21-02-2024, 11:17 AM
Ekhane Evan er kono sexual appeal ache? Thakle valo hoy choto holeo oke nie aktu khela jete e pare
Adultery অন্তর্বর্তী শূন্যতা
|
21-02-2024, 11:17 AM
Ekhane Evan er kono sexual appeal ache? Thakle valo hoy choto holeo oke nie aktu khela jete e pare
21-02-2024, 12:35 PM
ভালো কোয়ালিটির লেখা খুব কম পাচ্ছি আজকাল, আপনার লেখা খুবই সুন্দর হচ্ছে। পরবর্তী আপড়এটএর অপেক্ষায় থাকলাম। আসা করি গল্পটা শেষ করবেন।
লাইক রেপু দিলাম ।
24-02-2024, 07:13 PM
ইন্দুমতি – চলন্ত বাসের জানালা দিয়ে পড়ন্ত বিকেলের মরা আলোটা এসে পড়েছিল ইন্দুমতির মুখের বাঁদিকটায়। কপালে জমে ওঠা বিন্দু বিন্দু ঘামগুলো ঐ আলোর জন্য নাকি অন্য কোনো কারণে সেটা অবশ্য ওর মুখ দেখে বোঝার উপায় নেই। হাতের ব্যাগটা থেকে রুমালটা বের করে ধীরে সুস্থে মুখটা একবার মুছে নিল ও। তারপর সেটাকে আবার যথাস্থানে রেখে দিয়ে বাসের সীটটায় গা এলিয়ে দিয়ে আরাম করে বসে চোখ বুজল। উফ! সারাটা দিন গেলো বটে একটা! কেমন যেন ক্লান্তি বোধ করছে শরীর আর মনের ভিতরে। এদের দুজনেরই বা দোষ কী! সারাটা দিন জুড়ে কম ধকল গেলো ওদের উপরে। সেই সকাল থেকে শুরু হয়েছে দৌড়োদৌড়ি। আজকেই হঠাৎ করে বুবান অর্থাৎ ওর ছেলে দেরী করে ঘুম থেকে উঠেছে। অন্যদের কাছে হয়তো এটা নিতান্তই একটা ছোট্ট ঘটনা হতে পারে। এমন কি তার বরের কাছেও। কিন্তু তার কাছে একদমই নয়। মেয়েকে সে একেবারেই মানুষ করতে পারেনি। যাকে বলে হোপলেস। কিন্তু ছেলেকে সে ছোটোবেলা থেকেই নিজের মনের মতো করে বড়ো করে তুলেছে। অন্তত করে তোলার চেষ্টা করেছে। চেষ্টার সে কসুর করেনি। তার মতে একজন মানুষ তখনই সাকসেসফুল হতে পারে, যখন সে জীবনে ডিসিপ্লিনড হয়। সে ছেলেকে ডিসিপ্লিনড করে তোলার সর্বত চেষ্টা করে গেছে। এবং এখনও করে যাচ্ছে। আজকালকার ছেলেমেয়েদের তো সে দেখতে পাচ্ছে নিজের চোখের সামনেই। কি অধঃপতনেই না তারা যেতে শুরু করেছে। এমনকি নিজের পেটের মেয়েটাও তো সেই রাস্তায় হাঁটতে শুরু করে দিয়েছে। তাই তার জেদ ছেলেকে সে কিছুতেই যেতে দেবে না। তাই আজকের সকালের ঘটনা কিছুটা হলেও তার মনে দাগ কেটে গেছে। তাহলে কি তার ছেলেও তার নাগালের বাইরে যাচ্ছে ধীরে ধীরে? কথাটা ভাবতেই নিজের মনেই শিউড়ে উঠল ইন্দুমতী।
- “ম্যাডাম. ভাড়াটা দিন।” কন্ডাক্টরের ডাকে বর্তমানে ফিরে এল ও। চোখ খুলে দেখল আধবয়সী লোকটা ওর দিকে হাত বাড়িয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ক্ষয়াটে চেহারার লোকটাকে প্রতিদিনই দেখতে পায় ও। প্রতিদিনই কলেজ থেকে এই বাসে করেই বাড়ি ফেরে। রোজকার রুটিন বলা যেতে পারে। অবশ্য যেদিন কাজের চাপে বা অন্য কারণে দেরী হয়ে গেলে আলাদা কথা। কিন্তু তা না হলে ও এই বাসেতেই বাড়ি ফেরে ডেলী। নিজের রোজকার রুটিনটা চট করে ভাঙ্গতে চায় না ও। কেমন যেন কমফোর্টেবল ফিল করে না। আর তাই নিয়ে ওর বর আর মেয়ে ওকে নিয়ে মজা করে। ঠাট্টা করে। কিন্তু ও সেসব গায়ে মাখে না। কারণ ওর কাছে ডিসিপ্লিনটাই শেষ কথা। ও চোখ খুলতেই কন্ডাক্টারটা আবার বলল, “ম্যাডাম, ভাড়াটা?” - “দিচ্ছি।” বলে পার্স থেকে কুড়িটা টাকা বের করে লোকটার হাতে দিয়ে দিল। টাকাটা নিয়ে অকারণেই নিজের পান আর গুটখা খাওয়া লাল দাঁতগুলো বের করে একটা দেঁতো হাসি হেসে পিছনের দিকে চলে গেল লোকটা। সে প্রতিদিনই এই হাসিটা হাসে ওর দিকে চেয়ে। হয়তো আলতো সৌজন্যের হাসি, কিন্তু হাসিটা দেখলেই ওর কেমন যেন গাটা গুলিয়ে ওঠে। হয়তো ওর ক্ষয়াটে গালে না কামানো কয়েকদিনের খোঁচা খোঁচা সাদাকালো দাড়িগুলো দেখে। কিম্বা ওর বিশ্রী দর্শন লালাভ দাঁতগুলো দেখে। কিম্বা পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় গায়ের তীব্র ঘামের গন্ধের কারণে। কারণ যাই হোক, লোকটাকে দেখে ওর একদমই ভালো লাগে না। অথচ লোকটা কোনোদিন ওর সঙ্গে মিসবিহেভ করেনি। বরং ও কলেজে পড়ায় শুনে ওকে সম্মান দিয়ে ‘ম্যাডাম’ বলে ডাকে। তবুও ওর লোকটাকে একদমই পছন্দ হয় না। কেমন যেন একটু গায়ে পড়া। আর এইরকম গায়ে পড়ে লোক ওর একদমই অপছন্দের। সিটের ব্যাকরেস্টে শরীরের সমস্ত ভারটা ছেড়ে দিয়ে আরামে চোখ বুজল ইন্দুমতি। ঘর থেকে বের হওয়ার পর থেকে মনটা কেমন যেন টক হয়ে গেছিল ওর। কলেজে পৌঁছাবার পরেও সেই ভাবটা অনেকক্ষণ পর্যন্ত কাটেনি। পর পর দুটো ক্লাস নেওয়ার পর স্টাফরুমে ঢুকে টেবিলের উপরে হাতের বইগুলোকে সশব্দে আছড়ে ফেলে ও বলল, “আজকালকার ছেলেমেয়েগুলো যেন উচ্ছন্নে যাওয়ার জন্য পা বাড়িয়ে বসে আছে।” পাশের চেয়ারে বসে থাকা ফিলোসফির প্রফেসর এবং ওর বন্ধু তন্নিষ্ঠা ম্যাডাম হাতের ম্যাগাজিনটাকে নামিয়ে ওর দিকে মৃদু হেসে বলল, “কেন, আজকে আবার ক্লাসে কি হলো?” ওর পাশের খালি চেয়ারটায় ধপাস করে বসে ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলল, “হেসো না তো, গা জ্বলে যাচ্ছে। এমনিতেই সকাল থেকে মাথাটা গরম হয়ে আছে।” হয়তো ওর গলার স্বরে বা বলার ধরণে তন্নিষ্ঠা বুঝতে পারল সত্যিই ওর মেজাজটা খারাপ আছে। সঙ্গে সঙ্গে ও সিরিয়াস কণ্ঠে বলল, “কেন, কি হয়েছে? তবে তার আগে একটু জল খাও। পুরো ঘেমে গেছো দেখছি।” ইন্দুমতি নিজের ব্যাগ থেকে জলের বোতলটা বের করে ঢক ঢক করে বেশ খানিকটা জল খেল। তারপর রুমাল দিয়ে মুখ, ঘাড়, গলা ভালো করে মুছে নিয়ে তন্নিষ্ঠার দিকে তাকিয়ে বলল, “কি বলবো বলো তো? একটা কারণ হলে হয়, এখানে হাজারটা কারণ।” - “প্রথমে একটু শান্ত হয়ে পাখার তলায় বসো। তারপর ঠাণ্ডা মাথায় এক এক করে বলো, কি হয়েছে।” - “সে সব বাদ দাও। তোমাকে যেটা বলেছিলাম করেছো?” - “কি?” অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করল তন্নিষ্ঠা। - “কি মানে? কালকেই তো তোমার সঙ্গে কথা হলো!! তুমি বললে ব্যাপারটা জেনে আমায় বলবে!!! আর আজকেই ভুলে গেলে?” ততোধিক আশ্চর্য হয়ে ইন্দুমতি বলল। - “ওহ, কালকের ঐ ঘটনাটার কথা বলছো? তোমার চিন্তা নেই। আমি কালকেই মেয়েটির সঙ্গে কথা বলেছিলাম। ছেলেটার সঙ্গেও বলেছিলাম। অবশ্য আলাদা আলাদা করে...” - “কি বলল ওরা?” তন্নিষ্ঠাকে একপ্রকার থামিয়ে দিয়ে জিজ্ঞাসা করল ও। - “বলছি। তবে আগেই জানিয়ে রাখি ওরা আমাকে শর্ত দিয়েছে এই ব্যাপারটা নিয়ে আমি যেন তোমার বা অন্য কারোর সাথে কোনোরকম আলোচনা না করি।” - “শর্ত!! ওরা শর্ত দেওয়ার কে? তুমি এক্ষুণি চলো আমার সঙ্গে।” - “কোথায়?” - “কোথায় আবার? প্রিন্সিপালের কাছে। ওনাকে এই বিষয়টা জানাতে হবে।” - “তোমার কি মনে হয়, তাতে ব্যাপারটা মিটবে?” - “কেন মিটবে না?” - “তার কারণ, আমরা যদি প্রিন্সিপালের কাছে যাই, এবং ওনাকে বিষয়টা জানাই, তাহলে ব্যাপারটা আর তোমার আমার মধ্যে লুকানো থাকবে না। আর একবার জানাজানি হলেই আমরা এইটা আর জানতে পারবো না, এই বিষয়টার মধ্যে আর কে কে বা কি কি লুকিয়ে আছে।” শান্ত স্বরে ওকে তামিয়ে দিয়ে বলল তন্নিষ্ঠা। তন্নিষ্ঠার কথায় যুক্তি আছে বুঝতে পেরে থেমে গেল ইন্দুমতি। উত্তেজনায় ও আবার ঘেমে উঠেছে বুঝতে পেরে রুমাল দিয়ে আবার ঘামগুলোকে মুছতে মুছতে বলল, “কি কি জানতে পেরেছো বলো আমায়।” - “এইটুকুই যে, অ্যাপটা নেটে সহজেই পাওয়া যায়। যে কেউ সেটাকে ডাউনলোড করে ইন্সটল করতে পারে। ওরাও তাইই করেছে। তুমি আমিও করতে পারি। যে কেউ এটা করতে পারে।” - “কিন্তু এটা তো বেআইনী!” - “কথাটা তুমি নিতান্তই বাচ্চা মেয়ের মত বললে।” মুচকি হেসে বলল তন্নিষ্ঠা। - “কেন?” - “যে জিনিসটা নেটে সহজেই অ্যাভেইলেবল সেটা বেআইনী হয় কি করে? আর হলেও বা সেটাকে আটকাবে কি করে? তুমি কি ভিপিএনের কথা শোনোনি?” - “শুনেছি।” তেতোমুখ করে বলল ও। তারপর একটু থেমে বলল, “আর কি জানতে পারলে?” - “প্রথমত ওরা স্বীকার করল যে তোমার ক্লাসে ওটা ব্যবহার করা ওদের উচিত হয়নি। এর জন্য ওরা ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছে। এবং বারবার আমার কাছে অনুরোধ করেছে যেনো এই ব্যাপারটা নিয়ে আমি বেশি জলঘোলা না করি। প্রিন্সিপাল বা ওদের গার্জেন যেন জানতে না পারে।” - “আর?” - “আর, ওর এটাও বলল যে, কলেজের অনেক ছেলেমেয়েই নাকি এই অ্যাপটা ইউজ করে।” - “মাই গড! এদের কিস্সু হবে না। সামান্য কলেজে পড়ে, আঠারো, উনিশ বছর বয়স সব। এখনো সামনে গোটা জীবনটা বাকী... ছিঃ ছিঃ ছিঃ!! কি নোংরামী।” বলে কিছুক্ষণ চুপ করে বসে রইল ইন্দুমতি। তারপর হঠাৎ মুখ তুলে তন্নিষ্ঠার দিকে তাকিয়ে বলল, “অ্যাপটার নাম জানতে পেরেছো?” তন্নিষ্ঠা বলল, “হ্যাঁ। ওরা আমাকে অ্যাপটার নাম বলেছে?” ইন্দু তাড়াতাড়ি ব্যাগ থেকে মোবাইলটা বের করে বলল, “অ্যাপের নামটা আমায় বলোতো...” ওর এই কর্মোদ্যম দেখে অবাক হয়ে গেল তন্নিষ্ঠা। ও অবাক হয়েই বলল, “কেন, তুমি অ্যাপটার নাম জেনে কি করবে?” - “আঃ বলোই না। একটা আইডিয়া এসেছে মাথায়।” বিরক্ত জড়ানো কণ্ঠে বলল ইন্দু। - “কি আইডিয়া?” - “বলছি, তার আগে আমায় অ্যাপটার নামটা তাড়াতাড়ি বলো। আমার ক্লাস আছে। তার আগেই সব করতে হবে।” ব্যস্ততার সুরে বলল ইন্দু। চোখ খুলে সোজা হয়ে বসল ইন্দুমতি। ব্যাগ থেকে ফোনটা বের করে হাতে নিল। তারপর আবার দোনামোনা করে সেটাকে ব্যাগে পুরে রেখে দিল। বাসে বসে এসব জিনিস না করাই ভালো হবে মনে করে ফোনটাকে রেখে দিল সে। উত্তেজনার বশে কিছু না করাই ভালো হবে। তার চেয়ে বরং ঠান্ডা মাথায় এসব কিছু করতে হবে। কথাটা ভেবেই ইন্দু জানালা দিয়ে বাইরে তাকালো। এখনো ওর স্টপেজ আসেনি। একটা স্টপেজ বাকী। কিন্তু ও সিট ছেড়ে উঠে পড়ল। তারপর বাসের গেটের দিকে এগিয়ে গেল। বাসটা সম্পূর্ণ গতিতে ছুটে চলেছে তার গন্তব্যের দিকে। গেটের কাছে আসতেই একটু বেটাল হয়ে গেল ও। কন্ডাক্টারটা দাঁড়িয়ে ছিল গেটের ঠিক মুখেই। ভীড়ও যে খুব একটা ছিল তা নয়। দুজন মাত্র দাঁড়িয়ে ছিল গেটের কাছে। হয়তো সামনের স্টপেজে নামবে। ইন্দু বেটাল হয়েই মাথার উপরের রডটাকে ধরতে গেল। কিন্তু হাতে ব্যাগ থাকায় তা পারল না। এবং তার ফলে ও আরো বেটাল হয়ে গেল। হয়তো ও মুখ থুবড়ে পড়েও যেতে পারত, কিন্তু পড়ল না। কারণ একজোড়া শক্ত হাত ওকে ধরে ফেলল। “আরে, আরে, ম্যাডেম, পড়ে যাবেন যে। ঠিক করে দাঁড়ান। আর আপনি এখন উঠে এলেন কেন। আপনার স্টপেজ এখনো আসেনি।” শতব্যস্ত হয়ে কন্ডাক্টারটা বলল। ইন্দু সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে প্রথমেই বুক থেকে খসে পড়া শাড়ির আঁচলটাকে আবার যথাস্থানে গুছিয়ে রাখল। তারপর কঠোর স্বরে বলল, “আমি এখানেই নামব।” ততক্ষণে ওর শরীর থেকে হাতজোড়া সরিয়ে নিয়ে লোকটা। উফ! লোকটার হাতদুটো কি শক্ত আর খড়খড়ে!! মনে হচ্ছে ওর শরীরটা জ্বলছে। “ও আচ্ছা।” বলে নির্লীপ্ত ভাবে আগের মত দাঁড়িয়ে পড়ল লোকটা। একটু পরেই স্টপেজ এল। বাকী লোকদুটোর সাথে ইন্দুও বাস থেকে নেমে পড়ল। এর আগে ও কখনও এমন করেনি। যদিও এমনটা নয় এই এলাকাটা ওর অচেনা। কিন্তু এর আগে ও কখনও এখানে নামেনি। এই আজ প্রথম নামল। ও নামার সাথে সাথেই বাসটা আবার আগের মত ঝড়ের গতিতে এগিয়ে গেল। ইন্দু পায়ে পায়ে বাসস্ট্যান্ড থেকে এগিয়ে গেল কিছুটা। দিনের আলো তখন একেবারেই মুছে গেছে। কালো কালো অন্ধকারটা চারিদিকে নেমে আসছে একটু একটু করে। রাস্তার লাইটগুলো জ্বলতে শুরু করে দিয়েছে। ইন্দু কাঁধের ব্যাগটা সামলে আরো কিছুটা এগিয়ে গেল। বাসস্ট্যান্ডটা ছাড়িয়ে একটু এগিয়ে যেতেই একটা গলির মতো রাস্তা পড়ল। চওড়া নয় বরং কিছুটা সরুই। বেশী কিছু চিন্তা না করেই সেই সরু গলিটায় ঢুকে পড়ল ও। কিছুটা দূর যেতেই বুঝতে পারল ভিতরটা বেশ অন্ধকার। চলা থামিয়ে ব্যাগ থেকে ফোনটা বের করল। তারপর ফোনের টর্চটা জ্বেলে আরো কিছুটা এগিয়ে গেল ও। দুপাশের বাড়ি থেকে নানান রকমের শব্দ আসছে। টিভির শব্দ। কথাবার্তার আওয়াজ। কোনো কোনো বাড়ি থেকে আবার শাঁখের শব্দও ওর কানে এল। আরো কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার পর একটা কোণা মত জায়গা দেখে ও দাঁড়াল। তারপর কাঁধের ব্যাগটাকে নামিয় রাখল মাটিতে। কাঁধটা টনটন করছে। একমূহুর্ত দাড়িয়ে চারপাশটা ভালো করে দেখে নিল ও। কেউ আসছে না তো? তারপর নিশ্চিন্ত হয়ে ফোনের স্ক্রিণটার দিকে তাকালো। দুপুরের পর থেকে একবারও অ্যাপটা খোলেনি। প্রথমে তন্নিষ্ঠার কথা কানেই তোলেনি সে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ঝোঁকের মাথায় কোনো ভুল সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে না তো? মনটা অল্পসময়ের জন্য হলেও দূর্বল হয়ে পড়ল। কিন্তু তারপরেই মনস্থির করে ফেলল ও। বুক ভরে লম্বা একটা নিঃশ্বাস নিল। তারপর অ্যাপটায় একটা আলতো চাপ দিল। নীলচে রঙের বৃত্তটা ঘুরতে শুরু করেছে কিন্তু ধীরে ধীরে। কেটে কেটে যাচ্ছে। হাতের ফোনের স্ক্রীণটার দিকে ভালো করে তাকিয়ে দেখল নেট কানেকশনটা কেটে গেছে। গলির এতটা ভিতরে আসার কারণেই হয়তো। মুখে একটা বিরক্তিসূচক শব্দ করে নির্জন কোণটা থেকে বেরিয়ে এল ও। তারপর কিছুটা পিছিয়ে এল গলির সরু পথটা ধরে। ও যেদিক থেকে এসেছিল সেইদিকে অল্প কিছুটা ফিরে আসতেই নেট কানেকশনটা আবার ফিরে এল ওর ফোনে। ও দেখল নীলচে বৃত্তটা আবার পূর্ণগতিতে ঘুরতে শুরু করে দিয়েছে। গলির ভিতরে হওয়ার কারণে এখানটা বেশ গরম। ওর গোটা শরীরটা ঘেমে উঠেছে ইতিমধ্যে। বড় বড় ঘামের ফোঁটা ঘাড় আর গলা বেয়ে ক্রমশ নীচের দিকে নামতে শুরু করে দিয়েছে। বিরক্তি লাগছে। শাড়ির আঁচলটা দিয়ে একবার গলা আর বুকটা মুছে নিল ও। তারপর আবার তাকাল ফোনটার স্ক্রিণের দিকে। নীলচে বৃত্তের ঘূর্ণণটা থেমে গিয়ে অ্যাপটা খুলে গেছে। যথাস্থানে ইউজার নেম আর পাসওয়ার্ডটা দিয়ে লগ ইন বোতামটায় আরো একটা চাপ দিল ও। প্রায় পূর্ণগতিতে নীলচে বৃত্তটা ঘুরতে শুরু করে দিয়েছে। অল্প ঘোরার পরেই বৃ্ত্তটা থেমে গিয়ে অ্যাপটা খুলে গেল। আবারও গরম লাগতে শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু আর সেইদিকে খেয়াল নেই। ঘাড়টা একপ্রকার ফোনের স্ক্রিণটার দিকে ঝুঁকিয়ে বাহ্যজ্ঞানশূণ্য হয়ে দ্রুতগতিতে আঙ্গুল চালাতে শুরু করল ইন্দুমতি।
25-02-2024, 12:19 AM
(This post was last modified: 25-02-2024, 12:28 AM by Henry. Edited 4 times in total. Edited 4 times in total.)
গল্প ভালো হচ্ছে। এমন ভালো গল্প পেলে আমাদের মত লেখকরাও লেখার আগ্রহ পায়। দেখা যাক ইন্দুমতির ক্লান্ত একঘেয়ে অন্তর্বর্তী শূন্য জীবনে নতুন আলো, নতুন করে মনের মত গড়তে পারার জন্য সন্তান আনতে পারেন কিনা জীর্ণ হতদরিদ্র বাস কন্ডাক্টর। বাড়িয়ে দিতে পারেন কিনা ভরসার শক্ত হাত। যদিও দিল্লি এখনো বহুত দূর। শুভেচ্ছা।
27-02-2024, 08:44 PM
খুব সুন্দর হচ্ছে, চালিয়ে যাও। পরবর্তী পর্বের সাগ্রহে অপেক্ষা করছি।
27-02-2024, 08:50 PM
সুনির্মল – সন্ধ্যের একটু পরে বাড়ি ফিরে ভদ্র বালকের মতো শোওয়ার ঘরে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করতে গেল ও। কিন্তু পারল না। পিছন থেকে রাইয়ের গলা শোনা গেল। “কি গো, যাচ্ছো কোথায়? টিফিন করবে না?” পিছন ফিরে দেখল বউ কিচেন থেকে মুখ বাড়িয়ে জিজ্ঞাসা করছে। ও কেবল ঘাড় নেড়ে জানালো করবে না। তারপরেই সুড়সুড় করে কেটে পড়ার মতলব করছিল, কিন্তু পারল না। তার কারণ দ্বিতীয় প্রশ্নবাণটা এসে ওর পিঠে বিঁধল। “কেন? টিফিন করবে না কেন? আজকে তোমার ফেভারিট ব্রেড পকোড়া করেছি। দুটো অন্তত খাও।”
- “ভাল লাগছে না। তুমি আর বাবান খাও। আমি খাবো না।” অনিচ্ছা সত্ত্বেও মুখ খুলতে বাধ্য হল। তাড়াতাড়ি এখান থেকে কেটে পড়াই ভালো। বিপদ ক্রমেই ঘনিয়ে আসছে। - “কেন খাবে না? শরীর খারাপ?” রাইয়ের গলাটা যেন আরো কিছুটা ওর দিকে এগিয়ে এল। বিপদ বুঝতে পেরে ও তাড়াতাড়ি ঘাড় নাড়ল। যার অর্থ হ্যাঁ বা না দুটোও হতে পারে। আবার কোনোটাই হতে পারে না। কিন্তু বিপদ এত সহজে যাওয়ার নয়। এত কপাল ওর নেই। - “কি হয়েছে। জ্বর? দেখি গাটা?” রাইয়ের গলা এখন একদম ওর পিছনে। ও একটু সরে যাওয়ার চেষ্টা করল। কিন্তু ফল হল উল্টো। ততক্ষণে রাইয়ের হাত ওর কপালে এসে ঠেকেছে। আর তাতেই যা হওয়ার তাই হল। রাই একটা মধ্যম চিৎকার করে বলল, “তুমি ভরসন্ধ্যেবেলায় ঐসব ছাইপাঁশ খেয়ে এসেছো?” ধরা পড়ে গেলে সব চোরেরই যেমন ‘আর করবো না, স্যার, এবারটা মাফ করে দিন’ ভাব হয়, ওরও তাইই হল। ও তাড়াতাড়ি রাইয়ের মুখের উপরে হাত রেখে বলল, “শশশ। চুপ! বাবান শুনতে পাবে।” রাই ছিটকে কিছুটা পিছিয়ে গেল। কিন্তু গলাটা একটু খাদে নামিয়ে বলল, “উমম, ছেলের জন্যে কত চিন্তা! ছাইপাঁশ গিয়ে এসে এখন ছেলের জন্যে চিন্তা করছেন উনি! হ্যাঁগো, তোমায় কতদিন বলেছি, ছেলেটা বড়ো হচ্ছে। সব বুঝতে শিখছে। এখন ওসব ছেড়ে দাও। নাহলে ও তোমাকে দেখে কি শিখবে? কিন্তু তোমার কোনো হুঁশ নেই? ভর সন্ধ্যেয় মাল খেয়ে বাড়ি ঢুকছো?!” ও এ কথার কোনো উত্তর দিল না। কেবল একবার আড়চোখে বিড়ালের মত করে ডাইনিংয়ের দেওয়াল ঘড়িটার দিকে তাকালো। আটটা বেজে বিয়াল্লিশ। একে নিশ্চয়ই ভরসন্ধ্যে বলা উচিত নয়। কিন্তু এখন রাইকে সেকথাটা বোঝানো ওর স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে ভেবে চুপ করে রইল। রাই থামার পাত্রী নয়। সে বলেই চলল, “তা যখন গিলেই এসেছো, তখন এখানে সংয়ের মত দাঁড়িয়ে রয়েছো কেন? ঘরে গিয়ে বসে থাকো। আজকে খবরদ্দার ঐ ঘর থেকে বের হবে না বলে দিচ্ছি। রাতের খাবার আমি ওখানেই দিয়ে আসবো। ছেলের কাছে এই অবস্থায় একদম আসবে না। যাও, তাড়াতাড়ি যাও। ছিঃ!” ওর মুখের উপরে একরাশ ঘেন্না ছিটিয়ে দিয়ে রাই দুমদুম শব্দে পা ফেলে কিচেনে ঢুকে গেল। ওদের বেডরুমে অ্যাটাচড বাথরুম নেই। তাই টয়লেট পেলে কোথায় যাবে সেকথা রাইকে ডেকে জিজ্ঞাসা করার সাহস আর হলনা ওর। জামাকাপড় ছেড়ে চোখেমুখে একটু জলের ঝাপটা দিতে আগের থেকে অনেকটাই ফ্রেশ লাগল। বিছানায় এসে শুয়ে রইল কিছুক্ষণ। তাপসের জন্য আজকে অনেকদিন পর রাইয়ের কাছে বকুনি খেতে হল ওকে। ‘শালা, কালকে একবার অফিস যাই। তারপর তোকে দেখাবো মজা।’ মনে মনে তাপসকে কিছুক্ষণ শাপশাপান্ত করে মনটা একটু হলেও হাল্কা মনে হল। তারপর কি মনে হতে বালিশের পাশ থেকে নিজের ফোনটা তুলে নিল। দেখল ন’টা বেজে ষোলো। কান পেতে শুনল ডাইনিং থেকে টিভি আওয়াজ ভেসে আসছে। এখন একঘন্টা নিশ্চিন্ত। রাই দুটো সিরিয়াল পর পর না দেখে টিভির সামনে থেকে উঠবে না। আর বাবান ওর পড়ার ঘরে অনলাইনে টিউশনিতে ব্যস্ত। বিছানা থেকে উঠে পা টিপটিপে দরজার কাছে এল। তারপর দরজাটা আলতো করে বন্ধ করে দিয়ে নিঃশব্দে ছিটকিনিটাকে তুলে দিয়ে আবার বিছানায় এসে বসল। ফোনটাকে হাতে তুলে নিয়ে একটু নিজের মনেই কিছু একটা ভাবল। তারপর লম্বা একটা নিঃশ্বাস ছেড়ে বুড়ো আঙুলের এক টোকায় অ্যাপটাকে চালু করল। সঙ্গে সঙ্গেই নীলচে রঙের বৃত্তটা ঘুরতে শুরু করে দিয়েছে। - “শালা, সত্যি করে বল্ তো, লাস্ট কবে বউকে করেছিস?” আচমকা তাপসের মুখে প্রশ্নটা শুনে বিষম খেল ও। খক খক করে কাশতে কাশতে হাতের রঙিন তরলের গ্লাসটাকে টেবিলের উপরে নামিয়ে রাখল। তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে বলল, “মানে?” - “মানে!? আহা নেকুচোদা! কোনটার মানে বুঝতে পারছো না, বাবু? বউ? নাকি করা? কোনটা?” মুখ ভেঙ্গিয়ে বলল তাপস। - “চুপ কর তো বাঞ্চোত। শালা কতদিন পর মাল খেতে বসেছি, এখানেও বউয়ের কথা তুলে দিলি তো নেশাটা চুদে।” গলায় কিছু বিরক্তি ঢেলে বলল ও। - “কেন রে শালা, বিয়েটা তো প্রেম করেই করেছিলিস। এখন কি হলো?” তাপস তবুও থামবার নয়। - “তুই কি চুপ করবি, নাকি মারবো একটা পোঁদে লাথি।” ওর ধাতানি খেয়ে অবশেষে মুখ বুজল তাপস। ওরা দুজনে কলেজের বন্ধু। আবার কোইন্সিডেন্সিয়ালি একই অফিসে কাজ করে। তাই ওদের বন্ধুত্বটা একটু বেশীই গাঢ়। বয়সটাও সমবয়সী। তবে ওর মনে আজও একটা খটকা রয়েছে। মনে হয় তাপসও রাইকে ভালোবাসত। কিন্তু বন্ধুর জন্যই হয়তো কোনোদিন মুখ ফুটে ওকে বলতে পারেনি। তা নাহলে শালা, আজও বিয়ে করল না কেন? কিন্তু এই কথাটা ও আজও তাপস বা রাইকে জিজ্ঞাসা করতে পারেনি। তাপস অনেকবার ওদের বাড়িতে গেছে। রাইও তাপসের বাড়িতে এসেছে বহুবার। ওরা দুজনে হেসে হেসে কথাও বলে। দুজন দুজনকে নাম ধরে ডাকে। ‘তুমি’ করে কথা বলে। রাইকে দেখে মনে হয়না তাপসের প্রতি আলাদা কোনো ফিলিংস আছে বলে। তাপসেরও আছে এটাও অবশ্য ও জোর গলায় বলতে পারবে না। কিন্তু কেন জানি, বিয়ের এতগুলো বছর কেটে যাওয়ার পরে, ছেলের বয়স দশ পূর্ণ হওয়ার পরেও একটা সন্দেহের কাঁটা মনে মধ্যে মাঝেমাঝেই খচখচ করে লাগে। ও ভাবে, রাই যদি ওকে বিয়ে না করে, তাপসকে করত, তাহলে কি ও আরেকটু বেশীই সুখে থাকত? যদিও অফিসে তাপস আর ওর পজিশন একই, মাইনেও উনিশ-বিশ প্রায় একই পায়। তবুও? একএকদিন রাত্রিবেলা বাবান ঘুমিয়ে পড়লে যখন ও আর রাই একসাথে ঘনিষ্ঠ হয়, তখন ভাবে এখন যদি ওর বদলে বিছানায় তাপস থাকত, তাহলে কি হত? তাপস কি ওর মত করেই রাইকে ভালবাসত? নাকি অন্য কিছু করত? যখন ও রাইয়ের বুকের গভীরে ঠোঁট ঠেকিয়ে চুষে নেওয়ার চেষ্টা করে ওর শরীরসুধা তখন ওর মনে প্রশ্ন জাগে তাপসও কি এইভাবেই রাইয়ের বুকের গভীরে মুখ নামাত? নিজেকে বিছানায় তাপস ভেবে রাইয়ের সঙ্গে খেলা করতে ওর ভালো লাগে। এই অভ্যেসটা গত কয়েকবছরে তৈরী হয়েছে ওর মনের মধ্যে। এখন বয়সের সঙ্গে সেটা পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলছে। এখন তো যখনই রাইয়ের ন্যাংটো শরীরটাকে নিজের শরীরের চাপে পিষ্ট করতে করতে ওর মধ্যে নিজেকে চালান করতে থাকে, ক্রমাগত তখন ও নিজেকে তাপস বলেই ভাবে। ও তখন আর সু নয়, তাপস হয়ে যায়। রাই হয়ে যায় ওর বন্ধুপত্নী। গোপন প্রেমিকা। যার সাথে ও লুকিয়ে লীলাখেলা খেলছে। পরকীয়ার নিষিদ্ধ খেলা। বিছানায় নিজেকে তাপস ভাবলেই তলপেটটা কেমন যেন শক্ত হয়ে যায় আগের থেকে। শরীরের সব রক্ত জমা হয় ওর তৃতীয় পায়ে। রাইয়ের পা দুটোকে নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে আওরিক শক্তিতে ক্রমাগত গোঁত্তা মারতে থাকে ও। থামার কোনো লক্ষণই থাকে না। তখন একটাই চিন্তা ওর মাথার মধ্যে ঘুরতে থাকে। রাইয়ের স্বামী মানে সু এসে যাওয়ার আগেই ওকে এই খেলাটা শেষ করতে হবে। কিন্তু এত সহজে খেলা শেষ হয় না। চলতেই থাকে। চলতেই থাকে। রাই যায় হাঁফিয়ে। শীৎকার গিয়ে মিশে যায় গোঁঙানীতে। কিন্তু ও থামে না। আসলে থামতে পারে না। ও যে এইমুহুর্তে সু নয় তাপস - এই চিন্তাটাই ওকে আরো, আরো বেশী করে খেলতে সাহায্য করে। তারপর দম ফুরিয়ে গিয়ে যখন নেতিয়ে পড়ে রাইয়ের বুকের উপরে, যখন ওর ঘামে ভেজা পিঠে রাইয়ের আঙুলগুলো আলতো করে আলপনা আঁকতে থাকে, তখন তাপসের খোলস ছেড়ে ও আবার হয়ে ওঠে রাইয়ের অগ্নিসাক্ষী করে বিয়ে করা বর। কিন্তু আবার পরের দিন রাতেই ও হয়ে যায় তাপস। রাইয়ের গোপন প্রেমিক। এই খেলার যেন কোনো শেষ নেই। চলতেই থাকে। - “তুই বিয়ে করলি না কেন রে?” ওর প্রশ্ন শুনে এবার বিষম খাওয়ার পালা তাপসের। রক্তিম চোখ করে ওর দিকে তাকিয়ে তাপস পাল্টা প্রশ্ন করল, “কি বললি?” - “বলছি, তুই বিয়ে করলি না কেন?” গ্লাসের তরলে চুমুক দিয়ে আবার প্রশ্নটা করল। - “ধরে নে, মনের মতো ভালো কোনো মেয়ে পাই নি। তাই বিয়ে করিনি।” যেন কিছুটা সময় নিয়ে ভেবে উত্তরটা দিল তাপস। - “তা কেমন মেয়ে তোর পছন্দ? রাইয়ের মতো?” এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ওর প্রশ্নের কারণে বিষম খেল তাপস। একটু আগে ওর মতই খকখক করে কাশতে কাশতে শুরু করল। তারপর নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে ওর দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল, “তোকে আর খেতে হবে না। দে। তোর নেশা হয়ে গেছে।” - “আঃ! বল না। রাইয়ের মত মেয়ে পেলে বিয়ে করবি?” - “হুম করতেও পারি।” এবারও একটু সময় নিয়ে বলল তাপস। - “উঁহু। ওরকম নয়। হ্যাঁ বা না তে জবাব দে।” - “হ্যাঁ। করব।” এবারে আর একটুও সময় নিল না তাপস। প্রায় সাথে সাথেই উত্তর দিল। এইরকমই একটা উত্তর আশা করেছিল ও। কিন্তু তারপরে তাপস যা বলল সেটা ও একেবারেই আশা করেনি। - “রাইয়ের মতো কেন, তুই যদি কোনোদিন রাইকে ডিভোর্স দিস, তাহলে ওকেই বিয়ে করবো।” এবার বিষম খাওয়ার পালা ওর। তবে উত্তরটা ওর পছন্দ হল। মুখে বলল, “না। সে গুড়ে বালি। না ওকে আমি কোনোদিন ডিভোর্স দেবো, আর না তোর সাথে ওর বিয়ে হতে দেবো।” তাপস একথার কোনো উত্তর দিল না। কেবল একটু মুচকি হাসল। যার অনেক রকম মানে হতে পারে। সেই জটিলতায় ও গেল না। বরং কিছুক্ষণ নীরবে পান করার পর হঠাৎ বলল, “তিন চারদিন আগে।” একথার মানে বুঝতে পেরে তাপস জিজ্ঞাও দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকালো। এবার ও নীরবে কিছুটা হেসে বলল, “একটু আগে জিজ্ঞাসা করলি না, কবে লাস্ট রাইকে করেছি? তারই উত্তর দিলাম। এই তিনচারদিন আগে।” তাপস কিছুক্ষণ চুপ করে রইল। তারপর বলল, “কেন, এখন আর প্রতিদিন করিস না? ছেলে বড়ো হচ্ছে বলে তুই ভদ্র হয়ে যাচ্ছিস?” - “আসলে তা নয়। তবে হ্যাঁ এটা সত্যি, এখন আর প্রতিদিন ভালো লাগে না। একঘেয়ে লাগে। রাইও চট করে করতে চায় না। অনেক সাধ্যসাধনা করতে হয়।” - “ঠিক এই জন্যেই আমি বিয়ে করিনি। শালা নিজের বউকে আবার কি পটাতে হবে রে? তুই না পুরুষ মানুষ? যখন চাইবি তখনই করবি।” - “শালা, বিয়ে তো করিস নি। তাই কোনো অভিজ্ঞতা নেই।” - “কে বলল অভিজ্ঞতা নেই? তোর থেকে আমার বেশী অভিজ্ঞতা আছে।” - “মানে? কি বলছিস আলবাল! বিয়ে করিস নি, থা করিস নি...” - “বিয়ে করিনি বলে কি আর অভিজ্ঞতা থাকবে না? জানিস প্রতিরাতে নতুন নতুন মেয়েদেরকে আমি করি।” - “শালা, নেশার ঘোরে আবার আলবাল বকতে শুরু করেছিস।” - “আলবাল বকছি আমি? ঠিক আছে দে, তোর ফোনটা দে, তোকেও ব্যবস্থা করে দিচ্ছি, তারপর দেখবি আমি আলবাল বকছি, নাকি সত্যি বলছি।” হাতের গ্লাসটা নামিয়ে রেখে তাপস ওর দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল। - “না থাক। আমার ভুল হয়েছে তোকে ঘাঁটিয়ে।” ওর দিকে হাতজোড় করে বলল। - “তই এখনো আমার কথা বিশ্বাস করছিস না। একবার দে ফোনটা।” - “কেন ফোনটা দিলে কি করবি?” - “ম্যাজিক দেখাবো।” তাপস ততক্ষণে ওর পাশে পড়ে থাকা ফোনটা ছোঁ মেরে তুলে নিয়েছে। ফোনের স্ক্রিণে বর্তমানে ন’টা বেজে সতেরো। ফোনটা হাতে নিয়ে বেকুবের মতো বসে রয়েছে ও। কি করবে বুঝে উঠতে পারছে না। নেশা কেটে গেছে অনেক আগেই। মাথার উপরে ফ্যানটা ফুলস্পিডে ঘোরা সত্ত্বেও কপালে ঘাম জমা হচ্ছে একটু একটু করে। প্রচন্ড গরম লাগছে। নীলচে বৃত্তটা থেমে গেছে অনেকক্ষণ। তারপরে ইউজার নেম আর পাসওয়ার্ড। তারপরে আবার একটা নীলচে বৃত্ত। অবশেষে প্রবেশ। চোখদুটো প্রায় বিস্ফারিত করে ফোনের স্ক্রিণটার দিকে তাকিয়ে রইল সুনির্মল।
28-02-2024, 09:38 PM
খুবই সুন্দর হচ্ছে, লিখতে থাকো। আশা রাখি, পরবর্তী পর্বে অনেক কিছুই ধীরে ধীরে পরিস্কার হতে শুরু করবে।
29-02-2024, 05:29 AM
ভালো লাগছে। লেখা চালিয়ে যান।
02-03-2024, 07:48 PM
আয়ুষী – নিজের ঘরে ঢুকেই বিছানার উপরে নিজের ব্যাগ আর ফোনটাকে ছুঁড়ে ফেলল ও। তারপর দরজাটাকে বন্ধ করে বিছানার উপরে ধপাস করে বসে পড়ল। কেমন যেন গুমোট গরম লাগছে। ফ্যানটা ফুলস্পিডে ঘোরা সত্ত্বেও একটুও হাওয়া ওর গায়ে লাগছে না। মাথাটাও কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। একটা সিগারেট খাওয়া দরকার। তা নাহলে মাথাটা ঠান্ডা হবে না কিছুতেই। ব্যাগ থেকে সিগারেটের প্যাকেট আর লাইটারটা বের করে একটা সিগারেট ধরালো। তারপর তাতে একটা টান দিয়ে লম্বা একটা ধোঁয়া ছাড়ল। ধোঁয়ার অস্পষ্ট কুন্ডলীটা ওর মুখ থেকে বেরিয়ে জানালার দিকে ছুটে বেরিয়ে এল। পরপর দু তিনটে টান মারার পরেও মাথাটা কিছুতেই ঠান্ডা হচ্ছে না। বারবার তিন্নির বলা কথাগুলো ওর কানে বাজছে। যতই বাড়ছে, ততই মাথাটা ঠান্ডা হওয়ার জায়গায় গরম হয়ে যাচ্ছে। রাত অনেকটাই হয়েছে বোঝা যাচ্ছে। কিন্তু ক’টা বাজছে ও জানে না। একটা হতে পারে। দেড়টা হওয়াটাও কোনো আশ্চর্যের বিষয় নয়। আবার দুটো হলেও ওর কিছু করার নেই। কিন্তু খিদেটা তো পাচ্ছে। কিন্তু খাওয়ার ইচ্ছে হচ্ছে না। অদ্ভুত একটা বৈপরিত্য শরীরের মধ্যে টের পাচ্ছে ও। যেমন মনের মধ্যেও হচ্ছে। যেমন চোখের কোণদুটো হু হু করে জ্বলছে। বালিশটাকে শক্ত করে আঁকড়ে ধরে কাঁদতে ইচ্ছে হচ্ছে। কিন্তু পারছে কই। কাঁদার পরিবর্তে ঠোঁটের কোণে জ্বলন্ত সিগারেটটায় উপর্যুপরি কয়েকটা টান দিয়ে, সেটাকে টান মেরে ছুঁড়ে ফেলে দিল জানালার বাইরে। আজকের সন্ধ্যেটাকেও এইভাবে টান মেরে ছুঁড়ে ফেলে দিতে পারলে ওর আরোও ভালো লাগত। কিন্তু সেটাই বা পারছে কই। আর পারছে না বলেই হয়তো রাগটা তিন্নির চেয়েও নিজের উপরেই ঘুরেফিরে আসছে বারবার। সেই অনুভূতিটুকুর জন্যই হয়তো রাগটাকেও ঝেড়ে ফেলতে পারছে না মাথা থেকে। কিম্বা শরীর থেকে। কিম্বা ঐ সিগারেটটার মতোই পোড়া মনটা থেকেও।
দিনটা অন্যদিনের থেকে কিছুটা হলেও অন্যরকম ভাবেই শুরু হয়েছিল আজকে। দিনের বেলায় ও কটায় বাড়ি থেকে বের হয়, আর রাত্রিবেলায় কটায় বাড়ি ফেরে, সেটা যখন ও নিজেই জানে না, তখন বাড়ির অন্যদের সেই বিষয়ে দোষারোপ করাটা বোধহয় বাতুলতা। ও মাঝে মাঝে ভাবে বাংলার ‘বাউন্ডুলে’ শব্দটা বোধহয় ওকে দেখেই আবিষ্কৃত হয়েছিল। বাড়িতে লোক বলতে ওকে নিয়ে চারজন। বাবা-মা-ভাইয়া আর ও। ও আর ভাইয়া যমজ। কে বড়ো আর কেই বা ছোটো এই নিয়ে ও কোনোদিন মাথা ঘামায় নি। কিই বা হবে ঘামিয়ে? যদি সে বড়ো হয়, তাহলে পৃথিবী কি উত্তর দিকে ঘুরতে শুরু করবে? বাবা বলে ও নাকি ছোটোবেলা থেকেই যাকে বলে রেবেল। বাড়িতে একমাত্র ওরই সাহস আছে মায়ের চোখে চোখ রেখে কথা বলার। আর কারোর নেই। কিন্তু ইদানিং সেটাও ভালো লাগে না। কারণ কদিন ধরেই ওর কিছুই যেন ঠিকঠাক হচ্ছে না। না লিরিকস, না গিটার। না অন্যকিছু। ওদের দলটার নামও কিন্তু বাউন্ডুলে। নামটা ওরই দেওয়া তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তিন্নি লিড ভোকালিস্ট। ও বেস গিটারে। সন্দীপন ড্রাম। আর তিন্নির দাদা তমাল কি বোর্ড। আরোও দু চারজন আছে। সেই কলেজ থেকেই ওদের ব্যান্ডের যাত্রা শুরু। একমাত্র তমালদা হচ্ছে ওদের থেকে সিনিয়ার। বাকীরা একই ক্লাসের। সেই কেজি ক্লাস থেকে। ও ওদের লিরিসিস্ট। কিন্তু কদিন ধরেই ওর মাথায় কোনো লিরিক্স আসছে না। তার কারণ বাকীরা বুঝতে না পারলেও তিন্নি কিন্তু ঠিকই পেরেছিল। ওদের দুজনকে হরিহর আত্মা বললেও হয়তো কম কিছু বলা হয়। ওরা তার থেকেও বেশী কিছু। অন্তত ও নিজে তো তাইই ভাবে। কিন্তু তিন্নি কি ভাবে? ও কোনোদিন জানতে চায়নি। ভেবেছে কিই বা হবে জেনে। কিন্তু আজ দেখছে জানলেই হয়তো ভালো হত। তাহলে মন পোড়ার যন্ত্রণাটা একটু হলেও তো কম হত। খিদেটা আবার পাচ্ছে। সেই কোন দুপুরে খেয়ে বেরিয়েছিল। এখন তো অগাধ রাত। খিদে পাওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তাও বাইরে গিয়ে খাওয়ার ইচ্ছে করছে না। বালিশে মাথাটা রেখে শুয়ে পড়ল ও। তারপর প্যাকেটটা থেকে আরো একটা সিগারেট বের করে ধরাতে গেল। কিন্তু ধরাল না। ইদানিং ওর সিগারেটটা খাওয়া আগের থেকে বেড়ে গেছে। এটা ওকে তিন্নিই বলেছে। তারপর থেকে ও মনে মনে ঠিক করেছিল সিগারেট খাওয়া কমিয়ে দেবে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে সেটা হওয়ার নয়। ধীরে ধীরে চোখের পাতাগুলো বুজল ও। দিনটা শুরু হয়েছিল একটু অন্যরকম ভাবেই। ও প্রায় প্রতিরাতেই দেরী করে বাড়ি ফেরে। সঙ্গে একসেট এক্সট্রা চাবী থাকে বলে বিশেষ একটা অসুবিধা হয় না। ও যখন বাড়ি ফেরে তখন বাকীদের আক্ষরিক অর্থেই মাঝরাত। মা গজগজ করলেও টেবিলে ওর খাবার চাপা দিয়ে রাখতে ভোলে না। ঠান্ডা সেই খাবার ও খেয়েও নেয়। আজকেও নিজের রুমে ঢোকার আগে দেখেছে টেবিলে ওর প্রাপ্য খাবার ঢাকা দেওয়া আছে। কিন্তু আজ ও খায়নি। সকালে ঘুমটা ভেঙ্গে গিয়েছিল অদ্ভুত একটা আওয়াজে আর সেই সাথে মায়ের চিৎকারে। মা এরকম খুব কমই করে। আসলে করার প্রয়োজন পড়ে না। তাড়াতাড়ি উঠে বসে বাইরে বেরিয়ে এসে দেখল মা ভাইয়ার রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে তারস্বরে চিৎকার করছে আর দরজায় ধাক্কাচ্ছে। কি না, ভাইয়া আজ নাকী দেরী করে ঘুম থেকে উঠেছে! মায়ের ন্যাকামো দেখে ওর মাথা গরম হয়ে গিয়েছিল। তারপরে মায়ের সাথে কিছুটা চিৎকার চেঁচামেচি করে আবার এসে শুয়ে পড়েছিল ও। ঘুমটা ভাঙ্গল যখন তখন দেড়টা পেরিয়ে গেছে। একেবারে স্নান করে রেডি হয়ে যখন নিজের ঘর থেকে বেরোলো, দেখল টেবিলে ওর খাবার ঢাকা আছে। নিঃশব্দে খেয়ে বেরিয়ে পড়েছিল ঘর থেকে। না বেরোলেই হয়তো ভালো করত। আজকের দিনটাই জাস্ট ওর জন্য নয়। ওদের রিহার্সাল তিন্নিদের ঘরে হয়। প্রথম থেকেই এটা হয়ে আসছে। তিন্নির বাবা-মাও এতে কোনো আপত্তি করেন নি। বরং প্রতিনিয়ত ওদের প্রত্যেককে উৎসাহ ও উদ্যোম দিয়ে গেছেন। গেছেন কেন, এখনও দিয়ে যান। ওর বাবাও কোনোদিন আপত্তি করেনি। মুশকিল হয়েছিল মাকে নিয়ে। মেয়ে ছেলেদের মতো করে চুল কেটে স্টেজে উঠে ঘাড় দুলিয়ে দুলিয়ে গান গাইবে, তাও আবার ব্যান্ডের গান, সেটা মা একদমই মেনে নেয়নি। কিন্তু সেও হাল ছাড়ার পাত্রী নয়। ছোটোবেলা থেকেই গান ওর একটা প্যাশান। জেদ করেও এই প্যাশানটাকে বজায় রেখেছে। কিন্তু কালকের পর কি হবে সেটা বলা আর সম্ভব নয়। কারণ আজকে যে ঘটনাটা ঘটে গেল তারপর আর ব্যান্ডে থাকাটা তো অনেক দূরের কথা, তিন্নিদের বাড়িতে যাওয়াটা উচিত হবে কিনা, সেটাও একবার ওর ভেবে দেখা দরকার। ও আজ কলেজ যায়নি। যেতে ইচ্ছা করেনি। ও, তিন্নি, স্যান্ডি অর্থাৎ সন্দীপন সবাই একই কলেজে পড়ে। কিন্তু বিভিন্ন সাবজেক্টে। কিন্তু সবাই কলেজ করার পরে জড়ো হয় তিন্নিদের বাড়িতে। ওখানে পুরানো গানের রিহার্সাল হয়। নতুন গানের আলোচনা, অ্যারেঞ্জমেন্ট হয়। কোথাও প্রোগ্রাম থাকলে সে বিষয়ে আলোচনা হয়। তাই আজ ও কলেজ না গিয়ে সটান পৌঁছে গিয়েছিল তিন্নিদের বাড়িতে। গিয়ে ওর মায়ের কাছে জানতে পারল আজ নাকি তিন্নিও কলেজ যায়নি। এটা ওর জানা ছিল না। ইনফ্যাক্ট সকাল থেকে ওর ফোনটা নট রিচেবল ছিল। অবশ্য তা নিয়ে ও খুব একটা দুশ্চিন্তা করেনি। তিন্নি এইরকমই একটা পাগলাটে। এরকম মাঝে মধ্যে করেই থাকে। আর এরকমটা করে বলেই না ওকে এত ভালো লাগে ওর। ওর এই স্বভাবটার জন্যই ও ওকে এতটা ভালোবাসে। হ্যাঁ। ও তিন্নিকে ভালোবাসে। না। কোনো বন্ধু হিসাবে নয়। বরং আদি অকৃত্রিম ভালোবাসা। যেমন একজন প্রেমিক তার প্রেমিকাকে ভালোবাসে, ঠিক তেমনই ও ভালোবাসে তিন্নিকে। কিন্তু এই কথাটা ও আজও মুখ ফুটে বলতে পারেনি তিন্নিকে। কি জানি, শুনে কি রিঅ্যাক্ট করবে। কিন্তু ওর সন্দেহ যে তিন্নি কিছু একটা হলেও আন্দাজ করেছে হয়তো। তা নাহলে কদিন ধরেই তিন্নি ওকে অ্যাভয়েড করবে কেন? কলেজ গেলেও ওর সাথে কথা বলছে না। ঠিক টাইমে রিহার্সালে আসছে না। এলেও চুপচাপ এক কোণে বসে থেকে উঠে চলে যাচ্ছে। ইত্যাদি। তাই তো কদিন ধরে ওরও মন খারাপ। কোনো কাজে মন বসাতে পারছে না। না পড়োশোনায়। না গানে। নতুন কোনো লিরিক্স মাথায় আসছে না। সাথে বেড়েই চলেছে সুখটানের সংখ্যা। আজ মনে মনে একটা ব্যবস্থা করবে বলেই ঠিক করেছিল ও। ও ভেবেছিল তিন্নিকে ওর মনের কথাটা আজকেই জানিয়ে দেবে। দোতলায় তিন্নির রুমে যখন ও ঢুকল তখন সন্ধ্যে হব হব। দিনের শেষ একটা মরা আলো এসে ঢুকছে জানালার গরাদ ঠেলে। বিছানার উপরে উপুড় হয়ে শুয়ে রয়েছে তিন্নি। পরণে একটা ক্রীম ঢোলা গেঞ্জী আর মেরুন রঙের ক্যাপ্রী। ও ঘরে ঢুকেই দরজাটা বন্ধ করে দিল। আর সেই শব্দে বিছানায় উঠে বসল তিন্নি। আগুনের আঁচের তাতে বর্তমানে ফিরল ও। দুই আঙুলের ফাঁকে কখন যে সিগারেটটা পুড়ে শেষ হয়ে গেছে সেটা বুঝতেই পারেনি ও। পড়ে রয়েছে একটু লালচে আভা আর কিছুটা লম্বাটে ছাই। এই সিগারেটটাকেও আগেরটার মতই জানালা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলে দিল। তারপর টেবিলের উপর থেকে জলের বোতলটাকে তুলে নিয়ে ঢক ঢক করে বেশ কিছুটা জল খেয়ে নিল। পেটের মধ্যে ধিকি ধিকি জ্বলতে থাকা খিদের আগুনটা এবার হয়ত নিভে যাবে। কিন্তু ওর মনের আগুনটা? বোতলটাকে আবার যথাস্থানে রেখে দিয়ে বিছানার উপর থেকে ফোনটাকে হাতে তুলে নিল। দুটো বাজতে বারো মিনিট বাকী। তার মানে এখন বেশ রাত। ফোনটাকে আনলক করল ও। ব্যাটারীর চার্জ পারসেন্টেজ ১৫ দেখাচ্ছে। লাল হয়ে আসা ব্যাটারীটা আর কিছুক্ষণ পরেই দেহ রাখবে। ফোনটাকে চার্জ দিলে হত। কিন্তু এখন আর বিছানা ছেড়ে উঠতে ইচ্ছা করছে। ফোনের উপরে একবার আঙুল ঘোরাল ও। তারপর থেমে গেল। হঠাৎ করেই অ্যাপটা চোখে পড়ল ওর। গতকালই অ্যাপটা ইনস্টল করেছে ও। ইচ্ছা ছিল তিন্নিকে দেখাবে। কিন্তু সেই সুযোগ পায়নি। বুড়ো আঙুলের আলতো চাপেই খুলে গেল অ্যাপটা। সাদাটে স্ক্রীণে নীলচে একটা বৃত্ত ঘুরছে। তারপরেই ইউজার নেম আর পাসওয়ার্ড। এটাও ও আগে থেকেই তৈরী করে রেখেছিল। কেবল যথাস্থানে দেওয়ার অপেক্ষা। একমুহুর্ত থমকাল ও। - “কি ব্যাপার? তুই এখন এখানে?” তিন্নির প্রশ্নে থমকে দাঁড়াল ও। তারপর বিছানায় ওর পাশে বসে বলল, “কেন? তোর কিছু অসুবিধা আছে?” তারপর তিন্নির মুখের দিকে তাকিয়ে ও বলল, “থাকলে বল্, চলে যাচ্ছি।” - “বাজে কথা বন্ধ কর। তুই দরজাটা ছিটকিনি দিলি কেন?” তিন্নির গলায় কি উদ্বেগের ছোঁয়া আছে, সেটাই বোঝার চেষ্টা করল ও। কিন্তু পারল না। - “তোর সাথে আমার কিছু দরকারী কথা আছে। তাই দিলাম।” গলাটাকে শান্ত করে প্রায় খাদে টেনে নামিয়ে দিয়ে জবাব দিল ও। - “আগে ছিটকিনিটা খোল। সবাই কি ভাববে?” তিন্নির শেষের কথাটা যেন ছুঁচের মত বিঁধল ওর গায়ে। - “কি ভাববে মানে? আমরা বন্ধু। দরজা বন্ধ করতে পারি না? আর তুই এভাবে প্যানিক করছিস কেন?” - “প্যানিক করছি না। তোকে কেবল দরজাটা খুলতে বলেছি।” - “খুলে দেবো। প্যানিক করিস না। আমার কথা বলা হয়ে গেলেই আমি দরজাও খুলে দেবো। আর এখান থেকে চলেও যাবো। কিন্তু তার আগে তোর সাথে আমার কিছু দরকারী কথা আছে। সেগুলো আগে বলে নিই।” - “বল কি বলবি।” তিন্নি কি আগের থেকে একটু শান্ত হয়েছে? হবে হয়তো। - “আমি কদিন থেকেই লক্ষ্য করছি তুই আমাকে অ্যাভয়েড করছিস। কেন জানতে পারি?” - “কারণটা তুই ভালো করেই জানিস। আর নাটক করিস না।” তিন্নি যেন একটু তেতে গেল। - “নাটক! আমি নাটক করছি!?” - “নাটক নয়তো কি? তুই কি বলতে চাস, কি করতে চাস আমি জানি না?” ফোঁস করে উঠল তিন্নি। - “কি করতে চাই আমি?” ও কিন্তু বরফ শীতল। - “তুই নোংরামী করতে চাস।” - “নোংরামী! কোনটা নোংরামী? তোকে ভালোবাসাটা নোংরামী?” - “বাজে কথা বলিস না। তুই ভালো করেই জানিস আমি এরকম না। আমার এসব ভালো লাগে না।” - “ভালো লাগে না? কি ভালো লাগে না?” - “শুনবি? তাহলে শোন। তুই যখন আমার কাছে এসে বসিস আমার ভালো লাগে না। তুই যখন আমাকে ছুঁস, আমার ভালো লাগে না। আমার তোকেই ভালো লাগে না। তুই চলে যা এখান থেকে। তুই নোংরা। তোর মন নোংরা। তোর ব্যবহার নোংরা। আমার কাছে আর কোনো দিন আসবি না। তুই অসুস্থ হতে পারিস। আমি নয়।” একটানা কথাগুলো বলে আবার বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে পড়ল তিন্নি। তবে এবার নিজের মুখটা বালিশের মধ্যে গুঁজে। ওর শরীরটা বারে বারে ফুঁপে ফুঁপে উঠছে। তিন্নি কি কাঁদছে? ওর ইচ্ছা হল একবার তিন্নির মাথায় হাত রাখে। চুলে আলতো করে বিলি কেটে দেয়। নিঃশেষে শুষে নেয় ওর দু চোখ উজাড় করা জলের ফোঁটাগুলোকে। কিন্তু চেয়েও এর একটাও করতে পারল না ও। মেঝের সাথে ওর পাগুলোকে কেউ যেন সিমেন্টের সঙ্গে এঁটে দিয়েছে। ওর পাদুটো থরথর করে কাঁপছে। ওর নিজের চোখের কোণদুটোও কেমন যেন জ্বলছে হু হু করে। কিন্তু ও কাঁদতে পারছে না। ও কাঁদলও না। দরজাটা খুলে ঘরের বাইরে বেরিয়ে এল ধীর পায়ে। দরজার ঠিক পাশেই দাঁড়িয়েছিল তিন্নির দাদা তমাল। ওর দিকে একবার ভাবলেশহীন চোখে তাকাল। তারপর বোনের ঘরে ঢুকে গেল। ধীর পায়ে তিন্নিদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এল ও। ইউজার নেম আর পাসওয়ার্ডটা দিতেই নীলচে বৃত্তটা বারকয়েক পূর্ণগতিতে ঘোরার পর ওর ফোনের স্ক্রীণে ইংরেজীতে ফুটে উঠল একটা বার্তা। Welcome to the world of true voyeurism, exhibitionism & cuckolding. Live your deepest wild fantasy. আরো অনেক কথা লেখা ছিল, সবটা ও পড়ল না। কেবল নীচের দিকে বড়ো করে লেখা Enter বোতামটায় একটা চাপ দিল। সাথে সাথে অ্যাপের হোমপেজটা খুলে গেল। স্ক্রীণের একদম উপরের ডানদিকে ওর ইউজার নেমের ঠিক পাশে একটা সবুজ বৃত্ত জ্বলজ্বল করছে। তার মানে ও এখন Active। আয়ুষী ঘাড় গুঁজে পাগলের মত স্ক্রল করতে শুরু করল অ্যাপটায়। ও হয়তো জানতেও পারল না, ওর আশেপাশের আরও পাঁচখানা আলাদা আলাদা প্রোফাইল আলাদা আলাদা ফোন থেকে এই মুহুর্তে Active হয়ে আছে। ~ অত্র প্রথমোৎধ্যায়ঃ সমাপ্তঃ ~
02-03-2024, 10:06 PM
হাতে গোনা কয়েকটি পছন্দের গল্পের মধ্যে এটা একটা, আশা করি খুব তাড়াতাড়ি আরো একটা আপডেট পাব।
02-03-2024, 11:40 PM
গল্পের কাহিনীর বিষয় - সম্পূর্ণরূপে নতুন এবং অভিনব। খুব সুন্দর হচ্ছে, চালিয়ে যাও। পরবর্তী অধ্যায়ের প্রথম পর্বের সাগ্রহে অপেক্ষায় থাকবো।
03-03-2024, 03:07 PM
~ দু - চার কথা ~
প্রথমেই প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানাই। গল্পটাকে পড়ার জন্য। এটাকে ভালোবাসার জন্য। এবং সর্বোপরি পাশে থাকার জন্য। সবাইকে অনুরোধ করবো, যেন এভাবেই আমার এবং আমার গল্পের পাশে থাকুন। একজন পাঠক হিসাবে আপনাদের অধিকার আছে, আমার কাছে যত দ্রুত সম্ভব গল্পের নতুন আপডেট চাওয়ার। ঠিক তেমনই লেখিকা হিসাবে আমারও সামান্য হলেও আব্দার আছে গল্পটাকে পড়ে কেমন লাগছে সেটাকে কমেন্ট করে জানানোর। এই কমেন্টটাই হল আমার এবং আপনাদের মধ্যেকার যোগসূত্র। এই কমেন্টের মাধ্যমেই আমি বুঝতে পারবো, গল্পের গতিপ্রকৃতি কীরূপ হতে চলছে। Ajju bhaii, Kishore 12, Tanvirapu, ronylol, akashahamed4444, Panu2, Fardin Ahamded, chndnds, কাদের, অভিমানী হিংস্র পেমিক কে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ গল্পটিকে পড়ে কেমন লেগেছে তা জানানোদ জন্য। radio-kolkata কে বলি, প্রতিষ্ঠিত কিনা জানি না, তবে আমি মোটেও লেখক নই। লেখিকা। এই ওয়েবসাইটে বেশ কয়েকবছর শীতঘুমে থাকার পর এবং অন্যান্য বেশ কিছু নামজাদা লেখকের গল্প পড়ার পর আমারও ইচ্ছে হয়েছে লেখার। লেখার হাত কিরকম, সেটা আপনারাই বলবেন। আশা করছি গল্পের মাধ্যমে আপনাদের মনোরঞ্জন করতে পারছি। এবং ভবিষ্যতেও করতে পারবো। ray-rowdy কে ধন্যবাদ জানাই। গল্পটাকে পড়ার জন্য এবং প্রতি পর্বে নিয়মিত কমেন্ট করার জন্য। শিশুম়ত্যু আমার নিজের কাছেও মোটেও কাম্য নয়। সর্বতো ভাবে চেষ্টা করবো গল্পটাকে একইরকম উপভোগ্য রেখে শেষ করার। কিন্তু কেবলমাত্র শেষ করার তাড়নায় কোনোভাবেই গল্পের মান নিম্নমুখী করার ইচ্ছা আমার নেই। গল্পের বিষয় ভাবনা যে আপনার কাছে অভিনব লেগেছে, সেটা জেনে খুবই ভালো লাগলো। পরবর্তী অধ্যায় যথাসময়েই আসতে চলেছে। banerjee3506 কে বলি ইভানকে এই গল্পের মূলস্রোতে হয়ত পাওয়া যাবে না। কারণ গল্প অনুযায়ী তার বয়স ১০ বছর। Underage Sex যেমন আইনত অপরাধ, ঠিক একইরকম ভাবে আমার নিজের কাছেও অপছন্দের। সেই কারণে বর্তমানে ওর নাম উল্লেখ করা ছাড়া অন্য কিছু বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করিনি। Henry কে বলবো আমার মতো ক্ষুদ্র একজন লেখিকা যদি আপনার মত একজন নামজাদা লেখককে সামান্য হলেও উদ্বু্দ্ধ করতে পারি, তাহলে আমি আপ্লুত। ধন্যবাদ গল্পটাকে পড়ার জন্য এবং পছন্দ করার জন্য। আর শুধু ইন্দুমতির কথা ভাবলে হবে? আরো বাকী পাঁচজনও তো আছে? তাদের কথাও তো একটু আধটু ভাবতে হবে। মাগিখোর কে জানাই ধন্যবাদ, গল্পটাকে পড়ার জন্য এবং কমেন্ট করার জন্য। Anita Dey কে বলি, আপনার হাতেগোণা কয়েকটি পছন্দের গল্পের মধ্যে যে আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টাটি স্থান পেয়েছে, জেনে খুবই ভালো লাগল। এভাবেই গল্পটি পড়তে থাকুন, কমেন্ট করে উৎসাহ দিতে থাকুন। সবশেষে আরো একবার সবাইকে ধন্যবাদ জানাই গল্পটি পড়ার জন্য এবং কমেন্ট করার জন্য। চাই সবাই আরো বেশী করে গল্পটি পড়ুক এবং কমেন্ট করে জানাক কেমন লাগছে গল্পটি। পরবর্তী অধ্যায়ের প্রথম পর্ব আগামী মঙ্গলবার রাতে পোস্ট করা হবে। ~ ধন্যবদান্তে
রতিমোহিনী দেবী
03-03-2024, 07:21 PM
04-03-2024, 12:13 AM
দূর্নিবার বড় ভ্যাবাগঙ্গারাম ম্যানেজার। এসব মানুষের টাক মাথায় সবাই চাঁটি মেরে যায়। ও প্রমোশন পেল কি করে?
04-03-2024, 08:06 PM
অসাধারণ হইতেছে এগিয়ে যান, লেখিকা!!!
05-03-2024, 07:34 PM
পরিচ্ছদ ২ - পরিচিতি
অনুরাধা – সময় যত গড়াচ্ছে, বেলা যত বাড়ছে ততই বুকের মধ্যে ঢিপ ঢিপ শব্দটা যেন বেড়েই যাচ্ছে। মনের মধ্যে একটা আকুল আগ্রহ তৈরী হচ্ছে বারবার ফোনটাকে একবার হাতে নিয়ে দেখার জন্য। অ্যাপটা একবার হলেও খোলার জন্য। কিন্তু পারছে না। মন আর মস্তিষ্কের যুদ্ধে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে যাচ্ছে ও নিজে। মন বলছে, ‘একবার খুলেই দেখা যাক না, কি ব্যাপার।’ কিন্তু মস্তিষ্ক বলছে, ‘খবরদ্দার না! এসব নোংরা জিনিস না দেখাই ভালো। সু যদি জানতে পারে, তাহলে কি হবে। কি ভাববে ও আমার সঙ্গে।’ একবার ভেবেছিল অ্যাপটা ডিলিট করে দেবে। মনের মধ্যে একটা দোনামনা ছিল। কিন্তু কিছু একটা ভেবে শেষপর্যন্ত আর অ্যাপটাকে ডিলিট করা হয়ে উঠল না। সেটা বহাল তবিয়তে রয়েই গেল ওর ফোনে। কিন্তু সেটা খুলল না। তপতী ফোনটা রেখে দেওয়ার পর থেকে মনটা কেমন যেন করছে। বাড়ির কাজের ফাঁকে ফাঁকে যখন ফোনটা চোখে পড়েছে, ততবারই বুকটা ধড়াস করে উঠেছে। যেন ওটা ফোন নয়, কোনো টাইম বম্ব। কেবল ফাটার অপেক্ষা। ঘর সংসারের টুকটাক কাজের মধ্যেই একবার অনিচ্ছা সত্ত্বেও ফোনটাকে হাতে তুলে নিল ও। অ্যাপটা খুলেও ফেলল। তপতীর থেকে জেনে নিয়ে আগেই ইউজার নেম আর পাসওয়া্র্ড একটা তৈরী করে রেখেছিল ও, সেটা যথাস্থানে লিখে লগ ইন করতে যাবে, হঠাৎ করে দরজার বেলটা বেজে উঠল সশব্দে। চমকে উঠে হাত থেকে ফোনটা পড়ে যাওয়ার জোগাড় হল বটে, কিন্তু পড়ল না। বিয়ের এতগুলো বছর কাটিয়ে দেওয়ার পর ও আজকে প্রথমবার জানতে পারল ওদের দরজার কলিং বেলের আওয়াজটা বড়ই কর্কশ। খুব কানে লাগে। ফোনটাকে রেখে দিয়ে তাড়াতাড়ি দরজাটা খুলে দিল। সঙ্গে সঙ্গে ঘরে ঢুকল ওর কাজের মেয়ে সোমা। ও একবার ঘাড় ঘুরিয়ে ডাইনিংয়ের ঘড়িটার দিকে তাকালো। সবে ন’টা বেজে সাঁইত্রিশ। সু আর বাবান মাত্র আধঘন্টা হল বেরিয়েছে। কিন্তু ওর মনে হচ্ছিল যেন একযুগ সময় পেরিয়ে গেছে। সোমা ঘরে ঢুকেই শশব্যস্ত হয়ে পড়ল। “আসতে একটু দেরী হয়ে গেল বৌদি। কি করবো বলো, চন্দ্রিমা কাকীমার আর হয় না। জানোই তো, একবার বাথরুমে ঢুকলে আর বেরোতে চায় না। চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে আমার গলা বসে গেল, তবুও বেরোয় না। শেষমেশ আমি রেগে মেগে বললাম, আমি যাচ্ছি অনুবৌদির ফ্ল্যাটে। তুমি বাথরুমেই বসে থাকো, আমি আসি। তবুও বেরোয় না। রোজ রোজ আর ভালো লাগে না বাপু। এতক্ষণ ধরে বাথরুমে বসে যে কি করে, স্বয়ং ভগবানই জানে...।” একটানা কথা বলতে শুরু করেছে সোমা। এর প্রত্যেকটা কথা ওর জানা, শোনা ও মুখস্থ। কারণ প্রতিদিনই দেরী করে এসে একই বাহানা দেয় মেয়েটা। অন্য দিন হলে হয়তো ও একটু হলেও রাগ করতো। হয়তো দু চার কথাও শুনিয়ে দিতে পারতো। কিন্তু আজকে ওর ইচ্ছা হল না। কেবল ওকে বলল, “আর কথা বলিস না, সোমা। অনেক দেরী হয়ে গেছে। আগে বাসনগুলো মেজে ফেল। তারপর ঘরটা ঝাঁট দিয়ে মুছে দিবি। তারপর যাওয়ার আগে বেড প্যানটা পরিষ্কার করে, ঠাকুমাকে চান করিয়ে দিবি। বুঝলি? আমি চান করতে যাচ্ছি।” তারপর থেমে বলল, “আর শোন, কিচেনে তোর পাঁউরুটি আর চা রেখেছি। খেয়ে নিবি।” সোমা আর কথা না বাড়িয়ে ঘাড় নেড়ে কিচেনে ঢুকে গেল। ও একটা তোয়ালে হাতে নিয়ে একবার আড়চোখে ডাইনিং টেবিলে রাখা নিজের ফোনটার দিকে তাকিয়ে বাথরুমে ঢুকে পড়ল। সু আর বাবানের কিছু নোংরা কাপড় কেচে নিয়ে জল ঝরতে দিয়ে এবার স্নানের প্রস্তুতি করতে লাগল ও। বাথরুমের দরজাটা বন্ধ করতেই অল্প পরিসরে নিজেকে একা পেল। হাইসকোটটা খুলে ফেলে দিল এক কোণে। ঘরেতে ব্রা পরার অভ্যেস ওর নেই। পরার অবশ্য দরকারও পড়ে না। ঘরে ও ছাড়া আর আছেটাই বা কে। শয্যাশায়ী শাশুড়ি থেকেও একপ্রকার নেই। তাই আলাদা করে ব্রা পরার কোনো প্রয়োজনীয়তা ও খুঁজে পায়না। তবে প্যান্টি পরে থাকে। ঘরে অতিথি অভ্যাগতরা এলে অবশ্য আলাদা ব্যাপার। তখন দুটোই পরতে হয়। তবে সেটাও আলেকালে। ওদের ঘরে আত্মীয় কুটুম প্রায় একপ্রকার আসে না বলতে গেলে। বাবা-দাদা-বৌদি কেউই এলে রাত কাটায় না। মা এলে দু চারদিন থাকে। তাও বিয়ের পর হাতে গোণা। প্যান্টিটাকে খুলে হাউসকোটের পাশেই ফেলে রাখল। প্যান্টিটাকে দেখে একটা মজার কথা মনে পড়ে গেল হঠাৎ করে। বিয়ের পরে সু ইচ্ছে করে ওর সব ব্রা আর প্যান্টিগুলোকে লুকিয়ে রাখত এদিক ওদিক। যাতে ও পরতে না পারে। কম বদমাইশ ছিল সু! সেই কলেজ থেকে প্রেম। তারপর বিয়ে। বাবান পেটে না আসা পর্যন্ত দুজনে চুটিয়ে মজা করেছে। বাবান হওয়ার পরেও করেছে, তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব কিছুরই গতি বোধহয় কমে যায়। হাল্কা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে শাওয়ারটা চালু করে দিল। একরাশ ঠান্ডা জল ওর চুলগুলোকে ভিজিয়ে দিয়ে নীচের দিকে নামতে শুরু করেছে। ধীরে ধীরে ওর গোটা শরীর ভিজতে শুরু করেছে। আঃ! কি আরাম! দু চোখ বুজে এল ওর। সু-য়ের কথা মনে আসতেই আরো একটা কথা মনে পড়ে গেল। তপতীর কথা। তপতী ওর ছোটোবেলার বন্ধু। যাকে বলে ন্যাংটো বয়সের। দুজনেই একে অপরের হাড়হদ্দ জানে। গতকাল অনেকদিন পরে তপতী ওকে ফোন করেছিল। প্রায় দিন কুড়িক পরে। তাই ফোনটা ধরেই স্বভাবত খুশী হয়ে গেছিল ও। “বল্ কী খবর? অনেকদিন পরে ফোন করলি যে? ভুলেই গেছিলি বুঝি?” - “না রে, তোকে একটা খবর দেওয়ার ছিল।” তপতীর গলায় কিছুটা হলেও লজ্জার সুর টের পেল। - “কি খবর রে?” - “একটা ভালো খবর।” - “উফ্! কি খবর সেটা বলবি তো?” নিজের ঔৎসুক্য আর লোকাতে পারল না ও। - “বলছি, বলছি। শোন খবরটা প্রথম তোকেই দিচ্ছি। বরকেও বলিনি এখনও। অফিস থেকে ফিরলে বলবো।” তপতী আসল কথাটা বলার বদলে জিলিপির প্যাঁচ কষতে থাকে। - “থাক। তোকে আর বলতে হবে না। এত হেঁয়ালী করলে আমি শুনতেও চাই না।” গলায় বিরক্তি এনে স্পষ্ট জানায়। - “উফ! রেগে যাচ্ছিস কেন?” বন্ধুর রাগ আর বিরক্তি কমানোর জন্য হালকা গলায় বলে তপতী। - “রাগবো না?! তখন থেকে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে কথা বলছিস, মেন কথাটা বলছিসই না।” - “বলছি শোন। আমি আবার কনসিভ করেছি।” এবারে আর দেরী না করে এক নিঃশ্বাসে কথাটা বলে তপতী। - “মানে?!” বন্ধুর কথায় ও একইসাথে আনন্দিত আর আশ্চর্য দুটোই হয়। - “মানে আই অ্যাম প্রেগন্যান্ট ওয়ান্স এগেন!” গলায় লজ্জার ভাব এবারে অনেকটাই। - “বাহঃ! এতো দারুণ খবর!” রাগের বদলে উচ্ছাস ঝরে পড়ে ওর গলায়। - “তাহলে, বলিনি ভালো খবর আছে?” - “সত্যিই ভালো খবর! তা কনফার্ম করেছিস তো?” - “হ্যাঁরে, আজকেই কনফার্ম করেছি। দুমাস হচ্ছে।” - “আগে টের পাসনি?” - “পেয়েছিলাম, তবে আজকে কনফার্ম হলাম।” - “কনগ্র্যাটস রে। তবে হঠাৎ করে এতবছর পরে আরেকটা ইস্যু নিলি?” - “আর বলিস কেন ভাই? সব হঠাৎ করেই হয়ে গেল। বর বলল চলো আরেকটা নিই।” - “আর তুই রাজী হয়ে গেলি? দুজনকে সামলাতে পারবি একলা হাতে?” - “সব পারবো। দুজন মিলে সামলাবো। অসুবিধা হবে কেন?” - “ওঃ কি প্রেম রে! হিংসে হচ্ছে তোকে দেখে।” - “হিংসা নয় চেষ্টা করো। তবে তুই চাইলে আমি তোকে হেল্প করতে পারি।” হঠাৎ করেই বলল তপতী। - “তুই হেল্প করবি?” - “কেন? পারবো না?” - “পারবি না কখন বললাম? তুই সব পারিস। তা কিভাবে হেল্প করবি?” - “সে ব্যবস্থা আছে। তবে তোকে আমার সব কথা শুনে চলতে হবে। আমি যেমন যেমন বলবো তেমন তেমন করতে হবে। আমি ফল পেয়েছি বলেই তোকে সাজেস্ট করছি।” তপতী সিরিয়াস গলায় বলল। - “কি করেছিস তুই?” বন্ধু যে কেবল ফাঁকা আওয়াজ দিচ্ছে না, সেটা ও পরিষ্কার বুঝতে পারল। - “বলছি শোন। মাসদেড়েক আগে হঠাৎ একদিন বর অফিস থেকে ফিরে আমায় বলল...” তপতী বলে চলল। ও শুনে চলল। নীরবে। নিঃশব্দে। প্রথম প্রথম ওর বিশ্বাস হচ্ছিল না। তপতী হয়তো মজা করছে। এরকম আবার হয় নাকী? তাও আবার কলকাতার মত একটা শহরে? কিন্তু কিন্তু ধীরে সব কথা শোনার পর ওর মনের ভাবটাই পরিবর্তন হয়ে গেল। এরকমও যে হতে পারে সেটা ও কোনোদিন কল্পনাও করেনি। অবশ্য ওর কল্পনার জগৎটা ওর বাস্তবের মতই সীমিত পরিসরের। বর। ছেলে। আর ও। ব্যাস শেষ। এর বেশী কোনোদিন কল্পনাও করেনি। বিয়ের পর থেকে অনেকগুলো বছরই তো কেটে গেল, কই ওর মনে তো সু ছাড়া আর কিছু কোনোদিন আসেনি? আজও যখন সু –এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়, কত সাবধানতাই না নেয়। বাবান ঘুমিয়েছে কিনা। জানালাটা ঠিক মতো বন্ধ হয়েছে কিনা। পর্দাটা ঠিক করে টানা হয়েছে কিনা। ঘরের আলোটা নিভিয়ে দাও। আরো কতকিছু। বরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময়েও কত সাবধানতা। আস্তে করো, শব্দ হচ্ছে। বাবান উঠে পড়বে। মুখে কথা বলো না। আরো কতকিছু। সেখানে ওর মত একটা অতি সাধারণ, ঘরোয়া, ছাপোষা নারী তপতীর বলা কথাগুলোয় বিশ্বাস করবেই বা কি করে? বিশ্বাস করতে ভয় হয় যে। যদি এগুলো সত্যি হয়? দুপুরে ভাত খাওয়ার পরে মাকে ফোন করা একটা নিত্যদিনের অভ্যাস ওর। কিন্তু আজ প্রথমবার সেই অভ্যাসে ছেদ পড়ল। খাওয়াদাওয়া শেষ করে, ডাইনিং টেবিলটা মুছে, বাসনপত্রগুলো মেজে নিয়ে সোজা শোওয়ার ঘরে চলে এল। বাবান বিছানায় শুয়ে ঘুমিয়ে কাদা। সেই বিকালের আগে উঠবে না। ঐদিক থেকে নিশ্চিন্ত। ফোনটা চার্জ হচ্ছিল। চার্জ থেকে খুলে নিয়ে বিছানায় আধশোয়া হয়ে বসল। পিঠে বালিশটা দিতে আরো আরাম হল যেন। ফোনটা হাতে নিতেই তপতীর কালকের বলা কথাগুলো কানের কাছে আরো একবার ভেসে উঠল। “আমার কথা বিশ্বাস কর, অনু। আর যাই হোক, তোর কোনো ক্ষতি হোক আমি চাইব না। এটা কেবল টাইম পাসের জন্য। একবার অ্যাপটা ইউজ কর। দেখবি এই জগতে কত কিছু আছে, তুই এতদিন তার হদিস জানতিসই না। এতে দেখবি আখেরে তোর লাভই হবে। তোর সেক্স লাইফ আরো এক্সাইটেড হয়ে যাবে। একবার ইউজ করে দেখ, পছন্দ না হলে ডিলিট করতে কতক্ষণ?...” ঘাড় ঘুরিয়ে আরো একবার বাবানের দিকে তাকালো ও। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। আশ্বস্ত হয়ে প্রথমে ফোনটাকে সাইলেন্ট করল। তারপর ব্লুটুথ হেডফোনটাকে কানে গুঁজে নিল। ও চায় না কোনো অবাঞ্ছিত আওয়াজ ছেলের কানে যাক। লগ ইন পেজে ঢুকে নিজের ইউজার নেমটাকে টাইপ করল ও। Lilith99। নামটা কিন্তু ওকে তপতীই সাজেস্ট করেছিল। ওর পছন্দও হয়ে গেছিল। নেটে দেখেছে লিলিথ হচ্ছে প্রথম পুরুষ অ্যাডামের প্রথমা স্ত্রী। তাই ওটাকেই রেখেছে। লিলিথ। নামটা বেশ মিষ্টি। নেট থেকে বেছে বেছে একটা ছবিও ডাউনলোড করে প্রোফাইল পিকচার করেছে। জন কলিয়ারের আঁকা একটা ছবি। নগ্ন দেহী একটা নারী শরীরকে পেঁচিয়ে আছে একটা কালো ও লম্বা সাপ। এক দৃষ্টে ওই ছবিটাই ওর পছন্দ হয়ে গেছিল। তাই ওটাকেই প্রোফাইল পিকচার করেছে। অল্পক্ষণ সময় লাগল লগইন হতে। লগ ইন হওয়ার পর একটা নতুন পেজ খুলে গেল। প্রথমে একটা প্রোফাইল তৈরী করতে হবে। আর তার জন্য ওর কিছু পার্সোনাল ইনফরমেশন দিতে হবে। আগে থেকে তপতী সবকিছু শিখিয়ে দিয়েছে। ওর কথা মতই কিছু ইনফরমেশন ইচ্ছে করেই ভুল দিল। যেমন – বয়স ২৫। গায়ের রঙ – ফর্সা। হাইট – 5 ফুট 3 ইঞ্চি। এরকম আরো কিছু। কিন্তু এর পরের প্রশ্নগুলো যেন আরো ডার্ক হতে শুরু করল। Your Type – Dominant / Slave. এই প্রশ্নের অর্থ ও বুঝতে পারল না। অনেক ভেবে Slave অপশনটাতেই ক্লিক করল। পরের প্রশ্ন – You are interested in – Men / Women / Both. এটার উত্তর তপতী আগেই ওকে শিখিয়ে রেখেছিল। ও Both –এ ক্লিক করল। এর পরের প্রশ্নে ও আরো ভড়কে গেল। Your favourite sex position – Missionary / Doggy / Horse Riding. কোনটা ক্লিক করবে ভেবে পেল না। তিনটে পজিসনেই সু ওকে করে থাকে। তবে মজা হয় সবচেয়ে বেশী Missionary তেই। তাই ঐটাতেই ক্লিক করল। এরকম আরো অনেক রকমের ডার্ক আর ইন্টিমেট প্রশ্ন। মাথা ঠান্ডা করে এক এক করে ক্লিক করে যেতে লাগল। সবশেষের প্রশ্নটাতে এসে আরো একবার হোঁচট খেল। বুঝে উঠতে পারল না কি করবে। প্রশ্নটা ছিল – Do you want your face blurred – Yes / No. ও Yes তে ক্লিক করল। তবে নীচে লেখা ছিল ও চাইলে যখন খুশী এই অপশনটি চেঞ্জ করতে পারবে। কিন্তু ও জানে এই অপশনটা কোনোদিনই চেঞ্জ করবে না। কারণ এই অ্যাপে নিজের মুখ দেখানোর কোনো ইচ্ছেই ওর নেই। সবশেষে লোকেশনে কেবল Kolkata লিখল। ওর প্রোফাইলটা এতক্ষণে তৈরী হল। বেশ অনেকটা সময়ই লাগল। ঘেমে উঠেছে এরমধ্যে। সেটা গরমে নাকি উত্তেজনায় বুঝে উঠতে পারল না। কপাল আর গলার ঘামগুলো মুছতেই ও বুঝতে পারল জল তেষ্টা পেয়েছে। এই রে, জলটা তো ডাইনিং টেবিলেই রয়ে গেছে। তাড়াতাড়িতে আনা হয়নি। ফোনটাকে বিছানায় ফেলে রেখে ঘরের বাইরে বেরিয়ে এল। টেবিল থেকে জলের বোতলটা তুলে নিয়ে ছিপি খুলে কিছুটা জল গলায় ঢালল। আহঃ! কি আরাম! জলের বোতলটাকে হাতে নিয়ে আবার শোওয়ার ঘরে ফেরত এল। ঘরে ঢুকেই প্রথমেই ওর চোখটা পড়ল বিছানায় রাখা ফোনটার উপরে। লক স্ক্রিণের আলোটা নিঃশব্দে জ্বলছে। সাইলেন্ট থাকার কারণে কোনো আওয়াজ হয়নি। তাড়াতাড়ি এসে ফোনটাকে হাতে তুলে নিল। ও যা ভয় পেয়েছে, তাইই। অ্যাপটার একটা নোটিফিকেশন এসেছে। নোটিফিকেশন আইকনটাতে আঙুল বোলাতেই নীলচে বৃত্তটা ঘুরতে শুরু করল। তারপর ফুটে উঠল একটা লেখা। Baphomet34 wants to be your partner – Accept / Decline. প্রথমেই যেটা ওর চোখে পড়ে, সেটা হল নাম। Baphomet34। বিড়বিড় করে নামটা আরো একবার পড়ল ও। যদিও মানেটা ওর জানা নেই। নামের উপরে ক্লিক করে প্রোফাইলটায় ঢুকল। বয়স – 27। Male, Dominant, interested in Women, lives in Kolkata. এগুলো ছাড়াও আরো বেশ কিছু ইনফরমেশন ছিল, যেগুলো পড়তে পড়তে ওর কান আর মাথা দুটোই গরম হয়ে গেল। যদিও ‘আট ইঞ্চি’র কথাটা ওর একেবারেই বিশ্বাস হল না। যাই হোক। সব ইনফরমেশনগুলো পড়ার পরে ও বুঝতে পারল ফোনের স্ক্রিণে ওর আঙুলগুলো আরো একবার অস্থির হয়ে কাঁপতে শুরু করে দিয়েছে। অনেক ভেবে অবশেষে লম্বা একটা নিঃশ্বাস নিয়ে Accept বোতামটায় ক্লিক করল অনুরাধা।
05-03-2024, 07:59 PM
Interesting story
05-03-2024, 08:03 PM
এই ডেটিং অ্যাপ-এর ব্যাপারটা জানি না বলে আমার কাছে খুব ভালো লাগছে। একদমই নতুন রকম লাগছে। লিখতে থাকুন, সঙ্গে আছি।
09-03-2024, 12:38 AM
(This post was last modified: 09-03-2024, 12:39 AM by ray.rowdy. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
তোমার লেখা খুবই সুন্দর। আর কখনও চাইবো না তাড়াহুড়োর করে লেখার মানের সঙ্গে আপোস করো। কিছুটা দেরী হলে কোনো আপত্তি নেই, তবুও লেখার মানের সঙ্গে কোনো আপোস করো না।
এখন তোমার গল্পের কাহিনী খুব সুন্দরভাবে বুনে তুলেছো। খুব কম বাংলা লেখায়, এমনকি মূলধারায়ও এই ধরণের প্লটের দেখা খুব কম মেলে - যেখানে ছোটো ছোটো আদতে বিছিন্ন ঘটনা/চরিত্র অভিসারী হয়ে এক সমাপতনের দিকে এগিয়ে যায়। যদিও তোমার গল্পের মূল চরিত্ররা ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে যুক্ত, তবুও তোমার কাহিনীর স্বকীয়তা কোনো অংশে কম হয়ে যায় না। একটি খুব জনপ্রিয় অসাধারণ ইংরেজী সিনেমা 'Pulp Fiction' আর হিন্দীতে 'এক চলিশ কি লাস্ট লোক্যাল'-এ এই ধরণের story telling দেখা যায়। এটা না মেনে কোনো উপায় নেই যে এই ধরণের কিছু ভাবতে গেলে মগজান্ত্রের যথেষ্ট ব্যবহার করতে হয়। তুমি এই ভাবেই লিখতে থাকো।
খুব সুন্দর হচ্ছে। পরবর্তী পর্বের সাগ্রহে অপেক্ষায় রইলাম।
|
« Next Oldest | Next Newest »
|