Thread Rating:
  • 279 Vote(s) - 3.18 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica অঘটনঘটন পটিয়সী (নতুন আপডেট ৩৩ )


মাহফুজের গত কয়েকটা দিন ভাল যাচ্ছে না। ঢাকায় এসেছে ছয় দিন। হঠাত করে কোন খবর না দিয়ে নির্বাচনের মৌসুমে কয়েক সাপ্তাহ হাওয়া হয়ে যাওয়ার কারণে পার্টির বড় নেতারা ওর উপর দারুণ ক্ষেপা। তবে মাহফুজ কিছুটা কাটিয়ে উঠেছে এই কয়দিনে। এর মাঝে নুসাইবার খবর নিয়েছে। ভাল আছে সুনামগঞ্জের প্রত্যন্ত গ্রামে। তবে বেশ অস্থির হয়ে উঠেছে। একদিন জোহরার ফোনে কথা হয়েছে। একা একা অস্থির হয়ে উঠেছে। আর নিরাপত্তার কারণে আর কার সাথে কথা বলতে পারছে না। প্রতিটাদিন প্রচন্ড ব্যস্ততার মাঝে যেতে হচ্ছে। পার্টিতে দৌড়ঝাপ শুরু করেছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত। এর মাঝে বাকি ঝামেলাও সামলাতে হচ্ছে। সিনথিয়ার সাথে নিয়মিত কথা হচ্ছে। মুন্সী একদম চুপচাপ  হয়ে আছে, তার কোন খবর নেই। এত চুপচাপ থেকে কখন কি করে সেটাও একটা ভাবার বিষয়। আবার ম্যানেজার ওর খোজ এখনো ছাড়ে নি সেটাও জানে। অন্য দিকে নুসাইবা কে কখন কিভাবে ঢাকা ব্যাক করানো যায় এটা ভাবতে হচ্ছে। মুন্সীর নিশ্চুপ হওয়া আর ম্যানেজার গোপনে ওর খোজ বের করার চেষ্টা এর মাঝে নুসাইবা কে ঢাকাতে আনা কতটা নিরাপদ এই প্রশ্ন আছে কিন্তু সমস্যা হল একা একা আর বেশিদিন হাওরে থাকলে নুসাইবা পাগল হয়ে যাবে। বলা যায় না পালিয় কাউকে না বলে ঢাকায় এসে যেতে পারে। ঐদিকে সিনথিয়ার দেশে আসার সময় হয়ে এসেছে। এইমধ্যে সিনথিয়ার ফ্যামিলি কে রাজি করাতে হবে। সিনথিয়া ওর মায়ের সাথে কথা বলেছে। সিনথিয়ার মা নিমরাজি। নুসাইবাকে এইজন্য হলেও ঢাকা আনা দরকার। কারণ নুসাইবা কথা দিয়েছে তার ভাবী কে সে রাজি করাবে এই ব্যাপারে। আবার অন্য সমস্যা তৈরি হয়েছে সাবরিনা কে নিয়ে। এমন একটা ঝামেলা বাধতে পারে সেটা মাহফুজ আন্দাজ করেছিল তবে এভাবে বাধবে ভাবে নি। সাবরিনা কে কোনভাবে সিডিউস করতে চায় নি, গিয়েছিল একটা গুড ইম্প্রেশন তৈরি করতে। সেখানে কি যে হল, নিজেই কিভাবে যেন সাবরিনার মোহে পড়ে গেল। নুসাইবার ক্ষেত্রেও তাই। মনে মনে হাসে মাহফুজ। ও কি একটা সেক্স ম্যানিয়াক হয়ে যাচ্ছে? সেক্স নিয়ে অনেক অভিজ্ঞতা থাকলেও এমন কখনো ছিল না আগে। কিন্তু সিনথিয়ার ফ্যামিলি জিনে এমন কিছু একটা আছে যেটা ওকে ওদের সবার দিকে টানছে। নুসাইবা আপাতত সব জানে এবং আশা করা যায় ঝামেলা করবে না বরং হেল্প করবে সিনথিয়ার মা কে রাজি করাতে ঢাকা আসলে। তবে সাবরিনার টা ওকে সামলাতে হবে। সাবরিনার ব্যাপার সিনথিয়া, নুসাইবা বা সিনথিয়ার মা কেউ জানার আগে সাবরিনা কে রাজি করাতে হবে। তবে এইজন্য ওর সাথে কথা বলা দরকার কনভিন্স করার জন্য। সেই সুযোগটাই পাচ্ছে না। কয়েকদিন আগে অফিসে গিয়েছিল দেখা করার জন্য। ওকে এড়ানোর জন্য অফিস থেকে অসুখের কথা বলে আগে বেড়িয়ে গেল, তবে সাবরিনা অফিস থেকে বের হয়ে গেছে এইটা শুনে তাড়াতাড়ি নিচে নেমে ধরতে পেরেছিল মাহফুজ। ওকে দেখে ভূত দেখার মত চমকে উঠেছিল সবারিনা। `


কয়েক সেকেন্ডের মাঝে নিজেকে সামলে নিয়ে সবারিনা বলেছিল আমার গাড়ি এসে গেছে, চলে যেতে হবে। পরে কথা হবে। মাহফুজ কথা বলার এই সুযোগ হারাতে চায় না। তাই আবার সামনে এসে দাঁড়ায়। সাবরিনা আশেপাশে তাকায় কেউ লক্ষ্য করছে কিনা। এরপর গলার স্বর নামিয়ে হিস হিস করে বলে আমার রাস্তা ছাড়। মাহফুজ সাবরিনার গলায় বিষ টের পায়, পারলে যেন এখুনি গাড়ির নিচে ছুড়ে দিবে মাহফুজ কে। মাহফুজ অটল থাকে। বলে  প্লিজ আমার কথা শুন, তারপর যা বলার বলো। সাবরিনা আবার হিস হিস করে বলে আমার রাস্তা ছাড়। মাহফুজ অটল। সাবরিনা দেখে ওর অফিসের দুইজন গেটের কাছে কিছু একটা নিয়ে কথা বলছে। ওকে দেখে হাত নাড়ায়। সাবরিনা হেসে তাদের দিকে পালটা হাত নাড়ায় তবে মুখের হাসি ধরে রেখে জোর গলায় বলে মাহফুজ ভাল হবে না এইসব করলে। মাহফুজ বুঝে এইখানে সবার সামনে সিনক্রিয়েট করতে পারবে না সাবরিনা। তাই বলে প্লিজ পাশের আইসক্রিম পার্লারে গিয়ে বসি। দশ মিনিট। এরপর দরকার হলে আমি নামিয়ে দিয়ে আসব। সাবরিনা টের পায় মাহফুজ নাছোড়বান্দা। এইখানে আর কথা বললে অনেকের চোখে পড়বে। তাই অনিচ্ছা স্বত্ত্বেও রাজি হয়। মাহফুজ আর সাবরিনা কোণায় একটা টেবিল নেয়। দোকানে লোকজন নেই। আইসক্রিম পার্লারে মেইন ভিড়টা হয় বিকালের পর। সাবরিনা এইবার চড়া গলায় বলে তোমার মত এমন ছোট লোক অসভ্য ইতর, নোংরা মনের মানুষ আর আমি দেখি নি। সাবরিনার গলার ঘৃণা মাহফুজের একদম বুকে গিয়ে লাগে। সাবরিনা বলে শরীরের লোভে মানুষ এমন করতে পারে আমি ভাবি নি। তোমার কি  নীতি নৈতিকতাবোধ বলে কিছু নেই? সিনথিয়া কে তুমি ভালবাস তাহলে আমার সাথে কি? আর মানুষ চিট করে সেটা জানি তাই বলে দুই বোনের সাথে একসাথে? কতটা নীচ আর অসভ্য হলে মানুষ এই কাজ করতে পারে। মাহফুজ যখন এই কথার উত্তর দেবার চেষ্টা করল তখন সাবরিনা বলল তুমি কতটা অসভ্য এটা আমি জানি, আর নতুন করে সাফাই গেয়ে নিজেকে সাধু প্রমাণ করবার দরকার নেই। তুমি যদি সত্যিকার অর্থে ভাল কিছু করতে চাও তাহলে সিনথিয়ার জীবন থেকে সরে আস। এই বলে মাহফুজ কে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে বের হয়ে যায় সাবরিনা। মাহফুজ এতটা হতবিহবল হয়ে গিয়েছিল যে আর কিছুক্ষণ সেখান থেকে উঠতে পারে নি। সাবরিনার যে মেজাজের গল্প এত বছর শুনে এসেছে সেই মেজাজ সরাসরি এই প্রথম দেখল মাহফুজ, সাথে গলায় দারুণ ঘৃণা। সাবরিনার সেই কথা গুলো এখনো কানে বাজছে মাহফুজের। প্রতিবার যতবার ভাবছে এই কথা ততবার এক ধরণের অপমান, দুঃখবোধ সব একসাথে কাজ করছে। সাবরিনা আর সিনথিয়ার ব্যাপারটা আসলে ঘোলাটে। সাবরিনা কে সিডিউস করবার কোন ইচ্ছাই ওর ছিল না। বরং ওর নিজের মাঝে মাঝে মনে হয় সাবরিনা বুঝি ওকে সিডিউস করেছে।  যাতে না চাইতেও ওর ভিতর স্বত্ত্বাটা কাজ করেছে সাবরিনা কে পাওয়ার জন্য। সাবরিনা কে পাওয়ার ইচ্ছার পিছনে খালি কাম ছিল না, ছিল ভালবাসাও। সিনথিয়ার সাথে ভালবাসা থেকে ভিন্ন। এইটা কোন ভাবে আর কাউকে বুঝাতে পারবে বলে মনে হয় না। সিনথিয়ার প্রতি ভালবাসাটা জীবন সংগীর প্রতি ভালবাসা। সেখানে দীর্ঘজীবনে একসাথে থাকার তাড়না আছে। আর সাবরিনার ভালবাসায় দীর্ঘ জীবন সাথে থাকার অংগীকার নেই তবে কাছে পাবার ইচ্ছা আছে। এই দুইটা কে কি আলাদা করা যায়? নাকি নিজেকে বাচানোর জন্য নিজেই খোড়া যুক্তি দাড় করাচ্ছে মাহফুজ?


সাবরিনার গলায় সে ঘৃণা, চোখের এই বিষ দৃষ্টি কোনভাবেই মন থেকে সরাতে পারছে না। সিনথিয়া জিজ্ঞেস করেছিল কি হয়েছে দেখা হবার পর। মাহফুজ পুরো ঘটনা বলে নি। জানে সিনথিয়া আর মেজাজি বোনের তুলনায়। ফলে দেখা যাবে ফোন করে চার্জ করবে আর তখন সাবরিনা কি বলতে কি বলবে। আর সমস্যা তৈরি হবে। মাহফুজ তাই বুদ্ধি করে উত্তর দিয়েছে যে খুব বেশি কথা হয় নি, সাবরিনা ব্যস্ত ছিল। সিনথিয়া বলে আপু মনে হয় ভাল ভাবে নেয় নি ব্যাপারটা। এতবার করে বললাম তাও আমার কথা শুনল না। ভিতরে ভিতরে রাগ পুষে আছে নিশ্চয়। তুমি যে শুরু থেকে আমার আর তোমার ব্যাপার খোলাসা কর নি তাতে আপু সহজে ব্যাপারটা নেয় নি। মাহফুজ বলে হ্যা তা ঠিক, তবে বলে না এই পরিচয় না দেওয়ার ব্যাপারটা ঘটনা কে এখন কোন পর্যায়ে নিয়ে গেছে। গত কয়েক দিন যতবার কথা হয়েছে সিনথিয়ার সাথে মনে হয়েছে সিনথিয়া স্ট্রেসড হচ্ছে দিন কে দিন। এখনো ওর ফ্যামিলি পুরো গ্রিন সিগনাল দেয় নি। নুসাইবা রাজি, সাফিনা মানা করে নি তবে হ্যা বলে নি, আর সাবরিনা বার বার এড়িয়ে যাচ্ছে প্রসংগ। এদিকে সেমিস্টার শেষের কাজের চাপ। সিনথিয়ার মনে হয় আর কয় সাপ্তাহ পর দেশে আসছে এখনো কিছু ঠিক হয় নি। মাহফুজ শত ব্যস্ততার মাঝে সিনথিয়া কে ফোনে নিয়মিত চাংগা রাখার চেষ্টা করে। সিনথিয়া বার বার বলে তীরে এসে কি তরী ঢুববে মাহফুজ? সিনথিয়ার এই চঞ্চল মন মাঝে মাঝে খুব দ্রুত হতাশ হয়ে পড়ে। মাহফুজ বলে আমি সব ঠিক করে দিব। সিনথিয়ার অগাধ আস্থা মাহফুজে তাই সেটা শুনে পড়ায় মন দেয় আবার। তবে মাহফুজ জানে না ঠিক কিভাবে কি করবে। সিনথিয়া মাঝে একদিন ওর নানুর সাথে দেখা করবার কথা বলেছিল। মাহফুজের মনে হয় এটাই এখন রাইট কোর্স অফ একশন। এই কয়দিনের ময়মনসিংহের এই এসাইনমেন্ট তাই নিজে থেকে চেয়ে নিয়েছে। ময়মনসিংহ সদরের ওদের দলের প্রার্থীর হয়ে নির্বাচনী প্রচারণা সমন্বয় টিমে কাজ করবে। কাজের ফাকে সময় করে দেখা করতে এসেছে সিনথিয়া সাবরিনার নানু আয়েশা বেগমের সাথে। মাহফুজ মটরসাইকেল থেকে নামে। ওর সাথে একটা ছেলে এসেছে, পার্টির লোকাল লোক। তাকে  বলে বাইক নিয়ে একটু ঘুরে আসতে এক ঘন্টা পর কল দিবে। মাহফুজ আসার আগে আসমা বেগম কে কল দিয়ে এসেছে। আগেও একবার দেখা হয়েছিল। এর মাঝে ফোনে অবশ্য বেশ কয়েকবার কথা হয়েছে গত দুই বছরে। সিনথিয়া ওর নানু নিজেও কল দিয়েছিল। বাইক থেকে নেমে মাহফুজ সামনের বিল্ডিংটার দিকে তাকায়। তিন তলা একটা বাড়ি। দোতলার একটা ফ্ল্যাটে থাকেন আসমা বেগম। ছেলে মেয়েরা কেউ সাথে থাকে না, সবাই যার যার কাজে। একজন কাজের লোক থাকে সাথে। মাঝে মাঝে ছেলে মেয়েদের কাছে থেকে ঘুরে আসেন। এই শহরে জন্ম, আর বেড়ে উঠা। তার উপর স্বামীর রেখে যাওয়া বাড়ি। এই জন্য সহজে ছাড়তে চান না ময়মনসিংহ। বাড়িটা পুরাতন হলেও নিয়মিত যত্ন নেওয়া হয় টের পাওয়া যায়। অন্য ফ্লাট গুলোতে ভাড়াটিয়া থাকে। সামনে একটা গলি রাস্তা। সামনের লোহার গেটের সাথে লাগানো ছোট গেটটা খোলা। সেটা  দিয়ে ভিতরে ঢুকে দোতলায় ফ্ল্যাটে কলিংবেল বাজায়। দরজা খুলে আসমা বেগম নিজেই। বেশ অনেক দিন পর দেখছে কিন্তু দেখার পর মাহফুজের মন ভাল হয়ে যায়। শান্ত সৌম্য একটা চেহারা। হাসি হাসি মুখ। সিনথিয়াদের পরিবারে শুরু থেকে যে ওদের প্রেমের পক্ষে সে হচ্ছে এই নানু। উনাকে দেখলে বুঝা যায় ওদের সিনথিয়ার মা, বোন কেন এত সুন্দর। বংশপরম্পরা। আস, মাহফুজ আস। উনাকে দেখলে বয়স বুঝা যায় না। এখন একদম শক্ত আছেন। বয়স অনায়েসে ৫০ এর ঘরে বলে চালিয়ে দেওয়া যাবে। ড্রয়িংরুমে এসে বসল মাহফুজ। পুরাতন আমলের সোফা। ড্রয়িংরুমের এক কোণায় একটা কাচের শোকেস। সেখানে বাসার ক্রোকারিজ রাখা। দেয়ালে পরিবারের সদস্যদের নানা ছবি লাগানো। দেখে মনে হচ্ছে এই রুমে সময় গত বিশ বছর ধরে ফ্রিজ হয়ে গেছে।


যেহেতু গত বছর দুই ধরে আসমা বেগমের সাথে নিয়মিত কথা হয়, একবার দেখাও হয়েছে। সাথে উনি এই রিলেশনের ব্যাপারে পজিটিভ তাই মাহফুজ অনেক রিলাক্সড বোধ করল। আর আসমা বেগমের পার্সনালিটির কিছুটা পেয়েছে সিনথিয়া। হাসিখুশি। কথা বলার সময় খুব রিলাক্সবোধ হয়। আর হিউমার সেন্স ভাল। তাই দশ মিনিট কথা বলার পর মাহফুজের মনে হল কতদিনের পরিচিত বুঝি। এর মধ্যে বাসার কাজের লোক দুই কাপ চা দিয়ে গেল। সাথে বিস্কুট, আর একটা ছোট প্লেটে খোসা ছাড়ানো কমলা। মাহফুজের মনে হয় সিনথিয়ার ফ্যামিলির মধ্যে নানুর সাথে এক ধরনের আত্মিক যোগাযোগ অনুভব করে। আসমা বেগম নিজে থেকেই কথা তুলেন। সিনথিয়া আমাকে সব বলেছে। তুমি নুসাইবা কে হেল্প করছ। তোমাকে প্রথম দেখেই আমার মনে হইছিল তোমার মধ্যে  অনেক সম্ভাবনা আছে। নুসাইবার ঘটনায় তুম সেটা প্রমাণ করছ। নুসাইবা কে আমি আমার নিজের মেয়ের মত দেখি। সাফিনার সাথে ওর যে খাতির, সেটা অনেক সময় মনে হয় ওরা দুই বোন। যদিও ওরা ননদ-ভাবী। এই একটা কাজ করে তুমি তোমার চান্স অনেক বাড়ায়ে দিয়েছ। মাহফুজ বলে নানু কিন্তু এখনো কিছু সমাধান তো হচ্ছে না। সিনথিয়ার আম্মু তো এখনো আমাদের ফ্যামিলির সাথে কথা বলার জন্য গ্রিন সিগনাল দিচ্ছে না। এদিকে সাবরিনা আমাকে এড়িয়ে যাচ্ছে। আসমা বলেন এতদিন যখন ধৈর্য্য ধরেছ আরেকটু ধর। এত অস্থির হবার কিছু নেই। সাবরিনার ব্যাপারটা তুমি চিন্তা কর। তুমি এতদিন ওর সাথে কাজ করেছ কিন্তু ওকে তোমার পরিচয় দাও নি। এইটা ওর মধ্যে এক ধরনের অবিশ্বাস তৈরি করেছে। মাহফুজ মনে মন একটু হাফ ছাড়ে। তার মানে সাবরিনা আর নানুর মাঝে কথা হয়েছে। তবে সাবরিনা পুরো ব্যাপারটা বলে নি। আসমা বলেন, ওর সাথে আমার কথা হয়েছে। এই কারণে ও এই বিয়ের প্রচন্ড বিরোধিতা করছে। আমি ওকে অনেক ভাবে প্রশ্ন করেছি কিন্তু এর বাইরে আর কিছু বলছে না। আমার মনে হয় এইটা আস্তে আস্তে কেটে যাবে। সিনথিয়া দেশে আসুক। দরকার হলে তোমরা দুইজন একসাথে সাবরিনার কাছে ক্ষমা চাইবে। আমিও ওকে বুঝিয়েছি। যদিও আমার মনে হচ্ছে ওর মনের ভিতর এই বিয়ে নিয়ে একটা খুতখুত আছে। তবে আসল ব্যাপার হল আমার মেয়ে সাফিনা। ওকে রাজি করানো গেলে বাকিরা এমনিতে রাজি হবে। আমার জামাই ওর বউ এর কথা ফেলবে না। আর মিজবাহ এর সাথে আমার কথা হয়েছে। মিজবাহ ওর বোন কে তুমি সেফ করছ এই কারণে খুব কৃতজ্ঞ।
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
মাহফুজ জিজ্ঞেস করে তাহলে নানু, সাফিনা আন্টি এখনো পুরো হ্যা বলছে না কেন। আসমা প্রশ্নটা শুনে একটু বিরতি নিলেন। উনার ব্যাখ্যাটা কি উনি দিবেন নাকি ভাবছেন। উনি নিশ্চত না যে তার মেয়ের মনে বড় বাধাটা আসলে এটাই। তবে আসমা বেগম ভাবলেন, অনেক বছর আগে উনি যে ভুল করেছিলেন সেইম ভুল উনার মেয়ে কে মা হিসেবে করতে দিবেন না। আর মাহফুজ ছেলেটা করিতকর্মা। পুরো ব্যাপারটা জানলে ওর পক্ষে হয়ত আর কিছু করা সম্ভব। আর উনি নিজেও ঠিক করলেন আজকের পুরো সাফিনার সাথে এই ব্যাপারে আর বিস্তারিত কথা বলবেন। আসমা বললেন এইটা আসলে কেন আমি নিশ্চিত না। সাফিনার সাথে আমি কথা বলছি। ও এখন নিমরাজি তবে পুরো হ্যা বলতে এখনো দ্বিধাবোধ করছে। মাহফুজ বলল আন্টির মনে কি আমাদের ফ্যামিলি স্ট্যাটাস নিয়ে এখনো দ্বিধা আছে। আসমা বললেন, শুন মাহফুজ ফ্যামিলি স্ট্যাটাস নিয়ে আমাদের পরিবারে কখনোই খুব বেশি চিন্তা ছিল না। পাত্র বা পাত্রী যদি শিক্ষিত হয়, ভাল সম্ভাবনা থাকে আর পরিবার যদি একটু ডিসেন্ট হয় তাইলে আমরা মানা করি না। স্ট্যাটাস নিয়ে বেশি ভাবে আসলে মিজবাহদের ফ্যামিলি। তুমি নুসাইবা কে সেফ করে সেইদিক টা রক্ষা করেছ। তবে সাফিনার মনে আসল প্রশ্ন তোমার প্রফেশন নিয়ে, তোমার রাজনীতি করা নিয়ে। মাহফুজ এই শংকাটা করেছিল। বাংলাদেশে এখনো অনেকে রাজনীতি করাটা কে ভাল চোখে দেখে না। রাজনীতিবিদদের হাতে দেশ ছেড়ে দিতে পারে মানুষ কিন্তু তার ছেলে বা মেয়ে কে বিয়ে দিতে রাজি হয় না। পলিটিক্যাল সার্কেলে এমন প্রচুর ঘটনার স্বাক্ষী ও। মনটা একটু খারাপ হয়ে যায় ওর। আসমা কে বলে, নানু আমি কিন্তু চাদাবাজি টেন্ডারবাজির পলিটিক্স করি না। আর আমি রাস্তার ক্যাডারও না। কেন্দ্রীয় যুব সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক আমি। আর আমার ব্যবসা আছে। আমার মেইন ইনকাম সোর্স সেইটাই। ইনকাম খারাপ না। এমন কি ভাল ভাল কর্পোরেট জব করা অনেকের থেকে আমার ইনকাম অনেক বেশি। আসমা বললেন আমি জানি। সিনথিয়া আমাকে সব বুঝিয়ে বলেছে। সিনথিয়া ওর মা এবং বাবা কে বুঝিয়ে বলেছে এইসব চাদাবাজি টেন্ডারবাজি তুমি কর না। মাহফুজ বলল তাহলে আমার অপরাধ কি খালি রাজনীতি করা? আসমা বললেন ঠিক অপরাধ বলব না তবে তোমাকে হ্যা বলার ক্ষেত্রে সাফিনার মেইন চিন্তা ঐ জায়গাটাতে।

মাহফুজ বলল নানু তাহলে আমি কি করব? রাজনীতি ছেড়ে দিব? আমি সিনথিয়া কে ভালবাসি। তবে রাজনীতি আমার রক্তে। আমার নানা, আমার বাবা তাদের সারাটা জীবন দিয়ে দিয়েছেন পলিটিক্সের পিছনে। উনারা কখনো পলিটিক্স থেকে টাকা বানাতে চান নাই। উনাদের সাথে পলিটিক্স করা লোক, উনাদের লেভেলে পলিটিক্স করা লোকেরা আজকে কোটি কোটি টাকার মালিক আর বিশ বছর আগে থেকে। আমাদের ফ্যামিলি এখনো পুরাতন ঢাকায় আমাদের একটা দোকানের ইনকামের উপর চলে। রাজনীতি আমার পক্ষে ছাড়া কঠিন। তবে আমার বাবা বা নানা যেমন তাদের দোকানের ব্যবসাটা কখনো বড় করেন নায় আমি তেমন না। আমি এর বাইরে বের হয়ে আসছি। নিজের বিজনেস নিজ হাতে দাড় করাচ্ছি। ইনশাল্লাহ আগামী দশ পনের বছর পর এটা ভাল কিছু হবে। নষ্ট পলিটিক্স করব না দেখে অনেক সংগ্রাম করছি পলিটিক্সের ভিতর। প্লিজ নানু সাফিনা আন্টি কে একটু বুঝিয়ে বলেন। নানু আপনি আমাকে বলেন আমি কি করব? আসমা বেগম মাহফুজের কন্ঠে আকুলতা টের পান। প্রেমিকের ভালবাসার তীব্রতা তাকে মুগ্ধ করে। অনেক বছর আগে একটা প্রেম ফুটে উঠার আগে তার কারণে নষ্ট হয়েছে আজ একটা ফুটন্ত প্রেম কে আবার নষ্ট  হতে দিতে তার কষ্ট লাগে। আসমা বলেন, মাহফুজ সাফিনার তোমার ব্যাপারে অবস্থান বুঝতে গেলে প্রায় ত্রিশ বছর পিছিয়ে যেতে  হবে। মাহফুজ বলে মানে? আসমা বলেন আজকে তোমাকে যেটা বলছি সেটা সিনথিয়া সাবরিনা কেউ জানে না। সম্ভবত মিজবাহ জানে না। এমন কি সাফিনার সাথে এই ব্যাপারে অনেক বছর কোন কথা হয় নি। আমি নিজেও ভুলে গেছিলাম অনেকটা। তবে সিনথিয়া যেদিন তোমাকে প্রথম পরিচয় করিয়ে দিল আর তুমি কি কর বলল সেদিন হঠাত করে আমার পুরাতন ঐ ঘটনা টা মনে পড়ে গেছিলো। সবাই বলে সাবরিনা ওর মায়ের মত হয়েছে। চুপচাপ শান্ত, ভেবেচিন্তে কোন সিদ্ধান্ত নেয়। তবে আমার মনে হয় সিনথিয়া আর বেশি ওর মায়ের মত। রাগি, চঞ্চল, আবেগী। আমার মেয়ের চরিত্রের এই দিকটা সময়ের সাথে সাথে চাপা পড়ে গেছে। তাই এখনকার সাফিনা কে দেখলে মনে হবে ওর সাথে সাবরিনার মিল বুঝি অনেক। তবে কম বয়সী, বিয়ের আগের সাফিনা কে দেখলে যে কেউ বুঝবে সিনথিয়ার সাথে ওর কতটা মিল। মাহফুজ অবাক হয় এটা শুনে। সিনথিয়া হাজার বার ওকে বলেছে, ওর মায়ের সাথে সাবরিনার কতটা মিল। এই প্রথম অন্য কিছু শুনল। আসমা বেগম বললেন দাড়াও তোমাকে একটা জিনিস দেখাই। এই বলে ভিতরে গেলেন, কয়েক মিনিট পর একটা  বড় ছবির এলবাম নিয়ে আসলেন। বললেন, এই এলবামে সাফিনাদের ভাইবোনদের সবার কলেজ কলেজের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এচিভমেন্টের ছবি আমি রেখে দিয়েছি। কেউ দেখে না। আমি মাঝে মাঝে উলটে দেখি। এই বলে এলবামের পাতা উলটাতে উলটাতে একটা পাতায় স্থির হলেন। একটা বড় ছবি দেখিয়ে বললেন দেখতো কাউকে চিন কিনা। মাহফুজ এলবামের উপর ঝুকে পড়ে দেখে। সাদাকাল ছবি। একটা মঞ্চে পাচজন দাঁড়িয়ে আছে। দুই জন মেয়ে তিনজন ছেলে। একটা মেয়ের মুখ দেখে চমকে গেল। এত সুন্দর। সাফিনা আন্টি কে সরাসরি কখনো দেখে নি মাহফুজ। ছবিতে দেখেছে। সাফিনা যে সাবরিনা সিনথিয়া দুইজন থেকে বেশি সুন্দরী এইটা সব সময় বলে সিনথিয়া। আজকে এত বছর পুরাতন সাদাকালো ছবি যেন সেই প্রমাণ দিচ্ছে। মাঝে অনেক বছর গেছে কিন্তু মুখের আদল এক আছে। আর ছবির মুখে তারুণের ঝলকানি। ঘুড়ে দাঁড়িয়ে দেখবার মত সুন্দর একটা মুখ। শুকনো ছিপছিপে এক তরুণী। শাড়ি পড়া। মাহফুজের চোখে বিস্ময়। আসমা বেগম কে বললেন এইটা তো সাফিনা আন্টি। অনেক আগের ছবি মনে হচ্ছে।


আসমা বললেন, হ্যা। এইটা অনেক আগের। সাফিনা যখন কলেজের ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে তখনকার। একটা থিয়েটার গ্রুপে ও যোগ দিয়েছিল। ওরা চিত্রাংগদা নাটক টা মঞ্চস্থ করেছিল। সাফিনা হয়েছিল চিত্রাংগদা। মাহফুজ পলিটিক্স করা সেই রেয়ার ছেলেদের একজন যার শিল্প সাহিত্যে আগ্রহ আছে। অপি করিম যখন চিত্রাংগদা নাটকে চিত্রাংগদা হল, তখন সেই নাটক শিল্পকলা একাডেমিতে গিয়ে দেখেছিল মাহফুজ। চিত্রাঙ্গদা চরিত্রটা সৌন্দর্য আর বিদ্রোহের যে মিশেল সেটা দারুণ ফুটিয়ে তুলেছিল অপি করিম। মাহফুজের মনে হয় যদি সত্যি সত্যি সেই সময়ের সাফিনা আন্টির ভিতর সিনথিয়ার বিদ্রোহী স্বভাবটা থাকে তাহলে এই চরিত্রে উনি পারফেক্ট। কারণ ছবি বলে দিচ্ছে কতটা সুন্দর  উনি, সাথে ভিতরের বিদ্রোহের আগুন। আসমা বেগম বললেন এত কম বয়সে মেইন পার্ট পাবে এইটা বুঝতে পারে নি আমি। তোমার নানা, মানে আমার হাজব্যান্ড নাটক করতে দেবার ব্যাপারে একটু চিন্তিত ছিলেন তবে আমি তাকে মানিয়েছিলাম। তোমার ব্যাপারে সাফিনার আপত্তির শুরুটা আসলে ঐ সময়ের সাথে সম্পর্কিত। মাহফুজ জিজ্ঞেস করে কিভাবে? আপনি যে সময়ের কথা বলছেন ঐ সময় আমার জন্ম হলেও বয়স হয়ত এক দুই বছর। আসমা হাসলেন বললেন, আগে ছবিতে সাফিনার পাশে দাঁড়ানো ছেলেটা কে দেখ। মাহফুজ ভাল করে খেয়াল করে দেখল একটা তেইশ চব্বিশ বছরের যুবক। যথেষ্ট লম্বা। মুখে দৃঢ়তার ছাপ। বেকব্রাশ করা চুল। পাঞ্জাবী পড়া। পাঞ্জাবীর হাতা কনুই পর্যন্ত গুটানো। হ্যান্ডসাম আছে ছেলেটা মনে মনে ভাবে মাহফুজ। আসমা বলেন এই ছেলেটার নাম কাজল। আমাদের পাড়ার ছেলে। খুব ভাল ছেলে ছিল। পাড়ার কোন অনুষ্ঠান ওকে ছাড়া হয় না, সবার বাড়িতে কোন কাজ থাকলে ওর ডাক পড়ে। পড়াশুনায় খারাপ ছিল না। নাটক করত, সাহিত্য পত্রিকা বের করত ওরা কয় বন্ধু মিলে। পলিটিক্সও করত। মাহফুজ আগ্রহী হয়ে উঠে গল্পে। আসমা বলেন এমন ছেলের প্রেমে তরুণীরা পড়বে স্বাভাবিক। পাড়ার কম বয়েসী বউরা পর্যন্ত ওর দিকে অন্য চোখে তাকাত। সাফিনা তখন সদ্য তরুণী। এই শহরটাই ওর ভাল করে দেখা হয় নি। তাই কাজল ওর চোখ ঝলসে দিয়েছিল। ঐ বয়সী সব মেয়েরা তখন কাজলের প্রেমে পড়েছিল, তোমার হবু শ্বাশুড়ীও পড়েছিল। বলে হাসলেন আসমা বেগম। মাহফুজ নিজেও হাসল, এই কারণে আসমা বেগম কে ভাল লাগে ওর। যেকোন জায়গায় প্রাণখুলে হাসার একটা ব্যাপার আছে উনার মাঝে।


আসমা বেগম বললেন, কম বয়েসী মেয়েদের মায়ের অনেক সতর্ক থাকতে হয়। আমি তাই সাফিনার চোখের ভাষা পড়তে পেরেছিলাম। ওকে একদিন অনেক বকাঝকা করেছিলাম তাই। যাতে কাজলের সাথে কম মিশে। আর নাটক এরপর থেকে করা বন্ধ। সাফিনা অনেক কেদেছিল। তবে সেই সময়ে বাবা মায়ের উপর বেশি কথা বলত পারত না ছেলে মেয়েরা। একদিন কাজল এসেছিল বাসায় সাফিনা আর প্রাকটিসে যায় না কেন এইটা জিজ্ঞেস করার জন্য। আমি ওর চোখেও সাফিনার জন্য মুগ্ধতা দেখেছিলাম। বয়সটাই যে অমন। আর দুইজন সুন্দর মানুষ পরষ্পরকে চুম্বকের মত টানবে এটাই স্বাভাবিক। তাই আমি কাজল কে তখন বুঝিয়েছিলাম যে ও যেন আর না আগায়। মফস্বল শহর। একটা বাজে গুজব তৈরি হয়ে গেলে একবার পরে সমস্যা হবে সাফিনার। আমার বকা খেয়ে কাজল একদম মিইয়ে গিয়েছিল। সাফিনা সব দরজার আড়াল থেকে শুনছিল, পরে আমি এটা টের পেয়েছিলাম। এর ঠিক কয়েক সাপ্তাহ পর একটা পলিটিক্যাল মারামারিতে মারা যায় কাজল। বলতে পার তোমার হবু শ্বাশুড়ীর না করা প্রেম ছিল কাজল। পলিটিক্যাল মারামারিতে ও মারা গেছে এইটা কখনো ভুলতে পারে নি সাফিনা। এরপর থেকে পলিটিক্স আর পলিটিক্স করা লোকদের একদম অপছন্দ ওর। তুমিও পলিটিক্স কর। এইবার  বুজতে পারছ সাফিনার মনে দ্বিধাটা কোথায়? মাহফুজের মনে হঠাত করে এই পাজলের রহস্য যেন খুলে গেল। সাফিনা আন্টি কেন এত কিছুর পরেও ওর সাথে মেয়ের বিয়ে দিতে দ্বিধা করছে সেটা টের পেল। মাহফুজ ছবির দিকে আর ভাল করে তাকায়। ছবিতে কাজল নামের লোকটা ওর মত লম্বা হবে। বডি ওর মত পিটানো। চোখেমুখে বুদ্ধির ছাপ। হ্যান্ডসাম ছিল লোকটা মনে মনে ভাবে মাহফুজ। অনেক বছর আগে মারা যাওয়া এই মানুষ যে ওর জীবনে এই রকম গূরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে সেইটা ও বুঝতে পারে নি।  মাহফুজ বলল তাইলে নানু কি করব আমি? আসমা বেগম বললেন, আমি সাফিনার সাথে এই ব্যাপারে খোলাখুলি কথা বলব। নুসাইবা ফেরত আসলে হয়ত ও আর বুঝাবে। তবে মজার ব্যাপার কি জান সিনথিয়া যখন তোমার ব্যাপারে আমাকে প্রথম বলল যে তুমি পলিটিক্স কর কিন্তু অন্য পলিটিক্যাল ছেলেদের মত না।  বই পড়, মুভি দেখ, গান পছন্দ কর। তখন আমার অনেক বছর পর হঠাত করে কাজলের কথা মনে হয়েছিল। নিয়তির কি খেল দেখ। মা আর মেয়ে এত বছর বাদে সেইম জায়গায় দাঁড়ানো। তুমি অত টেনশন করো না। আমি এর আগেরবার একটা প্রেমে বাধা হয়েছিলাম। এইবার এই প্রেম যাতে সফল হয় সেই চেষ্টা করব।


আসমা বেগমের সাথে আর কিছুক্ষণ কথা বলে আর আর কিছু পরামর্শ করে বের হয়ে আসে মাহফুজ। মাহফুজ সব সময় বিশ্বাস করে যত বেশি জানা যায় একটা ব্যাপার সম্পর্কে তত ভাল করে বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। তাই মোবাইলের ফোন বুকটাতে একটা  নাম্বার খুজে। ময়মনসিংহে ওর প্রশ্নের উত্তর কে দিতে পারবে এইটা আসলে সম্ভবত একটা লোক বলতে পারবে। সন্তোষ দাস। ময়মনসিংহে একটা লোকাল পত্রিকার সম্পাদক। ষাটের উপর বয়স। এই জেলা শহরে যথেষ্ট প্রভাবশালী লোক। নির্বাচনী প্রচারণায় সমন্বয়কের কাজ করছে ও তাই গতকালো উনার সাথে গিয়ে মিটিং করেছে। এর আগে অন্য একটা পলিটিক্যাল ব্যাপার আলাপ হয়েছিল কয়েক বছর আগে। এরপর থেকে যতবার ময়মনসিং আসে ততবার সন্তোষ’দার সাথে একবার দেখা করে আর না পারলে অন্তত একটা কল দেয়। প্রচন্ড হাসিখুশি মানুষ। ময়মনসিং শহরের সব গূরুত্বপূর্ন রাজনৈতিক, ব্যবসায়ীক বা সাংস্কৃতিক মানুষের নাড়ি নক্ষত্র জানে এই লোকটা। সব রাজনৈতিক দল তাকে সমীহ করে চলে। ত্রিশ বছর আগে মৃত রাজনীতি করা একটা লোকের সম্পর্কে খোজ দিতে পারলে সম্ভবত এই লোকটাই পারবে। মাহফুজের ফোন পেয়ে উচ্ছাসিত হয়ে উঠেন সন্তোষ দাস। বলেন কি ব্যাপার মাহফুজ আজকে সকাল সকাল। চলে আস আমার অফিসে। আড্ডা দেওয়া যাবে। মাহফুজ বলে দাদা এখন তো একটা কাজে যেতে  হবে। রাতে চেষ্টা করব আপনার সাথে দেখা করার। সন্তোষ দাস জিজ্ঞেস করেন তা কি  ব্যাপার? তোমাদের পার্টির পলিটিকাল ব্যাপারটা যেটা নিয়ে গতকাল আলোচনা করেছিলে ঐটা নিয়ে কিছু নাকি। আর দেখ ভাই, আমি কিন্তু একটা পত্রিকা চালাই। ফলে আমি কোন দল কে সরাসরি মাঠে নেমে সাপোর্ট করব না। আর সাংবাদিক হিসেবে আমার দ্বায়িত্ব নিরপেক্ষ ভাবে এই নির্বাচন রিপোর্ট করা। মাহফুজ বলে সন্তোষ দা আমরা সবাই এইটা জানি। আপনাকে কেউ এই ব্যাপারে ইনফ্লুয়েন্স করবে না। আমি আসলে অন্য একটা ব্যাপারে জানতে চাইছিলাম। খানিকটা পার্সনাল। সন্তোষ দাস জিজ্ঞেস করলেন কি ব্যপার? মাহফুজ বলে আপনি কি কাজল নামে কাউকে চিনতেন। বাম রাজনীতি করত এক সময়। লম্বা করে। নাটক করত। বেকব্রাশ করত চুলে। চমকে গেলেন সন্তোষ। বহু যুগ পরে কেউ তাকে কাজলের সম্পর্কে প্রশ্ন করল।
Like Reply


সাবরিনা ওর বুকের মাঝে যে কি হচ্ছে এই কয় সাপ্তাহ কাউকে বুঝাতে পারবে না। বুকটা জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে। একদিকে মনে হচ্ছে ওর সাথে বিট্রে করা হয়েছে, সেই কষ্ট। আরেক দিকে কাউকে কিছু বলতে না পারার কষ্ট। মাহফুজের সাথে ওর সম্পর্কটা যে কয়মাস চলেছে সেই সময় ধরা পড়ার ভয় ছিল কিন্তু সেই ধরা পড়ার ভয়টা যেন আর উত্তেজনা বাড়িয়েছিল। ওর মনে যে ফ্যান্টাসি ছিল সেগুলোর পূরণের রাস্তা ছিল মাহফুজ। ওর মনে হত এটা স্থায়ী কিছু না, সাদমানের কাছে সে ফেরত যাবে শেষ পর্যন্ত। একটা সময় যখন মনে হচ্ছিল ইমোশনালি বেশি ইনভলব হয়ে যাচ্ছে তখন বিদেশে এই ট্রেইনিং অপরচুনিটি আসল। ফলে এক ধরণের ক্লিন ব্রেকাপ ছিল মাহফুজের সাথে। যদিও বিদেশ গিয়ে টের পাচ্ছিল মাহফুজ ওর ভিতরে ভালভাবে বাসা বেধেছে। মনের ভিতর যে অপরাধবোধ কাজ করত সেটা চাপা দিত এই ভেবে যে এইবার দেশে গেলে কিছু আর হবে না যেহেতু সরে এসেছে সেখান থেকে। আর সাদমান যেটা জানে না সেটা না জানা থাক ওর। সাদমানের সাথে তাই একদিন সেক্সের সময় মাহফুজ কে মনের ভিতর থেকে সরিয়ে দিতে চেয়েছে কিন্তু সেক্স শেষে আবিষ্কার করেছে মাহফুজ বরং সেখানে আর ভাল ভাবে আসন গেড়ে বসেছে। এরপর সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা খেল মাহফুজ আর সিনথিয়ার পুরো ব্যাপারটা জানার পর। অপরাধবোধ এখন নতুন মাত্রায় চলে গেছে ওর ভিতর। বোনের প্রেমিকের সাথে বিছানায় গিয়েছে ও। সাদমান খালি না সিনথিয়ার সাথেও বিট্রে করেছে ও। এইটা অন্য কেউ জানলে কি রিএকশন দিবে এইটা মনের ভিতর যতবার আসছে ততবার হৃদকম্পন বেড়ে যাচ্ছে। কার সাথে শেয়ার করার অপশন নেই। মাহফুজের  উপর রাগ হচ্ছে। মাহফুজ সব জেনে বুঝে কিভাবে এইটা করতে পারল? ঐদিন আইসক্রিম পার্লারে মাহফুজ কে ইচ্ছামত কথা শুনিয়ে দিয়েছে। মাহফুজ কোন উত্তর দিতে পারে নি। দিবেই বা কিভাবে। একসাথে দুই বোন কে ঘুরিয়েছে।  ওর ভিতর এখন একেক ঘন্টায় একেক অনুভূতি প্রবল হয়। কখনো রাগ, কখনো অপরাধবোধ আর কখনো অনুশোচনা। ভাল তো ছিল। সারা জীবন ভাল মেয়ে হয়ে কি এমন খারাপ ছিল। একটু ফ্যান্টাসির জন্য, একটু ব্যাড গার্ল ভাইব আনতে গিয়ে সব সুখ চলে গেছে জীবন থেকে। এই কয়দিন সিনথিয়া ওকে কয়েকবার ফোন করেছে, প্রতিবার এড়িয়ে গেছে ও। সিনথিয়া শেষবার রাগারাগিও করেছে। তবে নিজেকে শান্ত রেখেছে সাবরিনা। যদি ভুলে কিছু বলে ফেলে তাহলে হয়ত বুঝে ফেলবে সিনথিয়া। আবার একদিন নানু ফোন দিয়ে ওকে বুঝালো সিনথিয়ার বিয়েতে যেন বাধা না দেয়। নানু কে কিভাবে বুঝাবে সাবরিনা যে এইটা কত বড় অনাচার হতে যাচ্ছে। আর মাহফুজ ওকে এরপর আর দুইবার কল দিয়েছিল তবে নাম্বারটা ব্লক করে দিয়েছে সাবরিনা। মাহফুজ কে একবার রাগে মেরে ফেলতে ইচ্ছা করছে আবার অবাক হয়ে খেয়াল করছে সিনথিয়ার সাথে ওর প্রেম আছে এইটার কারণে মনের ভিতর হিংসাও হচ্ছে। এই হিংসা হচ্ছে এইটা ভাবলে নিজের প্রতি নিজের ঘিন্না আর বাড়ছে ওর।


তার উপর আজকে মাহফুজ কে দেখতে হবে এইটা ভাবতে আর রাগ লাগছে। ওর মনে হচ্ছে এতদিন ধরে ভিতরে ভিতরে জ্বলতে থাকা আগুন আজকে বের হয়ে আসবে। আজকে অফিসে ওদের গালা নাইট। হেড অফিসের প্রোগ্রাম। ওদের সাথে কাজ করা নানা প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিরাও আসবে এই অনুষ্ঠানে। মাহফুজ অনুষ্ঠানে দাওয়াত পেয়েছে জানে ও। দাওয়াতের লিস্ট চেক করেছে। এই অনুষ্ঠানে না গেলেই না। কারণ কড়া নির্দেশ আছে। আবার এটাও জানে মাহফুজ আসবে এবং ওর সাথে কথা বলার চেষ্টা করবে। সেই ক্ষেত্রে কি করবে জানে না ও।  তার উপর আজকে এই অনুষ্ঠানে কিছু দায়িত্ব ওর উপর। এইসব দায়িত্ব ওকে পালন করতে হবে সাবিত ভাইয়ের সাথে। সোয়ারিঘাটের ওর সাথে যে ব্যাপারটা ঘটেছিল (পর্ব ১১) সেটার জন্য দায় আসলে সাবিত ভাইয়ের। সাবিত ভাই ওকে বিপদে ফেলার জন্য ঐ অপ্রস্তুত অবস্থায় এই কাজটার দায়িত্ব দিয়েছিল। মাহফুজের উপর ওর আস্থার শুরুটা মেইনলি সেখান থেকে। মাহফুজ ওকে ঐখান থেকে উদ্ধার না করলে কি হত সেটা ভাবতেও পারে না। এই মুহুর্তে ঘটনা টা মনে পড়াতে মাহফুজের উপর কৃতজ্ঞ হবে না রাগ করবে বুঝছে না। সাবিত ভাই ওকে বলল আর সাবরিনা আমাদের গ্রুপের জন্য আমি কোনায় একটা টেবিল বুক করে রেখেছি। একসাথে বসব। সাবরিনা হেসে উত্তর দিল ঠিকাছে ভাইয়া। করপোরেট পলিটিক্স এমন। যে তোমার চাকরি খাবার জন্য বসে আছে তার সাথে সবচেয়ে বেশি হেসে কথা বলতে হয়। প্রোগ্রাম শুরু হতে আর কিছুটা সময় বাকি। আয়োজক দলের সদস্য হওয়ায় সাবরিনা আগে এসেছে। এই সময় দেখতে পেল মাহফুজ এসে হাজির। ওকে দেখে কথা বলার জন্য এগিয়ে আসছে। মাহফুজ কে এড়াতে সাবরিনা উলটো ঘুরে সাবিত ভাইয়ের কাছে হাজির হল। সাবিত ভাইয়ের সব গালগল্প হাসি মুখে শুনছে ও মাহফুজ কে এড়ানোর জন্য। মাহফুজ আজকে প্রস্তুত হয়ে এসেছে যেভাবে হোক সাবরিনার সাথে কথা বলবে। সাবরিনা এই অনুষ্ঠানের আয়োজক কমিটিতে আছে। তার উপর অফিসের প্রোগ্রাম। এখানে চাইলেও সাবরিনা সিনক্রিয়েট করতে পারবে না। মাহফুজ ওকে অন্তত নিজের ব্যাখ্যা গুলো দিতে পারবে। মাহফুজ দেখলে ওকে এড়ানোর জন্য সাবিতের সাথে কথা বলা শুরু করেছে সাবরিনা। সাবরিনা কে অফিসে বিপদে ফেলার মূল কারিগর এই লোক। আর সাবরিনা ওর সাথে হেসে হেসে কথা বলছে। মাহফুজ বুঝে আজকে ওকে এড়ানোর জন্য যে কোন মূল্যে যে কোন কিছু করতে পারে সাবরিনা। একটু হতাশ হয় মাহফুজ।


সাবিত উল হক। কথার জাদুকর তবে কাজের বেলায় টো টো মাস্টার। বাবা মা দুইজনে কর্পোরেট জগতে বড় মানুষ। পড়াশুনা ইংলিশ মিডিয়ামে। অস্ট্রেলিয়া থেকে গ্রাজুয়েশন করে এসেছে। বাবা-মায়ের ব্যাকিং এর জোরে আর ভাল কথা বলার কারণে দ্রুত কর্পোরেট জগতে উচুতে উঠেছে। ফর্সা, লালটু মার্কা চেহারা। সাবিতের ধারণা পৃথিবীর সব মেয়েরা তার জন্য পাগল। আজকে তাই সাবরিনা ওর সাথে এসে হেসে হেসে কথা বলায় অবাক হয় না। ওর মনে হয় এটাই হওয়ার কথা ছিল। এমনিতে সাবরিনা কে দেখতে পারে না। অফিসে ওর প্রতিপক্ষ রাইয়ান, সাবরিনা কে হায়ার করেছে মেইনলি। এটা একটা কারণ। আর অন্য কারণ হচ্ছে সাবরিনা ওকে পাত্তা দেয় না সেভাবে। সুন্দরী মেয়েরা তাকে পাত্তা না দিলে প্রচন্ড অপমানবোধ করে। সাবরিনা ওকে পাত্তা দিচ্ছে না বরং রাইয়ান কে পাত্তা দিচ্ছে এইটা যেন আগুনে ডাবল ঘি ঢালার সমান। তার পর সাবরিনা কে নানা ভাবে কাবু করার চেষ্টা করেছে সফল হয় নি। সোয়ারিঘাটে একটা এমন চাল দিয়েছিল যাতে সাবরিনা ফেসে যেত তবে কিভাবে কিভাবে যেন সেটা থেকেও বের হয়ে আসল। বরং অফিসে ফেরত এসে উপর মহলে কথা তুলল রাইয়ানের সহায়তায় কিভাবে সেই রাতে রুম্মানের  বদলে সাবরিনা কে পাঠানো হল এই কাজে। ভাগ্য ভাল বাবা-মায়ের কারণে কর্পোরেটের অনেক বড় বড় নাম ওর ফ্যামিলি ফ্রেন্ড। তাই হাওয়া ঠান্ডা করার জন্য আজকাল সাবরিনার সাথে খুব ভাল ব্যবহার করে। এইবার অফিসের গালা নাইটের প্রোগ্রামের আয়োজক কমিটিতে সাবরিনার নাম ও নিজেই রেখেছে। তবে কাজ করতে গিয়ে টের পেয়েছে যতটুকু দরকার তার বেশি একটু কথা বলে না ওর সাথে সাবরিনা। তাই ভিতরে রাগটা আর বেড়েছে ওর। তবে আজকে ওর সাথে এইভাবে হেসে হেসে কথা বলায় ওর মনে হচ্ছে ওর চার্ম বুঝি কাজ করছে। আসলে সব সময় নানা উপায়ে মেয়েদের পটানোয় সাবিতের ধারণা মেয়েরা ওকে স্বর্গের দেবতা ভাবে। তাই সাবরিনা মাহফুজ কে এড়ানোর জন্য ওর সাথে হেসে কথা বলছে এটা না জানায় সাবিতের ধারণা হয় অফিসের কোল্ড বিচ সাবরিনার মনে বুঝি ওর জন্য জায়গা তৈরি হয়েছে। তাই মনে মনে ওর একটা প্লান তৈরি করে দ্রুত।


সাবরিনা ঘড়ি দেখছে। সাড়ে নয়টা। অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে এক ঘন্টার মত। আর দুই ঘন্টা চলবে মিনিমাম। সাদমান আবার একটা বিদেশ ট্যুরে বাইরে আছে। সাদমানের প্রতি এই কিছুদিনে ওর ভালবাসা বৃদ্ধি পেয়েছে অনেকগুণ। এর পিছনে অপরাধবোধের অবদান আছে অবশ্য। অনুষ্ঠানে নান কিছু হচ্ছে তবে কোন ভাবেই মনযোগ দিতে পারছে না কিছুতে। কোণায় বসে আছে একটা টেবিলে। এই টেবিলে সব সাবিত ভাইয়ের পা চাটা গ্রুপের লোকজন। এরাই এইবার ওর গ্রুপের লোক আয়োজনে। রাইয়ান ভাই অবশ্য এভাবে বসে থাকতে দেখলে রাগ করবে না। রাইয়ান ভাইয়ের কথা হচ্ছে দরকার হলে ওদের সাথে মিশে ওদের থেকে সুবিধা আদায় করে নাও। আর আজকে মাহফুজ কে এড়ানোর জন্য এইটা ভাল উপায়। বসে বসে সফট ড্রিংক করছে। বাকিরা হার্ড ড্রিংক নিয়েছে। অফিসের এইসব প্রোগ্রামে ড্রিংক ফ্রি থাকে। তাই মানুষজন হার্ড ড্রিংক নেবার বেলায় কার্পন্য করে না। অফিসের টাকায় বিদেশী দামী মদ খাবার এই সুযোগ কে ছাড়ে। ওর গ্লাসের কোক অনেক আগেই শেষ। সাবিত ভাই বলল, সাবরিনা তোমার গ্লাসে তো কিছু নেই। সাবরিনা বলল সাবিত ভাই আমি ড্রিংক করি না সাধারণত। সাবিত বলে আরে একটু নাও। সাবরিনা বলে নো থ্যাংক্স ভাই। সাবিত বলে ওকে তাহলে কোল্ড ড্রিংকস নাও। নাকি তাও নিবে না? সাবরিনা বলে উঠে গিয়ে আনতে ইচ্ছা করছে না সাবিত ভাই। সাবিত বলে, ও কাম অন সাবরিনা। ডোন্ট বি এ পার্টি পুপার। আচ্ছা দাড়াও আই উইল এরেঞ্জ দ্যা ড্রিংক। এইবলে নিজে উঠে দাঁড়ায়। জিজ্ঞেস করে কি চাও তুমি? কোক স্প্রাইট বা ফানটা নাকি জিরা পানি? সাবরিনা বলে ভাইয়া আমি আনতে পারব দরকার হলে। বাকিরা টেবিলে অনুষ্ঠান দেখছে, সাবরিনা আর সাবিতের কথোপকথনে তেমন একটা খেয়াল করছে না। দেশের নামকরা শিল্পীরা গান গাইছে একের পর এক। বলরুম জুড়ে প্রচন্ড শব্দ। সাবরিনা আর সাবিত পাশাপাশি বসা। অর্নব গাইছে এখন। সাবরিনার পছন্দের শিল্পী। তাই এইবার সাবিতের প্রস্তাবে রাজি হয়ে গেল। বলল ঠিকাছে ভাইয়া তাইলে এক গ্লাস কোক ইজ এনাফ। সাবিত বলল ওকে, আমার গ্লাসও ফাকা। আমি আমার গ্লাস রিফিল করে আনছি সাথে তোমার জন্য এক গ্লাস কোক।




সাবরিনা ঘড়ি দেখে আর কিছু সময় গেছে। সাবিত ভাই গেছে পনের মিনিট এখনো আসার নাম নেই। অবশ্য ওর তাড়া নেই। কোক খাবার কোন ইচ্ছা ওর নেই। খালি সাবিত ভাই তাড়া দিল দেখে। আগামীকাল এমনিতেও ছুটির দিন। অফিসের সবাই তাই ফ্রি ড্রিংক রিফিল করতে কার্পন্য করছে না। এইসব পার্টিতে শেষের দিকে দেখা যায় লোকেরা বেশ মাতাল হয়ে যায়। তবে সতর্ক থাকে যাতে বিব্রতকর কিছু না করে বসে। সাবিত ভাই হয়ত কোথাও মাঝখানে কথায় আটকে গেছে। একদিক দিয়ে ভাল। লোকটা নার্সিসিস্ট চুড়ান্ত রকমের। ভাবে তার মত বুদ্ধিমান কেউ নেই। সুদর্শন কেউ নেই। নার্সিসিস্টোরা কেউ তাদের অগ্রাহ্য করলে মানতে পারে না। নার্সিসিস্টদের একটা দূর্বলতা হল এদের প্রশংসা করে কেউ কিছু বললে এরা সেটাকে ঠিক মনে করে, তা সেটা যত ভুল হোক। এই অনুষ্ঠান আয়োজনের সময় সেই কাজটাই করেছে সাবরিনা। আজকে এই মূহুর্তে সেটাই করছে। মাহফুজ কে এড়ানোর জন্য সাবিত ভাইয়ের সাথে জোকের মত লেগে আছে। আর সাবিত ভাই কে অনুষ্ঠান আয়োজন কতটা দক্ষতার সাথে করেছে সেই সব বলছে আর সাবিত স্বভাবগত ভাবে ফুলছে। অবশ্য আর বেশি খুশি হবে কারণ রাইয়ান ভাইয়ের প্রিয় কেউ তার প্রশংসা করছে এইটা সাবিত ভাইয়ের ইগো কতটা বাড়ীয়ে দিবে এইটা ভেবে মনে মনে হাসে। লোকটা স্কাউন্ড্রেল এটাতে সন্দেহ নেই। তবে  নিজেকে যতটা চালাক ভাবে তার ধারে কাছেও না। একটু পর সাবিত আসে। দুই হাতে দুই গ্লাস। সাবরিনা কে কোকের গ্লাসটা এগিয়ে দেয়। টেবিলের একজন জিজ্ঞেস করে কি আনলেন ভাই? সাবিত উত্তর দেয় হুইস্কি। আবার জিজ্ঞেস করে নিট? সাবিত বলে না না, নিট হলে খুব তাড়াতাড়ি ধরে। আজকে মাতাল  হওয়া যাবে না। অনেক কাজ বাকি। এই বলে সাবরিনার দিকে তাকিয়ে হাসি দেয়। সাবরিনা ভাবে মেইন আয়োজক কমিটিতে থাকায় সাবিত ভাইয়ের কাজ আছে প্রোগ্রাম শেষ হবার পরেও। সাবরিনা বলে সাবিত ভাই আমি প্রোগ্রামের পর থাকতে পারব না। সাবিত বলে একটু থাকতে  হবে। তবে তুমি অল্প একটু হেল্প করে তাড়াতাড়ি চলে যেও। দরকার হলে আমি অফিসের গাড়ি পুল থেকে গাড়ি আনিয়ে রাখব। এইসব টুক টাক কথা বলার মাঝে সাবরিনা অল্প অল্প করে কোকের গ্লাসে চুমুক দেয়। সবারিনা ঘড়ি দেখে। সাড়ে দশটা। আর এক ঘন্টার মত প্রোগ্রাম  হবে। হঠাত করে টের পায় গরম লাগছে ওর। শেরাটনের বল রুমের এসেইর মাঝেও কপালে হালকা ঘাম আসে ওর। পাত্তা দেয় না। আর পাচ মিনিট যায়। ওর মনে হয় মাথাটা ঝিম ঝিম করছে। পেটের কাছে হালকা পরিচিত একটা অনুভূতি। তবে এই মূহুর্তে এই অনুভূতি কেন সেটাও বুঝে না। ওর নিঃশ্বাস প্রশ্বাস ভারী হয়ে আসে। ঘুম ঘুম একটা অনুভূতি আবার বুকের ভিতর ড্রাম বাজছে। আপনা আপনি ওর মাহফুজের কথা মনে আসে। তুরাগের জাহাজের মাস্টারের রুমে সেই সন্ধ্যা যেভাবে বুক ধক ধক করছিল সেই রকম। মাহফুজ সামনে হয়। অনেক ক্ষণ দেখে নি। হয়ত চলেও গেছে প্রোগ্রাম থেকে। তাই ওর নাম কেন মাথায় আসছে। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে আশেপাশে মাহফুজ কে দেখা যায় কিনা। ও দেখে সাবিত ভাই গভীর মনযোগের সাথে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। ক্রিপি লোকটা। সাবরিনা দেখে ওর পা ঘামছে। শরীরের উষ্ণতা ধীরে ধীরে বুক থেকে পেট হয়ে নিচে নামছে। চোখে ঘুম বাড়ছে। অবাক  হয় নিজেই। ওর মনে হয় বাসায় গিয়ে দ্রুত সাদমান কে জড়িয়ে ধরতে পারলে ভাল লাগত। সাদমানের শরীরটা জড়িয়ে শুয়ে থাকতে ইচ্ছা করছে। আজকে রাতে সাদমান কে ইচ্ছামত আদর করবে ফিরে গিয়ে। অনুষ্ঠানের মাঝে এইসব কি ভাবছে এটা ভেবে লাল হয়ে যায় সাবরিনা। আবার মনে পড়ে সাদমান দেশে নেই। একটু হতাশ লাগে। সাবরিনার শরীরের গরম আর নিচে নামছে আর চোখে ঘুম আর বাড়ছে। এমন আর হয় নি কখনো। সাবরিনা উঠে দাঁড়ায়। দাড়ানোর সময় মনে হয় মাথাটা ঘুরে উঠছে। তাই ধপ করে টেবিল ধরে। টেবিলের বাকি সবাই অন্ধকারে প্রোগ্রাম দেখছে প্রচন্ড সাউন্ড। কেউ ওর দিকে খেয়াল করে না। সাবিত ভাই বলে কি হল সাবরিনা? সাবরিনা বলে একটু শরীরটা কেমন জানি করছে। ওয়াশরুমে গিয়ে মুখে পানি দিয়ে আসি। সাবিত ভাই বলে আমি আসব? সাবরিনা ভাবে মেয়েদের ওয়াশরুমে সাবিত ভাই কিভাবে যাবে। তাই হেসে বলে না না ভাই আমি একাই যাব। সাবরিনা অবাক হয়ে দেখে হাসিটা ও মনে মনে দিয়েছিল কিন্তু কিভাবে যেন ওর মুখ দিয়ে হাসিটা বের হয়ে গেছে। ওর হাসির উপর যেন ওর কন্ট্রোল নেই। চেয়ার থেকে বের হবার সময় আবার চেয়ারটা ধরে। পা কাপছে ওর। এমন কেন হচ্ছে। সাবিত ভাই উঠে দাঁড়ায়। বলে চল আমি তোমাকে  হেল্প করছি। সাবরিনা না বলতে চায় কিন্তু ওর মুখ দিয়ে যেন না বের হচ্ছে না। সাবরিনা অবাক হয়ে খেয়াল করে সাবিত ভাই ওর হাত ধরেছে। সাবিত ভাই কে না বলতে যায় কিন্তু খেয়াল করে সাবিত ভাইয়ের হাতের মুঠোয় ওর হাত যাওয়া মাত্র এক ধরনের ভাল লাগার অনুভূতি শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে। সাবরিনার মনে হল ওর আসলে মানুষের স্পর্শ দরকার। সাদমান কই তুমি? সাবিত ভাইয়ের স্পর্শ ওর শরীরের গরমটা কে বাড়িয়ে দিচ্ছে। ওদের টেবিল ছিল একদম এক কোণায় অন্ধকারে। তাই ওদের চুপচাপ বেড়িয়ে যাওয়াটা কার চোখে পড়ল না তেমন।
Like Reply


মাহফুজের মেজাজ খারাপ। এই প্রোগ্রামে এসেছিল এই ভেবে যে সাবরিনার সময় পাওয়া যাবে যেভাবেই হোক। কোন ভাবেই হল না। তার উপর সাবিতের মত শুয়োরটার সাথে হেসে হেসে কথা বলছে শুধু ওকে এড়ানোর জন্য। মাহফুজের রাগ লাগে। সাবিতের বাচ্চার জন্য আরেকটু হলে রেপ হয়ে গিয়েছিল সাবরিনা আর সেই শুয়োরটা কে কিভাবে পাত্তা দিচ্ছে। মাহফুজ বুকের মাঝে একটু জেলাসি টের পায়। নির্বাচনের আগে বড় কর্পোরেট হাউজ গুলোর সাথে খাতির বাড়ায় রাজনৈতিক দলগুলো। অন্য সময় কর্পোরেট হাউজ গুলো দলগুলোর পিছনে ছুটে। এই সময়টা উলটো হয়। দলগুলো ফান্ডের জন্য ওদের পিছনে ছুটে। মাহফুজের পার্টি আর অনান্য বিরোধী দলের বড় বড় বেশ কয়েকজন নেতা এসেছেন এখানে। মাহফুজ ওর দলের নেতাদের প্রটোকল দিয়ে বসার জায়গায় নিয়ে গেল। অন্য সময় হলে পুরোটা সময় এইসব বড় নেতাদের কাছাকাছি থাকত। যাতে সহজে চোখে পড়া যায়। আজকে বরং দূরে এসে বসেছে অনুষ্ঠান শুরু হবার পর সাবরিনার সাথে যেন কথা বলার সুযোগ পায়। কয়কেবার উঠে গিয়ে দেখে এসেছে। কোণায় প্রায় অন্ধকারে সাবিত আর তার চামচাদের সাথে এক টেবিলে বসে আছে সাবরিনা। সাবরিনার সাথে কথা হল না, দলের নেতাদের সাথে নেটওয়ার্কিং হল না। একদম নষ্ট হল সন্ধা থেকে রাতটা। এখনি চলে যাবে নাকি আর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে প্রোগ্রাম শেষ হলে যাবে তাই ভাবে। অনুষ্ঠান শেষ হলে আবার নেতাদের সাথে দেখা করে সালাম দেওয়া যাবে। মাহফুজ ভাবে একটা সিগারেট খেতে হবে। ভিতরে সিগারেট খাবার ব্যবস্থা নেই। শেরাটন থেকে হেটে বের হলে বাইরে সিগারেট বিক্রি করে এমন কাউকে পাওয়া যাবে। বলরুম থেকে হেটে বের হয়। সুইমিং পুলটাকে হাতের ডানে রেখে এক্সিটের দিকে আগায়। সুইমিং পুলটা ক্রস করার সময় একটা ছেলে অন্ধকার থেকে বলে সালাম বস। কেমন আছেন? মাহফুজ থামের আড়ালে থাকা ছেলেটা কে দেখে নাবিল। প্রাইভেট ভার্সিটে পড়ে। স্মার্ট ছেলে। চোস্ত ইংলিশ বলে। ড্রাগের সাপ্লাই দেয় বড়লোকদের পার্টিতে। ও সাধারণত ছিচকে ড্রাগ সাপ্লাই দেয় না। গুলশান বনানীর বাড়িধারার ভিতর আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টি হয়, হাউজ পার্টি হয়। সেগুলোতে মেইনলি সাপ্লাই দেয় ড্রাগস। ইয়াবা থেকে এলএসডি সব ধরনের ড্রাগ পাওয়া যায় ওর কাছে। মাহফুজ ওকে চেনে ইভেন্ট ম্যানেজম্যান্টের ওর ব্যবস্থার কারণে। অনেক সময় ওরা যেসব অনুষ্ঠান আয়োজন করে সেখানে আয়োজকরা কিছু এমন চাইলে নাবিল কে ডাকে মাহফুজরা। নাবিল সেফ ছেলে। চুপচাপ গোপনে জিনিস দিয়ে যাবে। পুলিশের নজরদারিতে নেই। যেহেতু সব হাইএন্ডের লোকজন তার কাস্টমার। নাবিল কে এখানে দেখে তাই অবাক হয় না মাহফুজ। বলে কিরে নাবিল কাজে আসছিস। নাবিল বলে জ্বী বস। মাহফুজ বলে কেমন বিক্রি হল। নাবিল বলে বস একজন কে বেচছি। মাহফুজ বলে মাত্র একজনের জন্য এত বড় পার্টিতে আসছিস। নাবিল বলে বস এখানে আসার কথা ছিল না আজকে আমার। এক পুরাতন কাস্টমার ফোন দিয়ে খুব অনুরোধ করল। এক্সট্রা পনের হাজার টাকা দিবে বলল। মাহফুজ বলল বাবা বিশাল কাস্টমার দেখি। খালি টিপস দিল পনের হাজার টাকা। তা কি এমন নিল। নাবিল ফিস ফিস করে বলে বস রুফি। রুফি নামটা পরিচিত লাগল মাহফুজের তবে ধরতে পারল না। জিজ্ঞেস করল এইটা কোন জিনিস আবার।  নতুন আসছে নাকি মার্কেটে। নাবিল বলে না বস, এইটা আগে থেকেই ছিল। বাংলাদেশে খুব একটা পাবেন না। আসলে রুফি হল এক্সটাসি ড্রাগ। সেক্স বর্ধক। তবে এইটা খালি সেক্সের তাড়না বাড়লেও অনেক সময় স্মৃতি থাকে না ঐ সময়টার আর। মাহফুজের মনে পড়ল এইটার কথা, আগেও শুনছে ডেট রেপ ড্রাগ। বিদেশে বদমাশরা মেয়েদের ড্রিংকের সাথে মিশিয়ে দেয়। এরপর বাসায় নিয়ে যায়। পরে সকালে উঠে মেয়ে ঠিক করে মনে করতে পারে না। ফলে পুলিশে কমপ্লেন করতে পারে না ঠিক করে। মাহফুজের মনটা খচখচ করে উঠল। সাবরিনার অফিসে একবার একটা গুজব শুনছিল। তাই মনটা আর খচখচ করে।



বলল কি নাম যার কাছে দিছিস? নাবিল বলে বস নাম জিজ্ঞেস কইরেন না। জানেন তো আমি নাম বলব না, কাস্টমারের সেফটির ব্যাপার আছে। মাহফুজ মনে মনে রেগে যায় রেপ ড্রাগ বিক্রি করতেছে আবার প্রাইভেসি চোদায় শালা। মাহফুজ বলে আমি কি পুলিশের লোক নাকি। আর আমার ব্যবসায় ভিতরের খবর খুব দরকারি। কি নাম লোকটার। নাবিল আমতা আমতা করে। মাহফুজের কোম্পানি ওরে অনেক গুলো ব্যবসা দেয় মাসে। তার উপর মাহফুজ একবার ওরে পুলিশের ঝামেলা থেকে বাচাইছে। মাহফুজ বুঝে ওর আমতা আমতা করার কারণ। নিজে থেকে নাম বলবে না নাবিল। তাই মাহফুজ বলে সাবিত নাম ওর? নাবিল বলে বস আসলেই নাম জানি না। নাম্বারটা সেভ করা রিচ কিড নামে। মাহফুজ এইবার ফোনে ফেসবুক এপে ঢুকে। সাবরিনার অফিসের বেশ কয়েকজন ওর ফেসবুকে আছে। তাদের একজনের প্রোফাইলে ঢুকে কয়েকদিন আগে আপলোড করা একটা গ্রুপ ফটো বের করে। সেখানে সাবিত আছে। মাহফুজ ছবিটা দেখিয়ে বলে এইখানে আছে লোকটা। নাবিল উত্তর দেয় না তবে ওর চোখে বিস্ময় দেখে মাহফুজ শিওর হয় ওর সন্দেহের ব্যাপারে। ওর মনে কু ডাক দেয়। মাহফুজ ছবিতে আংগুল দিয়ে ইংগিত দিয়ে বল এই লোকটা? মাহফুজের কড়া দৃষ্টিতে এইবার ভয় পায়  নাবিল। মুখে বলে না তবে মাথা নাড়ায়। মাহফুজ এইবার বলে শিট। এই বলে দ্রুত উলটা ঘুরে বলরুমের দিকে রওনা দেয়। নাবিলের উপর রাগ হয়। অন্য যা কিছু বিক্রি করুক এই জিনিস কিভাবে বিক্রি করল ছেলেটা। এরপর থেকে ওর ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির অনুষ্ঠানের আশেপাশে ঘেষতে দেওয়া যাবে না ছেলেটাকে। রুফির নাম আগেও শুনেছে তবে হঠাত করে চিনতে পারছিল না। এটা খেলে সেক্স এর ইচ্ছা বেড়ে যাবে বহুগুণ। যে মেয়েকে শতবার প্রস্তাব দিয়েও হ্যা বলানো যায় নি তাকে কিছু না বললেও সে সেক্সে রাজি হয়ে যাবে। সাবিতের গল্প শুনেছে মাহফুজ এই অফিসের নানা কোণায়। সাবিত একজন উম্যানাইজার। খাটি বাংলায় মাগীবাজ। মাহফুজ নিজেও প্রচুর মেয়েদের সাথে নানা রকম অভিজ্ঞতা হয়েছে। তবে খাটি মাগীবাজদের সাথে ওর পার্থক্য হল। খাটি মাগীবাজরা খালি মেয়ে ছাড়া আর লাগানোর চিন্তা ছাড়া আর কিছু করতে পারে না। অনুনয়, বিনয়, প্রলোভন, ব্লাকমেইল থেকে জোর জবরদস্তি যখন যা দরকার তখন তা কাজে লাগায় মেয়েদের খাটে তোলার জন্য এই মাগীবাজরা। মাহফুজ হলরুমে ঢুকে। অনুষ্ঠান শেষ পর্যায়ে। মাহফুজ সাবরিনার টেবিলটা খুজে বের করে। দুইটা সিট খালি। মাহফুজ কে দেখে একজন পরিচিত আছে এই টেবিলে। তাকে জিজ্ঞেস করে সাবরিনা ম্যাডাম কি চলে গেছে? সে বলে বলতে পারছি না। একটু খারাপ লাগছে বলে বাইরে গেল। মাহফুজ বলে সাবিত ভাই কই? লোকটা উত্তর দিল, সাবিত স্যার তো সাবরিনা কে হেল্প করার জন্য বাইরে গেল। হয়ত উবার ডেকে দিবে। মাহফুজ বুঝে ওর সন্দেহ ঠিক।


মাহফুজ দ্রুত ভাবতে থাকে কি করা যায়। কোথায় পাওয়া যায় ওদের। সাবরিনার ফোনে ফোন দেয়। কল বাজতে বাজতে বন্ধ হয়ে গেল। মাহফুজ এইবার ভয় পেয়ে যায়। এখান থেকে বের করে কই নিয়ে যেতে পারে সাবরিনা কে। হল রুম থেকে বের হয়ে আসে। আবার বেশি লোককে জিজ্ঞেস করতে পারছে না কারণ তাহলে জানাজানি হলে পরে অন্য ঝামেলা হতে পারে। পুলিশে কাউকে জিজ্ঞেস করা যায়। তবে পুলিশে ফোন করে পরিচিত কাউকে দিয়ে এত রাতে কাজ করাতে করাতে অনেক দেরি হয়ে যাবে। পুলিশ খুব এক্টিভলি কাজ করলেও কয়েক ঘন্টা লাগবে ফোন ট্রেস করে লোকেশন বের করতে। আর কি করতে পারে। মাহফুজের রীতিমত বুক কাপছে। ওর জন্য এমন হল। ওকে এড়ানোর জন্য সাবিতের সাথে বেশি খাতির দেখাতে গিয়ে বিপদে পড়ল সবারিনা। এইসব ভাবতে ভবাতে হঠাত ওর মনে পড়ল নরমালি এইসব কর্পোরেট প্রোগ্রামে যে হোটেলে হয় সেখানে কিছু রুম আগে থেকে বুক রাখে কর্পোরেট হাউজ। যদি কেউ বেশি মাতাল হয়ে যায় তাহলে এখানেই যাতে স্টে করতে পারে। ওর নিজের ইভেন্ট ম্যানেজম্যান্ট কোম্পানি এমন কিছু প্রোগ্রাম সামলিয়েছে এবং সেখানে ওরা হাউজের হয়ে হোটেলে রুম বুক করে রেখে দিয়েছে। মাহফুজ চিন্তা করে। সাবিত আয়োজক কমিটিতে আছে। ফলে চাইলেই এই রকম একটা রুম সে আজকে রাতে নিজের জন্য নিয়ে নিতে পারে। মাহফুজ যত ভাবে তত নিশ্চিত হয় সাবিত, সাবরিনা কে নিলে এমন একটা রুমেই নিবে আপাতত। কারণ এই সময় খুব দূরে যাবার কথা ভাববে না সাবিত। তবে এত বড় হোটেলে কোন রুমে আছে সাবরিনা সাবিত? একটাই উপায় আছে বের করার।


টেবিলে বসে অনুষ্ঠান দেখার সময় হঠাত করে সাবিতের মাথায় প্ল্যানটা আসে। এত সোজা প্ল্যানটা আর আগে কেন মাথায় আসে নি সেটাই ভাবে। সংগে সংগে নাবিলের ফোনে মেসেজ পাঠায়। কি লাগবে স্পেসিফিক বলে দেয়। নাবিল এর আগেও তিন চারবার ওকে সাপ্লাই দিয়েছে এই জিনিস। সাবিত এই জিনিস প্রথম জানতে পারে অস্ট্রেলিয়াতে পড়াশুনা করার সময়। বারে মেয়েদের সাথে ফ্লার্ট করে ফ্রি ড্রিংক অফার করার সময় একটু করে এক্সটেসি মিশিয়ে দিত। একদম লাজুক, কনজারভেটিভ মেয়েও এর পর সেক্সুয়াল ডায়নামো হয়ে যায় কয়েক ঘন্টার জন্য। সাবিত এটাকে রেপ হিসেবে দেখে না। সাবিতের নিজের মনে যুক্তি হচ্ছে, মেয়েদের ভিতর সব সময় একটা স্লাট থাকে। সে খালি একটা ড্রাগের সাহায্যে সেই স্লাটটাকে বের করে আনে। দেশে এসে এই জিনিস পাচ্ছিল না কোথাও। লোকজন মাঝে মাঝে ইয়াবে কে সেক্স ড্রাগ হিসেবে ইউজ করে তবে ইয়াবা আর ও যে জিনিস খুজছে তার মধ্যে পার্থক্য আছে। এই সময় এক পার্টিতে নাবিল নামের এই ছেলের সাথে দেখা হয়। নাবিল ভাল একটা প্রাইভেট ভার্সিটির ছাত্র। রাতের বেলা বিভিন্ন আন্ডারগ্রাউন্ড পার্টিতে ড্রাগ সাপ্লাই দেয়। নাবিল তার ড্রাগ সাপ্লাই বিজনেস খুব একটা বড় না। নির্দিষ্ট কিছু লোকের কাছে ঘুরেফিরে বিক্রি করে। নাবিলের ভাষ্যমতে এতে রিস্ক কম। ট্রাস্টেড কাস্টমার থাকলে পুলিশের ফ্যাকড়া কম। এই জন্য নাবিল কে বিশ্বাস করে বেশি সাবিত। দরকার হলে মাঝে মাঝে ওর কাছ থেকে নানা রকম জিনিস নেয়। আজকে নাবিল কে মেসেজ পাঠানোর অল্প কিছুক্ষণ পর এন্সার আসে বস একটু সময় লাগবে। তিন চার ঘন্টা পরে সাপ্লাই দিতে পারব। সাবিত আবার মেসেজ পাঠায় এক ঘন্টার মধ্যে আনতে পারলে পনের  হাজার টাকা টিপস দিবে। নাবিল টাকার পাগল। এক মিনিটের মধ্যে উত্তর আসে ৪০ মিনিট লাগবে বস। নরমালি এত টাকা ক্যাশ থাকে না সাবিতের কাছে। তবে আজকে প্রোগ্রামের বিভিন্ন কাজে বেশ অনেক টাকা ক্যাশ ছিল। সাবিত আসতেই তাই গ্লাস রিফিল করার কথা বলে উঠল। সাথে সাবরিনার গ্লাস নিল। নাবিল বলল বস কি ব্যাপার এত তাড়া কেন। সাবিত বলে আরে কিছু জিনিস সময়ের টা সময়ে করতে হয়। অনেকদিন পর একটা চান্স আসছে। ছাড়া যাবে না। নাবিলের কাছ থেকে জিনিসটা নিল। দুইটা ট্যাবলেট। একবারে একটাই যথেষ্ট। দুইটা নিল কারণ কোনভাবে যদি সকাল পর্যন্ত রাখা যায় সাবরিনা কে তাহলে আরেকটা খাইয়ে দিবে। সাবিতের নিজের উপর এত আস্থা যে ওর মনে হয় কোন মেয়ে একবার ওর স্পর্শ পেলে সারাজীবন ওর কাছে ঘুরেফিরে আসবে। ঘোরতর নার্সিসিস্ট। ট্যাবলেট পাওয়ার পরের কাজটা আপেক্ষিক ভাবে ইজি। কারণ এই রুফি গুলো স্বাদ আর গন্ধহীন। ফলে কোন ড্রিংকের সাথে মিশিয়ে দিলে টের পাবে না কেউ। এর পর দশ থেকে পনের মিনিট পর কাজ শুরু করে। ফুল এফেক্ট আসতে ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট সময় লাগবে। একটা কোকের গ্লাস নেয়। কেউ খেয়াল করছে কিনা সেটা দেখে তারপর একটা ট্যাবলেট ছেড়ে দেয় গ্লাসে। অপেক্ষা করে কয়েক মিনিট। কোকের গ্লাসে বুদবুদ উঠে বুঝিয়ে দেয় ঔষুধ মিশছে ভাল করে। সাবিতের এক্সাইটমেন্ট লুকিয়ে রাখে। সাবরিনা কে অনেকদিন পর বাগে পাওয়া গেছে। এমনিতে কোল্ড বিচ বলে সবাই। আজকে এইটা খাওয়ার পর বুঝা যাবে কতটা কোল্ড আর কতটা হট এই বিচ। সাবিত কোকের বোতলটা নিয়ে এসে সাবরিনার হাতে দেয়। ওর হাতে হুইস্কির গ্লাস। তবে চুমুক দেবার ভান করলেও আর চুমুক দেয় না। মাতাল হওয়া যাবে না। অনুষ্ঠান দেখতে দেখতে গ্লাসে চুমুক দেয় সাবরিনা। সাবিত ঘড়ি দেখে। সাবরিনা অনুষ্ঠান দেখে, মাঝে মোবাইল চেক করে। দশ মিনিট চলে গেছে, সাবরিনা কে দেখে কিছু বুঝা যাচ্ছে না। সাবিতের মনে হয় দুইটা দিয়ে দেওয়া উচিত ছিল কিনা। তবে একবার দুইটা দিয়েছিল এক মেয়ের ড্রিংকে। মেয়ে এরপর একদিন উঠতে পারে নি। এইটা হলে বেশি ঝামেলা  হয়ে যাবে। সাবিত ওয়েট করে। পনের মিনিট চলে গেছে। সাবরিনা কপালের ঘাম ফুটে উঠছে। সাবরিনা বলে উঠে বেশ  গরম লাগছে। হোটেল শেরাটনের বলরুমের এসির প্রচন্ড ঠান্ডায় ঘামছে সাবরিনা। হেসে উঠে সাবিত। ঔষুধ কাজ শুরু করেছে। এখন শুধু অপেক্ষা।
Like Reply
মাহফুজ রুমের খোজ কিভাবে বের করবে বুঝতে পারে না। কোন উপায় কি আছে? একটাই উপায় আছে অনুষ্ঠানের আয়োজনের দ্বায়িত্বে যারা আছে তাদের কে ধরা। কিন্তু তাহলে সব খুলে বলতে হবে। তার উপর সাবিত যথেষ্ট প্রভাবশালী। ফলে ওর কথায় কোন ভ্যালু কেউ নাও দিতে পারে। কিন্তু একটা স্ক্যান্ডাল তৈরি হয়ে যাবে। সাবরিনা কে ফোন দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ফোন বাজছে তবে ধরছে না। মাহফুজ উদ্বিগ্ন হয় তবে উপায় খুজে পাচ্ছে না। আরেকটা উপায় হল হোটেল ম্যানেজারের সাহায্য নেওয়া। এইসব বড় হোটেলের সাধারণত শিফট ম্যানেজার থাকে। সকালের শিফট, বিকালের শিফট আর রাতের শিফট। এদের সবার বস থাকে মেইন ম্যানেজার। তবে রাতে এই সময়, রাত সাড়ে দশটার পর রাতের শিফট ম্যানেজার থাকার কথা। মাহফুজের অভিজ্ঞতা আছে এদের সাথে কাজ করার। শেরাটনের নাইট শিফটের ম্যানেজার বাবলু ভাই। মধ্যবয়সী ভদ্রলোক। অমায়িক খুব তবে খুব প্রফেশনাল। তার কাছ থেকে রুমের খবর বের করা যাবে না সহজে। এইসব বড় হোটেলের এইসব পোস্টে থাকা লোকেরা খুব প্রফেশনাল। সহজে ক্লায়েন্ট ইনফরমেশন দিবে না। আর পুলিশ বা আর বড় কাউকে দিয়ে প্রেসার দেয়াতে দেয়াতে অনেক দেরি হয়ে যাবে। মাহফুজের বুদ্ধি কাজ করছে না এই মূহুর্তে। অসহায় মনে হচ্ছে নিজেকে। সাবরিনা ওকে শাস্তি দিতে গিয়ে নিজেই শাস্তি পাচ্ছে।


সাবরিনার মনে হচ্ছে দৃষ্টি ঘোলাটে হয়ে আসছে। ওয়াশরুমে যাবার জন্য ও উঠে দাড়াল। ওর পাশে কেন সাবিত ভাই উঠে দাড়াল। কি আশ্চার্য। লোকটা কি মেয়েদের ওয়াশরুমে যাবে? ভেবে মনে মনে হাসল। ওর পা কি টলছে? ড্রিংক তো করে নি ও? সাবিত ভাই ওর হাত ধরে ওকে স্টেডি করে। সাবিত ভাই ওর হাত ধরছে কেন? মানা করতে চাইল কিন্তু পারছে না। এত গরম লাগছে কেন। এসি কি ভাল করে কাজ করছে না। গায়ের শাড়িটা খুলে ফেলতে মন চাইছে। বাস্টার্ড মাহফুজ। সাদমান কই তুমি? সাবরিনা খেয়াল করে ওর মাথার ভিতরে মিলিয়ন মিলিয়ন চিন্তা ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রতি সেকেন্ডে। এত দ্রুত কিভাবে চিন্তা করছে ও। মনে হচ্ছে নিজের মাথার ভিতরটা নিজেই দেখতে পাচ্ছে। সাবিত ভাই এখনো ওর হাত ধরে আছে। টিভির মত সব দেখছে। স্লো মোশনে। মাথার ভিতর কোটি কোটি চিন্তা একসাথে দৌড়াচ্ছে। বলরুম থেকে বের হয়ে হাতের ডানে ওয়াশরুম। সাবিত ভাই বামে নিচ্ছে কেন। সাবরিনা জিজ্ঞেস করল সাবিত ভাই আমরা কই যাচ্ছি? সাবিত ভাই উত্তর দিল তোমার শরীরটা খারাপ একটু তাই বিশ্রাম নেওয়া দরকার। সাবরিনা ভাবে আমি কি অসুস্থ? সাবিত ভাই জানল কিভাবে? আমি তো জানি না। শরীরটা এমন গরম লাগছে কেন। গা থেকে সব কাপড় খুলে ফেলতে ইচ্ছা করছে। হোটেলে এখন সব কাপড় খুলে ফেললে কি হবে? মনে মনে হাসে ও। সারাজীবন এত ভাল মেয়ে থাকল। একবার খালি একটু পা ফসকাল আর তখন কিনা সিনথিয়ার প্রেমিকের সাথে। একেই বুঝি বলে ফাটা কপাল। খারাপ মেয়ে হওয়া ওর কাজ না। ব্যাড গার্ল হওয়াটা এত সোজা না। এটা সিনথিয়ার জন্য থাক। লিফটে ঢুকছি কেন আমরা? সাবিত আবার বলে আমরা বিশ্রাম নিব। সাবিত ভাই কি অসুস্থ? উনারো কি আমার মত গরম লাগছে? দুইজন একসাথে কাপড় খুলে ফেললে কি হবে? হাহাহাহা। সাবিত ভাই নিয়ে অনেক গল্প শোনা যায়। নিয়মিত নাকি এস্কর্ট সার্ভিসের হেল্প নেয়। একটা বিয়ে করেছে। বাচ্চাও আছে কিন্তু অনেক প্রেম আছে সাইডে। লোকটা কি অসুস্থ? এত এলোমেলো কি ভাবছে ও। সাদমান কই? এত গরম লাগছে। সাদমান কই তুমি? তোমাকে জড়িয়ে ধরব। এমন ভাবে জড়িয়ে ধরব যাতে মাহফুজ হিংসায় জ্বলে যায়। আবার মাহফুজ কে ভাবছে কেন? বাস্টার্ড মাহফুজ। লিফট কোথায় যাচ্ছে। ওর দুই পায়ের মাঝে এত গরম লাগছে কেন? সাদমান কই তুমি? বাস্টার্ড মাহফুজটা কে দেখিয়ে দিব আজকে তুমি কত আদর করতে জান। সাবিত ভাই সাথে কেন? সাবিত ভাই কি দেখবে সাদমানের আদর? কি হচ্ছে সব। লিফট খুলে কই হাটছি আমরা। আমার হাত ধরে এত জোরে টানছে কেন সাবিত ভাই? এইটা কার রুম। কি কার্ড দিয়ে রুমে সোয়াপ করে ভিতরে ঢুকছে সাবিত ভাই। সাবিত ওকে ডাকছে। আজকে সাবিত ভাই কে মানা করতে পারছে না কেন। সব এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে কেন।


সাবরিনা কে রুমে ঢুকিয়ে দ্রুত দরজা লাগায় সাবিত। হাফছেড়ে বাচে সাবিত। এরপর কি হবে জানে ও। সাবরিনা অলরেডি ঔষুধের প্রভাবে আছে। বুঝা যাচ্ছে। নাইলে এই রুমে ওকে ঢুকানো যেত না। বারবার বলছে গরম, প্রচন্ড গরম। সাবিত একটা ইয়াবা বের করে পকেট থেকে। নাবিল ইয়াবাও দিয়েছে আজকে ওকে। আজ সারারাত ওকে এনার্জিটিক থাকতে হবে। ইয়াবাই একমাত্র উপায় এরজন্য। সাবরিনা বিছানায় বসে আছে জম্বির মত। থাকুক বসে। সাবিত বাথরুমে ঢুকে ফ্রেশ হয়। আজকে একটা দীর্ঘ রাত হবে। তার প্রস্তুতি নেয়। গোসল করে দীর্ঘ সময় ধরে। সেক্সের আগে গোসল করলে এনার্জিটিক লাগে ওর। তার উপর আজকে সারাদিন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতির জন্য অনেক দৌড়াদৌড়ি করতে হয়েছে। বাথরুমে থাকা হোটেলের বাথরোব টা পড়ে বের হয়। সাবরিনা এখনো আগের পজিশনে বসে আছে। জম্বির মত। চোখ গুলো আধবোজা। সাবিত সাবরিনার পাশে বসে। সাবরিনা, সাবরিনা? হু। সাবরিনা ঘোরের মাঝে আছে। সাবরিনা আমি কে? সাবরিনার মাথায় তখন লক্ষ্য চিন্তা। সাবরিনা উত্তর দেয় সাদমান। সাবিত খুশি হয়। সাবরিনা ঘোরে আছে, এই ঘোরে সামনে সাবিত না সাদমান আছে। আর ভাল। সাবরিনা ভাববে নিজের স্বামীর সাথে করছে। সাবিত সাবরিনার গালে একটা চুমু খায়। সবারিনার মনে হয় সারা শরীরে আগুন জ্বলছে। চুমু খাও সাদমান। সব আগুন নিভাও। মাথার ভিতর বলছে ও তবে মুখ দিয়ে শব্দ বের হয় না। সাবিত শাড়ির আচলটা ফেলে দেয়। ব্লাউজে আবদ্ধ সুন্দর দুধ গুলো ফুলে উঠেছে। সাবিত বলে সাবরিনা দাড়াও তো। সাবরিনা দাঁড়িয়ে যায়। এখন না করার ক্ষমতা ওর নেই। সাবিত শরীর থেকে শাড়িটা খুলে ফেলে। মুগ্ধ চোখে দেখতে থাকে সাবরিনা কে। আজকে সারা রাত আছে ওর কাছে। ধীরে ধীরে করবে ও। ব্যস্ত না তেমন। হাত বুলায় পিঠে, পেটে। ঘাড়ের কাছে চুমু খায়। সাবরিনার শরীরে শিহরণ বয়ে যায়। চুমু খাও সাদমান। চুমুতে ভরে দাও আমায়। সব পাপ মুছে দাও। বাস্টার্ডটার সব স্মৃতি মুছে দাও মন থেকে। সাবিত পেট থেকে হাত উপরে তুলে। ব্লাউজের উপর দিইয়ে হাত দেয় বুকে। কি নরম। উম্ম। সাবরিনা তোমার সব গর্ব আজকে ধবংস করব। নক নক নক। দরজায় কার শব্দ। কে এল এই সময়? তাড়াতাড়ি রুমের দরজায় কি হোলে তাকায়। হোটেলের লোক। জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে? রুম সার্ভিস, কমপ্লিমেন্টারি। অনুষ্ঠানে ভাল করে খেতে পারে নি। তাই ফ্রি খাবার পেলে খারাপ না। দরজা হালকা খুলতেই ধাক্কা দিয়ে ঢুকে যায় একজন। সাবিত হঠাত চমকে যায়। হোটেলের একজন রুম সার্ভিসের লোক আর তার পাশে অফিসে যে ছেলেটা নিয়মিত আসে সে। কি জানি নাম? এই ছেলেটাই তো নাকি সোয়ারিঘাটের সময় হেল্প করছিল নুসাইবা কে। ছেলেটার হাতে মোবাইল ধরা, বুঝা যাচ্ছে রেকর্ডিং করছে। ভয় পেয়ে যায় সাবিত। এই প্রথম এমন কিছু করতে গিয়ে ধরা খেল। সারজীবনের সব ভয় একসাথে চলে আসল মনে। তোতলাতে থাকল, কি কি কি করছ তুমি এই রুমে। রুম সার্ভিসের ছেলেটার দিকে তাকিয়ে ঝাড়ি মারে এই লোকটা কে নিয়ে কেকেকেন এসেএএএ এছ। কথা শেষ হবার আগে গালে প্রচন্ড জোরে একটা চড় পড়ে। সারাজীবন বাবা মায়ের প্রশ্রয়ে বেড়ে উঠা সাবিতের গালে এত জোড়ে আর কখনো কেউ থাপ্পড় মারে নি। মাহফুজ হাটু গেড়ে বসে সাবরিনার পাশে। শরীরে ব্লাউজ আর পেটিকোট শুধু। শাড়ি মাটিতে পড়ে আছে। মাহফুজ ঝাকি দেয়। সাবরিনার চোখ মুখ ঘোর ঘোর। নেশায় আছে। মাহফুজ ঝাকি দেয়। চোখ মেলে তাকায় সাবরিনা। সাদমান তুমি মাহফুজের মত হয়ে গেছ কেন? মাহফুজ বুঝে ঘোরে এখন সাদমান ভাবছে ওকে। মাহফুজ বলে সাবরিনা আমি। সাবরিনা অনেক কষ্টে চোখ মেলে তাকায়, বলে মাহফুজ এটাকি সত্যি তুমি?
Like Reply
চার মাস দুই দিন পর নতুন আপডেট নিয়ে আসলাম। এর মাঝে অনেক কিছু ঘটে গেছে আমাদের জীবনে। এপাড় বাংলা ঐপাড় বাংলা দুইখানেই অনেক পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে রাজনৈতিক ভাবে। সাধারণ মানুষ হিসেবে আমাদের জীবন এর বাইরে না। আর তার উপর ছিল বন্যা। সব মিলিয়ে অনেকদিন লেখা লেখি হয় নি। তাই বড় আপডেট দেবার চেষ্টা করলাম। ২২,৪৪৬ শব্দের আপডেট এটি। পড়ুন। গল্পের নতুন স্তরে ধীরে ধীরে ঢুকছি আমরা। আর কেমন লাগল বরাবরের মত মন্তব্যে জানাবেন দয়া করে। আপনাদের মন্তব্য গুলো সবচেয়ে অনুপ্রেরণা জাগায়। ভাল মন্দ যাই মনে আসুক বলুন। আপনাদের কথা শুনতে আগ্রহী।

সেই সাথে লাইক রেপু দিতে ভুলবেন না। আমি যেমন লেখা নিয়ে ফেরত এসেছি লাইক রেপু দিয়ে আপনারাও ফেরত আসুন। এত দিন ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষার জন্য ধন্যবাদ সবাই কে।
Like Reply
অবশেষে কাংখিত আপডেট!
এখন পড়া শুরু করবো।
ধন্যবাদ কাদের ভাই।
[+] 1 user Likes bluesky2021's post
Like Reply
অনেক ভালো হয়েছে
[+] 3 users Like Rahat hasan's post
Like Reply
Just awesome vhai.u r a genius. Love ur written.
[+] 3 users Like w3rajib's post
Like Reply
(05-10-2024, 02:25 AM)কাদের Wrote: চার মাস দুই দিন পর নতুন আপডেট নিয়ে আসলাম। এরগত অনেক কিছু হয়েছে আমাদের অনেক সময়। এপাড় বাংলাপাড় বাংলা দুই জায়গায় অনেক পরিবর্তনের হাওয়া একইভাবে একইভাবে। সাধারণ মানুষ হিসাবে আমাদের জীবন এর ব্যবহার. আর তার উপর ছিল বন্যা। অনেক অনেক দিন লেখা লিখি না। তাই বড় আপডেট দেবার চেষ্টা। ২২,৪৪৬ শব্দের আপডেট এটি। পড়ুন। নতুনের উপরে লোকের গল্প লিখছি আমরা। আর আপনার মতামতের মতামত জানাবেন। মন্তব্যগুলো সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা জাগায়। ভাল মন্দ মনে মনে আসুক বলুন। তোমার কথা শুনতে।

সেই সাথে লাইক রেপু দিতে না। আমি যেমন উল্লেখ নিয়ে ফেরত পাঠালাম এত দিন ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

সুন্দর আপডেট দাদা। পরের আপডেটের জন্য আসাকরি আর এতো সময় অপেক্ষা করতে হবেনা।
[+] 5 users Like Damphu-77's post
Like Reply
অসাধারণ হয়েছে ভাই,
[+] 2 users Like Rahat hasan's post
Like Reply
দুর্দান্ত।
তবে বরাবরের মতো জোহরা কিছুই
পেল না
[+] 3 users Like Helow's post
Like Reply
অনেক বড় আপডেট, আর বরাবর এর মতই অসাধারণ। এক সাথে অনেক দিক এক্সপ্লোর করছেন, কিন্তু কাহিনী মূলত একটা পরিণতির দিকে আগাচ্ছে। কিন্তু একই সাথে যেটা হয়, এত বড় আপডেট না হোক আর অর্ধেক হয় সেটা আবার কত দিন পরে যে পাই...
[+] 2 users Like Pajaro.Libre's post
Like Reply
অসাধারন। আপডেটেড টা আবার পড়তে হবে
[+] 4 users Like Pothikshai's post
Like Reply
অনেক অপেক্ষা পর আপনার আপডেট পেলাম।
অনেক অনেক ধন্যবাদ দাদা।
আশা করি এবার নিয়মিত আপডেট পাবো।
love u??
[+] 2 users Like Shorifa Alisha's post
Like Reply
অসাধারণ ভাই বাট আবারো কি আপডেটের জন্য লম্বা বিরতি থাকবে নাকি।
[+] 5 users Like Shuhasini22's post
Like Reply
Kader vai, please sabrina ke arekta bar sex koran mahfuj er sathe.. please please please
[+] 1 user Likes fuckerboy 1992's post
Like Reply
আপনি আপনার গল্পের আপন মহীমায় লিখে যাবেনই কারণ আপনি অদম্য একজন লেখক । এই কথা জন্য বললাম গল্পে ডেটেইলিং বেশি করে লিখেছেন কারণ আপনি অনন্য । এত কষ্ট করে, এত সময় নিয়ে লিখছেন মাঝে মাঝে মনে হয় আপনি শুধু লেখকই না সাইকোলজিস্ট ও বটে । বাংলা চটি উপন্যাসে এই গল্প ইতিহাস হয়ে থাকবে যারা এই গল্প মন দিয়ে পুরোটা পড়বে তারাই আপনার লেখার ধার বুঝতে পারবে।
[+] 3 users Like Monika Rani Monika's post
Like Reply
বরাবরের মতোই অসাধারন। অনেকদিন পরে আপডেট পেলাম, তবুও আপডেটের কোয়ালিটি আর লেন্থ দেখে এতদিনের সকল অভিযোগ শেষ। আশা করি খুব দ্রুত আবার আপডেট পাবো। এমন একটা জায়াগায় শেষ হয়েছে যে পরবর্তী পার্ট না পড়া অবধি শান্তি পাবো না।
[+] 3 users Like farhn's post
Like Reply
অসাধারণ, অপূর্ব, পড়ে খুব ভালো লাগলো। বহুদিন পরে আপডেট পাওয়া গেল। এর পরের আপডেট মনে হয় এত দেরি করে হবেনা। অপেক্ষায় রইলাম।
[+] 3 users Like pradip lahiri's post
Like Reply




Users browsing this thread: bluesky2021, 73 Guest(s)