Posts: 1,140
Threads: 24
Likes Received: 9,386 in 1,120 posts
Likes Given: 18
Joined: Nov 2019
Reputation:
2,564
23-06-2024, 01:41 AM
(This post was last modified: 23-06-2024, 11:27 AM by kumdev. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
বিংশতি পরিচ্ছেদ
সময় থেমে থাকে না।দেখতে বেখতে পাভপুজো দরজায় কড়া নাড়া শুরু করেছে।বাতাসে উৎসবের আমেজ।দর্জির দোকানে নতুন জামা প্যণ্ট তৈরীর ব্যস্ততা।এসব কিছুর সঙ্গে আরণ্যকের কোনো সম্পর্ক নেই।ঝর্ণাদি কিছু করার কথা বলায় আরণ্যক ভাবেনি তা নয়।আলমারি বেচা টাকার অবশিষ্ট তার হাতে শ-চারেক মত।সন্তোষদাকে বললে হয়তো কোথাও ঢুকিয়ে দিতে পারে।কিন্তু নিজের জন্য কাউকে কিছু বলা তার পক্ষে সম্ভব নয়।দোকানে বসে বসে পথের লোক দেখতে দেখতে সময় কেটে যায়।আরণ্যক লক্ষ্য করেছে সকাল নটা নাগাদ ফরেনার মহিলা সাজগোজ করে দোকানের সামনে দিয়ে বাস রাস্তার দিকে যায়।আবার সন্ধ্যের আগেই ফিরে আসেন।হয়তো কোথাও চাকরি-বাকরি করেন।হাতে অফুরন্ত সময় থাকলে নানা উদ্ভট চিন্তা মনে আসে।আরণ্যক ভাবে দিনের পর দিন মনের কথা অন্যের সঙ্গে শেয়ার না করে থাকা যায়?এই মহিলা কার সঙ্গে কথা বলবেন,কিভাবে সময় কাটান উনি? বাঙালী পাড়ায় ফ্লাট কিনলেন কেন?পার্ক স্ট্রীট কিম্বা চোরঙ্গী পাড়ায় ফ্লাট কিনতে পারতেন।অবশ্য সেখানে এত কমে ফ্লাট পাওয়া অসম্ভব।আবার নিজেই নিজেকে ধমক দেয় তোমার অত কথায় কাজ কি বাপু।
দু-চারজন বিনি পয়সার পাঠক দোকানের সামনে এসে গেছেন।কাগজ তুলে নিয়ে চোখ বোলাবেন কিছু মন্তব্য করবেন শেষে কাগজ রেখে বাজার করে বাড়ী ফিরে যাবেন।বিশ্বনাথ দে শ্যামল সরকার সুরেশ মাইতি বিনয় আঢ্য সবাই বাবা-কাকার বয়সী আরণ্যকের পরিচিত।কাকু কাগজে হাত দেবেননা একথা তো বলা যায়না।
মোবাইলটা ছেলেপুলের সর্বনাশ করল।বিনয় আঢ্য বললেন।
তা যা বলেছেন।একটা ছেলে সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছে ঘাড় ব্যাকা।পরে দেখলাম ছেলেটার কানে মোবাইল গোজা।সুরেশ বাবু তাল দিলেন।
আরণ্যকের ওদিকে মন থাকলেও কিছু কথা ছিটকে আরণ্যকের কনে আসেবেলার ।বুঝতে পারে আজকের টপিক মোবাইল।
সেদিন অটোতে বিটী রোড যাচ্চি আমার পাশে বসা একটি মেয়ে সারাক্ষণ মোবাইলে কথা বলে চলেছে।এতক্ষণ ধরে কার সঙ্গে কি কথা আশেপাশে কয়েকজন বসে আছে সেদিকে হুশ থাকলে তো-
বিশ্বনাথবাবুর কথা শেষ না হতেই শ্যামল সরকার বললেন,কার সঙ্গে আবার বয় ফ্রেণ্ড আজকাল এই হয়েছে ফ্যাশন।
কি যে হয়েছ আমরা এগোচ্ছি না পেছোচ্ছি ভগবান জানে।মা-মাসী জ্ঞান নেই। বিনয়বাবুর গলায় আক্ষেপের সুর।
সুরেশবাবু বললেন,চলি আবার দশটা-পাচটার অফিস আছে।
শ্যামলবাবু বললেন,হ্যা বিনয়দার তো সে পাঠ চুকেছে।ওরা চলে গেলেন।
কাগজগুলো এলোমেলো ভাজ করে রেখে গেছেন আরণ্যক সেগুলো পরিপাটি করে ভাজ করে তুলে রাখে।বিশেটা ব্যাগ রেখে কোথায় গেল?ব্যাগ ফাক করে দেখল,তরীতরকারী আর একটা স্যানিটারি প্যাড।একেবারে কাজের লোক হয়ে গেল। এ শালা কেমন প্রেম! যা করছে ঠিক করছে?
হন্তদন্ত হয়ে বিশ্বনাথ এসে বলল,রনো ব্যাগটা দে।
ব্যাগটা দিতে দিতে বলল,তোকে একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
বিশু চোখ তুলে তাকাতে রনো বলল,বাজার কি তুই নিজের টাকায় করিস?
কি আজেবাজে বকছিস?আমার বাপের কি তেলকল আছে?
তোকে বাজার স্যানিটারি প্যাড কেনা তোকেই কোরতে হবে?
তুই দেখেছিস?কি করব বল বাড়ীতে পুরুষ মানুষ নেই বাপটার বয়স হয়েছে।আসি সন্ধ্যেবেলা দেখা হবে।
বিশুর কথায় মমতার সুর আরণককে স্পর্শ করে,ভাবে ওদের বিয়ে হয়ে গেলে এসব কাজ তো ওকেই করতে হবে।একটাই চিন্তা হয় আগের বারের মতো দাগা খাবে নাতো?প্রেম চলছে আবার সেজেগুজে পাত্রপক্ষের সামনে হাজিরাও চলছে।
পিকলুর মনে নেতৃত্ব সম্পর্কে দ্বিধার ভাব।আমি ওদের পার্টি করিনা তবু আমাকে খুব বিশ্বাস করে।সন্তোষদা আমাকে এক্সপ্লয়েট করছে এরকম একটা কথা কানে এসেছে।সেসব নিয়ে ভাবিনা আমি এইটা বুঝি দু- বেলার আহার আমার জুটছে।ইচ্ছে করলেই আমি দোকানের কাজ ছেড়ে চলে যেতে পারি জোর করে কেউ আমাকে আটকে রাখেনি।কে বেশী লাভবান হচ্ছে সে হিসেব নিকেশে আমার কি দরকার।
তরঙ্গবালা ঘর মুছতে মুছতে পিছন দিকে সরতে সরতে দরজা দিয়ে বেরিয়ে যাবে।বিনয় আঢ্য বাজার করে বাসায় ফিরলেন।খেয়াল না করায় বাজারের থলে তরঙ্গের পিছনে আঘাত করে।তরঙ্গ আউচ করে উঠতে বিনয় আঢ্য ইস লেগেছে বলে নীচু হয়ে তরঙ্গের পাছা টিপতে থাকেন।করেন কি পুরাণ কাপড় ছিড়ে যাবে বলে জলের বালতি রেখে উঠে দাঁড়িয়ে পাছার কাপড় তুলে ধরে বলল,এইবার টেপেন।
চোখের সামনে উন্মুক্ত তরঙ্গর পাছা দেখে বাষট্টি উর্ধ বিনয় আঢ্যের লালা গড়িয়ে পড়ার উপক্রম।বাজারের থলে পাশে রেখে দু-হাতে পাছা টিপতে থাকেন।গরীব বড়লোক যেই হোক মেয়ে মানুষের পাছা বেশ নরম।মাঝে মাঝে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখেন মনো আসছে কিনা।
মনোরমার গলা পাওয়া গেল,তরঙ্গ দাদার বাজার থেকে আসার সময় হয়ে গেল তুই হাড়িটা মেজে আমাকে দিয়ে যা।
তরঙ্গ বিরক্ত হয়ে বলল,কাজের সময় খালি ডিস্টাপ,ছাড়েন ছাড়েন।
বিনয় আঢ্য হাত সরিয়ে বললেন,আরাম হয়েছে?
আমার কথা বাদ দেন আপনের মনে শান্তি হয়েছে?
এতে মন ভরে না।
মন ভরাতি হলি খরচা করতি হবে।
কিরে তরঙ্গ তোর ঘরমোছা হল।রান্না ঘর থেকে মনোরমার গলা পাওয়া গেল।
কি রকম দিতে হবে?
এই ধরেন একবার ফেলাতি দুইশ।
কি বলিস কি এই শরীর দুইশো?
আচ্ছা ঠিক আছে আপনের যখন ফেলাতি ইচ্ছে হয়েছে দেড়শ দেবেন।
অত দিতে পারব না।
কিরে হাড়িটা হল? মনোরমার গলা।
মাগী জ্বালালে দেখছি।শোনেন আমার শেষ কথা একশর এক পয়সা কম হবে না।বয়স হলি কি হবে যুবতী মেয়ের স্বাদ পাবেন গিরাণ্টি।
ঠিক আছে তুই যা পরে কথা হবে। নাহলে মনো এখানে এসে পড়বে।আর শোন আমার সামনে মাগী-মাগী বলবি না শত হলেও মনো আমার স্ত্রী মনে রাখিস।
সন্ধ্যে নামার একটু আগে ইলিনা ব্রাউন ফিরে এল।অনিকার হাতে ফোন দেখে বলল,তোমার এত ফোন আসে কোথা থেকে?
বাঃ আমার মেয়ে ফোন করবে না?
কলেজ কলেজ কি বলছিলে--
আমি আবার কলেজ কখন বললাম?অবাক হবার ভান করে।
মিথ্যে বলছে।ইলিনা বলল,শোনো বাড়ীর কথা বাইরে কাউকে বলতে যাবেনা।আমকে একটু চা দাও।
চোখেমুখে জল দিয়ে পোশাক বদলে ব্যালকনিতে গিয়ে বসল ইলিনা।
পরীক্ষা দিয়ে ভাইবায় ডাক পেয়েও গেছিল।তারপর কিহল খোজ নেবার ইচ্ছে হয়নি।বাইরে বেরোলেই নেশা করবে।হঠাৎ একদিন চিঠি এল শ্রীরমপুরে একটা কলেজে within fortnight join করে রিপোর্ট করতে বলেছে।ধন্দে পড়ে যায় কি করবে বুঝে উঠতে পারেনা।শ্রীরামপুর কোথায় কতদূরে কোনোদিন নামই শোনে নি।কলকাতাটা মোটামুটি চিনেছে।দ্যোদুল্যমান অবস্থায় তিন চারদিন কাটলো।মাম্মী যদি ইচ্ছা মৃত্যু বরন করে সে কিকরে আটকাবে।কৌতূহল বশত একদিন বেরিয়ে পড়ল।জিজ্ঞেস করে করে শ্রীরামপুর কলেজে পৌছাল।সুন্দর বিলডিং কলেজটা নতুন হয়েছে।মোটামুটি বাসে মিনিট পয়তাল্লিশ সময় লাগে।দ্বিধাগ্রস্ত মন নিয়ে ভিতরে ঢুকতে সবাই অবাক হয়ে তাকে লক্ষ্য করে।পরিচয় দিতে তাকে প্রিন্সিপালের ঘর দেখিয়ে দিল।তার মুখে বাংলা শুনে প্রিন্সিপাল ম্যাডাম হতবাক।
অনিকা চা নিয়ে এল।ফোন বাজতে বলল,মৌসী ফোনটা দিয়ে যাও তো।এখন আবার কে ফোন করল চায়ে চুমুক দিয়ে ভাবে।
অনিকা ফোনটা এনে দিতে দেখল সুপমা।কানে লাগিয়ে বলল,হ্যা বল।
কি করছিলি?
একটু আগে কলেজ থেকে ফিরলাম।তারপর বল কেমন আছিস?
ঐ একরকম।শেষ অবধি জয়েন করলি?
হ্যা অন্তত চর্চাটা থাকবে নাহলে এতকাল যা পড়েছি ভুলে যেতাম।
ভালই হল।এবার একটা বিয়ে করে ফেল।
বিয়ে করলে একজন মানুষকে করব গাড়ী বাড়ীকে নয়।কথাটা মনে এলেও মুখে বলেনা।বেচারি আহত হতে পারে।বলল,ভাল্ভাবে বেচে থাকতে বিয়েটা কি জরুরী?আমার ড্যাড কিছু টাকা রেখে গেছে আমিও ভাল উপার্জন করছি আমার দিব্যি চলে যাবে।আমি আমার ছাত্রীদের নিয়ে ভাল আছি ওরাও আমাকে এ্যাকসেপ্ট করেছে। বিয়ের কথা ভাবছি না।
বিয়ে কি শুধু ওই জন্য?
তাহলে?ও তুই সেক্সুয়াল পার্টনারের কথা বলছিস?
সেটা কি অস্বীকার করতে পারবি?
জানি না তবে তার জন্য বিয়ে ছাড়া অন্য উপায়ও আছে।
সুপমার কান ঝাঝা করে উঠল বলল,ধ্যেৎ তুই যে কি বলিস।
ইলিনা হেসে বলল,শুনতে খারাপ লাগল?মেয়েদের কথা জানিনা তবে ঘরে বউ থাকতে পতিতা পল্লীতে রাত কাটায় এমন আমি দেখেছি।
তুই একদম বদলালি না।
আমি অনেক বদলে গেছি দগ্ধ হতে হতে এখন শুধু মেয়ে নয় মানুষ হতে চেষ্টা করছি।আচ্ছা সুপমা তুই আগুণের পরশমণি গানটা শুনেছিস?
হ্যা রবীন্দ্র সঙ্গীত কেন?
জানিস আমি এখন নিজের কথা নয় অন্যের আনন্দ বেদনা হাসি কান্না অনুভব করতে চেষ্টা করি।যত জানছি বুঝতে পারছি যা জানতাম তা কত নগণ্য
সুপমা বন্ধুর কথা বুঝতে পারেনা বলল,তাহলে তুই বিয়ে করবি না?
এমন প্রমিশ আমি করিনি।চলার পথে যদি এমন একজনের দেখা মেলে যে নিজের জন্য নয় আমার জন্য আমাকে বিয়ে করতে চায় সেদিন ভেবে দেখব।
ইলুর কথাগুলো অদ্ভুত লাগে সুপমা বলল,অনেক কথা হল,এখন রাখছি?
হ্যা ভাল থাকিস।
ফোন কেটে দিয়ে ইলিনা ভাবে সুপমাকে অনেক বেশী কথা বললাম এতকথা বলার দরকার ছিল না।সুপমার চিন্তার জগৎ অনেক বদলে গেছে।প্রতিদিন কলেজ যেতে অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হয়।কত মানুষকে দেখতে হয়।সবার চিন্তা চেতনার মান সমান নয়।তাদের ভাবনা চিন্তার ছাপ নিশ্চয়ই বাইরে ফুটে ওঠে।ইলিনা পাড়ায় বেরোয় না বাজারঘাট সব অনিকাই করে।কলেজ থেকে ফেরার সময় বাজারের কাছে তারই সমবয়সী কিছু ছেলেকে জটলা করতে দেখে শঙ্কা হয়েছিল কদিন পর ভুল ভেঙ্গেছে ছেলেগুলো ডিসটার্বিং নয়।কিম্বা তার চেহারা গায়ের রঙ তাদের সাহসী হতে দেয়নি।দোকানে বসা ছেলেটা একটু অন্য রকম চেহারায় একটা ঔজ্বল্য আছে।খারাপ লাগে একটা ইয়াং ছেলে কিভাবে অলস বসে বসে সময় কাটায়?এক একসময় ইচ্ছে ওদের সঙ্গে পরিচিত হতে ওদের ভাবনা চিন্তা বুঝতে কিন্তু একটা মেয়ের পক্ষে সেটা সম্ভব নয় ওরাও স্বাভাবিকভাবে নিতে পারবে না।একজনকে দেখে তাকে চেনা যায় না অবশ্য একজন মানুষ নিজেই নিজেকে কতটুকু চেনে।
ডাক্তারের পরমর্শ মত অধ্যাপক সত্যপ্রিয় স্ত্রীর জন্য একটা হুইল চেয়ার কিনেছেন।সারাদিন শুয়ে থাকলে হারপিস হতে পারে তাছাড়া মনের উপরও চাপ পড়ে।আগের তুলনায় মেনকার অনেক উন্নতি হয়েছে।হাত-পা নাড়তে পারেন।সকালে ধরে হুইল চেয়ারে বসিয়ে দেওয়া হয় রাতে আবার বিছানায় শুইয়ে দেওয়া হয়।সকাল বেলা সহেলী হুইল চেয়ার ঠেলে বারান্দায় নিয়ে যায়।ভোরের আলো এসে গায়ে পড়ে।মেনকা ফ্যাল ফ্যাল করে আকাশের তাকিয়ে থাকেন।আউ-আউ করে কত কথা বলে যান সহেলী বুঝতে না পারলেও চুপচাপ শুনে যায়।তবে কিছু বললে মেনকা বুঝতে পারেন ঘাড় নেড়ে সায় দেন।সারাক্ষণ ম্যাক্সি পরেই থাকেন অসুস্থ হবার পর থেকেই তার শাড়ীর সঙ্গে বিচ্ছেদ।
অধ্যাপক সান্যাল বাসায় ফিরলে সহেলী দরজা খুলে দিল।
মিনু কি করছে?
এখন ম্যাডামরে চা খাওয়াবো।সহেলী বলল।
সত্যপ্রিয় পোশাক বদলে উকি দিয়ে দেখলেন সহেলী চায়ে চুমুক দিচ্ছে পাশে একটা কাপে চা ঢালা।ঐ চাটা মিনুর জন্য একটু ঠাণ্ডা করে খাওয়ায়।বেশী গরম চা মিনু খেতে পারে না।সত্যপ্রিয় দরজার কাছে দাড়িয়ে দেখতে থাকেন।সমুর ধারণা বাপি তার মায়ের যথেষ্ট যত্ন করে না।ডাক্তার যখন যে রকম বলছেন করছেন।ফিজিওথেরাপিস্ট চব্বিশ ঘণ্টা আয়া রেখছেন আর কি করতে পারেন।কলেজ বন্ধ করে বউকে নিয়ে বসে থাকলে চলবে।
সহেলী নিজের চা শেষ করে অন্য কাপটা মিনুর ঠোটের সামনে ধরল।একী করছে মিনু হাত বাড়িয়ে কাপটা চেপে ধরেছে।কারো সাহায্য ছাড়াই নিজে নিজে চা খাবে নাকি?কাপটা চেপে ধরেছে সহেলী কাপ ছেড়ে দিতে মিনু চায়ের কাপের দিকে মুখটা নিয়ে যাচ্ছে হাতটা কাপছে।মিনু কি নিজে নিজে চা খেতে পারবে?কাপে ঠোট ছোয়াতে যাবে অমনি হাত থেকে কাপটা খসে পড়ল কোলের উপর।সহেলী আর্তনাদ করে উঠল,আমি এই ভয়টাই পেয়েছিলাম স্যার দেখে যান-
সত্যপ্রিয় ততক্ষণ ঘরে ঢুকে পড়েছেন।সহেলীকে বললেন,তুমি ও ঘরে যাও আমি চেঞ্জ করে দিচ্ছি।
স্লিভলেস ম্যাক্সি খোলা-পরার সুবিধের জন্য উপর থেকে নীচ অবধি চেরা।সত্যপ্রিয় সামনের বোতামগুলো খুলতে লাগলেন।সহেলী ভেজানো দরজার ফাক দিয়ে রুদ্ধশ্বাসে দেখতে থাকে স্যারের কাণ্ড।মেনকার একটা হাত কাধে নিয়ে উচু করে পাছার নীচ থেকে ম্যাক্সিটা টেনে বের করল।ভাগ্যিস চা বেশী গরম ছিলনা।মেনকা সম্পূর্ণ উলঙ্গ।একটা ভেজা তোয়ালে দিয়ে সারা গা মুছতে থাকেন।তলপেটের নীচে মৌচাকের মত একথোকা বাল।মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সত্যপ্রিয়। কি সুন্দর ফিগার কিন্তু দেহে সাড় ণেই। আচমকা মেনকার বুকে মুখ চেপে ধরে গোমরাতে গোমরতে বলে জানো মিনু সমু বলে আমি নাকি তোমার যত্ন করিনা।মিনু তুমি বিশ্বাস করো সমুর কথা।উঠে ছোটো কাচি নিয়ে এসে বাল ছাটতে থাকে।বাল ছাটা হলে বুকে পেটে গুদে পাগলের মত মুখ ঘষতে থাকেন।মেনকা অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।কিছুক্ষণ পর চোখের কোল থেকে গড়িয়ে পড়ল জল।
কোল থেকে মুখ তুলে চোখে জল দেখে সত্যপ্রিয় বললেন,মিনু তুমি কাদছো?প্লীজ তুমি কেদোনা।তুমি কাদসে আমার কষ্ট হয়।একটা পরিস্কার ম্যাক্সি আগের মত তুলে পরিয়ে দিলেন।সহেলীকে ডেকে বললেন,ভিজে ম্যক্সিটা ধুয়ে মেলে দাও।ম্যাডামকে চা খাইয়ে দাও,আমাকেও এককাপ দিও।
The following 14 users Like kumdev's post:14 users Like kumdev's post
• A.taher, abrar amir, buddy12, ddey333, Maleficio, MNHabib, moly.maji, mozibul1956, nightangle, pradip lahiri, prataphali, S.K.P, Uzzalass, Voboghure
Posts: 18,194
Threads: 471
Likes Received: 64,133 in 27,392 posts
Likes Given: 23,565
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,249
মানব চরিত্র আর সম্পর্কের কি অপরূপ বর্ণনা !!
এক একটা লাইন আলাদা করে উপভোগ করার মতো। গল্প বলে মনেই হয়না , যেন চোখের সামনে দেখা যাচ্ছে সব কিছুই।
ঘটনার সময়ের পটভূমি তো পশ্চিমবঙ্গের বামপন্থী কাল , তখন কিন্তু মোবাইল ফোনের উৎপাত শুরু হয়নি।
Posts: 1,140
Threads: 24
Likes Received: 9,386 in 1,120 posts
Likes Given: 18
Joined: Nov 2019
Reputation:
2,564
(23-06-2024, 08:29 AM)ddey333 Wrote: মানব চরিত্র আর সম্পর্কের কি অপরূপ বর্ণনা !!
এক একটা লাইন আলাদা করে উপভোগ করার মতো। গল্প বলে মনেই হয়না , যেন চোখের সামনে দেখা যাচ্ছে সব কিছুই।
ঘটনার সময়ের পটভূমি তো পশ্চিমবঙ্গের বামপন্থী কাল , তখন কিন্তু মোবাইল ফোনের উৎপাত শুরু হয়নি।
১৯৯৫ সালে মোবাইল চালু বাম শাসন চলেছিল ১০- ১১ সাল পর্যন্ত
Posts: 33
Threads: 0
Likes Received: 21 in 19 posts
Likes Given: 72
Joined: Aug 2022
Reputation:
0
ঠিক কথা একেবারে
Posts: 1,494
Threads: 0
Likes Received: 1,433 in 906 posts
Likes Given: 4,900
Joined: Jan 2019
Reputation:
182
(23-06-2024, 08:29 AM)ddey333 Wrote: মানব চরিত্র আর সম্পর্কের কি অপরূপ বর্ণনা !!
এক একটা লাইন আলাদা করে উপভোগ করার মতো। গল্প বলে মনেই হয়না , যেন চোখের সামনে দেখা যাচ্ছে সব কিছুই।
মানবিক সম্পর্কের বর্ননা ও বিশ্লেষণ কামদেব দাদার লেখার মূল উপাদান ।
Posts: 1,494
Threads: 0
Likes Received: 1,433 in 906 posts
Likes Given: 4,900
Joined: Jan 2019
Reputation:
182
খুব সুন্দর আপডেট।
লাইক ও রেপু দিলাম।
Posts: 622
Threads: 0
Likes Received: 311 in 254 posts
Likes Given: 1,274
Joined: Dec 2021
Reputation:
13
অসাধারণ, সুন্দর লেখনী, গল্পের বাঁধুনি অত্যন্ত সুন্দর, কিন্ত গল্প যে সময়ের সেই সময় কিন্তু মোবাইল ফোন চালু হয়নি, সম্ভবত ৯৫ সালে মোবাইল ফোন বাংলাতে এসেছে।
Posts: 9
Threads: 0
Likes Received: 4 in 4 posts
Likes Given: 7
Joined: May 2019
Reputation:
0
মানুষের বাইরেটা দেখে যে মানুষকে বোঝা যায় না সেটা এই আপডেটের সত্যপ্রিয়র ব্যবহার দেখেই বোঝা গেল ।
Good as alwasy. Carry on.
Posts: 583
Threads: 0
Likes Received: 226 in 200 posts
Likes Given: 1,596
Joined: Feb 2022
Reputation:
13
অসাধারণ দাদা, আপডেট এর আশায় রইলাম
•
Posts: 417
Threads: 0
Likes Received: 847 in 365 posts
Likes Given: 595
Joined: Aug 2021
Reputation:
155
Posts: 1,140
Threads: 24
Likes Received: 9,386 in 1,120 posts
Likes Given: 18
Joined: Nov 2019
Reputation:
2,564
একবিংশতি পরিচ্ছেদ
দোকান বন্ধ করে শুয়ে পড়েছে আরণ্যক। যতক্ষণ ঘুম না আসে সারাদিনের কথা মনে মনে চর্বিত চর্বন করে।আমরা যখন কথা বলি অন্যের দিকে তাকিয়ে বলি নিজের দিকে তাকাইনা।বেশ মজা লাগে সেই চালুনি-সূচের মতো।মান্তু খবর নিয়ে এসেছে মেমসাহেব হুগলী না কোথায় একটা কলেজের অধ্যাপিকা।চেহারায় একটা গাম্ভীর্যের ছাপ।একটা ব্যপার খারাপ লেগেছে ওর ফ্লাটের নীচে ডাস্টবিনে নাকি মদের বোতল পড়ে থাকতে দেখা যায়।অবশ্য বিদেশীদের কাছে মদ কোনো বিষয় নয় ওরা সপরিবারে একসঙ্গে মদ্যপান করে।আর এইসব নিয়ে তার ভাবার দরকার কি?ঝর্ণাদির জন্য খারাপ লাগে।এই প্রথম তার কাছে এসে কিছু চেয়েছিল কিন্তু কিছু করতে পারেনি।পিকলুর কথায় মনে হল সন্তোষদা চায়না ওরা ঘরভাড়া পাক।শুনেছে এখন অবধি ওরা ঘর ভাড়া পায়নি।পুলিশ ভদ্রলোক মেসে থাকে। পিকলু কি রাজনীতি ছেড়ে দেবে নাকি অন্য দলে যোগ দেবে?যাই করুক পিকলু তার বন্ধু থেকেই যাবে।বিশুর কথা ভেবে মজা লাগে।মোবাইলে মেসেজ করে ফর্দ পাঠায় বিশু সেসব কিনে বাড়ী পৌছে দেয়।বিশুকে দিয়ে সব করায় এমন কি নিজের স্যানিটারি ন্যাপকিন পর্যন্ত বিশুকে দিয়ে কেনায়।ছেলেদের মত জিনস পরে অফিস যাও এসব নিজে কিনতে পারোনা। বিয়ে করতে হলে প্রেম করতে হবে কেন?প্রেমের মাধ্যমে পরস্পরকে জানা যায় আরণ্যক মানতে পারেনা।প্রেমের অন্তরালে চাপা থাকে মিথ্যাচার।একে অপরের প্রিয় হতে অনেক মিথ্যে অনেক অভিনয়ের আশ্রয় নেয়। কয়েক মাস মেলামেশা করলেই একে অপরকে জানতে পারে?মানুষ চেনা এত সহজ।আমরা নিজেরা নিজেদের কতটুকু চিনি? আমরা কি চাই তাকি নিজেরাই জানি?একটা কথা পড়েছি একটি পদার্ধের যা শক্তি তার ক্ষুদ্র ভগ্নাংশের আমরা পরিচয় পাই,ব্যবহারিক ক্ষেত্রে কাজে লাগাই।এইসব হাবিজাবি ভাবতে ভাবতে আরণ্যক ঘুমিয়ে পড়ে।
রাত নিঝুম সবাই শুয়ে পড়েছে।কাল আবার কলেজ আছে ইলিনাও শুয়ে পড়বে। একটা গেলাসে পানীয় নিয়ে ব্যালকনিতে বসে সিপ করতে থাকে।সুপমার সঙ্গে কথা বলে মনে হল বিয়ে নিয়ে প্রথমে যে অসন্তোষ ছিল এখন মানিয়ে নিয়েছে।মেয়েরা সহজে মানিয়ে নিতে পারে।বিয়ের আগের সব স্বপ্ন কল্পনা সরিয়ে রেখে বিবাহিত জীবনের নতুন প্রবাহে স্বচ্ছন্দে গা ভাসিয়ে দিতে পারে।বয়স হলে বিয়ে করতে হবে এই রীতি।বিয়ে দৈহিক সুচিতা এসব শুরুতে ছিল না।এসেছে অনেক পরে মানুষই সৃষ্টি করেছে এসব রীতিনীতি।একজন শুধুমাত্র পুরুষ পরিচয়ে খবরদারি করবে ইলিনা মেনে নিতে পারেনা।অন্যভাবে জীবনযাপন করা যায়না?কেবল নিজের জন্য নয় অন্যের জন্যও তো কিছু করা য়ায়,অন্যের সুখ-দুখকে নিজের করে কি বাচা যায়না?একটা কবিতার লাইন মনে পড়ল,পরের কারণে মনণেও সুখ
সুখ সুখ করে কেদনা আর ...যতই কাদিবে বাড়িবে জীবন ভার।গেলাসে শেষ চুমুক দিয়ে উঠে পড়ল ইলিনা।মাম্মী নেশা করে বেহুশ হয়ে যায়।নেশা করে বেহুশ হয়ে যদি উপভোগ নাই করলাম তাহলে নেশা করব কেন?
বিছানা ঝেড়ে লাইট নিভিয়ে শুয়ে পড়ল ইলিনা।অনিকা মৌসী বেশ চতুর।তার কলেজ ছাড়া আর কলেজের কথা আসবে কেন?চকিতে মনে হল তার কথা কাউকে বলছিল নাতো?একটু সতর্ক হতে হবে।দরকার বুঝলে দূর করে দেবে।কলেজে আঙুরদি মাইনে পেয়ে টাকা ফেরত দিতে এসেছিল।আঙুরদি কলেজের ফোর্থ ক্লাস স্টাফ।আগের মাসে অফিসে গিয়ে টাকা এ্যাডভান্স চাইছিল কিন্তু ক্লার্ক ভদ্রলোক দেয়নি এভাবে অগ্রিম দেওয়া যায়না।ব্যাপারটা নজরে পড়তে জিজ্ঞেস করে জানা গেল আঙুরদির মেয়ে এবার পরীক্ষা দেবে কিন্তু ফিজ দেওয়ার টাকা ণেই।জিজ্ঞেস করলাম কতটাকা?বলল একশো টাকা হলেই হবে।আমি ওকে একশো টাকা দিলাম।বেতন পাবার পর সেই টাকা ফেরত দিতে এসেছিল।সবাই সমান হয়না।আমি বললাম,তোমার মেয়েকে বলবে এক আণ্টি তোমার ফিজ দিয়েছে।আঙুরদি খুব খুশী বলল,ম্যা-ডা ম ভগবান আপনাকে খুব সুখী করবে।ভগবান কি করবে জানিনা আঙুরদির মেয়ের জন্য এটুকু করতে পেরে তৃপ্তি পেয়েছিলাম।
রাত বাড়তে থাকে সুনসান রাস্তাঘাট।রাস্তার পাশে এখানে সেখানে কুণ্ডলি পাকিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছে কয়েকটা কুকুর।
মোবাইল বাজতে আরণ্যকের ঘুম ভেঙ্গে যায়।এরা কি ঘুমায় না সারারাত মোবাইল নিয়ে বসে আছে।বিরক্ত হয়ে হাত বাড়িয়ে মাথার কাছে রাখা মোবাইল নিয়ে ভালোমত খিস্তি দেবে ভাবে।স্ক্রিনে JB দেখে তড়াক করে উঠে বসল।রাত সাড়ে তিনটে এত রাতে ঝর্ণাদি কি হল আবার?বাটন টিপে কানে লাগিয়ে বলল,কি- ব্যাপার এত রাতে?
রনো আমার খুব বিপদ তুই আসতে পারবি?কান্না জড়িত গলা।
কি বিপদ হ্যালো- হ্যালো...।যা ফোন কেটে দিয়েছে।
রনোর ঘুম চটকে গেছে।মোবাইল টিপে দেখল ঝর্ণাদিই তো?কি বিপদ হতে পারে স্বামী পুলিশ মনে হয়না পুলিশী কোনো ঝামেলা।
এতরাতে ফোন করল মনে হল কাদছিল ঝরণাদির মত মেয়ে সহজে কাদার পাত্রী নয়।কি করবে?কালাবাবুর দলবল হামলা করেনি তো?
আর স্থির হয়ে থাকতে পারেনা।চৌকি থেকে নেমে একটা জামা গলিয়ে দোকানে তালা দিয়ে বেরিয়ে পড়ল।রাস্তায় নামতে কুকুরগুলো ঘেউ-ঘেউ করে ডাকা শুরু করল।বেশ তো ঘুমোচ্ছিল।কে ওদের বোঝাবে আমি চোর-ডাকাত নই পাড়ার ছেলে।সাধে এদের নেড়ী কুত্তা বলে।দৌড়ালে পিছন পিছন দৌড়াবে।রনো দ্রুত পায়ে হাটতে থাকে।ঘেউ-ঘেউ আর থামে না।আচ্ছা ঝামেলা সারা পাড়া জাগিয়ে তুলবে নাকি?অনেকটা এগোবার ওরা আর পিছন পিছন আসেনা।একবার মনে হল দোকান থেকে একটা রড নিয়ে আসলে ভালো হতো।অবশ্য শুনেছে কালাবাবুর কোমরে মেশিন গোজা থাকে।
ঝর্ণাদির বাড়ীর কাছাকাছি এসে অবাক লাগে।কাউকে তো দেখছে না।তাহলে কি ওরা তুলে নিয়ে গেছে?রনোর বড় বড় নিশ্বাস পড়ে।
এতরাতে কাউকে কিছু জিজ্ঞেস করবে তার উপায় নেই।এতকাণ্ড হয়ে গেল পাড়ার লোক কেউ জাগলো না।মনে হচ্ছে ঝর্ণাদির ঘরেল আলো জ্বলছে।ঘরে তো মাসীমা মানে ঝর্ণাদির মায়ের তো থাকার কথা।চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার।কি করবে ভিতরে গিয়ে দেখবে?ভিতরে ওদের কেউ নেইতো?থাকলে থাকবে আরণ্যক তোয়াক্কা না করে দেওয়াল ঘেষে পা টিপে এগোতে থাকে।একী কি দেখছে!
ঝর্ণা বাইরে রকে এসে দাড়িয়েছে।আরণ্যক রকে উঠে বলল,ঝর্ণাদি তুমি ঠিক আছো তো?
রনো তুই-বলে জড়িয়ে ধরে কান্না ভেজা গলায় বলল, আমি জানতাম তুই আসবি।রনোরে মা ছাড়া আমার আর কেউ নেইরে...।
কেউ জড়িয়ে ধরলে তার উপরে মেয়ে মানুষ আরণ্যকের অস্বস্তি আবার বাইরে সে ঠেলে ঝর্ণাকে ঘরে ঢুকিয়ে জিজ্ঞেস করল,কি হয়েছে মাসীমার?
রনোকে ছেড়ে দিয়ে বলল,রাতে ধপাস করে শব্দ হতে ঘুম ভেঙ্গে গেল।শব্দটা মায়ের ঘর থেকে এসেছে গিয়ে দেখি মাটিতে পড়ে যন্ত্রণায় ছটফট করছে তুই যদি দেখতিস কি বলব-ভয় পেয়ে সজলকে খবর দিলাম।ও দেখে ছুটলো ডাক্তার ডাকতে।এতরাতে কেউ আসতে চায়না তবে ডাক্তার ঘোষ একটা ট্যাবলেট দিয়েছে সেইটা খেয়ে ঘুমোচ্ছে
মনে হয় ট্যাঙ্কুলাইজার দিয়েছে আরণ্যক জিজ্ঞেস করে,সজল বাবু কোথায়?
কি জানি আবার কোথায় গেল?
আমি বেরিয়ে দেখব?
এত রাতে তুই কোথায় যাবি তুই বোস।
কিছুক্ষণ পর একটা স্ট্রেচার নিয়ে সজল বোস এল।ঝর্ণা আমাকে দেখিয়ে বলল,এই হচ্ছে রনো যার কথা তোমাকে বলেছিলাম।
একটা ডাক্তার আসতে চায়না বলে সকালে আসবে,রোগী কি তোমার জন্য বসে থাকবে?কোমরে হাড় ভেঙ্গেছে মনে হচ্ছে।হসপিটালে নিয়ে যাওয়াই ভাল। অনেক চেষ্টা করে একটা এ্যাম্বুলেন্স পেয়েছি তাও শুধু ড্রাইভার।
স্ট্রেচার পেতে মাসীমাকে সন্তুর্পনে তোলা হল।আমিও হাত লাগালাম।
এসব জরুরী পরিসেবা কি সময় ধরে হয়।
একদিকে সজল বোস আরেকদিকে আমি দুজনে মিলে স্ট্রেচার এ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিলাম।ঘরে তালাচাবি দিয়ে ঝর্ণা পিছনে মাসীমাকে নিয়ে আর সজল বোস ড্রাইভারের পাসে বসল। আমি মুখ বাড়িয়ে বললাম,ঝরণাদি আমাকে দোকান খুলতে হবে।আমি আর যাচ্ছিনা।
ঠিক আছে ফিরে খবর দেব।ভেবেছিলাম মা বুঝি আর ফিরবে না।
সামনে থেকে সজল বোস বলল,কিসবউপ আবোল-তাবোল বকছো?
এ্যাম্বুলেন্স ধোয়া উড়িয়ে চলে যেতে আরণ্যক হাটতে শুরু করল।উফস কি টেনশনে কাটলো ঝর্ণাদি ফোনে মাসীমার পড়ে যাবার কথা বললে এত টেনশন হতোনা।
সকালে ভেণ্ডারদের কাগজ বুঝিয়ে দেবার পর স্বস্তি।একটা কাগজ নিয়ে একটু আকি বুকি করার চেষ্টা করে চোখের পাতা ভারী হয়ে আসে একটা ঘুম-ঘুম ভাব দুপুরে টানা ঘুম দিতে হবে।ফরেনার মহিলা বাস রাস্তার দিকে যাচ্ছেন।মান্তু বলছিল কলেজের লেকচারার দেখলে কিন্তু বয়স খুব বেশী মনে হয়না। ঝর্ণাদি আসছে না?হ্যা তার দোকানের দিকেই।কাল কখন ফিরেছে জিজ্ঞেস করা হয়নি।কাছে আসতে বলল,কখন ফিরলে?
এইতো ফিরছি।এক্স-রে করল এমআরআই করল অনেক টাকা খরচ হয়ে গেল।ঝর্ণাদির চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ।
মাসীমা কেমন আছে?
চিকিৎসা চলছে কদিন সময় তো লাগবে।সজল ঠিক ধরেছে কোমরের হাড় ভেঙ্গেছে।যাই ওবেলা দেখতে যেতে হবে।
কখন যেতে হয়?
চারটের থেকে ছটা।আসিরে।
ঝর্ণাদির বিয়ে হয়েছিল বলে সজলবাবুকে পাশে পেয়েছে।একটা গানের কলি মনে পড়ল,গোলাপের অলি আছে ফাগুণের আছে বাহার সকলের সাথী আছে শুধু কেউ নেই আমার।মনে মনে হাসে আরণ্যক।ভিজিটিং আওয়ারস যা বলল ঐসময় দোকান ফেলে যাওয়া সম্ভব নয়।
হ্যারে রনো কার কথা বলছিল?
বিনয় আঢ্য পাশে দাঁড়িয়ে কাগজ পড়ছিলন সব শুনেছেন।আরণ্যক বলল,ওনার মা কাল রাতে খাট থেকে পড়ে গিয়েছিলেন।হসপিটালে ভর্তি করেছেন।
সাবধানে থাকিস নটোরিয়াস মহিলা।
বয়স্ক লোক কি আর বলবে আরণ্যক চুপ করে থাকে। যার আয়ু থাকে আগুণে দগ্ধ করলেও তার মৃত্যু হয় না।সকালবেলা মাসীমার খবরটা শুনে ভাল লাগল।
Posts: 17
Threads: 0
Likes Received: 10 in 8 posts
Likes Given: 38
Joined: Aug 2022
Reputation:
1
এই রে, আবার জেবির সঙ্গে রণ ফিট হয়ে গেল নাকি?
•
Posts: 28
Threads: 0
Likes Received: 25 in 19 posts
Likes Given: 2
Joined: Feb 2022
Reputation:
2
ভালো লাগছে পুর্বের গল্পের সাথে একটু মিলিয়ে দিয়েছেন। রনকে কোন সরকারি চাকুরিতে নিয়ে এসে এলাকার কিছু সংস্কারে যদি কাজে লাগানো যায়। কিন্তু আপনার পূর্বের যত লেখা তাতে সফল হলেও আর নায়ক নায়িকা নিজের এলাকার জন্য মানুষের জন্য কারো কোন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা আগের কোন উপন্যাসে দেখিনি। তাই এখানেও মনে হচ্ছে ওই রকমই হবে। সফল হলে এলাকা ছেড়ে চলে যাবে তারপরে এলাকার সাথে যোগাযোগ থাকবে না। কিন্তু আপনার লেখার ধার আপনার লেখা দিনে দিনে আরো অনেক পরিণত হচ্ছে। পাঠকে ধরে রাখার অসম্ভব ক্ষমতা আপনার আছে। শিবে কেলো বিষে নামগুলো সেই আপনার অন্যান্য গল্প থেকে নেয়া। হয়তো নামগুলোতে আপনি নস্টালজিক হয়ে যান অনেক ভালো লেগেছে। অন্য গল্পের মত একজন পুরুষ মানুষকে আর একটা নারী এসেই ইন্সপায়ার করে সহযোগিতা করে নিয়ে যাবে আপনার সবগুলো গল্পই প্রায় ঐরকম। কেন একটি ছেলে যে ম্যাগাজিন বা জার্নালে বিক্রি করছে সে কেন পড়তে পড়তেই তার ভেতর থেকে একটা সত্তা কথা বলবে না, সে কেন নিজের ভেতর থেকে জেদ পাবেনা পরিশ্রম করে নিজে একজন সফল ব্যক্তি হওয়ার চেষ্টা করবে না? পত্রিকা পড়ছে ছবি আঁকছে তার মানে চোখের সামনে সবকিছু থাকতেও সেই যেন গতানুগতিক আগের গুলোর মতই কোন নারী এসে তাকে এই পাক থেকে তুলে উঠাবে তারপরে সে ঘুরে দাঁড়াবে ব্যাপারটা ওই রকমই হয়ে যাচ্ছে আর কি।
অনেক ধন্যবাদ নিয়মিত আপডেট দেওয়ার জন্য।
Posts: 18,194
Threads: 471
Likes Received: 64,133 in 27,392 posts
Likes Given: 23,565
Joined: Feb 2019
Reputation:
3,249
(28-06-2024, 02:42 AM)Rancon Wrote: ভালো লাগছে পুর্বের গল্পের সাথে একটু মিলিয়ে দিয়েছেন। রনকে কোন সরকারি চাকুরিতে নিয়ে এসে এলাকার কিছু সংস্কারে যদি কাজে লাগানো যায়। কিন্তু আপনার পূর্বের যত লেখা তাতে সফল হলেও আর নায়ক নায়িকা নিজের এলাকার জন্য মানুষের জন্য কারো কোন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা আগের কোন উপন্যাসে দেখিনি। তাই এখানেও মনে হচ্ছে ওই রকমই হবে। সফল হলে এলাকা ছেড়ে চলে যাবে তারপরে এলাকার সাথে যোগাযোগ থাকবে না। কিন্তু আপনার লেখার ধার আপনার লেখা দিনে দিনে আরো অনেক পরিণত হচ্ছে। পাঠকে ধরে রাখার অসম্ভব ক্ষমতা আপনার আছে। শিবে কেলো বিষে নামগুলো সেই আপনার অন্যান্য গল্প থেকে নেয়া। হয়তো নামগুলোতে আপনি নস্টালজিক হয়ে যান অনেক ভালো লেগেছে। অন্য গল্পের মত একজন পুরুষ মানুষকে আর একটা নারী এসেই ইন্সপায়ার করে সহযোগিতা করে নিয়ে যাবে আপনার সবগুলো গল্পই প্রায় ঐরকম। কেন একটি ছেলে যে ম্যাগাজিন বা জার্নালে বিক্রি করছে সে কেন পড়তে পড়তেই তার ভেতর থেকে একটা সত্তা কথা বলবে না, সে কেন নিজের ভেতর থেকে জেদ পাবেনা পরিশ্রম করে নিজে একজন সফল ব্যক্তি হওয়ার চেষ্টা করবে না? পত্রিকা পড়ছে ছবি আঁকছে তার মানে চোখের সামনে সবকিছু থাকতেও সেই যেন গতানুগতিক আগের গুলোর মতই কোন নারী এসে তাকে এই পাক থেকে তুলে উঠাবে তারপরে সে ঘুরে দাঁড়াবে ব্যাপারটা ওই রকমই হয়ে যাচ্ছে আর কি।
অনেক ধন্যবাদ নিয়মিত আপডেট দেওয়ার জন্য।
দারুন লিখেছেন আপনি। কামদেবের এই মহিমা , নারী শক্তির উপাসনা ওনার গল্পের মূলমন্ত্র।
মেয়েদের ছাড়া আমরা ছেলেরা যে কত অসহায় সেটা ওনার লেখাগুলো পড়লে হাড়ে হাড়ে বারবার বুঝতে পারা যায়।
|