Thread Rating:
  • 26 Vote(s) - 2.69 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery অন্তর্বর্তী শূন্যতা
#61
গল্পটা চলছে দারুণ, চালিয়ে যান, পাশে আছি!!!
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#62
গল্পটার একটা লেভেল আছে মানতেই হবে।
লাইক রেপু দিলাম
Like Reply
#63
~ দু - চার কথা ~

প্রথমেই সবাইকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। গল্পটা যে এত কম সময়ের মধ্যেই আপনাদের অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছে, তার জন্য সমস্ত কৃতিত্ব আপনাদের। আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টাকে সার্থক করার জন্য আরো একবার ধন্যবাদ।
 
লম্পট কে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার সিগনেচারটি আমার খুবই পছন্দ হয়েছে। গল্পটি পড়তে তাকুন, এবং এই ভাবেই ভালোবাসতে থাকুন।

albertmohan কে বলি বাংলায় একটা কথা আছে জানেন তো? “মিচকে”। আমার মনে হয় দূর্নিবার কিন্তু এই ক্যাটেগরির মানুষ। একদম ওকে আন্ডারএস্টিমেট করার ভুল করবেন না। সাবধান!!!

Monika Rani Monika কে গল্পটি পড়ার জন্য এবং সেই সাথে নিয়মিত কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ জানাই।

Anita Dey কে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। গল্পটি পড়ার জন্য এবং নিয়মিত কমেন্ট করে পাশে থাকার জন্য। আপনাদের মত পাঠক-পাঠিকাদের কেমন্ট পড়ে সত্যিই খুব ভালো লাগে। এবং সেই সাথে ভয়ও লাগে, এরকম ভাবেই আপনাদের জন্য একইরকম লিখে যেতে পারবো তো?

মাগিখোর কে বলি ধন্যবাদ। এর সাথে আরো একটা সিক্রেট শেযার করি। আমি নিজে বেশ কয়েক বছর আগে এরকমই একটি ডেটিং অ্যাপে ছিলাম। অবশ্যই ছদ্মনামে। সেখানের কিছু কার্যকলাপ দেখেশুনেই এই গল্পের অবতারণা বলতে পারেন। বাকীটা আপনারা বলবেন, গল্পটা কেমন লাগছে।

ray.rowdy কে বলি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার এই ছোট্ট প্রচেষ্টাকে “Pulp Fiction” এবং “এক চালিশ কে লাস্ট লোকাল” –এর সাথে তুলনা করার জন্য। প্রথম ছবিটি আমি দেখিনি। তবে দ্বিতীয়টি আমি অনেকদিন আগে দেখেছিলাম। আসলে এই রকম গল্প আমার বেশ ভালো লাগে, যেখানে অনেক চরিত্রের সমাহার থাকে। তাদের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা গল্প। কিন্তু তারা সবাই এক জায়গায় এসে মিলিত হয়। আমিও চেষ্টা করেছি এইরকমই একটা জাল বোনার, কতটা সফল হয়েছি, সেটা আপনারাই বলবেন।

Kam pujari কে জানাই গল্পটি পড়ার জন্য এবং সেই সাথে কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ।

কাদের কে ধন্যবাদ জানাই গল্পটি পড়ে কমেন্ট করার জন্য। চেষ্টা করেছি একটা গল্প লেখার। আপনাদের ভালো লেগে থাকলে আমি কৃতজ্ঞ।

Pro10 কে বলি ধন্যবাদ। গল্পটায় ছয়টি আলাদা আলাদা চরিত্র আছে। তাদের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা নামের জন্য হয়তো আপনার গুলিয়ে যাচ্ছে। গল্পটিকে একটু মন দিয়ে পড়লেই দেখবেন আর গুলিয়ে যাবে না। গল্পটি পড়ুন আর বেশী করে কমেন্ট করুন।
 
সবশেষে আরো একবার সবাইকে ধন্যবাদ জানাই গল্পটি পড়ার জন্য এবং কমেন্ট করার জন্য। চাই সবাই আরো বেশী করে গল্পটি পড়ুক এবং কমেন্ট করে জানাক কেমন লাগছে গল্পটি। পরবর্তী অধ্যায়ের প্রথম পর্ব খুব শীঘ্রই আসতে চলেছে।
 
~ধন্যবদান্তে
রতিমোহিনী দেবী
[Image: 20240303-191414.png]
[+] 5 users Like রতিদেবী's post
Like Reply
#64
তোমার প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাই। দারুণ হচ্ছে।
একটা কথা বলতে চাই, যদিও মনে হয় আধুনিকা হিসেবে তোমাকে কিছু বলতে যাওয়া তেলা মাথায় তেল দেওয়ার মতোই হয়ে যাবে। ভালো বিদেশী সিনেমা দেখো, অন্য ভালো লেখক-লেখিকাদের গল্প পড়ো - মূলধারা এবং ইরোসাহিত্য - দুটোই। আশা করি, তুমি এর থেকেও অনেক বেশী সাহিত্যচর্চা করে থাকো এবং শিল্পের অনুরাগিনী।
চালিয়ে যাও। শুভেচ্ছা রইলো।
Like Reply
#65
এক কথায় অসাধারণ   Namaskar

[Image: Images-2-2-1.jpg]

Like Reply
#66
ধন্যবাদ।
[Image: 20240303-191414.png]
[+] 1 user Likes রতিদেবী's post
Like Reply
#67
পরিচ্ছদ ৩ - কথোপকথন

অনুরাধা – খাওয়া হয়ে যাওয়ার পরে বাবান একটু মোবাইলে গেম খেলে ঘুমিয়ে পড়ে। সু-ও খাওয়া হয়ে গেলেই বিছানায় শুয়ে মোবাইল ঘাঁটতে থাকে। ও শুতে এলে তবে ঘুমাতে যায়। তবে এত সুখ ওর কপালে নেই। খাওয়া শেষ হলে এঁটো থালাবাসনগুলোকে কিচেনে এককোণে নিয়ে গিয়ে রাখতে হয়। তারপর ডাইনিং টেবিল পরিষ্কার করে কিচেন গোছাতে হয়। এসবকিছু হয়ে গেলেও ওর ছুটি নেই। শাশুড়িকে একপ্রস্থ পেচ্চাপ করিয়ে, ওষুধ খাইয়ে তারপরে এর ছুটি। তাও আবার এক একদিন টুকরো কাজ থাকে। সেসব মিটিয়ে তবে শুতে আসার সময় পায় ও। এসব করতে করতে এগারোটা-সাড়ে এগারোটা বেজে যায়। তারপর চুল-টুল বেঁধে, সামান্য প্রসাধনী সেরে যখন বরের পাশে বিছানায় পিঠটা পাতে তখন ঘড়ির কাঁটা মধ্যরাতের দরজায় টোকা দিচ্ছে। আবার যেদিন সু-এর ইচ্ছা হয়, সেদিন ঘুমাতে রাত হয় আরো। একদিকে অবশ্য সুবিধা আছে। এই ইচ্ছাটা খুব কম হয় সু-এর। সপ্তাহে এক কি দুবার। কিম্বা মাসে গুণে তিন থেকে চারবার। তার বেশী কখনও হয় না। আবার তার মাঝে ওর পিরিয়ডস হলে তো কথাই নেই। সংখ্যাটা আরো কমে যায়। বিয়ের প্রায় এক যুগ কেটে যাওয়ার পর এখন আর সত্যিই এসব ভালো লাগে না। নেহাতই সু-এর যেদিন ইচ্ছা হয়, সেদিন জোর করে হলেও ওকে করতে হয়। মুখ ফুটে না বলতে ভালো লাগে না। অবশ্য ওরও যে ইচ্ছা হয় না, তা নয়। তবে সু-কে মুখ ফুটে বলতে পারে না। আসলে বয়স যতই বাড়ছে, ততই যে একটা দূরত্ব বাড়ছে দুজনের মধ্যে সেটা ও ভালো করেই বুঝতে পারছে। কিন্তু কয়েক বছর আগেও এরকম কিন্তু ছিল না। বাবানের বছর চারেক বয়স পর্যন্তও ওরা সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন করেছে। তারপর থেকেই আস্তে আস্তে এসব কমতে শুরু করেছে। আর বছর কয়েক গেলেই বোধহয় একেবারেই বন্ধ হয়ে যাবে। তবে প্রথম থেকেই সু-এর এনার্জী কিন্তু অনেক বেশী। এখনও অনেকক্ষণ ধরে করতে পারে। ওর মনে আছে বিয়ের পরে একবছর সু-এর শরীরের তলায় নিজের পা দুটোকে ছড়িয়ে রাখতে রাখতে ওর কোমরে যন্ত্রণা ধরে যেত। ওর মুখ দিয়ে ক্রমাগত গোঙানী বের হত। দু হাত দিয়ে বিছানার চাদরটাকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরে নিজের তলপেটের গর্তটায় সু-এর মাঝারী আকৃতির বাঁড়াটাকে নিতে নিতে ও হাঁফিয়ে যেত। তবুও সু থামত না। আসুরিক শক্তিবলে নিজেকে বউয়ের গুদে চালান করে দিতে থাকত। তারপর একসময় তার গতি হত দ্বিগুণঅবশেষে ভলকে ভলকে বমি করে ওর গুদ ভাসিয়ে দিয়ে থামত সু। মানা করলেও শুনত নাবিয়ের পরে প্রথম কয়েক মাস অবশ্য বাহারী ফ্লেভারের ডটেড কন্ডোম আনত সু। কিন্তু তারপরে ধীরে ধীরে সেটা বন্ধ করে দেয়। বাবান পেটে আসার পরেও প্রথম মাস তিনেক চুটিয়ে সেক্স করেছে ওরা। তারপর ওসব বন্ধ। ডেলিভারীর পর মাস পাঁচেক বাপের বাড়িতে কাটিয়ে যেদিন প্রথম ও আবার শ্বশুরবাড়িতে আসে, সে রাতে সু একপ্রকার ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ওর উপরে। ব্যথা হয়ে গিয়েছিল ওর গুদটা। তবুও সু ছাড়েনি। ও-ও ছাড়তে চায়নি। সেসব দিন গেছে বটে এক একটা। কিন্তু আজ সেসব কিছুই নেই। তখন সেক্সের মধ্যেও একটা প্রেম খুঁজে পেত ও। এখন পায় কেবলই বাধ্যবাধকতা। আর নিয়ম। প্রেমটা বোধহয় অনেক আগেই চুকে বুকে গেছে। আজও ওদের কলেজের দিনগুলো মনে পড়ে গেলে মনটা খারাপই হয়ে যায়। কেবল পাগল, উদ্দাম আর বাঁধনহারা ছিল ওরা দুজনে। কলেজে চুটিয়ে প্রেম করেছে ওরাসিনেমাহল থেকে শুরু করে ভিক্টোরিয়ার বাগান। গঙ্গার ঘাট থেকে শুরু করে অ্যাপার্টমেন্টের ছাদ। কোথায় না ওরা সেক্স করেছে! এখন সেসব কথা ভাবলে লজ্জা লাগে। কিন্তু তখন এসবের তোয়াক্কাই করেনি ওরা। কি উদ্দামই না ছিল সেসব দিন।

প্রথম সু ওকে কিস করে সিনেমাহলে। শরীরে পাগলপারা একটা স্রোত খেলে গিয়েছিল ওর শরীর জুড়ে। এর আগে হিন্দী সিনেমায় হিরো-হিরোইনের ঠোঁটবদ্ধ কিস দেখেছিল ও। আর তার অনুভব পেয়েছিল সেদিন সেই অন্ধকারের মধ্যে। ঠোঁটের উপরে সু-এর ঠোঁটদুটো যেন জমাট বেঁধে আছে। সু-এর একটা হাত ওর কোমরটাকে শক্ত করে ধরে রেখেছে। ওর নরম বুকদুটো ক্রমাগত ঘষা খাচ্ছে সু-এর বুকে। কিন্তু চেষ্টা করেও সু-এর থেকে নিজেকে ছাড়াতে পারছে না ও। আসলে চাইছেও না। নিজে থেকে চোখ দুটো বুজে এসেছিল আবেশে। চোখ বন্ধ করেই অনুভব করছিল। ওর নীচের ঠোঁটটাকে লাগাতার চুষে যাচ্ছে সু। সেই সাথে জিভটাকে ঠেলে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে ওর মুখের ভিতরে। সু যে এতো ভালো কিস করতে পারে, সেটা এর আগে ওর জানাই ছিল না। আজই প্রথম জানল। হঠাৎ করেই আরো একটা স্পর্শ টের পেল নিজের শরীরে। সু-এর আরেকটা হাত এতক্ষণ রাখা ছিল ওর থাইয়ের উপরে। হঠাৎ করেই সেই হাতটা সচল হয়ে উঠল। সু হাতটাকে নিয়ে গিয়ে রাখল ঠিক ওর বুকের উপরে। এবারে একটু হলেও বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে সেটা ও বুঝতে পারল। কিন্তু সু-কে বারণ করার অবস্থায় এখন ও নেই। ঠোঁটদুটো তো অনেক আগেই বন্ধ করে রেখেছে সু। তাই হাত দিয়েই ইশারায় ওকে বারণ করতে লাগল। কিন্তু সু শুনলে তো। সু ধীরে ধীরে হাতটাকে নিয়ে গিয়ে রাখল ওর বুকের উপরে। এরকম অবাধ্য এর আগে সু কোনোদিন হয়নি। আজই প্রথম হল। ভালোও লাগছে। আবার ভয়ও করছে। আবেগের বশে কোনো ভুল করে ফেলবে না তো? কিন্তু ওর বারণ আর শুনছে কে? ধীরে ধীরে সু-এর হাতটা জমাট বাঁধছে ওর বুকের ডানদিকটা ঘেঁষে। চুড়িদারের তলায় ব্রা আছে। কিন্তু তা সত্তেও সু-এর হাতের স্পর্শ যেন ও সরাসরি নিজের শরীরে টের পাচ্ছে। ধীরে ধীরে সু-এর হাতের চাপ বাড়ছে। কেমন যেন একটা অস্বস্তিকর অনুভব। তবুও ভালোই লাগছে। সু-এর ঠোঁট কিন্তু এখনও স্থানচ্যুত হয়নি। লাগাতার পালা করে চুষে চলেছে ওর ঠোঁটদুটোকে। আবার সেই সাথে বুকের উপরেও ওর হাতের মোক্ষম চাপ। আর সহ্য করা যাচ্ছে না। শরীরটা কেমন যেন একটা করছে। বুকের মধ্যে উথাল পাথাল হচ্ছে। সেটা বুঝতে পেরেই কি সু ছেড়ে দিল ওর শরীরটাকে? আজও ও জানে না। তবে মাঝখানে প্রায় মিনিট দশেকই হয়তো কেটেছিল। কিন্তু ওর মনে হচ্ছিল যেন কতটা সময় পেরিয়ে গেছে ওর মাঝে। জামাকাপড় ঠিক করে যখন আবার সিনেমার পর্দায় চোখ রাখল, তখন বুকটা ঢিপঢিপ করছে ভয় আর উত্তেজনায়। কোথায় গেল সেসব দিন?
 
-  “জানো, তপতী আবার কনসিভ করেছে।” রাত্রিবেলায় ড্রেসিং টেবিলের সামনে চুল বাঁধতে বাঁধতে বলল ও। একটু দূরে বিছানায় আধশোয়া হয়ে শুয়ে রয়েছে সু। হাত আর চোখ দুটোই ফোনে। এক মনে ফোন ঘাঁটছে। রোজই ঘাঁটে। এত কি আছে বাপু ফোনে জানে না। বউয়ের থেকেও কি ফোন দামী? ও কথা বলছে, কিন্তু সু-এর সেদিকে মন নেই। ফোনই এখন ওর ধ্যান-জ্ঞান। দিনে যতটুকু সময় ঘরে থাকে, ততটুকুই ছেলে-বউকে সময় না দিয়ে, ঐ ফোনটাকেই দেয়। ফোন তো নয়, যেন ওর সতীন! বিরক্তি সত্তেও ও সু-কে ডাকল, “কই গো, শুনছো, আমি কি বলছি?” সু ফোনের দিকে তাকিয়ে ঘাঁটতে ঘাঁটতেই উত্তর দিল, “বলো, শুনছি।”

-  “না। তুমি শুনছো না। ফোনটা রাখবে? নাকি জানলা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দেবো ওটাকে?” এবারে খেঁকিয়ে বলল ও।
যথারীতি ওষুধে কাজ হল তৎক্ষণাৎ। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ফোনটা রেখে ওর দিকে তাকিয়ে সু বলল, “বলো, কি বলছিলে?”

-  “বলছিলাম, তপতী আবার কনসিভ করছে।” ও চুলে বিনুনি করতে করতে বলল।

-  “কে?” ভ্রু দুটোকে সামান্য হলেও তুলে জিজ্ঞাসা করল সু।

-  “আরে তপতী। আমার বন্ধু। ঐ যে, কসবার ওদিকে থাকে।” তপতীর পরিচয় দিয়ে বলে।

-  “যার বর ফাইনান্সে কাজ করে?” আবার জিজ্ঞাসা করল সু।

-  “হ্যাঁ গো।”

-  “ওর একটা মেয়ে আছে না?” সু বলল

-  “আছে তো। আমাদের বাবানের থেকে বছর খানেকের বড়ো” ও বলল।

-  “এত বছর পর আবার ইস্যু নিচ্ছে?” সু লম্বা হয়ে শুতে শুতে বলল।

-  “তবে আর বলছি কি? আমিও তো ওকে একই কথা বললাম।” বিনুনি বাঁধা শেষ করে ঘাড়ে, গলায় পাউডারের পাফটা ঘষতে ঘষতে বলল ও।

-  “বড়লোকেদের কথা ছাড়ো। ওরা দুটো কেন চারটে ইস্যুও নিতে পারে ইচ্ছে হলে।” সু পাশ ফিরে শুলো।
প্রসাধনী শেষ করে ঘরের বড়ো আলোটাকে নিভিয়ে দিয়ে নাইট ল্যাম্পটাকে জ্বেলে দিল। আবছা নীল রঙের একটা আলো ছড়িয়ে পড়ল গোটা ঘরে। বেশ একটা মনোরম আলো ছায়ার খেলা হচ্ছে গোটা ঘর জুড়ে। বাবানটাকে একপাশে একটুখানি সরিয়ে দিয়ে বরের গা ঘেঁষে শুয়ে পড়ল। তারপর প্রায় ফিসফিস করে বলল, “কি গো, ঘুমিয়ে পড়লে নাকি?” সামান্য হলেও ঘুম জড়ানো গলায় সু বলল, “না। বলো।” নিজের মুখটাকে বরের পিঠে বার দুয়েক অকারণেই ঘষে দিয়ে বলল, “আমরাও একটা নেবে?”

-  “কি?” সু-এর গলাটা যেন আরেকটু জড়ানো।

-  “কি আবার! বলছি আরেকটা ইস্যু নেবে?” বরের কানের লতিটাকে একবার চেটে দিয়ে জিজ্ঞাসা করল।

-  “ঘুমিয়ে পড়ো, রাই। অনেক রাত হয়েছে।” কানের কাছটা হাতটা দিয়ে একবার মুছে নিয়ে সু জবাব দিল।

-  “বলো না। নেবে আরেকটা ইস্যু?” বরের বুকে আঙুল দিয়ে আলপনা কেটে দিয়ে বলল।

-  “আমার প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছে। কাল সকালে আবার উঠতে হবে। এখন ঘুমাতে দাও।” বুক থেকে ওর হাতটা ঠেলে সরিয়ে দিয়ে পাশবালিশটা আঁকড়ে ধরে শুয়ে পড়ল সু।

নিরাশ হয়ে চিৎ হয়ে শুলো ও। একটু পরেই মনে হল সু ঘুমিয়ে পড়েছেকিন্তু ওর চোখে ঘুম কই? সারাটাদিন যে উত্তেজনায় কেটেছে ওর, তাতে তো বিছনায় শুয়েই ঘুমিয়ে পড়ার কথা। কই, তাহলে ঘুম আসছে না কেন? শুয়ে শুয়ে সারাটাদিনের চর্বিতচর্বণ করতে লাগল ও। বিশেষ করে দুপুরের পর থেকে। দুপুরে অ্যাপটায় প্রথমবার লগ ইন করার পর প্রথমেই ব্যাফোমেট বলে একজন ওকে রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিল। অনেক দোনামনা করে ও তাকে অ্যাকসেপ্টও করে নিয়েছিল। তারপরেই সে ওকে চ্যাট পাঠিয়েছিল, “Hi, sexy. This is Baphomet. Wanna chat with you. এতটাই আচমকা মেসেজটা এসেছিল যে প্রথমে ও ভয়ই পেয়ে গিয়েছিল। কি করবে প্রথমে ও ভেবেই পায়নি। উত্তর দেবে? নাকি চুপ করে থাকবে? অবশেষে চুপ করে থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে ভেবে ও তাড়াতাড়ি অ্যাপটা থেকে লগআউট হয়ে গেল। ফোনটা রেখে ও ভাবতে শুরু করল। ও যেটা করছে, সেটা কি ঠিক করছে? এর বেশী কি আর এগোনো উচিত হবে? এইসব অ্যাপের কোনো বিশ্বাস নেই। যদি খারাপ কিছু একটা হয়ে যায়, তাহলে সু-কে মুখ দেখাবে কি করে? সু জানতে পারলে রেগেমেগে কি করবে, তার ঠিক নেই। তার চেয়ে দরকার নেই এসব ঝামেলার। যত তাড়াতাড়ি পারে অ্যাপটাকে ডিলিট করে দিলেই ভালো। মনস্থির করে ফোনটাকে হাতে নিয়েও কিছু করতে পারল না। বরং মনটা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে গেল নিমেষের মধ্যে। একটা ভাগ যেমন ওকে অ্যাপটাকে ডিলিট করার পরামর্শ দিচ্ছিল, ঠিক তেমনই আরো একটা ভাগ ওকে বোঝাতে শুরু করল। এখনই অ্যাপটাকে ডিলিট করে কি লাভ? কোনো ক্ষতি তো হয়নি? আর ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলে তপতী কি ওকে এটা ব্যবহার করতে বলত? আর তাছাড়া বুঝেশুনে ব্যবহার করলে কোনো জিনিসই মারাত্মক হয় না। ডিলিট করার বদলে অ্যাপটাকে বুঝেশুনে ব্যবহার করলেই হল। আর লোকের সাথে চ্যাট করলেই কি ও খারাপ হয়ে যাবে? আর এখানে যে সবাই খারাপ, সেটাই বা ও আগেভাগে ভেবে নিচ্ছে কেন? ও নিজেও তো আছে এই অ্যাপে। ও নিজে কি খারাপ? তাহলে ওর মত তো আরো অনেকেই থাকতে পারে এই অ্যাপে। যারা কেবল মাত্র অন্যদের সাথে বন্ধুত্ব করার জন্যই হয়তো এই অ্যাপে এসেছে। যেমন ও নিজে এসেছে। শুধু চ্যাট করলে ক্ষতি কি? বাড়াবাড়ি কিছু না করলেই হল। বলাবহুল্য এই যুক্তি মনে লাগল ওর। অনেক ভেবে অ্যাপটাকে ডিলিট করল না। এই দোলাচলে বিশ-পঁচিশ মিনিট পেরিয়ে গেছে। ফোনটা হাতে নিয়ে যখন ও আবার নিজের চ্যাটবক্সে ঢুকল ততক্ষণে ব্যাফোমেট ইনঅ্যাকটিভ হয়ে গেছে। কারণ তার নামের পাশের সবুজ বৃত্তটা নিভে গেছে। মনটা সামান্য হলেও খারাপ হয়ে গেল। কি বোকা মেয়ে ও। তপতী ওকে হাঁদি বলে ডাকে কি এমনি! সে যেই হোক, সে তো শুধু ওর সাথে কথা বলতে চেয়েছিল। কথা বললে কি এমন মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যেত? তা না করে বোকার মত চুপ করে রইল। সে কি ওর উত্তরের জন্য সারাদিন অপেক্ষা করে থাকবে? তার কি আর কোনো কাজ নেই? নিজেকেই নিজে বকতে লাগল ও। কিন্তু এখন আর কিছুই করার নেই। পরে আবার দেখা যাবে খন। এরকম বোকামি আর কিছুতেই করা চলবে না। মনের মধ্যে আফসোস নিয়ে ফোনটাকে রেখে দিতে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই আরো একটা নোটিফিকেশন ঢুকল ওর ফোনে। ও প্রথমে ভাবল ঐ ব্যাফোমেট না কি নাম যেন, সে-ই বোধহয় মেসেজ করেছে। তাড়াতাড়ি অ্যাপটা খুলে দেখল, না, ওর ধারণা ভুল। কোনো চ্যাট নয়, বরং আরো একটা পার্টনার রিকোয়েস্ট এসেছে। খুলে দেখল নাম হচ্ছে Himeros07নামটা কোনদেশী ও বুঝতে পারল না। আগের নামটাও বুঝতে পারেনি। কিসব খটোমটো নাম দেয় সকলে! ওর মত সহজ সরল নাম দিতে পারে না? যাই হোক। এবারে আর আগের মত ভুল করল না। তৎক্ষণাৎ রিকোয়েস্ট অ্যাকসেপ্ট করে নিল। ভেবেছিল এ-ও বোধহয় ওর সাথে কথা বলবে। কিন্তু কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেও যখন সে কোনো মেসেজ পাঠাল না, তখন বাধ্য হয়েই ফোন রেখে দিল ও। নিজে থেকে যেচে কথা বলার ইচ্ছে এখন ওর নেই।

সারাটা দুপুর কেটে বিকেল, বিকেল কেটে সন্ধ্যে হল। সন্ধ্যে পেরিয়ে রাত। এর মাঝে আবার অন্য এক নাটক। ভর সন্ধ্যেবেলায় সু ছাঁইপাঁশ গিলে ঘরে এল। ওর সঙ্গে একটু রাগারাগিও হল। যদিও সু কোনো উত্তর দিল না ওর মুখের উপরে। কোনোদিনই দেয় না। আজও দিল না। চুপচাপ শোওয়ার ঘরে চলে গেল। মনটা আরো একবার খারাপ হয়ে গেল। দিনটাই কেমন ওলট পালট খেয়ে চলছে আজকে। রাতের খাবার তৈরী করতে করতে ন’টা বেজে গেল। এইসময় প্রতিদিন ও পরপর দুটো সিরিয়াল দেখে। তারপরে খেতে দেয়। হাতের কাজ শেষ করে এসে বসল সোফায়। টিভিটা চালিয়ে দিল। কিন্তু আজ ওর মন সিরিয়ালে নেই। বারবার মনটা চলে যাচ্ছে পাশে পড়ে থাকা ফোনটায়। অ্যাপটা একবার খুলে দেখার ইচ্ছা হচ্ছিল। কিন্তু সু এখন বাড়িতে আছে। যদি দেখে ফেলে? কেলেংকারী হয়ে যাবে। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল ন’টা বেজে বাইশ মিনিট। সু অনেকক্ষণ শোওয়ার ঘরে গেছে। সোফা থেকে উঠে পা টিপে টিপে ওদের শোওয়ার ঘরের দরজার সামনে দাঁড়াল। ভিতর থেকে পাখার আওয়াজ আসছে। দরজাটা হাত দিয়ে ঠেলল আস্তে করে। ভিতর থেকে বন্ধ! সু রাগ করে শুয়ে রয়েছে মনে হয়। নিজের উপরে আরো একবার রাগ হল ওর। কেন এমন করল ও? এক আধদিন কি আর সু ওসব খেতে পারেনা? সত্যিই ও বাড়াবাড়ি করে ফেলেছে আজকে। থাক। এখন আর ওকে ঘাঁটাবে না। রাগ পড়ুক আগে, বাবুর। রাতে সুদে আসলে সব উসুল করে দেবে আজকে। মুচকি হেসে আবার সোফায় ফিরে এল। টিভিটা আগের মতই চলতে থাকল। ও ফোনটাকে হাতে তুলে নিল। অ্যাপটা খুলল ধীরে সুস্থে। তারপর সোজা চলে গেল চ্যাটবক্সে। ব্যাফোমেট এখনও ইনঅ্যাকটিভ। সে-ও কি সু-এর মত রাগ করেছে নাকি? তারও রাগ ভাঙ্গাতে হবে? আরো একবার মুচকি হেসে ও টাইপ করল, Hi, this is Lilith.” সেন্ড করে ও অপেক্ষা করতে লাগল। কতক্ষণ করতে হবে ও জানে না। কিন্তু করতে লাগল। অবশ্য খুব বেশীক্ষণ অপেক্ষা করতে হল না ওকে। মিনিট দেড়েকের মাথাতেই জবাবী উত্তরটা এল ওপাশ থেকে। আরো একবার মুচকি হাসল ও। এই হচ্ছে ছেলেদের স্বভাব। এতক্ষণ ইনঅ্যাকটিভ ছিল, যেই একটা মেয়ে নিজে থেকে চ্যাট করতে শুরু করল, সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকটিভ হয়ে গিয়ে চ্যাটের উত্তরও দিয়ে দিল। তাহলে সে-ও কি ওর চ্যাটেরই অপেক্ষা করছিল? কি জানি। হবে হয়তো। অত কিছু না ভেবে ও আবার চ্যাটটা খুলল। দেখল লেখা আছে, “Are you active now?” আবারও মুখ টিপে হাসল ও। এ আবার কি প্রশ্ন? অ্যাকটিভ না হলে ও চ্যাট করছে কি করে? ও উত্তরে শুধু লিখল Yes.” এরপর অল্প একটু অপেক্ষা করতেই আবার চ্যাট এল একটা ওপাশ থেকে। “Are you Bengali?” প্রশ্নটা পড়ে বুকটা একবার হলেও ধড়াস করে উঠল। এই রে! এটা জিজ্ঞাসা করছে কেন? “Yes. But why?” এরপরে যে উত্তরটা ওপাশ থেকে এলো, সেটা পড়ে ওর মুখে আরো একটা হাসি খেলে গেল। কারণ এবার আর ইংরেজীতে নয়, বরং গোটা গোটা বাংলায় লেখা আছে, “তাহলে এখন থেকে বাংলায় কথা বলব। ইংরেজীতে কথা বলে ঠিক পোষাচ্ছে না।”

 
রাত এখন কটা বাজছে কে জানে। হাল্কা হলেও একটা তন্দ্রা মত এসে গেছে। হঠাৎ করে বালিশের পাশে রাখা ফোনটা ভাইব্রেট করে উঠল একবার। তন্দ্রাটা কেটে যেতে একমুহুর্ত সময়ও লাগল না। তাড়াতাড়ি বিছানায় উঠে বসে ফোনটা হাতে নিল। স্ক্রিণের উপরে নোটিফিকেশনটা ফুটে উঠেছে। কিন্তু এখানে খোলা সম্ভব নয়। সু জেগে গেলে মুশকিল হয়ে যেতে পারে। কি করা যায়? ফোনটা হাতে নিয়ে আলতো করে বিছানা থেকে নামল। তারপর পা টিপে টিপে দরজাটা খুলে বাইরে বের হয়ে এল। ডাইনিং-এর ঘড়িটায় চোখ পড়তে বুঝতে পারল দুটো বাজতে যাচ্ছে প্রায়। এতরাতে ব্যাফোমেট আবার চ্যাট পাঠাল নাকি? এইতো দশটা পর্যন্ত চ্যাট করেছে ওরা দুজনে? আবার এখন কেন? ওকে বারণ করে দিতে হবে। প্রতিদিন যেন এরকম না করে। সোফায় বসে অ্যাপটা খুলল। দেখল ওর ধারণা ভুল। ব্যাফোমেট ওকে চ্যাট পাঠায়নি। পাঠিয়েছে হিমেরস। সামান্য বিরক্তি নিয়েই চ্যাটটা খুলল। দেখল লেখা রয়েছে। “Hey, sweety. Do I wake you up?” উত্তরে ও বাংলাতেই লিখল, “আমি এতদিন জানতাম রাতটা ঘুমের জন্যই।” উত্তর এল সাথে সাথেই। এবং বাংলাতেই। “কিন্তু আমি যে জানি, রাতে ঘুম ছাড়াও আরো একটা কাজ হয়।”

-  “আর সেটা কি?” চোখ থেকে বর্তমানে ঘুমের শেষ বিন্দুটুকুও মুছে গেছে। সোফায় আয়েশ করে বসে জবাবটা লিখল।

-  “ঐ যে সেইটা।”

-  “হেঁয়ালি না করে, যেটা বলতে চাইছেন সেটা বলুন।” জবাবী উত্তরটা লিখল। এখন আর মনে বিরক্তি নেই।

-  “সব কথা কি আর মুখে বলা যায়?” বেশ দার্শনিক টাইপের কথা।

-  “কেন? বলা যায় না বুঝি?” মুচকি হেসে টাইপ করল।

-  “উঁহু। বুঝে নিতে হয়।”

-  “তাই বুঝি?”

-  “অবশ্যই।”

-  “তাহলে বলুন তো আপনার সঙ্গে চ্যাট করা বাদে আমি এখন কি করছি?”

-  “তোমার বয়ফ্রেন্ড আছে?” এ আবার কেমন প্রশ্ন?

-  “ধরুন আছে।” হেরে যাওয়ার পাত্রী ও নয়।

-  “ধরবো কেন? খোলসা করে বলো।”

-  “আছে।”

-  “সে কি তোমার কাছেই আছে?”

-  “এত রাতে কি আমার কাছে থাকতে পারে?”

-  “থাকলে ক্ষতি কি?”

-  “থাকলে আমি কি আর আপনার সঙ্গে চ্যাট করতে পারতাম?” সময় জ্ঞান ভুলে গেছে ও।

-  “ঠিকই। তাহলে তুমি এখন কি করছো? ঘুমাচ্ছিলে?”

-  “না। ঘুম পাচ্ছে না।”

-  “কেন?”

-  “খুব গরম লাগছে। মনে হচ্ছে...”

-  “কি মনে হচ্ছে?”

-  “মনে হচ্ছে সব জামাকাপড় খুলে ফেলি। তারপর...” অতি দ্রুত টাইপ করতে লাগল।

-  “তারপর?”

-  “তারপর...”

একবার শোওয়ার ঘরের বন্ধ দরজাটার দিকে তাকিয়ে নিয়ে, মুচকি হেসে ফোনের কি বোর্ডে ঝড় তুলল অনুরাধা। অ্যাপটায় টিকে থাকার মূলমন্ত্র ও এখন পরিষ্কার বুঝে গেছে।
[Image: 20240303-191414.png]
[+] 3 users Like রতিদেবী's post
Like Reply
#68
বরাবরের মতো অসাধারণ
Like Reply
#69
লিখে যান মনের আনন্দে, সাথে আছি, লেখাটা অনেক কস্ট করেই লিখছেন?? ইন্দুমতী ও তার ছেলে এখন কী করছে?? জানার ইচ্ছে প্রবল
[+] 1 user Likes Monika Rani Monika's post
Like Reply
#70
খুব সুন্দর হচ্ছে। চালিয়ে যাও।
Like Reply
#71
খুবই সুন্দর, পটভূমিকা এবং পরিবেশনা অসাধারণ।
Like Reply
#72
নিয়মিত আপডেট দিবেন প্লিজ
Like Reply
#73
হারিয়ে যাবেন না
Like Reply
#74
আমি কমেন্ট করি না কিন্তু আজকে আপনার এই গল্প করার পর নিজেকে আটকিয়ে রাখা বড্ডো মুশকিল হয়ে গিয়েছে মনে হচ্ছে সব আমার সামনে হচ্ছে আমি দেখতে পাচ্ছি সব সব ক্যারেক্টর যেন জীবন্ত এইভাবেই লিখতে থাকুন পাশে ছিলাম আছি থাকবো
Like Reply
#75
আপনার লেখা সেই পুরোনো Legendary Xossip এর কথা মনে করিয়ে দিল, Xossipy এসেছে বহুদিন হতে চললো, কিন্তু ধারে ভারে কোনভাবেই Xossip এর‌ তুলনাতে আসার মত জায়গাও‌ সৃষ্টি করতে পারেনি। কিন্তু আপনার এই লেখা টা এক লহমায় এই Xossipy কে তার Predecessor এর তুলনায় টানার মত জায়গায় নিয়ে গেল। দুর্দান্ত কনসেপ্ট এবং ততোধিক রোমাঞ্চকর শুরু। এটিকে একটি কাল্ট ক্লাসিকে রূপান্তরিত করুন এবং দয়া করে শেষ করবেন, হঠাৎ একদিন হারিয়ে যাবেন না। অনেক উৎসাহ রইলো।

আমার প্রিয় চরিত্র আয়ুশী, সুন্দরী Early twenties এর নারী, Tomboy. উফফ এ যেন আমার স্বপ্নের নারী।
I am burdened with glorious purpose.
[+] 2 users Like Kalpurush96's post
Like Reply
#76
একটাই অনুরোধ, হারিয়ে যাবেন না
Like Reply
#77
আয়ুষ – পাক্কা এক ঘন্টা লাগাতার বকার পরে ফোনটা ছাড়ল তিতিরমাথাটা ধরে গেছে। কি করে যে এত বকতে পারে স্বয়ং ভগবানও বোধহয় জানে না। আজ সারাদিনে কলেজে কি হয়েছে তার খুঁটিনাটি সমস্ত তথ্য জানাল এক এক করে। অথচ একবারও জানতে চাইল না কেন ও আজ কলেজ যায়নি। এক্কেবারে এক নম্বরের পাগলী একটা! আর এই কারণেই ওকে এত ভালো লাগে ওর। তিতির নিজের মতো বক বক করে যায়। আর ও বাধ্য শ্রোতার মত শুনে যায় চুপচাপ। আজও ফোন ধরে একতরফাই বক বক করে গেল তিতিরও কেবল ‘হুঁ’, ‘হাঁ’, ‘আচ্ছা’, ‘ঠিক আছে’ ছাড়া বিশেষ কিছু বলল না। আসলে বলার সুযোগই পেল না। তিতির যদি একবার বকতে শুরু করে, তাহলে তাকে থামানো এককথায় দুঃসাধ্য ব্যাপার। শুধু যে বকতে পারে তা নয়, মেয়েটা যাকে বলে এককথায় আনপ্রেডিক্টেবল। কখন কি বলবে, আর কখন কি করবে তার কোনো ঠিক নাই। এই যেমন আগের সপ্তাহে দুপুরে ক্লাস শেষ করে কলেজ থেকে বেরিয়েছে দুজনে। হঠাৎ রণরণে দুপুরবেলায় তিতির বলল, “চ্ কোথাও একটা বসে চা খেয়ে আসি।” ও কপাল কুঁচকে বলেছিল, “চা!? এই দুপুরবেলায়?”

-  “কেন? কোন বইয়ে লেখা আছে যে দুপুর বেলায় চা খেতে নেই।” গলার স্বরেতেই বোঝা গেল কথা বাড়ালে সেটা ঝগড়ার পর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারে। সেই রিস্কটা একদমই না নিয়ে ও বোঝানোর সুরে বলল,
-  “তা নয়। আমি বলতে চাইছি এই দুপুর বেলায় চা না খেয়ে চল্ ঠাণ্ডা খাই।”

-  “কেন, এখন চা খেলে কি হবে? আর তাছাড়া আমার যখন চা খেতে ইচ্ছে হচ্ছে তখন চা-ই খাবো। শুধু শুধু ঠাণ্ডা খেতে যাবো কেন? আমার এখন চা খেতে ইচ্ছে করছে, চা-ই খাবো। তোর ঠাণ্ডা খাওয়ার ইচ্ছে হলে, তুই ঠাণ্ডা খা। আমাকে খেতে বলছিস কেন?” তিতিরের কথা শুনেই ও বুঝতে পারল ও মহা ভুল করে ফেলেছে। ও তাড়াতাড়ি হাত জোড় করে বলল, “আমার ভুল হয়ে গেছে, ক্ষমা করে দে। তুইও চা খা। আমিও চা-ই খাবো। চ্।”

ওদের ‘তুমি’ সম্বোধনটা সেই প্রথম দিনের জন্যই ছিল। ‘তুই’ টা ঠিক তার পরের দিন থেকেই শুরু হয়ে যায়। শুরুটা অবশ্য তিতিরই করেছিল। তারপর তার দেখাদেখি ও-ও ‘তুই’ বলতে শুরু করে। প্রায় ওরই বয়সী একটা মেয়েকে ‘তুই’ করে কথা বলতে কেমন যেন অস্বস্তি হত প্রথম প্রথম, কিন্তু ধীরে ধীরে তা ঠিক হয়ে যায়। যাইহোক সেদিন কিন্তু এই চায়েতেই সব ঘটনা শেষ হয়ে যায় না। বরং শুরু হয় বলা যেতে পারে। ওদের কলেজের ঠিক উল্টো দিকের চায়ের দোকানটায় গিয়ে বসল ওরা দুজনে। টিফিন টাইমে সামান্য হলেও ভীড় ছিল। ও গিয়ে দুটো চা আর টোস্টের ওর্ডার দিল। প্রথমে দিয়ে গেল টোস্ট। তারপর চা। ধোঁয়াওঠা, জিভ-জ্বলানো নির্দ্বিধায় দুটো মাঝারী আকারের চুমুক দিয়ে বলল, “বাঃ। বেশ করেছে তো চা-খানা। টোস্টটাও মন্দ করেনি। এবার থেকে দুপুরে এখানেই চা আর টোস্ট খাবো।”

-  “কেন? তুই তো রোজ টিফিন আনিস।” সাবধানে নিজের কাপে চুমুক দিয়ে বলল।

-  “কাল থেকে আর আনবো না। মাকে বারণ করে দেবো। আমি এখন স্কুলে পড়ি নাকি, যে প্রতিদিন ব্যাগে করে বয়ে টিফিন আনবো?” দিব্যি গরম চায়ে চুমুক দিতে দিতে বলল তিতির

-  “প্রতিদিন এই বাটার টোস্ট খেলে কি হবে জানিস?” ও চায়ে আরেকটা চুমুক দিয়ে বলল।

-  “থাক। তোর ঐ বস্তাপচা ফিটনেস জ্ঞান দিতে আসিস না আমায়। আমি বেশ আছি আমার ফ্যাট নিয়ে।” ট্রাফিক সার্জেনের মতো ওকে হাত দেখিয়ে থামিয়ে দিয়ে বেশ সিরিয়াস গলায় বলল তিতিরওর রোগা শরীরটার দিকে তাকিয়ে ও হেসে ফেলল। ওকে হাসতে দেখেই তিতির বলল, “অ্যাই, তুই হাসলি কেন রে?”

-  “এমনি।” এই রে, হেসে ভুল করে ফেলেছে। এবার যাহোক কিছু একটা বলে ম্যানেজ করতে হবে। তা নাহলে কপালে দুঃখ আছে।

-  “এমনি এমনি কেউ হাসে নাকি? তুই কি পাগল?” তিতির জিজ্ঞাসা করল।

-  “আরে, সব কথার কি মানে থাকে নাকি? আমি এমনিই হাসলাম।” ও বলল ভয়ে ভয়ে। এরপর তিতির আর কিছু বলল না বটে, তবে ওর মুখের দিকে কিছুক্ষণ একদৃষ্টে তাকিয়ে রইল। তারপর চা আর টোস্ট গলাধঃকরণ করে বলল, “দুটো সিগারেট নে তো।” চা-টা সটান ওর শ্বাসনালীতে গিয়ে আটকাল। আর তাতেই বিষম। সামান্য কেশে নিজেকে সামলে নিয়ে জিজ্ঞাসা করল, “সিগারেট দিয়ে কি হবে?”

-  “সিগারেট দিয়ে কি হয়? খাবো।” নির্দ্বিধায় বলল তিতির

-  “তুই সিগারেট খাবি?” ও জিজ্ঞাসা করল।

-  “কেন? খেতে পারি না? মেয়ে বলে আমি সিগারেট খেতে পারি না?”

-  “আমি তা বলিনি।”

-  “তাহলে কি বলছিস?”

-  “আমি বলছি, তুই আগে কখনও সিগারেট খেয়েছিস?”

-  “না। তা খাইনি। তবে আজকে খাবো। তুই কেন।”

ও আর কথা বাড়াল না। ওর মাথায় যখন ভূত চেপেছে। তখন খেয়েই ছাড়বে। অগত্যা ও দুটো সিগারেটও কিনল। ও বুবলাকে দেখেছে লুকিয়ে লুকিয়ে সিগারেট খেতে। অবশ্য মাকে লুকিয়ে। মা জানতে পারলে কেলেংকারী কান্ড হয়ে যাবে। ও মাকে কিছু বলেনি এই বিষয়ে। তবে ও যা ভয় পেয়েছিল তাইই হল। সিগারেটটা ধরিয়ে প্রথমেই একটা জোরে টান দিল তিতিরআর অভ্যেস না থাকলে যা হয়, ধোঁয়া সোজা ফুসফুসে। বিষম। কাশি। চোখে জল। ঠাণ্ডা হওয়ার পরে ও বলল, “দেখলি, এই কারণেই তোকে মানা করেছিলাম। তুই শুনলি না। বেশি পাকামো করলে যা হয়।” ও ভেবেছিল তিতির হয়তো রেগে যাবে ওর কথা শুনে। কিন্তু তা হল না। চোখে জল নিয়েই ও মুচকি হাসল। তারপর হাতের আধপোড়া সিগারেটটা ফেলে দিয়ে বলল, “আমিও জানতাম খেতে পারবো না। কেবল টেস্ট করার জন্য খেলাম একবার। তবে এরকম অখাদ্য খেতে হবে জানলে খেতাম না।” তারপর একটু থেমে ওর দিকে তাকিয়ে আবার মুচকি হেসে বলল, “এর থেকে চুমু খাওয়া অনেক ভালো।” তারপর আবার একটু থেমে তিতির আবার বলল, “তুই কখনো চুমু খেয়েছিস?”

 
সারাদিন অপেক্ষা করার পরে যখন লিলিথের মেসেজটা এল তখন রাত ন’টা পেরিয়ে গেছে। ওর Are you Bengali” এর উত্তরে লিলিথ লিখে পাঠিয়েছিল, “Yes. But Why?” এই উত্তরটা দেখে ওর ভালোই লেগেছিল। ওর মনে হয়েছিল এই প্রোফাইলটা কোনো বাঙ্গালী মেয়েরই হবে। সেটা মিলে গেছে দেখে ওর ভালোই লাগল। ও নিশ্চিত ধীরে ধীরে ওর সব ধারণাগুলোই হয়তো মিলে যাবে। কিন্তু তার জন্য একদম তাড়াহুড়ো করা চলবে না। ও জবাবে লিখল, “তাহলে এখন থেকে বাংলায় কথা বলব। ইংরেজীতে কথা বলে ঠিক পোষাচ্ছে না।” ফিরতি উত্তরটা আসতে একটু দেরী হল। “আপনিও বাঙ্গালী?” ও এবার একটু ঘুরিয়ে উত্তর লিখল, “কলকাতায় থাকি। তাহলে তো বাঙ্গালী হবোই। তাই না?”

-  “তার কোনো মানে নেই। কলকাতায় অনেক অবাঙ্গালীরা থাকে। তারা জন্ম থেকেই এখানে থাকে। তাদের অনেকের বাঙলা আমাদের থেকে অনেক বেশী ভালো।” মেয়েটা বেশ গুছিয়ে কথা বলতে পারে তো। এর সঙ্গে কথা বলে শান্তি পাওয়া যাবে।

-  “তা আপনি কী? বাঙ্গালী? নাকী অবাঙ্গালী?” ও জিজ্ঞাসা করল।

-  “আপনার কী মনে হয়?” জবাব উড়ে এল ওপাশ থেকে। মেয়েরা সোজা কথার সোজা উত্তর দিতে পারে না কেন কে জানে।

-  “আমার অনেক কিছুই মনে হয় আপনার সম্পর্কে।” রহস্যের গন্ধ মাখিয়ে উত্তর দিল।

-  “কিরকম?”

-  “সবই কি একেবারে জেনে যাবেন? জানাবো। কিন্তু পরে। একটু একটু করে।” মুচকি হেসে জবাবটা টাইপ করল।

-  “আপনি নিশ্চিত যে, আমি আপনার সাথে এইভাবে কথা বলবো প্রতিদিন?” প্রশ্নটা পড়ে ও আরো একবার মুচকি হাসল।

-  “উত্তরটা আপনি নিজেই দিয়ে দিয়েছেন। আমার দেওয়ার আর প্রয়োজন নেই।”

-  “আপনি খুবই স্মার্ট। তাতে কোনো সন্দেহ নেই।” জবাব এল।

-  “ধন্যবাদ। তবে এই কথাটা এই প্রথম আপনিই বললেন।”

-  “কেন? কেউ বলেনি এর আগে?” জবাব এলো সঙ্গে সঙ্গেই।

-  “না। কেউ বলেনি। আপনিই প্রথম।”

-  “আপনার গার্লফ্রেন্ডও বলেনি?” প্রশ্নটা তীরের মত এসে বিঁধল।

-  “আপনি কি নিশ্চিত যে আমার গার্লফ্রেন্ড আছে?”

-  “কেন? নেই?” মনে হল যেন একটু হলেও ল্যাজে খেলানোর চেষ্টা করছে ওকে। এটা দেখেও ওর ভালো লাগল।
-  “আপনার কি মনে হয়?” এবার ও-ও ল্যাজে খেলানোর চেষ্টা করল।

-  “আমারও আপনার সম্পর্কে অনেক কিছুই মনে হয়। কিন্তু এখন বলব না। পরে বলব। একটু একটু করে।” লেখাটা পড়ে ওর হাসিটা একটু চওড়া হল।

-  “আচ্ছা বেশ। শোধবোধ।”

-  “বলছেন?”

-  “বলছি।”

-  “আচ্ছা, আপনি এই অ্যাপে এসেছেন কেন?” হঠাৎ এই প্রশ্নটা মেয়েটা কেন করল সেটা ও বুঝতে পারল না।

-  “মানে?”

-  “মানে, আপনি এই অ্যাপে কেন এসেছেন? আপনার তো গার্লফ্রেন্ড আছে? তাহলে?”

-  “আমি কখন বললাম আছে?”

-  “আপনি বলেননি। কিন্তু আমি বুঝতে পেরেছি। কিন্তু এইটা বুঝতে পারছি না, আপনি এখানে কেন এসেছেন?”

-  “আপনি কেন এসেছেন?” পাল্টা প্রশ্ন করল ও।

-  “প্রশ্নের পাল্টা প্রশ্ন করতে নেই। আগে আপনি বলুন, তারপর আমি বলছি।” জেদী, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

-  “আচ্ছা বেশ। বলছি। হ্যাঁ। আমার গার্লফ্রেণ্ড আছে। তবুও আমি এই অ্যাপে এসেছি। বন্ধুত্ব করতে।” ও কিছুটা হলেও সত্যি লিখল।

-  “বুঝলাম না। একবার বলছেন আপনার গার্লফ্রেণ্ড আছে। আবার বলছেন এখানে এসেছেন বন্ধুত্ব করতে?” ওর কথার প্যাঁচটা কিন্তু সে সহজেই ধরে ফেলেছে। বুদ্ধিমতি তাতে সন্দেহ নেই। আর আন্ডারএস্টিমেট করাটা ঠিক হবে না।

-  “হ্যাঁ। কেন? গার্লফ্রেন্ড থাকলে অন্যের সাথে বন্ধুত্ব করা যায় না?”

-  “কে বলল যায় না? যায়। তবে এরকম অ্যাপে নয়, নিশ্চয়।”

-  “কেন? এই অ্যাপে কি খারাপ আছে?”

-  “আপনি জানেন না, কি খারাপ আছে?”

-  “সবই কি আর খারাপ? আপনি তো ভালো।” সামান্য হলেও ফ্লার্ট করার চেষ্টা করল ও।

-  “আপনি নিশ্চিত আমি ভালো? বাকীদের মতো নই?”

-  “আপনার সাথে কথা বলে তো তাইই মনে হচ্ছে। যাক ছাড়ুন। আপনার সম্পর্কে কিছু বলুন।”

-  “কি বলবো?”

-  “আপনি কেমন? কি করেন? ইত্যাদি।”

-  “আমি একটি মেয়ে। আপাতত কিছুই করি না। আপনার মতো আমিও বন্ধুত্ব করতে এখানে এসেছি। দেখুন, প্রথমেই আপনার সাথে বন্ধুত্ব হয়ে গেল।”

-  “আপনার বিয়ে হয়েছে?” প্রশ্নটা ও ইচ্ছা করেই করল।

-  “না। এখনও হয়নি।” উত্তরটা প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই এল ওপাশ থেকে।

-  “আচ্ছা। কেমন ছেলে পছন্দ আপনার?”

-  “যদি বলি আপনার মতো?” মজা করল কিনা বোঝা গেল না।

-  “আপনার কি বয়ফ্রেন্ড আছে?”

-  “যদি বলি নেই, তাহলে কি করবেন?”

-  “কিছুই করব না।”

-  “আপনি আসলে ভীতু।” মজা করে বলল কিনা বোঝা গেল না।

-  “ভীতু কেন?”

-  “আমার বয়ফ্রেন্ড নেই জেনেও আপনি কিছু করতে চাইছেন না। তার মানে আপনি আপনার গার্লফ্রেন্ডকে ভয় পান।”

-  “হতে পারে। কিন্তু আমি আর কি করতে পারি বলুন। আপনি কে, সেটাই তো জানি না।”

-  “জানলে কি করবেন?”

-  “কি করবো মানে?”

-  “মানে, ধরুন যদি বলি, এখন আমি বাড়িতে একা আছি। সঙ্গে কেউ নেই। শুধু আমি। আপনাকে আমি আমার বাড়ির ঠিকানা দিলাম, আপনি আসবেন?” কি বলতে চাইছে, ও বুঝতে পারল না। কথাগুলো কি সে মজা করে বলছে, নাকি ইচ্ছে করে, সেটাও ও বুঝতে পারল না।

-  “সেটা নির্ভর করছে আপনার উপর। আপনি চাইলে আমি যেতেই পারি।” ও-ও কথা চালিয়ে যেতে লাগল।

-  “বেশ। ধরুন। আপনি কলিংবেল বাজালেন। আমি এসে দরজা খুললাম। দরজা খুলতে আপনি দেখলেন...” কথাটা অসম্পূর্ণ রেখে মেসেজটা পাঠিয়ে দিয়েছে ওপাশ থেকে।

-  “কি দেখলাম?” অধীর আগ্রহে ও জিজ্ঞাসা করল।

-  “এখন থাক। পরে বলব, কি দেখলেন।”
 
হঠাৎই প্রোফাইলটা ইনঅ্যাকটিভ হয়ে গেল। ফোনের স্ক্রিণের দিকে তাকিয়ে দেখল ইতিমধ্যে দশটা পেরিয়ে গেছে। এরইমধ্যে এতটা সময় যে কিভাবে পেরিয়ে গেল সেটা ও বুঝতেই পারেনি। যাই হোক। মেয়েটা বুদ্ধিমতি, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এই কথাগুলো ওকে যে পরীক্ষা করার জন্যই করেছে। তাতেও সন্দেহ নেই। এর সাথে একটু হলেও মেপে কথা বলতে হবে।
 
ফোনের স্ক্রিণে সময় দেখাচ্ছে দুটো বেজে বারো মিনিট। এত রাত অবধি ও এর আগে জেগে থাকেনি। ইদানিং জাগছে। মা জানলে কুরুক্ষেত্র হয়ে যাবে। যাই হোক, ও গতকালও জেগেছিল। আর আজও জেগে আছে। গতকালের ব্যাপারটা অবশ্য আলাদা ছিল। আজকের ব্যাপারটাও আলাদা। যেমন আজকের জেগে থাকার কারণ হচ্ছে অবশ্যই ঐ অ্যাপ। আজই সন্ধ্যেবেলায় লিলিথের সাথে চ্যাট করেছে। আর এখন? এখন চ্যাট করছে অ্যাফ্রোডাইটের সাথে। এত রাতে ওকে অ্যাকটিভ দেখে ও অবাকই হয়ে গেছিল। ও সরাসরি তার চ্যাটবক্সে লিখে পাঠাল, “এত রাতে জেগে আছেন?” উত্তর এল, “তুমিও তো জেগে আছো?” ওর ‘আপনি’র বদলে যে ওপাশ থেকে ‘তুমি’তে উত্তর এল সেটা ওর নজর এড়াল না। ও-ও তার মতই ‘তুমি’তে প্রবেশ করল। “আমার কথা বাদ দাও। তুমি কেন জেগে আছো, সেটা বলো।”

-  “যদি বলি, তোমার সঙ্গেই কথা বলবো বলে, জেগে আছি, তাহলে কি করবে?” জবাবটা যে অতি ঝাঁঝালো, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

-  “বিশ্বাস করব না।”

-  “কেন বিশ্বাস করবে না?”

-  “তুমি আমার আগেই অ্যাকটিভ ছিলে। আমি পরে হয়েছি। তাই।”

-  “আমি তোমার জন্যই অপেক্ষা করছিলাম।”

-  “তুমি জানতে, আমি এই সময় আসবো?”

-  “জানতাম বলব না। তবে মনে হয়েছিল। তোমাদের মত ছেলেরা রাত জেগেই থাকে।” কথাটা খট করে কানে লাগল।

-  “তুমি কি করছো?” কথা পাল্টে ও জিজ্ঞাসা করল।

-  “শুয়ে শুয়ে তোমার সাথে চ্যাট করছি। তুমি কি করছো?” চটজলদি উত্তর এল।

-  “তোমার সাথে আড্ডা মারবার চেষ্টা করছি।”

-  “তাহলে চলো। গল্প করা যাক। আগে তোমার বিষয়ে আমাকে কিছু বলো। তুমি কি করো। কোথায় থাকো। পড়াশোনা করো নাকি। ইত্যাদি।” উফ! এই মেয়ে তো দেখছি মহা পাকা! যেন ওর গার্জেন! এসব কথা এই অ্যাপে কেউ জিজ্ঞাসা করে নাকি? জুতসই একটা উত্তর ভেবে নিয়ে ফোনে টাইপ করতে শুরু করল আয়ুষ।
[Image: 20240303-191414.png]
[+] 3 users Like রতিদেবী's post
Like Reply
#78
বরাবরের মতো খুব সুন্দর
Like Reply
#79
খুব সুন্দর হচ্ছে, চালিয়ে যাও।
Like Reply
#80
চলতে থাকুক
Like Reply




Users browsing this thread: samss400, 1 Guest(s)