Thread Rating:
  • 0 Vote(s) - 0 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica হেরোর ডায়েরি সম্পূর্ন গল্প
#1
হেরোর ডায়েরি গল্পটা সম্পুর্ণ আপলোড করবো।

[+] 2 users Like rizvy262's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#2
হেরোর ডাইরি [১]

 Written by stranger_women




 




 









সেটা একটা শনিবার ছিল। আমার বউ মনীষা, আমি আর আমার বড় মেয়ে টাপুর কোলকাতার ‘এসি মার্কেট’ বলে একটা মলে কেনাকাটা করছিলাম। আমরা প্রতিমাসের একদিন সংসারের যাবতীয় কেনাকাটা একসঙ্গে সেরে ফেলতাম। আসলে একসঙ্গে অনেক জিনিস কিনলে মলে অনেক ডিসকাউন্ট পাওয়া যায়তো, তাই ।




মনীষা নিজেই কিছু জিনিস পছন্দ করে কিনছিল আর আমি একটু দূরে দাঁড়িয়ে টাপুরকে কোলে নিয়ে এদিক ওদিক বিভিন্ন জিনিসের সম্ভার দেখছিলাম ।হটাত আমার মনে হল একজনকে যেন খুব চেনা চেনা লাগছে। একটু কাছে আসতেই ছয় ফুটের ওপর লম্বা অনেকটা ফ্যাশান মডেলের মত দেখতে লোকটাকে চিনতে পারলাম। আমার বস রবি সহায়।আমি এগিয়ে গিয়ে রবি কে ডাকলাম। -“স্যার আপনি এখানে”?




– “আরে রাজীব!তুমি এখানে কি করছো? তোমার তো এখন অফিসে থাকার কথা”।




– “আসলে স্যার… আজকে আমি একটু তাড়াতাড়ি অফিস থেকে বেরিয়েছি। আমি আর আমার বউ মনীষা দুজনে মিলে এখানে এসেছি।আমাদের একটু কেনাকাটা করার ছিল”।




– “তোমার কোলে এই কি তোমার মেয়ে”?




– “হ্যাঁ, ও আমার বড় মেয়ে”।




-“বেশ মিষ্টি দেখতে হয়েছে তো, কত বয়েস হল ওর?” টাপুরের গাল টিপে আদর করে রবি সহায় জিগ্যেস করলো।




-“এই তো এই বছরে *** পরলো, সামনের বছর ক্লাস ওয়ান হবে”।




-বাঃ বাঃ বেশ বেশ। তা তোমার ছোটো মেয়ের বয়েস কত হল? কি নাম রেখেছো ওর? ও কি বাড়িতে?




-“ওর তো সবে দেড় বছর বয়েস হল, ওর নাম রেখেছি টুপুর, ওকে আমার দাদা বউদির কাছে রেখে এসেছি, ওদের কাছেই তো থাকে বেশির ভাগ সময় ।




ঠিক তখনই দেখলাম আমার বউ মনীষা সামনের দোকানটা থেকে কেনাকাটা সেরে আমাদের দিকেই আসছে। মনীষা আমার কাছে আসতেই রবি বলে উঠলো – “ও এই বুঝি তোমার বউ মনীষা”। আমি বললাম –“হ্যাঁ”। রবি স্মার্টলি মনীষার দিকে হাত বাড়িয়ে দিল।আমি বললাম –“মনীষা পরিচয় করিয়ে দি। ইনি হলেন আমার বস মিস্টার রবি সহায়”। মনীষা হেঁসে রবির সাথে হাত মেলালো। মনীষা ইংলিশ মিডিয়ামে পড়া মেয়ে বলে বেশ স্মার্ট। ও হেঁসে বললো –“ও আপনি মিস্টার সহায়, ওর কাছে আপনার কথা অনেক শুনেছি। গ্ল্যাড টু মিট ইউ স্যার”। খুব পোলাইটলি অল্প একটু হাত ঝাঁকিয়ে রবি বললো –“নাইস টু মিট ইউ টু মনীষা। আমার মনে হচ্ছে আমাদের আজকেই প্রথম দেখা হল। আশা করছি রাজীব যখন আমার সম্বন্ধে কথা বলে তখন নিশ্চই গালাগালি টালাগালি না দিয়েই বলে”। আমি আর মনীষা দুজনেই রবির কথা শুনে হেঁসে ফেললাম।




রবি সহায় আসলে আমার কম্পানি ফিউচার মিডিয়ার মালিক আর প্রেসিডেন্ট প্রদীপ সহায় এর একমাত্র ছেলে। ও আগে মুম্বাইতে আমাদের হেড অফিসে বসতো। কোম্পানি এখন ঠিক করেছে তাদের ভাইস প্রেসিডেন্টদের হেড অফিসে না রেখে মেজর ব্রাঞ্চ অফিস গুলোতে পাঠাবে। এতে করে তারা ব্রাঞ্চ অফিস গুলোর সেলস ডেভলপমেন্ট এর কাজ ছাড়াও এ্যাডমিনিসট্রেসন ও দেখতে পারবে। সেই মত রবি কোলকাতাতে বদলি হয়ে আসে।




প্রথম যখন ওর সাথে দেখা হয়ে ছিল তখন ওকে আমার ফ্রেন্ডলি বলেই মনে হয়ে ছিল। অবশ্য কম্পানির মেয়েদের কাছে ও একবারে হট ফেবারিট। মেয়েরা ওর সব কিছুই দারুন ভাল দেখে। তাদের মতে কোলকাতা অফিসের হাল ওর হাতে পরে দুদিনে ফিরে যাবে। কম্পানির সেলস ডেভলপমেন্টের ব্যাপারে ওর আইডিয়া গুলো নাকি অসাধারন। হবেইনা বা কেন? ওরকম লম্বা চওড়া বেক্তিত্ব সম্পন্ন সুপুরুষ ছেলে দেখলে মেয়েদের নাল পড়া অস্বাভবিক কিছু নয়।




আমি রবির সাথে দু একটা কথা বলতে লাগলাম। মনীষা আমার কোল থেকে টাপুরকে নিয়ে তার বদলে আমার হাতে ওর হাতের ব্যাগ দুটো ধরিয়ে দিল। রবির সাথে কথা বলতে বলতে হটাত যেন মনে হল রবি আড় চোখে এক পলকে টুক করে কি যেন একটা দেখে নিল। আমি পাশে তাকিয়ে দেখি টাপুরের একপাটি জুতো খুলে গেছে বলে মনীষা ওকে মাটিতে দাঁড় করিয়ে ওর পায়ের কাছে উবু হয়ে বসে ওর জুতোর ফিতে বাঁধছে।ফিতে বাধতে গিয়ে ওর খেয়াল নেই যে অজান্তে কখন ওর বুকের আঁচল খসে পরেছে ।সেদিন মনীষা একটা লো কাট কাল রঙের ব্লাউজ পরে এসেছিল। উবু হয়ে বসায় ব্লাউজের ওপর দিয়ে ওর পুরুষ্টু মাই দুটোর অনেকটাই দেখা যাচ্ছিল। রবি কি তাহলে এক পলকে ওর মাই দুটো দেখে নিল?আমি নিশ্চিত নই কারন আমাদের পাশ দিয়ে অনেকেই হেঁটে যাচ্ছিল, রবি তাদের কাউর দিকেও তাকাতে পারে। আর ও যদি মনীষার বুকের দিকে তাকিয়েও থাকে তাহলেও সেটা এমন কিছু অপরাধ নয়। একজন পুরুষ মানুষ হিসেবে আমি জানি এটা অত্যন্ত স্বাভাবিক।আমি সুযোগ পেলে আমিও কি কারুরটা দেখতে ছাড়ি নাকি? তাছাড়া আমার ছোট মেয়ে টুপুর হবার পর মনীষা নিজের মাই দুটোর সাইজ যা বানিয়েছে তাতে করে এক বার চোখ পরলে চোখ ফেরানো মুস্কিল। যাই হোক কিছুক্খন বোকাবোকা ভদ্র কথাবার্তার পর রবি অন্যদিকে চলে গেল, আর আমরা আমাদের রাস্তায়।




যেতে যেতে মনীষা হটাত বললো –“মিস্টার সহায়ের কথাবাত্রা কিন্তু খুব সাধারন আর ফ্রেন্ডলি না? দেখে বোঝা যায়না যে উনি অতো পয়সার মালিক”। আমি ঘাড় নাড়লাম।




-“আচ্ছা উনি আমাদের সঙ্গে এত গল্প করলেন, ওনাকে একবার আমাদের বাড়িতে আসার কথা বলা উচিত ছিল না গো”?




-“দেখ মনীষা রবি ফ্রেন্ডলি হলেও খুব প্রফেশনাল। আমার মনে হয় ও আমাদের মধ্যেকার রিলেসানটা প্রফেশনালই রাখতে চাইবে। ওকে বাড়িতে আসতে বোললে বা খেতে নেমন্তন্ন করলে ও খুব অসুবিধায় পরে যেত”।




-“তা কেন? কেউ কি নিজের বস কে বাড়িতে নেমন্তন্ন করতে পারেনা”?




– “দেখ আমার মনে হয় না বলাই ভাল হয়েছে। বললে ও আসতোনা”।




-“কেন”?




-“দেখ উনি আমাদের বাড়িতে খেতে এসেছেন এই ব্যাপারটা আমার মত আমাদের অফিসের অন্য সব সেলস এক্সিকিউটিভরা জানলে ব্যাপারটা কিরকম হত বল? এসব ব্যাপারে বসেদের খুব সাবধানে চলতে হয়”।




-“কে কি ভাববে তার দায় আমরা নেব কেন রাজীব? আর নেমন্তন্ন করলে দোষই বা কি ছিল? উনি আসলে আসতেন না আসলে না আসতেন। উনি কি করতেন সেটা ওঁর বেক্তিগত ব্যাপার”।




-“হ্যাঁ, কিন্তু উনি অস্বস্তিতে তো পড়তেন”।




-“আমার তা মনে হয় না । উনি ঠিক সামলে নিতেন। ওনাকে অসম্ভব স্মার্ট বলে মনে হল আমার। আর কি সুন্দর করে কথা বলতে পারেন উনি”।




-“দেখ মনীষা আমি মনে করি বসের সাথে বন্ধুত্বের একটা সীমারেখা রাখা অত্যন্ত দরকারি”।




-“ঠিক আছে বাবা, ঠিক আছে, এখন চল ওঁকে বাড়িতে নেমন্তন্ন করার ব্যাপারটা ভুলে আমরা একটা রেস্স্টুরেন্টের দিকে যাই। আমার খুব খিদে পেয়েছে”।




মনীষার সাথে রেস্স্টুরেন্টের দিকে হাঁটতে হাঁটতে ভাবছিলাম এই রবি আমাদের অফিসে মাস পাঁচেক হল বদলি হয়ে এসেছে, এই কমাসে ওর সাথে কাজ করতে করতে আমার বেশ বন্ধুত্ত মত হয়ে গেছে। রবি আমাকে এখনো পর্যন্ত বেশ স্বাধীনভাবেই কাজ করতে দিয়েছে। যদিও ওর কাজ প্রত্যেকের কাজের ওপর নজরদারি করা তবুও ও এই কমাসে সেলস ডেভলপমেন্টের ওপর নিজের আইডিয়া নিয়ে নিজেই খেটেছে। অল্প যা একটু খবরদারি করেছে তা অন্য দুএক জনের ওপর। আমাকে নিয়ে সত্যি বলতে কি একবারেই মাথা ঘামায়নি ও।

2





রবির সাথে মলে দেখা হওয়ার চার পাঁচদিন পর একদিন হটাত রবির চেম্বার থেকে একটা ফোন কল পেলাম আমার ডেস্কে। রবির ফোন। ও বললো




–“রাজীব তোমার দুয়েকজন ক্লায়েন্টের কাছ থেকে কয়েকটা ব্যাপার জানতে পারলাম। ওদের নাকি কিছু অভিযোগ আছে তোমার সার্ভিস নিয়ে”।




-“কি বলছো তুমি রবি? আমার ক্লায়েন্ট আর আমিই জানবোনা তাদের অভিযোগ আছে”?




-“হ্যাঁ ব্যাপারটাতো সেরকমই মনে হচ্ছে। এদের মধ্যে একজন ক্লায়েন্টের অভিযোগ বেশ গুরুতর। সে বলছে তুমি নাকি ওদের কাছে মার্কেটিং করার সময় যেসব সার্ভিস দেবে বলেছিলে, কনট্র্যাক্ট পেপারে সেসবের উল্লেখ না করেই ওদের কাছে সাইন করতে পাঠিয়ে দিয়েছো”।




-“হতেই পারেনা।আমি এরকম ভুল কোনদিন করিনি রবি। ক্লায়েন্টের নাম বলতো কে? আমি এখুনি ফোন করে কথা বলে ব্যাপারটা দেখে নিচ্ছি। এটা নিশ্চই ওদেরই ভুল”।




-“তার দরকার নেই রাজীব। আমি নিজেই ব্যাপারটা সালটে নিয়েছি। তবে এবার থেকে তোমার ক্লায়েন্টদের কনট্র্যাক্ট পেপার পাঠাবার আগে আমার কাছে একবার পাঠাবে, আমি আগে পড়ে দেখবো”।




-“কিন্তু রবি”?




-“দেখ রাজীব তোমার কাজের ব্যাপারে নাক গলাবার কোন উদ্দেশ্য নেই আমার। কিন্তু তুমি কনট্র্যাক্ট পেপারে কোন ভুল করলে তার থেকে কম্পানির বদনাম হয়ে যাবে। তাই আমাকে দেখতেই হবে ওগুলো”।




-“কিন্তু রবি একটা জিনিস আমি কিছুতেই বুঝতে পারলামনা… আমার ওই ক্লায়েন্ট আমাকে না ফোন করে তোমাকে ফোন করলো কেন”?




-“ওরা রিশেপসানে ফোন করে তোমাকে মেসেজ দিতে বলেছিল কারন তুমি সেদিন অফিসের বাইরে ছিলে আর তোমার মোবাইল আনরিচেবল ছিল। আমি তখন রিশেপসানে কোনকারনে প্রেজেন্ট ছিলাম বলে ব্যাপারটা জানতে পারি”।




আমি আর তর্ক বারালাম না কারন আমি বুঝতে পারলাম যে রবি আমার কনট্র্যাক্ট পেপারগুলো দেখার ব্যাপারে ওর ডিসিশন নিয়ে ফেলেছে।




-“ ঠিক আছে তুমি যখন বলছো তখন তাই হবে। এনিওয়ে থাঙ্কস রবি আমাকে হেল্প করার জন্য”।




এই বলে রবির ফোন ছাড়লাম আমি । প্রচণ্ড রেগে গিয়েছিলাম ভেতর ভেতর। আমার ক্লায়েন্টরা আমার সার্ভিস নিয়ে কমপ্লেন করেছে এটা আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারিনা। আমার সাথে আমার ক্লায়েন্টদের সম্পর্ক চিরকালই মধুর থাকে। ক্লায়েন্ট তো দুর অফিসের কাউর সাথেই আমার কোন খারাপ সম্পর্ক নেই। ক্লায়েন্টদের সাথে অসম্ভব ভাল রিলেসনই আমার সবচেয়ে বড় প্লাসপয়েন্ট। তাহলে কেন এমন হল? রবি কিছুতেই আমাকে সেই ক্লায়েন্টের নাম বললোনা কারন ও বোধহয় ভাবলো ক্লায়েন্টের নাম বললে আমি ভবিশ্যতে তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে শোধ তুলতে পারি। সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার হল রবি এবার থেকে সব ব্যাপারে আমার কাজ সন্দেহের চোখে দেখবে, আর আমার প্রত্যেকটি ব্যাপারে নাক গলাবে।সেদিন রাতে বাড়ি ফেরার পর চান করে একটু ফ্রেশ হয়ে বাথরুম থেকে বেরচ্ছি এমন সময় মনীষা আমাকে জিজ্ঞেস করলো




–“কিগো অফিসে কিছু ঝামেলা হয়েছে”? মনীষা সোফায় বসে টুপুর মানে আমার ছোটো মেয়েটাকে কোলে নিয়ে বুকের দুধ দিচ্ছিল। আমি ওর দিকে ফিরে বললাম




–“হ্যাঁ আজকের দিনটা আমার একটু খারাপ গেছে। কিন্তু তুমি কি করে জানলে”?




-“তোমার মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে কিছু একটা হয়েছে। তুমি অফিস থেকে ফেরা ইস্তক দেখছি তোমার মুখটা রাগে থমথম করছে”।




আমি মনীষাকে খুলে বললাম কি ঘটনা ঘটেছে। কিভাবে রবি রিশেপসানে আমার ক্লায়েন্টদের দেওয়া মেসেজকে কমপ্লেন হিসেবে ধরে নিয়ে আমাকে না জানিয়ে নিজে তাদের সঙ্গে কথা বলেছে।




-“তারপর কি হল? রবি কমপ্লেন গুলো সামলালো কি করে”?




-“বললামনা ওগুলো ঠিক কমপ্লেন ছিলনা। ওরা ওদের সাথে আমাদের কনট্রাক্টের কতগুলো বিষয়ে জাস্ট একটা এক্সপ্ল্যানেসান চেয়েছিল। আমি সেই সময় অফিসে ছিলামনা আর আমার মোবাইলও কোন ভাবে আনরিচেবল হয়ে গিয়েছিল। সেই জন্য ক্লায়েন্টরা আমাকে ফোনে না পেয়ে রিসেপসানে ফোন করে আমার জন্য মেসেজ দেয়।রবি সেই সময় দুর্ভাগ্যবসতো কোনভাবে ওখানে উপস্থিত ছিল। ও মেসেজ গুলোকে কমপ্লেন হিসেবে ধরে নিয়ে আমাকে কোন ব্যাবস্থা নেবার সুযোগ না দিয়ে… আমাকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে…নিজেই ওদের সাথে কথা বলে ব্যাপারটা সালটেছে। আমি তো বুঝতেই পারছিনা আমার কিভাবে এমন ভুল হতে পারে। কনট্রাক্ট পেপার পাঠানোর আগে আমি বারবার পেপারটা মিলিয়ে দেখেনি যে কোন ভুল হয়েছে কিনা। এই ঘটনার পর রবি এখন চাইছে যে আমি আমার সমস্ত কনট্রাক্ট পেপার ক্লায়েন্টকে পাঠাবার আগে একবার ওকে দিয়ে চেক করিয়ে নিই”।




-“দেখ রাজীব তোমার ভুল হওয়া তো অসম্ভব কিছু নয়, তুমিও তো মানুষ। আর মানুষ মাত্রেই ভুল হতে পারে”।




-“হ্যাঁ ভুল আমার হতে পারে। কিন্তু এর আগে এরকম ভুলতো আমি কখনো করিনি। আর এক সপ্তাহেই পরপর দুদুটো এরকম সিলি মিস্টেক আমি কিভাবে করতে পারি আমার মাথায় ঢুকছেনা? না… আমার কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছেনা ব্যাপারটা…কিছু একটা ব্যাপার নিশ্চই আছে”।




-“দেখ দুটো ভুল হওয়াও তো অসম্ভব কিছু নয়।আমার মনে হচ্ছে মিস্টার সহায় তোমার কনট্রাক্ট পেপারগুলো কাউকে পাঠানোর আগে নিজে চেক করায় তোমার ভালই হবে। ও ঠিকই ডিশিসান নিয়েছে”।




মনীষার মুখে এই কথা শুনে ফট করে মেজাজটা গরম হয়ে গেল আমার।




-“কার হয়ে কথা বলছো তুমি মনীষা? তুমি কি আমার বউ না রবির বউ”?




-“অবশ্যই তোমার হয়ে বলছি রাজীব। কিন্তু আমি মনে করি যে তোমার সমস্ত কনট্রাক্ট পেপার ক্লায়েন্টদের কাছে পাঠানোর আগে মিস্টার সহায় যদি একবার চেক করে নেন তাহলে তাতে তোমার কোন অসুবিধে থাকার কথা নয়। মিস্টার সহায়তো ওর কম্পানির ভাল চাইবেই রাজীব। ওতো চাইবেই যে তুমি অজান্তেও যেন কোন ভুল না করে ফেল”।




-“আমি আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছি তোমার কথায় মনীষা। এত বছর ধরে তো এই সব ক্লায়েন্টদের আমি একাই সামলেছি। আমার তো কখনো কোন ভুল হয়নি। তাহলে তুমি কেন এখন ভাবছো যে আমার রবির সাহাজ্যের দরকার আছে?”




-“ওঃ রাজীব তুমি মাঝে মাঝে এতো ছেলেমানুষী করোনা যে কি বলবো। আমি তো জানি আমার স্বামীটা সেলস একজিকিউটিভ হিসেবে অফিসে সবার থেকে সেরা। আমি শুধু মনে করছি যে তোমার মিস্টার সহায়ের কথা মেনে নেওয়াই উচিত কারন আর কিছুনা হোক এতে করে মিস্টার সহায় তোমার ওপর অজথা চটে যাবেন না বা তোমার বাকি কাজে নাক গলাবেননা”।




মনীষা আমাকে পুরোপুরি সাপোর্ট না করায় আমি ভেতর ভেতর ভীষণ অসন্তুষ্ট হয়ে পরলেও ওর কথার যুক্তি আমি বুঝতে পেরেছিলাম। স্পষ্টতই মনীষা ব্যাপারটা আমার থেকে অনেক নিরপেক্ষভাবে দেখছিল। ওর যুক্তি ও অগ্রাহ্য করার মত ছিলনা। হয়তো ধনী সুপুরুষ এই রবিকে আমি মন থেকে কোনদিনো খুব একটা পছন্দ করতামনা বলে এই ব্যাপারটায় একটু বেশিই তেতেছিলাম।তবে একটা কথা মনে হল আমার… সেদিন মলে রবির সাথে দেখা হওয়ার পর রবির ভদ্র এবং চৌখস কথাবাত্রা তে মনীষা হয়তো ভেতর ভেতর বেশ অভিভূত হয়ে পরেছে। তাই ও হয়তো ভাবছে যে কম্পানির মালিকের ছেলে, কত স্মার্ট, ও কি না বুঝেই এই ডিসিশন নিয়েছে নাকি? নিশ্চই রাজীবের কোন নেগ্লিজেন্সি দেখেছে ও, তাই এরকম বলেছে। এই কথাটা মনে হওয়ার পর থেকেই সেদিন বুকের ভেতরটা কি রকম যেন জ্বালা জ্বালা করতে শুরু করেছিল আমার।

Like Reply
#3
পরের প্রায় একমাস আমি রবির কথা মতন আমার সমস্ত কনট্রাক্ট পেপার যেগুলো ওই মাসে বিভিন্ন ক্লায়েন্টদের কাছে যাবার ছিল সেগুলোকে পাঠাবার আগে রবির কাছে ফাইনাল চেক করতে পাঠালাম । যথারিতি কোন সমস্যা ছিলনা ওগুলোতে । মাসের শেষ নাগাদ আবার রবি আমাকে ওর চেম্বারে ডাকলো ।




-“রাজীব আমি এখন তোমার কাজে মোটামুটি ভাবে খুশি । তুমি যেভাবে তোমার কাজ করছ আর তোমার ক্লায়েন্টদের সামলাচ্ছ তাতে আমার আর অসন্তুষ্ট হবার কোন কারন নেই । তোমার ক্লায়েন্টদের নিয়ে যা সমস্যা ছিল মনে হচ্ছে সেগুলো মিটে গেছে । এখন আর কারুর কোন সমস্যা নেই”।




-“একটা কথা বলি রবি কিছু মনে করোনা, আমার কিন্তু কোনদিনই মনে হয়নি যে আমার ক্লায়েন্টদের সত্যি সত্যি মেজর কোন অভিযোগ বা সমস্যা ছিল”।




আমার কথা শুনে প্রচণ্ড একটা বিরক্তির ভাব ফুটে উঠলো রবির মুখে । যা দেখে আমার মনে হল এই ধরনের কথা বোধহয় না বললেই ভাল হত।




-“দেখ রাজীব আমি তোমাকে আমার চেম্বারে ডেকেছি শুধু এই টুকু বলতে যে তোমাকে আর তোমার সমস্ত কনট্রাক্ট পেপার কোথাও পাঠাবার আগে আমার কাছে পাঠানোর দরকার নেই।কিন্তু এখন থেকে আমি চাই যে তুমি যেসমস্ত নতুন ক্লায়েন্টদের নিয়ে কাজ করছো তাদের সব ব্যাপারে আমাকে ইনভল্ব কর”।




-“জানতে পারি কেন”?




-“দেখ আমরা ম্যানেজমেন্ট থেকে ঠিক করেছি আমাদের বিজনেসের ওপর আমাদের মানে ম্যানেজমেন্টের আরো কন্ট্রোল থাকা উচিত । তাই এখন থেকে আমি আমাদের অফিসের সমস্ত বড় বড় কনট্রাক্টের ব্যাপারে নিজেকে ইনভল্ব রাখতে চাই । ম্যানেজমেন্টের ইনস্ট্রাকশান অনুযায়ী আমাকে দেখতে হবে যে আমাদের সমস্ত ক্লায়েন্টরা আমাদের কাছ থেকে একদম সঠিক সার্ভিস পাচ্ছে কিনা”?




-“হ্যাঁ কিন্তু অফিসে তো আমার মত আরো সেলস ম্যানেজার আছে… শুধু আমাকেই বা আতস কঁচের তলায় ফেলা হচ্ছে কেন”?




-“শুধু তুমি নও রাজীব, আমি সমস্ত সেলস ম্যানেজারদের কাজই এখন থেকে মনিটরিং করবো। তোমার এতে চিন্তিত হবার কোন কারন নেই। এতে করে আমার নিজের কাজই শুধু বাড়বে তোমার কোন অসুবিধে হবেনা । আর মনে কোরোনা যে আমি শুধু শুধু তোমার কাজে নাক গলাতে চাইছি ।এটা একটা ম্যানেজমেন্ট ডিসিশান”।




রাতে বাড়ি ফেরার পর অনেকটা আগের দিনের মতই মনীষা দরজা খুলে আমার মুখ দেখেই বুঝতে পারলো যে আবার অফিসে কিছু একটা ঘটেছে ।ফলস্বরূপ আমাকে ওকে সব কিছু খুলে বলতে হল। ওকে বোললাম যে রবি আমাকে ওর চেম্বারে ডেকে কি কি বলেছে আর কি কারনে আমার মাথা এখোনো রাগে গন গন করছে ।




-“রাজীব তুমি কিন্তু বড় বেশি টেনশন নিচ্ছ ব্যাপারটায়।অফিস তো আর বাড়ি নয়, সেখানে অনেক সময়ই এই ধরনের ঘটনা ঘটে ।সেটা মেনে নেওয়াই ভাল।তবে তুমি যদি রাগ না কর তাহলে বলি আমার কিন্তু মনে হয় মিস্টার সহায় তোমার ওপর ছড়ি ঘোরাতে চাইছেননা, উনি তোমার কাজে তোমাকে সাহায্যই করতে চাইছেন।




মনীষা যে সম্পূর্ণ ঠিক কথা বলেছে সেটা বুঝতে পারলেও আমি কিন্তু মনে মনে বেশ একটু অসন্তুষ্টই হলাম।আমি ভেবেছিলাম অন্যসব বাপারের মত মনীষা আমাকে এব্যাপারেও সাপোর্ট করবে, আমার পাশে দাঁড়াবে, বলবে হ্যাঁ রবি সত্যিই বাড়াবাড়ি করছে ব্যাপারটা নিয়ে ।আশ্চর্যজনক ভাবে রবির সব কাজেই আজকাল ও রবিকে সাপোর্ট করা শুরু করেছে ।এই চিন্তাটা হটাত আমার মাথায় আসতেই রাগ আরো বেড়ে গেল আমার ।মনীষার উচিত ছিল আমার সাথে আজ এগ্রি করা যে আমার মত যোগ্য সিনিয়ার এমপ্লয়ীকে একটু স্বাধীনভাবেই আজ করতে দেওয়া উচিত, ও এইভাবে আমার সব কাজে নাক গলালে হিতে বিপরীত হয়ে যখন কম্পানির সেলস ফল করবে তখন বুঝবে কত ধানে কত চাল ।মনীষা এর আগে সব ব্যাপারে আমাকে সাপোর্ট করলেও আজ কেন এমন করছে বুঝলামনা ।




 




এর প্রায় দুমাস পর এমন একটা ঘটনা ঘটলো যে আমার মনে হল কিছু একটা ব্যাপার নিশ্চই আছে ।আমি আর মনীষা এক রাতে আমার এক অফিস কলিগের বাড়িতে তার একটা বার্থডে পার্টি অ্যাটেন্ড করতে গেছিলাম।এমনিতে টুপুর হবার পর মনীষাকে পার্টিতে যাওয়া একরকম প্রায় বন্ধ করে দিতে হয়েছিল ।যদিও আমরা চাইলে আমার বড় মেয়ে টাপুরের মত আমরা টুপুরকেও আমাদের দাদা বউদির কাছে রেখে বেরতে পারতাম ।ওঁদের ফ্ল্যাটটা আমাদের ফ্ল্যাটের একবারে তলায় ।আমরা দুই ভাই একসাথেই ফ্ল্যাট কিনেছিলাম ।দাদা বউদির কোন সন্তান নেই।টাপুরতো একরকম ওদের কাছেই মানুষ হচ্ছে ।লোকে দেখে ভাবে টাপুর আমার নয় ওদেরই সন্তান ।টাপুরকে পেয়ে ওরা যেন নতুন করে বাঁচার রসদ পেয়ে গেছে ।আর টুপুর হবার পরতো ওদের আনন্দ প্রায় দিগুন হয়ে গেছে ।সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এই দুজনকে নিয়েই সময় কাটে ওদের।




কিন্তু দাদা সবে ভি-আর-এস নিয়েছেন আর বউদিরও বয়েস হচ্ছে।পাঁচ বছরের টাপুরকে সামলানো আর দেড় বছরের বাচ্চা সামলানো তো আর এক কথা নয় ।তাই আমরা একটা দিন রাতের আয়া খুঁজছিলাম।দাদা বউদি বলেছিলেন কি দরকার খরচ বাড়ানোর আমরা তো আছি ।কিন্তু আমি মনীষাকে বললাম দেখ একটা দিন রাতের আয়া পেলে তোমাদের সকলেরই একটু রিলিফ হয়ে যাবে ।অনেক খোঁজার পর দুদিন আগে একটা দিন রাতের আয়া পেয়ে গিয়েছিলাম আমরা।ভদ্রমহিলার বয়েস প্রায় পঞ্চাশ পঞ্চান্ন হবে কিন্তু খুব কাজের আর বাচ্চা সামলাতে একবারে এক্সপার্ট।ওদের হাতে টাপুর টুপুর কে ছেড়ে অনেক দিন পর পার্টিটা অ্যাটেন্ড করতে পেরেছিলাম আমরা।




যাই হোক সেদিন পার্টিতে রাত প্রায় বারটা বেজে গিয়েছিল ।আমার পরের দিন অফিস ছিল বলে আমি একটু তাড়াতাড়ি কেটে পরার তাল করছিলাম ।হাতে একটা হার্ড ড্রিংকের গ্লাস নিয়ে এদিক ওদিক উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরছিলাম পার্টির মধ্যে ।ভাবছিলাম ভিড় একটু পাতলা হলেই টুক করে সরে পড়তে হবে ।রাত প্রায় সাড়ে বারটা নাগাদ ভিড় একটু পাতলা হতেই ভাবলাম মনীষাকে গিয়ে বলি যে চল এবার আস্তে আস্তে সরে পরি ।মনীষাকে প্রথমে খুঁজে পাচ্ছিলামনা ।তারপর দেখলাম ও গার্ডেনে আমার এক অফিস কলিগের বউ নিশার সাথে গল্প করছে ।আমি সোজা ওর দিকে এগিয়ে গেলাম।গার্ডেনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে এক একটা ছোটো ছোটো জটলাতে জোর আড্ডা আর পরনিন্দা আর পরচর্চা চলছে।পুরো গার্ডেনটাই আলো দিয়ে ভীষণ সুন্দর করে সাজানো ।ভিড় একটু পাতলা হয়ে গেলেও এখনো অনেক লোক ছিল পার্টিতে।মনীষা আর নিশা পাশাপাশি দাঁড়িয়ে গল্প করছিল ।ওদের পেছনটা আমার দিকে থাকায় ওরা আমাকে দেখতে পায়নি ।তাছাড়া ওরা এত মগ্ন হয়ে গল্প আর হাঁসাহাসি করে যাচ্ছিল যে চারপাশে কি হচ্ছে সেই ব্যাপারে ওদের কোন হুঁস ছিলনা ।কি এত গল্প করছে ওরা? এমনিতে নিশা মুখে প্রকাশ না করলেও মনীষাকে মনে মনে বেশ হিংসা করে ।কারন অনেকটা বিদ্যা বালানের মত দেখতে সুন্দরী আমার বউকে ওর বর মানে আমার কলিগ খুব পছন্দ করে।মনীষার রান্না, ওর ঘর সাজান, সব কিছুই তার খুব পছন্দ ।মনীষাকে দেখতে পেলেই ও মনীষার সাথে খুনসুটি শুরু করে ।আজও করেছে।




নিশাও দেখতে খুব সুন্দরী। কিন্তু সুন্দরী হলেও আমি কিন্তু ওকে একদম পছন্দ করিনা ।এর কারন ওর স্বভাব চরিত্র খুব একটা ভাল নয় আর ও যা মুখে আসে তাই বলে দেয়।নিশার মুখের কোন বাঁধন নেই ।এমন কি গুরু লঘু কোন জ্ঞানও নেই।ওর কথা বলার স্টাইল অনেকটা ষোল সতেরো বছরের ডেঁপো ছেলেদের মতন।




আমি মনীষাকে ডাকতে যাব এমন সময় ওদের একটা কথা আমার কানে এল ।কথাটা শুনে আমি ফ্রিজ হয়ে গেলাম ।এসব কি বলছে ওরা ?ওদের ডিস্টার্ব না করে টুক করে ওদের পেছনে একটা ছোট জটলার পাশে এমন ভাবে দাঁড়ালাম যাতে ওদের সব কথা শুনতে পেলেও ওরা আমাকে দেখতে না পারে।নিশা বললো
-“বুঝতেই পারছি লোকটাকে তোর খুব মনে ধরেছে”।




এই বলে নিশা মনীষার হাতে ছোটো করে একটা খিমচি কেটে দিল।




-“ধুত বাজে বকিসনা তো।ওফ সত্যি তোকে কোন কথা বলা নয়।বললেই শুরু হয়ে যাবি”।




কোন লোকটার কথা বলছে ওরা? আমি একটু এদিক ওদিক তাকিয়ে খুঁজতে চেষ্টা করলাম কার কথা বোলছে ওরা… কিন্তু পেলামনা।




-“মিথ্যে বলিসনা তুই মনীষা, তুই যখন ওর কথা বলছিলি তখন তোর মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল যে তুই লোকটার প্রেমে পরেছিস”।




-“কি যে আজে বাজে কথা বলিসনা তুই।জানিস রাজীব ওকে একদম দেখতে পারেনা”।




-“আমি রাজীব কে দোষ দিতে পারিনা।বিশেষ করে আমার বউ যদি আমার বসের প্রেমে পড়তো তাহলে আমিও তাকে দুচোখে দেখতে পারতামনা”।




-“আবার বাজে কথা বলছিস?আমি মোটেই মিস্টার সহায়ের প্রেমে পরিনি”।




-“পরেছিস বাবা পরেছিস।ওর মত সেক্সি আর হ্যান্ডসাম দেখতে পুরুষের প্রেমে কেই বা না পরে?তোর কোন দোষ নেই এতে।এটা স্বাভাবিক”।




-“তুই বড্ড বাজে ইয়ার্কি করিস নিশা ।প্রায় দশ বছর হয়ে গেল আমার আর রাজীবের বিয়ের আর আমি এখন প্রেমে পরবো।আমি কি পাগল”?




-“কেন বিয়ে করলে প্রেমে পরা যায়না বুঝি।প্রেমে পরবি, লাগাবি, বুকের দুধ খাওয়াবি, সব করতে পারবি ।শুধু তোর বর না জানলেই হল ।হিহিহিহি”




-“ধ্যাত বাজে বকিসনা তো।তুই গিয়ে দুধ খাওয়াগে যা ।যত সব নোংরা নোংরা কথা তোর”।




-“কেন এতে নোংরার কি আছে?আমিও খাওয়াই তো।আমার বুকের দুধ তো বাড়ির সকলেই খায়।বাচ্চা খায়, বাচ্ছার বাবা খায়, বাচ্ছার কাকা খায় ।আমার সাথে আমার দেওরের ইন্টুমিন্টুর ব্যাপারটাতো তুই জানিস।যাকে বলে একবারে ফুল ফ্যামিলি নরিসমেন্ট এর দায়িত্ব আমার ওপর হি হি হি”।




-“ইশ নিশা তুইনা ।আমি শুধু বললাম মিস্টার সহায় খুব স্মার্ট, ওঁকে দেখতে খুব হ্যান্ডসাম আর সেক্সি।আর তুই কি কথা থেকে কি কথা শুরু করলি ।নাঃ আজ আর তোর সঙ্গে মস্করা করে আমার কাজ নেই।চল অনেক রাত হয়েছে, তাড়াতাড়ি বাড়ি যেতে হবে, কাল রাজীবের অফিস আছে”।




আমি চট করে সরে পরলাম ওখান থেকে।রাতে গাড়ি চালিয়ে বাড়ি ফেরার সময় আমি মনে মনে ভাবছিলাম কি আশ্চর্য এই মেয়ে মানুষের মন।সেদিন মলে মাত্র পাঁচ মিনিট কথা বলেছে রবি আমাদের সঙ্গে, আর এর মধ্যেই মনীষার মত কনজারভেটিভ মেয়ের ওকে শুধু হান্ডসাম আর সেক্সিই নয় ভীষণ স্মার্টও মনে হল। “স্ট্রেন্জ”ভাবলাম আমি।তারপরেই গত কয়েকদিনের ঘটনার কথা এক এক করে মনে পরতে থাকলো আমার।মনে পরলো কিভাবে মনীষা গত কয়েক মাস ধরেই সব ব্যাপারেই রবিকে সমর্থন করছিল।মনে পরলো সেদিন মলে মনীষা কি ভাবে একদিন রবিকে আমাদের বাড়িতে নেমন্তন্ন করতে বায়না শুরু করেছিল।এসব ভাবতেই বুকের ভেতরটা সেদিনকার মত কেমন যেন জ্বালা জ্বালা করতে শুরু করলো আমার।

Like Reply
#4
পরের দিন অফিসে আর গত রাতের ঘটনা আমার মনে ছিলনা, কারন অফিসে একটা সিরিয়াস প্রবলেম এসে উপস্থিত হয়েছিল। আমার একটা কাস্টমার আমাকে কমপ্লেন করলো আমি নাকি ওকে পাঠানো আমার কন্ট্র্যাক্ট পেপারে একটা ইমপর্টেন্ট ইস্যু বাদ দিয়েছি যেটা নাকি মার্কেটিং করার সময় ওদের সাথে আমি ডিসকাশ এবং নেগসিয়েট করেছিলাম। ওরা বললো আমি নাকি ওদের ধোঁকা দেয়ার চেষ্টা করছি। শেষে অনেক বুঝিয়ে ওদের সামলালাম আর ওদের কন্ট্র্যাক্ট পেপারটা নতুন করে ওদের মনোমতো করে লিখে দিলাম। ঝামেলাটা মেটার পর ভাবলাম এটা রবি কে আমার আগেই জানানো দরকার কারন রবি পরে কোনভাবে জেনে গেলে আবার আমাকে চেম্বারে ডেকে আলতু ফালতু বকবে। তাই আমি নিজেই রবির চেম্বারে গিয়ে ওকে বললাম ব্যাপারটা।




-“এটা কিন্তু ঠিক হচ্ছেনা রাজীব। আমাদের নিশ্চিত হতে হবে যে কন্ট্র্যাক্ট পেপারে এমন মারাত্বক ভুল আমরা আর না করি যাতে করে ক্লায়েন্ট মনে করে যে তাদের কে ঠকানো হচ্ছে। এতে করে আমাদের ক্লায়েন্টবেসই শুধু নয় মার্কেটে আমাদের গুডউইলও নস্ট হয়ে যাবে। এই ভুল না শোধরালে তোমাকে কিন্তু এবার বেশ বিপদে পরতে হবে রাজীব। আমি অবশ্য এবারের মত ব্যাপারটা চেপে যাব কিন্তু তুমি সিনিয়র এমপ্লয়ী, দেখ এরকম ভুল যেন আর না হয়। মনে রেখ এরকম ভুল হতে থাকলে শুধু তুমিই নয় আমিও তোমার সাথে ফেঁসে যাব”।




-“ঠিক আছে রবি আমার মনে থাকবে”।




-“দেখ রাজীব আমি আর চাইনা তোমার কন্ট্র্যাক্ট পেপারগুলো পড়ে দেখতে, কারন তুমি অনেক সিনিয়র এমপ্লয়ী, তবে আমি চাই এবার থেকে তোমার সব ক্লায়েন্ট নেগসিয়েশানে তুমি আমাকে ইনভল্ব করবে”।




রবির চেম্বার থেকে বেরিয়ে মনটা খিঁচরে গেল আমার। যদিও এবার রবির কথা শুনে মনে হল ও আমার দিকেই আছে তবুও এবার থেকে আমার সব ক্লায়েন্ট নেগসিয়েশানেই ওকে ইনভল্ব করতে হবে শুনে একদম খুশি হতে পারলামনা আমি।




সেদিন রাতে বাড়ি ফিরে সকালের ঘটনার কথা আর রবি আমাকে কি বললো সবই মনীষাকে খুলে বললাম । বললাম “আমি কিছুতেই মনে করতে পারছিনা যে ক্লায়েন্ট আমাকে যে ইস্যুটা বাদ দেয়ার কথা বলছে সেটা আমি কন্ট্র্যাক্ট পেপারে মেনশান করতে ভুলে গেছি”। মনীষা টাপুর কে বিছানায় বসে পড়াচ্ছিল, ওকে পড়ানো থামিয়ে ও আমার দিকে তাকিয়ে বললো




–“তুমি বার বার এতো নিশ্চিত হচ্ছো কি করে যে তুমি কোন ভুল করনি”?




খট করে কথাটা কানে বাজলো আমার। তাহলে কি মনীষা ভাবতে শুরু করেছে যে আমার পারফরম্যান্স আর আগের মত নেই। ওর এক্সপ্রেসান দেখেতো মনে হল আমাকে আর ও আগের মত অফিসের অন্য সব মার্কেটিং একজিকিউটিভদের থেকে সেরা বলে মনে করেনা।




-“আমি ঠিক জানিনা কিন্তু আমার স্থির বিশ্বাস মনীষা আমাকে কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবে অফিসে নিচু দেখানোর চেষ্টা করছে”।




-“কি আবল তাবোল বকছো রাজীব। তুমি নিজেই একটু আগে বললে কন্ট্র্যাক্ট পেপার তুমি নিজেই রেডি করেছো আর মেল করে দিয়েছো। তাহলে বল কন্ট্র্যাক্ট পেপার অন্য কাউর হাতে পরবে কি করে? আর যদি পরেও তাহলে তোমার কন্ট্র্যাক্ট পেপার পালটে সে তোমার মেল আইডি থেকে পাঠাবেই বা কি করে।তোমার মেল আইডি পাসওয়ার্ড তো তুমি না বললে আর কাউরই জানার কথা নয়।সবচেয়ে বড় কথা হল পাঠিয়ে তার লাভটাই বা কি হবে”?




আমি মনীষার যুক্তি বুঝলাম, অকাট্য যুক্তি, এর কোন উপযুক্ত উত্তর আমার কাছে ছিলনা।




-“হুম সেটা অবশ্য ঠিক বলেছ। তাহলে হয়তো সত্যিই আমি কোন ভুল করেছি। ব্যাপারটা আমার এখন ঠিক মাথায় ঢুকছেনা”।




মনীষাকে বললাম বটে আমার ভুল হতে পারে কিন্তু আমি মনে মনে কিছুতেই ব্যাপারটা মানতে পারছিলাম না।




-“আর তুমি যদি সত্যিই ভুল করে থাক তাহলেই বা কি? ভুল তো মানুষ মাত্রেরই হয়। তোমাকে শুধু চেষ্টা করতে হবে যেন এরকম ভুল আর না হয়। তুমি চিন্তা করে দেখ এবার থেকে তুমি কি স্টেপ নিতে পার যাতে করে তোমার আর কোন ভুল কখনো না হয়।একটা কাজ করতে পার। তুমি মিস্টার সহায় কে বলতে পার যাতে কোথাও পাঠানোর আগে আবার ও তোমার কন্ট্র্যাক্ট পেপারগুলো চেক করা শুরু করে”।




মনীষার কথা শুনে চড়াক করে মাথায় রক্ত উঠে গেল আমার।




-“না, আমি কোন ভুল করি নি। আমার মনে হচ্ছে সত্যিই কেউ উঠে পরে লেগেছে আমাকে ধংস করার জন্য”।




-“কি পাগলের মত বলছো রাজীব।আমার মনে হচ্ছে তোমার কোন কারনে অসম্ভব স্ট্রেস পরছে। চল কোথাও একটা বেরিয়ে আসি। আমার মনে হচ্ছে তোমার এখন একটা চেঞ্জ দরকার”।




-“হ্যাঁ স্ট্রেস পরছে আমার ঠিকই কিন্তু এই প্রবলেমটা তার জন্য হচ্ছেনা”।




-“তুমি তো আমার ভয় ধরিয়ে দিচ্ছ রাজীব ।তুমি কি কোন সাইকোলজিস্ট কে দেখাবে”?




আর ধৈর্য্য রাখতে পারলামনা আমি। বলে ফেললাম মনের কথা।




-“তুমি এই কথা বলছো মনীষা, আমার তো চিন্তা হচ্ছে আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে। যবে থেকে এই ঘটনাগুলো ঘটছে আমি তো একবারও দেখছিনা যে তুমি আমাকে সাপোর্ট করছো”।




-“এই সব আজে বাজে কথার কোন মানে আছে রাজীব। আমি তোমার বউ আর আমি সবসময়ই তোমার দিকে। আমি শুধু তোমাকে পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করতে চাইছি। ছাড় এসব কথা, আমি শুতে চললাম”।




বুঝলাম প্রচণ্ড রেগে গেছে ও আর আলোচনাটার আজকের মত এইখানেই সমাপ্তি হল। মনীষা শুতে যাবার পর আমি একটা স্কচের গ্লাস নিয়ে বসার ঘরে চলে গেলাম। ঘটনাটা ঠাণ্ডা মাথায় বোঝার চেষ্টা করলাম আমি। আমার সাথে মনীষার এই খটাখটিটা কেন হল? হটাত করে ওর ওপর এত রেগে কেন গেলাম আমি? তাহলে কি আমার ইগোর জন্য এটা হল? আমি কি মেনে নিতে পারলাম না যে মনীষা আমার বউ হয়েও আমার পক্ষ নিচ্ছেনা? আমি কি ভেবেছিলাম যে মনীষা ভাবছে আমার ক্ষমতায় কোন খামতি আছে বলে বার বার আমি একই ভুল করছি? এমন সময় মনে পরে গেল সেদিনের পার্টিতে নিশা আর মনীষার রবি কে নিয়ে আলোচনা। মনীষার মনে হয়েছে রবি খুব স্মার্ট, গুডলুকিং আর সেক্সি। বুকের ভেতরটা কেমন যেন করে উঠলো আমার যখন মনে হল সেদিনের পর থেকে মনীষা কি ভাবে বার বার আমার সাইড না নিয়ে রবির সাইড নিচ্ছে। ওকে সাপোর্ট করছে। মনের দুঃখে অনেকটা মদ খেয়ে ফেলে সোফার ওপরই সেই রাতে শুয়ে পরলাম আমি।

পরের দিন অফিসে পৌঁছতেই আমাদের রিসেপশনিস্ট আমাকে জানালো যে রবি আমার জন্য কনফারেন্স রুমে অপেক্ষা করছে। ওর সাথে দুজন ভিসিটর ও রয়েছে।




রিসেপশনিস্ট মেয়েটিকে থ্যাঙ্কস জানিয়ে তাড়াতাড়ি কনফারেন্স রুমের দিকে হাঁটা দিলাম আমি। কনফারেন্স রুমের ভেতরে একটি মহিলা ও একটি পুরুষের সাথে বসে কথা বলছিল রবি। আমাকে দেখেই ওরা সকলে উঠে দাঁড়ালো আর আমাকে গ্রীট করলো। পুরুষটি ছিলেন মিস্টার শর্মা, আমার পুরনো ক্লায়েন্ট।




-“রাজীব তোমার ক্লায়েন্ট শর্মা প্রোডাক্টের সি-ই-ও মিস্টার শর্মা আমাকে ফোন করেছিলেন একটা বড় প্রজেক্টের ব্যাপারে। আমি লাস্ট দুমাস ওই প্রোজেক্টটা নিয়ে খুব খেটেছিলাম। উনি আজ সঙ্গে এনেছেন ওনার স্ত্রী এবং ওনার কম্পানির পার্টনার তনুজা শর্মা কে। ওঁরা আমাদের সাথে একটা বিরাট আস্যাইনমেন্টের ব্যাপার পার্টনারশিপে যেতে চান।




আমি অবাক হয়ে ভাবছিলাম কি ব্যাপারে আজ ওরা এসেছেন। আমি গত এক বছর ধরে প্রায় প্রতি মাসেই মিস্টার শর্মার সাথে যোগাযোগ রাখছিলাম। এই এক বছরে আমারা প্রায় বন্ধুর মতন হয়ে গিয়েছিলাম। আমি তো ধরেই নিয়েছিলাম যে দু একমাসের মধ্যেই আমি ওঁকে কোন না কোন একটা প্রজেক্টের ব্যাপারে রাজী করিয়ে নেব। আমার অবাক লাগছে এই ভেবে যে রবি মাত্র দুমাসেই ওনাকে রবির কথা মত একটা বিরাট আস্যাইনমেন্টের ব্যাপারে কি করে রাজী করিয়ে নিল।




-“রাজীব তোমাকে দেখে ভাল লাগলো, কেমন আছ? মিস্টার শর্মা আমার দিকে হাঁসি মুখে তাকিয়ে বললেন”।




-“আপনাকে আমাদের অফিসে দেখে আমারও খুব ভাল লাগলো স্যার। আমি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি রবির সাথে এত বড় একটা আস্যাইনমেন্টের ব্যাপারে রাজী হওয়ার জন্য”।




-“হাই রাজীব আমি তনুজা। মিসেস শর্মা বলে উঠলো”।




ভদ্রমহিলা বেশ সুন্দরী। উনি একটা স্লিভলেস ব্লাউজ আর তার সাথে একটা দারুন সুন্দর প্রায় ট্রান্সপারেন্ট শাড়ি পরেছিলেন। ভদ্রমহিলার মাই দুটি বিশাল। ওগুলো যেন ব্লাউজ ছিঁড়ে বেরিয়ে পড়তে চাইছে। ওঁর চোখে খুব সুন্দর একটা রিমলেস চশমা রয়েছে। ওনার দিকে তাকিয়ে কথা বলতে গেলে ওনার মাই দুটোর দিকে বার বার চোখ চলে যায়। ওঁর ট্রান্সপারেন্ট শাড়ির ভেতর দিয়ে ওনার নরম পেট আর অত্যন্ত সুগভীর একটি নাভি ছিদ্র চোখে পরে। ভদ্রমহিলার চোখ দুটি ভীষণ উজ্জ্বল আর মুখটিও বেশ মিষ্টি। সব মিলিয়ে যাকে বলে একটা দারুন প্যাকেজ




-“তুমি কি অনেক দিন কাজ করছো রাজীব রবির সাথে”?




-“না না মাত্র কয়েক মাস”।




-“ভাল, আচ্ছা তুমি আর আমার হাজব্যান্ড এখানে বসে সমস্ত টেকনিকাল দিক গুলো দেখে নাও, আমি ততক্ষণ রবির চেম্বারে বসে কনট্র্যাক্ট পেপারের একটা বেসিক স্ট্রাকচার তৈরি করে নিই। চল রবি তোমার চেম্বারে যাওয়া যাক”।




এই বলে মিসেস শর্মা রবির সাথে কনফারেন্স রুম থেকে বেরিয়ে গেল।




-“রাজীব তোমাকে আমার ভীষণ ভাল লাগে। আমার মনে হয় তোমাকে আমি ভেতর থেকে বিশ্বাস করতে পারি। তোমার সাথে গত এক বছরে কয়েকটা ছোটখাট ডিল তো আমি করেছি আর সব সময়ই দারুন সার্ভিস পেয়েছি তোমার কাছ থেকে”।




-“আমাকে বিশ্বাস করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ মিস্টার শর্মা”।




-“রাজীব, আসলে আমি এই বছরেই আমার কম্পিটিটর আরো দুটো কোম্পানি কিনছি। ওগুলো কেনার পরে আমার প্রোডাকসান এখনকার থেকে প্রায় তিনগুন হয়ে যাবে। আমার পার্টনার এবং আমার স্ত্রী তনুজার নিউইয়র্কের একটা কনফারেন্সে তোমাদের মিস্টার রবির সাথে পরিচয় হয়। ওরা দু দিনেই খুব ভাল বন্ধু হয়ে যায়। তনুজা তো ওর সার্ভিস প্ল্যান শুনে খুব ইমপ্রেশ হয়েছে। ওই আমাকে জোর করলো তোমাদের কোম্পানি কে আমাদের প্রোডাক্ট গুলোর সার্ভিসের ব্যাপারে একবারে পাঁচ বছরের কনট্র্যাক্ট দিয়ে দিতে”।




আমি মনে মনে ভাবলাম বাপরে একবারে পাঁচ বছর তাহলে তো বিশাল কনট্র্যাক্ট হবে এটা। ঠিক কত টাকার কনট্র্যাক্ট হবে এটা ভাবতে ভাবতে আমার হার্ট বিট বেড়ে গেল।




আমরা পরের দু ঘণ্টা ধরে বসে বসে একটা রূপরেখা তৈরি করলাম কি কি ভাবে আমরা সার্ভিস দিলে ওঁর কম্পানির উপকার হবে।ওনার কাছ থেকে ইস্যু ধরে ধরে বুঝলাম উনি ঠিক কি রকম সার্ভিস চাইছেন আমাদের কাছ থেকে।মিটিং শেষ হবার আগে আমরা ঠিক করলাম আমি প্রতিসপ্তাহে ওঁকে ফোন করে আমাদের অগ্রগতির ব্যাপারে ইনফর্ম করবো।




সেই সপ্তাহের শুক্রবার নাগাদ আমি আমার তিনটে কেস একসাথে ক্লোজ করে ক্লায়েন্টদের সাথে ডিল ফাইনাল করে ফেললাম । অফিস থেকে বেরনোর আগে আরো একটা ক্লায়েন্টর কাছ থেকে আমার ফোন এল ।ওরাও বললো ওরা দু একদিনের মধ্যেই ওদের ডিলটা ফাইনাল করতে চায়। আমার সে দিনটা খুব ভাল যাচ্ছিলো।চারটে ডিল ফাইনাল করা মানে অনেক টাকার কমিশন। ব্যাপারটা আমি আমার অফিস কলিগ শেখর কে বলতে ও বললো -“গুরু তাহলে কিছু খরচা তো কর”।শেখর ওর মন মেজাজ ভাল থাকলে আমাকে প্রায়ই হোটেলে নিয়ে গিয়ে লাঞ্চ ফাঞ্ছ করায়। আমি তাই ওকে বললাম -“ঠিক আছে তুই যদি একটু আর্লি ডিনার করতে পারিস তাহলে চল আজ আমার সাথে ডিনার করবি”। ও এককথায় রাজী হল।মনীষা কে ফোন করে জানালাম -“আমার ফিরতে একটু দেরি হবে কারন আমি একবারে ডিনার সেরে আসবো।তুমি আর রান্নটানা কোরোনা, তোমারটাও প্যাক করে নেব”। মনীষা বোললো -“ঠিক আছে”।




সেদিন ডিনার করতে করতে শেখরের সাথে নানা কথা আলোচনার মধ্যে শর্মা প্রোডাক্টস এর সাথে আমাদের করা বিশাল ডিলটার কথা এসে পরলো। শেখর হটাত বললো –“তাহলে গুরু মালটা কেমন দেখলে বল”? আমার বুঝতে একটু সময় লাগলো যে ও কার কথা বলছে। তারপর বুঝতে পারলাম যে ও মিসেস শর্মার কথা বলছে।




শেখর বললো –“আমি জানি বেশ কয়েক মাস ধরে তুমি ওই ক্লায়েন্টটার পেছনে খাটছো কিন্তু তোমার একটা কথা জানা দরকার যেটা বোধহয় তুমি এখনো জানো না। জানি তোমার শুনতে একটু খারাপ লাগবে কিন্তু আমার মনে হল এটা আমার তোমাকে জানানো দরকার”।




-“আরে তুই নতুন কি আর বলবি? আমি এখন ওই রবির জন্য যে অবস্থার মধ্যে পড়েছি তার থেকে আর কি খারাপ লাগবে আমার”?




-“শোন শোন… রবি ওই কনট্র্যাক্টটা কি ভাবে এত সহজে পেয়ে গেল জানো? আমি শুনেছি রবি মিসেস শর্মা কে পটিয়ে ফেলেছে, ও মিসেস শর্মা কে প্রায়ই একটা রিসর্টে নিয়ে গিয়ে চুঁদছে।মিসেস শর্মা এখন রবির প্রেমে পাগল, ও যা বলছে তাই করছে”।

-“উরি শালা, তা তুই এসব জানলি কি করে”?




-“আর বলোনা একদিন দুপুরে রবি আমাকে বোললো শেখর তোমার কোন কাজ না থাকলে আমার সাথে একটা মিটিংএ চল।আমি রাজীবকেই নিয়ে যেতাম কিন্তু ও অফিসে নেই তাই তোমাকে বলছি। জানোইতো তো ভাইস প্রেসিডেন্ট বলে কথা, গেলাম রবির সাথে। মিটিংটা ছিল মিসেস শর্মার সাথে।মিটিং শেষ হবার পর রবি আমাকে গাড়িতে জিজ্ঞেস করলো –“কি রকম বুঝলে ওদের অফারটা? আমি বললাম –“অফারটা ইনটারেস্টিনং তবে ভাল ভাবে কস্ট অডিট করে দেখে নিতে হবে যে সত্যি সত্যিই আমাদের ভাল প্রফিট থাকবে কিনা”? আমাকে অবাক করে রবি বললো –“আরে লাভ লোকসান তো পরের কথা কিন্তু মিসেস শর্মার সাথে একসঙ্গে কাজ তো করা যাবে। দেখেছ কি দারুন দেখতে মহিলাকে? আমি তো যে দিন ওকে প্রথম দেখি সেদিনই কাত”।




আমি ভাবলাম রবি বোধহয় আমার সাথে ইয়ার্কি মারছে । কিন্তু রবি মিসেস শর্মার রুপের প্রশংসা করেই চললো। আমি তখনই বুঝলাম রবি ওই অফারটা নিয়ে নেবে ওতে খুব একটা লাভ না হলেও। বোঝ তাহলে ব্যাপারটা, শুধু মাত্র একটা মেয়ের জন্য অত বড় ডিসিশিনটা নিয়ে নিল ও।আবার আমাকে বলে কিনা -“বুঝলে শেখর এরকম একটা বউ পেলে জীবনে আর কোনদিন কোন মেয়েদের দিকে তাকাতাম না আমি। কি মাগীবাজরে লোকটা”?




আমি অবাক হয়ে বললাম –“বলিস কিরে? বোকাচোঁদাটা নিজেকে কি ভাবে কি”?




শেখর বললো-“আরে আমি আগেই এদিক ওদিক থেকে শুনেছিলাম মালটা মাগি ছাড়া আর কিছু বোঝেনা। আর ভাল মেয়ে পেলে তাকে যেমনভাবে হোক নিজের বিছানায় শুইয়ে তবে ছাড়ে। জানিস আমার দিল্লি অফিসের এক বন্ধু বলেছে ওর নাকি একটু ভারী চেহারার ম্যারেড মেয়েদের ওপর খুব লোভ। ওর নাকি এরকম অনেক বেড পার্টনার আছে”?




আমি বললাম –“মারধোর খাবে দেখবি একদিন । বড় লোক হলেও সব সময় বাঁচা যায়না বুঝলি? একদিন না একদিন ও ঠিকই ফাঁসবে, আমার কথা মিলিয়ে দেখে নিস”।




শেখর বললো-“জানো মেয়েদেরও নাকি ওকে খুব সেক্সি লাগে। দেখো না আমাদের অফিসের মেয়েগুলোও কেমন হ্যাংলার মতন সবসময় ওর কথা আলোচনা করে এমনকি ওর সাথে একটু কথা বলতে পারলে বর্তে যায়। আমার বন্ধুটা বলেছিল মেয়েরা নাকি ওর সাথে কথা বলতে শুরু করলে কেমন একটা হিপ্নোটাইজড মত হয়ে যায়। মেয়েদের পটিয়ে বিছানায় নিয়ে যেতে ওকে নাকি কোন বেগই পেতে হয়না। দেখলেনা মিসেস শর্মার ব্যাপারটা। রবি যে ভাবে চেয়েছিল সেই ভাবেই কনট্র্যাক্ট পেপারটা সাইন করালো মিসেস শর্মা কে দিয়ে। জানো আমি এও শুনেছি মিসেস শর্মার নাকি দুটো ছোটো ছোটো বাচ্চা আছে”।




-“বলিস কিরে শেখর। ভদ্রমহিলা এরকম। উনি নিজেও তো খুব সুন্দরী আর বড়লোক, ওর এতো হাংলামো কেন কে জানে”?




-“আরে রবির চেহারাটা দেখেছো গুরু, ঠিক যেন একটা গ্রিক ভাস্কর্য। মুখটাও বেশ পুরুষালী আর সুন্দর। জানো প্রায় ছয় ফুট তিন ইঞ্চি লম্বা ও।





-“হ্যাঁ, আর সব মেয়েরাই তো মনে মনে ঠিক এরকমই পুরুষ চায়”।




শেখর হাঁসতে হাঁসাতে বললো –“হ্যাঁ ঠিক বলেছো, আর পায়না বলেই আমাদের মত সাধারন পুরুষদের বিয়ে করে কাজ চালিয়ে নেয়”। আমিও হেসে উঠলাম ওর কথা শুনে।




যাই হোক সেদিন শেখরের সাথে ডিনার শেষ করে ফেরার সময় গাড়ি চালাতে চালাতে ভাবছিলাম রবির কথা। সত্যি নিজের প্রতি একটা আশ্চর্য কনফিডেন্স আছে ওর। সুপুরুষ, স্মার্ট, মার্জিত অথচ ডমিন্যান্ট পারসোনাল্যাটির রবি এই জন্যই খুব সহজে মেয়েদের ইমপ্রেস করতে পারে। হটাত আমার মনে পড়লো মনীষার কথা, সঙ্গে সঙ্গে নিজের গাটা কেমন যেন শিরশির করে উঠলো আমার। এই জন্যই বোধ হয় রবিকে দেখা মাত্র মনীষারও খুব ভাল লেগে গিয়েছিল ওকে। মনে পরলো শেখরের কথা, রবি নাকি ভারী চেহারার বিবাহিত মহিলাদের খুব পছন্দ করে। আমার মনীষাও তো ভারী চেহারার আর বিবাহিত।তাহলে কি রবি সুযোগ পেলে মনীষাকেও শোয়াবে ওর সাথে?

Like Reply
#5
সেদিন রাতে বাড়ি ফিরে আমি মনীষাকে রবির সাথে আমার আর আমার পুরনো ক্লায়েন্ট মিস্টার শর্মার গত কয়েকদিন আগেকার সেই মিটিংটার কথাটা বললাম। এও বললাম যে রবি কনট্র্যাক্টটা সাইন করে ফেলেছে। মনীষা শুনে বললো




–“দেখলে তো? বললাম না লোকটা খুব স্মার্ট আর বুদ্ধিমান। তুমি যদি কোন ব্যাপারে ওর কাছে সাহাজ্য চাও দেখবে ও তোমাকে ভাল বুদ্ধিই দেবে”।




ওর কথা শুনে আমার মাথায় যেন আগুন জ্বলে গেল। কিন্তু আমি ওকে মুখে কিছুই বললাম না। তবে সেই রাতে মনীষার সাথে আমি আর কোন কথাই বললাম না । সারাক্ষণ গুম হয়ে বসে টিভি দেখতে থাকলাম। রাতে বিছানায় শুয়ে কিছুতেই ঘুম আসতে চাইছিলনা আমার। ঘুরে ফিরে বার বার শেখরের কথা মনে পরছিল।এই রবিকে কিছুতেই যেন মন থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারছিলামনা আমি। ভাবছিলাম রবির কথা। ওর মত অবিবাহিত ধনী সুপুরুষ বস কে পেয়ে অফিসের বেশিরভাগ মেয়েদেরই যেন নাল পরতে শুরু করেছে। অনেকেই রবির সাথে রোম্যান্টিক একটা সম্পর্ক চেয়ে ওর কাছে আসার চেষ্টা করছে। রবি একনম্বরের মাগিবাজ হয়েও অফিসের পরিবেশের কথা চিন্তা করে বোধহয় ওদের কে এখনো পর্যন্ত এড়িয়ে চলছে। কিন্তু এতে করে ও মেয়েদের কাছে আরো যেন কামনার বস্তু হয়ে উঠছে।




এমনিতে অফিসের সিনিয়র মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ হিসেবে আমি অফিস গসিপে কান দিইনা। তবে অন্য কয়েকটি মেয়েদের কাছ থেকে রবির সম্বন্ধে দু একটা গুজব আমারও কানে এসেছে। সেই মেয়েরা বিশ্বাস করে রবির সাথে অফিসের কোন না কোন মেয়ের কিছু একটা বোধহয় চলছে। আমি ভাবছিলাম যতই নিরাশক্ত ভাব দেখাক রবি, ওর মত মাগিবাজ লোক মেয়েছেলে ভোগ না করে বেশি দিন থাকতে পারবেনা। বিশেষ করে আমাদের অফিসেই যখন ওর পছন্দ মত বিবাহিত ভারী চেহারার অনেক মহিলা রয়েছে।




তখনই একটা ব্যাপার আমার মনে পরলো। কয়েক সপ্তাহ আগে আমি আমার মার্কেটিং টিমের সঙ্গে একটা মিটিং করছি। এমন সময় রবি আমার ঘরে ঢুকে আমাকে বললো ওর নাকি আমার একটা ক্লায়েন্টের ব্যাপারে কি একটা রিপোর্ট চাই। আমি ওকে বললাম ঠিক আছে রবি মিটিংটা শেষ হলেই আমি তোমার চেম্বারে গিয়ে দিয়ে আসছি। হটাত দেখলাম রবি আমার টিমের ঋতিকা বলে একটা মেয়ের দিকে চোখে কেমন যেন একটা ঈশারা করলো। কেউ দেখেনি ব্যাপারটা কিন্তু আমার চোখ এড়ায়নি। ঋতিকা ওমনি লাফিয়ে উঠে -“আমি বের করে দিচ্ছি স্যার আমার কাছে আছে রিপোর্টটা” বলে আমাকে কিছু না বলেই রবির সাথে বেরিয়ে গেল।আমি মিটিং বন্ধ করে অপেক্ষা করছিলাম কখন ও ফিরবে। পাঁচ মিনিট , দশ মিনিট, পনের মিনিট হয়ে গেল। তারপরেও ঋতিকা ফিরলোনা দেখে আমি মিটিং আবার চালু করে দিলাম। ঋতিকা প্রায় আধঘণ্টা পরে ফিরলো আমাদের রুমে। কেমন যেন একটা আলুথালু ভাব দেখলাম ওর চেহারায়, চুলে এবং শাড়িতে। ব্যাপারটা কিরকম যেন অদ্ভুত লেগেছিল আমার সেদিন, তখন অবশ্য রবির ব্যাপারে এতসব জানতাম না আমি।ঋতিকা বিবাহিত, দেখতে খুব মিষ্টি, আর একটু ভারী চেহারার। তাহলে ওই কি গুজবের সেই মেয়ে যার সাথে রবির অ্যাফেয়ার চলছে?




প্রায় রাত তিনতে নাগাদ অবশেষে ঘুমতে পারলাম আমি। পরের দিন সকালে চা দিতে এসে মনীষা বললো –“তুমি রাগ করেছো আমার ওপর রাজীব? আমি কিছুই বললামনা উত্তরে। মনীষা বললো –“শোন আমি যদি এমন কিছু বলে থাকি যাতে তোমার খারাপ লেগেছে তাহলে তা না জেনেই বলেছি, তোমাকে দুঃখ্য দেবার কোন ইচ্ছে আমার ছিলনা । এস আমরা দুজনেই ব্যাপারটা ভুলে যাই। আমি জানি তুমি অফিসের ঝামেলা নিয়ে কদিন একটু চাপে আছ। আচ্ছা কাল যে একটা এতবড় সুখবর দিলে, যে তোমাদের অতো বড় কনট্র্যাক্টটা সাইন হয়ে গেছে, তোমার মন নিশ্চয়ই এখন একটু ভাল হয়েছে”।




-“মনীষা আমার মন একবারে ভাল নেই।ভীষণ ফ্রাসটেটেড লাগছে আমার। কারন আমার মনে হচ্ছে আমারই ক্লায়েন্টের সাথে এতো বড় কনট্র্যাক্টটা সাইন হল অথচ আমিই ব্যাপারটায় খুব একটা ইনভল্ব নই। এই কনট্র্যাক্টটা তো আমারই ফাইনাল করা উচিত ছিল”।




-“এরকম ভাবছ কেন রাজীব, এতো বড় কনট্র্যাক্টট সাইন হলে সকলেকেই তো হাত লাগাতে হয়। আর মিস্টার সহায় যখন ওই ভাবে কনট্র্যাক্টটা সাইন করতে পেরেছে তখন ও নিশ্চই তোমার থেকেও বেশি খেটেছে। কি আমি ঠিক বলছি তো”?




আবার মাথা গরম হয়ে গেল আমার। মাথা ঘুরিয়ে মনীষার দিকে তাকালাম আমি তারপর ওর চোখের দিকে একটা কড়া দৃষ্টি হেনে বললাম “একবারেই না”। মনীষা উত্তরে আমাকে যা বললো তাতে আমার মাথা আরো গরম হয়ে গেল। ও বললো




-“কি বলছো তুমি রাজীব? ওই শর্মা ভদ্রলোক তোমার পুরনো ক্লায়েন্ট হুওয়া সত্বেও তুমি তো ডিলটা ফাইনাল করতে পারনি। তোমার কি মনে হচ্ছেনা যে মিস্টার সহায় কোন একটা স্টেজে ইন্টারভেন না করলে তোমরা এই কনট্র্যাক্টটা কিছুতেই পেতেনা”।




-“আমি যে কোন ডিল বাইরের কাউর সাহায্য ছাড়াই ফাইনাল করতে পারি মনীষা আর ওটাই আমার কাজ”।




-“তুমি মিস্টার সহায়কে কি ভাবে বাইরের সাহায্য হিসেবে দেখ রাজীব।আর এটা এখনোতো তোমার ডিলই আছে। আসলে আমি ভাবলাম তোমার কয়েকদিন দিন মনমেজাজ ঠিক যাচ্ছিলনা, ছোটোখাট ভুল হয়ে যাচ্ছিল কাজে, তাই কাউর একটু হেল্প পেলে প্রবলেমটা হয়তো কাটিয়ে উঠতে পারবে। তাই মিস্টার সহায়ের কথা বললাম”।




আমি উত্তরে আর কিছু বললামনা ওকে। একবার ভাবছিলাম বলেই দি কিভাবে রবি ওই কনট্র্যাক্টটা পেয়েছে।কিন্তু না, কোনরকমে নিজেকে সংযত করলাম আমি, কারন মনীষা ভাবতে পারে যে আমি আমার মনের হিংসা থেকে ওর নামে কুৎসা করছি। এতে করে আমার প্রতি ওর ইম্প্রেসান আরো খারাপ হয়ে যাবে।




অফিসে রবি কে নিয়ে আমার যে ইগোর সমস্যা হচ্ছিলো সেটা আমাকে ব্যাথা দিচ্ছিল ঠিকই কিন্তু আমার ওপর মনীষার যে কনফিডেন্স ছিল সেটা কমে যাওয়াটাই ভেতরে ভেতরে জ্বালিয়ে পুরিয়ে খাক করে দিচ্ছিল আমাকে।


পরের সপ্তাহে শর্মা প্রোডাক্টের সাথে আমাদের ডিলটা ফাইনাল হয়ে যাওয়ার আনন্দে রবি আমাদের ফিউচার মিডিয়ার সমস্ত এমপ্লয়ীকে নিজের বাড়িতে একটা পার্টিতে নেমন্তন্ন করলো ব্যাপারটা ভালভাবে সেলিব্রেট করতে। এমনিতে আমাদের যে কোম্পানি পার্টি হয় তাতে নানা রকম রেস্ট্রিকশান থাকে বলে রবি এবারের পার্টিটা নিজের বাড়িতেই অরগানাইজ করতে চেয়ে ছিল। এতে করে পার্টি দেওয়া হলেও তার সাথে কম্পানির কোন সম্মন্ধ থাকবেনা আর তাই যে যার ইচ্ছে মতন এনজয়ও করতে পারবে। এনজয় মানে অবশ্য মাতাল হওয়া। কোম্পানি পার্টিতে মাতাল হয়ে যাবার ভয়ে কেউ দু তিন পেগের বেশি নিতে পারেনা। এখানে সেই সব কোম্পানি কোড টোডের কোন বালাই থাকবেনা। সবাই মিলে ঠিক করলো প্রত্যেকেই তাদের বউ কে আনবে পার্টিতে। এমনিতে আমার আর মনীষার প্রায় সাত আট বছর বিয়ে হলেও মনীষা এর আগে কখনো কোন কোম্পানি পার্টিতে যায়নি। আমার কয়েকজন ক্লোজ অফিস কলিগকে চিনলেও বেশিরভাগ অফিস কলিগকে ও চেনেনা। আমি ঠিক করলাম এবারে ওকে নিয়ে যাব পার্টিতে।




বৃহস্পতিবার বিকেলে আমি মনীষাকে নিয়ে রবির বাড়িতে পার্টি অ্যাটেন্ড করতে গেলাম। গাড়িটাড়ি পার্ক করে মনীষাকে পাশে নিয়ে আমি রবির বিশাল এপার্টমেন্টে ঢুকলাম। দরজাতেই দেখি রবি দাঁড়িয়ে আছে। ও হাঁসি মুখে গ্রিড করলো আমাদের।




-“হাই রাজীব। আমি খুব খুশি হলাম যে তুমি এসেছো”।




আমি রবির দিকে এগিয়ে গিয়ে শেকহ্যান্ড করলাম তারপর ওকে বললাম




-“রবি এই হল আমার বউ মনীষা, আমার মনে হয় তুমি আগে ওকে দেখেছো”।




-“হ্যাঁ দেখেছি ওকে। তোমাকে আবার দেখতে পেয়ে আমি খুব খুশি হলাম মনীষা”।




এই বলে ও ভীষণ পোলাইটলি মনীষার সাথে শেকহ্যান্ড করলো।




মনীষা হেঁসে বললো-“ধন্যবাদ মিস্টার সহায়”।




রবি আমাদের ভেতরে নিয়ে যেতে যেতে বললো




-“রাজীব তোমরা এখন এখানে নিজের মত করে একটু রিলাক্স কর আমাকে এখন একটু গেটের কাছে থাকতে হবে। আসলে এখনো অনেক গেস্ট আসা বাকি আছে। বাট মনীষা আই উড লাইক টু নো ইউ বেটার, কিন্তু এখন বুঝতেই পারছো আই হ্যাভ ফিউ মিনিটস টু স্পেয়ার”।




রবির এই “আই উড লাইক টু নো ইউ বেটার” বাক্যটা আমার অপছন্দ হলেও মনীষা দেখলাম কিছু মনে করেনি। ও হাঁসি মুখে রবিকে বললো –“লুকিং ফরোয়ার্ড টু ইউ স্যার”।




রবি একটু হেঁসে গেটের দিকে চলে গেল। ভেতরে দেখলাম আমাদের অফিসের অনেকেই এসে গেছে।আমরা নিজেদের মত এর ওর সাথে গল্পে মেতে উঠলাম। প্রায় আধ ঘণ্টা পরে হটাত রবি এসে আমাদের ডাকলো –“রাজীব, মনীষা, এসো তোমাদের আমার এপার্টমেন্টটা একটু ঘুরে দেখাই। ওর এপার্টমেন্টটা তিন তলা নিয়ে। তলার ফ্লোরে তখন পুরোদমে পার্টি চলছিল।রবি আমাদের নিয়ে ওর দোতলায় গিয়ে উপস্থিত হল। একটা আশ্চর্য মিষ্টি গন্ধ ওর পুরো দোতলাটা জুড়ে ছড়িয়ে ছিল। দোতলাতে উঠতেই বুঝতে পারলাম সত্যি সত্যি কোন ধনী লোকের বাড়িতে এসে উপস্থিত হয়েছি।রবির দোতলাটা নানা রকমের ঘর সাজানোর বিলিতি এবং অত্যন্ত দামি ডেকরেটিভ আইটেমে সাজান ছিল। রবি আমাদের গল্প বলার ঢঙে বলতে লাগলো কি ভাবে ও এই সব দুস্প্রাপ্য দারুন জিনিসগুলো একে একে যোগার করেছে। সত্যি কি সুন্দর করে কথা বলতে পারে ও। গল্প বলার ছলে ও বলে যেতে লাগলো ওই সব জিনিস সংগ্রহ করার বা নিলামে কেনার নানা রকমের মজার কাহিনি। ওর সংগ্রহ করা কয়েকটা আইটেমের হিস্টোরিক্যাল ভ্যালুও ছিল। ও খুব সুন্দর করে বোঝাতে লাগলো সে সব ইতিহাস। ওর কথা বলার ঢঙ এতো সুন্দর ছিল যে একবারের জন্যও আমাদের বোর মনে হয়নি। দেখানো শেষ হলে ও আমাদের নিয়ে ওর এপ্যার্টমেন্টের তিন তলায় এসে উপস্থিত হল। ওখানে ওর একটা দুর্দান্ত প্রাইভেট বার ছিল। এছাড়া ছিল একটা অত্যন্ত দামি ৭২ ইঞ্চি টেলিভিসন আর গোটা এরিয়াটা মোরা ছিল ‘বোসের’ ৭ ইন ১ হোম থিয়েটার সিস্টেমে। তিন তলার একদিকের দেয়ালটা পুরো কাঁচের। ওখান থেকে পুরো শহরটা দেখা যাচ্ছিল।একটু দূরে একটা হাফ ঘষা কাঁচের পার্টিশান করা দেওয়ালের আড়ালে একটা বিশাল হোয়াইট মার্বেলের পনেরো বাই পনেরোর বাথটব।




পুরো তিনতলাটা ঘুরে ঘুরে দেখার পর আমরা রবির কাছ থেকে বিদায় নিয়ে একতলায় যেখানটায় পার্টি চলছিল সেখানটায় নেবে এলাম। সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে ভাবছিলাম আগে আমি মুখে না মানলেও ভেতরে ভেতরে রবির বিজনেস অ্যাপ্রোচ নিয়ে মুগ্ধ ছিলাম আর আজকের পর ওর চার্ম আর দুর্দান্ত লাইফ স্টাইল নিয়েও মুগ্ধ হয়ে গেলাম।




মনীষার আর আমার পার্টিতে মিশে যেতে সময় লাগলোনা। প্রায় একশো কোওয়ার্কার, কলিগ আর তাদের বউদের নিয়ে পার্টি ভীষণ জমে গিয়েছিল। আমি আর মনীষা হাতে একটা সফট ড্রিংকের গ্লাস নিয়ে সারা পার্টি ঘুরে বেড়াতে লাগলাম। অফিসের অনেক কলিগ কে মনীষা চিনতোনা, শুধু তাদের নাম শুনেছিল আমার কাছে। তাদের সবাইয়ের সাথে আমি মনীষা কে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলাম, পরিচিত হচ্ছিলাম তাদের বউদের সাথে।




একটু পরেই অনেকে ড্রিংক করা শুরু করলো, যদিও আমরা নিজেদের সফটড্রিংক আর ফুডড্রিঙ্কেই সীমাবধ্য রাখলাম। আরো প্রায় দু ঘণ্টা পর আ্যপেটাইজার এল। তারপর শুরু হল ডিনার। বেশ কিছুক্ষণ ধরে ডিনার চলার পর অবশেষে তা শেষ হল আর পার্টি পৌঁছে গেল তার শেষ ধাপে। ডিনারের পর একটু রেস্ট নেওয়া হল, তারপর শুরু হল মিউজিক আর স্লো ড্যান্স।




একটু পরে আমি একবার রেস্ট রুমে গেলাম ফ্রেশ হতে। ফ্রেশ হয়ে ফিরছি এমন সময় দেখি ঘরের এক কোনে রবি মনীষার সাথে কি সব যেন গল্প করছে, আর মনীষা তা শুনে খুব হাঁসছে।ওদের দুজনকে একসঙ্গে হাঁসাহাসি করতে দেখেই মাথা গরম হয়ে গেল আমার। আমি অবশ্য জানতাম মনীষা আমাকে ভীষণ ভালবাসে। ওকে আমি বিশ্বাস করতে পারি। মনে পড়লো মনীষার পরিবার আমার সাথে মনীষার সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি। আমাকে বিয়ে করার জন্য ওর বাবা মা এমনকি পুরো পরিবারের সঙ্গে এক কথায় সম্পর্ক কেটে দিয়েছিল মনীষা। আমাদের গত আট বছরের বিবাহিত জীবনে একবারের জন্যও কখনো মনে হয়নি যে মনীষা আমার সাথে কখনো চিটিং করতে পারে। আসলে আমি রেগে গিয়েছিলাম এই ভেবে যে রবি শেষে আমার স্ত্রীর সঙ্গেও ফ্লার্ট করছে। এভাবে সহকর্মীর স্ত্রীর সাথে ফ্লার্ট করার মানে সেই সহকর্মীর প্রতি রেস্পপেক্ট কম থাকা। আমি ওদের কিছুই বললাম না কারন আমার পক্ষে আমার বসকে গিয়ে বলা সম্ভব ছিলনা যে আপনি আমার স্ত্রীর থেকে দূরে থাকুন। আপনার ক্যারেকটার কি তা আমি জানি। তাছাড়া ওরা সেরকম কিছু অপরাধ তো করেনি শুধু একটু হাঁসাহাসি করছিল। আমি ভাবলাম আজ বাড়ি ফেরার পর আমাকে মনীষার সাথে রবির ব্যাপারে একটু কথা বলতে হবে। আমি এর আগে মনীষা কে কখনো বলিনি যে রবির ক্যারেকটারটা আসলে ঠিক কি রকম আর সুন্দরী, বিবাহিত এবং একটু ভারী চেহারার মহিলাদের প্রতি ওর মনভাবটা কেমন। মুস্কিলটা হচ্ছে আমি কি ভাবে মনীষার সামনে প্রসঙ্গটা তুলবো। কারন এরকম প্রসঙ্গ উঠলেই মনীষার মনে হবে যে আমি ওঁকে সন্দেহ করছি।




যাই হোক আমি আর অপেক্ষা করতে পারছিলাম না বাড়ি যাওয়ার জন্য বা ওদের আলাদা করার জন্য।আমি আস্তে আস্তে ওদের সামনে গিয়ে উপস্থিত হলাম আর ওদের সঙ্গে একদম নর্মাল ব্যবহার করলাম। ওরা একবারেই বুঝতে পারেনি যে আমার মনের ভেতর তখন ঠিক কি চলছিল।আমি ওদের সাথে দু একটা কথা বলার পর মনীষাকে বললাম মনীষা আমার মনে হয় এবার আমাদের যাওয়া উচিত,কারন রাত হয়ে যাচ্ছে, আর দাদা বউদিই বা কতক্ষণ সামলাবে টাপুর টুপুর কে।রবির কাছ থেকে বিদায় নেবার সময় রবি আমার সাথে শেকহ্যান্ড করলো। এর পর হটাত মনীষার দুই হাত নিজের হাতে নিয়ে বললো –“তাহলে মনীষা আশাকরি আমাদের আবার দেখা হবে”। মনীষাও রবির চোখের দিকে তাকিয়ে দারুন মিষ্টি করে হেঁসে বললো –“আপনার সাথে কথা বলে আমার ভীষণ ভাল লাগলো, আমাদের নিশ্চই আবার দেখা হবে”। ওর কথা শুনে আমার বুকের ভেতরটা কেমন যেন করে উঠলো। কিন্তু সবচেয়ে আশ্চর্য হল আমার ধনটা জাঙিয়ার ভেতরে একপলকেই কিভাবে যেন শক্ত ইঁটের মত হয়ে উঠলো।

সেদিন বাড়ি ফেরার পর রাতে শোবার সময় মনীষা নিজেই আমার ওপর চড়লো।খুব উত্তেজিত থাকলে এর আগেও মনীষাকে ইনিসিয়েটিভ নিয়ে আমার ওপর চড়তে দেখেছি কিন্তু এদিন যেটা অদ্ভুত লাগলো সেটা হল আমাকে ঠাপানোর সময় মনীষা সারাক্ষণ নিজের চোখ বুঁজে রইলো।ওর মুখ দেখে মনে হল মনে মনে কি যেন একটা ভাবছে ও অথচ ওর ভারী পাছাটা যন্ত্রের মত আমাকে ঠাপিয়ে চললো। যাই হোক ওর গুদে মাল পরার পর আমার মাল গুদে নিয়ে, সাফ না করেই যখন ও আমাকে জড়িয়ে ধরে শুল আমি তখন ভাবলাম যাক আজকে পার্টিতে রবির সাথে মনীষার হাঁসাহাঁসির ঘটনাটা বোধহয় সেরকম কিছু নয়।কিন্তু তা যে নয় সেটা বুঝতে পারলাম পরের দিন সকালে মনীষার সাথে ব্রেকফাস্ট খাওয়ার সময়।এদিক ওদিক দু একটা সাংসারিক প্রয়োজনের কথাবাত্রা হবার পর মনীষা হটাত বললো -তোমাদের এই রবিকে কিন্তু কালকে আমার বেশ ভালই লাগলো।




মনীষা হটাত করে রবির প্রসঙ্গ তোলায় আমি কফি খেতে খেতে ওর দিকে অবাক হয়ে তাকালাম।




-“মানে আমি বলছি তুমি ওকে যেরকম ভাবে আমার কাছে আমার বর্ণনা করেছিলে ও কিন্তু সেরকম একবারেই নয়।ওর কথাবাত্রা ব্যবহার ভীষণ ভদ্র আর ফ্রেন্ডলি। তুমি তো ওকে আমার কাছে এক প্রকার প্রায় ভিলেনই বানিয়ে দিয়েছিলে”।




-“রবি”?




-“হ্যাঁ তোমাদের রবি সহায়”।




-“বাবা, তুমি তো মিস্টার সহায় বলে ডাকতে, তুমি আবার কবে থেকে ওর ডাকনাম ধরে ডাকতে শুরু করলে? একটু ঠেস দিয়ে আমি জিজ্ঞেস করলাম ওকে”।




-“কালকে ও অনেক গল্প করলো আমার সাথে। নিজের কথাও যেমন অনেক বললো তেমনি আবার তোমার আর আমার সম্বন্ধেও অনেক কিছু জানতে চাইছিল। এমন খোলমেলা ভাবে কথা বলছিল যেন মনে হচ্ছিল ও কোন কম্পানির বস নয় যেন একজন সাধারন এমপ্লয়ী”।




আমার একটু কৌতূহল হল, রবি আবার আমাদের সম্পর্কে মনীষাকে কি জিজ্ঞেস করলো? তবে আমি আমার কৌতূহল দমন করলাম।বললাম –“আরে কালকে ও পার্টি হোস্ট করছিল বলে হয়তো সবার সাথে অতো ভাল ব্যবহার করছিল । অফিসে ওকে দেখলে বুঝতে পারতে। অফিসে ওর একবারে অন্যরুপ”।




মুখে একটা বিস্কুট পুরে চিবতে চিবতে মনীষা আমার দিকে তাকিয়ে একটু মুচকি হেঁসে বললো –“হয়তো”।




-“দেখ মনীষা তুমি ওর হয়ে কাজ করলে বুঝতে পারতে কিরকম ডমিনেটিং আর অ্যাগ্রেসিভ আচরণ ওর”।




-“জানিনা, আমি তো আর ওর সাথে কাজ করিনা, তুমি কর। আমারদের তো আর জানার চান্স নেই যে ওর সাথে আমি কাজ করলে ও আমার সাথে কেমন ব্যবহার করতো”? আমার দিকে তাকিয়ে আবার একটু মুচকি হেঁসে মনীষা আমাকে বললো।




মনীষার কথা শুনে মনের মধ্যে কেমন যেন একটা যৌন উওেজনা শুরু হল আমার।ভাবলাম মনীষা সত্যিই যদি আমাদের অফিসে রবির সাথে কাজ করতো আর আমি অন্য অফিসে কাজ করতাম তাহলে? এরকমটা হলে রবি কি কখনো সুযোগ বুঝে ওর সাথে শোয়ার প্রস্তাব দিত মনীষাকে? কি করতো মনীষা তখন? রবি কে যে ও মনে মনে বেশ পছন্দ করে তা তো আমি জানি। তাহলে কি দোনামোনা করেও শেষ পর্যন্ত ধরা দিত ও রবির কাছে? আমাকে লুকিয়ে নিয়মিত ভাবে শুতে শুরু করতো রবির বিছানায় আর আমি জানতেও পারতামনা।




কিন্তু আমি ওইসব আবোলতাবোল চিন্তা মন থেকে জোর করে সরিয়ে দিলাম। ভাবলাম মনীষার মনে রবি সম্বন্ধে উচ্চধারনার একটা বিহিত হওয়া দরকার।বললাম –“মোদ্দা কথাটা হল রবি অফিসে যতই লাফাক আর ঝাঁপাক সেরকম বিশাল কিছু একটা বিজনেস প্রমোসান ও করতে পারেনি”।




মনীষা কাঁধ ঝাকালো বললো –“জানিনা, তবে তোমাদের অফিসের মেয়েরা কিন্তু সেরকম মনে করে না। ওরা তো দেখলাম রবি রবি করে একবারে পাগল”।




আমি অবাক হয়ে গেলাম এই দেখে যে মনীষা এখনো রবির হয়ে কথা বলেই চলেছে। ভেবেছিলাম ও চুপ করে যাবে কিন্তু সকালে রবির প্রসঙ্গটা ও তোলার পর থেকে রবির ব্যাপারে কথা যেন ও আর বন্ধ করতে চাইছেইনা।আমি আর কথা বারালাম না, চুপ করে নিজের ব্রেকফার্স্টটা শেষ করার দিকে মন দিলাম। মনীষা বোধহয় বুঝতে পারলো আমি কোন ব্যাপারে একটু বিরক্ত হয়েছি।

-“কি হল রাজীব হটাত চুপ করে গেলে যে”?




-“আসলে একটা জিনিস আমার কাল থেকে মনে খচখচ করছে। কিন্তু আমি বলতে ভয় পাচ্ছি। বললে ব্যাপারটা হয়তো শুনতে একটু অন্যরকম লাগবে তোমার কাছে। আসলে আমি তোমাকে আপসেট করতে চাইনা”।




আমার কথা শুনে মনীষাকে কেমন যেন একটু চিন্তিত মনে হল।




-“কি ব্যাপার রাজীব আমাকে খুলেই বলনা”?




-“দেখ আমি বলতে পারি তবে তুমি কিন্তু কিছু অন্যরকম মনে করতে পারবেনা।আমার মনে যা আছে তাই তোমাকে বলছি। যদি আমাদের মধ্যে কিছু মতান্তর থাকে তাহলে আমরা ব্যাপারটা কথা বলে ঠিক করে নেব কেমন? ব্যাপারটা রবির সম্বন্ধে”।




-“রবির সম্বন্ধে? কি ব্যাপার বল”?




-“আমি জানিনা কাল পার্টিতে অন্য মেয়েদের কাছ থেকে তুমি কিছু জানতে পেরেছ কিনা। তবে আমি শুনেছি রবির ক্যারেকটার খুব খারাপ। বিবাহিত, সুন্দরী এবং একটু ভারী চেহারার মেয়েদের প্রতি একটু বিশেষ দুর্বলতা আছে ওর”।




-“আমার কথা শুনে মনীষা হেঁসে ফেললো। ও এই ব্যাপার। হ্যাঁ আমিও কাল পার্টিতে রবির সম্বন্ধে অনেক গল্প শুনেছি”।




 

-“মনীষা ব্যাপারটা কিন্তু আমার কাছে খুব মজার লাগছেনা”।




-“কেন?তুমি কি ভাবছো আমার রবির সম্বন্ধে কোন বিশেষ ইন্টারেস্ট আছে”?




মনীষার গলায় কেমন যেন একটু রাগের আভাস পেলাম।




-“না না তোমার ব্যাপারে আমি চিন্তিত নই মনীষা। আমি তোমাকে বিশ্বাস করি”।




-“তাহলে কি তুমি চাইছো আমি রবির সাথে আর কথা না বলি? কি এটাই চাইছো তো”?




মনে খানিকটা সাহস সন্চয় করে আমি বললাম –“হ্যাঁ, মানে তুমি যদি কিছু মনে না কর”।




-“আমি মনে করবো রাজীব……আমি মনে করবো। আমি মনে করি রবি ভীষণ চারমিং আর আমি ওর সাথে কথা বলাটা খুব এনজয়ও করেছি।আমি বুঝতে পারছিনা তুমি যদি আমাকে সত্যিই বিশ্বাস কর তাহলে তুমি কি ব্যাপারে এত চিন্তিত।রাজীব তুমি যখন এরকম অদ্ভুত আচরণ কর তখন আমার খুব বাজে লাগে”।




ওর উত্তরে আমি খুব একটা খুশি না হলেও আমি ওর ওপরে খুব একটা জোর করতে পারলাম না, কারন একতো ও কোন দোষ করে নি, দুই এই ব্যাপারটা নিয়ে জোর করলে সেটা খুব বাড়াবাড়ি হয়ে যেত। মনীষার গম্ভির মুখ দেখে মনে হল ও প্রচণ্ড খেপে গেছে আমার ওপর।আমি ওকে বোঝাতে চেষ্টা করলাম আসল ব্যাপারটা কি এবং আমি ওকে কোন ভাবেই সন্দেহ করিনা। কিন্তু ও কোন কথা শুনতে চাইলোনা। বোললো –“আমি আর এসব নিয়ে তোমার সাথে কোন আলোচনা করতে চাইছিনা রাজীব, যদি রবি কখনো এমন কিছু করে যা আমার খারাপ লাগবে তাহলে আমি তৎখনাত তোমাকে জানাবো।এমন টোনে মনীষা আমাকে বোললো “তোমাকে জানাবো” যে আমি বুঝলাম ও আর এই ব্যাপারে কোন কথাই শুনতে রাজী নয়। সুতরাং আমি আর কথা বাড়ালাম না।

Like Reply
#6
পরের সোমবারে অফিসে একটা স্টাফ মিটিং ছিল। সোমবার এই ধরনের মিটিং আমার ভীষণ বাজে লাগে। একেতো সপ্তাহের শুরু বলে সোমবারে অনেক কাজ থাকে, তারপর স্টাফ মিটিংএ নিজের মার্কেটিং টিমের হয়ে একটা ছোটো খাট বক্তিতা দিতে হয়।কখনো দরকার হলে মান্থলি রিপোর্ট ও সাবমিট করতে হয়।সবচেয়ে বাজে লাগে অন্য সব মার্কেটিং টিমের বকর বকর শোনা।সাধারনত এই সব স্টাফ মিটিং শেষ হতে হতে প্রায় লাঞ্চ আওয়ার হয়ে যায়। তাছাড়া এরকম দিনে মিটিং শেষ হবার পর সাড়া দিনের কাজও শেষ করে বেরতে হয়। ফলে বেরতে বেরতে প্রায় রাত নটা হয়ে যায়। তবে একটা ব্যাপারই রক্ষে যে স্টাফ মিটিং হয় সাধারনত তিন মাসে একবার।




গত সপ্তাহে মনীষার সাথে সামান্য একটা ছোটোখাটো ব্যাপার নিয়ে মনোমালিন্য হওয়ায় এমনিতেই মন মজাজ খারাপ ছিল আমার। অফিসে ঢুকেই যেই শুনলাম রবি আজকে জেনারেল স্টাফ মিটিং ডেকেছে, সঙ্গে সঙ্গে মেজাজটা আরো খিঁচরে গেল। কি আর কোরবো, তাড়াতাড়ি একটু ফ্রেশ হয়ে নিয়ে কনফারেন্স রুমে গিয়ে বসলাম। একটু পরেই রবি ঢুকে পরলো কনফারেন্স রুমে আর মিটিং চালু করে দিল।“ফিউচার মিডিয়া আজ পর্যন্ত তার হিস্ট্রিতে সবচেয়ে বড় কনট্র্যাক্ট পেতে চলেছে শর্মা প্রোডাক্টের হাত ধরে। আমাদের সমস্ত মার্কেটিং টিমকে একযোগে হাতে হাত মিলিয়ে নেমে পরতে হবে এই প্রকল্পকে, এই কনট্র্যাক্টকে, সফল করতে”…………ইত্যাদি ইত্যাদি বলতে শুরু করলো।মিটিং প্রায় দশ মিনিট চলার পর হটাত আমাদের মার্কেটিং টিমের ঋতিকা এসে উপস্থিত হল। একটা কথা বলা হয়নি, এই ঋতিকা মেয়েটিকে আমিই ঢুকিয়েছি ফিউচার মিডিয়ায়। আমার কলিগ শেখরের রেফারেন্সে এসেছিল বলে ওকে একবারে ঢুকিয়ে নিয়েছি আমাদের টিমে।ওর স্বামী একটা জুটমিলে কাজ করতো।হটাত করে জুটমিলটা স্ট্রাইকে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওর চাকরি চলে যায়। ঋতিকা এখন ওর বর আর ওর পাঁচ বছরের একটা বাচ্ছাকে নিয়ে খুব মুস্কিলে পরেছে।ওর স্বামীটা নাকি অনেক চেষ্টা করেও আর কোন ভাল চাকরি জোগাড় করতে না পেরে ফ্রাসট্রেটেড হয়ে মদ খাওয়া শুরু করেছে।মেয়েটা কিন্তু ভীষণ স্মার্ট। কে বলবে এক বাচ্চার মা।আমাকে ভীষণ রেস্পেক্ট করে ও।ওর সাথে আমার একটা প্লেটোনিক সম্পর্ক আছে। চাইলে হয়তো শারীরিক সম্পর্কও হয়ে যেত বিশেষ করে ও এখন যেরকম অর্থনৈতিক কষ্টে আছে।কিন্তু আমি মনীষাকে ছাড়া আর কারো সাথে শোবার কথা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনা বলে আমাদের সম্পর্কটাকে অতি সাবধানে প্লেটোনিকই রেখেছি।




যাই হোক যে কথা বলছিলাম। এই ধরনের স্টাফ মিটিংএ আমরা কেউ দেরি করে আসিনা। ঋতিকা মিটিংএ দেরি করে ঢোকাতে সবাই ভাবলো রবি হয়তো কিছু বলবে ওকে দেরি করে আসার জন্য।সবাইকে আশ্চর্য করে রবি নিজের স্পিচ থামিয়ে বললো –“হাই ঋতিকা, এস এস, তোমাকে আজ দারুন লাগছে দেখতে”।




ঋতিকা লজ্জায় মাথা নিচু করে কাউর দিকে না তাকিয়ে বললো –“সরি স্যার আই এম লেট”। ব্যাপারটা দেখে আমার মনে হল অফিসে যে রিউমারটা উড়ে বেড়াচ্ছে সেটা একবারে সঠিক। মিটিং চলাকালীন থেকে থেকেই ওদের পরস্পরের দিকে তাকানো থেকে যে কেউ বলে দেবে ওদের মধ্যে নিশ্চই কিছু একটা চলছে। ঋতিকা আমার মার্কেটিং টিমের মেম্বার।আমি ঠিক করলাম ব্যাপারটা নিয়ে রবির সাথে কথা বলবো।একজন বিবাহিত স্টাফ কে জড়িয়ে অফিসে এরকম একটা রিউমার ছড়ানো ভাল কথা নয়। আর তাছাড়া এভাবে চললে ঋতিকা কে আমাদের টিমে রাখাও মুস্কিল হয়ে পরবে। কারন টিম মিটিংএ কেউ যদি কোন কারনে রবির সমালোচনা করে আর ও যদি রবিকে গিয়ে সব লাগিয়ে দেয় তাহলেতো খুবই মুস্কিল।




শেখরের দিকে চোখ পরলো আমার। ঋতিকা আর রবির থেকে থেকেই একে অপরের দিকে তাকানো দেখে ওর তো হাঁসি চাপাই দুস্কর হয়ে উঠেছে।যাই হোক আমি মিটিংএ মন দেবার চেষ্টা করলাম।শর্মা প্রোডাক্টের কনট্র্যাক্টটা রবি কিভাবে পেয়েছে আর কিরকম ব্লাইন্ডলি একসেপ্ট করেছে সেটা জানার পর, রবির মুখে লংটার্ম রিলেশনশিপ, উইন উইন সিচুয়েশন, কোম্পানি বিজনেস সিকিউরিটি ইত্যাদি বড় বড় কথা শোনা প্রায় অসহ্য হয়ে উঠছিল। যাই হোক অনেক কষ্টে কয়েক ঘণ্টা কাটানোর পর অবশেষে লাঞ্চ আওয়ার এলো আর আমিও হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম।মিটিংএ ডিসিশন হয়ে গেল শর্মা প্রোডাক্টের সাথে কনট্র্যাক্টটা আমরা নিচ্ছি, ওদের সাথে ফাইনাল নেগসিয়েশন হবে বৃহস্পতি আর শুক্রবার, সোমবার কনট্র্যাক্ট সাইন হবে, আমাদের কয়েকজন সিনিয়র মার্কেটিং হেড কে নিয়ে বানানো টিম মুম্বাই উড়ে যাবে শর্মা প্রোডাক্টের হেড অফিসে ওদের সাথে কনট্র্যাক্ট সাইন করতে।




মিটিং শেষ হবার পর আমি সোজা বাথরুমের দিকে গেলাম।বাথ রুমের ইউরিনারে নিজেকে হালকা করে প্যান্টের জিপার টানছি এমন সময় আমার পাশে বেসিনের ওপর লাগানো আয়নাতে দেখতে পেলাম রবি ঢুকছে বাথরুমে।ওর হাতে একগাদা ফাইল ভর্তি। রবি ফাইলগুলো বেসিনের পাশে একটা জায়গায় রেখে মুখ ধুতে ধুতে আমাকে জিজ্ঞেস করলো –“আরে রাজীব, সব ঠিক ঠাক তো”?




–“হ্যাঁ রবি আমি ঠিক আছি”




–“আচ্ছা রাজীব একটা কথা বল” রবি রুমালে নিজের মুখ মুছতে মুছতে বললো।




-“কি”?




-“আমাদের এই শর্মা প্রোডাক্টের সাথে এগ্রিমেন্টের সময় যে প্রপোসালটা আমরা ওদের কে দেব, সেই পেপারগুলোর প্রেজেন্টেসানের ব্যাপারে তোমার কোন ভাল আইডিয়া আছে।




-“মানে”?




-“মানে আমাদের কোম্পানির প্রোফাইলের কথাটাই যদি ধর। ওগুলো প্রফেসনালি বানাতে পারলে তবেইনা আমাদের কম্পানির ইমপ্রেসানটা ভাল হবে ওদের কাছে, তুমি কি বল”?



-“হ্যাঁ রবি, তুমি ঠিক বলছো, তবে ও ব্যাপারে আমি এখনো সেরকম কিছু ভেবে উঠতে পারিনি”।




-“আমি ভাবছিলাম যদি কোন অ্যাডভার্টাইসমেন্ট ওয়ার্ল্ডের প্রফেশনাল লোককে দিয়ে আমাদের কোম্পানি প্রোফাইলটা বানাতে পারি”।




-“হ্যাঁ, সে তো ভালই হয়”




_”আমি এও ভাবছিলাম যদি কোন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার জোগাড় করে আমাদের সার্ভিস ওরিয়ন্টেড কিছু ফটোগ্রাফ অ্যাড করতে পারি আমাদের প্রোফাইলে তো ব্যাপারটা দারুন হয়।




-“বাঃ তোমার এই আইডিয়াটা বেশ ভাল রবি”।




-“রাজীব আমি চাইছি কভার পেজে যদি কোন সেক্সি একটা মহিলা মডেলের ছবি দিয়ে দেওয়া যায়, মানে আজকাল তো সুন্দরী মেয়েদের ছবি ছাড়া কোন অ্যাডভার্টাইসমেন্ট কমপ্লিটই হয়না”।




-হ্যাঁ, সে তো ঠিক।




-“চল রবি”। রাজীব নিজের প্যান্টের চেন টেনে বাথরুম থেকে বেরতে বেরতে বললো। আসলে আমার হয়ে যাবার পরও ওর জন্যে অপেক্ষা করছিলাম আমি।আমার পেছন পেছন লাঞ্চরুমের দিকে যেতে যেতে রবি বললো –“রাজীব তুমি আমার সাথে আজ লাঞ্চ করে নাও, তোমার সাথে দু একটা ব্যাপার একটু ডিশকাস করার আছে আমার।




একটু পরেই লাঞ্চরুমের টেবিলে ওর সাথে খেতে বসতে হল আমাকে।খেতে খেতে হটাত রবি খানিকটা ফিসফিস করে আমাকে একটা গোপন খবর দেয়ার মতো ভঙ্গি করে বললো –“রাজীব আমি ডিসিশান নিয়ে ফেলেছি আমাদের কোম্পানি প্রোফাইলের ফ্রন্টপেজে এবং ভেতরে মনীষা কে মডেল করে কয়েকটা ফটো দেওয়ার। আমি এর জন্য একজন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার ইউজ করতে চাই। মানে মনীষার ওই ফটোগুলো তোলার জন্য”।




ওর কথা শুনে চমকে উঠলাম আমি। বলে কি ও?




-“মনীষা……হটাত………?




-“দেখ রাজীব তোমার বউ মনীষা খুব সুন্দরী আর অ্যাট্রাকটিভ ।ওকে আমাদের কম্পানির প্রোফাইলের ফ্রন্টপেজে দারুন মানাবে। সেদিন পার্টিতে ওকে দেখেই আমার মাথায় এসে গিয়েছিল এই আইডিয়াটা”।




সঙ্গে সঙ্গে আমার মাথার ব্রেন কাজ করতে শুরু করলো। ধান্দাটা যে ওর ভাল নয় সেতো বোঝাই যাচ্ছে।




-“রবি আমার মনে হয় মনীষা রাজী হবে না। দেখ ও তো একটা সাধারন গ্রহবধু, এসব কাজের সেরকম কোন অভিজ্ঞতা ওর আগে থেকে নেই।তাই আমার মনে হয় ও এসব পারবেনা।




-“রাজীব আমরা তো কোন নামি মডেল অ্যাফোর্ড করতে পারবোনা। আমি আসলে চাইছিলাম নতুন কাউকে যাতে করে আমাদের শুধু প্রফেশনাল ফটোগ্রাফারের খরচাটা দিলেই হয়ে যায়। আমার একটা বন্ধু আছে যে একজন নামকরা প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার। ওর নিজের একটা স্টুডিয়োও আছে। ওর সাথে মনীষার ব্যাপারে অলরেডি কথা বলে নিয়েছি আমি, ও একটু কমসম কোরে কোরেদেবে বোলেছে”।




-“কিন্তু রবি মনীষা কি রাজী হবে”?




-“হ্যাঁ ও তো রাজী, সেদিন পার্টিতেই তো ওকে বললাম আমার আইডিয়াটা”।




রবির কথা শুনে আমি একটু অবাক হয়ে গেলাম। রবিও বোধহয় বুঝতে পারলো আমি অবাক হয়েছি।




-“কেন মনীষা তোমায় বলেনি রাজীব”?




-“না কই ও তো বলেনি”।




-“আশ্চর্য, ও যে আমাকে বললো ওর ছোটোবেলা থেকেই নাকি ফ্যাশান মডেল হবার খুব ইচ্ছে ছিল। মনীষাতো আমাকে একরকম প্রায় হ্যাঁ বলেই দিয়েছে, বলেছে আমি ফাইনাল ডিসিশন নিয়ে নিলে ও শুধু তোমার পারমিশনটুকু নিয়ে নেবে”।




আমি এবার কি বলবো ঠিক বুঝতে পারছিলামনা। মনীষার যে ছোটবেলা থেকে ফ্যাশন মডেল হবার ইচ্ছে ছিল তাই তো কোন দিন আমাকে খুলে বলেনি ও।




-“রাজীব তাহলে তুমি ব্যাপারটা নিয়ে একটু ভেবে আমাকে তাড়াতাড়ি জানিয়ে দিও”।




-“ঠিক আছে”।




এই বলে রবি মুখ ধুতে চলে গেল।আমি মনে মনে ভাবছিলাম কি ভাবে মনীষা আমাকে না জানিয়েই ওকে হ্যাঁ বলে দিল।তার মানে মনীষা পার্টির পরের দিন ব্রেকফার্স্টের সময়ই কথাটা তুলতো। তাই সেদিন রবির প্রশংসা করে কথা শুরু করেছিল ও।কিন্তু রবির ব্যাপার নিয়ে আমার সাথে ওর খিটিমিটি লেগে যাওয়ায় ও আর আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করেনি।ভাবছিলাম রবি সত্যি কি স্মার্ট, সেদিন পার্টিতে আমি যখন বাথরুমে গিয়েছিলাম, তখন ওই অল্প সময়ের মধ্যেই ও মনীষাকে ইমপ্রেস করে ওকে রাজী করিয়ে নিয়েছে।আচ্ছা রবি কি তাহলে কোনভাবে মনীষার কাছে আসার চেষ্টা করছে? এমনিতে মনীষার সাথে দু একটা অফিস পার্টিফার্টি ছাড়া ওরতো দেখা হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। আর কোন মহিলার সাথে কথা বলা গেলে তবেই তো তাকে ইমপ্রেস করা যাবে।তার মানে মনে হয় এই মডেলিং এর ছুতোয় রবি কোন ভাবে মনীষার কাছে আসার চেষ্টা করছে ।




সেদিন রাতে গাড়ি ড্রাইভ করে বাড়ি ফেরার সময় নানা রকমের উদ্ভট চিন্তা আমার মাথায় আসছিলো। এই রবি বোকাচোঁদাটা নিজেকে ভাবে কি? মনীষা আমার বিয়ে করা বউ। আমাকে আগে কোন কিছু না বলে ও কিভাবে মনীষাকে এই প্রস্তাব দিতে পারে। যত ভাবছিলাম তত মাথা গরম হচ্ছিল আমার। আমি যেন মানসচক্ষে দেখতে পাচ্ছিলাম মনীষা প্রায় অর্ধউলঙ্গ অবস্থায় নানা রকম উত্তেজক পোজ দিচ্ছে আর রবি একটা ক্যামেরা নিয়ে নানা রকম অ্যাঙ্গেলে মনীষার প্রচুর ছবি নিচ্ছে। রাগে মাথাটা যেন ফেটে যাবে মনে হচ্ছিল আমার। যাই হোক কোনক্রমে মন থেকে ওই সব উদ্ভট চিন্তা সরিয়ে আমি বাড়ি পৌছলাম।


রাতে খাওয়া দাওয়ার পর মনীষাকে রবির প্রস্তাবের কথাটা বোললাম। আমি ভেবে নিয়েছিলাম মনীষা হয়তো আবার রবির প্রসঙ্গ তোলায় আমার ওপর রেগে যাবে। কিন্তু মনীষা আশ্চর্য রকমের শান্তভাবে আমাকে জিগ্যেস করলো -“ওর প্রস্তাব শুনে তোমার কি মনে হল রাজীব”? আমিও ঠিক ওর মত শান্ত ভাবে ওকে বললাম –“আমার মনে হয়েছে এটা একটা ভীষণ বাজে প্রস্তাব”।




-“যাই বল তোমাদের অফিসে এতো সুন্দরী মেয়ে থাকতেও রবি যে শুধু আমাকে তোমাদের ওই কোম্পানি প্রোফাইলটার কভার পেজের জন্য সিলেক্ট করছে, এই ব্যাপারটা কিন্তু বেশ ফ্লাটারিং”।




-“হ্যাঁ কিন্তু তুমি এসব কি ভাবে করবে? মনীষা, আমি মনে করি দু সন্তানের জননী একজন গৃহবধুর সংসার ফেলে এই সব মডেলিং টডেলিং এর ব্যাপারে একদম রাজী হওয়া উচিত নয়”।




-“ধুর, সেদিন আমি রবি কে শুধু বলে ছিলাম যদি রাজীবের পারমিশন পাই তবেই ভেবে দেখবো।আমার আর ওসব মডেলিং ফডেলিং করার ইচ্ছে নেই, ছোটো বেলায় মানুষ কত কি ভাবে, এই হব সেই হব,সব কি সব সময় হওয়া যায় নাকি, ছাড়োতো”।




-“দেখ মনীষা তোমার কিন্তু রবিকে সেই দিনই মুখের ওপর না বলে দেওয়া উচিত ছিল”।




-“দিতামই তো কিন্তু ভাবলাম দেখিইনা একবার বলে তোমার পারমিশনের ব্যাপারটা, একটা মেয়ের তো জানতেও তো ইচ্ছে করে তার বর তার ইচ্ছের কতটা মর্যাদা দেয়”।




-“কি বলছো তুমি মনীষা, কিসের মর্যাদা, তুমি কি বুঝতে পারছোনা এসব করে রবি তোমার কাছে আসার চেষ্টা করছে”।




-“আমার মনে হয়না রাজীব। রবির মতন ধনী সুপুরুষ বিজনেস ম্যাগনেটের আমার মত একটা সাধারন মেয়েকে এতটা পছন্দ হবার চান্স খুবই কম।




তারপর হটাত আমার বিরক্ত মুখের দিকে তাকিয়ে কি যেন একটা ভেবে মনীষা বলে উঠলো –“অবশ্য হতেও পারে রবির মত ধনী লোকেদের অনেক শয্যাসঙ্গিনী থাকে”। আচমকা সুর বদলে মনীষার গলায় এবার কৌতুকের রেশ।




মনীষার কথা শুনেই আমার ধনটা তড়াক এক লাফে খাড়া হয়ে উঠলো। কি রকম যেন ভেতর ভেতর কাঁপতে শুরু করলাম আমি। মনীষা আমার মুখ দেখেই বুঝে নিল ব্যাপারটা কি। একটু মুচকি হেঁসে আমাকে বললো –“তাহলে লাইটটা নেবাই এবার, মনে হচ্ছে এখুনি আমার রেপ শুরু হবে। লাইটটা নিবিয়েই আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার বুকে মুখ গুঁজে দিল মনীষা ।তারপর আমার বুকের লোমে মুখ ঘসতে ঘসতে দুস্টুমি ভরা গলায় বললো –“রাজীব তোমার কি মনে হয় রবির আমাকে পছন্দ হয়ে গেছে”।




-“কি জানি হয়তো?”





এবার একটু আদুরে স্বরে ও আমাকে জিগ্যেস করলো –“কেন আমার মধ্যে এমন কি আছে যে ওর মত হ্যান্ডসাম সুপুরুষের এত পছন্দ হবে এই দু বাচ্চার মা টাকে”?




মনীষা হটাত ওর একটা হাত আমার লুঙ্গির মধ্যে ঢুকিয়ে আমার ধনটা খামচে ধরে চটকাতে শুরু করলো।আমি এতক্ষণে ওর দুস্টুমিটা বুঝতে পারলাম। ওর সাথে খেলাটা খেলতে রাজীও হয়ে গেলাম। ওকে বললাম -“আমি শুনেছি রবি নাকি ভারী চেহারার মেয়েদের খুব পছন্দ করে”।




-“ভারী চেহারার মানে কি গো”?




-“মানে তোমার মত যে মেয়েদের বুক আর পাছা বড় আর ভারী”।




মনীষা এবার আমাকে আস্তে আস্তে নিজের বুকের ওপর টেনে তুলতে লাগলো।




আমাকে ওর বুকের ওপর পুরোপুরি ভাবে তোলার পর ও নিজের নাইটির তলাটা গুটিয়ে গুটিয়ে নিজের কোমরের ওপর তুলতে তুলতে আমার কানে ফিসফিস করে জিগ্যেস করলো –“তোমার কি মনে হয় আমার মাই গুলো রবির মনে ধরেছে”?




নিজের শক্ত হয়ে যাওয়া ধনটা মনীষার ভিজে গুদের মুখে সেট করতে করতে আমি ফিসফিস করে বললাম, -“শুধু রবি কেন তোমার মতন ওরকম সেক্সি মাই পেলে সবাই তার দখল নিতে চাইবে”।




মনীষা এবার নিজের পা দুটো আমার কোমরের ওপরে তুলে দিয়ে লক করে দিল আমার কোমর। তারপর ওর একহাত আলতো করে আমার চুলের মুটি চেপে ধরলো আর অন্য হাত আমার পাছার মাংস খামচে ধরলো।




-“কিন্তু রবি তো জানে যে আমি দু বাচ্চার মা। ওতো জানে আমার মাই আমার বাচ্চাগুলোর এঁটো মাই”।




-“অনেকেই বাচ্ছাদের এঁটো মাই ভীষণ পছন্দ করে”।




-“কিন্তু দুধ খাওয়ানো মাই তো কুমারী মেয়েদের মত টাইট থাকেনা, একটু থলথলে হয়ে যায়। তোমার কি মনে হয় রবির আমার মত একটু থলথলে দুধ খাওয়ানো মাইই পছন্দ”।




-“দুধ খাওয়ানো মাই হলে নিপিলগুলো অনেক ডেভলপ্ট আর এবড়ো খেবড়ো থাকে। কুমারী মেয়েদের সেটা থাকেনা।অনেকেই মেয়েদের ডেভলপ্ট আর এবড়ো খেবড়ো নিপিল পছন্দ করে”।




-“কি জানি আমার কিছুতেই বিশ্বাস হয়না ওর মত ধনী মানুষ আমার মত চটকানো, ধামসান্, দুবার বাচ্ছা করা মাগি এত পছন্দ করবে।




-“তুমি জাননা অনেকেই একটু থসথসে, খাওয়া, আর বাচ্ছা বের করা মাগি ভীষণ পছন্দ করে।






এই বলে আমি একধাক্কায় মনীষার গুদে আমূল গেঁথে দিলাম আমার পুরুষাঙ্গটা। মনীষা উফ বলে আরামে কেঁপে উঠলো।




-“আচ্ছা তোমার কি সত্যি সত্যি মনে হয় আমি রবির প্রস্তাবে রাজী হলে ও আমার কাছাকাছি আসার চেষ্টা করতো আর সুযোগ পেলে আমাকে ওর বিছানায় নিয়ে গিয়ে তুলতো, আমাকে খেতো।




আমি পাগলের মত মনীষা কে খুঁড়তে খুঁড়তে বললাম –“হ্যাঁ”।




মনীষা চোখ বুঁজে আমার গাঁথন উপভোগ করতে করতে, প্রায় আমার মতই হাঁফাতে হাঁফাতে বোললো –“ধরে নাও আমি যদি কোনভাবে ওর প্রস্তাবে রাজী হই তাহলে কি ও আমাকে দু একবার খেয়েই ছেড়ে দেবে না তোমাকে সরিয়ে পাকাপাকি ভাবে আমার ওপর চড়ে বসতে চাইবে।তোমার কি মনে হয়”?




আমি একমনে মনীষাকে খুঁড়তে খুঁড়তে কোন ক্রমে বললাম –“জানিনা, তুমি কি সত্যি সত্যি চাও রবির বুকের তলায় শুতে”?




মনীষা হিসহিসে গলায় একটু হাঁসলো।তারপর বললো –“তোমার বুকের তলায়তো এত দিন ধরে শুলাম, রবির বুকের তলায় শুতে কেমন লাগে সেটা দেখেতে আমার মন তো একটু চাইতেই পারে, নাকি? তবে একটা মুস্কিল আছে জান, আমি রবির বুকের তলায় শুলে তোমার বুকের তলায় শুয়ে যে দুটোকে বার করলাম তাদের কি হবে।পারবে তুমি ওদের দায়ীত্ব একা সামলাতে।




স্পীডটা একটু কমিয়ে মনীষাকে একটু রগড়ে রগড়ে গাঁথন দিতে দিতে বললাম বিদেশে তো মায়েরা জামা পালটানোর মত বাবা পালটায় তাতে কি ছেলে মেয়েরা মানুষ হয়না।




-“তাহলে আশা আছে বলছো মনীষা খিকখিক করে হেঁসে উঠলো”।




-“ইইইইইই……আশা……অন্য পুরুষের দিকে তাকালে তোমার চোখ দুটো গেলে দেব হতচ্ছাড়া শাঁকচুন্নি কোথাকার”, এই বলে ওর হাত দুটোকে শক্ত করে চেপে ধরে, ওর গালে নিজের মুখ ঘসতে ঘসতে, ওকে ধাক্কা মেরে মেরে… ধাক্কা মেরে মেরে, ওর ভেতর ঢালতে লাগলাম আমার চটচটে কামরস।মনীষাকে বুকের তলায় চেপে ধরে ওর গুদের ভেতরে আমার পুরো বীর্যটা ঢালার পরও ওকে ছাড়লাম না আমি। অনেক্ষন পর্যন্ত ওর নরম গালে আর গলায় মুখ ঘসতে লাগলাম। প্রায় পনের মিনিট পর যখন ওর ওপর থেকে নাবলাম, মনীষা নিজের নাইটি ঠিক করতে করতে আমাকে বললো –“বাপরে এই রবির ওপর কি ভীষণ রাগ তোমার। ওর নাম শুনতেই এরকম জ্বলে ওঠ তুমি তা তো আগে জানতামনা। আজ তুমি প্রায় তিরিশ মিনিট ধরে একটানা চুঁদলে আমাকে।তুমি এর আগে আর কোন দিন এতক্ষন ধরে দিতে পারনি।মাঝে মাঝেই রবির নাম করে এই খেলাটা এবার থেকে খেলতে হবে দেখছি”।




হি হি করে হাঁসতে হাঁসতে আমি বললাম –“দেখ রবি যদি কোন ভাবে জানতে পারে যে ওর নাম করে আমরা রোজ রোজ আমাদের বিছানা গরম করছি তাহলে কালই ও তোমাকে জোর করে তুলে নিয়ে যাবে ওর কাছে।মনীষাও হাঁসতে হাঁসতে বললো –“ইস বেচারা জানবেওনা ওর নাম করে রোজ রাতে কত কত ফুর্তি করবো আমরা এবার থেকে । মনীষার কথা শুনে এবার আমরা দুজনেই একসাথে হেঁসে উঠলাম।




 




১০




সেই সপ্তাহের শুক্রবার অফিস যাওয়ার আগে মনীষা আমাকে বোললো “শোন তুমি আজকে কিন্তু অফিসে বেশি দেরি কোরনা।কারন আজকে তোমাদের অফিসের মিস্টার দেসাই এর বাড়ির পার্টিতে যেতে হবে।আমার মনে পরল আমাদের অফিসের সিনিয়ার অ্যাকাউন্ট্যানট মিস্টার দেসাই কদিন আগে আমাকে ওর বাড়িতে ওর জন্মদিনের পার্টিতে ইনভাইট করছিলেন।অবশ্য শুধু আমাকে নয় উনি আমাদের অফিসের প্রায় সবাইকেই নেমন্তন্ন করেছিলেন।ওনার বউ মিসেস দেসাই আবার প্রত্যেকটি এমপ্লয়ীর বাড়িতে ফোন করে করে তাদের স্ত্রীদের আলাদা আলাদা ভাবে নেমন্তন্ন করেছেন। আমি মনীষাকে জিগ্যেস করলাম কখন যাব আমরা পার্টিতে? মনীষা বললো –“মিসেস দেসাই বলেছেন পার্টি ছটা থেকে শুরু হবে, আমি ভাবছি সাতটা নাগাদ যাব।তুমি কিন্তু পাঁচটার মধ্যে অফিস থেকে চলে এস”।




–“দেখ পাঁচটায় বাড়ি ফিরতে হলে আমাকে চারটেতে অফিস থেকে বেরতে হবে, তার থেকে তুমি সাজুগুজু করে আমার অফিসে চলে এস, তাহলে আমরা একসঙ্গে অফিস থেকে বেরিয়ে মিস্টার দেসাই এর বাড়ি চলে যেতে পারবো”।–মনীষা বললো “ঠিক আছে তাই হবে”।সেদিন আমি সকাল থেকে ফটাফট আমার হাতের কাজ গুলোকে শেষ করে নিতে লাগলাম। কিন্তু একটা ঝামেলার ইস্যু কিছুতেই শেষ করতে পারছিলামনা। সাড়ে চারটে নাগাদ বুঝলাম কাজটা অত সহজে শেষ হবার নয়।আমি সঙ্গে সঙ্গে মনীষাকে ফোন করে ব্যাপারটা বললাম। –“তুমি কিন্তু আমাকে প্রমিস করেছিলে রাজীব” মনীষার গলাতে বিরক্তির ভাব ফুটে উঠলো। -“আমি জানি মনীষা কিন্তু কাজটা এত ইম্পরট্যান্ট যে এটা শেষ না করে আমি বেরতে পারবোনা”।




-“তাহলে কি আজ আর যাওয়া হবেনা”? মনীষা একটু গম্ভীর গলায় জিগ্যেস করলো।




-“না না তা কেন, তুমি এক কাজ কর মনীষা, আমি যদি ঠিক সময়ে কাজ শেষ করতে না পারি তাহলে তুমি পার্টিতে ডাইরেক্ট চলে যাও।আমি কাজ শেষ হলেই অফিস থেকে ওখানে চলে যাব”।




-“না আমি তোমাকে ছাড়া ওখানে যেতে চাইনা।আচ্ছা আমি একটা কাজ করছি, আমি বাচ্চাটাকে একটু বুকের দুধ খাইয়ে সাড়ে পাঁচটা নাগাদ তোমাদের অফিসে চলে আসছি।তোমাদের রিশেপসানেই বসে অপেক্ষা করবো, তোমার কাজ হয়ে গেলে একসাথেই ওখান থেকে বেরবো”।




 

-“ঠিক আছে আমি চেষ্টা করছি কাজটা সাড়ে ছটার মধ্যে শেষ করার”।




মনীষা কোন উত্তর দিলনা শুধু ফোনটা কেটে দিল। বুঝলাম ভীষণ বিরক্ত হয়ে রয়েছে ও মনে মনে।




কাজটা শেষ করতে করতে আমার প্রায় সাতটা বেজে গেল।আমাদের অফিস ঠিক পাঁচটাতে বন্ধ হয়ে যায়। এখন অফিস একবারেই ফাঁকা। এতক্ষণে মনীষা নিশ্চয়ই এসে গেছে।বুঝতে পারছিলাম ও একা একা রিশেপসানে বসে বসে বোর হচ্ছে আর মন মনে আমার মুণ্ডুপাত করছে। আমি তাড়াতাড়ি কম্পিউটার বন্ধ করে আমাদের অফিসের রিশেপসানের দিকে এগোলাম।রিশেপসানে গিয়ে দেখি পুরো রিশেপসানটা ফাঁকা শুধু রবি ওখানে বসে বসে মনীষার সাথে গল্প করছে। কি নিয়ে যেন একটা গভীর আলোচনায় মত্ত ওরা।ব্যাপারটা দেখা মাত্র আমার পেটের ভেতরে কিরকম যেন একটা ঘোঁট পাকিয়ে উঠলো।অনেক কষ্টে নিজেকে সামলালাম আমি। এখন যদি ওখানে গিয়ে আমি কোনভাবে আমার আসন্তুষ্টি ওদের কাছে প্রকাশ করে ফেলি তাহলে মুস্কিল। এক তো রবি আমার কলিগ নয় আমার বস । দুই মনীষাও খেপে যাবে আমার ওপর, বলবে আমি জেলাশ।আ
মি নিজেকে যতটা সম্ভব স্বাভাবিক করে ওদের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম।মনীষা আমাকে দেখেই সোফা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বললো –“তোমার হয়ে গেছে রাজীব?” রবি বললো “ও, রাজীব আর তুমি বোধহয় এখান থেকে ডাইরেক্ট পার্টিতে যাবে না”? মনীষা বললো –“হ্যাঁ, আসলে ও এত দেরি করে ফেললো, এখান থেকে ডাইরেক্ট না গেলে আজ আর পার্টিতে যাওয়া হতনা”।আমি রবির দিকে তাকিয়ে একটু হেঁসে মনীষা কে ইশারা করে বললাম “মনীষা চল এবার বেরনো যাক আমাদের অনেক দেরি হয়ে গেছে”।

[+] 1 user Likes rizvy262's post
Like Reply
#7
কিন্তু বাইরে বেরিয়েই থমকে যেতে হল আমাদের, কারন বাইরে অসম্ভব জোর বৃষ্টি পরছিল। আমার গাড়িটা আমাদের অফিস বিল্ডিং এর থেকে অনেকটা দূরে একটা পারকিং লটে রাখা ছিল। অফিসের সামনের পারকিং লটটা শুধু এই বিল্ডিং এর বিভিন্ন অফিসের ডাইরেক্টরদের জন্য রিজার্ভ করে রাখা। এমনিতে মিনিট পাঁচেক লাগে আমার গাড়ির কাছে পৌঁছতে। কিন্তু যা জোর বৃষ্টি পরছিল তাতে করে ওইটুকু দূরত্ব যেতে যেতে ভিজে চুপ্সে যাব আমি।তাছাড়া পারকিং লটে ঢোকার মুখটাতে ভীষণ জল জমেছে, সেটার মধ্যে দিয়ে যেতে হলে হাঁটু পর্যন্ত ভিজে যাবে আমার। কি করবো তাই ভাবছিলাম এমন সময় রবির গলা পেলাম পেছনে। -“বাপরে এতো ভীষণ বৃষ্টি পরছে, তোমরা যাবে কি করে?রাজীব তুমি এক কাজ কর, তুমি বরং একটু অপেক্ষা কর বৃষ্টিটা ছাড়ার জন্য।বৃষ্টিটা একটু কমে এলে তবে তুমি গাড়িটা বের করার চেষ্টা করো, না হলে এমন কাক ভেজা ভিজে যাবে যে আর পার্টিতে যাওয়ার মতন অবস্থা থাকবেনা।তবে বৃষ্টি কমে গেলেও ওখানে যা জল জমে আছে তাতে মনে হচ্ছে প্যান্ট না ভিজিয়ে তোমার ওখানে যাওয়া মুস্কিল”।মনীষা করুন মুখে বললো –“আজ এতো বাধা পরছে যে মনে হচ্ছে আজ আর পার্টিতে যাওয়া হবে না”।মনীষার করুন মুখ দেখে আমার খুব মায়া হল, বেচারি কখন থেকে সেজে গুজে রেডি হয়ে বসে রয়েছে, আমি আজ অফিসে দেরি না করলে ওকে এরকম অবস্থার মধ্যে পরতে হতনা, আমরা এতক্ষণে মিস্টার দেসাই এর পার্টিতে পৌঁছে যেতাম।হটাত রবি বললো –“রাজীব তুমি যদি কিছু মনে না কর তাহলে আমি মনীষাকে নিয়ে মিস্টার দেসাই এর পার্টিতে চলে যাচ্ছি, তুমি বৃষ্টি থামলে গাড়িটা দেখ বার করতে পার কিনা”? মনীষাকে রবির সাথে ছাড়ার একদম ইচ্ছে ছিলনা আমার কিন্তু ওর করুন মুখের কথা চিন্তা করে আমাকে রাজী হয়ে যেতে হল। মনীষাও দেখলাম না করলো না। বৃষ্টির তেজ একটু কম হতেই মনীষা আর রবি এক দৌড়ে বিল্ডিং এর সামনের পারকিং লটে রাখা রবির গাড়িতে উঠে পরলো। গাড়ি স্টার্ট করার পর রবি আমাকে জানলা দিয়ে বললো “রাজীব তুমি চিন্তা কোরনা, আমি মনীষাকে সাবধানে ঠিক মিস্টার দেসাই এর বাড়িতে পৌঁছে দেব”।মনীষা জানলা দিয়ে আমাকে হাত নাড়লো আর ওদের গাড়িটা হুস করে জল ছিটিয়ে বেরিয়ে গেল। মনীষা আর রবি বেরিয়ে যাবার পরেই মনে কু ডাকতে শুরু করলো আমার। রবির মত লুজক্যারেক্টারের সাথে মনীষাকে ছাড়ার একদম ইচ্ছে ছিলনা আমার কিন্তু সিচুয়েশনটা এমন ছিল যে না বলতে পারলাম না আমি। প্রায় মিনিট পনের পর বৃষ্টিটা একটু ধরে আসতেই আমি পারকিং লটের দিকে দৌড় মারলাম। পারকিং লটের সামনে যথারীতি অনেকটা জল জমা হয়ে আছে। কিন্তু দেখলাম জায়গাটা ঢালু বলেই বোধহয় বেশ কয়েকটা ইঁট এমন ভাবে ওখানে ফেলা আছে যে সাবধানে জলটা পার হওয়া যায়। আমি কোনক্রমে গাড়িতে ঢুকেই গাড়ি স্টার্ট দিলাম।গাড়ি বাইপাসে পরতেই স্পীড তুললাম আমি। ভীষণ দুশ্চিন্তা হচ্ছিল মনীষাকে নিয়ে।মিনিট দশেক গাড়ি চালাবার পরে একবার রিয়ার ভিউ মিররে চোখ গেল, মনে হল আমার গাড়ির বেশ কয়েকটা গাড়ির পেছনে যেন রবির গাড়ি আসছে। এ কি করে সম্ভব? ওরাতো অনেক্ষন আগে বেরিয়েছে। ওদের তো এতক্ষণে মিস্টার দেসাইয়ের বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া উচিত। গাড়িটা ভীষণ আস্তে আস্তে আসছিল। ঠিক বুঝতে পারছিলাম না ওটা রবিরই গাড়ি কিনা। একটু পরেই গাড়িটা বাইপাশ থেকে বাঁ দিকের একটা সরু গলিতে নেমে গেল। “স্টেরঞ্জ” মনে মনে ভাবলাম আমি। আমি গাড়ির গতি আরো বাড়িয়ে দিলাম। কিন্তু মনটা খচখচ করছিল। রবির কি এতো সাহস হবে যে মনীষাকে গাড়িতে সিডিউস করার চেষ্টা করবে? কে জানে কি করছে ওরা গাড়িতে? কত দুরেই বা আছে ওরা? নানা রকম দুশ্চিন্তা আমার মনে ভিড় করে আসতে লাগলো।




প্রায় মিনিট তিরিশেক গাড়ি চালানোর পর মিস্টার দেসাই এর বাড়ি এসে উপস্থিত হলাম। বৃষ্টি ততক্ষণে থেমে গিয়েছিল। মিস্টার দেসাইের বিরাট বাগান বাড়িটা লোকে গিজগিজ করছিল।আমি বাড়ির পাশে যে ফাঁকা জায়গাটাতে সবাই গাড়ি পার্ক করে রেখে ছিল সেখানেই আমার গাড়িটা পার্ক করলাম। কিন্তু মনটা খিঁচরে গেল যখন লক্ষ করলাম রবির গাড়ি ওখানে নেই। মানে রবি আর মনীষারা এখনো এখানে পৌছয়নি। ওরা তো আমার অনেক আগে বেরিয়েছিল, তাহলে গেল কোথায় ওরা? তাহলে কি রবি মনীষাকে পার্টিতে ড্রপ করে অন্য কোথাও চলে গেছে, সেই জন্যই পারকিং প্লেসে ওর গাড়ি নেই? আমি পার্টির ভেতরে মনীষাকে খুঁজতে শুরু করলাম। প্রচুর মহিলা ও পুরুষ বিশাল বাড়িটার চার দিকে যে যার নিজের মত করে জটলা পাকাচ্ছে। পুরো বাগান বাড়িটা তন্ন তন্ন করে খুঁজলাম। বহু লোকের সঙ্গে দেখা হল কিন্তু মনীষা কোথাও নেই।এদিকে যেখানেই মনীষাকে খুঁজতে যাচ্ছি সেখানেই চেনা লোকেদের সাথে অন্তত মিনিট দুয়েক কথা বলতে হচ্ছে ভদ্রতাবসতো। এই সব করতে করতে আরো প্রায় মিনিট কুড়ি পার হয়ে গেল, এদিকে মনীষার দেখা নেই। ওরা যদি কোন কারনে রাস্তায় ফেঁসেও যায় তাহলেও এতো দেরি করার কথা নয় ওদের।রবির প্রতি রাগে টগবগ করে ফুটতে শুরু করলাম আমি। হারামজাদাটা এমন ভাবে মনীষাকে লিফট দেবার কথা বললো যে আমি নাও করতে পারলাম না। এখন নিজের মনে নিজেকেই দোষারোপ করতে আরাম্ভ করলাম আমি।কি করবো কিছুই বুজে উঠতে পারছিলামনা। চুপচাপ অপেক্ষা করা ছাড়া আমার আর কোন উপাই ছিলনা।সবচেয়ে চিন্তা হচ্ছিল এই কারনে যে আমি মনীষাকে ওর সেল ফোনে অনেকবার ফোন করেও কোন উত্তর পাচ্ছিলামনা। প্রত্যেকবারেই মনীষার সেল ফোনে রিং হয়ে যেতে লাগলো। প্রায় আট ন বার রিং করলাম আমি ওর ফোনে কিন্তু প্রত্যেকবারই একই ব্যাপার হল।রবির ফোনেও বার চারেক ফোন করলাম আমি কিন্তু সেখানেও ফোন লাগলোনা, ওর ফোন আনরিচেবল হয়ে আছে।আমি মিস্টার দেসাই এর বাড়ির গেটের কাছটাতে এসে দাঁড়ালাম।হাঁ করে গেটের বাইরের দিকে তাকিয়ে রইলাম, কিন্তু ওদের দেখা নেই। এমন সময় গেটের কাছে নিলিমাকে দেখলাম। নিলিমা মনীষাকে চেনে। আগে দেখেছি পার্টিতে দেখা হলে ওরা খুব গল্প করতো। নিলিমা আমাদের অফিসের আ্যাকাউন্টসে আছে। ওকে গিয়ে জিগ্যেস করলাম ও মনীষাকে দেখেছে কিনা। নিলিমার উত্তর আমাকে একদিকে আশ্বস্ত করলেও আমার মন থেকে দুশ্চিন্তার বোঝাটাকে কমাতে পারলোনা। ও বললো ও একটু আগেই মনীষাকে রবির সাথে বাগানের এক কোনে কথা বলতে দেখেছে।যাক তাহলে ওরা পার্টিতে অন্তত পৌঁচেছে। কিন্তু মনীষা রবির সাথে কি এমন গল্পে মসগুল যে ওর সেল ফোনে এতবার রিং হওয়া সত্বেও ওর খেয়াল পরলো না। নাঃ, মনীষার সঙ্গে রবির ব্যাপারে কথা আমায় বলতেই হবে। মনীষাকে এবার স্পস্ট বলে দেব আমি যে ও যেন দয়া করে এবার থেকে রবিকে এড়িয়ে চলে, কারন আমি ওকে আজকাল একদম সহ্য করতে পারছিনা। তাতে মনীষার রাগ হয় হোগ।আবার বাড়ির ভেতর দিকটাতে ঢুকলাম আমি। নিশার হাজব্যান্ড রাকেশ কে দেখতে পেলাম একটা জটলাতে। ওকে জিগ্যেস করতেই ও বললো ও মনীষাকে রবির সাথে একটু আগে দেখেছে ।ওর কাছে জেনে নিলাম বাগানের কোন দিকটাতে দেখেছে ও রবি আর মনীষাকে। মিস্টার দেসাই এর বাগান বাড়িটা বিশাল জায়গা জুড়ে অবস্থিত। কাউকে একচান্সে এখানে খুঁজে পাওয়া খুব মুস্কিল, বিশেষ করে আজ যখন পার্টিতে এত লোকের সমাগম হয়েছে।কিন্তু বাগানে যওয়ার আগেই পেয়ে গেলাম আমার আরো এক অফিস কলিগকে। ওকে রবির সম্মন্ধে জিগ্যেস করতে ও বললো ও রবি কে মিনিট দশেক আগে একবার গেট দিয়ে বেরিয়ে যেতে দেখেছে।আমি ওকে জিগ্যেস করলাম রবির সাথে আর কেউ ছিল কিনা। কলিগ বললো হ্যাঁ একটা খুব সুন্দরী শাড়ি পরা এক ভদ্রমহিলা ছিলেন রবির সাথে। বুকটা ধক করে উঠলো আমার। তাহলে কি মনীষা রবির সাথে পার্টি থেকে অন্য কোথাও বেরিয়ে গেছে।মনীষা আমার সাথে এরকম করতে পারে স্বপ্নেও ভাবতে পারছিলামনা আমি। আমাদের এতো বছরের বিবাহিত জীবনে মনীষা এমন কোন কাজ কোনদিন করেনি যাতে করে আমার ওর ওপর কোনরকম সন্দেহ হতে পারে। আর তাছাড়া বৃষ্টি কমে গেছে বেশ কিছুক্ষণ আগে, মনীষা নিশ্চই বুঝবে কিছুক্ষণের মধ্যে আমি পার্টিতে চলে আসবো।ওর মনে কোনভাবে রবির সাথে কোন নিরালা জায়গায় যাবার ইচ্ছে হলেও আমি এসে পরবো বলে ও এতটা দুঃসাহস দেখাবেনা। শরীরটা কেমন যেন করতে শুরু করলো আমার। পা দুটো যেন জোর হারিয়েছে বলে মনে হল। কোথাও একটু শুতে পারলে বেশ হত মনে মনে ভাবলাম আমি। শেষে একটা গার্ডেন চেয়ার ফাঁকা পেয়ে সেখানে বসে পরলাম। চোখ বন্ধ করে বেশ কিছুক্ষণ বসে একটু রেস্ট নিতে লাগলাম।




কি কারনে মনীষার এত দেরি হচ্ছে তা অনেক ভেবেও বার করতে পারলাম না আমি।শেষে বুঝতে পারলাম মনীষা না ফেরা পর্যন্ত আমি কিছুতেই জানতে পারবোনা কি হয়েছিল।একটা ব্যাপারে আমি নিশ্চিত যে ওদের রাস্তাতে কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি কারন অন্তত তিনজন একটু আগে ওদের পার্টিতে দেখেছে।নিজেকে একটু সামলে নেবার পর পার্টির যে দিকটাতে বুফে চলছিল সেই দিকে গেলাম আমি।একটা প্লেটে একটু চিকেন পাকৌড়া নিয়ে একটু খাবার চেষ্টা করলাম কিন্তু খেতে পারলাম না। মনে হচ্ছিল যেন ওয়াক উঠে আসছে।শেষে প্লেটটা নামিয়ে রাখলাম।




-“তুমি আসাতে আমি খুব খুশি হয়েছি রাজীব, মনীষা কোথায়, ওর সাথে কিছুক্ষণ আগে অবশ্য একবার দেখা হয়েছে আমার”।




পেছনে ঘুরে দেখলাম মিস্টার দেসাই আমার ঠিক পেছনেই দাঁড়িয়ে আছেন।




-“আমি ঠিক জানিনা ও এখন কোথায়, আমার অফিসে একটু দেরি হয়েছিল বলে ও একলা চলে এসেছে। আমি আসার পরতো ওকে অনেক খুঁজলাম কিন্তু কিছুতেই ওকে পাচ্ছিনা”।




-“তুমি ওকে মোবাইলে ফোন করে নিলেনা কেন, তাহলেই তো ওকে খুঁজে পেয়ে যেতে”।




আমি মিস্টার দেসাই কে বলতে চাইলামনা যে আমি মনীষাকে আমার মোবাইল থেকে ফোন করেছিলাম কিন্তু ও ফোন তোলে নি।




-“আসলে আমি আমার মোবাইলটা তাড়াতাড়িতে অফিসে ফেলে এসেছি সেই জন্য ফোন করতে পারিনি”।




আমার কথা শুনে মিস্টার দেসাই নিজের পকেট থেকে নিজের মোবাইলটা বেড় করে আমার হাতে দিয়ে বললেন –“নাও আমারটা দিয়ে ফোন করে নাও”।




আমি বুঝতে পারছিলাম না যে মনীষা আমার নাম্বার থেকে ফোন না তুললেও অন্য নাম্বার থেকে পাওয়া কল তুলবে কিনা।যাই হোক আমি মনীষার নাম্বার ডায়াল করলাম।মুখে প্রকাশ না করলেও আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম যে মনীষা কলটা রিসিভ করে কিনা।আমি অবশ্য জানতামনা মনীষা কলটা রিসিভ করলে আমি ওকে ঠিক কি বলবো। আমি জানতাম না ও কোথায় কি অব্স্থায় আছে, আমি জানতামনা যে মনীষা কলটা আদৌ রিসিভ করবে কিনা?




আমাকে আশ্চর্য করে মনীষা তৃতীয় রিং হতেই কলটা রিসিভ করলো।




-“হ্যালো”




-মনীষা তুমি কোথায়? আমি রাজীব বলছি।




-“আমি তো অনেকক্ষণ মিস্টার দেসাইের বাড়িতে পৌঁছে গেছি, তুমি কোথায়?




-“আমি তো যেখানটাতে বুফে হচ্ছে সেখানে দাঁড়িয়ে আছি, তুমি কোথায়? আমি তো তোমাকে তো অনেক্ষন ধরে খুঁজছি কিন্তু কিছুতেই তোমাকে দেখতে পাচ্ছিনা”।




হটাত আমার চোখ গেল মিস্টার দেসাইের বাগানের একবারে কোনের একটা জায়গায়।ওখানে দেখি একটা আম গাছের ফাঁক থেকে মনীষা একটা মোবাইল ফোন হাতে নিয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে হাত নেড়ে ডাকছে।ওকে দেখতে পেয়েই যেন আমার বুকের ওপর থেকে একটা বিশাল ভার নেমে গেল।আমি মিস্টার দেসাই কে ধন্যবাদ দিয়ে, ওনাকে ওনার ফোন ফিরিয়ে দিলাম, তারপর মনীষার দিকে হেঁটে গেলাম।ওখানে গিয়ে দেখলাম আম গাছটার পেছনে খুব সুন্দর একটা বসার বেঞ্ছ রয়েছে।জায়গাটা বেশ নিরিবিলি। ওখানে নিশা ছাড়াও আরো দুজন মহিলা রয়েছে, ওরা ওখানে বসে বসে গল্প করছিল।আমি মনে মনে ভীষণ খুশি হলাম এই দেখে যে ওখানে রবি নেই। আম গাছটার পেছনে যে এত সুন্দর একটা বসার বেঞ্চ আছে তা একটু দূর থেকে বোঝা শক্ত। সেই জন্যই বোধহয় আমি এখানটা দিয়ে মনীষার খোঁজে ঘুরে গেলেও ওদের কে গল্প করতে দেখতে পাইনি।




-“ইস তুমি নিশ্চই খুব চিন্তা করছিলে আমার জন্য” মনীষা বললো।




-“হ্যাঁ ভীষণ চিন্তা হচ্ছিল তোমাদের জন্য”। আমি ইচ্ছে করেই তোমার না বলে তোমাদের বললাম।




-“আর বোলনা রবির গাড়িতে কি একটা যেন প্রবলেম হয়েছিল, বার বার স্টার্ট বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। অনেক কষ্টে আমরা এখানে পৌঁছলাম”।




-“তুমি আমাকে ফোন করলে না কেন, আমি আসবার পথে তোমাকে আমার গাড়িতে তুলে নিতাম”।




আমার কথা শুনে মনীষা যেন একটু অস্বস্তিতে পরে গেল। ও বললো




-“আর বোলনা… ফোন করতে গিয়ে দেখি মোবাইলের ব্যাটারিটা একদম শেষ।ফোন অন করলেই অফ হয়ে যাচ্ছে।এখানে পৌঁছেও একবার চেষ্টা করলাম তোমাকে ফোন করতে কিন্তু ফোন অফ হয়ে গেল। শেষে মিস্টার দেশাই এর সাথে দেখা করে ওঁর একটা ঘর থেকে আমার ফোনটাতে মিনিট পনেরো চার্জ দিয়ে নিলাম ।তারপর তোমাকে ফোন করতে যাব এমন সময় নিশার সাথে দেখা। ব্যাস ভুলেই গেলাম তোমাকে ফোন করার কথা।ওর সাথে এখানে চলে এসে গল্প জুড়ে দিয়েছিলাম।সত্যি আমি আজকাল ভীষণ ভুলো হয়ে যাচ্ছি, আমার অবশ্যই উচিত ছিল চার্জ দেবার পর তোমাকে একটা ফোন করার চেষ্টা করা।ফোনে কাউকে না পেলে সবাইয়েরই চিন্তা হয়।এই নিশা এমন সব গল্প জুড়লো যে ভুলেই গেছিলাম তোমার কথা। হটাত দেখি একটা ফোন এসেছে। তুলে বুঝলাম ওটা তুমি”।




-“আমি পার্টিতে এসে দেখি রবির গাড়ি পারকিং প্লেসে নেই। তখনই বুঝলাম নিশ্চই কিছু একটা গণ্ডগোল হয়েছে। তোমরা তো আমার অনেক আগে অফিস থেকে বেরিয়েছ। তোমাদের তো অনেক আগে এখানে পৌঁছানোর কথা ছিল”।




-“তোমাকে বললাম না রবির গাড়িতে একটু প্রবলেম হচ্ছিল। আমাকে নাবিয়ে দিয়ে রবি একটু মেকানিকের খোঁজে গেল। ওকে তো নিউআলিপুরে বাড়ি ফিরতে হবে আজ রাতে। এই ভাবে থেকে থেকেই স্টার্ট বন্ধ হয়ে গেলে তো গাড়ি চালানোই ভীষণ মুস্কিল, আর বেশি রাত হয়ে গেলে মেকানিকও পাওয়া যাবেনা।ওই জন্যই ও তড়িঘড়ি করে বেরোল।এখন বুঝতে পারছো কেন তুমি রবির গাড়ি পারকিং প্লেসে দেখতে পাওনি”।




আমি বললাম ঠিক আছে অনেক গল্পটল্প হয়েছে, এখন চল তাড়াতাড়ি কিছু খেয়ে নি। আমার কথা শুনে নিশারাও বললো -“হ্যাঁ চলুন রাজীবদা আমাদেরও খুব খিদে পেয়ে গেছে”।




মনীষার দেরি হবার আসল ঘটনাটা জানার পর আমার নিজেকে ভীষণ হালকা আর ফুরফুরে লাগছিল।কিন্তু মনীষাকে কেমন যেন অন্যমনস্ক দেখলাম। কি হয়েছে জিগ্যেস করাতে ও বললো ওর অল্প একটু মাথা ধরেছে।অবশ্য বুফেতে গিয়ে খাওয়া দাওয়া শুরু করতে আর নিশার সেই ইরোটিক জোক শুনতে শুনতে একটু পরেই মনীষা আমাদের সাথে হাঁসাহাঁসিতে মেতে উঠলো।




যাই হোক পার্টি ভালোয় ভালোয় মিটে যাবার পর আমরা বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। ফেরার পথে গাড়ি ড্রাইভ করতে করতে আমার এক এক করে মনে পরতে লাগলো পার্টিতে যখন মনীষাকে দেখতে পাচ্ছিলাম না তখন আমার নিজেকে কিরকম হেল্পলেস লাগছিল।সবচেয়ে অস্বস্তি লাগছিল তখন, যখন আমি শুনলাম যে রবি যখন পার্টি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিল তখন রবির সাথে একজন সুন্দরী শাড়ি পরা মহিলাও ছিল।মনটা খচখচ করে উঠলো আমার। নিজেই নিজেকে মনে মনে প্রশ্ন করলাম রবির সাথে শাড়ি পরা ওই সুন্দরী মহিলাটি কি মনীষা ছিল? ওকি সত্যিই রবির সাথে কোথাও গিয়েছিল পার্টি থেকে আর আমি আসার একটু আগে রবি ওকে পার্টিতে ফিরিয়ে দিয়ে গিয়েছিল।কে জানে আসল ব্যাপারটা কি? আমার মনের মধ্যে কি চলছিল মনীষা সেটা বুঝতে পারছিলনা, ও একমনে পার্টিতে কে কি বললো সেই নিয়ে কনটিনিউাস বকে যাচ্ছিল, যার একটা কথাও আমার কানে ঢুকছিলনা।

Like Reply
#8
হেরোর ডাইরি গল্পটা অসম্পূর্ণ, লেখক অরিজিনাল গল্পটা সম্পূর্ণ করেননি। দুটা ফ্যানরিটেন এন্ডিং রয়েছে।  এর মধ্যে  joy1971 এর এন্ডিংটা লেখক অরিজিনাল প্লট থেকে টেনে অনেকটা নিলেও ভালো লিখেছেন।
Like Reply




Users browsing this thread: