Thread Rating:
  • 139 Vote(s) - 3.73 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery পদ্ম নাগের বিষ
Update din please
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
দাদা আপডেট একটু তাড়াতাড়ি দিন। পরবর্তীতে কি হতে চলেছে সেটা ভেবেই অনেক উত্তেজনার মধ্যে আছি।
Rajkumar Roy
Like Reply
অনেক ধন্যবাদ আমার গল্প গুলি পড়ার জন্য  Namaskar
হ্যা ঠিকই বলেছেন মাঝে মাঝে লেখককে কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আমি জানি যে সবাই হ্যাপি এন্ডিং চায় কিন্তু সবসময় সেটা দেওয়া সম্ভব হয়না। গল্পের গরুকে যেমন গাছেও তুলতে হয়, তেমনি নামিয়েও আনতে হয় বাস্তব জমিতে। ওই গল্পটিও তেমনি ছিল। হেনরি দাও নিজের গল্পে এমন সমাপ্তি এনেছেন। এক মা সন্তানকে ও স্বামীকে ছেড়ে দুই সাচ্চা মরদের সন্তান গর্ভে ধারণ করে অরণ্যে হারিয়ে যায়। সেটির প্রয়োজন ছিল। আর সেটাই গল্পটিকে অন্য মাত্রা দেয়।❤
[+] 3 users Like Baban's post
Like Reply
হেনরি দা আপডেট দিন , অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি, আপডেট সুন্দর করে গুছিয়ে একটু বড়ো করে দিন যাতে আমাদের অপেক্ষা সার্থক হয়।
[+] 2 users Like Amidevil's post
Like Reply
হেনরি দাদার কিছু ভাল গল্প সাজেস্ট করুন
Like Reply
Update din, onak din to holo!
Like Reply
Dada update plz
Like Reply
Thik . ওনার মঙ্গলসূত্র গল্পটার আপডেট আসেনি ওটা দারুন গল্প।।কবে উনি শেষ করবেন কে জানে
Like Reply
Apni shokol lekhoker guru.... Ostader ostad....  Apnar lekhar tarif korar vasha jana nei.... Porte porte mughdho hoye gelam.... Jug jug jio Henry Dada  Namaskar Heart yourock
---------------------------------------------------------------------------------------
Full throttle at maximum speed 
---------------------------------------------------------------------------------------
Like Reply
(07-12-2023, 12:21 PM)Baban Wrote: অনেক ধন্যবাদ আমার গল্প গুলি পড়ার জন্য  Namaskar
হ্যা ঠিকই বলেছেন মাঝে মাঝে লেখককে কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আমি জানি যে সবাই হ্যাপি এন্ডিং চায় কিন্তু সবসময় সেটা দেওয়া সম্ভব হয়না। গল্পের গরুকে যেমন গাছেও তুলতে হয়, তেমনি নামিয়েও আনতে হয় বাস্তব জমিতে। ওই গল্পটিও তেমনি ছিল। হেনরি দাও নিজের গল্পে এমন সমাপ্তি এনেছেন। এক মা সন্তানকে ও স্বামীকে ছেড়ে দুই সাচ্চা মরদের সন্তান গর্ভে ধারণ করে অরণ্যে হারিয়ে যায়। সেটির প্রয়োজন ছিল। আর সেটাই গল্পটিকে অন্য মাত্রা দেয়।❤

দাদা দয়া করে এই গল্পটির নাম বলবেন। পড়বো।
Like Reply
(08-12-2023, 08:30 PM)Charles1212 Wrote: দাদা দয়া করে এই গল্পটির নাম বলবেন। পড়বো।

লোভে পাপ গল্পের নাম
Like Reply
(08-12-2023, 08:30 PM)Charles1212 Wrote: দাদা দয়া করে এই গল্পটির নাম বলবেন। পড়বো।
ছাই চাপা‌ আগুন
Like Reply
Please ? update Henry da
Like Reply
(09-12-2023, 08:41 AM)Pmsex Wrote: ছাই চাপা‌ আগুন

Thanks.
Like Reply
রেপু কি ভাবে দিতে হয় ??
Like Reply
(09-12-2023, 08:02 PM)Amidevil Wrote: রেপু কি ভাবে দিতে হয় ??

Press the Rate option
Like Reply
সকালে চাঁপা আসার আগেই ব্যাগ গোছাতে শুরু করেছে রমা। খুব ভোরে উঠে ও স্নান করেছে। পীযুষের বুকটা কেমন দ্বিধায় কাঁপছে তরঙ্গমালার মত। চাঁপা আসতেই ছেলেকে নিয়ে বেরোলো ওরা।

রাস্তাটি দীর্ঘ। সকাল থেকেই তীব্র রোদ। রমা একটি হালকা গোলাপি সাধারণ সিল্কের শাড়ি পরেছে। গোলাপি ব্লাউজ। পিকুলর মাথাটা কোলে রেখে ও পেছনে বসেছে। রোদের জন্য তাকে বড় সানগ্লাসটা জোর করেই বার করে দিয়েছে পীযুষ। ওটা এখনো রমার চোখে। ওর ফর্সা ভরাট মুখের সাথে, কালো রোদ চশমাটা বেশ মানায়।

এগারোটা কুড়িতে ওরা শম্ভুর বাড়ির সামনে পৌঁছল। ষষ্ঠীপদ দাওয়ায় বসে নারকেলের পাতা থেকে পিঁচ খাঁচি আলাদা করছিল। ওর বউ লতা বললে---কই গো বুলির বাপ, নীল গাড়িটা দিদিমণিরটা আছে লা?

সত্যিই তো তার বাড়ির পাশ দিয়ে মেঠো রাস্তায় নীল রঙা গাড়িটা দুলতে দুলতে এগিয়ে গেল। ও কাজ ফেলে চলে এলো শম্ভুর বাড়ির সামনে। শম্ভুর বাড়ির দরজায় শেকল তোলা। ষষ্ঠীপদ এসে বলল---সার, শম্ভু তো নদীতে গিছে। ফিইরতে বিকাল হবে।

এবারও শম্ভুর সাথে পীযুষের দেখা হল না। ও ফিরে গেল তৎক্ষণাৎ। কাল দ্বিতীয়বর্ষের সেমিস্টার আছে। রমা দেখল ঘোরদোর এলোমেলো। তক্তাপোশে শুয়ে দিয়েছে পিকলুকে। শাড়ি না বদলেই টিকটিক করে এলোমেলো জিনিসপত্র সাজিয়ে ফেলল সে। ষষ্ঠীপদ ভয় পাচ্ছে গাঁয়ের লোক জানতে পারলে সাংঘাতিক হবে। রমাকে সে বললে---দিদিমণি ই গাঁ'টায় বড্ড বেয়াদব লোকে ভরে গিছে। আপনি শম্ভুর ঘরে আছেন জাইনলে রক্ষা লাই। ইদিকে জানেন শম্ভুটা মাথা গরম কইরে লেয়। লঙ্কা কাণ্ড বাধাইবে।

রমা চুপ করে অপেক্ষা করতে লাগলো শম্ভুর। মজিদের সাথে শম্ভুর ভাব হয়েছে আজকাল। মজিদ চাচা আজ শম্ভু নিয়ে গেছিল গভীর জঙ্গলে রায়মঙ্গলের খালে বিলে। ফেরার সময় মজিদ গান বাঁধলো। শম্ভু বললে---চাচা তুমার গলাটা কিন্তু ভালো আছে, বাপের রক্তে পায়েছ।

---হঁ রে বেদের পো, তুর বাপ যেমন তুরে বেদে বানাইছে, মোর বাপ চাইছিল আমি গান করি। আমরা জাতে .,, আমার বড় দাদা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, সে বইলল এসব গান বাজনা ঘরে চইলবে লাই, গুনাহ হবে। আর আমি এখুন ঘরে লা পাইরলেও ইচ্ছা হলে নদীর পানিরে, তোর চাচীর সাথে রাতে কুথা কওয়ার সময় এই গান গায়ে গুনাহ করে চলি। বড় দাদা জানল লাই, একদিন কবরে চইলে গেল।

ওরা দুজনেই হেসে উঠল। শম্ভুও বললে----বেদে হছি তো আছে, আমি সনাতন মাঝির নাতিটাও আছি লা। সাপ ধইরবার আনন্দ আরেক, মাছ ধইরবার আরেক। এখুন তোমার সাইথে থিকে মাছ ধইরতেই ভালো লাগে।

মজিদ বলল---ধইরতে পারলি ঘরে রাখা মাছটারে?

---কার কথা কও কাকা? বিড়িতে বেশ জোর টান দিয়ে বললে শম্ভু।

---শহর থিকে যে দিদিমণিটা তুর ঘরে আছে।

শম্ভু জিভ কাটলো। বললে---কি কও কাকা। বামুন হয়ে লোকে চাঁদে হাত দিবার কথা বইলে, এ যে বেদে, বেদে হয়ে চাঁদে হাত দিব কেমন কইরে! আর চাচা দিদিমণিটা বড় ভালোমানুষ। পড়ালিখা করা পন্ডিত, তার বরটাও বড় কলেজের মাস্টার আছে। আমি তারে সম্মান করি। ঠিক কুথাটা কও লাই।

---দ্যাখ শম্ভু। মাছ গঙ্গার হউ আর গাঙের, লা কি রায়মঙ্গলের খাল বিলটার, মাছ ধরা দিতে চায় সেই মাঝির জালটারে। তুই সবল জোয়ান মরদ আছিস, তুর জালে মাছ উইঠবে লাই এ কেমুন কথা।

---মজিদ চাচা ঠিক কইছ লা। দিদিমণি বড়টা আছে আমার চেয়ে। তারে সম্মান কইরি।

মজিদ হেসে বলল---সম্মান কি আমি তুর চাচীরে করি লাই? যারে ভালোবাইসবি সে যেমন তুর পোষ্য সাপগুলার মত হবে, তেমুন সম্মানটাও রাইখতে হয়। তুর চাচী আমার পোষ্যটা আছে, আমিও তার পোষ্য আছি। কিন্তু সম্মানটা দুজনের কম লাই। তাই তো পাঁচটা বাচ্চার আব্বা হলেও পিরিত কমে লাই রে।

শম্ভু কিছু বলতে যাচ্ছিল, মজিদ থামিয়ে গান ধরল---
বোশাখ মাইস্যা ভাসা পানি রে বাতাসে/ বাদাম দেইখ্যা চাইয়া থাকি আমারানি কেউ আসে রে/ যেদিন হইতে নয়া পানি আইলো বাড়ির ঘাটে সখী রে/ অভাগার মনে কত শত কথা উঠে রে।

কালনাগিনীর ঘাটে নেমে শম্ভু নৌকাটাকে বাঁধলো শিরীষ গাছের সাথে। তারপর জালপত্তর নিয়ে ঘরের কাছে এসে দেখল দরজা খোলা। তখনও তার পায়ে কাদা। কলতলায় গিয়ে ধুয়ে এলো সে তার পা। জাল বিছিয়ে দিল শেষবেলার পড়ন্ত রোদে। ঘরে এসে চমকে গেল সে! সব এলোমেলো জিনিসপত্র গোছানো। কোথাও কোনো অগোছালো নেই। বিছানায় শায়িত পিকলু ওর দিকে তাকিয়ে আছে। মুখ তার কিশোর বয়সের হাসি।
শম্ভুর বুকটা মোচড় দিয়ে উঠল। গ্যাস স্টোভের পাশে বসে রুটি করছে রমা। গোলাপি ব্লাউজের অনাবৃত পিঠের কোমল অংশে ঘাম জমে চিকচিক করছে। ফিরে তাকালো রমা। বললে---শম্ভু, এত দেরি করলে, আমার পিকলুকে একটু দেখো ভাইটি।

শম্ভুর বুকের মোচড়টা ভেঙে একটা তীব্র জোয়ার আসতে চাইছে। তবু সে টলোমলো নৌকা নয়, কঠিন হয়ে বললে---দিদিমণি কেন আইলেন? বিপদ আছে! আপনি জানেন লাই?

----জানি শম্ভু, আমি থাকলে তোমার বিপদ। কিন্তু আমার ছেলের কি হবে? ও যে বাড়ি গিয়ে আবার অসুস্থ হয়ে পড়ল।

শম্ভুর এখন যতই বিপদ আসুক, ভাঙুক তার ঘর, না সে মনের গোপনে জ্বলতে থাকা বাসনাবৃত্তের অসম নারী রমাকে ফেরাতে পারবে, না পারবে কিশোর পিকলুর জীবন নিয়ে ছিনিবিনি খেলতে।

শম্ভু একটাও কথা বলেনি আর। বড্ড গম্ভীর হয়ে আছে সে। স্নান করে লুঙ্গি বদল করে বসল পিকলুর মাথার কাছে। ওর সর্বাঙ্গ মালিশ করতে লাগলো ঐ তেলটা দিয়ে। রমা রুটি করতে করতে একবার দেখছে শম্ভুকে, আরেকবার পিকলুকে। শম্ভুর মালিশে পিকলুর শরীরে যে একটা যন্ত্রনা কমে আরাম ভাব আসছে সেটা পিকলুর চোখে মুখে অভিব্যক্তি দেখে বোঝা যায়।
[+] 11 users Like Henry's post
Like Reply
ষষ্ঠী কিছুক্ষণ পর হাজির হল। রমার নির্দেশ মত বাজার করতে গিয়েছিল সে। বললে---বাজারে খবরটা এইর মধ্যে রইটে গিছে, দিদিমণির আসার খবরটা লিয়ে মস্করা চইলতেছে। শম্ভু এখন কি কইরবি?

শম্ভুর সর্বাঙ্গ ক্রুদ্ধতায় শক্ত হয়ে উঠছে। কোনোভাবেই সে গ্রামের ঐসব মাতব্বরদের আর বরদাস্ত করবে না। হলে ভাঙুক তার ঘর। দিদিমণির কাছে আর সে ছোট হবে না।

রমা তাকালো শম্ভুর দিকে। বললে---শম্ভু ভয় পাচ্ছো?

এ যেন চ্যালেঞ্জ জানালো তাকে রমা। প্রচণ্ড পুরুষালি হুঙ্কার ছেড়ে সে বললে---আসুক শালারা আইজ, দেখে লিব কে মায়ের দুধটা খেয়েছে!

শম্ভুর দীর্ঘকায় সবল চেহারার সাথে এই তেজই যেন মানায়। রমার তাই ভালো লাগলো। শম্ভু যে দুর্বল পুরুষ নয়, এটাই সে জানতে চেয়েছিল। তার প্রমাণ সে পেয়ে গেছে।

ষষ্ঠী বারবার দরজা দিয়ে উঠানে গিয়ে দেখছে কেউ আসছে কিনা। বড্ড ভয় পাচ্ছে সে। দিদিমণি শম্ভুকে চেনে না, সে তার বাল্যকাল থেকে বেড়ে ওঠা বন্ধুকে আপাদমস্তক চেনে। শম্ভু রাগের বশে যদি কিছু করে বসে! ইউসুফ মোল্লার বাহিনী দুধর্ষ গুন্ডা মাস্তানে ভরা। ভোটের সময় ওরাই গ্রাম কাঁপায়। দু'টোর পর আর কাউকে বুথে ঢুকতে দেয় না। একসময় বরকত আলী, নিতাই মণ্ডল গ্রামের বড় নেতা ছিল। বেশ ক্ষমতা ছিল গ্রামে তাদের। এখন বরকতের সে প্রভাব নেই। ইউসুফ তার নিজের ভাইপো, অথচ তার ভয়েই কিনা সে গ্রাম ছাড়া হয়ে আছে দশ বছর। নিতাই মণ্ডল দল বদল করে ইউসুফের সাথে ভিড়ে গেছে। আবার শোনা যায় ভেতরে ভেতরে নাকি নিতাই অন্য কিছু ভাবছে। মণ্ডল পাড়ার সাথে .,দের লড়াই বাধলে তার লাভ। এসব খবর ষষ্ঠী রাখে। সাতেপাঁচে না থেকেও ও সাবধান থাকে।
শম্ভুর ওপর অবশ্য ইউসুফের একটা দুর্বলতা আছে। সেটা প্রথমত ইউসুফের দাদাজিকে কেউটে কামড়ে ছিল বহুবছর আগে। ভীমনাগ বেদেই বাঁচিয়েছিল তখন। আর দ্বিতীয়ত ইউসুফ বত্রিশ বছরের শম্ভুর দীর্ঘ সুঠাম চেহারাটা সম্পর্কে ভালো করে জানে। তাই ওর দলে টানতে চায় শম্ভুকে। যদিও তা কখনো ইউসুফ প্রকাশ করেনি, তবে ষষ্ঠীর কানে আসে কথাটা।

অবশ্য শম্ভু এসব থেকে দূরে থাকে। ভোট যে কাকে দেয় তা আজও জানে না ষষ্ঠী। শম্ভুর বাবা ভীমনাগ বেদের ছিল বরকত আলীর ওপর অগাধ বিশ্বাস। তখন তো ইউসুফ মোল্লাও ছিল বরকতের লোক। কে জানে বরকত আলীর পার্টিকেই হয়ত ভোট দেয় শম্ভু, নতুবা সেও এখন ইউসুফকে ভোট দিচ্ছে।

ষষ্ঠী দাওয়ায় বসে প্রহরীর মত তাকিয়ে রয়েছে সরবেড়িয়া মুখী উত্তরের রাস্তাটার দিকে। একটা জটলা এগিয়ে আসতে দেখেই সে ভয় পেয়ে গেল। দ্রুত শম্ভুর কাছে এসে বললে---শম্ভু উরা আইসছে! তুই মাথাটা ঠান্ডা রাইখবি। একদম ঠান্ডা মাথায় কুথা কস।

শম্ভু মোটা বাঁশের লাঠিটা উঁচিয়ে ধরে বলল----আজ যদি ল্যাওড়ারে লা মাইরে ফেলি আমার নামটা শম্ভু বেদে লয়!

রমা রান্না ছেড়ে তৎক্ষনাৎ শম্ভুর দিকে এগিয়ে বকুনির স্বরে বললে--- কি হচ্ছে শম্ভু!

শম্ভুর খেয়াল হল সে মুখ ফস্কে একটা অশ্লীল শব্দ প্রয়োগ করে ফেলেছে। পিকলুর দিকে তাকিয়ে লজ্জা পেল। বললে---কিছু মনে করবেন লাই দিদিমণি। গেরামের মূর্খ মানুষ তো, রাগ হইলে এসব গালাগাল দিই।

রমা আটা মাখা হাতটা ধুয়ে বললে---ওদের আসতে দাও। তোমার সাথে আমি থাকবো। যা বলার আমি বলব।

শম্ভু চমকে গেল। সে বললে---লা, দিদিমণি আপনি উদের সামনে যাবেন লাই। উরা বড় নোংরা কথা বইলবে।

---বলুক। আমি পরিষ্কার করে দেব আজকে ওদের আমার আর তোমার মধ্যে সম্পর্কটা।

ইউসুফ মোল্লা আজ এলেও দীননাথ আজ ভয়ে আসেনি। ও ষষ্ঠীপদর ঘরের কাছে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ওর ভয় শম্ভু যদি রাগের বশে ওকেই মেরে ফেলে। সেদিন গলায় শক্ত হাতের চাপে ওর অবস্থা বড্ড ভয়ানক হয়েছিল, তিনদিন গলা ব্যথায় কাহিল হয়ে পড়েছিল।

ইউসুফ মোল্লা পৌঁছাতেই ওর ছেলেরা শম্ভুর চালা থেকে টালি খুলে নিতে শুরু করল। আর তক্ষুনি বার হয়ে এলো রমা। বললে---আপনারা আর কেউ যদি একটা টালিতে হাত দেন আমি এখুনি আইনত ব্যবস্থা নেব।

এই গ্রামে আইন বলতে ইউসুফই। সে চাইলে আইন এখানে আসতে পারবে। তাই তার আইনকে বিশেষ ভয় নেই। ওর দলের যুবক ছোকরা কিছু একটা অশ্লীল কথা বলতে যাচ্ছিল রমাকে। ইউসুফ মোল্লা তাকে থামিয়ে বললে---দিখেন দিদিমণি, শহর থিকে বেদের ঘরে আইসে থাইকবেন আপনার লজ্জা লা থাইকতে পারে, আমাদের গেরামের একটা সুনাম আছে। এসব আপনার শহরে চইলবে গেরামে চইলবে লা।

রমা ঝাঁঝিয়ে উঠল, বললে---কি মনে করেন আমাকে? শুনে রাখুন আমি বর্তমানে শম্ভুর স্ত্রী। কাজেই আপনাদের এসব ভাঙাভাঙি করা অন্যায়।

চমকে উঠল শম্ভু! চমকে উঠল ষষ্ঠী! কি বলছে কি দিদিমণি! শম্ভু দ্রুত রমাকে থামাতে যাবার আগেই ইউসুফ মোল্লার দলের একটি মধ্যবয়স্ক লোক বলে উঠল---প্রমান কি আইছে আপনি তারে বে করছেন?

রমাও অপ্রস্তুত হয়ে পড়ল। সত্যিই তো প্রমান তো কিছুই নেই। আগে পরে কিছু না ভেবে বললে----এখুনি আপনাদের কোনো প্রমাণ দিতে পারবো না ঠিকই। কিন্তু কালই আমরা বিয়ে করব আপনাদের গ্রামেই।

শম্ভু বলে উঠল---দিদিমণি....
[+] 9 users Like Henry's post
Like Reply
রমা ওকে বাধা দিয়ে ইউসুফ মোল্লাকে বললে---এর পরেও কি আপনাদের কোনো সমস্যা আছে?

ইউসুফ মোল্লা একটু অবাক হল বটে, একজন শহরের এমন শিক্ষিতা মহিলা কি করে এই বেদের সাথে সংসার করবে! তবে ও সকলকে খান্ত করে বললে---ঠিক আছে দিদিমণি। তালে আমাদের কুনো সমস্যা লাই। আমি তো শম্ভুরে সেকুথাই বলেছিলি, তু যদি বিয়ে শাদী করে রাখিস, তালে কারুর কুনো সমস্যা লাই।
তারপর নিজের লোকেদের বললে---এই চল সকলে। দিদিমণি কিছু মনে করবেন লাই। ই বেদের বাপটারে আমি সম্মানটা করি, আমি কখুনো চাই লাই শম্ভুর ক্ষতি হোক।

ওরা চলে যাবার আগে মণ্ডল পাড়ার এক ছোকরা বললে---কাল মন্দিরে দিখব বে'টা হয় কি লা।


শম্ভু বললে---দিদিমণি আপনি কিসব বইলেন, আপানার বে হয়ে গিছে। মাস্টার বাবুটা আপনার স্বামী! কি কইরে এসব....!

রমা মৃদু হেসে বললে---দেখো শম্ভু, তোমাকে আমি ভাইয়ের মত ভাবি। আমার ছেলের চিকিৎসা করানোর জন্য এটুকু মিথ্যে বললে কিচ্ছু এসে যায় না।

শম্ভুর বুকে অদ্ভুত একটা অবাস্তবোচিত উন্মাদনা যেটা তৈরি হয়েছিল, যে উন্মাদনা নিয়ে সে সন্দিহান হয়েও বুকের মধ্যে মুহূর্তের জন্য রঙবেরঙের ঘর তৈরি হয়েছিল, তা হুড়মুড় করে ভেঙে গেল। লজ্জায় সে হেসে ফেলল ঈষৎ। মনে করলে, সত্যিই ক্ষণিকের জন্য কিসব ভাবনা হয়েছিল তার!


ষষ্ঠীপদ অবশ্য বললে---ওরা কি বিশ্বাস কইরবে, যে দিদিমণি শম্ভুরে কাল বে কইরবে! দীননাথ হয়ত চর পাঠায়ে খোঁজ লিবে সত্যি বে হছে লা কি মিথ্যা। তাছাড়া ইউসুফ সাহেবের লোক শাসায় গিছে, কাল মন্দিরটায় লা কি দিখবে বে'টা হয় কি লা!

শম্ভু বলে উঠল---তুর কি মাথা খারাপ। তা বইলে কি দিদিমণি সত্যি সত্যিই আমারে বে করবে লা কি! উদের বিশ্বাস করাইতে আর কি কি কইরতে হবে শুনি?

রমা বললে---নিছক একটা বিয়ের নাটক করা যায় না? এখানে কোনো মন্দিরে? দেখো ভাই, আমার ছেলেটাকে নিয়ে আমি চিন্তিত। ওকে শুধু সুস্থ করে দাও।

শম্ভু সত্যিই একটু লজ্জিত বোধ করল। সে ভীমনাগ বেদের ছেলে হয়েও একজন অসহায় মহিলার সাপে কাটা সন্তানকে বাঁচাতে তাকে দ্বিধাজীর্ণ হতে হচ্ছে। বললে---দিদিমণি, বে একটা নিয়ম আছে, সে কি কইরে হবে। আপনি হইলেন বে করা অন্যের বউ। মাস্টার বাবুর বউটা আছেন আপনি। মন্দিরে পুরুত ডাইকে বে কইরা ঠিক লয়।

ষষ্ঠীও তাল মিলিয়ে বললে---ঠিক কছে শম্ভু। বে করা একজন কি কইরে অন্যরে ঠাকুরের সামনে আবার বে করবে। দিদিমণি আপনি বিপদে পইড়ছেন বলে যা লয় তা করতে হবে লা কি। দিখা যাক কদ্দুর উরা কি কইরে।


রমা ওদের শান্ত করল। বললে---দেখো আমার স্বামী নাস্তিক মানুষ। সে এসব রীতিনীতিতে বিশ্বাস করে না। আমিও তেমন একটা করি না। ফলে ক্ষণিকের জন্য এসব লোকচারে আমাদের কিছু আসে যায় না। আমাদের কাছে আমাদের সন্তানের সুস্থ হয়ে ওঠাটাই বড়।

রমার প্রতি শম্ভুর শ্রদ্ধা বেড়ে গেল অনেকগুন। একজন মা তার সন্তানের জন্য সব কিছু করতে রাজি। বড্ড অসহায়ও লাগছে শম্ভুরও। বড্ড পীড়া দিচ্ছে তার মনে; এমন সভ্রান্ত সুশিক্ষিতা নারীর অসহায়তার জন্য তাকে বিয়ে করতে বাধ্য হচ্ছে। টা নাহলে জাতিতে বেদে, হাভাতে অশিক্ষিত এই বেদেকে ভুলবশতও এমন ভদ্রমহিলা বিয়ে করতে পারে নাকি!

রাতে শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগলো শম্ভু। এক অদ্ভুত বিয়ে হচ্ছে তার। যে বিয়ে মিথ্যে। যে বিয়েটা নিছকই একটা অভিনয়। শুধু একটা কিশোর ছেলের জীবন বাঁচানোর শর্তে এই বিয়ে। বড্ড হাসি পাচ্ছে শম্ভুর। এই হাসি নিজের প্রতি তাচ্ছিল্যের, যন্ত্রণার।
+++++
Like Reply
দেউলবাড়ি আর সরবেড়িয়া মাঝে বুড়ো শিব মন্দির।মন্দিরটি বহু পুরোনো হওয়ায় বুড়ো বলা হয়। বিশাল বট গাছের গায়ে ওই মন্দিরের ফাটল থেকেই শম্ভু কতবার সাপ ধরেছে। মন্দিরে হাজির হল ষষ্ঠী, বুলি, শম্ভু আর রমা। লতা রয়ে গেছে ঘরে, পিকলুকে একলা থাকতে হত তা নাহলে। তাছাড়া লতার মনে একটা অদ্ভুত ঈর্ষা হচ্ছে। শম্ভুর প্রতি ওর দেহমনে চাপা উত্তাপ সবসময়ের জন্য ক্রিয়াশীল। নিজেকে কখনো কখনো মনে হয় ঐ একমাত্র এই সুঠাম পুরুষটির প্রণয়িনী। একদিন না একদিন শম্ভু তার শরীরকে স্পর্শ করবে। কঠিন পুরুষের সুখ দেবে। কিন্তু সেই শম্ভু বিয়ে করছে দিদিমণিকে। যদিও এটা নাটক। তবুও তীব্র জ্বলন হচ্ছে তার। তাই সে পিকলুর কাছে থেকে যাওয়াই ঠিক করেছে। চোখের সামনে নিজের গোপন নিষিদ্ধ কামনার পুরুষটিকে অন্যের স্বামী হতে সে দেখতে পারবে না।


রমা সাধারণ একটা নীল রঙের সিল্কের শাড়ি পরেছে। যেমনটা ও বাইরে কোথাও গেলে পরে। তার সাথে কালো ব্লাউজ। গলায় ওর পীযুষের দেওয়া সদ্য জন্মদিনের মুক্তোর হারটা। আসলে রমাও নিজে বড্ড অস্বস্তিতে। পীযুষের মত সে মোটেই নাস্তিক নয়, হতে পারে শিক্ষিতা, আধুনিক বিজ্ঞান সচেতন। কিন্তু তা বলে মিথ্যে হলেও একটা ভিন্ন পুরুষের সাথে ঈশ্বরকে সাক্ষী রেখে লোক দেখাতে কিছু বিয়ের রীতিনীতিতে তাকে অংশ নিতেই হবে! রমার কাছে বিড়ম্বনা বাড়ছে বৈকি। তবু সে জানে এই গ্রামে পিকলুকে নিয়ে থাকতে হলে, এটাই এখন একমাত্র উপায়।

ষষ্ঠী বা শম্ভু মন্দিরে আসার সময়ই দেখেছে তাদের সন্দেহটা অমূলক নয়। মন্দির থেকে সামান্য কাছেই চায়ের দোকানে দীননাথ স্বয়ং বসে আছে সকাল থেকে। সঙ্গে গ্রাম সদস্য ইউসুফ মোল্লার সাগরেদ মণ্ডল পাড়ার বাসুদেব মণ্ডল।

বিয়ে করতে একজন প্রবীণ মানুষকে লাগে। ষষ্ঠীপদ আগে থেকেই তার ব্যবস্থা করে রেখেছে। খানিক পরেই হাজির হলেন প্রফুল্ল মাঝি। বয়স্ক মানুষটা রমাকে দেখে বিস্মিত হলেন। রমার রূপে, বর্ণে, ব্যক্তিত্বে শহুরে বনেদিয়ানা স্পষ্ট। সে কি করে একটি বেদের ছেলে কে বিয়ে করে!

পুরুত মন্ত্রচ্চারণ শুরু করলেন। তার আগে জিজ্ঞেস করে নিলেন বর-কনে উভয়ের বয়স। শম্ভুর বত্রিশ, রমার ঊনচল্লিশ। নিজের চেয়ে সাত বছরের ছোট একটি যুবককে বিয়ে করেছে সে। গ্রামীন বৃদ্ধ পুরুতের অস্পষ্ট মন্ত্রচ্চারণ, কানে ঠেকছে শম্ভু এবং রমা দুজনেরই---
যদেতৎ হৃদয়ং তব তদস্তু হৃদয়ং মম। যদিদং হৃদয়ং মম, তদস্তু হৃদয়ং তব।
যদেতৎ হৃদয়ং তব তদস্তু হৃদয়ং মম। যদিদং হৃদয়ং মম, তদস্তু হৃদয়ং তব।

পীযুষের মা আর রমার বাবার ইচ্ছেতেই এমন মন্ত্রচ্চারণ করে বিয়ে হয়েছিল পীযুষ-রমার, ঠিক আজ থেকে সতেরো বছর আগে। সেই বিয়ের আয়োজন হয়েছিল দুর্গাপুরে রমাদের বাড়িতে। সানাইর শব্দ, আত্মীয় স্বজনের ভিড়ে সেই বিয়ে দেড় দশক পেরিয়ে আজ ফিকে স্মৃতি হয়ে গিয়েছে। এই বিয়ে ভিন্ন, গ্রাম্য মন্দিরে প্রস্তর নির্মিত প্রাচীন শিব মূর্তির সামনে। এখানে ভিড় নেই। কেবল এই তিন চারজন। তার মধ্যে বুলি আবার নাবালিকা ছোট মেয়ে। বাইরে অবশ্য চায়ের দোকানে দু চারজন নজর রাখছে।

রমা গলার কাছে স্পর্শ করে রেখেছে পীযুষের দেওয়া মুক্তোর হারটি। এই হারটিই যেন তার রক্ষা কবচ, পীযুষ আর তার মধ্যে বিশ্বাসের সেতু। মন্ত্রের প্রতিটি শব্দ রমাকে অস্বস্তি প্রদান করছে বারবার। এই লোকাচার দ্রুত শেষ হোক, সেটাই এখন ও চায়।

মন্ত্রচ্চারণের পর মালা বদল ও সিঁদুর দান পর্ব। রমার হাতে আগে থেকেই লাল একটা পোলা আর সোনার চুড়ি আছে। কপালে ও সামান্যই সিঁদুর দেয়, সেটাও সবসময়ের জন্য নয়।
মালা বদলের সময়টা তেমন কিছু বোধ না হলেও সিঁদুর দানটা এড়িয়ে যেতে চাইছিল রমা কিংবা শম্ভু। কিন্তু প্রফুল্ল মাঝি বকুনি দিয়ে বললে---বে কইরবি সিঁদুর দিবি লা, এ কেমুন কুথা!

রমার কপালে মৃদু সিঁদুরের চিহ্ণ যেটুকু আছে সেখানে গাঢ় করে সিঁদুর দিল শম্ভু। বুকটা কেঁপে উঠল রমা মৈত্রের। হঠাৎ করে মনে হতে লাগলো হাজার বছর ধরে চলে আসা এসব লৌকিকতার কি কোনো মূল্য নেই! পুরোনো দিনের মানুষরা বলেন বিয়েটা কোনো ছেলেখেলা নয়। তারা কি তবে ছেলেখেলা করছে? রমার অবশ্য কিছুই করার নেই। সে পীযুষের স্ত্রী, পীযুষেরই থাকবে। শুধু পীযুষ আর তার ভালোবাসার ঔরসে গর্ভজাত সন্তানকে বাঁচাতে তৎপরতার স্বার্থে এই ছেলেখেলাটুকু করে যেতে হবে তাকে।
শম্ভুর অবশ্য বুকে মোচড় দিয়ে উঠছে ঝড়। দিদিমণি তার চেয়ে সাত বছরের বড়। দিদিমণিকে সে বে করছে, হোক না নকল, এই বিয়ে কি সে কখনো ভুলে যাবে! ছ মাস পর দিদিমণি ঘর ফাঁকা করে চলে গেলে কি তার রমা মৈত্রকে মনে পড়বে না? শম্ভু সিঁদুর দিয়ে তাকিয়ে রয়েছে রমার দিকে। রমারও চোখ নিবদ্ধ শম্ভুর প্রতি।

ঐ সামান্য লাল পোলা আরে দু হাতে দুটি সোনার চুড়ি ছাড়া রমা কিছু পরে না। সেখানেই আগের পোলাগুলি বার করে শম্ভু নিজেই হাতে পরিয়ে দিল নতুন শাঁখা পোলা। শম্ভু যেন হঠাৎ করেই গভীরভাবেই এই বিয়ের অংশ হয়ে গিয়েছে। তার যেন এখন মনে হচ্ছে দিদিমণির রূপটা বদলে গেছে। এখন যেন সত্যিই তার বে করা ফর্সা টকটকে বউ।

প্রফুল্ল মাঝির পা স্পর্শ করে ওরা আশীর্বাদ নিল। প্রফুল্ল মাঝি বললেন---বৌমা, তোমারে আশীর্বাদ দিতেছি শম্ভুর ঘর আলো কইরে তোমার কোলে একটা ফুটফুটে বাচ্চা আসুক।

লজ্জায় লাল হয়ে গেল রমার মুখটা। শম্ভুর মুখটা বরং হাসি হাসি। মিথ্যে বিয়ের নাটকে এমন আশীর্বাদে ওরা কেউ নিজেদের মুখ চাওয়াচায়ি করতে পারছে না।

ফিরবার সময় দেখক মন্দিরের বাইরে রাস্তার মুখে কয়েকজন গ্রাম্য মহিলাদের ভিড়। দু একজন পুরুষ মানুষও ইতিউতি দাঁড়িয়ে রয়েছে। কারোর কোলে বাচ্চা। কোথাও বা ষোড়শী কুমারী মেয়ে লাজুক ভাবে তাকিয়ে আছে রমার দিকে। তাদের মধ্য থেকেই একজন বৃদ্ধা মহিলা এগিয়ে সে বললেন---আমি হইলাম গিয়ে বৌমা তোমার দিদা শাশুড়ি সম্পর্কে। সনাতন, মানে শম্ভুর দাদুটা হইল আমার দেউর। এই উপহারটা দিলি তুমারে বৌমা। সামলাই রাখো।

রমা দেখল কাগজে মোড়া একটা সোনার নথ। শম্ভুর যে এত আত্মীয় আছে রমার জানা ছিল না। অবাক চোখে তাকাতে শম্ভু বলল---দিদিমণি সুখের পায়রাটা জাইনেন, আমি বিয়ে কইরছি আপনার মত শহুরের দিদিমণিটারে, ঘরে আলো জ্বইলছে, জিনিসপত্র আইসচে, এখুন আমার কুত আত্মীয়র দিখা পাবেন। তা নালে, এই ষষ্ঠীটা ছাড়া বেদের ব্যাটার সাথে কারুর কুনো ভাব ছিল লাই।

বিয়ে সেরে ওরা ফিরল শম্ভুর দোচালা ঘরে। লতা কটমট করে তাকিয়ে দেখতে লাগলো রমা দিদিমণিকে। লতার চাহুনি নজরে এসেছে রমার। কিন্তু রমা জানে শম্ভু তারও নয়, লতারও নয়। দুজনেই খালি এই যুবকের উপর সুযোগ নিতে চায়। লতা চায় তার দেহের অতৃপ্ত যৌনক্ষুধা মেটাতে, রমা চায় তার সন্তানের সুস্থতা।

পিকলু আলতো করে বললে---মা, কোথায় গিয়েছিলে তোমরা? খিদে পেয়েছে।

রমা শুনতে পাচ্ছে পিকলুর উচ্চারণ একরাতে শম্ভুর চিকিৎসায় খানিকটা স্পষ্ট। বেশ চঞ্চলও দেখাচ্ছে ওকে। শম্ভু বললে---দিদিমণি, খাইয়ে দেন ছেলাটারে আগে কিছু। তাইর পরে লা হয় রাঁইধবেন।

তাই করল রমা। পিকলুকে খাইয়ে ও রান্না করতে গেল। লতা বঁটিতে মাছ কাটছিল। ষষ্ঠী আর শম্ভু বেরিয়েছে বাজারে। রমা বললে---লতা তোমার হল মাছ কাটা?

লতা মাছগুলো কলতলায় ধুয়ে এনে নুন হলুদ মাখাতে মাখাতে বললে---দিদিমণি, মরদ হল গিয়ে বাঘের মত। নকল বিয়ে কইরলেও বাঘকে সামলাইতে পাইরবেন তো? বাঘ কখুন কি কইরে ঠিক লাই, সুন্দরবনের বাঘ সামনে মানুষ দেইখলেও কখুনো খায় লাই, আবার কখুন যে তার খিদা বাইড়ে যায় বুঝতে পারবেন লাই। যার জইন্য বাঘে বিশ্বাস করে লা মানুষ।

রমা বুঝতে পারলো না ঠিক কি বলতে চাইছে লতা। বললে---আমি কিছু বুঝতে পারলাম না লতা। ঠিক কি বলতে চাইছো।

লতা মুচকি হেসে বললে---ঠিক সময় হইলে বুইঝতে পাইরবেন।

চলবে।
Like Reply




Users browsing this thread: 3 Guest(s)