Thread Rating:
  • 139 Vote(s) - 3.73 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery পদ্ম নাগের বিষ
#81
Henry এর গল্প মানেই আলাদা একটা ব্যাপার। আগের গল্পের ending না থাকলেও এই গল্প end অবধি চাই। অপেক্ষায় রইলাম পরবর্তী আপডেটের।
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.
#82
(04-11-2023, 11:24 AM)Henry Wrote: কিছুদিন ভিন রাজ্যে বেড়াতে গিয়েছিলাম। তাই আপডেট করতে পারছিলাম না। ফিরে এসে আপডেট দিতে গিয়ে দেখলাম, রিপ্লাই ভীষন কম। মোটের ওপর জনা কয়েক ছাড়া গল্পের প্রতি খুব একটা পাঠকের আগ্রহ নেই। তাই দু' একটা কিস্তি দিয়ে বোঝার চেস্টা করব পাঠকদের মনোভাব। অনাগ্রহী হলে থ্রেড বন্ধ করে দেব।

এটা কেমন কথা হলো দাদা.. আপনার গল্প মানেই অন্ন রকম অনুভুতি.. আমরা তো আপনার গল্পের জন্য মুখিয়ে থাকি। আমাদের মন ভাংবেন্না দয়া করে।
Like Reply
#83
(04-11-2023, 11:24 AM)Henry Wrote: কিছুদিন ভিন রাজ্যে বেড়াতে গিয়েছিলাম। তাই আপডেট করতে পারছিলাম না। ফিরে এসে আপডেট দিতে গিয়ে দেখলাম, রিপ্লাই ভীষন কম। মোটের ওপর জনা কয়েক ছাড়া গল্পের প্রতি খুব একটা পাঠকের আগ্রহ নেই। তাই দু' একটা কিস্তি দিয়ে বোঝার চেস্টা করব পাঠকদের মনোভাব। অনাগ্রহী হলে থ্রেড বন্ধ করে দেব।

এরকম বলবেন‌না । আপনার গল্পের নেশায় পড়ে যাই সবাই। তেমন মঙ্গলসূত্র গল্প টার জন্য আজ ও অপেক্ষায় আছি
Like Reply
#84
Please continue till last. very nice plot.
Like Reply
#85
(04-11-2023, 11:20 AM)Henry Wrote: শম্ভুর তখন সতেরো-আঠারো বয়স। এখনই লম্বায় বাপকে ছাড়িয়েছে সে। বাপ তাকে অনেক কেরামতি দেখিয়েছে। সব কেরামতি সেও শিখে নিয়েছে পুঙ্খানুপুঙ্খ। আজ কি দেখাবে আবার বাপ!  

ভীমনাগ খাটের তলা থেকে ঝাঁপি বের করে এনে গোখরোটাকে বার করলো। গলা চেপে ধরে চুমু খাবার মত জিভের ডগায় ধরল সাপটাকে। গোখরোটা চেরা জিভ বার করে ঢেলে দিল বিষ। কাজ হয়ে গেল ভীমনাগের। সাপটাকে যথাস্থানে রেখে বললে---এ হল সাপের বিষের ন্যাশা। এর খদ্দের আছে, পঞ্চাশ টাকা তোরে দিবে। কালিনাথপুরের গগন ঘোষটার কাছে পৌঁছে দিস।

সেদিন শম্ভু প্রথমবার গগন ঘোষের বাড়ী গিয়েছিল। গগন ঘোষ চালকলের মালিক। বেশ বড় তার বাড়ি। আরাম সোফায় বসেছিল লোকটা। ভীমনাগ না আসায় শম্ভুকে দেখে প্রথমে বিরক্ত হয়েছিল। পরে যখন দক্ষতার সাথে শম্ভু কাজটা করতে পারলো খুশি হল গগন ঘোষ। প্রথম দিনই একশো টাকা বখশিশ দিয়েছিল শম্ভুকে। বলেছিল---বেশ বাপের ব্যাটা তুই, প্রত্যেক শনিবার চলে আসিস সাপটাকে নিয়ে।

শম্ভুর বয়স এখন বত্রিশ। বাপের মত তার পেটানো চেহারা। তেমনই তার দস্যু সুলভ তেজ। গায়ে গতরে পেশব জোর যেন তার বাপ ভীমনাগ বেদে কিংবা দাদু সনাতন জেলেকেও হার মানাবে। জেলে রক্তে সে ডিঙি নৌকা বেয়ে ইচ্ছে মত কালনাগিনীর বুকে ঘুরে বেড়ায়। আবার বেদে সন্তান হয়ে রক্তে তার সাপ ধরে বেড়ানোর নেশা। জঙ্গলে গাছের ডাল থেকে, ভাঙা বাড়ির ফাটল কিংবা জমে থাকা দীর্ঘদিনের ইটের স্তুপ; টপ টপ সাপ ধরে আনে। তার দো চালার ঘরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে যত্র তত্ৰ ঝাঁপি। কোনোটাতে গোখরো, কেউটে, কোনোটাতে কালাচ, রক্তকানড়, শাঁখামুটি। সব মিলিয়ে বিশ-পঁচিশটা ভিন জাতের সাপ। আর এদের নিয়েই শম্ভুর সংসার। তাই ষষ্ঠীপদ নাম দিয়েছে 'সাপঘর'। গাঁয়ের অন্য লোকেদের সাথেও শম্ভুর যোগাযোগ কম। সে পড়ে থাকে নদীর ধারে, একপ্রান্তে, একা তার মা মনসার জীবগুলোর সংসারে বুঁদ হয়ে। একা ষষ্ঠীপদ ছাড়া, এ ঘরের ত্রিসীমানা কেউ মাড়ায় না। সকলে ভাবে ত্রিসীমানায় গেলে শম্ভু সাপ ছেড়ে দেবে পায়ে। শম্ভু এসব কথা শুনে হাসে। ষষ্ঠীকে বলে---বুঝলি ব্যাটা তারা আমাকে ডরে, আবার সাপে কাটলে আমাকে তালাশ পাঠায়।  

দোচালা মাটির ঘরের সামান্য দূরেই হোগলার বন। ওখানেই একদিন ষষ্ঠীপদ চোখ জ্বলজ্বল করতে দেখেছিল বনবিবির বাহনকে। শম্ভু অবশ্য সে কথা বিশ্বাস করে না। কতবার রাতে সে লন্ঠন হাতে ঝোপের ভিতর ঢুকেছে সাপ খুঁজতে। গরাণের জঙ্গলটা তার উঠোন অবধি পৌঁছেছে। দো চালা ঘরের টালিগুলো দিয়ে ঝড় জলের রাতে ফোঁটা পড়ে। এখানেই যুবক শম্ভুর একাকী জীবন। তার এই একাকী জীবনে চেতনা, অনুভূতি, জীবিকা সবকিছুকেই ঘিরে রয়েছে মা মনসার এই জীবগুলো।

সব সময়ের জন্য শম্ভুর জীবন একাকী ছিল না। বাপ ভীমরাজ ঠিক সময় বুঝেছিল তার ছেলের পৌরুষ ক্ষমতা তার চেয়েও বেশি। এখুনি না বাঁধলে এ ছেলে সর্বনাশে যাবে। তখন শম্ভুর বয়স সাতাশ। ভীমনাগ খোঁজ করতে লাগলো শম্ভুর জন্য পাত্রীর। বেদের ছেলের সাথে বিয়ের জন্য পাত্রী পাওয়া যে দুষ্কর। বেদেনী ছাড়া কে বা সাপুড়ের সাথে সংসার করতে চায়।

গোবিন্দপুরে তাঁতির ঘরের মেয়ে গোলাপিকে পছন্দ হল ভীমনাগের। গোলাপির বাপ অন্ধ। অন্ধের জষ্ঠী গোলাপিকে বউ করে আনলো শম্ভু। বিয়ের প্রথম রাতেই ভীমনাগ টের পেয়েছিল এ মেয়ে শম্ভুকে সামলাতে পারবে না। সারা রাত শুনতে পেল এক চালার ঘরে শম্ভুর সাথে অসম হয়ে ওঠা মেয়েটার পরাজিত কান্না। বিষ সহ্য করতে পারেনি গোলাপি। পরদিনই পালালো বাপের বাড়ি। আর ফেরেনি মেয়েটা। শম্ভুও বুঝে গেছিল তার বিষ গ্রহণ করার ক্ষমতা গোলাপির নেই।


ভীমনাগ দেখতে পাচ্ছিল বউটা চলে যাবার পর ছেলেটা কেমন মুষড়ে পড়েছে। একদিন ছেলেকে ডেকে এনে বললে---শম্ভু রে, এ মেয়েছেলে মরদ চিনল লাই, তাই তোরে ছেড়ে ভাগলো। তোর মত গায়ে গতরে শক্ত মরদই মেয়েছেলের সুখ। মরদেরটা যত আখাম্বা হউক, সব মেয়েছেলেই লিতে পারে, ধৈর্য্য ধইরলে ঠিক সময় সুখটা পায়, তোর গোলাপি ধৈর্য ধইরতে পারে লাই। এ মেয়ে মরদ চিনে লা।


কদিন পর হঠাৎ করে বুকে ব্যথা নিয়ে ভীমনাগ চলে গেল। অমন তাগড়াই বাপটার মৃতদেহের দিকে নিথর হয়ে তাকিয়ে ছিল শম্ভু। একা হয়ে পড়েছিল সে। ভেবেছিল আরেকটা গোলাপি নিয়ে আসবে তার জীবনে। যৌবনের জ্বালা তাকে অস্থির করে মারছে। ষষ্ঠী বুঝতে পারছিল শম্ভুর জ্বালা। ষষ্ঠী বেদে না হলেও শম্ভুর বাল্য বন্ধু। ও জাতিতে জেলে। জেলে পাড়ার এই একটাই ছেলে যে শম্ভুর বন্ধু। ষষ্ঠী ছোট থেকেই দেখেছে শম্ভুর তেজ, সাহস, পাশব শক্তি প্রচন্ড রকমের। একদিন কৈশোরে শম্ভুকে হোগলা ঝোপের আড়ালে দাঁড়িয়ে একটা ল্যাংটো মেয়েছেলের ছবি হাতে হস্তমৈথুন করতে দেখে ফেলে ষষ্ঠী। সেদিন ও টের পায় শম্ভুর দেহের দীর্ঘকাঠামোর মতই ওর নিম্নাঙ্গ প্রকান্ড। তখন ষষ্ঠীর চোখে বিস্ময় দেখে শম্ভু গর্ব করে বলেছিল---আমর বাপ ভীমনাগ বেদে, তার নাগটাও ভীমকায় রে ব্যাটা, এর বিষ উগরাইলে কি হয় জানিস?

হতভম্ব হয়ে কিশোর ষষ্ঠী সরলভাবে বলেছিল---কি হয়?

----আমার মত বাপ কা ব্যাটা হয়।

গোলাপি চলে যাবার পর থেকে শম্ভুর যেন ক্ষুধা বাড়তে লাগলো। ষষ্ঠী দেখল আজকাল শম্ভু গ্রামে, মফস্বলে সাপ খেলা দেখাতে যায় না। যদিও আজকাল সাপ খেলা দেখতে খুব একটা কারোর আগ্রহ নেই, তবু জড়ি বুটি বিক্রি করে আর গোখরোর বিষের নেশা বিক্রি করে শম্ভুর যা আয় হয় দু বেলা চলে যায়। ষষ্ঠীকে একাই যেতে হচ্ছে হরদিন। শম্ভুকে ডাকলেই বলে---আজ শরীলটা ভালো নেই রে, ষষ্ঠী।

জোয়ান মরদের প্রতিদিন শরীর খারাপ নিয়ে সন্দেহ জাগে ষষ্ঠীর। একদিন লোকমুখে জানতে পারলো; শম্ভু নাকি আজকাল ষষ্ঠীর ঘরে যাতায়াত করে। এমনিতেই ষষ্ঠীর বউটার ডাগর চেহারা, একটু বেশিই তার শরীর চায়। এমন পেশল দীর্ঘকান্ত তরতাজা যুবক দেখে বউটা যদি হেলে পড়ে শম্ভুর দিকে! ভয় পেয়েছিল ষষ্ঠী। প্রস্তাব দিয়েছিল শম্ভুকে, আবার বিয়ে করার।

মাত্র তিরিশ বছর বয়সেই শম্ভুর সে বিশ্বাস ভেঙে গেছে। ভয় পাচ্ছিল এবারও যদি তার কালনাগের বিষ সহ্য করতে না পেরে বউটা পালায়। বিশ্বাস করতে লাগলো কোনো মেয়েই তার বিষ ধারণ করতে পারবে না। একবার ভেবে ছিল ষষ্ঠীর বউটার গতরটা ভালো, শম্ভু গেলেই কেমন গায়ে পড়ে যায়। বুকের দিকে তাকালেই শম্ভুরও লুঙ্গির ভিতর টাটায়।

সুযোগ দিয়েছিল ষষ্ঠীর বউ। গায়ে ঢলে পড়ে বলেছিল---আজ তোমার বন্ধুটার দের হবে গো ফিরতে।
শম্ভুর তৎক্ষনাৎ বাপ ভীমনাগের কথাটা মনে পড়ে যায়; "মরদেরটা যত বড় হউক, সব মেয়েছেলেই লিতে পারে, ধৈর্য্য ধরলে ঠিক সময় সুখটা পায়, তোর গোলাপি ধৈর্য ধরতে পারে লাই।"

ষষ্ঠীর ডাগর বউটাকে দেখে বিশ্বাস জন্মালো তার। মাইয়ের ভাঁজ দেখিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ষষ্ঠীর বউ; লতা। হঠাৎ করে নজর পড়ল শম্ভুর, ষষ্ঠীর চার বছরের মেয়েটা তার দিকে তাকিয়ে আছে। ঠিক যেন মুখটা ষষ্ঠীর মত। ষষ্ঠী তার বন্ধু, কি করতে যাচ্ছিল সে! নিজেকে সামলে নিয়ে সেই যে চলে এসেছিল সাপঘরে, তারপর আর কখনো ষষ্ঠীপদর বাড়ি যায়নি ও।

ষষ্ঠীপদ বিশ্বাস করতে পারেনি শম্ভুকে। নদী পাড়ের ঘর থেকে সবচেয়ে কাছেই যে ঘরটা সেটা ষষ্ঠীর। লতা নদী পাড়ে যায় কাপড় কাচতে। কাচুলির আড়াল থেকে বুক দেখায়। ঘি আর আগুন থাকলে একদিন না একদিন স্ফুলিঙ্গ উঠবেই। শম্ভুকে পুনর্বার বিয়ে দিতে তৎপর হয়ে উঠেছিল সে। সবকিছু উলটপালট হয়ে যায় যেদিন রায়বাড়ির ফাটল থেকে পদ্মকে নিয়ে এলো শম্ভু।

এখন সেই পদ্মের আকর্ষণে সম্মোহিত হয়ে থাকে সে। যতক্ষন ঘরে থাকে ততক্ষণ পদ্মকে নিয়েই তার খেলা। কখনো পুরোটা দিন বিছানায় শুয়ে থাকে সে। আর পদ্মও যৌবনন্মত্ত শম্ভুর দিঘল শরীর জড়িয়ে, সোহাগ দিয়ে গায়ে লেপ্টে পড়ে থাকে। কখনো পদ্মের ঠোঁটে চুমু খায়, পদ্মও তার চেরা জিভ দিয়ে চেঁটে দেয় শম্ভুর প্রস্তর কঠিন ঘেমো গাল। যেন তার বে করা বউ। পদ্মের প্রেমময় কামড়ের বিষের নেশা ভুলে যেতে সাহায্য করে তাকে একাকিত্বের যন্ত্রনা।

ষষ্ঠীপদ মাঝে মাঝে বাধা দেয়---শম্ভু রে, বিষের ন্যাশাটা করতে তোর বাপ মানা করে ছিল। শরীলটা শেষ করে দিসনি শম্ভু।

শম্ভু বলেছিল---এ ন্যাশা না রে ষষ্ঠী, এ আমার পদ্মর পিরিত আছে তার নাঙের লিয়ে। পদ্মটা মরদ চিনে।

ক্রমে পদ্মের উপর ভাবভালোবাসা বাড়তে লাগলো শম্ভুর। যেখানেই যায় গলায় জড়িয়ে রাখে পদ্মকে। কদিন আগে গগন ঘোষের আড্ডায় বিষ ঢালতে গেছিল শম্ভু। ঝাঁপি খুলে গোখরোটাকে বার করে ধরল গগনের কালো জিভের সামনে। বুড়ো হয়েছে গগন ঘোষ। ঝিম ধরা নেশা হলে বলেছিল---পদ্মর চুমুকি তুই একাই খাবি শম্ভু? একবার আমাকেও দে। না হয় একটু বেশিই দাম দেব।

প্রচন্ড রাগ হয়েছিল শম্ভুর। সামলে নিয়ে বলেছিল---তোমার বে করা বউটাকে কি একদিন আমার সাথে শুতে দিবে গো গগন ঘোষ?

বত্রিশের যুবক শম্ভু তরতাজা শক্ত সবল যুবক। ষষ্ঠী একবার বলেছিল বেদে ঘরে না জন্মালে শম্ভু পড়ালেখা করে মিলিটারিতে যেত। দেড় বছর ধরে পদ্মের নেশা চাপলেও কাঁধ, বুক পেশীর সুঠাম কাঠামোয় ছাপ পড়েনি তার। আজও তাকে দেখলে তেজি ঘোড়া মনে হয়। পদ্মের নেশায় ঝিম না ধরলে তার সেই তেজ এখনো দেখা মেলে। ষষ্ঠী বাল্যকাল থেকে শম্ভুর বন্ধু। পদ্মটা যে শম্ভুর জীবন ছারখার করে দেবে সে জানে। যেকোনো ভাবেই হোক পদ্মের থেকে শম্ভুকে আলাদা করতে হবে। শহরের বাবুরা বিষ কিনে নিয়ে যায় শম্ভুর থেকে। ষষ্ঠী জানে তার থেকে ওষুধ তৈরি হয়। পড়া লেখা করা ডাক্তারবাবুরা সাপও কেনে। বড় বড় কাচের বাক্সে রাখে। বেদেদের মত দুঃসাহসীপনায় হাতে না হলেও চকচকে ধাতব লাঠি দিয়ে চেপে ধরে তার মুখ। সেই মুখ চেপে ধরে বোতলের মুখে ফিনফিনে পাতলা পর্দার ওপর। বোকা সাপেরা শত্রু ভেবে বিষ ঢালে। সেই বিষ নিয়ে বড় একটা যন্ত্রে চোখ রেখে কিসব পরীক্ষা নিরীক্ষা করে। ষষ্ঠী তা নিজের চোখে দেখেছে। কলকাতা শহরের এক বাবুকে সে বিক্রি করেছে কালাচ, গোখরো, কালকেউটে। সেই বাবুর গোখরোটা মরে যাওয়ায় আবার একটা গোখরো চেয়েছে। কাচের বাক্সে রেখে তাকে পরীক্ষা করবে। ষষ্ঠী তক্কে তক্কে আছে; একদিন পদ্মকে আড়ালে নিয়ে গিয়ে বেচে দেবে।

আজ সকালে শম্ভুকে দেখছিল ষষ্ঠী। কিসব জড়ি বুটি বানাচ্ছিল ও। বলছিল বোষ্টমদের বাড়ির বউটাকে নাকি কেউটে কামড়েছে। সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসায় গেলে শম্ভু পদ্মকে নিয়ে যায় না। গেরস্ত ঘরের লোকে ভয় করে। ষষ্ঠী পরিকল্পনা করে আছে আজই শম্ভুর থেকে পদ্মকে আলাদা করবে।

চলবে

Classic plot..lovely
Like Reply
#86
(04-11-2023, 11:24 AM)Henry Wrote: কিছুদিন ভিন রাজ্যে বেড়াতে গিয়েছিলাম। তাই আপডেট করতে পারছিলাম না। ফিরে এসে আপডেট দিতে গিয়ে দেখলাম, রিপ্লাই ভীষন কম। মোটের ওপর জনা কয়েক ছাড়া গল্পের প্রতি খুব একটা পাঠকের আগ্রহ নেই। তাই দু' একটা কিস্তি দিয়ে বোঝার চেস্টা করব পাঠকদের মনোভাব। অনাগ্রহী হলে থ্রেড বন্ধ করে দেব।

দেখো, একটা কথা বলতে পারি যে যে হারে তোমার লেখা পড়া হয়, সেই হারে thread-এ মন্তব্য পড়ে না. এর একটা কারণ হচ্ছে পাঠক-পাঠিকাদের একটা ভালো অংশ mobile থেকে পড়ে থাকে আর mobile থেকে মন্তব্য করাটা একটা কষ্টকর অভিজ্ঞতা. তোমার লেখার গ্রহণযোগ্যতা বা আর যে কোনো লেখক-লেখিকার লেখার গ্রহণযোগ্যতা thread-এর views count কে মাপকাঠি করে যাচাই করা উচিৎ. তুমি views count এর দিকে লক্ষ্য রাখলে বুঝতে পারবে কতবার তোমার thread এ ঢুঁ মারা হয়েছে, সেই তুলনায় মন্তব্যের সংখ্যা কতো কম !!! তাই তোমার পাঠক-পাঠিকাদের সংখ্যা নগণ্য কখনও এমন ভেবো না, তোমার লেখা পাঠক-পাঠিকাদের খুব একটা ভালো লাগছে না, কখনও এমন ভেবো না. এর সমর্থনে আমি একটা কথা বলবো - তুমি শুধু একবার তোমার "হেমন্তের অরণ্যে" thread-এ গিয়ে দেখো তোমার সর্বশেষ পর্বের পরে কয়টা মন্তব্য হয়েছে !!! এ থেকে তুমি বুঝে যাবে তোমার লেখা আমরা পাঠক-পাঠিকারা কতো পচ্ছন্দ করে থাকি.

অসাধারণ হচ্ছে বললেও কম বলা হবে. চালিয়ে যাও, শুভেচ্ছা রইলো. 
[+] 1 user Likes ray.rowdy's post
Like Reply
#87
হেনরি দা, এই ফোরামে লেখক বলতে আপনি, আর কয়েক জন আছে, তারাও নিয়মিত লেখে না, সব ইনচেস্ট না হলে বস্তাপঁচা অবাস্তব লিখা, এখন আপনি গল্পের রেস্পন্স কম বলে যদি লিখা থামিয়ে দেন তাহলে এই ফোরামে আসার মত আর কোন কিছু থাকবে না, দয়া করে চালিয়ে যাবেন, আমাদের মত পাঠকের কথা চিন্তা করে, যখন সময় হবে, মন-মানসিকতা ভালো থাকবে তখন লিখবেন, আপডেট দিবেন, দেরি হলেও ক্ষতি নেই, তবুও হারিয়ে যাবেন না, ভালোবাসা নিবেন
[+] 1 user Likes Tuhinsarker's post
Like Reply
#88
Daarun hochche.
Like Reply
#89
কাল রাতে যে বৃষ্টি ধরল, আজও কমবার লক্ষণ নেই। গোটা রাজ্যে কোথাও বৃষ্টি হচ্ছে না। বঙ্গোপসাগর উপকূলবর্তী জেলাগুলোতেও প্রখর রোদ। আর এই কিনা কলকাতায় যত বৃষ্টি। জল দাঁড়িয়ে রাস্তাঘাটের ছবি টিভিতে সকাল থেকে দেখিয়ে চলেছে বারবার। এটাই ওদের ব্রেকিং নিউজ। এ আর নতুন কি। কলকাতা সব সময়ে সামান্য বৃষ্টিতেই প্লাবিত হয়। পীযুষ টিভির সামনে বসে মুড়ি চিবোতে চিবোতে ভাবছিল কথাটা। সকাল বেলা শুকনো মুড়ি চিবোতে আজ বহুদিন পর ভালো লাগছিল। রমা টেবিলের ওপর ঘুঘনির বাটিটা রেখে গেছে, ওটাতে লক্ষ্য নেই তার। পিকলুর আবার মুড়ি পছন্দ হয় না। আজকালকার বাচ্চাদের এসব না পসন্দ। ওর জন্য স্যান্ডউইচ বানিয়ে দিয়েছে রমা।

একটাই রবিবার। কোথায় এই ছুটির দিনে খেলতে যাবে রনি দাদাদের বাড়িতে, নাঃ তার উপায় নেই। পিকলু স্যান্ডউইচে কামড় দিয়ে ব্যাজার মুখে দেখতে লাগলো জানালার বাইরে অবিশ্রান্ত বৃষ্টিটাকে। কয়েকটা বাড়ি পরেই আচার্য্যদের বাড়ির সামনে সামান্য একটু ফাঁকা জায়গা আছে। আচার্য্যদের ছেলেটা রনি পিকলুর চেয়ে দু'বছরের বড়। পিকলু ক্লাস এইট, রনি এবার মাধ্যমিক দেবে। পীযুষ বা রমা কখনোই ছেলের খেলাধুলোতে বাধা দেয় না। কলকাতা শহরে এমনিতেই বাচ্চাদের খেলবার জায়গা কমে যাচ্ছে। একটা মাঠ আছে, সেখানে কলোনির ছেলেরা খেলে, ওদের সঙ্গে পিকলুকে খেলতে দিতে মানা নেই রমা বা পীযুষের। ওরা মনে করে ছেলে সবরকম সমাজকে দেখুক। কিন্তু পিকলুটাই যেতে চায় না। আসলে পিকলুর স্কুলের যেমন বন্ধুরা হয়, তাদের সাথে ঐ উদ্বাস্তু কলোনির ছেলেদের আচার আচরণ ম্যাচ না করাটাই বোধ হয় ওর অনীহার কারণ। এক্ষেত্রে ছেলেকেই বা দোষ দিয়ে কি লাভ, ছেলেকে নামী স্কুলে ভর্তি করেছে পীযুষ। তাই বিষয়টাকে ও মেনে নিয়েছে। অথচ পীযুষ নিজে আজও রাস্তা ঘাটে সমস্ত স্তরের চেনা মানুষগুলোর সাথে কথা বলে। কলোনির ছেলেগুলো চাঁদা কাটতে এলে রমা ওদের পয়সা দেয়।

টিভিটা দেখতে আর ভাল্লাগছে না পীযুষের। উচ্চঢঙে একনাগাড়ে ঐ একই কথা বলে যাচ্ছে নিউজ রিডার মেয়েটা। রিমোটের শাট ডাউন বাটনটা প্রেস করে ঘুঘনির বাটিটা তুলে ঢেলে নিল মুড়িতে। রমা সকালে একটু চা খেতে ভালোবাসে। ও আজ একটু দেরীতেও উঠেছে। চায়ে চুমুক দিতে দিতে ড্রয়িং রুমে এসে বলল---চাঁপাটা মনে হয় আজ আর আসবে না। যা বৃষ্টি হচ্ছে।

বলতে বলতেই চাঁপা এসে হাজির হল। শাড়ির নীচটা ওর ভিজে গেছে। দোতলায় ঢোকার মুখে বললে---বৌদি গো কি বিষ্টি...রাস্তায় জল দাঁড়ায়ছে হাঁটু অব্দি।

পীযুষ হেসে বললে---এই তো তোমার অ্যাসিস্টেন্ট চাঁপারানী এসে গেছে।

রমা বলল---ভিজে গেছিস তো। ছাতা আনিসনি নাকি?

---আনছি গো, ছাতা সামলায়ও এ বিষ্টি থেকে বাঁচা যাবেনি।

রমা বলল---যা আর কথা না বলে আমার একটা পুরোনো শাড়ি নিয়ে বাথরুমে ঢুকে পাল্টে নে। ঠান্ডা লাগলে তো আবার তোর কামাইর রেকর্ড হবে।

চাঁপা ভেজা ছাতাটা সিঁড়ির কাছে রাখতে রাখতে বলল---দাদা গো, নীচে সে সাপ ধরা লোকটা আসসে।

পীযুষ বুঝতে পারলো ষষ্ঠীপদ এসেছে। এই ঝড় বৃষ্টিতে সুন্দরবন থেকে চলে এলো লোকটা। অবশ্য খবরে বলছে শুধু কলকাতাতেই বৃষ্টি। পীযুষ উঠে দাঁড়াতে গেলে রমা বললে---কি হল চা খাবে না?

---নীচে পাঠিয়ে দাও।

পীযুষকে দেখেই কাকভিজে অবস্থায় থাকা ষষ্ঠীপদ হে হে হাসি মুখে বললে-----সার, আপনার ইখানটা তো ভালো বিষ্টি হচ্ছে, আমার গেরামে হলে এতক্ষণে বন্যা হই যেত।

পীযুষ মনে মনে ভাবলো 'সে আর হতে বাকি আছে নাকি'। তারপর ষষ্ঠীর হাতের ঝাঁপি দেখে বললে---এনেছো নাকি?

---আনছি মানে! পদ্মগোখরা সার! দিখলে বুঝবেন পুরা গা সোনালী রঙ।

চাবি ঢুকিয়ে দরজাটা খুলল পীযুষ। পাখাটা চালিয়ে দিয়ে বললে---দেখাও দেখি।

ঝাঁপি খুলতেই ফোঁস করে উঠল পদ্ম। সুবিশাল তার ফনা। পীযুষ বিস্ময়ে দেখলে সত্যিই এর গায়ের রঙ সোনার মত। বেরিয়ে পড়েই তেড়ে এলো পীযুষের দিকে। সদ্য ধরে আনার রাগ এখনো যায়নি তার। খুশি হয়ে বলল---চমকপ্রদ! ওয়াইল্ড মনে হচ্ছে। একেবারে বন্য! বড্ড তেজ দেখছি যে ষষ্ঠী, তোমার এই গোখরোর।

---তেজ হবে না সার? শম্ভু বেদের কাছটা যে বেশ আদর খায়ে ছিল। পিরিতের সাপটারে যে ধরে আনছি।

স্টিকে করে বশে আনতে চেষ্টা করলো পীযুষ। বেশ অবাধ্য। বার বার তেড়ে আসছে পীযুষের দিকে। অবশেষে স্টিকে মাথাটা চেপে ধরল সাপটার চোয়াল। তারপর কাচের বাক্সে ঢোকাতে ঢোকাতে বললে---তোমার এই শম্ভু বেদেকে তো কোনোদিন দেখলাম না।

ষষ্ঠীপদ হেসে বললে---শম্ভুটা বড় বদমেজাজী আছে সার। লিজে গিয়ে সাপ বেচে পয়সা লিবে, ইটা তার নাকি ইজ্জতে লাগে।

---কেন? বেদেরা কি সাপ বেচে না?

----খামখেয়ালি জোয়ান মরদ সার। জড়ি বুটি বেচবে, সাপ ধইরবে, কিন্তু সাপ বেচেবেটা লাই।

ষষ্ঠীর কথায় গুরুত্ব না দিয়ে পীযুষ একমনে দেখে যেতে লাগলো পদ্মকে। কাচের বাক্সে ভরে দিলে সচরাচর মিয়েই যায় সাপগুলো। এ সাপ এখনো ক্রুদ্ধ, এমন তেজি গোখরো পীযুষ খুব কম দেখেছে। গোখরোর তেজ এমনিতেই অন্যান্য বিষধর সাপেদের থেকে একটু বেশি। এ যেন তার চেয়েও ঔদ্ধত্যপূর্ন জীব।

রমা এসে পৌছল দু'কাপ চা হাতে। চাঁপা এই ঘরে আসতে চায় না। তাই রমাকেই আসতে হল। পীযুষ বললে---দেখেছ রমা, এমন সোনালী রঙের গোখরো কখনো।

---তুমিই দেখো। চা খাওয়া হয়ে গেলে কাপ প্লেটগুলো গুছিয়ে নিয়েসো। চাঁপা আসবে না এঘরে।
ষষ্ঠী বলল---সার, এই গোখরোটা ভালো জাতের। ফনাটা দেইখেলেন, কি বড়! এটার বিষটাও পচুর। দিখে দাম দিবেন।

পীযুষ হাসলো। এই সাপেই তো সে পোস্ট ডক্টরেট। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডঃ আনন্দম কৃষ্ণমূর্তির কাছে সে ডক্টরেট করেছে। পরে ঐ অধ্যাপকেরই অধঃস্তন হিসেবে কলকাতায় দিনের পর দিন পড়ে থেকে ভাইপার সংক্রান্ত বিশেষ থিসিস পেপার নিয়ে গবেষণার কাজ করেছে। ইতিমধ্যেই পীযুষের সরীসৃপদের নিয়ে প্রায় তিন খানা বই বেরিয়েছে। যার দুটি গবেষণাধর্মী ও একটি পপুলার সায়েন্সের বই। মাস্টার ডিগ্রির ছাত্রদের সে তার নিজের পেপার থেকেই পড়াতে সাহায্য নেয়। তার কাছে এই গেঁয়ো বেদেদের গল্প ধোপে টিকবে না। গোখরো প্রজাতির যে সমস্ত সাপ অতীতে পীযুষ দেখেছে কিংবা পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছে এটা তার ভিন্ন নয়, শুধু এর ফনাটা বেশ বড়। ভারতীয় গোখরো সাপের ভিন্ন জায়গায় ভিন্ন নাম হয়, কিন্তু তারা সকলেই ন্যাজা ন্যাজা প্রজাতির সাপ। গোখরোর মাথায় গরুর খুরের মত চিহ্ন থাকায় একে গোখরো বলে। আসলে তা 'গোক্ষুরো' শব্দটি থেকে উৎপত্তি। এদের ইংরেজিতে স্পেক্টাকল্ড কোবরা বলে। 'কোবরা' আসলে যে কোনো ফনাধারী সাপের সাধারণ নাম। কেউটে, গোখরো, শঙ্খচূড় সবই এই কোবরা দলভুক্ত। কিন্তু মজার হল শঙ্খচূড় বা কিং কোবরা ফনাধারী হওয়া সত্যেও সত্যিকারে কোবরা নয়।

সাপেদের সুন্দর এই ফনা বিস্তৃতির কারন তাদের গলার কাছের হাড়। ভয় পেলে, ক্রুদ্ধ হলে কিংবা শিকারকে সামনে পেলে এদের গলার হাড় স্ফীত হয়ে ওঠে শত্রুকে ভয় পাওয়াতে। এ সাপটিরও তাই, এর ফনা বেশ বড় হওয়ার কারণ এর মজবুত গলার বিস্তৃত হাড়ের জন্য। পীযুষ কাচের উপর টোকা মেরে একটা মৃদু কম্পন করে সাপটাকে ভয় পাইয়ে বললে----ভারতীয় গোখরোর আবার ভিন্ন জাত আছে নাকি? দক্ষিণ ভারতে একধরনের পাওয়া যায়, তবে সেটা এ নয়। কত চাইছ বলো।

হাত কচলে কচলে ষষ্ঠীপদ বললে---দুই হাজার টাকা সার।

পীযুষ চশমার ওপর দিয়ে ষষ্ঠীর দিকে তাকালো একবার। তারপর বললে---এবার দেখছি তোমার ওপর আর আস্থা রাখা যাবে না। আমাকে নিজেকেই নামতে হবে বনে বাদাড়ে সাপ ধরতে।

ষষ্ঠীকে বসিয়ে রেখে ও দোতলায় চলে গেলো। টাকাটা নিয়ে এসে ষষ্ঠীকে বিদেয় করবার সময় ষষ্ঠীপদ বললে---সারের কাছে সবকটা আছে, শুধু শঙ্খিনীটা লাই।

---শঙ্খিনী! মানে শাঁখামুটি? পাও নাকি? ওটা তো খুব রেয়ার!

---আছে সার আছে। শম্ভু বেদের কাছে আছে। লিয়ে আসবো সার?

----অবশ্যই। আগে বললে কি একটা কাচের বাক্স খালি পড়ে থাকতো ষষ্ঠী? নিয়ে এসো একদিন। ভালো দাম দিয়ে পুষিয়ে দেব।

খুশি হল ষষ্ঠী। পীযুষ জানে এভিএস এর জন্য সাপেদের সংগ্রহ করতে অনেক খরচ করে কোম্পানিগুলো। সেক্ষেত্রে এই অশিক্ষিত সাপুড়েগুলোকে ধরলে তেমন দাম দিতে হয় না। পীযুষের পরিচিত নর্থ বেঙ্গলের এক অধ্যাপক যিনি সংগ্রহশালায় সাপ রাখেন, বেদেদের কাছ থেকে সাপ কেনার আইডিয়াটা তিনিই দিয়েছিলেন পীযুষকে। যদিও ষষ্ঠীপদ বেদে নয়, ও নাকি কোনো এক শম্ভু বেদের সাথে থেকে সাপ ধরে। এই প্রথম ষষ্ঠী গোখরোটার জন্য এত দাম নিল। তার কাছে দু হাজার টাকা বিরাট বড় পরিমান। দর করলে আরো কমানো যায়। গরীব লোকটাকে অখুশি করতে ইচ্ছে করে না পীযুষের। বরং এতগুলো টাকা পেয়ে ষষ্ঠীর খুশি খুশি মুখটা ভালো লাগছিল তার। বেদে হোক, আর যাই হোক, জীবনের ঝুঁকি নিয়েই তো সাপ ধরে এরা।

খালি বাক্সটার দিকে তাকালো পীযুষ। সত্যিই একটা কাচের বাক্স খালি পড়ে আছে তার অনেকদিন হল। ওটায় একটা লিজার্ড ছিল। আফ্রিকান লিজার্ড। বছর তিনেক আগে পীযুষ কিনিয়ার নাইরোবিতে একটা আফ্রিকান বেসরকারি সংস্থার সেমিনারে ভারতীয় গবেষক হিসেবে আমন্ত্রিত ছিল। সলসবেরির একটি সরীসৃপ মিউজিয়ামের ম্যানেজার পল এডেলম্যানের সাথে বন্ধুত্ব হয় পীযুষের। তিনি তাঁকে সেই আফ্রিকান টিকটিকিটি উপহার দিয়েছিলেন। যার স্থানীয় নাম ছিল আগামা। উপহার তো দিয়েছিলেন মিঃ এডেলম্যান, কিন্তু আগামা নামক উপহারটিকে দেশে আনতে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল পীযুষকে।

মাস ছয়েক আগে আগামার বার্ধ্যকের কারনে মৃত্য হয়েছে। সেই বাক্সটি এখনো খালি। শাঁখামুটির মত বিষধর, কিন্তু নিরীহ, যার কামড়ানোর কোনো নিদর্শন নেই, সেই হলুদ-কালো ছোপের সুন্দর সাপটি যে এই ঘরের শোভা বাড়াবে তা বেশ মনে ধরল পীযুষের। যদিও শাঁখামুটি আজকাল লুপ্তপ্রায়। খুব কমই দেখা মেলে। ওরা আবার অন্যান্য সাপেদেরও শত্রু। তাদের ভক্ষণ করেই শাঁখামুটি তার উদরাপূর্তি ঘটায়। সে নিরীহ শাঁখামুটি একখান থাকলে পীযুষের গবেষণাগার সম্পূর্ন হয়।

রমা কড়াইতে তেল দিয়ে আনাজ ছাড়তেই শব্দ করে উঠল তেল আর সব্জির দাহ। চাঁপা পাশে দাঁড়িয়েছিল চুপচাপ। ড্রয়িং রুমে পীযুষ আসেনি কিনা একবার দেখে এসে বললে---বৌদি গো, দাদা আবার একটা সাপ ঢুকায়েছে ঘরে।

রমা হেসে ফেলল। সাপ নিয়ে চাঁপার এই ভয়টায় বড্ড হাসি পায়। পীযুষ হলে তো আরও বেশি ভয় দেখাত ওকে। রমা ভাবে কবে না চাঁপা সাপের ভয়ে কাজে আসা বন্ধ করে দেয়! অভয় দিয়ে বলল---আরেকটা নয়। যে সাপটা মরে গেছে ওর জায়গায় নতুন আনা হয়েছে।

আসলে সাপে ভয় চাঁপার মত না হলে রমারও বেশ আছে। এত বছর পীযুষের সাথে ঘর করেও সেই ভয় কাটেনি ওর। পীযুষের সাথে রমার পরিচয় তখন যখন পীযুষ সবে পিএইচডি কমপ্লিট করেছ। রমা এসেছে দুর্গাপুর থেকে কলকাতায় মাস্টার্স করতে। পরিচয়টা হয়েছিল রমার এক বান্ধবি সুজাতার মাধ্যমে। সুজাতাদের বাড়িতেই ভাড়া থাকতো পীযুষ তার মায়ের সাথে। পীযুষ যে মেধাবী ছাত্র কিংবা পোস্ট ডক্টরেট করেছে সে কথা সুজাতা জানালেও এই হারপেটোলজি ব্যাপারটা জানায়নি কখনো। সুজাতা নিজেও জানতো না সাপ, ব্যাঙ নিয়ে গবেষণা করছে তার বাড়ির ভাড়াটে পীযুষ দা।

রমার সাথে যখন পীযুষের প্রেমটা চলতে শুরু করল তখনও পীযুষ বলেনি। শুধু বলেছিল তার দিল্লি ইউনিভার্সিটির কোনো এক দক্ষিণ ভারতীয় প্রফেসর নাকি কলকাতায় আছেন কি একটা গবেষণার কাজে। পীযুষ এখন তার অ্যাসিস্টেন্ট হিসেবে কাজ করছে। একদিন দুম করে রমাকে নিয়ে এসেছিল পীযুষ, ডঃ আনন্দম কৃষ্ণমূর্তির গবেষণাগারে। সেন্ট্রাল এভিনিভিউর সেই ফ্ল্যাটে দেখেছিল ফরমালিন দিয়ে কাচের জারে রাখা মৃত সব সাপ। তারপর আচমকা কাচের বাক্সে জ্যান্ত একটা সাপ দেখে আঁতকে উঠেছিল রমা। পীযুষের তখন কি হাসি। বলেছিল---আমার কিন্তু এসব সাপই পড়াশোনার বিষয়। রমা তৎক্ষনাৎ বলে উঠেছিল---হারপেটোলজি!

মাথা নেড়েছিল পীযুষ। নৃতত্বের সাথে এই হারপেটোলজি কথাটির একটি সম্পর্ক আছে। কাজেই রমা জানতো যারা সরীসৃপ প্রাণী নিয়ে গবেষণা করে তাদের হারপেটোলজিস্ট বলে।
++++++
Like Reply
#90
কেষ্টপুর খালের কাছে সারিবব্ধ বাড়িরগুলির কয়েকটি রায়তি, কয়েকটি জবরদখল, আবার অজস্র ঝুপড়ি বাড়ি, যাদের কোনো চাল চুলো নেই। পরিবারগুলোর কয়েকটি ওপার বাংলা থেকে আগত বাঙাল। তার সাথে জুড়েছে উঃ ও দঃ ২৪ পরগণার ক্যানিং, কুলতলী, সাগর, নামখানা, হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালী, গোসাবা, বাসন্তী এলাকার লোক। চাঁপার বাপের বাড়ি গোসাবার দিকে কোথাও। ওর বাপ ফলের দোকান দিয়েছিল বিধাননগর রেল স্টেশনে। তবে থেকেই ওদের বাস এখানে।

একদিন লাইন পারাপার করতে গিয়ে দুরন্ত গতিতে আসা ট্রেন চাঁপার বাপকে পিষে দিয়ে চলে গেল। তখন চাঁপার বয়স ছয়, তার দিদি চামেলী তখন আট বছরের। দুই মেয়েকে নিয়ে লোকের বাড়ি ঝি গিরি করে সংসার চালাতে লাগলো চাঁপার মা সরলা। গোসাবায় যে জমি ছিল, সে জমিও মেরে দিল চাঁপার কাকা, জ্যাঠারা। বললে 'ছেলে থাইকলে ভাগটা দেওয়া যেত, মেয়েদের বে হই গেলে পরের ঘর যাবে, কেন দিব জমি।'
চাঁপার বাপ ট্রেনে কাটা পড়ায় সরলা শুনেছিল সরকার থেকে টাকা পাবে। অনেক ছোটাছুটি করেছিল সরলা। সে টাকার এক অংশও মেলেনি।
চাঁপার বড় দিদি চামেলী বিয়ে করে এখন থাকে মহারাষ্ট্রে। ওখানে স্যাকরার কাজ করে ওর বর। ওর ছেলে মেয়ে হিন্দি বলে। মাঝে মধ্যে এলেও মায়ের প্রতি কোনো দায়িত্ব রাখে না। চাঁপা বিয়ে করেছিল ভালোবেসে। বড় মেয়েকে বিয়ে দিলেও ঝিয়ের কাজ করে চাঁপাকে পড়াচ্ছিল সরলা। সরকারী ইস্কুলে নাইনে পড়বার সময় পরিচয় হয় রঞ্জিতের সাথে। রঞ্জিত ঘুরঘুর করত ইস্কুলের সামনে মেয়েদের ছুটি হবার সময়। ও একটা ঘড়ির দোকানে কাজ করত। পালিয়ে গেল চাঁপা ওর সাথে। অনেক স্বপ্ন দেখিয়ে ওকে নিয়ে গেছিল গুজরাট। সেখানে নাকি রঞ্জিতের কে একজন দাদা থাকে, তার সুপারিশে কারখানায় কাজ পাবে। চাঁপা যখন গর্ভবতী তখন রঞ্জিতের দাঁত নখ বার হল। মদ খেয়ে শুরু হল দৈনন্দিন অত্যাচার। তারপর খবর পেল চাঁপা; রঞ্জিত নাকি গুজরাতি একটা বেশ্যাকে নিয়ে মেতে উঠেছে। ঝগড়া বাধলো স্বামীর সাথে। তখন চাঁপার ছেলে সজল মাত্র দেড় বছরের। ঐ দেড় বছরের ছেলের সাথেই তাকে ঘর থেকে বার করে দিল দুশ্চরিত্র স্বামী।

সরলার ঘাড়ে এসে পড়ল আবার চাঁপা। সরলার তখন বয়স বাড়ছে, একার সংসার চলে যেত কোনক্রমে তার, পড়ল এসে বাচ্চা সহ মেয়ের বোঝা। তারপর সরলাই ধরিয়ে দিল ওকে বাড়ি বাড়ি ঝিয়ের কাজ। বেশ কয়েক বছর ধরে ও রমাদের বাড়িতে কাজ করছে। এখন যেন ভরসা পায় ও। কিছু বিপদ আপদ হলে দাদা-বৌদি তো আছেই।
ছোট্ট ঘরটাতে সাত বছরের ছেলে আর বয়স্কা মাকে নিয়ে থাকে সে। চাঁপার বয়স এখন কম। মাত্র সাতাশ বছরের যুবতী মেয়ে সে। ছিপছিপে চেহারাটা হলেও শ্যামলা মুখে একটা শ্রী আছে। অনেকেরই নজর ওর দিকে। রাত বিরেতে কাজ করে ফিরতে দেরী হয়। দুশ্চিন্তা হয় সরলার।
বছর খানেক আগে চাঁপাদের বাড়ির চারপাশে মাঝে মধ্যে উত্তম নামে একটা ছোকরাকে ঘুরতে দেখা গেল। রাস্তা ঘাটে দেখা হলে চাঁপার দিকে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকত। ছেলেটার নজর দেখে চাঁপা বুঝতে পারে, এ চোখে অসভ্যতামি নেই। খানিক ভালোবাসা আছে। তবু তার ভয় হয়, পোড়া গরুর যে সিঁদুরে মেঘ দেখে ভয় হয়।
যেদিন চাঁপার ছেলে সজল অসুস্থ হয়েছিল ডেঙ্গুতে, সেদিন উত্তমও জেগেছিল হাসপাতালে চাঁপার সাথে। আগে সরলার সাথে উত্তমের কথা হলেও, কখনো চাঁপার সাথে হয়নি। সেদিনই প্রথম চাঁপার সাথে ওর কথা হয়। সেদিন চাঁপার বড্ড দরকার ছিল একজন পুরুষ মানুষের সাহায্য। উত্তম যতবার ওষুধ পত্তর লেগেছিল কিনে এনে দিয়েছিল।

রমারও নজরে পড়েছিল বিষয়টা। চাঁপার অসুস্থ ছেলের চিকিৎসার সব খরচ বহন করেছিল পীযুষ। রমা গেছিল সজলকে দেখতে হাসপাতালে, সেই সঙ্গে সব খরচগুলো মিটিয়ে এসেছিল। তখনই দেখেছিল ছেলেটাকে। ওয়েটিং রুমে তৎপর হতে দেখেছিল বছর ত্রিশের ছেলেটাকে। কম বয়স, রোগা পাতলা ক্লিন সেভ ছেলেটাকে বেশ মানাবে চাঁপার সাথে। পরে ছেলেটার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিল চাঁপাকে। চাঁপা এড়িয়ে গিয়ে বলেছিল গ্রাম থেকে আসা ওর দূর সম্পর্কের দাদা।
আজ যখন চাঁপা বাড়ি ঢুকল নাতিকে নিয়ে বসেছিল সরলা। বললে----এ বিষ্টিতে কাজে যাবার কি দরকারটা ছিলো, বাবু ঘরে তো ফোনটা কইরে দিতে পারতিস।

আসলে চাঁপা পীযুষ-রমাদের বাড়ির সঙ্গে নিজেকে এত বেশি সম্পৃক্ত মনে করে যে সে কামাই করতে চায় না। তবুও তো ইচ্ছে হলেই যেমন খুশি কতবার ছুটি নিয়েছে।
চাঁপা খেয়াল করলো শাড়ির আঁচলে মুড়ে থাকা তার ফোনটা ভিজে গিয়েছে। দেড় হাজার টাকা দিয়ে গতবছর কিনেছে সে। আঁচলে মুছতে গিয়ে দেখল সুইচ অফ হয়ে আছে। সুইচ অন করতে দেখল কতগুলো মিসড কল উত্তমের।
মায়ের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল---উত্তম এইসেছিল?

---হাঁ ঝড় বিষ্টির রাতে দের কইরছিস দ্যাখে ফোনটা কইরে ছিল ছেলাটা।

তার প্রতি উত্তমের এই যত্ন নেওয়াটা ভালো লাগে চাঁপার। শাড়িটা খুলে ফেলে দড়িতে মেলে দিল সে। সাদা ঘামের ছোপ পড়া ব্রেসিয়ারটাও মেলে দিল দড়িতে। ছেলেটা খাতা পেন নিয়ে আঁকিবুকি কাটছে। স্টোভ জ্বালিয়ে পাম্প দিচ্ছিল চাঁপা। সরলা বলে উঠল---ইবারটা তো মত দে, ছেলাটা খারাপ লয় রে। কাজও একটা করে।

পেট্রোল পাম্পে কাজ করে উত্তম। উত্তম চাইলে অন্য মেয়েকে বিয়ে করতে পারতো, কিন্তু কেন তার মত এক বাচ্চার মাকে বিয়ে করতে যাবে! এই বিষয়টা যেমন চাঁপার দুশ্চিন্তা বাড়ায়, তেমনই আনন্দও দেয় কেউ তো তার কথা ভাবে। এখনো রঞ্জিতের নামে সিঁদুর দেয় সে, শাঁখা পোলা তার হাতে। অথচ রঞ্জিতের কোনো ভালো স্মৃতি আর তার মনে নেই। খারাপ লোকটার বীভৎস চরিত্রই মনে পড়ে তার। তবু এই বস্তি এলাকায় থাকতে গেলে শাঁখা-পোলা একটা বড় বর্মের মত কাজ করে। রাতে ছেলের পাশে এক বিছানায় যখন শুয়ে শুয়ে ঘুম আসে না, তখন তার যুবতী শরীর উত্তাল হয়ে ওঠে। বুকের মধ্যে তোলপাড় করে হাহাকার। অনেক সময় উরুসন্ধির মাঝে নারী অঙ্গে যুবতী পোকার কামড় ওঠে বিশ্রীভাবে। তখন প্রথম উত্তমকেই মনে আসে তার। এখনো ছুঁতে দেয়নি সে উত্তমকে। ঘরের মধ্যে যখন একা বসে গল্প করে তারা, চাইলে জোর খাটাতে পারতো উত্তম, হয়তো সেও বাধা দিতে পারতো না। গলে যেত বরফের মত। কিন্তু উত্তম যে তেমন নয় তা চাঁপা বোঝে। তবুও ভয় হয়, পুরুষ মানুষগুলো অনেক সময় ভ্রমরের মত আসে, শুধু মধু খাবার লোভে। তারপর ফুলের কথা তারা ভাবে না।

চাঁপা কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারছে না। মনে মনে সে ঠিক করে নেয় কাল একবার বৌদির কাছে মনের কথা খুলে বলবে। বৌদি তার গাইড, অনেক সমস্যায় সে বৌদির দ্বারস্থ হয়। টাকা পয়সা থেকে শুরু করে শারীরিক সমস্যা কিংবা বিপদ আপদ তার ভরসা রমা মৈত্র।

চলবে
Like Reply
#91
দারুণ, এত তাড়াতাড়ি আপডেট পাবো ভাবি নি, ইট পাথরের কলকাতায় শম্ভুর আগমন হবে, নাকি রমা যাত্রা করবে সাপের অভয়ারণ্যে, অপেক্ষায় রইলাম।
Like Reply
#92
(06-11-2023, 11:21 PM)Henry Wrote: কেষ্টপুর খালের কাছে সারিবব্ধ বাড়িরগুলির কয়েকটি রায়তি, কয়েকটি জবরদখল, আবার অজস্র ঝুপড়ি বাড়ি, যাদের কোনো চাল চুলো নেই। পরিবারগুলোর কয়েকটি ওপার বাংলা থেকে আগত বাঙাল। তার সাথে জুড়েছে উঃ ও দঃ ২৪ পরগণার ক্যানিং, কুলতলী, সাগর, নামখানা, হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালী, গোসাবা, বাসন্তী এলাকার লোক। চাঁপার বাপের বাড়ি গোসাবার দিকে কোথাও। ওর বাপ ফলের দোকান দিয়েছিল বিধাননগর রেল স্টেশনে। তবে থেকেই ওদের বাস এখানে।

একদিন লাইন পারাপার করতে গিয়ে দুরন্ত গতিতে আসা ট্রেন চাঁপার বাপকে পিষে দিয়ে চলে গেল। তখন চাঁপার বয়স ছয়, তার দিদি চামেলী তখন আট বছরের। দুই মেয়েকে নিয়ে লোকের বাড়ি ঝি গিরি করে সংসার চালাতে লাগলো চাঁপার মা সরলা। গোসাবায় যে জমি ছিল, সে জমিও মেরে দিল চাঁপার কাকা, জ্যাঠারা। বললে 'ছেলে থাইকলে ভাগটা দেওয়া যেত, মেয়েদের বে হই গেলে পরের ঘর যাবে, কেন দিব জমি।'
চাঁপার বাপ ট্রেনে কাটা পড়ায় সরলা শুনেছিল সরকার থেকে টাকা পাবে। অনেক ছোটাছুটি করেছিল সরলা। সে টাকার এক অংশও মেলেনি।
চাঁপার বড় দিদি চামেলী বিয়ে করে এখন থাকে মহারাষ্ট্রে। ওখানে স্যাকরার কাজ করে ওর বর। ওর ছেলে মেয়ে হিন্দি বলে। মাঝে মধ্যে এলেও মায়ের প্রতি কোনো দায়িত্ব রাখে না। চাঁপা বিয়ে করেছিল ভালোবেসে। বড় মেয়েকে বিয়ে দিলেও ঝিয়ের কাজ করে চাঁপাকে পড়াচ্ছিল সরলা। সরকারী ইস্কুলে নাইনে পড়বার সময় পরিচয় হয় রঞ্জিতের সাথে। রঞ্জিত ঘুরঘুর করত ইস্কুলের সামনে মেয়েদের ছুটি হবার সময়। ও একটা ঘড়ির দোকানে কাজ করত। পালিয়ে গেল চাঁপা ওর সাথে। অনেক স্বপ্ন দেখিয়ে ওকে নিয়ে গেছিল গুজরাট। সেখানে নাকি রঞ্জিতের কে একজন দাদা থাকে, তার সুপারিশে কারখানায় কাজ পাবে। চাঁপা যখন গর্ভবতী তখন রঞ্জিতের দাঁত নখ বার হল। মদ খেয়ে শুরু হল দৈনন্দিন অত্যাচার। তারপর খবর পেল চাঁপা; রঞ্জিত নাকি গুজরাতি একটা বেশ্যাকে নিয়ে মেতে উঠেছে। ঝগড়া বাধলো স্বামীর সাথে। তখন চাঁপার ছেলে সজল মাত্র দেড় বছরের। ঐ দেড় বছরের ছেলের সাথেই তাকে ঘর থেকে বার করে দিল দুশ্চরিত্র স্বামী।

সরলার ঘাড়ে এসে পড়ল আবার চাঁপা। সরলার তখন বয়স বাড়ছে, একার সংসার চলে যেত কোনক্রমে তার, পড়ল এসে বাচ্চা সহ মেয়ের বোঝা।  তারপর সরলাই ধরিয়ে দিল ওকে বাড়ি বাড়ি ঝিয়ের কাজ। বেশ কয়েক বছর ধরে ও রমাদের বাড়িতে কাজ করছে। এখন যেন ভরসা পায় ও। কিছু বিপদ আপদ হলে দাদা-বৌদি তো আছেই।
ছোট্ট ঘরটাতে সাত বছরের ছেলে আর বয়স্কা মাকে নিয়ে থাকে সে। চাঁপার বয়স এখন কম। মাত্র সাতাশ বছরের যুবতী মেয়ে সে। ছিপছিপে চেহারাটা হলেও শ্যামলা মুখে একটা শ্রী আছে। অনেকেরই নজর ওর দিকে। রাত বিরেতে কাজ করে ফিরতে দেরী হয়। দুশ্চিন্তা হয় সরলার।
বছর খানেক আগে চাঁপাদের বাড়ির চারপাশে মাঝে মধ্যে উত্তম নামে একটা ছোকরাকে ঘুরতে দেখা গেল। রাস্তা ঘাটে দেখা হলে চাঁপার দিকে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকত। ছেলেটার নজর দেখে চাঁপা বুঝতে পারে, এ চোখে অসভ্যতামি নেই। খানিক ভালোবাসা আছে। তবু তার ভয় হয়, পোড়া গরুর যে সিঁদুরে মেঘ দেখে ভয় হয়।
যেদিন চাঁপার ছেলে সজল অসুস্থ হয়েছিল ডেঙ্গুতে, সেদিন উত্তমও জেগেছিল হাসপাতালে চাঁপার সাথে। আগে সরলার সাথে উত্তমের কথা হলেও, কখনো চাঁপার সাথে হয়নি। সেদিনই প্রথম চাঁপার সাথে ওর কথা হয়। সেদিন চাঁপার বড্ড দরকার ছিল একজন পুরুষ মানুষের সাহায্য। উত্তম যতবার ওষুধ পত্তর লেগেছিল কিনে এনে দিয়েছিল।

রমারও নজরে পড়েছিল বিষয়টা। চাঁপার অসুস্থ ছেলের চিকিৎসার সব খরচ বহন করেছিল পীযুষ। রমা গেছিল সজলকে দেখতে হাসপাতালে, সেই সঙ্গে সব খরচগুলো মিটিয়ে এসেছিল। তখনই দেখেছিল ছেলেটাকে। ওয়েটিং রুমে তৎপর হতে দেখেছিল বছর ত্রিশের ছেলেটাকে। কম বয়স, রোগা পাতলা ক্লিন সেভ ছেলেটাকে বেশ মানাবে চাঁপার সাথে। পরে ছেলেটার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিল চাঁপাকে। চাঁপা এড়িয়ে গিয়ে বলেছিল গ্রাম থেকে আসা ওর দূর সম্পর্কের দাদা।
আজ যখন চাঁপা বাড়ি ঢুকল নাতিকে নিয়ে বসেছিল সরলা। বললে----এ বিষ্টিতে কাজে যাবার কি দরকারটা ছিলো,  বাবু ঘরে তো ফোনটা কইরে দিতে পারতিস।

আসলে চাঁপা পীযুষ-রমাদের বাড়ির সঙ্গে নিজেকে এত বেশি সম্পৃক্ত মনে করে যে সে কামাই করতে চায় না। তবুও তো ইচ্ছে হলেই যেমন খুশি কতবার ছুটি নিয়েছে।
চাঁপা খেয়াল করলো শাড়ির আঁচলে মুড়ে থাকা তার ফোনটা ভিজে গিয়েছে। দেড় হাজার টাকা দিয়ে গতবছর কিনেছে সে। আঁচলে মুছতে গিয়ে দেখল সুইচ অফ হয়ে আছে। সুইচ অন করতে দেখল কতগুলো মিসড কল উত্তমের।
মায়ের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল---উত্তম এইসেছিল?

---হাঁ ঝড় বিষ্টির রাতে দের কইরছিস দ্যাখে ফোনটা কইরে ছিল ছেলাটা।

তার প্রতি উত্তমের এই যত্ন নেওয়াটা ভালো লাগে চাঁপার। শাড়িটা খুলে ফেলে দড়িতে মেলে দিল সে। সাদা ঘামের ছোপ পড়া ব্রেসিয়ারটাও মেলে দিল দড়িতে। ছেলেটা খাতা পেন নিয়ে আঁকিবুকি কাটছে। স্টোভ জ্বালিয়ে পাম্প দিচ্ছিল চাঁপা। সরলা বলে উঠল---ইবারটা তো মত দে, ছেলাটা খারাপ লয় রে। কাজও একটা করে।

পেট্রোল পাম্পে কাজ করে উত্তম। উত্তম চাইলে অন্য মেয়েকে বিয়ে করতে পারতো, কিন্তু কেন তার মত এক বাচ্চার মাকে বিয়ে করতে যাবে! এই বিষয়টা যেমন চাঁপার দুশ্চিন্তা বাড়ায়, তেমনই আনন্দও দেয় কেউ তো তার কথা ভাবে। এখনো রঞ্জিতের নামে সিঁদুর দেয় সে, শাঁখা পোলা তার হাতে। অথচ রঞ্জিতের কোনো ভালো স্মৃতি আর তার মনে নেই। খারাপ লোকটার বীভৎস চরিত্রই মনে পড়ে তার। তবু এই বস্তি এলাকায় থাকতে গেলে শাঁখা-পোলা একটা বড় বর্মের মত কাজ করে। রাতে ছেলের পাশে এক বিছানায় যখন শুয়ে শুয়ে ঘুম আসে না, তখন তার যুবতী শরীর উত্তাল হয়ে ওঠে। বুকের মধ্যে তোলপাড় করে হাহাকার। অনেক সময় উরুসন্ধির মাঝে নারী অঙ্গে যুবতী পোকার কামড় ওঠে বিশ্রীভাবে। তখন প্রথম উত্তমকেই মনে আসে তার। এখনো ছুঁতে দেয়নি সে উত্তমকে। ঘরের মধ্যে যখন একা বসে গল্প করে তারা, চাইলে জোর খাটাতে পারতো উত্তম, হয়তো সেও বাধা দিতে পারতো না। গলে যেত বরফের মত। কিন্তু উত্তম যে তেমন নয় তা চাঁপা বোঝে। তবুও ভয় হয়, পুরুষ মানুষগুলো অনেক সময় ভ্রমরের মত আসে, শুধু মধু খাবার লোভে। তারপর ফুলের কথা তারা ভাবে না।

চাঁপা কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারছে না। মনে মনে সে ঠিক করে নেয় কাল একবার বৌদির কাছে মনের কথা খুলে বলবে। বৌদি তার গাইড, অনেক সমস্যায় সে বৌদির দ্বারস্থ হয়। টাকা পয়সা থেকে শুরু করে শারীরিক সমস্যা কিংবা বিপদ আপদ তার ভরসা রমা মৈত্র।

চলবে

লেখা খুবই সুন্দর হচ্ছে। আপনি এই সাইটের ওয়ান অফ দ্যা বেস্ট লেখক। আর এই গল্পটা আপনার সকল লেখার মধ্যে বেস্ট হতে চলেছে।  চালিয়ে যান। শুধু একটা রিকুয়েষ্ট আপডেট তাড়াতাড়ি দিবেন আর প্রয়োজন অনুযায়ী সেক্স ব্যাবহার করে গল্পটাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান।
Like Reply
#93
(06-11-2023, 11:21 PM)Henry Wrote: কেষ্টপুর খালের কাছে সারিবব্ধ বাড়িরগুলির কয়েকটি রায়তি, কয়েকটি জবরদখল, আবার অজস্র ঝুপড়ি বাড়ি, যাদের কোনো চাল চুলো নেই। পরিবারগুলোর কয়েকটি ওপার বাংলা থেকে আগত বাঙাল। তার সাথে জুড়েছে উঃ ও দঃ ২৪ পরগণার ক্যানিং, কুলতলী, সাগর, নামখানা, হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালী, গোসাবা, বাসন্তী এলাকার লোক। চাঁপার বাপের বাড়ি গোসাবার দিকে কোথাও। ওর বাপ ফলের দোকান দিয়েছিল বিধাননগর রেল স্টেশনে। তবে থেকেই ওদের বাস এখানে।

একদিন লাইন পারাপার করতে গিয়ে দুরন্ত গতিতে আসা ট্রেন চাঁপার বাপকে পিষে দিয়ে চলে গেল। তখন চাঁপার বয়স ছয়, তার দিদি চামেলী তখন আট বছরের। দুই মেয়েকে নিয়ে লোকের বাড়ি ঝি গিরি করে সংসার চালাতে লাগলো চাঁপার মা সরলা। গোসাবায় যে জমি ছিল, সে জমিও মেরে দিল চাঁপার কাকা, জ্যাঠারা। বললে 'ছেলে থাইকলে ভাগটা দেওয়া যেত, মেয়েদের বে হই গেলে পরের ঘর যাবে, কেন দিব জমি।'
চাঁপার বাপ ট্রেনে কাটা পড়ায় সরলা শুনেছিল সরকার থেকে টাকা পাবে। অনেক ছোটাছুটি করেছিল সরলা। সে টাকার এক অংশও মেলেনি।
চাঁপার বড় দিদি চামেলী বিয়ে করে এখন থাকে মহারাষ্ট্রে। ওখানে স্যাকরার কাজ করে ওর বর। ওর ছেলে মেয়ে হিন্দি বলে। মাঝে মধ্যে এলেও মায়ের প্রতি কোনো দায়িত্ব রাখে না। চাঁপা বিয়ে করেছিল ভালোবেসে। বড় মেয়েকে বিয়ে দিলেও ঝিয়ের কাজ করে চাঁপাকে পড়াচ্ছিল সরলা। সরকারী ইস্কুলে নাইনে পড়বার সময় পরিচয় হয় রঞ্জিতের সাথে। রঞ্জিত ঘুরঘুর করত ইস্কুলের সামনে মেয়েদের ছুটি হবার সময়। ও একটা ঘড়ির দোকানে কাজ করত। পালিয়ে গেল চাঁপা ওর সাথে। অনেক স্বপ্ন দেখিয়ে ওকে নিয়ে গেছিল গুজরাট। সেখানে নাকি রঞ্জিতের কে একজন দাদা থাকে, তার সুপারিশে কারখানায় কাজ পাবে। চাঁপা যখন গর্ভবতী তখন রঞ্জিতের দাঁত নখ বার হল। মদ খেয়ে শুরু হল দৈনন্দিন অত্যাচার। তারপর খবর পেল চাঁপা; রঞ্জিত নাকি গুজরাতি একটা বেশ্যাকে নিয়ে মেতে উঠেছে। ঝগড়া বাধলো স্বামীর সাথে। তখন চাঁপার ছেলে সজল মাত্র দেড় বছরের। ঐ দেড় বছরের ছেলের সাথেই তাকে ঘর থেকে বার করে দিল দুশ্চরিত্র স্বামী।

সরলার ঘাড়ে এসে পড়ল আবার চাঁপা। সরলার তখন বয়স বাড়ছে, একার সংসার চলে যেত কোনক্রমে তার, পড়ল এসে বাচ্চা সহ মেয়ের বোঝা।  তারপর সরলাই ধরিয়ে দিল ওকে বাড়ি বাড়ি ঝিয়ের কাজ। বেশ কয়েক বছর ধরে ও রমাদের বাড়িতে কাজ করছে। এখন যেন ভরসা পায় ও। কিছু বিপদ আপদ হলে দাদা-বৌদি তো আছেই।
ছোট্ট ঘরটাতে সাত বছরের ছেলে আর বয়স্কা মাকে নিয়ে থাকে সে। চাঁপার বয়স এখন কম। মাত্র সাতাশ বছরের যুবতী মেয়ে সে। ছিপছিপে চেহারাটা হলেও শ্যামলা মুখে একটা শ্রী আছে। অনেকেরই নজর ওর দিকে। রাত বিরেতে কাজ করে ফিরতে দেরী হয়। দুশ্চিন্তা হয় সরলার।
বছর খানেক আগে চাঁপাদের বাড়ির চারপাশে মাঝে মধ্যে উত্তম নামে একটা ছোকরাকে ঘুরতে দেখা গেল। রাস্তা ঘাটে দেখা হলে চাঁপার দিকে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকত। ছেলেটার নজর দেখে চাঁপা বুঝতে পারে, এ চোখে অসভ্যতামি নেই। খানিক ভালোবাসা আছে। তবু তার ভয় হয়, পোড়া গরুর যে সিঁদুরে মেঘ দেখে ভয় হয়।
যেদিন চাঁপার ছেলে সজল অসুস্থ হয়েছিল ডেঙ্গুতে, সেদিন উত্তমও জেগেছিল হাসপাতালে চাঁপার সাথে। আগে সরলার সাথে উত্তমের কথা হলেও, কখনো চাঁপার সাথে হয়নি। সেদিনই প্রথম চাঁপার সাথে ওর কথা হয়। সেদিন চাঁপার বড্ড দরকার ছিল একজন পুরুষ মানুষের সাহায্য। উত্তম যতবার ওষুধ পত্তর লেগেছিল কিনে এনে দিয়েছিল।

রমারও নজরে পড়েছিল বিষয়টা। চাঁপার অসুস্থ ছেলের চিকিৎসার সব খরচ বহন করেছিল পীযুষ। রমা গেছিল সজলকে দেখতে হাসপাতালে, সেই সঙ্গে সব খরচগুলো মিটিয়ে এসেছিল। তখনই দেখেছিল ছেলেটাকে। ওয়েটিং রুমে তৎপর হতে দেখেছিল বছর ত্রিশের ছেলেটাকে। কম বয়স, রোগা পাতলা ক্লিন সেভ ছেলেটাকে বেশ মানাবে চাঁপার সাথে। পরে ছেলেটার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিল চাঁপাকে। চাঁপা এড়িয়ে গিয়ে বলেছিল গ্রাম থেকে আসা ওর দূর সম্পর্কের দাদা।
আজ যখন চাঁপা বাড়ি ঢুকল নাতিকে নিয়ে বসেছিল সরলা। বললে----এ বিষ্টিতে কাজে যাবার কি দরকারটা ছিলো,  বাবু ঘরে তো ফোনটা কইরে দিতে পারতিস।

আসলে চাঁপা পীযুষ-রমাদের বাড়ির সঙ্গে নিজেকে এত বেশি সম্পৃক্ত মনে করে যে সে কামাই করতে চায় না। তবুও তো ইচ্ছে হলেই যেমন খুশি কতবার ছুটি নিয়েছে।
চাঁপা খেয়াল করলো শাড়ির আঁচলে মুড়ে থাকা তার ফোনটা ভিজে গিয়েছে। দেড় হাজার টাকা দিয়ে গতবছর কিনেছে সে। আঁচলে মুছতে গিয়ে দেখল সুইচ অফ হয়ে আছে। সুইচ অন করতে দেখল কতগুলো মিসড কল উত্তমের।
মায়ের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল---উত্তম এইসেছিল?

---হাঁ ঝড় বিষ্টির রাতে দের কইরছিস দ্যাখে ফোনটা কইরে ছিল ছেলাটা।

তার প্রতি উত্তমের এই যত্ন নেওয়াটা ভালো লাগে চাঁপার। শাড়িটা খুলে ফেলে দড়িতে মেলে দিল সে। সাদা ঘামের ছোপ পড়া ব্রেসিয়ারটাও মেলে দিল দড়িতে। ছেলেটা খাতা পেন নিয়ে আঁকিবুকি কাটছে। স্টোভ জ্বালিয়ে পাম্প দিচ্ছিল চাঁপা। সরলা বলে উঠল---ইবারটা তো মত দে, ছেলাটা খারাপ লয় রে। কাজও একটা করে।

পেট্রোল পাম্পে কাজ করে উত্তম। উত্তম চাইলে অন্য মেয়েকে বিয়ে করতে পারতো, কিন্তু কেন তার মত এক বাচ্চার মাকে বিয়ে করতে যাবে! এই বিষয়টা যেমন চাঁপার দুশ্চিন্তা বাড়ায়, তেমনই আনন্দও দেয় কেউ তো তার কথা ভাবে। এখনো রঞ্জিতের নামে সিঁদুর দেয় সে, শাঁখা পোলা তার হাতে। অথচ রঞ্জিতের কোনো ভালো স্মৃতি আর তার মনে নেই। খারাপ লোকটার বীভৎস চরিত্রই মনে পড়ে তার। তবু এই বস্তি এলাকায় থাকতে গেলে শাঁখা-পোলা একটা বড় বর্মের মত কাজ করে। রাতে ছেলের পাশে এক বিছানায় যখন শুয়ে শুয়ে ঘুম আসে না, তখন তার যুবতী শরীর উত্তাল হয়ে ওঠে। বুকের মধ্যে তোলপাড় করে হাহাকার। অনেক সময় উরুসন্ধির মাঝে নারী অঙ্গে যুবতী পোকার কামড় ওঠে বিশ্রীভাবে। তখন প্রথম উত্তমকেই মনে আসে তার। এখনো ছুঁতে দেয়নি সে উত্তমকে। ঘরের মধ্যে যখন একা বসে গল্প করে তারা, চাইলে জোর খাটাতে পারতো উত্তম, হয়তো সেও বাধা দিতে পারতো না। গলে যেত বরফের মত। কিন্তু উত্তম যে তেমন নয় তা চাঁপা বোঝে। তবুও ভয় হয়, পুরুষ মানুষগুলো অনেক সময় ভ্রমরের মত আসে, শুধু মধু খাবার লোভে। তারপর ফুলের কথা তারা ভাবে না।

চাঁপা কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারছে না। মনে মনে সে ঠিক করে নেয় কাল একবার বৌদির কাছে মনের কথা খুলে বলবে। বৌদি তার গাইড, অনেক সমস্যায় সে বৌদির দ্বারস্থ হয়। টাকা পয়সা থেকে শুরু করে শারীরিক সমস্যা কিংবা বিপদ আপদ তার ভরসা রমা মৈত্র।

চলবে

লেখা খুবই সুন্দর হচ্ছে। আপনি এই সাইটের ওয়ান অফ দ্যা বেস্ট লেখক। আর এই গল্পটা আপনার সকল লেখার মধ্যে বেস্ট হতে চলেছে।  চালিয়ে যান। শুধু একটা রিকুয়েষ্ট আপডেট তাড়াতাড়ি দিবেন আর প্রয়োজন অনুযায়ী সেক্সের ব্যাবহার করে গল্পটাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবেন।
Like Reply
#94
Darun hoyeche dada aro update expect korchi
Like Reply
#95
Bah Rama aar Chapa mone hochhe ei bar dujon kar story parallel e cholbe
[+] 1 user Likes kishen's post
Like Reply
#96
Oshadahron bolleo Kom bola hoy...
@Henry...tomar golpo lekhar Haat darun.
Tai Oudhdhotto tomake manay...keep it up.
Like Reply
#97
দারুণ yourock
Like Reply
#98
Darun Update
Like Reply
#99
Darun buildup
Like Reply
darun
Like Reply




Users browsing this thread: 5 Guest(s)