Thread Rating:
  • 1 Vote(s) - 5 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Thriller সাজু ভাই সিরিজ নম্বর-০৬ (গল্প:কুয়াশার মতো)লেখাঃ- মোঃ সাইফুল ইসলাম সজীব।
#1
গল্পঃ- কুয়াশার মতো। 
পর্বঃ- ০১  

- মা বললো " তোর স্বামীর জন্য রোজরোজ ভাত রান্না করি নাকি? প্রতিদিন রাতে এসে বসে থাকে, লজ্জা সরম কিছু নাই নাকি? 

- সে কি ভাত চাইছে মা? 

- না চাইলে ও তো আমরা বুঝি, তাছাড়া ড্রইং রুমে বসে থাকলে ডাইনিং রুমে বসে কীভাবে খাবো আমরা? 

- আমার সঙ্গে যেভাবে কড়া কথা বলো সেভাবে ওর সঙ্গে বলতে পারো না মা? আমি তো পছন্দ করে বিয়ে করিনি, তোমাদের পছন্দের ছেলে। 

- আমার হয়েছে যত জ্বালা, তোর বাবা নিজের রুমে বসে বকবক করে। সে নিজেও কিছু বলতে পারে, কিন্তু তা না করে সবকিছু আমার উপর। 

- সত্যি করে বলো তো মা, তুমি আর বাবা আমাকে কি আর ওর সঙ্গে সংসার করতে দেবে না? 

- পাগল নাকি তুই? তোর বাবা ডিভোর্সের সকল ব্যবস্থা করতে বলেছে উকিলকে। 

- তাহলে কি আমি ওর সামনে গিয়ে আজকে সরাসরি বলে দেবো যে আর কোনদিন আমাদের বাড়ি যেন না আসে। তার ডিভোর্স পেপার সে বাসায় পেয়ে যাবে, বলবো মা? 

- পারবি শাকিলা? সেটাই বলে দে, প্রতিদিন আর সহ্য করতে পারি না। 

- ঠিক আছে যাচ্ছি আমি। 

ড্রইং রুমে বসে বসে সকাল বেলার পুরনো পত্রিকা খুলে পড়ছে সাজ্জাদ, আমার স্বামী। আমি তার সামনে যেতেই সে দাঁড়িয়ে গেল, বাসা থেকে চলে আসার পড় এটাই আমাদের প্রথম দেখা। সে ঠিক প্রতিদিন আসে কিন্তু আমি কোনদিনই সামনে আসি না। 

সেই চেহারা নেই, চোখ গুলো কেমন কোটরে ঢুকে গেছে, সম্পুর্ণ পোশাক যেন অন্যরকম। এভাবে এর আগে কখনো দেখিনি ওকে, 

- আমি বসতে বসতে বললাম, কেমন আছো? 

- ভালো। 

- চা-নাস্তা করা হয়েছে? 

- শুধু চা দিয়েছিল। 

- তো বাসায় যাবে কখন? প্রতিদিন এতো রাত করে বসে থাকো, বিরক্ত লাগে না? 

- না, আর তোমার জন্য তো অপেক্ষা করি। তুমি সামনে এলে তো বসে থাকতে হতো না, আমার সঙ্গে তুমি কথা বলো না কেন? 

- কথা বলতে ইচ্ছে করে না তাই বলি না। 

- তোমার নাম্বার বন্ধ করে রাখছো। 

- হ্যাঁ, তাহলে বুঝতেই পারছ তোমার সঙ্গে কথা বলার কোন ইচ্ছে নেই বলে তো বন্ধ। 

- আমার ভুল হয়ে গেছে। 

- কিসের ভুল সাজ্জাদ? আজব।

- তাহলে আমাকে রেখে কেন এখানে আছো, তুমি কি আমার সঙ্গে থাকবে না শাকিলা? 

- না সাজ্জাদ, তুমি তো জানো সরাসরি কথা বলা আমার বেশ পছন্দের। আজও তোমার সামনে আসার কোন ইচ্ছে ছিল না, কিন্তু তুমি প্রতিদিন রাতে এসে বসে থাকো, বিশ্রী লাগে। 

- আমার কি করা উচিৎ? 

- তুমি কি জানো হয়তো মা-বাবা সবাই তোমার প্রতি খুব বিরক্ত? 

- হ্যাঁ জানি, কিন্তু তুমি তো আমাকে পছন্দ করো ভালোবাসো, তাই আসি। 

- যদি বলি আমিও তোমার প্রতি খুব বিরক্ত তবে কি আর আসবে না? 

- মনে হয় আসবো না, কিন্তু আমি জানি তোমার কোনদিনই বিরক্ত আসবে না। 

- তোমার জানায় ভুল আছে, আমি তোমাকে এখন খুবই বিরক্ত মনে করি। নাহলে অনেক আগেই তোমার সঙ্গে চলে যেতাম, নাহলে একা একা বাসায় যেতাম। 

- চুপচাপ। 

- একটা কথা বলবো? 

- হুম বলো। 

- তুমি আর এসো না, বাবার এক বন্ধুর সঙ্গে বাবা আমাদের বিষয় কথা বলেছেন। তিনি মনে হয় শীঘ্রই ডিভোর্সের সকল কাগজপত্র নিয়ে আসবে। 

- ওহ্, তোমার ইচ্ছেতে? 

- হ্যাঁ। 

- আমি কি আমার অপরাধ জানতে পারি? 

- তোমার কোন অপরাধ নেই, তুমি অতিরিক্ত ভালো মানুষ। আর সেটাই তোমার সমস্যা, তবে বাবার সমস্যা হচ্ছে তোমার কারণে নাকি বাবার অফিসে একটা সমস্যা হয়েছে। 

- হ্যাঁ কিছুটা, আমাদের একটা কাজ তোমার বাবার অফিসের করার কথা ছিল। তাদের কাজের মান ভালো না তাই আমি কাজটা অন্য কোম্পানি কে দিতে বলেছি আমাদের স্যার কে। 

- তোমার কি উচিৎ ছিল না বাবার কথা শোনা? 

- কাজের সময় কাজ, বাসায় এলে শশুর জামাই সম্পর্ক, তাই আগে কাজ। 

- এটাই সমস্যা, যাইহোক আমি তোমার কাজের প্রতি শ্রদ্ধা করি। 

- তাহলে আমার সঙ্গে চলো। 

- সেটা সম্ভব না, আগেই বলছি। বাবার যেমন সমস্যা তার অফিসে, আমারও তেমন কিছু সমস্যা আছে বাসাতে। তবে বলতে চাই না। 

- আচ্ছা ঠিক আছে। 

- তুমি এখন চলে যাও, আর কোনদিন আসার দরকার নেই। 

- ভাত খেয়ে যাই? 

- না, বাসায় গিয়ে খেও, তোমার জন্য এখানে অতিরিক্ত রান্না করা হয় না। 

- তোমার জন্য তো হয়? সেখান থেকে নাহয় একটু খেতে দিলে। 

- সাজ্জাদ...? অদ্ভুত কথাবার্তা সব। 

- আচ্ছা সরি, এমনিতেই ফাজলামো করেছি। তো ভালো থেকো সবসময়। 

সাজ্জাদ উঠে দাঁড়িয়ে গেল, দরজা খুলে একাই বের হয়ে গেল। আমি দরজা বন্ধ করার জন্য এগিয়ে গেলাম, পিছন থেকে ডাক দিয়ে বললাম, 

- বাসায় রান্না করো নাকি হোটেলে খাও? 

- সাজ্জাদ ঘুরে তাকাল, বলল, কোনটাই না। হোটেলের খাবার সহ্য হয় না, আর বাসাতে কেন যেন রান্না করতে ইচ্ছে করে না। সারাদিন শুকনো খাবার খেয়ে চলে যায়, আর রাতে তো তোমাদের বাসায় খেতাম। আজ থেকে অন্য ব্যবস্থা করতে হবে। 

সাজ্জাদ সিঁড়ি বেয়ে নিচে চলে গেল, আমি দরজা বন্ধ করে নিজের রুমে চলে গেলাম। ঘন্টা খানিক পড়ে বাবার চিৎকারে রুম থেকে বের হলাম, বাবা বলল,

- ইচ্ছে করেই চাবি ফেলে গেছে, চাবি নেবার বাহানা ধরে আবার আসবে। 

- বললাম, কি হয়েছে বাবা? 

- সাজ্জাদ বাসার চাবি ফেলে গেছে মনে হয়। 

- তাহলে চিৎকার করো কেন? এলে আবার দিয়ে দেবে তাতেই তো হয়ে যায়। 

- কোন দরকার নেই, চাবি নিচে গিয়ে দারোয়ান এর কাছে রেখে আসবো। সে এলে দারোয়ান তাকে চাবি দিয়ে দেবে। 

আমি চুপচাপ রুমে চলে গেলাম, বাবা চাবি নিয়ে চলে গেছে নিচে। অন্ধকার রুমের বেলকনিতে দাঁড়িয়ে জীবনের হিসাব মেলাতে লাগলাম। 

রাত দুইটা। 
দরজা খুলে নিচে গেলাম, দারোয়ান কাকা বসে বসে ঝিমাচ্ছে। আমি তাকে ডাক দিতেই তিনি ধড়ফড়িয়ে উঠলেন। 

- কে কে কে? 

- কাকা আমি শাকিলা। 

- ওহ্ তুমি? 

- কাকা আমার হাসবেন্ড এসেছিল? 

- না আসেনি এখনো। 

- যদি আসে তাহলে তাকে চাবি দেবার সময় বলবেন আগামীকাল সকালে আমি বাসায় যাবো। সে যেন সকাল বেলা আমাকে নিতে আসে, বাসায় যেতে হবে না, রাস্তায় দাঁড়ালে হবে। 

- আচ্ছা। 

|
|

সকাল বেলা মায়ের ডাকে ঘুম থেকে উঠে শুনি বাড়ির দারোয়ান কাকা আমাকে ডাকছে। আমি মনে মনে ভাবলাম যে সাজ্জাদ হয়তো চলে এসেছে আমাকে নিতে। নিশ্চয়ই সে নিচে দাঁড়িয়ে আছে আমার জন্য, কাপড়চোপড় টুকটাক রাতেই গুছিয়ে রেখেছি। কোনরকমে হাতমুখ ধুয়ে ব্যাগ নিয়ে বের হলাম, মা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। 

পিছন থেকে বারবার ডাকছে আমি শুধু বললাম, নিজের সিদ্ধান্তটা নিজে একটু নেবো। 

নিচে এসে সবচেয়ে বড় ধাক্কা লেগেছে, সাজ্জাদ আসেনি। ভোরবেলা এসে একটা চিঠি রেখে গেছে, দারোয়ান কাকা সেটাই দেবার জন্য আমার খোঁজ করছেন। 

তেমন কিছু লেখা নেই, শুধু লেখা আছেঃ- 

" অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল ব্যস্ত শহর ছেড়ে কোন এক নদীর চরে কিংবা জঙ্গলে ঘুরে বেড়াবো। আজ সেই ইচ্ছে পুরণ করার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম, বাসার সবকিছু তোমার নিজের হাতে গড়া। সেগুলো তুমি গ্রহণ করে নিও, একটাই আফসোস ' তুমি কেন আমার সঙ্গে এমনটা করলে সেই উত্তরটা জানতে পারি নাই। "

|
|
|

- মা আমার হাত ধরে বললো " আমি তো ইচ্ছে করে সাজ্জাদকে নির্লজ্জ বলিনি, রাগের মাথায় বলে ফেলেছি। তুই বাড়ি ছেড়ে যাসনে শাকিলা, সাজ্জাদ ঠিকই ফিরে আসবে। " 

- আমি ঠান্ডা মাথায় বললাম, " সে ফিরে আসুক বা না আসুক, আমি তোমাদের বাড়িতে আর এক মুহূর্তও থাকবো না মা। তোমরা মা-বাবার দিকে তাকিয়ে আমি ওর সঙ্গে অনেক খারাপ ব্যবহার করেছি। " 

- সেখানে একা একা কি করবি? তারচেয়ে বরং আমাদের সঙ্গে থাক, ও ফিরে এলে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। 

- মা তুমি আমকে এমন কোন অনুরোধ করিও না যেটা রক্ষা করতে পারবো না। বাবা বাসায় এলে তাকে বলে দিও আমার বাসায় যেন ভুলেও না যায়। ভুল করে যদি রাস্তায় কোনদিন দেখা হয়ে যায় সেদিন যেন মেয়ে বলে পরিচয় দিতে না আসে। কারণ সে কিছু বললেও আমি কিন্তু তাকে না চেনার ভান করে এড়িয়ে যাবো। 

- এসব কি বলছিস তুই? নিজের মা-বাবার সঙ্গে এসব কথা বলতে পারলি তুই? আমরা কি তোর কেউ না শাকিলা? 

- ঠিক এই কথা মা, ঠিক এই কথা বলে সেদিন তুমি আর বাবা আমার মুখে তালা দিয়েছো। আমি সাজ্জাদের মতো একটা ছেলেকে বিনা কারণে অবহেলা আর অপমান করে চলে এসেছি। মাগো আমার কি দোষ? সাজ্জাদের কি দোষ? 

- তোর স্বামীর কোন দোষ নেই? 

- না নেই, আমার স্বামীর কোন দোষ নেই। যত দোষ সব তোমার স্বামীর মা, তোমার স্বামীর সকল দোষ। শুধু মা-বাবা বলে অন্যায় জেনেও সাজ্জাদ কে আমি দুরে রাখতে গেলাম। কিন্তু আর না, যদি সারাজীবন ওই বাসায় একা একা পার করতে হয় তবুও আর ফিরবো না। 

- পাগল হয়ে গেছিস? কি বলিস এসব? 

- ঠিকই বলছি, এগুলো অনেক আগেই দরকার ছিল বলার। মানুষ জাতি বড় অদ্ভুত মা " সঠিক সময়ে সঠিক কাজটা করতে কেউ চায় না, কিন্তু পড়ে সব হারিয়ে বেঠিক সময়ে অনেক বাসনা ও যন্ত্রণা নিয়ে আফসোস করে। " 

নিজের ব্যবহৃত সবকিছু নিয়েই বাড়ি ত্যাগ করে রাস্তায় বের হলাম। আমার ছোটবোন আমার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা পর্যন্ত এসেছে, একটা রিক্সার জন্য অপেক্ষা করছি। আমার বোনের নাম সুমনা, সুমনা আমার চেয়ে দুই বছরের ছোট। 

- সুমনা বললো, আপু আমি যদি মাঝে মাঝে তোমার সঙ্গে দেখা করতে যাই তাহলে আমাকেও কি পরিচয় দেবে না? 

- তোর কথা আলাদা, তবে আমার কাছে গিয়ে কি করবি তুই? পড়াশোনা ভালো করে কর, আর তুই সবসময় মা-বাবার কথা বিবেচনা করে কাজ করবি। হুট করে তাদের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে পড়ে আমার মতো আফসোস করবি না। 

- ঠিক আছে আপু, যদি আমার কোন সিদ্ধান্ত নিতে বা বুঝতে সমস্যা হয় তাহলে তোমার সঙ্গে আলাপ করবো। 

- কোন দরকার নেই, তখন বাবা বলবে আমার বুদ্ধিতে তুইও বদলে গেছো। 

- আচ্ছা ঠিক আছে আমিই ভেবে নেবো। 

- এখন বাসায় যা। 

- আপু? 

- বল। 

- আমার মন বলছে তুমি বাসায় গিয়ে দুলাভাইকে পাবে, গিয়ে দেখবে সে তোমার জন্য রান্না করে বসে অপেক্ষা করছে। 

- কিন্তু বাসার সবগুলো চাবি আমার কাছে। 

- সে নিশ্চয়ই নতুন চাবি বানিয়েছে, তোমাকে নেবার জন্য এমন বুদ্ধি করেছে। 

- তাই যদি হয় তাহলে তোকে আমি বাসায় নিয়ে নিজের হাতে রান্না করে খাওয়াবো। 

- সত্যি তো আপু? 

- সত্যি সত্যি সত্যি। 

- তাহলে দেরি না করে চলে যাও, গিয়ে দেখো তোমার জামাই তোমার জন্য অপেক্ষা করছে। 

|
|

বাসায় তালা ঝুলছে, সুমনার কথা শুনে আমি সত্যি সত্যি ধরে নিয়েছিলাম সাজ্জাদকে বাসায় পাবো। অনেকটা আশাহত হয়ে দরজা খুলে প্রবেশ করলাম, চারিদিকে তাকিয়ে কেমন ফাঁকা ফাঁকা মনে হচ্ছে। সবকিছু খুব সুন্দর করে সাজানো আছে, সাজ্জাদ গোছালো জীবন পছন্দ করে। বিয়ের আগে থেকে সে এই ফ্ল্যাট ভাড়া করে একা একা থাকতো। সাধারণ আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে বিয়ের পড়ে যখন এ বাড়িতে এসেছিলাম সেদিন বেশ মুগ্ধ হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম বিয়ের জন্য হয়তো এতটা সাজানো, কিন্তু এরপর ঠিক যতগুলো দিন পেরিয়ে গেছে তার মধ্যে কোনদিন অগোছালো দেখিনি। 

রান্না ঘরে গিয়ে চুলো ধরিয়ে চায়ের জন্য গরম পানি দিলাম। বাসার প্রতিটি রুমের মধ্যে হাঁটলাম, কেমন ছমছম করছে। এর আগেও এভাবে ফাঁকা বাসায় একা একা দিনের পড় দিন পার করেছি। তখনও খারাপ লাগতো, কিন্তু দিনশেষে সাজ্জাদ বাসায় ফিরবে এই কথাটা মনের মধ্যে গাঁথা ছিল।

চায়ের কাপ নিয়ে বেলকনিতে বসে আছি, হাতের মধ্যে সাজ্জাদের লেখা সেই চিঠি। চিঠির শেষের কথাটা যেন বারবার প্রশ্ন করে আমাকে, সাজ্জাদ বলেছে " তুমি কেন এমন করলে সেটাই জানতে পারলাম না। " 

রুমের মধ্যে গিয়ে হঠাৎ করে নজরে গেল সাজ্জাদ তার অফিস আইডি কার্ড যেখানে রাখতো সেখানে কার্ড নেই। আমাদের বিবাহিত সংসার জীবনে কোনদিন সাজ্জাদকে এই আয়নার সামনে ছাড়া কার্ড রাখতে দেখিনি।  
বাসা থেকে বের হলাম, গন্তব্য সাজ্জাদের অফিস। সেখানে গিয়ে খোঁজ নিতে হবে, যেহেতু অফিসের আইডি কার্ড বাসায় নেই। 

অফিসে গিয়ে গেট দিয়ে ঢুকতেই সিকিউরিটিকে জিজ্ঞেস করলাম। লোকটাকে আমি চিনি, তার মেয়ের বিয়ের সময় সাজ্জাদের সঙ্গে আমি তার বাসায় গেছিলাম। 

- আঙ্কেল কেমন আছেন? 

- আলহামদুলিল্লাহ ভালো মা, আপনি সাজ্জাদ স্যারের বউ না? 

- জ্বি আঙ্কেল, আঙ্কেল সাজ্জাদ কি অফিসে? 

- হ্যাঁ এসেছিল, ঘন্টা খানিক আগে বের হয়েছে। 

- বলেন কি? আবার কখন আসবে? 

- জানি না, তিনি তো অনেক সময় এভাবে চলে যায়, কখনো দেরিতে আসে আবার কখনো কখনো তাড়াতাড়ি। 

- ভিতরে গেলে জানতে পারবো? সজীব ভাই কি অফিসে আছে? 

- হ্যাঁ, সজীব স্যার আছে। 

- ঠিক আছে আমি যাচ্ছি তাহলে। 

সাজ্জাদের অফিসের মধ্যে সবচেয়ে ভালো বন্ধু হচ্ছে সজীব ভাই, দুজনে একই সেকশনে কাজ করে। তিনি প্রায়ই সাজ্জাদের সঙ্গে আমাদের বাসায় যেতেন, তার গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট। 

- আরে ভাবি আপনি? অসুস্থ শরীর নিয়ে আপনি কেন কষ্ট করতে গেলেন? আমি তো ছুটির পড়ে আপনার বাসায় গিয়ে আপনার পার্সেল দিয়ে আসতাম। 

আমি অবাক হলাম, মনে মনে ভাবলাম কিসের পার্সেল? কে দিয়েছে? 

- বললাম, সাজ্জাদ কোথায় সজীব ভাই? 

- মানে কি ভাবি? সাজ্জাদ বললো সাজ্জাদের কোন আত্মীয় নাকি অসুস্থ তাই সেখানে যাবে। ফিরতে দুদিন দেরি হবে আর আপনি নাকি তার সবকিছু জানেন। আপনি অসুস্থ তাই আপনাকে নিয়ে যেতে পারছে না। 

আমি তখন এক এক করে বিগত দিনের সবকিছু সজীব ভাইকে বললাম। সব শুনে তিনি আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলেন, মনে হয় তিনি বিশ্বাস করতে পারছেন না। কারণ সাজ্জাদ যেহেতু তার খুব ভালো বন্ধু তাই এই বিষয়গুলো অন্তত তার সঙ্গে শেয়ার করবে এটা তার ধারণা ছিল। 

- সজীব ভাই বললো, ভাবি আমি যদি একটু হলেও বুঝতে পারতাম তাহলে কোনদিনই তাকে যেতে দিতাম না। 

- আপনি বলেন না ওকে কোথায় পাওয়া যাবে? 

- জানি না, তবে আমার বিশ্বাস সাজ্জাদ দ্রুত ফিরে আসবে। সাজ্জাদ কিন্তু আপনাকে প্রচুর ভালোবাসে ভাবি, আপনাকে ছেড়ে থাকতে পারা অসম্ভব তার কাছে। 

- আমিও জানি, কিন্তু ভয়টা অন্য যায়গা ভাই। 

- কোন যায়গা? 

- ও কখনো আমার সঙ্গে রাগ করতো না, আমি যদিও ভুল করতাম না। তবুও সামান্য কিছু হলেও কখনো রাগতো না, কিন্তু আজ যেহেতু এতকিছু হয়ে গেছে তখন ভয় হচ্ছে খুব। 

আমি আর কথা না বাড়িয়ে সজীব ভাইয়ের কাছ থেকে পার্সেল নিয়ে উঠে দাঁড়ালাম। তারপর আসি বলে পিছনে ফিরে হাঁটা শুরু করেছি, সজীব ভাই পিছন থেকে বললো,। 

- একটা কথা জিজ্ঞেস করতে পারি ভাবি? 

- আমি ঘাড় ফিরিয়ে মুখে কিছু না বলে তার দিকে জিজ্ঞেসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম। 

- আপনিও তো সাজ্জাদকে খুব ভালোবাসতেন তাই না? 

- আমি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললাম, হ্যাঁ। 

- তাহলে আপনি কেন বদলে গেলেন? সাজ্জাদ এর মতো আমারও জানতে ইচ্ছে করছে। তাছাড়া আপনার এমনটা করার কারণ জানতে পারলে বুঝতে সুবিধা হতো সে ফিরবে কি ফিরবে না। 

- আরেকদিন বলবো সজীব ভাই, ভাববেন না এড়িয়ে যাচ্ছি। আরেকদিন সত্যিই আপনাকে বলবো সবকিছু। 

|
|

বাসায় ফিরে আমি সবচেয়ে বেশি অবাক হয়ে গেলাম, কেন যেন বারবার মনে হচ্ছে বাসায় কেউ প্রবেশ করেছিল। বেলকনিতে বসে চা খেয়ে আমি সেখানেই চেয়ার রেখে গেছিলাম, চেয়ারের উপর খালি কাপ ছিল। কিন্তু চেয়ার এখন ভিতরে, আর কাপটা রান্না ঘরে রাখা। 

পার্সেলের মধ্যে একটা চেকবই, সবগুলো পাতায় সিগনেচার করা। সঙ্গে একটা চিঠি, চিঠিতে মাত্র কিছু লাইন। 

" আমার যতটুকু দরকার তা সঙ্গে করে নিলাম, বাকিটা তোমার জন্য রেখে গেলাম। সজীব খুব বিশ্বস্ত তাই ওর হাতেই রেখে গেলাম, যখন দ্বিতীয় বিয়ে করবে তখন নিজেকে ডিভোর্সি বলবে না। বলবে তোমার স্বামী মারা গেছে, কারণ এই সমাজ ডিভোর্সি শুনলে নিচু চোখে দেখে। " 

কতক্ষণ কান্না করেছি জানি না, কান্না করতে করতে কখন ঘুমিয়েছি তাও জানি না। যখন চোখ মেলে তাকালাম তখন চারিদিকে অন্ধকার আর অন্ধকার। 

বাতি জ্বালিয়ে ফ্রেশ হলাম, সবকিছু কেমন যেন ভুতুড়ে মনে হচ্ছে। কখনো এতো রাতে একা একা ছিলাম না বাসায়, যেদিন সাজ্জাদের বাসায় ফিরতে দেরি হতো সেদিন আগেই বাড়িওয়ালার কাছে কল দিয়ে তার মেয়েকে আসতে বলতো। 

বিছানায় আমার মোবাইল পড়ে আছে, সেটা হাতে নিয়ে দেখি ছোটবোন সুমনা অনেকবার কল করেছে। এতবার কল দেবার কারণ বুঝতে পারছি না, হয়তো বাবা বাসায় ফিরে রাগারাগি করেছে। কিংবা কল দিয়ে বলবে " আপু তুমি হঠাৎ করে চলে গেছ আমার একা একা ভালো লাগে না। " 

- কলব্যাক করলাম, সঙ্গে সঙ্গে সুমনা রিসিভ করে বললো " কল দিলাম রিসিভ করো না কেন? " 

- ঘুমাচ্ছিলাম, বল এখন। 

- আপু দুলাভাই তো নোয়াখালী চলে গেছে। 

- আমি আৎকে উঠে বললাম " কে বলেছে? " 

- ফেসবুকে একটা ছেলে তার ছবি পোস্ট করেছে, আর তিনি বাসের ভিতরে ছিলেন। তার পাশের সিটেই দুলাভাই বসে ছিল, সেই ছেলেটা ক্যাপশন দিয়ে লিখেছেন " চমৎকার একটা মানুষের সঙ্গে এবার ভ্রমণ করলাম, জীবনের স্মরণীয় একটা ভ্রমণ করলাম। " 

- সেই ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করার ব্যবস্থা কি? 

- আমি যোগাযোগ করেছি, তার মোবাইল নাম্বার ও রেখেছি। তুমি এক কাজ করো, তাকে কল দিয়ে শুধু বলবা তোমার নাম শাকিলা। আমি তাকে সবকিছু বলছি, সুমনার বোন বললেই চিনবে। 

নাম্বার নিয়ে কল দিলাম, এখন রাত দশটা পার হয়ে গেছে। আরও আগে সুমনার কল রিসিভ করতে পারলে খুব ভালো হতো। 

- হ্যালো আসসালামু আলাইকুম। 

- ওয়া আলাইকুম আসসালাম, ভাইয়া আমি সুমনার বোন শাকিলা। সুমনা নামের কোন মেয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে আপনার? 

- জ্বি আপু। 

- ভাই সাজ্জাদ কোথায়? 

- আপু সেই ভাইয়াটা দুধমুখা বাজার নেমে গেছে আর আমি এসেছি বসুরহাট। বাস থেকে নামার কিছুক্ষণ পরই আপনার বোনের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আরেকটু আগে যদি কথা হতো তাহলে তো তাকে আমি অনুসরণ করতাম বা বিভিন্ন অজুহাতে নিজের বাসায় নিয়ে আসতাম। 

- আমি তো ভাই নোয়াখালী কখনো যাইনি, তাই কিছু চিনি না। সেখানে সে কোথায় কার বাসায় যাবে সেগুলো কিছু বলেছে? 

- বললো তার অনেক আগের পরিচিত কে যেন আছে, তার সঙ্গে দেখা করে তিনি আবার নাকি ভোলা চরফ্যাশন চলে যাবেন। তারপর সেখান থেকে চলে যাবেন মণপুরা দ্বীপে। 

চলবে...

গল্পঃ- 
কুয়াশার মতো 
পর্বঃ- ০১ 

লেখাঃ- মোঃ সাইফুল ইসলাম সজীব।
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#2
 পর্বঃ- ০২


- আপনি কি জানেন সাজ্জাদ কোন গ্রামে যাবে, বা কোন এলাকায়? 

- মোহাম্মদনগর গ্রাম, এতটুকুই জিজ্ঞেস করেছি। প্রয়োজন নেই তাই আর বিস্তারিত কিছু জানতে চাই নাই। 

- আমি যদি কালকে সকালে উঠে নোয়াখালীতে আসি তাহলে আপনি কি আমাকে একটু সাহায্য করতে পারবেন ভাই? 

- জ্বি আপু চেষ্টা করবো, কিন্তু অপরিচিত এখানে আপনি একা একা আসতে পারবেন? 

- আমি আমার পরিচিত কোন বন্ধু নিয়ে আসবো, নাহলে আমার বোনকে সাথে নিয়ে আসবো। 

- ঠিক আছে চলে আসুন, আমি যতদূর পারি সেই ভাইয়াকে খুঁজে বের করতে চেষ্টা করবো। 

- আচ্ছা ঠিক আছে ভাই। 

রান্না ঘরের মধ্যে বিশাল একটা শব্দ হলো, সমস্ত ফ্ল্যাট কাঁপিয়ে আওয়াজ শোনা গেল। রাতের এই নিস্তব্ধ পরিবেশে কেমন যেন ভয় করতে লাগলো। রান্না ঘরের দিকে এগিয়ে গেলাম, একটা কালো বিড়াল দৌড়ে বের হয়ে গেল। আশ্চর্য, এখন এই বিড়াল কীভাবে এসেছে? 

সাজ্জাদের বন্ধু সজীব ভাইকে কল দিলাম, এতো রাতে বিরক্ত করতাম না। কিন্তু যেহেতু তিনি বিয়ে করেননি তাই সমস্যা হবে না, কেননা তার বিয়ে হলে এতো রাতে একটা মেয়ে হয়ে কল দিতে সাহস পেতাম না। 

- আসসালামু আলাইকুম ভাবি! 

- ওয়া আলাইকুম আসসালাম, সজীব ভাই আমি দুঃখিত বিরক্ত করার জন্য। 

- ছি ছি লজ্জা দিচ্ছেন কেন? আমিই কল দিতাম কিছুক্ষণ পড়ে। বাসায় ফিরতে দেরি হয়ে গেছে ভাবি, সাজ্জাদ নেই তাই সবকিছু আমাকেই করা লাগে। সাজ্জাদ যখন ছিল তখন সারাদিন আমার তেমন কিছুই করতে হতো না। মুহূর্তের মধ্যে সে কীভাবে যেন সবকিছু করে ফেলতো, কাজের জন্য সাজ্জাদ সিনিয়র জুনিয়র সবার কাছে খুব প্রিয়। 

- সাজ্জাদ নোয়াখালী গেছে সজীব ভাই। 

- বলেন কি? কীভাবে জানলেন, আপনার সঙ্গে কথা হয়েছে সাজ্জাদের? 

আমি সংক্ষিপ্ত করে সবকিছু বললাম। সজীব ভাই অবাক হয়ে গেল, তিনি হয়তো ধারণা করতে পারে নাই সাজ্জাদ এতদূর চলে গেছে। 

" বললাম, সজীব ভাই আমি আগামীকাল সকালে উঠে নোয়াখালী যেতে যাই। আপনি আমার জন্য একটা ব্যবস্থা করে দিবেন, আপনি যেহেতু অফিস রেখে যেতে পারবেন না। নাহলে আপনাকেই সঙ্গে করে নিয়ে যেতাম সজীব ভাই। "

" ঠিক আছে আমি ব্যবস্থা করবো, একাই যাবেন নাকি সঙ্গে কাউকে নিবেন? " 

" একাই যাবো, কতদিন কি লাগে তা তো জানি না আর সেখানে যদি কোনো সমস্যা হয়। তাই যা কিন্তু হোক সেটা আমি একাই ভোগ করতে চাই, কাউকে নেবো না। " 

" ঠিক আছে, সমস্যা হলে আমি তো আছি, কোন বিপদ হলে সঙ্গে সঙ্গে আমাকে জানাবেন। "

কল দিয়ে বিছানায় বসে ভাবছি, আজকের রাতটা পার করতে কতটা কষ্ট হবে জানি না। অপেক্ষার রাত হয়তো অনেক দীর্ঘ হয়, কিন্তু সেই অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে যদি ভালো কিছু পাওয়া যায় তবে আফসোস থাকে না। 
মোবাইলে সুমনা কল দিয়েছে। 

" আপু অনেকক্ষণ ধরে তোমার নাম্বার ব্যস্ত পাচ্ছি কেন, কি করো তুমি? " 

" সেই নোয়াখালীতে কথা বললাম, তারপর তোর দুলাভাইয়ের বন্ধুর সাথে কথা বললাম। " 

" আপু বাসায় তো বিশাল কান্ড, বাবা বাসায় এসে দেখে তুমি বাসায় নেই। তারপর যখন তোমার চলে যাবার কথা শুনেছে তখন সঙ্গে সঙ্গে রাগ করে চলে গেছে তোমার বাসার দিকে। এতক্ষণে হয়তো পৌঁছে যাবার কথা, বাবার সঙ্গে অনেক হিসাব করে কথা বলবে। তুমি কিছুতেই আসবে না, আমি তোমাকে কিছু গোপন কথা বলবো। দুলাভাইকে বাবা একদম সহ্য করতে পারে না এর পিছনে খুব বড় ধরনের কারণ আছে। " 

" কি কারণ? "

" সাক্ষাতে বলবো, তুমি আপাতত বাবাকে কি কি বলবে সেটা সাজিয়ে রাখো। " 

" আচ্ছা। " 

কল কাটতেই কলিং বেল বেজে উঠল, দরজার ছিদ্র দিয়ে বাবাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আমি আস্তে আস্তে দরজা খুলে দিলাম। রুমের মধ্যে প্রবেশ করেই বাবা বললো, 

" এসব কি ধরনের আচরণ শাকিলা? নিজে যা ইচ্ছে তাই শুরু করেছো? " 

" বাবা উত্তেজিত হবার মতো কিছু হয়নি, আমার বাসায় আসার ব্যাপারে তোমাকে নিষেধ করেছি। মা তোমাকে বলেনি কিছু? " 

" তুই নিষেধ করলে শুনবো নাকি? আমি তোকে জন্ম দিয়েছি নাকি তুই আমাকে জন্ম দিয়েছ? " 

" বাবা তুমি কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে কথা বলছো না, আমি কোথাও যাবো না। তুমি নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করে এখান থেকে চলে যাও, নাহলে...! "

" নাহলে কি? তুই জানিস তোদের ডিভোর্সের সবকিছু ঠিক করা হয়েছে। সাজ্জাদের মতো এক ছোটলোকের চেয়ে অনেক ভালো পরিবারে তোর বিয়ের কথাও চলছে অলরেডি। " 

" আমি সামান্য হাসলাম। " 

" হাসলি কেন? মজা লাগে আমার কথা? আমার যে অপমান হবে সেটা উপভোগ করতে খুব মজা লাগবে তাই না? " 

" বাবা শোনো, 'কোথাও কেউ নেই' উপন্যাসের মধ্যে মুনা তার মামাতো বোন বকুললে একবার বলেছিল " পৃথিবীতে অনেক খারাপ পুরুষ আছে কিন্তু একটাও খারাপ বাবা নেই। " 

" তো কি হয়েছে? " 

" তুমি নিজেই নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করে দেখো তো, পৃথিবীতে যদি ভালো বাবাদের লিস্ট করা হয় তাহলে সেখানে তোমার নাম পাবে? "

" তোর কি ধারণা আমি খুব খারাপ বাবা? " 

" হ্যাঁ কিছুটা। " 

" কেন, কি করেছি আমি? তোর সুখের জন্য সব করতে পারি সেজন্য অপরাধী আমি? " 

" আমার সুখের জন্য মানে? বলো যে তোমার স্বার্থ হাসিলের জন্য তুমি আমাকে ব্যবহার করেছো। নিজের স্বার্থের জন্য তুমি আমাকে ব্যবহার করে উপরে উঠতে চাও বাবা। " 

" কি বলতে চাস তুই? " 

" সাজ্জাদের সঙ্গে তুমি আমার বিয়ে দিয়েছিলে কারণ তোমার অনেক অফিশিয়ালি দুনম্বরি কাজ করাতে পারবে বলে। কিন্তু বিয়ের পড়ে যখন তুমি দেখতে পেলে সাজ্জাদ আত্মীয়স্বজনের চেয়েও সৎ থাকাটা গুরুত্ব দেয়৷ তখন তুমি আফসোসে পুড়তে লাগলে, তারপর থেকে তুমি আমাদের আলাদা করার ব্যবস্থা করতে চেষ্টা করলে। " 

" ফালতু কথা একদম বলবি না। " 

" তুমি এখন আবার আমার বিয়ে ঠিক করছো, নিশ্চয়ই সেখানে আরও বড় স্বার্থ আছে। " 

" সাজ্জাদের বাচ্চা তোর মগজটা একদম নষ্ট করে দিয়েছে, ওকে যদি একবার হাতের কাছে পাই তবে খুন করে দেবো। " 

" সাজ্জাদের বাচ্চা নয়, সাজ্জাদ। সাজ্জাদের কিন্তু এখনো বাচ্চা হয়নি, যদি হয় তাহলে তুমিও নানা হতে পারবে। " 

" রাগে শরীর জ্বলছে তুই মজা নিস? " 

" মোটেই না, সত্যি বললাম। " 

" আমিও সত্যিই বলছি, ওকে যদি আমি চোখের সামনে পাই তাহলে খুন করে দেবো। আমার অনেক ক্ষতি করেছে ও, ভেবেছিলাম তোকে ওর থেকে ডিভোর্স করিয়ে তারপর একটা বড় ধরনের ব্যবস্থা করবো। কিন্তু এখন তো তার আগেই করা দরকার, তোকেও সে কেড়ে নিয়েছে। " 

বাবা গজগজ করতে করতে বের হয়ে যাচ্ছে, আমি তার পিছনে পিছনে গিয়ে দরজা ধরে দাঁড়িয়ে বললাম, 

" মা'কে বলে দিও আমাকে ক্ষমা করতে। আর আজ থেকে যেন তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে তোমার হেদায়েতের জন্য দোয়া করে। " 

" কেন? " 

" তুমি শুধু এতটুকু বলে দিও। " 

বাবা চলে গেল, দরজা বন্ধ করে সুমনার কাছে কল দিয়ে মায়ের সঙ্গে কথা বলতে চাইলাম। 

" মা বললো, কি ব্যাপার মা শাকিলা? তোর বাবা গেছে তোর ওখানে? "

" হ্যাঁ এসেছিল আবার চলে গেছে, তোমাকে একটা কথা বলতে চাই মা। " 

" কি কথা? " 

" পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও শেষরাতে তাহাজ্জুদ পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করো যেন সাজ্জাদের কোন ক্ষতি না হয়। " 

" কেন কি হয়েছে জামাইর? " 

" কিছু হয়নি, তবে তোমার স্বামী মানে আমার জন্মদাতা বাবা ওকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে গেছে। " 

" বলিস কি? আমি বলেছিলাম তোর বাবার কথা শোন, এখন আবার আগুন জ্বলবে। " 

" মা তুমি শুধু তোমার স্বামীকে বোঝাও, নাহলে সাজ্জাদের যদি কোনকিছু হয়ে যায় তাহলে কিন্তু আমিও কাউকে ছাড়বো না। আল্লাহ না করুন, সাজ্জাদের কিছু হলে আমার মা-বাবার জন্য আমি দুই ধরনের সাদা কাপড়ের ব্যবস্থা করবো। " 

" মানে কি শাকিলা? " 

" মানে খুব সহজ মা, বাবার জন্য সাদা কাফনের কাপড় আর তোমার জন্য সাদা বিধবা শাড়ি। " 

" শাকিলা...? পাগল হয়ে গেছো? " 

" চিৎকার করে লাভ নেই মা, সেদিন তুমি মা হয়ে আমার পা ধরে কেঁদেছিলে বলেই এতদিন অনেক কিছু অন্যায় জেনেও চুপচাপ ছিলাম। কিন্তু মা, এভাবে চুপচাপ থাকলে দিনদিন অপরাধ আর পাপের বোঝা শুধু বাড়বে। তারচেয়ে বরং এবার সবকিছুর নিষ্পত্তি হোক, হয় তোমার স্বামীর সব অপরাধ জিতবে। নাহয় আমি হেরে গিয়ে পৃথিবী থেকে হারাবো, কিন্তু এর শেষ দেখতে চাই। " 

" শাকিলা? " 

" আমাকে নয়, উপর ওরা কে  ডাকো। " 

.
.
.

চলবে...

 
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

Like Reply
#3
পর্বঃ- ০৩ 


সকাল বেলা সাজ্জাদের কিছু ছবি পাঠিয়ে দিলাম সেই ছেলেটার কাছে। ছেলেটা নিজেই সকালে আমাকে কল দিয়ে বললো, 

" আপু আপনি চাইলে আমি আজকেই চেষ্টা করে তাকে খুঁজে বের করি, আপনি ঢাকা থেকে আসুন আমি তারমধ্যে দুধমুখা বাজারে গিয়ে সবার সঙ্গে জিজ্ঞেস করি। " 

" বললাম, না ভাই এতটা কষ্ট করতে হবে না, আপনি এমনিতেই অনেক উপকার করেছেন। আমি একটু পড়ে রওনা দেবো, সেখানে গেলে আমি আপনাকে স্মরণ করবো। " 

" সমস্যা নেই আপু, গতকাল রাতে আপনার সঙ্গে কথা হবার পড়ে আপনার ছোটবোনের সঙ্গে আমি আবার কথা বলেছিলাম। আপনি ভাইয়াকে খুব ভালোবাসেন, ভাইয়ার সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পারছি সেও আপনাকে অনেক ভালোবাসে। কিন্তু একজনের সামান্য অবহেলা আর তার জন্য অন্য জনের একরাশ অভিমানে একটা সম্পর্ক শেষ হয়ে যাবে এটা কীভাবে সহ্য করবো? " 

" আপনার কাছে আমার বোন সবকিছু বলেছে তাই না? " 

" জ্বি আপু, আপনার বোনকে কিছু বলবেন না দয়া করে কারণ কারো ব্যক্তিগত বিষয় অপরিচিত হয়ে এভাবে শোনা ঠিক না। " 

" আমি কোথায় গিয়ে নামলে আপনার সঙ্গে দেখা করতে পারবো? " 

" আপনি বসুরহাটের টিকিট সংগ্রহ করবেন, আর সেখানেই নামবেন। আপনার সঙ্গে আর কে কে আসবে? " 

" হয়তো আমি একাই যাবো, সঙ্গে কাউকে নিতে চাই না, ব্যক্তিগত সমস্যা আছে। " 

" কোন সমস্যা নেই, ছোট ভাইয়ের উপর বিশ্বাস করে চলে আসুন। আমি গতকাল রাতেই আমার মা-বাবার কাছে আপনাদের সবকিছু বলছি। তারা খুব আফসোস করেছেন, আপনি সরাসরি আমার বাড়িতে আসতে পারবেন। " 

" সেটা হবে না ভাই, আমি কারো বাসায় যেতে চাই না, ভালো কোনো হোটেল কিংবা ওকে খুঁজে না পেলে আবার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা ফিরে আসবো। " 

" আচ্ছা আগে আসুন তারপর দেখা যাবে, হয়তো অপরিচিত তাই বিশ্বাস করতে পারছেন না। সত্যি বলতে, আপনার বোনের কাছে শুনে যতটা বুঝতে পারছি তাতে মনে হচ্ছে আপনি আমার একমাত্র বড় আপুর বয়সী। আমার আপুর ও বিয়ে হয়েছিল কিন্তু সাংসারিক ঝামেলা ছিল খুব, মাত্র ১৯ দিন আগে আমার আপু মারা গেছে। " 

" কি হয়েছিল তার? " 

" যদি দেখা হয় আর আপনার হাতে সময় থাকে তাহলে সবকিছু বলবো। আপনি সাবধানে আসেন আমি আপনার অপেক্ষায় রইলাম, আর এক্ষুনি দুধমুখা বাজারে গিয়ে খোঁজ নেবো। " 

" কীভাবে কি করবেন? " 

" বাজারের সকল সিএনজি ও রিক্সাওলাকে ছবি দেখিয়ে জিজ্ঞেস করবো। তারপর নাহলে সেই মোহাম্মদ নগর গ্রামের মধ্যে যাবো, একটা সুস্থ মানুষ অবশ্যই পাওয়া যাবে। " 

'অবশ্যই পাওয়া যাবে' এই বাক্যটা শুনে আমার বুকটা কেঁপে উঠল, চোখ দিয়ে অজান্তেই পানি বের হয়ে গেল। আমি কাঁদো কাঁদো কণ্ঠে বললাম,

" তাই যেন হয় ভাই, এই বোনের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করার সুযোগ করে দিও। আমি যে অন্যায় তার সঙ্গে করেছি সেটা যে আমাকেই সমাধান করতে হবে ভাই। " 

" আপনি আসেন আমি ব্যবস্থা নিচ্ছি, ইনশা- আল্লাহ খুঁজে পাবো। আপনি কাঁদবেন না আপু। " 


সজীব ভাই আমাকে বাসে উঠিয়ে দিয়ে টিকিট হাতে দিয়ে বললো, 

" সাবধানে থাকবেন ভাবি, অপরিচিত স্থান তাই সবকিছু দেখে নিবেন। আর আপনাকে যে মেয়ের নাম্বার দিলাম তার বাসা নোয়াখালী সদরে। " 

" কিন্তু আমি তো বসুরহাট যাবো। " 

'' সমস্যা নেই ভাবি, আপনি সেখানে কাজ শেষ করে সাজ্জাদকে পান বা না পান তবুও আশেপাশে পরিচিত কেউ নেই। তাই দিনশেষে যেন সেখানে গিয়ে যেন থাকতে পারেন। " 

" ধন্যবাদ ভাই। " 

" আমি সবসময় কল দিয়ে খোঁজ নেবো, আপনি কোনো চিন্তা করবেন না। " 

" আচ্ছা ঠিক আছে! "

কুমিল্লা হোটেল থেকে গাড়ি বের হতেই বসুরহাট থেকে সেই ছেলেটা কল দিল। এখনো নামটা জানা হয় নাই তাই রিসিভ করে বললাম, 

" আমি এখনো আপনার নাম জানি না ভাই। " 

" আমার নাম ফেরদৌস আহমেদ, আমি আপনার ছোট হবো তাই তুমি করে বলবেন। " 

" কোনো খবর পেলে? " 

" হ্যাঁ আপু সেজন্য কল দিলাম, আপনি তাড়াতাড়ি চলে আসেন। একটা সিএনজি নিয়ে তিনি সেই গ্রামে গেছিলেন, ড্রাইভার তাকে যেখানে নামিয়ে দিয়েছে সেই স্থানটার নাম জেনে নিয়েছি। " 

" কার বাড়িতে গেছে, জানো কিছু? " 

" না আপু, যেখানে নেমেছেন সেখান থেকে নাকি সামনে একটা রাস্তা ছিল। সেই রাস্তা দিয়ে তিনি হেঁটে হেঁটে চলে গেছে, কিন্তু সমস্যা নেই কারণ সেখানে গিয়ে আশেপাশে খোঁজ নিলেই পাওয়া যাবে ইনশাহা-আল্লাহ। " 

" আমি তো কেবল কুমিল্লা পার হলাম, এখনো ঠিক কতক্ষণ লাগবে বুঝতে পারছি না। " 

" মোটামুটি বিকেল তিনটা বা সাড়ে তিনটার মধ্যে পৌঁছে যাবেন হয়তো। দিন থাকতে এলে বেশি ভালো হবে, আমি কিন্তু এখন সিএনজি নিয়ে সেই গ্রামের মধ্যে যাচ্ছি। " 

" শুকরিয়া ভাই। " 

" আমি সেখানে গিয়ে আশেপাশের সবার কাছে জিজ্ঞেস করে বের করবো। আপনি ফেনি মহিপাল স্টেশন এলে আমাকে জানাবেন, তাহলে আমি বসুরহাট বা দুধমুখা বাজারে দাঁড়াবো। " 

" আমি তো চিনি না মহিপাল। " 

" দেখবেন বাস থেকে যাত্রী নামবে সেখানে, আর নাহলে দেখবেন একটা ফ্লাইওভারের নিচ থেকে গাড়ি ডানদিকে মোড় নেবে। তখন রাস্তার পাশে দোকানে তাকিয়ে সাইনবোর্ডে লেখা পড়বেন। " 

" আচ্ছা। " 

৩ঃ৪০ মিনিটে আমি বসুরহাট বাসটার্মিনালে বাস থেকে নামলাম, আমি বাস থেকে নামতেই কালো শার্ট পরিহিত একটা ছেলে আমার সামনে এসে জিজ্ঞেস করলো, 

" আপনি শাকিলা আপু, তাই না? " 

" হ্যাঁ, তুমি ফেরদৌস? "

" জ্বি আপু, আসুন আমার সঙ্গে। " 

ফেরদৌস তার বাইকে স্টার্ট দিল, আমি সামান্য কৌতূহল বোধ করলাম। তখন সে বলেছিল যে সিএনজি নিয়ে সেই গ্রামের মধ্যে যাচ্ছে তাহলে বাইক নিয়ে গেল না কেন? 

" আপু সাজ্জাদ ভাই যে বাড়িতে গেছে সেই বাড়ি আমি খুঁজে বের করেছি। " 

" সত্যি বলছো? এতক্ষণ কল দিয়ে বলোনি কেন? "

" কারণ সাজ্জাদ ভাই নেই, তিনি নাকি সকাল বেলা চলে গেছে। আপনাকে বললে কষ্ট পাবেন বা আশাহত হবেন তাই বলিনি, তবে আমার বারবার মনে হচ্ছে সাজ্জাদ ভাই ওই বাড়িতে আছে। " 

" কেন? " 

" কারণ সবার আচরণ কেমন যেন মনে হলো আর আমি তার বিষয় কিছু জিজ্ঞেস করতেই তারা কেন যেন উত্তর দিতে চায় না। যেমন, জিজ্ঞেস করেছি তাদের সঙ্গে কিসের সম্পর্ক তার? " 

" কি বললেন তারা? " 

" ইনিয়েবিনিয়ে অনেক কিছু বললেন যার কিছু পরিষ্কার বুঝতে পারিনি। " 

বাইক থামলো। 
আমরা দাঁড়িয়ে আছি কোম্পানিগঞ্জ থানার সামনে, নোয়াখালী। 

" বললাম, এখানে কেন ফেরদৌস? " 

" আপনি একটা জিডি করবেন, আমার বড়মামা এখানের দারোগা। যদিও আমার পারিবারিক ভাবে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো না তবে মামা আমাকে আদর করে খুব। তার কাছে গিয়ে জিডি করতে হবে, সাজ্জাদ ভাইয়ের ছবি দেবেন আর আপনি তাকে খুঁজতে এসেছেন তার নিশ্চয়তা। " 

" মানে? " 

" মানে আপনার যদি কোন সমস্যা হয় তাহলে যেন সবকিছু পুলিশের জানা থাকে। " 

অনেকটা অপমানিত হলাম, ছেলেটাকে সামান্য অবিশ্বাস করাতে হয়তো এমনটা করেছে। চুপচাপ কথা না বলে সবকিছু ঠিক মতো গুছিয়ে আমরা বের হলাম। আমাদের সঙ্গে ফেরদৌসের দারোগা মামা নিজের বাইক নিয়ে যাচ্ছেন। এভাবে সম্পুর্ণ অপরিচিত কাউকে কেউ সাহায্য করতে পারে সেটা জানা ছিল না। 

বাইক চলছে, ফেরদৌস বললো " আমি আপনার জন্য এতকিছু কেন করছি জানেন আপু? " 

" কেন? " 

" আমার আপুটা মৃত্যুর আগে বারবার আমার কাছে সাহায্য চেয়েছিল। কিন্তু আপুর জীবনটা ছিল এমনই তাই সিরিয়াস নেইনি, কিন্তু যখন জানতে পেরেছি আপু মারা গেছে। তখন সবকিছু যেন নিজের ঘাড়ে অপরাধ চাপা পড়লো। " 

|
|

সাজ্জাদ সত্যি সত্যি নেই, দারোগার হুমকিতে তারা সবাই ভয় পেয়ে গেল। বাড়িটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে এরা অত্যন্ত গরীব, আমি তাদের অভয় দিয়ে বললাম, 

" আমি সাজ্জাদের স্ত্রী, সাজ্জাদ রাগ করে ঢাকা থেকে চলে এসেছে। ওকে খুঁজে বের করা আমার জন্য জীবনের সবচেয়ে বড় কাজ এই মুহূর্তে। " 

এক মহিলা বললেন, " মা সত্যি বলছি সাজ্জাদ চলে গেছে, সকাল বেলা উঠেই সে চলে গেছে। "

" কোথায় যাবে কিছু জানেন? " 

" বলেছিল আবার ঢাকায় চলে যাবে। " 

" কি...? ঢাকায়? " 

" হ্যাঁ " 

" আপনাদের সঙ্গে ওর পরিচয় কীভাবে? " 

" সাজ্জাদ যখন ছোটো একটা চাকরি করতো তখন সে একটা সাহেবের ছেলেকে প্রাইভেট পড়াতো। সেই বাসায় আমি কাজ করতাম, আর সেখান থেকেই আমাদের পরিচয়। " 

" আশ্চর্য! " 

" আমার মেয়েটা পরীক্ষায় ভালো পাশ করেছিল তখন তাকে বলেছিলাম। সে বলেছিলাম একদিন গ্রামের বাড়িতে এসে আমার মেয়ের সঙ্গে দেখা করে যাবে। আমার কাছ থেকে খুব আগ্রহ করে ঠিকানা লিখে নিয়েছিল। ভেবেছিলাম সে কখনো আসবে না কিন্তু ৩/৪ বছর পড় হঠাৎ গতকাল রাতে যখন এসেছে তখন অবাক হয়ে গেছি। " 

আমার আর তেমন কিছু জানার ছিল না, আমি ফেরদৌসের সঙ্গে ক্লান্ত শরীরে তাদের বাসার দিকে রওনা দিলাম। দারোগা সাহেব বললেন কোন সমস্যা নেই আপনি আজকে রাতটা থেকে কালকে সকালে উঠে ঢাকা চলে যাবেন। 

ফেরদৌসের বাসায় এসে সত্যিই অবাকের চেয়ে বেশি অবাক হলাম। তার মা-বাবা আমাকে অনেক আদর আপ্যায়ন করতে লাগলো, ঠিক যের তার নিজের মেয়ে আমি। কিন্তু আমরা তো বাঙালি, তাই অতিরিক্ত আদরের মধ্যে রহস্যের গন্ধ পাচ্ছি। 
কথায় বলে " অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ "। 

রাত এগারোটা। 
আমাকে আলাদা রুমের মধ্যে ঘুমানোর ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। মোবাইল সাইলেন্ট করে ক্লান্তি আর কান্না নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। সজীব ভাইয়ের সঙ্গে আগেই কথা হয়েছে, সাজ্জাদ যদি ঢাকা গিয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে তাহলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে জানাবেন বলেছে। 

পরদিন সকাল। 
ঘুম থেকে উঠে মোবাইল হাতে নিয়ে দেখি অনেক গুলো মিসডকল। সুমনা, সজীব ভাই, অপরিচিত এমন অনেক নাম্বার দিয়ে কল এসেছে। আমি সবার আগে সজীব ভাইয়ের নাম্বারে কলব্যাক করলাম, 

সজীব ভাই রিসিভ করে উৎকণ্ঠিত গলায় বলল,
 " ভাবি আপনি কোন যায়গা? 

" আমি তো নোয়াখালী সেই ফেরদৌসের বাসায়! "

" সর্বনাশ হয়ে গেছে ভাবি। " 

" কি হয়েছে সজীব ভাই? " 

" আপনার বাসা থেকে কেউ কল করেনি? " 

" করেছে কিন্তু কথা হয়নি! " 

" গতকাল রাতে সাজ্জাদ আপনাদের বাসায় মানে আপনি আর সাজ্জাদ যেখানে থাকেন সেখানে আপনার বাবাকে খুন করেছে। আপনার বাবার লাশ পোস্টমর্টেম করতে নেওয়া হয়েছে আর সাজ্জাদও হাসপাতালে কারণ তাকে পাওয়া গেছে অজ্ঞান অবস্থায়। মাথায় একটা লোহার রড দিয়ে আঘাত করা হয়েছে, তবে পুলিশের ধারণা এটা সাজ্জাদ নিজে ইচ্ছে করে করেছে। আপনার বাবাকে খুন করে তারপর নিজেকে নিজে আঘাত করে অজ্ঞান হয়েছে। " 

" আমি হাউমাউ করে বললাম, কি বলছেন সজীব ভাই? এটা শোনার জন্য আমি বেঁচে আছি? " 

.
.

চলবে.......
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

Like Reply
#4
পর্বঃ- ০৪



" সাজ্জাদের অবস্থা বেশি ভালো না ভাবি, পুলিশ হাসপাতালেই তাকে পাহারা দিচ্ছে। আপনি আজ এখনই ঢাকায় আসেন, আর যা হবার তা তো হয়ে গেছে, আসার সময় নিজেকে শক্ত রাখবেন। " 



" সজীব ভাই আপনি কি অফিসে? " 



" হ্যাঁ ভাবি, কিছুক্ষণ আগে এসেছি। " 



" আমার বাসায় মা আর সুমনার এখন অবস্থা কি রকম? নিশ্চয়ই কান্না করে সবাই? " 



" তা তো করবেই ভাবি, আমি সকালে গেছিলাম আপনাদের বাসায়। তখন সেখানে অনেক মানুষ উপস্থিত ছিল, আপনার মা বেশি ইমোশনাল হয়ে গেছে। চিৎকার দিয়ে শুধু আপনাকে বকাবকি করে, আপনি নাকি সবকিছুর জন্য দায়ী। " 



" মা এখন কোথায়? " 



" তাকে বাসায় পাঠানো হয়েছে আর আপনাদের সেই ফ্ল্যাট পুলিশ লক করে দিয়েছে। বিভিন্ন তদন্ত করার জন্য কারো প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে সেখানে। " 



ফেরদৌসের বাসায় তার মা-বাবা যখন আমার মুখে শুনলেন তখন সবাই হা হয়ে গেল। সকলের কাছে যেন অবিশ্বাস্য একটা ঘটনা বর্ননা করেছি আমি তাই তারা নির্বাক। 



আমি দ্রুত বের হবার প্রস্তুতি নিলাম, চোখ দিয়ে সেই তখন থেকে পানি বের হওয়া শুরু করেছে আর এখনো অনবরত চলেছে।



ফেরদৌস বললো " আপু আমিও আপনার সঙ্গে যাবো। "



" কেন? " 



" আপনি যেতে পারবেন না, পথে যদি নতুন কোন বিপদ হয় তাহলে তো সমস্যা হবে। " 



" আমার কিছু হবে না, তুমি বাড়িতে এসেছো তাই আমার জন্য এখন যেতে হবে না। " 



" আপনাকে দিয়ে আমি আবার আসবো। " 



অনেক চেষ্টা করেও একা বের হতে পারিনি, তাই ফেরদৌসকে সঙ্গে নিয়ে রওনা দিলাম। একটু পড়ে পড়ে বাবার মুখটা চোখের সামনে ভেসে উঠবে বুঝতে পারিনি। সেদিন রাতে যদি বুঝতাম বাবার সঙ্গে আর কোনদিন দেখা হবে না। তাহলে এতটা খারাপ ব্যবহার করতাম না হয়তো, নিজেকে খুব অসহায় লাগে। 



ঢাকায় পৌঁছে সরাসরি হাসপাতালে গেলাম। সজীব ভাই হাসপাতালের সামনেই দাঁড়িয়ে আছে, তিনি কিছুক্ষণ আগেই এসেছেন। আমি তার সঙ্গে উপরে উঠলাম, ফেরদৌস আমার সঙ্গেই আছে। 



সাজ্জাদ আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে, তার সঙ্গে দেখা করে কোনো লাভ নেই। তাই বাহিরে এসে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলা জন্য বসে আছি, ভেবেছিলাম বাসার কাউকে হয়তো পাওয়া যাবে। বাসে করে আসার সময় সুমনার নাম্বারে কল দিছিলাম কিন্তু রিসিভ করে নাই। 



" সজীব ভাই বললো, অনেক রক্ত বের হয়ে গেছে আর মাথার মধ্যে রক্ত জমেছে। একবার একটু জ্ঞান ফিরেছিল তারপর থেকে আবার অজ্ঞান হয়ে আছে। " 



" বললাম, পুলিশ কীভাবে খবর পেল? " 



" ফজরের নামাজ পড়ার জন্য আপনাদের ফ্ল্যাট এর উপরতলার একটা লোক মসজিদে যাচ্ছেন। তিনি সিঁড়ির চৌকিতে রক্তের দাগ দেখতে পান, তারপর বাড়িওয়ালাকে ডাকেন। দরজা খোলা ছিল তারা ভিতরে প্রবেশ করে দেখেন আপনার বাবা ছুরি পেটে বিদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে। আর কাছেই সাজ্জাদ রক্তাক্ত মাথা নিয়ে শুয়ে আছে, সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ডাকা হলো। পুলিশ এসে চেক করে সাজ্জাদকে জীবিত ধারণা করে, আপনার বাবা মারা গেছে সেটা সেখানেই বোঝা গেছে। " 



" আমি কি আমার বাসায় যেতে পারবো? " 



" জানি না ভাবি, দারোগা সাহেব এলে তার কাছে জিজ্ঞেস করে জানতে হবে। "



" বাবার লাশ কোথায়? " 



" পোস্টমর্টেম শেষ হয়ে গেছে, আপনার কাকারা এসেছেন তারা হয়তো লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাবেন। " 



" আমি এখনই যেতে চাই, এখানে তো সাজ্জাদের সঙ্গে ডাক্তার নার্স আছে। বাবাকে শেষ দেখা তো দেখতে হবে, খুব কষ্ট লাগছে সজীব ভাই। " 



" ভাবি একটা কথা। " 



" জ্বি বলেন। " 



" আপনাকে সাজ্জাদ যে চেকবই দিয়েছিল সেটা কি আপনার কাছে আছে? আমি কিন্তু জানতাম আপনার কাছে চেকবই আছে কিন্তু সকাল বেলা পুলিশ তল্লাশি করার সময় পাওয়া গেল না। " 



আমি আশ্চর্য হয়ে গেলাম " বলেন কি? আমি তো সেটা আমাদের বেডরুমে বালিশের তলায় রেখে দিছিলাম। " 



" পুলিশ তো ভালো করে তল্লাশি করেছে তাহলে পেল না কেন? যদিও আমি চেকবইয়ের কথা কিছু বলিনি কিন্তু মনে মনে ছিল। কারণ আপনি সঙ্গে করে নিয়ে যাবেন না সেটা ধারণা ছিল। " 



" তাহলে চেকবই কে নিয়েছে? " 



" তা তো জানি না ভাবি, আচ্ছা এটা পুলিশের কাছে বললেই ভালো হবে। খুনের সঙ্গে টাকার কোন সম্পর্ক থাকতে পারে। " 



" কিন্তু চেক বইয়ের কথা আপনি আমি সাজ্জাদ ছাড়া আর কেউ কি জানে? " 



" জানার কথা নয়। " 



" পুলিশ এগুলো বের করতে পারবে, আগে চলুন আপনার বাবার লাশ দেখবেন। " 



সজীব ভাইয়ের মুখটা হঠাৎ করে কেমন পরিবর্তন মনে হলো, নিজে একটু বিব্রত হয়ে গেছে। 



|

|



হাসপাতাল থেকে বের হবো এমন সময় পুলিশের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। ওসি সাহেব বললেন, 



" কোথায় যাচ্ছেন, শাকিলা মেডাম? " 



" আমি বাবার লাশ দেখতে যাবো। " 



" আপনার বাবার লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে চলে গেছে, আপনাকে এখন আমাদের সঙ্গে থানায় যেতে হবে। " 



" আশ্চর্য হয়ে বললাম, মানে কি? " 



" সজীব ভাই বললো, কিন্তু কেন অফিসার? "



" তার বাবার হত্যার দায়ে সাজ্জাদের সঙ্গে সঙ্গে তার নামেও মামলা করা হয়েছে। তার মা নিজেই মেয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, সুতরাং আপনার স্বামী যেহেতু অসুস্থ সেহেতু আপাতত আপনি আমাদের সঙ্গে চলুন। " 



" পাগল হয়েছেন আপনারা? আমার মা এখন শোকের আবহে কতকিছু বলবে আর তাই বলে আমাকে ধরে নিয়ে যাবেন? " 



" কিছু করার নেই, মামলায় আপনার নাম। " 



" আর সাজ্জাদ খুন করেছে সেকথা কীভাবে বলেন আপনারা? যে নিজেই আহত হয়ে এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে, তাকেও সন্দেহ? " 



" দেখুন আপনার স্বামী অভিনয় করছে, তিনি মনে হয় ভাবতে পারেননি রডের আঘাত বেশি জোরে লেগে যাবে। শশুরকে হত্যা করে নিজে হালকা অসুস্থ হবার জন্য একা একা আঘাত করেছেন। " 



" কিসের ভিত্তিতে বলছেন? " 



" সন্দেহের ভিত্তিতে, আমরা সবসময় সন্দেহ থেকে আসামির সনাক্ত করা শুরু করি। তারপর সেই তালিকা থেকেই খুনি বেরিয়ে আসে। " 



পুলিশের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে, বাবার লাশের সঙ্গে শেষ দেখা করতে না পেরে, মুমূর্ষু স্বামীকে হাসপাতালে রেখে আমি জেলে চলে এসেছি। সজীব ভাই প্রতিদিন দেখা করতে এসেছে কিন্তু আমার মা কিংবা বোন কেউ আসেনি। তারা নাকি এখনো গ্রামের বাড়িতে, এদিকে সাজ্জাদ এখনো কথা বলতে পারে না। আমি চারদেয়ালে বন্দি হয়ে সারাদিন সারারাত কান্না করে শুধু চোখে পানি বিসর্জন করা ছাড়া কিছু করতে পারি না। আল্লাহ কে বারবার বলছি, বাবাকে তো কেড়ে নিয়েছে, এবার আমার স্বামীকে যেন না নেয়। 



সাজ্জাদ সুস্থ হলেও আরেক বিপদ, পুলিশ তখন তাকেও ধরে নিয়ে আসবে জেলে। মাঝে মাঝে আমারও কেমন সন্দেহ হয়, সত্যি সত্যি কি সাজ্জাদ আমার বাবাকে খুন করেছে? 



সবকিছুর জন্য নিজেকে দায়ী মনে হয়, সেদিন রাতে আমি যদি এভাবে অপমান না করতাম। কিংবা সকাল বেলা বাসা থেকে বের না হতাম তবে কাহিনি এমন হতো না।



ফেরদৌস দিনের মধ্যে দুবার দেখা করতে আসে আমার সঙ্গে, গতকাল বললো একজন গোয়েন্দা তার পরিচিত আছে। আমি তাকে বলেছিলাম যে তাহলে কথা বলে নিয়ে আসো। সবকিছু চোখের সামনে কুয়াশার মতো মনে হয়, কুয়াশা যেমন অন্ধকার করে রাখে কিন্তু ছোঁয়া যায় না। তেমনি আমার সামনে মাত্র কয়েকদিনের ঘটিত জটিলতা কুয়াশার মতো লাগে। 



|

শাকিলার নিজের মুখের বর্ননা শেষ৷ 

|



হালকা অন্ধকার ঘরে বসে বসে এতক্ষণ ধরে সবকিছু শুনছিলেন সাজু ভাই। প্রায় দেড় ঘন্টা সময় লেগেছে শাকিলার মুখের বর্ননা শুনতে। সেদিন রাতে সাজ্জাদের সেই ড্রইং রুমে বসে থাকা হতে শুরু করে জেলে আসা পর্যন্ত সকল ঘটনা বলে হাঁপ ছেড়েছে শাকিলা। 



" সাজু বললো, আপনার কষ্টের কথাগুলো বলে আরও কষ্ট পেয়েছেন বুঝতে পারছি। আমার কিছু তদন্তের জন্য সম্পুর্ণ ঘটনা জানার দরকার ছিল তাই জেনে নিলাম। কিন্তু আপনার বলা ঘটনার মধ্যে থেকে আমার বেশ কিছু প্রশ্ন আছে। " 



" জ্বি করতে পারেন, কিন্তু আপনাকে যেভাবেই হোক আমার বাবার আসল খুনি বের করতে হবে। আমি আমার স্বামীকে সন্দেহ করতে চাই না, কিন্তু আমার বাবার আসল খুনি ধরা পড়ুক সেটাই কামনা করি। " 



" প্রথম প্রশ্ন, আপনি বলেছেন আপনার বাসায় বেলকনিতে চেয়ার ও চায়ের কাপ কেউ মনে হয় রান্না ঘরে রেখেছে। এটা কি সত্যি? " 



" জ্বি, আমি অবাক খুব। " 



" পুলিশের কাছে আপনার যে ব্যাগ জমা আছে সেখানে আপনার বাসার চাবি পাওয়া গেছে। সেখানে আছে দুটো চাবি, সচারাচর একটা তালা ব্যবহারে তিনটা চাবি থাকে। " 



" আমাদের ও তিনটা চাবি ছিল। " 



" তাহলে আরেকটি চাবি কোথায়? " 



" আমি তো জানি না, সাজ্জাদ যখন চাবি রেখে গেছে তখন তো তিনটে চাবি ছিল। " 



" বুঝতে পারছি, আমি সেটা বের করে নেবো বা চেষ্টা করবো। দ্বিতীয় প্রশ্ন, ফেরদৌসের মা-বাবার কোন ঘটনা আপনি আমাকে বলেননি, আর সে তার বোনের কোনো কাহিনি কি বলেছিল? " 



" জ্বি বলেছিল। " 



" আচ্ছা সেটাও ফেরদৌসের কাছে জিজ্ঞেস করে জেনে নেবো। আপনার স্বামী চেকবই দিয়েছিল সেখানে মোট কত টাকা ছিল? " 



" সবমিলিয়ে ২০ লাখ টাকা হতে পারে, আসলে ততটা পরিষ্কার মনে নেই। " 



" তৃতীয় প্রশ্ন, আপনার বিয়ের আগে থেকে পছন্দ করে, খুব বেশি পছন্দ করে এমন কেউ আছে? " 



" হ্যাঁ, সানোয়ার হোসেন, আমার বন্ধু। " 



" সজীব সাহেবকে আপনার কেমন মনে হয়? তিনিও যে আপনাকে মনে মনে পছন্দ করে সেটা কখনো বুঝতে পেরেছেন আপনি? " 



" কোই না তো, কি বলেন? " 



" আচ্ছা বাদ দেন, আপনি সাবধানে থাকবেন আর দরকার হলে আবার আসবো। " 



" আমার মায়ের সঙ্গে একটু দেখা করবেন, আর তাকে বোঝাবেন সাজু ভাই। " 



" জ্বি অবশ্যই। " 



★★



ওসি সাহেবের সঙ্গে কথা বলে থানা থেকে বের হয়ে গেল সাজু, ফেরদৌস ও সাজ্জাদের বন্ধু সজীব সাহেব। ফেরদৌসকে সামনে হাঁটতে বলে সাজু একা একা সজীব সাহেবকে বললো, 



" আপনার কাউকে সন্দেহ হয়? " 



" না সাজু ভাই, ব্যক্তিগত ঝামেলা নিয়ে সাজ্জাদ কোনদিন কিছু বলে নাই। " 



" আপনি আর সাজ্জাদ সাহেব দুজন মিলে যে অনলাইনে ছোট একটা বিজনেস করেন, সেটা কেমন চলছে এখন? সাজ্জাদ অসুস্থ, এদিকে এই পুলিশের ঝামেলা, সময় দিতে পারছেন তো? " 



" আপনি কীভাবে জানেন? 



" আমিও আপনাদের ক্ষুদ্র ক্রেতা, সেখানে আমি আপনাদের দুই বন্ধুর এক লাইভ ভিডিও দেখেছি। "



" ওহ্ আচ্ছা, চলছে মোটামুটি। " 



" মাঝে মাঝে আমরা সিনেমার মধ্যে দেখি, দুই বন্ধু একসঙ্গে ব্যবসা করে। হঠাৎ করে দুজনের মধ্যে একজনের মনের মধ্যে শয়তান বাসা বাঁধে এবং অপর বন্ধুকে সরানোর পরিকল্পনা করে। এমন কোন সিনেমা দেখেছেন? " 



" জ্বি... জ্বি..! " 



" এমন করছেন কেন? না দেখলে তো কোনো অপরাধ নেই তাই না? " 



" দেখা হয়নি তেমন, মনে নেই? " 



" শাকিলাকে আগে থেকে চিনতেন? " 



" কোই না তো! বিয়ের সময় প্রথম দেখা। " 



" আমি খুব দ্রুত কিছু তথ্য বের করেছি, সাজ্জাদ শাকিলা ও আপনার ব্যাপারে। বাকিদের সবকিছু আস্তে আস্তে বের করবো, তবে আমার স্বল্প সময়ে বের করা তথ্য অনুযায়ী আপনি শাকিলাকে আগে থেকে চিনতেন। " 



" কে বলেছে আপনাকে? "



" এ বিষয়ে আগামী পরশু আপনার সঙ্গে কথা হবে আমার, আজকে আমি যাই। " 



" আপনি কি আমাকে সন্দেহ করেন? " 



" কি জানি ভাই, তথ্য অনুযায়ী যাকে যেটা বলা দরকার সেটাই বলি, তাতে যদি সন্দেহের তালিকা মনে হয় তাহলে তাই। " 



" আমি সাজ্জাদের সবচেয়ে ভালো বন্ধু। " 



" আমি ওসি সাহেবকে বলে দিয়েছি, আপনাকে আর হাসপাতালে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। " 



.

.



 চলবে... 
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

Like Reply
#5
 
পর্বঃ- ০৫



" শাকিলা যখন তার বাবাকে খুন করার হুমকি দেয়, তার আগে আপনাদের মধ্যে ঠিক কি কথা হয়েছে জানতে পারি? " প্রশ্ন করে উত্তরের অপেক্ষায় তাকিয়ে আছে সাজু, তার পাশেই বসে আছে তার বন্ধু রামিশা। 

" শাকিলার মা বললেন, সাজ্জাদের সঙ্গে সম্পর্ক আমরা রাখতে চাচ্ছিলাম না। শাকিলা নিজেও যেতে চায়নি তাই ওর বাবা তার উকিল বন্ধুর সঙ্গে কথা বলে। কিন্তু হঠাৎ করে যেই শাকিলা মতামত পরিবর্তন করে তখন তার বাবা রেগে যায়। " 

" আপনি একজন মা, নিজের মেয়ের সংসার রক্ষা করার জন্য কখনো স্বামীকে বুঝিয়েছেন? " 

" আমি আমার স্বামীর কথার উপর কোনদিন কথা বলতে পারতাম না। কারণ তিনি কখনো কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নিতেন না, আমার মনে হচ্ছিল তিনি শাকিলার বিষয় সঠিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। " 

" হাদিস অনুযায়ী একটা পুরুষের চরিত্র সম্পর্কে তার স্ত্রী সবচেয়ে বেশি জানেন। আপনি আপনার স্বামীকে ঠিক কতটুকু ভালো মনে করতেন, তিনি যা করতেন সবকিছুই কি ঠিক? " 

" দেখুন, পৃথিবীতে সকল মানুষের ভুলত্রুটি আছে বা থাকবে, তবে ব্যক্তিগত হিসেবে আমার স্বামী খুব ভালো মানুষ ছিলেন। " 

" তাহলে আপনি শাকিলার পা ধরে কেন একদিন বলেছিলেন ' তোর বাবার কথা শোন নাহলে তো আমাদের সংসারে অশান্তি আসবে। ' এই কথা বলে কেন তার সাজ্জাদের সঙ্গে তাকে খারাপ ব্যবহার করতে বাধ্য করেছেন? " 

" দেখুন এটা পুরোপুরি সত্যি নয়, তাছাড়া মাঝে শাকিলা নিজেই সাজ্জাদকে সহ্য করতে পারতো না। সে বিবাহিতা অবস্থায়..." 

এতটুকু বলতেই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সুমনা বলে উঠলো " আহ মা, কিসব বলছো? " 

সাজু বললো " দেখুন আমার কাছে কিছু গোপন করতে গেলে আপনারা বিপদে পড়বেন। কারণ আমি সত্যিটা খুঁজে বের করবোই, কিন্তু আপনারা যদি কিছু গোপন করেন তারপর সেটা আমাকে খুঁজে বের করতে হয়। তাহলে তখন সম্পুর্ণ সন্দেহ আপনাদের উপর এসে পড়বে, তাই একটা কথা গোপন করতে গিয়ে অনেকটা মিথ্যা বলা থেকে বিরত থাকুন। " 

সুমনা বললো " আমরা কিছু লুকাইনি। " 

" শাকিলা তার স্বামীর সঙ্গে রাগ শেষে যতদিন এই বাড়িতে ছিল তখন কোন রুমে থাকতো। " 

" সুমনা বললো, আমার রুমে। " 

" আমি সেই রুমের মধ্যে একটু যেতে চাই। " 

" দেখুন রুমটা আমার, একটা মেয়ের রুমের মধ্যে হুট করে বাহিরের মানুষ প্রবেশ করতে পারে না। " 

" কিন্তু তবুও যেতে হবে। " 

" আচ্ছা চলুন। "

|
|

সাজ্জাদকে আইসিইউ থেকে বের করে কেবিনে নেওয়া হয়েছে। যদিও মোটামুটি সুস্থ কিন্তু এখনো পরিষ্কার করে কথা বলে কিছু বলার শক্তি তার মধ্যে নেই। সাজুর পরামর্শে পুলিশ পাহারা আরও বৃদ্ধি করা হয়েছে, ওসি সাহেব নিজে সকাল বেলা ও বিকাল বা সন্ধ্যায় আসেন। সাজু ও রামিশা দুজন মিলে ওসি সাহেবের সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে এসেছে। 

সাজ্জাদকে কিছু জিজ্ঞেস করার অনুমতি ডাক্তার দিলেন না, আরও একটা দিন অপেক্ষা করতে হবে তার সঙ্গে কথা বলতে হলে। কেবিন থেকে বেরিয়ে সাজু বললো, 

" সাজ্জাদের বাসার প্রতিটি জিনিসে কার কার হাতের ছাপ আছে, বা কতজনের আছে, এগুলোর রিপোর্ট এসেছে? " 

" হ্যাঁ, যে লোহার রড দিয়ে সাজ্জাদকে আঘাত করা হয়েছে তাতে স্পষ্ট সাজ্জাদের নিজের হাতের ছাপ আছে। ঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্র মোটামুটি অনেক কিছু টেস্ট করা হয়েছে কিন্তু সেখানে তেমন কিছু মেলেনি। " 

" আপনি কি জানেন, ওদের বাসায় একটা চেকবই ছিল সেখানে ২০ লাখ টাকা সিগনেচার করা। সাজ্জাদ নিজে শাকিলার জন্য রেখেছিল কিন্তু শাকিলা সেটা রেখেই নোয়াখালী গিয়েছিল। "

" আমরা তো কোন চেকবই পাইনি, কিন্তু আপনি জানলেন কীভাবে? " 

" শাকিলা বলেছে, তবে সেই চেকবইয়ের কথা সাজ্জাদ সজীব ও শাকিলা ছাড়া আর কেউ মনে হয় জানে না। " 

" তাহলে সেটা কোথায়? " 

" সেটা খুঁজে বের করার দায়িত্ব আপনার, আপনি সাজ্জাদের ব্যাঙ্ক একাউন্টে খোঁজ লাগান। খোঁজ নিয়ে জানুন টাকা কি কেউ তুলে নিয়ে গেছে বা টাকা তুলতে কেউ গিয়েছে? " 

" আপনি এখন কোথায় যাবেন? " 

" সানোয়ার হোসেন, শাকিলার বন্ধুর কাছে। আর সেখান থেকে আপনার থানায় যেতে হবে কারণ শাকিলার কাছে কিছু প্রশ্ন করতে হবে। " 

" তাহলে থানাতেই দেখা হবে। " 

" আপনাকে তিনটা কাজ করতে হবে স্যার। " 

" বলুন। " 

" সজীব সাহেবকে চেকবই এর বিষয় ভালো করে জিজ্ঞেস করবেন। আপনার কাছে তিনটা নাম্বার দিচ্ছি সেই তিনটা নাম্বারের গত এক মাসের সকল কল লিস্ট যোগাড় করবেন। " 

" আর? " 

" আপাতত এগুলো। " 

" আমরা মোটামুটি নিশ্চিত সাজ্জাদ খুন করেছে, কেন শুধু শুধু জটিলতা তৈরি করেন? "

" আচ্ছা আমিই সংগ্রহ করতে পারবো। " 

" দরকার নেই, আমি আপনার সবকিছু বের করে জানাবো, কিন্তু আমি বোঝাতে চাই এই বিষয়টা কেমন জটিল করছেন। " 

" কলেজে আমার এক শিক্ষক ছিল, তিনি অংকের সময় সকল অংক জটিল সূত্রে সমাধান করতেন। একটা কঠিন সূত্র প্রয়োগ করে তাড়াতাড়ি করে সমাধান হয়ে যেত। তিনি বলতেন, একটু কষ্ট করে সূত্র মুখস্থ করলে পরীক্ষার হলে অনেক সময় সঞ্চয় করা যায়! " 

" ঠিক বলেছেন, মানুষ যত বেশি কষ্ট করবে ততই তাড়াতাড়ি সফল হবে। " 

" আমি তিনদিনের মধ্যে চেষ্টা করবো সমাধান করতে, কারণ আমার এক বন্ধু থাকে চট্টগ্রামে আর সে খুবই অসুস্থ। " 

" তার নাম কি? " 

" শফিক সজীব রকি ও সাজু আমরা চার বন্ধু, যে অসুস্থ তার নাম সজীব। " 

|
|

পড়ন্ত বিকেল, রাস্তার পাশে খোলা স্থানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলছে সানোয়ার। সানোয়ার হোসেন ছেলেটাকে যতটা চঞ্চল ভেবেছিল ততটা চঞ্চল মনে হচ্ছে না। 

" জ্বি বলেন কে আপনি? " 

" শাকিলার বাবার খুনের রহস্য বের করার জন্য আমি চেষ্টা করছি। আপনি শাকিলার বন্ধু এবং তাকে একসময় অনেক পছন্দ করতেন তাই সেই কারণে আপনার কাছে আসা৷ " 

" আচ্ছা ঠিক আছে, কিন্তু আমি কীভাবে সাহায্য করতে পারি আপনাকে? " 

" তেমন কিছু না, শাকিলার বাবার কিছু গোপন কারবার বের করতে হবে। শাকিলা নিজেই স্বীকার করেছে তার বাবা অনেক অন্যায় কাজ করতেন, সেগুলোর দু একটা বের করতে হবে। " 

" কিন্তু আমি কীভাবে জানবো? " 

" যেহেতু শাকিলা তোমার বেস্ট ফ্রেন্ড সেহেতু তার বাসায় নিশ্চয়ই যাতায়াত ছিল। অথবা ভুল করে হলেও একদিন না একদিন শাকিলা তার বাবার ছোটখাটো কোনো অপরাধ হলেও বলেছে। " 

" কিন্তু? " 

" আমি সেসব জানতে চাই না, আপনি শুধু তার সেই কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু ব্যক্তি খুঁজে বের করবেন। ব্যাপার টা যতটা কঠিন মনে হচ্ছে ততটা কঠিন নয়, ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করলেই দেখবেন আপনি অনেক কিছু বের করতে পারবেন। " 

" আমাকে এসবের মধ্যে কেন জড়াচ্ছেন? " 

" আপনি নিশ্চয়ই চান শাকিলার বাবার খুনের আসল খুনি ধরা পড়ুক। " 

" হ্যাঁ অবশ্যই চাই। " 

" আমি পুলিশের সঙ্গে সবকিছু বলতে পারি না, কারণ তারা ছোটখাটো কিছু পেলেই সেটাকে হাত-পা বানিয়ে মিডিয়ার কাছে বলে দেয়। তখন তদন্তের অনেক গোপনীয়তা বের হয়ে যায়, আর এজন্যই কিন্তু পুলিশের চেয়ে গোয়েন্দারা রহস্য তাড়াতাড়ি বের করতে পারে। " 

" আমি চেষ্টা করবো আপনাকে সাহায্য করতে। " 

" আপনি তো শাকিলার সঙ্গে জেলের মধ্যে দেখা করতে যান মনে হয়, তাই না? " 

" হ্যাঁ দুবার গেছিলাম, ওর স্বামীর জন্য কান্না করে আবার নিজে বন্দী সেটাও আফসোস করে। " 

" দরকার হলে তার কাছে জিজ্ঞেস করে হলেও কিছু বের করবেন। " 

" জ্বি ভাই। " 

" মেলা মেলা ধন্যবাদ সানোয়ার হোসেন। " 

|
|
|

রিক্সায় পাশাপাশি বসে থানার দিকে যাচ্ছে সাজু ভাই ও রামিশা। ফুরফুরে বাতাস আর ব্যস্ততম শহরের মধ্যে মানুষের আনাগোনা। রামিশার ধারণা ছিল সাজু এখন গভীর চিন্তায় মগ্ন থাকবে কিন্তু তা না করে সে গুনগুন করে গান গাইছে। 

" সাজু বললো, রামিশা তুমি কি কালকে সকালে উঠে নোয়াখালী যেতে পারবে আমার সঙ্গে? " 

" কিন্তু কেন সাজু ভাই ? " 

" সাজ্জাদ যে বাড়িতে গেছিলো সেই বাড়িতে ফেরদৌস গেছে কিনা সেটা জানার জন্য। " 

" মানে? " 

" ফেরদৌস সেদিন হয়তো ইচ্ছে করেই সাজ্জাদের সফর সঙ্গী হয়েছে। "

" কিন্তু কেন? " 

" গোলমালটা সেখানেই, কার সঙ্গে কার যোগসূত্র সেটা নাম্বারের যাবতীয় কল লিস্ট পাওয়া পর্যন্ত বুঝতে পারছি না। " 

" কার কার নাম্বার ছিল সেখানে? " 

" শাকিলা, ফেরদৌস ও সাজ্জাদের বন্ধু সজীব। " 

" বলেন কি? এদের তিনজনের লিস্ট কেন? " 

" আগে রিক্সা থেকে নামো। " 

থানার মধ্যে ওসি সাহেব নেই, তিনি মাগরিবের কিছুক্ষণ আগে বের হয়েছেন। তবে সাজু আসলে যেন তার জন্য অপেক্ষা করে সেটা দারোগার কাছে বলে গেছে। দারোগা সাহেবের অনুমতি নিয়ে সাজু ভাই শাকিলার কাছে গেল। 

শাকিলা বিমর্ষ মনে বসে আছে, সাজুকে দেখে মুখ তুলে তাকিয়ে রইল। চেহারা দেখে অবাক হয়ে গেল রামিশা, পিতার মৃত্যু আর স্বামীর অসুস্থতার টেনশনে কেমন হয়ে গেছে সে। 

সাজু বললো " কেমন আছেন আপনি? " 

" এইতো, আপনার কি অবস্থা? কোনকিছু খুঁজে বের করতে পেরেছেন? " 

" হ্যাঁ পেরেছি। " 

" তাহলে কি আমার বাবার খুনি তাড়াতাড়ি ধরা পড়বে? আমি আর আমার স্বামী মুক্তি পাবো? " 

" সবকিছু ঠিক হলে ঠিকই মুক্তি পাবেন। " 

" অনেক ধন্যবাদ। " 

" একটা কথা বলবো? " 

" বলেন। "

" আপনি আমার সঙ্গে অনেক কিছু মিথ্যা বলেছেন আবার অনেক কিছু গোপন করেছেন। এর কারণ কি? " 

" কি মিথ্যা বলেছি? আর গোপন করবো কেন? " 

" সজীব সাহেবকে নিয়ে আপনার আর সাজ্জাদ এর মধ্যে কোনো ঝামেলা ছিল? সত্যি করে বলেন তো, সেদিন রাতে আপনাদের বাসায় সাজ্জাদ সজীব সাহেব আর আপনার বাবা ছিল তাই না? আপনি আমার কাছে এসব লুকিয়ে ঘটনা ঘুরিয়ে দিতে চাইছেন তাই না? এজন্যই সাজ্জাদ তার চিঠির শেষে লিখেছিল, ' তুমি কেন এমনটা করলে সেটা জানতে পারি নাই। "

.
.

আপনাদের মতামত আর গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য পড়ার জন্য আমি কিন্তু কমেন্ট বক্সে অপেক্ষা করি৷ আশা করি সবাই ভুল গুলো তুলে ধরবেন এবং সামনে এগিয়ে যেতে উৎসাহ দিবেন। 

.
চলবে... 



ভুলগুলো সনাক্ত করে আলোচনা সমালোচনা করে মন্তব্য করলে কৃতজ্ঞ থাকব। 

আশা করি আপনারা মতামত জানাবেন। 



লেখাঃ- 

মোঃ সাইফুল ইসলাম সজীব।

লেখাঃ- 
মোঃ সাইফুল ইসলাম সজীব।
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

[+] 3 users Like Bangla Golpo's post
Like Reply
#6
Pls continue.
Like Reply




Users browsing this thread: 3 Guest(s)