Thread Rating:
  • 19 Vote(s) - 2.37 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Golpo-The Villain (Writer: Nishath Tanveer Nilasha)
#1
পার্ট-০১



প্রায় তিন ঘন্টা স্নেহাকে ''. করলো রুদ্র,  হাজার কষ্ট করে নিজেকে বাচাতে সক্ষম হয়নি স্নেহা, একটা ছেলের শক্তির সাথে কখনো পেরে উঠবেনা একটা মেয়ে,

একটা সময় খুব বেশি ভালোবাসতো স্নেহাকে রুদ্র কিন্তু স্নেহা কোনোদিন বোঝেনি রুদ্রের ভালোবাসা,,,
- রুদ্রের ফোনে স্নেহার বাবার ফোন আসতেই,,
?
রুদ্র ফোন ধরলো,
- কুকুরের বাচ্চা আমার মেয়ে কোথায়?  তুই কি করেছিস আমার মেয়ের সাথে,
- শশুর মশাই আপনি রেগে যাচ্ছেন কেনো? আমি আপনার একমাত্র জামাই হবো, আর নিজের বউয়ের সাথে স্বামীরা কি করে তা আপনাকে কিভাবে বলি( ডেভিল হাসি দিয়ে বললো রুদ্র)
- তোকে আমি দেখে নেবো রাসকেল,
- ওকে আমি খুব তাড়াতাড়ি আপনার মেয়েকে নিয়ে আপনার সামনে হাজির হবো শশুর মশাই আপনি চিন্তা করবেন না, যতোটা কষ্ট আপনি আর আপনার মেয়ে আমাকে দিয়েছেন তার থেকেও হাজারো বেশি কষ্ট আমি ফিরিয়ে দিবো আপনাদের।  ( বলেই ফোন কেটে দিলো রুদ্র)
স্নেহা বিছানায় বসে কেঁদে যাচ্ছে,  রুদ্র স্নেহার কাছে যেয়ে বসলো,
- একদম কাঁদবে না জান, তুমি জানো আমি তোমাকে কতোটা ভালোবাসি। আর আজ যা করেছি তা করতে তোমরা আমাকে বাদ্ধ্য করেছো।
- তুই খুব খারাপ, বাবা ঠিক বলে তোর মতো মানুষ জানোয়ারের থেকেও খারাপ, আমি তোকে ছাড়বো না।
- তাই নাকি জান? আমিতো চাই যেন তুমি আমাকে না ছাড়ো।  তবে কি জানো আগে তোমাকে পাগলের মতো ভালোবাসতাম তবে তোমার দেয়া প্রতিটা কষ্ট আমাকে পাগল বানিয়ে ছেড়েছে। তোমাকে ভালোবাসার অপরাধে আমি আমার জীবনের সব কিছু হারিয়েছি।  হারিয়েছি আমার বাবাকে। জানো তোমার প্রতি আমার যেমন আছে ভালোবাসা তেমনি আছে ঘৃনা।
একদিন এই তুমি আমাকে ''.কারী প্রমান করেছিলে কিন্তু আজ দেখো!!
তুমি নিজেই একটা ধর্ষিতা। কার কাল পরশু সবাই জানবে যে তুমি একজন ধর্ষিতা। আফজাল খানের একমাত্র আদরের মেয়ে ধর্ষিতা এটা যখন সবাই জানবে তখন এই তোমাকে আর তোমার বাবাকে লোকে ছি, ছি করবে। টিভি, নিউজ সব যায়গায় তোমার ''. হবার কাহিনি প্রচার হবে, ( রাগে লাল হয়ে রুদ্র কথাগুলো বললো স্নেহাকে)

রুদ্রের কথা শুনে স্নেহার কান্নারবেগ যেন শতোগুন বেড়ে গেলো,
- চুপ করুন,আমি আর শুনতে পারছি না। আপনি আমাকে মেরে ফেলুন। তবুও এসব আমার সাথে করবেন না, আমার পাপা  মরে যাবে তার সম্মানহানি হলে,
- হাহাহা সেইটাই তো আমার চাওয়া, তোমরা সেদিন আমার অসহায় পরিবার যে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছিলে, আমার ছোট্ট পরিবারকে বাড়িছাড়া করেছিলে। সেদিন আমাদের হাজারো কাকুতিমিনতি তোমাদের মন গলাতে পারেনি।
- আমি সত্যি কিছু জানতাম না, সত্যি বলছি আমি কিছু জানতাম না।
- আর কতো মিথ্যা বলবি তোরা?( স্নেহার চুলের মুঠি ধরে বললো রুদ্র) আর কতো নাটক করবি তুই? আমার অপরাধ ছিলো তোকে ভালোবাসা তাইনা? তবে শুনে রাখ এই ভালোবাসার জন্য যে কষ্ট যে যন্ত্রণা আমি পেয়েছি তা শুধে আসলে ফেরত দিবো তোকে,আর তোদের।
- জানোয়ার একটা আমার শরীরটাই চেয়েছিলি তুই? কাপুরুষ  তুই তোর মতো মানুষের সাথে থাকার চেয়ে মৃত্যু আমার কাছে অনেক শুখের।
- একদম চুপ, আমার সাথেই থাকতে হবে তোর বাকিটা জীবন। এই জানোয়ারকেই  তোর স্বামী হিসেবে গ্রহন করতে হবে,
- আমি সুইসাইড করবো নিজেকে শেষ করে দিবো তবুও তাকে স্বামী হিসেবে মানবো না,
রুদ্রের চোখ লাল হয়ে আছে, রুদ্র স্নেহার চুলের মুঠি ধরেই তার ঠোট দিয়ে স্নেহার ঠোট দখল করে নিলো আর পাগলের মতো কিস করতে লাগলো,
আজ রুদ্র মেতে উঠেছে নেশায়, নেশা গ্রস্তের মতো স্নেহাকে নিজের করছে।
ভালোবাসার মানুষটার আর্তনাথ যেন আজ আর তার কান অবদি পৌছাচ্ছে না,
প্রায় ১০ মিনিট পর স্নেহাকে ছাড়লো রুদ্র,
- (শার্ট পড়তে,পড়তে বললো) এমন কথা আর কখনো বলবেনা জান,  তুমি মনে রেখো নিজের সাথে যদি তুমি খারাপ কিছু করার চেষ্টা করো। তবে তার ফল খুব ভয়ানক হবে, আমি আগের সে রুদ্র আর নেই।  যে তোমার ভালোবাসার পাগল থাকবে, অন্ধের মতো তোমাকে ভালোবাসবে।
আজো তোমাকে ভালোবাসি তবে অন্ধের মতো না।
- স্নেহা কান্না করে যাচ্ছে,  চাদরটা শরীরের সাথে আঁকড়ে ধরছে শক্ত করে,  আজ যেন তার কান্না বাধ মানতে চাইছে না। কিভাবে নিজেকে সামলাবে সে আজ সে হারিয়েছে তার সম্মান যা একটা মেয়ের কাছে সবচেয়ে বেশি দামী।
প্রায় ৩০ মিনিট পর রুদ্র খাবার হাতে রুমে ঢুকলো,
খাবার নিয়ে স্নেহার কাছে যেয়ে বসতেই স্নেহা নিজেকে আরো শক্ত করে নিজেকে গুটিয়ে নিলো,
- ভয় পেয়োনা প্লিজ আমি এখন আর কিছু করবো না, তোমাকে সেই কখন তুলে এনেছি সারাদিন কিছু খাওনি তারপরে তোমার ওপরে অনেক ধকল গিয়েছে,  তাই চুপ চাপ খেয়ে নাও।
- (স্নেহা কাপা,কাপা ঠোটে বললো,) আমাকে বাড়ি দিয়ে আসুন আসুন আমি এখানে থাকবো না, আমার  খুব ব্যাথা করছে, আমি বাড়ি যাবো।
-.হুম খাবারটা খেয়ে নাও তোমাকে আজই বাড়ি দিয়ে আসবো,
- রুদ্রের কথা শুনে স্নেহা।একবার রুদ্রের দিকে করুণ ভাবে তাকালো তারপর,  তারপর খাবারটা নিয়ে খাওয়া শুরু করলো। কারন স্নেহা ভালো করেই জানে এখন রুদ্রের কথা না শুনলে হয়তো তার আর বাড়ি যাওয়া হবে না।
খাবারটা মুখে দিতে, স্নেহা,
- আহহ আমার ঠোট জ্বলছে, ঠোঁটে হাত দিয়ে,
- রুদ্র স্নেহার ঠোঁটের থেকে হাত সরিয়েই দেখলো স্নেহার ঠোট অনেকটা লাল হয়ে ফুলে গেছে, রাগের মাথায় রুদ্র স্নেহার এই অবস্থা করেছে নিজেরি ভেবে বুকটা ফেটে যাচ্ছে,,,
- কি হয়েছে? খুব কষ্ট হচ্ছে, স্নেহাকে ধরে রুদ্র বলে উঠলো,
- আপনি কি মানুষ?  নিজেই আমাকে এতো কষ্ট দিয়ে আমার এতো বড় ক্ষতি করে এখন জানতে চাইছেন আমি ঠিক আছি কিনা? আপনি খুব খারাপ। আপনি কখনো ভালো থাকতে পারবেন না কখনো না।
- অভিশাপ দিচ্ছো আমার ভালো থাকার দরকার নেই, তুমি কাছে থাকলে আমি এমনিতেই ভালো থাকবো বলেই,
স্নেহার দিকে একটা ড্রেস ছুড়ে দিয়ে রুদ্র  বললো,
- ড্রেসটা পরে নাও, তোমাকে বাড়ি দিয়ে আসছি, তবে ভেবোনা সারাজীবনের জন্য দিয়ে আসছি এই আমার কাছেই আবার ফিরে আসতে হবে তোমাকে,
কথাগুলো বলেই রুদ্র রুম থেকে বের হয়ে গেলো,
চলবে,,,
( সবার সাপোর্ট পেলে গল্পটাকে একটা সুন্দর আর রোমান্টিক গল্পে রূপ দিবো।  আশা করছি সবাইকে পাশে পাবো)
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

[+] 4 users Like Bangla Golpo's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#2
পার্ট -০২





রুদ্র রুম থেকে বেড়িয়ে যেতেই স্নেহা ড্রেসটা পরে নিলো,,,
সারা শরীর ব্যাথার কারনে হাটতে কষ্ট হচ্ছে স্নেহার,শরীর যেন চলতেই চাচ্ছে না।
রুম থেকে কোনোরকম বের হয়ে আশেপাশে তাকালো স্নেহা,একটু সামনে এগোতেই দেখলো ড্রয়িং রুমে রুদ্র বসে আছে, তবে এই রুদ্র আগের সেই মায়াভরা চেহারার রুদ্র নেই, চেহারার মাঝে ফুটে উঠছে এক ধরনের হিংস্রতা।
রুদ্রের দিকে তাকিয়ে কথা গুলো ভাবছে স্নেহা।
-কি হলো ওখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন?
- রুদ্রের কথায় ঘোর কাটলো স্নেহার, ধীর পায়ে রুদ্রের সামনে এগোচ্ছে স্নেহা। কিন্তু না স্নেহা তার শরীরের সাথে পেরে উঠছে না,
কান্না করে দিয়ে নিচে বসে পড়লো স্নেহা,
- আমি হাটতে পারছিনা,  আমার সারা শরীর ব্যাথা করছে,( কাঁদতে, কাঁদতে রুদ্রকে বললো স্নেহা)
- স্নেহার অবস্থা দেখে রুদ্রের খুব কষ্ট হচ্ছে, মনে হচ্ছে বুকের ভেতরে কেও ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করছে,
রুদ্র স্নেহার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকেই স্নেহাকে কোলে তুলে নিলো।
ব্যাপারটা অতি দ্রত হওয়ায় স্নেহা কিছুই বুঝতে পারলো না।
- তুমি আমাকে কষ্ট দিয়েছো, তো কি হয়েছে!  আমি তো তোমাকে ভালোবেসেছে তাইনা। কিভাবে তোমার কষ্ট দাঁড়িয়ে,দাঁড়িয়ে দেখি।
- স্নেহা রুদ্রের দিকে এক পলকে তাকিয়ে আছে,,,
রুদ্রের দিকে গভীরভাবে তাকিয়ে স্নেহা বলতে শুরু করলো,
( ভালোবাসা মানে বুঝি কারো শরীরটাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে নিজের করে নেয়া? এটাতো ভালোবাসা না। এটা হচ্ছে চাহিদা, সম্মান,বিশ্বাস ছাড়া কোনো ভালোবাসা হতে পারেনা। আপনার চাহিদাকে ভালোবাসা নামে পবিত্র নামটা দেবেন না প্লিজ।
- রুদ্রের দুটো চোখ লাল হয়ে আছে, রুদ্র কিছু বলতে যেয়েও বললো না। স্নেহাকে কোলে নিয়েই হোনহোন করে বেড়িয়ে গেলো, স্নেহাকে গাড়িতে বসিয়ে নিজেও গাড়িতে উঠে বসে গাড়ি স্টার্ট করলো,,,
গাড়ি আপন গতিতে চলছে, গাড়িতে বসে জানালাভেদ করে আসা বাতাস স্নেহার অনেক ভালো লাগে, যখন অনেক বৃষ্টি হয় তখনও স্নেহা গাড়ির কাচ খোলা রাখে, ড্রাইভার অনেকবার বন্ধ করতে চাইলেও স্নেহা বাধা দেয়,,,
তবে আজ কেনো যেন বাতাস তার ভালোলাগছে না, আনমনে বসে তার সাথে হয়ে যাওয়া ঘটনার কথা ভাবছে স্নেহা।
লুকিং গ্লাস দিয়ে রুদ্র বারবার দেখছে স্নেহাকে অনেক কান্নার ফলে স্নেহার চোখের কোনে এখনো যে বিন্দু জল জমে আছে তা রুদ্রের চোখকে এরাতে পারেনি।
১ ঘন্টা পর স্নেহা তার বাড়ি পৌছালো,
দরজা খুললো স্নেহার মা,
- কি রে মা তুই? তুই ঠিক আছিস।  তোর কিছু হয়নি তো? আর তোর এই অবস্থা কেনো? (স্নেহার মা)
স্নেহা মায়ের দিকে একবার করুণ  ভাবে তাকালো, তারপর তার মাকে জড়িয়ে ধরেই কেঁদে দিলো।
- রুদ্র স্নেহাকে তার বাসায় পৌছে দিয়েই আবার গাড়ি নিয়ে ব্যাক করেছে,,,,
আজ রুদ্রের বুকেও সে তিব্র ব্যাথা অনুভব করছে স্নেহাকে সে ভালোবেসেছিলো তার শরীরটাকে নয় তবে আজ সে স্নেহাকে না পেলেও স্নেহার শরীরটাকে পেয়েছি। তার হয়তো আজ অনেক খুশি হবার কথা তবে সে পারছেনা খুশি হতে,
বাড়ি ফিরেই রুদ্র কাওকে ফোন করলো?
- হ্যালো, আশিস?
- হ্যা স্যার বলুন?
- তোকে যে কাজটা করতে বলেছি কাল যেন সে কাজটা হয়ে যায়,
- স্যার অলমোস্ট ডান, সব ব্যাবস্থা হয়ে গিয়েছে এখন শুধু কাল সকালের অপেক্ষা।
- গুড,নাইছ জব আশিস!!
বলেই রুদ্র ফোন রেখে সোফার সাথে হেলান দিয়ে একটা ডেভিল হাসি দিলো।

আর এদিকে,
স্নেহা তার মাকে ধরে কেঁদেই যাচ্ছে,  স্নেহাকে খুজে বের করার জন্য স্নেহার বাবা তার ক্লোস ফ্রেন্ড এসপি আজিজের সাহায্য নিতে গিয়েছিলো, বাড়ি ফিরতে অনেক রাত হয়েছে,
এসেই সে জানতে পারে রুদ্র এসেছিলো স্নেহাকে দিয়ে গেছে,
আদরের মেয়ের কান্না স্নেহার বাবা আর নিতে পারছে না, তাই সে রুদ্রকে ফোন দিলো,,,,
?
- রুদ্র ফোন ধরতেই,
- কুকুরের বাচ্চা তুই আমার মেয়েটার এতোবড় ক্ষতি করলি তোকে আমি ছাড়বো  না,
- হ্যা শশুরমশাই আমি জানি আপনি আপনার মেয়ের
জামাইকে ছাড়বেন না, আদর করে জামাই আদর খাওয়াবেন,
- রাসকেল,  আই কিল ইউ। সাহস থাকে তো সামনে এসে কথা বল।
- হুম শশুর মশাই আমি সামনে আসবো না, আপনি নিজেই আমাকে আসতে বলবেন। আর আপনার ডাক পেলেই আমি আসবো। বলেই হাসতে, হাসতে ফোন কেটে দিলো রুদ্র।
ফোন কেটে নিজে,নিজেই বলতে লাগলো রুদ্র,
- আপনারা বাবা মেয়ে এতোদিন হেসেছেন এখন থেকে রুদ্রের সময় শুরু এখন থেকে রুদ্র হাসবে আর আপনারা কাঁদবেন।
পরেরদিন,
পেপারে হাত দিতেই যেন দুনিয়া ওলট পালট হয়ে যাচ্ছে  আফজাল খানের,
সাথে, সাথেই মোবাইল বেজে উঠলো আফজাল খানের,
- আফজাল এসব কি শুনছি? নিউজে কি দেখাচ্ছে?যা শুনছি তা কি সত্যি? কাল কি তাহলে,বন্ধুর কথা শেষ হয়ে যাবার আগেই ফোন কেটে দিলো আফজাল খান(আজিজ)।
বাহিরে চিল্লাপাল্লা শোনা যাচ্ছে,
দারোয়ান দৌড়ে এলো,
- স্যার বাহিরে সাংবাদিকরা ভির করেছে আপনার সাথে দেখা করতে চায়, আটকানোর চেষ্টা করছি কিন্তু কথা শুনছে না,,
সারারাত কান্নাকাটি করার ভোরে দিকে চোখ লেগে এসেছিলো স্নেহার।  সকালের দিকে চিল্লাপাল্লাতে ঘুম ভেঙে যায় স্নেহার, ব্যাপারটা দেখতে স্নেহা নিচে নামে,  
দারোয়ান সাংবাদিকদের আটকাটে সক্ষম হয়না, একপ্রকার জোর করেই সাংবাদিকরা বাড়িতে প্রবেশ করে।
- স্যার আপনার সাথে একটু কথা বলতে চাই, আজ খবরের কাগজে আর টিভি চ্যানেলগুলোতে দেখাচ্ছে আপনার মেয়েকে কাল সকাল থেকে খুজে পাওয়া যায়নি তারপর জানা গেছে যে তাকে কেও তুলে নিয়ে কেও ''. করেছে কথাটা কতোটুকু সত্যি আমরা জানতে চাই,,
আফজাল খান কি উত্তর দেবে বুঝতে পারছে না,
আফজাল খান কিছু বলার আগেই সাংবাদিকরা দৌড়ে স্নেহার কাছে যায়,,,
- ম্যাম আপনিও দেখছি এখানে আছেন,  ম্যাম আমাদের প্লিজ বলুন কাল আপনাকে কারা কিডন্যাপ করেছিলো?  আপনার বাবা একজন শিল্পপতি  তার তো অনেক শত্রু আছে কে হতে পারে, আপনার ধারনা কি? আচ্ছা ম্যাম আপনাকে কতোজন মিলে ''. করেছিলো আপনি কি তাদের দেখলে চিনতে পারবেন?
-স্নেহা যেন কথাগুলো আর নিতে পারছে না সে আর কোনো কথার কোনো উত্তর নাই দিয়ে দৌড়ে তার রুমে চলে গেলো।
- আর এদিকে আফজাল খান সবাইকে বোঝাতে চেষ্টা করছে যে এমন কিছুই হয়নি এসব মিথ্যা। কিন্তু স্নেহা হাত, পা বাধা অবস্থায় একটা চেয়ারের সাথে বাধা এ ছবি টিভি নিউজে দেখাচ্ছে ,  তাই কেও আফজাল খানের কথা বিশ্বাস করছে না,,,,,
- আফজাল খান কাওকে কোনো উত্তর না দিয়ে নিজের রুমে চলে গেলো, কারন সে জানে এ বিপদ থেকে আর তার মেয়ে স্নেহাকে  এই ঘৃনিত  অপবাদ থেকে একজনই বাঁচাতে পারবে, তাই আফজাল খান নিজের সব রাগ ভুলে ফোন হাতে নিয়ে,

- হ্যালো,
- হ্যা শশুর মশাই আমি জানতাম আপনি আমাকে ফোন করবেন। তা বলুন আমি আপনাকে কিভাবে সাহায্য করতে পারি?
- আমার মেয়েটার সম্মান নিয়ে টানাটানি পড়েছে, তোমার হাত জোর করছি  ওকে তুমি বাচাও। আর নয়তো সুইসাইড  করা ছাড়া আমার মেয়েটার আর কোনো গতি থাকবে না,
- হাহাহা, রুদ্র বিনামূল্য কোন কাজ করেনা, আমি আপনার আর আপনার মেয়ের সম্মান বাঁচাতে পারি তার বদলে আমি কি পাবো?
-তুমি যা চাইবে তাই,
- আচ্ছা এই কথাটা যেন মনে থাকে, আমি আসছি।
বলেই রুদ্র ফোন কেটে দিলো,,
সাংবাদিকরা সবাই ভির করে আছে,
সবার সামনে একটা কালো গাড়ি এসে দাড়াতেই সবার নজর সে কালো গাড়ির দিকে,,,
গাড়ি থেকে রুদ্র নেমেই সবাইকে বলতে শুরু করলো,,,
- আপনারা এখানে কি করছেন?
- আসলে স্যার নিউজে?
- হ্যা নিউজ আমিও দেখেছি! কিন্তু সত্যিটা না জেনে এভাবে কাওকে হেরেজ করা যে অপরাধ আপনারা কি জানেন না,
- মানে????
- মানে হলো,  নিউজে আপনারা আধ খবরটুকু জেনেছেন, হ্যা আফজাল খানের মেয়ে কিডন্যাপ হয়েছিলো, কিন্তু তার মেয়ে ফোনের জি পি এস ট্রেকার দিয়ে আধঘন্টার মাঝেই তাকে খুঁজে বের করা হয়েছিলো,
- কিন্তু স্যার আমাদের কাছে খবর আছে তার মেয়েকে কাল ১২ অবদি খুঁজেছে পুলিশ।
- হ্যা তা ঠিক আসলে ও আমার সাথে ছিলো, আর আমাদের দুজনের ফোনে নেট কানেকশন পাচ্ছিলাম না তাই কাওকে কিছু জানাতেও পারিনি।
- কিন্তু একটা মেয়ে এতো রাত অবদি আপনার সাথেই বা কেন ছিলো,,
- এবার রুদ্র রাগে কটমট করতে, করতে বললো,কারন সে আমার বিয়ে করা বউ। কিছু দিনের মাঝেই আমরা পার্টি দিয়ে সবাইকে সব কিছু জানাতাম।
আর আমার শশুর ব্যাস্ততার কারনে পার্টিটা দিতে দেরি হচ্ছে,
আর আপনারা তো সবাই জানেন যে বেশি সফল মানুষের পেছনে শত্রু বেশি থাকে তাই আপনাদের বলছি পূরোটা না জেনে কাওকে এভাবে কাওকে হেনস্তা করবেন না,
সাংবাদিক রা আফজাল খান কে প্রশ্ন করলো এসব সত্যি কিনা,
মেয়ের সম্মান বাচাতে আফজাল খান উত্তর দিলো এসব সত্যি আর রুদ্রই তার মেয়ের জামাই,,,
একে একে সবাই ক্ষমা চেয়ে চলে গেলো,
ভেতর থেকে স্নেহার মায়ের চিৎকার ভেসে আসছে,
স্নেহার বাবা আর রুদ্র দুজনেই দৌড়ে গেলো,
- দেখোনা স্নেহা সেই কখন দরজা আটকেছে এতোবার খোলার জন্য বলছি খুলছে না, আমার মেয়েটা উলটা পালটা কিছু করে বসলোনা তো( স্নেহার মা)
স্নেহার মায়ের কথা শুনে রুদ্র দরজা ধাক্কাতে,ধাক্কাতে একে সময় দরজা ভেঙে ফেললো,
তারপর যা দেখলো তার দেখার জন্য কেওই প্রস্তুত ছিলো না,
চলবে,,,
( গল্পটা কেমন হয়েছে জানাবেন, উৎসাহ পেলে গল্প লিখতে ভালো লাগে, আর যাদের ভালো লাগবে না প্লিজ এড়িয়ে যাবেন।  সাথে থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ)
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

[+] 2 users Like Bangla Golpo's post
Like Reply
#3
পার্ট :০৩



স্নেহা পরে আছে ফ্লোরে হাত দিয়ে অজস্র রক্ত ঝরছে, ফ্লোরটার একটা অংশ স্নেহার রক্তে মেখে গিয়েছে,,,
স্নেহার বাবা আর মা দুজনেই স্নেহার কাছে গিয়ে স্নেহাকে ডাকতে থাকলো,
- স্নেহা মামনি কথা বলো, স্নেহা।
কিন্তু স্নেহার কোনো জ্ঞান নেই, রুদ্র স্নেহাকে ধরতে যাবে ঠিক তখনি,
- তুই আমার মেয়ের কাছে আসবি না, তোর জন্য আজ আমার মেয়েটার এ অবস্থা। আমি তোকে ছাড়বো না,
- কে কাকে ছাড়বে না, ধরে রাখবে তা পরেও দেখা যাবে আগে ওর জান টা বাচুক। রুদ্র স্নেহাকে কোলে করে বেড়িয়ে গেলো, আর পেছনে পেছনে স্নেহার বাবা মা ও।
রুদ্র স্নেহাকে স্নেহার মায়ের কোলে শুইয়েই গাড়ি স্টার্ট দিলো, আর পাশে বসে আছে স্নেহার বাবা।
হাসপাতালে পৌছেই স্নেহাকে ডাঃ ভেতরে নিয়ে ট্রিটমেন্ট করতে শুরু করলো,,

রাত ৯ টা,,
স্নেহা ঘুমিয়ে আছে, অনেক রক্ত বের হয়েছে আর একটুর জন্য হাতের রগ টা কাটেনি। যদি কাটতো তবে ভয়াবহ কিছু হয়ে যেত। স্নেহাকে ঘুমের ইনজেকশন দেয়া হয়েছে,,, এখন ঘুমাচ্ছে,
কেবিনের বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে রুদ্র,
কাচ ভেদ করে প্রিয় মানুষটার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে, খুব ইচ্ছা করছে প্রিয় মানুষটার পাশে গিয়ে বসতে, কিন্তু চাইতেও পারছে না সে।
কোথাও বা কোথাও এসবের জন্য তো সেই দায়ী,,,

২ বছর আগে যখন সে স্নেহাকে প্রায় পাগলের মতো ভালোবাসতো। যে ভালোবাসায় ছিলোনা কোনো প্রতিশোধের আগুন তখন স্নেহার একটুখানি কেটে গেলেও রুদ্রের যেন ঘুম হারাম হয়ে যেত, আর আজ সেই ভালোবাসার মানুষটার শরীর থেকেই অঝোরে রক্ত ঝরেছে। সে তো রক্ত ঝরিয়ে কোনো প্রতিশোধ নিতে চায়নি, সে তো চেয়েছে অন্তর থেকে অন্তরের প্রতিশোধ। কারন তার ভালোবাসার মানুষটাকে সেই অন্তর দিয়ে ক্ষত করবে , আবার সেই অন্তরেই সে নিজের ভালোবাসার মলম লাগাবে, কিন্তু আজ তো অন্য কিছুই হয়ে গেলো, শারীরিক যন্ত্রণায় কষ্ট পাচ্ছে তার ভালোবাসা আর সে নিজের চোখে দেখেও কিছু করতে পারছে না।
রুদ্রের অজান্তেই তার চোখ দিয়ে দু- ফোটা পানি গড়িয়ে পড়লো, আজ অনেকদিন পর কাদলো রুদ্র,
২ বছর হাজার বার কাদার চেষ্টা করেও কাঁদতে পারেনি, তবে আজ না চাইতেও কেঁদে ফেললো।

সকালের মিষ্টি রোদ স্নেহার মুখে এসে পড়ছে, চোখ টিপ,টিপ করেই চোখ খুলছে স্নেহা।
স্নেহার মনে হলো তার হাতের ওপরে অন্য কোনো হাত স্পর্শ করে আছে,
পাশে তাকাতেই স্নেহা রুদ্রকে দেখলো,,,
- পাপা, পাপা, মামোনি। ( বলেই চিৎকার করছে স্নেহা।
- কি হয়েছে আমাকে বলো, কি সমস্যা বলো।
- পাপা, পাপা আমাকে বাচাও পাপা( কান্না করে স্নেহা ডাকছে তার বাবাকে)
- প্লিজ স্নেহা আমাকে বলো কি হয়েছে,
রুদ্রের কথার কোনো উত্তর দিচ্ছেনা স্নেহা।
স্নেহার চিৎকার শুনে স্নেহার বাবা, মা, নার্স সবাই হাজির।
- কি হয়েছে মামনি? কি হয়েছে?( স্নেহার বাবা)
- পাপা এই লোকটা আমাকে বাচাও পাপা, এই লোকটাকে যেতে বলো। প্লিজ পাপা।( অনেক কান্না করে বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলছে স্নেহা)
- তুই কেবিনে কি করে এলি? কাল রাতে আমি তোকে কতো বার চলে যেতে বলাম? তুই কেন এসেছিস আমার মেয়ের কাছে?( কথাগুলো স্নেহার বাবা রাগে গজগজ করতে করতে রুদ্রকে বলছে)

কাল রাতে,
রুদ্রকে অনেকবার অনেক অপমান করে বের করে দিতে চেয়েছে স্নেহার বাবা, কিন্তু স্নেহাকে ছেড়ে সে যায়নি। আর কাল মন খারাপ ছিলো তার স্নেহার এ অবস্থা মেনে নিতে পারছিলোনা সে তাই সব অপমান মুখ বুজে সয়ে নিয়েছে,
সারারাত ঘুমায়নি রুদ্র, ভোরের দিকে স্নেহার কেবিনে যায়, স্নেহার দিকে তাকিয়ে থাকতে, থাকতে স্নেহার হাত ধরেই ঘুমিয়ে পড়ে রুদ্র। কখন ঘুমিয়ে পড়েছে নিজেই জানে না। আর ঘুম ভাঙে স্নেহার চেঁচামেচিতে।

- আপনার মেয়ে মানে? কাল রাতে আপনাকে কিছু বলিনি কারন স্নেহা অসুস্থ ছিলো, আমি বুঝতে পেরেছিলাম বাবা হিসেবে আপনার মন মেজাজ কতোটা খারাপ ছিলো, আর একি অবস্থা ছিলো আমারো, তাই আপনার সব অপমান মুখ বুজে মেনে নিয়েছি। কিন্তু ভাববেন না আমার সাথে যা ইচ্ছা তা করবেন আর আমি মেনে নেবো!!!
কাল প্রেস আর মিডিয়ার সামনে আপনি নিজের মুখে স্বীকার করেছে হে স্নেহা আমার বউ। হাসবেন্ড হিসেবে নিজের ওয়াইফ এর কাছে আসার সব ধরনের রাইট আমার আছে, আপনাদের থেকেও বেশি অধিকার আমার। আর আপনি আমাকে আমার ওয়াইফ এর কাছে আসা নিয়ে প্রশ্ন করছেন? কোন সাহসে???( রাগে লাল হয়ে কথাগুলো বললো রুদ্র)
- রুদ্রের কথা শুনে আফজাল খানের মুখ যেন একেবারে বন্ধ হয়ে গিয়েছে, আর কিছু বলার কোনো উপায় নেই, কারন এখন বেশি বাড়াবাড়ি করলে রুদ্র যে সব ওলট পালট করে দেবে তা বেশ ভালো করেও জানা আছে আফজাল খানের।

রুদ্র স্নেহার বাবাকে কথা বলেই, স্নেহার কাছে গেলো, স্নেহা তখনো তার বাবাকে বাচ্চাদের মতো আকরে ধরে আছে,,

- আর এই যে তুমি? কাল অনেক অনেক বড় অন্যায় করেছো! এটা করা তোমার ঠিক হয়নি। আমার অনেক রাতের ঘুম কেড়েছো তুমি, কিন্তু কাল আমার মনে হচ্ছিলো আমার প্রানটাই বেড়িয়ে যাবে, সারারাত তোমার জ্ঞান ফেরার অপেক্ষা করছিলাম। আজ তোমার জ্ঞান ফিরেছে আমি নতুন করে আমার প্রান ফিরে পেলাম, আর আজকের পরে যদি কালকের মতো কিছু করার চেষ্টাও করো তবে তার ফল অনেক খারাপ হবে,
আর আমাকে দেখে এতো ভয় কেনো পাচ্ছো? ভয় নেই তোমার কোনো ক্ষতি করবো না,তোমাকে বুকে আগলে রাখবো।
স্নেহা ভয়ে গুটিসুটি মেরে আছে
রুদ্র তার কথাগুলো বলা শেষ করেই বের হয়ে গেলো, রাগে যেন তার মাথা ফেটে যাচ্ছে,
হাসপাতাল থেকে বের হয়ে রুদ্র বাড়ির দিকে রওনা হলো,
বাসায় পৌছেই হাতের সামনে যা পাচ্ছে তাই ভেঙে চুরে একাকার করে দিচ্ছে রুদ্র,
- মেয়েটাকে ভালোবেসে শুধু কষ্টই পেলাম, কাল সারারাত কি অবস্থা পার করেছি তা শুধু আমি জানি আর আজ সকালেই আমাকে দেখতেই ও এমন ভাবে চিৎকার করলো, কেনো।
ও কি বোঝেনা আমি ওকে কতোটা ভালোবাসি ও কি বোঝেনা ওকে আমি নিজের বুকে আগলে রাখতে চাই।
কথাগুলো বলছে আর সব কিছু ভাঙচুর করছে রুদ্র, একটা ফুলদানি ভাঙতেই ফুলদানি থেকে ছিটকে আসা একটা কাচের কোনা রুদ্রের কপালে এসে সামান্য কেটে গেলো, কিন্তু সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই রুদ্রের,,,
- স্যার এসব কি করছেন?( আশিস)
- রুদ আশিসকে দেখেই বলতে শুরু করলো, আশিস মেয়েটা আমার ভালোবাসা বোঝেনা। ও আমাকে কখনো বোঝেনা।
- স্যার প্লিজ থামুন, ম্যাম একদিন বুঝবে। আর আপনার কপাল কেটে গেছে।
শিস অনেক বুঝিয়ে রুদ্রের মাথায় ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দিলো,
সারারাত ঘুম হয়নি তাই বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই চোখে ঘুম চলে আসলো রুদ্রের।
৩ ঘন্টা পর ঘুম ভাঙলো রুদ্রের,
ঘুম ভেঙেই তার স্নেহার কথা মনে পরলো, তাই সে আবার হাসপাতালের উদ্দেশ্য করে বেড়িয়ে গেলো,
কিন্তু হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারলো ১ ঘন্টা আগেই স্নেহাকে ছেরে দেয়া হয়েছে।
তাই রুদ্র আবার স্নেহাদের বাড়ির দিকে রওনা দিলো।
- এমন কেনো করলে মামনি?তোমার কিছু হলে তোমার পাপা কতো কষ্ট হয় তুমি জানোনা?( স্নেহার বাবা স্নেহাকে কথাগুলো বলছে)
- পাপা আমার জন্য তোমার অনেক সম্মানহানি হয়েছে,
- না মা তোমার জন্য কিছু হয়নি যা হয়েছে ওই রাসকেল টার জন্য।
কলিংবেল বাজতেই বুয়া দরজা খুললো,,
রুদ্র সোজা স্নেহার রুমে চলে গেলো, রুদ্রকে দেখে স্নেহা আগের মতোই ভয়ে চুপসে গেলো, স্নেহার বাবা কিছু বলতে যাবে ঠিক তখনি রুদ্রের সকালে বলা কথাগুলো মনে পড়লো তার,
- আপনারা একটু বাহিরে জান, আমি আপনার মেয়ের একটু আলাদা সময় কাটাতে চাই।
- আশরাফ খানের ইচ্ছা করছে রুদ্রকে যেয়ে দুটো চড় দিতে, কতোবড় বেয়াদব হলে কেও বাবা মায়ের সামনে বলে মেয়ের সাথে আলাদা সময় কাটাতে চায়,, তাও সে কিছু বলতে পারছে না।
- কিন্তু ও তো তোমাকে দেখলেই ভয় পায়( স্নেহার মা বললো)
- আপনারা চিন্তা করবে না, আজ ওর সব ভয় কাটিয়ে যাবো! চিন্তা করবেন না সারাজীবন তো আমার সাথেই কাটাতে হবে, এখন ভয় না কাটলে।কিভাবে হবে।

কেও আর কোনো কথা বাড়ালো না,স্নেহার মা বাবা বেড়িয়ে গেলো স্নেহা বাবাকে অনেকবার শক্ত করে ধরেছে,তবুও তাদের কিছু করার ছিলোনা।

স্নেহার বাবা মা বেড়িয়ে যেতেই রুদ্র স্নেহার পাশে গিয়ে বসলো, বালিশ আকরে গুটিসুটি হয়ে আছে স্নেহা।
- এখন কেমন লাগছে? ব্যাথা আছে?
- স্নেহা চুপ করে আছে,
- জান প্লিজ কথা বলো! এভাব চুপ করে থেকোনা। কাল কেনো এমন করলা? যদি কিছু হয়ে যেত?
- আমার কিছু হলে আপনার কি, বেড়িয়ে যান এখান থেকে,,,
- আমি যেতে আসিনি, রুদ্র স্নেহার আরো কাছে ঘেসে বসলো।
- আপনি আমার কাছে আসবেন না,,,
-স্নেহা আমার কথা শোনো প্লিজ,
- না আমি আপনার কোনো কথা শুনতে চাইনা, বেড়িয়ে যান ( চিৎকার করে বললো স্নেহা)
- স্নেহাকে অনেকবার বোঝানোর পর ও যখন স্নেহা কিছু বুঝতে চাইলো না, এবংকি রুদ্রের কোনো কথা শুনতেই সে প্রস্তুত না।
তখন রুদ্র বেস রেগে গেলো,,,
স্নেহার দুই গাধে শক্ত করে হাত রেকে স্নেহাকে ঝাকিয়ে,ঝাঁকিয়ে বলতে লাগলো
- আমাকে দেখে এমন করছো কেনো তুমি? ভালো ব্যাবহার করছি ভালো লাগছে না??? তুমিকি জানো বাকিটা জীবন তোমার এই রুদ্রের সাথেই থাকতে হবে,, তুমি না চাইলেও হবে।
- আমি মরে যাবো তবুও তোর মতো জানোয়ারের সাথে কখনো থাকবোনা,
- ঠাসসসসসসস( রুদ্র) স্নেহাকে এক থাপ্পড় দিয়ে নিচে ফেলে দিলো, তার সামলাতে না পেরে বিছানায় পরে গেলো স্নেহা,
রাগে যেন রুদ্রের মাথায় আগুন জ্বলছে, রুদ্র স্নেহাকে বিছানা থেকে উঠিয়ে আবার বসালো আর বলতে শুরু করলো,
- এই জানোয়ারের সাথে তোর সারাজীবন থাকতে হবে, একি রুমে একি বিছানায়। প্রতিটা সময় এই জানোয়ারের সবটুকু জুরে তুই থাকবি। বলেই রুদ্র স্নেহার ঠোটে ৎোট ডুবিয়ে দিলো,
স্নেহা নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না, প্রায় ৫ মিনিট পর স্নেহাকে ছেড়েই বেড়িয়ে গেলো, রুদ্র।
ড্রয়িং রুনে স্নেহার মা, বাবাকে দেখতে পেয়েই রুদ্র বললো,
- কাল পরশু বিয়ের ব্যাবস্থা করুন, আপনাদের মেয়ের অনেক তেজ। ওকে এখানে আর রাখতে চাইনা।
বলেই বেড়িয়ে গেলো রুদ্র।
( নেক্সট পর্বেই আসল ধামাকা?)

চলবে,
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

[+] 2 users Like Bangla Golpo's post
Like Reply
#4
 পর্ব -০৪


রুদ্র বেড়িয়ে যেতে যেন স্নেহার বাবা সব কিছু ওলটপালট লাগছে, রুদ্রের এই মাত্র বলে যাওয়া কথাগুলো কানে বাজছে বার,বার!!
রুদ্র যা বলে গেছে তা কি করে করবে সে, নিজের মেয়েটাকে নিজের হাতে শত্রুর কাছে তুলে দিবে,
এটা কোনোভাবেই হতে পারে না।

রাত ১১ স্নেহার বাবা,রুমে পায়চারি করছে, আর কিছু একটা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করছে,,
স্নেহা ঘুমাচ্ছে শরীরটা বেশ উইক, তাই হয়তো ঘুমটা বেশ গভীর,
এদিকে রুদ্র বার বার স্নেহার কথাই ভাবছে, খুব দেখতে ইচ্ছা করছে স্নেহাকে।
রুদ্র বিছানার ওপরে শুয়েই অতিতে ডুব দিলো,

- রুদ্র ভাইয়া দেখুননা আমার এই ম্যাথ টা কিছুতেই মিলছে না আপনি তো ম্যাথ এ অনেক ভালো প্লিজ একটু হেল্প করুণ ( করুন ভাবে স্নেহা কথাটা বললো রুদ্রকে)
- আসলে স্নেহা আমার আজকে একটু কাজ আছে পড়াতে যেতে হবে,
- না ভাইয়া প্লিজ একটু বুঝিয়ে দিয়ে যান!!
রুদ্র জানে স্নেহা তার কথা কিছুতেই শুনবার পাত্রি নয় তাই, সাইকেলটা সাইড করে। প্রিয়ন্তির বাসার নিচেই স্নেহাকে ম্যাথ বুঝিয়ে দিলো রুদ্র।
রুদ্র অনেক সুন্দরভাহে ম্যাথ বুঝিয়ে দিলো আর স্নেহা ও খুব সহজেই বুঝে ফেললো,,
- এবার যাই?
- ওকে ভাইয়া আমার কাছে এখন কিছু নেই আপনাকে গিফট করার মতো,
- গিফট কেনো?
- এইযে এতো কঠিন একটা ম্যাথ এতো সহজ করে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য!!
- ওহ না এখন কোনো গিফট লাগবে না, সময় হলে আমি চেয়ে নেবো।
বলেই সাইকেল নিয়ে রুদে বেড়িয়ে গেলো,,
সারাদিন ৪ টা টিউশনি করে ক্লান্ত রুদ্র বাড়ি ফিরলো সন্ধ্যা ৬ টায়, ছুটির দিনে টিউশনিগুলো দিনেই কম্পলিট করে তারপর সন্ধ্যার পর বাসায় রেস্ট নেয় রুদ্র,
মা, বাবা, ছোট বোন তিতিরকে নিয়ে সুখি সংসার রুদ্রের অভাব থাকলেও নেই কোনো আক্ষেপ!!
সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরতেই নিজের কাধের ব্যাগটা চেয়ারে রেখে টেবিল থেকে পানির গ্লাসটা নিয়ে এক গ্লাস পানি খেয়ে নিলো রুদ্র, হঠাৎ বইয়ের কোনে ভাজ করা একটা কাগজ দেখে রুদ্র হাত বাড়িয়ে কাগজটা নিয়েই খুললো,,, সেখানে লেখা!!

- আজ একটা শুভদিন, রাত হবে মেঘমলিন। আকাশের তারা গুলো,বলবে তার কথাগুলো।
গুটি, গুটি পায়ে দরজাটা খোলো, শুনতে আমার কথাগুলো।

চিঠিটা পড়া শেষ না হতেই অচেনা একটা নাম্বার থেকে মেসেজ এলো রুদ্রের ফোনে,
- প্লিজ বারিরে আসুন ১০ কদম যেখানে শেষ। দেখা হবে অবশেষ!!
The Villain Husband
লেখিকা : নিলাশা ইরা,
পার্ট : ৪
রুদ্রের যাওয়ার ইচ্ছা না থাকলেও অনেকটা কৌতুহল নিয়েই দরজা খুলে বের হলো,
হাটতে, হাটতে ১০ কদম যেতেই আসে পাশ থেকে টুসটাস করে বেলুন ফোটার শব্দ। আর সবাই এক সাথে বলে উঠলো,
Happy Birthday dear Ruddra vaia, Happy birthday to you!!
আর একটা কেকে অনেকগুলো মোমবাতি সাজিয়ে রুদ্রের সামনে হাজির হলো স্নেহা!!
- Happy Birthday Vaia,
রুদ্র তাকিয়ে আছে স্নেহার দিকে, স্নেহা আজ নীল কালারের থ্রিপিজ পরেছে সাথে গোল্ডেন ওরনা। চুলগুলো কোনো রকম বেধে রেখেছে, বেশিরভাগ চুলই এলোমেলোভাবে খুলে আছে, কিন্তু এভাবেই যেন স্নেহাকে সেরা সুন্দরি মনে হচ্ছে রুদ্রর।
রুদ্র তাকিয়ে আছে স্নেহার দিকে,
- ভাইয়া,এইযে!! স্নেহার ডাকে ঘোর কাটলো রুদ্রের,
- এসব কি?(রুদ্র)
- ভাইয়া আজ আপনার জন্মদিন! আর আপনার মনে নেই। আমরা সবাই জানতাম, আর আজ ছুটির দিন আপনি তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আসতেন কিন্তু আমরা আমাদের সারপ্রাইজটা চাঁদের আলোকে সাথে রেখে করতে চেয়েছি, তাই ইচ্ছা করে আজ বিকালে আপনার একটু লেট করিয়েছি।
- তার মানে এসব তোমাদের প্লেন ছিলো?
- আমাদের প্লেন না, প্লেনটা স্নেহার ছিলো আমরা শুধু সেই অনুযায়ী কাজ করেছি,
- রুদ্র স্নেহার দিকে তাকাতেই,
- স্নেহা দুষ্টু হাসি দিয়ে বললো,
উফ ভাইয়া ট্রিট চাইবো না,শুধু আপনার বিয়ের সময় আমাদের সবাইকে দাওয়াত দিয়েন সব ট্রিট একেবারে উশুল করবো। স্নেহার দিকে তাকিয়ে আছে রুদ্র, আর ভাবছে এই মেয়ে কতো সুন্দর করে মানুষকে বোঝে। বাবা আধিপত্যর প্রভাব স্নেহার ওপরে পরেনি ব্যাপার রুদ্রের কাছে বেশ চমকপ্রদ লাগে,
স্নেহা আর সবাই মিলে মজা করে রুদ্রের জন্মদিন পালন করে। রুদ্রের ভুলে যাওয়া তিনটা সেদিন সবাই মিলে সরণীয় করে তোলে,,
- কেক কেটে রুদ্র সবাইকে খাইয়ে দেয়,আর স্নেহাকেও কিন্তু স্নেহা রুদ্রকে কেক খাওয়ানোর সময় রুদ্রের পুরো মুখে কেক লেপ্টে দিয়ে দৌড় দেয়, রুদ্র পেছনে দৌড়ায় স্নেহার,,,
আশিসের ডাকে বাস্তবে ফিরলো রুদ্র,
- স্যার আপনি যা, যা আনতে বলেছিলেন রুবি সব কিছু নিয়ে এসেছে,
- হুম সব আমার রুমে রেখে যেতে বলো,
- আচ্ছা স্যার। বলেই আশিস চলে যায়,,
রুদ্র আবার আনমনে স্নেহার কথা ভাবতে থাকে, খুব ইচ্ছা করছে স্নেহার সাথে কথা বলতে কিন্তু সে জানে এখন স্নেহাকে এখন ফোন দিয়েও কোনো কাজ হবেনা। স্নেহা তার সাথে কথা বলবেনা।

পরেরদিন সকালে,,
স্নেহা বাবার সাথে বসে নাস্তা করছে, মেয়েকে মাঝে বসিয়ে বাবা মা দুজনে দু- পাশে বসে মেয়ে খাইয়ে দিচ্ছে।
হঠাৎ কলিংবেল বাজতেই আলি মিয়া( কাজের লোক।) দরজা খুলে দিলো,
- কে আপনে?
- স্নেহা ম্যাডামের সাথে দেখা করতে এসেছি!!
- একটু দারান স্যার এর কাছে জিজ্ঞাস কইরা আসি,বলার হাটা দিলো আলি মিয়া, পেছন থেকে রুবি বললো, ( বলবেন রুদ্র স্যার পাঠিয়েছে)
আলি মিয়া আশরাফ খানকে বললো,
- স্যার একটা মেয়ে আইছে! কইলো রুদ্র স্যার পাঠাইছে,,
আশরাফ খান কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বললো,
- আসতে দাও!!
আলি মিয়া আবারো দরজায় গিয়ে মেয়েটিকে ভেতরে আসতে বললো,
মেয়েটি ভেতরে ঢোকার সাথে, সাথে পেছনে আরো দুটো লোক অনেকগুলো ব্যাগ হাতে ঢুকলো,
আশরাফ খান টেবিল থেকে উঠেই রুবির কাছে আসলো,
- হুম কি ব্যাপার? আর এসব কি?
- স্যার রুদ্র স্যার এর সাথে কথা বলুন। রুবি ফোন বের করে রুদ্রকে ধরিয়ে দিলো,
?
- হ্যালো শশুর আব্বা, আপনি ভাবছেন সকাল সকাল এসব কি? এগুলা আপনাদের জন্য না, আমার বউয়ের জন্য। ভাবলাম।সব যেহেতু হয়ে গেছে আপনাদের বাড়িতে বউটাকে ফেলে রাখবো কেনো তাই কালই বউ সাজিয়ে ওকে নিজের কাছে নিয়ে আসতে চাই, তাই বউ সাজার সব কিছু পাঠিয়ে দিলাম। সব আছে সেখানে আপনি আপনার মেয়ের জন্য যা যা চাইতেন শাড়ি, দামীদামী গহনা সব।

স্নেহার বাবার ইচ্ছা করছে এখনি রুদ্রকে গুলি করে মাড়তে কিন্তু ইচ্ছা সত্তেও কিছু করতে পারবে না সে, সে যে নিরুপায়। নিজেকে শান্ত রেখে স্নেহার বাবা বললো,
- মেয়েটাকে একটু সময় দিলে হতোনা?? মানে এখনি.
- কিসের সময়? অনেক সময় দেয়া হয়েছে, আমারো তো কিছু চাওয়াপাওয়া তাইনা। বউ ছাড়া আর কতো দিন একা একা থাকবো?

রুদ্রের মুকে এমন নির্লজ্জ টাইপ কথাবার্তা নিতে পারছেনা আশরাফ খান, আজ অবদি কারো সাহস হয়নি তার সামনে এভাবে কথা বলার,সে জানে রুদ্রকে বুঝিয়ে কোনো লাভ নেই, তাই কথা না বাড়িয়ে বললো,
- ঠিক আছে,,
- আর শুনুন? আপনি আর আপনার মেয়ে যদি কোনো রকম চালাকি করার চেষ্টা করেন, তার ফল খুব খারাপ হবে,আমি কিন্তু আমার সাথে আর কোনো চালাকি মেনে নিবো না।
রুদ্রের কথার কোনো উত্তর না দিয়েই ফোন রেখে দিলো আশরাফ খান,
রুবি স্নেহার রুমে যেয়ে সব কিছু রেখে আসলো, সারাটাদিন রুদ্র তাদের বিয়ের সব কাজে লেগে পড়লো আর,,,
রাত ১২ টা,
রুদ্র ক্লান্ত হয়ে গা এলিয়ে দিয়েছে বিছানায়, ভাবতে বুকে ভেতরে প্রশান্তি অনুভব হচ্ছে যে কাল থেকে তার এই ঘরে স্নেহাও থাকবে, যাকে দেখে তার সব ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে,ভাবতে ভাবতে চোখ বুজলো রুদ্র,
স্নেহার বাবা স্নেহাকে সব কিছু বোঝানোর পর স্নেহা কিছুতেই রুদ্রের কাছে যেতে প্রস্তত তা,সে অবেন কান্নাকাটি করেছে,কান্নাকাটি করতে,করতে একসময় ঘুমিয়ে পড়েছে সে,,,
পরেরদিন,,,
সকাল, সকাল সবাই ব্যাস্ত। রুদ্র কিছু মেয়েকে স্নেহার বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে, কারন তার ভয় ছিলো হয়তো স্নেহা পালিয়ে যেতে পারে।
স্নেহাকে সেই সকাল থেকেই মেয়েরা ঘিরে ধরে আছে, বিভিন্ন ফেসিয়াল দিচ্ছে বার, বার স্নেহা বিরিক্ত হলেও তার নিজের বাবার কথা ভেবেই এসব মেনে নিতে হচ্ছে,
মেয়েরা স্নেহাকে বউ সাজাতে ব্যাস্ত কিন্তু স্নেহার চোখে পানি যেন বাধ মানতেই চাইছে না, 
স্নেগার বাবা, বারবার মেয়েকে এসে দেখে যাচ্ছে। সন্তানের কষ্ট তাকেও ব্যাধিত করছে কষ্টে।
সাজানো শেষ হলেই স্নেহাকে নিয়ে তার বাবা আর মা রওনা হয় কমিউনিটি সেন্টারে যেখানে রুদ্র তাদের বিয়ের আয়োজন করেছে,
বাবার কোলে মাথা রেখেই গাড়িতে বসে আছে স্নেহা।
কমিউনিটি সেন্টারে আসার পরই স্নেহাকে গ্রিনরুমে নিয়ে বসানো হয়,
গ্রিনরুমে বধুসাজে বসে আছে স্নেহা, রুদ্র যেমন ভাবে চেয়েছিলো তেমন ভাবেই সাজানো হয়েছে স্নেহাকে,
নীল লেহেঙ্গা, গা ভর্তি গহনা, ঠোঁটে গারো লাল লিপস্টিক, হাত ভর্তি চুড়ি।
নিচের দিকে মাথা দিয়ে বসে আছে স্নেহা, হঠাৎ কারো উপস্থিতি টের পাচ্ছে কিন্তু তাতেও মাথা তুলে তাকাচ্ছেনা সে,,,
- রুদ্র পেছন থেকেই এসে জড়িয়ে ধরলো স্নেহাকে,,
- অন্যসব সময় হলে স্নেহা রুদ্রকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতো,হয়তো অনেক অপমান ও করতো কিন্তু আজ পাথরের মতো বসে আছে,
রুদ্র স্নেহাকে উঠিয়েই তার দিকে ফেরালো,,,
- মাশআল্লাহ, কি অপরূপ লাগছে তোমাকে, 
রুদ্র স্নেনার থুঁতনি ধরে উচু করে আবারো বললো, মনে হচ্ছে আমার হুরপরি। স্নেহা তাও রুদ্রের দিকে তাকাচ্ছেনা,,
- স্যার আপনাকে সবাই খুঁজছে, গ্রিনরুমের বাহির থেকেই আশিস বললো, 
রুদ্র স্নেহার হাত ধরেই সবার সামনে নিয়ে গেলো,,,,
সবার উদ্দেশ্য করে বলতে লাগলো,
লেডিস এন্ড জেন্টলম্যান, আপনারা সবাই এখানে এসেছে আমি অনেক খুশি হয়েছে,
আমি আর আমার ওয়াইফ স্নেহা একে অপরে অনেক ভালোবাসি, তাই কিছুদিন আগে কাওকে কিছু না জানিয়ে কোর্ট ম্যারেজ করে ফেলি,ভেবে সারপ্রাইজ দিবো। কিন্তু আপনারা জানেন বিশিষ্ট শিল্পপতি আশরাফ খানের কতো শত্রু,তারা সবাই গুজব ছড়িয়েছে যা টিভিতেও প্রচার হয়েছে, আমি নিজে আজ সত্যি আপনাদের জানিয়ে দিলাম। একজন হাসবেন্ড নিজের ওয়াইফ রিলেটেড এসব বাজে কথা কিভাবে মেনে নেয় বলুন? তাই আমরা কাগজে কলমে হাসবেন্ড ওয়াইফ হয়েছি আজ ধর্মীয় ভাবেও হবো।
কাজী সাহেব বিয়ে পড়ানো শুরু করুন,
স্নেহা এতোক্ষন রুদ্রের সব কথা শুনেছে, পাথরের কতো জমে গিয়েছে স্নেহা।
কাজী বিয়ে পড়ানো শুরু করলো, রুদ্র কবুল বলে ফেললেও স্নেহা বলছে না, অবশেষে বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে স্নেহা ও কবুল বলে দিলো।
সবাই রুদ্র আর স্নেহাকে অভিনন্দন আর দোয়া জানালো, স্নেহার কান্না গতি যেন বাধ মানতে চাইছে না, তাই স্নেহা গ্রিন রুমে চলে গেলো।আর রুদ্র অতিথিদের বিদায়ে ব্যাস্ত।
স্নেহা গ্রিনরুমে বসে অঝোরে কেঁদে যাচ্ছে,,,,
নিজেকে শান্ত করে স্নেহা ভাবলো,
একজন ''.কারীর সাথে থাকতে পারবে না সে, বাবার সম্মান সবার সামনে বেচে গিয়েছে এখন চাইলেও রুদ্র আর কিছু করতে পারবে না, তাই স্নেহা কান্না মুছে নিজেকে শান্ত করলো। আর পালানোর সিদ্ধান্ত নিলো,
বেশি কিছু না ভেবেই গ্রিনরুমের দরজা খুলেই স্নেহা বেড়িয়ে গেলো,
বউ সাজে দৌড়াচ্ছে স্নেহা, কোথায় যাবে নিজেও জানেনা সে, সে শুধু জানে তাকে আজ পালাতে হবে, আজ যদি সে নিজেলে মুক্ত করতে না পারে তবে হয়তো আর কখনো পারবে না,
অনেকক্ষন দৌড়ানের পর হাপিয়ে গেছে স্নেহা,, সামনে থেকে একটা গাড়ি আসতে দেখেই হেল্প,হেল্প বলে চিৎকার করে স্নেহা,
গাড়িটা স্নেহার পাশ কাটিয়ে চলে গিয়েও আবার ফিরে আসে,
- প্লিজ আমাকে একটু লিফট দিবেন? আমি অনেক বিপদে পড়েছি।,হাপাতে, হাপাতে কথাগুলো বললো স্নেহা।
গাড়ির কাচ নামাতেই লোকটার মুখ দেখে স্নেহার অন্তর যেন কেপে উঠলো,,কারন সেটি অন্য কেও না রুদ্রই ছিলো,
রুদ্র গাড়ি থেকে নামতেই স্নেহা আমার দৌড় লাগাতে চাইলে রুদ্র স্নেহার হাত ধরে ফেললো, আর স্নেহাকে জোর করে কোলে তুলে গাড়িতে বসিয়ে দিলো,,,



চলবে,
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

Like Reply
#5
 পর্ব -০৪


রুদ্র বেড়িয়ে যেতে যেন স্নেহার বাবা সব কিছু ওলটপালট লাগছে, রুদ্রের এই মাত্র বলে যাওয়া কথাগুলো কানে বাজছে বার,বার!!
রুদ্র যা বলে গেছে তা কি করে করবে সে, নিজের মেয়েটাকে নিজের হাতে শত্রুর কাছে তুলে দিবে,
এটা কোনোভাবেই হতে পারে না।

রাত ১১ স্নেহার বাবা,রুমে পায়চারি করছে, আর কিছু একটা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করছে,,
স্নেহা ঘুমাচ্ছে শরীরটা বেশ উইক, তাই হয়তো ঘুমটা বেশ গভীর,
এদিকে রুদ্র বার বার স্নেহার কথাই ভাবছে, খুব দেখতে ইচ্ছা করছে স্নেহাকে।
রুদ্র বিছানার ওপরে শুয়েই অতিতে ডুব দিলো,

- রুদ্র ভাইয়া দেখুননা আমার এই ম্যাথ টা কিছুতেই মিলছে না আপনি তো ম্যাথ এ অনেক ভালো প্লিজ একটু হেল্প করুণ ( করুন ভাবে স্নেহা কথাটা বললো রুদ্রকে)
- আসলে স্নেহা আমার আজকে একটু কাজ আছে পড়াতে যেতে হবে,
- না ভাইয়া প্লিজ একটু বুঝিয়ে দিয়ে যান!!
রুদ্র জানে স্নেহা তার কথা কিছুতেই শুনবার পাত্রি নয় তাই, সাইকেলটা সাইড করে। প্রিয়ন্তির বাসার নিচেই স্নেহাকে ম্যাথ বুঝিয়ে দিলো রুদ্র।
রুদ্র অনেক সুন্দরভাহে ম্যাথ বুঝিয়ে দিলো আর স্নেহা ও খুব সহজেই বুঝে ফেললো,,
- এবার যাই?
- ওকে ভাইয়া আমার কাছে এখন কিছু নেই আপনাকে গিফট করার মতো,
- গিফট কেনো?
- এইযে এতো কঠিন একটা ম্যাথ এতো সহজ করে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য!!
- ওহ না এখন কোনো গিফট লাগবে না, সময় হলে আমি চেয়ে নেবো।
বলেই সাইকেল নিয়ে রুদে বেড়িয়ে গেলো,,
সারাদিন ৪ টা টিউশনি করে ক্লান্ত রুদ্র বাড়ি ফিরলো সন্ধ্যা ৬ টায়, ছুটির দিনে টিউশনিগুলো দিনেই কম্পলিট করে তারপর সন্ধ্যার পর বাসায় রেস্ট নেয় রুদ্র,
মা, বাবা, ছোট বোন তিতিরকে নিয়ে সুখি সংসার রুদ্রের অভাব থাকলেও নেই কোনো আক্ষেপ!!
সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরতেই নিজের কাধের ব্যাগটা চেয়ারে রেখে টেবিল থেকে পানির গ্লাসটা নিয়ে এক গ্লাস পানি খেয়ে নিলো রুদ্র, হঠাৎ বইয়ের কোনে ভাজ করা একটা কাগজ দেখে রুদ্র হাত বাড়িয়ে কাগজটা নিয়েই খুললো,,, সেখানে লেখা!!

- আজ একটা শুভদিন, রাত হবে মেঘমলিন। আকাশের তারা গুলো,বলবে তার কথাগুলো।
গুটি, গুটি পায়ে দরজাটা খোলো, শুনতে আমার কথাগুলো।

চিঠিটা পড়া শেষ না হতেই অচেনা একটা নাম্বার থেকে মেসেজ এলো রুদ্রের ফোনে,
- প্লিজ বারিরে আসুন ১০ কদম যেখানে শেষ। দেখা হবে অবশেষ!!
The Villain Husband
লেখিকা : নিলাশা ইরা,
পার্ট : ৪
রুদ্রের যাওয়ার ইচ্ছা না থাকলেও অনেকটা কৌতুহল নিয়েই দরজা খুলে বের হলো,
হাটতে, হাটতে ১০ কদম যেতেই আসে পাশ থেকে টুসটাস করে বেলুন ফোটার শব্দ। আর সবাই এক সাথে বলে উঠলো,
Happy Birthday dear Ruddra vaia, Happy birthday to you!!
আর একটা কেকে অনেকগুলো মোমবাতি সাজিয়ে রুদ্রের সামনে হাজির হলো স্নেহা!!
- Happy Birthday Vaia,
রুদ্র তাকিয়ে আছে স্নেহার দিকে, স্নেহা আজ নীল কালারের থ্রিপিজ পরেছে সাথে গোল্ডেন ওরনা। চুলগুলো কোনো রকম বেধে রেখেছে, বেশিরভাগ চুলই এলোমেলোভাবে খুলে আছে, কিন্তু এভাবেই যেন স্নেহাকে সেরা সুন্দরি মনে হচ্ছে রুদ্রর।
রুদ্র তাকিয়ে আছে স্নেহার দিকে,
- ভাইয়া,এইযে!! স্নেহার ডাকে ঘোর কাটলো রুদ্রের,
- এসব কি?(রুদ্র)
- ভাইয়া আজ আপনার জন্মদিন! আর আপনার মনে নেই। আমরা সবাই জানতাম, আর আজ ছুটির দিন আপনি তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আসতেন কিন্তু আমরা আমাদের সারপ্রাইজটা চাঁদের আলোকে সাথে রেখে করতে চেয়েছি, তাই ইচ্ছা করে আজ বিকালে আপনার একটু লেট করিয়েছি।
- তার মানে এসব তোমাদের প্লেন ছিলো?
- আমাদের প্লেন না, প্লেনটা স্নেহার ছিলো আমরা শুধু সেই অনুযায়ী কাজ করেছি,
- রুদ্র স্নেহার দিকে তাকাতেই,
- স্নেহা দুষ্টু হাসি দিয়ে বললো,
উফ ভাইয়া ট্রিট চাইবো না,শুধু আপনার বিয়ের সময় আমাদের সবাইকে দাওয়াত দিয়েন সব ট্রিট একেবারে উশুল করবো। স্নেহার দিকে তাকিয়ে আছে রুদ্র, আর ভাবছে এই মেয়ে কতো সুন্দর করে মানুষকে বোঝে। বাবা আধিপত্যর প্রভাব স্নেহার ওপরে পরেনি ব্যাপার রুদ্রের কাছে বেশ চমকপ্রদ লাগে,
স্নেহা আর সবাই মিলে মজা করে রুদ্রের জন্মদিন পালন করে। রুদ্রের ভুলে যাওয়া তিনটা সেদিন সবাই মিলে সরণীয় করে তোলে,,
- কেক কেটে রুদ্র সবাইকে খাইয়ে দেয়,আর স্নেহাকেও কিন্তু স্নেহা রুদ্রকে কেক খাওয়ানোর সময় রুদ্রের পুরো মুখে কেক লেপ্টে দিয়ে দৌড় দেয়, রুদ্র পেছনে দৌড়ায় স্নেহার,,,
আশিসের ডাকে বাস্তবে ফিরলো রুদ্র,
- স্যার আপনি যা, যা আনতে বলেছিলেন রুবি সব কিছু নিয়ে এসেছে,
- হুম সব আমার রুমে রেখে যেতে বলো,
- আচ্ছা স্যার। বলেই আশিস চলে যায়,,
রুদ্র আবার আনমনে স্নেহার কথা ভাবতে থাকে, খুব ইচ্ছা করছে স্নেহার সাথে কথা বলতে কিন্তু সে জানে এখন স্নেহাকে এখন ফোন দিয়েও কোনো কাজ হবেনা। স্নেহা তার সাথে কথা বলবেনা।

পরেরদিন সকালে,,
স্নেহা বাবার সাথে বসে নাস্তা করছে, মেয়েকে মাঝে বসিয়ে বাবা মা দুজনে দু- পাশে বসে মেয়ে খাইয়ে দিচ্ছে।
হঠাৎ কলিংবেল বাজতেই আলি মিয়া( কাজের লোক।) দরজা খুলে দিলো,
- কে আপনে?
- স্নেহা ম্যাডামের সাথে দেখা করতে এসেছি!!
- একটু দারান স্যার এর কাছে জিজ্ঞাস কইরা আসি,বলার হাটা দিলো আলি মিয়া, পেছন থেকে রুবি বললো, ( বলবেন রুদ্র স্যার পাঠিয়েছে)
আলি মিয়া আশরাফ খানকে বললো,
- স্যার একটা মেয়ে আইছে! কইলো রুদ্র স্যার পাঠাইছে,,
আশরাফ খান কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বললো,
- আসতে দাও!!
আলি মিয়া আবারো দরজায় গিয়ে মেয়েটিকে ভেতরে আসতে বললো,
মেয়েটি ভেতরে ঢোকার সাথে, সাথে পেছনে আরো দুটো লোক অনেকগুলো ব্যাগ হাতে ঢুকলো,
আশরাফ খান টেবিল থেকে উঠেই রুবির কাছে আসলো,
- হুম কি ব্যাপার? আর এসব কি?
- স্যার রুদ্র স্যার এর সাথে কথা বলুন। রুবি ফোন বের করে রুদ্রকে ধরিয়ে দিলো,
?
- হ্যালো শশুর আব্বা, আপনি ভাবছেন সকাল সকাল এসব কি? এগুলা আপনাদের জন্য না, আমার বউয়ের জন্য। ভাবলাম।সব যেহেতু হয়ে গেছে আপনাদের বাড়িতে বউটাকে ফেলে রাখবো কেনো তাই কালই বউ সাজিয়ে ওকে নিজের কাছে নিয়ে আসতে চাই, তাই বউ সাজার সব কিছু পাঠিয়ে দিলাম। সব আছে সেখানে আপনি আপনার মেয়ের জন্য যা যা চাইতেন শাড়ি, দামীদামী গহনা সব।

স্নেহার বাবার ইচ্ছা করছে এখনি রুদ্রকে গুলি করে মাড়তে কিন্তু ইচ্ছা সত্তেও কিছু করতে পারবে না সে, সে যে নিরুপায়। নিজেকে শান্ত রেখে স্নেহার বাবা বললো,
- মেয়েটাকে একটু সময় দিলে হতোনা?? মানে এখনি.
- কিসের সময়? অনেক সময় দেয়া হয়েছে, আমারো তো কিছু চাওয়াপাওয়া তাইনা। বউ ছাড়া আর কতো দিন একা একা থাকবো?

রুদ্রের মুকে এমন নির্লজ্জ টাইপ কথাবার্তা নিতে পারছেনা আশরাফ খান, আজ অবদি কারো সাহস হয়নি তার সামনে এভাবে কথা বলার,সে জানে রুদ্রকে বুঝিয়ে কোনো লাভ নেই, তাই কথা না বাড়িয়ে বললো,
- ঠিক আছে,,
- আর শুনুন? আপনি আর আপনার মেয়ে যদি কোনো রকম চালাকি করার চেষ্টা করেন, তার ফল খুব খারাপ হবে,আমি কিন্তু আমার সাথে আর কোনো চালাকি মেনে নিবো না।
রুদ্রের কথার কোনো উত্তর না দিয়েই ফোন রেখে দিলো আশরাফ খান,
রুবি স্নেহার রুমে যেয়ে সব কিছু রেখে আসলো, সারাটাদিন রুদ্র তাদের বিয়ের সব কাজে লেগে পড়লো আর,,,
রাত ১২ টা,
রুদ্র ক্লান্ত হয়ে গা এলিয়ে দিয়েছে বিছানায়, ভাবতে বুকে ভেতরে প্রশান্তি অনুভব হচ্ছে যে কাল থেকে তার এই ঘরে স্নেহাও থাকবে, যাকে দেখে তার সব ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে,ভাবতে ভাবতে চোখ বুজলো রুদ্র,
স্নেহার বাবা স্নেহাকে সব কিছু বোঝানোর পর স্নেহা কিছুতেই রুদ্রের কাছে যেতে প্রস্তত তা,সে অবেন কান্নাকাটি করেছে,কান্নাকাটি করতে,করতে একসময় ঘুমিয়ে পড়েছে সে,,,
পরেরদিন,,,
সকাল, সকাল সবাই ব্যাস্ত। রুদ্র কিছু মেয়েকে স্নেহার বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে, কারন তার ভয় ছিলো হয়তো স্নেহা পালিয়ে যেতে পারে।
স্নেহাকে সেই সকাল থেকেই মেয়েরা ঘিরে ধরে আছে, বিভিন্ন ফেসিয়াল দিচ্ছে বার, বার স্নেহা বিরিক্ত হলেও তার নিজের বাবার কথা ভেবেই এসব মেনে নিতে হচ্ছে,
মেয়েরা স্নেহাকে বউ সাজাতে ব্যাস্ত কিন্তু স্নেহার চোখে পানি যেন বাধ মানতেই চাইছে না, 
স্নেগার বাবা, বারবার মেয়েকে এসে দেখে যাচ্ছে। সন্তানের কষ্ট তাকেও ব্যাধিত করছে কষ্টে।
সাজানো শেষ হলেই স্নেহাকে নিয়ে তার বাবা আর মা রওনা হয় কমিউনিটি সেন্টারে যেখানে রুদ্র তাদের বিয়ের আয়োজন করেছে,
বাবার কোলে মাথা রেখেই গাড়িতে বসে আছে স্নেহা।
কমিউনিটি সেন্টারে আসার পরই স্নেহাকে গ্রিনরুমে নিয়ে বসানো হয়,
গ্রিনরুমে বধুসাজে বসে আছে স্নেহা, রুদ্র যেমন ভাবে চেয়েছিলো তেমন ভাবেই সাজানো হয়েছে স্নেহাকে,
নীল লেহেঙ্গা, গা ভর্তি গহনা, ঠোঁটে গারো লাল লিপস্টিক, হাত ভর্তি চুড়ি।
নিচের দিকে মাথা দিয়ে বসে আছে স্নেহা, হঠাৎ কারো উপস্থিতি টের পাচ্ছে কিন্তু তাতেও মাথা তুলে তাকাচ্ছেনা সে,,,
- রুদ্র পেছন থেকেই এসে জড়িয়ে ধরলো স্নেহাকে,,
- অন্যসব সময় হলে স্নেহা রুদ্রকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতো,হয়তো অনেক অপমান ও করতো কিন্তু আজ পাথরের মতো বসে আছে,
রুদ্র স্নেহাকে উঠিয়েই তার দিকে ফেরালো,,,
- মাশআল্লাহ, কি অপরূপ লাগছে তোমাকে, 
রুদ্র স্নেনার থুঁতনি ধরে উচু করে আবারো বললো, মনে হচ্ছে আমার হুরপরি। স্নেহা তাও রুদ্রের দিকে তাকাচ্ছেনা,,
- স্যার আপনাকে সবাই খুঁজছে, গ্রিনরুমের বাহির থেকেই আশিস বললো, 
রুদ্র স্নেহার হাত ধরেই সবার সামনে নিয়ে গেলো,,,,
সবার উদ্দেশ্য করে বলতে লাগলো,
লেডিস এন্ড জেন্টলম্যান, আপনারা সবাই এখানে এসেছে আমি অনেক খুশি হয়েছে,
আমি আর আমার ওয়াইফ স্নেহা একে অপরে অনেক ভালোবাসি, তাই কিছুদিন আগে কাওকে কিছু না জানিয়ে কোর্ট ম্যারেজ করে ফেলি,ভেবে সারপ্রাইজ দিবো। কিন্তু আপনারা জানেন বিশিষ্ট শিল্পপতি আশরাফ খানের কতো শত্রু,তারা সবাই গুজব ছড়িয়েছে যা টিভিতেও প্রচার হয়েছে, আমি নিজে আজ সত্যি আপনাদের জানিয়ে দিলাম। একজন হাসবেন্ড নিজের ওয়াইফ রিলেটেড এসব বাজে কথা কিভাবে মেনে নেয় বলুন? তাই আমরা কাগজে কলমে হাসবেন্ড ওয়াইফ হয়েছি আজ ধর্মীয় ভাবেও হবো।
কাজী সাহেব বিয়ে পড়ানো শুরু করুন,
স্নেহা এতোক্ষন রুদ্রের সব কথা শুনেছে, পাথরের কতো জমে গিয়েছে স্নেহা।
কাজী বিয়ে পড়ানো শুরু করলো, রুদ্র কবুল বলে ফেললেও স্নেহা বলছে না, অবশেষে বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে স্নেহা ও কবুল বলে দিলো।
সবাই রুদ্র আর স্নেহাকে অভিনন্দন আর দোয়া জানালো, স্নেহার কান্না গতি যেন বাধ মানতে চাইছে না, তাই স্নেহা গ্রিন রুমে চলে গেলো।আর রুদ্র অতিথিদের বিদায়ে ব্যাস্ত।
স্নেহা গ্রিনরুমে বসে অঝোরে কেঁদে যাচ্ছে,,,,
নিজেকে শান্ত করে স্নেহা ভাবলো,
একজন ''.কারীর সাথে থাকতে পারবে না সে, বাবার সম্মান সবার সামনে বেচে গিয়েছে এখন চাইলেও রুদ্র আর কিছু করতে পারবে না, তাই স্নেহা কান্না মুছে নিজেকে শান্ত করলো। আর পালানোর সিদ্ধান্ত নিলো,
বেশি কিছু না ভেবেই গ্রিনরুমের দরজা খুলেই স্নেহা বেড়িয়ে গেলো,
বউ সাজে দৌড়াচ্ছে স্নেহা, কোথায় যাবে নিজেও জানেনা সে, সে শুধু জানে তাকে আজ পালাতে হবে, আজ যদি সে নিজেলে মুক্ত করতে না পারে তবে হয়তো আর কখনো পারবে না,
অনেকক্ষন দৌড়ানের পর হাপিয়ে গেছে স্নেহা,, সামনে থেকে একটা গাড়ি আসতে দেখেই হেল্প,হেল্প বলে চিৎকার করে স্নেহা,
গাড়িটা স্নেহার পাশ কাটিয়ে চলে গিয়েও আবার ফিরে আসে,
- প্লিজ আমাকে একটু লিফট দিবেন? আমি অনেক বিপদে পড়েছি।,হাপাতে, হাপাতে কথাগুলো বললো স্নেহা।
গাড়ির কাচ নামাতেই লোকটার মুখ দেখে স্নেহার অন্তর যেন কেপে উঠলো,,কারন সেটি অন্য কেও না রুদ্রই ছিলো,
রুদ্র গাড়ি থেকে নামতেই স্নেহা আমার দৌড় লাগাতে চাইলে রুদ্র স্নেহার হাত ধরে ফেললো, আর স্নেহাকে জোর করে কোলে তুলে গাড়িতে বসিয়ে দিলো,,,



চলবে,
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

Like Reply
#6
Lightbulb 
 পর্ব -০৫



এলোমেলো ভাবে বিছানায় বসে আছে স্নেহা, রুদ্র স্নেহাকে আনার সময় ছোটার জন্য অনেক জোরাজোরি করেছে,
স্নেহাকে আনার পর জোর করে রুমে বসিয়ে দিয়ে গেছে রুদ্র,আর স্নেহা রুমে বসে রাগে গজগজ করছে, যেন রুদ্রকে এখন সামনে পেলেই চিবিয়ে খাবে,
দরজা খোলার শব্দ শুনেই, স্নেহা তাকালো সেদিকে। রুদ্র এসেছে। আজ ব্রু কালারের ব্লেজার পরেছিলো আর হোয়াইট কালারের শার্ট পরেছিলো। ব্লেজার টা খুলে ফেলেছে এখন শুধু হোয়াইট কালারের শার্ট পরা।
রুমে ঢুকেই রুদ্র স্নেহার কাছে গেলো,বিছানার ওপরে নিজের শরীর ছেড়ে দিলো, স্নেহার কোলে মাথা রেখে দু- হাত পেটের দু- পাশে দিয়ে স্নেহাকে চেপে ধরলো,
- ছাড়ুন আমাকে,ছাড়ুন।
রুদ্র মাথা উঠিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
- কেনো ছাড়বো???
- কারন আপনার ছোয়াতে আমার ঘেন্না লাগে।( রাগে গজ গজ করতে করতে)
- আজ যা করেছো তারপর ও তোমাকে কিছু বলিনি কারন আজ আমাদের বিয়ের দিন আমাদের বাসরের রাত। তাই, অন্য সব দিন হলে এ অপরাধের খুব খারাপ শাস্তি দিতাম তোমাকে,
- কিসের বিয়ে? আমি মানিনা এই বিয়ে, আর বাসর? যা করার তো আগেই করে নিয়েছেন আপনার সব চাহিদা তো মিটিয়ে নিয়েছেন।
- প্লিজ চুপ করো, আমার এখন তোমার সাথে খারাপ কিছু করার ইচ্ছা নেই,
- আর কি খারাপ করবেন আপনি?
- একদম চুপ স্নেহা, আমার মাথা গরম করবেনা খুব খারাপ হয়ে যাবে।
রুদ্রকে নিজের সব শক্তি দিয়ে ধাক্কা দিলো স্নেহা, 
- আসবেন না আমার কাছে, আপনার প্রতিটা ছোয়া ঘেন্নার।
- কি বললি!!( রুদ্রের মাথায় রক্ত উঠে যাচ্ছে স্নেহার কথা শুনে)
- রুদ্র স্নেহা একটানে নিজের কাছে নিয়ে আসলো, স্নেহাকে বিছানায় ফেলে অঝোরে পুরো শরীরে চুমু দিতে লাগলো, স্নেহা ছোটার জন্য হাজারো চেষ্টা করছে।
- আমাকে ছাড়ুন, ছাড়ুন আমাকে।
রুদ্র তার মাথা অনেক ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করেছিলো কিন্তু এখন আর পারছে না, তাই স্নেহাকে দিয়ে তার সব রাগ ঠান্ডা করছে, নেশাগ্রস্তের মতো স্নেহার সারা শরীরকে নিজের মাঝে আবদ্ধ করে নিয়েছে,
স্নেহার কান্না, ছুটবার জন্য কাকুতি মিনতি যেন রুদ্রের কান অব্দি পৌছাচ্ছেই না।

রাত ১২ টা,,,
স্নেহা বসে বসে কাঁদছে, কাঁদতে কাঁদতে হেচকি উঠিয়ে ফেলেছি রুদ্র অনেক বার থামতে বলেছে কিন্তু কিছুতেই থামছে না।
আর রুদ্র ব্যান্ডেজ করছে স্নেহার হাতে, তখন জোরাজোরিতে হাতে চাও লেগে কাটা যায়গা থেকে আবারো একটু রুক্ত বেড়িয়েছে, জোরাজোরি করার সময় রুদ্র তা খেয়াল করেনি কিন্তু পরে খেয়াল করেছে তাই আগের ব্যান্ডেজ খুলে নতুন করে ব্যান্ডেজ করে দিচ্ছে,
আর স্নেহা বসে, বসে কাঁদছে,,,
ব্যান্ডেজ করা শেষ করে রুদ্র বাহিরে চলে গেলো, ফিরে এলো হাতে এক গ্লাস জুস নিয়ে,
- স্নেহা এটা খেয়ে নাও,
- স্নেহা কেঁদে চলেছে,
- স্নেহা আমি কিছু বলছি তোমাকে,
- স্নেহা কাপা কাপা হাতে গ্লাসটা হাতে নিয়ে একবারে পুরোটা জুস খেয়ে নিলো। রুদ্র স্নেহার কাছ থেকে গ্লাসটা নিয়ে পাশে থাকা টেবিলে রাখলো,
স্নেহার কাছে বসে রুদ্র বলতে লাগলো,
- স্নেহা, কেনো আমাকে বারবার রাগিয়ে দাও? আমিতো চাইনা আমার ভালোবাসার মানুষটার ওপরে রাগ করে থাকতে,তাকে আঘাত করতে, তুমি আমাকে বার বার বাদ্ধ্য করো কেনো?
- স্নেহা গুটিসুটি হয়ে বসে আছে, কোনো কথা বলছে নে। যেমন সেদিন হাসাপাতালে ছিলো, বার বার শরীরে থাকা চাঁদরটা আকরে ধরছে।
- স্নেহা, আমাকে দেখে ভয় পাচ্ছ কেন? তুমিকি জানো আমরা হাসবেন্ড ওয়াইফ আর একটা মেয়ে বিয়ের পর তার সব কিছু হাসবেন্ড কে ঘিরে চিন্তা করে,,
স্নেহা গুটিসুটি হয়ে বসে আছে আর ঠোট গুলো কাঁপছে,,,
রুদ্র আর কিছু না বলে বারান্দায় চলে গেলো, কারন সে জানে এখন স্নেহাকে শতো বুঝিয়েও লাভ নেই।

রুদ্র বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে, আর আগের দিনগুলোর কথা ভাবছে,
- ভাইয়া আমাকে সাইকেল চালানো শিখাবেন প্লিজ??( স্নেহা বায়নাকাতর সুরে বললো রুদ্রকে)
- কিন্তু আমার তো একটু,
- বুঝেছি এখন আপনি বলবেন আপনার অনেক জরুরী কাজ আছে, আপনাকে যেতে হবে, আর কি জরুরী কাজ তাও আমি জানি। প্রতিদিনের সেই একই জরুরী কাজ। আচ্ছা ভাইয়া কাছের মানুষদের জন্য একদিন জরুরী কাজটা মিস হলে এমন কি হবে,
- শোনো,
- কোনো কথা শুনছি না, আজ আমি আর কোনো কথা শুনবো না। চলুন আমাকে সাইকেল চালানো শিখাবে।
বলেই রুদ্রের সাইকেলে চেপে বসলো স্নেহা, রুদ্র তাকে সাইকের চালানো শিখাচ্ছে, কিন্তু স্নেহা কিছুতেই পারছে না। সাইকেল চালাতে চালাতে রুদ্র একটু ছেড়ে দিতে সাইলে নিয়ে ঠাস করে পড়লো স্নেহা।
- আহহহ ভাইয়া,
- তুমি ঠিক আছে? 
- না ভাইয়া পায়ে ব্যাথা পেয়েছি,
রুদ্র স্নেহাকে ধরে উঠাতে যাবে, তখনি স্নেহা রুদ্রের শার্ট আকরে ধরে ব্যাথায় কান্না করে দিয়েছিলো,
একটু খানি ব্যাথা সয়ে নেয়ার ক্ষমতা নেই স্নেহার।
কিন্তু এই স্নেহাই একদিন রুদ্রকে ব্যাথা, ব্যাথা আঘাতে, আঘাতে শেষ করে দিয়েছিলো,
এসব ভাবতে ভাবতেই রুমের দিকে পা বাড়াল রদ্র, 
যেয়ে দেখলো স্নেহা বিছানায় নেই, দরজা খোলার শব্দ পেয়েই পেছনে তাকাতেই দেখলো স্নেহা বাথরুম থেকে বের হচ্ছে, শরীরটা দুর্বল তা বোঝা যাচ্ছে ঠিকমতো হাটতেও পারছেনা।
রুদ্র স্নেহার কাছে গিয়েই ওকে কোলে তুলে নিলো,কিন্তু স্নেহা এখন আর রাগ দেখাচ্ছে না, রুদ্র স্নেহাকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে চাদর টেনে দিলো,,
সকালে ঘুম ভাঙলো পাখির কিচিরমিচিরে,
স্নেহা চোখ মেলতেই নিজেকে রুদ্রের বুকে আবিস্কার করলো, সে নিজে থেকে আসেনি তা সে নিজেও জানে। তার মানে রুদ্রই তাকে নিজের কাছে এনেছে। রুদ্রের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলো স্নেহা, এই কি সেই আগের রুদ্র যার কাওকে কাঁদতে দেখলেও বুকটা ফেটে যেত। মিষ্ট ভাষার সেই ছেলেটা যার মুখে সবসময় মিষ্টি হাসি লেগে থাকতো আজ তাকে বড় অচেনা লাগছে,,
রুদ্রের দিকে গভীরভাবে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকার পর নিজেকে সামলে নিলো স্নেহা, তারপর বিছানা ছেড়ে উঠেই ওয়াসরুমে চলে গেলো,,,,,
- আজ বেস তাড়াতাড়ি উঠে পড়েছে স্নেহা অনেকদিন পর সকালে এতো তাড়াতাড়ি উঠলো সে, বেলকনিতে দাঁড়িয়ে চোখ বুজে ভাবছে তার সাথে হয়ে যাওয়া ঘটনাগুলোর কথা,
হয়তো গল্পটা অন্যরকম হয়ে পারতো কিন্তু সব কিছুই কেমন জানো ওগোছালো হয়ে গেলো,পূরোনো অনেক কথা ভাবছে স্নেহা চোখের কোন দিয়ে বিন্দু, বিন্দু পানি গড়িয়ে পরছে,
হঠাৎ কোমরে কারো হাতের ছোয়া পেলো স্নেহা,,,
- এতো সকালে উঠেছো যে?( স্নেহা ঘাড়ে নাক ঘষতে, ঘসতে বললো রুদ্র)
- জানেন বিয়ের আগেরদিন মামনি আমাকে কি বলেছে?
- কি বলেছে!( ঘাড়ে মুখ ডুবিয়েই)
- বিয়ের পরে মেয়েদের একটা বাড়িই থাকে সেটা হচ্ছে স্বামীর বাড়ি!! আর তখন মেয়েরা বাবার বাড়ির অতিথি হয়ে যায়।
- হুম ঠিক বলেছে,,
- কিন্তু বলতে পারবেন? আমি কোন বাড়িতে আছি?
স্নেহার প্রশ্ন রুদ্র একটু চমকে গেলো,
- মানে? তুমি তোমার স্বামীর বাড়ি আছো, যার সাথে তোমার বিয়ে হয়েছে।
- না, আমি সেই লোকটার বাড়ি আছি যে আমাকে ঠকিয়েছে, আমি সেই লোকটার বাড়ি আছি যে আমাকে ''. করেছে, আমি সেই মানুষটার বাড়ি আছি যে আমার প্রতিটা নিশ্বাসকে কষ্টে পূর্ন করে দিয়েছে,,,,
- স্নেহার কথাগুলো রুদ্রের বুকে বাধছে তবে, এতোটুকু শান্তি পাচ্ছে রুদ্র যে স্নেহা তার বুকেই আছে।
রুদ্র স্নেহাকে তার দিকে ফেরালো,,,
স্নেহার কাপা,কাপা ঠোঁটে আঙুল দিয়ে ছুয়ে দিতে লাগলো আর বলতে লাগলো,
- আজ তোমার এমন মনে হচ্ছে? কই ২ বছর আগে তো এই খারাপ মানুষটার জন্যই কতো রাত অপেক্ষা করে পার করতে, কতো শতো প্রেমের কবিতা লিখতে, তখন এই খারাপ মানুষটাকে নিয়েই হাজারো স্বপ্ন বুনতে, তবে আজ কেন তা পারছো না।
- কারন সেই মানুষটা দু- বছর আগেও আমাকে ধোকা দিয়েছে আর এখনো দিচ্ছে বাকিটা জীবন ও দিবে,
স্নেহার চোখে পানি টলমল করছে,
- আর কতো? আর কতো স্নেহা? আমাকে এভাবে ভুল বুঝে কষ্ট আর কতো দিবে???? জীবনে অনেক কিছু হারিয়ে ফেলেছি তুমি কি মনে করো সেদিন দোষটা শুধু আমার ছিলো? হ্যা আমার দোষ ছিলো আমি অন্য কারো কোথার ফাদে পড়েছিলাম কিন্তু তারপর তুমি তোমার বাবা আমার সাথে আর আমার পরিবারের সাথে যা করেছো? তারপর ও বলছো তোমার সাথে আমি যা করছি তা অপরাধ??? মনে রেখো আমার তোমাকে পাওয়া হয়ে গিয়েছে এখন আমার একটাই টার্গেট তোমার বাবা আশরাফ খানের সব কিছু মাটিতে মিশিয়ে দেয়া,,,
- আপনি আমাকে পেয়েছেন? ( তাচ্ছিল্যর হাসি দিয়ে বললো স্নেহা)
না, আপনি আমাকে পান নি আপনি পেয়েছেন আমার শরীরটা। টাকা হলে এমন হাজারো শরীর পাওয়া যায়!!
- একদম চুপ!( স্নেহার গাল শক্ত করে চেপে ধরে বললো রুদ্র) কোনো কথা বলবিনা, তোর শরীর পেয়েছি তোকেও পাবো,তোর সব কিছু আমার। তোকে ভালোবাসি তাই বলে ভাবিস না আমি আগের সব কথা ভুলে গিয়েছি, আমার সব মনে আছে।( রাগে কটমট করতে করতে কথাগুলো বললো রুদ্র)
- আমারো সব মনে আছে, আমিও কিছু ভুলিনি আর কখনো ভুলবো ও না।
আর আমাকে ছাড়ুন আমি আপনার কতো পাথর না, আমার খিদে পেয়েছে, কাল আমার ওপরে জানোয়ারের মতো অত্যাচার করেছেন আমি খেয়েছি কিনা বা আমার শরীরের কি অবস্থা তা জানার ইচ্ছাও জাগেনি আপনার মনে, আপনি ব্যাস্ত ছিলেন নিজের খিদে মেটাতে, 
স্নেহার কথা রুদ্র স্নেহাকে হালকা করে দিলো, সত্যি তো রুদ্র কাল অন্য একটা মানুষ হয়ে গিয়েছিলো, স্নেহার খেয়েছে কিনা বা ওর শরীরের কি অবস্থা একবারো জানতে চাইনি সে,
রুদ্রের থেকে ছাড়া পেতেই স্নেহা, চলে গেলো রুম থেকে,
সিরি বেয়ে নিচে নামতেই স্নেহার দেখা বুয়ার সাথে, বয়স হয়তো ৪০ হবে,
- মা আপনে রুদ্র বাবার বউ?
- আনমনে কিছুক্ষন তাকিয়ে স্নেহা জিজ্ঞেস করলো আপনি জানলেন কিভাবে?
- আমি জানুম না, আমারে তো এ দুইদিন আগেই আনছে আপনার দেখাশোনা করার জন্য,,
- ওহ, খালা আমার খিদে পেয়েছে, আপনার সাথে পরিচিত আসতে, আসতে হবো। আমাকে আগে কিছু খেতে দিন।
-আচ্ছা মা আপনে একটু বসেন আমি এখনি খাবার দিতাছি।
- খালা মা যখন ডেকেছেন আমাকে তুমি বলে ডাকবেন, আপনি আমার অনেক বড়।
- স্নেহার কথা শুনে যেন খালার মুখে খুশির ঝলক,,,
- স্নেহা বসে আছে খাবার টেবিলে,
হুট করে পাশে এসে বসলো রুদ্র,
খালা খাবারগুলো এক এক করে আনছে,
প্লেট উলটাতে,উলটাতে বললো রুদ্র বললো,
- খেয়ে রেডি হয়ে নাও বের হবো,
- কোথায়?
- যা বলেছি তা করো,
স্নেহা আর কথা বাড়ালো না, সে জানে তার কথার কোনো মূল্য দিবেনা রুদ্র। তাই চুপচাপ খেয়ে রেডি হয়ে নিলো, 
- স্নেহা রেডি হয়ে নিচে নামতেই,
- এটা কি পড়েছো তুমি?( রেগে বললো রুদ্র)
- নিজের দিকে একবার তাকিয়ে স্নেহা উত্তর দিলো, থ্রিপিজ পরেছি!!
- হ্যা তা আমিও দেখতে পাচ্ছি কিন্তু থ্রিপিজ কেনো? নতুন বউ শাড়ি পরে যাও শাড়ি পরে আসো,
- না আমি পারবোনা শাড়ি পড়তে,
- তুমি যাবা নাকি???( রেগে বললো রুদ্র)
রুদ্রের রাগ স্নেহার জানা আছে তাই স্নেহা আর কথা বারালো না, চুপচাপ ভেতরে গিয়ে একটা লালশাড়ি পরে বের হলো,
স্নেহা বের হতে রুদ্র যেন হা হয়ে আছে, স্নেহা একটা লাল টকটকে শাড়ি পরেছে,,


চলবে,
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

Like Reply
#7
Keep it up
[+] 1 user Likes Saj890's post
Like Reply
#8
 
পার্ট : ৬

স্নেহা লাল শাড়ি পরে বের হয়েছে, চুলগুলো খোলা কিন্তু খোলা চুলগুলোকেই স্নেহা এলোমেলো বাধার চেষ্টা করছে, রুদ্র স্নেহার দিকে তাকিয়ে আছে,
- চুলগুলো খোলাই তো ভালো লাগছে বাধছো কেনো?
রুদ্রের কোথায় স্নেহা রুদ্রের দিকে তাকালো, একবার রুদ্রের দিকে তাকিয়েই আবার চুল বাধতে ব্যাস্ত করে নিলো নিজেকে,
স্নেহার এমন হেয়ালি পোনা দেখে রুদ্রের মেজাজটা বেশ গরম হলো,
- আমার কথা শুনছো না? নাকি শুনেও না শোনার ভান করছো? আমি বলছিনা যে চুল বাধবা না, ( রাগে লাল হয়ে রুদ্র বললো স্নেহাকে) তারপর স্নেহার হাত থেকে রাবার বেন্ড টা নিয়ে ফেলে দিলো,
স্নেহার কেন জানো রুদ্রের সাথে কথা বাড়াতে ইচ্ছা করছেনা তাই, চুপ করে রইলো,
- এখন থেকে আমি যেভাবে চাইবো সেভাবেই থাকতে হবে তোমাকে,তুমি চাও আর নাই চাও,( রুদ্র) বলেই স্নেহার হাত ধরে নিয়ে গেলো গাড়ির কাছে,,
স্নেহাকে গাড়িতে বসে নিজেও উঠে বসলো গাড়িতে,,,
স্নেহার সব কিছু কেমন জানো লাগছে মনে হচ্ছে এ জীবনের কোনো মানে নেই, সে কারো হাতের পুতুল হয়ে গেছে। সেই পুতুলটাকে যেভাবে নাচাচ্ছে পুতুলটা সেভাবেই নাচছে,,
অনেকক্ষন পর রুদ্র আর স্নেহা একটা বাড়িতে এসে পৌছালো,
বাড়িটা বেশ বড়, আশেপাশে ফুলগাছ আর এ সাইডে একটা দোলনা। যেমন বাড়ি স্নেহা চাইতো।
কলিংবেল বাজাতেই একটা মেয়ে দরজা খুললো,
- ভাইয়া, তুমি ভাবিকে নিয়ে এসেছো?( তিতির রুদ্রের বোন)
তিতিরকে দেখে স্নেহা অবাক তিতিররা এখানে থাকে স্নেহার জানা ছিলোনা। অনেক খুঁজেছে স্নেহা ওদের কিন্তু পায়নি এতোবছর পর এভাবে দেখা হবে ভাবেনি স্নেহা।
- হুম এসেছি!!
- কে আসলো রে তিতির,( রুদ্রের মা মনোয়ারা বেগম।ভেতরে থেকে আওয়াজ দিয়ে বললেন।
- মা ভাইয়া এসেছে ভাবিকে নিয়ে,
- ওদের বাহিরে দাড়াতে বল, আমি আসছি।
- আচ্ছা মা!! শুনলা মা দাড়াতে বলেছে,
হাতে একটা মিষ্টির আর পানির ট্রে নিয়ে হাজির হলো রুদ্রের মা,

স্নেহা কিছুই বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে? তার ছেলে আমাকে এভাবে বিয়ে করেছে কিন্তু তারপর ও রুদ্রে মা বোন কে এমন স্বাভাবিক লাগছে, এটা যেন স্নেহা মানতেই পারছে না।

রুদ্রের মা দরজার সামনে এসে হাতে থাকা ট্রে থেকে স্নেহাকে মিষ্টি খাইয়ে দিলো, আর পানি। তারপর স্নেহাকে একটা চেইন পড়িয়ে দিলো গলায়।
- বাহ কি মিষ্টি মেয়ে,আগের থেকেও বেশি মিষ্টি হয়েছো মা দেখতে। আমি আগের থেকেই তোকে খুব পছন্দ করতাম। রুদ্র ওকে কোলে করে ভেতরে আন।
রুদ্রের মায়ের কথা শুনে স্নেহা যেন থো মেরে আছে, কোলে করে ভেতরে নিতে হবে কেন? সে কি ভাবছে স্নেহা হাটতে ভুলে গেছে, কথাগুলো ভাবতে,ভাবতেই স্নেহা রুদ্রের দিকে তাকালো, রুদ্র স্নেহার দিকে তাকিয়ে একটা দুষ্টু হাসি দিলো,
- মা কোলে করেই নিতে হবে কেন? না মানে যা ওজন আমি কোলে তুলবো কিভাবে( দুষ্টু হাসি দিয়ে বললো রুদ্র)

- চুপ ফাজিল ছেলে, নতুন বউকে কোলে করেই ঘরে আনতে হয়। আর ওর ওজন যে কি তা বোঝাই যায়, ফাজলামো না করে যা বলছি তাই কর।
আর এদিকে স্নেহার ওজন নিয়ে কথা বলাতে স্নেহা রাগে কোটকোট করতে করতে রুদ্রের দিকে তাকাচ্ছে,
রুদ্র স্নেহার দিকে তাকিয়ে, স্নেহাকে কোলে তুলে নিলো,কিন্তু স্নেহা রুদ্রকে ধরছে না দেখে রুদ্র একবার কোলে থেকে ফেলে দেয়ার ভান করতেই স্নেহা ভয়ে রুদ্রের গলা জড়িয়ে ধরলো, 
রুদ স্নেহাকে নিয়ে সোজা তার রুমে গেলো তারপর বিছানায় স্নেহাকে বসিয়ে দিলো,
-যা ওজন তুমি? যাই মাকে বলি গ্লুকোজ বানিয়ে দিতে, বলেই রুদ্র চলে গেলো,
তিতির এসে স্নেহার পাশে বসলো, 
- ভাবি আমি তোমাদের বিয়ের কাহিনি শুনেছি, উফ কতো রোমান্টিক ছিলো, ভাইয়া এতো রোমান্টিক হতে পারে আমি ভাবতেও পারিনা।
তিতিরের কথা শুনে যেন স্নেহার মাথায় বাজ পড়লো, কি বলছে মেয়েটা এতো বিস্রি একটা ঘটনা মেয়েটার কাছে রোমান্টিক মনে হচ্ছে ভাবতেও পারছেনা স্নেহা.
- ভালোই হয়েছে তোমার বাবা সেই মাতাল ছেলেটার ব্যাপারে সব জানতে পেরেছিলো,আর নয়তো তোমার মতো একটা কিউট মেয়ের সাথে একটা মাতাল লোকের বিয়ে হয়ে যেত।
স্নেহা এবার বুঝতে পারলো যে আসলে রুদ্রের পড়িবার আসল ঘটনা জানে না, রুদ্র তাদের বানিয়ে,বানিয়ে অন্য গল্প বলেছে,
হাতে জুস নিয়ে রুদ্র রুমে ঢুকলো,
- কিরে ও আসতেই গল্প জুরে দিয়েছিস?
- না রে ভাইয়া, তোমাদের বিয়ের স্টোরি শুনছিলাম, 
- মানে ( থতোমতো খেয়ে রুদ্র জিজ্ঞেস করলো,)
- হ্যা তো ভাবির কাছে বিয়ের গল্প শুনবার জন্য এসেছিলাম, আর ভাবি কিছু বলার আগেই তুমি চলে এলে,
রুদ্র শান্ত হলো এই ভেবে যে স্নেহা কিছু বলার আগেই সে এসে পড়েছে,
- হুম, যা তোকে মা ডাকছে,
- আচ্ছা, যাচ্ছি। ভাবি তুমি রেস্ট করো আমি মায়ের কথা শুনে আসি।
বলেই তিতির চলে গেলো।
এমন একটা কাজই আপনি করেছেন যে নিজের পড়িবারের কাছে সত্যি টা লুকাতে হচ্ছে। মিথ্যা গল্প বলেছেন তাদের।
- আমার দিক দিয়ে আমি কোনো ভুল করিনি,( গ্লাসে চুমুক দিতে, দিতে রুদ্র বললো)
- হ্যা আপনি তো কোনো ভুল করেননি, কিন্তু এখন আমি আপনার মায়ের কাছে যেয়ে আপনার ভালো কাজগুলো কথা বলবো আর জানতে চাইবো এই কাজের জন্য সে তার ছেলেকে কি উপহার দিবে!! বলেই স্নেহা বিছানার থেকে উঠলো, আর বাহিরে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো।
- দাড়াও! যাওয়ার আগে এটা জেনে রাখো আজ আমার মা যদি সবটা জানে। তবে তুমি আর কখনো তোমার মা বাবার মুখ দেখতে পারবে না।
স্নেহা রুদের কথা শুনে থমকে যায়, এমন কোনো কথা সে রুদ্রের মুখ থেকে আশা করেনি। 
- আপনি এতোটা খারাপ?
- হ্যা অনেক, এতোদিনেও বোঝোনি?( রুদ্র)
- সত্যি আমার বোঝা উচিৎ ছিলো, যে ''. করতে পারে সে খুন ও করতে পারে।
- তা তুমি যা ইচ্ছা বলো, কিন্তু আমার মা বোন যদি গুনাক্ষরেও কিছু টের পায় আমি কাওকে ছাড়বো না।
আর তুমি ভেবোনা ভালোবাসি বলে আমি তোমাকে স্বাধীন করে দেবো,
নেভার, তুমি এই বাড়ির বউ। আমার মায়ের সেবা করবে সুন্দর করে গুছিয়ে সংসার করবে আমার বোনকে নিজের বোন মনে করবে। আর একটা ভালো ওয়াইফ হবে,
- কখনোই না, এসব কিছুই আমি পারবো না। আমার থেকে এসব আশা করা ছেড়ে দিন।আমি না পারবো এই বাড়ির বউ হতে না পারবো আপনার ওয়াইফ হতে। আপনি আমাকে জোর করে বিয়ে করেছেন। আমি মানিনা এই বিয়ে,( চিৎকার করে বললো স্নেহা।
- রুদ্র রেগে স্নেহার মুখ চেপে ধরলো,
চুপ একদম চুপ এটা তোমার বাপের বাড়ি না যে যা ইচ্ছা করবা। এটা আমার বাড়ি আমি যা বলবো তাই হবে, আর বেশি বাড়াবাড়ি করলে,
রুদ্রের হাত ধাক্কা দিতে সরিয়ে স্নেহা বললো,( কি??? কি করবেন? মেড়ে ফেলবেন? মেড়েই ফেলুন বাচতে চাইনা আমি) কাঁদতে কাঁদতে বললো স্নেহা।
স্নেহার কপালের সাথে কপাল ঠেকিয়ে রুদ্র বললো,
- তুই যে আমার পড়ান পাখি, তোকে মাড়লে তো নিজেই বাচতে পারবোনা। তুমি চাও আর না চাও আমার বাড়িতে আমার বউ হয়েই থাকতে হবে তোমাকে, মা তিতির কেও যেন কিছু না জানে।
( কথাগুলো বলেই রুদ্র স্নেহাকে ছেড়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো,
স্নেহা ফ্লোরে বসে কাঁদছে ,
একটা সুন্দর সংসার চেয়েছিলো সে একটা ভালোবাসার মানুষ চেয়েছিলো সে কিন্তু তার সাথেই কেন এমন হচ্ছে প্রশ্নগুলোর উত্তর হয়তো কেও জানে না,রুদ্র ছাড়া।
কাঁদতে কাঁদতে রুদ্রের বলা কথাগুলো মনে পড়লো স্নেহার, রুদ্র বলেছে তার মা অথবা বোন কেও কিছু জানতে পারলে। তার মা, বাবাকে আর কখনো দেখতে পারবেনা স্নেহা। তাই স্নেহা ঠিক করলো নিজের মা, বাবাকে বাচাতে হলেই থাকে ভালো থাকার অভিনয় করতে হবে, ফ্লোর থেকে চোখ মুছতে মুছতে উঠলো স্নেহা বাথরুমে যেয়ে নিজেকে ফ্রেস করে দিলো। যতোটুকু সম্ভব নিজেকে স্বাভাবিক করলো স্নেহা।
- ভাবি ও ভাবি!( তিতির)
ফ্রেস হয়ে বাথরুম থেকে বের হতেই স্নেহা দেখলো তিতির রুমে তাকে ডাকছে,
- ও ভাবি তুমি বেরিয়েছ? মা তোমাকে ডেকেছে খাওয়ার জন্য।
- হুম আমি ফ্রেস হতে গিয়েছিলাম চলো,
স্নেহা খাবার টেবিলে যেতেই দেখলো টেবিল জুরে সব তার পছন্দের খাবার।
- ভাবি জানো আজ মা সব তোমার পছন্দের খাবার বানিয়েছে,
- আয় মা খেতে বস!!
- আন্টি আপনি এতোকিছু কেনো করতে গেলেন?( স্নেহা)
কি বললি তুই আমাকে? আমি তোকে সেই কখন থেকেই মেয়ের মতো তুই তুকারি করছি আর তুই আমাকে আন্টি বললি?
- তাইলে? কি বলবো আমিতো আপনাকে সবসময় আন্টি বলি।
- দেখ মা, সবসময়ের কথা আজ থেকে বাদ, তুই আমার মেয়ে আর মেয়ে কি মাকে আন্টি বলে নাকি তুই ও আমাকে মা বলবি।
- আচ্ছা মা, তুমি এতো কিছু কেন করেছো? ( হেসে দিয়ে বললো স্নেহা)
-আমি আজ আরেকটা মেয়ে পেয়েছি তো তাই আমার মেয়েটার জন্য করেছি,
কিন্তু আমার ছেলেটা যে কই গেলো,
- এই তিতির তোর ভাইয়া কই?
- মা ভাইয়া ছাদে,
- যা ডেকে আন দুজনে আজ আমার সামনে একসাথে খাবে,
ছাদে রুদ্র দাঁড়িয়ে ছিলো, 
- ভাইয়া মা ডাকছে,
-কেন?
- খেতে,বলেছে আর তোমাকে আর ভাবিকে একসাথে বসে খাওয়াবে।
- আমার ইচ্ছা করছেনা, মাকে বল খাবোনা,
- মা যখন বলেছে তোমাকে যেতেই হবে,
তিতিরের জোরাজুরিতে রুদ্র নিচে নামলো,
রুদ্রকে আর স্নেহাকে পাশাপাশি বসিয়ে দিলো তিতির,
স্নেহার হাতে ব্যাথা খেতে অনেক কষ্ট হচ্ছে তাও আস্তে, আস্তে খাচ্ছে।
- কিরে মা তোর হাতে কি হয়েছে,
রুদ্র মায়ের এমন প্রশ্ন শুনে থো হয়ে আছে, স্নেহাও কি বলবে বুঝতে পারছেনা। সত্যিটা তো বলা যাবেনা।
- আরে মা, ভাবিকে তার বাবা অন্য ছেলের সাথে বিয়ে দিতে চেয়েছিলো, তাই মনে হয় ভাবি ভাইয়ার জন্য হাত কেটেছে, ( কেও কিছু বলার আগেই তিতির বলে উঠলো)
স্নেহা আর রুদ্র একে ওপরের দিকে তাকাচ্ছে,  
স্নেহার ইচ্ছা করছে চিৎকার করে বলতে সে এই লোকটার জন্য হাত কাটেনি লোকটার অত্যাচারের জন্য হাত কেটেছে,,,

চলবে,,, 
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

Like Reply
#9
 
পার্ট : ৭

কিন্তু স্নেহা তা বলতে পারলো না, কারন তার জীবনের সাথে তার বাবা মায়ের ও জীবন জড়িয়ে আছে,
যে লোকটা ''.ের মতো খারাপ কাজ করতে পারে তার কাওকে খুন করতেও হাত কাপবে না,
স্নেহা কিছু বললো না, চুপচাপ খেয়ে নিলো,
- তিতির স্নেহাকে সন্ধ্যায় একটা শাড়ি পড়িয়ে দিবি তোর রুমে নিয়ে, কাল যেগুলো কিনিছিলাম তার মধ্য থেকে। ( রুদ্রের মা) যা মা তিতিরের সাথে ওর রুমে যা,
স্নেহা কিছুই বুঝতে পারছে না, সে অলরেডি শারি পরে আছে, তবে কেনো আবার নতুন আরেকটা শারি পড়বে,
- আসলে মা, আমিতো এই শারিটা আজই পড়েছি তবে আবার নতুন শাড়ি কেনো পড়বো,
- আমি বলেছি তাই মা, আমার বউমা আজ আমার বাড়িতে প্রথম এসেছে তাই সব কিছু নতুন হওয়া চাই,
স্নেহা আর কিছু বললো না, শুধু মাথা নারালো,
খাওয়া শেষে স্নেহা রুমে গেলো, ক্লান্ত লাগছে শরীরটা একদিন ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া হয়নি, তারপর রাত হলে কান্নাকাটি এক ধরনের মানুষিক চাপ যেন পেয়ে বসেছে স্নেহাকে, বিছানায় গা এলিয়ে দিতে ঘুমের রাজ্য তলিয়ে গেলো স্নেহা,,,
প্রায় ৩ ঘন্টা ঘুমালো স্নেহা, সন্ধ্যা ৭ টা, তিতিরের ডাকে ঘুম ভাঙলোলো স্নেহার,
- ভাবি ভাবি!!
চোখ মেলে তাকাতেই স্নেহা দেখলো তিতির ডাকছে তাকে,
স্নেহা উঠে বসলো,
- কি হয়েছে?
- তোমার বাবা এসেছে ভাবি,
- সত্যি??( খুশি হয়ে)
কিন্তু স্নেহার এ খুশি বেশিক্ষন থাকলো,না। কারন তার তার ভয় করছে যদি বাবা রুদ্রের মাকে সব বলে দেই তাহলে রুদ্র তার বাবার কোনো ক্ষতি করে দিতে পারে, তাই স্নেহা দেরি না করে বিছানা থেকে নেমে সোজা ড্রয়িং রুমে গেলো,
- পাপা,
মেয়েকে দেখে আশরাফ খান উঠে দাঁড়ালো, স্নেহা দৌড়ে যেয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরলো,
- পাপা, আমি তোমাকে অনেক মিস করছিলাম পাপা,( স্নেহা কাঁদতে কাঁদতে তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলছে তার বাবাকে)
- হ্যা মামনি আমিও তোমাকে অনেক মিস করেছি, 
ভাই ভালোই করেছেন মেয়ের ওপরে আর কোনো রাগ রাখেননি চলে এসেছেন। আসলে মেয়েরাই বাবা মায়ের খুব আদরের হয়( রুদ্রের মা)
- হ্যা আপা, আমার মেয়েটাকে দেখবেন আপনাদের ভরসায় রেখে যাচ্ছি ওকে।( স্নেহার বাবা)
- রেখে যাচ্ছ মানে? কোথায় যাচ্ছ পাপা?
- মা আমরা দেশের বাড়ি ফিরে যাচ্ছি, রাজশাহীতে এখন থেকে ওখানেই থাকবো। ব্যাবসায় অনেক বড় লোস হয়েছে এরপর ঢাকা থেকে আর কি করবো তার চেয়ে ভালো বাকি জীবন জন্মস্থলেই কাটিয়ে দিবো।
- কিন্তু পাপা,( স্নেহা)
- কোনো কিন্তু না মা, তুমি এখানে অনেক ভালো থাকবে। 
স্নেহা বাবার মুখের ভাষা নয়, চোখের ভাষা বোঝার চেষ্টা করছে, মনে হচ্ছে খুব গভীর কিছু লুকাচ্ছে তার বাবা তার থেকে। 
- পাপা, ভাইয়া? ভাইয়ার কি হবে? 
- ও আসুক দেশে আগে থেকেই ওকে কিছু জানাবো না, তাহলে চিন্তা করবে।
- আচ্ছা মা আমি আসি, রওনা দিতে হবে, মেয়ের থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলো স্নেহার বাবা। স্নেহা তখনো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদছে।
রুদ্রের মা অনেক কিছু বলে স্নেহাকে শান্তনা দিলো, তারপর তিতিরের রুমে বসিয়ে দিয়ে আসলো, 
- ভাবি নাও এটা, 
মাথা তুলে তাকিয়ে স্নেহা দেখলো তিতির একটা বেগ তার দিকে এগিয়ে ধরে রেখেছে,
- কি এটা?( স্নেহা)
-শাড়ি, মা তোমাকে এটা পড়তে বলেছে।আর খুব সুন্দর করে সাজতে বলেছে,
- কেনো??( স্নেহা)
- আগে যা বলেছে তা করো পরে সব জানতে পারবা!!( বলেই হাসতে,হাসতে চলে গেলো তিতির)
রুদ্রের মায়ের আদেশ না মানলে হয়তো রুদ্র আবার উলটা পালটা কিছু করবে তাই স্নেহা রেডি হতে লাগলো,
ফোনে কথা বলতে, বলতে বাসায় ঢুকছে রুদ্র,
রুদ্রে সামনে দুই হাত ছড়িয়ে থামতে বললো তিতির,
বিরক্তি মুখ নিয়ে ফোনটা কানের থেকে সরিয়েই রুদ্র জিজ্ঞেস করলো,
- কি হয়েছ? কি বলবি? দেখছিলি না ফোনে কথা বলছিলাম।
- শোনো ভাইয়া, আমাকে রাগ দেখাবা না, এই নাও ধরো রুদ্রের দিকে একটা পেকেট এগিয়ে দিয়ে,
একবার পেকেটের দিকে তাকিয়ে,
- কি এটা?
- খুলে দেখো। মা এটা পড়ে রেডি হতে বলেছে,
- মানে????( রুদ্র) কেন?
- আমি কি জানি! আগে রেডি হও তারপর জানতে পারবে।
মা বলেছে মায়ের কথা রাখতেই হবে, তাই রুদ্র পেকেটটা নিয়ে তার রুমে গেলো,
পেকেট খুলেই দেখলো ভেতরে একটা নীল কালারের পাঞ্জাবি। 
রুদ্র পাঞ্জাবিটা পরে রেডি হয়ে নিলো, তারপর বসে আবার লেপটপে কাজ করতে বসলো,
- ওয়াও ভাবি তোমাকে কি সুন্দর লাগছে,
তিতিরের কথা পেছনে তাকাতেই দেখলো তিতির দারিয়ে বলছে,
- ভাবি আজ ভাইয়া জাস্ট তোমাকে দেখে পাগল হয়ে যাবে,
স্নেহার বিয়েটা যদি সাধারন ভাবে হতো তবে ননদের এই কথায় হয়তো সে লজ্জা পেতো কিন্তু তার বিয়েটা অন্যসব পাঁচটা সাধারণ বিয়ের মতো না তাই হয়তো ননদের কথা তার লজ্জা পাওয়ার বদলে নিজের ওপরে করুণা হচ্ছে,কারন তাকে সব বাদ্ধ্য হয়ে করতে হচ্ছে,,,
- কই তোদের হলো, বলতে বলতে রুমে ঢুকছেন রুদ্রের মা মনোয়ারা বেগম। স্নেহাকে দেখেই সে বলে উঠলো,
- বাহ আমার মেয়েটাকে কি সুন্দর লাগছে,
- হ্যা মা ঠিক বলেছো, তোমার ছেলে তো আজ পাগল হয়ে যাবে,( দুষ্টুমি করে বললো তিতির)
- তুই চুপ করবি? খালি পাকা পাকা কথা তাইনা, ভাবিকে এভাবে লজ্জা দিতে হয়? যা বাহিরে যা।
- আমাকে কেও ভালোবাসে বা, ( বলেই মুখে ভেংচি কেটে চলে গেলো তিতির।
- পাগল মেয়ে একটা,( তিতিরকে উদ্দেশ্য করে বললো মনোয়ারা বেগম) আয়তো মা খেয়ে নে!
- মা এতো তাড়াতাড়ি? আর আমি নিজের হাতে খেতে পারবো।
- হ্যা জানি, কাটা হাত নিয়ে দুপূরে খেতে কষ্ট হচ্ছিলো আমি বুঝেছি, এখন কথা না বলে আয়তো খাইয়ে দেই।
স্নেহার পাশে বসে মনোয়ারা বেগম স্নেহাকে খাইয়ে দিতে লাগলো,
স্নেহার তার দিকে একপলকে তাকিয়ে আছে, আর চিন্তা করছে। রুদ্রের মা বা রুদ্রের বোন তো একটুও বদলায়নি তবে রুদ্র কেনো এতোটা বদলে গিয়েছে, বুঝতে পারছে না স্নেহা।
খাওয়া শেষ হতেই, 
চল তো মা, আমার সাথে।
বলেই স্নেহাকে মানোয়ারা বেগম তার রুমে নিয়ে গেলো,
আলমারি থেকে একজোরা চুড়ির সেট বের করে স্নেহাকে পড়িয়ে দিলো,
- নে মা এটা তোর।আমি আমার রুদ্রের বউএর জন্য বানিয়ে রেখেছিলাম। আজ তাকে দিয়েও দিলাম।
চুড়ির সেট টা অনেক সুন্দর হালকা কাচেও যেন এটা অপরুপ একটা সুন্দরতা।
- কি করছিস বাবা?
- এইতো মা কাজ করছি,( রুদ্র) 
- এখন আর কাজ করতে হবেনা, কিরে ভেতরে আয়,
মনোয়ারা বেগম ডাকতেই একটা ট্রে হাতে নিয়ে রুমে এলো স্নেহা, মাথা নিচু করে আছে,
মনোয়ারা বেগম স্নেহার হাত থেকে ট্রে টেবিলে রাখলো তারপর স্নেহাকে রুদ্রে পাশে সোফায় বসিয়ে দিলো,
িতির ও হাজির ফোন নিয়ে ছবি তোলার জন্য,
- বাহ আমাফ ছেলেমেয়ে দুটোকে কি ভালো লাগছে, মনোয়ারা বেগম স্নেহার আর রুদ্রের হাত ধরে বলতে লাগলো,
- আল্লাহতায়ালা স্বামী স্ত্রীকে একে ওপরের পরিপূরক করে পাঠিয়েছে, একসাথে চলতে গেলে এমন অনেক কিছু হবে দুজনের মাঝে কিন্তু কখনো রাগ করে আলাদা হয়ে যাওয়ার কথা ভুলেও মনে আনবে না, আমরা বাবা মা আজ আছি কাল নেই, তাই তোমাদের সংসার তোমাদেরই বুঝে নিতে হবে।
রুদ্রের মা রুদ্রের হাত আর স্নেহার হাত এক করে বললো, আমাকে কথা দাও তোমরা একে ওপরের খেয়াল রাখবে। ভুল বুঝে কখনো আলাদা হয়ে যাওয়ার কথা ভাববেও না।
- উফ মা অনেক বলেছো এখন ছবি তুলতে দাও( পেছন থেকে বলে উঠলো তিতির)
- হ্যা রে আমার হয়ে গেছে নে তুই ছবি তোল, বলেই রুদ্রর মা সাইডে দারালো, আবার রুদ্র তার মাকে কাছে বসিয়েও কয়েকটা ছবি তুললো,
- অনেক হয়েছে এবার ওদের ছাড় (.তিতিরকে বললো মনোয়ারা বেগম)
দুজনের যাওয়ার জন্য পা বাড়িয়েছে, কিন্তু যাওয়ার আগে আরো একবার স্নেহার হাত ধরে মনোয়ারা বেগম বললো,
- আমার পাগল ছেলেটাকে দেখিস মা, কথাটুকু বলেই তিতিরকে নিয়ে চলে গেলো মনোয়ারা বেগম।
স্নেহা সেভাবেই সোফায় বসে আছে, রুদ্র স্নেহার পাশ থেকে উঠেই দরজা আটকে দিলো,
স্নেহা মাথা নিচু করে সোফায় বসে আছে, মনোয়ারা বেগম যা যা বলে গেলো তা করা স্নেহার পক্ষে কখনো সম্ভব না। যে মানুষটা তার জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছি তারই দেখভাল করা তাকে মন থেকে ভালোবাসা এসব কখনোই পারবে না স্নেহা।
রুদ্র সোফার পাশে স্নেহার সামনে হাটু গেড়ে বসলো,
- স্নেহা, আমি জানি তোমার সাথে অনেক অন্যায় করেছি আমি, তবে এটা দেখে ভালো লাগছে যে তুমি আমার মা কে কিছু জানতে দাওনি। তাকে আগের মতোই সম্মান করো।
স্নেহা মাথা নিচু করে বসে আছে,

- বেনারসিতে তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে, তবে আজকের পর থেকে * বাদে অন্য কিছু পড়ে বাহিরে যাবে না, আর আমার সামনে ছাড়া অন্য কারো সামনে শাড়ি বা অন্য কোনো ড্রেস পরে যাবে না।

- স্নেহা পাথরের মতো বসে শুধু রুদ্রের কথা শুনে যাচ্ছে।

- কি হলো কথা বলছোনা কেনো?
স্নেহার থুতনি উঠিয়ে,,,,,
স্নেহার চোখে পানি টলমল করছে,
রুদ্রের দিকে তাকিয়ে স্নেহা বললো,
- আমাকে এসব নাটক আর কতোদিন করতে হবে?
- মানে?( রুদ্র)
- মানে এই ভালোথাকার নাটক, সুখে থাকার মিথ্যা নাটক!!
-এসব কি বলছো স্নেহা? তোমার আমার বিয়ে হয়েছে? মরণ ছাড়া এই বিবাহিত জীবনের কোনো শেষ নেই, এ জীবন শুধু মৃত্যূ দিয়েই শেষ হবে,
- তবে আমাকে মেড়ে ফেলুন,( চোখের পানি গাল বেয়ে, বেয়ে পরছে কথাটা বলেই 
- আবার পাগলামি করছো তাইনা?
- পাগলামি আমি না আপনি করছেন, আমি আপনার সাথে থাকতে চাইনা তবুও আমাকে থাকতে বাদ্ধ্য করছেন।( স্নেহা)
ওকে দেখাচ্ছি তোমার পাগলামির ফল, কথাটা বলেই রুদ্র স্নেহাকে একটানে কোলে তুলে নিলো,
তারপর স্নেহাকে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলো,
- আমাকে ছাড়ুন আমার ভালোলাগেনা আপনাকে আমার ভালোলাগেনা আপনার ছোঁয়া।
- তাহলে কি ভালো লাগে?(রুদ্র)
- আপনার থেকে দূরে থাকতে ভালো লাগে,,
রুদ্র স্নেহার পেটে স্লাইড করতে, করতে বললো,
- এ জীবনে আমার থেকে আর তোমাকে কেও আলাদা করতে পারবে না,
তুমি আমাকে ভিলেন ভাবো বা হিরো, তোমাকে আমার সাথে থাকতে হবে,



চলবে,,,
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

Like Reply
#10
 
পার্ট : ৮

পাখির কিচিরমিচিরে ঘুম ভাঙল স্নেহার, ঘুম থেকে উঠেই মনে পড়লো কাল রুদ্র জোর করে তাকে তার বুকে শুইয়েছিলো, নিজের দিকে তাকাতেই রাগ উঠে গেলো স্নেহার, শাড়িটা এলোমেলো হয়ে আছে, আসলে তার ও কি দোষ শাড়ি পরে ঘুমানোর অভ্যাস নেই তার। ট্রাউজার আর গেঞ্জি ছাড়া কিছুই পরে ঘুমাতে পারেনা স্নেহা, দম বন্ধ লাগে। 
ঘুম থেকে উঠেই কিছুক্ষন খাটে বসে রইলো স্নেহা, তারপর আস্তে আস্তে বাথরুমের দিকে পা বাড়ালো,
- ভাবি, ভাবি( তিতির)
আমি বাথরুমে তিতির একটু বসো আসছি,
তিতির বিছানায় বসে আছে,
স্নেহা বাথরুম থেকে বের হতেই,
- ভাবি মা তোমাকে নিচে যেতে বলেছে,
- আচ্ছা চলো, স্নেহা তিতিরের সাথে নিচে গেলো,
- উঠেছিস মা( আনোয়ারা বেগম স্নেহাকে উদ্দেশ্য করে বললো)
- হ্যা মা, একটু দেরি হয়ে গেলো।
- না মা কিছু দেড়ি হয়নি মাত্র ৮ টা বাজে, আসলে রুদ্র ঘুম থেকে উঠে জিম করেতো তাই ওর জিনিশপত্র এগিয়ে দেয়ার জন্য আমি উঠে পরি। আর তিতির সকালে পড়তে বসে, সকালে নাকি ওর মাথায় পড়া ভালো ঢোকে,
- মা আমাকে কি করতে হবে দাও করে দিচ্ছি,
- তোকে এখানে কিছু করতে হবেনা, রুদ্রের জিম শেষ হলেই ঠান্ডা জুস খাবে তুই এটা নিয়ে যা,
-ওহ আচ্ছা দাও( আনমনে উত্তর দিলো স্নেহা)
স্নেহা ভেবেছিলো সকাল, সকাল শয়তানটার মুখ দেখতে হবেনা, কিন্তু এখন নিজেকেই শয়তানটার সামনে যেতে হবে ভাবতে, ভাবতেই জুসের ট্রে টা হাতে নিলো স্নেহা।
বাগানের দিকে একটা খালি যায়গা জিম করে রুদ্র, হালকা বাতাস ভালোই লাগে রুদ্রের,স্নেহা গ্লাস হাতে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে আর যাচ্ছে,
- আহহ ( মাটিতে পা ধরে বসেই ব্যাথায় কুকিয়ে উঠেছে স্নেহা)
- আরে তুমি এখানে আর দেখে চলতে পারোনা? চোখ কি কপালে থাকে নাকি( রেগে গিয়ে বললো রুদ্র)
- আমি কি করেছি মাই আমাকে আপনাকে জুস গেলাতে পাঠিয়েছে, আর আমার চোখ কপালে না আপনাকে খুজছিলো, কিন্তু আপনার চোখ কথায় ছিলো শুনি? ধাক্কা দিয়ে ফেলে আমার কোমরটা ভেঙে দিলেন তোহ। আহহ মরে গেলাম( নিজের পা ধরে ব্যাথায় কোকাতে কোকাতে বললো স্নেহা)
তুমিনা কোনো কাজের না, হাত বাড়িয়ে দিলো রুদ্র,
- নাও উঠে এসো?
স্নেহা একবার ভাবলো রুদ্রের হাত ধরে উঠবেনা, কিন্তু না উঠেও উপায় নেই, কারন রুদ্র চলে গেলে এই পা নিয়ে একা, একা বাড়ি যেতে পারবেনা স্নেহা তাই রুদ্রে হাত ধরেই উঠতে চেষ্টা করলো,কিন্তু আধ ওঠার পর আবার পরে যেতে নিলেই রুদ্র ধরে ফেললো স্নেহাকে, তারপর কোলে তুলে নিলো,
স্নেহাকে কোলে নিয়ে বাড়ির ভেতরে ঢুকতেই,
- কিরে ভাইয়া ভাবি তোর কোলে কেনো, কাল তো নতুন বউ ছিলো তাই কোলে তুলে ছিলি। কিন্তু আজ কেনো?
- তুই চুপ করবি? শুধু ফাও কথা। তোর গুনোধর ভাবি পায়ে ব্যাথা পেয়েছে,
- এমা কিভাবে???( তিতির)
রুদ্র কিছু বলার আগেই স্নেহা বলে উঠলো,
- কিভাবে আবার এই গন্ডারটা ধাক্কা দিয়েছে,
স্নেহার মুখ ফসকে কথাটা বের হয়ে যেতেই স্নেহা ঠোঁটে কামড় দিলো, ( কারন সে এটা কি বলে ফেললো, এখন এই গন্ডারটা তো তার জানের রফাদফা করবে,স্নেহা এটা কি করলে। আজ তু তো গায়া। 

রুদ্র বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছে স্নেহার দিকে,
স্নেহা রুদ্রের দিকে তাকিয়ে অসহায় ভাবে বললো,
- মুখ ফসকে বের হয়ে গেছে, আর হবে না।
স্নেহার ওপর থেকে চোখ সরিয়েই রুদ্র আবার রুমে দিকে হাটলো,
স্নেহাকে খাটে শুইয়ে দিয়ে, ফ্রিজ থেকে বরফ এনে স্নেহার পায়ে লাগিয়ে দিচ্ছে রুদ্র,
- উফফ আস্তে ধরবেন লাগছে,
- একটু কষ্ট করো ঠিক হয়ে যাবে,

এর মাঝেই রুমে এলেন আনোয়ারা বেগম,
- কিরে মা তুই নাকি পায়ে ব্যাথা পেয়েছিস?
স্নেহা কিছু বলতে যেয়েও থেমে গেলো, কারন সে কিছু বললেই তো উলটা পালটা কথাই বলে,
তারপর ও রুদ্রকে শুনিয়ে বললো,
- আসলে মা, তোমার ছেলেকে ধাক্কা দিতে গিয়ে আমি নিজেই পরে গিয়েছে, তোমার ছেলের কোনা দোষ নেই সে তো আমাকে কোলে করে এনেছে রুমে,আবার দেখো কি ভালোবেসে বরফ লাগিয়ে দিচ্ছে লাখে এমন একটা ছেলে পাওয়া যায়,
স্নেহার কথা শুনে রুদ্রের না হাসিছে,
- বাহ ভাবি তুমিতো পুরো স্বামী সোহাগী হয়ে গেছো,
- তুই কিভাবে বুঝবি রে,আমি আমার জীবন সোহাগী হয়েছে একটু আগে মুখ ফসমে মুখ থেকে যা বের হয়েছে, সেই ভুলের ওপরে প্রলেপ দিতেই এতো সোহাগ দেখাচ্ছি( মনে, মনে বলছে স্নেহা)
রুদ্র চোখ গরম করে তাকিয়ে আছে,
- আচ্ছা বাবা তুই ওকে বরফ লাগা আমি তিতিরকে দিতে নাস্তা পাঠিয়ে দিচ্ছি, বলেই রুদ্রের মা তিতিরকে নিয়ে চলে গেলো,
আনোয়ারা বেগম আর তিতির চলে যেতেই,
- মা আর তিতিরের সামনে এসব কি ভুলভাল বোকো,
- আমি জি ভুলভাল বললাম, তখন তিতিরের সামনে আপনাকে গন্ডার বলেছি তাই আপনি চোখ গরম করে তাকাচ্ছিলেন আর এখন মায়ের সামনে আপনার সুনাম করলা আপনার তো খুশি হবার কথা.
- আমাকে এতো খুশি করার ইচ্ছা?? (স্নেহার অনেক কাছে গিয়ে বললো রুদ্র)
স্নেহা একটু দূরে সরে
- আসলে আমি তা বলতে চাইনি।
- তবে কি বলতে চাইছো জান??
রুদ্র ক্রমশ স্নেহার অনেক কাছে যাচ্ছে, স্নেহার ঠোট গুলো ভয়ে কাঁপছে।  
রুদ্রের ইচ্ছা করছে স্নেহার ওই কাপাকাপা ঠোঁটে নিজের ঠোট মিলিয়ে দিতে,
রুদ্র স্নেহার অনেক কাছে যেয়ে স্নেহাকে কিস করতে যাবে তখনি,
- আমি কিন্তু কিছু দেখিনি ( পেছন থেকে তিতির বলে উঠলো)
রুদ্র ধরফড়িয়ে উঠলো, 
- উফ তুই কি আসার সময় পেলিনা?( রুদ্র)
- আমি কি করবো ভাইয়া বলো? আমিকি জানতাম রাতের পর তোমরা সকাল, সকাল ও শুরু করবে,
- তুই চুপ করবি? বড় ভাইয়ের সামনে এসব পাকা,পাকা কথা বলিস লজ্জা লাগেনা তোর? যা এখান থেকে!!!
- আচ্ছা যাও তোমার রুমে আর আসবো না ডাকলেও না,( মুখ বাকিয়ে বলেই তিতির চলে গেলো)
তিতির চলে যাওয়ার পরই,
- এভাবে না বললেও পারতেন ওকে, আপনারই তো দোষ ( স্নেহা) 
- তাই আমার দোষ??? ওকে দেখাচ্ছি বলেই রুদ্র স্নেহার কাছে আসতে লাগলো,


চলবে,, 
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

Like Reply
#11
 
পার্ট : ৯

রুদ্রকে কাছে আসতে দেখেই স্নেহার ভয় যেন আরো বেড়ে যাচ্ছে কারন দরজা খোলা তিতিরের কতো যদি রুদ্রের মা ও এসে পরে তবে আর লজ্জার শেষ থাকবেনা স্নেহার‍, উপায় না পেয়ে স্নেহা চিৎকার করে উঠলো,
- আহহ,( স্নেহা)
- কি হয়েছে, (রুদ্র তাড়াতাড়ি স্নেহার পা ধরে বসেছে) কি হলো আবার,
- আসলে মনে হলো ব্যাথাটা আবার বেড়ে গেলো,
আচ্ছা ঠিক আছে আমি খাইয়ে দিচ্ছি খেয়ে মেডিসিন নাও সব ঠিক হয়ে যাবে, স্নেহা সস্থির নিশ্বাস ফেললো,
রুদ্র স্নেহাকে খাইয়ে মেডিসিন খাইয়ে দিলো, হঠাৎ রুদ্রের একটা ফোন আসতেই রুদ্র বেড়িয়ে গেলো,
স্নেহা বসে আছে, বাবা মায়ের কথা অনেক মনে পড়ছে তার, 
বাবা মায়ের সাথে কথা বলতে পারলে হয়তো ভালো লাগতো, 
আচ্ছা পাপা কি রাজশাহী চলে গেলো, কিন্তু কেন গেলো, বাবার তো আর একেটা বিজনেস না অনেকগুলো বিজন্যাস তাহলে একটা বিজনেস এ লোকসান হওয়াতে সে এমন একটা ডিসিশন নিলো কেনো, স্নেহা এসব বসে বসে ভাবছে,
মাথাটা যেন গোলমেল পাকিয়ে যাচ্ছে স্নেহার।
ভাইটার কোথাও খুব মনে পড়ছে স্নেহার কতোদিন ভাইটাকে দেখে না।
বাবা মায়ের সাথে রাগ করে দেশ থেকে একসময় বিদায় নিয়েছিলো বুকে অনেক কষ্ট নিয়ে তারপর একবার দেশে ফেরেনি। একটা খারাপ মেয়ের জন্য বাবা মায়ের সাথে এতো রাগ করার কি আছে, বিষয়টা নিজেও বুঝতে পারছেনা স্নেহা।
- হ্যা আশিস বল,
- স্যার সব খোঁজখবর নিয়েছি, আপনি যেমন ভাবে চাইবেন তেমন ভাবেই সব হবে,
- আচ্ছা ঠিক আছে, আশিস আমি তোকে ছোট ভাইয়ের মতো বিশ্বাস করি, তুই তো জানিস আফজাল খানকে আমি কষ্ট দিতে চাই, তাই স্নেহার সাথে আমাকে ইচ্ছা না থাকা সত্তেও অনেক কিছু করতে হয়েছে কিন্তু মনে রাখিস আফজাল খান মাত্র মেয়ের ধর্ষিতা হবার কষ্টটা পেয়েছে এখনো জীবনে অনেক কষ্ট পাওয়া বাকি ওর।
- হ্যা স্যার আমি বুঝতে পারি, আপনি আমাদের জন্য যা করেছেন আমি আপনার জন্য নিজের প্রান ও দিতে পারবো।
- আমি জানি আশিস,

স্নেহা বিছানায় বসে আছে, ঝড়ের বেগে রুদ্র রুমে ঢুকলো, 
- স্নেহা আমি একটু বেড় হচ্ছি মা তিতির আছে কিছু লাগলে ওদের ডেকো।
- আচ্ছা, কোথায় যাচ্ছেন?(স্নেহা)
- একটু কাজ আছে,তাড়াতাড়ি চলে আসবো।
- দেড়িতে আসলেই বা কি!( আস্তে আস্তে বললো স্নেহা)
- কিছু বললে,
- না মানে বললাম সাবধানে যাবে,
- আচ্ছা আসি, হাতে একটা বেগ নিয়েই রুদ্র বেড়িয়ে গেলো। সারাদিন বিছানায় শুয়ে থাকতে ভালোলাগছেনা স্নেহার, হঠাৎ স্নেহার চোখ গেলো পাশে রাখা একটা একটা ছোট পুতুলের ওপরে। পুতুলের ওপরে লেখা, my best brother. স্নেহা পুতুলটাকে হাতে নিয়েই দেখতে লাগলো,
পুতুলটাকে দেখে স্নেহার মনে হলো হয়তো তিতির রুদ্রকে পুতুলটা গিফট করেছে, আর আজ সকালে তিতিরকে রুদ্র ধমক ও দিয়েছে, তাই তিতিরের কথা মাথায় আসতেই স্নেহা তিতিরকে ডাকলো,
- তিতির, তিতির,
- ভাবি ডাকছিলে???
- হুম ডাকছিলাম, তোমার তো মন খারাপ তাইনা?
- কেন? মন খারাপ হতে যাবে কেন?( তিতির)
- ওই যে সকালে ভাইয়া তোমাকে বোকা দিলো,
- ভাইয়া সব সময়ই আমাকে বোকা দেয় ভাবি? পচা ভাইয়া একটা( অভিমানী সুরে)
- হুম কিন্তু আমি বুঝতে পেড়েছি তুমি তোমার ভাইয়াকে অনেক ভালোবাসো,
- কিভাবে বুঝলে??( তিতির)
- এই যে নিজের ভাইয়াকে best brother লেখা ট্রফিটা দিয়েছো, খুব ভালো না বাসলে কি কাওকে বেষ্ট বলা যায় নাকি?
- ভাবি তুমি এই পুতুলটা ধরেছিলে??( তিতির)
- হ্যা ধরেছিলাম,
- এটা তুমি কি করেছো? ভাইয়া যদি জানতে পারে। তোমাকে অনেক বোকা দিবে এটা রেখে দাও।( ভিতু সুরে)
- কেন? কি সমস্যা আর তুমি এভাবে বলছো কেন? মনে হয় আমি ধরলে এটা নষ্ট হয়ে যাবে।
- শুধু তুমি না ভাবি, এটা যেই ধরুক না কেন! ভাইয়া তাকে অনেক বোকা দেয়। প্লিজ ভাবি এটা রেখে দাও।
- মানে?? 
- মানে এটা আমি ভাইয়াকে দেইনি, কে দিয়েছে জানিনা। তবে আমি একবার পরিষ্কার করার সময় এটা ধরেছিলাম ভাইয়া আমাকে বোকা দিয়ে কাঁদিয়ে ফেলেছিলো,
- একটা পুতুলের জন্য এতো বোকা দেয়ার কি আছে আজব!! যাই হোক রেখে দিলাম। পূরোটা দিন স্নেহার তিতিরের সাথে গল্প করতে, করতেই কাটলো। 
রাত ৯ টা,
রুদ্র বাসায় ফিরেছে, দুপুরে দু- বার ফোন দিয়েছিলো স্নেহার খোজ নেয়ার সময় কিন্তু স্নেহা নাকি তিতিরের সাথ্র গল্পে ব্যাস্ত। বিভিন্ন বাহানায় রুদ্রের সাথে কথা বলেনি স্নেহা।
তিতির বিছানায় শুয়ে আছে, রুদ এসেই স্নেহার কপালে ঠোট ছুঁইয়ে ফ্রেস হতে চলে গিয়েছে,
ফ্রেস হয়ে বের হয়েই স্নেহার পাশে বসলো রুদ্র,
- পা ব্যাথা কেমন? ব্যাথা আছে এখনো?
- ভালোই অল্প ব্যাথা আছে,
- হুম আচ্ছা দুপুরে গল্পে এতো ব্যাস্ত ছিলে যে একবার কথা বলার ও সুযোগ পাওনি?
- স্নেহা একবার রুদ্রের দিকে তাকিয়ে আবার আগের মতো বসে আছে, 
রুদ্র স্নেহার পেটের ওপরে একহাত আর অন্য হাত স্নেহার ঘাড়ের ওপরে দিয়ে বসে আছে,
কিন্তু স্নেহার সেদিকে খেয়াল নেই সে ব্যাস্ত ওই পুতুলের ঘটনা রহস্য খুঁজতে, বসে বসে ভাবতে,ভাবতে একবার স্নেহা রুদ্রকে জিজ্ঞেস করেই বসলো,
- আচ্ছা একটা কথা বলি?( স্নেহা)
- হুম বলো?
- টেবিল লেম্প এর সামনে ওটা কে দিয়েছে তিতির দেয়নি আমি জানি, আর ওটা কেও ধরলে আপনি রেগে যান তাও জানি! আসলে ওটা দিয়েছিলোটা কে?

রুদ্র স্নেহার ঘাড় থেকে হাত নামিয়ে স্বাভাবিক ভাবে বসলো,
- আমাকে এই প্রশ্ন আর করবেনা, ওটা যেই দিয়ে থাকুক সেটা তোমার জানা দরকার নেই। শুধু এতোটুকু জেনে রাখো, তুমি আমার ওয়াইফ মন দিয়ে সংসার করবে, আর অন্যসব ব্যাপারে তোমার মাথা ঘামানোটা আমি পছন্দ করবোনা,
- তাই বলে আমি জানতেও পারবো না?( রেগেই বললো স্নেহা)
- হ্যা জানতে পারবে তবে আমি জানাবো কিনা সেটা আমার ব্যাপার তাই বলছি, প্রশ্ন করবে না। আমার ব্যাক্তিগত বিষয়ে নাক গলাবা না,
স্নেহা রাগে মুখ ফুলিয়ে একবার রুদ্রের দিকে তাকালো আবার, তারপর আবার অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে বসে রইলো,,,
- অনেক রাত হয়েছে, তোমাকে খাইয়ে মেডিসিন খাওয়াতে হবে,(রুদ)
- আমি খাবোনা, আর মেডিসিন ও না।
- তুমি খাবে তোমাকে খেতেই হবে,
- বলছিনা খাবোনা, আর আমার ব্যাক্তিগত বিষয়ে আপনি কিছু বলবেন না, 
স্নেহার এতোটুকু কথায় যেন রুদ্রের মাথায় আগুন ধরে গেলো, 
- কি বললে তুমি?( অনেক রেগে)
- যা বলেছি ঠিক বলেছি আপনি আপনার সব ব্যাপারে যেহেতু আমি ইন্টারফেয়ার করতে পারবো না, তবে আপনিও আমার কোনো ব্যাপারে ইন্টারফেয়ার করবেন না, আমি খাবো কি খাবোনা সেটা আমার ব্যাপার।
্নেহা একটানে কথাগুলো বলে গেলো,কিন্তু সে এতোক্ষন নিচের দিকে তাকিয়ে কথা বলছিলো, যখনি মাথা তুলে রুদ্রের দিকে তাকালো,
- কি বললি তুই??? তোর ব্যাপার, তোকে কতোবার বলেছি তোর জীবনে এখন আর তোর বলতে কিছু নেই, সব আমার ব্যাপার হয়ে গেছে। শুধু তোর খাওয়া না তোর জীবনের সব কিছু হবে আমার কথায় আর কতোবার এই কথাগুলো তোকে বললে বুঝবি তুই???
কথাগুলো বলেই পাশে থাকা পানির জোগ জোরে আছার মারলো রুদ্র,
স্নেহা ততোক্ষনে ভয়ে গুটিসুটি মেরে আছে,
এবার রুদ্র স্নেহার চুলের মুঠি শক্ত করে ধরে বলতে লাগলো,
- বল আর কখনো বলবি তোর ব্যাপার? বল আর বলবি? আর আমার কথার ওপরে কথা বলবি,
স্নেহা এবার জোরে জোরে কাঁদতে থাকে কান্না গতিটা এতো বেশি যে ঠিকমতো কথাও বলতে পারছেনা স্নেহা।
-বলিসনা কেন? বল( চৎকার করে বললো রুদ্র)
- স্নেহা কাঁদতে, কাঁদতেই উত্তর দিলো, না আর বলবো না।
চেঁচামেচি আর ভাংচুরের শব্দ পেয়ে রুদ্রের মাও রুমে চলে এলো,
এসেই দেখলো রুদ্র স্নেহার চুলের মুঠি ধরে আছে আর স্নেহা কাঁদছে,
- এই রুদ্র কি করছিস ছাড়, ( রুদ্রের মা)
- আমাকে ছাড়ো মা, ওর সাহস অনেক বেড়ে গিয়েছে।
- আমি বলছি তুই ওকে ছাড়,
অনেক জোরাজোরির পর আনোয়ারা বেগম রুদ্রকে ছাড়াতে সক্ষম হলো,
রুদ্রকে ছাড়ানোর পরই স্নেহা আনোয়ারা বেগমকে জড়িয়ে ধরে আরো জোরে কাঁদতে লাগলো, আর রুদ্র রাগে গজগজ করতে, করতে বেড়িয়ে গেলো।
রুদ্রের রাগ অনেক বেশি, রাগ উঠলে কখনোই নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারেনা রুদ্র।
স্নেহা অনেকক্ষন আনোয়ারা বেগমকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেছে, তারপর অনেক বুঝিয়ে আনোয়ারা বেগম স্নেহাকে খাইয়ে দিয়ে মেডিসিন খাইয়ে দিয়েছে, স্নেহার বাবা মা কখনো তার সাথে একটু ধমক দিয়ে কথা অবদি বলেনি,আর এখানে রুদ্রের এমন আচরনে স্নেহা অনেক বেশি ভয় পেয়ে যায়। 

অনেকক্ষন ছাদে দাঁড়িয়ে নিজেকে শান্ত করে রুদ্র, একটু আগে স্নেহার সাথে হয়তো একটি বেশি করে ফেলেছে। স্নেহাকে আঘাত করেছে। কিছুক্ষনের ভেতরেই রুদ্রের খারাপ লাগতে শুরু করলো স্নেহার জন্য। তাই নিজেকে শান্ত করে রুমের দিকে পা বাড়াল রুদ্র।
বিছানায় শুয়ে আছে স্নেহা, শাড়িটাও এলোমেলো। কেঁদেছে তাই চোখের কোনে এখনো বিন্দু জল জমে আছে।
স্নেহার পাশে বসেও বুকটা কেমন জানো করতে লাগলো রুদ্রর এতো নিষ্পাপ আর মায়াবী একটা মেয়েকে বারবার এতোটা কষ্ট দেয়, কিন্তু না আজ স্নেহাকে ঘুমন্ত অবস্থায় নিষ্পাপ লাগছে কারন সে স্নেহাকে যতোটা নিষ্পাপ ভাবতো স্নেহা ততোটা নিষ্পাপ না। তার এই নিষ্পাপ চেহারার আরালে লুকিয়ে আছে,এক অন্য স্নেহা।
স্নেহার দিকে তাকিয়ে রুদ্র পূরোনো কিছু সময়ের কথা চিন্তা করতে লাগলো,

চলবে,,,

( প্লিজ গল্পটা কেমন লাগছে একটু জানাবেন?)
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

Like Reply
#12
পার্ট : ১০

অধরা আপু তখন ২ মাসের প্রেগন্যান্ট, কাওকে কিছু বলতে পারছিলো না আর কিছু সইতেও পারছিলো না, অধরা আপুর বাবা এক্সিডেন্ট এ মারা যাওয়ার পর অধরা আপুর মা প্রায় বেশিরভাগ সময়ই অসুস্থ থাকতো,
তারপর অধরার জীবনে আসলো স্নেহার ভাই শ্রাবন। বড়লোক অধরা আপু কখনোই পছন্দ করতো না, তাই শ্রাবন ভাইয়া হাজারো ভাবে অধরাকে তার ভালোবাসার প্রকাশ করার পরেও অধরা রাজি হয়নি। কারন অধরাদের এ অবস্থা আর তার বাবার অকালে চলে যাওয়া সব কিছুর সাথেই জড়িয়ে আছে কোন এক বড়লোক।
কিন্তু স্নেহার ভাই শ্রাবনের ভালোবাসার কাছে একদিন হার মানে অধরা, আর নিজের সবটুকু দিয়ে ভালোবাসে শ্রাবনকে।
অধরাদের পাশের বাসায় ভাড়া থাকতো রুদ্রদের পরিবার। অধরার ছোট ভাইয়ের বয়সি ছিলো রুদ্র। তাই রুদ্রকে অধরা নিজের ছোট ভাইয়ের মতোই ভালোবাসতো।
 ছোট থেকে রুদ্র ও অধরাকে তার বড় বোনের মতোই সম্মান করতো আর ভালোবাসতো।
কিন্তু অধরার সাথে এক নির্মম ঘটনা,আর কিছু কাছের মানুষের বিশ্বাসঘাতকার কারনে একটা পবিত্র প্রানকে নিজের মাঝে নিয়ে প্রান দিতে হয়েছে অধরাকে,
আর একি ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রান দিয়েছে রুদ্রের বাবা। আর আজ সন্ত্রাসী হয়েছে। রুদ্র।
তবে আজ রুদ্র প্রতিশোধের খেলায় মেতে উঠেছে,
কারন এই নংরা খেলায় যে জড়িয়ে ছিলো তাকে একটা সময় অনেক ভালোবেসে ফেলেছিলো রুদ্র। যাকে বুকে নিয়ে বাকি জীবন চলার স্বপ্ন দেখেছিলো। রুদ্র এটা মানতে পারেনি যে তার ভালোবাসা যাকে একটা সময় সে নিষ্পাপ মনে করতো সে অন্য কোনো নিষ্পাপ প্রানের জীবন নেয়ার কারন হতে পারে।
 স্নেহার দিকে তাকিয়ে পেছনের অনেক কথা ভাবছে রুদ্র।
কারন সে জানে যে স্নেহাকে সে ভালোবাসতো তার সামনে থাকা স্নেহা সে স্নেহা না। তবে তার কি করার আছে, সে তো ভালোবেসেছিলো। সে তো কোনো ছলনা করেনি।

স্নেহার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে স্নেহার পাশেই ঘুমিয়ে পরে রুদ্র।

পরেরদিন সকালে,,,
স্নেহার ঘুম ভাঙতেই দেখলো পাশে শুয়ে আছে রুদ্র। ঘুম অবস্থায় রুদ্রকে অনেক নিষ্পাপ লাগলেও বাস্ততে রুদ্র একটা জানোয়ারে পরিণত হয়েছে,
স্নেহার রুদ্রের পাশে শুয়ে থাকতে ইচ্ছা করছেনা স্নেহার তাই সে উঠবার চেষ্টা করছে, পায়ে হালকা চাপ লাগতেই,
- আহ, 
স্নেহার কাতরতার শব্দ যতো আসতে হোক না কেন রুদ্র তা শুনতে পেয়ে যায় এবারো তার ব্যাতিক্রম হলোনা।
- কি হয়েছে ঠিক আছো তুমি, লাগেনি তো বেশি? ( ধড়ফড়িয়ে উঠে এক সাথে প্রশ্নগুলো করলো রুদ্র)
স্নেহা একবার রুদ্রের দিকে তাকালো, আসতে করে বললো রুদ্রকে,
- আমি ঠিক আছি, কিছু হয়নি।
বলেই স্নেহা বিছানা থেকে ওঠার চেষ্টা করে,, 
রুদ্র স্নেহার হাত ধরে ফেলে,
- খুব রেগে আছো তাইনা? আসলে কাল আমার মাথা ঠিক ছিলোনা।
স্নেহা একবার রুদ্রের দিকে তাকিয়ে আবার চোখ সরিয়ে নিলো,
- আপনার মাথা কখনো ঠিক থাকেনা, না আমাকে রেপ করার সময় না আমাকে অপমান করার সময়। দুনিয়াতে আপনার একাই রাগ আছে, আর আমিতো আপনার বাড়ির বউ এই বাড়িটা আপনার। আপনি যা বলবেন তা তো আমাকে করতে হবেই, তাই এখন থেকে সব কিছু আপনার কথায় করবো। আশা করি তাহলে আপনার মাথা ঠান্ডা থাকবে। 
- প্লিজ স্নেহা এভাবে কথা বলোনা, তুমি আমার বউ আমার সব বিষয়ে তোমার অধিকার আছে, তবে যেগুলো আমি বলতে চাইনা তা জানিতে চাইবে না কখনো।
- আমার আর কিছুই জানার নেই, আমাকে কিছু বোঝানো লাগবে না। বলেছিতো আপনার সব কথা শুনবো, ফ্রেস হবো বাথরুমে যাবো,  
যাবো???
রুদ্র মাথা নিচু করে উত্তর দিলো যাও, রুদ্র বুঝতে পেড়েছে যে স্নেহা কাল কষ্ট আর ভয় দুটোই পেয়েছে, 
স্নেহার পা ব্যাথা এই কথাটা রুদ্রের মাথায় আসতেই চোট করে স্নেহাকে কোলে তুলে নিলো রুদ্র। তারপর বাথরুমের দরজার সামিনে গিয়েই স্নেহামে নামিয়ে দিলো,

স্নেহার সময়গুলো এভাবেই কাটছে, দিন দিন। রুদ্রের পাগলামি গুলো যেন বেড়েই যাচ্ছে। বাবা মাকে ছাড়া মন না টিকলেও তাকে এখানেই থাকতে হচ্ছে, তবে এ কদিনে রুদ্রের সাথে রিলেশন টা ভালো না হলেও রুদ্রের বোন আর মায়ের সাথে অনেকটা ফ্রি হয়ে গেছে স্নেহা।
খুব জানতে ইচ্ছা করে স্নেহার বাবা মা চলে যাওয়ার ব্যাপারটা। এ কদিনে বাবা মা যতো বাড় ফোন দিয়েছি তাদের গলায় এক আলাদা ভয় খুজে পেয়েছে স্নেহা। স্নেহার মনে হচ্ছে বাবা মা হয়তো কিছু বলতে চাইছে কিন্তু কোনো এক অজানা কারনে কথাগুলো স্নেহাকে বলতে পারছে না।
তিতির কলেজ গিয়েছে সারাদিন বাসায় একা একা খুব খারাপ লাগে স্নেহার তাই শাশুড়ির থেকে পারমিশন নিলো আজ তিতিরকে কলেজ থেকে আনতে যাবে স্নেহা। 
তাই গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে পড়লো স্নেহা,
আজ বিয়ের ২ মাস পর একা কোথাও যাচ্ছে, হয়তো রুদ্র বাড়ি ফেরার পর জানতে পারলে রাগ ও হতে পারে তবে কেন যেন আজ স্নেহার খুব ইচ্ছা করছে মুক্ত পাখির মতো ডানা মেলতে,
অনেকক্ষন ধরেই বাহিরে বসে আছে স্নেহা, অনেক স্টুডেন্ট বেড় হচ্ছে, স্নেহা এদিক ওদিক তাকিয়ে তিতিরকে খুজে চলেছে, হঠাৎ তিতিরকে দেখে চেঁচিয়ে তিতিরকে ডাক দিলো স্নেহা। আর তিতির গেটের বাহিরে তিতিরকে দেখে অবাক। আর সারপ্রাইজ ও।
তিতির দৌড়ে এলো স্নেহার কাছে,
- ভাবি তুমি?
- হ্যা আমি তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে এলাম।
- ওয়াও ভাবি, অনেক ভালো হয়েছে আজ ঘুরাঘুরি করে বাসায় যাবো,
- আচ্ছা পাগলি এখন চলো অনেক ক্ষিদে পেয়েছে,
স্নেহা আর তিতির অনেক ঘোরাঘুরি করলো,,,
রাতে রুদ্র বাসায় আসলো,
ফ্রেস হয়ে এসে চুল আচরাচ্ছে রুদ্র,
আর স্নেহা বিছানায় বসে রুদ্রের দিকে তাকিয়ে আছে,
অন্যসব দিনে স্নেহা রুদ্র রুমে আসতেই রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো কিন্তু আজ তেমন কিছু না করে উলটে রুমে শুয়ে আছে আর তার থেকেও বড় কথা রুদ্রের দিকে ডেবডেব করে তাকিয়ে আছে,

- কি হয়েছে? এভাবে তাকিয়ে কি দেখো???
- আপনাকে!!
- আমাকে আগে দেখোনি??
- হুম দেখেছি আজ আবার ও দেখছি কোনো সমস্যা??
রুদ্র চিরনিটা রেখেই স্নেহার খুব কাছে চলে এলো, রোমান্টিক হাসি দিয়ে বলতে শুরু করলো,
- আমার বউটা দেখি আজ অনেক রোমান্টিক মুডে আছে? তা কি হলো আজ।
স্নেহার দু হাত দিয়ে রুদ্রের গলা জড়িয়ে ধরলো,
- আমাকে ভালোবাসো?  
রুদ্র তো রিতিমতো অবাক, নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছেনা নিজেই,
তাও উত্তর দিলো,
- হুম বাসি( রুদ্র)
- আমার জন্য কি করতে পারবে?( স্নেহা)
- সব পাড়বো, ( রুদ্র)
- তবে এসব আজে বাজে কাজ ছেড়ে দাও,
স্নেহার কথা শুনে রুদ্রের মুখটায় যেন অন্ধকার নেমে এলো,
স্নেহার হাত গলা থেকে ছাড়িয়ে রুদ্র স্নেহাকে বললো,
- তাহলে এই ব্যাপার? আবার ছলনা আমার সাথে? এবার কি ছলনা করে মেরেই ফেলবে নাকি? তাই তো বলি আজ আমার মহারানির হলোটা কি!!!
রুদ্রের মুখে এমন কথা শুনে স্নেহা থো হয়ে বসে আছে,
- এসব কি বলছেন আপনি??
- হ্যা ঠিক বলছি আমি, বাবা মেয়ে ছলনা তো খুব ভালো জানো। তুমি কি ভেবেছো সব ভুলে গিয়েছি। কিছুই ভুলিনি আমি। তোমাদের শাস্তি পেতে হবেই বলেই রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো রুদ্র।


চলবে,,,
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

[+] 1 user Likes Bangla Golpo's post
Like Reply
#13
 
পার্ট : ১১

স্নেহা রুদ্রের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে বুঝতে পারছেনা কি বলবে বা কি বলা উচিৎ তার।
কিন্তু স্নেহাতো কোনো অন্যায় করেনি তবে রুদ্র কেন তাকে এতো শাস্তি দিচ্ছে বুঝতে পারছেনা স্নেহা।
সে তো এখন চায় রুদ্রের সাথে আবার সব নতুন করে শুরু করতে কিন্তু রুদ্র তার এই চাওয়াটাকে অভিনয় আর নাটক ভাবছে,
স্নেহা কি করে বোঝাবে যে এখন তাদের সাথে আরো একটা জীবন হয়তো জড়িয়ে যাচ্ছে, তাদের জীবনের কোনো প্রভাব স্নেহা সেই জীবনটার ওপরে পড়তে দিতে চায়না।

৩ বার টেস্ট করে ফেলেছে স্নেহা ৩ বারই রেসাল্ট পসেটিভ। স্নেহা মনে মনে খুশি হয়তো এই খবরটা শুনে রুদ্রের মন কিছুটা গলবে। নিজের সন্তানের জন্য হলেও রুদ্র হয়তো আবার আগের মতো হয়ে যাবে। শুরু করবে এক নতুন জীবন। তাই আর কিছু না ভেবে স্নেহা তিতিরকে নতুন অতিথি আসার কথা জানালো।
তিতির তো অনেক খুশি দৌড়ে মায়ের কাছে যেয়ে সুখবরটা দিতেই আনোয়ারা বেগমের খুশি যেন শেষ হয়না। নিজের গলার চেইন খুলে স্নেহাকে পড়িয়ে দিয়েছে,
আর এই খুশিতে আনোয়ারা বেগম তার প্রতিবেশিদের সন্ধ্যায় চা নাস্তার জন্য আসতে বললো।

আজ সারাদিন কাজের চাপে স্নেহাকে একবার ফোন করেনি রুদ্র। কাল রাতের পর আর কথাও হয়নি স্নেহার সাথে।কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরেই ড্রয়িং রুমে অনেকগুকো মানুষ বসা দেখেই রুদ্র অবাক বাসায় এতো মানুষ সে আশা করেনি।রুদ্র কিছুক্ষন দাড়িতে মনে করার চেস্টা করলো আজ কোনো বিশেষ দিন আছে কিনা। তবে তার ভাবনায় তেমন কোনো বিশেষ দিনের কথা আসলো না, তবে কেনো এই আয়োজন ভাবতে, ভাবতেই রুমের দিকে গেলো রুদ্র।
স্নেহার আর তিতির পাশাপাশি বসে আছে, কি একটা নিয়ে হাসাহাসি করছে দুজন।
রুদ্রকে দেখতেই তিতির উঠে বলতে লাগলো,
- ভাইয়া, এসেছো?? তোমার জন্য বিশাল সারপ্রাইজ আছে বলেই হাসতে,হাসতে চলে গেলো তিতির।
তিতির চলে যেতেই রুদ্র স্নেহার দিকে জিজ্ঞেসাসূচক চোখে তাকালো,
-স্নেহা আমাকে বলোতো আজ বাসায় কি আছে?
- আসলে আজ আপনাকে একটা খবর দিবো। আমি জানি আপনি অনেক খুশি হবেন!!
- খুশির খবর? তা কি সেই খুশির খবর??
- টেস্ট এর কিট টা রুদ্রের দিকে এগিয়ে দিকো স্নেহা।
রুদ্র হাতে নিয়েই দেখতে পেলো প্রেগন্যাস্নি টেস্ট পজেটিভ।
রুদ্র স্নেহার দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষন।
স্নেহা লজ্জায় মাথা নিচু করে আছে এই প্রথম রুদ্রের সামনে ভয় পাচ্ছেনা স্নেহা। এই প্রথম লজ্জাবতির মতো লজ্জা পাচ্ছে সে,,,,
- ওহ এই তোমার খবর?( রুদ্র) চরিত্রহীন মেয়ে আর কতো নিচে নামবি তুই? ধর্ষিতা জেনেও তোকে বিয়ে করেছি, নিজের নাম নিজের পরিচয় দিয়েছে। বিয়ের পরেও চরিত্র ঠিক হয়নি তোর? অন্য কারো সন্তানকে আমার সন্তান বলে বেরাচ্ছিস সবার কাছে?( চিৎকার করে বললো রুদ্র)

রুদ্রের এসব কথা শুনে স্নেহা যেন আকাশ থেকে পড়লো, রুদ্রের কথা সে কিছুই বুঝতে পারছে না। রুদ্রই তো তাকে ''. করেছিলো, তারপর ও আবার বিয়ে করেছে। আর তারপর স্বামীর অধিকার খাটিয়েছে যদি তাও সব জোর করেই হয়েছে,
তবে আজ এসব কথা রুদ্র কেনো বলছে বুঝতে পারছেনা স্নেহা।
স্নেহার চোখ টলমল করে উঠেছে, কাপা কাপা গলার স্নেহা রুদ্রকে প্রশ্ন করলো,
- আপনি এসব কি বলছেন?
- আমি আবার কি বললাম? যা বলেছি ঠিকই তো বলেছি, ভুল তো কিছু বলিনি,
- রুদ্র প্লিজ চুপ করুণ! আপনি কি ভুলে গিয়েছেন আপনি আমাকে ''. করেছেন আর আপনি নিজেই আমাকে বিয়ে করেছেন। তবে আজ কেন নিজের সন্তানের ওপরে এমন একটা বাজে অপবাদ দিচ্ছেন?
- কি বললি আমি তোকে রেপ করেছি? আমি???? কি প্রমান আছে তোর কাছে?
- আপনি চুপ করুন প্লিজ হয়তো আমি এখনি আপনার মা আর বোনকে সব সত্যি বলে দিবো।
- তুই কি বলবি? যা বলার আমি বলবো, আমি বলবো যা বলার বলেই রুদ্র স্নেহাকে টানতে,টানতে নিয়ে যাচ্ছে,
স্নেহা বহুবার নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করেছে কিন্তু রুদ্র স্নেহাকে ছাড়েনি,
রুদ্র স্নেহাকে সবার সামনে নিয়ে দাড় করালো, আর বলতে লাগলো।

- আপ্নারা আজ যে খুশির জন্য উৎসব পালন করছেন তা আমার জীবনে একটা বড় অভিশাপ।
আজ আপনাদের সবাইকে কিছু সত্যি কথা না বললেই নয়!!
এইযে আমার ওয়াইফ স্নেহা, সবাই জানে আমরা প্রেম করে বিয়ে করেছি। কিন্তু আসলে তা না,
স্নেহা ওর বাবার শত্রুদের কাছে ধর্ষিত হয়েছিলো আর এই ব্যাপারটা জানাজানি হয়ে গিয়েছিলো, ওর বাবা আমার পরিচিত ছিলো। নিজের সম্মান বাঁচাতে আমার হাত পায়ে ধরে বলেছিলো তার মেয়েকে আমাকে বিয়ে করতে, তখম এই স্নেহা সুইসাইড করার চেষ্টাও করেছিলো। তাইকে ওকে আর ওর বাবাকে বাঁচাতে বিয়েটা করি আমি। আর নিজের পরিবারের কাছে মিথ্যা কথা বলি যে আমরা প্রেম করে বিয়ে করেছি।
আমি ভেবেছি একটা মেয়ের সাথে এমন হতেই পারে,তাই বলে তার জীবনটা এভাবে শেষ হতে দেখা যায়না। আর তাই আমি ওকে বিয়ে করি।

কিন্তু এই মেয়ের চরিত্রেই সমস্যা ছিলো, বিয়ের আমি একদিনও এই মেয়েটার ওপরে স্বামীর অধিকার খাটাইনি। তবে আজ এই মেয়ে দাবী করছে তার গর্ভে আমার সন্তান, এটা কিভাবে হতে পারে? আর আমি বা এটা মেনে নেই কিভাবে বলুন? এই কথা জানাজানির ভয়ে এই মেয়ের পরিবার ও রাজশাহী চলে গেছে। এখন আপনারা বলুন আমার কি করা উচিৎ,,, 

আনোয়ারা বেগম দাড়িতে, দাঁড়িয়ে কথা শুনছিলো, এবার সে ও বলতে শুরু করলো,
- তোকে আমি নিজের মেয়ের মতোই জেনেছিলাম, কিন্তু তুই যে এতো খারাপ আমি ভাবতেও পারিনি।
ছিঃ তোকে নিজের বাড়ির বউ ভাবতে আমার লজ্জা লাগছে, তোর মতো একটা মেয়েকে এতোদিন আমি মেয়ের মতো ভালোবেসেছি ভাবতেও পারছিনা আমি।
রুদ্রের এক প্রতিবেশী - ঠিক বলেছেন আপা,এই মেয়ে আপনার বাড়ির বউ হয়ে থাকলে আপনাদের মাথা তুলে বাচাও কষ্টকর হয়ে যাবে।

স্নেহা আজ পাথর হয়ে গিয়েছে, চোখ দিয়ে পানি পড়ছে, কিছু বলার ভাষা যেন হারিয়ে ফেলেছে স্নেহা।

- মা, ভাইয়া প্লিজ ভাবিকে এভাবে বলোনা। তোমাদের কোনো ভুল হচ্ছে ভাবি এমনটা করতে পারেনা।
- তুই চুপ কর যা ভেতরে যা, রুদ্র তুই ওকে কি করবি কর। আমি আর ওর মুখ ও দেখতে চাইনা। বলেই তিতিরকে নিয়ে চলে গেলো আনোয়ারা বেগম।
আস্তে আস্তে প্রতিবেশীরাও স্নেহার দিকে ঘৃনার চোখে তাকাতে,তাকাতে চলে গেলো।
কিছুক্ষনের মাঝেই ড্রয়িং রুম ফাকা হয়ে গেলো,
এইবার রুদ্র বলতে শুরু করলো,,,
চলবে,

( সামনের পর্বে ধামাকা আছে,? কিন্তু স্নেহার জন্য কষ্ট হচ্ছে?)
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

Like Reply
#14
 

পার্ট : ১২ ( রহস্যভেদ) 

মনে আছে, আজ থেকে দু- বছর আগে তুমি তোমার মামা বাড়ি থাকতে, যেখানে তোমার সাথে আমার পরিচয় হয়েছিলো। আমি প্রাইভেট পড়াতাম সেই সুবাবে তোমার সাথে অনেক সময় কাটিয়েছি। তুমি কোনো পড়া না বুঝলেই আমার কাছে ছুটে আসতে, তোমার সহজ সরল ব্যাবহার এক আলাদা ভালোলাগা জন্ম দিতো তোমার প্রতি। আমি ভেবেছিলাম যে টাকা পাহাড়ে গড়ে ওঠা তোমার টাকা পয়শার ওপরে কোনো লোভ নেই, নেই কোনো আগ্রহ। তুমি শুধু মানুষকে ভালোবাসতে পারো। তোমার ভেতরে একটা সুন্দর মন তোমাকে সেরা করে তুলেছে। তুমি কখনো কারো ভালো ছাড়া খারাপ চাইতেই পারোনা।
আর এসব ভালোলাগার জিনিস থেকেই একটা সময় তোমাকে নিজেএ মনের খুব গভীরে ঠাই দিতে শুরু করি। তোমার কথা তোমার হাসি আমাকে তোমাকে ভালোবাসতে বাদ্ধ্য করে,

একটা সময় তুমিও হয়তো আমাকে ভালোবাসতে শুরু করো।
আমার সাথে অনেকটা সময় কাটাতে শুরু করো। মধ্যবিত্ত হওয়া সত্ত্বেও তুমি আমাকে রোজ তোমার ভালোবাসা গুকো প্রকাশ করো।
প্রতিদিন তিতিরের সাথে গল্প করতে এসে আমার টেবিলে একটা করে চিঠি রেখে যাও যাতে লেখা থাকতো হাজারো ভালোবাসার জড়ানো কথা। যা তুমি আমাকে সামনাসামনি বলতে পারতে না, সেই দিনগুলো আমার কাছে স্বপ্নের মতো ছিলো, আমার প্রেয়সীর সাথে কাটানো বেষ্ট সময়।
প্রতিদিন ভাবতাম চিঠিগুলো আমাকে কে দেয়।
কিন্তু কখনো কল্পনা করিনি তুমি সে হবে, 

কারন তুমি আমার সামনে এমন একটা ভাব নিতে ভালোবাসা কি তুমি তাই বোঝোনা।
নিজের ভেতরে প্রবল ইচ্ছা নিজের শ্রেয়সী কে দেখার।
তাই একদিন ঠায় ধরলাম আমি আমার শ্রেয়সী কে খুঁজবো। কলেজ,কোচিং সব যায়গায় সে পত্রকন্যাকে খোজার চেষ্টা করলাম কিন্তু পেলাম না, হঠাৎ একদিন খেয়াল করলাম। আমি যেদিন বাড়িতে না থাকি সেদিনই চিঠি আমার টেবিলে থাকে কিন্তু ছুটির দিন বাসায় থাকলে চিঠি পাইনা। 

আমি বুঝতে পারলাম পত্রকন্যা আমার আশেপাশের কেও।
একদিন বাসা থেকে বের হবার ভান করেও পেছনের দরজা দিয়ে ঢুকে বাসায়ই থাকলাম,
অনেকক্ষন ব্যালকনিতে চুপ করে বসে রইলাম, কিন্তু কাওকেও দেখতে পেলাম না। সেদিন আমার প্রেয়সীকে আমার আর দেখা হলোনা।
তারপরেরদিন যা হলো তা দেখার জন্য কেও রেডি ছিলোনা,

অধরা আপু, লাশ নিয়ে আশা হলো বাড়িতে, আশেপাশে সব মানুষ বলাবলি করছিলো অধরা আপু কোথা থেকে তার চরিত্রে দাগ লাগিয়ে এসেছে তার গর্ভে কোনো অবৈধ সন্তান। সবাই অধরা আপুর লাশের সামনে ছি ছি করছিলো। শেষ অবদি লাশটাকে জানাজা দিতেও কাওকে পাওয়া যায়নি। অধরা আপুর মা এসব সইতে না পেরে স্টোক করে,
কিন্তু সবাই এসিব বিশ্বাস করলেও আমি এসব কখনো বিশ্বাস করিনি।
তাই আসল ঘটনা জানতে চেষ্টা করি আর তারপর যা জানতে পারি, তা হলো,

তোমার ভাই, হ্যা তোমার আপন ভাই
শ্রাবন। তোমার ভাই অধরা আপুর সাথে ভালোবাসার নাটক করেছে তাকে বিয়ের লোভ দেখিয়ে ভোগ করেছে তারপর যখন দায়িত্ব নেবার সময় হয়েছে কাপুরুষের মতো পালিয়ে গেছে। মড়তে ছেড়ে গিয়েছে আপুনে এসব সইতে না পেরে নিজের প্রান দিয়ে দেয় অধরা আপু।
আর তোমার বাবা তার টাকা আর পাওয়ার দিয়ে এসবকিছু মাটিচাপা দিতে চায়। তখন আমার বাবা প্রতিবাদ করে এগিয়ে দাঁড়ায়। যখন তোমার বাবা দেখে আমি আর আমার বাবা সবার সামনে সত্যিটা তুলে ধরছি ঠিক তখনি আমাকে কিডন্যাপ করে নেশা করায়।।একটা রুমে অন্য একটা মেয়েকে আমার সাথে প্লেন করে রেখে দেয়।
পরেরদিন পুলিশসহ আমাকে ধরে, পরে জানতে পারি একটা মেয়ে আমার নামে ''. মামলা করে।
আমাকে পুলিশ নিয়ে যায়, আর আমার সাজা হয়। এসব শোক সইতে না পেরে আমার বাবা স্টোক করে মাড়া যায়।
৬ মাস আমি জেলে থাকি। সেখানে আমার পরিচয় হয় সালাম নামে একটা গুন্ডার সাথে। এ দুনিয়ায়ে ভালোর মূল্য দিবেনা ততোদিনে আমি বুঝে গিয়েছিলাম তাই আমি আর আসলাম জেল থেকে পালানোর ট্রাই করি। আর ৩ বারের সময় পালাতেও পারি।

তারপর হাত মেলায় কিছু গুন্ডাদের সাথে ৫ মাসের মাঝে আমিও একজন মাফিয়া হয়ে যাই। টাকা দিয়ে নিজের করা সব কুকর্মগুলো ঢেকে ফেলি। প্রচুর টাকা কামাতে, কামাতে টোপ বিজন্যাসম্যানদের একজন হয়ে যাই তবে রায়হান নামটা বদলে যায় সবাই আমাকে চেনে আমার আরেক নামে "রুদ্র" ১ বছরের ভেতরে সফল হই খারাপ কাজ করে, আর ১১ বছর ভালো কাজ করেও বাসায়, বাসায় টিউশনি করার পর ও মানুষের অবহেলা ছাড়া কিছু পাইনি।
রুদ্রের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে,
তারপর আমার আসল কাজ করতে শুরু করি, প্রতিশোধ।  

তোমাদের সব খবর কালেক্ট করি, তোমার বাবার শত্রু, বন্ধু সবার খোজ নেই। আর পুরো দু- বছর পরে সেদিন তোমাকে তুলে নিয়ে যেয়ে তোমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে সব কিছু করি।
তবে জানো এতোকিছুর পরে জেলে থাকা অবস্থায় একদিন খুব মনে পরে পত্রকন্যার কথা। একদিন তিতির আমাকে দেখতে যায়। সেদিন ওকে জিজ্ঞেস করি যে আমার রুমে কি অচেনা কেও আসতো কিনা! 
তিতিরিকে অনেকভাবে জিজ্ঞেস করার পর আমি জানতে পারি আমি বাসায় না থাকলে একমাত্র তুমি আমার রুমে যেতে তখনো আমার বিশ্বাস হচ্ছিলো না যে সে তুমি, তারপর তিতিরকে একদিন তোমার লেখা খাতা নিয়ে আসতে বলি আর ও নিয়েও আসে। তারপর গভীরভাবে হাতের লেখা মিলিয়ে দেখি। অবশেষে বুঝতে পারি আমার সে পত্রকন্যা আর কেও না, যাকে আমি মনে মনে পছন্দ করতাম সেই পত্রকন্যা।হ্যা স্নেহা সে তুমি।
তবে জানো তোমাকে নিয়ে বাচার ইচ্ছা আমার তখনো শেষ হতে যায়নি।

জেল থেকে বের হয়ে আমি অধরা আপুর মাড়া যাবার দিন কি হয়েছিলো সেই ঘটনা খোজার চেষ্টা করি, সিনস এরিয়াতে লাস্ট অধরা আপুকে দেখা গিয়েছিলো, জানতে পারি আর আমি সেইদিনের সব সি সি টিভি ক্যামেরা জোগাড় করি।
তারপর দেখলাম,,,,
অধরা আপু আর তুমি সেই বিল্ডিং এ ঢুকছিলে, কিছুক্ষন পর তুমি বের হলে একা। আর তার কয়েকঘন্টা পর অধরা আপুর লাশ বের করা হলো সেই বিল্ডিং থেকে।

ভিডিও টা দেখে জানতে পাড়লাম যে তুমি তাহলে সব ঘটনা জানো,,
তারপর সেখানে যেয়ে খোজ নিলাম, অধরা আপু আর তোমার ছবি দেখিয়ে সেখানকার মেনেজার কে জিজ্ঞেস করলাম এই দুইটা মেয়েকে চিনে কিনা, সে ভালো করে খেয়াল করে বললো,
কয়েকমাস আগে দুইটা মেয়ে তাদের এ দোকানে দাঁড়িয়ে অনেক ঝগড়া করেছিলো আর সে দুটা মেয়ে তুমি আর অধরা আপু, অধরা আপুর চেহারা ক্যামেরায় দেখা গেলেও তোমার মুখটা দেখা যাচ্ছিলো না, তবে সেটা তুমিই ছিলে,  
লোকটা বলছিলো ঝগড়ার সময় তুমি অধরা আপুকে অনেক অপমান করেছিলে আর বলেছিলে সব ফাস করে দিবে,
আর তারপর অধরা লাশ হয়ে গেলো, ফাস হলো তবে মিথ্যাগুলো। তোমাদের মতো বড়লোকরা বেচে গেলো, কিন্তু অধরা আপুদের জীবন আমাদের জীবন তছনছ হয়ে গেলো,
রুদ্র আর কথা বলতে পারছেনা, কাঁদতে, কাঁদতে ফ্লোরে পড়ে গিয়েছে,
স্নেহার আগের মতোই পাথরের মতো দাঁড়িয়ে আছে,
- আজ আমি শোধ নিয়েছে স্নেহা, আমি নিয়েছি প্রতিশোধ।
তোমাকে বিয়ে করার পর তোমার কথা বলে ভয় দেখিয়ে তোমার বাবার সম্পত্তি সব লিখে নিয়েছি নিজের নামে, তোমার বাবাকে সেই অবস্থায় দার করিয়ে দিয়ে যে অবস্থায় একদিন অধরা আপুর পরিবার আর আমার পরিবার ছিলো।

আজ আমি শান্তিতে ঘুমাবো।
আজ তোমরা অসহায়, না পারবে কোনো আইনের কাছে যেতে না পারি পারবে কোনো প্রতিবাদ করতে,
আমার পায়ের নিচেই সারাজীবন পড়ে থাকতে হবে। কারন তুমি জানো আমার নাম ছাড়া তোমার আর তোমার সন্তানের এ দুনিয়ায় বেচে কতোটা কষ্টের। আজ তোমাকে আমার কাছেই পড়ে থাকতে হবে, নয়তো এ সমাজ অধরা আপুর মতো তোমাকেও ছি ছি করবে,
আমার ছায়া ছাড়া তুমি বাচতে পারবে না, 
অনেকক্ষন পর স্নেহা রুদ্রের দিকে তাকিয়ে সুধু এতোটুকু বললো,

- কে বলেছে আমি আপনার কাছে পড়ে থাকবো???আমার আল্লাহ জানে আর আমি জানি! তাই একদিন সব কিছুর বিচার আল্লাহই করবে,, 
নিজের বিয়ে করা বউকে সবার সামনে ধর্ষিতা প্রমান করেছেন, নিজের সন্তানকে সবার সামনে অবৈধ প্রমান করেছেন! আপনি কি ভেবেছেন আল্লাহ এসব সয্য করবে?
না আমি মেনে নিলেও আল্লাহ মেনে নিবেনা।
চোখে টলমলে পানি নিয়েই স্নেহা বেড়িয়ে পড়লো, বাড়ি থেকে।
আর রুদ্র স্থির হয়ে দাড়িয়ে আছে,
আজ তার বুকের ভেতরটা কেপে উঠছে স্নেহার কথা শুনে,
চলবে,,,

( কেমন লাগছে???? রহস্যটা। স্নেহার কি সত্যি কোনো দোষ ছিলো?)
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

Like Reply
#15
 
পার্ট : ১৪ ( রহস্যভেদ) 

অনেকক্ষন ধরে ড্রিংক করে যাচ্ছে রুদ্র, আজ অনেকদিন পর আবার ড্রিংক করছে রুদ্র। একটা সময় স্নেহাকে না পাওয়ার কষ্টে ড্রিংক করতো রুদ্র, কিন্তু আজ স্নেহাকে পেয়েও হারানোর ব্যাথায় ড্রিংক করছে রুদ্র।
তবে আজ তো তার কষ্ট পাওয়ার কথা না, সে তো এটাই চেয়েছিলো, স্নেহার বদনাম আর স্নেহার বাবা মায়ের অসম্মান!!
তবে কেন এমন হচ্ছে,
বোতলের পর বোতল ড্রিংক শেষ করছে রুদ্র। তবে আজ তার এ কষ্টের স্পষ্ট কোনো কারন রুদ্র নিজেও জানেনা,
আজ তার কষ্ট কি স্নেহার আজকের দেয়া থাপ্পড় নাকি নিজের বউ আর সন্তানের থেকে আলাদা হবার কষ্ট।
ড্রিংক করতে করতে টেবিলে ওপরে কোনো রকম ভাবে হাত ঝুলিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো রুদ্র,
রাত ১১ টা আশিসের ফোনে ঘুম ভাঙল রুদ্রের। 
- হ্যালো, স্যার অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে আমাদের, ( আশিস)
- কি হয়েছে?( রুদ্র)
- স্যার অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে আপনি আগে এখানে আসুন সব নিজেই জানতে পারবেন!!
আশিসের কথা শুনে রুদ্র তাড়াতাড়ি বের হয়ে গেলো বাসা থেকে।
অফিসে গিয়েই সোজা নিজের কেবিনে ঢুকলো রুদ্র।
মাথা নিচু করে বসে আছে একটা লোক, আর পাশেই দাঁড়িয়ে চোখের পানি ফেলছে আশিস।
রুদ্র কেবিনে ঢুকতেই,
- করিম চাচা আপনি? এতো বছর পর?( রুদ্র)

বাবা আমাকে মাফ করে দাও বাবা, আমি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি। বলেই রুদ্রের পায়ে হাত দিয়ে বসে পড়লো করিম।
- আরে চাচা কি করছেন আর মাফই বা চাইছেন কেনো,
- বাবাগো আমি ভুল করছি তার কোনো ক্ষমা হয়না বাবা, আমাকে মাফ করে দেন।
রুদ্র করিমকে ধরে উঠালো,
- চাচা আমাকে বলুন কি হয়েছে, না বললে আমি কিভাবে বুঝবো আসল ঘটনা?
- বাবা অধরা আন্তহত্যা করেনি, ওকে মেড়ে ফেলা হয়েছে,
- মানে এসব কি করছেন চাচা?
-হ্যা বাবা, ওকে মেড়ে ফেলা হয়েছে আর ওর পেটে যে বাচ্চা ছিলো তাও মিথ্যা ছিলো, সব কিছু সাজানো গোছানো প্লেন ছিলো!!
- চাচা আপনি এসব কি বলছেন? আর এসব আপনি কিভাবে জানেন?
- আমি জানি বাবা, কারন খুন হওয়া আমি দেখেছিলাম, 
আমি সত্যিটা সবাইকে জানাতেও চেয়েছিলাম কিন্তু তার আগেই আমাকে ওরা হুমকি দেয়,আমি কাউকে কিছু বললে ওরা আমাকে আর আমার দুই ছেলেমেয়েকে মেড়ে ফেলবে, 
- তাই আপনাকে সেদিনের পর আর ওই এলাকায় দেখা যায়নি তাইনা?

- হ্যা বাবা ভয়ে আমি পালিয়েছিলাম,কিন্তু অনেকদিন পর ওই এলাকায় একদিন ফিরে যাই যেয়ে শুনে এই ব্যাপারে প্রতিবাদ করতে যেয়ে আপনাকে জেলে যেতে হয়েছে আর আপনার বাবা সেই কষ্ট মেনে নিতে না পেরে মাড়া গিয়েছে।
তারপর থেকে নিজেকে অপরাধী করি সব কিছুর জন্য আমি যদি আপনাদের সব সত্যি বলতাম তবে হয়তো সবার জীবন এলোমেলো হতোনা!! কথাগুলো বলেই কেঁদে দিলো করিম চাচা।

তার মানে আমরা এতোদিন আসল সত্যিটাই জানতাম না, তার মানে স্নেহার কারনে আত্নহত্যা করেনি অধরা আপু। রুদ্রের সব কিছু কেমন জানো গুলিয়ে যাচ্ছে। এতোদিন মিথ্যার ওপরে ভিত্তি করে, এতোকিছু করেছে,( মনে মনে কথাগুলো ভাবছে রুদ্র)
- আচ্ছা চাচা, আপনি তো স্নেহাদের বাড়ি কাজ করতেন এই ব্যাপারে তো আরো অনেক কিছুই জানবেন! আমাকে একটু সব খুলে বলুন।
- বাবা আমারে আশিস বাবা বলেছে যে তুমি স্নেহা মাকে কতো ভুল বুঝেছো,
বাবা স্নেহা মা তো অনেক ভালো তার মনে কোনো ভেজাল নেই, 
কিন্তু আসল কালপিট হচ্ছে স্নেহা মায়ের মামা, সে স্নেহা মাকে অধরার নামে খারাপ খারাপ কথা বুঝিয়েছে, আর শ্রাবন বাবা অধরাকে ভালোবাসতো শ্রাবন বাবাকেও অধরার নামে খারাপ কথা বুঝিয়েছে।
সবাইকে বুঝিয়েছে যে অধরা খারাপ মেয়ে ছিলো, আর তার কারনেই অধরার পেটে বাচ্চা এসে গিয়েছিলো, সমাজের কথা ভেবে নিজেই আত্নহত্যা করে প্রান দিয়েছে,
এসব সইতে না পেরে শ্রাবন বাবা কষ্টে অভিমানে দেশ ছেড়ে চলে যায়।
এখান থেকে বউ বাচ্চা নিয়ে চলে গিয়েছিলাম ঠিকই কিন্তু কেও যেন কিছু বুঝতে না পারে তাই স্নেহার মামার কথায় বাদ্ধ্য হয়েই আমাকে আবার ওই বাড়িতে কাজে যেতে হয়।
বাবা স্নেহা আর শ্রাবন বাবাকে ওরা অনেক ভুল বুঝিয়েছে, তোমাদের নামে খারাপ কথা বলেছে তাই স্নেহা মা তোমাকে আর শ্রাবন বাবা অধরাকে ঘৃনা করে।
বাবা আর কেও না জানুক আমি জানি, স্নেহা মা তোমার জন্য অনেক কষ্ট ভোগ করেছে, দিন দিন পাগলের মতো কাটিয়েছে,

রুদ্র যেন আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারছে না, পায়ের নিচের মাটি যেন সরে যাচ্ছে রুদ্রর। তারমানে সে অনেক বড় ভুল করে ফেলেছে।
স্নেহাকে ভুল বুঝেছে। দোষ না করেও শাস্তি পেতে হয়েছে স্নেহাকে।
রুদ্রের ইচ্ছা করছে নিজেকে গুলি করে ক্ষতবিক্ষত করে দিতে নিজেকে, কিন্তু না তাকে শক্ত হতে হবে। 
স্নেহার কাছে ক্ষমা চাইতে হবে, ফিরিয়ে আনতে হবে স্নেহা আর তার বাচ্চাকে।
কিছু না বলেই রুদ্র বেড়িয়ে পড়লো,
মাথায় অনেক কথা ঘুরপাক খাচ্ছে রুদ্রের,  
পাগলের মতো এদিক ওদিক খুজছে স্নেহাকে,
রুদ্র জানে না স্নেহা কোথায় আছে, তবে আজ স্নেহাকে সামনে পেলে স্নেহার পা ধরে ক্ষমা চাই, আর চিৎকার করে স্নেহাকে বলতো, 
স্নেহা আমাকে শাস্তি দাও, আমি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি আজ তুমি আমায় যে শাস্তি দিবে আমি মাথা পেতে নিবো,
কিন্তু এমন কিছুই করতে পারছেনা রুদ্র কারন এসব বলার জন্য আজ স্নেহাকেইতো সে খুজে পাচ্ছেনা।
অনেকক্ষন খোজার পরও স্নেহানে খুজে পায়নি রুদ্র।
তাই বাসায় ফিরে স্নেহার ছবিটা বুকে নিয়ে সোফায় বসে চিৎকার করে কাঁদছে রুদ্র।
রুদ্রের এমন কান্না শুনে তিতির আর রুদ্রের মা দুজনেই ছুটে এলো,

- কি হয়েছে বাবা? কি হয়েছে? তুই এমন করছিস কেনো?( রুদ্রের মা)
রুদ্র তার মাকে পাশে দেখেই জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করলো, রুদ্র।
- মা আমি অনেক বড় ভুল করে আছি, সত্যিটা যদি আর দুইদিন আগেও জানতাম তাহলে এই ভুল আমি করতাম না মা,
- কি হয়েছে বাবা আমাকে সব বল,
তারপর কাঁদতে, কাঁদতে মাকে সব বললো রুদ্র,
- এ তুই কি করেছিস? একটা মেয়ের সবচেয়ে বড় সম্পদ তার সম্মান আর তুই তাতেই হাত দিয়েছিস? এটা তুই কিভাবে পাড়লি? তোকে ছেলে ভাবতেও আমার ঘৃনা করছে। আমি আজই স্নেহাকে আ বাড়িতে ফিরিয়ে আনবো।
- না মা, এতো কিছুর পর ও ফিরে আসবেনা। আর ও কোথায় আমি জানিনা।
- আমি জানি ভাইয়া( তিতির)
অবাক হয়ে তিতিরের দিকে তাকালো রুদ্র, 
- তুই কিভাবে জানিস?
- আজ কলেজ থেকে আসার সময় আমি ভাবিকে দেখি তারপর ফলো করি, তারপর জানতে পারি ভাবি আমাদের কলেজ এর প্রিন্সিপ্যাল এর বাসায়,
 কিন্তু ও সেখানে কি কিভাবে?
- আমি বেশি কিছু জানিনা ভাইয়া,
- তিতির আমাকে সেখানে নিয়ে চল, আমি স্নেহাকে ফিরিয়ে আনবো,
তারপর তিতির রুদ্র আর রুদ্রের মাকে নিয়ে তানিয়াদের বাসায় রওনা দিলো,

- তোর বেবিটা কিন্তু খুব কিউট হবে,( তানিয়া)
- কিভাবে বুঝলি?
- আরে তুই এতো কিউট আর তোর বেবিটা তো ডাবল কিউট হবে তাইনা।
- তুই ও না( স্নেহা)
- কি আমি? ও হ্যা আমি হচ্ছি ফিউচার খালামনি। 
হাহা দুই বান্ধবী মিলে হাসাহাসি করছে আর গল্প করছে,
দরজায় কলিংবেল বাজতেই,
- মনে হয় ভাইয়া ফিরেছে তুই বস আমি দরজা খুলে আসছি!!
বলেই তানিয়া দরজা খুলতে চলে গেলো,
দরজা খুলেই,
- ইয়েস কারা আপনারা, ঠিক চিনলাম না তোহ?( তানিয়া)
- মা আগে ভেতরে আসি তারপর সব বলছি!!
- ঠিক আছে আসুন, বলেই তানিয়া সবাইকে ভেতরে আসতে বললো,

স্নেহা রুম থেকে মহিলা কন্ঠ শুনে বেড়িয়ে এলো,
স্নেহাকে দেখতেই রুদ্রের মা এগিয়ে গেলো,
- মা তুই ঠিক আছিস? স্নেহার গাল ধরে।
স্নেহা কিছুই বুঝতে পারছেনা, কাল যে তাকে চোখের সামনে দেখতে পারেনি আজ সে এভাবে এসেছে আর!! ভাবতে, ভাবতেই স্নেহা বললো,
- আপনারা এখানে?
- ভাবি আমরা তোমাকে নিতে এসেছি ভাইয়া আমাদের সত্যিটা বলেছে যে তোমার কোনো দোষ নেই,(তিতির)
- তোমরা এসব কি বলছো,

আমি বলছি স্নেহা, রুদ্র বলতে শুরু করলো, করিম চাচার আসা থেকে শুরু করে রুদ্রের সব সত্যি জানা সব কিছু রুদ্র স্নেহাকে বললো,
রুদ্রের বলা শেষ হতেই স্নেহা বলতে শুরু করলো,
- বাহ, বাহ খুব ভালো, আমার জীবনটা দেখি পুতুলখেলা হয়ে গিয়েছে যখন ইচ্ছা আমাকে আদর দিয়ে ঘরে তুলবেন আর আপনার ছেলের ভুল বোঝার কারনে তার মিথ্যা কথা বিশ্বাস করে আবার যখন ইচ্ছা আমাকে বাড়ি থেকে বেড় করে দিবেন। মা আমিতো কখনো আপনাকে মায়ের চোখে ছাড়া অন্য ভাবে দেখিনি।
আর এই অমানুষটার কথা আর কি বলবো,
যে নিজের স্ত্রীকে সবার সামনে মিথ্যা কথা বলে চরিত্রহীন প্রমান করে, আর শেষমেস নিজের সন্তানকে অবৈধ প্রমান করতেও যার অন্তর একটু কাপেনা।

আপনারা আমাকে কি পেয়েছেন বলুন? কি পেয়েছেন?
আমি একটা মেয়ে বলে, এ শহর থেকে আমার শেষ ঠিকানাও কেরে নিয়েছেন আমার বাবা মাকে বাদ্ধ্য করেছেন দেশেরবাড়ি চলে যেতে,
সেদিন আমি বেরিতে আসার পর একবার ও কি ভেবেছিলেন এতো রাতে একটা মেয়ে কতোটা খারাপ অবস্থায় পড়তে পারে? 
সত্যিটা না জেনে শাস্তি দিয়েছেন আমাকে আমার সন্তানও রেহাই পায়নি।
আর কথা বলতে পারছেনা স্নেহা কাঁদতে, কাঁদতে বসে পড়েছে ফ্লোরে।
রুদ্র স্নেহাকে ধরতে যাবে তখনি,
- ডোন্ট টাচ মি! আপনার মতো লোক আমাকে টাচ করলে আমি নিজেকে অপবিত্র মনে করবো,,
- স্নেহা!!!  
- অবাক হবেননা, যা বলেছি তা সত্যি বলেছি,
- আমার ছোয়ায় যদি তুমি অপবিত্র মনে করো নিজেকে তবে তোমার গর্ভে যে আছে সে তো আমার ভালোবাসার ছোয়ার চিহ্ন,  
- কি বললেন আপনি( রাগে লাল হয়ে রুদ্রের দিকে তাকিয়ে বললো স্নেহা) আপনার অংশ? দুইদিন আগে সবার সামনে ওকে অস্বীকার করে এখন অধিকার ফলাতে এসেছেন। শুনে রাখুন ও আপনার কেও না।
আমি ঘৃনা করি আপনাকে,
চেঁচিয়ে কথাটা বলেই রুদ্রকে জোরে ধাক্কা দিকো স্নেহা,,

চলবে,
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

Like Reply
#16
 
পার্ট : ১৫

রুদ্র তাল সামলাতে না পেরে ফ্লোরে পরে গেলো,
স্নেহা আবার উঠে দাড়িতে চিৎকার করে বলতে শুরু করলো,
- বেড়িয়ে যান এখান থেকে আপনার মুখ আমি দেখতে চাইনা, 
- মা আমার কথা শোনো সান্ত হও,( রুদ্রের মা)
- না, আমি আজ কারো কথা শুনবো না, আমি এই লোকটাকে এখানে দেখতে চাইনা।
- এমন করোনা মা, নিজের সন্তানের কথা একটু ভাবো।( রুদ্রের মা)
- হ্যা আমি নিজের সন্তানের কথা ভাবছি, আর তাই এই লোকটার ছায়া আমি আমার সন্তানের ওপর পড়তে দিতে চাইনা, চলে যান আপনারা প্লিজ চলে যান,
কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বললো স্নেহা,
রুদ্র দাঁড়িয়ে, দাঁড়িয়ে স্নেহার কথা শুনছে, দুইদিন আগেও এত থেকে অনেক বেশি অপমান রুদ্র তাকে করেছিলো, সেই কথাগুলোই বারবার মনে পড়ছে রুদ্রের।
সবাই বুঝতে পারলো আজ স্নেহাকে শতো ভাবে বোঝালেও স্নেহা বুঝবে না, তাই রুদ্রের মা রুদ্র আর তিতিরকে নিয়ে সেই বাসা থেকে বেড়িয়ে এলো,

১ মাস পর,,,
এই এক মাসে রুদ্র অনেক কষ্টের মাঝে পার করেছে, স্নেহার বলা কথা তার করা অপমান তাকে ভালো থাকতে দেয়নি, কারন তার এটা ভেবেই বুকটা শেষ হয়ে গেছে যে প্রতিশোধের নেশায় তার ভালোবাসার মানুষকে সবার সামনে অপমান করেছিলো, আর নিজের সন্তানকে অস্বীকার করেছে, হাজারো কষ্ট আর ব্যাথা নিয়ে রুদ্র নিজেকে একটা রুমে বন্ধি করে ফেলেছে,
১ মাসে আশিস অনেকবার এসেছে, রুদ্রকে অনেকভাবে অনেক কিছু বুঝিয়েছে, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। রুদ্র নিজেকে কোণঠাসা করে রেখেছে,,

আজ আবার এসেছে আশিস, তবে আজ রুদ্রকে কিছু বোঝাতে আসেনি সে এসেছে রুদ্রকে নিজের কিছু মনের কথা বলতে,

আশিস এসেছে শুনে রুদ্র রুম থেকে বের হয়ে ড্রয়িং রুমে গেলো, রুদ্রকে দেখতেই আশিস দাঁড়িয়ে গেলো,
- আমাকে নতুন করে কিছু বোঝানোর দরকার নেই আশিস!!
- হ্যা ভাই আমি জানি, আপনাকে সবসময় নিজের ভাই মনে করতাম কিন্তু একটা সময় নিজের বোনের সাথে ঘটে যাওয়া কিছু প্রতিশোধের জন্য আপনি আমাকে আড়াল করেছিলেন!!
সবার কাছে আমি আপনার এসিস্টেন আশিস।
কিন্তু আমি জানি আমি কে, আমি হচ্ছি সে ভাই যে নিজের বোনের লাশের সামনে দাঁড়িয়ে বোনের নামে খারাপ কথা শুনেছি। আমি হচ্ছি সেই ভাই নিজের বোনের নামে খারাপ কোথা শুনেও কোনো প্রতিবাদ করতে পারিনি,
ভাই স্নেহাকে ভাবিকে আপনি এমনি এমনি তো ভুক বোঝেননি কেও আপনাকে প্লেন করে ভুল বুঝতে বাদ্ধ্য করেছিলো, ভাই কারো প্লেনের ফাদে পরে আপনি অধরা আপুর মাড়া যাওয়ার পেছনে স্নেহা ভাবিকে দায়ী করে কষ্ট দিতে পেরেছেন। কিন্তু ভাই আপনি সেই মানুষগুলোকে শাস্তি দেয়ার কথা ভুলেই গিয়েছেন যারা আপনার নামে স্নেহা ভাবির কাছে খারাপ কথা বলেছে আর আপনার কাছে খারাপ বানিয়েছে স্নেহা ভাবিকে। আর তার ওপরে ভিত্তি করেই আপনি স্নেহা ভাবিকে কষ্ট দিয়েছেন আর এখন নিজেও কষ্ট পাচ্ছেন,
ভাই অধরা আপু যাওয়ার পর মাও চলে গেলো তারপর বড় ভাই হিসেবে এই আপনি বুকে টেনে নিয়েছেন, তাই বড় ভাইয়ের এই কষ্ট ছোট ভাইকেও কষ্ট দেয়। 
আর তাই ভাই আপনাকে হাত জোর করে বলছি, অপরাধীদের শাস্তি দিন আর। যদি অপরাধীদের শাস্তি না দিয়ে নিজেকে এভাবে বন্ধি করে রাখেন তবে কিছু হবেনা ভাই,
বলেই আশিস কাঁদতে, কাঁদতে বেড়িয়ে গেলো, আশিসের কথাগুলো যেন রুদ্রের অন্তরে যেয়ে লেগেছে, কারন আশিসের বলা একটি কোথাও ভুল না সত্যি,  
রুদ্র নিজের দু হাত শক্ত করে মুষ্টিবদ্ধ করলো নিজেকে শক্ত করে সিদ্ধান্ত নিলো
- আমার নিজেকে শক্ত করতে হবে, শাস্তি দিতে হবে আমাদের জীবন নষ্ট করে দেয়ার জন্য যারা দায়ী তাদের।

২ ঘন্টা পর,
গাড়ির হর্ন বেজেই যাচ্ছে রুদ্র যখন আশিসলে বাসা থেকে নিতে আসে তখন এভাবে হর্ন বাজাতে থাকে, যেন আশিস তাড়াতাড়ি নিচে নামে,
তবে রুদ্র তো এখন বাসা থেকে বের হয়, তাইলে হয়তো অন্য কেও এমন করে হর্ন বাজাচ্ছে ভেবেই আশিক আবার আগের মতো বসে থাকে, হর্নের আওয়াজ সইতে না পেরে জেদ করে থাই খুলে বাহিরে দেখে,
তারপর আশিস যা দেখে তা তার মোটেও বিশ্বাস হয়না, রুদ্র এসেছে সাথে তার গাড়ি। এটা দেখেই আশিসের চোখে মুখে হাসির রেখা ফুটে ওঠে, 
সে এটাই চেয়েছিলো, রুদ্রকে একটা স্বাভাবিক জীবনে আনতে চেয়েছিলো।
আশিস দৌড়ে নিচে নামে, রুদ্র দেখে আশিস জড়িয়ে ধরে রুদ্রকে,
- ভাই আমি এটাই চেয়েছিলাম, আপনি যেন একটা স্বাভাবিক জীবনে ফেরেন ভাই বিশ্বাস করেন আজ আমার অনেক খুশি লাগছে,
- হুম, ভাবলাম তুই ঠিকই বলেছিস,ছোট হলেও তোর কথার যুক্তি আছে, এবার চল অনেকদিন তোর ভাবিকে দেখিনা আজ তোর ভাবিকে দেখতে যাবো,
চোখ মুছতে মুছতে আশিস বললো,
- হ্যা ভাই চলেন আজ আপনি যেখানে যেতে চাইবেন আপনাকে সেখানেই নিয়ে যাবো চলেন,
বলেই রুদ্র আর আশিস বেড়িয়ে পড়লো,
স্নেহার আজ ভালো লাগছে না, তাই বাড়ির পাশেই একটা রাস্তা আছে সেখানে হাটতে বের হয়েছে, রাস্তার পাশে একটা ফাকা যায়গায় বাচ্চারা খেলাদুলা করে, আর বসার জন্য ব্যাঞ্চ ও রাখা আছে, অনেক মহিলারাই বিকালে এখানে বসে গল্প করে পরিবেশটা সব মিলিয়ে দাড়ুন।
রাস্তা দিয়ে হাটতে হাটতে, স্নেহার চোখ পরে একটা কাপল এর ওপর মেয়েটা প্রেগন্যান্ট তাই তার হাসবেন্ড অতি যত্নর সাথে মেয়েটার হাত ধরে হাটছে,
ব্যাপারটা দেখে না চাইতেও স্নেহার চোখ জলে ভিজে ওঠে, হয়তো ওর বিয়েটা স্বাভাবিক ভাবে হলে আর রুদ্র সব কিছু উলটপালট করে না দিলে তার জীবনেও এমন সময় আসতো, 
- ভেবোনা, ও লোকটা তো বউয়ের হাত ধরে হাটছে তোমাকে আমি কোলে তুলে হাটবো,
চেনা কারো কণ্ঠস্বর পেতেই স্নেহা পেছনে তাকালো,
রুদ্র সানগ্লাস টা খুলতে,খুলতে বলছে,
- আপনি????
- হ্যা আমি,কেন? অন্য কারো আশা করেছিলে নাকি জান?
- আপনি এখানে কেনো? কি চান?
- আমার বউ আর বাচ্চাকে নিতে এসেছি, আর কতো দিন বউটা এভাবে রাগ করে অন্যের বাড়িতে পরে থাকবে বলো?
- আপনার আজেবাজে কথা বাদ দিন, কিসের বউ? কিসের বাচ্চা। আপনাকে অনেক আগেই আমি বলেছি যে আমার বাচ্চা আর আর আমার প্রতি আপনার আর কোনো অধিকার নেই, বার বার এই এক অধিকার নিয়ে আমার কাছে আসবেন না।
- এসব কি বলছো বউ? তোমার সাথে আমার বিয়ে হয়েছে তার প্রমান ও আছে আর এই বাচ্চাটা যে আমার ডি এন এ টেস্ট করলে তা প্রমান হয়ে যাবে, এখন বেশি কথা বলতে ভালো লাগছেনা চলো আমার সাথে বলেই রুদ্র স্নেহার হাত ধরে টানতে লাগলো,
- ছাড়ুন আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে ছাড়ুন।
স্নেহার কোনো কথাই শুনছে না রুদ্র,
স্নেহাকে সোজা গাড়িতে বসিয়ে দিলো,
- কি হলো আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন? আমাকে ছেড়ে দিন আমি কিন্তু চেঁচাবো।
 রুদ্র গাড়িতে গান ছেড়ে ভলিউম জোরে করে দিলো, যেন স্নেহা চেচালেও কেও শুনতে না পায়,
২০ মিনিট পর গাড়ি থামলো,
এই ২০ মিনিটে স্নেহা অনেকবার তাকে ছাড়তে বলেছে কিন্তু রুদ্র ফুরফুরে মেজাজে গান শুনেছে,
গাড়ি থামার পরেই স্নেহা দরজা খুলে বের হয়েই চেঁচিয়ে বলতে শুরু করে,
- আমাকে এখানে কেনো এনেছেন? আপনি আসলে কি চান? আপনি কি বুঝতে পারছেন না আমি আপনাকে আর নিতে পারছিনা। কেনো এমন করছেন আপনি??(একটানে কথাগুলো বলে গেলো স্নেহা)
রুদ্র স্নেহার কাছে যেয়েই স্নেহার কোমর চেপে ধরলো, স্নেহাকে নিজেত সাথে মিশিয়ে বলতে শুরু করলো,
- আমি তোমাকে এনেছে কারন অনেকদিন তোমার থেকে দূরে থেকেছি আর পারছিনা। তোমার নেশা আমাকে আগেও পাগল করেছে আর আজও করে, তোমার ভেতরে যে আছে সে আমার সন্তান আমি তোমাকে চাই আমি আমার সন্তানকে আমার জীবনে ফিরে পেতে চাই, আমি নিজে হাতে আমার প্রেগন্যান্ট বউয়ের সেবা করতে চাই।
প্লিজ আমি মানছি আমি ভুল করেছি এ ভুলের কোনো ক্ষমা হয়না কিন্তু আমিতো ক্ষমা চাচ্ছি স্নেহা, আমাকে তোমার থেকে আর আমার সন্তানের থেকে দূরে করে দিওনা স্নেহা প্লিজ। আমাকে আর একবার সুযোগ দাও।

- আমাকে যে অসম্মান আপনি করেছেন? আমার সন্তানকে নিয়ে যে বাজে কথা বলেছেন তা ফিরিয়ে নিতে পারবেন? আমার সেই চোখের পানি গুলো ফিরিয়ে দিতে পারবেন? জানি পাড়বেন না, আর তেমন ভাবেই আমি পারবোনা আপনাকে ক্ষমা করতে,শুনুন বাহিরের ক্ষতো গুলো দেখা যায় তাই তাতে মলম লাগিয়ে দিলে তা খুব সহজে সেরে যায়। কিন্তু অন্তরের ক্ষতো দেখা যায়না আর তাতে মলম ও লাগানো যায়না, আর অন্তরের হওয়া ক্ষতো কক্ষনোই ঠিক হয়না। 
তাই আরো একবার আপনাকে বলছি চলে যান আমার জীবন থেকে আমাকে আর আমার সন্তানকে ভালো থাকতে দিন।
আপনি আমাকে ডিভোর্স দিন, আমাকে মুক্তি দিন আপনি, 
- ঠাসসসসস
স্নেহার বলা কথাগুলো রুদ্রের অন্তর যেমন ক্ষতবিক্ষত করেছে ডিভোর্স এর কথা শুনে মাথায় যেন রক্ত উঠে গেলো রুদ্রের, তাই রাগ সামলাতে না পেরে,

- তোর এতোবড় সাহস আমার থেকে আলাদা হতে চাস, কেনো বুঝিসনা তুই আমি তোকে কষ্ট দেই, মাড়ি যাই করিনা কেনো সবথেকে বড় আমি তোকেই ভালোবাসি। তুই যদি জীবনে না থাকিস তবে আমি বাচবো কিভাবে? আমি তোকে অনেক বেশি ভালোবাসি স্নেহা কথাটা বলেই স্নেহাকে জড়িয়ে ধরলো রুদ্র,
আর বলতে লাগলো,
- প্লিজ স্নেহা, এমন করোনা। আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। প্লিজ আমার কাছে ফিরে এসো।
অনেকক্ষন স্নেহাকে জড়িয়ে ধরে নিজের কথাগুলো বলছে রুদ্র,
কিন্তু স্নেহাকে জড়িয়ে ধরার পর স্নেহার কোনো সারাশব্দ পাচ্ছেনা রুদ্র
তাই স্নেহাকে দেখার জন্য হালকা আলগা করতে রুদ্রের কোলে ঢোলে পড়লো স্নেহা,
স্নেহা অজ্ঞান হয়ে ঢোলে পড়লো রুদ্রের কোলে,
- এই স্নেহা, স্নেহা। কথা বলো! কি হলো তোমার।
স্নেহার গাল ধরে বলছে রুদ্র, স্নেহার সারাশব্দ না পেয়ে স্নেহাকে গাড়িতে বসিয়েই রওনা দিলো হাসপাতালে,

চলবে,,,

( গল্পটা কেমন লাগছে জানাবেন, ☺
ধন্যবাদ।)
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

Like Reply




Users browsing this thread: 2 Guest(s)