Thread Rating:
  • 139 Vote(s) - 3.73 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery পদ্ম নাগের বিষ
দুর্দান্ত, আপনার লেখা গল্প হলো সেরার সেরা , অসাধারন বিল্ড আপ কোয়ালিটি, এই ফোরামে আপনি ও আর একজন মাত্র লেখক আছেন যাঁদের গল্প গ্রোগাসে পড়া যায়, আপনার গল্পে কোনো রকমের ফোর্স ফুল সেক্স থাকে না মানসিক সম্পর্কের পর শারীরিক সম্পর্ক আসে এটাই দারুন লাগে , না হলে অন্যদের শুধু ফোর্স ফুল সেক্স আর অবাস্তব কাহিনীর ফসল। আপনি হলেন সেরার সেরা।
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
হ্যা জানি আগামী দিনে এর চেয়েও হয়তো দুর্দান্ত পর্ব আসবে কিন্তু আমার কাছে এই পর্বটা অন্যতম সেরা পর্ব এই গল্পের। ডিটেলে আলোচনার পাশাপাশি এক অশিক্ষিত কিন্তু এক মানুষের একাকিত্ব ও একমাত্র চাহিদারও হারিয়ে যাওয়া মেনেও নিতে না পারার কষ্ট। অন্যদিকে সেই মহান নাগের অন মাই ওন টার্ম মন্ত্র মেনে শিকারের আনন্দ সব মিলে জবরদস্ত।

একদিকে এক জন মুক্ত জীবনের একাকিত্ব থেকে মুক্তি পেতে খুঁড়ে বেড়াচ্ছে সঙ্গী, অন্য দিকে এক প্রাণী বন্দি জীবন থেকে মুক্ত হয়ে হয়ে উঠছে কারোর কাছে বিপদের কারণ। উফফফফ কি পর্ব!
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
পাঠকের ভালোবাসাই আমার লেখার মেজাজ। বাংলা সেকশনে ভালো গল্প কমে যাচ্ছে। সেই exbii এর দিনগুলো মনে পড়ে। অনেক ভালো ভালো লেখা হত। লেখকরা ছিলেন। হারিয়ে গেছেন কোথায় তারা। সবকিছু ঠিকঠাক চললে আগামীকাল আপডেট আসবে। ধন্যবাদ পাঠকদের।
[+] 3 users Like Henry's post
Like Reply
আমাকে একটা উপায় বলবেন কেউ xossipy থেকে গল্প কপি করা যাচ্ছে না। ফলে ট্রান্সলেট ব্যবহার করে তামিল গল্পগুলো পড়তে পারছি না। কি করা যায়?
Like Reply
(12-11-2023, 12:01 AM)Henry Wrote: পাঠকের ভালোবাসাই আমার লেখার মেজাজ। বাংলা সেকশনে ভালো গল্প কমে যাচ্ছে। সেই exbii এর দিনগুলো মনে পড়ে। অনেক ভালো ভালো লেখা হত। লেখকরা ছিলেন। হারিয়ে গেছেন কোথায় তারা। সবকিছু ঠিকঠাক চললে আগামীকাল আপডেট আসবে। ধন্যবাদ পাঠকদের।

এটা ধ্রুবসত্য! যাদের জন্য এতো কিছু তাদের ভালোবাসা পেলে উৎসাহ হাজার গুন বেড়ে যায়। সেই যবে থেকে এখানে এসেছি অর্থাৎ শুধুই পাঠক হিসেবে তখন থেকে আপনার লেখা পড়ছি। সেই পাগলা দাদার সাথে এক মায়ের মিলেমিশে এক হয়ে যাওয়া কিংবা জয়নাল ও দাদার এক নারীকে নিজের করে নেওয়া। তারপরে আপনাকেও পাঠক হিসেবে শুরুতে পেয়েছি আমি। ধন্যবাদ।

আসলে ভালো গল্প কমে যাওয়ার থেকেও মূল কথা হল কেউ কেউ নিজের সৃষ্টিকে সিরিয়াস নেয়না। দু চারটে পর্ব দিয়ে চলে যান। হয়তো শুরু ভালোই ছিল কিন্তু তারপরে খেই হারিয়ে ফেলে। আর এর থেকেই পাঠকের বিশ্বাস কমে যায়। আমি সবসময় মানি শুরু করলে শেষ করতেই হবে। সেই ভেবেই লিখে এসেছি, আপনিও নিজের সবটুকু দেন। আসলে সেই শুরুর গসিপিটার জাদু এই জন্যই কমছে। খারাপ লাগে। কিছু এমন লেখকের জন্য বাংলার সেক্স গল্পের বেস্ট ঠিকানার অবস্থা খারাপ হচ্ছে। তবু পাঠক বন্ধুরা আজও ভালো গপ্পের সাথে আছে। তা সে অজাচার হোক বা ব্যাভিচার বা যে বিষয় নিয়েই হোক।

লিখতে থাকুন আমাদের জন্য। এই ভাবেই পর্বউপহার দিতে থাকুন।
[+] 1 user Likes Baban's post
Like Reply
(12-11-2023, 12:10 AM)Henry Wrote: আমাকে একটা উপায় বলবেন কেউ xossipy থেকে গল্প কপি করা যাচ্ছে না। ফলে ট্রান্সলেট ব্যবহার করে তামিল গল্পগুলো পড়তে পারছি না। কি করা যায়?

প্রথমেই বলে নিচ্ছি এই উপায়টা pc/lapy তেই অনেক সুবিধাজনক, mobile থেকে করতে গেলে সত্যি খুবই বিরক্তিকর হয়ে যাবে.

তুমি xossipy তে কোনো post-ই সরাসরি copy করতে পারবে না. কোনো post copy করতে হলে একটু ঘুরিয়ে করতে হবে. যে post টা copy করতে চাও সেটার reply করো. reply window থেকে text টা খুব সহজে copy করতে পারবে. উদাহরণ - 

Henryআমাকে একটা উপায় বলবেন কেউ xossipy থেকে গল্প কপি করা যাচ্ছে না। ফলে ট্রান্সলেট ব্যবহার করে তামিল গল্পগুলো পড়তে পারছি না। কি করা যায়?


আশা করি, বুঝিয়ে লিখতে পেরেছি.

আর একটা অনুরোধ রইলো. যদি পারো তোমার পর্বগুলোর font size অন্ততঃ 5 করে দিও.
Like Reply
(12-11-2023, 12:10 AM)Henry Wrote: আমাকে একটা উপায় বলবেন কেউ xossipy থেকে গল্প কপি করা যাচ্ছে না। ফলে ট্রান্সলেট ব্যবহার করে তামিল গল্পগুলো পড়তে পারছি না। কি করা যায়?

Henry Wrote: Wrote:পাঠকের ভালোবাসাই আমার লেখার মেজাজ। বাংলা সেকশনে ভালো গল্প কমে যাচ্ছে। সেই exbii এর দিনগুলো মনে পড়ে। অনেক ভালো ভালো লেখা হত। লেখকরা ছিলেন। হারিয়ে গেছেন কোথায় তারা। সবকিছু ঠিকঠাক চললে আগামীকাল আপডেট আসবে। ধন্যবাদ পাঠকদের।


এটা ধ্রুবসত্য! যাদের জন্য এতো কিছু তাদের ভালোবাসা পেলে উৎসাহ হাজার গুন বেড়ে যায়। সেই যবে থেকে এখানে এসেছি অর্থাৎ শুধুই পাঠক হিসেবে তখন থেকে আপনার লেখা পড়ছি। সেই পাগলা দাদার সাথে এক মায়ের মিলেমিশে এক হয়ে যাওয়া কিংবা জয়নাল ও দাদার এক নারীকে নিজের করে নেওয়া। তারপরে আপনাকেও পাঠক হিসেবে শুরুতে পেয়েছি আমি। ধন্যবাদ।

আসলে ভালো গল্প কমে যাওয়ার থেকেও মূল কথা হল কেউ কেউ নিজের সৃষ্টিকে সিরিয়াস নেয়না। দু চারটে পর্ব দিয়ে চলে যান। হয়তো শুরু ভালোই ছিল কিন্তু তারপরে খেই হারিয়ে ফেলে। আর এর থেকেই পাঠকের বিশ্বাস কমে যায়। আমি সবসময় মানি শুরু করলে শেষ করতেই হবে। সেই ভেবেই লিখে এসেছি, আপনিও নিজের সবটুকু দেন। আসলে সেই শুরুর গসিপিটার জাদু এই জন্যই কমছে। খারাপ লাগে। কিছু এমন লেখকের জন্য বাংলার সেক্স গল্পের বেস্ট ঠিকানার অবস্থা খারাপ হচ্ছে। তবু পাঠক বন্ধুরা আজও ভালো গপ্পের সাথে আছে। তা সে অজাচার হোক বা ব্যাভিচার বা যে বিষয় নিয়েই হোক।

লিখতে থাকুন আমাদের জন্য। এই ভাবেই পর্বউপহার দিতে থাকুন।


[Image: collapse_collapsed.png] 1 user Likes Baban's post
PM Find Rate
Like Reply Quote Report
[Image: default_avatar.png]
ray.rowdy [Image: buddy_online.png]
Senior Member
[Image: star.png][Image: star.png][Image: star.png][Image: star.png]

Posts: 379
Threads: 7
Likes Received: 449 in 250 posts
Likes Given: 1,707
Joined: Nov 2019
Reputation: 42

#146
2 minutes ago

(7 hours ago)Henry Wrote: Wrote:আমাকে একটা উপায় বলবেন কেউ xossipy থেকে গল্প কপি করা যাচ্ছে না। ফলে ট্রান্সলেট ব্যবহার করে তামিল গল্পগুলো পড়তে পারছি না। কি করা যায়?


প্রথমেই বলে নিচ্ছি এই উপায়টা pc/lapy তেই অনেক সুবিধাজনক, mobile থেকে করতে গেলে সত্যি খুবই বিরক্তিকর হয়ে যাবে.


তুমি xossipy তে কোনো post-ই সরাসরি copy করতে পারবে না. কোনো post copy করতে হলে একটু ঘুরিয়ে করতে হবে. যে post টা copy করতে চাও সেটার reply করো. reply window থেকে text টা খুব সহজে copy করতে পারবে. উদাহরণ - 


Henryআমাকে একটা উপায় বলবেন কেউ xossipy থেকে গল্প কপি করা যাচ্ছে না। ফলে ট্রান্সলেট ব্যবহার করে তামিল গল্পগুলো পড়তে পারছি না। কি করা যায়?



আশা করি, বুঝিয়ে লিখতে পেরেছি.


আর একটা অনুরোধ রইলো. যদি পারো তোমার পর্বগুলোর font size অন্ততঃ 5 করে দিও.
[size=undefined]

Email PM Find Rate
Like Reply Quote Report
 
« Next Oldest | Next Newest »
[/size]
Pages (8): « Previous 1 2 3 4 5 6 7 8
New Reply 

Use 1DM+
[Image: Media-231006-011546.gif] 
The way to get started is to quit talking and begin doing.
=================================""ধন্যবাদ""
উত্তেজনা সয় না রিবুট/পরবর্তী আপডেট– ১০/০৪/২০২৪ ~My blog link~

Like Reply
(12-11-2023, 12:10 AM)Henry Wrote: আমাকে একটা উপায় বলবেন কেউ xossipy থেকে গল্প কপি করা যাচ্ছে না। ফলে ট্রান্সলেট ব্যবহার করে তামিল গল্পগুলো পড়তে পারছি না। কি করা যায়?



Android use kre thkle   -

 https://play.google.com/store/apps/detai...versalcopy

Easy r effective
Like Reply
এবার কি তাহলে আমরা তামিল গল্প গুলির বাংলা অনুবাদ পেতে চলেছি নাকি কাকু ?
আহা!! কি আনন্দ মনে, ধনে ....
Like Reply
(12-11-2023, 12:01 AM)Henry Wrote: পাঠকের ভালোবাসাই আমার লেখার মেজাজ। বাংলা সেকশনে ভালো গল্প কমে যাচ্ছে। সেই exbii এর দিনগুলো মনে পড়ে। অনেক ভালো ভালো লেখা হত। লেখকরা ছিলেন। হারিয়ে গেছেন কোথায় তারা। সবকিছু ঠিকঠাক চললে আগামীকাল আপডেট আসবে। ধন্যবাদ পাঠকদের।

Opekkha Kore achi
[+] 2 users Like Pmsex's post
Like Reply
Henry Wrote: Wrote:পাঠকের ভালোবাসাই আমার লেখার মেজাজ। বাংলা সেকশনে ভালো গল্প কমে যাচ্ছে। সেই exbii এর দিনগুলো মনে পড়ে। অনেক ভালো ভালো লেখা হত। লেখকরা ছিলেন। হারিয়ে গেছেন কোথায় তারা। সবকিছু ঠিকঠাক চললে আগামীকাল আপডেট আসবে। ধন্যবাদ পাঠকদের।

"'''নেক্সট আপডেটের অপেক্ষায়
                    আচ্ছি দাদা চালিয়ে যান,,,,
[Image: Media-231006-011546.gif] 
The way to get started is to quit talking and begin doing.
=================================""ধন্যবাদ""
উত্তেজনা সয় না রিবুট/পরবর্তী আপডেট– ১০/০৪/২০২৪ ~My blog link~

Like Reply
(12-11-2023, 12:01 AM)Henry Wrote: পাঠকের ভালোবাসাই আমার লেখার মেজাজ। বাংলা সেকশনে ভালো গল্প কমে যাচ্ছে। সেই exbii এর দিনগুলো মনে পড়ে। অনেক ভালো ভালো লেখা হত। লেখকরা ছিলেন। হারিয়ে গেছেন কোথায় তারা। সবকিছু ঠিকঠাক চললে আগামীকাল আপডেট আসবে। ধন্যবাদ পাঠকদের।

পরবর্তী পর্বের জন্য সাগ্রহে অপেক্ষা করবো. শুভেচ্ছা রইলো.
Like Reply
আপনার তুলনা নেইSmile
Like Reply
লেখার ধরণটা বড্ড ভালো। শুধু একটাই কথা বলার, সুন্দরবন অঞ্চলের মানুষেরা এই বাংলা বলে না, তারা ওড়িয়া মেশানো বাংলা বলে, আর এই বাংলা ভাষা পশ্চিমের রাঢ় অঞ্চলে ব্যবহৃত হয়।
[+] 1 user Likes seabiscuit's post
Like Reply
(14-11-2023, 06:51 AM)seabiscuit Wrote: লেখার ধরণটা বড্ড ভালো। শুধু একটাই কথা বলার, সুন্দরবন অঞ্চলের মানুষেরা এই বাংলা বলে না, তারা ওড়িয়া মেশানো বাংলা বলে, আর এই বাংলা ভাষা পশ্চিমের রাঢ় অঞ্চলে ব্যবহৃত হয়।

একদম ঠিক ওই ভাষা সম্পর্কে আমার সুস্পষ্ট ধারণা নেই। তাই নিম্নবিত্ত মানুষের আঞ্চলিক ভাষা হিসেব আমি এই ভাষা ব্যবহার করেছি।
Like Reply
সাড়ে তিনটা নাগাদ চাঁপা হাজির হল। রমা ততক্ষণে ঘুম থেকে উঠে ছাদে মেলে দেওয়া কাপড়গুলো তুলে এনেছে। রৌদ্রে শুকে যাওয়া গরম জামাকাপড়গুলো বিছানাতে মেলিয়ে দিয়েছে ও। মৃদু শব্দে টিভিটা চালিয়ে চায়ে চুমুক দিচ্ছে রমা। চাঁপা এসে কিচেনের সিঙ্কে পড়ে থাকা বাসনগুলো ধুয়ে ফেলতে ফেলতে গুনগুন করে গান করছে আপন মনে।

মোবাইল ফোনটা অনবরত বাজছে বেডরুমে। রমা ঘুমিয়েছিল, মাথার কাছে রয়েছিল ফোনটা। এখন আর সোফা থেকে উঠতে ইচ্ছে করছে না রমার। ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে আজ কেমন যেন একটা অবসন্ন লাগছে। ফোনটা দ্বিতীয়বার রিং হয়ে ভাবলো চাঁপাকে বলবে ফোনটা দিয়ে যাবার জন্য। চাঁপা তখন বাসনগুলো ধুয়ে থাকে সাজিয়ে রাখতে ব্যস্ত। কাজেই ফোনটা নিজেই নিয়ে এসে ধরতে হল রমাকে।
পীযুষের ফোন। ওর ফিরতে দেরি হবে। কলেজের অধ্যাপকদের জেনারেল মিটিং আছে। পীযুষ অবশ্য বেরোবার সময় বলেছিল 'আজ যত ঝামেলা, আজ আবার মিটিংও আছে'।

চাঁপা বললে---বৌদি, কেষ্টপুরে একটা মিছিল বার হইছে। কত লোক!

রমা টিভি থেকে চোখ না সরিয়ে বললে---ভোটের মিছিল?

---হুম্ম। এবার কাকে ভোট দিবে গো বৌদি?

---তুই কাকে দিবি?

---আগে তো আমাদের কাউন্সিলর রতন দা সিপেম ছিল। এখন সে তেনমূল হছে। শুনছি রতন দা এবার বিজিপি হতেও পাইরে। কি জানি বাবা আর কি কি হবে!

কথাটা বলে চাঁপা খানিক মুখ বেঁকিয়ে কাজ করতে লাগলো। চাঁপার এই মুখ ভঙ্গি দেখে রমারও বড্ড হাসি পেল। সত্যি আজকাল নেতারা যে কখন কোন দলে যাচ্ছে আর কত মিনিট থাকছে সাধারণ মানুষ তো দূর অস্ত, ওদের স্ত্রীরাও জানে না স্বামী আজ কোন দলে। হয়ত স্ত্রীদের স্বামীরা বেরোনোর আগে জেনে নেওয়া উচিত রান্না কি হবের মত, আজ তুমি কোন দলের। বিষয়টা ভাবতেই রমার আবার হাসি পেল।
অথচ পুরোনো দিনের মানুষেরা রাজনৈতিক আদর্শের প্রতি কত কমিটেড ছিল। সাধারণ মানুষও ছিলেন রাজনীতি বিষয়ে এমন দোদুল্যমান নয়। দিন বদলের সন্ধিক্ষণ এখন। রাজনৈতিক মতাদর্শ বিষয়টিই উঠে যাবে এরপর।

চা শেষ করে রমা ঘড়ি দেখলো। আজ কেমন কিছুই করতে ইচ্ছে হচ্ছে না ওর। ঘড়িতে তখন চারটে। পিকলুর আসার সময় হল। ওর জন্য টিফিন তৈরি করতে হবে। বিছানার উপর মেলে দেওয়া শাড়িগুলো একটা একটা করে ভাঁজ করতে লাগলো রমা।

স্কুলবাস থেকে নেমে পিকলু বন্ধুদের উদ্দেশ্যে টাটা করে চৌহদ্দির গেটটা পেরিয়ে বাড়ির মূল ফটক কোলাপ্সিবল গেটটা ঠেলে ধরল দুই পাশে। ভেতরে ঢুকেই ছেলেটার অভ্যাস তাড়াহুড়ো করা। জুতো মজা না খুলে সিঁড়ির তলায় ছুঁড়ে ফেলেই তরতরিয়ে উঠে যায় ও। পরে ওগুলো মা না হয় চাঁপা মাসি তুলে নিয়ে যায়। আজও অভ্যাস মত জুতো মজা খুলে, ওগুলো ছুঁড়ে ফেলে ও প্রথম সিঁড়িটায় উঠতে যাবে; খেয়াল হল কিছু একটা অদ্ভুত মত মাড়িয়ে ফেলেছে। বুঝে ওঠার আগেই ব্লেড চালানোর মত তীব্র আঘাত করল কেউ ওর পায়। চমকে উঠল পিকলু! পায়ের একবারে কাছেই বড় গোখরো সাপটা। পিকলু ভয়ার্ত হয়ে নড়ে চড়ে যেতেই আবার একটা তীব্র আঘাত ওর পায়ে। পরপর দু'বার দংশন করল পদ্ম। কি তেজ তার। চিৎকার করে উঠল পিকলু।

পিকলুর ভয়ার্ত স্বর দোতলা অবধি পৌঁছনোর আগে তৃতীয়বার দংশন করে ফেলেছে গোখরোটা। এখন সাপটা নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করছে। রমা বললে---দেখ দেখি চাঁপা, পিকলুটা কেন চিৎকার করছে।

চাঁপা সিঁড়ির কাছে এসে থমকে গেছে। সে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে গোখরো সাপটা সিঁড়ির তলার দিকে ধীর গতিতে হারিয়ে যাবার চেষ্টা করছে। পিকলু কেঁদে উঠতেই ওর নজর পড়ল পিকলুর দিকে। পিকলুর পায়ে রক্ত ঝরছে! চাঁপা আর্তনাদ করে উঠল---বৌদিইইইইইই!

রমা গোছানো শাড়িগুলো ফেলে দৌড়ে এলো সিঁড়ির মুখে। পিকলু কাঁদছে অবিশ্রান্ত। চাঁপার মুখ পাংশু। রমা ছেলেকে জিজ্ঞেস করল---কি হয়েছে? কাঁদছিস কেন?

চাঁপা অস্পষ্ট ভাবে বলল---পিকলুকে সাপে কাটছে!

---সাপ! কোথায়? চমকে উঠল রমা।

চাঁপা ভয়ে ভয়ে বললে---সিঁড়ির তলায়।

রমা দৌড়ে এলো পিকলুর কাছে। মাথায় কিছুই কাজ করছে না এখন ওর। পিকলুর পা তখন রক্তে ভেসে যাচ্ছে। সিঁড়ির তলায় চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছে সোনালী গোখরোটাকে। হঠাৎ মাথার মধ্যে আগুন জ্বলে উঠল রমার। পাশেই ছিল কাঠের শক্ত বাটামটা। গায়ে যতটা শক্তি কুলোয়, বাটামের ঘা দিল পদ্মের গায়ের ওপর। তীব্র রাগে চক্রাকারে আহত পদ্ম ঘুরে দাঁড়ালো। বিশাল ফনা তুলে তেড়ে এলো রমার দিকে। রমা তখন ছেলের অবস্থা দেখে আহত বাঘিনীর মত। কাঠের বাটামটার দ্বিতীয় আঘাতে একেবারে সাপটার ফনার তলায় ঘাড়ের অংশ ভেঙে দিল সে। তাতেও ক্ষান্ত হয়নি রমা। পদ্মের মৃত দেহটার উপর বারবার আঘাত হানতে লাগলো সে। নিশ্চিত করতে লাগলো পদ্মের মৃত্যুকে।
ততক্ষণে জ্ঞান হারিয়েছে পিকলু। ছেলেকে বুকে চেপে ধরেছে রমা। চিৎকার করে বললে---চাঁপা, তোর দাদাকে ফোন কর।
++++++
[+] 5 users Like Henry's post
Like Reply
পীযুষ আসার আগে রমা নিজেই ভর্তি করেছিল পিকলুকে কলকাতার নামী বেসরকারি নার্সিংহোমে। পরে পর্যাপ্ত এন্টি ভেনম না পাওয়ায় স্থানান্তরিত করতে হয়েছে এসএসকেএমে। ডঃ ভট্টাচার্য, সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসার জন্য খুব সুপরিচিত এবং সুদক্ষ। তিনি স্পষ্টতই বললেন সাপে কাটা রোগীকে সবসময়ের জন্য সরকারী হাসপাতালে আনা উচিত। কারণ একমাত্র সরকারী হাসপাতালে পর্যাপ্ত এন্টিভেনম থাকে। বেসরকারি হাসপাতালকে এন্টি ভেনম কিনে আনতে হয় অন্যত্র থেকে।
সচরাচর গ্রামের ক্ষেতে খামারের লোকেদেরই সাপে কাটে। যারা মূলত সরকারি হাসপাতালেই ভর্তি হন। ফলে ওখানেই এভিএস পর্যাপ্ত রাখা হয়। নামী বেসরকারি হাসপাতালে গ্রামের সাধারণ চাষীরা ভর্তি হন না। ফলে সাপে কাটা রোগী খুবই কম দেখা যায় এই বেসরকারি নার্সিংহোমগুলোতে। এখানে পর্যাপ্ত এভিএসও তাই রাখা হয় না।

পিকলুর ক্ষেত্রে শুধু দেরী নয়, ডঃ ভট্টাচার্য পীযুষকে ডেকে বললেন---মিঃ মৈত্র, প্রথমত আমরা বলি স্নেক বাইট থেকে হান্ড্রেড মিনিটস এর কথা। যার মধ্যে পেশেন্টকে এভিএস দেওয়া জরুরী। কিন্তু আপনার ছেলের ক্ষেত্রে প্রায় ফার্স্ট এন্টি ভেনম দেওয়া হয়েছে বাইট থেকে সাড়ে চার ঘণ্টা পর। তারপরে নার্সিং হোম এন্টিভেনামের অভাবে রেফার করেছে। কাজেই সেকেন্ড ডোজ দেওয়া হয়েছে তার থেকে থ্রী আওয়ার, যেটাও বেশ দেরিতে। আর সবচেয়ে স্ট্রেঞ্জ, আপনি হারপেটোলজিস্ট, আপনি ভালো বুঝবেন সাপেদের এমন প্রবল পরিমান ভেনম কখনো কোনো মানুষের দেহে ঢালতে দেখা যায় না। সাপেরা সাধারণত মানুষকে ভয় পেয়ে কামড় দেয়। মানুষ তাদের শিকার নয়। তাই সাপেরা মানুষের দেহে অতটা বিষ প্রয়োগ করে না। কিন্তু এক্ষেত্রে খুব ব্যতিক্রমী হয়েছে। তিনবার বাইট শুধু নয়, মারাত্বক পরিমাণে বিষ প্রয়োগ করেছে। খুব স্ট্রেঞ্জ স্নেক বিহেভিয়ার!

রমা অদূরেই দাঁড়িয়ে চিকিৎসকের কথা শুনতে পাচ্ছিল। ওর মাথা ঘুরোচ্ছে। দু'দিন হল এক শাড়িতে ই নাওয়া-খাওয়া ভুলে ছেলের পাশে। বিপ্লবের স্ত্রী ওর পিঠে হাত রেখে সামলে রেখেছে।

পীযুষের মুখটিও তখন ফ্যাকাশে রক্তশূন্য অবস্থা। বিষন্ন মুখে ও স্ত্রীর দিকে তাকালো একবার। পিকলুর এখনো জ্ঞান ফেরেনি। শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে অথচ এখনো নিস্তেজ। বিপ্লবের স্ত্রী রমাকে বললে---রমা দি, কিছুই তো খেলে না। বাড়ি গিয়ে একটু রেস্ট নাও।

রমা নিরুত্তর হয়ে বসে রইল। পীযুষ ওর পাশে বসে আলতো করে কাঁধে রাখলো, বলল---রমা, বিপ্লব তোমাকে বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছে, একটু রেস্ট নাও লক্ষ্মীটি। আমি গিয়ে বিকেলে তোমাকে নিয়ে আসবো।

ইচ্ছে ছিল না রমার। শেষ পর্যন্ত সকলের একযোগে বোঝানোতে ও গিয়ে উঠল বিপ্লবের গাড়িতে। চাঁপা ওর ছেলেকে নিয়ে পীযুষের বাড়িতেই রয়েছে গতরাত থেকে। দাদা-বৌদির জন্য ও খাবার পাঠিয়েছে গতরাতে। রমা ঢুকতেই চাঁপা বললে---বৌদি, পিকলুর জ্ঞানটা ফিইরছে গো?

রমার নিরুত্তর পাংশু মুখটি দেখে চাঁপা বুঝতে পারলো পিকলুর জীবিত ফেরার আশা কার্যত শূন্য। হাউ হাউ করে কেঁদে উঠল রমা। চাঁপা রমাকে নিয়ে গিয়ে সোফায় বসালো। বিপ্লব বলল---বৌদিকে একটু জল খেতে দাও তো চাঁপা।

বিপ্লব বেরিয়ে যাবার পর একটু ধাতস্থ হতে রমা স্নানে গেলে। স্নান সেরে বেরোতে দেখলো খাবার টেবিলে ভাত বেড়ে রেখেছে চাঁপা। মুখটা বিস্বাদ লাগছে তার। তবু এনার্জি জোগানোর জন্য যতটুকু খেতে পারা যায় খেল।

সাড়ে তিনটা নাগাদ কলিং বেলটা আচমকা বেজে উঠল। চাঁপা ছেলেকে খাইয়াচ্ছিল। ও বেডরুমে দেখলে শরীরে অজস্র ক্লান্তি আর বিষাদ নিয়ে ঘুমিয়ে রয়েছে বৌদি। রমাকে না ডেকে নীচে নেমে গেল। কোলাপ্সিবল গেটটা খুলতেই দেখল ও সাপুড়ে লোকটা দাঁড়িয়ে আছে। একগাল হেসে ষষ্ঠীপদ বললে---সার বাড়িতে লাই?

সাপুড়ে লোকটাকে দেখে বড্ড রাগ হচ্ছিল চাঁপার। বিরক্ত হয়ে বললে---কুনো দরকার নাই। আপনি যান ইখান থিকে।

ষষ্ঠীপদ চাঁপার আচরণে ভিমরি খেয়ে বললে---সারের জন্য শঙ্খিনীটা লিয়ে আসছি।

---আবার সাপ! ক্রুদ্ধ হয়ে উঠল চাঁপা। বললে---দূরে দাঁড়িয়ে থাকুন। একদম কাছে আইসবেন না। আপনার দিয়া সাপটার লিয়েই আজ পেরানটা যেতে বসছে পিকলু বাবুর।

চমকে উঠল ষষ্ঠী! বললে---কি কন মা! সাপে কাটছে লা কি? কারে কাটছে?

---পিকলু। স্যারের ছেলেকে সাপে কাটছে। এখুন জমে-মানুষে টানাটানিটা চইলছে।

ষষ্ঠী বললে---কুন সাপটা?

---ঐ বড় খরিশ সাপটা। যেটা সিদিন দিয়ে গেলে দাদারে।

---কি কন মা! পদ্ম! কাইটলো কি কইরে? সে সাপ তো সার কাচের বাক্সটার ভিতর রাইখে।

---বাক্স থেকে বার হইছিল শয়তানটা। ইস্কুল থিকে ফিরবার সময় পিকলুরে কাইটছে।

ষষ্ঠীপদ একবার মনে মনে মা মনসাকে ডেকে কপালে হাত ছোঁয়ালো। বললে---সাপটা কুথায় আছে তারে আমার সারকে দিয়াটা ঠিক হয়নি বুধয়।

----সাপটারে বৌদি মাইরে ফেলছে।

ভয় পেয়ে গেল ষষ্ঠী। এ যে শম্ভুর নাগর। প্রিয়তমা পোষ্য। শম্ভুটা জানতে পারলে যে তাকে আর আস্ত রাখবে না। সেসব না হয় পরে ভাবা যাবে। এখন স্যারের ছেলেটার জীবনটা বাঁচুক এই ইচ্ছে নিয়ে ষষ্ঠীপদ পুনরায় বললে---একটা কুথা বলব মা?

চাঁপা গেটটা বন্ধ করতে যাচ্ছিল। থেমে গিয়ে বলল---বলেন?

---সারের ছিলে টাকে একবার যদি শম্ভু বেদেটারে দিখান। আমার গ্রামে একঘরই বেদে আইছে। তার বাপ ভীমনাগ বেদে সাপের জম ছিল। শম্ভুটা বড় খামখেয়ালিটা আইছে যদিও, তবু যদি একবার তারে দিখান, ছিলাটা ভালো হয়ে যাবে।

চাঁপা আর কোনো কথা বলল না। কোলাপ্সিবল গেটটা এঁটে দিল ও। দোতলায় এসে দেখলে বৌদি ঘুম থেকে উঠে চোখে মুখে জল দিচ্ছে। চাঁপাকে দেখে জিজ্ঞেস করল---কে এসেছিল রে রমা।

চাঁপা বললে---সেই সাপুড়েটা এসেছিল গো বৌদি। আমি তারে দূর করে দিছি। বিষধর সাপ আইনে ঘরে ছাইড়লো, এখুন বলে কিনা তার গেরামে কে বেদেটা আছে তারে পিকলুকে দেখাইতে!


পীযুষ নিজে এসে রমাকে নিয়ে গেল হাসপাতালে। হাসপাতাল বেডে জ্ঞানহীন পিকলুর শায়িত দেহের মাথার কাছে বসে রইল রমা। খানিক আগে ডাক্তার দেখে গেছেন। কোনো পজেটিভ সাইন দেখছেন না চিকিৎসক নির্মল ভট্টাচার্য।
কালো হয়ে গেছে সাপের কামড় দেওয়া পিকলুর বাম পা'টা। বেশ ফুলে উঠেছে ওখানে। বাবা-মায়ের মত পিকলুর গায়ের রঙটাও টকটকে উজ্জ্বল ফর্সা। সেই ছেলেরই সর্বাঙ্গ এখন যেন কেমন কালচে হয়ে উঠেছে। রমা তাকাতে পারছে না ছেলের মুখের দিকে। মনের মধ্যে অস্থির চিন্তাগুলো ঘুরপাক খাচ্ছে অবিরত।
[+] 7 users Like Henry's post
Like Reply
পীযুষের এক পরিচিত বন্ধু ডঃ পার্থপ্রতীম মাহাতো উঃ বঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের চকিৎসক ও অধ্যাপক। তিনি আগামীকাল আসবেন নিজে পিকলুকে একবার দেখতে। পীযুষ নিজে হারপেটোলজিস্ট, সাপ বিষয়ে তার খুঁটিনাটি জানা। সে নিজেই বুঝতে পারছে পিকলুকে বাঁচানো মুশকিল। কার্যত অসম্ভব। শিকারের গায়ে যে পরিমান বিষ দেয়, তিনটে বাইটে ক্রমাগত সাপটি পর পর বিষ ঢেলেছে তার সমপরিমাণ করে। অর্থাৎ প্রায় তিরিশ-পঁয়ত্রিশ মিলিগ্রাম বিষ ঢেলেছে এই গোখরোটি, যা অস্বাভাবিকই। সেই সাথে সময়মত এভিএস না দেওয়াতেও গোলযোগ হয়েছে।

ডঃ ভট্টাচার্য আবার আটটার দিকে রাউন্ডে আসবেন। তখন দেখে যাবেন রুগীকে। এতক্ষন রমার এমন নীরবে ছেলের কাছে বসে থাকাটা যে ঠিক হবে না পীযুষ সেটা বুঝতে পারছে। কিন্তু উপায় বলেও কিছু নেই।

ইতিমধ্যে কত জায়গা থেকে ফোন এসে পৌঁছেছে পীযুষের কাছে। ফোনটা আর ধরতে ইচ্ছে করছে না বলেই ও ওটা এখন বিপ্লবের কাছে রেখেছে। বিপ্লবই যা বলার বলছে।

হাসপাতালের বাইরে বেরিয়ে এলো পীযুষ। সিগারেট ধরিয়ে দেখল অদূরে বিপ্লব পায়চারি করছে। পীযুষকে দেখে ও এগিয়ে এসে বললে---সাউথ থেকে ডঃ রামারাও বলে একজন আসতে চান। তোর সাথে নাকি পরিচয় হয়েছিল তিরুবন্তপুরমের কোনো একটি সেমিনারে।

পীযুষ ধোঁয়া ছেড়ে বলল---এসে বিশেষ কিছু লাভ হবে না। কাল ডঃ মাহাতো এসে পৌঁছবেন। তাতেও যে কিছু হবে তা নয়।

বিপ্লব জানে সাপ বিষয়ে অগাধ পান্ডিত্য থাকা পীযুষই যখন নিরাশাগ্রস্ত, তাহলে কোনো সম্ভাবনাই নেই। তাই সে বলল---তবে কি ডঃ রামারাওকে না বলে দেব।

পীযুষ হ্যা সূচক মাথা নাড়লো। সিগারেটটা সম্পূর্ন শেষ না করে ফেলে দিল ও। বিপ্লব ডঃ রামরাওয়ের সাথে ফোনে কথা শেষ করে এগিয়ে এসে বললে---কাল তোর কলেজে যাবার দরকার নেই। আমি ডিপার্টমেন্টকে জানিয়ে দিয়েছি। প্রিন্সিপ্যাল স্যারও জানেন।

পীযুষ বললে---না যাওয়ার কিছু নেই। এখানে থেকেও তো কিছু করতে পারবো না। ঐ যা রমার পাশে থাকা। তার চেয়ে সাইনটা করে আসবো।

সন্ধে নাগাদ চাঁপার মা সরলা এসেছিল পীযূষদের বাড়িতে। পীযুষ-রমা তখন হাসপাতালে। সরলা নাতিকে নিয়ে যেতে এসেছে। চাঁপার ছেলেটা চাঁপার সাথেই পীযুষদের বাড়িতে আছে এই ক'দিন। সাত বছরের অবুঝ ছেলে; এ বাড়ির এ জিনিস ও জিনিসে হাত দিচ্ছে। এরমধ্যেই একটা চিনেমাটির পুতুল ভেঙে ফেলেছে। চাঁপা তাই অতিষ্ঠ হয়ে মাকে ফোন করেছিল ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য।

এদিকে ছেলেটি আবার রাতে চাঁপাকে ছাড়া ঘুমোতে চায় না। যাইহোক করে আজ নাতিকে ঘুম পাড়াতে হবে সরলাকে।

সরলা নাতিকে আনতে এসে জিজ্ঞেস করলে---কি রে? বাবুর ছেলেটার জ্ঞানটা ফিইরল?

----না গো মা। পিকলু বাবুর বাঁইচবার আশাটা বুধয় নাই।

সরলা বললে---শহুরের তুরা বিশ্বাস কইরবিনি। তোর বাপের গেরামে দাস পাড়ার বউটাকে গোখরা কামড়িছিল। কেউ কয়ছিল না বাঁচবে বইলে। সরবেড়িয়ার ভীমনাগ বেদে আইসে এমন জাদু কইরলো, সেই বউ কিনা বাঁইচে গেল।

খটকা লাগলো চাঁপার, বলল----কি নাম বইলে মা, ভীমনাগ?

---হুম্ম ভীমনাগ বেদে। গুনীন বইলে ভুল হবে রে। মন্ত্র-টন্ত্র কিছু পইড়ে না। শুধু জড়ি বুটি দিয়া চিকিচ্ছা কইরেছে।

চাঁপার তখন মনে পড়ল, একই নাম তো ঐ সাপুড়েটাও বলেছিল তাকে। সে তৎক্ষনাৎ বললে---সত্যিই কি মা, বেদেরা ভালো কইরতে পারে?

----পারে না বইলতে! আমি তখুন নতুন বউ হয়ে গেছি তোর বাপের ঘরটায়। আমি লিজে দেখছি, ভীমনাগ বেদে সারাইছে বউটারে। গোটা গা বউটার নীল পইড়ে গেছিল।

---মা গো, দাদারে যে সাপ দেয় সাপুড়েটা, সেও বইল ছিল ভীমনাগ বেদের কুথা। তার ব্যাটা শম্ভু না কি যেন নাম কইল, সে এখন বেদে। তুমি কি সত্যি তারে চিনো?

---তার ব্যাটারে আমি চিনব কেমন কইরে? তবে ভীমনাগরে চিনি। তোর বাপের গেরাম দেউলবাড়ি থিকে তিন কিমি দূরে সরবেড়িয়া গেরাম। কালনাগিনী নদী ধারে জেলের ঘরে মেয়েকে বেয়ে কইরে থাইকতো। সে আজ বিশ-পঁচিশ বছর আগেকার কুথা। ভীমনাগ বেদে কি একটারে? তোর বাপের মুখে, জেঠার মুখে শুইনেছি শ' শ' সাপকাটা রুগীকে বাঁচাইছে। তখুন তো অত হাসপাতাল ছিল না। গেরামের লোকের রাতে ভিতে সাপ কাইটলে ভরসা ভীমনাগ বেদে।

----সত্যি মা, পিকলু বাবুরে লিয়ে গেলে ভালো হই যাবে?

---তুরা বিশ্বাস কইরবিনি, এখনকার ছিলেমেয়ে কিনা। আমি নিজে দেইখছি। ভীমনাগ বেদের ক্ষমতা ছিল। কত লোককে বাঁচাইল। তুর জেঠারে ফোনটা কইরলে বলে দিবে সে বেঁচে আছেটা নাকি।

চাঁপা বলল---মা তুমি কথা কও না এখুনি জেঠার সাথে।

সরলা ইতস্তত করল। চাঁপার জেঠা ওদের পৈতৃক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেছে। তাই খুব একটা ওরা যোগাযোগ রাখে না। তাই সে বললে---তুর কাছে ভগীরথের নম্বরটা আছে না? তারে ফোন দে না!

ভগীরথ চাঁপার জেঠার ছেলে। ঐ যা চাঁপাদের সাথে ভালোমন্দ যোগাযোগ রাখে। চাঁপা ভগীরথের নম্বরে ফোন লাগিয়ে সরলাকে ফোনটা দিল।

সরলা ভগীরথের সাথে খানিক্ষণ কথা সেরে, বললে---চাঁপা তোরে সেই সাপুড়েটা ঠিক কয়েছে। ভীমনাগ বেদে আর বাঁইচে নাই। তার ব্যাটা শম্ভু বেদে চিকিচ্ছা করে। তবে সে নাকি বড় মেজাজী। শখ হলে দেখে না হলে দিখবে নাই। তবে সেও নাকি বাপের মত ক্ষমতা রাখে।

++++++
[+] 9 users Like Henry's post
Like Reply
রাত্রি আটটা নাগাদ রাউন্ডে এলেন ডঃ ভট্টাচার্য। সবকিছু দেখে বিশেষ কিছু বললেন না। পীযুষ বা রমাও কোনো কিছু আশা করছে না। তবুও রমা বসে রয়েছে ছেলের পাশে। শ্বাস-প্রশ্বাসটুকু এখনো চলছে। ভেন্টিলেশনে দিতে হয়নি। এটাই এখনো অবধি একমাত্র পজিটিভ। তবে ডঃ ভট্টাচার্যের মতে টেনেটুনে আরো আটচল্লিশ ঘন্টা রোগীকে ভেন্টিলেশন ছাড়াই তারা রাখবেন, যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে।

দশটা নাগাদ পীযুষ আর রমা বাড়ি ফিরল। সন্তানের মুমূর্ষু অবস্থায় কাতর পিতামাতার দুটি অবসন্ন মুখের দিকে তাকিয়ে কান্নায় চোখ ভিজে আসছিল চাঁপার। কি সুন্দর পরিবারটি ছিল দাদা আর বৌদির। দুজনের মুখে এ ক'দিনে রুক্ষতার ছাপ স্পষ্ট। পীযুষের দাড়ি বেড়ে গেছে এলোমেলো ভাবে। রমার চুলটা সেই একইভাবে খোঁপা করা। ইতিউতি বেরিয়ে আছে চুল। যেন দুজনেই প্রবল ঝড়ের মধ্য হতে বাড়ি ফিরেছে।

টাকা পয়সার অভাব নেই মৈত্র পরিবারের। অথচ সেই তাদের ছেলেকে আজকে তারা বাঁচাতে পারছে না। রাতের খাওয়াটা নেহাতই দৈহিক প্রয়োজনে খেল মৈত্র দম্পতি। পীযুষের সিগারেট খাওয়াটা এ ক'দিনে বেশ বেড়ে গেছে। রমাও আপত্তি করবার মত অবস্থায় নেই। দোতলার ব্যালকনিতে পায়চারি করতে করতে একটার পর একটা সিগারেট টানছে পীযুষ। পিকলুর জন্ম হওয়া, ছোট্ট ছোট্ট পা ফেলে হাঁটতে শেখা, প্রথম 'বাবা' বলতে শেখা সবকিছুই এলোমেলো ভাবে মনে আসছে তার।
পুরুষ মানুষের চোখে জল আসে না। পীযুষের পিতৃহৃদয়ে কম্পন হচ্ছে বারবার, অথচ চশমার আড়ালে চোখের গভীরতায় জমাট বেঁধে রয়েছে জলের কনাগুলি।

ঘরের বিছানাটা এলোমেলো হয়ে পড়েছে। রমার সামনে এমন এলোমেলো থাকাটা অস্বাভাবিক। এখন মন আর দেহের অবসন্নতায় রমার কিচ্ছু করতে ইচ্ছে করছে না। তবু একটু টানটান করে নিল বিছানা চাদরটা।

চাঁপা বাসন কোচন ধুয়ে ঘুমোতে যাবার আগে একবার উঁকি দিল রমাদের বেডরুমে। রমার পরনে হালকা গোলাপি সুতির নাইটি। বেশ ঢিলেঢালা লাগছে যেন। বৌদি কি একদিনে রোগ হয়ে গেল! নাকি চোখের ভুল চাঁপার। বৌদি এখনো ঘুমোয়নি, বলবে নাকি মায়ের মুখে শোনা ঐ বেদের কথাটা।

পীযুষের কানে পৌছচ্ছে রমাকে বলতে থাকা চাঁপার কথাগুলো। পীযুষ তার পিতার আদর্শে বেড়ে ওঠা একজন বিজ্ঞান বিষয়ক অধ্যাপক। সে প্রবল রকম নাস্তিক। পীযুষের মত রমা নাস্তিক না হলেও, সাধারণ ঈশ্বর বিশ্বাসটুকু ছাড়া কোনো অন্ধকারচ্ছন্ন সংস্কারমুখীতা রমার মধ্যেও নেই। ওদের বাড়িতে কয়েকটা চিনেমাটি, প্লাস্টার অব প্যারিস কিংবা কাঠের গণেশ, শিব ও বুদ্ধ মূর্তি আছে, একটা যীশুরও মূর্তি আছে। সেগুলিতে ফুল, বেলা পাতা চড়িয়ে পুজো হয় না। বরং শো কেসে সাজানো আছে থরে থরে। রমা মন্দির কিংবা প্রতিমা দর্শন করলে কপালে হাত ছোঁয়ায়, এটুকু পর্যন্ত যা তার বিশ্বাস।

পীযুষ চশমাটা যথাস্থানে রেখে, চোখে মুখে জলের ঝাপটা দিয়ে বিছানায় এলো। চাঁপা শুয়েছে পিকলুর ঘরটাতে। পীযুষ দেখলে ঘরের মধ্যে তখনও আলো জ্বলছে, রমা বিছানার একপাশে পা মুড়ে শুয়ে আছে পীযুষের দিকে পিঠ করে। নিশ্চই ঘুমোয়নি ও। টানটান করে শুয়ে আলোটা নিভিয়ে দিল পীযুষ।

রমা আচমকা পীযুষের দিকে মুখ ফিরিয়ে সেঁধিয়ে গেল স্বামীর বুকে। আলতো করে পিঠে হাত রাখলো পীযুষ। রমা বললে---চাঁপা বলছিল এক বেদের কথা। আমরা কি একবার নিয়ে যাবো পিকলুকে!

পীযুষ রমাকে খান্ত করে বললে---রমা বেদে, ওঝা, গুনীন এরা কি কেউ সাপে কাটা রোগীকে বাঁচাতে পারে? সবই বুজরুকী। তুমি জানো, প্রত্যেক বছর কত সাপে কাটা মানুষ এই সমস্ত ওঝা, গুনীনদের হাতে পড়ে মারা যায়? কিছু নির্বিষ সাপের কামড় খাওয়া রোগীদের বাঁচিয়ে এসব লোকেদের গ্রামে গঞ্জে নামডাক হয়। স্রেফ বুজরুকী ছাড়া আর কিছু নয়।

রমা মৃদু প্রতিবাদ করে উঠল। বললে---চিকিৎসা বিজ্ঞানও তো ব্যর্থ আমাদের ছেলেকে বাঁচাতে!

---রমা। তুমি নিশ্চই শুনেছ পিকলুর গায়ে যে পরিমান নিউরোটক্সিন পাওয়া গেছে, সেটা স্বাভাবিক সাপের কামড়ের চেয়ে বেশি।

রমা সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠল---তবে কি এই মাত্রাতিরিক্ত বিষটা আশ্চর্য নয়!

---আশ্চর্য বলেই তো আমাদের ছেলের প্রাণ সংশয় তৈরি হয়েছে। আসলে রমা এই সময় যখন আমাদের কিছু করার নেই, তখন লোকে যা বলছে তা মনে হচ্ছে তোমার।

রাগত অথচ কান্না মিশ্রিত গলায় রমা বলে উঠল---এদিকে ডক্টর বললেন কোনো মিরাকল ছাড়া আমাদের পিকলু...এদিকে তোমাদের বিজ্ঞান কোনো মিরাকলে বিশ্বাস করে না! তবে কি আমরা দিন গুনব আমাদের ছেলের মৃত্যু....

কথাটা অসমাপ্ত রেখেই ফুঁপিয়ে উঠল রমা। পীযুষ ওকে শান্ত করবার চেষ্টা করতে লাগলো। পীযুষ নিজেই জানে তার কাছে আর কোনো উত্তর নেই যা দিয়ে এখন রমাকে শান্ত করা যায়।
[+] 11 users Like Henry's post
Like Reply
কোনোরকম অতিবাহিত হল রাত্রি। সকালে হাসপাতালে ডঃ মাহাতো উঃ বঙ্গ থেকে এসে উপস্থিত হলেন। পীযুষের উপস্থিতিতেই ডঃ ভট্টাচার্য ও ডঃ মাহাতোর মধ্যে আলোচনা চলতে লাগলো। এই আলোচনাগুলি নতুন কিছু নয়। হারপেটোলজিস্ট হওয়ায় সাপের খুঁটিনাটি, তার কামড় খাওয়া রোগীদের বিষয়ে সমস্ত কিছু পীযুষের জানা। ও নিরুত্তর রয়েছিল দীর্ঘক্ষণ। নতুন করে কোনো আশাও যে ও করেনি।

বেরিয়ে আসার সময় ডঃ মাহাতো হাত রাখেন পীযুষের পিঠে। একসময় একসাথেই তারা সর্প বিষয়ক একাধিক গবেষণামূলক প্রকল্পে অংশ গ্রহণ করেছে। ডঃ মাহাতো খানিক বয়সে বড় পীযুষের চেয়ে। তিনি বললেন---ডঃ মৈত্র, আমার জন্ম বাঁকুড়ার প্রত্যন্ত জঙ্গলাকীর্ন এলাকায়। এরকম স্ট্রেঞ্জ একটি ঘটনা আমার কর্ম জীবনের অভিজ্ঞতাতে না হলেও যৌবনের শুরুর দিকে দেখা। বাঁকুড়ার সিমলাপাল এলাকার এক হতদরিদ্র পরিবারের কিশোরের দেহে এমনই মাত্রাতিরিক্ত বিষ পাওয়া গেছিল। ওটাও ছিল গোখরোর কামড়। বাঁকুড়া ক্রিশ্চিয়ান মেডিক্যাল কলেজ ব্যর্থ হয়ে কলকাতা রেফার করে রোগিটিকে। আদিবাসী কিশোরটির পরিবারের পক্ষে সম্ভব ছিল না চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া। তারপর বছর খানেক পরে ঐ কিশোরকে একে বারে সুস্থ সবল দেহে আমি গঞ্জ এলাকায় দেখতে পাই। তখন সবে কলেজে পাশ করেছি। এ বিষয়ে আগ্রহও তেমন ছিল না। পরে সর্প বিষয়ে পড়াশোনা করতে গিয়ে বহুবার কথাটি মোমে এসেছে। আজ আপনার ছেলের এই কেস স্টাডি করে জানতে ইচ্ছে করছে ঐ কিশোরের চিকিৎসা কোথায় হয়েছিল, মেডিক্যালের কি কি গাইডলাইন প্রয়োগ হয়েছিল তা নিয়ে। সত্যি কথা বলতে কি, বছর কুড়ি আগের কথা, আজ আর খোঁজ খবর নেওয়া সম্ভব নয়। ছেলেটির ঠিক বাড়ি কোথায়, বা থাকে কোথায় খুঁজে বার করা কঠিন।

ডঃ মাহাতো বেরিয়ে গেলেন দশটার দিকে। পীযুষ একবার দেখে এলো পিকুলকে। পায়ের ক্ষত স্থান ফুলে গিয়ে বীভৎস এক কালচে আকার ধারণ করেছে। সর্বাঙ্গও কেমন কালচে নীল। ইনফেকশন এড়াতে আইসোলেশনে দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো ভেন্টিলেশনে দেওয়া হয়নি। শ্বাস-প্রশ্বাস এখনো স্বাভাবিক পিকলুর।
রমা এসে পড়বে এগারোটার দিকে। ও ট্যাক্সি করে নিজেই চলে আসবে বলেছে। পীযুষ জানে রমা ভেতর থেকে বেশ শক্ত ধাতের। নিজেকে ধীরে ধীরে আগত পরিস্থিতির জন্য তৈরী করতে পারবে। যদিও পীযুষকে একবার এর মাঝে কলেজ যেতে হবে। সাইন করে একটা বড় মেডিক্যাল লিভ নিতে হবে। কখন কি হয়ে যাবে বলা অনিশ্চিত, তখন রমাকে সামলাতে তাকেই থাকতে হবে সঙ্গে।

স্নান সেরে রমা শাড়িটা পরছিল। ঠিক সেসময় চাঁপা এসে বললে---বৌদি আমার মা আসছে। কিছু বইলতে চায়।

চাঁপার মা সরলা এ বাড়িতে এর আগেও বহুবার এসেছে। এসময় কি বলতে চায়, তা নিয়ে বিশেষ আগ্রহ নেই রমার। তবু ড্রয়িং রুমে বেরিয়ে এলো ও। সরলা বললে---দিদিমণি, আমি বইলছিলাম কি, একবার ছেলাটাকে আমার শ্বশুরের গেরামের ভীমনাগ বেদের ব্যাটাটারে দিখাইলে ভালো হত। বড় নামডাক ছিল ভীমনাগ বেদের। কত সাপে কাটা রোগীকে বাঁচাইছে। আমি লিজে দেইখছি দিদিমণি, কেউ বইলছিলনি দাস পাড়ার বউটা বাঁইচবে। সেই বউটারে বাঁচাই ফেলল ভীমনাগ। তার ব্যাটাটাও নাকি সে ক্ষমতা রাখে। তবে সে নাকি বড্ড মেজাজী। আমার ভাসুরের পো ভগিরথ কইল, তারে বোঝাইলে অবশ্য শুইনবে।

রমা জলের খালি বোতলটায় জল ভরতে ভরতে বললে---পিকলুর বাবা ঝাড়, ফুঁক এসবে বিশ্বাস করে না সরলা মাসি। আমিও তেমন বিশ্বাস করতে পারছি না।

সঙ্গে সঙ্গে সরলা বাধা দিয়ে বললে---ঝাড় ফুঁক নয় গো দিদিমণি। ভীমনাগ বেদে জড়ি বুটি, গাছ-পাতা দিয়া চিকিচ্ছা কইরে। আমি লিজে দেইখছি, কুনো মন্ত্র, তাবিজ, মাদুলি দেয় নাই বউটারে।

চাঁপাও তার মায়ের সাথে তাল মিলিয়ে বললে---বৌদি পিকলুটারে ডাক্তার তো কয়ে দিছে পারবে নাই। একবার যদি মা যে বেদেটার কথা বইলছে তারে দিখাও ক্ষতি কি।


পীযুষ কলেজ থেকে গাড়ি ড্রাইভ করে সোজা হাসপাতালে ফিরল দুপুর একটা নাগাদ। হাসপাতালে এসেই খবরটা পেল, পিকলুকে হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে গেছে রমা। কোথায় নিয়ে যেতে পারে রমা? ওই বেদের কাছে! সে তো অনেকদূর সুন্দরবন না কোথায় যেন বাড়ী!

পীযুষ রমাকে ফোন করেও পাচ্ছে না। বারবার নট রিচিবল বলছে ফোনটা। বাড়ি ফিরে দেখল চাঁপা একা রয়েছে। পীযুষ জিজ্ঞেস করল চাঁপাকে রমা কোথায় গেছে।

চাঁপা জানালো---বৌদি পিকলু বাবুটারে লয়ে আমার মার সাথে বেদের ঘরে গেছে গো দাদা। ফিরতে কাল বিকাল হতে পারে।

----মানে! বলা নেই কওয়া নেই, ছেলেটাকে নিয়ে চলে গেল কোথাকার কোন বেদের কাছে! আশ্চর্য তো। আর থাকবেই বা কোথায়?

চাঁপা কিছু সদুত্তর দিতে পারলো না। পীযুষ বুঝতে পারছে রমার যেহেতু মনের মধ্যে অস্থিরতা তাই সে এরকম সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হয়ত শেষবেলায় যদি সে এমনটা করেও খানিক হালকা হতে পারে। পরে হয়ত তখন মনে হতে পারতো তার ঐ বেদের কাছে নিয়ে গেলে ভালো হতে পারতো। তবু দুশ্চিন্তা কাটছে না পীযুষের। থাকবে কোথায় রমা। সুন্দরবনের সরবেড়িয়া গ্রাম সম্পর্কে খুব একটা ধারণা নেই পীযুষেরও। ষষ্ঠীপদর মুখে শুনেছে রায়মঙ্গল লাগোয়া কালনাগিনী বলে একটি নদী আছে ওখানে। দেউলবাড়ি না কি যেন একটা গ্রাম আছে নিকটে।
গুগল ম্যাপ খুলে দেখল পীযুষ। দেউলবাড়ি সুন্দরবনের গ্রাম দেখালেও সড়বেড়িয়ার কোনো চিহ্ন নেই। ওখানেই কোথাও হবে হয়ত। পীযুষ ঠিক করল কাল ভোরে ও নিজেই গাড়ি ড্রাইভ করে যাবে ওখানে।

চলবে।
Like Reply




Users browsing this thread: 4 Guest(s)