Thread Rating:
  • 37 Vote(s) - 2.95 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Thriller আউট অফ কলকাতা
#81
পান্ডেজীর ধোন থেকে
বেরলোনা জেল
দেখা গেল অবশেযে
মিশন হল ফেল
[+] 1 user Likes poka64's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#82
পর্ব ২২

প্রায় এক ঘণ্টা ধরে সেই কঠোর পরিশ্রম করার পরে যখন মনে হচ্ছিল যে শেষ অবধি পাণ্ডে-জি নিজের বীর্যপাত ঘটাতে সক্ষম হবেন, ঠিক সেই মুহূর্তেই তার জোয়ার ভঙ্গ হয়ে যায় আর সেটা হওয়ার ফলে নিজেকে আর সামলাতে না পেরে দীপার বুকের উপর ক্লান্তিতে নেতিয়ে পড়েন উনি| তবে একা পাণ্ডে-জি নন, দীপাও আর পারছিলো। বড্ড ক্লান্ত হয়ে গেছিল ও। কিন্তু পাণ্ডে-জির যেন অবস্থা সঙ্গিন। তিনি প্রচণ্ড রকমের হাঁপাতে লাগলেন আর তাকে দেখে মনে হল যেন এই বুঝি প্রাণটা বেরিয়ে যায় যায়। সেই অবস্থা দেখে রুদ্র ছুটে এসে দীপাকে আস্তে আস্তে পাণ্ডে-জির কাছ থেকে টেনে সরিয়ে নিলো| সিলিংয়ের আলো পরে দীপার ঘামে ভেজা উলঙ্গ শরীরটা ঝলমল করছিলো। সেই দেখে রুদ্র একটা রুমাল দিয়ে আলতো করে দীপার শরীর মুছিয়ে দিতে লাগলো। তিস্তাও এবার এগিয়ে এসে পাণ্ডে-জির প্রতি নিজের কেয়ার দিতে লাগলো| প্রথমত সে হঠাৎ দৌড়ে গিয়ে তাদের ফ্রিজ থেকে রেড বুল এনার্জি ড্রিংকের দুটি ক্যান নিয়ে উপস্থিত হল, তারপর একটা দীপার হাতে ধরিয়ে দিয়ে আরেকটা ধীরে ধীরে পাণ্ডে-জির মুখে ঢেলে দিতে লাগলো ।

"তিস্তা...আমি নিশ্চিত যে এই...এইরকম পজিশনে বসে কেউ কোনও দিন এনার্জি ড্রিংক খাইনি...", দীপা বলে উঠলো, "তবে আমার মনে হয় যে এই পোজে যদি রেড বুল কোম্পানির লোকেরা আমাদেরকে দেখতে পেতো তাহলে নিশ্চই আমাদের অ্যাডে ক্যাম্পেনে চান্স দিয়ে দিত", বলে ক্যানে একটা চুমুক দিলো দীপা।  

"হুম সে আর বলতে, দীপা দি", বলে হালকা হাসল তিস্তা।

"এই রু....আমার ওই ফোনটা দে তো," ঘাড় ঘুরিয়ে রুদ্রকে বলে উঠলো দীপা।

দীপার সেই কথা শুনে রুদ্র অবাক হয়ে বলল, "কিন্তু ওটা দিয়ে কি করবে? ওতে তো সিম টিম কিছুই নেই......"

"আরে বাবা সিম টিম দিয়ে আমার কোন কাজ নেই, আমি জাস্ট এই সময়ের একটা ছবি তুলে রাখতে চাই । লাইক অ্যা মেমোরি..."

"গ্রেট আইডিয়া, দীপা দি", বলে হেসে উঠল তিস্তা আর সেই সাথে পাণ্ডে - জির পাশ থেকে উঠে গিয়ে দীপার পিছনে গিয়ে দাঁড়াল । তারপর একটা হাত দীপার মাইয়ের ওপর রেখে আরেকটা হাতে রেড বুলের ক্যানটা তুলে ধরে মুখ বেকিয়ে একটা পোজ দিলো সে । আর সেই সাথে ফচাত করে আওয়াজ করে একটা নিজশি তুলে নিলো দীপা। 

"নাইস......",ছবি তোলা হয়ে গেলে ছবিটার দিকে তাকিয়ে বলে উঠল দীপা, তারপর হঠাৎ বলল," তবে এই সবের মধ্যে সব থেকে ভালো বিষয়টা তোমরা কি জানো বা...বুঝতে পেড়েছ?" দীপা বলে উঠলো।

"মানে? কি বিষয়...?" তিস্তা আর রুদ্র একসাথে বলে উঠলো। 

"বলছি", বলে রেড বুলের আরেকটা ঢোঁক গিলে দীপা বলল,"আমি পুরোপুরি মানে ১০০% শিওর না হলেও আমার এটা একটা দৃঢ় বিশ্বাস যে পাণ্ডে-জি এই প্রথমবারের জন্য নিজের বীর্যপাত ঘটানোর দোরগোড়ায় পৌঁছে  গিয়েছেলেন.....কি পাণ্ডে-জি ঠিক বলেনি আমি....?"

"হ্যাঁ দীপা...তুমি.....তুমি একদম ঠিক বলেছ," পাণ্ডে-জি হাঁপাতে হাঁপাতে বলে উঠলেন, "আর...আর শুধু একটা রাউন্ড....আর তারপরেই আমি শিওর যে আমি...বা.." 

"তবে পাণ্ডে-জি, আপনি যদি রাজি থাকেন তাহলে....," রুদ্র পাশ থেকে কিন্তু কিন্তু কণ্ঠে বলে উঠল। 

"তাহলে? তাহলে কি ভাই...? আজ কোন কথা বলতে দ্বিধা বোধ করো না.....আই অ্যাম অল ইয়ার্স নাও..."

"ঠিক আছে....তা যা বলছিলাম , যে আমরা আরও একটুখানি ঝুঁকি নিয়ে একটা জিনিস করে দেখতে পারি...."

"ঝুঁকি? রিস্ক? কি রিস্ক....? কি জিনিস....?", পাণ্ডে-জি বলে উঠলেন।  

"না মানে আমার কম্পিউটারে ডায়ালগুল দেখে আমি বুঝতেই পারছিলাম যে আপনি প্রায় শেষে পৌঁছে গিয়েছিলেন তাই, তাই আমি ভাবছিলাম যে যদি আমি ডায়ালের ভোল্টেজটাকে প্রস্তাবিত মানে রেকমেন্ডেড লিমিটের থেকে একটু বেশি বাড়িয়ে দি তাহলে নিশ্চই আপনি আপনার কাজে সম্পূর্ণ ভাবে সফল হতে পারবেন......বাট দিস ইস জাস্ট মাই থিওরি পাণ্ডে-জি, তবে এটা আমরা একবার করে দেখতেই পারি, তাই না...?"

রুদ্র নিজের বক্তব্য পেস করার সাথে সাথে তিস্তার মুখটা উদ্বেগে আরও ছোট হয়ে যেতে দেখে পাণ্ডে-জি তাকে কোনও কথা বলতে না দিয়ে নিজে বলে উঠলেন, "ডু হোয়াট ইউ নিড টু ডু বয়, কিন্তু যা করার তাড়াতাড়ি করো বাচ্চা, আমাদের আর বেশী দেরী করলে আর চলবে না"।

"না...বস, আপনি...." তিস্তা নিজের অমত প্রকাশ করতে যেতেই পাণ্ডে-জি নিজের হাত তুলে ওকে থামিয়ে দিলেন

"কিন্তু.....", বলে দিশেহারা হয়ে একবার দীপার দিকে, একবার রুদ্র দিকে তাকিয়ে অবশেষে পাণ্ডে-জির দিকে তাকাল তিস্তা | তারপর যখন বুঝল যে সত্যি করেই সবাই সেটাই চায় তখন একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে সে বললঃ

"ঠিক আছে, তবে জাস্ট ফর আ মোমেন্ট ওনলি, আই ডোন্ট ওয়ান্ট এনি এক্সিডেন্টস হিয়ার, আর সেটা তোমার উদ্দেশ্যেও বলছি দীপা দি... যা করবে সাবধানে করবে..." 

"ব্যাস হয়ে গেল...সব ঠিক", বলে দীপার পাছায় একটা চাপড় মারল রুদ্র, তারপর ওর কানের কাছে নিজের মুখটা নিয়ে গিয়ে বলল, "গেট রেডি টু গেট প্রেগন্যান্ট !"

তবে এইসবের মধ্যে সব থেকে আশ্চর্যের বিষয় হল, এই সবের মধ্যেও পাণ্ডে-জির লিঙ্গটা একবারের জন্য নরম হয়নি| তিস্তা পাণ্ডে-জিকে এবার উলটো দিকে বসিয়ে দিয়ে বালিশটা তার কমরের নিচে গুঁজে দিলো | দীপা আবার পাণ্ডে-জির ওপরে উঠে বসলো তারপর আবার নিজের হাতে ওনার ল্যাওড়াটাকে ধরে নিজের ফাটলের ভেতরে চালান করলো| প্রথমে ধীরে ধীরে তারপর আস্তে আস্তে নিজের গতি বাড়িয়ে চোদা খেতে লাগলো দীপা।

"আঃহ্হ্হঃ বাবাগো আহ্হ্হঃ উহ্হঃ আহ্হ্হঃ", বলে শীৎকার নিতে নিতে নিজের কলসির মতন পাচাটাকে দুলিয়ে দুলিয়ে উপর থেকে ঠাপের পর ঠাপ খেতে লাগলো দীপা। তবে এবার দীপার কেন জানি না মনে হল যে এইবারের চোদনটা একদম আলাদা। পান্ডে-জির শরীরে এক নতুন উত্তেজনা অনুভব করতে পেরে তার শরীরের উম্যানলি সেনসেসগুলো তার মাথা খারাপ করে দিতে লাগলো, কিছু যেন একটা ঘটতে চলেছে সেই সংকেত বারবার দিতে লাগলো। রুদ্র নিজের কম্পিউটারের সামনে বসেছিল আর অপেক্ষা করছিলো ডায়ালগুলো চূড়ান্ত পজিশনে পৌঁছোবার জন্য | এই রকম অপেক্ষা করতে করতে রুদ্র হঠাৎ দেখল ডায়ালগুলো সেই আগের বারের মতন একদম চূড়ান্ত পজিশনে গিয়ে আটকে গেল আর সেটা হতেই ও সাথে সাথে রিমোটের সুইচটা চেপে ধরল তবে এইবার ভোল্টেজটা একটু বাড়িয়ে দিয়ে আর তারপরেই সেটা ঘটে গেল .....

আসলে অনেক কিছুই ঘটে গেল নিমেষের মধ্যে, কেউ যদি সেটা স্লো মোশনে দেখত তাহলে সেটা কিছুটা এইরকম হতো:

প্রথমত আনন্দে চিৎকার করে উঠলেন পাণ্ডে-জি যখন তিনি অনুভব করলেন তার আগ্নেয়গিরি থেকে অবশেষে লাভা বেরিয়ে আসতে | দীপা আরও জোরে চিৎকার করে উঠলো যখন সে অনুভব করলো যে তার মধ্যে কোনও একটা গরম কিছু ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাচ্ছে | থকথকে বীর্য সেই শক্তিশালী স্প্রের ফলে অভ্যন্তরে ছড়িয়ে পড়তে লাগলো আর বীর্যপাতের বন্যাকে প্রবাহিত করে সরাসরি তার গর্ভতে ঢুকিয়ে দিতে লাগলো। তবে রুদ্র সেই শক দেওয়ার জন্য শুধু সেটাই হল না! শকটা অনুভব করতেই হঠাৎ করেই পাণ্ডে-জি একটা শক্ত ঝাঁকুনি অনুভব করলেন যা তার পাছা থেকে গিয়ে তার মেরুদণ্ডে আঘাত করলো| তিনি সেই ধাক্কা সামলাতে না পেরে হঠাৎ করে উঠে বসতে যেতেই তার কোলের উপর থাকা দীপা ছিটকে পেছনে দিকে পরে গেল | আর সেটা লক্ষ্য করেই রুদ্র আর তিস্তা চেঁচিয়ে উঠে সামনে এগিয়ে যেতে লাগলো দীপাকে সাহায্য করার জন্য...

তবে খুব ভাগ্যের জোরে দীপা প্রাণে বেঁচে গেল কারণ ছিটকে পড়লেও, সে গিয়ে পড়ল সেই মেঝেতে বিছানো গদিতে ওপরে।


আর ঠিক সেই মুহূর্তেই, অফিসের দরজায় একটা ভীষণ জোরে আওয়াজ হল...আওয়াজটা এতই জোরে হল যে তাদের মনে হল যেন তাদের সামনে বাজ পড়লো আর প্রায় সাথে সাথে তিন তিনটে সশস্ত্র গুণ্ডা ঘরে ঢুকে পড়লো। 

সব কিছু এত তাড়াতাড়ি হয়ে গেল যে ওরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই গুন্দাগুল নিজেদের কাজ শুরু করে দিলো | প্রচণ্ড আওয়াজ করে মেশিন গানগুলো গর্জে উঠল আর সেই কানফাটানো আওয়াজে সারা অফিস ঘর কেঁপে উঠলো | বিশ্বস্ত ও সদা সতর্ক দেহরক্ষী তিস্তা সঙ্গে সঙ্গে তড়িতের গতিতে ঝাঁপিয়ে পড়লো একদিকে, রুদ্র তার কম্পিউটারের সামনে ঝুঁকে পরে নিজের মাথার ওপর হাত দিয়ে চাপা দিয়ে দেখতে লাগল তিস্তার সেই ভীষণ রূপ| স্কার্ট সরিয়ে নিজের উরুর বেল্ট থেকে দুহাতে দুটো বন্দুক বের করে নিয়ে চালাতে লাগলো তিস্তা | প্রতিটা গুলি মারাত্মক নির্ভুলতার সাথে চালাতে চালাতে দুটো গুণ্ডার মাথার খুলি উড়িয়ে দিলো তারপর একপাশে লাফিয়ে সোফার পেছনে বসে রিলোড করলো নিজের বন্দুকগুলোকে | নিজের মনে মনে ১..২..৩ গুনে আবার উঠে একের পর এক গুলি চালিয়ে যেতে লাগলো তিস্তা সেই শেষ শত্রুর দিকে, কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে, তৃতীয় গুণ্ডাটার কাছে ছিল একটা ফুল অটোমেটিক রাইফেল | সে তিস্তার দিকে একবার শয়তানি হাঁসি দিয়ে রাইফেলের ট্রিগারটা টিপে ধরে অন্ধের মতন গুলো চালাতে আরম্ভ করল | সারা রুমে তখন সেই কান ফাটানো গুলির আওয়াজ প্রতিধ্বনিত হতে লাগলো আর টেবিল চেয়ার সোফা কম্পিউটার সব কিছু গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে যেতে লাগলো

সেই ঘরের মেঝেতে, গদির উপরে দীপা সুরক্ষিত থাকলেও, পাণ্ডে-জির ভাগ্য সেদিন আর তার সঙ্গ দিলো না| সোজা হয়ে বসে নিজের সামনের সেই দৃশ্যের দিকে ভয়ার্ত চোখে তাকালেন পাণ্ডে-জি আর দুর্ভাগ্যক্রমেই সেই দুস্ক্রিতির বন্দুক থেকে একের পর এক গুলি এসে তার বুকে বিঁধে যেতে লাগলো | আর লাগার সাথে সাথে পুরো এফোঁড়ওফোঁড় করে দিতে লাগলো তার দেহটাটা।  

"বসসসস!!!!" বলে পাণ্ডে-জির সামনে ঝাঁপিয়ে পরে সেই অন্তিম গুণ্ডাটার গলা লক্ষ্য করে গুলি চালাল তিস্তা, কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরী হয় গেছে। নিজের শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করবার আগে গুণ্ডাটা তার শরীরের সমস্ত জোর দিয়ে শেষবারের জন্য বন্দুকের ট্রিগারটা চেপে ধরল আর সাথে সাথে ম্যাগাজিনের শেষ দুটো গুলি ছিটকে এল তিস্তার দিকে | একটা গুলি পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে গেলেও আরেকটা সরাসরি গিয়ে লাগলো তিস্তা কাঁধে! আর গুলীটার জোর এতই প্রবল ছিল যে শরীরের লাগার সাথে সাথে তিস্তা ছিটকে দূরে গিয়ে পড়লো। তারপর চারিদিক একদম নিস্তব্ধ| 

ঘরের মধ্যে আবার নীরবতা ফিরে আসতেই হঠাৎ একটা গোঙানির আওয়াজ কানে ভেসে গেল রুদ্রর। চোখের সামনে এত ধ্বংসাত্মক ঘটনা দেখে ভয়ে কম্পিউটারের টেবিলের তলায় বসে কাঁপছিল রুদ্র। তার গলা ভয়ে শুকিয়ে কাঠ| কিন্তু সেই আওয়াজ শোনামাত্রই সে আস্তে আস্তে নিজের মাথাটা উপরে তুলল। তারপর নিজের জায়গা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে সেই আওয়াজ উপেখ্য করে খুব সাবধানে সে দিকে এগিয়ে যেতে লাগল। ঘরের চারিদিকে তখন কাঁচ ভেঙে পড়ে রয়েছে, তাই নিজের পথ খুঁজে পেতে বেগ পেতে হল তাকে। তবে একটু খানি এগোতেই সে বুঝতে পারলো যে সেই গোঙ্গানির আওয়াজটা আসলে তিস্তার কণ্ঠস্বর আর সেটা বুঝতে পেরেই তড়িঘড়ি করে দৌড়ে গেল সেই দিকে | তিস্তার কাছে পৌঁছতেই সে একটা ঝাঁকুনি দিয়ে দেওয়ালের দিকে ইশারা করে রুদ্রকে কিছু একটা দেখতে চাইছিলঃ   

"রু..রুদ্র ওই লাল-সুইচ", সে বলে উঠলো। সেটা শোনামত্রই সেই দিকে তাকাতেই রুদ্র একটা লাল রঙের সুইচ দেখতে পেল। আর দেরি না করে সে সেই সুইচটা টিপে ধরল আর সেটা টিপতেই ধড়াম ধড়াম করে চারিদিক থেকে আওয়াজ ভেসে আসতে লাগল। আর কিছুক্ষনের মধ্যেই বিল্ডিঙের প্রতিটা আলো, দরজা আর জানালা বন্ধ হয়ে গেল।

বিল্ডিং এর সব আলো দরজা জানালা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে বিল্ডিঙের সবাইকার মানে শত্রু এবং মিত্র উভয়ের সমস্ত চলন বন্ধ হয়ে গেল | জানালাগুলি বন্ধ হয়ে যেতেই তাদের অফিস ঘরটাকে অন্ধকারে গ্রাস করে নিলেও খুব অল্প সময়েই আবার একটা লাল রঙের আলো সিলিংয়ের এক কোনে জ্বলে উঠলো | 

এইবার সেই লাল আলোর আভা এসে তিস্তার উপর পড়ল আর পড়তেই রুদ্র দেখল যে তিস্তা রক্তে ভেসে যাচ্ছে...তার পরনের পোশাকটা রক্তে ভিজে লাল রঙে পরিণত হয়েছে | সেই দেখে রুদ্র আস্তে করে তিস্তার আরও একটু সামনে ঝুঁকতেই তার কাঁধের সেই বড় ক্ষতটা দেখতে পেলো | সেই ক্ষত থেকে বিচ্ছিন্ন একটা ধমনী দিয়ে রক্ত ঝরে পড়ছিল । 

"তিস্তা...!" ওর ক্ষতর উপর হাত দিয়ে চেপে ধরল রুদ্র।

"ব..বস..দীপ...দি...রু.." বলে নড়ে উঠলো তিস্তা| আর তিস্তার কথা শুনে রুদ্র তাড়াতাড়ি বাকি দুজনের দিকে দৌড়ে গেল |

পাণ্ডে-জি আর দীপার কাছে যেতেই সে লক্ষ করল যে তারা দুজনে তখনও মেঝেতে জড়িয়ে পড়ে ছিল। এক নজরে দেখে বোঝাই যাচ্ছিলো যে পাণ্ডে-জি মারা গেছেন কিন্তু দীপাকে তার নিচে পড়ে থাকতে দেখে রুদ্রর মনে কু ডাকল | 

"দীপা!!!...না না না...দীপা...!!!" বলে চেঁচিয়ে উঠলো রুদ্র "দীপা.....না....!!!" 

তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই পাণ্ডে-জির নিচ থেকে আওয়াজ সেই দীপা নামক বেক্তির সারা পেতেই ও নিজের হাঁপ ছেড়ে বাঁচল ।

"রু...রুদ্র...আমাকে...." দীপার কথা শেষ হওয়ার আগেই পাণ্ডে-জির দেহটাকে দীপার ওপর থেকে পাশে সরিয়ে দিতে লাগলো রুদ্র| দেহের কাঁধ ধরে টান দিতেই রুদ্র দেখল যে পাণ্ডে-জির লিঙ্গটা তখনও দীপের যোনির ভিতরে আটকে রয়েছে| সেই দেখে এবার আরও জোরে পাণ্ডে-জির দেহটাকে নাড়াতেই ওনার লিঙ্গটা দীপার যোনির ভেতর থেকে বেরিয়ে এলো আর সেই সাথে বেরিয়ে এল শেষ কয়েক ফোঁটা মূল্যবান বীর্য তার লিঙ্গের মুখ দিয়ে। 

রুদ্র পাণ্ডে-জির নিথর দেহটাকে এক পাশে সরিয়ে রেখে দীপার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো| দীপার সারা শরীর তখন পাণ্ডে-জির তাজা রক্তে লালে লাল| সেই দেখে রুদ্র সামনের দিকের ঝুঁকে দাঁড়ালঃ  

"তুমি...তুমি ঠিক আছো তো....?" দীপার মুখে লেগে থাকা রক্ত মুছতে মুছতে বলে উঠলো রুদ্র | পাণ্ডে-জির নিচে অতক্ষণ আটকে থাকার ফলে দীপা তখনও হাঁপাচ্ছিল...সে কোনও মতে নিজের মাথা নাড়িয়ে রুদ্রকে আস্বস্ত করল |

কিছুক্ষণ সেই ভাবে বসে থাকার পর ওরা দুজনে ওদের পাশে পড়ে থাকা পাণ্ডে-জির দেহের দিকে তাকাল | তার বুকে পেটে এত গুলোই গুলি লেগেছিল যে গুলির প্রেসারে তার কোমরের দিকে দিয়ে সব কটা হাড় বেরিয়ে গেছিলো। উফফ! কি ন্রিসঙ্গ ভাবে হত্যা করেছে সেই গুণ্ডাগুলো। এমন সময় হঠাৎ করে আরও একটা গোঙানির আওয়াজে ওদের সম্বিত ফিরল |

"তিস্তা...!!!" বলে দু'জনে মেঝে থেকে তাড়াতাড়ি উঠে তিস্তার দিকে ছুটে গেল তবে সেখানে যেতেই আরেক নির্মম দৃশ্য দেখতে পেল ওরা।

"তিস্তা!!!" বলে রুদ্র তিস্তা পাসে মেঝেতে বসে পড়ল " তুমি...তুমি ঠিক আছো তো? তিস্তা???" বলে তিস্তার কপালে হাত বুলতে লাগল রুদ্র

"পাণ্ডে-জি...? বস....?" রুদ্রর দিকে তাকিয়ে বলে উঠল তিস্তা। তিস্তার প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে রুদ্র নিজের মাথা নিচু করে নিল। নিজের অজান্তেই রুদ্র তাকে তার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিল। তিস্তা নিজের প্রশ্নের উত্তর পেতেই জোরে চেঁচিয়ে উঠল "আমিমিমি....পারলাম...না!!!!! আমি তাকে বাঁচাতে পারলাম...না....না!!!!!!", বলতে বলতে তিস্তার চোখের কোন বেয়ে অশ্রু ধারা বেরিয়ে এলো, তবুও তিস্তা আবার বলল, "দীপা দি...তুমি...বই..বইয়ের কেস, দীপা......"

"বইয়ের কেস? তিস্তা কি....কি বলতে...",আর সাথে সাথে কিছুদিন আগের এক ঘটনার কথা মনে পরে গেল দীপার| তিস্তা তাকে দেখিয়েছিল যে ওই বইয়ের কেসের মধ্যে একটা নির্দিষ্ট বই একপাশে ঠেলে দিলেই সামনের দেওয়ালটা সরে গিয়ে একটা এলিভেটর বেরিয়ে আসে | সে এটাও বলেছিল যে সেই এলিভেটরটা শেষ অব্দই কলকাতা মেট্রো-রেলের পরিত্যক্ত টানেলগুল পর্যন্ত নিয়ে যায় আর সেখানে যে অসম্পূর্ণ মেট্রো লাইনের সুড়ঙ্গ আছে সেটা অনুসরণ করে এগিয়ে গেলেই যে কেউ হুগলী নদীর ওই পারে পৌঁছে যাবে, পাণ্ডে-জির পুরনো সেফ হাউসে। 

"দীপা...দি...যাওয়ার আ...আগে...ওই নীচের তাকের কালো ব্যাক......প্যাকটা.." তিস্তা কাতরাতে কাতরাতে বলে উঠলো "তোমরা...যা...যাও..বা..চ্চাটাকে... বাঁচাত...বাঁচা..." তবে নিজের কথা শেষ করতে পারলো না তিস্তা, তার আগেই সে নিজের জ্ঞান হারাল। 

"তিস্তা!! আই তিস্তা!! তিস্তা...চোখ খোলো" তিস্তাকে ধরে ঝাঁকুনি দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলে উঠলো রুদ্র "মাসি, তিস্তা...তিস্তা আর....."
Like Reply
#83
অনবদ্য রচনা !!!

হ্যাটস অফ টু ইউ !!!

Like & Repu ...
yourock
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#84
পর্ব ২৩


সিলিংএর লাল আলোতে চারিপাশের দৃশ্য যেন আরও ভয়ংকর করে উঠেছিল। একটু আগে এই ঘরের মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনা রুদ্রর কাছে যেন একটা বাজে স্বপ্ন বলে মনে হতে লাগল। সে তিস্তার হাতটা নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে একদৃষ্টে তার দিকে তাকিয়ে ছিল। যদি একবার সে ফিরে চায়! তবে দীপা তখন অন্য একটা ব্যাপার নিয়ে ভাবতে ব্যাস্ত। তিস্তার পাসে মেঝের উপর বসে দীপা ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগল। তারপর কি মনে হতে ওর কাঁধের ক্ষতর দিকে তাকাল। তারপর হাত বারিয়ে ক্ষতর জায়গাটার ওপর থেকে পোশাকটা ছিঁড়ে সরিয়ে দিয়ে কিছুক্ষণ একদৃষ্টে তাকিয়ে সেই দিকে তাকিয়ে রইল দীপা, তারপর হঠাৎ বলল :

"না রুদ্র, আই থিংক উই ক্যান শেভ হার....ওর এখনো চান্স আছে। আই উইল নট গিভ আপ..." বলে সামনের দিকে ঝুঁকে তিস্তার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট রেখল দীপা, তারপর বলল, "তোমার কিচ্ছু হবে না তিস্তা। অন্তত আমি বেঁচে থাকতে তো না..." 

"কিন্তু দীপা..?"

"ওর কিচ্ছু হবে বললাম তো। বাট তুই প্লিজ ভেঙে পরিস না রু, তুই ভেঙে পড়লে আমাকে কে সাপোর্ট করবে রু..? আই নিড ইউ...উই নিড ইউ টুডে...", দীপা বলে উঠল। 

আর দীপার সেই কথা শুনে হঠাৎ যেন রুদ্রর মনে আবার সাহস সঞ্চার হল। 'তাদের এখন সেখান থেকে পালাতেই হবে আর সেইটাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য', এই কথা ভেবে উঠে দাঁড়িয়ে নিজের চোখ মুছে রুদ্র বলল,"আমাদের এক্ষুনি এখন থেকে পালাতে হবে। আমার মনে হয়না ওরা শুধু তিনজনই এসেছে এখানে... কিন্তু তিস্তার এই অবস্থায় কি করে কি করবো আমরা....ওকে কি ভাবে...." 

"যেমন ভাবে সব সময় হয়ে আসছে, সেই ভাবে", বলে দুহাতে তিস্তাকে ধরে রুদ্রর হাতে ওকে সোপে দিলো দীপা, তারপর তিস্তার স্কার্ট থেকে কাপড়ের দুটো বড় টুকরো ছিঁড়ে সেটাকে ওর কাঁধের জখমের উপর একবার আড়াআড়ি একবার সোজা করে বগলের নিচ দিয়ে চেপে শক্ত করে বেঁধে দিলো | তারপর রুদ্রর দিকে তাকিয়ে বললঃ 

"এতে আপাতত আমাদের কাজ চলে যাবে, বাট আমাদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব....",তবে নিজের কথা শেষ করবার আগেই হঠাৎ করে অফিসের সদর দরজাটার দিক থেকে কেমন একটা আওয়াজ ওদের কানে ভেসে এলো। হ্যাঁ, দরজা ধাক্কানোর আওয়াজ। দরজার ওইপাশ থেকে কেউ বা কারা সেই লোহার দরজা ধাক্কাছে। আর সেই আওয়াজের মান শুনে পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে যে ওরা দরজা ভাঙার চেষ্টা করছে|   

নষ্ট করার মতন সময় ছিল না ওদের কাছে, তাই তিস্তাকে আবার দীপার কাছে দিয়ে দৌড়ে পাণ্ডে-জির অফিসের সেই বইয়ের কেসের দিকে ছুটে গেল রুদ্র| অন্যদিকে তিস্তাকে নিজের শরীরে ভর দিয়ে নিয়ে আস্তে আস্তে সেই দিকে এগোতে লাগল দীপা| রুদ্র বইয়ের কেসের সমানে পৌঁছে চেঁচিয়ে বলল : 

"কোন বইটা....এখানে তো অনেক বই রয়েছে...."

"সব থেকে পুরনো বইগুলোর মধ্যে খোঁজ.....যেগুলোর ওপর আগের দিন আমরা সব থেকে বেশি ধুলো জমে থাকতে দেখেছিলাম সেইগুলো....বাট তাড়াতাড়ি রুদ্র....তাড়াতাড়ি...উই ডোন্ট হ্যাভ মাচ টাইম"

সেই শুনে রুদ্র আর একটুও সময় ব্যায় না করে একটার পর একটা ধুলোয় ঢাকা বই ঠেলতে লাগল আর হঠাৎ করেই সামনের দেওয়াল সরে গিয়ে তাদের পালানোর গোপন পথটা বেরিয়ে এলো। ইতিমধ্যে তিস্তাকে নিয়ে দীপাও সেখানে উপস্থিত হল। 

"এটা তো হল, কিন্তু ব্যাক-প্যাকটা....ব্যাক-প্যাকটা কোথায়?" তিস্তার শেষ কথা মনে পরে গেল রুদ্রর।

"ওই...ওইখানে, নীচের ড্রয়ারে" দীপা বলে উঠলো | সেই শুনে রুদ্র দৌড়ে পাণ্ডে-জির টেবিলের সামনে গিয়ে টেবিলের সব থেকে নীচের ড্রয়ার খুলে সেই ব্যাগপ্যাকটাকে টেনে বের করল | তারপর ওটাকে ধরে নীচে মেঝেতে নামিয়ে ওটার চেন খুলতেই ভেতরের সব কিছু দেখতে পেলো যার মধ্যে ছিল দুটো হ্যান্ড-গান, কয়েক রাউন্ড ম্যাগাজিন, একগুচ্ছ চাবি, দুটো টর্চ, আর একটা সেলফোন | সেগুলো একপাশে সরাতেই বেরিয়ে পড়লো একটা ছোট ধাতব কাস্কেট, একটা নোটবুক, নগদ কিছু টাকার বান্ডিল আর তাদের চারজনের আই ডি কার্ড। এত কিছু সরঞ্জাম দেখে এটা ওদের কাছে স্পষ্ট হল যে ইমার্জেন্সি সিচুয়েশানের জন্য সব পরিকল্পনা আগে থেকেই করে রেখেছিলেন পাণ্ডে-জি। রুদ্র ব্যাগের জিনিসগুলো ঘাঁটতে ব্যস্ত হয়ে পড়লে হঠাৎ করে ওর হাতটা খপ করে ধরে ওকে ইশারায় চুপ করতে বলল দীপা|

আর চুপ করতেই ওদের কানে ভেসে এলো করা যেন দরজার ওইপারে দৌড় দৌড়ী করছে আর প্রায় সাথে সাথেই দরজায় প্রচণ্ড জোরে কিছু দিয়ে মারার আওয়াজ ভেসে এলো| সেই শুনে আর সময় নষ্ট না করে রুদ্র দীপা আর তিস্তা ওই গোপন প্যাসেজের ভেতরে ঢুকল। রুদ্র পেছনে ঘুরে সেই প্যাসেজের দরজা বন্ধ করতে যেতেই দীপা হঠাৎ বললঃ 

"এই...এই আমার ফোনটা ওখানে আছে.....ওতে আমাদের..." 

"ওই ফোনের আর কোনও অস্তিত্ব নেই দীপা, চলো এখন থেকে....", বলে দীপা আর তিস্তাকে ভেতরে ঢুকিয়ে নিয়ে পিছনের লিভার টেনে গুপ্ত পথে ঢোকার দুয়ার বন্ধ করে দিলো রুদ্র।

আর পেছনের সেই দরজাটা বন্ধ হতেই তাদের কে ঘিরে ধরল দুর্ভেদ্য অন্ধকারে। সেই অন্ধকারে ব্যাগ হাতড়ে কোন মতে টর্চটা বের করে জ্বলতেই কিছুটা দূরে একটা কঙ্কালসার লিফট দেখতে পেল ওরা। এই সেই লিফট যার কথা দীপাকে বলেছিল তিস্তা| 

হাতে টর্চ নিয়ে নিজেদের গন্তব্য আলোকিত করে আস্তে আস্তে সেই দিকে এগিয়ে যেতে লাগল ওরা| কিছুটা এগতেই ওরা লক্ষ্য করল যে লিফটের সিলিংয়ে টিম টিম করে একটা ছোট বাল্ব জ্বলছে আর তারই ক্ষীণ আলোতে ভেতরে থাকা দু'টো সুইচ দেখতে পেলো ওরা| একটাতে লেখা টি আর আরেকটায় বি আর সম্ভবত সেই দুটোর মানে টপ আর বটম। লিফটের কোন দরজা না থাকায় আর অপেক্ষা না করে তিস্তাকে নিয়ে দীপা লিফটে উঠতে যেতেই ওকে বাধা দিলো রুদ্র |

"না...না দাড়াও, লিফটার যা অবস্থা আগে আমি উঠি দেখি", বলে টর্চের আলো সামনের দিকে ফেলে লিফটে উঠল রুদ্র, তারপর আশ্বস্ত হয়ে বলল, "ঠিক আছে, এইবার তোমরা এস", বলে বাকি দুজনের দিকে নিজের হাত বাড়াল | দীপা এক হাতে তিস্তাকে জাপটে ধরে আর আরেক হাত দিয়ে রুদ্রর হাত ধরে লিফটে উঠল। আর বহুকাল পুরনো সেই লিফট তিন তিনটে মানুষের ওজনে আপনা হতেই নীচের দিকে কিছুটা নেমে গেল।সেই দেখে আর সময় ব্যায় না করে রুদ্র বি লেখা সুইচটা টিপে ধরল। 

'ঘটাং' করে একটা যান্ত্রিক আওয়াজ করে লিফটটা নড়ে উঠলো আর তার সাথে সাথে লিফটের সিলিঙে থাকা বাল্বটা ফ্ল্যাশ করে উঠে কেটে গেল। সেই আঁধার ঢাকা গহ্বরে কিছু দেখতে না পেলেও ওরা বেশ বুঝতে পারল যে আস্তে আস্তে নীচের দিকে সেই অন্ধকারের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে ওরা | লিফটা যত নীচে নামতে লাগল ততই চারিপাশটা গুমোট হয়ে উঠতে লাগল। 

আর সেই অন্ধকার গহ্বরে নিজের হাত বারিয়ে দীপা আর তিস্তাকে নিজের বুকে চেপে ধরল রুদ্র| কত কিছুই না ঘটে গেল এইটুকু সময়ে মধ্যে, সে ভাবল, কিন্তু পরক্ষনেই দীপার শরীর স্পর্শ করতেই সে আনুভব করল যে দীপা সেই আগের বারের মতনই এবারেও সম্পূর্ণ উলঙ্গ!
[Image: Nep5awV.png]
[+] 7 users Like Anuradha Sinha Roy's post
Like Reply
#85
সাংঘাতিক উত্তেজনা পূর্ণ !!

লাইক আর রেপু।


Namaskar clps
[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply
#86
Heart 
খুব ভালো লাগলো। অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Like Reply
#87
পর্ব ২৪

টি সেন্টারের সেই কঙ্কালসার এস্কেপ লিফ্ট এসে থামল নিজের গন্তব্যে। সেখানে অন্ধকার এতটাই ঘন ছিল যে সব কিছুই যেন ফাঁকা বলে মনে হতে লাগলো ওদের | অচেনা জায়গা তার উপর অন্ধকার তারও ওপর তাদের পিছু নেওয়া সেই লোকগুলোর কথা মনে করে সামনের দিকে পা বারাবর সাহস পেলনা ওরা। কে বা কারা তাদের জন্য সেখানে অপেক্ষা করে রয়েছে সেটা না জানতে পেরে টর্চটা ভয়ে জ্বালতে পারল না রুদ্র | কিছুক্ষণ সেই ভাবে সেই অন্ধকার কুটুরে দাঁড়িয়ে থাকবার পর দীপা ফিসফিস করে বলে উঠলঃ 

"রু.....এইবার টর্চটা জ্বালতে পারিস..."

সেই শুনে রুদ্র বলল, "নাহ.....দাড়াও, আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করি। অন্তত ৭৫% শিওর হতে দাও আমাকে.."

আর সেই মত আরও দশ মিনিট অপেক্ষা করাবার পর অবশেষে খুবই চকিতে টর্চটা এক মুহূর্তের জন্য জ্বেলে আবার বন্ধ করে দিল রুদ্র| তারপর আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে আবার টর্চটা জ্বেলে এবার সামনের দিকে মেলে ধরল। তবে টর্চ জ্বলতেই তারা দেখতে পেলো যে তারা একটা টানেল বা সুড়ঙ্গের মধ্যে রয়েছে। রুদ্র নিজের হাতের টর্চটা নিচের দিকে নামিয়ে এনে তার আলোটা এবার মাটিতে ফেলতেই কিছু দূরে পাতা রেল লাইনগুলি দেখতে পেল। এক সময় এখান দিয়ে ট্রেনে চেপে কত মানুষে যাতায়াত করছে কিন্তু এখন, এখন সেটা পুরোটাই পরিত্যক্ত| 

তবে নিজের সামনে আর কোন পথ না দেখতে পেয়ে এইবার সেই টানেল অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নিল অরা।আস্তে আস্ত খুবই সন্তর্পণে এগিয়ে যেতে লাগলো ওরা তিনজন তবে টর্চ বন্ধ করে | মাঝে মধ্যে সামনের পথটা দেখার জন্য এক মুহূর্তের জন্য টর্চটা ফ্ল্যাশ করে আবার এগিয়ে যেতে লাগলো ওরা| খালি পায়ে হাঁটার অভ্যাস থাকাতে তাদের কোন অসুবিধা হল না, কিন্তু এই অন্ধকারের মধ্যে কোথায় কিসের ওপর পা পড়ছিল তাদের অজানা ছিল | সেইরকম হাটতে হাটতে অবশেষে তারা একটা চৌমাথাতে পৌঁছল। রুদ্র টর্চ জ্বালিয়ে প্রতিটা রাস্তার দিকে একবার একবার করে আলো ফেলতে লাগল |

"কোন দিকে?" ফিসফিস করে বলে উঠল দীপা।

"জানি না! জানলে এখানে এইভাবে দাঁড়িয়ে থাকতাম", বলে টর্চে জ্বালিয়ে আবার রাস্তা গুলোর দিকে মেলে ধরল রুদ্র।

"ওই....ওইটা কি....." বলে দীপা আঙ্গুল তুলে একদিকে ইশারা করল। 

রুদ্র সেই দিকে তাকিয়ে বলল, "জা...জানি না....তবে দেখে দরজার মতন মনে হচ্ছে..."

"চল...ওই দরজার কাছটায় চল, দেখি একবার," বলে সেই দিকে পা বারাল দীপা। 

দূর থেকে সেই বস্তুটিকে দরজা বলে মনে হলেও সামনে গিয়ে সেটার কোন অস্তিত্ব দেখতে পেলো না ওরা | আরেকটু সামনে যেতেই একটা ছোট্ট ঘর দেখতে পেলো ওরা। নোংরা এবং সম্পূর্ণ খালি, এককালে এটার ঢোকার মুখে দরজা থাকলেও এখন দরজার ফ্রামটাই অবশিষ্ট | কোন রকমে ভেতরে ঢুকে একটা কোনে গিয়ে টর্চটা জ্বালিয়ে মেঝেতে রেখে দিলো রুদ্র| একটু আগে ঘটে যাওয়া সেই ভয়ানক মুহূর্তের পর এই ভাঙাচোরা ঘরটা তাদের কাছে খুবই নিরাপদ বলে মনে হল |

"এইটা হয়তো একসময় সিগনালিং রুম ছিল। ওই ইলেকট্রিক প্যানেলটা দ্যাখ...", বলে দেওয়ালের ওপর ভাঙা মরচে ধরা একটা প্যানেলের দিকে ইশারা করল দীপা। 

"হমমম, বাট তিস্তা...ঠিক আছে তো?" রুদ্র হঠাৎ প্রশ্ন করল।

রুদ্রর সেই প্রশ্ন শুনে নিজের ঘাড় ঘুরিয়ে তিস্তার ক্ষতর জায়গাটা ভালো করে একবার চেক করে নিয়ে ওর পাল্‌স মেপে দীপা বলল, "হ্যাঁ....আপাতত রক্ত বেরোনো বন্ধ করতে পারলেও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওর ভেতরে আটকে থাকা গুলিটা বের করতে হবে আমাদের..." 

"ঠিক আছে", বলে টর্চটা মেঝে থেকে তুলে নিয়ে ঘরের এইদিক ওইদিক দেখতে লাগল রুদ্র, 'যদি কিছু কাজে লাগানর মতন পাওয়া যায়'| সেই ভাবে আলো ফেলতে ফেলতে টর্চের আলোটা হঠাৎ দীপার উপর পড়তেই তার অবস্থা দেখতে পেলো রুদ্র, তবে ভালো লাগার থেকে সম্ভবত খারাপই লাগলো ওর। দীপা উলঙ্গ তো ছিলই তাছাড়া তার শরীর জুড়ে লেগেছিল লাল রক্ত। কিছু কিছু জায়গায় রক্ত শুকিয়ে গিয়ে বাদামি রঙের মতন হয়ে গেছিলো আবার কিছু জায়গায় তখনও টকটকে লাল| আলোটা আরেকটু নিচে নামাতেই রুদ্র দেখল যে পাণ্ডে-জির ত্যাগ কিছুটা বীর্য দীপার যোনির মুখ দিয়ে বেরিয়ে তার উরু বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে। 

দীপার সেই করুন অবস্থা দেখে ক্ষবে দুঃখে ফেটে পড়ল রুদ্র আর সেই সাথে নিজের পরনের কুর্তা শার্টটা খুলে দীপার হাতে ধরিয়ে দিল, তবে পরনের প্যান্টটা খুলতে যেতেই দীপা ওকে বাধা দিলো।

"না...না," দীপা তাকে থামিয়ে বলে উঠলো। "তোর প্যান্ট আমার হবে না রু, ওটা অনেক লম্বা আর এমনিতেও আমার পাছা দিয়ে ওটা ঢুকবে না, তবে তোর এই কুর্তা যথেষ্ট কাজ করে দেবে আমার, তুই বরং একটু তিস্তাকে ধর সোনা..." বলে তিস্তাকে রুদ্রর কাছে দিয়ে কুর্তাটা নিজের মাথা দিয়ে গলিয়ে পরে নিলো দীপা | তবে কুর্তা পড়লেও সেটা দিয়ে বেশি কিছু ঢাকা দেওয়া গেল না। আর তার পুরো নিতম্বটাই বাইরে বেরিয়ে রয়েছে দেখে রুদ্র বললঃ  

"যাহ! পেছনটা তো বেরিয়ে রইলো...."

"ওতে কিছু হবে না...আর এখানে আমাকে দেখার মতো কেউ নেই রু...?", বলে স্মলান হেসে রুদ্রর দিকে তাকাল দীপা, "তবে......এইবার কি করবো আমরা ?"

"দাঁড়াও, আমাকে একটু চিন্তা করতে দাও...", বলে গভীর ভাবে কিছু একটা নিয়ে চিনতে করতে লাগলো রুদ্র। 

কিছুক্ষণ সেই নিস্তব্ধতায় কেটে যাওয়ার পর হঠাৎ দীপা বললঃ 

"কোনও ধরণের ম্যাপ ছাড়া এই টানেল-গুলর মধ্য দিয়ে পথ খুঁজে পাওয়া ইস ইম্পসিবল..."

"কি...কি বললে তুমি? ম্যাপ?? দাঁড়াও....আমার মন বলছে একটু আগেই এই ব্যাগে একটা ম্যাপ দেখেছি আমি আর তাছাড়া পাণ্ডে-জিরা যদি এত পরিকল্পনা করেই থাকেন তবে ম্যাপের ব্যাপারটা উনি বা তিস্তা মিস করবেন না... ধরো, টর্চটা মেলে ধরো একটু..." বলে টর্চটা দীপার হাতে দিয়ে আস্তে আস্তে ব্যাগের চেন খুলে এইদিক ওইদিক খুঁজতে লাগলো রুদ্র আর কিছুক্ষণের মধ্যে সত্যিই একটা ম্যাপ বেরিয়ে পড়লো ওদের সামনে!

"তিস্তা ইস সো ব্রিলিয়ান্ট, তাই না...?"

"একদম...তবে এবার ম্যাপটা দেখা একবার....." দীপা বলে উঠলো

"এইতো....এই দ্যাখো" বলে দীপার সামনে ম্যাপটা মেলে ধরল।

তবে সেই ম্যাপটাকে ম্যাপ বলা ভুল হবে, কারন সেটা আসলে একটা ব্লুপ্রিন্ট। কোন কিছু বানাবার বা নির্মাণ করার আগে এইরকম ব্লুপ্রিন্ট করে নেওয়া হয় আর এই এইতাও হয় সেটারই মতন। 

রুদ্র সেই ব্লুপ্রিন্টের দিকে কিছুক্ষণ এক দৃষ্টে তাকিয়ে বলল, "এতক্ষণ ধরে আমরা এই...এইখান দিয়ে এসেছি আর এই হল এই সিগনালিং রুমটা। আর ওটা সামনের জংশনটা মানে চৌরাস্তাটা আররররর......এইতো....এই বাঁ দিকের রাস্তাটা ধরে এগোলেই আমাদের কাজ হয়ে যাবে..."   

"তাহলে চল..রাস্তা যখন পেয়েই গেছি তখন আর দেরি করা ঠিক হবে না", বলে আবার সেই পরিত্যক্ত ঘর থেকে বেরিয়ে সেই চৌরাস্তাতে ফিরে এলো ওরা। তারপর সেখান থেকে বাঁদিকের রাস্তা ধরে আস্তে আস্তে সেই দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো|

"টর্চটা এবার বন্ধ করে দে....এখানে আর লাইন নেই...কাজেই হাটতে আর তেমন অসুবিধে হবে না...." দীপা ফিসফিস করে বলে উঠল। দীপার কথা শুনে রুদ্র টর্চটা বন্ধ করে দিয়ে দীপার হাতটা নিজের হাতে নিয়ে আস্তে আস্তে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে লাগল। 

ম্যাপের ডেটা অনুসরণ করতে করতে সেই পরিত্যক্ত টানেলের মধ্যে দিয়ে ওরা খালি পায়ে হেটে চলল | মূর্ছিত অবস্থাতে থাকার কারণে তিস্তা নিজের শরীরে সমস্ত ভার দীপার ওপর ছেড়ে দিয়েছিলো, তবে তার শরীরের ভার তেমন কিছু না হওয়ায় দীপার কোন অসুবিধে হচ্ছিল না| 

প্রায় ঘণ্টা দুই ওই ভাবে হাঁটার পর, তাদের নাকে একটা ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে গন্ধ ভেসে আসতে লাগলো কিন্তু সেই গন্ধটা যে কিসের সেটা কিছুতেই বুঝতে পারলো না ওরা | তবে আশ্চর্য ভাবে কিছুদূর চলার পর সেই গন্ধটা আপনা হতেই আস্তে আস্তে কমে যেতে লাগলো | সেই সুবাদে রুদ্র একবার টর্চটা জ্বালিয়ে চারিদিকে দিকে আলো ফেলতেই দেখতে পেলো যে ওপরের দেওয়ালে ছোট ছোট গাছে ভরতি আর তাই বেয়ে গড়িয়ে জল পড়ছে |

"এটার মানে বুঝতে পারছ...?" ভেজা দেওয়ালের দিকে ইশারা করে রুদ্র প্রশ্ন করে উঠলো। 

"হমম আর ওই স্যাঁতস্যাঁতে গন্ধটার রহস্যটাও আমার কাছে এতক্ষণে পরিস্কার। আমরা এতক্ষণ ধরে নদী পেরছিলাম..তাই তো ?", দীপা বলে উঠল। 

"হ্যাঁ... অ্যান্ড সো আই থিংক, আমাদের আর বেশি দূর যেতে হবে না..."

তারা যে ঠিক রাস্তা অবলম্বন করেছে তার একটা আশ্বাস পেয়ে এবার দ্বিগুণ গতিতে ওরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে লাগল কিন্তু গণ্ডগোলটা হল ঠিক সেই মুহূর্তেই। আরও কিছুটা এগিনর সাথে সাথে রাস্তা শেষ হয়ে গেল| একটা ডেড-এন্ড। তবে ডেড-এন্ড মনে হলেও ওরা জানতো সেটার নিশ্চয়ই অন্য কোনও মানে আছে...হয়ত আবার কোন গুপ্তপথ...

"এবার কোন দিকে রু...রাস্তা যে শেষ হয়ে গেল?"

"দাঁড়াও", বলে ম্যাপটার ওপর আলো ফেলে দেখতে লাগলো রুদ্র| রুদ্র দেখল যে তারা যেখানে দাঁড়িয়ে আছে ম্যাপে সেই জায়গাটায় একটা কাঁটা চিহ্ন আঁকা রয়েছে। সেটা দেখেতেই রুদ্র এবার টর্চটা নিচে মাটির দিকে ধরল আর সেটা করতেই সামনে একটা ট্র্যাপ-ডোর দেখতে পেলো ওরা| সেই দিকে এগিয়ে গিয়ে নিজের মুখে করে টর্চটা কামড়ে ধরে দুহাতে সেই চোরা দরজাটার হাতলটায় আস্তে করে চাপ দিল। অনেকদিন ধরে না খোলার ফল বসত প্রথমবারে দরজাটা খুলল। তাই দেখে রুদ্র এবার আরও জোরে হাতলটা টানতেই দরজাটা খুলে গেল | আর দরজা খুলতেই নিচের দিকে নেমে যাওয়ার সিঁড়ি দেখতে পেলো ওরা| 

দীপা সেই অতল সোপানের দিকে কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে বললঃ 
"আমাদের কাছে এছাড়া আর কোনও চয়েস নেই রুদ্র। তিস্তাকে এইভাবে নিয়ে যেতে হয়তো একটু অসুবিধে হবে কিন্তু এই পথ দিয়েই যেতে হবে আমাদের..." বলে তিস্তাকে নিয়ে সেই ট্র্যাপডরের ভেতরে ঢুকে গেল দীপা। 

আর দীপাকে ভেতরে ঢুকতে দেখে রুদ্র বলল, "আরে! দাঁড়াও..টর্চটা অন্তত নিয়ে যাও...দেখতে..."

"লাগবেনা..আমার চোখ সয়ে গেছে.....", বলে সেই দিকে এগিয়ে চলল দীপা। 

রুদ্রও সেই দেখাদেখি ভেতরে ঢুকে সেই ট্র্যাপ-ডোরটা বন্ধ করে দিয়ে দীপার পেছন পেছন যেতে লাগলো | এতক্ষণ রুদ্র সবার আগে ছিল। তবে এইবার পেছন থেকে টর্চ জ্বালতেই তার আলোটা হিয়ে পড়ল দীপার ওপরে।আর সেটা হতেই সেই অন্ধকার গহ্বরের মধ্যে দীপার কলসির মতন পাছাটা রুদ্রর চোখের সামনে ফুটে উঠল। প্রতিটা পা ফেলার সাথে সাথে যেন দুলে দুলে উঠছিল দীপার সেই ভরাট পাছা। তবে সেই দিকে আজ আর তেমন মনোযোগ না দিয়ে নিজেদের বাঁচার রাস্তা বের করতে মরিয়া হয়ে পড়ল রুদ্র।  

সিঁড়িটা কিছুদূর একরকম সোজা হয়ে নিচে নেমে যেতে লাগলো, কিন্তু তারপরই হঠাৎ আবার ওপর দিকে উঠতে আরম্ভ করল| তিস্তাকে নিয়ে সেই সিঁড়ি বেয়ে উঠতে দীপাকে বেগ পেতে হচ্ছে দেখে রুদ্র এবার নিজেই তিস্তাকে দীপার কাছ থেকে নিয়ে এগতে লাগল। 

অবশেষে অনেক বাধা টপকে একটা দরজার সামনে এসে পৌঁছল ওরা, তবে সেই দরজাতে না ছিল কোনও ছিটকিনি না ছিল কোনও লক | সেই বুঝে টর্চটা বন্ধ করে দিল রুদ্র, তারপর আস্তে করে সেই দরজা ঠেলতেই দরজাটা খুলে গেল আর সেই সাথে বাইরের ঠাণ্ডা বাতাস এসে লাগলো তাদের শরীরে | অতক্ষণ ধরে সেই গুমোট অন্ধকার অবস্থায় থাকার পর সেই জোলিও বাতাস অনুভব করে তাদের শরীর জুড়িয়ে গেল |

দরজা দিয়ে বেরিয়েই প্রথম যে জিনিসটা তাদের চোখে পড়লো সেটা হল একটা পুরনো পরিত্যক্ত বাড়ি | এপাশ ওপাশ তাকাতে ওরা বুঝতে পারলো যে সেখানে সেই বাড়িটা ছাড়া আর কোনও কিছুর চিহ্ন নেই, আর তারপরই এটা ওদের কাছে পরস্কার হয়ে গেল যে সেইটাই পাণ্ডে-জির পুরনো সেফ হাউস। ওরা এবার আস্তে আস্তে সেই বাড়ির দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়াল। রুদ্র আবার নিজের টর্চটা একবার জ্বালিয়ে বলে উঠলঃ 

"একি...বাড়িটার তো কোনও লক নেই..তাহলে...?"

"এই এলাকাতে কোন কিছু লক করার প্রয়োজন হয়না রু। এই জায়গায় কে আসতে পারে বলে তোর মনে হয় বলতো..?"

"কিন্তু রাস্তা দিয়ে লোকজন এলে..."

"এই রাস্তা দিয়ে কেউ আর যাতায়াত করে না..ওই দ্যাখ", বলে দূরে ভাঙ্গা ব্রিজের দিকে ইশারা করল দীপা। রুদ্র সেই এলাকাটা ভালো ভাবে না চিনলেও, দীপা কিন্তু সেই ব্যাপারে বেশ ওয়াকিবহাল ছিল। 

দীপার কাছ সেই উত্তর শুনে আর দেরি না করে দরজাটায় একটা ঠেলা দিল রুদ্র। আর সেটা করতেই একটা বিকট আওয়াজ করে দরজার পাল্লাটা একদিকে খুলে গেল| টর্চ জ্বেলে এক পা এক পা করে বাড়িটার ভেতরে প্রবেশ করতেই সেই টানেলের মতন গুমোট বাতাসের সম্মুখীন হল ওরা। বাড়িটার অবস্থা দেখে বোঝাই যাচ্ছিল যে সেখানে অনেকদিন জাবত কারুর পা পরেনি| রুদ্র দীপার কাঁধে তিস্তাকে আবার ছেড়ে দিয়ে পেছনে ঘুরে দরজাটা বন্ধ করে দিল। তারপর পাশে থাকা একটা ভাঙা টেবিল দরজার সাথে ঠেসে দিল| ওদিকে তিস্তাকে নিয়ে একটা ঘরে মধ্যে গিয়ে দেওয়ালে হেলান দিয়ে ওকে বসিয়ে দিলো দীপা| সেই সাথে তিস্তার পাল্‌সটা আরেকবার চেক করে উদ্বেগে নিজের মাথা নাড়িয়ে সটান রুদ্রর সামনে গিয়ে দাঁড়াল দীপা। 

"না না....তুমি...তুমি কি করে করবে? তুমি তো আর ডাক্তার নও...", রুদ্র বলে উঠল। 

"তবুও, আমাদের চেষ্টা করতে হবে রুদ্র, নাহলে অনেক দেরি হয়ে যাবে...প্লিজ বোঝার চেষ্টা কর .."

"মানে? তুমি বলতে চাইছ যে ওই সিনেমাতে যেমন দেখায় ওইভাবে করবে তুমি? এটা কি তোমার সুপ্ত প্রতিভা নাকি...ডাক্তারি করা...? "

"রুদ্র, ইয়ার্কি মারিস না, যেটা বুঝিস না সেটা নিয়ে তাছিল্ল করিস না| এটা একটা প্রাণের ব্যাপার, সেটা বুঝতে পারছিস না তুই ?" শক্ত গলায় বলে উঠলো দীপা।

"আমি ইয়ার্কি মারছিনা....তুমি যত দিন তিস্তাকে চেনও আমিও ততদিন তিস্তাকে চিনি আর যতটা তুমি ওকে ভালোবাসো আমিও ঠিক ততটাই ভালোবাসি, তাই....."

"জানি রুদ্র কিন্তু এখন ওসব সেন্টিমেন্টের কথা বললে চলবে না। তোকে আগে যেটা খুঁজতে বলেছি সেটা খোঁজ প্লিজ | ইটস ভেরি ইম্পরট্যান্ট রুদ্র নাহলে...."

"নাহলে? নাহলে কি বাঁড়া...?"

"এইবার কিন্তু আমার হাত চলবে রুদ্র, আর সেটা আমি একদমই চাইনা। প্লিজ রুদ্র, তিস্তার জন্য...প্লিজ..."

সেই উভয়সঙ্কটের মুহূর্তে এসে রুদ্র কি করবে কি বলবে বুঝে উঠতে পারলনা। সে কিছুক্ষণ চুপ করে সেই ব্যাপারটার পরিণতি আঁচ করতে চেষ্টা করল। 'আইদার সি লিভস অর সি ডাইস', এই কথা ভেবে অবশেষে দীপার কথা মেনে নিয়ে দীপার বলা সেই সব জিনিসগুলো খুঁজতে উদ্দত হল রুদ্র| অবশেষে একটা রাফ সার্জারি করার সব জিনিসপত্র জোগাড় করে ফেললো ওরা | 

"নে এবার ওর ওই উন্ডটার ওপরে লাগানো কাপড়টা কেটে দে", দীপা বলে উঠল আর সেই সাথে রুদ্র একটা ভাঙা কচি দিয়ে কোনও মতে সেই বাঁধা কাপড়ের টুকরো দুটো কেটে আস্তে আস্তে সরিয়ে দিল। আর সেই আবরণ সরে যেতেই টর্চের আলোতে তিস্তার কাধের সেই ক্ষতটা ফুটে উঠল ওদের সামনে| ইসসস! কি নৃশংস ভাবেই না গুলিটা বিঁধেছে! 

"ঠিক আছে, এবার ওকে জাগাতে হবে...দাঁড়া.....তিস্তা...এই...তিস্তা, তিস্তা ওঠো", এইভাবে ডেকে কোন সারা না পেয়ে আবার একবার সেই ভাবে ডাকল দীপা| সেই ভাবে অনেক্ষন ধরে ঝাঁকিয়েও কোনও ফল না মেলায় দীপা ওর চোখে মুখে জলের ঝাপটা দিতে বলল রুদ্রকে | রুদ্র সামনের টেবিলের ওপর রাখা নোংরা বোতল থেকে হাতে জল নিয়ে ঝাপটা দিতেই, তিস্তা নিজের চোখ খুলল| শরীর থেকে প্রচুর পরিমানে রক্ত বেরিয়ে যাওয়ার ফলে সে খুবই দুর্বল হয়ে পরেছিল, এতোটাই দুর্বল যে নিজের চোখের পাতা অব্দই খুলে রাখতে পারছিল না সে |

"তিস্তা?...অ্যাই তিস্তা...আমাদের কে চিনতে পারছ তো..এই তিস্তা...", তবে সেই প্রশ্নের কোনও উত্তর না দিয়ে কোনও রকমে ওদের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো তিস্তা |

"ও...কথা বলছে না কেন?" রুদ্র বলে উঠল। 

"এই তিস্তা....তুমি ওকে চেনও না? ওর নাম জানো না তুমি?", রুদ্রর দিকে ইশারা করে প্রশ্ন করলো দীপা। 

তিস্তা কিছুক্ষণ রুদ্রর দিকে তাকিয়ে থেকে হঠাৎ একটা অস্ফুট স্বরে বলে উঠল "রু..."

"হ্যাঁ....আর..আর আমাকে ? আমার নাম কি?"

"দীপ...পা" আবার হালকা অস্ফুট স্বর ভেসে এলো তিস্তার কণ্ঠ দিয়ে। 

"এইতো সোনা..কিচ্ছু হয়নি তোমার কিন্তু তিস্তা..." বলে তিস্তার মাথায় হাত রাখল দীপা "উই নিড টু অপারেট অন ইউ, তোমার কাঁধ থেকে ওই গুলিটা বার করতে হবে"

তবে দীপার সেই কথা শুনে ভয় বয়কি বরঞ্চ নিজের মাথা নাড়িয়ে সেই প্রস্তাবে সায় জানাল তিস্তা। সে কোনওকথা না বলে নিজের মাথাটা নাড়িয়ে হঠাৎ রুদ্রর দিকে তাকিয়ে ওকে কাছে আসতে বলল | রুদ্র কাছে আসতেই তিস্তা নিজের হাত দিয়ে রুদ্রর হাতটাকে শক্ত করে চেপে ধরল |

"আমি এখানেই আছি তিস্তা....আমি তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাচ্ছি না..." বলে তিস্তার সামনে বসলো রুদ্র

ঘর থেকে খুঁজে পাওয়া লাইটারটা জ্বালিয়ে তার ওপর একটা ছুড়ি ধরল দীপা, ওটাকে স্টেরাইল করার জন্য| রুদ্র এক হাতে টর্চটাকে আর আরেক হাতে তিস্তার হাতটাকে শক্ত করে চেপে ধরে রইল | ছুড়িটা স্টেরাইল করা হয়ে গেলে দীপা তার ওপর একটা ভাঙা সাঁড়াশি গরম করতে লাগলো | তারপর একটা কাপড়ের টুকরোকে অল্প অ্যালকোহলে ভিজিয়ে ওর ক্ষতর জায়গাটা পরিষ্কার করে দিলো |

"তিস্তা, আই হোপ ইউ আর রেডি...খুব লাগবে সোনা, কিন্তু যতই লাগুক প্লিজ চেঁচাস না | চেঁচালে সব কিছু বিগড়ে যেতে পারে", এই বলে তিস্তার গালে হাত বোলাল দীপা | "রেডি?"

"হুম",এতক্ষণে এই প্রথম শক্ত ভাবে বলে উঠলো তিস্তা তবে তার কথা শেষ হতে না হতেই সেই ক্ষতর জায়গাতে অপারেট করতে আরম্ভ করল দীপা | যতই দীপা গভীরে যেতে লাগলো ততই তিস্তা রুদ্রর হাতটা চেপে ধরতে লাগলো | ব্যথায় যন্ত্রণায় তিস্তার চোখ বেয়ে জল বেরোতে থাকলেও একটা টু শব্দ বের হল না ওর মুখ দিয়ে।

"না হচ্ছে না, আরও একটু কাটতে হবে", বলে ছুড়িটা দিয়ে ওই ক্ষতর মুখটা আরও কিছুটা কেটে দিলো দীপা আর সাথে সাথে সেই নতুন ক্ষত দিয়ে টকটকে লাল রক্তর ধারা মেঝের ওপর গড়িয়ে পড়ল ।

"এ তুমি করছ বলতো! মেরে দেবে নাকি ওকে" রুদ্র রাগে চেঁচিয়ে উঠলেও, ওর কথায় কোনও সারা দিলো না দীপা | ক্ষতর মুখটা এবার হাঁ করিয়ে সাঁড়াশিটাকে আবার গরম করে সেই ক্ষতর মধ্যে ঢুকিয়ে দিলো দীপা | ওদিকে ব্যথায় যন্ত্রণায় চেঁচাতে না পেরে রুদ্রর হাত ধরে ছটফট করতে লাগলো তিস্তা আর তার সেই করুন অবস্থা দেখে রুদ্রর নিজের চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে এলো | অনেক্ষন ধরে সেই ভাবে অস্ত্রপ্রচার করবার পর অবশেষে তিস্তার ক্ষত থেকে গুলিটা বার করতে সক্ষম হল দীপা তবে তিস্তা তখন অজ্ঞান অবস্থাতে বসে | দীপা আবার ওই জায়গাটা ভাল করে মুছিয়ে দিয়ে বললঃ 

"এইবার..এইবার এই জায়গাটাকে কটারাইস করতে হবে..."

"মানে....?"

"মানে ওর ক্ষতটার মুখটা বন্ধ করতে হবে যাতে না ইনফেকশন হয়"

"কি..কি করে করবে তুমি...ওটা? এখানে তো সুচ সুতো কিছুই নেই ", উদ্বিগ্ন কণ্ঠে দীপাকে প্রশ্ন করল রুদ্র যদিও সে জানত যে দীপার কাছ থেকে সেই প্রশ্নের ভালো উত্তর কিছুই পাবেনা....

"পুড়িয়ে"

"মানে??"

"পুড়িয়ে...বার্ন...", ঠাণ্ডা ভাবে বলে উঠল দীপা।

"না না একদম না, আর না....আর ওকে কত কষ্ট দেবে তুমি.."

সেই শুনে দীপা চেঁচিয়ে উঠে বলল, "আমারও ওকে এই অবস্থাত্‌ এই ভাবে কষ্ট দিতে একদম ভাল লাগছে না, কিন্তু কটারাইস না করলে ওই জায়গা থেকে ইনফেকশন হয়ে ওর প্রাণসংশয়ও হতে পারে, আর সেটা নিশ্চয়ই তুই চাস না? "

"না...চাইনা..কিন্তু আমি..."

"আর এ ছাড়া আর কোন পথ জানা আছে তোর?" 

"না...", হতাশ কণ্ঠে বলে উঠল রুদ্র। 

"ব্যাস তাহলে চুপ...একদম চুপ", বলে রুদ্রকে থামিয়ে দিলো দীপা | তারপর হাতের ছুরিটা এলকোহল দিয়ে ধুয়ে আবার লাইটারের ওপরে ধরল গরম করার জন্য, তবে এবারে আরও একটু বেশিক্ষণের জন্য | সেই সাথে তিস্তার মুখে একটা কাঠের টুকরো ঢুকিয়ে ওটাকে দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরতে বলল। ছুড়িটা গরম হতে হতে একদম আগুনের মতন লাল হয়ে জ্বলে উঠতেই দীপা বললঃ 

"এইবার আগের থেকেও বেশি কষ্ট হবে তিস্তা, কিন্তু আমার কিচ্ছু করার নেই সোনা...", বলে গরম ছুড়িটা ক্ষতর কাটা জায়গার ওপর চেপে ধরল দীপা | ছুরিটা সেখানে লাগতেই "ফোঁসসস" করে একটা বিশ্রী আওয়াজ করে উঠলো আর সেই যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে সেই কাঠের টুকরোর মধ্যে দিয়েই তিস্তা চেঁচিয়ে উঠল | তবে দীপা একদম প্রস্তুত ছিল সেই ব্যাপারে, তিস্তা চেঁচিয়ে উঠতেই সাথে সাথে নিজের হাত দিয়ে ওর মুখটা চেপে ধরল | সেই দারুণ যন্ত্রণায় আবার আগের মতন অচৈতন্য হয়ে রুদ্রর কাঁধে এলিয়ে পড়লো তিস্তা। আর সেই সাথে আবার সব কিছু আগের মতন নিস্তব্ধ হয়ে গেল |

ভয় আর উত্তেজনায় তিন জন্যেই একদম ঘেমে স্নান করে গেছিলো আর তার ওপর সেই বাড়িতেও কোনও ইলেক্ট্রিসিটির লাইন ছিল না | দীপা তিস্তার ক্ষতটাকে ভালো ভাবে পরীক্ষা করে যখন সন্তুষ্ট হল তখন ঘড়িতে বাজে রাত ১টা | রুদ্র তখনও তিস্তার হাতটা চেপে ধরেছিল, তারপর কিছুক্ষণ বাদে নিজের মাথাটা তিস্তার মাথার উপর এলিয়ে দিয়ে চোখ বুজে বসলো | 

দীপা এবার আস্তে আস্তে মেঝের ওপর থেকে উঠে টর্চটা নিয়ে বাথরুমের দিকে গেল | বাড়ির প্রতিটা কোন নোংরা জঞ্জালে ভর্তি থাকায় খুব সাবধানে এগতে হচ্ছিলো তাকে| একটু এগতেই হঠাৎ নাকে একটা ভোঁটকা পচা গন্ধ আসতেই নিজের নাকটা হাতে করে চাপা দিল দীপা | সেই গন্ধ অনুসরণ করে বাথরুমে ঢুকে নিজের কুর্তাটা খুলে কমোডের ওপর বসতে যেতেই সেই গন্ধের উৎস খুঁজে পেলো দীপা | কমোডের কালো জলের মধ্যে একটা ইঁদুর মোড়ে পোঁচে ভাসছিল তবে সেটা তার কাছে নতুন নয় | বস্তি বাড়িতে থাকা কালীন ওকে আর রুদ্রকে এরকম অনেক কিছুই দেখতে হয়েছিল যা দেখলে সাধারণ মানুষের অন্নপ্রাশনের ভাত উঠে আসতো | নিজের ঘেন্নাটেন্নার সব জলাঞ্জলি আগেই দিয়ে দিয়েছিলো দীপা তাই আর দেরি না করে কমোডের মধ্যে থেকে ইঁদুরটার লেজটা ধরে ওপরে তুলে বাইরে জানালা দিয়ে ফেলে দিলো | তারপর নিজের হাতটা সেই কুর্তাতে মুছে কমোডে বসে পেছাব করতে আরম্ভ করল | কমোডের সামনের থাকা কলের পেঁচটা আস্তে করে ঘোরাতেই প্রথমে একটা সাঁইসাঁই আওয়াজ হল তারপর ভগ ভগ করে কালো রঙের জল বেরোতে লাগলো | কিছুক্ষণ সেই ভাবে জলটা ছেড়ে দেওয়ার পর পরিষ্কার জল বেরতে লাগল। দীপা সেই কলের নিচে বসে নিজের শরীর থেকে রক্তের সমস্ত চিহ্ন ধুয়ে মুছে ফেলল তারপর উঠে কুর্তাতে নিজের গা হাত মুছে বাথরুম থেকে বেরিয়ে এলো|

সামনের ছোট জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকাতেই দূরে...অনেক দূরে কয়েকটা উঁচু উঁচু বিল্ডিঙে আলো জ্বলতে দেখল দীপা | সেইরকমই একটা বহুতলে আজকে তাদের সঙ্গে এমন কিছু ঘোটে ছিল যেটা সে হয়তো কোনোদিনই ভুলতে পারবে না | হাল্কা হাল্কা ঠাণ্ডা বাতাস সেই জানালার দিয়ে দীপার নগ্ন শরীরকে স্পর্শ করতে লাগল আর সেই বাতাসে দীপার শরীর ভেসে যেতে লাগলো | সারাদিনে এতক্ষণে ওর মনটা একটু শান্ত হল | পা টিপে টিপে রুদ্রদের ঘরের সামনে যেতেই বুঝল যে বাকি দুজন নিদ্রায় মগ্ন হয়ে গেছে |

সেই বুঝে আস্তে আস্তে সেই ঘরের মধ্যে ঢুকে রুদ্র পাশে দেওয়ালে হেলান দিয়ে বসলো দীপা | তারপর ঘাড় ঘুরিয়ে রুদ্র আর তিস্তার দিকে তাকাল। ওদের দুজনকে শান্তিতে ঘুমোতে দেখে দীপার মনটা একটা ভীষণ তৃপ্তিতে ভোরে গেল |

"অনেক কষ্ট দিয়ে ফেললাম আমি আজ তোকে", বলে তিস্তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো দীপা | তারপর বসে থাকতে থাকতে নিজের অজান্তে কখন যে  ঘুমিয়ে পড়লো সেটা নিজেই বুঝতে পারলো না দীপা |
[+] 8 users Like Anuradha Sinha Roy's post
Like Reply
#88
ফিরে এলাম আমি, অনেকদিন পরে, অন্য এক রূপে। জানি, আপনারা সকলেই আমার অপেক্ষায় ছিলেন, তবে সত্যি বলতে, একটি বিশেষ ব্যক্তিগত কারণের যেরে কয়েকবার মাস বাবদ আমি এখানে আসতে পারিনি।

আমি আমার গল্পের সকল পাঠককে নিজের পরিবারের একটি অংশ মনে করি, তাই আপনাদের কে আমার সেই ব্যক্তিগত কারণটির সাথে অবগত করতে আমি কোনো দ্বিধা বোধ করিনা। জীবনের পঞ্চাশটা বছর একাকিত্বে কাটাবার পর অবশেষে সেই মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি আমি। গত পয়লা জুন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি আমি আর আমার স্বামী। আশা করি এই কথাটা জানবার পর আপনাদের মনের খোব একটু হলেও কমবে। এরই সাথে বলে রাখি যে, আমি হয়তো আগের মতন অত ঘনঘন উপডেটস দিতে পারবো না, হয়তো রোজ অনলাইনও আসতে পারবো না। তবে হ্যাঁ, এবার থেকে না বলে আর নিরুদ্দেশ হয়ে যাবো না| পাঠকরা কথা বলতে চাইলে, কোনো কিছু সাজেস্ট করতে চাইলে নিশ্চয়ই চ্যাট করবো|

আশা করি আপনারা, মানে আমার গল্পের পাঠকরা আমাদের জীবনের এই নতুন ভাগের উদ্দেশে অনেক আশীর্বাদ আর ভালোবাসা প্রদান করবেন।

ইতি অনুরাধা সেন (সিনহা রায়)        
Like Reply
#89
অনুরাধা আপা
অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন আপনার নতুন জীবনের জন্য।আশা করি নতুন জীবনে খুবই সুখে আছেন।
আপনাকে আরো ধন্যবাদ এ জন্য যে এ রকম মূহুর্তেও আপনি আমাদের কথা মনে রেখেছেন।
তবে অনুরোধ করবো আউট অফ কলকাতা গল্পটা শেষ করার জন্য।এ গল্পটা তো অনেক এগিয়ে আছে আপনি ইচ্ছা করলেই শেষ করতে পারেন।
আপনার নতুন জীবনে সুখি ও ভালো থাকুন এ দোয়া রইলো।


-------------অধম
Like Reply
#90
(15-08-2023, 02:13 PM)অভিমানী হিংস্র প্রেমিক। Wrote: অনুরাধা আপা
অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন আপনার নতুন জীবনের জন্য।আশা করি নতুন জীবনে খুবই সুখে আছেন।
আপনাকে আরো ধন্যবাদ এ জন্য যে এ রকম মূহুর্তেও আপনি আমাদের কথা মনে রেখেছেন।
তবে অনুরোধ করবো আউট অফ কলকাতা গল্পটা শেষ করার জন্য।এ গল্পটা তো অনেক এগিয়ে আছে আপনি ইচ্ছা করলেই শেষ করতে পারেন।
আপনার নতুন জীবনে সুখি ও ভালো থাকুন এ দোয়া রইলো।


-------------অধম

অনেক ধন্যবাদ আর হ্যাঁ নিশ্চয়ই শেষ করবো
Like Reply
#91
বহু বহু দিন পরে
রাধাজীকে পেলাম ফিরে
Like Reply
#92
এই গল্পের বাকি আপডেট আসবে কিনা
Like Reply
#93
পর্ব ২৫

সেই রাতে, সেই পরিত্যক্ত বাড়িতেই গা ঢাকা দিলো ওরা | গরমে কষ্ট হলেও তাদের করার কিছু ছিল না তবে, একবার ঘুমিয়ে পড়লে কি বা গরম আর কি বা ঠাণ্ডা ?

দেখতে দেখতে সেই কালো রাতের ছায়া মুছে ভোরের আলো ফুটে উঠল, আর সেই সাথে কেঁপে উঠল সেই ব্যাগটা। সেই কম্পনের কারণে ঘুম ভেঙ্গে যেতেই ব্যাগপ্যাক খুলে, ভেতরের জিনিসপত্র হাতড়াতে আরম্ভ করল রুদ্র। তারপর সেই কম্পিত বস্তু নির্ধারণ করতেই সে দেখল যে তাতে অ্যালার্ম বাজছে। ঘড়িতে সময় সবে মাত্র সাড়ে ছটা | রুদ্র অ্যালার্মটা বন্ধ করে এবার সেই ঘরের দিকে তাকাল। নিতান্তই বাসযোগ্য নয় সেটি, কিন্তু কালকে এই বাড়িই তাদের বাঁচিয়ে দিয়েছে। 

গত রাতের সেই ক্লান্তিকর ভয়ঙ্কর যাত্রার পর, তিস্তা আর দীপা দুইজনেই রুদ্রর কাঁধে হেলান দিয়ে অঘোরে ঘুমচ্ছিল| 'না ওরা আরও একটু রেস্ট করুক', নিজের মনে বলে উঠল রুদ্র আর সেই সাথে আস্তে আস্তে তিস্তাকে নিজের কাঁধের ওপর থেকে তুলে দীপার কাঁধে এলিয়ে দিল| তারপর উঠে আস্তে আস্তে বাড়ির বাথরুমে গিয়ে হাল্কা হয়ে নিল। করিডোরে ফিরে এসে বলল,' না আছে খাবার দাবার না আছে পড়ার কাপড় চোপড়, এই অবস্থায় সভ্য সমাজে বেরনো যাবে না', সেই মত ব্যাগ থেকে অল্প কিছু টাকা বের করে শহরের দিকে রওনা দিলো রুদ্র | 

বাইরে বেরিয়ে রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে বুঝতে পারলো যে দীপার কথাই ঠিক, ব্রিজটা ভেঙে যাওয়াতে এখানে লোকজনের আসাটা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে | তবে হ্যাঁ, কেউ চাইলে নিশ্চয়ই আসতে পারতো কিন্তু অনেকটা পথ ঘুরে | সেই ঘুর পথ দিয়েই হাঁটছিল রুদ্র। প্রায় কুড়ি মিনিট সেই ভাবে চলার পর রাস্তার একপাসে একটা সাইকেল পরে থাকতে দেখল ও। তবে সাইকেল কম সাইকেলের কঙ্কাল বললে ভালো| সাইকেল এর কঙ্কল অবশিষ্ট থাকলেও, টায়ারএর কোন আভাস ছিল না। ওসব অনেকদিন আগেই ভোগে চলে গেছে। তবে নেই মামার থেকে কানামামাকে আপন করে, সেই সাইকেলে চড়ে বসে বাকি পথটুকু অতিক্রম করে শহরে পৌঁছল রুদ্র| তার শহরে আসার উদ্দেশ, নিজেদের জন্য খাবার দাবার, ওষুধ পত্র আর পরনের কিছু পোশাক কেনার, তবে মূল উদ্দেশ বা প্রাইমারি অবজেক্টিভ ছিল খবর জানার | গতকাল রাত্রে ঘটে যাওয়া সেই দুর্ঘটনার পর শহরে কি ঘটছে সেটা জানার জন্য বড়োই উদগ্রীব হয়ে পড়েছিল রুদ্র | শহরে পৌঁছে চরাদামে নিজেদের জন্য কিছু খাবার কিনে ওষুধের দোকানে যেতে, সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা একজনর কথা ওর কানে এলো:  

"মারা মাগীটাকে চুদে খুব একটা তৃপ্তি হল না বুড়োদা...পুরো হলহলে মাল", দোকানে দাঁড়িয়ে থাকা খদ্দেরটা বলে উঠলো। 

"আর বাঁড়া, সকাল সকাল চোদাচুদির গল্প!", বলে খিঁচিয়ে উঠল দোকানি, তারপর আবার বলল,"তোদের জ্বালায় ব্যাবসাটাও ঠিক করে করতে পারবোনা দেখছি..." 

"এই! আরে..আরে...রাগ করছ কেন বুড়োদা...যেটা দিতে বললাম ওটা দাও না...আজকে অন্য ভাবে, অন্য কিছু একটু ট্রাই করবো...বুঝলে", বলে চোখ মারল লোকটা।

সেই শুনে দোকানি আরও বিরক্ত হয়ে "গাঁড়মারা" বলে ড্রয়ার খুলে কোয়াকটা কনডমের প্যাকেট ওই লোকটার দিকে ছুড়ে দিলো। লোকটা প্যাকেটগুলো হাতে নিয়ে রুদ্রকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে হঠাৎ বলে উঠলো, "কি গো খোকা.....ওই ভাবে তাকিয়ে রয়েছ যে, তোমারও কি চাই নাকি? যাবে আমার সঙ্গে? দুজন মিলে ঠাপা..." 

রুদ্র তাকে নিজের কথা শেষ করতে না দিয়ে সাথে সাথে নিজের হাত তুলে বলে উঠলো,"না..না আমার ওসব কিছু লাগবে না, আমার এই কোয়াকটা ওষুধ লাগবে শুধু"

"ওহ মা! এতো...ভদ্দরলোকের ছেলে", বিদ্রূপের স্বরে বলে উঠল লোকটা, তারপর নিজের টাকাপয়সা মিটিয়ে সেখান থেকে চলে গেল | লোকটা চলে যেতেই দোকানি বলল,"ওর কথায় কিছু মনে করো না বাবু, ও শালা রেণ্ডীবাজ! রোজ সকালে আমার গাঁড় মাড়তে আসে। তবে সত্যি শালা, রোজ এত এত লোক মরছে, ও শালা যে কেন মরেনা মাইরি!", বলে রুদ্রর দিকে তাকাল লোকটা। রুদ্র কি বলবে, কি করবে বুঝতে না পেরে, নিজের দরকারি ওষুধপত্রের নামগুল বলে উঠল। সৌভাগ্যবসত প্রত্যেকটা ওষুধই তার কাছে পাওয়া গেল। ওষুধ নিয়ে টাকাফাকা মিটিয়ে দিয়ে হঠাৎ রুদ্র বলল:

"আচ্ছা দাদা, এখানে...সব কিছু ঠিকঠাক আছে, তাই না?"

"মানে..?", দোকানী অবাক হয়ে বলে উঠল। 

"মানে.....ওই মারামারি টারামারি হয়নি তো কিছু...?" 

"আজ্ঞে না, কিন্তু কেন বলত?"

"না মানে, রোজই তো কোথাও না কোথাও মারামারি লেগে থাকে, তাই জানতে ইচ্ছা হল"

"লাও ঠেলা, এ আবার কেমন প্রশ্ন? বলছি ভাই, নেশা টেশা করা হয় নাকি তোমার..? বেশী নেশা করলে কিন্তু....", বলে নিজের বাঁহাতের করে আঙ্গুলটা একবার সোজা করে ভাঁজ করে দেখাল লোকটা।

"আরে না না দাদা! ওসব না..ওসব না, আমি এমনিই জানতে চাইলাম। তবে তার মানে....তাহলে কিছু হয়নি...?"

"কিছু হলে, এখানে আমি আর ওখানে তুমি দাঁড়িয়ে থাকতে পারতে? কিছু হলে ওই আঁঠ্খুড়োর বেটা একের পর এক মাগি চুদে যেতে পারতো....?" চোখ বড়ো বড়ো করে বলে উঠলো দোকানদার।

"হ্যাঁ তও ঠিক...", বলে পকেটে বাকি টাকা ঢুকিয়ে রেখে সেখান থেকে বিদায় নিলো রুদ্র | সকাল সকাল এই শহরে এসে একটা জিনিস তার কাছে স্পষ্ট হল যে, কালকে রাতের ঘটনার বিন্দুমাত্র আঁচ পড়েনি এই শহরবাসীদের উপর, আর সেটা না পড়লেই ভালো |

ওষুধের দোকান থেকে বেরিয়ে দুপা হাঁটতেই, রাস্তার ধারে একটা ছোট ঠেলাতে কাপড় চোপড় বিক্রি হতে দেখল রুদ্র। সেখান থেকে দীপার জন্য একটা ড্রেস কেনার চেষ্টা করলেও, সেটার আকাশ ছোঁয়া দাম শুনে, আর টাকায় না কুলবার জন্য আর কিনতে পারলো না সে | 

"ইসসস...ওই ড্রেসটা পাওয়া গেলে দীপাকে আর ওরকম উলঙ্গ হয়ে ঘুরে বেড়াতে হয়না, কিন্তু সত্যি কথা বলতে সেটায় আমারই ভালো.." এই সব চিন্তা করে নিজেই হেসে উঠলো রুদ্র আর সেই সাথে ফেরার রাস্তা ধরল। কিছু দূর যাওর পর, রাস্তার ধারে একটা বাড়ির সামনে শুকোতে দেওয়া একটা মহিলাদের ড্রেস ঝেঁপে দিলো সে ! 

তবে দীপার কাছে সেই নির্জন ঘরের অভ্যন্তরে নগ্ন হয়ে ঘুরে বেড়াতে কোনও সমস্যা ছিল কিন্তু সেখানে আজীবনকাল থাকারও কোনও ইচ্ছা ছিল না তার। জায়গাটা তাদের জন্য আপাতত নিরাপদ হলেও সেটা ফ্রন্ট-লাইনের খুব কাছে ছিল, আর ফ্রন্ট-লাইনে কাছে থাকলেই যখন তখন বিপদ আসার ভয় |  

"কোথায় গিয়েছিলি তুই? আর ওটা কার সাইকেল?", বাড়ির সদর দরজাটা হালকা ফাঁক করে ফিসফিস করে বলে উঠলো দীপা। 

"উফফ! আগে ভেতরে ঢুকতে দাও...তারপর সব বলছি", দরজাটা আরেকটু ফাঁক করে রুদ্রকে বাড়ির ভেতরে ঢুকিয়ে দরজাটা বন্ধ করে দিলো দীপা । তারপর আবার সেই টেবিলটা দিয়ে দরজার মুখটা চেপে বন্ধ করে দিলো |

দীপাকে সেই কাজ করতে দেখে সে বলল,"ওসব না করলেও হবে....এই তল্লাটে কোনও জনমানবের চিহ্ন নেই...."  

"কোথায় গিয়েছিলি রুদ্র....আমাদের এখন খুব সাবধানে লুকিয়ে...",তবে কথা শেষ করার আগেই রুদ্র আবার বলে উঠলো: 

"এই নাও আমাদের খাবার, আরররর এইটা হল তিস্তার স্যালাইন আর এইটা তোমার ড্রেস"

"ওহ এই করতে গিয়েছিলি", বলে রুদ্রর আনা জিনিসগুলো দেখতে লাগলো দীপা, "ওরে-বাবা...এতো দেখছি পুরো বাজার তুলে নিয়ে এসেছিস যে, কিন্তু একি...এইটা কোথা থেকে পেলি ?", রুদ্রর আনা সেই ড্রেসটা নিজের হাতে নিয়ে প্রশ্ন করলো দীপা।

"কিনলাম বাজার থেকে.."

"কিনলি? কিন্তু এতো অনেক দাম নিলো নিশ্চই আর...এটা এরকম ভেজা ভেজা লাগছে কেন ?"

"আরে মাঝ রাস্তায় বৃষ্টি এসেছিলো..তাতেই ভিজে গেল, আর দাম নিয়ে চিন্তা করো না, যা নিয়ে গিয়েছিলাম তার মধ্যেই হয়ে গেছে...", অনেক কষ্টে নিজের হাসি চেপে রেখে বলে উঠলো রুদ্র।

"হমমম", বলে উঠল দীপা, তারপর নিজের মনেই বলল,'ছেলে বড় হয়ে গেছে...' 

দীপাকে সেই পোশাক হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে, রুদ্র বলল,"অবশ্য ওটা পছন্দ না হলে পড়ার দরকার নেই, এমনিই ঠিক আছে" 

"হমমম, আর তাতে তো তোমার খুব সুবিধে তাই না? সব সময় নোলা ছুকছুক করে বল?", বলে কিঞ্চিত হেসে উঠল দীপা, তারপর কি মনে হতে হঠাৎ বলল,"কিছু...."

"খবর...?" 

"হ্যাঁ...মানে কোথাও কি কিছু হয়েছে বা...."

"না.. সব কিছুই নিজের মতন চলছে, নাথিং এক্সট্রাঅর্ডিনারি", বলে মাথা নাড়ল রুদ্র তারপর হঠাৎ গম্ভীর হয়ে জিজ্ঞেস করল "তিস্তা কেমন আছে?"

"তিস্তা? ভেতরে চল, নিজেই দেখতে পাবি", বলে ভেতরের ঘরের দিকে পা বাড়াল ওরা | করিডোর দিয়ে সেই ঘরে ঢুকতেই নোংরা মেঝেতে পাতা একটা চাদরের ওপর শুয়ে থাকতে দেখল তিস্তাকে।

"একবারও জাগেনি না?" 

"না.....কালকে অতটা ব্লাড লস হওয়ার কারণে ওর শরীর খুবই উইক হয়ে রয়েছে..তবে এইটা, এই স্যালাইনটা নিয়ে এসে খুবই ভালো কাজ করেছিস তুই " 

"হমম সেটা ভেবেই আরও যাওয়া আমার। তা একবার স্যালাইনটা ভেতরে গেলেই দেখবে ও চাঙ্গা হয়ে উঠবে.."

"তবে শুধু স্যালাইন দিলে হবে না, ওকে যদি একটু রক্ত দেওয়া যেত তাহলে খুব ভালো হত জানিস তো....কালকে অনেকটা রক্ত....রিকোভারিটা আরও তাড়াতাড়ি হত", দীপা বলে উঠল। 

"হ্যাঁ সে তো বুঝতেই পারছি কিন্তু...." 

"হ্যাঁ, ওর ব্লাড গ্রুপটা আমরা কেউ জানি না....." বলে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল দীপা। 

'ব্লাডগ্রুপ?' কথাটা শুনতেই রুদ্র হঠাৎ,"দাড়াও দাড়াও" বলে কি ভাবতে লাগল রুদ্র তারপর হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে বলে উঠল," আরে ওই...ওর কার্ডটায়...আরে আই ডি কার্ডে নিশ্চয়ই লেখা থাকবে, দেখো একবার" 

"হ্যাঁ এটা তো একবারের জন্যও আমার মাথায় আসেনি, ওয়েট..." বলে টেবিলের ওপর থেকে ব্যাগটা নিয়ে সেটার ভেতরে থেকে দুটো আই ডি কার্ড বার করলো দীপা, একটা পাণ্ডে-জির আর একটা তিস্তার | 

তিস্তার কার্ডটা তুলে ধরে সেটা দেখতে দেখতে দীপা বলল,"আরে....এখানে লেখা এজ চব্বিশ! আরে ওত একদমই বাচ্চা !"
 
"আরে তোমাদের মেয়েদের চোখে বয়সটাই আগে পরে বল ? আর এমন করে বলছ যেন মনে হচ্ছে যেন তুমি বুড়ি হয়ে গেছো"

"হ্যাঁ নিশ্চয়ই, বত্রিশ বছর বয়সে তো আমি বুড়িই...." বলে কার্ডে লেখা ইনফরমেশন গুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগলো দীপা, তারপর বলে উঠল, "এইতো....ব্লাড গ্রুপ ও পজিটিভ....এই তোরও ও পজিটিভ না?

"হ্যাঁ কিন্তু তাতেই তো হল না....আরও তো অনেক টেস্ট করতে হয় ট্রান্সফিউশান করার আগে..." 

"হ্যাঁ করতে হয়....কিন্তু এমার্জেন্সির সময় সব কিছুই করা যেতে পারে আর তার ওপর তোরা দুজনেই ও গ্রুপের আর রীস্যাস ফ্যাক্টরটাও পজিটিভ তাই আশা করি কোনও অসুবিধা হবেনা...", দীপা বলে উঠল। 

"কিন্তু তুমি করতে পারবে ?"

"হ্যাঁ পারবো", জোর দিয়ে বলে উঠলো দীপা | আগে হলে হয়তো রুদ্র অনেক কিছুই বলতো বা ইয়ার্কি মেরে তাছিল্লে উরিয়ে দিত, কিন্তু গত রাতের সেই অপারেশনের পর এই ব্যাপারে দীপার ওপর অনেকটাই বিশ্বাস জন্মেছে তার| 

"কিন্তু ব্লাডের টিউব আর পাউচ..ওসব তো...."

"এইতো ওসব কিছুই তো নিয়ে এসেছিস, এইতো স্যালাইনএর টিউব অনেকটা রয়েছে..ওটা একটু কেটে নিলেই কাজ হয়ে যাবে..." 

সেই মত, অনেক্ষনের চেষ্টায় সব কিছু তৈরি করে, রুদ্রর আনা মেডিকেল চ্যানেল দিয়ে ব্লাড ট্রান্সফিউশান করলো দীপা| কাল থেকে একের পর এক মেডিকেল ব্যাপারে দীপার জ্ঞান দেখে রুদ্র সত্যি অবাক হয়ে যাচ্ছিলো | রক্ত দেওয়া হয়ে গেলে দেওয়ালে হেলান দিয়ে বসল রুদ্র। 

"এইনে এটা খা...অনেকটা রক্ত দিয়েছিস আজকে..", বলে রুদ্রর হাতে একটা বিস্কিটের প্যাকেট ধরিয়ে দিলো দীপা। দীপার হাত থেকে প্যাকেটটা নিয়ে, প্যাকেটটা ছিঁড়ে সেটা থেকে একটা বিস্কিট বার করে রুদ্র নিজের মুখে পুড়ল।

"বলছি একটা কথা বলবে.....? তুমি কি কোনোদিন ডাক্তার টাক্তার হতে চেয়েছিলে মানে...." 

"হ্যাঁ নিশ্চয়ই! এইতো....হাতুড়ে ডাক্তার" 

"আরে আমি মজা করছিনা...বলও না সত্যি করে....." 

"আরে মেলা না বোকে ওই বিস্কিটের প্যাকেটটা শেষ করতো বাপু....তারপর ডিম সেদ্ধটা দেবো..." বলে প্রশ্নটা এরিয়ে গেল দীপা|

"ঠিক আছে", বলে মুখের ভেতর এক সাথে চারটে বিস্কিট ঢুকিয়ে গরুর মতন চিবোতে লাগলো রুদ্র তারপর হঠাৎ একটা প্রশ্ন করে বসলো "এর পরের কি প্ল্যান তোমার?"

"বলবো..সব বলবো পরে...এখন বিস্কিটটা শেষ কর আমি সেদ্ধ ডিমটা নিয়ে আসছি...একটু দুধ থাকলে খুব ভালো হত", বলে করিডোরের দিকে চলে গেল দীপা। 

সকাল গড়িয়ে দুপুর, তারপর দেখতে দেখতে সূর্য নেমে বিকেল হল, আর সেই সাথে নিজেদের প্ল্যান ডিসকাস করতে আরম্ভ করল ওরা |

"তাহলে এরপর কোন জায়গায় যাওয়া...?"

"বরাকর...", সম্প্রতি বরাকরে ঘুরে আসার ফলে আবার সেখানে ফিরে যেতে চাইলো দীপা।

"বরাকর..? কেন..? ওখানে কি আছে? নিজেই তো এসে বলেছিলে যে ওখানে কিছুই নেই....", রুদ্র বলে উঠল।  

"হ্যাঁ....কিন্তু আমি এটাও বলেছিলাম যে আমার মনে হয়, পাণ্ডে-জি-র ওখানে একটা সেফ হাউস আছে যেটার সম্পর্কে অন্য কেউ আর জানে না" 

"সে নয় বুঝলাম, কিন্তু আমরা কি আরও একটু ওপরের দিকে যেতে পারিনা, নদীর পাশবর্তী অঞ্চলে? মানে ধরো বিহার বা ইউপি | তুমিই তো বলেছিলে ওখানকার ওই কন্টাক্টদের কথা...ওদের..." 

"বলেছিলাম কিন্তু এখন ওখানে আর কেউ থাকে না রুদ্র, নদীর জলের লেভেল বেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে জলের স্রোতও বেড়ে গেছে...যারা ওখানে থাকতো সবাই নর্থের দিকে চলে গেছে..."

"তাহলে...কি করবো আমরা..?" উদ্বিগ্ন সুরে বলে উঠল রুদ্র।

"তোকে যেটা বললাম...সেইটা করবো.." 

"কিন্তু তুমি কি ভাবে শিওর হচ্ছ? অন্ধের মতন এদিক ওদিক হাতড়ালে তো হবে না আমাদের...বরাকর ইস কোয়েট এ লার্জ প্লেস"  

"জানি না রুদ্র, তবে আমার মনে হয়, বরাকরেই আছে আমাদের মুক্তির ঠিকানা", দীপা শক্ত গলায় বলে উঠলো।  

"হ্যাঁ...দীপা দি....ইউ আর রাইট, ও....খানে বসের একটা সেফ হাউস আছে", হঠাৎ একটা ক্ষীণ গলার আওয়াজ ভেসে এলো রুদ্রর পাস থেকে আর সেই আওয়াজের উৎসের দিকে ঘুরতেই ওরা দেখল তিস্তা তাদের দিকে তাকিয়ে রয়েছে |

"আরে তিস্তা...", বলে তিস্তার কপালে হাত রাখল রুদ্র, "এখন কেমন লাগছে?"  

"মমম কালকের..থেকে ভালো", বলে নিজের হাতটা  তুলতে যেতেই প্রচণ্ড ব্যথায় আবার হাতটা নীচে নামিয়ে নিল তিস্তা | দীপা ততক্ষণে তার পাশে গিয়ে বসেছে |

"দীপা না থাকলে কালকে আমরা তোমাকে হারিয়ে ফেলতাম তিস্তা", ভারী গলায় বলে উঠলো রুদ্র|

"হারিয়ে ফেলতে? তাইতো...তাহলে কেন? কেন বাঁচালে আমায় রুদ্র? আমি তো....নিজের কাজটাই করতে পারলাম না ঠিক করে, আমাকে বাঁচালে কেন তোমরা?", বলে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো তিস্তা | তিস্তার সেই রূপ দেখে রুদ্র খুব অবাক হল, নিজের মনে নিজেকে বলে উঠল...'যে মেয়েটা এত শক্ত সামর্থ্য, এত স্মার্ট সেও এইরকম অসহায় হতে পারে?' 

"না একদম না তিস্তা, কাঁদিস না আর কে বলেছে তুই সেই নিজের কাজটা করতে পারিস নি...?", দীপা বলে উঠল |

"আমি তো পারিনি দীপা দি...আমি তো...." 

"পেরেছিস কি পারিসনি সেটা পরে বোঝা যাবে সোনা"

"না দীপা দি, আমি মরতে চাই..আমি আর বেঁচে থাকতে চাইনা..."

"তিস্তা, মোড়ে যাওয়াটা অনেক সহজ, বেঁচে থাকাটা তার থেকে অনেক বেশী কঠিন....আর মরবারি ইচ্ছা থাকলে রুদ্র তোকে নিজের রক্ত দিতে গেল কেন..?" 

দীপার এই কথা শুনে এক মুহূর্তের জন্য নিজের কান্না থামিয়ে দীপার দিয়ে তাকিয়ে সে বল,"রুদ্র, আমায় রক্ত দিয়েছে?", তারপর রুদ্রর দিকে তাকিয়ে বলল,"তুমি আমায় নিজের রক্ত...."

"হ্যাঁ, কি আর করবো বলও সামনাসামনি কোন ব্লাড ব্যাঙ্ক খুঁজে পেলাম না যে | তবে তোমার মতন লারা ক্রাফটের এক কাপ রক্ত পেলেই হয়ে যেত, তাই না?" ঠাট্টা করে বলে উঠল রুদ্রর |

তিস্তা নিস্পলক দৃষ্টিতে রুদ্রর দিকে তাকিয়ে থেকে বলল,"তোমরা দুজনেই আমায়....খুব..." বলে কিছুক্ষণ থামল তিস্তা, তারপর বলল "কি নিয়ে কথা বলছিলে তোমরা ..?" 

"ওসব থাকনা আজকে, তোমাকে আজ আর অত স্ট্রেস নিতে হবে না... "

"না না বল আমায় আমি....একদম ঠিক আছি",বলে উঠে বসতে চাইল তিস্তা কিন্তু দীপা আবার ওকে ধরে সুইয়ে দিলো|  

"না না উঠবি না, কিছু বলার হলে শুয়ে শুয়ে বল। আমরা পাণ্ডে-জির সেফ হাউসের ব্যাপারে...কথা বলছিলাম "

"হ্যাঁ, তুমি ঠিকই আন্দাজ করেছ....দীপা দি, পাণ্ডে-জির ওখানে একটা সেফ হাউস আছে আর তাতে খাবার থেকে আরম্ভ করে অস্ত্র শস্ত্র সব কিছুই স্টক করা আছে আর ওইটার ব্যাপারে কেউ জানে না.." 

"মানে ভালো সেফ হাউস তো? এই ভাগাড়ের মতন নয়তো ?", রুদ্র বলে উঠল| 

"এইটা ভাগাড় নয় রুদ্র, ভাগাড় দেখলে তুমি বুঝতে পড়তে.....তবে ওই যে বললাম সেটার লোকেশান.....সেটা কোথায় আছে সে সবের ব্যাপারে কেউ জানে না"

"তুমিও জানো না...?" 

"জানি মানে...যেটুকু জানার | জায়গাটা....মোস্টলী ওই বরাকরের কাছাকাছি কোথাও তবে এক্স্যাক্টলি কোথায় না জানলেও.....এই টুকু বলতে পারি যে ওটা একটা রিসোর্টের মতন, খুবই ভালভাবে লুকানো আর....খুবই নিরাপদ ও সুরক্ষিত..."

"ঠিক আছে...কিন্তু আমরা সেটা খুঁজে পাবো কি ভাবে? খুঁজে পেলেও সেখানে অন্য কেউ থাকলে তারা কি আমাদের ঢুকতে দেবে?", রুদ্র পাস থেকে বলে উঠল| 

"রুদ্র...ওই জায়গাটার ব্যাপারে বস ছাড়া আর কেউ অবগত নয় সুতরাং ওই জায়গা কারুর দখলে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে, তবে হ্যাঁ, খুঁজে পাওয়ার ব্যাপারটা, জায়গাটা খুঁজে বার করাটা খুবই চ্যালেঞ্জিং হবে", তিস্তা শুয়ে শুয়ে বলে উঠল| 

"তোমাকে কি সেই ব্যাপারে আর কোন ক্লু দিয়েছিলেন পাণ্ডে-জি?" দীপা প্রশ্ন করে উঠলো "মানে কি ভাবে..." 

"না...আর কিছু জানি না আমি দীপা দি....." তিস্তা বলে উঠল তারপর হঠাৎ দীপার দিকে মাথা ঘুরিয়ে আবদারের সুরে বলে উঠল "দীপা দি....কিছু খেতে দেবে....খুব খিদে পেয়েছে আমার...."

দীপা বসে বসে সেই সেফ হউসের ব্যাপারে ভাবছিল, এমন সময় তিস্তার কথায় সম্বিত ফিরতেই সে বলে উঠল, "ওই দেখেছো, ভুলেই গেছিলাম আমি....তবে আজকে তো নরমাল খাবার নয় তিস্তা..." বলে টেবিলের ওপরে রাখা আরও একটা স্যালাইনের বোতলের দিকে ইশারা করল সে

"ওটা...ওটা কোথা থেকে পেলে তুমি? এখানে তো....ওসব কিছু থাকার কথা নয়..." 

"না..না ওসব আমার রুদ্র নিয়ে এলো সকালে, শহর থেকে", বলে রুদ্রর দিকে তাকাল দীপা | 

দীপার কাছে সেই কথা শোনার পর নিজের হাত দুটো কে কোনও ভাবে জোর করে তিস্তা বলে উঠল ,"তোমাদের এই ঋণ আমি কোনোদিন শোধ করতে পারবোনা...."  

"এখানে ঋণের কথা আসছে কোথা থেকে আসছে তিস্তা? তুই আমাদের বডিগার্ড না...তুই যদি নিজেই এত ভেঙে পড়িস, তাহলে আমাদের কি হবে বল তো", দীপা বলে উঠল| 

"ঠিক....", চোখের জল মুছতে মুছতে বলে উঠল তিস্তা," তবে আজকে আমি তোমাদের দুজনকে কথা দিচ্ছি, আমি বেঁচে থাকতে তোমাদের গায়ে আর একটাও আঁচড় লাগতে দেব না..."

"আচ্ছা..আচ্ছা ঠিক আছে তাই হবে....তবে এখন রেস্ট কর আর রু তুই আমার সঙ্গে বাইরের ঘরে চল, এখানে বসে থাকলেই ও আমাদের সাথে কথা বলতে চাইবে....ওকে একটু রেস্ট করতে দে",বলে তিস্তার পাশ থেকে উঠে বাইরে চলে গেল দীপা | রুদ্রও দীপার দেখাদেখি সেখান থেকে বেরিয়ে বাইরে সামনের ঘরে একটা স্প্রিং বের করা সোফার ওপর বসলো | 

দীপা এসে রুদ্রর পাশে বসে ওর কাঁধে নিজের মাথা এলিয়ে দিল|

"ও যে রিকোভার করছে সেটা দেখে আমার খুবই ভালো লাগলো..." রুদ্র বলে উঠল|

"হ্যাঁ আর সেই থ্যাংকসটা তোকে দেওয়া দরকার"

"না আমাদের দুজনকেই দেওয়া দরকার....."

"ঠিক আছে.....তবে এইবার আমাদের পরের স্টেপটা ভাবতে হবে রু...." কাঁধ থেকে মাথা তুলে রুদ্রর দিকে তাকিয়ে বলে উঠল দীপা|

"হম কিন্তু, আমরা এই হাওড়াতে বসে থেকে ওই জায়গাটা খুঁজে পাবো না,তাই... "

"হ্যাঁ এটা ঠিকই যে এখানে বসে থেকে আমাদের কোনও লাভ হবেনা" 

"তাহলে চলো বরাকরে যাই, সেখানে গিয়ে খোঁজাখুঁজি করবো আমরা", ঠাণ্ডা ভাবে বলে উঠল রুদ্র| 

"কিন্তু তিস্তাকে নিয়ে এই কন্ডিশনে কি করে...? কোথায়? এখন ও খুবই উইক...ওকে নিয়ে এখন..."

'আজকেই যেতে হবে সেটা আমি বলছিনা, এমনিতেও সব কিছু জোগাড়যন্ত করতেই দিন কতক লেগে যাবে"

"হ্যাঁ....আর তার মধ্যে ও নিজের সেই হারানো স্ট্রেনথটা ফিরে পাবে..."

"কিন্তু ওর মনোবলটা একদম ভেঙে গেছে....কালকের ওই ঘটনার পর...", রুদ্র আহত গলায় বলে উঠল । তিস্তার সেই অবস্থা দেখে সে নিজেও মনে জোর পাচ্ছিলো না । 

"হমমম.... মন ভেঙে যাওয়ারই কথা রু, নিজের কোনও কাছের মানুষ চলে গেলে শরীর কি, মনও ভেঙে চুরমার হয়ে যায় | এই ধর কলাকে যদি পাণ্ডে-জির সাথে আমিও মোড়ে...."

"না...না...! ডোন্ট দীপা প্লিজ! কালকে যে আমি কতটা ভয় পেয়েছিলাম সেটা তুমি আন্দাজ করতে পারবে না....", বলেই হঠাৎ দীপাকে জড়িয়ে ধরে রুদ্র আবার বলল, "তুমি...তুমি চলে গেলে আমি তো শেষ হয়ে যাবো দীপা, আমি যে একেবারে অনাথ হয়ে যাবো..." 


কালকের সেই ভয়াবহ ঘটনার পর এরকম কিছু রুদ্রকে বলা তার ঠিক হয়নি, দীপার এই অনুসূচনা হতেই সে সাথে সাথে রুদ্রকে নিবিড় ভাবে জড়িয়ে ধরে বলল:  

"আমি তো এখানেই আছি সোনা, তোমার কাছে...",বলে রুদ্রর ঠোঁটের ওপর নিজের ঠোঁট স্পর্শ করলো দীপা | 

প্রেমিকার কোমল ঠোঁটের স্পর্শ পেয়ে রুদ্র এবার আস্তে আস্তে নিজের ঠোঁট মেলে ধরে নিজের  জিভ দিয়ে দীপার জিভ স্পর্শ করল তারপর একে অপরকে শরীরে মিশে গেলো | নিজের কামনাকে আর রুখতে না পেরে এবার সোজা দীপাকে ঠেলে সোফায় শুইয়ে দিয়ে ওর ঠোঁটে ঘাড়ে গলায় পাগলের মতন চুমু খেতে আরম্ভ করল রুদ্র | সেই সাথে দীপার ভারী মাইজোড়াকে নিজের হাতে পেষণ করতে করতে আস্তে আস্তে দীপার পরনের ড্রেসটা তুলতে লাগলো | দীপাও রুদ্রর প্যান্টের ওপর দিয়েই ওর খাঁড়া লিঙ্গের ওপর নিজের হাত রেখে ঘষতে ঘষতে কামোত্তেজনায় ওর ঠোঁটে কামড়ে ধরল | প্রায় সেই চরম মুহূর্তে পৌঁছে রুদ্র এবার নিজের প্যান্ট খুলে নামাতে যেতেই দীপা তাকে বাধা দিয়ে বলল: 

"মমমম....রু...আহঃ...আজ নয়..মমম....আহ্হ্হঃ....আজকে আমাদের কাজ করতে হবে সোনা..আজকে", শীৎকার নিতে নিতে বলে উঠল দীপা|

"এইতো মমম... কাজ করছি তো", বলে দীপার ঘন বালে ভরা যোনির মুখে আঙ্গুল দিয়ে ঘষতে লাগলো রুদ্র|

"আহ্হ্হঃ মাগো!....সোনা প্লিজ উহঃ উঃ.... আজকে রাতে আমাকে...আমাদেরকে এখন থেকে বেরোনোর উহ্হঃ...প্ল্যান করতে হবে রু..মমম ,আহ্হ্হঃ উই হ্যাভ টু গেট আউট অফ কলকাতা মমম...", দীপার কথা কানে যেতেই নিজের কাজ থামিয়ে দিলো রুদ্র: 

"ধুর দিলে তোহঃ মুডটা খারাপ করে? ",হাঁপাতে হাঁপাতে বলে উঠল রুদ্র|

'মমম...প্লিজ বাবু!  প্ল্যান..একটা হোক, তারপর যত ইচ্ছা..."

"ঠিক আছে, কিন্তু এখান....থেকে বরাকরে কিসে করে যাব আমরা...?", রুদ্র বলে উঠল|
[Image: Nep5awV.png]
[+] 6 users Like Anuradha Sinha Roy's post
Like Reply
#94
Thanks for the update and your comeback.
[+] 1 user Likes A.taher's post
Like Reply
#95
welcome back mam.....❤️❤️❤️
[+] 1 user Likes Maleficio's post
Like Reply
#96
Welcome back dear
[+] 1 user Likes Rancon's post
Like Reply
#97
আমাদের মাঝে ফিরে আসার জন্য ধন্যবাদ
[+] 1 user Likes Raj Pal's post
Like Reply
#98
Khub valo laglo
[+] 1 user Likes chndnds's post
Like Reply
#99
পর্ব ২৬

রুদ্রর সেই প্রশ্নের উত্তর অপেক্ষা করছিলো তাদেরই সেই সেফ হাউসে, তবে সেটাকে খুঁজে পেতে একটু অসুবিধাই হয়েছিল ওর | কাজের জিনিসপত্র খুঁজতে খুঁজতে সেফ হাউসের ঠিক পিছনদিক লাগোয়া একটা ভাঙা গ্যারাজের মধ্যে একটা আদ্যিকালের মারুতি ৮০০ আবিষ্কার করেছিল রুদ্র | 

গাড়িটার এক্সটিরিয়ার আর ইন্টিরিয়ারের অবস্থা ভালো না থাকলেও, গাড়ির ইঞ্জিনটা তখনও বেশ চাঙ্গাই ছিল । কয়েকবার স্টার্ট দিতে গিয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর, খুব ধর্য্য নিয়ে রুদ্র সেটাকে টিউন করে আরো কয়েকবার চেষ্টা করতেই সিংহের ন্যায় গর্জে উঠল গাড়ির ইঞ্জিনটা| 'এই নাহলে মারুতি!', বলে রুদ্র হেসে উঠল| গাড়ির হেডলাইটসগুলো বাদ দিয়ে বেশিরভাগ ইলেক্ট্রিকালস ঠিকঠাকই চলছিল | রুদ্র এবার উঁকি মেরে ফুয়েল গেজের দিকে তাকাতেই বুঝলো যে তাতে যতটা তেল দেখাচ্ছিল তাতে তাদের গন্তব্যে পৌঁছনো অসম্ভব | তবে, সামান্য কিছু রিপেয়ারস করা গেলে, যেমন টাইয়ার্সগুলো পাল্টালে, কিছুটা ডিসেলের ব্যবস্থা করা গেলে, গাড়িটাকে চলার মতন বানাতে আরও কিছুদিন সময় লেগে যাবে ওর | 

সাত দিন পর, একটার পর একটা প্ল্যানের ট্রায়েল দিতে দিতে, তারা শেষমেশ একটা ফাইনাল প্ল্যান বানিয়েই ফেললো | এরি মধ্যে তিস্তাও অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠল আর সবাইকে খুব অবাক করে দিয়ে তার ক্ষতটাও খুব দ্রুত সেরে উঠতে আরম্ভ করল | ওদিকে রুদ্রও এদিক ওদিক থেকে গাড়ির পার্টস জোগাড় করে গাড়িটাকে চলমান করতে সক্ষম হল| একে একে নিজেদের সব দরকারি সামগ্রী নিয়ে এসে নিজেদের অভিজানের প্রস্তুতি করে চলল, তবে ওরা চেষ্টা করলো যতটা হালকা ভাবে জিনিসপত্র নেওয়ার যাতে বিপদের মুখে পড়লে সব কিছুই নিজেদের সঙ্গে নিয়ে পালতে পারে |

তখন দুপুর গড়িয়ে সবে বিকেল হয়েছে, রুদ্র তাদের বাড়ির সদর দরজাটা ফাঁক করে একবার বাইরের পরিস্থিতি দেখে আবার দরজাটা বন্ধ করে দিলো | তারপর ভেতরের ঘরে ঢুকে সেই দরজাটাও বন্ধ করে দিলো |

"কিরে, সব ঠিকঠাক আছে তো...?" দীপা প্রশ্ন করল | 

"রোজ রোজ এই একই জিনিস করার কোনও মানেই নেই দীপা...এখানে কেউ আসবেনা....", রুদ্র বলে উঠল | 

"না তবুও....এই প্ল্যানটা কাউকে জানতে দেওয়া চলবে না...", বলে বাকি দুজনের দিকে তাকাল দীপা | রুদ্র তিস্তার পাশে দেওয়ালে হেলান দিয়ে বসল |

"সো....প্রথমে আমরা ওই গাড়িটা করে হাওড়া স্টেশন অব্দি যাবো.....কিন্তু, আমার খুব সন্দেহ আছে যে সেটা আমাদের কতদূর সাহায্য করতে পারবে | ওটার অবস্থা দেখে আমি খুব একটা কনফিডেন্স পাচ্ছি না রুদ্র"

"ওটা নিয়ে চিন্তা করোনা দীপা, যখন চালাবো দেখবে রাস্তা দিয়ে উড়বে" রুদ্র বলে উঠল | 

"ওইটারই ভয় পাচ্ছি আমি রুদ্র, শেষে গুণ্ডাদের হাতে না মোরে, গাড়ি এক্সিডেন্ট হয়ে মরলে তো..."

"না না দীপা-দি, রুদ্রর ওপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে ", পাশ থেকে তিস্তা বলে উঠলো |

"সেটা আমারও আছে তিস্তা কিন্তু ওই গাড়িটার প্রতি...."

"ব্যাট দীপা, হাওড়া কেন? আমরা তো আরো কিছুটা এগিয়ে যেতে পারি, তাই না? গাড়িতে যা তেল আছে তাতে আমার আন্দাজ, বর্ধমান অব্দি যেতে পারবোই...", রুদ্র বলে উঠল | 

"এই ব্যাপারে আমরা কালকেও আলোচনা করেছি রুদ্র, তাই আমি আর রিপিট করবোনা সেগুলো, ঠিক আছে...?", বলে একটু বিরতি নিয়ে আবার দীপা বলল, " হ্যাঁ, কোথায় ছিলাম আমরা যেন...হমমম, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আমরা হাওড়া স্টেশন অব্দই ওই গাড়িটা করে যাবো, তারপর"

"তারপর...ওখানে কিছুক্ষণ ওই ভিড় ভাটটার মধ্যে ঘুরবো, মানে যদি কেউ আমাদেরকে ফলো করে তাদের সেখানে ধাপ্পা দেওয়ার জন্য....", তিস্তা বলে উঠল | 

"আর খাওয়া দেওয়ার ব্যাপারটা আমরা বাড়ি থেকেই সেরে যাবো তো?", হাতের ওপর বসে থাকা মশাটাকে মেরে বলে উঠল রুদ্র ।

"রুদ্র, খাওয়া দাওয়া ইস সেকেন্ডারি" 

"হমম, রাইট ইউ আর দীপা দি, তবে পেটে খিদে থাকলে মাথা কিন্তু কাজ করবেনা....." তিস্তা বলে উঠল | 

"হ্যাঁ সেটা ঠিক. কিন্তু আমার চিন্তা সেই ভিড়টাকে নিয়ে | ওখানে যেমন সুবিধা তেমনি অসুবিধাও আছে | বেশি ভিড়ভাট্টায় পড়লে আমাদের বিপদ বেড়েও যেতে পারে... কেউ যদি আমাদের চিনে..."

"সে সব নিয়ে কোনও চিন্তা করো না দীপা দি, আমার সঙ্গীরা সর্বদা আমার সঙ্গেই থাকবে", বলে নিজের দুই উন্মুক্ত উরুর ওপর লাগানো হোলস্টার থেকে নিজের সঙ্গীদের তুলে ধরল তিস্তা | আর সেই সাথে, ভাঙা জানালার কাঁচের মধ্যে দিয়ে শেষবেলার এক ফালি রোদ এসে সেগুলোর ওপর পরতেই ঝলমল করে সেই দুটো ।

"হমম...তুই আছিস বলে আমার ভয়টা একটু কম লাগছে তিস্তা, তুই আমাদের পাশে থাকলে আমাদের ক্ষমতা দিগুন হয়ে যায়"

"অরে দীপা দি, আমি একা কিছুই না । আমরা তিনজনে একটা টিম আর টিমের সবাই ঠিক করে নিজেদের রোল প্লে করলেই সব বিপদই মোকাবেলা করতে পারবো আমরা..."

"একদম, তাহলে কোথায় ছিলাম যেন....হ্যাঁ, ওখানে একটা জায়গা দেখে আমরা গাড়িটা ডাম্প করবো....তারপর রেল স্টেশন থেকে লোকাল ট্রেনে করে সোজা সুজি বেরিয়ে যাবো বর্ধমানের উদ্দেশে তারপর..."

"তারপর বর্ধমানে নেমে সেখান থেকে আবার একটা লোকাল ট্রেন ধরে আসানসোলের দিকে রওনা হবো আমরা", তিস্তা বলে উঠল । এতক্ষন ধরে চুপচাপ থাকার পর রুদ্র এবার তিস্তার কাঁধে নিজের মাথা এলিয়ে দিয়ে বলল: 

"ডাইরেক্ট কোনও ট্রান্সপোর্ট নেই? মানে বর্ধমান টু বরাকর....ব্রেক জার্নি করলে আমাদেরই অসুবিধা হবে, তাই না?"

"না রুদ্র...লাস্ট বার গেছিলাম যখন তখন দুটো মাত্র ট্রেন চলছিল, তোকে বলেও ছিলাম মনে হয় | তাই...বুঝতেই পারছিস..আর ব্রেক জার্নি করলে সব সময় যে অসুবিধা হবে তার কোনও মানে নেই...." শার্পলি বলে উঠল দীপা | 

"ওকে দেন", রুদ্র বলে উঠল, "তাহলে আসানসোল থেকে...."

"আসানসোল পৌঁছে, হয় ট্রেন বা বাস..কিন্তু রাস্তার যা অবস্থা বাস আর মনে হয় না চলছে, তাই ট্রেনেই যেতে হবে আমাদের...", দীপা নিজের কথা শেষ করেছে কি করেনি হঠাৎ 'ঠকক ঠকক' করে ওদের সামনের জানালায় একটা আওয়াজ হল | তিস্তা চকিতে নিজের বন্দুকগুলোকে বের করে আওয়াজ লক্ষ্য করে জানালার দিকে তুলে ধরল |

কিছুক্ষন নিস্তব্দ থাকার পর, আবার সেই আওয়াজ হল| রুমের মধ্যে তখন সবাই নিঃশব্দে নিজেদের মধ্যে ইশারায় কথা বলেছে| 

"রু....রু, বাথরুমে....জানালা....দিয়ে...আস্তে আস্তে", ফিসফিস করে বলে উঠলো দীপা | সেই মতন পা টিপে টিপে মেঝে থেকে উঠে বাথরুমে গিয়ে খুবই সন্তর্পনে বাথরুমের জানালাটা একটু ফাঁক করল রুদ্র| আর সেটা করতেই জানালার বাইরের সেই জিনিসটাকে দেখতে পেল রুদ্র | জিনিসটাকে দেখে বেশ অবাক হল সে ।

রুদ্র রুমে ফিরে এসে,"দীপা....এইদিকে এস", বলে দীপাকে ডাক দিতেই দীপা আস্তে আস্তে উঠে তার সাথে গেল | বাথরুম পৌঁছে জানালাটা ফাঁক করে সেটা দিয়ে বাইরের দিকে উঁকি মারতেই  একটা ছোট কালো রঙের পাখিকে দেখতে পেল দীপা| 

"পাখি..! আমি ভাবলাম কি না কি.....কিন্তু পাখি কি করে...?" দীপা বলে উঠলো |

"ওটা পাখি না দীপা, ওটা একটা ড্রোন....." গম্ভীর গলায় বলে উঠলো রুদ্র | 

"ড্রোন! কিন্তু কোথা থেকে? কে পাঠিয়েছে....? কি করে জানল আমরা এখানে আছি....?" দীপা প্রশ্ন করল | 

"কেউ জানে না বলেই ওইটা এসেছে...ওটা একটা রিকন ড্রোন...ওটার কাজই হচ্ছে, না ছিলো, সব জায়গা ঘুরে ঘুরে সব কিছু রেকর্ড করাবার, ডিফেন্স টেকনোলজি..."

"কিন্তু কেউ না পাঠালে, ওটা নিজে থেকেই..."

"হ্যাঁ ওটা নিজে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে, যতদিন ওটার ব্যাটারি থাকবে ততদিন ওটা এইরকমই ঘুরে ঘুরে বেড়াবে, জাস্ট লাইক এ রিয়েল বার্ড | তবে এখন আর ছবি ওঠেনা মনে হয়, কারণ ছবি তোলার সময় ওর ডানার শেষের অংশে লাইট জ্বলে| ওটার দ্যাখো জ্বলছে না| ওটার আর রিকন করার ক্ষমতা নেই", রুদ্রর নিজের কথা শেষ করতে না করতে ড্রোনটা এক লাফে পাশের জানালার সামনে থেকে উঠে আবার আকাশের দিকে উড়ে চলে গেল| 

"পুরো পাখির মতন দেখতে, তাই না....?" 

"হমম..."

"তবে, এখন আর পাখি দেখতে পাস রু...?"

"না, যুদ্ধ পর আমি আর একটাও পাখি দেখতে পাইনি| আর সত্যি বলতে ওটাকে না দেখলে, পাখি যে কেমন দেখতে হয় সেটা আমি ভুলেই গেছিলাম", হতাশ কণ্ঠে বলে উঠল রুদ্র| 

"স্পয়েলস অফ ওয়ার, চল....ঘরে চল রু, তিস্তা ওয়েট করছে ",দীপা বলে উঠল| 

ওরা আবার ঘরে ঢুকতেই, তিস্তা প্রশ্ন করল: 

"কে ছিল ওটা, দীপাদি....?"

"কে নয়, কি | ড্রোন, তবে ওল্ড জেনারেশন..." শান্ত গলায় বলে উঠল রুদ্র |

"ড্রোন?"

"হ্যাঁ, তবে  ওসব কথা থাক  এখন। আসানসোল থেকে আমরা বরাকর যাবো তারপর ওখানে সেলেব্রেশন হোটেলে গিয়ে উঠবো...."

"সেলেব্রেশন হোটেলে গেলেই ঢুকতে দেবে ওরা...? আমাদের বুকিং...."

"হ্যাঁ ঢুকতে দেবে, ঢোকার মুখে রিসেপ্সানে একটু বেশী করে টাকা খাইয়ে দিলেই আমাদের রুম দিয়ে দেবে। তারপর ওখানে কিছুদিন থেকে, নতুন ক্লুএর সন্ধান করবো আমরা", বলে একটু থামল দীপা, তারপর আবার বলল, "ব্যাস, একটুকুই আপাতত আমাদের প্ল্যান, দুজনেই ক্লিয়ার তো?"

"ক্রিস্টাল..", তিস্তা বলে উঠল...তারপর উদাসীন কণ্ঠে বলল,"জানতো দীপা দি, বস যদি এখানে থাকতেন তাহলে আমাদের এই প্ল্যান করা দেখে খুব খুশি হতেন" 

"হমম, নিশ্চয়ই", দীপা বলে উঠল, "কালকে ভোরের আলো ফোটার আগেই, আমরা বেরিয়ে পড়বো..."

রাত্রে শুতে যাওয়ার আগে পরের দিনের প্ল্যানটা আরেকবার ঝালিয়ে নিলো ওরা, তারপর যে যার মতন শুয়ে পড়লো| তবে শুলেও পরের দিনের কথা ভেবে উত্তেজনায় দুটো চোখের পাতা এক করতে পারলো না ওদের মধ্যে কেউই | ঘড়িতে ঠিক চারটে বাজতেই তিনজনে বেরিয়ে পড়ল বরাকরের উদ্দেশে |

"কি বলেছিলাম না? গাড়ি উড়ে চলবে...", রুদ্র গর্বে বলে উঠলো | 

ওরা সবেমাত্র এক কিলোমিটার গাছে কি যায়নি এমন সময় দীপা হঠাৎ বলল, "রুদ্র, আমি প্ল্যানে স্লাইট চেঞ্জ করেছি..." 

"কি? মানে? চেঞ্জ, এই এলেভেণথ আওড়ে এসে? কিন্তু কেন....?", গাড়ি চালাতে চালাতে চেঁচিয়ে উঠল রুদ্র| 

"রাস্তার দিকে দ্যাখ রুদ্র...আর ওটা করেছি ডাইভারশনের জন্য...."

"কিন্তু কি চেঞ্জ....করলে?" 

"সামান্য...আমরা এই গাড়িটা করে হাওড়া যেতাম, কিন্তু এবার আমরা এটা করে ডিরেক্ট শেওড়াফুলি যাবো, সেখানে গিয়েও সেই আগের প্ল্যান মাফিক গাড়িটা একটা জায়গায় ডাম্প করে, তিনজন তিনদিকে চলে যাবো....মানে তুই আমাদেরকে এক জন এক জন করে গাড়ি থেকে নামাতে নামাতে যাবি| শেষে নিজে নেমে তুই একদিকে, আমি অন্যদিকে আর তিস্তা আরেক দিকে চলে যাবো...." দীপা বলে উঠল | 

"শেওড়াফুলি? দা ফাক! হঠাৎ শেওড়াফুলি কেন? ওখানে কি আছে?" 

"শেওড়াফুলি কারণ, ওটা একটা জনক্শন পয়েন্ট | আমি প্রোবাবিলিটি খাটিয়ে দেখেছি যে, হাওড়ায় আমাদের কেউ চিনলেও চিনতে পারে, কিন্তু ওখানে কেউ আমাদের চিনবে না | মোরভার, ওখানে ভিড়েও আমরা গা ঢাকা দিতে পারি আর ভিড়টাও বেশি হবে না |" 

"দেখলে তো? সেই আমার কথাই ফলো করলে, বলছিলাম চলো বর্ধমান চলে যাই, কিন্তু নাহঃ! গাড়ি উড়ে যাবে...", রুদ্র বলে উঠল, " বাইদা ওয়ে, ওখানে গিয়ে করবো কি আমরা?" 

"ঘোরাঘুরি করবো, তারপর ঠিক দু ঘণ্টা বাদে, সবাই স্টেশনে ঢুকবো, তবে এক সাথে নয়, তিনজন আলাদা আলাদা...", দীপা বলে উঠল | 

"আবার আলাদা আলাদা কেন, ওখানে আমাদের কে চিনবে?", রুদ্র বিরক্ত হয়ে বলে উঠল | 

"জানি না, তবে স্টেশনের ভেতরে ঢুকবো নিজেদের মধ্যে ডিসটেন্স বজায় রেখে..যাতে না কেউ আমাদের একসাথে বলে সন্দেহ করে..." বলে দীপা থামল |

"সে নয় হল, কিন্তু ট্রেন কখন...?"

"সাড়ে নটায়, তাই কোনও অসুবিধে হবে না....", পেছন থেকে তিস্তা বলে উঠল | 

প্ল্যান অনুযায়ী ওদের শেওড়াফুলি স্টেশনের কাছাকাছি পৌঁছতে লাগলো দেড় ঘণ্টা | প্ল্যান মাফিক একজন একজন করে নামাতে নামাতে চলল রুদ্র| প্রথমে তিস্তা, তারপর দীপা, দুজনেই নেমে গেল | তবে নামার আগে দীপা বলল:  

"ঠিক দেড় ঘন্টা পর, মনে থাকে যেন, তোর কাছে ফোন আছে আর আমাদের কাছে ঘড়ি...", বলে হনহন করে হাঁটতে হাঁটতে কোথায় অদৃশ্য হয়ে গেল দীপা | রুদ্র আরো কিছুটা গিয়ে, গাড়িটাকে ঝোঁপজঙ্গল দেখে এক পাশে ডাম্প করে সেটাকে শেষ বিদায় জানিয়ে নেমে পড়লো |

দু পা হাঁটতেই সামনেই শেওড়াফুলি স্টেশন দেখতে পেলো রুদ্র | 'শালা, এই সকালেও এত ভিড়!', মনে মনে বলে উঠল রুদ্র | রুদ্র ভালো করে স্টেশনের ঢোকার জায়গাটা দেখে নিয়ে এবার অন্যদিকে হাঁটা লাগল | আকাশে তখন হালকা আলোর রেশ ফুটেছে | 

রাস্তা ধরে হাঁটতে হাঁটতে একটা পরো বাজারে এসে পৌঁছলো রুদ্র | সেই জায়গার অবস্থা দেখে তার মনে হল যেন পৃথিবীর সমস্ত মানুষ সেইখানে এসেই যেন উপস্থিত হয়েছে | পেন থেকে পেন্সিল, রোল থেকে রুলার সব কিছুই বিক্রি হচ্ছে সেখানে| 'এত সকালেও এখানে এত লোকজন কেন?'  

কোন রকমে ভিড় ঠেলে বাজারে ঢুকল রুদ্র| বাজারে ঢুকে বুঝল যে, এই জায়গায় সব জিনিসপত্রের দাম কম, মানে তাদের শহরের তুলনায় অনেকটাই কম | আর দাম কম দেখে দরকারি কিছু জিনিসপত্র কিনে ফেলল ও। এই দোকান, সেই দোকান ঘুরে জিনিসপত্র দেখতে দেখতে অবশেষে  ক্লান্ত হয়ে পড়লে, সেই ভিড় থেকে বেরিয়ে কিছুটা হেটে গিয়ে, একটা দোতলা বাড়ির রোয়াকে গিয়ে বসল রুদ্র | কিছুক্ষণ সেখানে বসে জিরতে লাগল ও| 

"আরে এটা কে গো রুপা...? ওহঃ এতো হ্যান্ডউ বাবুজে", পাশ থেকে মেয়েলী কণ্ঠে কেউ একজন বলে উঠল | হঠাৎ সেই কণ্ঠ শুনে রুদ্র একটি থতমত হয়ে গেল, তারপর নিজেকে সংযত করে সেই আওয়াজ লক্ষ্য করে নিজের মাথাটা সেই দিকে ঘোরাতেই, দুজন মহিলাকে দেখতে পেল সে । তারা দুজনেই সেই রোয়াকের সংলগ্ন সদর দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে | রুদ্র তাদের দুজনের দিকে তাকিয়ে লক্ষ করল যে দুজনেরই বেশে কেমন একটা উগ্রতা আছে | তাদের দুজনেরই পরনে সারি কিন্তু বেশে চকচকে জাতীয় আর দুজনেরই বেশ মেকাপ করা | 

ওদিকে রুদ্রকে তাদের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে ওদের মধ্যে একজন বলল: 
"কি গো বাবু, কি দেখছো অমন করে? আগে কোনোদিন মেয়েছেলে দেখোনি নাকি?" বলে খিলখিল করে হেসে উঠে রুদ্রর পাশে এসে বসল সেই মহিলাটি, তারপর আবার বলল, "কি গো বাবু, এখানে এই সময়ে তুমি বসে আছো যে? রাতের জন্য তস সইছে না বুঝি...?" 

রুদ্র খুবই অপ্রস্তুত হয়ে বলল,"মা...মানে কিসের..?" 

"এরে বাবা, এইখানে এসে কারা বসে সেটা জানো না বুঝি, নেকু কোথাকার", বলে রুদ্রর উরুর ওপর নিজের হাত রাখল সেই মহিলাটি, আর হঠাৎ সব কিছু জলের মতন পরিস্কার হয়ে গেল রুদ্রর কাছে | 

রুদ্র বলল : "ওঃ সরি, আমি বুঝতে পারিনি একদম! আমি এখানে....আমি যাই হ্যাঁ"

এই বলে সেখান থেকে উঠতে যেতেই পাশে বসে থাকা সেই মহিলাটি ওর পথ আটকে বলল,"এখানে কেউ কখনো ভুল করে আসেনা বাবুগো, কিন্তু তোমাকে দেখে ভদ্দরলোক বলেই মনে হচ্ছে | তবে তুমি এখানে, মানে রুপার ডেরায় এসেছ যখন, তখন তোমাকে খালি হাতে ফিরতে দেবো নাকো আমরা..."

"না না! আপনাদের ভুল হচ্ছে কোথাও! আমি আর আমার, তারা আছে, আমি যাই...."

"আরে বাবু, তুমি এখানে এসে এইরকম ভাবে চলে গেলে রুপার খুব খারাপ লাগবে, কি তাই না রুপা দি..?" 

"হ্যাঁ রে লিপা! এই দেখ, আমি কাঁদছি! ভেউ ভেউ ভেউ", বলে উঠতেই আবার ওরা দুজন খিলখিল করে হেসে উঠল | 

ওদিকে রুদ্রর অবস্থা খারাপ, কি করবে, কি বলবে বুঝতে পারছেনা এমন সময় হঠাৎ ওর হাতটা নিজের হাতে চেপে ধরে সেখান থেকে উঠে পড়লো সেই লিপা নামক মহিলাটি, তারপর বলল," ভেতরে চল...." 

রুদ্রর হাতটা ধরে সেই বাড়ির ভেতরে ঢুকল লিপা, তারপর সামনের সিঁড়ি বেয়ে ওপর তলায় উঠতেই আরও কিছু মহিলাদের সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখতে পেলো ওরা | তাদেরই মধ্যে একজন বলল : 

"কি রে লিপা, এখন? এত সকালে? তুই সত্যি শালী...একনম্বরের পিয়াসী" 

"আরে না রে টেঁপি, বাবু রাস্তা ভুলে এখানে চলে এসেছিল....তাই তাকে এখন রাস্তা দেখতে নিয়ে যাচ্ছি", লিপা বলে উঠল আর সেটা শোনামাত্রই সবাই মিলে একসাথে হেসে উঠলো |

"আরে যা..যা, ভাল করে রাস্তা দেখা বাবুকে..."

সামনের করিডোর দিয়ে যেতে যেতে রুদ্র লক্ষ্য করল যে প্রতিটা ঘরের দরজা তখনও লাগান । ওরা হাঁটতে হাঁটতে সেই তলার একদম কোনার শেষ ঘরের সামনে এসে দাঁড়াল| লিপা তারপর সামনের দরজাটা ঠেলতেই দরজাটা খুলে গেল | তারপর রুদ্রকে টেনে ভেতরে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে লাইট আর পাখা চালিয়ে দিলো লিপা।

"এই....এই...এখানে বস বাবু", বলে রুদ্রকে নিয়ে গিয়ে একটা খাটের উপর বসিয়ে দিলো | সব কিছুই এত তাড়াতাড়ি হয়ে যাচ্ছিলো যে রুদ্র ঠিক করে সব কিছু বুঝে উঠতে পারছিল না, তবে মাথা ঘুরিয়ে ঘরের আসবাবের দিকে তাকাতেই নিজেদের সেই বস্তি বাড়ির কথা মনে পড়ে গেলো রুদ্রর | ঘরের মধ্যে সেই পরিচিত দারিদ্রতার ছাপ স্পষ্ট দেখতে পেল সে।

"তবে বাবু....বলো এবার...কি সেবা করবো তোমার....?", লিপার কথায় সম্ভিত ফিরতেই আবার ওর দিকে তাকাল রুদ্রর: 

"না আমার কিছু....."

"আরেহ বাবা....লজ্জা পাচ্ছ কেনও? দাঁড়াও তোমার কাছে যাই", বলে রুদ্রর সামনে এসে দাঁড়ালো লিপা | তারপর হঠাৎ নিজের শাড়ীর আঁচলটা ফেলে দিয়ে বলল, "কি? পছন্দ? দাঁড়াও...", বলে এবার রুদ্র একদম মুখের সামনে এসে দাঁড়াল লিপা| লিপার শরীর থেকে আতরের ক্ষীণ সুবাস পেলো রুদ্র| হয়তো কাল রাতে লাগিয়ে সে| 

"কি গো বাবু...সব কিছুই কি বলে দিতে হবে নাকি....? উফফ ভালো লাগে না আর, এত লাজুক হলে এইখানে কেনও আসো তোমরা, বলতো?", বলেই রুদ্রর হাতটা ধরে নিজের মাইয়ের ওপরে রাখল লিপা | "কি ভালো...ভালো লাগছে বাবু ? আহ্হ্হঃ আরেকটু জোরে টেপ আহঃ"

অনেকদিন বাদে কোনও মহিলাকে স্পর্শ করার ফলে রুদ্রও এবার আস্তে আস্তে উত্তেজিত হতে লাগল, সেই সাথে ওর জড়তাও কাটতে লাগল | এবার লিপার ভারী মাইজোড়া হাতে নিয়ে টিপতে টিপতে তার উন্মুক্ত পেটের ওপর হাত বোলাতে লাগল রুদ্র |

"এইতো...আহ: লজ্জা কাটতে আরম্ভ উঃ করেছে আমার বাবুমশাইয়ের আহহহ....", বলে শীৎকার নিতে লাগলো লিপা |

"এই বাবু....শুধু টিপলেই হবে? এইবার তো আসল কাজটা করতে হবে আমাদের.....তাই না?", বলে বিছানার উপর উঠে বসলো লিপা, তারপর বালিশে হেলান দিয়ে আস্তে আস্তে নিজের সায়াটা হাঁটু অব্দই তুলল । তারপর রুদ্রর দিকে তাকিয়ে দাঁত দিয়ে নিজের ঠোঁটটাকে কামরে ধরল | তারপর আস্তে আস্তে সায়াটা আরও একটু ওপরে তুলতেই রুদ্রর চোখের সামনে রুপার যোনি বেরিয়ে পড়ল| অনেকদিন পর চোখের সামনে যোনিদেশ তও আবার কেশমুক্ত অবস্থায় দেখে রুদ্রর লিঙ্গটা শক্ত হয়ে গেল |  

"আইইই বাবু....কর না গো...ইসসসস", বলে নিজের একটা আঙ্গুল মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে, সেটাকে পিচ্ছিল করে নিয়ে আস্তে আস্তে সেটাকে নিজের ফাটলের ভেতর ঢোকাল রুপা, সেই সাথে 'আহ্হ্হ' বলে শীৎকার করে উঠল | 

সে এমনই দৃশ যেটা দেখে সব পুরুষই কাথ হয়ে যাবে, আর রুদ্রও বাতিক্রম ছিল না । তবে রুদ্রর খাঁড়া হয়ে গেলেও কিছু একটা কারণের জন্য সে নিজের মন থেকে সেই কাজটা করতে মেনে নিতে পারল না |

"এই বাবু....আবার কি হল? এতো লজ্জা তোমার! সত্যি, দাড়াও..." বলে রুদ্র পাশে এসে বসলো লিপা | তারপর ফট করে রুদ্রর প্যান্টের ওপর হাত দিতেই চমকে গেল, "ইসসস বাবু খুব কষ্ট হচ্ছে না তোমার....ইসসসস ওঃ মা গো...কি শক্তই না করে ফেলেছ", বলে রুদ্রর প্যান্টের ওপর দিয়ে ওর বাঁড়ার ওপরটা ঘষা দিতেই আরামে রুদ্রর চোখ বন্ধ হয়ে গেল | সেই ফাঁকে লিপা আস্তে আস্তে রুদ্রর প্যান্টের চেন টানতে যেতেই খপ করে ওর হাতটা চেপে ধরে শান্ত গলায় রুদ্র বলল, "না..."

নিজের জীবনে এই প্রথম কাউকে এইভাবে ব্যবহার করতে দেখে খুবই অবাক হল লিপা | রুদ্রর প্যান্টের ওপর থেকে নিজের হাত সরিয়ে নিয়ে বলল, "কেনও গো বাবু...কোনও অসুবিধা আছে? মানে রোগ টোগ...."

"না...সে সব কিছুনা লিপা দি, আমি জাস্ট এটা তোমার সাথে করতে পারবোনা..", আবার শান্ত গলায় বলে উঠল রুদ্র | 

"কিন্তু কেন বাবু? আমি....আমায় ঠিক লাগছিনা তোমার..? আমার মাইগুলো আগের চেয়ে একটু ঝুলে গাছে ঠিকি, তবে এখনও আমি বেশ টাইট আছি......", বলে আবার নিজের সায়া তুলে ধরে নিজের যোনি রুদ্রর সামনে উন্মুক্ত করলো লিপা| 

"না না লিপা দি, তুমি খুবই সুন্দরি তাতে কোন সংশয় নেই...তবে তোমার শরীরটাকে আমি কোনোমতেই ভোগ করতে পারবোনা| আমি অন্যদের মতন নোই গো..." বলে লিপার সায়াটা ধরে আস্তে আস্তে নীচের দিকে নামিয়ে দিলো রুদ্র|

"তোমাকে টাকা দিতে হবে না বাবু.."

"না, লিপাদি" 

"কিন্তু কেনও?", লিপা উদ্বিগ্ন হয়ে বলে উঠল | 

"শরীর এক জিনিস চাইলেও, মন আরেক জিনিস চায় লিপা দি তাই! আর আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি....."

রুদ্রর কথা শুনে খুবই অবাক হল লিপা | তার যে শরীর দেখলে যে কোনও পুরুষ তার ওপর ঝাঁপিয়ে পরে সেই শরীর দেখে রুদ্রর কাছে সেই কথা শুনে লিপা খুব অবাক হল আর সাথে সাথে রুদ্রর মুখটা নিজের বুকে চেপে ধরে কিছুক্ষণ চুপ করে তাকে জড়িয়ে রইল লিপা, তবে স্নেহ ভোরে| অবশেষে কিছুক্ষন পর আস্তে আস্তে ওকে ছেড়ে দিয়ে ওর সামনে বসে লিপা বলল : 

"তুমি যাও বাবু...এখানে আমাদের মধ্যে তোমার জায়গা নয়...তুমি চলে যাও বাবু...", বলে নিজের মাথা নিচু করে নিলো লিপা | সেই দেখে রুদ্র তার দিকে ঘুরে আস্তে আস্তে তার মাথাটা তুলে তার চোখের চোখ রেখে বলল, "তোমাকে আমি দিদি বলেছি...তাই তো, তাহলে দিদির মন খারাপ হলে ভাইয়েরও মন খারাপ হবে...."

"এই দশ বছর ধরে অনেক লোক দেখেছি বাবু....তবে তোমার মতন লোক কোনদিনও দেখিনি.....তুমি...তুমি এখানে কোথায় এসেছ বাবু...? কথায় থাক", লিপা রুদ্রকে জিজ্ঞেস করল |  

"কোথাও না লিপা দি....আমি এই বাজারে ঘুরছিলাম | একটু পরেই ট্রেনে করে অনেক দূরে চলে যাবো....ক্ষণিকের অতিথি আমি...লিপা দি"

"কাজে যাবে? কবে ফিরবে?"

"হ্যাঁ, কাজে তবে...."

"আচ্ছা...তাহলে যাও বাবু, দেখবে যে কাজ করতে যাচ্ছে সেটাতে নিশ্চই সফল হবে তুমি, এইটি আমি, লিপা বলে দিলুম...", বলে রুদ্রর মাথায় নিজের হাত রাখল লিপা | 

"তাই যেন হয়..লিপা দি...তাই জানো হয়", বলে পকেট থেকে ফোনটা বের করে তাতে সময় দেখতেই রুদ্র বুঝল অনেক দেরি হয়ে গেছে আর সাথে সাথেই বিছানা থেকে উঠে পড়ল| তারপর কি মনে হতে পকেট থেকে কিছু টাকা বার করে লিপার দিকে এগিয়ে দিলো |

"একি ভাই! না..না..আমি ও টাকা নিতে পারবো না...ও টাকা..."

"তোমার ভাই দিয়েছে মনে করে রেখে দাও লিপা দি....", বলে দরজার সামনে গিয়ে দরজার ছিটকিনিটা খুলল রুদ্র, তারপর শেষ বারের জন্য পেছন দিকে ঘুরে বলল "আসছি লিপা দি, আর হয়তো কোনোদিনও আমার সঙ্গে দেখা হবে না, তাই এই ভাইটার কথা ভেবে নিজের খেয়াল রেখো ", বলে দরজা খুলে ঘরের বাইরে বেরিয়ে গেল সে |

ঘরের বাইরে বেরোতেই অন্য মহিলারা ওকে দেখে খিল খিল করে হেসে উঠলো ।

"কি গো বাবু.....আমাদের লিপা সুখ দিলো তো....? কোনও আওয়াজ যে পেলাম না...!", এইরকম নানান কথা রুদ্রর ভেসে এলো, কিন্তু সে তাতে কোনো কান না দিয়ে সিঁড়ি বেয়ে সোজা নিচে নেমে গেল, তারপর বাড়ির বাইরে বেরিয়ে এসে দৌড় লাগলো স্টেশনের উদ্দেশে |

তবে রুদ্রর অজান্তেই সেই পুতুল বাড়ির ব্যালকনি থেকে তার দিকে হাত নাড়লো লিপা, 'তার ভাইয়ের' দিকে। সেটাই হয়তো তাদের প্রথম আর শেষ দেখা |
[Image: Nep5awV.png]
Like Reply
অনেক দিন পর আপনাকে ফোরামে পেয়ে অনেক ভালো লাগছে। আশা করি ভালো আছেন।
এখন পর্যন্ত যেটুকু গল্প আছে আমি আরো অনেক আগেই পড়েছি। আশা করি গল্পের শেষ পর্যন্ত পড়তে পারবো।
পরবর্তী আপডেট এর অপেক্ষায়
লাইক ও রেপু


-------------অধম
Like Reply




Users browsing this thread: