Posts: 12
Threads: 1
Likes Received: 31 in 8 posts
Likes Given: 3
Joined: Apr 2025
Reputation:
6
07-04-2025, 01:45 PM
(This post was last modified: 20-04-2025, 03:32 PM by BDSM lover. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
ট্রেলার
শাহবাগের সিগন্যালে রিকশাতে বসে আছে সায়মা। নিজেকে বড্ডো গালি দিতে ইচ্ছে করছে, করবেই বা না কেন? সকালে তাড়াতাড়ি করার ফলে মেট্রো রেলের কার্ড ফেলে এসেছে যার কারণে আজকে তাকে কষ্ট করে, হেটে তারপর বাসে আর এখন রিকশা করে যেতে হচ্ছে। আজকে সায়মার প্রথম ক্লাস, ঢাকা ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞান বিভাগে চান্স পেয়েছে ও। নবীন বরণ অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে কিছু দিন আগেই। আজকে থেকে ক্লাস শুরু কিন্তু এই জ্যামের জন্য মনে হচ্ছে প্রথম ক্লাসটা করতে পারবে না। কি করার বসে রইলো। সিগন্যাল খুলবে এই আশায়।
সায়মা যার পুরো নাম হলো সায়মা আহমেদ। বাবা আশিক আহমেদ আর মনোয়ারা বেগম আর ছোট ভাই নয়ন আহমেদকে নিয়ে ওর ছোট পরিবার। সায়মার বাবার একটা বিজনেস আছে, সায়মা ছোট থেকে কোনো জিনিসের অভাব বোধ করেনি যা চেয়েছে পেয়েছে। খুব আদরেই বড়ো হয়েছে বলা যায়। সায়মার বাবা সায়মাকে রাজ কন্যার মতোই বড়ো করেছেন ওকে কখনো ফুলের টোকা পড়তে দেয়নি। তাই সায়মা হয়েছে নাজুক ফুলের মতো। আচ্ছা সায়মার সেই নাজুকতা কি থাকবে নাকি এই অন্য কেও নিয়ে ওর এই নাজুকতার নিয়ন্ত্রণ?
Posts: 12
Threads: 1
Likes Received: 31 in 8 posts
Likes Given: 3
Joined: Apr 2025
Reputation:
6
ট্রেলার
শাহবাগের সিগন্যালে রিকশাতে বসে আছে সায়মা। নিজেকে বড্ডো গালি দিতে ইচ্ছে করছে, করবেই বা না কেন? সকালে তাড়াতাড়ি করার ফলে মেট্রো রেলের কার্ড ফেলে এসেছে যার কারণে আজকে তাকে কষ্ট করে, হেটে তারপর বাসে আর এখন রিকশা করে যেতে হচ্ছে। আজকে সায়মার প্রথম ক্লাস, ঢাকা ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞান বিভাগে চান্স পেয়েছে ও। নবীন বরণ অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে কিছু দিন আগেই। আজকে থেকে ক্লাস শুরু কিন্তু এই জ্যামের জন্য মনে হচ্ছে প্রথম ক্লাসটা করতে পারবে না। কি করার বসে রইলো। সিগন্যাল খুলবে এই আশায়।
সায়মা যার পুরো নাম হলো সায়মা আহমেদ। বাবা আশিক আহমেদ আর মনোয়ারা বেগম আর ছোট ভাই নয়ন আহমেদকে নিয়ে ওর ছোট পরিবার। সায়মার বাবার একটা বিজনেস আছে, সায়মা ছোট থেকে কোনো জিনিসের অভাব বোধ করেনি যা চেয়েছে পেয়েছে। খুব আদরেই বড়ো হয়েছে বলা যায়। সায়মার বাবা সায়মাকে রাজ কন্যার মতোই বড়ো করেছেন ওকে কখনো ফুলের টোকা পড়তে দেয়নি। তাই সায়মা হয়েছে নাজুক ফুলের মতো। আচ্ছা সায়মার সেই নাজুকতা কি থাকবে নাকি এই অন্য কেও নিয়ে ওর এই নাজুকতার নিয়ন্ত্রণ?
Posts: 428
Threads: 0
Likes Received: 253 in 234 posts
Likes Given: 301
Joined: Jan 2023
Reputation:
4
•
Posts: 145
Threads: 0
Likes Received: 62 in 58 posts
Likes Given: 55
Joined: Jan 2024
Reputation:
2
•
Posts: 112
Threads: 2
Likes Received: 80 in 61 posts
Likes Given: 19
Joined: Nov 2021
Reputation:
2
•
Posts: 2
Threads: 0
Likes Received: 0 in 0 posts
Likes Given: 0
Joined: Jan 2025
Reputation:
0
•
Posts: 12
Threads: 1
Likes Received: 31 in 8 posts
Likes Given: 3
Joined: Apr 2025
Reputation:
6
16-04-2025, 02:11 AM
(This post was last modified: 16-04-2025, 02:12 AM by BDSM lover. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
শাহবাগের সিগন্যালে রিকশার ওপর বসে সায়মা আহমেদের মনটা ছটফট করছে। জ্যামের মাঝে সময় যেন গলার কাছে এসে আটকে গেছে। রিকশাওয়ালার প্যাডেলের শব্দ আর রাস্তার হট্টগোলের মাঝে সে নিজের হৃৎপিণ্ডের শব্দ শুনতে পাচ্ছে। ঢাকা ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞান বিভাগে আজ তার প্রথম ক্লাস, আর সে লেট হতে চলেছে। মেট্রো রেলের কার্ড ফেলে আসার জন্য নিজেকে বারবার গালি দিচ্ছে। “কেন যে তাড়াহুড়ো করলাম!” মনে মনে হাহাকার করে সে।
অবশেষে সিগন্যাল খোলে। রিকশাওয়ালা জোরে প্যাডেল মারে। সায়মা ব্যাগটা শক্ত করে ধরে বলে, “মামা , একটু তাড়াতাড়ি করেন, প্লিজ।”
“আপা, এই জ্যামে আর কতটুকু তাড়াতাড়ি করব?” রিকশাওয়ালার গলায় অসহায়ত্ব।
ক্যাম্পাসে পৌঁছে সায়মা প্রায় দৌড়ে মনোবিজ্ঞান বিভাগের দিকে যায়। ক্লাসরুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে তার বুক কাঁপছে। ভেতর থেকে একটা গম্ভীর কণ্ঠস্বর ভেসে আসছে। কথা শুনে বোঝা যাচ্ছে, স্যার চলে এসেছেন এবং সে কিছুক্ষন আগেই ক্লাসে ঢুকেছে। সায়মা ভয় নিয়েও
দরজায় হালকা টোকা দেয় সে।
সবায় দরজার দিকে তাকায়, একটা সাদা সুতির সালোয়ার কামিজে মনে হয় সাক্ষাৎ কোনো পরী দাঁড়িয়ে আছে। ক্লাসের ছেলেরা সবাই হা করে তাকিয়ে আছে সায়মার দিকে কিন্তু সায়মার সে দিকে কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই। সায়মা খেয়াল করেছে মানুষটার চোখে কমনীয়তা নেই, সেখানে আছে রুক্ষতা। দেখেই বোঝা যাচ্ছে এই ব্যক্তি অনেক গম্ভীর।
"আপনি কে?আপনি কি এই ক্লাসের "
“হ্যা স্যার। আমি... সায়মা আহমেদ। মে আই কাম ইন, স্যার?” সায়মার গলা কেঁপে যায়।
“আসুন। তবে তাড়াতাড়ি। সময়ের কোনো দাম নেই নাকি আপনার?” কণ্ঠে বিরক্তি ঝরে পড়ছে।
সায়মা ক্লাসের ভেতর আসে । ক্লাসরুমে ত্রিশ-চল্লিশ জোড়া চোখ তার দিকে। সামনে দাঁড়ানো একজন লম্বা, সুগঠিত পুরুষ, পরনে ফরমাল শার্ট আর চোখে ধারালো দৃষ্টি। তিনি রাশেদ খান, মনোবিজ্ঞান বিভাগের নতুন শিক্ষক। তার দৃষ্টি যেন সায়মার ভেতরটা পরীক্ষা করছে।
“মিস সায়মা আহমেদ, প্রথম ক্লাস, প্রথম দিন, আর আপনি লেট?” রাশেদের গলায় তিরস্কার।
“এটা কি আপনার জীবনের প্রতি দায়িত্বের নমুনা?”
“স্যার, আমি... মানে, জ্যাম ছিল... আর মেট্রোর কার্ড ফেলে এসেছি...” সায়মার কথা আটকে যায়। তার মনে হচ্ছে, সে যেন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আছে আর জাজ তাকে প্রশ্ন করছে।
“জ্যাম? কার্ড ফেলে আসা?” রাশেদ ভ্রু কুঁচকান। “এগুলো অজুহাত, মিস সায়মা। জীবন আপনাকে অজুহাতের জন্য অপেক্ষা করতে বলেনি। সময় একটা নদী, থামে না। আপনি কি নদীর স্রোতের সঙ্গে তাল মেলাতে পারেন না?”
সায়মার মাথা নিচু। “জি, স্যার। আমি দুঃখিত। এটা আর হবে না।”
“দেখি, আপনার কথা কতটুকু রাখেন।” রাশেদের গলা একটু নরম হয়, কিন্তু চোখে এখনও কঠোরতা। “বসুন।”
সায়মা তাড়াতাড়ি একটা খালি জায়গা খুঁজে বসে। তার পাশে বসা একটা মেয়ে, যার চোখে উষ্ণ হাসি, ফিসফিস করে বলে, “ঘাবরিও না স্যার একটু স্ট্রিক্ট, কিন্তু মনে হচ্ছে ভালো মানুষ। আমি তানিয়া। তানিয়া রহমান।”
সায়মা ক্ষীণ হাসি দেয়।
“থ্যাঙ্কস। আমি সায়মা।”
“ফার্স্ট ডে-ই এমন বকুনি খেলে , ভাবতেই পারছি না!” তানিয়ার গলায় হালকা হাসি।
তানিয়া মেয়েটা কে এক কথায় কিউট বলা যায়। আর কিছু না বলা গেলেও। গোলগাল সুন্দর একটা চেহারা, তানিয়া হাসলে ওর চোখ ও হাসে যা আরো সুন্দর লাগে দেখতে।
রাশেদ ক্লাসের দিকে তাকান।
“আমি রাশেদ খান। আপনাদের এই বছরের মনোবিজ্ঞানের শিক্ষক। আমি ইউনিভার্সিটি অফ ক্যামব্রিজ থেকে ক্লিনিকাল সাইকোলজিতে পিএইচডি করেছি। আমি বিশ্বাস করি, মনোবিজ্ঞান শুধু বইয়ের পাতায় নয়, জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে। আমি চাই, আপনারা এই ক্লাসে নিজেদের মনের গভীরে ডুব দেন।”
তিনি ব্ল্যাকবোর্ডে বড় করে লেখেন—নিয়ন্ত্রণ। তারপর ক্লাসের দিকে তাকান।
“আজ আমরা কথা বলব নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। মানুষের মন কেন নিয়ন্ত্রণের পেছনে ছোটে? কী এমন শক্তি আছে এই শব্দের মধ্যে?” রাশেদের গলায় উৎসাহ। “কেউ বলুন।”
একজন ছেলে হাত তোলে। “স্যার, নিয়ন্ত্রণ থাকলে আমরা জীবনের ওপর ক্ষমতা পাই। জিনিসগুলো ঠিকঠাক রাখতে পারি।”
রাশেদ মাথা নাড়েন। “ঠিক, কিন্তু এটা পৃষ্ঠের কথা। আরেকটু গভীরে যান। নিয়ন্ত্রণ কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?”
তানিয়া হাত তোলে। “স্যার, নিয়ন্ত্রণ আমাদের নিরাপত্তার অনুভূতি দেয়। যখন আমরা জানি কী হতে চলেছে, তখন ভয় কমে।”
“গুড। নিরাপত্তা একটা বড় ব্যাপার। কিন্তু এর পেছনেও কিছু আছে।” রাশেদের চোখ ক্লাসের ওপর ঘুরছে। হঠাৎ তার দৃষ্টি সায়মার ওপর থামে। “মিস সায়মা, আপনি কিছু বলতে চান?”
সায়মা চমকে ওঠে। তার বুকের ভেতরটা আবার কেঁপে ওঠে। তবু সে নিজেকে সামলে নেয়। গভীর নিশ্বাস নিয়ে ধীরে ধীরে বলতে শুরু করে।
“স্যার, আমার মনে হয়, মানুষ নিয়ন্ত্রণ চায় কারণ এটা তাদের অস্তিত্বের প্রমাণ। নিয়ন্ত্রণ মানে শুধু জিনিস ঠিক রাখা নয়, এটা আমাদের নিজেদের গল্প লেখার ক্ষমতা। আমরা যখন কিছু নিয়ন্ত্রণ করি, তখন মনে হয় আমরা শুধু বেঁচে নেই, আমরা জীবনের দায়িত্ব নিচ্ছি। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ হারালে...” সায়মা একটু থামে, তারপর বলে, “মনে হয় আমরা নিজেদের হারিয়ে ফেলছি। আমাদের গল্পটা আর আমাদের হাতে নেই।”
ক্লাসে একটা নিস্তব্ধতা নেমে আসে। সবাই সায়মার দিকে তাকিয়ে। রাশেদের চোখে একটা অদ্ভুত চমক। তিনি ধীরে ধীরে হাততালি দিতে শুরু করেন।
“ব্রিলিয়ান্ট। একদম ব্রিলিয়ান্ট।” তার গলায় প্রশংসা। “মিস সায়মা, আপনি ঠিক ধরেছেন। নিয়ন্ত্রণ আমাদের আত্মপরিচয়ের সঙ্গে জড়িত। এটা আমাদের গল্পের কলম। আমরা যখন নিয়ন্ত্রণ করি, তখন আমরা নিজেদের মালিক হই ।”
তিনি ক্লাসের দিকে তাকান। “আসুন, সায়মার জন্য একটা বড় হাততালি। তার উত্তরটা সুন্দর হয়েছে ।”
ক্লাসে হাততালির শব্দ ওঠে। তানিয়া সায়মার কাঁধে হালকা ধাক্কা দিয়ে ফিসফিস করে বলে, “বাহ্ ?
তুমি তো প্রথম ক্লাসেই সবাইকে তাক লাগিয়ে দিলে দেখছি! ফার্স্ট ক্লাসেই ধামাকা!”
সায়মার মুখে লাজুক হাসি। তার ভেতরের ভয়টা ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছে।
রাশেদ আবার বলতে শুরু করেন। “সায়মার উত্তর আমাদের আজকের আলোচনার ভিত্তি হবে। মনোবিজ্ঞানে আমরা শিখি, নিয়ন্ত্রণ একটা মায়া হতে পারে। কিন্তু এই মায়া আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। প্রশ্ন হলো, আমরা কতটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি? আর কতটা নিয়ন্ত্রিত হই?”
তিনি ক্লাসের দিকে তাকান। “আরেকটা প্রশ্ন। নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা কী কী ত্যাগ করি? কেউ বলুন।”
একজন মেয়ে হাত তোলে। “স্যার, অনেক সময় আমরা স্বাধীনতা ত্যাগ করি। নিয়ন্ত্রণের জন্য নিজের ইচ্ছেকে দমিয়ে রাখি।”
“ঠিক।” রাশেদ মাথা নাড়েন।
“এটা একটা দ্বন্দ্ব। নিয়ন্ত্রণ চাই, কিন্তু এর জন্য আমরা নিজেকে বেঁধে ফেলি। মিস সায়মা, আপনার কী মনে হয়?”
সায়মা একটু অবাক হয়। আবার তার দিকে প্রশ্ন? তবু সে বলে, “স্যার, আমার মনে হয়, নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা অনেক সময় নিজের ভয়ের কাছে হার মানি। আমরা ভাবি, নিয়ন্ত্রণ না থাকলে সব ভেঙে পড়বে। কিন্তু হয়তো কখনো কখনো নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও জীবন চলতে পারে।”
রাশেদের মুখে হালকা হাসি। “ইন্টারেস্টিং। আপনি আমাকে ভাবিয়ে তুলছেন, মিস সায়মা।”
তানিয়া ফিসফিস করে বলে, “এই, স্যার তো তো। আর ফ্যান ফ্যান হয়ে গেছে মনে হচ্ছে!”
সায়মা হেসে ফেলে,
"ধুর পাগল হলে নাকি এমনি পেয়েছে আমাকে আজকে তাই এতো প্রশ্ন করছে। কয়দিন গেলেই ঠিক হয়ে যাবে।"
কিন্তু তার মনে একটা অদ্ভুত অনুভূতি। রাশেদ খানের কঠিন ব্যক্তিত্বের পেছনে একটা গভীরতা আছে, যেটা তাকে টানছে।
ক্লাস শেষ হলে তানিয়া বলে, “চল, ক্যান্টিনে যাই।
তোমার সঙ্গে আরও গল্প করতে ইচ্ছে করছে।”
“ঠিক আছে।” সায়মা হাসে। তার মনটা হালকা। কিন্তু ভেতরে ভেতরে একটা প্রশ্ন জাগছে—এই নতুন জীবন, এই ক্লাস, এই মানুষগুলো তার নাজুকতাকে কীভাবে বদলে দেবে? তার গল্পের কলম কি তার হাতেই থাকবে, নাকি অন্য কেউ এটা ধরে নেবে?
জানি অনেক লেট করে ফেলেছি তার জন্য খুব দুঃখিত। আসলে প্রথম গল্প লিখছি তো তাই একটু দেরি হচ্ছে। আমি আশা করবো আপনারা আমার পাশে থাকবেন আর আমাকে উৎসাহ দিয়ে যাবেন।
সামনে আরো বড়ো করে আপডেট দেওয়ার চেষ্টা করবো
এই গল্প যদি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। যদি কোনো মতামত থাকে জানাতে ভুলবেন না। আমাকে টেলিগ্রাম এ এসএমএস দিতে পারেন @Clasher_1234 এই নামে। আপনাদের এসএমএস এ আমি উৎসাহ পাই। তাই আমাকে বেশি বেশি করে উৎসাহ দিবেন এই আশা করি।
Posts: 270
Threads: 0
Likes Received: 205 in 179 posts
Likes Given: 364
Joined: May 2022
Reputation:
11
•
Posts: 29
Threads: 0
Likes Received: 13 in 12 posts
Likes Given: 108
Joined: Jun 2023
Reputation:
1
khub valo hoyeche ar sundor hoyeche vaiya chaliye jan ar repu dite parchi na tai kintu like diyechi ei rokom golpo aro likhte thakun
•
Posts: 3
Threads: 0
Likes Received: 2 in 2 posts
Likes Given: 2
Joined: Oct 2024
Reputation:
0
দারুন শুরু হয়েছে। এভাবেই চালিয়ে যান। ধারাবাহিকতা চাই কিন্তু
•
Posts: 12
Threads: 1
Likes Received: 31 in 8 posts
Likes Given: 3
Joined: Apr 2025
Reputation:
6
(16-04-2025, 04:38 PM)Jibon Ahmed Wrote: চমৎকার শুরু
ধন্যবাদ ভাই পাশে থাকবেন
•
Posts: 12
Threads: 1
Likes Received: 31 in 8 posts
Likes Given: 3
Joined: Apr 2025
Reputation:
6
(16-04-2025, 07:43 PM)Theaj11 Wrote: দারুন শুরু হয়েছে। এভাবেই চালিয়ে যান। ধারাবাহিকতা চাই কিন্তু
খুব চেষ্টা করবো কিন্তু কথা দিতে পারছি না
•
Posts: 12
Threads: 1
Likes Received: 31 in 8 posts
Likes Given: 3
Joined: Apr 2025
Reputation:
6
(16-04-2025, 07:43 PM)Theaj11 Wrote: দারুন শুরু হয়েছে। এভাবেই চালিয়ে যান। ধারাবাহিকতা চাই কিন্তু
খুব চেষ্টা করবো কিন্তু কথা দিতে পারছি না
•
Posts: 1,284
Threads: 1
Likes Received: 7,331 in 1,083 posts
Likes Given: 1,098
Joined: Jan 2023
Reputation:
2,702
(16-04-2025, 02:11 AM)BDSM lover Wrote: শাহবাগের সিগন্যালে রিকশার ওপর বসে সায়মা আহমেদের মনটা ছটফট করছে। জ্যামের মাঝে সময় যেন গলার কাছে এসে আটকে গেছে। রিকশাওয়ালার প্যাডেলের শব্দ আর রাস্তার হট্টগোলের মাঝে সে নিজের হৃৎপিণ্ডের শব্দ শুনতে পাচ্ছে। ঢাকা ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞান বিভাগে আজ তার প্রথম ক্লাস, আর সে লেট হতে চলেছে। মেট্রো রেলের কার্ড ফেলে আসার জন্য নিজেকে বারবার গালি দিচ্ছে। “কেন যে তাড়াহুড়ো করলাম!” মনে মনে হাহাকার করে সে।
অবশেষে সিগন্যাল খোলে। রিকশাওয়ালা জোরে প্যাডেল মারে। সায়মা ব্যাগটা শক্ত করে ধরে বলে, “মামা , একটু তাড়াতাড়ি করেন, প্লিজ।”
“আপা, এই জ্যামে আর কতটুকু তাড়াতাড়ি করব?” রিকশাওয়ালার গলায় অসহায়ত্ব।
ক্যাম্পাসে পৌঁছে সায়মা প্রায় দৌড়ে মনোবিজ্ঞান বিভাগের দিকে যায়। ক্লাসরুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে তার বুক কাঁপছে। ভেতর থেকে একটা গম্ভীর কণ্ঠস্বর ভেসে আসছে। কথা শুনে বোঝা যাচ্ছে, স্যার চলে এসেছেন এবং সে কিছুক্ষন আগেই ক্লাসে ঢুকেছে। সায়মা ভয় নিয়েও
দরজায় হালকা টোকা দেয় সে।
সবায় দরজার দিকে তাকায়, একটা সাদা সুতির সালোয়ার কামিজে মনে হয় সাক্ষাৎ কোনো পরী দাঁড়িয়ে আছে। ক্লাসের ছেলেরা সবাই হা করে তাকিয়ে আছে সায়মার দিকে কিন্তু সায়মার সে দিকে কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই। সায়মা খেয়াল করেছে মানুষটার চোখে কমনীয়তা নেই, সেখানে আছে রুক্ষতা। দেখেই বোঝা যাচ্ছে এই ব্যক্তি অনেক গম্ভীর।
"আপনি কে?আপনি কি এই ক্লাসের "
“হ্যা স্যার। আমি... সায়মা আহমেদ। মে আই কাম ইন, স্যার?” সায়মার গলা কেঁপে যায়।
“আসুন। তবে তাড়াতাড়ি। সময়ের কোনো দাম নেই নাকি আপনার?” কণ্ঠে বিরক্তি ঝরে পড়ছে।
সায়মা ক্লাসের ভেতর আসে । ক্লাসরুমে ত্রিশ-চল্লিশ জোড়া চোখ তার দিকে। সামনে দাঁড়ানো একজন লম্বা, সুগঠিত পুরুষ, পরনে ফরমাল শার্ট আর চোখে ধারালো দৃষ্টি। তিনি রাশেদ খান, মনোবিজ্ঞান বিভাগের নতুন শিক্ষক। তার দৃষ্টি যেন সায়মার ভেতরটা পরীক্ষা করছে।
“মিস সায়মা আহমেদ, প্রথম ক্লাস, প্রথম দিন, আর আপনি লেট?” রাশেদের গলায় তিরস্কার।
“এটা কি আপনার জীবনের প্রতি দায়িত্বের নমুনা?”
“স্যার, আমি... মানে, জ্যাম ছিল... আর মেট্রোর কার্ড ফেলে এসেছি...” সায়মার কথা আটকে যায়। তার মনে হচ্ছে, সে যেন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আছে আর জাজ তাকে প্রশ্ন করছে।
“জ্যাম? কার্ড ফেলে আসা?” রাশেদ ভ্রু কুঁচকান। “এগুলো অজুহাত, মিস সায়মা। জীবন আপনাকে অজুহাতের জন্য অপেক্ষা করতে বলেনি। সময় একটা নদী, থামে না। আপনি কি নদীর স্রোতের সঙ্গে তাল মেলাতে পারেন না?”
সায়মার মাথা নিচু। “জি, স্যার। আমি দুঃখিত। এটা আর হবে না।”
“দেখি, আপনার কথা কতটুকু রাখেন।” রাশেদের গলা একটু নরম হয়, কিন্তু চোখে এখনও কঠোরতা। “বসুন।”
সায়মা তাড়াতাড়ি একটা খালি জায়গা খুঁজে বসে। তার পাশে বসা একটা মেয়ে, যার চোখে উষ্ণ হাসি, ফিসফিস করে বলে, “ঘাবরিও না স্যার একটু স্ট্রিক্ট, কিন্তু মনে হচ্ছে ভালো মানুষ। আমি তানিয়া। তানিয়া রহমান।”
সায়মা ক্ষীণ হাসি দেয়।
“থ্যাঙ্কস। আমি সায়মা।”
“ফার্স্ট ডে-ই এমন বকুনি খেলে , ভাবতেই পারছি না!” তানিয়ার গলায় হালকা হাসি।
তানিয়া মেয়েটা কে এক কথায় কিউট বলা যায়। আর কিছু না বলা গেলেও। গোলগাল সুন্দর একটা চেহারা, তানিয়া হাসলে ওর চোখ ও হাসে যা আরো সুন্দর লাগে দেখতে।
রাশেদ ক্লাসের দিকে তাকান।
“আমি রাশেদ খান। আপনাদের এই বছরের মনোবিজ্ঞানের শিক্ষক। আমি ইউনিভার্সিটি অফ ক্যামব্রিজ থেকে ক্লিনিকাল সাইকোলজিতে পিএইচডি করেছি। আমি বিশ্বাস করি, মনোবিজ্ঞান শুধু বইয়ের পাতায় নয়, জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে। আমি চাই, আপনারা এই ক্লাসে নিজেদের মনের গভীরে ডুব দেন।”
তিনি ব্ল্যাকবোর্ডে বড় করে লেখেন—নিয়ন্ত্রণ। তারপর ক্লাসের দিকে তাকান।
“আজ আমরা কথা বলব নিয়ন্ত্রণ নিয়ে। মানুষের মন কেন নিয়ন্ত্রণের পেছনে ছোটে? কী এমন শক্তি আছে এই শব্দের মধ্যে?” রাশেদের গলায় উৎসাহ। “কেউ বলুন।”
একজন ছেলে হাত তোলে। “স্যার, নিয়ন্ত্রণ থাকলে আমরা জীবনের ওপর ক্ষমতা পাই। জিনিসগুলো ঠিকঠাক রাখতে পারি।”
রাশেদ মাথা নাড়েন। “ঠিক, কিন্তু এটা পৃষ্ঠের কথা। আরেকটু গভীরে যান। নিয়ন্ত্রণ কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?”
তানিয়া হাত তোলে। “স্যার, নিয়ন্ত্রণ আমাদের নিরাপত্তার অনুভূতি দেয়। যখন আমরা জানি কী হতে চলেছে, তখন ভয় কমে।”
“গুড। নিরাপত্তা একটা বড় ব্যাপার। কিন্তু এর পেছনেও কিছু আছে।” রাশেদের চোখ ক্লাসের ওপর ঘুরছে। হঠাৎ তার দৃষ্টি সায়মার ওপর থামে। “মিস সায়মা, আপনি কিছু বলতে চান?”
সায়মা চমকে ওঠে। তার বুকের ভেতরটা আবার কেঁপে ওঠে। তবু সে নিজেকে সামলে নেয়। গভীর নিশ্বাস নিয়ে ধীরে ধীরে বলতে শুরু করে।
“স্যার, আমার মনে হয়, মানুষ নিয়ন্ত্রণ চায় কারণ এটা তাদের অস্তিত্বের প্রমাণ। নিয়ন্ত্রণ মানে শুধু জিনিস ঠিক রাখা নয়, এটা আমাদের নিজেদের গল্প লেখার ক্ষমতা। আমরা যখন কিছু নিয়ন্ত্রণ করি, তখন মনে হয় আমরা শুধু বেঁচে নেই, আমরা জীবনের দায়িত্ব নিচ্ছি। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ হারালে...” সায়মা একটু থামে, তারপর বলে, “মনে হয় আমরা নিজেদের হারিয়ে ফেলছি। আমাদের গল্পটা আর আমাদের হাতে নেই।”
ক্লাসে একটা নিস্তব্ধতা নেমে আসে। সবাই সায়মার দিকে তাকিয়ে। রাশেদের চোখে একটা অদ্ভুত চমক। তিনি ধীরে ধীরে হাততালি দিতে শুরু করেন।
“ব্রিলিয়ান্ট। একদম ব্রিলিয়ান্ট।” তার গলায় প্রশংসা। “মিস সায়মা, আপনি ঠিক ধরেছেন। নিয়ন্ত্রণ আমাদের আত্মপরিচয়ের সঙ্গে জড়িত। এটা আমাদের গল্পের কলম। আমরা যখন নিয়ন্ত্রণ করি, তখন আমরা নিজেদের মালিক হই ।”
তিনি ক্লাসের দিকে তাকান। “আসুন, সায়মার জন্য একটা বড় হাততালি। তার উত্তরটা সুন্দর হয়েছে ।”
ক্লাসে হাততালির শব্দ ওঠে। তানিয়া সায়মার কাঁধে হালকা ধাক্কা দিয়ে ফিসফিস করে বলে, “বাহ্ ?
তুমি তো প্রথম ক্লাসেই সবাইকে তাক লাগিয়ে দিলে দেখছি! ফার্স্ট ক্লাসেই ধামাকা!”
সায়মার মুখে লাজুক হাসি। তার ভেতরের ভয়টা ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছে।
রাশেদ আবার বলতে শুরু করেন। “সায়মার উত্তর আমাদের আজকের আলোচনার ভিত্তি হবে। মনোবিজ্ঞানে আমরা শিখি, নিয়ন্ত্রণ একটা মায়া হতে পারে। কিন্তু এই মায়া আমাদের বাঁচিয়ে রাখে। প্রশ্ন হলো, আমরা কতটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি? আর কতটা নিয়ন্ত্রিত হই?”
তিনি ক্লাসের দিকে তাকান। “আরেকটা প্রশ্ন। নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা কী কী ত্যাগ করি? কেউ বলুন।”
একজন মেয়ে হাত তোলে। “স্যার, অনেক সময় আমরা স্বাধীনতা ত্যাগ করি। নিয়ন্ত্রণের জন্য নিজের ইচ্ছেকে দমিয়ে রাখি।”
“ঠিক।” রাশেদ মাথা নাড়েন।
“এটা একটা দ্বন্দ্ব। নিয়ন্ত্রণ চাই, কিন্তু এর জন্য আমরা নিজেকে বেঁধে ফেলি। মিস সায়মা, আপনার কী মনে হয়?”
সায়মা একটু অবাক হয়। আবার তার দিকে প্রশ্ন? তবু সে বলে, “স্যার, আমার মনে হয়, নিয়ন্ত্রণের জন্য আমরা অনেক সময় নিজের ভয়ের কাছে হার মানি। আমরা ভাবি, নিয়ন্ত্রণ না থাকলে সব ভেঙে পড়বে। কিন্তু হয়তো কখনো কখনো নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও জীবন চলতে পারে।”
রাশেদের মুখে হালকা হাসি। “ইন্টারেস্টিং। আপনি আমাকে ভাবিয়ে তুলছেন, মিস সায়মা।”
তানিয়া ফিসফিস করে বলে, “এই, স্যার তো তো। আর ফ্যান ফ্যান হয়ে গেছে মনে হচ্ছে!”
সায়মা হেসে ফেলে,
"ধুর পাগল হলে নাকি এমনি পেয়েছে আমাকে আজকে তাই এতো প্রশ্ন করছে। কয়দিন গেলেই ঠিক হয়ে যাবে।"
কিন্তু তার মনে একটা অদ্ভুত অনুভূতি। রাশেদ খানের কঠিন ব্যক্তিত্বের পেছনে একটা গভীরতা আছে, যেটা তাকে টানছে।
ক্লাস শেষ হলে তানিয়া বলে, “চল, ক্যান্টিনে যাই।
তোমার সঙ্গে আরও গল্প করতে ইচ্ছে করছে।”
“ঠিক আছে।” সায়মা হাসে। তার মনটা হালকা। কিন্তু ভেতরে ভেতরে একটা প্রশ্ন জাগছে—এই নতুন জীবন, এই ক্লাস, এই মানুষগুলো তার নাজুকতাকে কীভাবে বদলে দেবে? তার গল্পের কলম কি তার হাতেই থাকবে, নাকি অন্য কেউ এটা ধরে নেবে?
জানি অনেক লেট করে ফেলেছি তার জন্য খুব দুঃখিত। আসলে প্রথম গল্প লিখছি তো তাই একটু দেরি হচ্ছে। আমি আশা করবো আপনারা আমার পাশে থাকবেন আর আমাকে উৎসাহ দিয়ে যাবেন।
সামনে আরো বড়ো করে আপডেট দেওয়ার চেষ্টা করবো
এই গল্প যদি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। যদি কোনো মতামত থাকে জানাতে ভুলবেন না। আমাকে টেলিগ্রাম এ এসএমএস দিতে পারেন @Clasher_1234 এই নামে। আপনাদের এসএমএস এ আমি উৎসাহ পাই। তাই আমাকে বেশি বেশি করে উৎসাহ দিবেন এই আশা করি।
সুন্দর শুরু গল্পটার। চালিয়ে যান।
•
Posts: 13
Threads: 0
Likes Received: 4 in 4 posts
Likes Given: 28
Joined: May 2019
Reputation:
0
অসাধারণ প্লট। সায়মার মত ক্লাসি একটা মেয়ের নাজুক পুষিকে শিক্ষক রাশেদ কিভাবে নিয়ন্ত্রণে নেয় দেখতে দারুণ হবে।
Posts: 3,345
Threads: 78
Likes Received: 2,210 in 1,437 posts
Likes Given: 776
Joined: Nov 2018
Reputation:
125
•
Posts: 12
Threads: 1
Likes Received: 31 in 8 posts
Likes Given: 3
Joined: Apr 2025
Reputation:
6
(17-04-2025, 04:53 AM)কাদের Wrote: সুন্দর শুরু গল্পটার। চালিয়ে যান।
ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার মতো একজন এতো বড়ো লেখক যে আমার গল্প পড়বে তাও অনেক। আমার লেখা সার্থক ভাইয়া
Posts: 12
Threads: 1
Likes Received: 31 in 8 posts
Likes Given: 3
Joined: Apr 2025
Reputation:
6
(19-04-2025, 02:52 PM)Mafia Wrote: অসাধারণ প্লট। সায়মার মত ক্লাসি একটা মেয়ের নাজুক পুষিকে শিক্ষক রাশেদ কিভাবে নিয়ন্ত্রণে নেয় দেখতে দারুণ হবে।
ধন্যবাদ পাশে থাকবেন
Posts: 12
Threads: 1
Likes Received: 31 in 8 posts
Likes Given: 3
Joined: Apr 2025
Reputation:
6
20-04-2025, 03:38 PM
(This post was last modified: 20-04-2025, 03:39 PM by BDSM lover. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
ক্লাস শেষে সায়মা আর তানিয়া হাঁটছে ক্যান্টিনের দিকে। গাছপালার ফাঁক দিয়ে নরম রোদ এসে পড়েছে, একটা সোনালি ছায়া যেন ছড়িয়ে আছে পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে। তানিয়া বরাবরের মতো চঞ্চল, আর তার প্রাণখোলা হাসি যা সায়মার ভারী মনটা হালকা করে দেয়। সায়মার সাথে তানিয়ার কথা বার্তা শুনলে কেও বলবে না এই মেয়ের সাথে এই একটু আগে পরিচিত হয়েছে, ওদের কথা শুনলে মনে হবে কতো দিনের চেনা। কতদিনের সম্পর্ক ওদের। কিন্তু সত্যি বলতে দেখার হলো এই প্রথম।
“তোর সেই উত্তরটা... মানে গল্পের মতো করে বলেছিলি না?” তানিয়া হেসে বলে, “স্যার তো একেবারে হাঁ করে শুনছিলেন! আমি ভাবলাম, এই বুঝি তোর ভক্ত হয়ে গেলেন!”
“আরে না রে!” সায়মা হেসে ফেলে, “আমি তো কাঁপতে কাঁপতে বলেছি। স্যারের চোখের দিকে তাকালে মনে হয় উনি আমার ভেতরের সব পড়ে ফেলবেন।”
“ওই তো! মনোবিজ্ঞানের স্যার—মন না পড়লে নামই খাটো পড়ে!” তানিয়া চোখ টিপে বলে, “কিন্তু মানতেই হবে, চোখ দুটোতে একটা রহস্য আছে। কেমন যেন চুম্বকের মতো টানে।”
সায়মা হালকা হেসে বলে, “তুই-ই বরং ফ্যান হয়ে যা। আমি তো এখনো স্যারের সামনে পড়লেই গলা শুকিয়ে যায়।”
তারা ক্যান্টিনে ঢুকে চা আর সিঙ্গারার অর্ডার দেয়। ছোট ছোট আলাপে সময় পেরিয়ে যায়, যেন ক্যান্টিনের চায়ের কাপেই সব গল্প জমা হচ্ছে।
“তুই কোথায় থাকিস রে?” হঠাৎ তানিয়া জিজ্ঞেস করে।
“ধানমন্ডিতে।” সায়মার কণ্ঠে গর্ব।"তুই কোথায় থাকিস?"
"আমি মিরপুর থাকি।"
“ধানমন্ডি! বেশ ! ক্লাসি তো!” তানিয়া বলে, “আমাকে একদিন দাওয়াত দিবি, কিন্তু ঠিক আছে ? তোর বাসায় গিয়ে আন্টির হাতের রান্না খাব।”
“অবশ্যই! তুই এলেই মা একেবারে বিরিয়ানি পাকা করে ফেলবে,” সায়মা হেসে বলে।
তাদের আলাপে যেন একটা সহজ বন্ধুত্ব গড়ে উঠছে, যা সায়মার মতো অন্তর্মুখী মেয়ের জন্য খুব দরকারি।
সারাদিন ক্লাস নতুন বন্ধু আর টিএসসিতে বসে আড্ডা দিয়ে দিনটা যে কোন দিক দিয়ে পারে হলো সেটা বুঝতেই পারলো না। বিকেল ৪টায় সায়মা খেয়াল করে সময় অনেক হয়েছে এখন না উঠলে পড়ে জ্যামের সম্মুখীন হতে হবে। তাই বন্ধু বান্ধবীদের বিদায় দিয়ে আসতে আসতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে যায়।ধানমন্ডির রাস্তাগুলো ঝিরঝিরে বাতাসে আর নরম আলোয় মায়াবী লাগছে।
সন্ধ্যার একটু আগে বাসায় ঢোকে সায়মা। বাসায় ঢোকার সময় সায়মা খেয়াল করে সামনের ফ্ল্যাটে তালা ঝোলানো নেই। এই ফ্লাটটা এখনও বিক্রি হয়নি তাই তালা থাকতো, কিন্তু মনে হচ্ছে বিক্রি হয়ে গেছে।সায়মা এ বিষয় নিয়ে আর বেশি মাথা ঘামালো না। সায়মা কলিং বেল দিলো।
ফ্ল্যাটের দরজা খুলতেই সেলিনা বেগমের উষ্ণ হাসি—একটা নিরাপদ আশ্রয়ের মতো।
“কি রে মা, প্রথম দিনের ক্লাস কেমন হলো?” সেলিনা রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে আসেন।
“একটা দারুণ কাণ্ড হয়ে গেল, মা!” জুতো খুলে রাখে সায়মা। “মেট্রোকার্ড বাসায় ফেলে এসেছিলাম। তারপর জ্যামে পড়লাম। প্রথম দিনেই দেরি করে ক্লাসে ঢুকলাম,দেরি করে গিয়েছি বলে স্যার আমাকে কিছু কথা শোনালেন।”
“ও মা!” সেলিনা চোখ কুঁচকে বলেন, “তাই বলি ঘর থেকে বের হওয়ার সময় দেখে নে সব ঠিক আছে কিনা ? কিন্তু কে শোনে কার কথা তুই। বেশি ঘাবড়ে গিয়েছিলি নাকি?”
“একেবারে গলা শুকিয়ে গিয়েছিল, মা,” সায়মা সোফায় বসে পড়ে। “কিন্তু পরে আমি একটা প্রশ্নের উত্তর দিই। স্যারের মনে হয় প্রশ্নের উত্তরটা খুব পছন্দ হয় তাই স্যার সবাইকে বললেন তালি দিতে!”
সেলিনা চোখে গর্ব নিয়ে বলেন, “বলেছিলাম না? তুই যা করিস, তাতেই আলাদা ছাপ পড়ে।”
“তুমি না আমার সবচেয়ে বড় ফ্যান, মা,” সায়মা মুচকি হেসে বলে।
ঠিক সেই সময় দরজার বেল বেজে ওঠে।
"সায়মা মা গিয়ে দেখতো কে এলো, আমি চায়ের পানি দিয়েছি আমি একটু না হলে পানি শুকিয়ে যাবে।"
সায়মা দরজা খুলে দেখে, এক অপরিচিত মুখ—মধ্যবয়সী মহিলা, হাতে একটা প্লেট নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।
সায়মা ভদ্রতার খাতিরে সালাম দিলো,
"আস্সালামুআলাইকুম কাকে চাই?"
"ওয়ালাইকুম আস্সালাম। তোমার আম্মু ঘরে আছে মা?"
“আন্টি, ভেতরে আসুন না,” সায়মা বলে। “আমি মাকে ডাকি।”
সায়মা মহিলাকে সোফায় বসালো। সায়মা ওর মাকে রান্না ঘর থেকে ডেকে নিয়ে আসলো।
সায়মার মাকে দেখে সেই মহিলা সালাম দিলো,
“আস্সালামুআলাইকুম ভাবি,আমি পাশের ফ্ল্যাটে উঠেছি,” মহিলা বলেন, “আমি সারাদিন একাই থাকি তাই ভাবলাম আপনাদের সাথে একটু পরিচিত হয়ে যাই, যখন ভাবলাম আসবো তখন খালি হাতে কিভাবে আসি, তাই আপনাদের জন্য এই সামান্য একটু মিষ্টি নিয়ে আসলাম। "
"আরে ভাবি এইসবের কি দরকার ছিলো, আমি খুব দুঃখিত ভাবি আসলে আমার একটা কাজ পড়ে গিয়েছিলো যার কারণে আমি বাইরে বেরিয়ে যে
দেখবো কি হচ্ছে সে সময়টা পাইনি। আপনি এসেছেন খুব ভালো লাগলো। "
"আরে না না কি যে বলেন না ভাবি কোনো সমস্যা নেই। ভাবি ভাইকে দেখছি না। "
"উনি এখনও ফেরেননি অফিসে গিয়েছে। এইতো একটু পড়ে এসে পড়বে।"
"বাহ্ খুব ভালো। আর পরিবারে কে আছে ভাবি?"
"আর আমি আর আমার এই মেয়ে আরেকটা মেয়ে আছে ও একটু নানুর বাসায় গিয়েছে কিছুদিনে মধ্যে এসে পড়বে।"
মহিলা সায়মাকে ডাক দিলেন, সায়মা মহিলার কাছে গিয়ে বসলো, মহিলা সায়মার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন,
"নাম কি মা তোমার?"
"সায়মা।"
"বেশ সুন্দর নাম। শোনো আমার কোনো মেয়ে নেই। তাই তোমাকে আমি কিন্তু তুমি বলবো না আমি কিন্তু তোমাকে তুই বলবো, তুমি না হয় আজকে থেকে আমার মেয়ে।"
"আচ্ছা আন্টি।"
সায়মা সেখান থেকে বিদায় নিয়ে নিজের রুমে আসলো। ভারী হাসিখুশি মানুষ, খুব তাড়াতাড়ি কাউকে আপন করে নিতে পারে যা সচারচর
এখন দেখা যায় না।
সেলিনা চা নিয়ে আসেন , এবং মুহূর্তেই দুজনের মধ্যে প্রাণখোলা আলাপ জমে ওঠে। মহিলার নাম ফারজানা খান। সদ্য ফ্ল্যাট কিনে উঠেছেন। স্বামী ব্যবসায়ী, ছেলে ইউনিভার্সিটিতে পড়ায়।
"বাহ্ আমার মেয়েটাও এইবার ইউনিভার্সিটি তে উঠলো। মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়ছে।"
“তাই নাকি?” ফারজানা খুশি হয়ে বলেন, “আমার ছেলেও তো মনোবিজ্ঞানে শিক্ষক!”
তারপর জমে উঠে ধুমায়িত চায়ের কাপে আড্ডা।
________________________________________
পরদিন বিকেলে সেলিনা একটি খাবারের বাটি হাতে তুলে দেয় সায়মার হাতে।
“সায়মা তোর ফারজানা আন্টির বাসায় দিয়ে আয় তো। নতুন প্রতিবেশী, একটু আদর-আপ্যায়ন তো করতেই হয়।”
সায়মা বাটি নিয়ে গিয়ে দরজায় বেল দেয়। ফারজানা দরজা খুলে বলেন, “আরে, সায়মা! ভেতরে আয়।”
"আন্টি এই নিন মা আপনাদের জন্য পাঠালো।"
"তুই কি ভেতরে আসবি না নাকি বাইরে থেকে দিচ্ছিস ভেতরে আয়।"
সায়মা আর কথা বাড়ালো না সেও ফারজানার পেছনে গেলো। ফারজানা ড্রয়িং রুমে সায়মাকে বসালো। আর বললো,
"তুই একটু বস আমি আসছি।"
সায়মা সোফায় বসলো। সারাঘর দেখতে লাগলো। সারা ঘরে আভিজাত্যের ছোঁয়া । খুব সুন্দর করে ঘরটা গোছানো হয়েছে। বেশ সৌখিন এই পরিবার তা দেখেই বুঝা যাচ্ছে। এইসব দেখছিলো এর মধ্যে চোখে আটকে যায় একটা ছবিতে ড্রয়িং রুমের দেয়ালে লাগানো বড়ো একটা ছবি। সে ছবিতে আঙ্কেল আন্টি সোফায় বসে আছে আর তারা পেছনে দাঁড়িয়ে আছে একটা ছেলে। এর মাঝে ফারাজানা ফিরে আসেন হাতে দুটো মিষ্টি নিয়ে।
সায়মা ফারজানাকে জিজ্ঞেস করে
“আন্টি এই ছবিতে... এটা কি... রাশেদ স্যার?” কণ্ঠ কাঁপে সায়মার।
“হ্যাঁ, ও-ই আমার ছেলে। তুই কি ঢাকা ইউনিভার্সিটি তে পড়িস? "
সায়মা শুধু মাথা দোলায়। ফারাজানা হেসে দেয়,
"তাহলে ওকেই তুই ক্লাসে পেয়েছিস!”
ফারজানা খুশি হয়ে বলেন, “বাহ! তাহলে তো আরও ভালো হলো। ও তো খুব সিরিয়াস, কিন্তু ভেতরে ভেতরে খুব নরম মন।”
সায়মা একটা মুচকি হাসি দিয়ে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে আসে।
ঢাকার আকাশ সেদিন ভারী মেঘে ঢাকা। এই হুট করে বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। টুপটাপ বৃষ্টি পড়ছে জানালায়। সায়মা চাটা , ব্যাগ সব ঠিকঠাক করে বেরোয় ভার্সিটি রা উদ্দেশে, কিন্তু বেরিয়ে না কোনো রিকশা পাচ্ছে না কোনো, সিএনজী, এখন কি হবে আজকেও যদি লেট্ হয়, খুব ইম্পরট্যান্ট ক্লাস আছে মিস করতে চাইছে না। কি করবে কি করবে যখন ভাবছিলো, তখন সামনে একটা কালো এসে থামলো।
থামার পর সাথে সাথে দরজা খুলে গেল,
সায়মা অবাক আর কেও না রাশেদ বসে আছে গাড়ির ভেতর। সায়মা মনে মনে বলছে,
"এই আপদ আবার কোথায় থেকে আসলো?"
রাশেদ গাড়ি থেকেই বললো,
"ভার্সিটি যাচ্ছ?"
সায়মা শুধু মাথা দুলায়। রাশেদ বলে,
"উঠে পরো।"
"আরে না না স্যার আপনি যান আমি এই একটা সি এন জী এসে পড়বো।"
রাশেদের মুখে মনে হয় যেন মেঘ করল, গমগমে ভারী গলায় বলল,
"আমি এক কথা দুই বার বলতে পছন্দ করি না।"
সায়মা আর কি করবে অগত্যা উঠতেই হলো।
গাড়িতে বসে সায়মা চুপচাপ জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকে। বৃষ্টির ফোঁটা গ্লাসে গড়িয়ে পড়ছে, আর তার মনের ভেতর কী এক অদ্ভুত সাড়া।
“আপনার উত্তরটা খুব সুন্দর ছিল গতকাল,” রাশেদ বলেন হঠাৎ। “তাতে অনেক ভাবনার খোরাক আছে।”
সায়মা গলার স্বর নিচু করে বলে, “আমি আসলে সঠিক উত্তর দিতে পারব কিনা, জানতাম না।”
“সঠিক কি ভুল, সেটার চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ তুমি কী ভাবছো—সেটা,” রাশেদ বলেন।
সায়মা আর কিছু বলতে পারে না। তার ভেতরে ঢেউ ওঠে। হয়তো এক নতুন অধ্যায়ের শুরু হতে চলেছে।
ভার্সিটির গেটে পৌঁছে তারা একসঙ্গে হাঁটছে। দূরে দাঁড়িয়ে তানিয়া চোখ গোল গোল করে বলল, “তুই আর স্যার! একসাথে?”
“আসলে... উনি কাছেই থাকেন তো,” সায়মা ফিসফিস করে।
“বৃষ্টি না রোমান্স?” তানিয়া বলে চোখ টিপে।
“পাগল!” সায়মা লজ্জায় হেসে ফেলে।
ক্লাসে ঢুকেই রাশেদ আবার সেই কঠিন রূপে ফিরে যান। কিন্তু সায়মার মনে একটা প্রশ্ন গেঁথে যায়—এই মানুষটা তার জীবনের গল্পে ঠিক কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে?
প্রথম গল্প লিখছি তো, তাই জানি না কেমন হচ্ছে, আপনারা তাই দোয়া করে জানাবেন কেমন হচ্ছে। ভালো লাগুক মন্দ লাগুক জানাবেন এই আশা করবো
এই গল্প যদি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। যদি কোনো মতামত থাকে জানাতে ভুলবেন না। আমাকে টেলিগ্রাম এ এসএমএস দিতে পারেন @Clasher_1234 এই নামে। আপনাদের এসএমএস এ আমি উৎসাহ পাই। তাই আমাকে বেশি বেশি করে উৎসাহ দিবেন এই আশা করি।
Posts: 148
Threads: 3
Likes Received: 371 in 76 posts
Likes Given: 367
Joined: Dec 2023
Reputation:
101
khub sundor hocche caliye jan pase achi
•
|