29-07-2024, 11:53 PM
অসাধারণ দাদা
Adultery আগুণের পরশমণি;কামদেব
|
02-08-2024, 01:25 AM
কি সুন্দর লিখেছেন স্যার। আরও অনেক দিন লিখুন, ভালো থাকবেন
02-08-2024, 08:21 PM
দাদা কেমন আছেন??? আশা করি ভালো আছেন।
দাদা আপডেট আসবে নাকি? অপেক্ষায় রইলাম।
02-08-2024, 09:29 PM
03-08-2024, 03:17 PM
03-08-2024, 04:00 PM
সপ্তবিংশতি পরিচ্ছেদ
সকালে দোকানে বসে আছে আরণ্যক।দেখতে দেখতে পুজো এসে গেল।অফিস কাছারি বন্ধ।সকালেই একে একে সবাই আসতে থাকে।পুজো এলে মনে করিয়ে দেয় একটা বছর পেরিয়ে গেল।এইভাবে বছরের পর বছর পেরিয়ে যাচ্ছে আরণ্যক যেখানে ছিল সেখানেই পড়ে আছে। ঝর্ণাদি বলছিল এভাবে হেলায় জীবনটাকে নষ্ট করিস না,রনো কিছু একটা কর।কিন্তু কি করবে আরণ্যক ভেবে পায়না।চাকরির জন্য দু-একবার আবেদন করেও ডাক পায়নি। কিরে কি ভাবছিস?পিকলু এসে জিজ্ঞেস করল। আরণ্যক মুখ তুলে হাসল বলল,সেরকম কিছুনা।ভাবছি এত উদ্যোগ আয়োজন সপ্তমী অষ্টমী নবমী তারপর বিজয়া দশমী এসে যাবে বিসর্জন ব্যাস সব শেষ। ইশারা ইঙ্গিত প্রেম চিঠি চালাচালি সিনেমা দেখা রেস্টোরেণ্টে খাওয়া ঘোরাঘুরি তারপর বিয়েতে এসে সব শেষ। কলেজে ওয়ান টু থ্রি করে শেষে মাধ্যমিক পরীক্ষা একটা পর্ব শেষ। আচ্ছা রনো সনাতন বলছিল তুই ওনার হাজব্যাণ্ডকে দেখেছিস--এইটা কি ব্যাপার বলতো? আমিও তাই ভাবছি।ফরেনার মহিলা বিবাহিত কিনা তাই জানিনা তার আবার হাজব্যাণ্ড।যত ফালতু কথা। মহিলার জন্ম নিয়ে অনেক নোংরা কথা বলছিল তারপরই আমি তোকে ডাকতে এলাম। কালাবাবু টাকা খেয়ে এসব করছিল।মান্তু বলল। টাকা তো খেয়েইছে ভোদার সঙ্গে ফিসফিস করে ওইসব বলছিল। রনোর উপর কালাবাবুর হেভি খার। ওর দুটো হাত আছে আমারও দুটো হাত।আমি ঐসব ভয় পাইনা। পিকলু অবাক হয়ে দেখে কালাবাবুর পিছনে পার্টি আছে ওতো রাজনীতির ধার ধারেনা,রনোটার হিম্মত আছে। মান্তু বলল কালাবাবু র কোমরে মেশিন থাকে--। মেশিন পিছনে ভরে দেব ফালতূ কথা রাখত। বিশূকে আসতে দেখে বলল,ঐতো বিশু এসে গেছে--। বিশু আসতে পিকলু বলল,তারপর খবর কি বল। বাড়ী পেয়ে গেছি গোলোক ধাম।বিবাহিতরা সস্ত্রীক নিমন্ত্রিত রনো শালা তো বিয়ে করল না। মান্তু বলল,চিনির কথা বল। ছাড়তো।মাঝে মাঝে মেসেজ করে ।সালা ন্যাড়া বেলতলায় একবারই যায়।বাদ দে সন্ধ্যেবেলা তো দোকান বন্ধ কি করবি? আজ প্যাণ্ডেলে আড্ডা হবে।পিকলু বলল। শুনলাম একুশের পল্লী এবার দারুণ করেছে,একবার দেখতে যাব। কলেজ ছুটি।অধ্যাপক সান্যাল এক্টু বেরিয়েছ।ফিজিও থেরাপিস্ট মেনকা সান্যালকে ম্যাসাজ করছে।দূরে দাঁড়িয়ে সহেলী দেখছে।পা-দুটো ধরে একবার ভাজ করচে আবার সোজা করে দিচ্ছে।বাক্সে কতরকম যন্ত্রপাতি সহেলী অবাক হয়ে লক্ষ্য করে।এমা হাতদুটো কাপড়ের নীচে ঢুকিয়ে কি করে।ম্যাডাম নিঃসাড়ে শুয়ে আছে।ঘণ্টা এইরকম ম্যসাজ করার পর পিঠে হাত দিয়ে ম্যাডামরে বসিয়ে দিল। তারপর টানতে টানতে খাটের কিনারে নিয়ে এল।সহেলী বুঝতে পারেনা কি করতিছে।কোমর ধরে মেঝে দাড়া করিয়ে দিল।সহেলী স্থির থাকতে পারেনা বলল,কি করতিছেন পড়ে যাবে তো? চুপ করো একদম কথা বলবে না।ফিজিও ধমক দিল। ম্যাডামের বগলের নীচে হাত দিয়ে আর একটা হাত নিজের কাধে ফিজিও বলল,হাটুন মিসেস সান্যাল চেষ্টা করুন। ম্যাডামের কষ্ট হচ্ছে এ্যা-হা-আ-আ শব্দ করে।- ফিজিও ম্যাডামকে ধরে হুইল চেয়ারে বসিয়ে দিল।পারে নাকি সহেলী ভাবে হাটতে বললি হবে। ফিজিও যন্ত্রপাতি গোছাতে গোছাতে জিজ্ঞেস করল,স্যার কোথায়? উনি বেইরেছেন।সহেলী বলল। ফিজিও চলে যেতে চেয়ার ঠেলে বারান্দায় নিয়ে গেল।দূর থেকে গান ভেসে আসছে।ম্যাডাম হুইল চেয়ারে হেলান দিয়ে বসে দেখলে মনে হবে যেন গান শুনছেন।একজন পক্ষাঘাত রোগী বোলে মনেই হচ্ছে না।ম্যাডাম কি আগের মত হাটাচলা করতে পারবে বিশ্বাস হয় না। ম্যাডাম আপনে বসেন আমি চা করে আনতিছি।সহেলী ঘরে ঢুকে সব লাইট জ্বেলে দিল।রান্না ঘরে চা করতে ঢুকলো।রাস্তায় ভীড় সব ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছে।ছ্যারকে বোলে একদিন ঠাকুর দেখতে যাবে। বেল বাজতে গিয়ে দরজা খুলে দিল।সত্যপ্রিয় সান্যাল ঢুকলেন।সহেলী দরজা বন্ধ করতে করতে বলল,জানেন ছ্যার আজকে ম্যাডামকে দাড়া করিয়েছেল। দাড় করিয়েছিল।তাহলে ইম্প্রুভ করছে সত্যপ্রিয় ভাবলেন। কিন্তু ছ্যার হাটতি পারে নাই। মেনকা কোথায়? বারান্দায় আমি চা করতিছি। সত্যপ্রিয় একটা মোড়া নিয়ে স্ত্রীর পাশে বসে মাথার চুলে হাত বোলাতে থাকেন।মেনকা স্বামীর হাতের স্পর্শ পেয়ে হাসলেন। সস্ত্যপ্রিয় বললেন,তুমি হাটতে পারোনি? হাআ-উউ আআউ।কিছু বলতে চেষ্টা করেন মেনকা। কবে যে আগের মত কথা বলবে।একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল।রুমাল বের করে চোখ মুছলেন। সকাল থেকে শুয়ে বসে কেটেছে।একটা বই নিয়ে অকাল বোধন ব্যাপারটা বুঝতে চেষ্টা করে ইলিনা।দেবী পূজার স্বাভাবিক সময় বসন্ত কাল।রাবণ বধের জন্য রামচন্দ্র শরৎ কালে দেবী আরাধনা করেছিলেন।এইজন্য একে অকাল বোধন বলে।রাম সীতার কাহিনী আগে পড়েছে।অবাঙালীদের মধ্যে রাম অত্যন্ত জনপ্রিয় রামকে বীর যোদ্ধা বলা যায় না।ভদ্রলোক পত্নীর উপর অনেক জুলুম করেছিলেন।স্বামীর ব্যবহারে অতিষ্ঠ হয়ে সীতা পাতালে প্রবেশ করেছিলেন। সন্ধ্যে হয়ে গেছে ইলিনা ভাবে একবার বেরোবে কিনা।সেদিনের গুণ্ডাগুলোর কথা মনে পড়ল।এর পিছনে নিশীথ আছে তাতে সন্দেহ নেই।অবশ্য গুণ্ডাদের ভয় করলে ওরা পেয়ে বসবে।ঐ ছেলেটা বেশ সাহসী হিরো টাইপ দেখতে।রানো না কি নাম বাজার করতে গিয়ে আগেও দেখেছে বইয়ের দোকানে বসে বই পড়ে।লেখাপড়া জানে মনে হয়।রাস্তাঘাট আলোয় আলোকময়।লাউড স্পীকারে গান ভেসে আসছে। ইলিনা ঠিক করল চা খেয়ে কাছেপিঠে ঠাকুর দেখতে যাবে।ঘরে বসে হাপিয়ে উঠেছে। আরণ্যক রেডি হয়ে বেরোতে যাবে সন্তোষ মাইতি বললেন,কোথায় যাচ্ছিস? যাই একটু প্যাণ্ডেলে গিয়ে বসি।ওখানে সবাই থাকবে। তোকে একটা কথা বলি রনো। আবার কি কথা।রনো দাড়িয়ে যায়। সব ব্যাপারে তোর মাথা গলাবার দরকার কি? আরণ্যক বুঝতে পারে কোন ব্যাপারের কথা বলছেন। ওরা হচ্ছে এ্যাণ্টিসোশাল ওদের সঙ্গে লাগতে যাবার দরকার কি? আমি কারো সঙ্গে লাগতে যাইনি। হাজব্যাণ্ড_-ওয়াইফের ব্যাপারে বাইরের লোকের ইন্টারফিয়ার ঠিক নয়।ই দাদা আপনি জানেন না কালাবাবুর ছেলেরা কি নোংরা ব্যবহার করছিল।পিকলুকে জিজ্ঞেস করবেন- ঐ মহিলাও সুবিধের নয়,ওর অনেক কেরচ্ছা- উনি একজন অধ্যাপিকা কলেজে পড়ান,অঞ্চলে কারো সঙ্গে মেশেন না।জানিনা কোন কেচ্ছার কথা বলছেন। জানতে পারবি।যা যেখানে যাচ্চেলি। ছেলেটা ভীষণ একগুয়ে।সন্তোষবাবু হাল ছেড়ে দিলেন। এত অভাবের মধ্যেও কোনো প্রলোভন ওকে টলাতে পারেনি।রাজনৈতিক জীবনে কত রকমের মানুষ দেখলেন কারো সাদা পছন্দ কারো লাল কারো আবার হলুদ কেউ দশ চায় কেউ পনেরো এইযা ফ্যরাক,এ ব্যাটার জাতই আলাদা।সন্তোষবাবু দাতে দাত চেপে হাসলেন। প্যা ণ্ডেলে পৌছে দেখল তখনো কেউ আসেনি।দশ বারো জন লোক।একুশের পল্লীতে সাংঘাতিক ভীড় মণ্ডপে ঢুকতে পনেরো- কুড়ি মিনিট সময় লেগে যায়।ভলাণ্টিয়াররা ভীড় সামলাচ্ছে। সামনে এক মহিলাকে চমকে ওঠে।এতো সেই ফরেনার যুক্ত কর কপালে ঠেকিয়ে চোখ বুজে ঠাকুরকে প্রণাম করছেন।খ্রীশ্চান মহিলা আরণ্যকের মজা লাগে।কিছুক্ষণ পর চোখ খুলে চোখাচুখি হাসলেন।চিনতে পেরেছেন মনে হল।আরণ্যক বলল,ওয়েণ্ট আউট টু সি পুজা? বাংলা বলো আমি বাংলা বুঝতে পারি। ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছেন? ঘরে একা একা বোর লাগছিল ভাবএলাইম ঠাকুর দেখে আসি।সুন্দর হয়েছে। একুশের পল্লীর ঠাকুর দেখছেন?দারুন হয়েছে অসুরকে দেখলে মনে হবে জীবন্ত। একুশ পল্লী কোথায়?আমি তো চিনিনা।তুমি রনো আছো না? বন্ধুরা আমাকে রনো বলে আমার আসল নাম আরণ্যক সোম।মানে ওয়াইল্ড বন্য আরকি। ভেরি নাইস নেম।আমি ইলিনা ব্রাউন তোমার সঙ্গে আলাপ হয়ে ভাল লাগল।আসি আর্ণক? ভদ্রমহিলা সুন্দর বাংলা বলেন।এখানকার রাস্তা ঘাট ভাল চেনেন না। ওরা কেউ এখনো আসেনি।একুশের পল্লীর ঠাকুরটা দেখিয়ে আনবে কিনা ভাবে। একুশের পল্লীর ঠাকুর দেখতে যাবেন না? একা একা শেষে যদি পথ হারিয়ে ফেলি। চলুন আমি আপনাকে নিয়ে যাচ্ছি। ওরা অটো ধরার জন্য রাস্তার ধার দাঁড়ায়।অটো আসছে ঠাষা ভীড়।অন্যদিন যাত্রীর অপেক্ষায় দাড়িয়ে থাকে।আজ সব একুশের পল্লীর দিকে চলেছে। চলো হেটে যাই।ইলিনা বলল। হেটে মাইল খানেক পথ।পারবেন? ইলিনা হেসে বলল,তুমি আমাকে কি ভেবেছো?একজন সঙ্গী পেলে দুনিয়া ভ্রমণ করতে পারি। দুজনে হাটতে শুরু করল।আরণ্যক অস্বস্তি বোধ করে পথচলতি লোকজএরিয়েন হা-করে তাদের দেখছে।আরণ্যক কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে চলে।পরস্পর কথা বলার উপায় নেই।এভাবে অনেকটা চলে আসার পর ইলিনার ব্যাপারটা খেয়াল হতে দাড়িয়ে পড়ল। কিছুটা গিয়ে আরণ্যক খেয়ালা করে পিছনে মেমসাহেব নেই।ভীড়ে হারিয়ে গেল নাকি?ঐতো একপাশে দাড়িয়ে আছেন।পিছনে এসে বলল,কি হল যাবেন না? তুমি কি আমাকে পছন্দ করছো না? পছন্দ করবোনা কেন? তাহলে এত দূরে দূরে হাটছো কেন?সবাই একসঙ্গে গল্প করতে করতে হাটছে-- পাড়ার থেকে অনেক দূরে চলে এসেছে এখানে তাকে কেউ চিনবে না।আরণ্যক বলল,ঠিক আছে একাসঙ্গে চলুন। দুজনে পাশাপাশিো হাটতে থাকে। জানো অরণক যখন কলেজ ছিল চার-পাচটা ক্লাসে লেকচার করতে হতো মেয়েদের সঙ্গে কথা সহকর্মীদের সঙ্গেও কথা হতো।কলেজে পুজোর ছুটি পড়তে আমি একেবারে মুক-বধির।একটা লোকও ণেই কথা বলি।অনেকদিন পর তোমার সঙ্গে কথা বলে বেশ হাল্কা বোধ হচ্ছে।কি হল একুশ পল্লী আর কতদূর? এইতো সামনে ভীড় দেখেছেন? ভলাণ্টিয়াররা ভীড় আটকে দিয়েছে,মণ্ডপ ফাকা হলে ছাড়বে।আরণ্যক বলল, ম্যাম ডান দিকে পুরুষ বামদিকে মহিলা আপনি বামদিকে দাড়ান।ঐদিক দিয়ে বেরোবার পথ।আমি ওখানে থাকব। আর্ণক আমি কিন্তু চিনে বাড়ী ফিরতে পারবনা। আমি নজর রাখছি-- যান যান ছেড়ে দিয়েছে। ইলিনা এগোতে থাকে।আরণ্যক বেরোবার মুখে গিয়ে দাড়াল।কলেজে পড়ান অথচ কত সিম্পল।আরণ্যকের ভাল লেগেছে।মানুষের সঙ্গে মিশলে চেনা যায়।বেশ কথা বলেন,কথা বলা একটা আর্ট।অনেকে এমন সুন্দর করে বলে শুনতে ইচ্ছে করে।অধ্যাপিকা হিসেবে ছাত্রীদের মধ্যে মনে হয় জনপ্রিয়।মান্তুরা যদি দেখে ম্যামকে নিয়ে ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছে তাহলে চোখের পলক পড়বে না ভেবে মজা পায়।কিছুক্ষণ পর ভীড় বেরোতে শুরু করে।লম্বা ফর্সা ম্যামকে ভীড়ের মধ্যে সহজেই নজরে পড়ে।উদবিগ্ন চোখে এদিক ওদিক দেখছে।আরণ্যক হাত তুলে নাড়তে থাকে।দেখতে পেয়ে স্বস্তি।কাছে আসতে জিজ্ঞেস করে কেমন দেখলেন? দেখব কি দাড়াতেই দিচ্ছে না ঠেলে বের করে দিল। পিছনে এত দর্শনার্থি সেজন্য বেশীক্ষণ দাড়াতে দিচ্ছেনা। আর্নক আমি একটা কথা ভাবছি।এত সুন্দর স্কাল্পচার যে শিল্পী করেছে তাকে হয়তো সবাই চেনে না।ঠাকুর গড়তে গড়তে একদিন হারিয়ে যাবে কেউ খবর রাখবে না।এ্যাম সিয়োর ভদ্রলোক যদি একটু সাপোর্ট পেতো তাহলে তার জীবন অন্য রকম হত। কথাগুলো আরণ্যককে ভীষণ নাড়া দেয়।নীরবে পথ চলতে থাকে। আচ্ছা আর্নক তোমার বাড়ীতে কে কে আছে?মমতাভরা গলায় জিজ্ঞেস করল। আরণ্যক ঘুরে দাড়িয়ে ইলিনাকে দেখে। স্যরি ব্যক্তিগত প্রশ্ন করা ঠিক হয়নি। আরণ্যক হেসে ফেলে বলল,না না ঠিক আছে।আজকাল মানুষের এসব জানার সময় কোথায়?তাই অবাক লেগেছিল।আজ অষ্টমী পুজো এমন একটা দিনে বলতে খারাপ লাগছে।আমার কেউ নেই বাবা-মার একমাত্র সন্তান ভাই-বোনও ণেই। ভেরি স্যাড।মাথার চুল ঘেটে দিয়ে ইলিনা বলল,ইয়াং ম্যান আমিও একা।তোমার তবু বন্ধু-বান্ধব আছে আমার তাও নেই।একদিন এসো না আমার ফ্লাটে সমাগম তিনতলা। কোনো দরকার আছে? দরকার ছাড়া আসতে ণেই?গল্প করব পরস্পরকে জানব।এখন কলেজ ছুটি। প্যাণ্ডেলের একপাশে বেঞ্চি পেতে আড্ডা জমে উঠেছে।পিকলু বলল,পুজো পালির দিন ছাড়তো রাজনীতির কচকচানি। গোপাল বলল,রাজনীতি আমাদের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোত জড়িয়ে।এই যে প্রাইমারি টিচার রনোকে নেম্তন্ন করল আমাদের কাউকে বলেছে?এর পিছনে কোনো কারণ নেই?সত্তর দশক মুক্তির দশক।উফস শালারা কি অত্যাচার করেছে।বাপের ভাগ্যি আজ বেচে আছি। বাপের ভাগ্যি না সেদিন রনো রুখে না দাড়ালে আজ এই লপচপানি কোরতে হতো না।পিকলু মনে মনে ভাবলেও বলেনা।কিছু বললেই সন্তোষদাকে বানিয়ে বানিয়ে লাগাবে।রনোকে আসতে দেখে সুবল বলল,ঐতো শালা এসে গেছে।কিরে কোথায় ছিলি এতক্ষণ? একুশ পল্লীর ঠাকুর দেখতে গেছিলাম। পিকলু ভ্রু কুচকে বলল,কাল গেছিলি না? ভীড়ে ভাল করে দেখতে পাইনি।আচ্ছা বলতো একুশের পল্লীর প্রতিমা শিল্পী কে? ক্কে আবার কোনো হরিদাস পাল-টাল হবে।সুবল তাচ্ছিল্যের সঙ্গে বলে। দিস ইজ ট্র্যাজেডি।এত সুন্দর ভস্কর্য্য অথচ আমরা ভাস্করের নামটাও জানি না।প্রতিমা গড়তে গড়তে একদিন হারিয়ে যাবে কালের গহ্বরে মানুষ জানতেও পারবে না।ভেবে দেখ একটু সাপোর্ট পেলে ভদ্রলোক নতুন ইতিহাস রচনা করতেন। কি ব্যাপার বলতো হঠাৎ এইসব চিন্তা? রনোর সব কিছু স্পেশাল।সবাই হো-হো হাসিতে ভেঙ্গে পড়ল।
03-08-2024, 04:44 PM
"" একজন সঙ্গী পেলে দুনিয়া ভ্রমণ করতে পারি ""
আজকের আপডেট অনেক ছোট হয়ে গেল। পরবর্তী বড় আপডেটের অপেক্ষায়। রেপু শেষ তাই শুধুমাত্র লাইক দিলাম। ---------------অধম
03-08-2024, 08:49 PM
অসম্বব সুন্দর হয়েছে গুরু।পরের পার্ট তাড়াতাড়ি চাই।
03-08-2024, 09:02 PM
"সঙ্গী পেলে দুনিয়া ভ্রমণ
করতে পারি।" বোধহয় সেই ভ্রমণের শুরুটা আজ হয়ে গেল। লাইক ও রেপু দিলাম।
07-08-2024, 02:38 AM
গল্প তার নিজস্ব গতিতে এগিয়ে যাবে, কিন্তু বারবার যে কথা বলি হয়তো বিরক্ত হন আপনি আরেকটু বড় আপডেট যদি দেওয়ার চেষ্টা করেন, পেলে মনে হয় আরো ভালো লাগতো অর্থাৎ আপনার পাঠককে ধরে রাখার যে ক্ষমতা সেজন্যই একটু অল্পতেই আসলে মন ভরে না। শুভকামনা আপনার জন্য এবং অবশ্যই আপনার শারীরিক সুস্থতাও কামনা করি।
08-08-2024, 12:02 AM
(07-08-2024, 02:38 AM)Rancon Wrote: গল্প তার নিজস্ব গতিতে এগিয়ে যাবে, কিন্তু বারবার যে কথা বলি হয়তো বিরক্ত হন আপনি আরেকটু বড় আপডেট যদি দেওয়ার চেষ্টা করেন, পেলে মনে হয় আরো ভালো লাগতো অর্থাৎ আপনার পাঠককে ধরে রাখার যে ক্ষমতা সেজন্যই একটু অল্পতেই আসলে মন ভরে না। শুভকামনা আপনার জন্য এবং অবশ্যই আপনার শারীরিক সুস্থতাও কামনা করি। অনেক ধন্যবাদ।একটু ব্যস্ততার জন্য দেরী হচ্ছে,আশা পূরণের চেষ্টা করব।
09-08-2024, 08:08 PM
গল্পঃ টা খুব সুন্দর ভাবে এগিয়ে চলছে ।
একটু বেশি অপেক্ষা করতে হচ্ছে ।
10-08-2024, 10:01 PM
অষ্টবিংশতি পরিচ্ছেদ
পুজো পুজো পুজো অবশেষে শেষ হল পুজো।প্যাণ্ডেল খা-খা করছে।একুশের পল্লীর ঠাকুর বিসর্জন হয়নি আজ হবে।বিরাট শোভাযাত্রা তাসা ব্যাণ্ডপার্টি তার সঙ্গে ঢাক তো থাকবেই দেখবার মত। আরণ্যক আবার দোকান খুলে বসেছে।পরিচিতদের সঙ্গে দেখা হলেই কোলাকুলি,শুভেচ্ছা বিনিময়।একদিন ঝর্ণা বসুর সঙ্গে দেখা হয়েছিল।কথাবার্তা অদ্ভুত। জিজ্ঞেস করল,কিরে ঠাকুর কেমন দেখলি? একুশের পল্লীর ঠাকুর দেখেছো,দারুণ করেছে না? ঠাকুর দেখেছি মানুষ দেখেছি।মানুষ চেনা সহজ নয় রে রনো। কেমন হেয়ালীর মত শুনতে লাগল।কিছু বলার আগেই বলল,তুই তো আকাআকি করিস মানুষের ভিতরটা আকতে পারবি? বুঝলাম না। অত বুঝে দরকার নেই।ভাবছি কবে যে কলেজ খুলবে।আসিরে রনো। কলেজ খোলার জন্য হাপিয়ে উঠেছে।মানুষ কাজের মধ্যে থাকতে ভালোবাসে।মিস ব্রাউনের কথা মনে পড়ল্,উনিও বলছিলেন দীর্ঘ ছুটিতে সময় কাটতে চায়না। আসলে মানুষ একটা দুঃসহ পরিস্থিতি এড়াতে অন্যকিছুর নিয়ে ডুবে থাকতে চায়।ওনেক করে যেতে বলেছিলেন যাব-যাব করেও যাওয়া হয়নি।মহিলা একা থাকেন ফ্লাটে সেজন্য সংকোচ হয়।অবশ্য মহিলাকে বেশ ভাল লেগেছে।কলেজের লেকচারার কোনো অহঙ্কার নেই সহজ সরল।চমৎকার বাংলা বলেন।একটা ব্যাপার লক্ষ্য করেছে মেয়েদের মধ্যে একটা জায়গাম মিল সে এদেশের হোক কিম্বা বিদেশিনী তাদের ভাব ভঙ্গী আচার আচরণে একটা মমতার স্পর্শ। মোবাইল বেজে উঠতে বুঝতে পারে বিজয়ার শুভেচ্ছা।কদিন চলবে এরকম।কানে লাগিয়ে বলল,শুভ বিজয়া। অন্য প্রান্ত হতে মেয়েলী কণ্ঠস্বর ভেসে এল,শুভ বিজয়া। আরণ্যক চমকে ওঠে এ আবার কে?মনে হয় কিছু ভুল হয়েছে আরণ্যক বলল,আমি আরণ্যক বলছি আপনি? আহা জানি তো, তোমার গলা আমি চিনবো না? নারী কণ্ঠকে এড়িয়ে যাওয়া কঠিণ তাও আরণ্যক ফোন কেটে দিল।ঝর্ণাদি সাবধান করেছিল তোকে ফাসাতে পারে।তার নম্বর জানল কি করে আরণ্যক ভেবে পায়না। এস আই সজল বোস বাসায় ফিরে জামা কাপড় ছেড়ে স্নানে ঢুকল।খাওয়া-দাওয়া করে আবার তাকে ডিউটীতে যেতে হবে। খাটের উপর জামা কাপড় এলোমেলো পড়ে থাকতে দেখে বিরক্ত ঝর্ণা বোস গুছিয়ে আলনায় রাখতে গিয়ে দেখল প্যাণ্টের পকেটে এক তাড়া নোট।মাস শেষ হতে কদিন বাকী।এখন তো বেতন হবার কথা নয়।কপালে দুশ্চিন্তার ভাজ পড়ে।জামা কাপড় গুছিয়ে আলনায় রেখে দিল। বাথরুম হতে সজল বেরোতে ঝর্ণা জিজ্ঞেস করল,তোমার পকেটে এত টাকা কিসের? চমকে গিয়ে গামছা দিয়ে গা মুছতে মুছতে সজল বলল,সে কৈফিয়ত তোমাকে দিতে হবে? কৈফিয়ত নয় এমনি জানতে চাইছি। বেশী কৌতূহল ভাল নয়।ভাত দাও আমাকে বেরোতে হবে। অশান্তির ভয়ে ঝর্ণা কথা বাড়ায় না।রান্না ঘরে গিয়ে কাজে লেগে গেল।থালায় ভাত বাড়তে বাড়তে ভাবে সজলকে নিয়ে এক সময় কত অহঙ্কার ছিল।এখানকার থানার বড়বাবু লোকটা করাপটেড,পার্টির কথায় ওঠে বসে।সজলের সঙ্গে বনিবনা নেই।পুলিশের চাকরি পছন্দ নয়। তার মনে হতো সজল একজন লড়াকু অফিসার।তাকে ভাল লেগেছিল।এখন দেখছে লড়াইটা নীতির নয় বখরার লড়াই। কি হল ভাত দেবে তো? এই যাচ্ছি।ঝর্ণা ভাতের থালা নিয়ে টেবিলের উপর রাখল। সজল ভাত মেখে তৃপ্তি করে খেতে থাকে।ঝর্ণা লক্ষ্য করে চোখে মুখে কোনো গ্লানির ছাপ নেই। জানো ঝুনু এবার বাছাধন টের পাবে।বড়বাবুর নামে মাস পিটিশন জমা পড়বে।দেখি সন্তোষ মাইতি কিভাবে বাচায়।শালা আমার পিছনে লাগা--। এসব শুনতে ঝর্ণার গা ঘিনঘিন করে,স্টোভটা বন্ধ করে দিয়ে আসি বলে ঝর্ণা উঠে রান্না ঘরে চলে গেল। ইলিনা ব্রাউন তরতাজা যুবতী ফ্লাটে একা থাকে।সেখানে ওরকম একটা যোয়ান ছেলেকে ডাকা ঠিক হল কিনা একটা খচখচানি ছিল মনে।ফ্লাটের লোকজন কেউ কারো খবর রাখেনা।আর্ণক আসেনি এটা স্বস্তি।সত্যি কথা বলতে কি পুজোর সময় উপযাচক হয়ে ঠাকুর দেখাতে নিয়ে যাবার কথা বোলেছিল একটু খটকা লেগেছিস।তবে আর পাচটা মেয়ের মত মিস রাউন অবলা নারী নয়।ইলিনা সম্মত হয়েছিল।দেখা যাক না কি করে।তারপর ঘণ্টাখানেকের উপর একসঙ্গে ছিল,পাশাপাশি হেটেছে কোন বেচাল নজরে পড়েনি বরং অন্য কেউ যতে তার গায়ের উপর এসে না সেদিকে ছিল তীক্ষ্ণ দৃষ্টি।যেন তার বডি গার্ড ইলিনা বিষয়টা বেশ উপভোগ করছিল। ছেলেটি একটু সাই ইন্ট্রোভার্ট টাইপ।নিজের কথা বলতে সঙ্কোচ।ইলিনাই বরং খুচিয়ে খুচিয়ে জেনেছে।বাবা-মা নেই সংসারে একা তাহলেও সদা প্রফুল্ল।যত জেনেছে ইলিনার কৌতূহল তত বেড়েছে।শুধু খাওয়ার বিনিময়ে দোকানে,ইলিনা যখন বলল এতো এক্সপ্লয়েট করছে। আমাকে তো জোর করে ধরে রাখিনি আমিই ইচ্ছে করে রয়েছি।আর্ণক হেসে বলেছিল। ধরো একজন ক্ষুধাকাতর ব্যক্তিকে বলা হয় কাজটা করে দাও তাহলে খেতে দেব এটা পরোক্ষে চাপ দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়া নয়? আপনি খুব সুন্দর কথা বলেন ভাল লাগে শুনতে।চোখে শিশুর মুগ্ধতা। ভাবতে অবাক লাগে মস্তানগুলোর বিরুদ্ধে প্রত্যাশা ছাড়াই রুখে দাঁড়িয়েছিল।কিছুটা কৃতজ্ঞতা বোধ আর কিছুটা সহানুভূতিতে ইলিনার ওর জন্য কিছু করার ইচ্ছেতে ওকে আসতে বলেছিল।একজনের ইচ্ছে হলেই তো হবে না। ইলিনা ব্রাউন রান্না করেনি বেরিয়ে বড় রাস্তায় দোকান থেকে বিরিয়ানি নিয়ে আসলেই হবে।একার জন্য রান্না করতে ইচ্ছে করেনা।দেখতে কলেজ খোলার সময় এগিয়ে আসে। বেলা বাড়তে থাকে এবার দোকান বন্ধ করে স্নানে যাবার কথা ভাবে আরণ্যক।এমন সময় একজন মহিলা এসে বলল,পুজো সংখ্যা কিছু আছে। মহিলার গলা শুনে অবাক হয়ে তাকায়।বছর পয়ত্রিশের মধ্যে বয়স হবে।বিবাহিত না অবিবাহিত দেখে বোঝা যায়না আজকাল। পুজো হয়ে গেল এখন পুজো সংখ্যা--দেখছি।আরণ্যক বইয়ের তাক ঘাটতে থাকে যদি কোনো পত্রিকা থাকে।না পেয়ে বলল,নেই ম্যাম যদি পত্রিকার নামটা বলেন এনে দিতে পারি।আরণ্যকের ইচ্ছে কথা বলুক তাহলে সকালেড় টেলিফোনের গলাটা মিলিয়ে দেখত। মহিলা কোনো কথা বলেনা। আপনি ফোন করেছিলেন?আরণ্যক বলেই ফেলল। মানে?ভ্রু কুচকে জিজ্ঞেস করে। না মানে পত্রিকা আছে কিনা জানার জন্য। আমি তো আপনাদের নম্বরই জানি না। আপনি কোন পত্রিকা চাইছেন? কিছু না বলে মহিলা চলে গেল। এই মহিলাকে সেরকম প্রগলভ মনে হল না।আরণ্যক দোকান বন্ধ করে বাজারের ভেতর স্নানে গেল। একটু আগে সুপমা ফোন করে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানালো।জানতে চাইল কবে কলেজ খুলবে।সুপমা মা হতে চলেছে এইজন্য দিদাকে প্রণাম কোরতে আসতে পারেনি।গাড়ী নিয়ে একদিন ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিল।সুপমার কথাবার্তা শুনে মনে হল সংসারে বেশ মানিয়ে নিয়েছে।মেয়েরা মানিয়ে নেওয়ার সহজাত ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়। ইলিনা ব্রাউন শাড়ী পরতে থাকে।বাস রাস্তায় একটা বিরিয়ানির দোকান দেখেছে।দরজা বন্ধ করে বেরিয়ে পড়ল। দোকানের সামনে বিশাল পেতলের হাড়ি।মিস ব্রাউন কাছে যেতে বলল,বলিয়ে ম্যাডাম কেয়া চাইয়ে? তাকে দেখলে সবাই হিন্দি বলে্।মিস ব্রাউন বলল,বিরিয়ানি হবে? চিকেন একশো বিশ মাটোন একশে পচাশ। একটা চিকেন বিরিয়ানি দেবেন। মিস ব্রাউনের চোখ কি দেখে কুচকে যায়।আর্ণক মনে হচ্ছে?তাকে দেখে লজ্জা পেতে পারে সেজন্য মিস ব্রাউন অন্য দিকে তাকাল। ম্যাডাম ভালো আছেন? ও তুমি?তুমি এখানে কোথায়? এইতো এখন দোকান বন্ধ করে খেতে এলাম। সকালে সন্ধ্যয় দোকানে বসতে হয় দুপুরে ছাড়া--। আমি বলেছি এখন কলেজ ছুটি।এনি টাইম ইউ মে কাম। দুপুরে গেলে আপনার ঘুমের ডিস্টার্ব হবে তাই। আমি রাতে ছাড়া ঘুমাই না। ঠিক আছে কাল যাব। |
« Next Oldest | Next Newest »
|