Thread Rating:
  • 139 Vote(s) - 3.73 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery পদ্ম নাগের বিষ
দুর্দান্ত লেখনী, বারবার পড়তে ইচ্ছে করে। চালিয়ে যান  clps

[Image: Images-2-2-1.jpg]

Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
বাহ্! ইন্টার কানেকশন টা দারুন ভাবে বিল্ড হচ্ছে। ধীরে ধীরে তার সাথে এই পরিবারের পরিচয় হচ্ছে। যদিও সবে শুরু। এখনো অনেক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার বাকি আছে। সাথে এক অসাধারণ এডভেঞ্চারo অপেক্ষায় পিকলু বাবুর মামনির জন্য। জানিনা সে আসবে, নাকি ডাক আসবে রিপু রাজের। তবে যাই হোক, পাঠক বৃন্দ আটকাতে পারবেনা নিজেকে স্পর্শ করা থেকে।

চরম শরীরী খেলার পাশাপাশি হয়তো এক ভালোলাগার গল্পও পাবো আমরা। দেখা যাক। কাম স্রোত কোথায় বইয়ে নিয়ে যায় মোদের।
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply
খুব সুন্দর ভাবে গল্পের বুনোট গড়ে উঠছে, এটাই তোমার লেখার অন্যতম বৈশিষ্ট্য. চালিয়ে যাও. একটাই দুঃখ, যদি font size টা বাড়িয়ে দিতে, অক্ষরগুলো খুবই ছোটো.

শুভেচ্ছা রইলো.
Like Reply
অসাধারণ গল্প
Like Reply
আমি এ কথা আগে বলেছি অনেকবার আমার গল্পে কোনো না কোনো উপন্যাসের ছায়া থাকে। সঙ্গত কারণেই উপন্যাস থেকে কিছু মিল রাখি সেটা গল্পের অন্তত খুব বেশি হলে দু-তিন শতাংশ মাত্র। হেমন্তের অরণ্যের শুরুতে কাবেরীর জীবনের একাকীত্ব তেমনই হয়েছিল হেমন্তের পাখির প্রোটাগনিস্টের মত। কিন্তু ঐটুকুই, অতিসামান্য।
এই নতুন গল্পেও একটি পোলিশ সিনেমার ছায়া আছে, সেটাও ঐটুকু নামমাত্র ছায়া ছাড়া কিছু নয়। কিছু লিখতে গেলে তার একটা অবলম্বন থাকা চাই। আমি তার জন্য কোনো উপন্যাস, সিনেমা, কোন সামাজিক ঘটনাকে সূত্র ধরে বেছে নিই। exbii বা xossip এর যৌনমদির উপভোগ্য ইরোটিক সাহিত্যধারার একটি বিশেষ জনারকে ধরে এগিয়ে চলি।
আর বিড়িপোড়া ঠোঁটে চুকচুক দুধ খাওয়া যদি আপনার পছন্দ না হয়, তার জন্য তো আগে বিধিবদ্ধ দিয়ে রেখেছি, পড়তে ভালো না লাগলে পড়বেন না। দূরে থাকুন। আপনার জন্য অনেক লেখকের অনেক গল্প আছে, যেটা ভালো লাগবে পড়ুন। কোনো লেখকের গল্পে গিয়ে কাঠি করবেন না।
[+] 6 users Like Henry's post
Like Reply
পিকলু হাঁক দিল--- মা তোমার ফোন।

রমা স্নানে ঢুকেছিল। এই তো কদিন আগে ভারী বৃষ্টি না যেতে যেতেই আবার তীব্র রোদ। বৈশাখ মাস আসার আগেই এই বৃষ্টি দেখে পীযুষ বলেছিল অকাল বৃষ্টি। এ বৃষ্টিতে কোনো লাভ হবে না। ঠিক তাই। কি তাপ কি তাপ! এখনো তো দিন দশেক বাকি বৈশাখের। এর মধ্যেই এত গরম। যেন গা পুড়ে যায়। সারাদিন এসি চলে ঘরের ভিতর। কিন্তু রান্না ঘরে তো উপায় নেই।

শাওয়ার বন্ধ করে রমা সাড়া দিল----কার ফোন?

----স্কুল থেকে মনে হয়। স্কুল থেকে বলতেই মনে পড়ল পিকলুর। সঙ্গে সঙ্গে বললে---- এই রে! ভুলে গেছি। নোটিস দিয়েছিল স্কুলে, যাঃ।

বাথরুম থেকেই বিরক্তি প্রকাশ করে রমা বলল----ফোনটা ধর।

পিকলু একরাশ টেনশনে বিব্রত হয়ে বলল---যদি প্রিন্সিপ্যাল স্যার হয়।

----ভুল করলে তো বকা খেতেই হবে।
রমা ভেজা গায়েই সায়ার উপর বুকে তোয়ালেটা চাপিয়ে বেরিয়ে এলো। কটমট করে তাকালো ছেলের দিকে। ফোনটা ধরতেই স্কুল অফিস থেকে জানালো আজ পেরেন্ট-টিচার মিটিংয়ের কথা।

পিকলুর স্কুলের আজ ফাউন্ডেশন ডে। এজন্য ছুটি বলেই পিকলু ঘরে। আজই পেরেন্ট-টিচার মিটিং। উটকো ঝামেলা এসে জুটলো রমার ঘাড়ে। এমনিতে তীব্র গরম। বাইরে চোখ ঝলসে যাওয়া রোদ। যদিও সময়টা বিকেল চারটা দিয়েছে, তবু কোনো মতে রমার ইচ্ছে করছে না আজ বেরোতে। একবার ভেবেছিল পিকলুর বাবাকে বলবে। চারটের দিকে যখন, কলেজ থেকে যদি সময় বার করতে পারে। পীযুষ কখনোই ছেলের স্কুলের এসব উটকো ঝামেলায় ঢোকে না। রমাকে করতে হয়। ফোন করে কোনো লাভ হবে না। ফাঁকা থাকলেও পীযুষ নির্ঘাত একটা বাহানা করবে।


অগত্যা রমাকেই যেতে হবে। চাঁপা ঢুকতেই সে জানালা দিয়ে দেখলো রোদের তীব্রতা এখনো আছে। এখন তিনটে বাজে। পিকলুর স্কুলটা বালিগঞ্জে। আধ ঘন্টা তো লাগবেই। পাঁচটার দিকে পীযুষ এসে যাবে। তাই বেরোনোর আগে চাঁপাকে বলল---তোর দাদা এলে চা দিস। আর পিকলুর তবলা স্যার আসবে। ওনাকে চা জলখাবার দিস। ভুলে যাসনা যেন।

চাঁপা মাথা নাড়লো। একবার মুগ্ধতার চোখে তাকালো রমার দিকে। রমা একটা হ্যান্ডব্লক প্রিন্টেড হালকা সিল্কের শাড়ি পরেছে। খুব একটা গরম হয় না এতে। শাড়িটার রঙ কমলা। ওর ফর্সা গায়ে ঠিক যেন বিচ্ছুরিত সূর্যাস্তের আভা। চাঁপার চোখে মুগ্ধতা ধরা পড়ল। মোহিত হয়ে দেখতে লাগলো তার মালকিনের দীর্ঘ চুলের খোঁপা, টকটকে ফর্সা গায়ের রঙ, মসৃন ত্বক। অথচ চাঁপা কখনো রমাকে সাবান শ্যাম্পু ব্যাতিত ত্বক বা চুলের বিশেষ যত্ন নিতে দেখেনি। চাঁপা বুঝতে পারে এটা বৌদির জন্মগত। এর আগে মুখুজ্জেদের বাড়িতে কাজ করেছে সে, মুখুজ্জে বাড়ির মালকিন রমার চেয়ে বয়স কম, দেখতে শুনতেও ভালো। চোখে শসা দিয়ে কিসব ক্রিম মেখে বসে থাকে। নিয়ম করে পার্লার যায়। অথচ রমার সে সবের বালাই নেই। মুখুজ্জে গিন্নির সেই উগ্র রূপ ভালো লাগেনি চাঁপার। রমা বৌদির মধ্যে একটা আলাদা শ্রী আছে, যেটা আশ্চর্য্যজনক কিছু নয়, কিন্তু সবার চেয়ে আলাদা।

চাঁপাকে অনেকক্ষন ধরে তাকিয়ে থাকতে দেখে রমা বললে----একটু কুঁচিটা ধরে দিবি চাঁপা।

চাঁপার অবশ্য ভাবনার ছেদ পড়েনি। রমার শাড়ির কুঁচি ধরেও সে তখন ভাবছে বৌদি তার চেয়ে বারো বছরের বড়। পাশাপাশি হাঁটলে বয়সের ফারাক বোঝা যায়। তবু লোকে মুগ্ধ হয়ে বৌদিকেই দেখবে। বৌদি চাইলে এখনো দিব্যি দাদাকে লুকিয়ে একটা প্রেম করতে পারে। পরক্ষনে ভাবলো, ধ্যাৎ বৌদিকে নিয়ে সে কিসব আবোল তাবোল ভাবছে। তার এই বৌদিটি যে তেমন নয় সে বিলক্ষণ জানে। তাছাড়া দাদাও কম কিসের, এখন না হয় বয়স বাড়ছে বলে, সামনে চুলে পাক ধরেছে সামান্য ক'টা। কিন্তু এখনো তো দাদাকে বেশ লাগে। বৌদির সাথে খাসা মানায়। দাঁতে নখ কেটে থু করল চাঁপা। মনে মনে বলল নজর না পড়ুক কারো এমন লক্ষী-নারায়ণের সংসারে।

রমা শাড়িটা পিন করে বলল---চাঁপারে দেখনা লক্ষীটি, আমার হাত ঘড়িটা কোথায়।

সকলের জিনিস টিকটিক করে গুছিয়ে রাখে রমা। নিজের বেলা অযত্ন। আসলে এই হাতঘড়িটা রমা বাইরে বেরোলেই কেবল পরে। এটা ওর কলেজ জীবন থেকেই সেই একই রকম আছে। ওর বাবার স্মৃতি। কলেজে পড়তে এলে বাবা কিনে দিয়েছিল ওকে। কাছাকাছি বাজার করতে বা কেনাকাটা করতে হাতঘড়ি লাগে না। পীযুষ সঙ্গে থাকলেও নয়। কিন্তু খুব দরকারী কোনো কাজ, যেখানে সময় নির্দিষ্ট আছে, সঠিক সময়ে বাড়ি ফিরতে হবে, তখন হাত ঘড়িটার প্রয়োজন আছে। তাই যে এটার কোথায় স্থান হয় সে আর মনে থাকে না।

রমা বেরোতেই চাঁপার মনে পড়ল সে যে আজ বৌদিকে উত্তমের বিষয়ে বলবে ভেবেছিল! বৌদি ফিরতে ফিরতে সন্ধে হবে। তখন দাদা থাকবে। তখন সে সব বলতে তার লজ্জা করবে। এ তার জীবনের ভবিষ্যৎ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত। একটা স্বচ্ছন্দ সময় চাই। তারচেয়ে পরে একদিন না হয় সময় ও সুযোগে বলা যাবে।

যশোর রোড থেকেই ট্যাক্সি নেবে ঠিক করেছিল রমা। একটাও ট্যাক্সির দেখা নেই। দুটো বাস গেল, যারা বালিগঞ্জ হয়ে যাবে। কিন্তু বাসগুলোতে বেশ ভিড়। এসময় আবার স্কুল-কলেজ অফিস ফেরতের সময়। হঠাৎ করে একটা কালো রঙের সেডান গাড়ি এসে দাঁড়ালো পাশে। জানালার কাচ নামিয়ে ড্রাইভিং সিটে বসা অনিমেষ রায় বললে----বৌদি, যাচ্ছেন কোথায়?

চমকে উঠল রমা। বলল---ছেলের স্কুলে যাচ্ছি, ভাই।

'ভাই' শব্দটা ইচ্ছে করেই বলল রমা। তাছাড়া ভাবলো ভাই বলবে না তো কি বলবে। বয়সে তো রমার চেয়ে ছোট হবে চার পাঁচ বছরের।

অনিমেষ বললে---স্কুলটা কোথায়?

----বালিগঞ্জ সাউথ পয়েন্ট।

----ওঃ ভালোই তো হল। আমি তো ওদিকেই যাচ্ছি। চলে আসুন।
স্মার্টলি জানালো অনিমেষ। রমা অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়ে গেল। এখন তো সরাসরি না বলাটা ছোটলোকের মত আচরণ হবে। গাড়ির দরজাটা খুলে দিল অনিমেষ। রমা ভাবলো অনেকবারই তো হয়েছে পীযুষের বন্ধু বিপ্লবের স্ত্রীর সাথে দেখা করতে গেছে রমা, বিপ্লব ওর গাড়িতে রমাকে বাড়ি ছেড়ে দিয়ে এসেছে। তবে যদিও বিপ্লবের ব্যাপারটা আলাদা। বিপ্লব পীযুষের দীর্ঘদিনের বন্ধু। ওদের পরিবারের সাথেও দীর্ঘ সময়ের সম্পর্ক। সেক্ষেত্রে অনিমেষ রায় তো আর রমাদের পরিবারের সাথে এত সুপরিচিত নয়। এই যা প্রতিবেশীটুকু। তাছাড়া এই স্বল্প বয়সী ছেলেটার বদনাম আছে। মহিলাদের প্রতি অনিমেষের দুর্বলতা টুকটাক শোনা যায়। সেদিনই রমার বাড়ি এসে কেমন গায়ে পড়ে অযাচিত কিছু অপ্রাসঙ্গিক কথা বলছিল।

রমার সামান্যক্ষণ থমকে থাকায় অনিমেষ বিব্রত বোধ করল কিনা বোঝা গেল না। ও বলল--কি হল, বৌদি? আড়ষ্ঠতা বোধ করছেন?

রমা উঠে বসল গাড়িতে। বললে---কেন ভাই আড়ষ্ঠতা কিসের। তোমাকে তো প্রথম দেখছি না।

রমাকে বসতে হল অনিমেষের ড্রাইভিং সিটের পাশে। ভেতরে এসি চলছে। মৃদু শব্দে গান বাজছে, কিছু একটা ইংরেজী গান। বেজায় শুনতে খারাপ।

রমাই বলল প্রথম----তুমি যাচ্ছ কোথায়?

----বালিগঞ্জ পেরিয়ে অ্যাক্রোপলিসের দিকে। ওখানে আমার একটা ফ্ল্যাট কেনার কথা আছে। ওটাই দেখতে যাচ্ছি।

---কেন লেক টাউনের বাড়িটা কি বেচে দিচ্ছ?

----না না। বেচব কেন? কলকাতা শহরে সবকিছুর যা দাম বাড়ছে, তাতে দু একটা ফ্ল্যাট কিনে রাখা ভালো। পীযুষ দা'কে বলে একটা কিনে রাখুন। ঠিকঠাক দামে পাইয়ে দিব।

রমা চুপ করে রইল। মনে মনে ভাবল ঢেকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে। সুযোগ পেলেই অনিমেষ রায়ের মতো প্রোমোটাররা জমি বাড়ির কথা শোনায়।

সিগনালের কাছে দাঁড়িয়ে গেল গাড়িটা। বিরক্তির ছাপ দেখা গেল অনিমেষের মুখে। অনিমেষের গায়ের রঙ ফর্সারই দিকে। পীযুষেরই মত। তবে সিনেমার হিরোদের মত একটা চেহারা আছে। খুব লম্বা চওড়া নয়, আবার জিম করা পেশীবহুলও নয়। বরং ছিমছাম চেহারার একটা ছেলে। বয়সটা পঁয়ত্রিশের দিকে, তাই রমা ওকে লোক না বলে ছেলে হিসেবে ভাবাই পছন্দ করে। ডেনিম জিন্স আর কলার লেস নেভি ব্লু শার্ট পরেছে। হাতে একটা গোল্ডেন ব্রেসলেট, মাথায় চুলের ওপরে কালো রোদ চশমা তোলা। সবুজ আলো জ্বলতেই অনিমেষ বলল---বৌদি কি বাড়িতে নিজে রান্না বান্না করেই পীযুষ দা'কে খাওয়ান।

---কেন করব না ভাই? বিয়ে করো তোমারও বউ রান্না করে খাওয়াবে।

অনিমেষ শব্দ করে হাসলো। বলল---তা ঠিক। কথায় আছে যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে। আর বৌদির তো এমনিতেই চুলের বাহার খুব সুন্দর। রান্না নিশ্চই খুব সুন্দর হবে। কবে খাওয়াচ্ছেন বলুন।

মৃদু হাসলো রমা। বললে-----একদিন তুমি সঙ্গে করে বউ নিয়েসো। দুজনকে একসাথে খাওয়াবো।

---বিয়েটা একটা বার্ডেন বুঝলেন বৌদি। এই বার্ডেন নেওয়াটা আমার পক্ষে কঠিন কাজ।

----বার্ডেন যে সেটা তুমি কি করে বুঝলে? বিয়েটা করো। তবে দেখো সব ঠিক সুন্দর হয়ে গেছে। তোমার পীযুষ দাকে দেখে কিছু শেখো।

---পীযুষ দা'র মত কি সবাই সৌভাগ্যবান হয় বৌদি। যার সুন্দর একটি বউ আছে। প্রতিদিন ভালো রেঁধে খাওয়ায়।

অনিমেষ রায়ের এই গায়ে পড়া বিষয়টাই বড্ড বিচ্ছিরি লাগে রমার। এই ফ্লার্টবাজি জিনিসটা একেবারে পছন্দ হয় না রমার। এর আগে বাড়িতে এসেও এমন করে কথা বলছিল ছেলেটা। এ ধরণের গায়ে পড়া হ্যাংলা ছেলে একদম পছন্দ করে না রমা। রমা মনে করে শুধু সিনেমার নায়কদের মত কিংবা কার্তিক ঠাকুর মার্কা হলেই পুরুষ মানুষ হয় না। পুরুষ মানুষ হতে হলে তার ব্যক্তিত্ব থাকা চাই, তার হিউমার থাকা চাই। হয়ত একজন স্বল্প বয়স্ক পুরুষ যখন তার প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে সেটা যে কোনো রমার বয়সী নারীর ভেতরে ভেতরে খারাপ লাগে না, তবু এমন দিদির বয়সী মহিলার সাথে এই কলির কেষ্ট ধরনের ছেলেটির ফ্লার্টিং মোটেই আকর্ষণীয় নয়।
রমা একবার ভাবলো যদি তার বিয়ে না হত, অনিমেষের চেয়ে কম বয়স হত, তবে কি সে অনিমেষের প্রতি আগ্রহ দেখাতো? রমা আপন মনে বলে উঠল মোটেই নয়। রমার পছন্দে এমন ছেলে কখনোই আসতো না। রমার পছন্দ স্বল্প কথার ছেলে। যে কথায় কথায় গায়ে পড়ে প্রশংসা করে না। যেটুকু বলে সেটুকু বুদ্ধিদিপ্ত, তাতে হিউমার থাকে। যার চেহারায় এমন সিনেমার কমনীয়তা নয় বরং একটা পৌরুষ থাকে। দাম্পত্য জীবনের সতেরো বছরেও পীযুষের মধ্যে সেই ব্যক্তিত্ব এখনো হারিয়ে যায়নি। ও অহেতুক কতগুলো আপ্রাসঙ্গিক কথা বলে না। পীযুষের হিউমার তো ওর বন্ধু মহলেও প্রশংসিত। স্বামী হিসেবে রমারও গর্বের কারণ। পীযুষকে যখন প্রথম দেখেছিল রমা, কোঁকড়া চুলে ওর ইতিউতি খোঁচা খোঁচা দাড়ি বেশ লেগেছিল।

রবীন্দ্র সরোবরের কাছে আসতেই রমা বলল---বাম দিকে চলো ভাই।

অনিমেষ গাড়িটা টার্ন নেবার পর বললে---বৌদি আমায় এই 'ভাই' বলে না ডেকে অনিমেষ বলে তো ডাকতে পারেন।

'ভাই' ডাকটা যে অনিমেষের পছন্দ হয়নি সেটা রমা বুঝতে পেরে হেসে উঠল, বলল---তোমার বয়সটা বোধ হয় আমার চেয়ে বেশ কম।

----আপনি যে আমার চেয়ে বড় হবেন সে কথা জানি। কিন্তু তা বলে ভাই। অনিমেষ কুণ্ঠিত বোধ করে বলল কথাটা।

---তোমার বয়স কত।

---থার্টি ফোর প্লাস।

----তাহলে তো তোমার আমাকে দিদি বলেই ডাকা উচিত। আমার থার্টি নাইন। দিদি না বলতে পারলে রমা দি বোলো।


রাতে ঘুমোনোর আগে অনিমেষের সাথে যা যা কথোপকথন ঘটেছে পীযুষকে জানালো রমা। তা শুনে পীযুষ হো হো করে হেসে উঠল। বললে---তা বলে তুমি ওকে ভাই বলে ডাকবে!

রমা হাসতে হাসতে বললে---ভাগ্যিস পিকলুকে দিয়ে দাদা বলাইনি। বাচ্চা ছেলে একটা, কি না কি বলে!

পীযুষ সিগারেট ধরিয়ে বললে---রমা তুমি একটা তোমার এডমায়ারার হারালে। এরপরে লজ্জায় ও আর এ মুখো হবে না।

---এডমায়ারার না ছাই। এ পাড়ায় অনেক মহিলাদের প্রতিই ওর দুর্বলতা আছে। ঠিক বয়সে বিয়ে না করলে পুরুষ মানুষের এমনটা হয়।
রমা বিছানাটা টানটান করতে করতে কথাটা বলল।

---এত খবরের খোঁজ পাও কোথা থেকে? এসবের মাধ্যম নিশ্চই তোমার চাঁপা?

চাঁপার মা সরলা আগে এ পাড়ার সেনগুপ্তদের বাড়িতে কাজ করত। এখনো ও বাড়িতে ওর যাতায়াত আছে। সেনগুপ্তদের বাড়িটা ঠিক অনিমেষ রায়ের বাড়ির পাশেই। রমা বিছানা রেডি করে বললে---শুয়ে পড়ো। রাত অনেক হয়েছে। কাল তো আবার তোমার ছাত্ররা আসবে।

ছাত্রদের কথা বলতেই পীযুষের মনে পড়ল। বললে---রমা, কাল ভোরে একটু চাঁপাকে সাথে নিয়ে পরিষ্কার করে দিও ল্যাবটা।

---চাঁপা! তোমার ঐ ল্যাবে সে কখনো ঢোকে। আমারও কেমন ভয় লাগে আজকাল। ঐ নতুন গোখরোটাকে যে এনে রেখেছো, কেমন ফোঁসফাঁস করে।

---বন্দীদশায় ফোঁস ফাঁস ছাড়া ঐ জীবের কিচ্ছু করার ক্ষমতা নেই। খামোকা ভয় পাও তোমরা। কেমন সোনালী রঙ দেখেছো ওর।

রমা পীযুষের পাশে দেহটা এলিয়ে দিয়ে বললে---বেড সুইচটা বন্ধ করে দাও।

++++++
Like Reply
পর্ব ৪

বউটা গিয়েছিল কলতলায়। অন্ধকারে পা দিয়েছিল কেউটেটার ওপর। কামড় খেয়ে দু'দিন জ্ঞান ফেরেনি। শম্ভু গিয়ে দাগ দুটো দেখতে পেয়ে জড়ি বুটি বেটে লাগিয়েছে। বাসন্তী থেকে সাপে কাটা হাসপাতালে নিয়ে যেতে সময় লাগবে অনেক। খোল করতাল বাজিয়ে চন্ডীমঙ্গলা গান গাইতে বজবজ গিয়েছে বউটার স্বামী চরণ গোঁসাই। ঘরে আছে কেবল শ্বশুর ভব গোঁসাই, শাশুড়ি আর ননদ।

ভব গোঁসাই পুকুর ধারে ছাওয়া বেঁধে দিয়েছে শম্ভুর থাকবার জন্য। শম্ভু প্রথম দেখেই বলে দিয়েছে---দেখে লাও ভব গোঁসাই, যদি জেবন বাঁচাতে চাও, চিকিচ্ছা করতে চার-পাঁচ দিন লাইগবে।

ভব গোঁসাইরা ধর্মপ্রাণ বৈষ্ণব। পরিবারের সকলের গলায় তুলসী মালা। এমনকি ছোট্ট নাতিটার গলাতেও। বেদে ঘরের ছেলে এই নিচু জাতের শম্ভুকে থাকতে দেওয়া নিয়ে তাদের কার্পণ্য আছে। তবু তারা এখন বাধ্য। স্নান, খাবারের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। শম্ভু বলে রেখেছে---তেল সাবান না দিলেও চইলবে। গতরের জন্য খাবারটা আমার ভালো মন্দ লাইগবে দু'বেলা।

পুঁটলি খুলে পাতা বেটে প্রলেপ দিতে লাগলো শম্ভু। কেউটেটা বিষ ঢালেনি তেমন। বাপ ভীমনাগ তাকে চিনিয়েছিল কতটা বিষ ঢাললে রোগীর বিপদটা আছে। বউটার পায়ে একটা সূঁচের মত পিন ঢুকিয়ে রেখেছে সে। পা জুড়ে সবুজ কিসব পাতা আর শিকড়ের প্রলেপ দেওয়া। আঙুলগুলো টেনে টেনে দেখে নিয়ে শম্ভু বলতে লাগলো---ঠিক সময়টা হলে এ রুগী চার-পাঁচ দিনে বাঁচে, দের কইরে দিছ সময়টা লাইগবে।

ভব গোঁসাইয়ের বউ বললে---বিষটা ঢালছে রে?

ঠোঁটের ফাঁকে বিড়ি চেপে রেখে চিকিৎসা করতে করতে শম্ভু হেসে বললে---ঢাইললে কি ভালো হত গো কাকী?

ভব গোঁসাইয়ের বউ ঝামটা দিয়ে বলল---বেদের ব্যাটা হয়ে তুই কেমন কথা বলিস! পরের ঘরের মেয়ে বলে মোর কি দয়া মায়াটুকু লাই?

শম্ভু সূঁচটা বার করে রুগীর পায়ে জড়িয়ে বাঁধলো কাপড়টা। বললে---আজকে সকালের মত কাম খতম। মুড়ি বাতাসার ব্যাবস্থাটা করো গো কাকী। জোয়ান মরদের যে ভুখটা বেশি আছে।

খানিকপরেই ভব গোঁসাইয়ের মেয়ে দিয়ে গেল এক গামলা মুড়ি, শসা আর পেঁয়াজ। ভব গোঁসাইর মেয়েটার বিয়ে হয়েছে। কিন্তু বরটাকে দেখতে পাচ্ছে না শম্ভু। ভারী বুক দুটো ওঠানামা করে মেয়েটার। ওকে দেখলেই শম্ভুর টাটায়। মনে মনে ভাবে তার আর কি, খালি খালি মেয়েছেলের বুক দেখে শরীর টাটিয়ে। তার তো বিষ আছে। পদ্মের বিষই তো তার বে করা বউয়ের পিরিত, বিষে বিষে বিষক্ষয়।

ভব গোঁসাই লোকটা কথায় কথায় বড্ড জাত পাতের কথা বলে। বললে---কি রে বেদের পো, বে থা করছিস লা করিসনি?

----কেন গো ভব গোঁসাই মেয়ে দিবে নাকি।

রাগ চটে যায় ভব। এই যুবক বেদের চড়া অশ্লীল চাহুনিটা একটু আগে তার মেয়ের উপর ছিল, দেখেছিল সে। শুধু শুধু দায় আছে বলে সে কিচ্ছুটি বলেনি। তা নাহলে এ বেদেকে চৌহদ্দির মধ্যে রাখতো না।

----জোয়ান মরদ তুই বে লা করলে চইলবে?

---বে তো হছে গো, আমার গোখরোটার সাথে। শম্ভু মুড়ি খাওয়া শেষ করে, জলের ঢোক গিলে বলল।

ভব গোঁসাই চারপাশে মেয়ে, বউ নেই দেখে বললে--সে লা হয় বুঝলি। কিন্তু লুঙ্গির ভিতর তোর গোখরোটা খাড়াইলে কি করবি রে বেদের ব্যাটা।

আবার বিডি ধরালো শম্ভু। ধোঁয়া ছেড়ে বলল---গোখরো লা গো গোঁসাই। কাল কেউটেটা আছে। বিষ ঢাইললে কি হবে জানো?

---কি হবে? মজা পেয়ে জিজ্ঞেস করল ভব গোঁসাইর পাশে দাঁড়ানো সুখদেব মন্ডল। এই সুখদেবই শম্ভুর খোঁজ করে ডেকে এনেছে।

---গোঁসাইয়ের বৌমাটারে আর কতটুকু ঢাইলছে। আমার কেউটের বিষ ঢাইললে গোঁসাইর উঠান জুইড়ে কিলবিল কইরবে কেউটের বাচ্চা সব।

হেসে উঠল সুখদেব মন্ডল। সুখদেব; ভব গোঁসাইর চেয়ে বয়সে সামান্য কম। ঠাট্টা মস্করা সে করে থাকে। কিন্তু ভবর রাগ হল। বললে---নাইতে তো দেখি না। শালা পাষন্ডর মত শরীলটা করেছিস বেদের পো। এখন দেখতেছি মনটারেও তোর ঘিন আছে।

শম্ভু বলল---মনে ঘিন হইলে কত মেয়েছেলে লিয়ে এদ্দিন ঘরে উঠতি। আকাম কাজ আমি কইরি লা। চলো দিখি কেউটেটাকে ধইরতে পারি কিনা।

বাড়ির পেছনে কলতলা লাগোয়া শুকনো কাঠ পাতার ঝোপের দিকে শম্ভু চলে যেতেই ভব গোঁসাই সুখদেব মন্ডলকে বললে---বেদের ছেলে, এ কদিনে একবারই গামছা পইরে পুকুরে নেমে নাইতে দেখেছি। কি একটা তেল মাখে বোধয়, তা নালে কালো ছেলার গা অমন চকচক করে কেন?

সুখদেব মন্ডল বলল---তুই উর বাপ ভীমনাগটাকে দেখিসনি ভব। উর বাপের চেহারাটাও অমন ছিল। গতরটা বাপের চেয়েও তাগড়া আছে। বয়সটা তো দ্যাখে এমন কিছু লাইগে না। পঁয়ত্রিশ-ছত্রিশ হবে বোধয়।

ভব গোঁসাই খুশি হল না, বললে--সোমত্ত মেয়েছেলে ঘরে। জোয়ান বেদেটা কেমন ফ্যালফ্যালায় দেখে। বেদেরা জড়ি বুটি জানে, ভয় হয় রে।

---ডরিস না। জোয়ান বইলে একটু আধটু তাকায়। বেদেরা অমনটা লয়। সুখদেব অভয় দিল।

ওপাশ থেকে হাঁক দিল---ও গোঁসাই, জলদি আসো, মাল্টারে দিখতে পেছি।

দুজনেই দৌড়ে গেল। ততক্ষনে লেজ ধরে টেনে রেখেছে শম্ভু। সমস্যা একটা মোটা গাছের গুঁড়ি। ওর তলা দিয়ে এমন সেঁধিয়েছে যে সাপটা যদি ইচ্ছে করে বেরিয়ে না আসে, তবে বার করা শক্ত।

ভব গোঁসাই বললে---গুড়িটা সরাইতে পারলে হত।

সুখদেব বাধা দিয়ে বললে---এত ভারী গুড়ি কে সরাইবে এখন।

শম্ভুর গায়ের জোর দেখে ওরা অবাক হল। এমনিতেই শম্ভুর চেহারা লম্বা চওড়া, গায়েও যে এত জোর কল্পনায় ছিল না ওদের। গুড়িটা তুলে সরিয়ে দিল ও। সাপ বাবাজি আর পালানোর রাস্তা পেল না। অমনি বন্দী হয়ে গেল শম্ভুর হাতে।

সুখদেব আর ভব গোঁসাই দুজনেই মোহিত হল ব্যাপারটা দেখে। গোঁসাই বললে---তুদের কি ভয় ডর লাগে না।

শম্ভু কোনো কথা বলছে না তখন। কেউটের গলাটা চেপে ওর মাথায় আঙুল বুলিয়ে আদর করছে। সুখদেব বা ভবর গা'টা শিরশির করে উঠল। বেদেদের দুঃসাহস বটে, তারিফ করতে বাধ্য হল ভব গোঁসাই। হাতের শক্তপোক্ত পেশিতে কঠোর শিরা-উপশিরায় জড়িয়ে আছে সাপটার বাকি অংশ। কোমরে বাঁধা গামছাটা খুলে বেঁধে নিল তাকে।

ভব গোঁসাই বললে---- মন্ত্র দিয়ে বেঁইধে রাইখলি নাকি রে বেদের পো?

শম্ভু কোনো উত্তর না দিয়ে সুখদেবকে বললে---কাকা একটা বিড়ি হবে গা?

সুখদেব বিড়ি বার করে দিল বটে, তবে কর্কশ সুরে বললে---বয়স কত রে তুর, বাপের বয়সী লোককে বিড়ি চাইস?

শম্ভু কোনো উত্তর না দিয়ে বিড়ি ধরালো। তারপর ধোঁয়া টেনে বলল---আমরা বাপটাই হাতে ধইরে সব শিখাইছে, বিড়িটাও টানতে শিখাইছে বাপ।

গোঁসাই বলল---আর কি কি ন্যাশা আছে তোর?

শম্ভু কেউটেটাকে বাঁধা গামছাটা দিখিয়ে বলল---ছোঁবলটা লিবে লাকি? ঝিম ধরা ন্যাশা হবে গো ভব গোঁসাই।

---সত্যিরে বেদের পো, তুই বে-শাদী করিসনি? সুখদেব প্রশ্ন করল শম্ভুকে।

শম্ভু হলদে দাঁত বের করে হাসে। পিচ করে থুথু ছুঁড়ে বলে---ইদিকে বেদের পো করে হাঁকো, সিদিকে বুঝ লাই বেদের ব্যাটার লিয়ে মেয়েটা পাওয়া কুত কঠিন।

সুখদেব বলল---সত্যি বে করবি? আছে রে। লগেনটা গান গেয়ে ভিখ মাগে। ঘরে সোমত্ত মেয়ে রাখছে, বে করবি। বেদে হলেও মেয়ের বিয়া দিবে।

গোঁসাই তৎক্ষনাৎ আপত্তি করে বলল---বোস্টম ঘরের মেয়ে, যতই ভিখ মাগুক তার বাপ। বিয়ে দিবে লা।

----লা দিয়ে যাবে কুথা। আইবুড়ো মেয়েছেলে বাপের ঘাড়ে বসে আছে। বাপটা মরলে কি হবে? কি রে বেদের পো, তোর কি আয় ইনকাম কম নাকি? গোঁসাইয়ের কথার বিরোধ করে বলল সুখদেব।

শম্ভু বলল---আমার তো ঘরে বে করা বউ আছে গো কাকা। তুমি কি কখুনো জিবে পদ্মগোখরোর কামড় খাছো।

সুখদেব আমল না দিয়ে বললে---রাখ সে সব ফালতু কথা। বল দিখি তোর বয়সটা কুতো?

---বোশাখ চলছে নাকি গো গোঁসাই বুড়ো? যদি বোশাখ হয়, তবে বত্রিশ পড়ব গো কাকা।

গোঁসাই বিস্মিত হয়ে বলল---কি কস, তোর মজবুত গতর দিখে তো মনে হয় এত কম বয়স লা রে!

---আমি কি মিথ্যা কছি নাকি?

সুখদেব বললে---ঠিকই বলছে। ওর বাপ ভীমনাগ মোর চেয়ে ছোট ছিল। সড়বেড়িয়ার সনাতন মাঝির মেয়েটাকে বিয়ে করছিল। সনাতন মাঝি তো উর দাদু।

---সরবেড়িয়াটা কুন দিকে রে সুখদেব? শুধোলো গোঁসাই।

শম্ভু বললে---দেউলবাড়ি গেছো কখুনো? দেউল বাড়ি থিকা চার কিলোমিটার গেলে সরবেড়িয়া। কালনাগিনী নদীর ধারে আমার গেরাম। শেষ ঘর আমার।

---সে তো অনেক দূর রে। সুখদেব তু তো আগে বলিসনি?

---বলব কি? এর বাপকে তো আমি চিনি। রাসের মেলায় গান গাইতে যেতামটা সিদিকে। তখন নাম শুনছি, সরবেড়িয়ায় লা কি একঘর বেদে আছে। ভীমনাগ বেদে লা কি সাপের যম। তু যখন বললি চরনের বউটাকে সাপে কাটছে মনে হয়, আমার ভীমনাগের কথা মনে পইড়ে গেল।

দাওয়ায় এসে বসল ওরা। ভব বলল---বৌমার জ্ঞান ফিরবে রে বেদের পো? ব্যাটা কীর্তন করতে গেছে শহুরে। জানতে পায়েনি এখুনো। বৌমার বাপের বাড়িটাতেও খবরটা দিইনি। ছোট বাচ্চাটা আছে বাপ। দিখিস বাঁচেটা যেন।

শম্ভু ঝাঁপির ভেতর সাপটাকে রেখে বললে---যে কামড়ায়ছে সে এখন আমার বশে। যারে কামড়েছে তারে বাঁচানোর দায়িত্বটা মোর উপর ছেড়ে দেও গোঁসাই।

সুখদেব বলল---কত বছর থিকা এসব করতেছিস রে?

---বাপটা হাতে করে শিখাইছে। দশ বছর হতে না হতে বাপের হাতটা ধইরে গেরামের পর গেরাম গেছি।

---লেখাপড়া কইরেছিস কিছু?

----দু কেলাস পর আর ইস্কুল যাইনি কুনোদিন। বেদের ব্যাটা ইস্কুলে গেলে সকলে ডরতো। কেউ কয় বেদের গায়ে গন্ধ, নাহায় না। কেউ কয় সাপটা ছেইড়ে দিবে পায়ে। মা লিখা পড়া জানতো চার কেলাস। দু কলম লিখতে, পড়তে শিখাই দিয়েছিল।
তারপর গোঁসাইর দিকে চোখ মেরে বললে---টাকা পয়সাটা গুনতে জানি গো গোঁসাই।

বুড়ো গোঁসাইকে যে খেপিয়ে মজা পাচ্ছে শম্ভু সেটা সুখদেব বুঝতে পারছে। সে গোঁসাইয়ের গোমড়া মুখের প্রতি গুরুত্ব না দিয়ে বলল---তুর বাপটাও ছিল সেরকম। কি সাহস! তুর মত চেহারা। তাগড়াই গোঁফ। সাপের ফনাকে মুঠাই ধরত। তোরে দিখে তুর বাপের কুথা মনে আসতেছে। সেই গতর পাইছিস তুই। শুধু লম্বাটা বেশি আছিস। কুতো হাইট হবে রে তুর? সুখদেব তারিফ করে জিজ্ঞেস করলো।

---আমি কি দড়া দিয়ে মাপছি লাকি? ষষ্ঠীপদ কে চিনো কাকা, মদ খেয়ে ডুবে গিছিল নদীতে যে কানু মাঝি, তার ছোট ছেলে, সে আমার বন্ধু। বলে পড়ালেখা কইরলে আমি লাকি মেলেটারিতে যেতে পারতি।

---ঠিকই কছে তোর বন্ধু। মেলেটারির মত তোর চেহারাটা।
সহমত হল সুখদেব। তারপর ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে বলল---ছয় ফুট হবে লা কো গোঁসাই?

গোঁসাই পান সাজতে সাজতে বিরক্ত প্রকাশ করে বলল---তু কি লগেনের মেয়েটার জন্য ভাবতেছিস? লগেন কখুনো বেদের ঘরের ছেলার সাথে বে দিবে লা। তু দেখে লিস সুখদেব।


চলবে
Like Reply
হেমন্তের পাখি আমিও পড়েছি। শুধু তিনটা চরিত্রের নাম(তাতাই-পাপাই আর হেমেন) আর ওই গল্পের মূল নারী চরিত্রের মতো কাবেরীর একাকীত্ব ছাড়া কী মিল আছে 'হেমন্তের পাখি'র সাথে 'হেমন্তের অরণ্যে'? এইটা কীভাবে 'কপি-পেস্ট' হয়? উত্তরটা দিয়ে যাবেন। হেমন্তের অরণ্যের মূল প্লট তো পুরোই ভিন্ন। 

সোজা কথা, ভালো না লাগলে পড়বেন না। অহেতুক মন্তব্য কেন করেন? আমাদের যাদের ভালো লাগে, তারা পড়বো।
[+] 1 user Likes dudhlover's post
Like Reply
আজকের পর্ব ছিল দুই নায়ক নায়িকার চারিত্রিক বৈশিষ্টকে প্রকাশ করার পদক্ষেপ। একজন শীতল পানি তো একজন আগ্নেয়গিরি। কিন্তু ভুললে চলবেনা জলও যদি হিংস্র রূপ নেয় তবে আগ্নেয়গিরি বুঝিয়ে দেবার ক্ষমতা রাখে। তবে তার আগে সেই আগুনের তেজ এতো বাড়িয়ে দেবে সেই পানি যে কামের আগুনে নিজেও অনেকটা ভাপ হয়ে উড়ে যাবে।

বিষে ভর্তি নাগ রাজ একদিন ঠিক গুহার মুখের খোঁজ পাবে। সেই গুহা তাকে বর্জন করবেনা বাঁ ভয় পাবেনা, বরং সম্মানের সাথে আমন্ত্রণ জানিয়ে তাকে পুরুষ হিসেবে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দেবে। এক গাদা কাল কেউটে ছানা কিলবিল করবে। নাগিনীও মা হবার নতুন মানে আবিষ্কার করবে।

দারুন পর্ব।
[+] 2 users Like Baban's post
Like Reply
চমৎকার গল্পের গাঁথুনি। ঝরঝরে লেখা। ইরোটিক অংশ এখনো শুরু না হলেও যথেষ্ট আকর্ষণীয়। হেনরিদা তার লেখার মাহাত্ম্য দেখিয়ে দিচ্ছেন পুরোদমে।

নাগ নাগিনীর কাছে কবে আসে সেটাই দেখার অপেক্ষায়। আরেকটু বেশি করে দ্রুত আপডেটের অনুরোধ রেখে গেলাম।
Like Reply
Oshadharon
Like Reply
কোনো একজন আমার থ্রেডে এসে অন্য গল্প বা উপন্যাস থেকে এই গল্প কপি করা বলে দাবী করছে। যদিও ওর কাজ শুধু অন্যের লেখার ব্যাঘাত ঘটানো। তবুও বারবার মিথ্যে অভিযোগ এনে লেখার মনোসংযোগে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। যার আমার গল্প পড়তে ভালো লাগে না, যে আমার গল্প নাকি অন্য গল্পের কপি বলে মনে করে সে তবুও আমার থ্রেডে এসে ভুল মন্তব্য করে যাচ্ছে বারবার, তার উদ্দেশ্য আসলে সৎ নয়। এমন লোকেরা বারবার লেখায় ব্যাঘাত ঘটাবে।

তাই এরপরে আর লেখা সম্ভব নয়, যতক্ষন না আমার থ্রেড থেকে ওকে বিরত করা যায়। এই উপন্যাস কোথা থেকেও কপি নয়। এ আমার কলমে সৃষ্টি। বারবার বলেছি যার ভালো লাগবে না, সে পড়বে না। এখানে কেউ পয়সা নিয়ে লেখে না। তাই কারো দায়বদ্ধতা নেই। এই লোকটি সবসময় যা নয় তাই রিপ্লাই করে যাবে মেনে নেওয়া যায় না। আপাতত থেমে থাকবে কলম, যদি মডারেটর একে আমার থ্রেড থেকে ব্যান করেন, তবে আমি আবার ধারাবাহিক লিখে যেতে পারি। অন্যথায় ওই ব্যক্তিকে প্রমাণ দিতে হবে এটি অন্য কোন গল্পের কপি বলে। বিরক্তি উৎপাদন হয় এমন রিপ্লাইতে। আপাতত লিখছি না। আপডেট দিচ্ছি না।
[+] 2 users Like Henry's post
Like Reply
(09-11-2023, 07:32 AM)Henry Wrote: কোনো একজন আমার থ্রেডে এসে অন্য গল্প বা উপন্যাস থেকে এই গল্প কপি করা বলে দাবী করছে। যদিও ওর কাজ শুধু অন্যের লেখার ব্যাঘাত ঘটানো। তবুও বারবার মিথ্যে অভিযোগ এনে লেখার মনোসংযোগে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। এরপরে আর লেখা সম্ভব নয়, যতক্ষন না আমার থ্রেড থেকে ওকে বিরত করা যায়। এই উপন্যাস আপাতত থেমে থাকবে, যদি মডারেটর একে আমার থ্রেড থেকে ব্যান করেন, তবে আমি আবার ধারাবাহিক লিখে যেতে পারি। আপাতত লিখছি না।

"""""দাদা একজনের জন্যে 
              সবাই কেন শাস্তি পাবে 
                          please continue,,,,,
[Image: Media-231006-011546.gif] 
The way to get started is to quit talking and begin doing.
=================================""ধন্যবাদ""
উত্তেজনা সয় না রিবুট/পরবর্তী আপডেট– ১০/০৪/২০২৪ ~My blog link~

Like Reply
Aami bujhte parchhi na ekhane ekta choti site e aapni Gaand Marrr naam rekhe sahitto chorcha korte esechhen?? Jekhane besir bhag kahini te- dujonor dekha holo kotha nei barta nei kapor khule suru hoye gaalo. Sei jaigai jodii keo naam kora uponnas theke inspiration niye bhalo kichhu likhchhe to seta te osubidhe ta ki?? Jekhane sonaam dhonno onek lekhokera onno bhasha theke nijer language e translate kore e nijer life chaliye gachhen sekhane aapni choti lekhok deer churi korchhe bolchen. I mean what do you want, do you want them to give credit to the authors or what???
Like Reply
(09-11-2023, 07:32 AM)Henry Wrote: কোনো একজন আমার থ্রেডে এসে অন্য গল্প বা উপন্যাস থেকে এই গল্প কপি করা বলে দাবী করছে। যদিও ওর কাজ শুধু অন্যের লেখার ব্যাঘাত ঘটানো। তবুও বারবার মিথ্যে অভিযোগ এনে লেখার মনোসংযোগে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। যার আমার গল্প পড়তে ভালো লাগে না, যে আমার গল্প নাকি অন্য গল্পের কপি বলে মনে করে সে তবুও আমার থ্রেডে এসে ভুল মন্তব্য করে যাচ্ছে বারবার, তার উদ্দেশ্য আসলে সৎ নয়। এমন লোকেরা বারবার লেখায় ব্যাঘাত ঘটাবে।

তাই এরপরে আর লেখা সম্ভব নয়, যতক্ষন না আমার থ্রেড থেকে ওকে বিরত করা যায়। এই উপন্যাস কোথা থেকেও কপি নয়। এ আমার কলমে সৃষ্টি। বারবার বলেছি যার ভালো লাগবে না, সে পড়বে না। এখানে কেউ পয়সা নিয়ে লেখে না। তাই কারো দায়বদ্ধতা নেই। এই লোকটি সবসময় যা নয় তাই রিপ্লাই করে যাবে মেনে নেওয়া যায় না। আপাতত থেমে থাকবে কলম, যদি মডারেটর একে আমার থ্রেড থেকে ব্যান করেন, তবে আমি আবার ধারাবাহিক লিখে যেতে পারি। অন্যথায় ওই ব্যক্তিকে প্রমাণ দিতে হবে এটি অন্য কোন গল্পের কপি বলে। বিরক্তি উৎপাদন হয় এমন রিপ্লাইতে। আপাতত লিখছি না। আপডেট দিচ্ছি না।

হেনরি দা, এই লোকটার উপর আমিও বিরক্ত। গণ্ডমূর্খ একটা। এদেরকে আসলে ব্যান করেও লাভ নেই। লুকিয়ে অন্য আইডি দিয়ে এসে ঠিকই গল্প পড়বে, কমেন্টও করবে। আশা করি, ন্যূনতম আত্মসম্মানবোধ থাকলে আর এ গল্পে গ্যাজাইতে আসবে না।

এসম উন্মাদদের উপর প্লিজ রাগ করে লেখা থামাবেন না। আমরা যারা আপনার গুণমুগ্ধ পাঠক তারা এমন লেখা থেকে বঞ্চিত হতে চাই না। মডারেটরকে জানানোর চেষ্টা করতেছি, কিন্তু আপনি প্লিজ লেখা চালিয়ে রাখেন।
Like Reply
No offence buddy but it is what it is...bhalo thakben
Like Reply
এই থ্রেডে এত ঝামেলা কিসের বুঝিনা। যাই হোক আমি গল্প পড়তে এসেছিলাম, পড়া হয়ে গেছে। খুব ভালো লিখছেন লেখক মহাশয়। আশা করি, খুুব তাড়াতাড়ি পরবর্তী আপডেট পাব।

[Image: Images-2-2-1.jpg]

[+] 2 users Like Somnaath's post
Like Reply
ওগো দাদা আপনি কে গো এত এখানে ডিস্টার্ব করতে আসেন কেন 
আপনি মানুষের পিছনে পড়ে থাকেন কেন
Like Reply
ওগো দাদা আপনি কে গো এত এখানে ডিস্টার্ব করতে আসেন কেন 
আপনি মানুষের পিছনে পড়ে থাকেন কেন
Like Reply
মডারেটরের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এই ঝামেলাগুলো সরানোর জন্য। যারা লেখকের মন নষ্ট করছেন।
Like Reply




Users browsing this thread: 1 Guest(s)