04-06-2024, 03:32 AM
ইলিনা দেখছি দুশ্চরিত্রা। এটা কোনো ভাবেই নায়িকা হতে পারে না।
Adultery আগুণের পরশমণি;কামদেব
|
04-06-2024, 03:32 AM
ইলিনা দেখছি দুশ্চরিত্রা। এটা কোনো ভাবেই নায়িকা হতে পারে না।
04-06-2024, 02:50 PM
চতুর্দশ পরিচ্ছেদ ভোরে ঘুম থেকে উঠে ইলিনা শাড়ীী নিয়ে বাথরুমে গেল।নিশীথ পোশাক বদলে বাজারে যাবার জন্য তৈরী হতে থাকে।তরি তরকারী কিছুই নেই।ইলিনা দেখল বাথরুমে শাওয়ার নেই।কলের নীচে বালতি পেতে দিল।কাল রাতের কথা মনে হতে নিজেকে কেমন ক্লেদাক্ত মনে হতে থাকে। নিশীথের গলা পাওয়া গেল,আমি বাজারে যাচ্ছি। ইলিনা আজলা করে জল নিয়ে গুদে থাবড়ে থাবড়ে দিতে থাকে।বালতি ভরে গেছে।মগ ডুবিয়ে মাথায় ঢালতে থাকে। কয়েক মগ ঢালার পর নাকে পাঁকের গন্ধ পায়।এক আজলা জল নিয়ে নাকের সামনে ধরতে গা গুলিয়ে ওঠে।তোয়ালে দিয়ে ঘষে ঘষে গা মুছে বেরিয়ে এল।সারা শরীরে ডেওডোরাণ্ট স্প্রে করে রান্না ঘরে ঢুকল। বাজার থেকে ফিরে নিশীথ থলেটা রান্না ঘরে নামিয়ে রাখল।ইলিনা এককাপ চা এগিয়ে দিয়ে বলল,বাথরুমে জলে কেমন একটা ব্যাড স্মেল- আর বোলোনা বাড়ীঅলাটা হাড় কেপ্পন।কবে থেকে বলছি পৌরসভার একটা কানেকশন নিতে তানা সেই কুয়োর জল পাম্প করে ট্যাঙ্ক ভরচে।এবাড়ী বদলাতে হবে।শোনো তুমি এজলে স্নান করবে না,ভারীকে বলে দেব কাল থেকে খাবার জলের সঙ্গে স্নানের জলও এনে দেবে।নিশীথ চা নিয়ে ঘরে চলে গেল। কাতলা মাছের ঝোল আর মসুর ডাল করল।আধ ঘণ্টার মধ্যে রান্না শেষ।ভাতটা হয়ে গেলেই রান্নাঘরের পাট চুকবে। নটা বাজতে চলল।দাদাবাবু অফিস বেরিয়ে গেছে বৌদিমনি খোকনেকে তৈয়ার করছেন।রেবতীকে নিয়ে বেরোতে হবে।পোফেসারের বাসায় একস্টা ইনকাম ছেল।এখানে বাধা মাইনে।কিন্তু ঘর সংসার ফেলায়ে রাতে কিকরে থাকবে?সয়েলির সঙ্গে দেখা হয় না।পোফেসার ওর সঙ্গে কিছু করেছে কিনা কেজানে।এই বাড়ীর দাদাবাবুটা কেমন ম্যান্দামারা ফিরেও দেখেনা।অবিশ্যি বউ থাকতি দেখবেই বা কেন। খোকন এসে বলল,পিসি চলো। মিতা বলল,তাড়াতাড়ি আসবে তুমি এলে আমি বেরবো। নিশীথ অফিস যাবে।ইলিনা দুজনের আসন পাতে মেঝেতে,ডাইনিং টেবিল নেই।একা মানুষ হোটেল মোটেলে খেয়ে বেড়াতো।ডাইনিং টেবিল কেনার কথা মনে হয়নি।এবার আস্তে আস্তে সব কিনতে হবে ইলিনা ভাবে।বলছে বাড়ী বদলাবে তাহলে তো ভালই হয়। নিশীথ ভাত মেখে একগ্রাস মুখে দিয়ে বলল,তোমার রান্নার হাত দারুণ। এইসব ফ্লার্টি টক ইলিনাকে স্পর্শ করেনা সে চুপচাপ খেতে থাকে। আজ রাতে ফিরতে পারব না অশফিস টুর আছে।নিশীথ কথাটা বলে অপেক্ষা করে কি প্রতিক্রিয়া হয়। ইলিনা জানে এক্সিকিউটিভ পোস্টে থাকলে তাদের নির্দিষ্ট সময় থাকেনা।কর্তৃপক্ষ যেকোন সময় ডাকতে পারে।ড্যাডকে দেখেছে কখনো রাতেও বাগানে ছুটে যেতে হয়েছে। নিশীথ চোখ তুলে একবার ইলিনাকে দেখল চুপচাপ খেয়ে চলেছে।কমলার ব্যাপারে কঠিণ সিদ্ধান্ত নিতে হবে।এভাবে দু নৌকায় পা দিয়ে চলবে না। -নিশীথ -বেরিয়ে যাওয়ায় বাড়ীতে ইলিনা একা।আজ রাতে তাকে একা থাকতে হবে। কি করবে বরং একটু ঘুমিয়ে নেওয়া যাক।শুয়ে শুয়ে কত কথা মনে পড়ে।কত আশা নিয়ে কলকাতায় ফ্লাট কেনা হল।সুপমাকে বিয়ের কথা কিছুই বলা হয়নি।কাপড়ের নীচে হাত দিয়ে মাঝে মাঝে তলপেটে চুলকায়।এক সময় খেয়াল হল চুলকাচ্ছে কেন?হাত দিয়ে মনে হল ভাজিনা ঈষৎ ইনফ্লেমেসন হয়েছে।জল থেকে হল নাতো? ঘরে ডেটল থাকলে একটু বুলিয়ে দেওয়া যেত।তখন গুদে অত জলের ঝাপটা দেওয়া ঠিক হয়নি।এরকম ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ল ইলিনা। খাওয়া দাওয়ার পর সবে শুয়েছেন ফোন বেজে উঠল। মালা মুখার্জী উঠে ফোন ধরলেন।ওপাশ হতে সীমনের গলা পেয়ে চোখ তুলে ঘড়ির দিকে তাকালেন,কাটা একটার দিকে এগিয়ে চলেছে।তার মানে ওখানে রাত দশ-সাড়ে দশ হবে।এতরাতে মেয়ে ফোন করল কেন মনে মনে ভাবেন।বললেন,হ্যা বলো***আছি একরকম তোমরা কেমন আছো***তাই কনগ্রচুলেশন***ও আচ্ছা***বুঝেছি***ঠিক আছে রাখছি? সায়নী কনসিভ করেছে।ওদেশে কাজের লোক অনেক ব্যয় বহুল মিসেস মুখার্জী জানেন।এই সময় মায়ের কথা মনে পড়ল।টিকিট পাঠাচ্ছে বিনি পয়সার আয়ার জন্য।মিসেস মুখার্জী আবার এসে শুয়ে পড়লেন। সব স্বার্থপর। এজেন্সী হতে টিকিট দিয়ে যাবে।রনোর কথা মনে পড়ল।এখন ওর দোকান বন্ধ।ছেলেটাকে মিসেস মুখার্জীর খুব ভালো লেগেছে।যে কোনো মায়ের গর্ব।বেচারির মা নেই ভেবে খারাপ লাগে।ইচ্ছে হয় ছেলেটার জন্য কিছু করতে কিন্তু যা গোয়ার কিছু দিলে তো নেবে না।ও হয়তো ভুল বুঝেছে সেটাই স্বাভাবিক।আমি একাত্ম হতে চেয়েছিলাম একটা গুড সোলের সঙ্গে তার বেশী নয়। শ্যামের মৃত্যুর খবর পেয়ে ওর কয়েকজন বন্ধু ডক্টর সুশীল মণ্ডল ডক্টর হিমাদ্রি মিত্র ডক্টর দেবেশ মুখার্জী আরও অনেকে সান্ত্বনা দিতে এসেছিল।যেভাবে গায়ে হাত বোলাচ্ছিল তাতে শোকের চেয়ে আত্মরক্ষা দায় হয়ে উঠেছিল।বিধবাদের এরা মনে করে বেওয়ারিশ মাল।যাবার আগে ফোন নম্বর দিয়ে বলেছিল দরকার পড়লে যেন ডাকি।এরা আগেও শ্যাম থাকতে এসেছিল কয়েকবার।তিনি নিজে আপ্যায়িত করেছিলেন।তখন চিনতে পারেন নি শ্যামের মৃত্যু তাদের মুখোশগুলো খুলে দিয়েছিল।নিজের মেয়েকেও কি চিনতে পেরেছেন?শ্যাম মারা যাবার পর আমেরিকা যাবার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন ঠিকই কিন্তু এভাবে নিয়ে যাবে কখনো মনে হয়নি। ঘুম ভাঙ্গতে উঠে বসে আড়মোড়া ভাঙ্গে ইলিনা।খাট থেকে নেমে বাথরুমে হিসি করতে বসে যোনী মুখে জ্বালা বোধ করে।ভয়ে যোনীতে জল না দিয়েই উঠে পড়ল।একবার থাবড়ে থাবড়ে জল দিয়ে বুঝেছে।নিশীথ বলেছে কাল ভারি জল দিয়ে যাবে।ঘরে এসে ভাবল অঞ্চলটা একবার ঘুরে দেখা যাক। এদিকটা আসা হয়নি। নাইটি বদলে শাড়ী পরল।রাস্তায় বেরিয়ে মাটিগাড়ার দিকে হাটতে থাকে।লক্ষ্য করে পথ চলতি লোকজন তাকে অবাক হয়ে দেখছে।রাস্তায় একটা দোকান হতে ডেটল কিনল।বাসায় ফিরে ডেটল জল দিয়ে জায়গাটা ওয়াশ করবে।চুলকানিটা কিছুতেই কমছে না।সেন্সিটিভ জায়গা সেজন্য চিন্তা হচ্ছে।হাটতে হাটতে বেলা পড়ে আসে।একজনকে জিজ্ঞেস করল,মাটিগাড়ি কতদূর? এসে পড়েছেন আর এক মাইল মত গেলেই--ঐতো দেখা যাচ্ছে। সন্ধ্যে হয়ে এল প্রায় আবার ফিরতে হবে।ইলিনা ফেরার পথ ধরল। নিশীথ আজ ফিরবে না তাকে একা থাকতে হবে রাতে।মনে হল কাল একজন ডাক্তারকে দেখিয়ে নেওয়া ভাল।অবহেলা করা ঠিক হচ্ছে না।ডেটল জল দিয়ে ওয়াশ করার পর যদি নাকমে তাহলে কাছাকাছি কোনো ডাক্তারকে দেখিয়ে নেবে।বাসায় ফিরে চা করে চায়ের কাপ নিয়ে বসে নেট সার্চ করতেই অবাক।ড. পাঞ্চালী মিত্র লেডি ডাক্তার আবার গাইনী ! এতো মেঘ না চাইতে জল।কাছেই চেম্বার।ফোন নম্বরটা লিখে রাখল। আরণ্যক দোকান খুলতে একে একে সব জড়ো হতে থাকে।পিকলু জিজ্ঞেস করল,কিরে মান্তু কোনো নতুন খবর? বাঘের ঘরে ঘোগের বাসা।মান্তু বলল। খুলে বল বাঘটা কে আর ঘোগটাই বা কে? বাঘ ফুলন দেবী-- বাঘিনীব বল। ঐ হল।ফুলন দেবীর বাসায় পুলিশের আনাগোনা। রাস্তায় মালা মুখার্জীকে দেখে অবাক হয় আরণ্যক।উনি তো সন্ধ্যেবেলা খুব একটা বের হন না।একী উনি তো দোকানের দিকেই আসছে।দোকানে এখন সবাই রয়েছে প্রমাদ গোনে আরণ্যক।মিসেস মুখার্জীকে দেখে ওদের কথাবার্তা থেমে যায়। দোকানে সরাসরি এসে মালা মুখার্জী বললেন,রনো আমি চলে যাচ্ছি। এ আবার কিসের ভনিতা।আরণ্যক বলল,চলে যাচ্ছি মানে? আমেরিকায় মেয়ের কাছে। সীমুদির কাছে?এতো ভালো খবর। তোমাকে একটা দায়িত্ব দিতে চাই। আমাকে? হ্যা বাড়ির চাবিটা তুমি রাখবে। আমি পারব না।সটান বলে দিল আরণ্যক। জানতাম তুমি একথা বলবে। জানতেন তাহলে বললেন কেন?আরণ্যক অবাক হয় আজব মহিলা। দেখলাম আমার জানাটা ঠিক না ভুল।আরেকটা কথা তুমি আমাকে এয়ারপোর্টে পৌছে দেবে। কখন? সীমন তো আটটা নাগাদ রওনা দিত-- দোকান ফেলে ওই সময় কিভাবে যাব? তাহলে একা মহিলা আমাকে যেতে হবে? আরণ্যকের মনটা নরম হয় জিজ্ঞেস করে, কবে? টিকিট হাতে পেলে বলতে পারবো। ঠিক আছে আমি সন্তোষদাকে জিজ্ঞেস করব উনি রাজী হলে যাব। মালা মুখার্জী চলে যেতে বিশু বলল,চাবিটা রাখতে তোর অসুবিধে কোথায়?রোজ শালা ওখানে গিয়ে আড্ডা জমানো যেতো তুই রাখ না চাবি। ওইতো মুষ্কিল যে চায় সে পায় না যে পায় সে চায়না।
04-06-2024, 05:02 PM
(25-05-2024, 07:05 PM)অভিমানী হিংস্র প্রেমিক। Wrote: এ গল্পের প্রথম উইকেট পড়ল আজ রণোর হাতে।খাইয়া রনোর কড়া চোদা উপোষ ভাঙ্গিল মালার ভোদা
04-06-2024, 05:43 PM
04-06-2024, 08:04 PM
কি সুন্দর সব চরিত্র গুলো সাজিয়ে পরিবেশন করছেন ভাবা যায় না , অবশ্য আপনার অন্য লেখা গুলো দুর্দান্ত, খুব সুন্দর, মনে দাগ কাটে। পরবর্তী updater অপেখ্যায় রইলাম। ধন্যবাদ।
04-06-2024, 09:17 PM
05-06-2024, 07:18 AM
05-06-2024, 07:04 PM
পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ
কাগজের ভ্যান থেকে বাণ্ডিলগুলো বুঝে নিয়ে চালানে সই করে দিল।সন্তোষ মাইতি দোকানে বসে রনোর কাজ দেখতে দেখতে ভাবেন ছেলেটাকে পেয়ে তার দোকান নিয়ে কোনো মাথা ব্যথা নেই।গুনে গুনে একেকজনকে কাগজ বুঝিয়ে দিতে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়ছে।সন্তোষ মাইতি দোকান থেকে বেরিয়ে বললেন,আমি একটু পার্টি অফিসে যাচ্ছি। আপনি চলে যাচ্ছেন? হ্যা কেন?কিছু বলবি? দাদা একদিন আমি সন্ধ্যে বেলা এক জায়গায় যাব--। কবে? ডাক্তার বাবুর স্ত্রী আমেরিকা চলে যাচ্ছেন মেয়ের কাছে।আমাকে বললেন এয়ারপোর্টে পৌছে দিতে।দ্বিধা জড়িত গলায় বলল আরণ্যক। তোকেই বলল? হঠাৎ এসে বললেন। কবে কিছু বলেছে? মেয়ে টিকিট পাঠালে জানা যাবে। মিসেস মুখার্জী ঠিক লোককেই চিনেছে।মানুষ এত সরল হয় কিভাবে কমরেড মাইতি বুঝতে পারেন না।হেসে বললেন,কবে যেতে হবে বলবি সেদিন না হয় আমি বসব।আচ্ছা আমি আসি কেউ খোজ করলে পার্টি অফিসে পাঠিয়ে দিবি। আরণ্যকের একটা চিন্তা দূর হল।গাড়ী করে যাবে আবার সেই গাড়ীতে ফিরে আসবে।মালা মুখার্জীর কাছ থেকে দিনটা জেনে নিতে হবে।এয়ারপোর্টে এক্টূ ভাল পোশাক পরে যেতে হবে।সে কোনো দিন এয়ারপোর্টে যায়নি দেখাও হয়ে যাবে। পুরানো লোকজন চলে যাচ্ছে নতুন নতুন লোক পাড়ায় আসছে।সবার সঙ্গে পরিচয়ও হয়নি।কেউ কেউ কাগজ নিতে আসে তখন দু-একটা কথা হয়।বেলা বাড়তে থাকে আরণ্যক গালে হাত দিয়ে দোকানে বসে রাস্তা দিয়ে লোক চলাচল দেখতে থাকে।কখনো একটা কাগজে আকিবুকি করে। কখনো একটা জার্নাল টেনে নিয়ে চোখ বোলায়। এবেলা কেউ একটা আসেনা কাজে কম্মে বেরিয়ে যায়। ডাকাডাকিতে ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলে ইলিনা দেখল জল নিয়ে দাড়িয়ে আছে।বাথরুমের বালতিতে দু-টিন জল ঢেলে দিয়ে চলে গেল।দরজা বন্ধ করে বাথরুমে হিসি করতে বসে নজরে পড়ল যোনীর ঠোটে র্যাশ মত।ডেটল জল দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। খুব উদবিগ্ন বোধ করে।নিশীথকে ব্যাপারটা খুলে বলতে লজ্জা করে। এত বেলা হল আসছে না কেন।তাহলে কি অফিস সেরে আসবে? কুয়োর জল ওরও ব্যবহার করা ঠিক হচ্ছে না।নিশীথের অপেক্ষায় না থেকে ইলিনা চা করতে গেল। স্বামীকে খাইয়ে কলেজ পাঠিয়ে দিয়ে ড.মিত্র চেম্বারে গিয়ে বসেন।একবেলা দশজন পেশেণ্ট দেখে তাও আগের থেকে এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট করতে হয়। সেজন্য চেম্বারে বেশী ভীড় হয়না।পেশেণ্টকে দেখার সঙ্গে সঙ্গে কোন পরিবেশে পেসেণ্ট বাস করে তার সামাজিক স্টাটাস খুটিয়ে খুটিয়ে জেনে নেন ড.মিত্র।এসব তার বাবার কাছ থেকে শেখা।এজন্য একজনের পিছনে একটু বেশী সময় লাগে।পেসেণ্টরাও এতে সন্তুষ্ট।পান্নাবাবু ডাক্তারের কপাউণ্ডার তথা চেম্বার দেখাশুনার দায়িত্বে। একের পর এক রোগীর ডাক পড়ে তারা ভিতরে ঢুকে যায়।ড.মিত্র রোগীকে পরীক্ষা কোরতে কোরতে জিজ্ঞেস করে কোথায় থাকে স্বামী কি করে ইত্যাদি।রোগী দেখা প্রায় শেষ হবার মুখে এমন সময় ইলিনা ব্রাউন ঢুকলেন।পান্নাবাবুর নজর এড়ায় না।কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করেন,আপকো এ্যপয়ণ্টমেণ্ট হ্যায়? আই ওয়াণ্ট এন এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট। পান্নাবাবু কি বুঝলেন বললেন,এই সপ্তাহে নেহি হোগা কাম নেক্সট উইক প্লীজ স্যার প্লীজ কেয়া প্লীজ প্লীজ করতা হ্যায় বলতা নেহী হোগা রোগী দেখা শেষ বাইরে গোলমাল শুনে ড.মিত্র বেরিয়ে দেখলেন একজন বিদেশিনী মহিলার সঙ্গে পানুবাবুর তর্কাতর্কি হচ্ছে।ড.মিত্র মিত্র জিজ্ঞেস করলেন,হোয়াটস দা ম্যাটার? যত বলছি এ্যাপয়ণ্টমেণ্ট ছাড়া উনি দেখেন না খালি বলছে প্লীজ-প্লীজ। ড.মিত্র হাসি দমন করে ইলিনার দিকে তাকাতে হাত জোড় করে বলে,আই এ্যাম ইন গ্রেট ট্রাবল ম্যাম--প্লীজ-- ড.মিত্র কব্জি ঘুরিয়ে ঘড়ি দেখলেন বারোটা বেজে গেছে, তারপর পানুবাবুকে ওকে পাঠিয়ে দিন।ড.মিত্র চেম্বারে ঢুকে চেয়ারে বসে অপেক্ষা করতে থাকেন। পানুবাবু বিরক্ত হয়ে বললেন, ইউ আর ভেরি লাকি, গো। ইলিনা ভিতরে ঢুকে বলল,আপনার অনেক দয়া। মেমসাব দেখছি সুন্দর বাংলা বলতে পারে।ড.মিত্র বললেন,বসুন।আপনার নাম? ইলিনা বর্মন। আপনি ম্যারেড? হ্যা ম্যাডাম কদিন হল বিয়ে করেছি। আপনার স্বামী বাঙালী? হ্যা ম্যাডাম। এবার বলুন আপনার সমস্যা কি? আমাদের বাথরুমের জল ভ্যাজিনাতে ঢুকতে চুলকানি শুরু হয়-- প্রস্রাবের সময় জ্বালা হয়? হ্যা ম্যাডাম। আপনি কাপড়টা কোমর অবধি তুলে ওখানে শুয়ে পড়ুন। ইলিনা পর্দা সরাতে দেখল ছোট একটা খুপরি ঘর।সেখানে একটা লম্বা টেবিল।উপর থেকে ঝুলছে আলো।ইলিনা কাপড় কোমর অবধি তুলে চিত হয়ে শুয়ে পড়ল। ড.মিত্র দু-হাতে গ্লাভস পরে একটু পরে ঢুকে ঝুলন্ত বাতিটা জ্বেলে দিয়ে নীচু হয়ে যোনীটা দেখতে থাকেন।আঙুলটা যোনীর উপর বুলিয়ে ঠোটে ঠোট চেপে কি যেন ভেবে জিজ্ঞেস করেন,নিয়মিত সহবাস করেন? একদিন করেছি। তার আগে চুলকাতো? ইলিনা ভেবে বলল,তার আগে হয়নি।কি হয়েছে ম্যাডাম খারাপ কিছু? ড.মিত্র কথার উত্তর না দিয়ে বললেন,কাপড় ঠিক করে আসুন। গ্লাভস খুলে বেসিনে গিয়ে ঘষে ঘষে হাত ধুয়ে তোয়ালেতে মুছে নিজের চেয়ারে বসে প্রেসক্রিপশন লিখতে থাকেন। ইলিনা শাড়ী ঠিক ডাক্তারের সামনে এসে বসে বলল,ম্যাডাম খারাপ কিছু? ড.মিত্র এ্যাটাচি খুলে একটা ট্যাব্লেট বের করে এগিয়ে দিয়ে বললেন,এটা খেয়ে নিন। ইলিনা জলের বোতল বের করে ট্যাবলেটটা গিলে নিল। ড.মিত্র বললেন,যা বলছি মন দিয়ে শুনুন।এখন কনসিভ করা যাবে না।ওষুধগুলো নিয়মিত খাবেন আর এই টেস্ট দুটো করে এ্যাজ আর্লি পসিবল রিপোর্ট দেখিয় যাবেন। ম্যাডাম কি হয়েছে? ক্লামাইডিয়া বললে কিছু বুঝবেন?সেক্সুয়াল ডিজিজ ।তবে বেশীদূর স্প্রেড করেনি।সব ঠিক হয়ে যাবে।আর হ্যা পরে যেদিন আসবেন হাজব্যাণ্ডকে সঙ্গে নিয়ে আসবেন। ইলিনাকে ভীষণ চিন্তিত দেখায়।ড.মিত্র বললেন,চিন্তা করবেন না সব ঠিক হয়ে যাবে। জলের থেকে হয়নি বলছেন? টেস্টগুলো করে আনুন আর ওষুধগুলো নিয়মিত খান,আমি তো আছি।আর একটা কথা কটা দিন সহবাস বন্ধ রাখলে ভাল হয়। ম্যাডাম ফিজটা? বাইরে পানুবাবুকে দিয়ে দিন। টাকা পয়সা মিটিয়ে দিয়ে বেরিয়ে পড়ল ইলিনা।যেন এক ঘোরের মধ্যে পা ফেলছে।জল থেকে ইনফেকশন হয়নি,তাহলে?কটা দিন সহবাস বন্ধ রাখতে বললেন।ড.মিত্রকে খারাপ লাগেনি বেশ যত্ন করে দেখেছেন।এরপর স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে আসবেন।কি মিন করতে চাইছেন?নিশীথ থেকে ইনফেকশন হয়েছে?সব কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে।না বেশী ভাবতে চায়না, নজরে পড়ল রাস্তার পাশে একটা প্যাথোলজিক্যাল সেণ্টার।ইলিনা হন হন করে ঢুকে গিয়ে কাউণ্টারে বসা লোকটির দিকে প্রেস্ক্রিপশন এগিয়ে দিয়ে বলল,এই টেস্টগুলো করতে চাই। ঠিক আছে লিখে রাখলাম।কাল সকাল সাতটা-সাড়ে সাতটার মধ্যে লোক চলে যাবে। কাল যাবে মানে? লোকটি একটা প্লাস্টিকের কনটেনার এগিয়ে দিয়ে বলল,ভোরে উঠে এতে ইউরিন ধরে রাখবেন আর সকালে কিছু খাবেন না। আমাদের লোকের হাতে দিয়ে দেবেন। ইলিনা বুঝতে পারে ইউরিন টেস্ট করার কথা বলেছেন।এখন কিছু হবে না।জিজ্ঞেস করল,রিপোর্ট কখন পাওয়া যাবে? সন্ধ্যে ছটার পর এই কাউণ্টার হতে পেয়ে যাবেন। সেণ্টার থেকে বেরিয়ে একটা মেডিসিনের দোকানে গিয়ে ওষুধ কিনে বাসার দিকে হাটতে থাকে ইলিনা।খুব ক্ষিধে পেয়ে গেছে। পাশ দিয়ে গাড়ী ছুটে চলেছে।এতবড় অফিসার একটা গাড়ী কিনতে পারে না।গরু বাথানে তাদের গাড়ী ছিল।আস্তে আস্তে সব কোরতে হবে। নিশীথ কি ফিরেছে নাকি অফিস সেরে সন্ধ্যেবেলা ফিরবে।হঠাৎ মনে হল নিশীথকে এখনই সবকিছু বলার দরকার নেই।ও হয়তো ইন্সাল্টেড ফিল করতে পারে। বাসার কাছে এসে দেখল দরজার তালা খোলা।নিশীথ তাহলে ফিরে এসেছে।এতবেলা অবধি না খেয়ে রয়েছে।ঘরে ঢুকে দেখল পাখা চালিয়ে শুয়ে আছে।লজ্জিত বোধ করে ইলিনা জিজ্ঞেস করল,তোমাকে খেতে দেব? অফিস ক্যাণ্টিনে খেয়ে এসেছি।তুমি এতবেলা অবধি কোথায় ছিলে? শরীরটা খারাপ লাগছিল তাই ডাক্তার দেখিয়ে এলাম। শরীর খারাপ আমায় বলোনি তো? তোমায় কোথায় পাবো-- একটা ফোন তো করতে পারতে। ফোন করেছিলাম সুইচ অফ। কোন ডাক্তার দেখালে?তুমি এখানে নতুন--। ড.পাঞ্চালী মিত্র। নামটা শুনেই জ্বলে উঠল নিশীথ,ঐ পেচি ডাক্তার? পেচির কি হল?লেডী ডক্টর তার উপর গাইনী। তুমি এখানকার কতটুকু চেনো?শোনো ওখানে আর যাবার দরকার নেই।আমি বড় ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যাব। খুব ক্ষিধে পেয়েছে।ইলিনা কথা না বাড়িয়ে রান্না ঘরে চলে গেল। ইলিনা খেতে বসেছে।পাচি ডাক্তার!মেয়েদের প্রতি শ্রদ্ধার অভাব।একজন মহিলা ভাল ডাক্তার হতে পারে ভাবতে পারেনা। সহবাস বন্ধ রাখার কথা বলেছে ড.মিত্র।কি বলবে ওকে?অসুস্থতার ভান করতে হবে।খাওয়া শেষ হলে আড়ালে গিয়ে ওষুধ খেয়ে একটা বই নিয়ে বসল। কি শোবে না?নিশীথ জিজ্ঞেস করে। আমি দিনে ঘুমাই না তাহলে রাতে অসুবিধে হয়।
06-06-2024, 05:02 AM
06-06-2024, 12:09 PM
ডক্টর পাঞ্চালি মিত্র।
" ছিন্নমূল " এর সেই পাঞ্চালি , সুখদারঞ্জনের মিষ্টি প্রাক্তন প্রেমিকা বর্তমানে স্ত্রী।
06-06-2024, 05:56 PM
(03-06-2024, 04:42 PM)ddey333 Wrote: একটু কেমন অবাস্তব লাগলো। আপনার সাথে সম্পূর্ণ একমত। বলে না দিলে বুঝতে অসুবিধা হয় যে এটা কামদেব দাদার লেখা।
06-06-2024, 07:25 PM
(05-06-2024, 07:04 PM)kumdev Wrote: পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ ডাক্তারের নামটা চেনা চেনা লাগছে
06-06-2024, 08:38 PM
06-06-2024, 09:58 PM
06-06-2024, 10:02 PM
এক্ষুনি মন্তব্য করার মতো কিছু হয় নি।
ডাক্তার পাঞ্চালী মিত্রকে পেয়ে ভালো লাগল। লাইক ও রেপু দিলাম এবং সাথে আছি।
06-06-2024, 10:44 PM
খুব সুন্দর, আপডেটের অপেখ্যায় বসে থাকা, আবার কি ঘটনা ঘটে সেটার জন্য। ধন্যবাদ।
07-06-2024, 01:00 AM
(This post was last modified: 09-06-2024, 04:43 PM by kumdev. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
ষোড়শ পরিচ্ছেদ
সকালবেলা চা করে দিতে গেলে নিশীথ হাত বাড়িয়ে চায়ের কাপ নিতে নিতে বলল,তুমি রান্না ঘরে ঢুকেছো তোমার না শরীর খারাপ। কাল ঘেষতে দেয়নি তাই রাগ হয়েছে ইলিনা মনে মনে হাসে।বলল,কি করব বলো আমার তো পাচটা কাজের লোক নেই। কাজের লোকের কথা বলতে নিশীথ আর কথা বাড়ায় না। কে যেন ডাকছে।ইলিনা দ্রুত গিয়ে দরজা খুলে একটি লোককে ভিতরে এনে বাসালো।ইলিনা লোকটির সামনে বসে হাত বাড়িয়ে দিতে লোকটী সিরিঞ্জ ফুটিয়ে রক্ত নিতে থাকে।নিশীথ বুঝতে পেরে বলল,এই হয়েছে কায়দা গেলেই একগাদা টেস্টের ফরমাস। লোকটি বলল,কি বলছেন স্যার ড.মিত্র কিন্তু খালি খালি টেস্ট করতে দেন না। আপনি আপনার কাজ করুন তো,আমাকে ডাক্তার চেনাচ্ছে। রক্ত নেওয়া হয়ে গেলে লোকটি জিজ্ঞেস করে,ম্যাম রিপোর্ট কি বাড়িতে দিয়ে যেতে হবে? দরকার নেই আমাকে তো ডাক্তার দেখাতে যেতেই হবে। লোকটা চলে যেতে নিশীথ বলল,সেই পাচিকেই দেখাতে হবে? দেখানো তো হয়ে গেছে।এবার খালি রিপোর্টগুলো দেখিয়ে আসব। নিশীথ স্নানে চলে গেল ওকে অফিসে বেরোতে হবে।ভাত চাপিয়ে দিয়েছে হল কিনা দেখতে রান্না ঘরে গেল ইলিনা।দুটো চড়াই রান্না ঘরের জানালায় কিচির কিচির করতে করতে এসে বসল।এরা কি ঝগড়া করছে নাকি প্রেমালাপ? নাকি খেতে চাইছে বোঝার উপায় নেই। ইলিনা ভাবে এদের স্থায়ী কোনো স্বামি বা স্ত্রী হয়না।একসময় দুজনে ঠোটে ঠোটে ঘষাঘষি করে ফুরুৎ করে উড়ে গেল। নিশীথ খেতে বসেছে। আজ একটু তাড়াতাড়ি ফিরো।ইলিনা বলল। কেন আজ আবার কি হল? ওবেলা ডাক্তারের কাছে যাব। একাই তো গেছিলে আজ আবার আমাকে কেন? তুমি রাগ করেছো? তোমার শরীর খারাপ আমাকে বলবে না?কি হয়েছে তোমার? সারা শরীর বিষ ব্যথা বমি-বমি ভাব। নিশীথ খাওয়া শেষ করে উঠে পড়ল।বমি-বমি ভাব কিছু হল নাতো?যাইহোক টেষ্টে নিশ্চয়ই ধরা পড়বে।এইবার বুঝতে পারে কেন ইউরিন টেষ্ট করতে দিয়েছে পাচি ডাক্তার। মালা মুখার্জী বিষণ্ণমুখে ঘরের চারদিকে চোখ বোলাতে থাকেন।এই সব ছেড়ে তিনি আজ চলে যাবেন।রনোকে খুব মিস করবেন।ছেলেটা দোকানে বসে বসে লাইফটা হেইল করে দিল।খ্যাল-খ্যাল করে হাসে না বটে কিন্তু ওর মনে নেই কোনো দুঃখবোধ।এখন দোকানে একা মনে হয়।বেশবাস ঠিক করে বেরিয়ে পড়লেন। আরণ্যক একা বসে আছে একটু পরেই দোকান বন্ধ করে খেতে যাবে।মালা মুখার্জীকে দেখে বুঝতে পারে তার কাছেই আসছে।আরণ্যক বিরক্ত হল না।খারাপ লাগে আজকের পর আর তাকে দেখতে পাবেনা। গাড়ী ঠিক হয়েছে?মালা মুখার্জী এসে জিজ্ঞেস করেন। তুমি রেডি হয়ে থাকবে ঠিক সাতটায় আমি গাড়ী নিয়ে পৌছে যাব। মালা মুখার্জী ব্যাগ খুলে টাকা বের করেন। টাকা কিসের? গাড়ী ভাড়া দিতে হবে না? সে ড্রাইভারকে তুমি দিয়ে দিও। ছেলেটা বদলালো না মালা মনে মনে ভাবেন। আচ্ছা প্লেনের টিকিট বাড়ীতে না তোমার কাছে? আমার কাছে এই ব্যাগেই আছে,কেন? আমি প্লেনের টিকিট কোনোদিন দেখিনি একবার দেখাবে? ইচ্ছে করছে কোলে তুলে চুমু খেতে।প্লেনের টিকিট অনেকেই দেখেনি কিন্তু এভাবে কেউ বলতে পারে?টিকিট বের করে মালা বললেন,তোমার কাছে রাখো আর দেখো। আরণ্যক টিকিটটা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে।এমন কিছু বৈশিষ্ট্য নজরে পড়ল না।টিকিটটা ফিরিয়ে দিয়ে বলল,তোমার টিকিট তুমিই রাখো। মালা বাসার দিকে ফিরতে থাকেন।এ ছেলেকে বাকানো সহজ কর্ম নয়।কোন মেয়ের ভাগ্যে আছে কে জানে। ইলিনা সাতটা বাজতেই শাড়ি-টাড়ি পরে রেডি হয়ে বসে আছে নিশীথের পাত্তা নেই।ঘনঘন ঘড়ি দেখে কাটা এখন আটটা ছুই-ছুই।নিশীথ কি ইচ্ছে করে দেরী করছে?আবার মনে হল এক্সিকিউটিভ র্যাঙ্কের এই হচ্ছে মুষ্কিল কখন যে কি দায়িত্ব এসে পড়ে।মনে মনে স্থির করে নিশীথ আসুক না-আসুক ন-টা বাজলেই বেরিয়ে পড়বে ইলিনা।পিঠের নিচে বালিশ দিয়ে চোখ বুজে ভাবতে থাকে। নীচে গাড়ী নিয়ে পৌছাতে মালা নেমে এলেন।আরণ্যক ড্রাইভারের পাশে সামনে বসেছিল।মালা বললেন,নেমে উপরে গিয়ে দেখে এসো তো দরজা ঠিক-ঠিক বন্ধ করেছি কিনা? আরণ্যক নেমে উপরে উঠে গেল।কিছুক্ষণ পর নেমে আসতে মালা ওর হাতে তালা চাবি দিয়ে বললেন,এবার সদর দরজায় তালা লাগিয়ে দাও।তালা লাগিয়ে আসতে মালা ওর হাত চেপে ধরে টেনে পিছন নিজের পাশে বসালেন।গাড়ী চলতে শুরু করে।আরণ্যকের একটা হাত মালার দু-হাতে ধরা।আর তো দেখা হবে না সেজন্য আরণ্যক কিছু বলেনা।আড়চোখে দেখল বয়স হলেও মিসেস মুখার্জীকে বেশ দেখতে লাগছে। গাড়ী বড় রাস্তায় পড়ে গতিবেগ বাড়ায়। হাতটা গালে চেপে মালা বললেন,আমি তোমাকে খুব মিস করবো। আরণ্যক জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকে। তোমার স্মৃতিতে আমি একজন কামকাতর মহিলা হিসেবে আমি জানি। এসব পুরানো কথা কেন বলছেন আরণ্যক চুপ থাকে। তুমি ঈশ্বর মানো? শুনেছি দেখিনি তাকে। মালা হাসলেন এমন উত্তরই আশা করেছিলেন। আরণ্যক বলল,বিবেকানন্দের একটা কথা,বহুরূপে সম্মুখে তোমার ছাড়ি কোথা সেবিছো ঈশ্বর জীবে প্রেম করে যেজন সেইজন সেবিছে ঈশ্বর। আমি ঈশ্বরের সঙ্গে একাত্ম হতে চেয়েছিলাম।জীবনে হাতছানি অনেক পেলেও মালা মুখার্জীকে কেউ বিচলিত করতে পারেনি।সেদিনের জন্য আমার মনে কোনো পাপবোধ নেই।আজ না বুঝলেও একদিন তুমি বুঝবে সেদিন মালা মুখার্জীর জন্য অনুশোচনা হবে।জানিনা সেদিন । আমি থাকব কিনা? এসব কথা বলবে নাতো ভাল লাগেনা। বিমান বন্দরে গাড়ী ঢুকতে মালা বললেন,আচ্ছা রনো আমি যদি তোমায় কিছু টাকা দিই তুমি নেবে? না।দৃঢ গলায় বলল আরণ্যক। ট্রলি ব্যাগ নিয়ে আরণ্যক গাড়ী থেকে নেমে এগোতে থাকে।পিছন থেকে এসে মালা ব্যাগটি নিয়ে বললেন,তুমি আর কত করবে এবার আমার বোঝা আমাকেই বইতে দাও।গেট পেরিয়ে মালা ঢুকে পিছন ফিরে হাত নাড়তে থাকেন।আরণ্যকের চোখ ঝাপসা হয়ে এল।চোখের আড়ালে চলে গেলে আরণ্যক ফিরে এসে গাড়ীতে উঠে বসল।একী মোবাইলটা ফেলে গেছেন।আরণ্যক হাসল বুঝতে পারে এটা মালার কৌশল।মোবাইলটা পকেটে পুরে নিল। লোকজন নেই ফাকা চেম্বার ড.মিত্র বেরোবার তোড়জোড় করছেন।হুড়মুড়িয়ে ঢুকল ইলিনা। একী আপনি?কটা বাজে দেখেছেন?ড.মিত্র বললেন। তাহলে কি আমি চলে যাব? রিপোর্ট এনেছেন?ভিতরে চলুন। ড.মিত্র নিজের জায়গায় বসে রিপোর্টে চোখ বোলাতে বোলাতে বললেন,ওষুধগুলো নিয়মিত খাচ্ছেন তো? হ্যা ম্যাম। চুলকানিটা কমেছে? ইলিনার খেয়াল হয় আরে তাইতো আজ সারাসিন তো চুলকায়নি।বলল,ম্যাম আর চুলকানি নেই। গুডলাক বেশী স্প্রেড করতে পারেনি।এতে বন্ধ্যাত্ব পর্যন্ত হয়ে যেতে পারত।ওষুধগুলো চালিয়ে যান। আর কোনো ঝুকি নেই বলছেন? ড.মিত্র চোখ তুলে বললেন,বলেছিলাম আপনার হাজব্যাণ্ডকে একবার দেখব উনি আসেন নি? অফিসের কাজে আটকে গেছে--। এত রাতে অফিস? মানে উনি এক্সিকিউটিভ র্যাঙ্কে আছেন--। কোন অফিস বলুন তো? আজ্ঞে এল আই সি। এল আই সি কি নাম আপনার হাজব্যাণ্ডের? নিশীথ বর্মন। হু-উ-ম। আপনি চেনেন? একই নাম কতজনের থাকতে পারে। হি ইজ এ্যা গ্রেট চিটার।গলা শুনে সবাই ঘুরে তাকায়। অধ্যাপক বসু কখন ঢুকে পড়েছেন কেউ খেয়াল করেনি। ড.মিত্র বললেন,কি হচ্ছে কি মনু?ওর হাজব্যাণ্ডের কথা হচ্ছে। স্যরি ম্যাডাম আই ডিড নট আণ্ডারস্ট্যাণ্ড। ড.মিত্র উঠে সুখকে চেয়ারে বসিয়ে বলল, উনি আমার স্বামী অধ্যাপক সুখদা রঞ্জন বসু।আপনি ওর কথায় কিছু মনে করবেন না।তুমি এখানে কেন এসেছো? ম্যাডাম আপনি পেশেণ্ট দেখছেন এদিকে বাড়ীতে একটা পেশেণ্ট খাবি খাচ্ছে সে খেয়াল আছে? ইলিনা অস্বস্তি হয় তার জন্য ম্যাডামের দেরী হয়ে গেল বলল,আমি জানতাম না বাড়ীতে আপনার পেশেণ্ট আছে। ড.মিত্র হেসে বললেন,দূরারোগ্য ব্যাধি পেশেণ্ট আপনার সামনে বসে আছেন।সারাদিন খেয়াল থাকে না বাসায় ফিরলে ওনার মোমোকে না দেখলে খাবি খায়। আপনাদের দেখে আমার মন ভরে গেল।ইলিনা বলল। আপনি তো সুন্দর বাংলা বলেন।অধ্যাপক বললেন। বাংলা জল হাওয়ায় বড় হয়েছি বাংলা বলতে পারব না?আচ্ছা প্রফেসার বোস আপনি কি বলছিলেন গ্রেট চিটার-- বাদ দিন একই নাম তো কতজনের থাকে তাই না? ঠিক আছে আপনি ঐ লোকটার কথাই বলুন আমার শুনতে ইচ্ছে করছে। ড.মিত্র বললেন মনু তোমরা কথা বল আমি গোছগাছ করে নি। লোকটার কথা শুনবেন?একেবারে শুরু থেকে বলি।একদিন কলেজে আচমকা একজন স্টাফ রুমে ঢুকে লেকচার শুরু করল কিভাবে ভবিষ্যৎ নিরাপদ করা যায়।পরে জানলাম উনি এল আই সির পলিসি করাতে চান। উনি কি এল আই সির অফিসার? না না এলআইসির অফিসারদের খেমেদেয়ে কাজ নেই ঘুরে ঘুরে পলিসি করবে।এ একজন টাউট। আপনি পলিসি করলেন? আমাদের কেউ কেউ করেছে।আমি বর্তমান নিয়ে ব্যস্ত ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবার সময় নেই।জানেন লোকটার খালপাড়ায় নিত্য যাতায়াত।খালপাড়া জানেন তো? নাম শুনেছি। ব্রথেল।এত সাহস লোকটা আমার বাড়ীতে এসে উপস্থিত--। ড.মিত্র বললেন,তুমি পলিসি করবে না বলে দাও তাই বলে ঐভাবে তেড়ে যাওয়া ঠিক হয়নি ইলিনার শরীরের মধ্যে কাপুনি শুরু হয়।সে মোবাইলে ছবি বের করে বলল,দেখুন তো প্রফেসার এই লোকটি কিনা? প্রফেসর ঝুকে ছবিটা দেখে মুখটা কালো হয়ে গেল।ইলিনার দিকে না তাকিয়ে বললেন,আপনাদের কি লাভ ম্যরেজ? না আমার মাম্মী পছন্দ করে বিয়ে দিয়েছেন। একবার খোজ খবর করবেন না?যাক গে যা হবার হয়ে গেছে।আমি নারী শক্তিতে বিশ্বাস করি।মোমো না থাকলে কোথায় ভেসে যেতাম।মোমোর সামনে বলে বলছি না,মোমোর জন্য আমি একটা সুশৃঙ্খল জীবনে ফিরে আসতে পেরেছি।আমার বিশ্বাস আপনিও পারবেন লোকটাকে সৎ পথে ফিরিয়ে আনতে। অনেক ধন্যবাদ প্রফেসর বসু আজ আমি আসি। ড.মিত্র বললেন,ওষুধের কোর্সটা কমপ্লিট করবেন। মাতালের মত টলতে টলতে বেরিয়ে গেল ইলিনা।কোনদিকে যাবে টিক করতে পারেনা।হাতে ধরা রিপোর্টগুলো দুমড়ে মুচড়ে দলা পাকিয়ে ছুড়ে ফেলে দিল।হাওয়ায় উড়তে উড়তে চলেছে।হঠাৎ খেয়াল হয় ওতে তার নাম লেখা আছে।দলাটা ধরার জন্য পিছনে ছুটতে থাকে।কানে একটা গানের সুর ভেসে আসতে থমকে দাঁড়ায়। আগুনের পরশমণি ছোয়াও প্রাণে এ জীবন পুণ্য করো গানের অর্থ না বুঝলেও সুরটা যেন তার শরীর মনে এক অভূতপূর্ব অনুভুতি সৃষ্টি করে।ইউটিউবে থেকে গানটি লোড করে শুনতে থাকে।মনের সমস্ত গ্লানি যেন আগুনের স্পর্শে ছাই হয়ে মিলিয়ে যেতে থাকে। নতুন করে বাচার প্রেরণা ফিরে পেল ইলিনা ব্রাউন। |
« Next Oldest | Next Newest »
|