Posts: 180
Threads: 0
Likes Received: 93 in 75 posts
Likes Given: 14
Joined: Apr 2023
Reputation:
4
(09-11-2023, 07:47 PM)Henry Wrote: আমি আপডেট অবশ্যই দেব। কিন্তু এই কাঠি করা লোকগুলো এক কলম লিখতে পারে না, কিন্তু ঝামেলা পাকায়। এটা বড্ড মনোসংযোগে চিড় ধরায়। পাঠকের ভালোবাসায় আপডেট আসবে। তবে এই অপগন্ড খুঁজতে থাক তদ্দিন , আমি নাকি কোথা থেকে কপি করেছি এই উপন্যাস তার উৎস।
Dada apni oto vabbhen naaa amra to jani update ta apni dicchen arrr erom story aage kokhono lekha hoi ni... Apni order kotha vabchen Kano
Posts: 6,108
Threads: 41
Likes Received: 12,084 in 4,138 posts
Likes Given: 5,306
Joined: Jul 2019
Reputation:
3,734
সামান্য উৎসাহ দিলাম আমার পক্ষ থেকে। এই অসাধারণ ছবি পাল্টানোর স্পর্ধা আমার নেই। কিন্তু ওই টাইটেল লোগো ডিসাইনটি আমার মনের মতো করে রিডিজাইন করে দিলুম। আশা করি পছন্দ হবে। লিখতে থাকুন দাদা। এই অসাধারণ সৃষ্টি দিয়ে মন জয় করতে থাকুন। ভালো থাকুন।
- বাবান
Posts: 19
Threads: 0
Likes Received: 16 in 13 posts
Likes Given: 55
Joined: Apr 2020
Reputation:
0
(09-11-2023, 07:47 PM)Henry Wrote: আমি আপডেট অবশ্যই দেব। কিন্তু এই কাঠি করা লোকগুলো এক কলম লিখতে পারে না, কিন্তু ঝামেলা পাকায়। এটা বড্ড মনোসংযোগে চিড় ধরায়। পাঠকের ভালোবাসায় আপডেট আসবে। তবে এই অপগন্ড খুঁজতে থাক তদ্দিন , আমি নাকি কোথা থেকে কপি করেছি এই উপন্যাস তার উৎস।
লাইব্রেরি ভেবে বসার কিছু নেই আমাকে ......।
আগের টা যখন ঝেপে ফেলেছিলেন তখন বার বার ই মনে হবে, " এবার ও নিশ্চই হেনরি দার চটি টে কোনো সাহিত্যিক বা তাঁর রচনাকে খুঁজে পাওয়া যাবে ..."
হয়তো পাওয়াও যাবে। আর এতে ক্ষতি তো কিছু নেই , বরং বাংলা চটির স্তর আকাশ ছোঁবে দিন দিন
Posts: 260
Threads: 0
Likes Received: 274 in 122 posts
Likes Given: 614
Joined: Apr 2021
Reputation:
17
(09-11-2023, 07:32 AM)Henry Wrote: কোনো একজন আমার থ্রেডে এসে অন্য গল্প বা উপন্যাস থেকে এই গল্প কপি করা বলে দাবী করছে। যদিও ওর কাজ শুধু অন্যের লেখার ব্যাঘাত ঘটানো। তবুও বারবার মিথ্যে অভিযোগ এনে লেখার মনোসংযোগে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। যার আমার গল্প পড়তে ভালো লাগে না, যে আমার গল্প নাকি অন্য গল্পের কপি বলে মনে করে সে তবুও আমার থ্রেডে এসে ভুল মন্তব্য করে যাচ্ছে বারবার, তার উদ্দেশ্য আসলে সৎ নয়। এমন লোকেরা বারবার লেখায় ব্যাঘাত ঘটাবে।
তাই এরপরে আর লেখা সম্ভব নয়, যতক্ষন না আমার থ্রেড থেকে ওকে বিরত করা যায়। এই উপন্যাস কোথা থেকেও কপি নয়। এ আমার কলমে সৃষ্টি। বারবার বলেছি যার ভালো লাগবে না, সে পড়বে না। এখানে কেউ পয়সা নিয়ে লেখে না। তাই কারো দায়বদ্ধতা নেই। এই লোকটি সবসময় যা নয় তাই রিপ্লাই করে যাবে মেনে নেওয়া যায় না। আপাতত থেমে থাকবে কলম, যদি মডারেটর একে আমার থ্রেড থেকে ব্যান করেন, তবে আমি আবার ধারাবাহিক লিখে যেতে পারি। অন্যথায় ওই ব্যক্তিকে প্রমাণ দিতে হবে এটি অন্য কোন গল্পের কপি বলে। বিরক্তি উৎপাদন হয় এমন রিপ্লাইতে। আপাতত লিখছি না। আপডেট দিচ্ছি না।
Dada ekjoner jonne sobai keno sasty pabe?amra Jara apnar golper pathok amra Jani Henry ki tar lekha ki .epanr sob lekhai amra porechi . please likhun
•
Posts: 621
Threads: 7
Likes Received: 6,264 in 575 posts
Likes Given: 46
Joined: Jan 2019
Reputation:
1,585
দুদিনের মাথায় জ্ঞান ফিরল গোঁসাইয়ের বৌমার। চমৎকার দেখে চমকিত হয়ে উঠল ভুবন গোঁসাই। শম্ভুর দিকে তাকিয়ে আবেগ প্রাবল্য গলায় বললে---বেদের পো, তু তো চমৎকারী রে। আজকেইর দিনে জড়ি বুটিতে সারাই ফেললি মোর বৌমারে।
শম্ভু তখনও রুগীকে পর্যবেক্ষণ করছে। বললে---গোঁসাই, জ্ঞান ফিরছে বটে, হাঁটাচলাটা করতে সময় লাইগবে। আমার কাজ শেইষ। ক'টা দিন যে জড়ি বুটি দিছি, তা খাওয়াও। আর কাটা জাগাটায় বাটাটা দিও।
ভোর বেলা বেরোবার সময় কড়কড়ে দুটি পাঁচ শত টাকা দিল শম্ভুর হাতে গোঁসাই। বললে---কেষ্ট ঠাকুর তুর মঙ্গলটা করুক।
পথ ধরে হাঁটতে লাগলো শম্ভু। সাথে ঝাঁপি থাকলে বাসে নিতে চায় না বেদেদের। যাত্রীরা ভয় করে। দীর্ঘ অপেক্ষার পর একটা বাস তুলে নিল তাকে। বাসে উঠতেই হেল্পার বললে---কি আছে রে তাতে? সাপ নাকি?
শম্ভু রুক্ষ গলায় বললে---খুলে দেখাবো লা কি?
ভয় পেল হেল্পার, বলল---থাক। থাক। পিছনের দিকে সিট আছে। গিয়ে বোস। সামনে আসবিনি।
দেবীপুর স্ট্যান্ডে যখন নামলো তখন সকাল দশটা, তীব্র রোদের উত্তাপ শুরু হয়েছে এখন থেকেই। আড়াই ঘণ্টা কাটলো তার বাসে। দেবীপুর থেকে আড়াই কিমি হাঁটলে দেউলবাড়ি। সেখান থেকে সরবেড়িয়া আরো চার কিমি। এ পথে ভ্যান রিকশা চললেও শম্ভুদের মত বেদেদের হাঁটা অভ্যাস।
দেউলবাড়ি এসে ইউসুফের মাংস দোকানে ঢুকল শম্ভু। বোস্টমের ঘরে মাছ-মাংস খায় না। এ' কদিন মাছ-মাংস পেটে পড়েনি শম্ভুর। শম্ভু বড্ড মাংস লোভী। ওর একার সংসারে যা আয় হয়, তা দিয়ে দু বেলা ভরপেট খেয়ে ও ওর শক্তপোক্ত শরীরটা ঠিক রাখতে পারে। হাড্ডি মাংস ওর খুব প্রিয়। অনেক সময় ছাঁটও আনে। ইউসুফের দোকানে এখন ভিড় কম। ভিড়টা যা হয় সকালবেলা। ইউসুফ বললে--আরে শম্ভু বেদে যে, কোত্থেকে এলি?
---বাসন্তী গেছিলাম গো, ইউসুফ ভাই। দাও দিখি এক কিলো।
ইউসুফের দোকানে হাজির ছিল রতন দাস। লরির ড্রাইভার। বললে---এক কিলো কি তুই একাই খাবি! বে শাদী তো করিস লাই।
ইউসুফ হেসে বলল---এরকম গতরওলা যুবক মরদের তো লাইগবেই রতন দা। শম্ভুটা মোর .,দের মত, মাংস তার দরকার।
রতন বললে---উত্তরপ্রদেশে দেখছি বেদেরা '. হয়। শম্ভু তু কি '.রে?
---হেসে উঠল শম্ভু। বেদের কুনো জাত লাই গো রতন দা। বেদে * , '., বোস্টম, সাঁতাল সব হয়।
কালো পলিথিন ব্যাগে মাংস ভরে দিয়ে ইউসুফ বললে---ঝাঁপিতে কি আছে রে? সাপ নাকি!
---দিখবে? শম্ভু জিজ্ঞেস করল।
সকলের উৎসুক চোখ। আরো ক'জন জুটে গেল। ঝাঁপি খুলে বার করে আনলো কেউটেটাকে। কেমন যেন সেঁধিয়ে রয়েছে ভয়ে। টোকা মেরে মেরে খানিক ফনা তোলালো। কেউ একজন বললে---বিষ দাঁত আছে না লাই?
ভিড় থেকে লোকটাকে খুঁজে নিয়ে শম্ভু সাপটা ওর দিকে নিয়ে গিয়ে বললে---লিজে দিখে লাও।
লোকটা ভয়ে সরে গেল। কিছু লোক জড়িবুটি চাইলো। বলতে বলতে শ দেড়েক টাকা রোজগার হয়ে গেল ইউসুফের দোকানের সামনেই। ইউসুফ বললে---তোর তো মাংসের দাম উঠে গেল রে শম্ভু।
শম্ভু হেসে ঝাঁপি গুছিয়ে হাঁটা দিল। হাঁটতে হাঁটতে বাড়ি ফিরল যখন সাড়ে এগারোটা। আজ সে ঠিক করেছে রেঁধে নিয়ে স্নানে যাবে। খেয়েদেয়ে পদ্মর সাথে ঝিম ধরা পিরিতের নেশা চড়িয়ে ঘুমোবে একটা দীর্ঘক্ষণ।
ঘরের কপাট খুলে দেরী করল না ও। চাল ধুয়ে হাড়িতে করে স্টোভ জ্বালিয়ে ভাত বসিয়ে দিল। মাংসটায় নুন হলুদ মাখিয়ে রেখে চলে গেল কলতলায়। এই নলকূপ তার মায়ের জন্য দাদু বসিয়ে দিয়েছিল। শম্ভুর অবশ্য ইচ্ছে হলে কালনাগিনীতে চলে যায়। ওখান থেকেই স্নান করে ফেরে। যেদিন সাবান তেল মাখে, সেদিনই কেবল কলতলায় বসে। শেষবার সাবান মেখেছিল মাসখানেক আগে। আজ আবার কলতলায় সাবান মেখে ভালো করে গা ধুয়ে ফিরল যখন ভাত হয়ে এসেছে। মাংসটায় ঝাল দিল না শম্ভু। বুলি ঝাল খেতে পারে না। রান্না বান্না শেষ হতে দূর থেকে হাঁক পাড়লো---বুলি! ও বুলি?
বুলিটা ষষ্ঠীপদর মেয়ে। বয়স এখন ছয়। আধো আধো কত কথা বলে শম্ভুর সাথে। শম্ভু বাইরে কোথাও গেলে ওর জন্য লজেন্স এনে দেয়। ষষ্ঠী ঘরে নেই। ষষ্ঠীর বউ লতা বললে--যা রে বুলি, তোর শম্ভু কাকা ডাইকছে।
ঝুমঝুমি পায়ে হাজির হল বুলি,--কাকা? কি আনছ আমার জন্য।
একটা বাটিতে মাংস দিয়ে বললে---ফেইলে দিস না যেন। মাকে গিয়ে দিস। তুর জন্য মাংস আছে।
বুলি কিছুটা এগোতেই ষষ্ঠীর বউ লতা এগিয়ে এসে মেয়ের হাত থেকে বাটিটা ধরে নিল। একবার তাকালো শম্ভুর দিকে। শম্ভু জানে লতার এই চাহুনিতে একটা কামার্ত ভাব আছে। সে তাকাতে পারে না। শরীর টনটন করে। অনেক কিছুই একলা দিনে ইচ্ছে করে তার তখন।
আয়েশ করে খেয়ে দেয়ে মুখ ধুয়ে দোচালায় উঠে গেল শম্ভু। গরমে তক্তাপোশের তেলচিটে বিছানায় না শুয়ে মেঝেতে শীতলপাটি পাতলো। তারপর পদ্মের ঝাঁপির কাছে গিয়ে এমন ভাবে ডাক দিল, যেন সাপেরও কান আছে---পদ্ম, আ পদ্ম কই গেলি রে, আমার পিরিতের নাঙ।
ঝাঁপি খুলে চমকে গেল শম্ভু। ঝাঁপি শূন্য, পদ্ম নেই। নিশ্চই তক্তাপোশের তলায় গিয়ে সেঁধিয়েছে। এমন আগেও এক দুবার বেরিয়ে গেছে ও। ভারী ডানপিটে কিনা। শম্ভু মনে মনে হাসলো।
কিন্তু, কোথায় পদ্ম! সারা ঘর তন্ন তন্ন করে খোঁজ মিলছে না তার। দোচালা, একচালা কোথাও তার অস্তিত্ব নেই। উন্মাদের মত হয়ে উঠল শম্ভু। উঠান লাগোয়া হোগলা বন তেড়ে ফেলতে লাগলো। কোথাও পদ্মের কোনো চিহ্ন নেই। পদ্ম কি পালালো! পদ্ম কি গোলাপির মত তার বিষ সহ্য করতে পারলো না! বিশ্বাস হয় না শম্ভুর।
অনেক খোঁজাখুঁজির পর বুঝতে পারলো পদ্মও তাকে ছেড়ে চলে গেছে। চোখে মুখে তখন তার হতাশা, গ্লানি, রাগ। উঠানে বসে আছে হতভম্ব হয়ে।
+++++
Posts: 621
Threads: 7
Likes Received: 6,264 in 575 posts
Likes Given: 46
Joined: Jan 2019
Reputation:
1,585
10-11-2023, 11:41 PM
(This post was last modified: 10-11-2023, 11:41 PM by Henry. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
রাতের দিকে এসে হাজির হল ষষ্ঠীপদ। দোচালার মাটির ঘরে তখন সর্বত্র বিরাজমান অন্ধকার। উঠানে ছায়ামূর্তির মত একা বসে আছে শম্ভু। ষষ্ঠীর ভয় হচ্ছে, কোনোভাবে তাকে সন্দেহ করেনি তো।
দু' পা এগিয়ে গিয়ে বলল---কি রে ঘরে আলো জ্বালাসনি!
শম্ভু নিরুত্তর। হাতে বিড়ির জোনাকি সদৃশ আলো। ষষ্ঠীর নাকে ঠেকল অকস্মাৎ দিশি মদের গন্ধ। শম্ভু মদ গিলেছে বিশ্বাস হচ্ছে না তার। এক আধবার হয়ত সে আর শম্ভু একসাথে খেয়েছে, তবে সে বহুদিন আগে। বিশেষ পছন্দ করেনি শম্ভু।
ষষ্ঠীপদ বললে---কি হল, কথা কস না কেন?
শম্ভু বিড়িটা ছুঁড়ে ফেলে বলল---পদ্মটারে দেখছিস?
----কেন পদ্মর আবার কি হইল? না জানার ভান করে কথাটা বলল ষষ্ঠী।
---পদ্ম পালাইছে।
ষষ্ঠীপদ চুপ করে গেল। শম্ভুর গলায় তেজ স্পষ্ট। নিজে একটা বিড়ি ধরিয়ে বললে---বনের জীব সুযোগ পাইলে পালাইতে পারে। এ আবার নূতন কি!
---পদ্ম এদ্দিন পালাইল লা, আজ কেন পালাইল, ব্যাপারখানা মাথায় ঢুইকছে লা।
---শম্ভু, খালি খালি তু পদ্মরে মানুষটার মত ভাইবতিস। পালাইছে তো ভালো হছে। তুর ন্যাশাটা ছাড়বে।
---ন্যাশা! পদ্ম মোর কাছে শুধু ন্যাশা ছিল!
---আঃ শম্ভু। বনের জীব, কেন তার লিয়ে অত ভাবিস। কাজের কথায় আয়। শহরের বাবুটা একটা শঙ্খিনী লিবে, তুর ঝাঁপি থিকা লিব।
শম্ভু মদ্যপ অবস্থায় রাগত সুরে বলল---লে, সব লে যা। বেইচে দে সব। একটাও সাপ রাইখবো লাই।
উঠতে গিয়ে টালমাটাল হয়ে পড়ল শম্ভু। ষষ্ঠী ধরে ফেলল ওকে। এত শক্তপোক্ত চেহারার শম্ভুকে সামলানো ষষ্ঠীর পক্ষে কঠিন। তবু কোনরকমে তাকে একচালায় নিয়ে গিয়ে শুইয়ে দিল। নেশার ঘোরে তখনও বিড়িবিড় করে যাচ্ছে সে।
ফিরবার সময় ষষ্ঠী ভাবতে লাগলো পদ্মকে ধরতে তাকে কতই না কসরত করতে হল সেদিন। শম্ভু চলে যাবার পর হাজির হয়েছিল ষষ্ঠী। মা মনসার নাম নিয়ে ঝাঁপি থেকে বার করতে গেলেই ফোঁস করে তেড়ে এসেছিল তার দিকে। কোনোভাবেই তাকে ধরতে পারছিল না সে। শেষমেষ শম্ভুর সাপে বশ আনার হিং নেশা ছড়িয়ে দিল পদ্মগোখরোটার উপর। ঘরে দু'দিন না খেতে দিয়ে ফেলে রেখেছিল। যাতে দুর্বল হয়ে যায়। তারপরেও বাবুর ঘরে তার তেজ দেখেছে ষষ্ঠী। এখন বেটি চিরজীবনের জন্য কাচের বাক্সে বন্দী। মনে মনে আনন্দ হচ্ছে ষষ্ঠীপদর। পয়সাও তো দু'হাজার পেয়েছে। শম্ভুকে ভাগ না দিয়ে সে কখনো পয়সা নেয়নি। কিন্তু ভাগ দিতে গেলে যদি সন্দেহ করে! তারচেয়ে ষষ্ঠীপদ ঠিক করে নিল, এখন কিছু বলবে না সে শম্ভুকে। শম্ভুকে একটা বে দিতে হবে। জোয়ান মরদটাকে ঠিক পথে বাঁধতে হবে। তারপর কোনো একদিন বলবে কথাটা।
খুব ভোরে ঘুম ভাঙলো শম্ভুর। মনে পড়ল কাল রাতে সে রসুলপুর ঘাট থেকে দেশি মদ কিনে এনেছিল। বড় বিস্বাদ লেগেছিল তার। মা'টা মরে যাবার পর তার বাপ মদ খেত। শম্ভু ষষ্ঠীর সাথে ক'বার আগেও খেয়েছে। মুখে রুচেনি তার। নেশা বলতে বিড়ি ছাড়া কিছু ছুঁত না সে। ঠিক করেছিল এক সময় বিয়ে করে ঘরটা বড় করে বাঁধবে। বাচ্চা কাচ্চা হবে। তাদের সে ইকলেজে দেবে। কিন্তু দেড় বছরে তার জীবনে এক একটা বিপর্যয় ঘটে গেছে। প্রথমে গোলাপি পালালো, তারপর বাপটাও গেল মরে। শেষে এলো পদ্ম, পদ্মর বিষের নেশা চাপলো ঘাড়ে। সেই পদ্মও পালালো। এখন সকালটা নিঃস্ব লাগছে তার।
কাল দুপুরে রাঁধা মাংসের বাটি থেকে ঝোল নিয়ে মুড়ি মেখে খেল। তারপর জানালা দিয়ে চেয়ে রইল কালনাগিনীর দিকে। সূর্যের প্রখর আলো পড়ে নদীটা পদ্মের গায়ের মত সোনারবর্ণ। বহুদিন নদীতে যায়নি সে। ডিঙিটা বাঁধা আছে ঘাটে। আগে সে ষষ্ঠীকে সঙ্গে নিত। কখনো কখনো একা ঘুরে বেড়াত রায়মঙ্গল, মাতলা, বিদ্যধরী পর্যন্ত। জেলে রক্ত তারও গায়ে। মাঝিরা তাকে অনেকে চেনে, তারা অবশ্য বেদের পো বলে গাল দেয় না। বরং সনাতন মাঝির নাতি বলে সমীহ করে। সমীহ করবার মতই শম্ভুর চেহারা ও মেজাজ। আজ সে যাবে নদীতে। বুলিকে গল্প শুনিয়েছিল নদীর গল্প, কুমিরের গল্প, ঘড়িয়াল আর বাঘের গল্প। বুলিটা এখন ছোটো, একদিন নিয়ে যাবে তাকে কুমির দেখাতে। গোলাপি যদি থাকতো, তারও বুলির মত একটা মেয়ে হত।
জালটা নিবে নাকি! কি মনে করে চৌকির তলা থেকে বার করে আনলো তার দাদুর জালটা। প্রায় এক বছরের বেশি হল সে নৌকা বেয়ে জাল ফেলেনি নদীতে। পদ্ম যাওয়ায় তার বুকে যেমন কাঁটার মত বিরহ যন্ত্রনা আছে, তেমন শরীরটাও চাঙা লাগছে তার। এতক্ষনে দু'বার ঝিম ধরানো নেশা হত তার। আজ তার সুঠাম শরীরে সে বিষ পড়েনি।
নদী বক্ষে নামলো সনাতন জেলের নাতি। নৌকা বেয়ে যতই এগোয় অতল জলের আহ্বান তাকে আরো দূরে নিয়ে যেতে চায়। মনে পড়ল একদিন রাতে কিশোর বয়সে এমনই নদী বক্ষে সে আর ষষ্ঠী ঠিক করেছিল সমুদ্রে চলে যাবে। তা আর হয়নি কোনোদিন। মজবুত হাতে কালনাগিনীর মাঝ বুকে ছুঁড়ে দিল জ্বাল। গোখরোর ফনার মত জ্বালটা ছড়িয়ে গেল নৌকার তিনদিকে। জ্বাল ফেলার সুন্দর দক্ষতা ছিল তার দাদুর। বাপ ভীমনাগ বেদে চেষ্টা করেও শশুরের কাছে শিখে নিতে পারেনি এতটা পারদর্শিতা। বরং দাদুর কাছে এটা ভালোই রপ্ত করেছে শম্ভু। দাদু চাইতো তার নাতি বেদে নয়, জেলে হয়ে উঠুকু। বাপ চাইতো বেদের ছেলে বেদে। দুজনেরই কথা রেখেছে সে। শুধু পারেনি মায়ের ইচ্ছের মত হতে। মা কমলা চাইতো তার ছেলে শহুরে ভদ্রলোকের মত ফুলবাবুটা হয়ে উঠুক। শম্ভু জানে সে আর এ জন্মে হবে না।
নদী, সাপ, সুন্দর বনের গরান জঙ্গল আর হোগলা পাতার ঝাড় ভালোবেসেছে সে। ভালোবেসেছে একদিনের বউ গোলাপিকে নিয়ে ফিকে হয়ে আসা স্বপ্ন। ভালোবেসেছে বিষধর পদ্মের শীতল শরীরের বিষময় কামড়। ভালোবাসে সে বন্ধু ষষ্ঠীর ছোট বাচ্চা মেয়ে বুলির আধো আধো কথা। অথচ কিশোর বয়সে যখন একদিন ষষ্ঠী বলেছিল গেরামে মিলিটারি এসেছে, তখন দেখেছিল সরবেড়িয়া বাজারে ভোটের সময় বন্দুকধারী মিলিটারিদের। পড়াশুনাটা করলে সেও হত, তার চেহারায় নাকি মিলিটারি ছাপ। ভোটের ঐ ক'দিন; প্রতিদিন বিকেল হলে চলে যেত সরবেড়িয়া বাজারে। মিলিটারিরা নিজেদের মধ্যে হিন্দিতে কথা বলত। একজন মিলিটারি ভুটভূট করা মোটর বাইকে চেপে এসেছিল একদিন। শম্ভু স্বপ্ন দেখেছিল মিলিটারি না হতে পারুক; সে একদিন এরকম একটা ভুটভূট করা মোটর বাইক কিনবে। এটাই ছিল শম্ভুর কিশোর বয়সের সবচেয়ে অবাস্তবোচিত স্বপ্ন। সুন্দরবনের নদীর পাড়ে বাস করা তার মত বেদের বাচ্চা কি আর মোটর সাইকেল চাপে!
এসব কথা ভাবলে এখন হাসি পায় শম্ভুর। মাত্র বত্রিশ বছর বয়সে তার জীবনের দর্শন যেন বাপ ভীমনাগকেও ছাড়িয়েছে। বত্রিশের যৌবন তাড়নার স্বপ্নগুলো যা সে চেপে রেখেছিল পদ্মের ছোঁবলের নীচে, তা আজ যেন নতুন করে মনে এলো। পরক্ষনে নিজেকে অবজ্ঞা করে বিড়বিড় করে বললে---শম্ভু ন্যাশা দরকার তোর, বেদের পো হয়ে জনম হছিস, ইটা ভুইলে যাস না।
জালটা ভার হচ্ছে। গুটিয়ে গুটিয়ে টেনে আনলো। শুধুই গজাল। দু চারটা ট্যাংরা ছাড়া কিছু উঠল না। ঠিক করল রায়মঙ্গল বা মাতলায় গিয়ে জাল ফেলবে। বড় নদী, বড় মাছ উঠবে।
The following 11 users Like Henry's post:11 users Like Henry's post
• Baban, Bishakto Manush, KingisGreat, lividman, Mohan88, nextpage, PrettyPumpKin, ray.rowdy, sudipto-ray, sumit_roy_9038, বয়স্ক মহিলা প্রেমী
Posts: 621
Threads: 7
Likes Received: 6,264 in 575 posts
Likes Given: 46
Joined: Jan 2019
Reputation:
1,585
পর্ব ৫
সাত সকালে একদল ছাত্র পীযুষের বাড়িতে। মূলত ওরা মাস্টার্স করছে জুওলজিতে। অধ্যাপকরা অনেক সময় লম্বা ব্যাচ করে টিউশন দেন কলেজ ছাত্রদের। পীযুষের তা নাপসন্দ। বরং ও মাঝে মধ্যে কলেজের ল্যাবের চেয়ে নিজের বাড়িতেই ডেকে নেয়। এর একটা বড় কারণ ছাত্ররা জানে সরীসৃপ বিষয়ে পীযুষের গবেষণার কথা। তারা প্রায়শই তাদের স্যারের কাছে আবদার করে স্যারের নিজস্ব ল্যাবের গবেষণার জন্য রাখা সাপগুলি দেখবার জন্য। শুধু তাই নয়, এবারের ছাত্র-ছাত্রীরা সামার ক্যাম্পে নর্থ বেঙ্গল যাবে সাপের বিষয়ে একটি সেমিনারে যোগ দিতে।
কাচের বাক্সগুলোকে বাইর থেকে পর্যবেক্ষণ করে বিষধর সাপেদের এমন নিরীহ ভাবে বিস্ময়ের অন্ত নেই ছাত্র-ছাত্রীদের। তবে ঐ সোনালী রঙা গোখরোটা বেশ ফোঁসফাঁস করছে। ওটা বন্দী হলেও দুজন ছাত্রী কার্যত ভয়ে ওর দিকে যাচ্ছেই না। পীযুষ হেসে বললে---কি রে রুষা, এত ভয় পেলি যখন, তাহলে ওটা হাতে নিয়ে দেখতে পারিস।
রুষা বলে মেয়েটা এমনিতেই সাহসী প্রকৃতির। কিন্তু আজ এতগুলো বিষধর জীবের মুখোমুখি হয়ে ও ভয় পেয়ে আঁতকে উঠে বললে---ও মা গো! স্যার একদম না। ওগুলো ওরকম কাচের বাক্সেই থাক।
ছেলেদের মধ্যে অভিজিৎ ছেলেটা একটু ডানপিটে ধরনের। পড়াশোনায় প্রথম সারির না হলেও ওর এই ডানপিটে ভাবটা পীযুষও খানিক পছন্দ করে। ও বলল---স্যার একবার বের করুন না একটাকে।
সঙ্গে সঙ্গে সকলে বলে উঠল---না না। স্যার, থাক থাক।
পীযুষ হাসলো। বললে---প্রাণীবিদ্যা শাখাটাই পশু, পাখি, সরীসৃপ নিয়ে বেঁচে থাকার বিষয়। এতে ভয় পেলে কি করে হবে। তাছাড়া সামার ক্যাম্পে সাপ নিয়ে তোরা কি বলবি!
ভয়টা কাটিয়ে তোলার জন্য কাচের বাক্সের ঢাকনা খুলে পদ্মকে বার করে আনলো পীযুষ। আর তৎক্ষনাৎ তার বিশাল ফনা তুলে সে তাকিয়ে রইল নিশ্চল হয়ে। যেন কয়েক মুহূর্ত থেমে গেছে পদ্ম ও সকলের মাঝে। মনীষা বলে মেয়েটির দিকেই যেন ওর তাক।
মনীষা বললে---স্যার, বড্ড ভয় করছে! কেমন যেন আমার দিকেই....
পীযুষ হেসে বললে---স্নেক ক্যান নট সি ভেরি ওয়েল। দে সি অ্যা শ্যাডো শেপ। ভাইব্রেশন ইজ দেয়ার পাওয়ার টু আইডেন্টিফাই হান্ট এন্ড এনিমিজ। সো দেয়ার ইজ নাথিং টু ফিয়ার। ইট ইজ মোর এফ্রেইড দ্যান ইউ।
পদ্মকে যথাস্থানে রেখে ঢাকনাটা চাপিয়ে দিল পীযুষ। একজন ছাত্র প্রশ্ন করল--স্যার সাপের ভেনম আপনি দেখাবেন বলেছিলেন।
পীযুষ বলল---দেখাবো। তবে তার আগে বলতে হবে তোমাদের; এখানে যতগুলি সাপ আছে, কার বিষ একমাত্র হেমাটোটক্সিন?
অমনি সবচেয়ে ভীতু মনীষাই উত্তর দিল---চন্দ্রবোড়া।
---ঠিক। ইংরেজীতে বলে রাসেল ভাইপার। এমন একটি সাপ যা আন্টারটিকা ও কিছু শীতপ্রধান অঞ্চল ছাড়া পৃথিবীর সর্বত্র পাওয়া যায়।
পীযুষ কাচের ঢাকনা খুলে মোটা সোটা রাসেল ভাইপারকে বার করে আনলো। বেশ অলসভাবে একবার চোয়াল খুলল বটে সাপটা, তারপর পালাতে চেষ্টা করতে লাগলো বিরক্ত হয়ে। পীযুষ পুনরায় বললে---আমাদের গ্রাম বাংলায় তুতুর বলে একটা সাপ দেখা যায়। যাকে দেখে অনেকেই চন্দ্রবোড়া বলে ভুল করে। তুতুরের রঙ কালচে চন্দ্রবোড়া ধূসর। আসলে তুতুর নির্বিষ ও নিরীহ প্রাণী। চন্দ্রবোড়া কিন্তু ঠিক বিপরীত।
এরপর পীযুষ কেউটের ঢাকনা খুলে বললে---এটিও আগেরটির মত ফনা তুলেছে। কিন্তু কেউ বলতে পারে এদের ফারাক কোথায়?
ডানপিটে ছেলেটা বললে---আগেরটা গোখরো। এটা কেউটে। বাবুরাম সাপুড়ের প্ৰিয় সাপ।
সকলে হেসে উঠল। পীযুষ বললে---মোটেই বাবুরাম সাপুড়ের ডান্ডা মেরে ঠান্ডা করে দেওয়ার মত সাপ নয়। নিউরোটক্সিন অর্থাৎ স্নায়তন্ত্রকে ক্ষতি করতে এর দশ মিলিগ্রাম বিষ যথেস্ট। এর নাম হল মনোক্লেড কোবরা।
তারপর পীযুষ কেউটেটার মুখ কায়দা করে চেপে ধরল। ছাত্র ছাত্রীরা তাদের স্যারের এই দুঃসাহসী কায়দা দেখে মোহিত হয়ে উঠেছে। পীযুষ একটা ছোট্ট ডিবের মুখে পাতলা প্লাস্টিক আবরণে মুখটা চেপে ধরতেই সাপটা দাঁত বসালো শত্রু প্রতিপন্ন করে। কয়েক ফোঁটা বিষ ওতে ঢুকে গেল চুঁইয়ে।
পীযুষ সাপটাকে যথাস্থানে রেখে দুই হাতে গ্লাভস পরে নিয়ে ঐ বিষটুকু কাচের স্লাইডে দেয়ার কিছুক্ষনের মধ্যেই চিনির দানার মত শক্ত হয়ে উঠল। অভিজিৎ বলে ছেলেটা বললে---স্যার এমন কেন হল? ঠিক যেন জল জমে বরফ হবার মত।
---বাতাসের সংস্পর্শে সাপের বিষ এমনই হয়।
একটা বোতল থেকে জমানো সামান্য রক্ত দিল স্লাইডের ওপর। সঙ্গে সঙ্গে রক্তটুকুও জমে যেতে লাগলো। এই মারাত্বক দৃশ্য দেখে মোহিত হয়েছে ছাত্ররা। সাপ সম্পর্কে আরো কিছু কথা বলবার পর এই ক্লাস শেষ হতে হতে দশটা বেজে গেছে। পীযুষের কলেজ এগারোটায়। ছাত্ররা চলে যেতেই কোনোরকমে গোছগাছ করে ও তার ল্যাবের দরজা আটকে বেরোলো।
রমা ওর তোয়ালে রেডি করে রেখেছিল। বলল---ভাত বেড়ে ফেলেছি। জলদি স্নান করে এসো।
পীযুষ পরনের হালকা পাঞ্জাবিটা খুলতে খুলতে বললে---পিকলু কলেজ চলে গেছে?
---ঐ তো চাঁপা তুলে দিয়ে এলো বাসে।
স্নান করে খেয়েদেয়ে কলেজ চলে গেল পীযুষ। চাঁপাও বেরিয়ে গেছে খানিক আগে। রমা স্নান করে ভাতঘুম দিতে গেল। এসময় বাড়িটা নিস্তব্ধ থাকে। পিকলুর ফিরতে সেই সাড়ে চারটে। চাঁপা অবশ্য তার আগে এসে পড়বে। এই দুপুরটা বড্ড একঘেয়েমি লাগে রমার। আগে বই পড়ত, কিংবা টিভি চালিয়ে আগের রাতে হয়ে যাওয়া এক দু'টো সিরিয়ালের রিক্যাপ দেখত। এখন অবশ্য সেসব ভালো লাগে না। এসিটা চালিয়ে ও ঘুমোচ্ছে।
নির্জন শুধু বাড়ি নয়। এই পাড়াটায় একের পর এক দো তলা, তিনতলা বাড়ি। দু একটি ছাড়া সবকটিই বাঙালি পরিবারের। উচ্চ মধ্যবিত্ত এই পাড়ায় কেউ চাকুরিজীবি, কেউ ব্যবসাদার, কেউ উকিল, কোনো কোনো দম্পতির উভয়েই চাকুরিজীবি। শহুরে পাড়ায় যা হয়, এখানে সব কিছু তেমনই সৌজন্যতার। প্রতিবেশীর সাথে প্রতিবেশীর বিরোধ নেই, আবার হৃদ্যতাও নেই। কেউ কারুর বাড়ির ড্রয়িংরুমে ঢোকে না। তবুও কখনো কখনো কিছু গসিপ শোনা যায়। কমন কাজের মেয়েরা এই কাজটা খুব দক্ষতার সাথে তাদের এক মালকিন থেকে অন্য মালকিনের কানে পৌঁছে দেয়।
দুপুরের নির্জনতা রমার জীবনে অদ্ভুত এক একাকীত্বের মত। অনেক সময় মনে হয়েছে এভাবে দুপুরের এই অলস কর্মহীনতার চেয়ে পীযুষের কথা মত তার কোনো একটা কাজে যোগ দেওয়া উচিত। পীযুষ একবার বলেছিল ওর কোনো এক বন্ধু একটি বেসরকারি কলেজের ডিরেক্টর। ওখানে শিক্ষিকার কাজে রমা চাইলে যোগ দিতে পারে। ইচ্ছে যে রমার ছিল না তা নয়। কিন্তু কোনো না কোনো ভাবে এসমস্ত কিছু ইচ্ছের মধ্যেই আবব্ধ থেকে যায়। পীযুষও নিজের অভ্যস্ত জীবনে রমাকে দেওয়া সেই প্রস্তাবের কোনো মূল্য দেয়নি।
পীযুষকে বিয়ের পর থেকে রমা কোনোদিন চাকরীর চেষ্টা করেনি। করলে হয়ত নিশ্চই পেত। ওরই বান্ধবী তুলিকা, রমার চেয়ে পড়াশোনায় অনেক পিছিয়ে থাকা সত্বেও এখন নদিয়ার একটা কলেজে শিক্ষকতা করে। সুজাতাও একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরী করে। ওর বর ব্যাংকে আছে। কিছুদিন আগে পর্যন্ত লেকটাউনেই ন্যাশনাল ব্যাংকে ছিল সুজাতার বর বিনয়।
রমার চোখ জুড়িয়ে গেল ঘুমে। পীযুষের ল্যাবে কাচের বাক্সে বন্দী পদ্মর ফোঁস ফাঁস বাড়ছে অবিরত। পীযুষ যে ভুলটা কোনোদিন করে না, সেই ভুল করে ফেলেছে আজ। কাচের বাক্সগুলো যতই ও বন্ধ করুক, ল্যাবের দরজা বন্ধ করবার আগে ভালো করে দেখে নেয়। সাধারণ গোখরোদের চেয়ে পদ্মর চেহারাটা বিশাল। ঔদ্ধত্যও বেশি। কাচের বাক্সের কাচটা সামান্য আলগা হয়ে রয়েছে, পীযুষের নজর এড়িয়ে গেছে এই মারাত্বক ভুলটা। সাপেরা মৃদু ফাঁক ফোকর পেলেই গলিয়ে নিতে পারে তাদের দেহ। ইলাস্টিসিটি বা স্থিতিস্থাপকতা তাদের অন্যান্য জীবেদের চেয়ে বেশি। পদ্ম বার হয়ে পড়েছে কাচের বাক্স থেকে। পীযুষের দুটো মাইক্রোস্কোপের মধ্য দিয়ে দেহটাকে বেঁকিয়ে নিয়ে ও নেমে গেল পাশের টেবিলে। আস্তে আস্তে মেঝেতে। সমান্তরাল মেঝেতে সাপেদের চলাফেরায় সমস্যা হয়। তাই এ ও কোন দিয়ে গোটা ঘরময় ঘোরাঘুরি করতে লাগলো নির্ভয়ে। যেহেতু ওর ইন্দ্রিয় সামনে কোনো বিপদ দেখছে না। বরং ঘরের দেয়ালের ওয়াটার হোলে দেখতে পেয়েছে ব্যাংটাকে। খুব তীক্ষ্ণ শিকারি চোখে ও ব্যাংটার দিকে এগিয়ে গেল। গ্রাস করল ব্যাংটাকে। প্রায় দেড় বছর পর ও নিজে শিকার করল। শম্ভু কিংবা পীযুষ ওকে পোষ্যর মত খাইয়েছে। বন্য জীবেদের সেটা মোটেই পছন্দ নয়।
দেয়ালের হোল দিয়ে বেরিয়ে এলো পদ্ম। পীযুষদের বাড়িটায় কোলাপ্সিবল গেট। বাইরে পালানোর পথ নেই। সিঁড়ির একটা ধাপের ওপর দিয়ে শীতল শরীরটা নিয়ে গিয়ে ও ঢুকে পড়ল পাশের গুদাম ঘরে। কাচের বাক্স নয়, পরিত্যাক্ত জিনিসে ঠাসা এমন ঘরই আশ্রয়ের জন্য পদ্মের পছন্দ। সিমেন্টের বস্তাগুলির পাশ দিয়ে ও ওর দেহটা ঢুকিয়ে নিল কাঠের টুকরোগুলোর আড়ালে।
চলবে
The following 14 users Like Henry's post:14 users Like Henry's post
• Baban, Bishakto Manush, bosir amin, Deedandwork, KingisGreat, Manofwords6969, nextpage, Padmini123, PrettyPumpKin, ray.rowdy, Shorifa Alisha, sudipto-ray, sumit_roy_9038, Tamal69
Posts: 234
Threads: 0
Likes Received: 149 in 121 posts
Likes Given: 14
Joined: Dec 2022
Reputation:
2
Darun lagche.. ekta suspense
Posts: 260
Threads: 0
Likes Received: 274 in 122 posts
Likes Given: 614
Joined: Apr 2021
Reputation:
17
সেই কাছে আসার মুহুর্তের অপেক্ষায়..
•
Posts: 180
Threads: 0
Likes Received: 93 in 75 posts
Likes Given: 14
Joined: Apr 2023
Reputation:
4
Darun hochhe.... Please continue
•
Posts: 59
Threads: 2
Likes Received: 40 in 27 posts
Likes Given: 129
Joined: Sep 2022
Reputation:
3
•
Posts: 50
Threads: 8
Likes Received: 49 in 21 posts
Likes Given: 592
Joined: Aug 2023
Reputation:
3
খুবই সুন্দর লাগছে দাদা, চালিয়ে যান থামবেন না। আপনার লেখায় জাদু আছে যা আমাদের মোহিত করে তুলেছে। পরের পর্বের জন্য উদগ্রীব হয়ে আছি।
Rajkumar Roy
•
Posts: 86
Threads: 2
Likes Received: 70 in 42 posts
Likes Given: 194
Joined: Jul 2022
Reputation:
1
অসাধারণ লাগছে দাদা, চালিয়ে যান, আপনার telegram id আছে?
•
Posts: 2,758
Threads: 0
Likes Received: 1,212 in 1,068 posts
Likes Given: 44
Joined: May 2019
Reputation:
26
•
Posts: 119
Threads: 1
Likes Received: 124 in 66 posts
Likes Given: 98
Joined: Jan 2023
Reputation:
6
দাদা আপনার গল্পের পোকা আমি
অসাধারণ
নেক্সট আপডেটের অপেক্ষায়।
•
Posts: 119
Threads: 1
Likes Received: 124 in 66 posts
Likes Given: 98
Joined: Jan 2023
Reputation:
6
Henry দাদা আপনার শাথে আমি একটা বিষয়ে কথা বলতে চাই।
আপনার টেলিগ্রাম আইডি জদি দিতেন তাহলে বড়ই উপক্রিত হইতাম।
•
Posts: 1,382
Threads: 2
Likes Received: 1,412 in 975 posts
Likes Given: 1,725
Joined: Mar 2022
Reputation:
81
বরাবরের মতোই অসাধারণ পরবর্তী পর্বের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় রইলাম।
•
Posts: 288
Threads: 1
Likes Received: 199 in 151 posts
Likes Given: 90
Joined: Oct 2022
Reputation:
5
দারুন পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
•
Posts: 260
Threads: 0
Likes Received: 274 in 122 posts
Likes Given: 614
Joined: Apr 2021
Reputation:
17
Posts: 16
Threads: 0
Likes Received: 22 in 13 posts
Likes Given: 2
Joined: Jun 2023
Reputation:
4
দুর্দান্ত, আপনার লেখা গল্প হলো সেরার সেরা , অসাধারন বিল্ড আপ কোয়ালিটি, এই ফোরামে আপনি ও আর একজন মাত্র লেখক আছেন যাঁদের গল্প গ্রোগাসে পড়া যায়, আপনার গল্পে কোনো রকমের ফোর্স ফুল সেক্স থাকে না মানসিক সম্পর্কের পর শারীরিক সম্পর্ক আসে এটাই দারুন লাগে , না হলে অন্যদের শুধু ফোর্স ফুল সেক্স আর অবাস্তব কাহিনীর ফসল। আপনি হলেন সেরার সেরা।
•
|