয়ে রমার খোলা স্তন দেখা গেলেও সেদিকে তাকায় না ও।  এক নারী শরীরকে ভালোবাসার যন্ত্রনা ওকে এখনো কুঁরে কুঁরে খাচ্ছে..... আর কাউকে ও স্পর্শও করতে চায় না ...... এখানে থাকলেও ওর মন পড়ে আছে সেই ওপারে মাঠের ধারে একটা টিনের চালের ঘরে,  সেখানে লেখা কে জানে কত কষ্ট নিয়ে বেঁচে আছে..... মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে রাতের আঁধারে লুকিয়ে দেখে আসে লেখাকে,  একটা বার লেখার সেই আদুরে নরম শরীরকে বুকে চেপে বলে যে,  অপেক্ষা কর...... আমি তোমায় নিয়ে যাবো এই নরক থেকে..... খুব ইচ্ছা করে,  কিন্তু পারে না.....।

রমাকে কিভাবে বোঝাবে নুটুর শরীরকে উত্তপ্ত করার ক্ষমতা লেখা ছাড়া আর কারো নেই।  কারণ লেখার সাথে ওর মনের যোগ..... লেখা শরীরের সাথে মন দিয়ে যৌনতায় লিপ্ত হয় ওর সাথে...... তাই নুটুর সামনে যেই থাকুক.... লেখা সেখানে চিরকাল বিরাজমান। শুধু লেখার কথা ভাবলেই ও কঠিন হয়ে ওঠে যেটা রমার নগ্নতাও পারে না।

রমার নুটুর প্রতি আকর্ষণের যৌক্তিকতা কিছু থাকলেও বাস্তবতা কতখানি? কালচার একটা বড় কথা। কথায় আছে বুক ফাটে তো মুখ ফাটে না। মুখ ফাটতে কতখানি প্রলোভনের প্রয়োজন?
[+] 1 user Likes fatima's post
Like Reply
(05-10-2025, 12:47 PM)fatima Wrote: রমার নুটুর প্রতি আকর্ষণের যৌক্তিকতা কিছু থাকলেও বাস্তবতা কতখানি? কালচার একটা বড় কথা। কথায় আছে বুক ফাটে তো মুখ ফাটে না। মুখ ফাটতে কতখানি প্রলোভনের প্রয়োজন?

খুব সুন্দর কথা বলেছেন আপনি,  তবে এখনকার সমাজ খুব দ্রুতো বদলাচ্ছে.... আমার কাহিনীতে কাউকে মহিয়ষী নারী হিসাবে দেখানো হয় নি,  একেবারে ছা পোষা মধ্যবিত্ত মানুষ,  এদের জীবনে চাহিদা,  লোভ, আকাঙ্খা,  ভয় সব মিলিমিশে একাকার.... যৌন অতৃপ্ত মানুষ ততদিনই নিষ্কলঙ্ক যতদিন উপযুক্ত সুযোগ সে না পায়......অবশ্যই সবাই না,  তবে কিছু অংশ তো বটেই....... বর্তমানে চোখ কান খোলা রাখলে দেখবেন পরকিয়ার বাড়বারন্ত,  শুধু পুরুষ নারীকে প্রলুব্ধ করে আর নারী তার শিকার হয় এটা একদমই সত্য না,  বীপরীতেও ভুরি ভুরি উদাহরণ আছে...... আসলে যৌনতা এমন একটা জিনিস যেটা যতদিন না পাই কোন ক্ষতি নেই,  কিন্তু তার সুযোগ আসলে অনেকেই নিজেকে বেঁধে রাখিতে পারে না....... আর একটা বিষয় হল নারীর নিজের প্রতি দুর্বলতা,  কেউ যৌবন রূপ সৌন্দর্য্যকে অবজ্ঞা করছে সেটা নারী মন থেকে মেনে নিতে পারে না.....
Deep's story
[+] 2 users Like sarkardibyendu's post
Like Reply
(05-10-2025, 01:51 PM)sarkardibyendu Wrote: খুব সুন্দর কথা বলেছেন আপনি,  তবে এখনকার সমাজ খুব দ্রুতো বদলাচ্ছে.... আমার কাহিনীতে কাউকে মহিয়ষী নারী হিসাবে দেখানো হয় নি,  একেবারে ছা পোষা মধ্যবিত্ত মানুষ,  এদের জীবনে চাহিদা,  লোভ, আকাঙ্খা,  ভয় সব মিলিমিশে একাকার.... যৌন অতৃপ্ত মানুষ ততদিনই নিষ্কলঙ্ক যতদিন উপযুক্ত সুযোগ সে না পায়......অবশ্যই সবাই না,  তবে কিছু অংশ তো বটেই....... বর্তমানে চোখ কান খোলা রাখলে দেখবেন পরকিয়ার বাড়বারন্ত,  শুধু পুরুষ নারীকে প্রলুব্ধ করে আর নারী তার শিকার হয় এটা একদমই সত্য না,  বীপরীতেও ভুরি ভুরি উদাহরণ আছে...... আসলে যৌনতা এমন একটা জিনিস যেটা যতদিন না পাই কোন ক্ষতি নেই,  কিন্তু তার সুযোগ আসলে অনেকেই নিজেকে বেঁধে রাখিতে পারে না....... আর একটা বিষয় হল নারীর নিজের প্রতি দুর্বলতা,  কেউ যৌবন রূপ সৌন্দর্য্যকে অবজ্ঞা করছে সেটা নারী মন থেকে মেনে নিতে পারে না.....

নারীর অনেক হিসাব করতে হয় ভাই। আর নারী সেই হিসাব করতে ভালই জানে।
[+] 1 user Likes albertmohan's post
Like Reply
(24-09-2025, 04:44 PM)sarkardibyendu Wrote:
অতৃপ্ত যৌবনের গল্প
(নতুন পর্ব) 


ভোর ভোর হারাধনের চায়ের দোকান খুলে যায়।  সকালে কাজে যাওয়ার পথে লোকজন হারাধনের দোকানে এক কাপ চা খেয়ে কাজে যেতে পারলে খুশী হয়,  লোকে বলে ওর দোকানে চা খেয়ে এতো ভালো লাগে যে ঘুম ক্লান্তি সব কেটে গিয়ে একটা তরতাজা ভাব চলে আসে।  আজ এই সকাল ৬ টায় ও দোকানের সামনে ৪/৫ জন খরিদ্দার দাঁড়িয়ে আছে।  আগেও সকালে ভীড় হতো,  কিন্তু নতুন ছোঁড়াটা আসার পর চায়ের এতো সুন্দর চা বানাচ্ছে যে যারা আগে অন্য দোকানে খেতো তারাও এখন ওর দোকানে চা খায়।  হারাধন নিজেও একদিন খেয়ে দেখেছে যদিও ওর চায়ের নেশা নেই, তবুও শখে পড়ে খেয়ে দেখে বেশ ভালো চা......সত্যি জবাব নেই ব্যাটার হাতের। 

নতুন ছেলেটা আসার পর হারাধন সকালের চাটা ওকেই করতে দেয়,  সকালে আর সন্ধ্যায় চা খোর লোকেদের ভীড় হয়,  তারা ভালো চায়ের কদরে রেগুলার আসে তাই সেই সময় ও ওকেই চা বানাতে দেয় আর নিজে অন্য খরিদ্দার সামলায়,  দুপুরের দিকে চায়ের খরিদ্দার খুব কম থাকে,  সেই সময় হারাধন নিজে চা বানায়।
খুব সুন্দর লিখেছেন। চোখের সামনে যেন দেখা যাচ্ছে।
[+] 1 user Likes ajrabanu's post
Like Reply
অতৃপ্ত যৌবনের গল্প



সন্ধ্যাবেলা মদের গ্লাস সাজিয়ে সবে দুই পেগ চুমুক দিয়েছে বিকাশ। তিন থেকে চার পেগেই বরাবর সীমাবদ্ধ থাকে ও।  একেবারে বেহেড মাতাল কখনো হয় না,  ওতে নিজের বুদ্ধিশুদ্ধি লোপ পায়।  মাথাটা হালকা ধরলেই সেখান থেকে রাজ্যের দুর্বুদ্ধিগুলো পিল পিল করে বেরিয়ে আসে।  সামনে কালা বসে সঙ্গ দিচ্ছে।  সজলকে বিকাল থেকে দেখা যাচ্ছে না।  কোথায় গেছে সেটা কালাও জানে না।  সামনে ভোট..... এখন অনেক সাবধানে থাকতে হবে।  কিন্তু সজল একেবারে রগচটা,  রেগে গেলে মাথার ঠিক থাকেনা।  সেটাই বিকাশের চিন্তার বিষয়। এমনিতেও ওর মেজাজ ঠিক নেই।  শালা.....এতো ভালো গতরকে নিজের শরীরের নিচে পিষবে বলে অপেক্ষা করেছিলো..... এদের জন্য সব গেলো..... মেয়েটারই কোন খবর নেই।  কেউ জানে না কোথায় গেছে।

ওর ওই শরীর দেখার পর আর কমলা টমলাকে হাত দিতে ইচ্ছা করছে না।  রাতে শুয়ে শুয়ে পরেশের বঊএর কথা ভেবে নিজের বাঁড়াটা ডলেছে।  আশা ছিলো ফাঁদে ফেলে ঠিক কব্জা করে নেবে,  কিন্তু মাগী এতো ঢেমনি যে ভিডিও ভাইরাল হওয়াতে একেবারে পগার পার হয়ে গেছে......বিকাশ ভেবেছিলো গ্রামের লোকের হাত থেকে বাঁচতে বিকাশের আশ্রয়ে আসবে মালটা, কিন্তু এভাবে যে একেবারে গা ঢাকা দেবে সেটা ভাবে নি,  যাই হোক,  এবার শ্বশুরকে খুনের চার্জ পড়েছে..... এর থেকে বাঁচাতে তো একমাত্র বিকাশই পারবে..... দেখা যাক এবার কি হয়...।

বিকাশ তিন নম্বর পেগটা বানিয়ে একটু অপেক্ষা করে।  কালা এর মধ্যেই চারপেগ মেরে দিয়েছে।  ব্যাটা একেবারে পেচো মাতাল।  বিকাশের সাথে এতোদিন থেকেও শিখতে পারলো না।

দরজা ঠেলে সজল  ঢুকলো,  ওর পিছনে একটা বুড়ো মাল।  মাথার চুল সাদা,  চোখে মুখে চোয়াড়ে ভাব।  একটা লুঙ্গী পড়ে নিজের বাঁড়ায় কাছে হাত রেখে ধীরে ধীরে হাঁটছে। 

সজল একটা চেয়ার টেনে বসে পড়লো।  ওর চোখ মুখ দেখে মনে হচ্ছে কিছু ভালো খবর আছে।  বুড়োটা একেবারে কাঁচুমাচু হিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বিকাশ চোখের ইশারায় ওকে দেখিয়ে বললো,  " মালটা কে? "

সজল প্লেট থেকে একটা মাছভাজা তুলে নিয়ে একটা কামড় বসায়।  সেটা চিবাতে চিবাতে বলে, " সাক্ষী ধরে এনেছি..... এর নৌকায় পালিয়েছে.... কদমতলা ঘাটে যাবে বলে বেরিয়ছিলো....। "

বিকাশ সরাসরি ভোলার দিকে ঘোরে,  " কোথায় গেলো মেয়টা,  সেটা জানো..... নাকি ঘাটে নামিয়েই চলে এসেছো?  "

সজল খিক খিক করে  হেসে ওঠে,  " দাদা এই বুড়োর রস কম না...... মেয়েটাকে চুদতে গেছিলো মাঝ রাস্তায়.... শালী দিয়েছে মেসিনে কামড়..... হা হা হা হা। "

বিকাশের চোখ বড় হয় যায়,  " বলিস কি রে,  এতো ডেঞ্জারাস জিনিস.... আমরা সাহস পেলাম না আর এ লাগিয়ে দিলো? "

ভোলা এবার একটু সাহস পেয়ে বলে,  " আজ্ঞে কত্তা ওমন মেয়েছ্যালে তো অনেক কব্জা করছি জেবনে.... কিন্তু এই মাগী একেবারে আলাদা গো...... গতরে খুব জোর.... ভয় ডর নাই একেবারে.... "

বিকাশ পেগটা শেষ করে ভোলার দিকে তাকায়, " তা কোথা থেকে ওরা পালায়?  মানে শেষবার কোথায় দেখেছিস?  "

" আজ্ঞে...... শিবপুরির ঘাটের একটু আগে..... " ভোলা বলে।

বিকাশ মুখ দিয়ে " হুঁ' বলে একটু শব্দ করে। 

ভোলা এবার একটু কাছে এসে বলে,  " একটা কতা বলবো কত্তা....? "

বিকাশের চোখ লাল,  সে ভোলার দিকে তাকিয়ে বলে,  " কি? ...... বল!  "

" আমাদের গাঁয়ের সুধা বৈষ্ণবী..... মাগীটা মেলা ঢেমনি, ওই তো ওই মেয়ডাড়ে নিজের কাছে লুকায় রাইখছিলো,  আবার সেদিন সুযোগ বুঝে চালান কইরে দিসসিলো..... " ভোলা চুপ করে।

" দাঁড়া...... সুধা মাগী তো এই গাঁয়েও আসে..... হুঁ.... গতর তো খারাপ না...... খোঁজ নে ভালো করে..."

ভোলা বলে " কত্তা..... আমি কবেই মাগীরে চাইপা দিতাম, সুদু এক গাঁয়ে থাকি বলে কিছু করতে পারি না "

" তোর মেসিন তো পরেশের বৌ অকেজো করে দিয়েছে,  আর চেপে লাভ নেই...... হি হি হি " সজল হেসে ওঠে।

বিকাশ সজলকে থামায়,  " শোন তুই এখন যা..... আর ঐ সুধা মাগী কি করে সব খবর আমায় দিবি..... "

" আর একটা কথা কত্তা...... সুধা আজকাল একটা ছোঁড়াকে জুটাইছে..... দুজনে একসাথে  থাকে.... শোয়.... শরীলের জ্বলা মেটায়..... "  ভোলা কথাগুলো বলে চুপ করে যায়।

" বাহহ.....সব কটারই তো দেখছি গুদে জ্বালা..... একেও বাবস্থা করতে হবে.... " সুধার কথা শুনে বিকাশ খুশী হয়।  সুধাকে বাগে আনা সহজ হবে,  তবে অন্য গাঁয়ের ব্যাপার তো,  সাবধানে করতে হবে কাজ।

সজল এবার বলে,  " দাদা..... পরেশের বৌটারে খুঁজে বের করে টোপ দিতে হবে...... ও যদি আমাদের কব্জায় যেচে আসে তাহলে ওই নুটু ক্যাবলাটাকে ফাঁসিয়ে খুনী বানিয়ে চালিয়ে দেবো,  একথা বললে মনে হয় রাজী হয়ে যাবে...... জেলের ঘানি আর কে টানতে চায় বলুন "

" কিন্তু ওই ছোঁড়া তো নিখোঁজ..... এই গাঁয়েই আসে নি অনেকদিন "  বিকাশ বলে।

" ধুর..... খবর আছে ও ব্যাটা গঙ্গার ওপারে শিবপুরে একটা দোকানে কাজ করে..... সে সাক্ষী আমি ঠিক যোগার করে দেবো। "  সজল আত্মবিশ্বাসী জবাব দেয়।

সজলের উপরে বিশ্বাস বেশী না থাকলেও বিকাশ একপ্রকার রাজী হয়।  দেখা যাক এবার যদি কিছু করতে পারে ব্যাটা।  তবে এর কাজকর্ম ভালো না,  কবে কোথায় ফাঁসিয়ে দেবে তার ঠিক নেই।  নিজেকে সাবধানে থাকতে হবে।  তবে কদিন ধরে একটা সন্দেহ ঈর মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে সেটা হল নরেনকে কি সজলই মেরেছে?  সজল কোন কাজ করলে সেটা বিকাশের কাছে স্বীকার করে কিন্তু এক্ষেত্রে একবারের জন্যও ও কিছু বলে নি।  বিকাশ সজলের দিকে ঘুরে যায়...

" শোন..... আমায় নির্ভয়ে একটা কথা বল তো?  "

বিকাশের এই আচরনে সজল থমকে যায়।  হঠাৎ আবার কি হল কে জানে। ও মদের পেগ হাতে নিয়ে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকায়।

" নরেনকে কি তুই মেরেছিস?  যদি মারিস আমার কাছে স্বীকার কর..... কারন আমি ছাড়া কেউ বাঁচাতে পারবে না। "

সজল গ্লাস রেখে নিজের কান ধরে,  " মায়ের দিব্যি দাদা..... নরেন ব্যাটাকে আমি মারি নি,  মারলে তোমার কাছে স্বীকার করতাম "

বিকাশের ভ্রু কুঁচকে যায়, তবে কে মারলো বুড়োটাকে?  লেখাই কি সত্যি মেরেছে ওকে?  কে জানে..... তবে খুনীকে সেটা জানতেই হবে। যদি লেখা খুনী হয় তাহলে খেলা জমবে ভালো...... বিকাশ সিগারেটে আগুন ধরিয়ে টান দেয়। 





এই কদিনে আশ্রমের পরিবেশের সাথে বেশ মিশে গেছে লেখা।  স্বামী চিত্তানন্দ ওকে নিজের মেয়ের মত দেখেন।  সেদিন সুধাময় ওকে নিয়ে আসার পর তিনি ওর মাথায় হাত রেখে বলেন,  " ভয় করিস না মা,  ঈশ্বর আছেন..... তার উপর বিশ্বাস রাখ সব ঠিক হয়ে যাবে,  এখানে নিজের বাড়ির মত থাকবি তুই.....কোন দ্বিধা করবি না... বিপদ হলে আমি সামলাবো। "

সুধাময় বলে, " বাবা, পুলিস যদি এখানে ওর খোঁজে আসে?  "

চিত্তানন্দ হাত তোলেন, " তোদের ওই থানার দারোগা গদাধর আমার খুব কাছের লোক,  সে আমার কথার অবাধ্য হবে না...... যতটা পারে সাহায্য করবে আসল অপরাধীকে খোঁজার..... পুলিসের সবাই তো অসৎ না। "

সেদি এই কথার পর লেখা মনে বেশ সাহস পায়।  এই দুর্দিনে এভাবে যে ওনাকে পাশে পেয়ে যাবে তার কৃতিত্ব শুধুই সুধাময় আর সুধাপিসির..... এরা না থাকলে ওকে এখন জেলের জীবন কাটাতে হত। 

লেখা ঘুরে ঘুরে আশ্রমের সব কাজে হাত লাগায়।  সামনে আশ্রমে দুর্গাপূজা।  অনেক কাজ আছে। এখানে এখন তিনজন পুরুষ আর পাঁচজন মহিলা থাকেন।  সবারই বয়স ৫০ বা তার বেশী।  শুধু অমলা ছাড়া।  বছর বত্রিশ তেত্রিশের অমলা আশ্রমের সব দায়িত্ব সামলায়।  টাকা পয়সা থেকে যেকোন কিছু কাজের ভার ওকেই নিতে হয়।  স্বামী পরিত্যক্তা অমলা প্রায় ১০ বছর এই আশ্রমে আছে।  সামান্য মেদবহুল আর শ্যামলা হলেও অমলাকে দেখতে ভারী মিস্টি।  আর ব্যাবহারও বেশ ভালো,  অবশ্য শুধু ও না, এখানে সবাই বেশ আন্তরিক।  তবে অমলা একটু বেশী আন্তরিক।  মনের মাঝে একরাশ কষ্ট চেপে ও হাসিমুখে সব দায়িত্ব সামিলে যায়।  কাউকে বুঝতে দেয় না ওর কষ্ট কোথায়।

লেখা মন্দিরের পাশে ফুলগাছের গোড়ায় জন্মানো আগাছা আর জঙ্গল পরিষ্কার করে দিচ্ছিলো।  সদ্য অতিক্রান্ত বর্ষার পর মাটি এখনো বেশ নরম। খুব একটা খাটনি হচ্ছিলো না সেগুলো তুলতে।  এই মন্দিরটা বহূ পুরোনো। গঙ্গার এই পাড়ে এমন বহু মন্দির আছে,  কিছু কিছু টিকে থাকলেও অনেকগুলিই ধ্বংস হয়ে গেছে।  এটাও বেশ করেক জায়গায় ভাঙা তবুও মাঝে সাঝে সংষ্কার করার দৌলতে টিকে আছে।  প্রাচীন বাংলার টেরাকোটার কাজ মন্দিরের গায়ে।  পুরোটা পোড়ামাটির ইট দিয়ে তৈরী...... মূল মন্দিরের সামনে রাসমঞ্চ,  পাশে আরো দুটো ছোট ছোট মন্দির,  সেখানে শিব লিঙ্গ স্থাপনা করা আছে। পুরো চত্বরটা আয়তনে অনেক বড়, মন্দিরের অপর দিকে আশ্রমের চালাঘর,  ইটের দেওয়ালে টিনের ছাউনি দেওয়া প্রায় ১০ টা ঘর, কয়েকটা ভেঙে গেছে আর যে কটা ভালো আছে সেখানে সবাই থাকে..... শুধু মহারাজ নিজে একা একটা ঘরে থাকেন।  বাকি ঘরে একসাথে দুইজন করে থাকে। আশ্রমের ফান্ড থেকে সবার জন্য সারাবছর রান্না হয়,  এখনো দোল,  রাস কিংবা জন্মাষ্টমীতে এখানে বহু ভক্ত সমাগম হয়,  আগের মত না হলেও যা দান ওঠে তাতে বিগ্রহ সেবা ছাড়াও কষ্টে শিষ্টে ওদের চলে যায়।  এসবই অমলার মুখে শোনা লেখার।  অনেকদিন কেউ মন্দিরে ভোগের আয়োজন করলে সেদিন আশ্রমের খরচ বেঁচে যায়।  ভক্তের দয়ায় ভালো মন্দ খাওয়া দাওয়া হয়.... তাছাড়া বাকি দিন চালে ডালে ফুটিয়ে সাথে একটা শব্জি..... এভাবেই চলে।

এখানে আসার পর প্রথম দুই দিন লেখার মন ভালো ছিলো না।  মনের গভীরে একরাশ হতাশা আর ব্যাথা নিয়ে কেই বা ভালো থাকতে পারে?  কিন্তু মাত্র দুই দিনে এখানকার সহজ সরল পরিবেশ আর আশ্রমের সবার সাহচর্য্যে ও নিজেকে অনেকটা পরিবর্তিত করতে পারেছে।  এখোন ও সবার সাথে হেসে কথা বলে,  তাদের সুখ দু:খ কে ভাগ করে নিতে চায়।  বৃদ্ধাশ্রমের মত এখানেও সবার আড়ালে এক করুন অতীত আছে।  কেউ নিজ ইচ্ছায় এখানে বাস করতে আসে নি।  তবে এখানে থাকতে থাকতে তাদের আর কোথাও যেতে মন চায় না।  এই আশ্রমই তাদের ঘরবাড়ি..... প্রাণ দিয়ে একে ভালোবাসে তারা। মাত্র কদিনে লেখারও মনে হচ্ছে বাকি জীবন এখানেই কাটিয়ে দিলে মন্দ হয় না। 

উঠে দাঁড়ায় ও।  হাতে ভেজা মাটি লেগে আছে।  খালি পায়ে শিশিরের জলে ভেজা।  উঠে দাঁড়াতেই ঠান্ডা হাওয়ার ঝটকা লাগে।  একটু দুরেই ভাগীরথী বয়ে চলেছে। আগে নাকি এই আশ্রমের পাশ দিয়ে বইতো..... কালক্রমে চর পড়ে দূরে সরে গেছে.... এখান থেকে অনেক দুরে দেখা যায় নদী..... মাঝে ফাঁকা জমি,  মাঝে মাঝে গাছ আর ঘাসবন।

অমলা এসে দাঁড়ায়। লেখার হাত পা দেখে হাসে.....ইস কি দশা করলি রে মেয়ে?  রাধাদাকে বললেই সব পরিষ্কার করে দিতো।

লেখা হাসে,  " থাক না দিদি,  আমরা কি ঠুঁটো জগন্নাথ নাকি?  এটুকু তো করাই যায়.... এমন কিছু খাটনি নেই এতে।

লেখা অমলার দিকে তাকায়।  প্রথম দিন অমলাকে বিধবা বা কুমারী ভেবেছিলো।  পরে ভালো করে দেখে সিঁথির মাঝে চিলতে সিঁদুর আর হাতে একটা নোয়া। অর্থাৎ অমলা বিবাহিত,  কিন্তু এভাবে এখানে কেনো পড়ে আছে?  নতুন এসে এসব জিজ্ঞাসা করা যায় না বলে আর কিছু বলে নি....... মমে মনে ভাবে,  ও নিজেও তো বিবাহিত, কপালের ফেরে আজ এখানে।

দুপুরে খাওয়ার পর দুজনে একসাথে চাতালে বসে।  লেখা অমলার দিকে তাকিয়ে বলে,  " একটা কথা জিজ্ঞেস করবো দিদি?  যদি কিছু মনে না কর। "

অমলা বিষণ্ণ হেসে বলে,  " আমার সিঁদুর পরা নিয়ে বলবি তো?  ও আর কি?  নতুন যে আসে সেই শুধায়,  কাউকেই সবটা বলি না..... তবে তোকে নিজের বোনের মত মনে করি...... "

লেখা অপ্রস্তুত হয়,  থাক না..... তোমার খারাপ লাগলে থাক ওসব কথা। 

নারে..... এখন আর খারাপ ভালো কিছু লাগে না,  একসময় লাগতো,  একা বসে কাঁদতাম.... আমার কপাল শুধু এমন কেনো হলো?  কিন্তু বয়সের সাথে সাথে জেনেছি আমার মত আরো হাজার মেয়ে আছে যাদের কপালে একই রকম কষ্ট.... সেই থেকে আর ভাবি না,  এখন সব মন থেকে ফিকে হয়ে এসেছে।

লেখা মায়াভরা দৃষ্টিতে অমলার দিকে তাকালো,  কথাটা মিথ্যা নয়,  বেশীরভাগ মেয়েদেরই বোধহয় জীবনের চলার পথটা এমন কষ্টকর হয়। 

অমলা একটু চুপ করে একটা সাদা পান বানিয়ে মুখে পোরে।  তারপর একটু উদাস ভাবে দূরে গাছের দিকে তাকিয়ে অতীতে ফিরে যায়......
Deep's story
[+] 5 users Like sarkardibyendu's post
Like Reply
অতৃপ্ত যৌবনের গল্প 

বর্ধমানের রাজাবাড়ি গ্রামে ছিলো আমার বাপের বাড়ি।  বাবা ব্যাবসায়ী মানুষ,  বিশাল ধান পাটের আড়ৎদার...বাড়িতে একান্নবর্তী পরিবার,  জ্যাঠা, বাবা আর কাকা ও তাদের পরিবার নিয়ে বিশাল বড় সংসার, তেরো জন সদস্য পরিবারে। আমার বাবার দুই ছেলে মেয়ে,  আমি আর ছোট ভাই। ছোট থেকেই আমি বাবার কাছে বোঝা ছিলাম,  বাবা মাঝে মাঝেই আক্ষেপ করতো...... মেয়েটার জায়গায় আর একটা ছেলে হলে কত সুবিধা হতো, দাদার দুই ছেলে... আর আমার অর্ধেক তো একে পার করতেই চলে যাবে ..

এই এক কথা শুনতে শুনতে নিজের মেয়ে হওয়ার প্রতি বিতৃষ্ণা ধরে গেছিলো।  বাড়িতে কাকাতো জেঠাতো সব ভাইবোন মিলে ৬ জন,  সেখানে একা আমি মেয়ে। কেউ আমাকে গ্রাহ্য করতো না।  মাও কারনে অকারণে আমাকে বকাঝকা করতো,  ভাইকে নিয়ে ওদের যা মাতামাতি ছিলো তার একশ ভাগের এক ভাগও আমার কপালে জুটতো না .... এভাবেই সকলের অবহেলা আর অনাদরে থাকা আমার শরীরে বাল্যকাল আর কৈশোর পার করে যৌবনে পা দেয়,   এমনিতেই আমার চেহারা বয়সের তুলনায় একটু বেশী পরিনত ছিলো..... দেখলাম এতোদিন যারা আমাকে দুচ্ছাই করতো তাদের অনেকে যেমন আমার কাকা,  জেঠতুতো দাদা আমাকে খুব ভালোবাসা দেখাতে লাগলো। 

আমার শরীরে যৌবন আসার সময় থেকেই আমার মা আমাকে সাবধান করে দিয়েছিল। তবুও পরিবারের  কারো থেকে যে আমার বিপদ হতে পারে সেটা আমি কখনো ভাবি নি।  সবার সাথে খোলামেলা ব্যাবহার করতাম আমি। খুবই সহজ সরল ছিলাম আমি।

কাকা মাঝে মাঝেই আমাকে মিস্টি ফল এসব লুকিয়ে লুকিয়ে দিতো.... আমি বড়দের ভালোবাসা ভেবে সেসব সরল মনে নিয়ে নিতাম,  কখনো মনে দাগ কাটে নি যে হঠাৎ এমন কি হল যে কাকা আমাকে লুকিয়ে লুকিয়ে ভালোবাসতে লাগলো? 

একদিন বাড়ির সবাই দল বেঁধে আমাদের নতুন দোকানের উদ্বোধনে গেলো।  বাবার আপত্তি ছিলো যে আমাকে যাওয়ার দরকার নেই। আমি গেলাম না। নাকি.... মেয়ের পা শুভ না।  মাও আমকে বললো, ' তুই বাড়ি থাক,  এদিকে নাহলে ফাঁকা হয়ে যাবে ',  শুধু আমার ঠাকুমা একা প্রতিবাদ করে,  কিন্তু অশীতিপর বৃদ্ধার কথার দাম কেই বা দেয়?  সবাই আমায় একা রেখে চলে গেলো। দুপুরে খাওয়ার পর  মনে কষ্ট নিয়ে একা একা ছাদে বসে ছিলাম।  হঠাৎ কাকা সেকানে এসে উপস্থিত।  আমিতো অবাক,  " একি.... তুমি যাও নি?  "

কাকা আমার পাশে বললো,  " নারে.... মাজাটা খুব ব্যাথা..... তুই একটু টিপে দিবি?  রাতে তোকে রসমালাই খাওয়াবো। "

আমি রাজী।  কাকা আগেও আমাকে দিয়ে গা হাত পা টিপিয়েছে।  এটাতে নতুন কিছু নেই। কাকা আমায় নিয়ে নীচের ফাঁকা ঘরে গিয়ে গেঞ্জি খুলে শুধু লুঙী পরে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়লো। আমি বিছানায় পাশে বসে কাকার মাজা ডলে দিতে লাগলাম।  বাড়িতে আর কেউ নেই,  শুধু আমি আর কাকা। 

একটু পরে কাকা আমাকে বলল,  থাক....ব্যাথা অনেকটা কমেছে..... তুই বরং এখানে একটু ঘুমিয়ে নে।  বিকালে উঠে বাজারে যাবো।

দুপুরে আমার ভাতঘুমের অভ্যাস সেটা কাকা জানে। আমি কাকার পাশে নির্দ্বিধায় শুয়ে পড়লাম। ঘুমও চলে এলো।  তখনো বাড়িতে আমি ম্যাক্সি জাতীয় পোষাক পরে থাকতাম। দুপুরের ভাতঘুমটা আমার একটু গাঢ়ই হতো।  এই ঘরটা বেশ ঠান্ডা থাকায় আমি ঘুমিয়ে গেলাম।  বেশ কিছুক্ষণ পর ঘুম ভেঙে গেলো হঠাৎ। চোখ খুলে তাকিয়ে চমকে উঠলাম। এই দৃশ্য দেখবো সময় টা স্বপ্নেও ভাবি নি।  দেখি আমার কাকা আমার ম্যাক্সি পেট পর্যন্ত গুটিয়ে দিয়েছে।  পেট থেকে পা পর্যন্ত খোলা,  শুধু আমার ছোট প্যান্টটা পরা আছে,  আর কাকা খালি গা,  নিজের লুঙি খুলে হাঁটু পর্যন্ত নামিয়ে রেখেছে,  আর এক হাতে নিজের শক্ত লিঙ্গটা উপর নীচ করে নাড়াচ্ছে।  এই দৃশ্য আমি কখনো দেখি নি,  আমি আৎকে উঠে চিৎকার করে ফেললাম, আমার জেগে যাওয়ায় কাকা ভয় পেয়ে আমার মুখ চেপে ধরলো....

" চিৎকার করিস না অমু,  আমি কিছু করবো না তোকে......শুধু তোকে একটূ দেখে এটা বের করতে দে... " কাকা অনুনয় করে উঠলো।

আমি হাত পা ছুঁড়ে দূরে যাওয়ার চেষ্টা করলাম।  কিন্তু কাকা আমার ছোট প্যান্টের ইলাস্টিকে টান দিয়ে আমার যোনীটা বের করে বললো,  " তোর এটা একটু দেখতে দে... কেউ জানবে না। "

আমি কোন কথা না শুনে  এক ঝটকায় কাকার হাত সরিয়ে কাকার কাছ থেকে পালানোর জন্য উঠে বসতে গেলাম।  আমার হাত পা অবশ হয়ে আসছিলো, গা ঘেমে একাকার..... বুকের মধ্যে হাজার হাতুড়ি পিঠছে.... কিন্তু কাকা আমায় উঠতে দিলো না।  শক্ত হাতে চেপে আমারয় শুইয়ে দিলো।

" চুপ করে শো..... এই বাড়িতে কেউ তো তোকে ভালোবাসে না,  আমার কথামত চল... আমি তোকে সব দেবো.... আর বেশী বাড়াবাড়ি করলে সবার কাছে এমন কথা বলবো যে তোর বাবা তোকে বাড়িছাড়া করবে। " কাকা দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠলো।

আমার চোখ ফেটে কান্না এসে গেলো।  এমনিতেই সবার অনাদরে কোনমতে ছিলাম, এখন এই অত্যাচার সহ্য করতে হবে...... আমার কথা এই বাড়িতে বিশ্বাস ক্ক্রার মত কেউ নেই,  আমার মাও আমার প্রতি কোন সহানুভুতি দেখায় না.....

আমি ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগলাম,  কাকা আমার ম্যাক্সি মাথা গলিয়ে খুলে দিলো, তারপর সাদা ইনার খুলে আমার উর্ধাঙ্গ একেবারে উন্মুক্ত করে দিলো,  সারা শরীরে শুধু একটা ছোট প্যান্ট ছাড়া আর কিছু নেই আমার...... আমার স্তন বয়সের তুলোনায় একটু বেশী বড় ছিলো,  কাকা সেগুলো হাতে চাপতে লাগলো,  আর ওদিকে নিজের লীঙ্গ নাড়ানো চালু ছিলো। উত্তেজনার আবেশে কাকার চোখ বন্ধ হয়ে আসলো,  ও চোখ বুজে এখাতে আমার স্তন চাপছিলো আর অন্যহাতে নিজের লিঙ্গ নাড়াচ্ছিলো...... এই সুযোগে আমি ওকে একধাক্কা মেরে দ্রুত উঠে দরজার দিকে দৌড় দিলাম....

পুরোনো বনেদী বাড়ি আমাদের,  বাঁধানো উঠানের চারিপাশে ঘর.... একপাশে খিড়কির দরজা... সেটা বন্ধ থাকলে বাইরের সাথে বাড়ির ভিতরের যোগাযোগ একেবারে বন্ধ হয়ে যায়।  বাঁধানো উঠানের মাঝে একটা কুয়ো।  আমি প্রায় উলঙ্গ অবস্থায় শুধু একটা ছোট প্যান্ট পরে উঠান নেমে আসলাম...... পুরো ফাঁকা বাড়িতে আর কেউ কোথাও নেই.... কিন্তু বেশীদূর যেতে পারলাম না,  পিছন থেকে কাকা এসে আমায় ধরে ফেল্লো..... কাকা সম্পূর্ণ উলঙ্গ..... খাড়া লিঙ্গ দুলছে.... ও আমার হাত চেপে ধরে আমার কুয়োর গায়ে হেলান দিয়ে বসিয়ে দিলো,  তারপর নিজের শক্ত খাড়া লিঙ্গ আমার মুখের সামনে নিয় বলল, " প্লীজ.... অমু,  আমি তোকে কিছু করবো না.... শুধু এটা একটু চুষে দিবি,  ব্যাস আর কিছু না....." কাকা হাঁফাচ্ছে।  নাকের পাটা ফুলে।ফুলে উঠছে ওর।

আমি দুই হাত দিয়ে নিজেকে রক্ষা করতে ব্যাস্ত। কিন্তু একজন তাগড়া প্রাপ্তবয়ষ্ক পুরুষের সাথে পেরে ওঠা সম্ভব না বুঝে আমি হাল ছেড়ে দি।  কাকা আমার মুখ খুলতে না পেরে আমার ঠোঁটের সাথে নিজের লিঙ্গ ঘষতে থাকে,  উগ্র গন্ধে আর ভয়ে আমার দম বন্ধ হয়ে আসছিলো,  হঠাৎ আমার সারা মুখ ভরে বীর্য্যপাত করে সে ক্ষান্ত হয়.... ঘেন্নায় গা গুলিয়ে আসে আমার,  আমার সারা মুখ আর বুক পেটে সাদা বীর্য্য থকথক করছে.... কাকা আমাকে সেখানে ওভাবে রেখেই চলে যায়,  আমি কুয়ো থেকে জল তুলে গায়ে ঢালি.... নিজেকে পরিষ্কার করতে করতে কাঁদতে থাকি আমি..... কাকে বলবো এই কথা?  কেউ তো বিশ্বাস করবে না আমার কথা।  উলটে আমাকেই দোষারপ করবে।

আমি আর আমার ঠাকুমা একসাথে একটা ছোট ঘরে ঘুমাতাম।  রাতে আমার ফোঁপানো শুনে ঠাকুমা মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন,  উনি ভেবেছিলেন আমাকে সাথে না নিয়ে যাওয়ায় আমি কষ্ট পেয়েছি কিন্তু এই একটা লোক ছিলো যাকে আমি সব বলতে পারতাম..... আমার মুখ থেকে সব শুনে ঠাকুমা অঝোরে কাঁদতে লাগলেন.... শেষে আমায় জড়িয়ে ধরে বললেন, " দিদিভাই....আমি আর বেশীদিন তো নেই..... এমন সব কুপুত্র পেটে ধরেছি ভাবলেই নিজের উপর ঘেন্না হয়.... আমার সেই ক্ষমতাও নেই যে তোকে বাঁচাবো..... শুধু একটা কথা বলি,  কখনো যদি এই সবের থেকে মুক্তি পেতে চাস তবে আমার গুরুদেব স্বামী চিত্তানন্দর আশ্রমে চলে যাবি.... সেখানে আমার কথা বললে উনি সানন্দে তোকে আশ্রয় দেবে.... ওনার মত দয়ালু মানুষ আমি আজ অবদি দেখি নি রে দিদি...... "

ঠাকুমা এই শোক নিতে পারে নি,  এর মাত্র ১০ দিনের মাথায় তিনি মারা যান।  আমার একমাত্র হিতাকাঙ্খী মানুষটাও বিদায় নেয়। এদিকে মাঝে মাঝেই কাকার অশালীন ব্যাবহার সহ্য করেই সেখানে থাকতে হয় আমায়।  তবে কাকা কখনো আমার যোনীতে প্রবেশ করে নি,  কেনো জানি না...... ওর যৌনতা আমাকে ছোঁয়া আর দেখার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো। "

এই পর্যন্ত বলে থামে অমলা।  ওর চোখের কোনে জল চিকচিক করছে।  মুখে বেদনার ছাপ।  এক অপূর্ব লাবণ্য আছে অমলার মুখে..... ওর শরীর একটু ভারী হলেও মুখের লাবণ্যেত কারণে সহজেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে।  লেখা ওর দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে...... " এভাবেই কাকার অত্যাচার চললো বিয়ে পর্যন্ত?  "

অমলা ওর দিকে তাকিয়ে একটু হেসে বলল,  " এর থেকেও ভয়ঙ্কর অবস্থা অপেক্ষা করছিল আমার জন্য "

" কি বলছো?  এর থেকেও?  কে সে.....?  "

অমলা পানের পিক ফেলে বলল, " সেদিন ফাঁকা বাড়িতে আমি আর কাকা ছাড়া আরো একজন ছিলো আমাদের অজান্তেই..... আমার জ্যাঠাতো দাদা প্রবীর।  ঠাকুমা মারা যাওয়ার পর মনের কষ্ট লাঘব করতে রাতে খোলা ছাদে গিয়ে দাঁড়াতাম আমি। সেখানে দাঁড়িয়ে নানা পুরানো কথা ভেবে ভেবে সময় কাটাতাম।  এভাবেই একদিন রাতে ছাদে দাঁড়িয়ে আছি এমম সময় পিছন থেকে দাদা এসে দাঁড়ালো,  সরাসরি আমার পাছার সাথে নিজেকে ঠেকিয়ে ও আমার দুহাতে পেট জড়িয়ে ধরে।  আমি চমকে উঠে বলি, " কি করছিস! ..... ছাড় " আমার শক্তি প্রয়োগ করে ওর কাছ থেকে নিজেকে ছাড়াতে উদ্যত হই আমি। কিন্তু ও আমায় ছাড়ে না,  উলটে বলে,  " দেখ অমু..... সেদিন ছোটকা আর তোর কান্ড কারখানা সব দেখেছি আমি..... কাকাকে দিবি আর আমাকে না দিলে কিন্তু সবাইকে সব জানাবো আমি,  আর দোষটা একা কাকাকে দেবো না..... তোকেও সমান ভাবে দেবো। "

আমি অবাক হয়ে ওর মুখের দিকে তাকালাম।  এরা কে?  আমার আত্মীয়?  আমার শুভাকাঙ্কী? না শরীরলোভী পিশাচ? আধো আলোয় ওর কুটিল মুখের হাসিতে আমার বুক কেঁপে উঠলো,  পা আটকে গেলো আমার সেখানে..... এদিকে দাদার হাত ম্যাক্সির উপর দিয়ে আমার পুরুষ্ট বুক পেষাই করছে আর এক হাতে ম্যাক্সি কোমরে গুটিয়ে সেখান দিয়ে আমার ছোট প্যান্টের ভিতর দিয়ে যোনীতে পৌছে গেছে......পাতলা চুলে ঢাকা যোনী খাবলাতে খাবলাতে ও প্যান্টের উপর দিয়ে ওর খাড়া লিঙ্গ আমার পাছাত খাঁজে ঘষছে...... ওর ভাব দেখেই বুঝিতে পারছি যে প্রথম কোন নারী শরীর স্পর্শ করছে ও। আমার কাছে দাঁড়িয়ে এসব সহ্য করা ছাড়া আর উপায় ছিলো না।  দুচোখ দিয়ে অঝোরে জলের ধারা নেমে আসছে আমার..... চিৎকারটা গলায় দলা হয়ে আটকে গেছে..... মাত্র তিন মিনিটের মাথায় দাদার বীর্যপাত হয়ে যায়..... আমাকে ছেড়ে দেয় ও। নীচে যাওয়ার সময় বলে যায়,  " কাল রাতে তোর ঘরে আসবো..... রেডি থাকবি। "

ঠাকুমা মারা যাওয়ার পর আমি একাই সেই ছোট ঘরে থাকতাম।  পরেরদিন রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়লে দাদা আমার ঘরে আসে।  আমি এক অসহায় পুতুলের মত ওর ভোগ্য হয়ে যেতাম।  আমায় নগ্ন করে ও আমার শরীরে প্রবেশ করতো.......এলোপাথারী যৌনতার পর বীর্যপাত করে চলে যেতো..... কাকা রাতে কখনো আসে নি কারন কাকীমা সাথে থাকতো,  কিন্তু দাদার সেই ভয় ছিলো না,  প্রায় রাতেই ও  নিজের ২২ বছরের শরীরের চাহিদা মেটাতে আমার ঘরে চলে আসতো,  অনেক হাতে পায়ে ধরেও ওকে নিরস্ত করতে পারি নি আমি..... এমনকি আমার জন্য গর্ভনিরোধক বড়ি এনে আমায় খাওয়াতো যেনো আমি গর্ভবতী না হয়ে যাই...... "

অমলা একটু থেমে আবার শুরু করলো,  " কিছুদিনের মধ্যি বাড়ি থেকে আমার বিয়ে ঠিক করে ফেল্লো..... উনিশ বছর বয়স তখন আমার..... ভাবলাম,  যাক এবার মুক্তি হলো.... কিন্তু কথায় বলে না,  অভাগা যেদিকে যায় সাগর শুকায়ে যায়...... আমার হল সেই দশা..... আমার স্বামী দুই ভাই, বনেদী বড়লোক.... এখন কিছু না থাকলেও ঠাঁট বাঁটের অভাব নেই,  দুই ভায়েরই যাত্রাপালার শখ..... বেশীর ভাগ সময় তারা যাত্রা নিয়েই কাটায়..... আমার বড় জা অঞ্জুর মুখেই শুনলাম ওর কষ্টের কথা,  আমার ভাসুর যাত্রাপালা আর মেয়েমানুষ নিয়েই থাকে,  আমার স্বামীও দাদারই মত..... মদ খাওয়া আর মেয়েদের নিয়ে ফুর্তি করা ছাড়া এরা কিছু বোঝে না,  পালা থেকে যা আয় হয় তার চেয়ে বেশী খরচ করে মেয়ে আর মদের পিছনে.... কিছু বলতে গেলেই কপালে জোটে বেদম মার, অঞ্জুর শরীরে অনেক জায়গায় কাটা দাগ জ্বল জ্বল করছে,  ও এখন সব মুখ বুজে মেনে নিয়েছে..... আমার স্বামী প্রতাপ প্রথম কয়দিন আমার সাথে স্বাভাবিক যৌনতা করে,  তবে এতোদিন যৌন অত্যাচার সহ্য করে করে পুরুষের প্রতি আমার সব আকর্ষন শেষ হয়ে গেছিলো.... ওর কাছেও আমি নিশ্চুপ হয়ে পড়ে থাকতাম,  ও ওর কাজ শেষ করে চলে যেতো.... কিন্তু মাস দুই পর থেকেই ওর পরিবর্তন হলো, আর আমার শরীর ওর ভালো লাগতো না.... রাত্র মদ  খেয়ে টাল হয়ে আসতো,  তারপর আমার বাপের বাড়ি থেকে টাকা আমার জন্য আমাকে মারধর শুরু করতো,  আমার বাবা আমাকে বিয়ে দিয়ছেন এটাই অনেক,  এরপর আমি মরে গেলেও এক টাকাও দেবেন না সেটা জানতাম আমি.... তাই কিছু না বলে চুপচাপ সব অত্যাচার সহ্য করতাম....

অঞ্জু আর আমি দুজনেই একই ভুক্ত ভোগী। বোধহয় সেই  কারণেই আমাদের মধ্যে গড়া  উঠলো দারুণ সখ্য।  নিজেরা নিজেদের সুখ দু:খ নিয়ে আলোচনা করে কিছুটা কষ্ট লাঘব করতাম। বেশীর ভাগ দিনই ওরা দুই ভাই রাতের পালা নিয় দূর দুরান্তে চলে যেতো,  সেদিন আমি আর অঞ্জু একসাথে ঘুমাতাম... অঞ্জু দেখতে খারাপ ছিলো না,  উচ্চতা কম হলেও চেহারা বেশ ভালো,  গায়ের রঙ ফর্সা,  চোখ নাক মুখ কাটাকাটা..... বুক, পাছা বেশ বড়ো।

সেদিনও রাতে আমি আর অঞ্জু একসাথে ঘুমাতে গেলাম,  খুব গরম থাকায় আমরা দুজনেই ব্লাউজ খুলে শুধু শাড়ী গায়ে জড়িয়ে শুলাম, মেয়ে হয়ে আর একটা মেয়ের  কাছে আর লজ্জার কিছু নেই ....গল্প করতে করতে একসময় আমার ঘুম নেমে এলো,ঘরে একটা হালকা নাইট বালব জ্বলছিলো,  হটাৎ ঘুম ভেঙে তাকিয়ে দেখি আমার বুকের কাপড় সরে গেছে আর অঞ্জু কনুইয়ে ভর দিয়ে আধশোয়া হয়েছে সেদিকে তাকিয়ে আছে।  একটা মেয়ের সামনে আর একটা মেয়ের লজ্জা পাওয়ার কথা না,  কিন্তু আমার কেমন লজ্জা লাগলো..... আমি কাপড় দিয়ে আমার বুকটা ঢাকতে গেলে ও আমায় বাধা দিলো... তারপর আমার দিকে সরে এসে ধীরে নিজের নরম হাত আমার একটা বুকের উপর রাখলো,  জানি না এতো লোকের পুরুষালি হাতে পিষ্ট হবার পর অঞ্জুর নরম হাতের স্পর্শ আমার মধ্যে কেমন একটা উত্তেজনা তৈরী করলো,  প্রথম বারের জান্য আমার মধ্যে সেক্স জিনিসিটা তৈরী হল,  ঠান্ডা বাতাসের ঝাপ্টার মত শিরশির করে উঠলো আমার গা,  রোম খাড়া হয়েছে গেলো...... অঞ্জু আমার শাড়ির কোমরের গিঁঠ খুলে শায়ার দড়িতে হাত দিলো.... খুব ভালো উপভোগ করছিলাম আমি ওর হাতে নগ্ন হওয়াটা,  আমাকে সম্পূর্ণ নগ্ন করে ও জড়িয়ে ধরে আমার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট রাখে...... একটা নরম, মিস্টি,  ভেজা ঠোঁটের চাপে আমি কেঁপে উঠলাম "

অমলা একটু থামলো লেখার প্রতিক্রিয়া দেখার জন্য।  তারপর বললো,  " আমায় খারাপ ভাবছিস না তো?  "

লেখা মৃদু হেসে বলল, " চাহিদা তো সবার থাকে গো.... আমি বুজতে পারছি পুরুষের অত্যাচার, তাদের প্রতি ঘৃণা  তোমায় নারীর দিকে ঠেলে দিয়ছে যৌন ক্ষিদে মেটাতে.... এতে দোষের কিছু নেই গো।"

অমলা একটা শ্বাস ফেলে আবার বলে,  " কেনো জানি না আমি অঞ্জুতে আকৃষ্ট হয়ে গেলাম... ও আমার নগ্ন শারীরকে নিজের হাতে সুখ দিলো,  আর আমি প্রান ভরে ওর নগ্ন শরীর উপভোগ করলাম.....সত্যি বলতে এতোদিন আমি যৌনতাকে কখনো উপভোগ করি নি কিন্তু সেদিন যখন অঞ্জু আমায় উলঙ্গ করছিলো,  আমার স্তনের বোঁটা নিজের মুখে নিয়ে চুষছিলো,  তারপর আমার কামার্ত যোনীতে নিজের আঙুল ঢুকিয়ে আমায় তৃপ্ত করার চেষ্টা করে তখন আমি স্বর্গসুখ পাচ্ছিলাম।  কাকা,  প্রবীর বা প্রতাপের নগ্ন শরীর দেখেও কোনদিন আমার ভাবে উত্তেজনা তৈরী হয় নি যেটা সেদিন অঞ্জুর সাথে হলো...... দুটো পূর্ণ নগ্ন নারী শরীর তিল তিল করে একে অপরের থেকে সুখ আদায় করে নিলো..... "

একটু থেমে আবার বলল অমলা,  " কিন্তু এটাই কাল হল আমাদের,  যত দিন গেলো আমাদের মধ্যে এই পরস্পরের প্রতি আকর্ষন বেড়েই চললো.....ফাঁকা বাড়িতে আমি আর অঞ্জু ঘন ঘন সমকামে মেতে উঠতাম..... কিন্তু একদিন ধরা পড়ে গেলাম দুই ভাইয়ের কাছে,  প্রবল প্রহারের পর অঞ্জুকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দিলো ভাসুর.... আর প্রতাপ আমাকে চলে যেত বললো, আমার বাড়ি ফেরার রাস্তা নেই, সেখানে কেউ আমাকে আশ্রয় দেবে না.... উলটে এই কথা শুনলে দূর করে তাড়াবে.... একা অসহায় আমি এক কাপড়ে চলে এলাম এই আশ্রমে..... সেদিন মহারাজ আমায় যেভাবে আশ্রয় দিয়েছেন তার প্রতিদান আমি জীবনেও দিতে পারবো না.... একটা অসহায় মেয়েকে শুধু আশ্রয় দেওয়াই না, তাকে রিতীমত স্নেহ আর ভালোবাসা দিয়ে আপন করে নিয়েছিলেন তিনি "

অমলার চোখ থেকে জল গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে।  লেখা হাত দিয়ে সেটা মুছে দিয়ে বলল, " কেঁদো না দিদি..... তুমি তো তবু একটা আশ্রয় পেয়েছো.... কত মেয়ে তো এভাবেই শেষ হয়ে যাচ্ছে, আশ্রয়হীন হয়ে.....ভগবানের আশ্রয় সব থেকে বড় আশ্রয়.... '

অমলা আঁচলে চোখ মুছে বলে, " তাইতো তোর ঘটনা শোনার পর তোকে আমার এত আপন মনে হয়েছে রে পোড়ামুখী....... তোর এই দিদি যতদিন আছে তোকে বাঁচানোর চেষ্টা করে যাবে,  একদম ভয় পাবি না..... "

সন্ধ্যা হয়ে এসেছে প্রায়।  এই সময় নদীর পাড়ে খুব মিস্টি হাওয়া দেয়।  লেখা বলে,  " দিদি..... চলো আজ একটু নদীর পাড় থেকে ঘুরে আসি.....। "

অমলা একটু ভেবে বলে,  " যাবি?  চল কিন্তু বেশী দেরী করা যাবে না কিন্তু। "

" না না...... একটু থেকেই চলে আসবো। "

অমলা আর লেখা আশ্রম থেকে বেরিয়ে নিদীর দিকে হাঁটা শুরু করে।  অমলার ভালো লাগে, যাক মেয়েটা একটু একটু করে সহজ হচ্ছে।





ভিডিওটা যে সজলই ভাইরাল করে তার প্রমাণ পেয়ে গেছে গদাধর।  সজলের মোবাইলেই নেওয়া হয়েছিলো ভিডিওটা।  কিন্তু খুনটা ও করেছে কিনা সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হতে পারে নি ও।  সেদিন রাতে সজল বাড়িতেই ছিলো,  সকালের আগে তাকে কেউ বেরোতে দেখে নি..... অন্তত সোর্স তাই বলছে,  শুধু ভিডিও ভাইরালের কেসে সজলকে আটকে রাখা যাবে না।  সহজেই বেল পেয়ে যাবে। কিন্তু খুনের চার্জেও ওকে গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না।  কারন কোন প্রমান নেই,  এদিকে বিকাশ সামন্ত উপর মহলে প্রেশার দিয়ে লেখাকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চালাচ্ছে।  লেখা কোথায় আছে সেটা বিকাশ না জানলেও গদাধর জানে।  মহারাজ নিজে ওকে ফোন করেছিলেন...... মহারাজ বলেছেন যে লেখা নির্দোষ,  গদাধর যেনো আসল খুনীকে খুঁজে বের করে.... গদাধরও চেষ্টা চালাচ্ছে.... কিন্তু কোনো ক্লু পাওয়া যাচ্ছে না।  এভাবে চললে বেশীদিন আর লেখাকে বাঁচাতে পারবে না ও।  বিকাশের বাহিনী লেখাকে হন্য হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছে।  গদাধর শুনেছে বিকাশ অত্যন্ত নারীলোভী...... মেয়েদের অবস্থার সুযোগ নিয়ে তাদের সাথে যৌনতা করাই ওর লক্ষ্য,  এই গ্রামে লেখার থেকে সুন্দরী যে কেই নেই সেটা জানার পর ও ক্ষেপে গেছে লেখাকে ভোগ করার জন্য,  আর সেটা ক্ল্রতে ও অনেক নীচে নামতে পারে।

একটা সিগারেট ধরিয়ে ধোঁয়া ছাড়ে গদাধর,  দেখে আশারুল আসছে,  ওর চোখে মুখে কোন গোপন তথ্য পাওয়ার উচ্ছ্বাস.... গদাধর সোজাহয়ে দাঁড়ায়।।

আশারুল আছে এসে বলে,  " স্যার,  একটা খবর পেলাম...."

" সেতো বুঝতে পারছি..... কি খবর বল। " গদাধর উৎসাহ চেপে রেখে বলে।

আশারুল চারিদিকে তাকিয়ে গলা নামিয়ে বলে,  " সেদিন কুসুমগঞ্জের হাটবার ছিলো....হাটে অনেক ভোরে খরিদ্দার হয় বলে নিতাই ওর চায়ের দোকান খুলেছিলো.... নিতাই সেই ভোরে একজনকে চাদর মুড়ি দিয়ে গ্রামে ঢুকতে দেখে.... হাটের লোক হলে সে উল্টোদিকে যেতো কিন্তু লোকটা গ্রামের দিকেই আসে,  নিতাই বলে,  সাধারণত এতো ভোরে কোনদিন কেউ গ্রামে আসতে দেখা যায় নি,  আর লোকটা একেবারে প্রথম বাস থেকে নামে আর সোজা গ্রামের দিকে হাঁটা দেয়। "

গদাধরের মুখে চিন্তার ছাপ দেখা যায়।  গ্রামের লোক ভোরে ওঠে এটা ঠিক,  কিন্তু এতো ভোরে গ্রামে কে আসতে পারে?  তাও বাসে? 

" নিতাই লোকটাকে চিনতে পারে নি? "

" না.... চাদর ঢাকা দেওয়া থাকায় চেনা সম্ভব হয় নি। "

" হুঁ.....এখন এতো ঠান্ডা পড়ে নি যে চাদর গায় দিতে হবে.....তার মানে লোকটার উদ্দেশ্য সৎ ছিলো না "

গদাধরেত চিন্তা আবার জট পাকিয়ে যায়।  তার মানে গ্রামের কেউ খুনী না।  খুনী বাইরে থেকে এসেছে?  কিন্তু কে সে?  নরেনের সাথে তার কি শত্রুতা? 

" আচ্ছা,  নরেনের বডি কে ক্লেম করে?  "

" আজ্ঞে স্যার......পরেশ, ওর ছেলে...... শহরে থাকে,  অনেক পরে খবর পেয়ে আসে। "

চমকে ওঠে গদাধর...." আচ্ছা,  ওর ছেলেকে তো জেরা করা হয় নি..... একবার খবর পাঠা তো ওকে কাল এখানে হাজির হওয়ার জন্য। "

আশারুল ঘাড় নেড়ে চলে যায়।  গদাধরের মুখে হাসি ফুটে ওঠে। দেখা যাক পরেশ কি ক্লু দিতে পারে এই বিষয়ে।

এখন একবার মহারাজের আশ্রমে যেতে হবে।  লেখার সাথে সামনা সামনি কথা বলা দরকার।  না হলে সব কিছু বোঝা যাচ্ছে না। 

" আশারুল!  " গদাধরের ডাকে আশারুল এসে উপস্থিত হয়।  " আমি একটু বেরোচ্ছি,  এদিকে খেয়াল রেখো....কিছু হলে আমায় জানাবে। "

আশারুল মাথা নাড়ে।  গদাধর বাইকে উঠে স্টার্ট দেয়। 
Deep's story
[+] 6 users Like sarkardibyendu's post
Like Reply
(08-10-2025, 05:08 PM)ajrabanu Wrote: খুব সুন্দর লিখেছেন। চোখের সামনে যেন দেখা যাচ্ছে।

অনেক ধন্যবাদ.....
Deep's story
Like Reply
(08-10-2025, 06:33 PM)sarkardibyendu Wrote:
অতৃপ্ত যৌবনের গল্প 

বর্ধমানের রাজাবাড়ি গ্রামে ছিলো আমার বাপের বাড়ি।  বাবা ব্যাবসায়ী মানুষ,  বিশাল ধান পাটের আড়ৎদার...বাড়িতে একান্নবর্তী পরিবার,  জ্যাঠা, বাবা আর কাকা ও তাদের পরিবার নিয়ে বিশাল বড় সংসার, তেরো জন সদস্য পরিবারে। আমার বাবার দুই ছেলে মেয়ে,  আমি আর ছোট ভাই। ছোট থেকেই আমি বাবার কাছে বোঝা ছিলাম,  বাবা মাঝে মাঝেই আক্ষেপ করতো...... মেয়েটার জায়গায় আর একটা ছেলে হলে কত সুবিধা হতো, দাদার দুই ছেলে... আর আমার অর্ধেক তো একে পার করতেই চলে যাবে গ
সংলাপ বড্ড পোষাকি হয়ে গেছে। গ্রামের মেয়েরা অমন ভাষায় কথা বলে না।
[+] 2 users Like achinto's post
Like Reply
(09-10-2025, 06:44 PM)achinto Wrote: সংলাপ বড্ড পোষাকি হয়ে গেছে। গ্রামের মেয়েরা অমন ভাষায় কথা বলে না।

ভালো কথা বলেছেন..... তবে আমি অমলাকে একেবারে গ্রাম্য মহিলা রূপে দেখাতে চাই নি, গল্পে ভাষাটা তার আভিজাত্য প্রকাশ করে তাই সাধারন ভাষা প্রয়গ করেছি।
Deep's story
[+] 1 user Likes sarkardibyendu's post
Like Reply
(10-10-2025, 11:04 AM)sarkardibyendu Wrote: ভালো কথা বলেছেন..... তবে আমি অমলাকে একেবারে গ্রাম্য মহিলা রূপে দেখাতে চাই নি, গল্পে ভাষাটা তার আভিজাত্য প্রকাশ করে তাই সাধারন ভাষা প্রয়গ করেছি।

শুধু গ্রামের মেয়েই নয়। অমলা যে ভাষায় কথা বলছে সেটা শিক্ষিত নারীরও কথ্য ভাষা নয়। অচিন্ত্য বাবুর মন্তব্য কিন্তু বেশ ব্যাপ্তিকর।
[+] 1 user Likes PramilaAgarwal's post
Like Reply
(10-10-2025, 05:29 PM)PramilaAgarwal Wrote: শুধু গ্রামের মেয়েই নয়। অমলা যে ভাষায় কথা বলছে সেটা শিক্ষিত নারীরও কথ্য ভাষা নয়। অচিন্ত্য বাবুর মন্তব্য কিন্তু বেশ ব্যাপ্তিকর।

আপনাকে ও অচিন্ত্যবাবুকে অনেক ধন্যবাদ..... অবশ্যই পরের গল্পে এই বিষয়গুলো মাথায় থাকবে।
Deep's story
Like Reply
অতৃপ্ত যৌবনের গল্প

আশ্রমের পাশ থেকে একটা পায়ে চলা পথ নদীর দিকে চলে গেছে।  এই জায়গাটা আগে নদীর মধ্যেই ছিলো।  কালক্রমে চর পড়ে নদী দূরে সরে যাওয়ায় এটা পরিত্যক্ত চরে পরিনত হয়েছে। মাঝে মাঝে বড় বড় ঘাসের জঙ্গল,  দুই একটা বাবলা গাছ মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে।  দূরে কাশ ফুলের সারি দেখা যাচ্ছে,  বাতাসে কেমন যেনো মাতাল করা সুবাস।  মাটির রাস্তা ক্রমেই নদীর দিকে ঢালু হয়ে গেছে। লেখা আর অমলা দুই বাল্যসখীর মত হাত ধরাধরি করে হেঁটে চলে,  মাত্র সাত আট মিনিটের রাস্তা। 

" সাবধানে হাঁটিস..... এই সময় এই চরে বিষাক্ত সাপের উপদ্রব খুব...., কেউটে, কালাচ আর গোখরোর ছড়াছড়ি " অমলা সাবধান করে লেখাকে।

" জানি গো দিদি..... মাঠে ঘাটে বড় হওয়া মেয়ে আমি.... সাপ কোথায় থাকে জানবো না?  " হাসে লেখা।

সুর্য্য পুরো অস্ত চলে গেছে।  একটা হালকা আলো চারিদিকে ছড়িয়ে আছে।  একে গোধুলি বলে, পশ্চিম আকাশ একেবারে লাল........ সেই লাল রঙ নদীর জলে পড়ে সেটাকেও রক্তাভ করে তুলেছে।  কি অপূর্ব দৃশ্য.... এখানে নদীর পাড় একেবারে ঢালু হয়ে নেমে গেছে..... স্রোত তেমন নেই।

লেখা হাঁটু জলে নেমে দুই হাতে জল তুলে ছিটায়।  আজ মনটা ওর বেশ ভালো লাগছে,  মনে হচ্ছে নতুন করে আবার সব শুরু করার দরকার।  অমলা ওর থেকে বড় হলেও এমন কিছু বয়স না.... চাইলে ও আবার শুরু করতে পারতো,  কিন্তু অমলা এই আশ্রমের জীবনেই সুখী.... এই বয়সে শারীরিক চাহিদা ত্যাগ করে একপ্রকার সন্ন্যাস নেওয়াটা কি সত্যি সম্ভব?  লেখার মাথায় আসে না।  ওর কাছেও আশ্রমের পরিবেশ ভালো লাগে কিন্তু শরীরে উত্তেজনা আসলে ও নিজেকে সন্ন্যাস জীবনের কবলে সঁপে দেওয়ার কথা ভাবতেই পারে না।  বিশেষত নুটুর সাথে সঙ্গমের পর ওর চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে.... যে কাউকে ও শরীর দিতে পারবে না এটা সত্যি কিন্তু...... নিজের মানুষকে তো ছেড়ে থাকতে মন চায় না।

লেখা বাচ্চাদের মত জল নিয়ে খেলা করে,  সেটা দেখে অমলার দীর্ঘশ্বাস পড়ে।  বেচারা মেয়েটা একেবারে বাচ্চা..... এই বয়সে এতো আঘাত সহ্য করার মত ক্ষমতা সবার থাকে না,  ও যে এসব কাটিয়ে আবার সহজ হতে পারছে সেটা সবাই পারে না।

অমলা দূরে শুকনো জায়গায় দাঁড়িয়ে লেখাকে জরিপ করে।  অপূর্ব সুন্দর মেয়েটা।  রূপে কোথাও খামতি নেই,  অঞ্জুর কথা মনে পড়ে যায় ওর।  অঞ্জুও খুব রূপসী ছিলো.... অমলার থেকে তো বটেই। শরীররে কাঁটা দিয়ে ওঠে অমলার। লেখাকে দেখে কি আবার পুরোনো অভ্যাস মাথাচাড়া দিচ্ছে ওর?  নারী হিসাবে পূর্ণ যৌবনা ও।  যৌবনের মধ্যগগণে বিরাজ করছে..... কিন্তু এতো বছর আশ্রমের পরিবেশে থাকতে থাকতে নিজেকে সংযত করে নিয়েছে।  কিন্তু আজ হঠাৎ লেখাকে দেখে শরীর ব্যাকুল হয়ে উঠছে। 

" এসো না দিদি.... আসলাম যখন তখন একটা ডুবকি মেরেই যাই " লেখা আবদার করে।

" না না..... এই ভর সন্ধ্যায় ঠান্ডা লেগে যাবে... " অমলা সচকিত হয়।

লেখা নাছোড়বান্দা,  " ধুর! কিছু হবে না...... আমি কত স্নান করেছি সন্ধ্যায় " লেখা একটু উঠে এসে অমলার হাত ধরে টানে।

ইচ্ছা না থাকলেও অমলা ওর সাথে জলে নামে,  দুজনে কোমর জলে পৌছায়,

" এসো হাত ধরো আমার " লেখা খিলখিল করে হেসে ওঠে।

অমলা ওর হাত ধরে দুজনে একসাথে ডুব মারে,  কোন মানে হয় এই সন্ধ্যায় নদীতে স্নান করার?  পাগল মেয়েটাকে কে বোঝাবে?

দুটো ডুব মেরে দাঁড়িয়ে যায় অমলা,  " আর না.... তুই এবার জ্বর-জ্বারি বাধিয়ে ছাড়বি.... যা,দেখছি। " অমলা প্রতিবাদ করে ওঠে। 

লেখা হেসে ওঠে,  " ব্যাঙের আবার সর্দিকাশি.....মাঠে ঘাটে বড় হওয়া মেয়ে আমি.... "

অমলার চোখ আটকে যায়,  লেখার আঁচল খসে পড়েছে,  ভেজা ব্লাউজের ভিতর থেকে পুরুষ্ট বুকের শক্ত বোঁটা জানান দিচ্ছে তার অস্তিত্ব....ব্লাউজের কাটা জায়গা দিয় স্তনের ভাঁজ দেখা যাচ্ছে...... নীচে একেবারে ফর্সা খোলা পেটের মাঝে সুন্দর নাভির গর্ত...... অবিভূত হয়ে যায় অমলা,  ওর নিজের বুক ভারী হয়ে আসে,  চোখের মণীতে কামনা...... গোধুলির শেষ আলো লেখার শরীরে পড়ে ওকে মায়াবী ক্ক্রে তুলেছে..... স্তনের ভাঁজে বিন্দু বিন্দু জল চকচক করছে,  কেমন একটা মোহগ্রস্তের মত অমলা লেখার একেবারে কাছে এগিয়ে আসে,  নিজের হাত রাখে লেখার ভরাট বুকে....... লেখা অমলার এই আচরনে হঠাৎ থমকে যায়,  অমলার হাত ওর ব্লাউজের হুক খুলে দুটি স্তন আলগা করে  দেয়........ ওর ঠোঁট নেমে আসে লেখার স্তনবৃন্তে..... মুহূর্তেত মধ্যে লেখা বুঝে যায় কি হতে চলেছে,  ও দুই হাতে অমলার কাঁধ ধরে ওকে আটকে দেয়,  অস্ফুট স্বরে বলে " দিদি....!! "

চমকে ওঠে অমলা। লেখার মুখের দিকে তাকিয়ে ঘোর ভাঙে ওর,  ছি ছি..... একি করতে যাচ্ছে ও?  লজ্জায় অমলার চোখমুখ লাল হয়ে আসে।  ও লেখার দিকে আর তাকাতে পারে না..... তাড়াতাড়ি জল থেকে উঠে হাঁটা দেয় ভেজা কাপড়েই,  লেখা কোন কথা না বলে ওকে অনুসরন করে। 

মুহুর্তের উত্তেজনার বশে করা ভুলে অমলা লজ্জিত হয়ে গোটা পথ আর কোন কথা বলে না।  লেখা বুঝতে পারে যে অমলা লজ্জিত নিজের আচরনে,  এখন কথা বলা মানে লজ্জা আরো বাড়বে..... থাক পরে দেখা যাবে,  অমলার আচরনে ও বিস্মিত হলেও রাগ করে নি। পুরুষের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়েই অমলা আর অঞ্জু সমকামে নিজেদের তৃপ্তি খুঁজে পায়,  কাম নারী পুরুষের বাধা মানে না......যে যাতে তৃপ্ত সে সেই পথেই এগোয়,  কেউ বিষমকামী তো কেউ সমকামী,  আবার কেউ স্ব-মেহনেই নিজের তৃপ্তি পায়..... এটাকে ভুল ভাবার কোন কারণ নেই,  ক বছর আগে হলেও লেখা বিরক্ত হতো,  কিন্তু নানা ঘাত প্রতিঘাতে ও এখন আর চমকায় না।  সহজ ভাবে নিতে পারে।

অন্ধকার নেমে এসেছে।  আশ্রমের গেটের মুখে কোন আলো নেই,  দূর থেকে একটা বাইকের হেডলাইটের আলো দেখা যাচ্ছে।  অমলা সেদিকে না তাকিয়েই দ্রুতো হেঁটে চলেছে।  লেখার কেমন খটকা লাগে,  এই রাস্তাটা অন্য কোথাও যায় নি,  আশ্রমের কাছেই শেষ হয়েছে,  তাহলে এখানে বাইকে করে কে এলো... ও একটু ধীর করে দেয় চলার গতি। হঠাৎ বাইকের ইঞ্জিনের গর্জন বেড়ে যায় আর সেই সাথে হেডলাইটের তীব্র আলো ওর গায়ে এসে পড়ে।  বাইকটা বেগে এসে ওর পাশে দাঁড়ায়,  তীব্র আলোয় চোখ ধাঁফহিয়ে যায় লেখার,  ওর চোখে আলো সইবার আগেই একটা বলিষ্ঠ হাত ওর কব্জি চেপে ধরে...... অমলা তখন সামনে এগিয়ে গেছে,  লেখার অস্ফুট আওয়াজে আর বাইকের অস্বাভাবিক আচরনে ও ঘুরে তাকায়।

দুজন লোক বাইকে সওয়ার.... দুজনেরী মুখে কাপড় জড়ানো..... পিছনের লোকটা লেখার হাত চেপে ধরেছিলো, এবার কর্কশ কন্ঠে বলে ওঠে,  " খুন করে পালিয়ে বাঁচা যাবে না সুন্দরী...... চুপচাপ বাইকে ওঠো তাহলে এ যাত্রায় বেঁচে যাবে....। "

ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসে লেখার।  সবে দুদিন হলো ও নিজেকে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনছিলো..... ওদের কথায় ওর বুকের ধুকপুকানি বেড়ে যায়,  হাত পা অবশ হয়ে আসে.... কি করা উচিৎ ভেবে পায় না। 

অমলা ঘুরে এই দৃশ্য দেখেই ছুটে আসে,  লেখাকে স্থানুর মত দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ও এক ধাক্কায় ওকে সরিয়ে দেয়।  লেখা লোকটার হাত ছাড়িয়ে পাশে গড়িয়ে পড়ে,  পিছনের লোকটি রেগে গিয়ে একটা ধারালো ছোরা বের করে অমলাকে লক্ষ্য করে কোপ বসায়.... অমলা হাত তুলে নিজেকে বাঁচাতে যাওয়ায় সেই কোপ ওর হাতে এসে পড়ে,  মুহুর্তে হাত কেটে গলগল করে রক্ত বেরোতে থাকে.... ও চিৎকার করে ওঠে।

কাজে ভুল হয়ে গেছে বুঝে ওরা দ্রুতো বাইক ঘোরাতে থাকে।  ততক্ষণে অমলার চিৎকারে আশ্রমের বাকি সবাই ছুটে এসেছে। দুই বাইক আরোহী দ্রুতো বাইকে স্পীড তুলে সেখান থেকে পালিয়ে যায়। 

আকস্মিক এহেন পরিস্থিতিতে সবাই হতবাক হয়ে পড়ে।  এমন ঘটনার সরাসরি সাক্ষী এখানকার কেউ এর আগে হয় নি।  ঘোর কাটতেই অমলাকে নিয়ে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়,  লেখা এসে অমলাকে জড়িয়ে ধরে।  ওর হাত রক্তে ভেসে যাচ্ছে।  লেখা একটা কাপড়ে ওর হাত বেঁধে ওকে নিয়ে তিন চারজন মিলে হাসপাতালে ছোটে।  অমলার হাতের তালুতে কোপ পড়েছে,  তবে বেশী কাটে নি,  আঘাত জোরালো ছিলো না। হাসপাতালে ব্যান্ডেজ করে ওষুধ নিয়ে ওরা আবার আশ্রমে ফেরে।

অমলা আর লেখা তখনো ভেজা কাপড়ে।   রক্তপাত হওয়ায় আর ভয়ে অমলা একটু দুর্বল হয়ে গেছে।  লেখা ঘরে এসে নিজ হাতে অমলাকে কাপড় ছাড়িয়ে দিতে যায়।  অমলা ওকে বাধা দেয়,  এখনো ওর চোখে সন্ধ্যার ঘটনার লজ্জা কাটে নি। লেখার দিকে না তাকিয়ে এক হাতে ওর হাত চেপে ধরে অমলা " তুই যা..... আমি একাই পারবো,  তোর উপরে তো ঝড় বয়ে গেলো। "

লেখা অমলাকে চেপে ধরে, " আমি কিছু মনে করি নি দিদি...... তুমি খামোকা লজ্জা পাচ্ছো.....আজ তুমি আমার জন্য যেটা করলে তার ঋণ বেঁচে থাকতে আমি শোধ করতে পারবো না..... তাই শুধু শুধু আমায় লজ্জা দিও না.....।"

অমলা তাও মাথা নীচু করে রাখে। লেখা ওর চিবুক ধরে ওঠায়.... " তাকাও আমার দিকে..... দেখো আমার চোখে তোমার প্রতি ভালোবাসা ছাড়া আর কিছু নেই "

অমলা কেঁদে ফেলে,  " এতো বছর পরও আমার শরীর কেনো নিস্তেজ হয়ে গেলো না বলতো? ..... এসব ভাবতে চাই না আমি। "

" সেটা তোমার আমার হাতে নেই দিদি....সময়ের সাথে সব পাল্টাবে,  কিন্তু যতদিন থাকার ততদিন তো থাকবেই...... ওসব বাদ দাও... "

লেখা অমলার ভেজা শাড়ী শায়া ব্লাউজ খুলে ওকে নগ্ন করে।  অমলা একটু ভারী চেহারা,  স্তনের আকার লেখার থেকে বেশ বড়ো,  তলপেটে অত্যাধিক না হলেও চর্বি আছে,  নিতম্ব বেশ ভারী আর থলথলে..... তবে চেহারার গঠন ভালো হওয়ায় ভারী চেহারাতেও অমলাকে খারাপ লাগে না...... অমলার গা মুছিয়ে দিতে দিতে লেখা মজা করে, 

" ইশ..... এখনো কি সুন্দরী গো তুমি, তোমার বয়সী অন্য মেয়েরা তো বেঢপ হয়ে যায়। "

লজ্জা পায় অমলা,  " কি যে বলিস..... তোর মত নিটোল শরীর কি আমার আছে? তোর বয়সেও ছিলো না..... "

অমলাকে শায়া,  ব্লাউজ,  শাড়ী পরিয়ে নিজেও ভেজা কাপড় খোলে লেখা।  অমলার সামনেই নিজেকে নগ্ন করে,  এবার আর অমলা ওর দিকে তাকায় না,  কে জানে..... লেখার পূর্ণ নগ্নতা দেখে যদি আবার কিছু ঘটিয়ে ফেলে,  যদিও মানসিক আর শারিরীক অবস্থা তেমন আর নেই।

কাপড় পালটে বাইরে আশ্রমের  সবাই এক জায়গায় হয়,  মহারাজ নিজে ওদের সাথে না গেলেও প্রচন্ড উদ্বিগ্ন ছিলেন।  তিনি বলেন,  " শোন মা..... তোরা এভাবে সন্ধ্যায় বা রাতে বাইরে যাবি না, আর লেখা মা..... এখানে যতদিন আছিস একটু সাবধানে থাকিস,  দিনেও কোথাও গেলে পুরুষ কাউকে সাথে নিবি..... বুঝলি?  "

লেখা মাথা নত করে,  " আমি শুধু শুধু আপনাদের বিপদে ফেলছি বাবা..... আমি কাল চলে যেতে চাই। "

" ওরে.... বিপদ কোথায় নেই বলতো?  কপালে থাকলে এখানে বসেও বিপদ হতে পারে.... তুই তো উপলক্ষ্য মাত্র... এসব না ভেবে নিজেকে সাবধানে রাখ....যা এখন রাতের খাবারের ব্যাবস্থা কর দেখি। "

আশ্রমের সবাই মহারাজের কথাকেই সমর্থন করে। লেখাকে যেতে দিত রাজী না কেউ।  কেনো কে জানে,  দুদিনের পরিচয়ে এদের এই ভালোবাসা দেখে চোখ ভিজে আসে লেখার।  সত্যি...... এক সর্বহারাই আর এক সর্বহারার সত্যিকারের বন্ধু হতে পারে  যেটা আর কেউ পারে না.....সুধা,  সুধাময়,  রমা,  এই আশ্রমের সবাই এটাই প্রমাণ করেছে।





দুই দিন দোকান বন্ধ থাকায় নুটু আজ বাড়িতে।  হারাধন তার অসুস্থ পিসেমসাইকে দেখতে নবদ্বীপ গেছে।  কাল ফিরবে।  হারাধন ছাড়া এই বাড়িতে একেবারে থাকতে ইচ্ছা হয় না ওর।  কে জানে রমা কখন কি করে বসে।  একের পর এক নুটুকে অপমান করা ছাড়া যেনো রমার আর কাজ নেই।  সবসময় একটা ভয় কাজ করে ওর মধ্যে। এই বুঝি কিছু ঘটে গেলো। যতটা পারে নিজেকে দূরে রাখে কিন্তু সেই অঘটন ঘটেই যায়।

যেমন আজ সকালে রমা পায়খানা থেকে বেরিয়ে শুধু শায়াটা দাঁতে চেপে নিজেকে ঢেকে বাথরুমে যাচ্ছিলো,  তখন নুটূ ঘুম থেকে উঠে সবে বাথরুম সেরে বাইরে বেরোচ্ছে.... অসাবধানে ওর সাথে রমার ধাক্কা লেগে যায় আর সেই ধাক্কায় রমার দাঁত থেকে শায়া পড়ে যায়.... নুটুর সামনেই রমা একেবারে নগ্ন হয়ে যায়,  তাড়াতারী শায়াটা তুলে আবার বুকে ধরে অগ্নিশর্মা হয়ে ওঠে রমা, 
" অসভ্য ইতর ছেলে..... বাড়িতে কেউ নেই বলে সেই সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছিস তুই?  ইচ্ছা করে আমাকে ধাক্কা মেরে উলঙ্গ দেখতে চাস না?  লজ্জা করে না তোর?  যার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিস তার সাথেই এমন নির্লজ্জ ব্যাবহার করতে? ... "

নুটু ধাক্কা মেরেছে সেটা সত্য তবে একবারের জন্যেও চোখ তুলে রমার নগ্ন শরীরের দিকে তাকায় নি..... রমা নিজেও সেটা জানে,  তাই এহেন ডাঁহা মিথ্যা কথায় ও অবাক হয়ে যায়।  অপমানে কান ঝাঁ ঝাঁ করে ওর। অথচ এই রমাই নিজের ব্রায়ের স্ট্রীপ আটকানো বা ওর সামনে ছেলেকে দুধ খাওয়ানোর সময় এসব ভাবেনি। ইচ্ছা করে তখনি ওই বাড়ি ছেড়ে চলে যায়,  কিন্তু হারাধনার অবর্তমানে চলে গেলে রমা ওর নামে কি দোষ দেবে সেটা ও জানে না,  তাই ঠিক করে হারাধন ফিরলে ওকে কিছু বলে এখান থেকে বিদায় নেবে। 

রমা গটগট করতে করতে বাথরুমে ঢুকে যায়। 

নুটু ওর ছেলে অখিলকে নিয়ে নিজের ঘরে চলে যায়।  বাড়িতে থাকলে বেশীরভাগ সময় ও ওদের ছেলের সাথেই কাটায়।  বাচ্চা ছেলে কিছু বোঝে না,  নুটু বলতে পাগল ও।  ছেলে নুটুর কাছে থাকলে রমাও ওকে তেমন কিছু বলে না।  ঘরে এসেও চোখ মুখ থেকে আগুন বেরোচ্ছিল নুটুর।  ওতো রমাকে কখনো খারাপ চোখে দেখে নি।  তবে রমা কেন ওকে সহ্য করতে পারে না?  লেখার প্রতি ও যে নজরে তাকাতো সেটা ও কখনো রমার দিকে দেখে নি।  তাও এতো কথা শুনতে হয় ওকে। আগে মনে হত রমার চোখেমুখে লেখার মতই কামনার আগুন,  কিন্তু সেই কামনার আগুন সময়ের সাথে সাথে এক তীব্র ঘৃণা আর বিদ্বেষে পরিনত হচ্ছে..... এভাবে কেউ থাকতে পারে বলে ওর মনে হয় না,  একটা সময় যখন ও একা থাকতো তখন লোকের শত অপমান সহ্য করেও হাসিমুখে ঘুরে বেড়াতো,  কিন্তু লেখা ওকে মাত্র কিছুদিনের মধ্যেই যে আত্মমর্যাদা শিখিয়েছে তারপর থেকে ওর চারিত্রিক পরিবর্তন ঘটে গেছে...... নিজের মান-সম্মান বজায় রেখেই ও বেঁচে থাকতে চায়।  রমার কাছে সেটা সম্ভব না বলেই মনে হয়। আবার অন্য কোথাও গিয়ে নতুন করে বেঁচে থাকার লড়াই শুরু করতে হবে।

সেদিন রাতেই রমার ধুম জ্বর আসে।  সন্ধ্যা থেকেই গা গরম ছিলো।  নুটুকে বলে, " আমার শরীর ভালো না আমি শুয়ে পড়ছি..... তুই বাবুকে কিছু খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিবি। "

নুটু কোন উত্তর করে না।  সকালের কথা ওর মনে এখনো বাজছে।  সারাদিনে রমার দিকে তাকায়ও নি ও। দুপুরে নিজের ভাতের থালা ঘরে এনে খেয়েছে।  এখন কি কতবে বুঝিতে পারে না।  রমা চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়ে।  নুটু অখিলকে ঘরে এনে রাত পর্যন্ত ওর সাথে খেলা করে,  তারপর দুপুরের ভাত তরকারী গরম করে ওকে খাইয়ে রমার ঘরে পৌছে দিতে যায়।  তখনি দেখে রমা জ্বরের ঘোরে বিড়বিড় করছে,  এই ঘরে ও সহজে ঢুকতে চায় না..... কিন্তু আজকের ব্যাপার আলাদা,  অসুস্থ মানুষের উপরে রাগ করে থাকার মানে নেই।  ও ঘুমন্ত অখিলকে রমার পাশে শুইয়ে দেয়।  তারপর একটু অপেক্ষা করে রমার কপালে হাত দেয়।  হাতে যেনো ছ্যাকা লাগে ওর..... আগুনের মত গরম কপাল।  মুহূর্তে সব রাগ,  অভিমান,  কষ্ট ভুলে ব্যাস্ত হয়ে পড়ে ও.....প্রবল জ্বরে আক্রান্ত রমাকে দেখে ভয় পেয়ে যায় ও।  এখানে দোকান আর বাড়ির বাইরে খুব কম জায়গাই চেনে ও।  বড় হাসপাতাল অনেক দুরের রাস্তা আর কাছের ছোট  হাসপাতাল বিকালেই বন্ধ হয়ে যায়.... এতো রাতে কি করবে ও?  ওর কাছে টাকাও নেই যে গাড়ী ভাড়া করে ১৫ কিলোমিটার দূরের হাসপাতালে নিয়ে যাবে।  তখনি মনে পড়ে পাড়ার মোড়ের মাথায় একজন ডাক্তার বসেন,  ওখানেই তার বাড়ি..... গিয়ে বললে হয়তো তিনি দেখে ওষুধ দিতে পারবেন.... কাল টাকা দিয়ে দিলেই হবে।

এদিকে রমার বিড়বিড় করা বেড়েই চলেছে... নুটু আর অপেক্ষা না করে বাইরে এসে খিড়কির দরজা বন্ধ করে মোড়ের মাথায় আসে।  দুবার বেল বাজাতেই ডাক্তারবাবু নিজেই দরজা খুলে দাঁড়ান... নুটুকে তিনি চেনেন...হারাধনের দোকানের নিয়মিত খরিদ্দার ডাক্তারবাবু। একটু অবাক হয়ে বলেন....
" কিরে তুই এতো রাতে?  কেউ অসুস্থ নাকি? "

নুটু একটু শ্বাস টেনে বলে,  " বৌদির খুব জ্বর ডাক্তারবাবু..... আপনি একটু যাবেন? আমার কাছে টাকা নেই.... কাল দাদা ফিরলে দিয়ে দেবো। "

" ধুর টাকা কে চেয়েছে?  তুই দাঁড়া.... আমি ব্যাগটা নিয়ে আসছি ' ডাক্তার ঘরে চলে যান। মিনিট পাঁচেক বাদে বাড়ির পোষাকেই ব্যাগ হাতে বাইরে আসেন।  নুটুর সাথে ওদের বাড়িতে ঢোকেন।  রমার তখনও জ্বরের ঘোরে ভুল বকা চলছে।  ডাক্তারবাবু ভালো করে পরীক্ষা করে দেখেন.... তারপর নুটুর দিকে তাকিয়ে বলেন, " ভাইরাল জ্বর বলেই মনে হচ্ছে.... এখন এর বেশী কিছু বলা যাবে না,  তবে টেম্পারেচার একটু বেশী,  আমি একটা ওষুধ দিচ্ছি খাইয়ে দিবি..... আর অবশ্যই মাথাটা ধুইয়ে দিবি আর গা ভেজা কিছু দিয়ে মুছে দিস.... না হলে এতো জ্বর নামবে না। "

নুটু মাথা নাড়ে,  ডাক্তারবাবু ফিরে যান।  ওনাকে বাড়ি পৌছে দিয়ে ফিরে আসে নুটূ।

রমার বিছানার পাশে বসে ওকে ডাকে,  " বৌদি.... বৌদি... একটু উঠে ওষুধটা খেয়ে নাও। " হাত দিয়ে নাড়া দেয় রমাকে।  কিন্তু রমার কোন হেলদোল নেই।  ও চোখ বুঝে মুখ দিয়ে অদ্ভুত আওয়াজ করছে। 

এমন পরিস্থিতিতে এর আগে কখনো পড়ে নি ও।  কি করবে ভেবে পায় না।  ওষুধ না খেলে জ্বর কমার কথা না..... কিন্তু রমার তো সাড়াই পাওয়া যাচ্ছে না।  রমাকে এর আগে কখনো স্পর্শ করেনি নুটু.... আজ ওকে স্পর্শ করার কথা ভেবে হার্টবীট বেড়ে গেলো ওর।  এমনিতেই রমা অকারণে ওকে যাচ্ছেতাই ভাবে অপমান করে,  তার উপরে ওর গায়ে হাত দিলে সেটার প্রতিক্রিয়া কি হবে সেটা নুটু জানে না,  তবে এসব ভাবার এখন সময় নেই.... ও একটা বালতি করে ঠান্ডা জল এনে রমার বুছানার পাশে রাখে।  তারপর ওর মাথাটা বিছানার পাশে এনে ধীরে ধীরে জল ঢালতে থাকে.... রমা যেনো এসবের কিছুই বুঝতে পারছে না,  ও চোখ বন্ধ করে ঘোরের মধ্য আছে।  প্রায় পনের কুড়ি মিনিট জল ঢালার পর ওর মাথাটা আগের তুলনায় একটু ঠান্ডা মনে হয়।  নুটু আবার ডাকে রমাকে....

" বৌদি? ..... একবার একটু তাকাও। '

কিন্তু কোন সাড়া নেই অপর পক্ষ থেকে।  বাধ্য হয়ে নুটূ রমার পিঠে হাত দিয়ে ওকে উঠিয়ে বসাতে চেষ্টা করে।  এখনো গা থেকে ভালো তাপ বেরোচ্ছে রমার।  উঠিয়ে বসানোতে রমা এবার চোখ খুলে তাকায়.... টকটকে জবা ফুলের মত লাল চোখ.... সে তাকিয়ে নুটুকে দেখে আবার চোখ বুজে ফেলে.... নুটু বিছনার এক প্রান্তে বসে রমাকে নিজের বুকের সাথে হেলান দিয়ে বসিয়ে রাখে.... প্রায় ঘোরে থাকা রমা নিজের শরীরের ভার ছেড়ে  দেয় নুটুর উপর.... রমার মুখ সামান্য খুলে জ্বরের ওষুধটা দিয়ে ও আবার ডাকে রমাকে..... রমা এবার বোধহয় কিছু বুঝতে পারে,  নুটু জলের গ্লাস ঠোঁটের কাছে ধরলে ও আস্তে আস্তে কিছুটা জল খেয়ে নেয়....।

ওষুধ খাওয়ানো হয়ে গেলে নুটু আবার রমাকে বালিসে মাথা দিয়ে শুইয়ে দেয়।  রমা আবার চোখ বুজে ফেলে.... এবার কি করা উচিৎ?  ডাক্তার বলে গেছে ভেজা কাপড় বা গামছা দিয়ে গা মোছাতে.... কিন্তু সেটা নুটু কিভাবে পারবে?  একটা ছেলে হয়ে অন্য কোনো মহিলার শরীরকে এভাবে মোছানো যায়? 

নুটু চিন্তায় পড়ে যায়।  ডাক্তারবাবু বলে গেছেন,  না করলে যদি জ্বর না নামে?  আবার রমা যদি টের পায় ওর শরীরে নুটু হাত দিচ্ছে.... তাহলে তো কাল কুরুক্ষেত্র কান্ড বাধিয়ে দেবে..... শেষে কি করতে কি দোষ ঘাড়ে নিতে হবে কে জানে?  কিন্তু এভাবে রমাকে কষ্ট পেতে দেখেও ওর ভালো লাগছে না...... নুটু বারবার রমার কপালে হাত দিয়ে দেখে জ্বর নামছে কিনা... নাহ! যা থাকে কপালে একবার রমার সারা গা ভেজা গামছা ফিয়ে মোছালে ও নিশ্চই আরাম পাবে।

বালতির জলে গামছা ভিজিয়ে কাঁপা হাতে রমার পাশে বসে নুটু,  অনেক আগেই ওর গা থেকে চাদর সরিয়ে দিয়েছে নুটু.... রমার বুকের উপরের কাপড় সরায় ও.... ভিতরে লাল ব্লাউজ পরা,  ব্লাউজের গলার কাছ থেকে ওর ভারী স্তনের আংশিক দেখা যাচ্ছে,  ডান দিকের স্তনের উপরে একটা ছোট কালো তিল..... ব্লাউজের নীচে কোমর পর্যন্ত খোলা, নাভীর অর্ধেক ঢেকে আছে কোমরের কাপড়ে,  নিশ্বাসের সাথে সাথে ওর বুক আর পেটের ওঠানামা চলছে দ্রুতো.... নুটুর হার্টবীট যেনো রমার থেকেও বেড়ে গেছে,  পাতলা ব্লাউজের উপর দিয়ে রমার বড় স্তনবৃন্তের অস্তিত্ব পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে.... হাত না দিয়েও বলে দেওয়া যায় কোথায় ওর স্তনের বৃন্ত আছে। 

নুটু ওর ব্লাউজের হুক খুলতে গিয়েও থমকে যায়, ..... না না এটা সম্ভব না..... রমার লজ্জা আবরন তার অনুমতি ছাড়া সরাতে পারে না ও।  থেমে যায় নুটু.... হাতের গামছা দিয়ে রমার গলা ঘাড় আর খোলা পেট ভালো করে মুছিয়ে দেয়,  এর বেশী কিছু করা ওর পক্ষে অসম্ভব.... গামছা রেখে রমাত মাথায় হাত বোলাতে থাকে,  আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হিচ্ছে রমা, জ্বরের ঘোরে বিড়বিড় করা বন্ধ হয়ে গেছে..... কপালের উষ্ণতাও অনেক কমেছে.... মনে হচ্ছে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ও। 

নুটু এবার রমার পাশ থেকে উঠতে যেতেই রমা ঘুরে ওর হাত চেপে ধরে,  চমকে ওঠে নুটু.... রমার মুখের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করে এটা জ্বরের ঘোরে না ইচ্ছাকৃত?  রমার চোখ বন্ধ,  কিছু বুঝতে পারে না।  রমার হাত ছাড়াতে গিয়েও পারে না.... রমা আরো শক্ত করর ওকে চেপে ধরে.....এমতবস্থায় কি করা উচিৎ সেটা বুঝতে পারে না নুটু..... কিছুক্ষন অপেক্ষা করেও রমার ওকে ছাড়ার কোন লক্ষণ দেখা যায় না,  বাধ্য হয়ে রমার পাশে খাটের প্রান্তে আধশোয়া হয়ে শোয় ও। রমা দুই হাতে ওর বাঁ হাতের কনুইয়ের কাছ জড়িয়ে আছে।  নুটু তমার মুখের দিকে তাকায়,  একেবারে নিস্পাপ শিশুর মত লাগছে রমাকে।  কপালের উপর দিয়ে চুলের গোছা এসে পড়েছে মুখের উপর.... রাজু ডানহাতে ওর চুলের গোছা সরিয়ে দেয়.... রমা ঘুমের ঘোরে আদুরে বিড়ালের মত ওর গায়ের আরো কাছে ঘেঁষে আসে... রমার ভারী স্তন নুটুর বুক স্পর্শ করে আছে.... ওর গায়ের গন্ধ পাচ্ছে নুটু.... লেখা ছাড়া কোন মেয়ের এতো কাছে যায় নি ও।  হঠাৎ লেখার সাথে কাটানো সময়গুলো মনে পড়ে যায়, স্মৃতির কোঠায় বিচরণ করে ও পৌছে যায়... মাঠের মাঝে পুকুর পাড়ের সকালে....নিস্তব্ধ দুপুরের নির্জন ঘরে.... ওর বাহুর মাঝে লেখার নগ্ন শরীর,  লেখাত হাত খেলে বেড়াচ্ছে ওর একান্ত ব্যাক্তিগত অঙ্গে...... রমার গরম নিশ্বাস নুটুর গলার কাছে এসে লাগছে,  ও অনুভুব করে লেখার কথা ভাবতেই ওর প্যান্টের আড়ালে লিঙ্গ শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে গেছে,  রমা একটু চেপে আসলেই তার অস্তিত্ব টের পাবে... ও প্রানপনে চেষ্টা করে আবার স্বাভাবিক হওয়ার কিন্তু পারে না.....প্যান্টের ভিতর থেকে তাবুর মত খাড়া হয়ে আছে সেটা..... রমা আরো শক্ত করে নুটুকে জড়িয়ে ধরতেই ওর খাড়া লিঙ্গ রমার পেট স্পর্শ করে,  রমার কোম হুঁশ নেই,  ও নিজের একটা পা নুটুর পায়ের উপরে তুলে ওকে আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে ধরে.....

এভাবেই কখন রাতে ঘুমিয়ে গেছে ও জানে না,  ঘুম ভাঙে একেবারে সকালে..... চোখ খুলেই ওর বুক ধড়ফড় করে ওঠে,  রমা চোখ খুলে ওর দিকে তাকিয়ে আছে,  এখনো রমার হাত ওকে জড়িয়ে আছে,,,,,,  রমার চোখের দিকে তাকিয়ে বোঝে সেখানে কোন রাগ নেই,  ঘৃণাও নেই.... পরিবর্তে একটা কোমল নীরব তৃপ্তি বিরাজ করছে.... নুটুর লিঙ্গ তখনো খাড়া অবস্থাতেই আছে,  এটা যে সকালের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া সেটা নুটু জানে কিন্তু তমার শরীরের সাথে ওর লিঙ্গের স্পর্শেও রমা আজ বিন্দুমাত্র ক্ষুব্ধ হচ্ছে না। নুটু উঠে বস্তে গেলে তমা ওকে চেপে ধরে, 

" আহহ..... আমি কি উঠতে বলেছি, ..... চুপ করে শুয়ে থাক..... "

নুটু অপ্রস্তুত হয়,  " না মানে...... তুমি কাল জ্বরের ঘোরে... "

" থাম..... আমি জানি সব..... কাল এতো ব্যাস্ত হয়েছিলি কেনো আমার জন্য?  এই মুখপুড়ীটা তো তোকে কম কথা শোনায় না সারদিন? ......তাও এতো মায়া?  " রমা ঠোঁটের কোনে হাসে।

" না মানে তোমায় দেখে ভয় পেয়ে গেছিলাম..... যদি কিছু হয়ে যায় "  নুটু চোখ সরায় রমার চোখ থেকে।

" হলে হতো...... তোর দাদা তো আমার শরীর মনের কোন খোঁজই রাখে না...... তুইও তো একবারো আমার দিকে চোখ তুলে তাকাস না.... এতো খারাপ আমি? "

নুটু চুপ করে থাকে.... কি জবাব দেবে ও এই কথার ভেবে পায় না। 

রমা ওর শরীর থেকে হাত সরিয়ে বলে,  " যা..... একে ঠান্ডা করে আয়..... সারারাত তো আমাকে অনেক ধাক্কা দিয়েছে ' হেসে ফেলে রমা।

নুটু লজ্জায় মরে যায়।  রমা যেওর লিঙ্গের দিকে ইশারা কতছে সেটা বুঝতে আর বাকি থাকে না।  ও কোনমতে বিছানা থেকে নেমে বাথরুমের দিকে ছুটে যায়। পিছনে রমার খিলখিল হাসি ভেসে আসে।  এই প্রথম ব বাড়িতে আসার পর রমাকে এভাবে হাসতে দেখলো ও। 
Deep's story
Like Reply
ভালো আপডেট
Like Reply
অতৃপ্ত যৌবনের গল্প

নিজের ৩৬ বছরের জীবনে  আর ১১ বছরের কেরিয়ারে গদাধর অনেক কেস দেখেছে। সেখানে খুন, ডাকাতি, চুরি,  জচ্চুরি সব। অনেক কেস সমাধান করেছে আবার অনক কেস মাঝপথে বন্ধ করে দিতে হয়েছে।  বেশীরভাগ কেসেই কোথাও না কোথাও কেউ না কেউ তদন্তে মাথা গলাবেই।  তবে ডিপার্টমেন্টের চাপ না থাকলে গদাধর আর কোন চাপের কাছে মাথা নোয়ায় না।  তবে প্রভাবশালী লোকেরা প্রথমে নিজে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করে,  যখন বোঝে নিজের চাপে কাজ হচ্ছে না তখন উপরমহলের মাধ্যমে চাপ দেওয়ায়।  এই কেসটাতে লোকাল চাপ থাকলেও এখনো উপরমহলের কোন চাপ আসে নি এটাই বাঁচোয়া,  সেই চাপের বীপরীতে যাওয়া মানে আবার একটা ট্রান্সফার।  আবার নতুন জায়গা,  নতুন মানুষ..... তাই গদাধর চাইছে উপরমহলের চাপ আসার আগেই আসল খুনীকে পাকড়াও করতে।  বিকাশ এলাকায় প্রভাবশালী হলেও এখনো উপরমহলে যোগাযোগ করে নি,  কেনো সেটা জানে না।  হয়তো এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল সরাসরি জড়াতে চায় না বলেই বিকাশ তার উপরমহলের সাহায্য পাচ্ছে না।  এটা কোন রাজনৈতিক হত্যা না,  বিকাশ নিজের স্বার্থে এতে চাপ দিচ্ছে.... ওর দল এটা মঞ্জুর করবে না এটাই স্বাভাবিক,  এক্ষত্রে বিকাশের আগেই ওকে খুনীর কাছে পৌছাতে হবে।  কিন্তু কিভাবে সেটাই মাথায় আসছে না গদাধরের।

রাস্তার পাশে একটা চায়ের দোকান দেখে নিজের রয়াল এনফিল্ড ক্লাসিকটা দাঁড় করায় গদাধর।  ওর পরনে সাধারন পোষাক।  পুলিস বলে বোঝার উপায় নেই।  একটা সিগারেট কিনে সেটা ঠোঁটে চেপে সবে আগুন ধরাতে যাবে,  এমন সময় একটা বাইক উলটো দিক থেকে তীরের মত ছুটে আসে গর্জন করতে করতে,  ওর প্রায় গা ঘেষে বেরিয়ে যায়।  গদাধরের তীক্ষ্ণ চোখে বুঝতে অসুবিধা হয় না যে কোন দুষ্কর্ম করে পালাচ্ছে এরা,  স্বাভাবিক অবস্থায় যেভাবে বাইক চালায়,  আর কোন জরুরী অবস্থায় যেভাবে চালায় তার থেকে দুস্কর্ম করে পালানোর সময় কিছুটা পার্থক্য থাকে। এক নজরেই বাইকের আর টি ও নাম্বার পড়ে নেয় ও,  যদিও এটা ওর এলাকা না,  তবুও এই ধরনের সন্দেহজনক গাড়ির নাম্বার মুখস্ত করাটা ওর অভ্যাস।  সেখানে দাঁড়িয়ে সিগারেটটা শেষ করে গদাধর..... পিছনের লোকটার মুখের থেকে ঢাকা কাপড় সরে গেছে,  গদাধরের মনে হয় লোকটাকে কোথাও দেখেছে।  খুব চেনা লাগছে....... স্মৃতি হাতড়াতে থাকে ও।  কোথায় দেখেছে? ...... কোথায়?

বিদ্যুৎ চমকের মত মনে পড়ে যায়,  আরে এতো বিকাশের সঙ্গী ' কালা '।  বিকাশের বাড়িতেই দেখেছে ওকে। মুহূর্তের মধ্যে বাইকে স্টার্ট দিয়ে সেটা ঘোরায় গদাধর।  ওর রয়াল এনফিল্ড ১০০ গতিতে ছুটতে থাকে,  এরা যদি ফেরীতে পার হতে চায় তবে কালনা ঘাট হয়ে যেতে হবে..... না হলে অনেকটা এগিয়ে নবদ্বীপ ব্রীজ পার করতে হবে..... অবশ্য মাঝপথে কোথাও পার হলেও হতে পারে ট্রলারে।  সেটা গদাধরের জানা নেই।  ও বেশ কিছুদূর এসেও বাইকটার কোন খোঁজ পায় না।  রাস্তায় হাজার গাড়ির ভীড়ে একপ্রকার অদৃশ্য হয়ে গেছে বাইকটা।  কিছু সময় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আবার বাইক ঘোরায় আশ্রমের দিকে।

আশ্রমের গেটের বাইরে বাইক রেখে ভিতরে ঢোকে ও।  সোজা মহারাজের ঘরের দিকে যায়। মহারাজ তখন একটা পুরোনো ধর্মগ্রন্থে মন দিয়ে বসে ছিলেন। পুরোনো ঘরে একটা চৌকি আর ছোট কাঠের আলমারী ছাড়া আছে বেশ কিছু বাঁধনো ছবি,  সব দেবদেবীদের আর না হয় পুরানো মহারাজদের।মহারাজ মেঝেতে বসে একটা ছোট জলচৌকির উপর বই রেখে মনোযোগ দিয়ে পড়ছেন। চোখে চশমা,  কামানো মাথার পিছনে একটা টিকি। মুখে আর শরীরে বয়সের ছাপ স্পষ্ট। গদাধর বাইরে জুতো খুলে ভিতরে প্রবেশ করে।  মহারাজ ওকে দেখে বইটা বন্ধ করে ব্যাস্ত হয়ে পড়েন, " আরে তুমি? ..... আমি তোমাকেই ফোন করবো ভাবছিলাম....বস বস।" মহারাজ সামনে পাতা মাদুরে ওকে বসতে ইশারা করেন।

গদাধর মহারাজের পা স্পর্শ করে প্রনাম করে মাদুরে পা মুড়ে বাবু হয়ে বসে মহারাজের কথার প্রক্ত্যুত্তোরে বলে,  " কেনো বাবা?  কিছু ঘটেছে?  "

মহারাজ সবিস্তারে গদাধরকে সন্ধ্যার ঘটনার বর্ণনা দিতেই ও চমকে ওঠে।  তার মানে, ওর ধারনা ভুল না।  বিকাশের লোকই এখানে লেখাকে তুলে নিয়ে যেতে আসে।  ব্যাটা বিকাশ হাত ধুয়ে লেখার পিছনে পড়েছে।  ওর অসহায়তার সুযোগে ওকে ভোগ করা ছাড়া বিকাশের আর কোন লক্ষ্য নেই।  এদের মত নিকৃষ্ট মানুষদের গুলি করে মেরে দিতে ইচ্ছা করে।  রাগে ওর হাতের পেশী শক্ত হয়ে আসে।

" একবার লেখার সাথে দেখা করা যাবে? "

" আরে নিশ্চই.... আমারই এতক্ষণে ওকে ডাকা উচিৎ ছিল......রাধা! .....। " মহারাজ গলা তুলে ডাকে।

একজন ৫০-৫৫ র লোক দরজার কাছে উঁকি দেয়।  মহারাজ বলেন, " একবার লেখা মা কে এখানে আসতে বলো তো। "

রাধাকান্ত মাথা নেড়ে চলে যায়।  একটু বাদে লেখা এসে দরজার কাছে দাঁড়ায়। গদাধর একটু থমকে যায়। একটা আটপৌঢ়ে শাড়ী আর ব্লাউজেও মেয়েটার রুপ আটকাচ্ছে না।  এর আগে এইসব দিকে এমন সুন্দরী মেয়ে দেখে নি। এমনিতে মেয়েদের দিকে তাকিয়ে থাকার অভ্যাস নেই গদাধরের। তবে এক্ষত্রে চোখের আটকে যাওয়াটা ও নিজেই রোধ ক্ল্রতে পারে না। লেখাও একটু থেমে যায়। গদাধরকে ও চেনে না,  আগে দেখে নি কখনো।  কিছু বুঝতে না পেরে ও মহারাজের মুখের দিকে তাকায়,  " আমায় ডেকেছেন বাবা?  "

মহারাজ ওকে ভিতরে আসতে ইশারা করে বলেন, " এর সাথে পরিচয় করে দি.....এ তোদের কুসুমপুর থানার ও সি গদাধর... আমার খুব কাছের মানুষ। "

লেখা একটু ভয় পায়,  এইসময় গদাধর এখানে কি ওকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যেতে এসেছে নাকি?  ওর মুখ শুকিয়ে যায়,  কি বলবে ভেবে পায় না।  গধাধর প্রাথমিক মুগ্ধতা কাটিয়ে ওর ভয় ভাঙায়...... " ভয় পেও না..... আমি তোমাকে গ্রেপ্তার করতে আসি নি,  শুধু কিছু তথ্য লাগতো আমার যাতে আসল অপরাধীকে তাড়াতাড়ি ধরা যায়। "

গা দিয়ে জ্বর ছাড়ে লেখার।  একটু সহজ হয়ে ও দুই হাত সামনে রেখে দাঁড়ায়।  চোখ গদাধরের দিকে।

গদাধর খুব সহজ ভাবে সেদিনের সব কথা লেখার কাছ থেকে মন দিয়ে শোনে। সবটা শোনার পর ওর মনে হয় লেখার পক্ষে কোনভাবেই নরেনকে খুন করা সম্ভব না... এক ওর প্রেমিক নুটু যদি কোনভাবে ফিরে এসে এই কাণ্ড ঘটায়,  নরেনের হাতে মার খেয়ে পালানো নুটুর কাছে নরেনকে সরিয়ে দেওয়ার মোটিভ ছিলো, সেদিন ভোররাতে কি নুটুই গ্রামে ঢুকে খুন করে আবার পালিয়ে চলে যায়?  আর সেই খুনের দায় লেখাত উপর চাপাতে চাইছে বিকাশ আর তার সাঙ্গপাঙ্গোরা? এই নুটু ছেলেটার সাথে কথা না বলে রহস্যের সমাধান সম্ভব না।

" নুটু কোথায় আছে তুমি জানো? " গদাধরের প্রশ্নে থমকায় লেখা, এরা কি নুটুকে অপরাধী ভাবছে নাকি? ও কোনভাবেই কাউকে জানতে দেবে না যে নুটু কোথায় আছে সেটা জানে ও।  নুটুকে বিপদে ফেলতে পারবে না ও। 

ও মাথা নাড়  " নাহ.....সেদিনের পর আর নুটুর কোন খোঁজ পাই নি আমি..... কোথায় আছে সেটাও জানি না। " মিথ্যাটা বলার সময় লেখার কথা দুই একবার আটকে যায়.... ও চোখ নামিয়ে নেয়,  সেটা গদাধরের নজর এড়ায় না। 

ভালো করে লেখাকে দেখে ও।  পুরুষ মাত্রই চোখ আটকে যাওয়ার মত চেহারা।  তবে কাটা কাটা চোখ মুখে এমন একটা সারল্য আছে যে মেয়েটাকে অবিশ্বাস করতে মন চায় না।  এমনিতে মেয়েদের ব্যাপারে বেশী অভিজ্ঞতা নেই গদাধরের,  পড়াশোনা শেষ করে পুলিশের চাকরীতে ঢোকে ও।  প্রেম ভালোবাসা বিয়ে এসবের সময় কখনোই পায় নি।  নিজের কাজকে বরাবর প্রাধান্য দিয়ে এসছে ও। বাবা মা দুজনেই মারা যাওয়ার পর আর বিয়ের ব্যাপারে চাপ দেএয়ারও কেউ ছিলো না।  একটা মাত্র দিদি,  সেও বিদেশে থাকে।  কয়েক বছরে একবার দেখা হয়।  বাকি আত্মীয়দের সাথে কবেই সম্পর্ক শেষ করে দিয়েছে ও।  সবাই ওর চাকুরীর লাভ তুলতেই ওর সাথে যোগাযোগ করে।  আর এই ব্যাপারে কোন সাহায্য করতে ওর মন সাঁয় দেয় না।  মহারাজকে ও বাবা মার মতই সম্মান করে,  আর ও জানে মহারাজ কখনো অন্যায্য কিছু চান না।  আর লেখা সত্যি অপরাধী হলে ওকে গ্রেপ্তার করতে তিনি বাধা দেবেন না। তাই তার কথায় লেখার কেসটাকে এতো গুরুত্ব দিয়ে দেখছে ও।

" ওকে নিয়ে তো খুব চিন্তায় পড়ে গেছি গদাধর,  আমাদের কথা ছাড়ো..... এখানে ওর উপর আবার আক্রমণ হলে কিভাবে বাঁচাবো সেটাই ভাবছি। "  মহারাজ চিন্তাগ্রস্ত মুখে বলেন।

গদাধর একটু ভাবে। বাবা উৎসুক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। এখানে লেখাকে রক্ষা করা খুব চাপের সেটা ও জানে।  মেয়েটার কোন আত্মীয়ও নেই কোথাও,  যে এই অবস্থায় ওকে সাহায্য করতে পারবে,  এক্ষেত্রে এক লেখাকে নিজ দায়িত্বে কদিন কোথাও রাখতে হবে।  কাজটা খুব রিস্কি সন্দেহ নেই, তবে মেয়েটাকে রক্ষা করতে হলে এটাই একমাত্র পথ.....ও  একবার লেখা আর একবার মহারাজের দিকে তাকিয়ে বলে.......

" বাবা..... এখানে লেখা সুরক্ষিত না সেটা আমি বুঝতে পারছি,  তবে খুনীকে ধরতে আরো কয়েকদিন লাগবে বোধহয়....... তাই আপনার আপত্তি না থাকলে আমি লেখাকে আমার সাথে নিয়ে যেতে চাই..... ভয় নেই,  ওকে সুরক্ষিত কোথাও রাখবো আমি যাতে বিকাশের লোক খুঁজে না পায়। "

" এতো ভালো প্রস্তাব.....ও তোর দায়িত্বে থাকলে আমি আরো নিশ্চিন্ত হবো।" মহারাজের মুখে হাসি দেখা যায়।

লেখা একটু থমকে যায়।  এই কদিনে আশ্রমের পরিবেশে ও নিজেকে মানিয়ে নিয়েছিলো। একটু একটু করে আপন করে নিয়েছিলো এখানকার সবাইকে।  অমলার সাথে গড়ে উঠেছিলো হার্দিক সম্পর্ক।  হঠাৎ এসব ছেড়ে আবার কোনো নতুন জায়গায় নিজেকে যেতে হবে শুনে ওর বুক ভার হয়ে আসে।  না চাইতেই চোখ ভিজে ঈঠে জলে।  কিন্তু উপায় নেই।  ওর কারণে এই আশ্রমের সবাই বিপদে পড়ুক এটাও ওর মন সাঁয় দিচ্ছে না।  আততায়ীরা আবার এখানে যে হামলা করবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।  একবার ওর কারণে অমলা আহিত হয়েছে,  এর থেকে বড় কোন বিপফ হয়ে গেলে  নিজেকে দোষী মনে হবে ওর।  ও কোন কথা না বলে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে।  গদাধর ওর দিকে তাকিয়ে বলে,  " কিছু কাজ থাকলে সেরে আসো..... আমরা তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যাবো। "

লেখার চলে যাওয়ার কথা শুনে অমলা লেখাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ভাসিয়ে দেয়,  এক অকৃত্তিম ভালোবাসার বন্ধনে লেখা নিজেকে বড় অসহায় মনে করে।  ও অমলার চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে বলে, " সব মিটে গেলে আমি আবার এখানে আসবো দিদি..... তুমি চিন্তা কোরো না। "

সন্ধ্যার ঘটনা ভুলে অমলা ওর কপালে একটা চুমু খেয়ে বলে,  " সত্যি আসবি তো? মন রাখার জন্য বলিস না.... আমি কিন্তু অপেক্ষা করে থাকবো মেয়ে..... "

জলের ধারা বাঁধাভাঙা নদী হয়ে লেখার গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ে।

রাত প্রায় ১১ টা বাজে।  গদাধরের বাইকের পিছনে বসে লেখা। ফাঁকা রাস্তায় উড়ে চলেছে গদাধর। এর আগে কখনো কোন পুরুষ মানুষের সাথে এতো রাতে বাইকে কোথাও যায় নি লেখা।  ও একটু জড়সড় হয়ে বসেছিলো। গায়ে কাপড়টা জড়িয়ে নিয়েছে। ৩৬ বছরের গদাধর এককথায় বেশ সুপুরুষ।  রোদে পোড়া তামাটে গায়ের রঙ, মাথায় ছোট করে ছাঁটা চুল, একেবারে পেটানো ছিপছিপে চাবুকের মত চেহারা,  চুল আর দাঁড়িতে সামান্য পাক ধরেছে,  তাতে ওকে আরো অভিজ্ঞ মনে হয়...... মোটা গোঁফ ওর চেহারাকে আরো গাম্ভীর্য্য এনে দিয়েছে।  লেখা অবশ্য গদাধরকে নিয়ে কোন প্রকার দ্বিধায় নেই।  ওর চেহারা ওর মনে কোন প্রভাব ফেলে নি।  এক অপরিচিত পুরুষের কাছে নিজেকে গুটিয়ে রাখার প্রবনতা স্বাভাবিক।  তার থেকেই ও একটু জড়সড়ো ভাবে আছে। 

একি অবস্থা গদাধরেরও। তার বাইকের পিছনে বসার মত এখনো কেউ নেই।  এক অপরিচিত সুন্দরী নারীকে নিয়ে এই মধ্যরাতের অভিযান এর আগে ওর জীবনে ঘটে নি।  কেনো আজ হঠাৎ করে লেখাকে ওখান থেকে সরিয়ে আনার কথা মনে হল ও জানে না।  লেখাকে গ্রেপ্তার না করে এর মধ্যেই ও যথেষ্ট উপকার করে ফেলেছে।  তার উপর ওকে সুরক্ষা দেওয়াটা কি একটু বেশী বাড়াবাড়ি? সেই উত্তর ওর কাছে নেই।  ওকে কোথায় রাখবে সেটাও এখনো ঠিক করে নি।  লেখাকে দেখার পর কি ওর মনে এমন কোন অনুভূতি জন্ম নেয় যাতে ও চায় নি মেয়েটার ক্ষতি হয়ে যাক?  কিংবা বিকাশের মত নারীলোভী পিশাচের শিকার হোক ও? 

এতো রাতে বড় রাস্তার পাশে বেশীরভাগ বাজার,  দোকান পাট বন্ধ...... মাঝে মাঝে কিছু ধাবা খোলা আছে,  হঠাৎ একটা ধাবা পেরোনোর সময় ওর মনে হলো সেই বাইকটা এখানেই দাঁড়িয়ে আছে...... বাইকের স্পীড বেশীথাকায় গদাধর একটু এগিয়ে গেছিলো, বাইক থামিয়ে ও দূর থেকে ধাবার দিকে তাকায়...তখনি সেই বাইকটাকে উল্টোদিকে চলে যেতে দেখে।  অনেক দূর থেকে নাম্বার প্লেট পড়া যাচ্ছে না,  আর বাইকের আরোহীর  পোষাকও আলাদা.... লেখা হঠাৎ ওর থেমে যাওয়ার কারণ বুঝতে পারে না। চারিদিকে তাকিয়ে গদাধরের উদ্দেশ্য বুঝতে চেষ্টা করে।  গদাধর নিজের ভুল ভেবে আবার বাইকে স্টার্ট দেয়।  মাঝে মাঝে মিররে দেখার চেষ্টা করে কেউ ওদের ফলো করছে কিনা।  কিন্তু তেমন কাউকে দেখা যায় না।

বড়ো রাস্তা থেকে নেমে গ্রামের ভাঙা পিচ রাস্তা ধরে ও।  এই রাস্তাটা একেবারেই নির্জন। দুই পাশে খোলা মাঠ আর মাঝে মাঝে গাছের সারি...... গাড়ির হেডলাইটের আলোয় বেশ রহস্যময় লাগছে রাস্তাটা।  বেশ গা ছমছমে, তবে রাত বিরাতে চলার অভ্যাস গদাধরের কাছে নতুন না। তুবে আজকের ব্যাপার আলাদা।  লেখার সুরক্ষা জড়িয়ে আছে ওর সাথে।  যতটা দ্রুতো সম্ভব রাস্তাটা পার করার চেষ্টা করে ও।

হঠাৎ ওর বুকে কিছু একটা দড়ির মত বাধে।  হাত থেকে ছুটে যায় হ্যান্ডেল।  প্রায় ৭০ স্পীডে থাকা ওর বাইক তীরের মত ছিটকে যায় ভাঙা পিচের রাস্তায়।  গদাধর দুবার পালটি খেয়ে ছেঁচড়ে এক জায়গায় স্থির হয়।  একটু দূরে বাইকটা কাত হয়ে পড়ে গোঁ গোঁ করছে.. …..জামা প্যান্ট ছিঁড়ে হাতে পায়ে অনেক জায়গায় কেটে গেছে মনে হচ্ছে।  জ্বালা করছে ওর।  গদাধর নিজের কথা না ভেবে লেখার কি হল সেটা ভেবে ঊঠে দাঁড়াতে চেষ্টা করে.....আততায়ীরা যে কাছেই আছে সে ব্যাপারে ও নিশ্চিত.... সার্ভিস রিভলবার ছাড়া একটা এক্সট্রা গান ওর কাছে থাকে।  ও সেই গান হাতে ধরে চারিদিকে তাকায়। কোথাও লেখার চিহ্ন নেই,  ওর কাছেই লেখার পড়ার কথা।  রাস্তাটা একটু উঁচু,  দুপাশে বড় বড়ো গাছ আর নীচু ধানক্ষেত....... অন্ধকারে কিছু দেখা যাচ্ছে না,  ও লেখার নাম ধরে ডাকে,  কিন্তু কোথাও সাড়া নেই.... গদাধর গাড়ীর কাছে ছটে যায়.... একটা টর্চ ঝোলানো আছে গাড়ীর হ্যান্ডেলে,  সেটা নিয়ে ইঞ্জিন বন্ধ করে আবার পিছিয়ে আসে...... চারিদিকে টর্চের আলো ফেলে দেখে,  এতো দ্রুতো লেখাকে নিয়ে কোথায় যাবে ওরা?  কাছেই কোথাও ঘাপটি মেরে আছে নিশ্চই,  এক হাতে টর্চ আর একহাতে গান নিয়ে রাস্তার পাশে নীচু ধানক্ষেতের দিকে এগোয় ও।  একটু এগোতেই ঘন ধানগাছের আড়ালে কিছু নড়ে উঠতে দেখে..... তীরের মত টর্চের আলো সেখানে পড়ে,  টর্চের আলো পড়ার সাথে সাথে দুজন লোক পড়িমরি করে সেখান থেকে উঠে ধান ক্ষেতের মধ্যে দিয়ে দৌড় দেয়,  গদাধর আন্দাজে ওদের পা লক্ষ্য করে গুলী চালায়।  কিন্তু ওরা দ্রুতো অদৃশ্য হয়ে যায় ধানক্ষেতের অন্ধকারে।

টর্চের আলোয় ধানক্ষেতের কাদার মাঝে লেখাকে পড়ে থাকতে দেখে।  তাড়াতাড়ি ওর কাছে নেমে আসে গদাধর।  লেখার কোন জ্ঞান নেই। হাতে আর কপালে কিছু জায়গায় ছঁড়ে গেছে,  তবে খুব গুরুতরো কিছু না,  ওকে ডাকতে গিয়েই ওর পাশে একটা সাদা কাপড় পড়ে থাকতে দেখে.... তুলতে গিয়ে থমকে যায় ও।  সন্দেহটাই সত্যি.... কাপড়ে ক্লোরোফর্ম জাতীয় কিছু দিয়ে লেখাকে অজ্ঞান করা হয়েছে।  কাপড়টা সাবধানে নিজের পকেটে ঢোকায় ও।  তারপর টর্চধরা হাতেই কোনরকমে লেখাকে তুলে রাস্তার পাশে নিয়ে আসে।  লেখার শাড়ী জলে আর কাদায় মাখামাখি হয়ে আছে।  ওকে একটা গাছে হেলান দিয়ে বসিয়ে ফোন হাতে নেয়।  এই অবস্থায় লেখাকে বাইকে নিয়ে যাওয়া যাবে না।  কোন গাড়ী দরকার।  ভাবতেই রহমতের কথা মনে পড়ে। অত্যন্ত বিশ্বাসী ছেলে। গদাধরের কথা খুব মানে।  ওর নিজের একটা অটো আছে সেটা চালায়।  দ্রুতো নাম্বার বের করে রহমততের নাম্বার ডায়াল করে।  দুবারের চেষ্টায় ওকে লাইনে পায়। 


মিনিট দশেক পরে রহমত ওর অটো নিয়ে সেখানে আসে।  দুজনে লেখাকে ধরাধরি করে অটোতে তুলে দেয়। রহমত গদাধরের দিকে তাকায়...

" কোথায় নিয়ে যাবো স্যার? " রহমত সোজা প্রশ্ন করে।

একটু থমকায় গদাধর,  তারপর বলে,  " আমার বাড়িতে..... চল আমিও আসছি পিছনে। "

রহমত আর কথা বাড়ায় না। অটো ছেড়ে দেয়। গদাধর ওর বাইকটা উঠিয়ে আবার স্টার্ট দেয়।  রহমতের আটোর পিছন পিছন ও নিজের বাড়িতে এসে পৌছায়।  থানা থেকে দশ মিনিটের দুরত্বে একটা বাড়ি ভাড়া নিয়ে একাই থাকে গদাধর। বাড়ির মালিক শহরে থাকেন তার পরিবার নিয়ে।  তাই ঝুট ঝামেলা কিছু নেই।  এই অঞ্চলে বাড়িঘর কম।  ওর বাড়ির আশেপাশে যে দু একটা বাড়ি আছে তাদের সাথেও খুব  একটা পরিচিতি নেই ওর।। আসলে পুলিসেত সাথে কেউ ঘনিষ্ঠাতা বাড়ায় না।  ফরকার ছাড়া।  এই রকম অভিজ্ঞতা ওর অনেক জায়গাতেই হয়েছে।  গদাধরও যেচে কারো সাথে মিশতে চায় না।  লে জানে কবে আবার অন্যায্য দাবী জানিয়ে বসে। 

অচেতন লেখাকে ঘরে পৌছে দিয়ে রহমত ফিরে যায় অটো নিয়ে।  গদাধরেই এই বাড়িতে দুটো ঘর। সাথে এটাচ বাথরুম আর কিচেন।   এখানে লেখাকে রাখার কোন প্লান ওর ছিলো না,  ভেবেছিলো আশারুল বা সুরজের বাড়িতে কদিন লুকিয়ে রাখবে।  কিন্তু এই অবস্থায় ওরা লেখাকে রাখতে আগ্রহী হবে কিনা সেটা জানা নেই।  আজকের রাতটা এখানেই রাখতে হবে ওকে। 

দরজা বন্ধ করে লেখার কাছে আসে গদাধর।  একটা তক্তপোষের উপর বিছানা করা ছিলো,  সেখানেই শুইয়ে দিয়েছে লেখাকে।  ওর কাপড়ে কাদা লেগে আছে,  গায়ের ক্ষত থেকে রক্ত পড়ছে।  কষ্ট হয় গদাধরের।  ফার্স্ট এইডের বক্স থেকে লাল ওষুধ আর তুলো নিয়ে ওর ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দেয়। কঅপালে আর হাতের কিছু জায়গায় ক্ষতে অষুধ লাগিয়ে দেয় অত্যন্ত যত্নের সাথে। লেখার কোন সাড় নেই। কাপড় ভেজা আর কাদায় মাখামাখি.....।

চিন্তায় পড়ে যায় ও।  কি করবে লেখাকে নিয়ে?  ওর জ্ঞান ফিরবে কখন জানে না,  এভাবে নোংরা আর ভেজা অবস্থায় থাকলে শরীর খারাপ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা,  কিন্তু ও কিভাবে লেখাকে চেঞ্জ করাতে পারে?  তাছাড়া এই বাড়িতে মেয়েদের কোন পোষাকও নেই।  এদিকে লেখাকে এভাবে ফেলে রাখতেও খারাপ  লাগছে।

চৌকির পাশে রাখা একটা কাঠের টুলে বসে  অচেতন লেখার মুখের দিকে তাকায় গদাধর। একেবারে নিস্পাপ প্রস্ফুটিত ফুলের মত মুখ।  ঘন কালো চোখের পাতা ঢেকে আছে ওর সুন্দর চোখদুটোকে। কোথাও কোন বৈসাদৃশ্য নেই,  গলার নীচে তাকাতেই ব্লাউজের আড়ালে নরম উঁচু জায়গাটার আভাস পাওয়া যাচ্ছে..... বুকের কাছটা আরো বেশী ফর্সা লেখার,  ওর উন্নত সুডৌল স্তন ব্রা-হীন বক্ষযুগলকেও একটুও হেলে পড়তে দেয় নি। গদাধর এভাবে কোন মেয়ের দিকে এর আগে তাকায় নি।  তাকে পর্যবেক্ষণ করে নি। লেখাকে দেখে ওর নিস্পৃহ হয়ে থাকা মনও সজল হয়ে আসে। চোখ স্রাতে পারে না লেখার শরীরের উত্তল আর অবতল অংশ থেকে,  কোথাও একটুও বিসদৃশ না...... যেনো কেউ মেপে মেপে ওকে বানিয়েছে। কোথায় যেনো একটা মোহ জন্মে যাচ্ছে, ....... এর আগে কোনদিন বিয়ে না করার জন্য আফসোস করে নি ও,  আজ কি একটু আফসোস হচ্ছে?  নিপাট ভদ্র, কলঙ্কহীন সুপুরুষ পুলিস অফিসার গদাধর কি আজ এক অপরিচিতার কারনে কলঙ্কিত হবে? 

খুব ইচ্ছা করছে লেখার নারী শরীরের রহস্য উন্মোচন করতে। জীবনে প্রথম কাউকে সামনে থেকে দেখে নিজের শরীরে উষ্ণতা অনুভব করছে ও। হার্ট এতো জোরে চলছে যা অনেক কঠিন অভিজানে গিয়ে মৃত্যুমুখে দাঁড়িয়েও এমন হয় নি।.......নিজের এই পরিবর্তনে নিজেই অবাক হয়ে যায় গদাধর।

নাহহ.... যা হয় হোক,  একটা মানুষকে এভাবে ফেলে রাখা যায় না।  গদাধর একটা পাত্রে জল আর কাপড় নিয়ে লেখার হাত আর পায়ের কাদা মুছিয়ে দেয়,  তারপর নিজের একটা পাঞ্জাবী এনে লেখাকে একটু তুলে ধরে প্রথমে পাঞ্জাবীটা মাথা দিয়ে গলিয়ে পরিয়ে দেয়,  তারপর সেটা টেনে হাঁটু পর্যন্ত নামিয়ে দেয়,  তারপর সেটার তলা দিয়ে হাত ঢুকিয়ে শাড়ীটা খুলে আনে। এইটুকু করতেই লেখার গোপন স্থানে গদাধরের হাত স্পর্শ হয়ে যায়...... এক অদ্ভুত নিষিদ্ধ অনুভুতিতে কেঁপে ওঠে ও। নারী শরীরের এই স্পর্শানুভুতি এর আগে খুব বেশী হয় নি ওর, যেনো মাখনে তালের সাথে হাত লাগছে ওর...... এতো কোমল, এতো আলাদা একটা নারী পুরুষের থেকে?  ইচ্ছা করছে আবার ছুঁয়ে দেখে..... চিরফিন নিজেকে যা থেকে দূরে রেখেছে সেটাই এখন চুম্বকের মত টানছে ওকে।   কাল লেখা কি ভাববে ও জানে না কিন্তু ওর নিজের কাছে নিজেই ক্রমশ পরাজিত হয়ে যাচ্ছে গদাধর।

শুধু শাড়ীটা খুলেই ক্ষান্ত হয় ও। কাদায় একেবারে মাখামাখি হয়ে আছে,  সেই তুলনায় শায়া ব্লাউজ পরিষ্কার,  তাই সেগুলোতে আর হাত দেয় না,  এমনিতেও কোন যুবতী মেয়ের শেষ আবরন খোলাটা যে কোন অবস্থাতেই ঠিক না।   শায়া ব্লাউজের উপর পাঞ্জাবী পরা অবস্থায় লেখাকে সেখানে শুইয়ে দিয়ে নিজের ঘরে আসে গদাধর।  বাথরুমে গিয়ে স্নান করার জন্য জামা কাপড় ছাড়তেই নীচে উত্তেজনার ফল নজরে আসে...... ওর লিঙ্গ একেবারে লৌহকঠিন হয়ে দাঁড়িয়ে,  অনেকদিন হয়ে গেলো এভাবে উত্তেজিত হয় নি।  আগে মাঝে মাঝে নিজেকে শান্ত রাখতে স্নানের সময় কখনো সখনো হস্তমৈথুন করতো কিন্তু বহুদিন সেটাও বন্ধ। বয়স তো আর কম হলো না,  ৩৬ সে ওর অনেক বন্ধুর ছেলেমেয়ে বড় হয়ে গেছে। সেখানে এখনো নিজেকে তৃপ্ত করার প্রাথমিক কৌশল ব্যাবহার করতে ওর নিজেরও লজ্জা হয়। কিন্তু আজ খুন ইচ্ছা করছে।  উপর থেকে শাওয়ারের জলে ওর গায়ের ধুলো ময়লা ধুয়ে যাচ্ছে...... গদাধরের হাত শক্ত করে চেপে ধরে নিজের লিঙ্গের গোড়া, মাঝারী আকারের দৃঢ় অঙ্গ ওর,  হালকা নীচের দিকে টানতেই লিঙ্গাগ্রভাগ খুলে যায়,  গাড় গোলাপী রঙের মাথা বাইরে বেরিয়ে আসে.... আবেশে চোখ বুজে ফেলে গদাধর। বরাবর ও হস্তমৌথুনের সময় একটা কল্পিত দৃশ্যপট রচনা করে,  তাতে ব্যাপারটা ভালো উপভোগ করা যায়। আজ সেই দৃশ্যপট আনমনে রচনা ক্ল্রতে গিয়ে সেখানে লেখা চলে আসে।  কল্পনায় লেখাকে অনাবৃত করে ও।  নারী শরীর সম্পর্কে ওর ধারনা খুব বেশী না থাকলেও তার গঠন ওর জানা...ব্লাউজের অন্তরালে লেখার নরম অথচ উন্নত স্তনকে নিজের কল্পনায় সাজিয়ে নেয়, ফর্সা স্তনের বাদামী বৃন্ত.... দুই স্তনের মাঝে নিজের মুখ ডুবিয়ে দেয়,  একটা মন মাতাল করা সুবাস লেখার বুকে.... গদাধরের স্পর্শে আবেশে চোখ বন্ধ করে দেয় লেখা,  " আহহ....কি করছো?  এমন কোরো না লক্ষিটি.... আমার যে আর ভালো লাগছে না,  পাগল হয়ে যাচ্ছি আমি "

গদাধরের ঠোঁট লেখার বুক থেকে মসৃন পেটের মধ্যভাগ দিয়ে ক্রমশ নীচের দিকে নামতে থাকে.... উত্তেজনায় লেখার  গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে,  ওর বুকের স্পন্দনের তীব্রতা গদাধরের কানে বাজে,  নাভিতে চুম্বন করে.....,কেঁপে ওঠে লেখা। হালকা শিশের মত শব্দ হয় লেখার মুখ থেকে, পেটের পেশী সঙ্কুচিত হয়..... গদাধরের সামনে অলীক মায়াবী রহস্য উন্মোচন কওয়ার মত লেকাহ্র শরীর উন্মোচিত হচ্ছে,  নাভীর নীচ থেকে ঢালু মহীসোপান হারিয়ে গেছে পেটিকোটের অন্তরালে, তার আড়ালেই অসীম রহস্যের হাতছানি।  পেটিকোটের দড়িতে হাত দেয় গদাধর, রহস্য উন্মোচন করার মত ধীরে ধীরে লেখার পেটিকোট নেমে যায় পায়ের নীচে। গদাধরের সামনে নিজের অপার সৌন্দর্য্যময় নগ্ন যৌবন মেলে ধরে লজ্জা পায় লেখা,  চোখে মুখে ওর লাজ, কিন্তু সরীর অন্য কথা বলছে। লজ্জায় হাত দিয়ে ঢাকার চেষ্টা করে নিজের নিম্মাঙ্গ। গদাধরের সবল হাত লেখার লাজুক হাত সরিয়ে উন্মুক্ত করে লোমাবৃত যৌনাঙ্গ।

নিজের মনেই লেখার গোপন অঙ্গে হাত দেয়..... ঠোঁট নামিয়ে আনে লেখার জানুসন্ধিতে,  পাতলা কালো চুলের আস্তরনে গোলাপের সুগন্ধ যেনো।  সেখানে ঠোঁট বুলিয়ে নেমে আসে লেখার যোনীখাতে..... লেখা যেনো আবেশে দুই পা ছড়িয়ে দেয়,  ওর গোলাপের পাপড়ির মত যোনীর ঠোঁট সরিয়ে ভিতরের লাল টকটকে গোপন দরজার সন্ধান পায়..... যেনো গোপন পাহাড়ী প্রস্রবন এর মুখ থেকে জলের প্রবাহিত ধারা বাইরে এসে ভিজিয়ে দিচ্ছে সবকিছু....


নিজের লৌহকঠিন গোপন অঙ্গ লেখার কোমল হাতে ধরিয়ে দেয় গদাধর...... কামনার আগুনে পুড়তে থাকা লেখা শরীরের শক্তি দিয়ে চেপে ধরে গদাধরের লিঙ্গ.....বাস্তবে গদাধরের তীব্র হস্তচালনায় নিজের অন্তিম সময় জানান দেয়।  দীর্ঘ সুদৃঢ় লিঙ্গ থেকে লাভা উৎক্ষেপনের মত দীর্ঘ সময় জমানো বীর্য ছিটকে বাইরে বেরিয়ে আসে..... শরীরে ঝাঁকুনি দিয়ে আরো শক্ত করে চেপে ধরে গদাধর.... শেষ বিন্দু সাদা বীর্য্য বাথরুমের মেঝেতে পড়ে ছড়িয়ে যায়.....


শরীর তৃপ্ত হওয়ার পরেই হঠাৎ মারাত্বক লজ্জা চেপে ধরে গদাধরকে।  এসব কি করছে ও?  নিজে রক্ষক হয়ে আশ্রিতা অসহায় লেখাকে ভোগ করার কল্পনায় মত্ত?  হোক না কল্পনা তবুও লেখার প্রতি ওর মোহ তো জন্মেছে? তাহলে বিকাশের আর ওর মধ্যে ফারাকটা কোথায় থাকলো? বিকাশ বাস্তবে লেখাকে ভোগ করার কথা ভাবে  আর ও কল্পনায়?  এটাই সত্যি......নিজের প্রতি খুব রাগ হয় ওর।  যৌনতা মানুষকে স্বাভাবিক থেকে অস্বাভাবিক বানাতে সময় নেয় না..... লেখাকে ওর এখানে আনাটা একেবারেই উচিত হয় নি,  সেটা এখন বুঝতে পারছে...... যদিও ও জানে বাস্তবে ওর থেকে লেখার কোন ক্ষতি হবে না,  তবুও নিজের মনে মনে তাকে সদ্ভোগের ভাবনাও তো ক্রাইমের মতই ভয়াবহ...... উফফফ....আর ভাবতে ভালো লাগছে না।
Deep's story
Like Reply
(13-10-2025, 03:03 PM)sarkardibyendu Wrote:
অতৃপ্ত যৌবনের গল্প

নিজের ৩৬ বছরের জীবনে  আর ১১ বছরের কেরিয়ারে গদাধর অনেক কেস দেখেছে। সেখানে খুন, ডাকাতি, চুরি,  জচ্চুরি সব। অনেক কেস সমাধান করেছে আবার অনক কেস মাঝপথে বন্ধ করে দিতে হয়েছে।  বেশীরভাগ কেসেই কোথাও না কোথাও কেউ না কেউ তদন্তে মাথা গলাবেই।  তবে ডিপার্টমেন্টের চাপ না থাকলে গদাধর আর কোন চাপের কাছে মাথা নোয়ায় না।  তবে প্রভাবশালী লোকেরা প্রথমে নিজে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করে,  যখন বোঝে নিজের চাপে কাজ হচ্ছে না তখন উপরমহলের মাধ্যমে চাপ দেওয়ায়।  এই কেসটাতে লোকাল চাপ থাকলেও এখনো উপরমহলের কোন চাপ আসে নি এটাই বাঁচোয়া,  সেই চাপের বীপরীতে যাওয়া মানে আবার একটা ট্রান্সফার।  আবার নতুন জায়গা,  নতুন মানুষ..... তাই গদাধর চাইছে উপরমহলের চাপ আসার আগেই আসল খুনীকে পাকড়াও করতে।  বিকাশ এলাকায় প্রভাবশালী হলেও এখনো উপরমহলে যোগাযোগ করে নি,  কেনো সেটা জানে না।  হয়তো এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দল সরাসরি জড়াতে চায় না বলেই বিকাশ তার উপরমহলের সাহায্য পাচ্ছে না।  এটা কোন রাজনৈতিক হত্যা না,  বিকাশ নিজের স্বার্থে এতে চাপ দিচ্ছে.... ওর দল এটা মঞ্জুর করবে না এটাই স্বাভাবিক,  এক্ষত্রে বিকাশের আগেই ওকে খুনীর কাছে পৌছাতে হবে।  কিন্তু কিভাবে সেটাই মাথায় আসছে না গদাধরের।

গল্প এগিয়ে চলেছে দ্রুত গতিতে।
[+] 2 users Like xanaduindia's post
Like Reply
অসাধারণ সুন্দর গল্প। পড়ে খুব ভালো লাগলো। এরপরের পর্বগুলো পড়ার জন্যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় রইলাম।
[+] 1 user Likes pradip lahiri's post
Like Reply
অতৃপ্ত যৌবনের গল্প



কালে লেখার ঘুম ভাঙে পাখির কোলাহলে। গদাধরের বাড়িটা অনেকটা জায়গা নিয়ে।  জানালার পাশে নানা গাছ গাছালিতে ভর্তি।  ভোর ভোর সেখানে কয়েকটা শালিক পাখি চেঁচামেচি শুরু করে দিয়েছে।  তাদের চিৎকারে ঘুম ভেঙে যায় লেখার।  কাল বাইক থেকে পড়ে যাওয়ার পর দুটো লোক ওকে টেনে ধানক্ষেতের মধ্যে নিয়ে যায়।  লেখা চেঁচানোর চেষ্টা করলে মুখে একটা কাপড় চাপা দিয়ে রাখে ওরা..... তারপর আর কিছু মনে নেই।  এখন গায়ে হাত পায়ে মারাত্বক ব্যাথা অনুভব করছে।  চোখ খুলে কোথায় আছে সেটা বোঝার চেষ্টা করে।  একটা সাদা চুনকাম করা দেওয়ালের ঘর।  বেশ পুরোনো হলেও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। উপরে ছাদে জায়গায় জায়গায় জলের দাগ ধরে গেছে..... মাথার কাছে খোলা জানালা,  লোহার গরাদ দেওয়া, এর বাইরেই শালিকগুলো চেঁচামেচি করছে।

ঘরে একটা কাঠের আলমারী আর কাঠের চেয়ার টেবিল ছাড়া আর কিছুই নেই,  টেবিলে বেশ কিছু বই রাখা আছে.... এছাড়া একটা চার্জার লাইট আর কলমদানী।  একটা কাঠের তক্তপোষে শুয়ে আছে লেখা।  ও মাথা তুলতেই হতবাক হয়ে যায়..... এতোক্ষন খেয়াল করে নি যে ওর পরনে একটা সাদা পাঞ্জাবি। তবে তার নীচে শায়া ব্লাউজ যথাস্থানে আছে।  তার মানে যে শাড়ী খুলেছে সে আর সাহস দেখায় নি..... লোকটা কে?  নিশ্চই ইন্সপেকটর সাহেব হবেন,  একটু লজ্জা লাগে লেখার.... শাড়ী খোলার সময় নিশ্চই ওর শরীরের দিকে চোখ গেছে ওনার..... ইসসস....এরপর ওনার সাথে কথা বললেই কেমন অপ্রস্তুত লাগবে নিজেকে।

হাতে কয়েক জায়গায় ছড়ে যাওয়ার দাগ,  এগুলো কাল পড়ে গিয়ে হয়েছে।  উনি যত্ন করে লাল ওষুধ লাগিয়ে দিয়েছেন,  কিন্তু ব্যাথা করছে খুব,  পায়েও লেগেছে বোধহয়,  উনি আর শাড়ী তুলে দেখাত চেষ্টা করেননি এটাই যা বাঁচোয়া। 

লেখা উঠে বসে।  পা টা বাড়াতেই ব্যাথা টের পায়,  কাপড়ের আড়ালে কাটা ছড়া আছে। নাহলে এতো ব্যাথা হতো না।  এখন খুব বাথরুম পেয়েছে,  ও অবশ্য জানে না বাথরুম কোথায়।  কি করবে ভেবে পায় না। গদাফহর কোথায় সেটাও জানে না ও।  নিশ্চই পাশের ঘরে ঘুমাচ্ছেন,  কাল যা ধকল গেছে.... সবই হয়েছে ওর কারনে।  ভাবতেই খারাপ লাগছে লেখার।  এখন আবার বাথরুম যাওয়ার জন্য এই ভোরে ওনাকে ডেকে অস্থির করার কোন মানে হয় নাকি?  লেখা ধীরে ধীরে ব্যাথা পা নিয়েই এগোয়.... ভেজানো দরজা ঠেলে ও একটা বড় ঘরে আসে,  এটা বোধহয় বসার ঘর,  এখানে একটা খাবার টেবিল, চারটে চেয়ার পাতা,  একপাশে দেওয়ালে একটা টিভী, এছাড়া একটা সোফা আর ছোট টেবিলও আছে।  এই ঘরের সামনের দিকে বারান্দা আর পিছনে বাথিরুমের দিকে গেছে মনে হচ্ছে,  ঘরের অন্যপাশে একটা ঘর আছে সেটার দরজা বন্ধ ভিতর থেকে৷ লেখা বাথরুমের দিকে এগোয়,  রান্না ঘর ছাড়িয়েই বাথরুম আর পায়খানা একসাথে,  লেখা বাথরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়।  মাথা গলিয়ে পাঞ্জাবীটা খুলে ফেলে,  তারপর ব্লাউজ আর শায়া ছেড়ে নগ্ন হয়,  হাঁটুত বশ ভালো ছড়ে গেছে,  তার দাগ শায়াতে পাওয়া যাচ্ছে।  লেখা প্রাত:কর্ম সেরে গায়ে জল ঢালে,  ঠান্ডা জল গায়ে দিতেই কেঁপে ওঠে ও।  তাও বেশ করে জল ঢেলে নিজেকে পরিষ্কার করে, তারপর শায়া আর ব্লাউজটা ধুয়ে সেগুলো দিয়েই গা মুছে পাশে রাখে আর পাঞ্জাবীটা পড়ে নেয় আবার।  এবার আর ভিতরে কিছু নেই,  তবে গদাধিরের পাঞ্জাবী প্রায় ম্যাক্সির মত ওর হাঁটুর অনেক নীচে পৌছে গেছে। 

বাথরুমের দরজা বন্ধ করে ও বসার ঘরে আসতেই দেখে গদাধর আড়মোড়া ভাঙতে ভাঙতে বেরোচ্ছে ঘর থেকে।  লেখা লজ্জায় মাথা নীচু করে দেয়।  গদাধর আর পাঞ্জাবীর প্রসঙ্গে যায় না,  একটু হেসে বলে,  " শরীর কেমন এখন..... কাল ক্লোরোফর্ম দিয়ে অজ্ঞান করে দেয় ওরা আপনাকে..... "

লেখা মাথা নাড়ে,  " ভালো..... "

গদাধর ওর চেঁচড়ে হাঁটা দেখে বুঝতে পারে কাল পায়েও লেগেছে। ও সহানুভুতির সুরে বলে, " ইশ পাটাতেও লেগেছে তাই না.....আমি একটু ওষুধ দিচ্ছি আপনি তুমি লাগিয়ে নাও। "

এবার লেখা হাসে, " সে দেখা যাবে.... আপনার রান্নাঘরে একটু ঢুকব? একটু চা বানাই.... অনেক ধকল গেছে আপনার। "

" আরে না না..... এ রোজকার রুটিন....প্রায় রাতই এমন যায় আমাদের, তুমি বসো আমি চা করে আনি। " গিদাধর ওকে নিরস্ত করতে চায়।

" না.... আপনি বসুন, আমার এমন কিছু লাগেনি যে খাটে পা তুলে বসে থাকতে হবে..... গ্রামের মেয়েদের এমন অনেক ব্যাথা নিয়েই সারাদিন কাজ করতে হয়..... সামান্য চা করা কোন ব্যাপার না। " লেখা রান্না ঘিরে ঢুকে যায়।  গদাধর আর কিছু না বলে মোবাইলটা খুলে সোফায় গা এলিয়ে দেয়।

সাত আট মিনিট বাদে লেখা দু কাপ চা একটা প্লেটে সাজিয়ে গদাধরের সামনে রাখে।  গদাধর ওকে সামনের সোফায় বসতে বলে।  লেখা একটু জড়সড়ো হয়ে সামনে বসে,  গিদাধর এক নজর ওর মুখের দিকে তাকায়, সদ্য ঘুম ভেঙে ওঠা লেখার মুখে এক অদ্ভুত সারল্যে ভরা।  কাল রাতে ওকে দেখে উত্তেজিত হয়ে যা ঘটিয়েছে সেটা ভেবে লজ্জা লাগে গদাধরের,  একটা বিস্কুট তুলে তাতে কামড় দিয়ে ও বলে,  " এখন কদিন এখানেই থাকো তুমি,  ভয় নেই কোন......তবে বাইরে একেবারে বেরোবে না,  গ্রামের লোকের কৌতুহলের শেষ নেই..... তোমাকে এখানে দেখলে ওনেক কথা শুরু হয়ে যাবে। "

লেখা বাধ্য মেয়ের মত মাথা নাড়ে।  গদাধর আবার বলে, " আর আমার খোঁজে কেউ এলেও দরজা খুলবে না..... আমি অবশ্য বাইরের গেটে তালা দিয়ে যাবো। "

" তার মানে আমাকে এখানে গৃহবন্দী হয়ে থাকতে হবে" লেখা বলে।

" হুঁ....অন্তত যতদিন কেসের সুরাহা না হচ্ছে..... সেটা তোমার সুরক্ষার কারণেই। " গদাধর একটু গম্ভীর হয়।

" না না আমি সেটা বলি নি..... আমি জানি আপনি আমার কথা ভেবেই এইসব করছেন....এমনি বলছিলাম।" লেখা অপ্রস্তুত হয়।

গদাধর কিছু না বলে ভিতরে চলে যায়।  আলমারী খুলে হাতে করে দুটো বেনারসী শাড়ি এনে লেখার সামনে রেখে বলে,  "আমার ঘরে মেয়েদের কিছু নেই,  আজ ফেরার সময় নিয়ে আসবো..... আপাতত আমার মায়ের এই দুটো শাড়ী দিয়ে কাজ চালাতে পারো। "

লেখা হেসে ফেলে, " এসব শাড়ী লোকে বিয়েতে পড়ে.... আপনি এগুলো রাখুন,  আমি এতেই কাজ চালিয়ে নেবো। "

গদাধর বোকার মত মুখ ক্ল্রে আবার শাড়ীগুলো তুলে নেয়।

থানায় ঢুকতেই গদাধর দেখে একটা ত্রিশ বত্রিশ বছরের নেশাখোর ধরনের দেখতে ছেলে সেখানে বেঞ্চে বসে আছে।  গায়ে ধরা কাছা। ইশারায় আশারুল জানায় যে এর নাম পরেশ, নরেনের ছেলে আর লেখার বর। ভালো করে দেখে গদাধর,  প্রায় কালোর দিকে গায়ের রঙ, মাথায় ঝাঁকড়া আর উস্কো খুস্কো চুল, গালে প্রায় মাসখানেকের না কাটা দাঁড়ি...... গাল এই বয়সেই তুবড়ে গেছে, দীর্ঘশ্বাস পড়ে গদাধরের..... এই মানুষের স্ত্রী যে লেখা সেটা বলে দিলেও কেউ বিশ্বাস করবে না। একেবারে দিন আর রাত..... কোথাও কোন সামঞ্জস্য নেই।

গদাধর ওর সামনে দাঁড়াতেই পরেশ উঁঠে দাঁড়ায় হাতজোড় করে,  " নমস্কার স্যার.....বাবা কিভাবে মরলো কিছুই জানি না আমি....একদিন পর খবর পেয়ে এসে বডি নিয়ে যাই স্যার.....এর বেশী কিছুই জানি না স্যার আমি। "

" সেদিন তুই কোথায় ছিলি?  "

" আমি টাউনে কাজে ছিলাম স্যার..... রাতে বাড়ি ছিলাম।"

" হু....তুই যে সেদিন সেখানেই ছিলি তার কোন প্রমাণ আছে?  "

" আছে স্যার.... আমার ঘরে নবীন আর জগা থাকে.... ওরা জানে। "

" এরা কারা...."

পরেশ এবার চুপ করে যায়।  একটু থেমে বলে,  " আমার ইয়ার বন্ধু স্যার.... একসাথে থাকি। "

" ইয়ার বন্ধু না ছাই......সব কটা গাঁজাখোর স্যার,  শহরে ইল্লিগাল কাজ করে টাকা কামায় আর মদ গাজা খেয়ে কাটায়..... এক পয়সা বাড়িতে পাঠায় না কেউ.....এদের নামে থানায় কেসও আছে। " আশারুল বলে ওঠে।

পরেশ গদাধরের পা জড়িয়ে ধরে,  " আমায় বাচান স্যার.... আমি বাবাকে মারি নি,  বাবার সাথে জমি জমা বেচা নিয়ে আমার কথা কাটাকাটি হতো বটে তবে তার জন্য ওকে মারার কথা কখনো মাথাতেও আসে নি স্যার।"

" পা ছাড়...... তুই নিজে না মেরে কাউকে পাঠিয়েছিলি তাহলে.... "

" মা কসম স্যার...... আমি এসবের কিছুই জানি না। " পরেশ হাউঁমাউ করে কেঁদে ওঠে।

গদাধর নিজের চেম্বারে গিয়ে বসে।  আশারুল পিছনে পিছনে ঢোকে....." স্যার,  একে গারদে ঢুকিয়ে দেবো নাকি?  দুই ঘা দিলেই সব উগরে দেবে।"

গদাধর একটা সিগারেট ধরিয়ে ধোঁয়া ছেড়ে বলে, " ছেড়ে দে ওকে..... আর বল দরকারে ডেকে পাঠাবো। "

আশারুল হতাশ হয়ে সেলাম ঠুকে বেরিয়ে যায়। ও ভেবেছিলো গারোদে বেশ করে ধোলাই মলাই করা হবে... স্যার সেই আশায় জল ঢেলে দিলো।

গদাধর সোজা হয়ে বসে।  এবার বাকি থাকলো শুধু একজন আর সে নুটু.... এই ব্যাটাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই আর কেউ বাকি থাকবে না,  লেখা নুটু কোথায় আছে সেটা জানলেও বলবে না..... সে না বলুক,  গিদাধরের সোর্স কম নেই,  আজকের মধ্যেই নুটুর পাতা লাগাতে হবে।  ও ফোন তুলে ডায়াল করে একজনকে।










রমা কেমন শান্ত হয়ে গেছে। এই জ্বর শুধু ওর শরীর না,  সাথে সাথে অস্থির মনকেও শান্ত করে দিয়েছে।  যে রাগ, অভিমান নিয়ে এতোদিন নুটুকে ও সারাক্ষণ জ্বালিয়ে এসেছে সেটা আজ আর নেই।  কাল রাতে নুটুর সেবা, ওর মন থেকে সব কিছু মুছে দিয়েছে।  মেয়েদের মন বড় অস্থির।  সে কখনো বিশাল কিছু চায় না.....চায় একটু ভালোবাসা,  যত্ন,  আর মনোযোগ...... সেটুকুই অনেক কষ্টকে ভুলিয়ে রাখতে পারে।  হারাধন শরীরের সাথে সাথে রমার মন থেকেও সরে গেছিলো।  যেনো রমা একটা যন্ত্র।  ওর কোন চাওয়া পাওয়া নেই..... ভালোবেসে দুটো কথাও বলা যায় না,  একদিন ওর শরীর খারাপ হলে ওকে ভালোবেসে যত্ন করা যায় না,  একবেলা নিজের হাতে করে খাইয়ে দেওয়া যায় না?...ও অসুস্থ হলে নিজের মনে কিছু প্রতিক্রিয়া হয় না? ...... হারাধনের সেটা হয় না.... শারীরিক অতৃপ্ততার সাথে ক্রমাগত ওর প্রতি হারাধনের এই নিস্পৃহতা রমাকে ভাবিতে বাধ্য করে যে ওর প্রতি কারো সামান্য সহানুভুতিও নেই।  ও একটা মেশিন..... শুধু কাজ আর কাজ করার জন্যই জন্ম ওর।

কাল রাতে নুটুর যত্ন আর উদবেগ দেখে ও অবাক হয়ে যায়।  ওর বাবা মাও সামান্য জ্বরে এতো উদবেগ দেখায় নি বোধহয়।  এতো ভালো মন যার আছে তাকে সামান্য কারণে অবহেলা আর অপমানে এতোদিন দূরে সরিয়ে রেখেছিলো।  কে জানে ওর হয়তো কোন প্রেমিকা আছে...... তার কাছেই সঁব সঁপে দিয়ে রেখেছে বলেই রমার প্রতি কোন আবেগ দেখায় না।  এমন মানুষ কজন পায়?  যে হাতের সামনে সুযোগ পেয়েও কোথায় কতদূরে থাকা প্রেমিকার জন্য অপেক্ষা করে থাকে?  বেচারা..... আজ থেকে আর রমা নিজেও কষ্ট পাবে না আর নুটুকেও কষ্ট দেবে না।

নুটু সকালে ওর ছেলেকে খাইয়ে দাইয়ে স্নান করিয়ে কলেজে দিতে গেছে।  এসব কাজ ওকে বলতে হয় না।  ও রমাকে বিছানা থেকে উঠতেই দেয় নি।  শুধু বাথরুমে যাওয়ার জন্য যেটুকু উঠছিলো, তাতেই ওর মাথা ঘুরিয়ে ওঠে.... একরাতের জ্বরে ওর শরীর দুর্বল হয়ে গেছে।  এখোনো গা সামান্য গরম।  নুটু সকালে দোকান থেকে রুটি তরকারী এনে খাইয়ে ওষুধ খাইয়ে গেছে।  রমা বারণ করলেও শোনে নি।  হারাধন বোধহয় আজকেও আসবে না।  কাল ভোরে ফিরতে পারে। 

এর মধ্যেই নুটু ফিরে আসে।  ছেলে কাছেই একটা নার্সারী কলেজে পড়ে।  দু তিন মিনিটের রাস্তা। বআড়ি ফিরেই নুটু ওর কাছে এসে বসে।  রমা বুছানায় আধশোয়া হয়ে ভাবছিলো।  ওকে দেখে বিছানায় বসতে বলে।  নুটু এখন অনেক সহজ। এক রাতের ঘটনা ওকে রমার অনেক কাছে এনে দিয়েছে। আগে রমাকে দেখকেই গুটিয়ে যেতো ও।  আজ আর ওর ব্যাবগ্লহারে কোনো জড়তা নেই।  রমার দিকে আগে তাকাতো না,  আজ ওর কপালে হাত রেখে বলে, " এখনো গা গরম আছে...... একটু বাদে স্নান করে নেবে,  তারপর ভাত খেয়ে ভালো করে ঘুমাবে। "

ওর শাশনের ভঙ্গীতে কথায় রমা হেসে ফেলে, " কিরে,  নিজের বৌকেও এভাবেই শাশনে আর যত্নে রাখবি তো?  "

নুটু লজ্জা পায়।  লেখার কথা মনে পড়ে যায় ওর।  তমা ছাড়া এর একজনকেই তো যত্ন করতে ইচ্ছা করে।  সে কোথায় আছে এখন কে জানে,  সেই ঘটনার পর লেখা আদৌ সেখানে আছে না নরেন ওকে তাড়িয়ে দিয়েছে সেটাও জানা নেই। 

" কিরে বল, নিকের বৌকে এভাবেই যত্নে রাখবি তো?  রমা আবার বলে,  ওর চোখের কোনে হাসি।

" কি দরকার বিয়ের?  এভাবেই সারা জীবন কেটে গেলেই বা খারাপ কি?..... আর আমার মত ছেলেকে বিয়ে করতে কারো বয়েই গেছে। "

" কে বলেছে?.....সব মেয়ে সমান না রে..... কেউ কেউ একটু ভালোবাসা আর যত্ন পেলেই আর কিছু চায় না....।"

আবার লেখার কথা মনে পড়ে যায় নুটুর।  সত্যি, লেখা তো ওর কাছে এটাই চাইতো,  ওর মত একটা ভিখারীকে মানুষ বানিয়ে দিয়েছে ও,  স্বপ্ন দেখতো একদিন নুটুকে নিয়ে ঘর বাঁধবে ও,  বিয়ে তো শুধু লোক দেখানো,  আসলে সেখান থেকে কিছুই পায় নি লেখা। "

" যাও..... এসব বাদ দিয়ে এবার স্নান করে নাও তো,  বেলা বেড়ে গেছে....। " নুটু বলে।

শরীর খুব দুর্বল হয়ে গেছে রমার।  ও বিছানা থেকে উঠে স্নান করার জন্য বের হয়।  রমাদের বাথরুম বাইরে।  টিনের দরজা লাগানো বাথরুমের ছাদ খোলা,  চারিদিকে  দেওয়াল দিয়ে ঘেরা।  রমা বাথরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। কাপড়,  শায়া,  ব্লাউজ ছড়ে ছেড়ে নিজের নগ্ন শরীরে জমানো ঠান্দা জল ঢালতে থাকে,  জ্বর ছাড়ার পর গা ঘেমে সারা শরীরে অস্বস্তি হচ্ছে।  ঠান্ডা জলের সাথে নিজেকে পরীষ্কার করে কিছুটা তৃপ্তি লাগে,  যদিও জল গায়ে ঢালতেই গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছে......পরিষ্কার শুকনো গামছা দিয়ে গা মুছে কাপড় পড়ার জন্য হাত বাড়াতেই মাথাটা ঘুরে ওঠে ওর,  দুচোখ অন্ধকার হয়ে যায়..... সেখানেই পড়ে যায় রমা।  এতো ফুর্বল যে উঠতে গিয়েই মাথা ঘুরে যাচ্ছে। 

রমা পড়ে যাওয়াতে বাথরুম থেকে একটা শব্দ আসে।  নুটু চাল ধুয়ে ভাত বসানোর জন্য তৈরী করছিলো,  শব্দ শুনে বাথরুমের দিকে তাকায়। সেখান থেকে রমার কোন সাড়া শব্দ নেই।  ও কয়েকবার ডাকার পর অস্ফুটে একটা আওয়াজ আসে ভিতর থেকে।  নুটু বুঝিতে অয়ারে যে রমার কিছু হয়েছে,  বাথরুমের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ।  ও দেখতেও পাচ্ছে না।  শেষে সাড়া না পেয়ে দেওস্লের উপর দিয়ে তাকাতে দেখে রমা নীচে পড়ে আছে,  ওঠার ক্ষমতা নেই।

নুটু আর কিছু না ভেবেই টিনের পলকা দরজা টান দিতেই সেটার কাঠ ভেঙে দরজা খুলে যায়,  মেঝেতে রমা.... শরীরে একটুও কাপড় নেই। নুটু সেদিকে মন না দিয়ে দুই হাতে রমার নগ্ন শরীর তুলে কোলে করে ওকে ঘরে নিয়ে আসে।  রমা অচেনত হয় নি,  নুটু ওর নগ্ন শরীর এভাবে তোলায় লজ্জায় লাল হয়ে আসে ও।  কিন্তু প্রতিক্রিয়া দেএয়ার মত শারীরিক অবস্থা  ওর নেই।  নুটু ওকে যত্ন করে বিছানায় শুইয়ে দেয়। 

" ইশ..... এখুনি একটা অঘটন ঘটে যেতো,  ভাগ্য ভালো কোথাও কেটে কুটে যায় নি..... নিজে পারছো না যখন আমায় ডাকবে তো... " নুটু ওকে বকাবকি করে।  রমা যে সম্পূর্ণ নগ্ন সেকথা এতক্ষণ ওর মাথাতেই আসে নি।

লজ্জায় রমা ওর দিকে তাকাতে পারছিলো না ও হাত দিয়ে নিজের বুক আর পা ভাঁজ করে নিম্নাঙ্গ আড়াল করে বলে,  " কাপড়টা দে তাড়াতাড়ি..... " সরাসরি নুটুর চোখের দিকে ও তাকাতে পারছে না।

এবার নুটুর খেয়াল হয় যে রমা সম্পূর্ণ বিবস্ত্র।  হাত দিয়ে বুক আড়াল করলেও সেটা প্রায় অনেকাংশেই দৃশ্যমান।  হঠাৎ তাল হারিয়ে ফেলে ও।  তাড়াতাড়ি রমার কাপড়,  শায়া ব্লাউজ খুঁজে ওলে দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে উদ্যোগী হয়।

" দাঁড়া..... " পিছন থেকে ক্ষীণ গলায় রমার ডাক আসে " আমি একা পারবো না,  একটু সাহায্য করতে হবে। "

নুটুর পা যেনো কেউ আঠা দিয়ে আটকে রেখেছে।  ও খুব ধীরে ধীরে আয়াবার রমার কাছে আসে।  চোখ নামানো ওর। রমা লেখার মত সুন্দরী না হলেও যথেষ্ট সুন্দরী.... বাচ্চা হওয়ায় কিছু শারীরিক পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী,  সেগুলো ছাড়া এখনো বেশ আকর্ষনীয়। কোন মনে ও উঠে বসেছে।  ভেজা চুল কাঁধের দুই দিক দিয়ে নেমে ওর স্তনের উপরে পড়েছে,  পেটে হালকা চর্বির ভাঁজ,  পা মুড়ে রাখায় যোনী দেখা যাচ্ছে না তবে পেটের কিছুটা নীচে কালো যৌনকেশের আভাস.... হাত পা এর চামড়া একেবারে টানটান আর দাগহীন..... রমা ওর স্তনের উপর থেকে হাত সরিয়ে দিয়েছে।  একটু বড় আর আমান্য ঝুলে যাওয়া স্তনের বৃন্ত কালো আর বেশ বড়ো..... কাল রাতেই ডান স্তনের উপরে একটা তিন দেখেছে ও.... আজ খোলা বুকের মাঝে সেই তিলটা জ্বলজ্বল করছে।

এসব নিয়ে ভাবয়লতে না চাইলেও সদ্য তরুন নুটুর শরীরের প্রতিক্রিয়া দেখানোটা স্বাভাবিক,  না চাইতেও ওর লিঙ্গ কঠিন হতে শুরু করে,  নুটু রমার আরো কাছে এসে ওকে ব্লাউজ পরিয়ে দেয়....রমা নিজেকে ওঠে পারছিলো না..... নুটু ওর পায়ের মধ্যে দিয়ে শায়াটা গলিয়ে উপরে তুলে দেয়..... মুহুর্তের জন্য রমার পায়ের ভাঁজ খোলে আর ওর জানুসন্ধিস্থল পুরো দেখা যায়।  ঘন কালো চুলের মাঝে স্পষ্ট চেরা।

বারমুডার উপর দিয়ে নুটুর লিঙ্গ ফুলে ওঠে।  ও সেখান থেকে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে ছিলো,  কিন্তু ওর এই পরিবর্তন রমার চোখ এড়ায় না..... ওর প্যান্টের ফোলা উঁচু জায়গায় ওর চোখ বারবার পড়তে থাকে।  নগ্ন রমা যে ওকে উত্তেজিত ক্ল্রে তুলেছে সেটা বোঝা যাচ্ছে। 

নুটু সরে যেতে গেলে রমা হাত ধরে ওকে কাছে টেনে নেয়।  রমা খাটের একেবারে ধারে বসে আছে।  আর নুটু নীচে ওর একেবারে গা ঘেষে দাঁড়িয়ে।  রমার শরীরের সাথে স্পর্শ হয় নুটুর শরীর।  নুটু একেবারে চুপ ক্ল্রে গেছে।  শরীর আর মনের মাঝে এক তীব্র দ্বন্দ হচ্ছে।  শরীর তার মত করে প্রতিক্রিয়া দিলেও ওর মন সরে যেতে চাইছে।  কিন্তু রমার আকর্ষণ এড়াতে পারে না।  রমা ওকে টেনে নিতেই ও রমার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট রাখে।  রমা ওকে শক্ত করে নিজের বুকে জড়িয়ে ধরে।  জ্বরের জন্য রমার শরীর যৌনতায় সাড়া দিচ্ছে না কিন্তু মন নুটুকে ছাড়িতে চাইছে না।  নিজের শরীরে নুটুকে অনুভব করলেও দুর্বলতা ওকে প্রতিক্রিয়া দিতে দিচ্ছে না।  নুটু যেনো স্থান কাল পাত্র সব ভুলে গেছে।  ও চোখ বুঝে রমার কোমল শরীরের উত্তাপ নিতে ব্যাস্ত। 
রমার ঘাড়ে গলায় ও নিজের ঠোঁট ঘষে চলে..... মনে হচ্ছে লেখাকে আবার কাছ পেয়েছে।  রমার হাত ওর প্যান্টের আড়াল থেকে দাঁড়িয়ে থাকা লীঙ্গ বের করে আনে। 

রমার হাতের মধ্যে আরো শক্ত হয়ে ওঠে নুটুর লিঙ্গ..... রমা জানে এই মুহুর্তে নুটুর কি দরকার.....ও নুটুর কঠিন লিঙ্গ মুঠ করে  ধরে নাড়াতে থাকে..... নুটু চোখ বন্ধ করে আছে,  শরীর উত্তেজনায় কাঁপছে ওর। চোখের সামনে লেখা ভেসে বাড়াচ্ছে..... রমার শরীর উত্তেজিত না হলেও নুটুর অঙ্গ চালনা করতে ওর বেশ লাগছে..... এতো কঠিন আর উত্তেজিত লিঙ্গ এই প্রথম দেখছে,  নুটুর প্যান্ট মাটিতে খুলে পড়েছে.... একটা গেঞ্জি ছাড়া ও পুরো বিবস্ত্র।  রমা আরো দ্রুতো হাত চালাতেই নুটূ মুখ দিয়ে আরামের সংকেত দেয়,  অনেকদিন নুটু যৌনতা বা  স্বমেহন করে নি..... তাই ওর উত্তেজনা বাঁধ ভাঙা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রমা এর আগে হারাধনকে জাগাতে ওর লিঙ্গ সঞ্চালন করে দিয়েছে,  কিন্তু এই কাঠিন্য, এই তীব্রতা হারাধনের কোনদিনই ছিলো না.... রমা হাত দেএয়ার সাথে সাথেই সে নিজেকে সমর্পন করে দিতো।  কিন্তু নুটুর লিঙ্গ অনেক আলাদা...... ওর হাতের মাঝে যেনো গোখরো সাপের মত ফুঁসছে,  নীচের দিকে টান দিতেই ওর লিঙ্গের লাল অগ্রভাগ বেরিয়ে আসছে......রমা তীব্রতা আরো বাড়িয়ে দেয়,  নুটু ওকে চেপে ধরে ওর ঘাড়ে মাথা গুজে দিয়েছে...সেই অবস্থাতেই ওর বিস্ফোরন ঘটে,  তীরের মত ছিটকে বের হয় ওর বীর্য্য.... রমার ব্লাউজের নীচ থেকে খোলা পেট ভরে যায় সাদা থক থকে বীর্য্যে.... রমার হাতেও কিছুটা লাগে.....


না চাইতো ঘটে যাওয়া ঘটনায় নুটু কি করবে ভেবে পায় না।  একটা কাপড়ে রমার শরীর থেকে নিজের বীর্য্য মুছে প্যান্ট পরে নেয়...... রমার চোখের দিকে তাকাতে পারছে না ও।  একটা লজ্জা বোধ আর পাপ বোধ কুরে কুরে খাচ্চে ওকে।  ও কি রমার কাছে ধরা দিয়ে দিলো? এরপর কি আর রমাকে প্রত্যাখ্যান করা সহজ কাজ হবে? 

সারাদিন রমার চোখের দিকে তাকাতে পারে না ও।  রমা কিন্তু ব্যাপারটায় ওতোটা প্রতিক্রিয়া দেখায় না।  যেনো কিছুই হয় নি এভাবে সে নুটুকে গ্রহন করে।  সন্ধ্যার দিকে ছেলেকে নিয়ে রমা আর নুটু ওদের চাতালে বসেছিলো তখনি সদর দরজায় আওয়াজ আসে।

হারাধন ফিরেছে ভেবে নুটু দরজা খুলেই দেখে এক অচেনা লোক দাঁড়িয়ে আছে,  হাফ শার্ট আর জিন্স পরা সুদর্শন লোকটি নুটুকে দেখেই একটু থমকে যায়....নুটু ওর দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিত তাকাতেই লোকটা বলে,  " আমি কুসুমপুর থানার ওসি গদাধর বল.....আসতে পারি? "

" কুসুমপুর! "নুটুর শরীরে শীতল স্রোত বয়ে যায়।  ও গদাধকে ভিতরে আসতে বলতে ভুলে যায়।  গিদাফহর নিজেই ওকে ঠেলে ভিতরে ঢোকে।




অনেক রাত এখন।  গদাধরের রয়াল এনফিল্ড গর্জন করতে করতে হাইওয়ে দিয়ে ছুটে যাচ্ছে। ওর মাথা পুরো ফাঁকা।  নরেনের খুনীকে পাওয়ার শেষ ক্লু টাও হারালো।  নুটু যে এই ঘটনার বিন্দু বিসর্গও জানে না সেটা ওর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়াতেই বুঝে গেছে ও।  ছেলেটা যে লেখার প্রেমে পাগল সেটাও বুঝতে অসুবিধা হয় না।  তবে রাস্তা ক্লিয়ার করতে বা প্রতিশোধ নিতে ও যে নরেনকে মারে নি সে ব্যাপারে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত ও।  নুটু আর লেখা পরস্পরকে ভালোবাসে....... খুনীকে না পাওয়ার থেকেও এই ব্যাপারটা বেশী মনে ধরে গেছে গদাধরের।  কোথাও মনের কোনে একটা চিনচিনে ব্যাথা হচ্ছে..... ও কি লেখাকে ভালোবেসে ফেলেছে? নাকি লেখার মত সুন্দরী মেয়ে নুটুর মত চালচুলোহীন একটা ছেলেকে এতো ভালোবাসায় ওর হিংসা হচ্ছে?  কাল রাতে কল্পনায় লেখাকে নিজের কাছে পাওয়ার পর কি সেটাকে বাস্তব করতে মন চেয়েছিলো ওর?  ওর নিসঙ্গ জীবনে লেখার মত একটা সুন্দরী,  কোমল, বুদ্ধিমতী মেয়ের প্রয়োজন ছিলো খুব........

না চাইতেও মনকে শান্ত করতে পারছে না ও।  গাড়ি দাঁড় করিয়ে একটা সিগারেট ধরায় গদাধর। দৃষ্টি শুন্যে।  কালকের আগেও মন এতো অস্থির ছিলো না।  কিন্তু লেখাকে কাছে পেয়ে একরাতে ওর মনে ঝড় উঠে গেছে।  দুবার সিগারেটে টান দিয়ে ধোঁয়াটা ছেড়ে নিজেকে বোঝায় ও........জীবনে এমন পরিস্থিতি কত আসে, চাকুরীর প্রথম পোষ্টিং এ অনুসুয়া বলে ওর এক সিনিয়ার অফিসার ওর জন্য পাগল হয়েছিলো..... প্রচন্ড ভালোবাসতো ওকে,  কিন্তু অনুসুয়ার প্রতি গদাধরের কোন অনুভূতি ছিলো না..... সেদিন ও বোঝে নি অনুসুয়া মনে কি পরিমান কষ্ট ভোগ করেছে.... আজ মাত্র এক রাতের পরিচয়ে লেখার জীবনে অন্য পুরুষের উপস্থিতিতে ওর মনে ঝড় উঠে যাচ্ছে..... প্রত্যেকেরই সময় আসলে,  আগে আর পরে.... এটাই পার্থক্য।

বাইকে উঠে আবার স্টার্ট দেয়।। গাড়ি ১০০ গতিতে এগিয়ে যায় সামনের ফাঁকা রাস্তায়।
Deep's story
[+] 4 users Like sarkardibyendu's post
Like Reply
পাঠকবৃন্দের উদ্দেশ্যে


যদিও ' অতৃপ্ত যৌবনের গল্প ' একটা adultary হিসাবে শুরু করেছিলাম,  পরে সেক্সের ঘনঘটা ছাড়িয়ে একে একটা পূর্ণ গল্পের আঙ্গিকে প্রকাশ করতে চলেছি।  এই ফোরামের বেশীরভাগ পাঠক হয়তো সেক্স বেশী পছন্দ করেন,  তবুও বহু পাঠকের অপরিসীম ভালোবাসা পেয়েছি,  অনেকের সুচিন্তিত মতামত,  উপদেশ,  আমাকে ভুলত্রুটি শুধরে এগোতে সাহায্য করেছে,  অনেকের প্রশংশা আমাকে লেখার অনুপ্রেরনা জাগিয়েছে....... যারা আজও আমার এই গল্পের আপডেটের আশায় অপেক্ষা করেন তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ, সবার মন্তব্যের reply হয়ত আমি দিয় উঠতে আপ্রি না কিন্তু সবাইকে আমার ভালোবাসা অবশ্যই জানাই। গল্প প্রায় শেষের পথে চলে এসেছে,  আর কয়েকটা আপডেট বাকি আছে।

আজ আপনাদের খেলার ছলে একটা প্রশ্ন রাখছি 

নরেনের খুনী কাকে মনে হয় আপনাদের?  

কমেন্ট এ আপনার মতামত জানান 
Deep's story
[+] 1 user Likes sarkardibyendu's post
Like Reply




Users browsing this thread: